কুরআন বাংলা এন্ট্রি আপডেট ফরম

Back

ক্র. সূরা বাংলা অর্থ আয়াত নং মূল বিষয়বস্তু/কী ওয়ার্ড এডিট
1 ১. আল-ফাতিহা আল্লাহরই জন্য সমস্ত প্রশংসা, যিনি বিশ্বজগতের রব।
2 ১. আল-ফাতিহা যিনি পরম দয়ালু, অতিশয় করুণাময়।
3 ১. আল-ফাতিহা যিনি বিচার দিনের মালিক।
4 ১. আল-ফাতিহা আমরা আপনারই ইবাদাত করি এবং আপনারই নিকট সাহায্য চাই।
5 ১. আল-ফাতিহা আমাদেরকে সরল সঠিক পথ প্রদর্শন করুন।
6 ১. আল-ফাতিহা তাদের পথ, যাদের প্রতি আপনি অনুগ্রহ করেছেন। তাদের পথে নয়, যাদের প্রতি আপনার গযব বর্ষিত হয়েছে, তাদের পথও নয় যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
7 ২. আল-বাকারা আলিফ-লাম-মীম।
8 ২. আল-বাকারা ইহা ঐ গ্রন্থ যার মধ্যে কোন সন্দেহ-সংশয়ের অবকাশ নেই; ধর্ম-ভীরুদের জন্য এ গ্রন্থ পথনির্দেশ।
9 ২. আল-বাকারা যারা অদৃশ্য বিষয়গুলিতে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সালাত প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদেরকে যে উপজীবিকা প্রদান করেছি তা হতে দান করে থাকে । নামাজ
10 ২. আল-বাকারা এবং তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে ও তোমার পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছিল, যারা তদ্বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং আখিরাতের প্রতি যারা দৃঢ় বিশ্বাস রাখে।
11 ২. আল-বাকারা এরাই তাদের রবের পক্ষ হতে প্রাপ্ত হিদায়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছে এবং এরাই পূর্ণ সফলকাম।
12 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাস করছে তাদের জন্য উভয়ই সমান; তুমি তাদেরকে ভয় প্রদর্শন কর বা না কর, তারা ঈমান আনবেনা।
13 ২. আল-বাকারা আল্লাহ তাদের অন্তরসমূহের উপর ও তাদের কর্ণসমূহের উপর মোহরাংকিত করে দিয়েছেন এবং তাদের চক্ষুসমূহের উপর আবরণ পড়ে আছে এবং তাদের জন্য রয়েছে ভয়ানক শাস্তি। জাহান্নাম
14 ২. আল-বাকারা আর মানুষের মধ্যে এমন লোক আছে যারা বলে, আমরা আল্লাহর উপর এবং শেষ দিনের উপর ঈমান এনেছি, অথচ তারা মোটেই ঈমানদার নয়।
15 ২. আল-বাকারা তারা আল্লাহ ও মু’মিনদের সঙ্গে ধোঁকাবাজী করে। প্রকৃত পক্ষে তারা নিজেদের ব্যতীত আর কারও সাথে ধোঁকাবাজী করেনা, অথচ তারা এ সম্বন্ধে অনুভব করতে পারেনা।
16 ২. আল-বাকারা তাদের অন্তরে পীড়া রয়েছে, পরন্ত আল্লাহ তাদের পীড়া আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন এবং তাদের জন্য গুরুতর শাস্তি রয়েছে যেহেতু তারা অসত্য বলত। ১০ জাহান্নাম
17 ২. আল-বাকারা এবং যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ তোমরা পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করনা তখন তারা বলেঃ আমরাতো শুধুই শান্তি স্থাপনকারী। ১১
18 ২. আল-বাকারা সাবধান! নিশ্চয়ই তারাই অশান্তি সৃষ্টিকারী, কিন্তু তারা বুঝেনা। ১২
19 ২. আল-বাকারা এবং যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ লোকে যেরূপ বিশ্বাস করেছে তোমরাও তদ্রুপ বিশ্বাস স্থাপন কর, তখন তারা বলেঃ নির্বোধেরা যেরূপ বিশ্বাস করেছে আমরাও কি সেইরূপ বিশ্বাস করব? সাবধান! নিশ্চয়ই তারাই নির্বোধ, কিন্তু তা তারা অবগত নয়। ১৩
20 ২. আল-বাকারা এবং যখন তারা মু’মিনদের সাথে মিলিত হয় তখন তারা বলেঃ আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি; এবং যখন তারা নিজেদের দলপতি ও দুষ্ট নেতাদের সাথে গোপনে মিলিত হয় তখন বলেঃ আমরা তোমাদের সঙ্গেই আছি, আমরাতো শুধু ঠাট্টা-বিদ্রুপ ও প্রহসন করে থাকি। ১৪
21 ২. আল-বাকারা আল্লাহ তাদের সঙ্গে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করছেন এবং তাদেরকে অবকাশ দিচ্ছেন। ফলে তারা নিজেদের অবাধ্যতার মধ্যে উদ্ভ্রান্ত হয়ে ফিরছে। ১৫
22 ২. আল-বাকারা এরা তারাই যারা সু-পথের পরিবর্তে কু-পথকে ক্রয় করেছে, সুতরাং তাদের বাণিজ্য লাভজনক হয়নি এবং তারা সরল সঠিক পথে চলেনি। ১৬
23 ২. আল-বাকারা এদের অবস্থা ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে আগুন প্রজ্জ্বলিত করল, অতঃপর যখন তার পার্শ্ববর্তী সমস্ত স্থান আলোকিত হল, তখন আল্লাহ তাদের আলো ছিনিয়ে নিলেন এবং তাদেরকে অন্ধকারের মধ্যে ছেড়ে দিলেন, সুতরাং তারা কিছুই দেখতে পায়না। ১৭
24 ২. আল-বাকারা তারা বধির, মূক, অন্ধ। অতএব তারা প্রত্যাবৃত্ত হবেনা। ১৮
25 ২. আল-বাকারা অথবা আকাশ হতে বারি বর্ষণের ন্যায় যাতে অন্ধকার, গর্জন ও বিদ্যুৎ রয়েছে, তারা বজ্রধ্বনি বশতঃ মৃত্যুভয়ে তাদের কর্ণসমূহে স্ব স্ব অঙ্গুলী গুজে দেয়, এবং আল্লাহ অবিশ্বাসীদের পরিবেষ্টনকারী। ১৯
26 ২. আল-বাকারা অচিরে বিদ্যুৎ তাদের দৃষ্টি হরণ করবে, যখন তাদের প্রতি আলোক প্রদীপ্ত হয় তখন তারা চলতে থাকে এবং যখন তাদের উপর অন্ধকার আচ্ছন্ন হয় তখন তারা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে এবং যদি আল্লাহ ইচ্ছা করেন - নিশ্চয়ই তাদের শ্রবণশক্তি ও তাদের দৃষ্টিশক্তি হরণ করতে পারেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান। ২০
27 ২. আল-বাকারা হে মানববৃন্দ! তোমরা তোমাদের রবের ইবাদাত কর যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা ধর্মভীরু হও। ২১
28 ২. আল-বাকারা যিনি তোমাদের জন্য ভূতলকে শয্যা ও আকাশকে ছাদ স্বরূপ সৃষ্টি করেছেন এবং আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন, অতঃপর তদ্বারা তোমাদের জন্য উপজীবিকা স্বরূপ ফলপুঞ্জ উৎপাদন করেন, অতএব তোমরা আল্লাহর সমকক্ষ স্থির করনা এবং তোমরা এটা অবগত আছ। ২২
29 ২. আল-বাকারা এবং আমি আমার বান্দার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছি, যদি তোমরা তাতে সন্দিহান হও তাহলে তৎসদৃশ একটি ‘‘সূরা’’ আনয়ন কর এবং তোমাদের সেই সাহায্যকারীদেরকে ডেকে নাও যারা আল্লাহ হতে পৃথক, যদি তোমরা সত্যবাদী হও! ২৩
30 ২. আল-বাকারা অতঃপর যদি তোমরা তা করতে না পার এবং তোমরা তা কখনও করতে পারবেনা, তাহলে তোমরা সেই জাহান্নামের ভয় কর যার খোরাক মনুষ্য ও প্রস্তর খন্ড - যা অবিশ্বাসীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ২৪ জাহান্নাম
31 ২. আল-বাকারা এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎ কার্যাবলী সম্পাদন করে থাকে তাদেরকে সুসংবাদ প্রদান কর যে, তাদের জন্য এমন জান্নাত রয়েছে যার তলদেশ দিয়ে নদীসমূহ প্রবাহিত হচ্ছে; যখনই সেখানে তাদেরকে খাবার হিসাবে ফলপুঞ্জ প্রদান করা হবে তখনই তারা বলবেঃ আমাদেরতো এটা পূর্বেই প্রদত্ত হয়েছিল, বস্তুতঃ তাদেরকে একই সদৃশ ফল প্রদান করা হবে, এবং তাদের জন্য তন্মধ্যে শুদ্ধা সহধর্মিনীগণ রয়েছে, এবং তন্মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। ২৫ বেহেস্ত
32 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই আল্লাহ মশা অথবা তদপেক্ষা ক্ষুদ্রতর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করতে লজ্জাবোধ করেননা। সুতরাং যারা ঈমান এনেছে তারাতো বিশ্বাস করবে যে, এ উপমা তাদের রবের পক্ষ হতে খুবই স্থানোপযোগী হয়েছে, আর যারা কাফির সর্বাবস্থায় তারা এটাই বলবে যে, এ সব নগণ্য বস্ত্তর উপমা দ্বারা আল্লাহর উদ্দেশ্যই বা কি? তিনি এর দ্বারা অনেককে বিপথগামী করেন এবং এর দ্বারা অনেককে সঠিক পথ প্রদর্শন করেন, আর এর দ্বারা তিনি শুধু ফাসিকদেরকেই বিপথগামী করে থাকেন। ২৬
33 ২. আল-বাকারা যারা আল্লাহর সঙ্গে দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে এবং ঐ সব সম্বন্ধ ছিন্ন করে যা অবিচ্ছিন্ন রাখতে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন এবং যারা ভূপৃষ্ঠে বিবাদ সৃষ্টি করে তারাই পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত। ২৭
34 ২. আল-বাকারা কিরূপে তোমরা আল্লাহকে অবিশ্বাস করছ? অথচ তোমরা ছিলে প্রাণহীন? অতঃপর তিনিই তোমাদেরকে সঞ্জীবিত করেছেন, পুনরায় তিনি তোমাদেরকে নির্জীব করবেন এবং পুনরায় তোমাদেরকে জীবিত করা হবে। অবশেষে তোমাদেরকে তাঁরই দিকে প্রত্যাগমন করতে হবে। ২৮ কিয়ামত
35 ২. আল-বাকারা পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই তিনি তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন; অতঃপর তিনি আকাশের প্রতি মনঃসংযোগ করেন, অতঃপর সপ্ত আকাশ সুবিন্যস্ত করেন এবং তিনি সর্ব বিষয়ে মহাজ্ঞানী। ২৯
36 ২. আল-বাকারা এবং যখন তোমার রাব্ব মালাইকা/ফেরেশতাদের বললেনঃ নিশ্চয়ই আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করব; তারা বললঃ আপনি কি যমীনে এমন কেহকে সৃষ্টি করবেন যারা তন্মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত করবে? এবং আমরাইতো আপনার গুণগান করছি এবং আপনারই পবিত্রতা বর্ণনা করে থাকি। তিনি বললেনঃ তোমরা যা অবগত নও নিশ্চয়ই আমি তা জ্ঞাত আছি। ৩০
37 ২. আল-বাকারা এবং তিনি আদমকে সমস্ত নাম শিক্ষা দিলেন, অনন্তর তৎসমূদয় মালাইকা/ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপিত করলেন, অতঃপর বললেনঃ যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে আমাকে এ সব বস্তুর নামসমূহ বর্ণনা কর। ৩১
38 ২. আল-বাকারা তারা বলেছিলঃ আপনি পরম পবিত্র! আপনি আমাদেরকে যা শিক্ষা দিয়েছেন তদ্ব্যতীত আমাদের কোনই জ্ঞান নেই, নিশ্চয়ই আপনি মহাজ্ঞানী, বিজ্ঞানময়। ৩২
39 ২. আল-বাকারা তিনি বলেছিলেনঃ হে আদম! তুমি তাদেরকে ঐ সকলের নামসমূহ বর্ণনা কর; অতঃপর যখন সে তাদেরকে ঐগুলির নামসমূহ বলেছিল তখন তিনি বলেছিলেনঃ আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, নিশ্চয়ই আমি আসমান ও যমীনের অদৃশ্য বিষয় অবগত আছি এবং তোমরা যা প্রকাশ কর ও যা গোপন কর আমি তাও পরিজ্ঞাত আছি? ৩৩
40 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে বলেছিলাম যে, তোমরা আদমকে সাজদাহ কর, তখন ইবলীস ব্যতীত সকলে সাজদাহ করেছিল; সে অগ্রাহ্য করল ও অহংকার করল এবং কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। ৩৪ সিজদাহ
41 ২. আল-বাকারা এবং আমি বললামঃ হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে অবস্থান কর এবং তা হতে যা ইচ্ছা স্বচ্ছন্দে আহার কর; কিন্তু ঐ বৃক্ষের নিকটবর্তী হয়োনা, তাহলে তোমরা অত্যাচারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। ৩৫ বেহেস্ত
42 ২. আল-বাকারা অনন্তর শাইতান তাদের উভয়কে সেখান হতে বিচ্যুত করল, অতঃপর তারা উভয়ে যেখানে ছিল সেখান হতে তাদেরকে বর্হিগত করল; এবং আমি বললামঃ তোমরা নীচে নেমে যাও, তোমরা পরস্পর পরস্পরের শত্রু; এবং পৃথিবীতেই রয়েছে তোমাদের জন্য এক নির্দিষ্ট কালের অবস্থিতি ও ভোগ সম্পদ। ৩৬
43 ২. আল-বাকারা অতঃপর আদম স্বীয় রাব্ব হতে কতিপয় বাণী শিক্ষা লাভ করল, আল্লাহ তখন তার প্রতি কৃপা দৃষ্টি দিলেন; নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল, করুণাময়! ৩৭
44 ২. আল-বাকারা আমি বললামঃ তোমরা সবাই এখান থেকে নীচে নেমে যাও; অনন্তর আমার পক্ষ হতে তোমাদের নিকট যে উপদেশ উপস্থিত হবে-যারা আমার সেই উপদেশ অনুসরণ করবে বস্তুতঃ তাদের কোনই ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবেনা। ৩৮
45 ২. আল-বাকারা আর যারা অবিশ্বাস করবে এবং আমার নিদর্শনসমূহে অসত্যারোপ করবে, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী - তন্মধ্যে তারা সদা অবস্থান করবে। ৩৯ জাহান্নাম
46 ২. আল-বাকারা হে ইসরাঈলী বংশধর! আমি তোমাদেরকে যে সুখ সম্পদ দান করেছি তা স্মরণ কর এবং আমার অঙ্গীকার পূর্ণ কর - আমিও তোমাদের প্রতি কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করব এবং তোমরা শুধু আমাকেই ভয় কর। ৪০
47 ২. আল-বাকারা এবং আমি যা অবতীর্ণ করেছি তৎপ্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, ইহা (কুরআন) তোমাদের কাছে যা আছে উহারই সত্যতা প্রনয়নকারী এবং এতে তোমরাই প্রথম অবিশ্বাসী হয়োনা এবং আমার নিদর্শনাবলীর পরিবর্তে সামান্য মূল্য গ্রহণ করনা এবং তোমরা বরং আমাকেই ভয় কর। ৪১
48 ২. আল-বাকারা এবং তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করনা এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করনা। ৪২
49 ২. আল-বাকারা আর তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠিত কর ও যাকাত প্রদান কর এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু কর। ৪৩ নামাজ
50 ২. আল-বাকারা তোমরা কি লোকদেরকে সৎ কাজে আদেশ করছ এবং তোমাদের নিজেদের সম্বন্ধে বিস্মৃত হচ্ছ? অথচ তোমরা গ্রন্থ পাঠ কর; তাহলে কি তোমরা হৃদয়ঙ্গম করছনা? ৪৪
51 ২. আল-বাকারা এবং তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও; অবশ্যই ওটা কঠিন, কিন্তু বিনীতদের পক্ষে নয়। ৪৫ নামাজ
52 ২. আল-বাকারা যারা ধারণা করে যে, নিশ্চয়ই তারা তাদের রবের সাথে সম্মিলিত হবে এবং তারা তাঁরই দিকে প্রতিগমন করবে। ৪৬ কিয়ামত
53 ২. আল-বাকারা হে বানী ইসরাঈল! আমি তোমাদেরকে যে সুখ সম্পদ দান করেছি তা স্মরণ কর এবং নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে সমগ্র পৃথিবীর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি। ৪৭
54 ২. আল-বাকারা এবং তোমরা সেই দিনের ভয় কর, যে দিন এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তি হতে কিছুমাত্র উপকৃত হবেনা এবং কোন ব্যক্তি হতে কোন সুপারিশও গৃহীত হবেনা, কোন ব্যক্তি হতে কোন বিনিময়ও গ্রহণ করা হবেনা এবং তাদেরকে সাহায্য করাও হবেনা। ৪৮ কিয়ামত
55 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি তোমাদেরকে ফির‘আউনের সম্প্রদায় হতে বিমুক্ত করেছিলাম - তারা তোমাদেরকে কঠোর শাস্তি প্রদান করত, তোমাদের পুত্রদেরকে হত্যা করত এবং তোমাদের কন্যাদেরকে জীবিত রাখত এবং এতে তোমাদের রাব্ব হতে তোমাদের জন্য মহা পরীক্ষা ছিল। ৪৯
56 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি তোমাদের জন্য সমুদ্রকে বিভক্ত করেছিলাম, অতঃপর তোমাদেরকে উদ্ধার করেছিলাম ও ফির‘আউনের স্বজনদেরকে নিমজ্জিত করেছিলাম এবং তোমরা তা প্রত্যক্ষ করেছিলে। ৫০ মোজেজা
57 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি মূসার সঙ্গে চল্লিশ রজনীর অঙ্গীকার করেছিলাম, অনন্তর তোমরা গো-বৎসকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিলে এবং তোমরা ছিলে অত্যাচারী। ৫১
58 ২. আল-বাকারা এর পরেও আমি তোমাদেরকে মার্জনা করেছিলাম - যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। ৫২
59 ২. আল-বাকারা আর যখন আমি মূসাকে গ্রন্থ এবং সত্য ও মিথ্যার প্রভেদকারী নির্দেশ দিয়েছিলাম, যেন তোমরা সুপথ প্রাপ্ত হও। ৫৩
60 ২. আল-বাকারা আর যখন মূসা স্বীয় সম্প্রদায়কে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! নিশ্চয়ই তোমরা গো-বৎসকে উপাস্য রূপে গ্রহণ করে তোমাদের নিজেদের প্রতি অত্যাচার করেছ। অতএব তোমরা তোমাদের রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর তোমরা তোমাদের নিজ নিজ প্রাণ বিসর্জন দাও, তোমাদের রবের নিকট এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর; অতপর তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করলেন, নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল, করুণাময়। ৫৪
61 ২. আল-বাকারা এবং যখন তোমরা বলেছিলেঃ হে মূসা! আমরা আল্লাহকে প্রকাশ্যভাবে দর্শন না করা পর্যন্ত তোমাকে বিশ্বাস করবনা - তখন বজ্রপাত তোমাদেরকে আক্রমণ করেছিল এবং তোমরা তা প্রত্যক্ষ করেছিলে। ৫৫
62 ২. আল-বাকারা অতঃপর তোমাদের মৃত্যুর পর আমি তোমাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করেছিলাম, যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। ৫৬ মোজেজা
63 ২. আল-বাকারা এবং আমি তোমাদের উপর মেঘমালার ছায়া দান করেছিলাম এবং তোমাদের প্রতি ‘মান্না’ ও ‘সালওয়া’ অবতীর্ণ করেছিলাম; আমি তোমাদেরকে যে উপজীবিকা দান করেছি সেই পবিত্র জিনিস হতে আহার কর; এবং তারা আমার কোন অনিষ্ট করেনি, বরং তারা নিজেদের অনিষ্ট করেছিল। ৫৭
64 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি বললামঃ তোমরা এই নগরে প্রবেশ কর, অতঃপর যা ইচ্ছা স্বচ্ছন্দে আহার কর এবং সাজদাহবনতভাবে দ্বারে প্রবেশ কর এবং তোমরা বলঃ আমরা ক্ষমা প্রার্থনা করছি, তাহলে আমি তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করব এবং অচিরেই সৎকর্মশীলগণকে অধিকতর দান করব। ৫৮
65 ২. আল-বাকারা অনন্তর যারা অত্যাচার করেছিল তাদেরকে যা বলা হয়েছিল, তৎপরিবর্তে তারা সেই কথার পরিবর্তন করল, পরে অত্যাচারীরা যে দুস্কর্ম করেছিল তজ্জন্য আমি তাদের উপর আকাশ হতে শাস্তি অবতীর্ণ করেছিলাম। ৫৯
66 ২. আল-বাকারা এবং যখন মূসা স্বীয় সম্প্রদায়ের জন্য পানি প্রার্থনা করেছিল তখন আমি বলেছিলামঃ তুমি স্বীয় লাঠি দ্বারা প্রস্তরে আঘাত কর, অনন্তর তা হতে দ্বাদশ প্রস্রবন বিনিঃসৃত হল, প্রত্যেকেই স্ব স্ব স্থান জেনে নিল, তোমরা আল্লাহর উপজীবিকা হতে আহার কর ও পান কর এবং পৃথিবীতে শান্তি ভঙ্গকারী রূপে বিচরণ করনা। ৬০ মোজেজা
67 ২. আল-বাকারা এবং যখন তোমরা বলেছিলে - হে মূসা! আমরা একইরূপ খাদ্যে ধৈর্য ধারণ করতে পারছিনা, অতএব তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট প্রার্থনা কর যেন তিনি আমাদের জন্মভূমিতে যা উৎপন্ন হয় তা হতে ওর শাক-শব্জি, ওর কাঁকুড়, ওর গম, ওর মসুর এবং ওর পিয়াজ উৎপাদন করেন। সে বলেছিলঃ যা উৎকৃষ্ট তোমরা কি তার সঙ্গে যা নিকৃষ্ট তার বিনিময় করতে চাও? কোন নগরে উপনীত হও, তোমাদের প্রার্থিত দ্রব্যগুলি অবশ্যই প্রাপ্ত হবে। তাদের উপর লাঞ্ছনা ও দারিদ্রতা নিপতিত হল এবং তারা আল্লাহর কোপে পতিত হল এই হেতু যে, নিশ্চয়ই তারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহে অবিশ্বাস করত এবং অন্যায়ভাবে নাবীগণকে হত্যা করত; এবং এই হেতু যে, তারা অবাধ্যাচরণ করেছিল ও তারা সীমা অতিক্রম করেছিল। ৬১
68 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই মুসলিম, ইয়াহুদী, খৃষ্টান এবং সাবেঈন সম্প্রদায়, (এদের মধ্যে) যারা আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং ভাল কাজ করে, তাদের জন্য তাদের রবের নিকট পুরস্কার রয়েছে, তাদের কোন প্রকার ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবেনা। ৬২ কিয়ামত
69 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি তোমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম এবং তোমাদের উপর তূর পর্বত সমুচ্চ করেছিলাম যে, আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি তা দৃঢ় রূপে ধারণ কর এবং এতে যা আছে তা স্মরণ কর - সম্ভবতঃ তোমরা নিস্কৃতি পাবে। ৬৩
70 ২. আল-বাকারা এরপর পুনরায় তোমরা ফিরে গেলে, অতএব যদি তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ এবং তাঁর করুণা না থাকত তাহলে অবশ্যই তোমরা বিনাশ প্রাপ্ত হতে। ৬৪
71 ২. আল-বাকারা এবং অবশ্যই তোমরা অবগত আছ যে, তোমাদের মধ্যে যারা শনিবারের ব্যাপারে সীমা লংঘন করেছিল। আমি তাদেরকে বলেছিলাম যে, তোমরা অধম বানর হয়ে যাও। ৬৫
72 ২. আল-বাকারা অনন্তর আমি এটা তাদের সমসাময়িক ও তাদের পরবর্তীদের জন্য দৃষ্টান্ত এবং ধর্মভীরুগণের জন্য উপদেশ স্বরূপ করেছিলাম। ৬৬
73 ২. আল-বাকারা এবং যখন মূসা নিজ সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু যবাহ কর। তারা বলেছিলঃ তুমি কি আমাদেরকে উপহাস করছ? সে বলেছিলঃ আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যেন আমি মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত না হই। ৬৭
74 ২. আল-বাকারা তারা বলেছিলঃ তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট প্রার্থনা কর যে, তিনি আমাদেরকে যেন ওটা কি কি গুণ বিশিষ্ট হওয়া দরকার তা বলে দেন। সে বলেছিলঃ তিনি বলেছেন যে, নিশ্চয়ই সেই গরু বয়োঃবৃদ্ধ নয় এবং শাবকও নয়, এ দু’য়ের মধ্যবর্তী; অতএব তোমরা যেরূপ আদিষ্ট হয়েছ তা করে ফেল। ৬৮
75 ২. আল-বাকারা তারা বলেছিলঃ তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট প্রার্থনা কর যে, তিনি যেন ওর বর্ণ কিরূপ তা আমাদেরকে বলে দেন। সে বলেছিলঃ তিনি বলেছেন যে, নিশ্চয়ই সেই গরুর বর্ণ গাঢ় পীত, ওটা দর্শকদেরকে আনন্দ দান করে। ৬৯
76 ২. আল-বাকারা তারা বলেছিলঃ তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট প্রার্থনা কর যে, তিনি যেন ওটা কিরূপ তা আমাদের জন্য বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই আমাদের নিকট সকল গরুই সমতুল্য এবং আল্লাহ ইচ্ছা করলে আমরা সুপথগামী হব। ৭০
77 ২. আল-বাকারা সে বলেছিলঃ নিশ্চয়ই তিনি বলেছেন যে, অবশ্যই সেই গরু সুস্থকায়, নিখুঁত, ওটা চাষাবাদের কাজে লাগানো হয়নি এবং ক্ষেতে পানি সেচনেও নিযুক্ত হয়নি। তারা বলেছিলঃ এক্ষণে তুমি সত্য এনেছ, অতঃপর তারা ওটা যবাহ করল যা তাদের করার ইচ্ছা ছিলনা। ৭১
78 ২. আল-বাকারা এবং যখন তোমরা এক ব্যক্তিকে হত্যা করার পর তদ্বিষয়ে বিরোধ করছিলে এবং তোমরা যা গোপন করছিলে আল্লাহ তার প্রকাশক হলেন। ৭২
79 ২. আল-বাকারা অতঃপর আমি বলেছিলামঃ ওর এক খন্ড দ্বারা তাকে আঘাত কর, এই রূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর। ৭৩ মোজেজা
80 ২. আল-বাকারা অতঃপর তোমাদের হৃদয় প্রস্তরের ন্যায় কঠিন, বরং ওর চেয়েও কঠিনতর হল এবং নিশ্চয়ই প্রস্তর হতেও প্রস্রবন নির্গত হয় এবং নিশ্চয়ই ওগুলির মধ্যে কোন কোনটি বিদীর্ণ হয়, অতঃপর তা হতে পানি নির্গত হয় এবং নিশ্চয়ই ঐগুলির মধ্যে কোনটি আল্লাহর ভয়ে পতিত হয় এবং তোমরা যা করছ তৎপ্রতি আল্লাহ অমনোযোগী নন। ৭৪
81 ২. আল-বাকারা তোমরা কি আশা কর যে, তোমাদের কথায় তারা ঈমান আনবে? অথচ তাদের মধ্যে এমন কতক লোক গত হয়েছে যারা আল্লাহর কালাম শুনত, অতঃপর উহা বুঝার পর উহাকে বিকৃত করত, অথচ তারা জানত। ৭৫
82 ২. আল-বাকারা যখন তারা মু’মিনদের সাথে মিলিত হয় তখন বলেঃ আমরা ঈমান এনেছি; আর যখন তাদের কেহ কারও (ইয়াহুদীর) নিকট গোপনে যায় তখন তারা বলেঃ তোমরা কি মুসলিমদেরকে এমন কথা বলে দাও যা আল্লাহ তোমাদের নিকট প্রকাশ করেছেন? পরিণামে তারা তোমাদেরকে তর্কে পরাজিত করবে (এই বলে) যে, এ বিষয়টি রবের নিকট হতে তোমাদের কিতাবে রয়েছে, তোমরা কি বুঝনা? ৭৬
83 ২. আল-বাকারা তারা কি জানেনা যে, তারা যা গোপন রাখে এবং যা প্রকাশ করে, আল্লাহ সবই জানেন? ৭৭
84 ২. আল-বাকারা এবং তাদের মধ্যে অনেক অশিক্ষিত লোক আছে যারা প্রবৃত্তি ব্যতীত কোন গ্রন্থ অবগত নয় এবং তারা শুধু কল্পনাসমূহ রচনা করে থাকে। ৭৮
85 ২. আল-বাকারা তাদের জন্য আক্ষেপ যারা স্বহস্তে পুস্তক রচনা করে, যারা বলে যে, এটা আল্লাহর নিকট হতে সমাগত! এর দ্বারা তারা সামান্য মূল্য অর্জন করছে, তাদের হস্ত যা লিপিবদ্ধ করেছে তজ্জন্য তাদের প্রতি আক্ষেপ! এবং তারা যা উপার্জন করছে তজ্জন্যও তাদের প্রতি আক্ষেপ! ৭৯
86 ২. আল-বাকারা এবং তারা বলেঃ নির্ধারিত দিনসমূহ ব্যতীত (জাহন্নামের) আগুন আমাদেরকে স্পর্শ করবেনা। তুমি বলঃ তোমরা কি আল্লাহর নিকট হতে অঙ্গীকার নিয়েছ যে, পরে আল্লাহ কখনই স্বীয় অঙ্গীকারের অন্যথা করবেননা? অথবা আল্লাহ সম্বন্ধে যা জানোনা তোমরা তা’ই বলছ? ৮০
87 ২. আল-বাকারা হ্যাঁ, যারা অনিষ্ট অর্জন করেছে এবং স্বীয় পাপের দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়েছে তারাই অগ্নিবাসী, সেখানে তারা সদা অবস্থান করবে। ৮১ জাহান্নাম
88 ২. আল-বাকারা এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎ কাজ করছে তারাই জান্নাতবাসী, তন্মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। ৮২ বেহেস্ত
89 ২. আল-বাকারা আর যখন আমি বানী ইসরাঈল হতে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে, তোমরা আল্লাহ ব্যতীত আর কারও ইবাদাত করবেনা এবং মাতাপিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে ও আত্মীয়দের, পিতৃহীনদের ও মিসকীনদের সঙ্গেও (সদ্ব্যবহার করবে), আর তোমরা লোকের সাথে উত্তমভাবে কথা বলবে এবং সালাত প্রতিষ্ঠিত করবে ও যাকাত প্রদান করবে; অতঃপর তোমাদের মধ্য হতে অল্প সংখ্যক ব্যতীত তোমরা সকলেই বিমুখ হয়েছিলে, যেহেতু তোমরা ছিলে অগ্রাহ্যকারী। ৮৩ নামাজ
90 ২. আল-বাকারা এবং আমি যখন তোমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম যে, পরস্পর শোণিতপাত করবেনা এবং স্বীয় বাসস্থান হতে আপন ব্যক্তিদেরকে বহিস্কার করবেনা; অতঃপর তোমরা স্বীকৃত হয়েছিলে এবং তোমরাই ওর সাক্ষী ছিলে। ৮৪
91 ২. আল-বাকারা অতঃপর সেই তোমরাই পরস্পর খুনাখুনি করছ এবং তোমরা তোমাদের মধ্য হতে এক দলকে তাদের গৃহ হতে বহিস্কার করে দিচ্ছ, তাদের বিরুদ্ধে (শত্রুতা বশতঃ) পাপ ও অন্যায় কাজে সাহায্য করছ এবং তারা বন্দী হয়ে তোমাদের নিকট আনীত হলে তোমরা তাদেরকে বিনিময় প্রদান কর, অথচ তাদেরকে বহিস্কার করা তোমাদের জন্য অবৈধ ছিল, তাহলে কি তোমরা গ্রন্থের কিছু অংশ বিশ্বাস কর এবং কিছু অংশ অবিশ্বাস কর? তোমাদের মধ্যে যারা এরূপ করে তাদের পার্থিব জীবনে দুর্গতি ব্যতীত কিছুই নেই এবং উত্থান দিনে তারা কঠোর শাস্তির দিকে নিক্ষিপ্ত হবে এবং তোমরা যা করছ, তদ্বিষয়ে আল্লাহ অমনোযোগী নন। ৮৫ কিয়ামত
92 ২. আল-বাকারা এরাই আখিরাতের বিনিময়ে পার্থিব জীবন ক্রয় করেছে, অতএব তাদের দন্ড লঘু করা হবেনা এবং তারা সাহায্য প্রাপ্তও হবেনা। ৮৬
93 ২. আল-বাকারা এবং অবশ্যই আমি মূসাকে কিতাব প্রদান করেছি ও তৎপরে ক্রমান্বয়ে রাসূলগণকে প্রেরণ করেছি, এবং আমি মারইয়াম নন্দন ঈসাকে নিদর্শনসমূহ প্রদান করেছিলাম এবং পবিত্র আত্মাযোগে তাকে শক্তি সম্পন্ন করেছিলাম; কিন্তু পরে যখন তোমাদের নিকট কোন রাসূল - তোমাদের প্রবৃত্তি যা ইচ্ছা করতনা তা নিয়ে উপস্থিত হল তখন তোমরা অহংকার করলে, অবশেষে এক দলকে মিথ্যাবাদী বললে এবং একদলকে হত্যা করলে। ৮৭ মোজেজা
94 ২. আল-বাকারা এবং তারা বলে, আমাদের হৃদয় আবৃত; এবং তাদের অবিশ্বাসের জন্য আল্লাহ তাদেরকে অভিসম্পাত করেছেন - যেহেতু তারা অতি অল্পই বিশ্বাস করে। ৮৮
95 ২. আল-বাকারা এবং যখন আল্লাহর সন্নিধান হতে তাদের নিকট যা আছে তার সত্যতা প্রতিপাদক গ্রন্থ উপস্থিত হল এবং যা পূর্ব হতেই তারা কাফিরদের উপর বিজয় প্রার্থনা করত; অতঃপর যখন তাদের নিকট সেই পরিচিত কিতাব এল তখন তারা তাকে অস্বীকার করল। সুতরাং এরূপ কাফিরদের উপর আল্লাহর লা’নত বর্ষিত হোক। ৮৯
96 ২. আল-বাকারা যার বিনিময়ে তারা নিজেদের বিক্রি করেছে তা খুবই মন্দ, যেহেতু তারা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা অস্বীকার করেছে - এই হঠকারিতার জন্য যে, আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ অবতারণ করেন। অতএব তারা ক্রোধের উপর ক্রোধ অর্জন করেছে। এবং কাফিরদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি রয়েছে। ৯০
97 ২. আল-বাকারা এবং যখন তাদেরকে বলা হয় - আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা বিশ্বাস কর তখন তারা বলেঃ যা আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে আমরা তা’ই বিশ্বাস করি এবং তা ছাড়া যা রয়েছে তা অবিশ্বাস করি; অথচ এ গ্রন্থটি সত্য, তাদের কাছে যা আছে এটা তারই সত্যতার প্রতিপাদক। তুমি বলঃ যদি তোমরা বিশ্বাসীই ছিলে তাহলে ইতোপূর্বে কেন আল্লাহর নাবীগণকে হত্যা করেছিলে? ৯১
98 ২. আল-বাকারা এবং নিশ্চয়ই মূসা উজ্জ্বল নিদর্শনাবলীসহ তোমাদের নিকট উপস্থিত হয়েছিল; অনন্তর তোমরা গো-বৎসকে উপাস্য রূপে গ্রহণ করেছিলে, যেহেতু তোমরা অত্যাচারী ছিলে। ৯২
99 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি তোমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম এবং তোমাদের উপর তূর পর্বত সমুচ্চ করেছিলাম এবং বলেছিলাম যে, আমি যা প্রদান করলাম তা দৃঢ়রূপে ধারণ কর এবং শ্রবণ কর। তারা বলেছিল, আমরা শুনলাম ও অগ্রাহ্য করলাম, এবং তাদের অবিশ্বাসের নিমিত্ত তাদের অন্তরসমূহে গো-বৎস প্রিয়তা সিঞ্চিত হয়েছিল। তুমি বলঃ যদি তোমরা বিশ্বাসী হও তাহলে তোমাদের বিশ্বাস যা কিছু আদেশ করছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ৯৩
100 ২. আল-বাকারা তুমি বলঃ যদি অপর ব্যক্তিগণ অপেক্ষা তোমাদের জন্য আল্লাহর নিকট বিশেষ পারলৌকিক আলয় থাকে তাহলে তোমরা মৃত্যু কামনা কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। ৯৪
101 ২. আল-বাকারা এবং তাদের হস্তসমূহ পূর্বে যা প্রেরণ করেছে তজ্জন্য তারা কখনই তা কামনা করবেনা এবং আল্লাহ অত্যাচারীদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবগত আছেন। ৯৫
102 ২. আল-বাকারা এবং নিশ্চয়ই তুমি তাদেরকে অন্যান্য লোক এবং অংশীবাদীদের অপেক্ষাও অধিকতর আয়ু-আকাংক্ষী পাবে; তাদের মধ্যে প্রত্যেকে কামনা করে যেন তাকে হাজার বছর আয়ু দেয়া হয়, এবং ঐরূপ আয়ু প্রাপ্তিও তাদেরকে শাস্তি হতে মুক্ত করতে পারবেনা এবং তারা যা করছে আল্লাহ তার পরিদর্শক। ৯৬
103 ২. আল-বাকারা তুমি বলঃ যে ব্যক্তি জিবরাঈলের সাথে শত্রুতা রাখে এ জন্য যে, সে আল্লাহর হুকুমে এই কুরআনকে তোমার অন্তঃকরণ পর্যন্ত পৌঁছিয়েছে, যা পূর্ববতী কিতাবসমূহের সত্যতা প্রমাণ করছে এবং মু’মিনদের সুসংবাদ দিচ্ছে । ৯৭
104 ২. আল-বাকারা যে ব্যক্তি আল্লাহর, তাঁর মালাইকা/ফেরেশতাগণের, তাঁর রাসূলগণের, জিবরাঈলের এবং মিকাঈলের শত্রু, নিশ্চয়ই আল্লাহ এরূপ কাফিরদের শত্রু। ৯৮
105 ২. আল-বাকারা এবং নিশ্চয়ই আমি তোমার প্রতি স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ অবতরণ করেছি এবং দুস্কর্মকারী ব্যতীত কেহই তা অবিশ্বাস করবেনা। ৯৯
106 ২. আল-বাকারা কি আশ্চর্য! যখন তারা কোন অঙ্গীকারে আবদ্ধ হল তখনই তাদের একদল তা ভঙ্গ করল। বরং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাস করেনা। ১০০
107 ২. আল-বাকারা এবং যখন আল্লাহর নিকট হতে, তাদের নিকট যা আছে তার সত্য প্রত্যয়নকারী রাসূল তাদের নিকট আগমন করল, তখন যাদেরকে গ্রন্থ প্রদান করা হয়েছে তাদের একদল আল্লাহর গ্রন্থকে নিজেদের পশ্চাদভাগে নিক্ষেপ করল, যেন তারা কিছুই জানেনা। ১০১
108 ২. আল-বাকারা এবং সুলাইমানের রাজত্বকালে শাইতানরা যা আবৃত্তি করত, তারা ওরই অনুসরণ করছে, এবং সুলাইমান অবিশ্বাসী হয়নি - কিন্তু শাইতানরাই অবিশ্বাস করেছিল। তারা লোকদেরকে যাদু বিদ্যা এবং যা বাবেল শহরে হারূত-মারূত মালাক/ফেরেশতাদ্বয়ের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছিল তা শিক্ষা দিত, এবং তারা উভয়ে কেহকেও ওটা এ কথা না বলে শিক্ষা দিতনা যে, ‘আমরা পরীক্ষাধীন ছাড়া কিছুই নই, অতএব তোমরা কুফরী করনা’। অনন্তর তারা যাতে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ সংঘটিত হয় তা তাদের নিকট থেকে শিক্ষা গ্রহণ করত। কিন্তু তারা আল্লাহর আদেশ ব্যতীত তদ্বারা কারও অনিষ্ট করতে পারতনা, কিন্তু তারা ওটাই শিক্ষা করছে যাতে তাদের ক্ষতি হয় এবং তাদের কোন উপকার সাধিত না হয়; এবং নিশ্চয়ই তারা জ্ঞাত আছে - যে কেহ ওটা ক্রয় করেছে তার জন্য আখিরাতে সুখ লাভ নেই এবং তার বিনিময়ে তারা যে আত্মবিক্রয় করেছে তা নিকৃষ্ট - যদি তারা তা জানত! ১০২
109 ২. আল-বাকারা এবং যদি তারা সত্য সত্যই বিশ্বাস করত ও ধর্মভীরু হত তাহলে আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণ লাভ করত - যদি তারা এটা বুঝতো। ১০৩
110 ২. আল-বাকারা হে মু’মিনগণ! তোমরা ‘রা‘য়েনা’ বলনা, বরং ‘উনযুরনা’ বল এবং শুনে নাও - অবিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাময় শাস্তি। ১০৪
111 ২. আল-বাকারা আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা কাফির (অর্থাৎ ইয়াহুদী ও নাসারা) এবং মুশরিকরা মোটেই পছন্দ করেনা যে, তোমাদের রবের পক্ষ হতে তোমাদের উপর কোন কল্যাণ বর্ষিত হোক, আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন তাঁর করুণার জন্য নির্দিষ্ট করে নেন এবং আল্লাহ মহা করুণাময়। ১০৫
112 ২. আল-বাকারা আমি কোন আয়াতের হুকুম রহিত করলে কিংবা আয়াতটিকে বিস্মৃত করিয়ে দিলে তদপেক্ষা উত্তম অথবা তদনুরূপ আয়াত আনয়ন করি। তুমি কি জাননা যে, আল্লাহ সর্ব বিষয়ের উপরই ক্ষমতাবান? ১০৬
113 ২. আল-বাকারা তুমি কি জাননা যে, আকাশ ও পৃথিবীর আধিপত্য আল্লাহরই এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধুও নেই এবং কোন সাহায্যকারীও নেই? ১০৭
114 ২. আল-বাকারা তোমরা কি চাও যে, তোমাদের রাসূলের নিকট আবেদন করবে যেমন ইতোপূর্বে মূসার নিকট (হঠকারিতা বশতঃ এইরূপ বহু নিরর্থক) আবেদন করা হয়েছিল? আর যে ব্যক্তি ঈমানের পরিবর্তে কুফরী অবলম্বন করে, নিশ্চয়ই সে সঠিক পথ হতে দূরে সরে পড়ে। ১০৮
115 ২. আল-বাকারা কিতাবীদের অনেকে তাদের প্রতি সত্য প্রকাশিত হওয়ার পর তারা তাদের অন্তর্হিত বিদ্বেষ বশতঃ তোমাদেরকে বিশ্বাস স্থাপনের পরে অবিশ্বাসী করতে ইচ্ছা করে; কিন্তু যে পর্যন্ত আল্লাহ স্বয়ং আদেশ আনয়ন না করেন সে পর্যন্ত তোমরা ক্ষমা কর ও উপেক্ষা করতে থাক; নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান। ১০৯
116 ২. আল-বাকারা আর তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠিত কর ও যাকাত প্রদান কর; এবং তোমরা স্ব স্ব জীবনের জন্য যে সৎকাজ অগ্রে প্রেরণ করেছ তা আল্লাহর নিকট প্রাপ্ত হবে; তোমরা যা করছো নিশ্চয়ই আল্লাহ তার পরিদর্শক। ১১০ নামাজ
117 ২. আল-বাকারা এবং তারা বলেঃ ইয়াহুদী বা খৃষ্টান ছাড়া আর কেহই জান্নাতে প্রবেশ করবেনা; এটা তাদের মিথ্যা আশা। তুমি বলঃ যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর। ১১১ বেহেস্ত
118 ২. আল-বাকারা অবশ্য যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহর নিকট সর্মপন করেছে এবং সৎকাজ করেছে, ফলতঃ তার জন্য তার রবের নিকট প্রতিদান রয়েছে এবং তাদের জন্য কোন আশংকা নেই ও তারা চিন্তিত হবেনা। ১১২
119 ২. আল-বাকারা আর ইয়াহুদীরা বলেঃ খৃষ্টানরা কোন বিষয়ের উপর নেই; এবং খৃষ্টানরা বলে, ইয়াহুদীরাও কোন বিষয়ের উপর নেই - অথচ তারা গ্রন্থ পাঠ করে। এরূপ যারা জানেনা, তারাও ওদের কথার অনুরূপ কথা বলে থাকে; অতএব যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করেছিল, উত্থান দিনে আল্লাহ তাদের মধ্যে তদ্বিষয়ে ফায়সালা করে দিবেন। ১১৩ কিয়ামত
120 ২. আল-বাকারা এবং যে আল্লাহর মাসজিদসমূহের মধ্যে তাঁর নাম উচ্চারণ করতে নিষেধ করছে এবং তা উজাড় করতে চেষ্টা করছে সে অপেক্ষা কে অধিক অত্যাচারী? তাদের পক্ষে উপযুক্ত নয় যে, তারা শংকিত হওয়া ব্যতীত তন্মধ্যে প্রবেশ করে; তাদের জন্য ইহলোকে দুর্গতি এবং পরলোকে কঠোর শাস্তি রয়েছে। ১১৪
121 ২. আল-বাকারা আল্লাহরই জন্য পূর্ব ও পশ্চিম; অতএব তোমরা যে দিকেই মুখ ফিরাও সেই দিকেই আল্লাহর দিক; কেননা আল্লাহ (সর্বদিক) পরিবেষ্টনকারী, পূর্ণ জ্ঞানবান। ১১৫
122 ২. আল-বাকারা এবং তারা বলে, আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন। তিনি পরম পবিত্র! বরং যা কিছু আসমানে ও ভূমন্ডলে রয়েছে তা তাঁরই জন্য; সবই তাঁর আজ্ঞাধীন। ১১৬
123 ২. আল-বাকারা তিনি আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা এবং যখন তিনি কোন কাজ সম্পাদন করতে ইচ্ছা করেন তখন তার জন্য শুধুমাত্র ‘হও’ বলেন, আর তাতেই তা হয়ে যায়। ১১৭ মোজেজা
124 ২. আল-বাকারা এবং মূর্খেরা বলেঃ আল্লাহ আমাদের সাথে কেন কথা বলেননা, অথবা কেন আমাদের জন্য কোন নিদর্শন উপস্থিত হয়না? এদের পূর্বে যারা ছিল তারাও এদের অনুরূপ কথা বলত; তাদের সবারই অন্তর পরস্পর সাদৃশ্যপূর্ণ; নিশ্চয়ই আমি বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য উজ্জ্বল নিদর্শনাবলী বর্ণনা করি। ১১৮
125 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই আমি তোমাকে সত্যসহ সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শক রূপে প্রেরণ করেছি এবং তুমি জাহান্নামবাসীদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হবেনা। ১১৯ জাহান্নাম
126 ২. আল-বাকারা এবং ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা - তুমি তাদের ধর্ম অনুসরণ না করা পর্যন্ত তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হবেনা; তুমি বলঃ আল্লাহর প্রদর্শিত পথই সুপথ; এবং জ্ঞান প্রাপ্তির পর তুমি যদি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ কর তাহলে আল্লাহ হতে তোমার জন্য কোনই অভিভাবক ও সাহায্যকারী নেই। ১২০
127 ২. আল-বাকারা আমি যাদেরকে যে ধর্মগ্রন্থ দান করেছি তা যারা সঠিকভাবে সত্য বুঝে পাঠ করে তারাই এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী, এবং যে কেহ এটা অবিশ্বাস করে ফলতঃ তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ১২১
128 ২. আল-বাকারা হে বানী ইসরাঈল! আমি তোমাদেরকে যে সুখ সম্পদ দান করেছি এবং আমি পৃথিবীর উপর তোমাদেরকে যে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি - তোমরা তা স্মরণ কর। ১২২
129 ২. আল-বাকারা আর তোমরা ঐ দিনের ভয় কর যেদিন একজন অন্যজন হতে কিছুমাত্র উপকৃত হবেনা এবং কারও নিকট হতে বিনিময় গৃহীত হবেনা, কারও সুপারিশ ফলপ্রদ হবেনা এবং তারা সাহায্য প্রাপ্ত হবেনা। ১২৩ কিয়ামত
130 ২. আল-বাকারা এবং যখন তোমার রাব্ব ইবরাহীমকে কতিপয় বাক্য দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বলেছিলেনঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে মানবমন্ডলীর নেতা করব। সে বলেছিলঃ আমার বংশধরগণ হতেও। তিনি বলেছিলেনঃ আমার অঙ্গীকার অত্যাচারীদের প্রতি প্রযোজ্য হবেনা। ১২৪
131 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি কা‘বা গৃহকে মানব জাতির জন্য সুরক্ষিত স্থান ও পুণ্যধাম করেছিলাম, এবং মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের জায়গা নির্ধারণ করেছিলাম; এবং আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলের নিকট অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী ও ই’তিকাফকারী এবং রুকু ও সাজদাহকারীদের জন্য পবিত্র রেখ। ১২৫ নামাজ
132 ২. আল-বাকারা যখন ইবরাহীম বললঃ হে আমার রাব্ব! এ স্থানকে আপনি নিরাপত্তাময় শহরে পরিণত করুন এবং এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছে তাদেরকে উপজীবিকার জন্য ফল-শষ্য প্রদান করুন। (আল্লাহ) বলেনঃ যারা কুফরী করে তাদেরকে আমি অল্প কিছু দিন জীবনোপভোগ করতে দিব, অতঃপর তাদেরকে অগ্নির শাস্তি ভোগ করতে বাধ্য করব, ঐ গন্তব্য স্থান নিকৃষ্টতম। ১২৬ জাহান্নাম
133 ২. আল-বাকারা যখন ইবরাহীম ও ইসমাঈল কা‘বার ভিত্তি স্থাপন করল (তখন বলল) হে আমাদের রাব্ব! আমাদের পক্ষ হতে এটি গ্রহণ করুন, নিশ্চয়ই আপনি শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। ১২৭
134 ২. আল-বাকারা হে আমাদের রাব্ব! আমাদের উভয়কে আপনার অনুগত করুন, এবং আমাদের বংশধরদের মধ্য হতেও আপনার অনুগত এক দল লোক সৃষ্টি করুন, আর আমাদেরকে হাজ্জের আহকাম বলে দিন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন, নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১২৮
135 ২. আল-বাকারা হে আমাদের রাব্ব! তাদেরই মধ্য হতে এমন একজন রাসূল প্রেরণ করুন যিনি তাদেরকে আপনার নিদর্শনাবলী পাঠ করে শুনাবেন এবং তাদেরকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান শিক্ষা দান করবেন ও তাদেরকে পবিত্র করবেন। নিশ্চয়ই আপনি পরাক্রান্ত, বিজ্ঞানময়। ১২৯
136 ২. আল-বাকারা এবং যে নিজকে নির্বোধ করে তুলেছে সে ব্যতীত কে ইবরাহীমের ধর্ম হতে বিমুখ হবে? এবং নিশ্চয়ই আমি তাকে এই পৃথিবীতে মনোনীত করেছিলাম, নিশ্চয়ই সে সৎ কর্মশীলগণের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৩০
137 ২. আল-বাকারা যখন তার রাব্ব তাকে বলেছিলেনঃ তুমি আনুগত্য স্বীকার কর; সে বলেছিল: আমি বিশ্বজগতের রবের নিকট আত্মসমর্পণ করলাম। ১৩১
138 ২. আল-বাকারা আর ইবরাহীম ও ইয়াকূব স্বীয় সন্তানদেরকে সদুপদেশ প্রদান করেছিলঃ হে আমার বংশধরগণ! নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের জন্য এই ধর্ম মনোনীত করেছেন, অতএব তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যু বরণ করনা। ১৩২
139 ২. আল-বাকারা যখন ইয়াকূবের মৃত্যু উপস্থিত হল তখন কি তোমরা উপস্থিত ছিলে, যখন সে নিজ পুত্রদেরকে বলেছিলঃ আমার পরে তোমরা কোন্ জিনিসের ইবাদাত করবে? তারা বলেছিলঃ আমরা তোমার উপাস্যের এবং তোমার পিতৃপুরুষ ইবরাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাকের উপাস্য - সেই অদ্বিতীয় উপাস্যের ইবাদাত করব এবং আমরা তাঁরই অনুগত থাকব। ১৩৩
140 ২. আল-বাকারা ওটি একটি দল ছিল, যা অতীত হয়ে গেছে; তারা যা অর্জন করেছিল তা তাদের জন্য এবং তোমরা যা অর্জন করেছ তা তোমাদের জন্য এবং তারা যা করে গেছে তজ্জন্য তোমরা জিজ্ঞাসিত হবেনা। ১৩৪
141 ২. আল-বাকারা এবং তারা বলে যে, তোমরা ইয়াহুদী অথবা খৃষ্টান হও, তাহলেই সুপথ প্রাপ্ত হবে; তুমি বলঃ বরং আমরা ইবরাহীমের সুদৃঢ় ধর্মে আছি এবং সে অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলনা। ১৩৫
142 ২. আল-বাকারা তোমরা বলঃ আমরা আল্লাহর প্রতি এবং যা আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে, আর যা ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তদীয় বংশধরগণের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছিল এবং যা মূসা ও ঈসাকে প্রদান করা হয়েছিল এবং অন্যান্য নাবীগণকে তাদের রাব্ব হতে যা প্রদত্ত হয়েছিল, তদসমুদয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করছি, তাদের মধ্যে কেহকেও আমরা প্রভেদ করিনা, এবং আমরা তাঁরই প্রতি আত্মসমর্পণকারী। ১৩৬
143 ২. আল-বাকারা অনন্তর তোমরা যেরূপ বিশ্বাস স্থাপন করেছ, তারাও যদি তদ্রুপ বিশ্বাস স্থাপন করে তাহলে নিশ্চয়ই তারা সুপথ প্রাপ্ত হবে; এবং যদি তারা ফিরে যায় তাহলে তারা শুধু বিরুদ্ধাচরণেই ফিরে যাবে; অতএব অচিরেই আল্লাহ তাদের প্রতিকূলে তোমাকেই যথেষ্ট করবেন এবং তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। ১৩৭
144 ২. আল-বাকারা আমরা আল্লাহরই রংয়ে রঞ্জিত, আল্লাহ অপেক্ষা কে শ্রেষ্ঠতম রঞ্জনকারী? এবং আমরা তাঁরই বান্দা। ১৩৮
145 ২. আল-বাকারা তুমি বলঃ তোমরা কি আল্লাহ সম্বন্ধে আমাদের সঙ্গে বিরোধ করছ? অথচ তিনিই আমাদের রাব্ব ও তোমাদের রাব্ব, এবং আমাদের জন্য আমাদের কার্যসমূহ এবং তোমাদের জন্য তোমাদের কার্যসমূহ এবং আমরা তাঁরই প্রতি বিশ্বস্ত। ১৩৯
146 ২. আল-বাকারা তোমরা কি বলছ - ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তদীয় বংশধরগণ ইয়াহুদী ও খৃষ্টান ছিল? তুমি বলঃ তোমরাই সঠিক জ্ঞানী না আল্লাহ এবং আল্লাহর নিকট হতে প্রাপ্ত সাক্ষ্য যে ব্যক্তি গোপন করছে সে অপেক্ষা কে বেশি অত্যাচারী? এবং তোমরা যা করছ তা হতে আল্লাহ অমনোযোগী নন ১৪০
147 ২. আল-বাকারা ওটা একটি জামা‘আত ছিল যা বিগত হয়েছে; তারা যা অর্জন করেছে তা তাদের জন্য এবং তোমরা যা অর্জন করেছ তা তোমাদের জন্য, এবং তারা যা করে গেছে তদ্বিষয়ে তোমরা জিজ্ঞাসিত হবেনা। ১৪১
148 ২. আল-বাকারা মানবমন্ডলীর মধ্যস্থিত নির্বোধেরা অচিরেই বলবে, কিসে তাদেরকে সেই কিবলা হতে প্রত্যাবৃত্ত করল যার দিকে তারা ছিল? তুমি বলে দাওঃ পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই জন্য, তিনি যাকে ইচ্ছা সরল পথ প্রদর্শন করেন। ১৪২
149 ২. আল-বাকারা এভাবে আমি তোমাদেরকে আদর্শ জাতি করেছি, যেন তোমরা মানবগণের জন্য সাক্ষী হও এবং রাসূলও তোমাদের জন্য সাক্ষী হয়; এবং তুমি যে কিবলার দিকে ছিলে তা আমি এ জন্য প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম যে, কে রাসূলের অনুসরণ করে, আর কে তা হতে স্বীয় পদদ্বয়ে পশ্চাতে ফিরে যায় আমি তা জেনে নিব এবং আল্লাহ যাদেরকে পথ প্রদর্শন করেছেন তারা ছাড়া অপরের জন্য এটি অবশ্যই কঠোরতর; এবং আল্লাহ এরূপ নন যে, তোমাদের বিশ্বাস বিনষ্ট করেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের প্রতি স্নেহশীল, করুণাময়। ১৪৩
150 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই আমি আকাশের দিকে তোমার মুখমন্ডল উত্তোলন অবলোকন করেছি। তাই আমি তোমাকে ঐ কিবলাহমুখীই করাচ্ছি যা তুমি কামনা করছো। অতএব তুমি মাসজিদুল হারামের দিকে তোমার মুখমন্ডল ফিরিয়ে দাও এবং তোমরা যেখানেই থাক তোমাদের আনন সে দিকেই প্রত্যাবর্তিত কর; এবং নিশ্চয়ই যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তারা অবশ্যই অবগত আছে যে, নিশ্চয়ই এটি তাদের রবের নিকট হতে প্রেরিত সত্য; এবং তারা যা করছে তদ্বিষয়ে আল্লাহ অমনোযোগী নন। ১৪৪
151 ২. আল-বাকারা এবং যাদেরকে গ্রন্থ প্রদত্ত হয়েছে তাদের নিকট যদি তুমি সমুদয় নিদর্শন আনয়ন কর তবুও তারা তোমার কিবলাহকে গ্রহণ করবেনা; এবং তুমিও তাদের কিবলাহ গ্রহণ করতে পারনা, আর তাদের কোন দলও অন্য দলের কিবলাহকে স্বীকার করেনি, এবং তোমার নিকট যে জ্ঞান এসেছে এর পরেও যদি তুমি তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ কর তাহলে নিশ্চয়ই তুমি অত্যাচারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। ১৪৫
152 ২. আল-বাকারা যাদেরকে আমি কিতাব প্রদান করেছি তারা তাকে এরূপভাবে চিনে, যেমন চিনে তারা আপন সন্তানদেরকে এবং নিশ্চয়ই তাদের এক দল জ্ঞাতসারে সত্যকে গোপন করছে। ১৪৬
153 ২. আল-বাকারা এই বাস্তব সত্য তোমার রবের পক্ষ হতে; সুতরাং তুমি সংশয়ীদের অন্তর্ভুক্ত হয়োনা। ১৪৭
154 ২. আল-বাকারা প্রত্যেকের জন্য এক একটি লক্ষ্যস্থল রয়েছে, ঐ দিকেই সে মুখমন্ডল প্রত্যাবর্তিত করে, অতএব তোমরা কল্যাণের দিকে ধাবিত হও; তোমরা যেখানেই থাকনা কেন, আল্লাহ তোমাদের সকলকেই একত্রিত করবেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে পূর্ণ ক্ষমতাবান। ১৪৮
155 ২. আল-বাকারা এবং তুমি যেখান হতেই বের হবে- তোমার মুখ পবিত্রতম মাসজিদের দিকে প্রত্যাবর্তিত কর এবং নিশ্চয়ই এটাই তোমার রবের নিকট হতে প্রেরিত সত্য এবং তোমরা যা করছ তদ্বিষয়ে আল্লাহ অমনোযোগী নন। ১৪৯
156 ২. আল-বাকারা আর তুমি যেখান হতেই নিস্ক্রান্ত হও - তোমার মুখ পবিত্রতম মাসজিদের দিকে ফিরাও এবং যে যেখানে আছ তোমাদের মুখমন্ডল তদ্দিকেই প্রত্যাবর্তিত কর যেন অত্যাচারীরা ব্যতীত অপরে তোমাদের সাথে বির্তক করতে না পারে। অতএব তোমরা তাদেরকে ভয় করনা, বরং আমাকেই ভয় কর যেন আমি তোমাদের উপর আমার অনুগ্রহ পূর্ণ করি, এবং যেন তোমরা সুপথ প্রাপ্ত হও। ১৫০
157 ২. আল-বাকারা আমি তোমাদের মধ্য হতে এরূপ রাসূল প্রেরণ করেছি যে তোমাদের নিকট আমার নিদর্শনাবলী পাঠ করে এবং তোমাদেরকে পবিত্র করে, তোমাদেরকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান শিক্ষা দেয় এবং তোমরা যা অবগত ছিলেনা তা শিক্ষা দান করে। ১৫১
158 ২. আল-বাকারা অতএব তোমরা আমাকেই স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকেই স্মরণ করব এবং তোমরা আমারই নিকট কৃতজ্ঞ হও এবং অবিশ্বাসী হয়োনা। ১৫২
159 ২. আল-বাকারা হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলগণের সাথে আছেন। ১৫৩ নামাজ
160 ২. আল-বাকারা আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে মৃত বলনা, বরং তারা জীবিত; কিন্তু তোমরা তা অবগত নও। ১৫৪
161 ২. আল-বাকারা এবং নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা, ধন, প্রাণ এবং ফল-ফসলের দ্বারা পরীক্ষা করব; এবং ঐ সব ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ প্রদান কর। ১৫৫
162 ২. আল-বাকারা যাদের উপর কোন বিপদ নিপতিত হলে তারা বলে, নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহরই জন্য এবং নিশ্চয়ই আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। ১৫৬
163 ২. আল-বাকারা এদের উপর তাদের রবের পক্ষ হতে শান্তি ও করুনা বর্ষিত হবে এবং এরাই সুপথগামী। ১৫৭
164 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই ‘সাফা’ ও ‘মারওয়া’ আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্গত। অতএব যে ব্যক্তি এই গৃহে ‘হাজ্জ’ অথবা ‘উমরাহ’ পালন’ করে তার জন্য এতদুভয়ের প্রদক্ষিণ করা দোষণীয় নয়, এবং কোন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সৎ কাজ করলে আল্লাহ গুণগ্রাহী, সর্বজ্ঞাত। ১৫৮
165 ২. আল-বাকারা আমি যে সব উজ্জ্বল নিদর্শন ও পথ-নির্দেশ অবতীর্ণ করেছি ঐগুলিকে সর্ব সাধারণের নিকট প্রকাশ করার পরও যারা ঐসব বিষয়কে গোপন করে, আল্লাহ তাদেরকে অভিসম্পাত করেন এবং অভিসম্পাতকারীরাও তাদেরকে অভিসম্পাত করে থাকে। ১৫৯
166 ২. আল-বাকারা কিন্তু যারা তাওবাহ করে ও সংশোধিত হয় এবং সত্য প্রকাশ করে, বস্ত্ততঃ আমি তাদের প্রতি ক্ষমা প্রদানকারী, করুণাময়। ১৬০
167 ২. আল-বাকারা যারা অবিশ্বাস করেছে ও অবিশ্বাসী অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে, নিশ্চয়ই তাদের উপর আল্লাহর মালাক/ফেরেশতা এবং মানবকূলের সবারই অভিসম্পাত। ১৬১
168 ২. আল-বাকারা তন্মধ্যে তারা সর্বদা অবস্থান করবে, তাদের শাস্তি প্রশমিত হবেনা এবং তাদেরকে অবকাশ দেয়া হবেনা। ১৬২ জাহান্নাম
169 ২. আল-বাকারা এবং তোমাদের ইলাহ একমাত্র আল্লাহ; সেই সর্বদাতা করুণাময় ব্যতীত অন্য কেহ উপাস্য নেই। ১৬৩
170 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টিতে, দিন ও রাতের পরিবর্তনে, নৌ-পথে জাহাজসমূহের চলাচলে - যাতে রয়েছে মানুষের জন্য কল্যাণ। মৃত পৃথিবীকে সঞ্জীবিত করণে, তাতে নানাবিধ জীবজন্তু সঞ্চারিত করার জন্য আল্লাহ আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। বায়ুরাশির গতি পরিবর্তনে এবং আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যস্থ সঞ্চিত মেঘের সঞ্চারণে সত্যি সত্যিই জ্ঞানবান সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে। ১৬৪ মোজেজা
171 ২. আল-বাকারা এবং মানবমন্ডলীর মধ্যে এরূপ আছে - যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে সদৃশ স্থির করে, আল্লাহকে ভালবাসার ন্যায় তারা তাদেরকে ভালবাসে। এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে আল্লাহর প্রতি - তাদের প্রেম দৃঢ়তর এবং যারা অত্যাচার করেছে তারা যদি শাস্তি অবলোকন করত তাহলে দেখত, সমুদয় শক্তিই আল্লাহর এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর। ১৬৫
172 ২. আল-বাকারা যাদের অনুসরণ করা হয়েছে তারা যখন অনুসারীদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে তখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে এবং তাদের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ১৬৬
173 ২. আল-বাকারা অনুসরণকারীরা বলবেঃ যদি আমরা ফিরে যেতে পারতাম তাহলে তারা যেরূপ আমাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে আমরাও তদ্রুপ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করতাম। এভাবে আল্লাহ তাদের কৃতকর্মের পরিণাম দুঃখজনকভাবে প্রদর্শন করবেন এবং তারা অগ্নি হতে উদ্ধার পাবেনা। ১৬৭ জাহান্নাম
174 ২. আল-বাকারা হে মানবমন্ডলী! পৃথিবীর মধ্যে যা বৈধ ও পবিত্র, তা হতে আহার কর এবং শাইতানের পদাঙ্ক অনুসরণ করনা, নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। ১৬৮
175 ২. আল-বাকারা সে এতদ্ব্যতীত তোমাদেরকে আদেশ করে শাইতানী ও অশ্লীল কাজ করতে এবং আল্লাহ সম্বন্ধে তোমরা যা জাননা তা বলতে। ১৬৯
176 ২. আল-বাকারা এবং যখন তাদেরকে বলা হয় যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা অনুসরণ কর তখন তারা বলেঃ বরং আমরা ওরই অনুসরণ করব যা আমাদের পিতৃ-পুরুষগণ হতে প্রাপ্ত হয়েছি; যদিও তাদের পিতৃ-পুরুষদের কোনই জ্ঞান ছিলনা এবং তারা সুপথগামীও ছিলনা। ১৭০
177 ২. আল-বাকারা আর যারা অবিশ্বাস করেছে তাদের দৃষ্টান্ত ওদের ন্যায় - যেমন কেহ আহবান করলে শুধু চীৎকার ও ধ্বনি ব্যতীত আর কিছুই শোনেনা, তারা বধির, মুক, অন্ধ; কাজেই তারা বুঝতে পারেনা। ১৭১
178 ২. আল-বাকারা হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! আমি তোমাদেরকে যা উপজীবিকা স্বরূপ দান করেছি সেই পবিত্র বস্তুসমূহ আহার কর এবং আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর, যদি তোমরা তাঁরই ইবাদাত করে থাক। ১৭২
179 ২. আল-বাকারা তিনি শুধু তোমাদের জন্য মৃত জীব, রক্ত, শুকরের মাংস এবং যা আল্লাহ ব্যতীত অপরের উদ্দেশে নিবেদিত - তদ্ব্যতীত অবৈধ করেননি; বস্তুতঃ যে ব্যক্তি নিরূপায়, কিন্তু সীমা লংঘনকারী নয়, তার জন্য পাপ নেই; এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১৭৩
180 ২. আল-বাকারা আল্লাহ যা গ্রন্থে অবতীর্ণ করেছেন তা যারা গোপন করে ও তৎপরিবর্তে নগণ্য মূল্য গ্রহণ করে, নিশ্চয়ই তারা অগ্নি ছাড়া অন্য কিছু ভক্ষন করেনা; এবং উত্থান দিনে আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেননা, তাদেরকে পবিত্র করবেননা এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। ১৭৪ কিয়ামত
181 ২. আল-বাকারা ওরাই সুপথের বিনিময়ে কুপথ এবং ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি ক্রয় করেছে, অতঃপর জাহান্নামের আগুন কিরূপে সহ্য করবে? ১৭৫ জাহান্নাম
182 ২. আল-বাকারা এ জন্যই আল্লাহ সত্যসহ গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন এবং যারা গ্রন্থ সম্বন্ধে বিরোধ করে বাস্তবিকই তারা বিরুদ্ধাচরণে সুদূরগামী। ১৭৬
183 ২. আল-বাকারা তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল পূর্ব বা পশ্চিম দিকে প্রত্যাবর্তিত করলেই তাতে পুণ্য নেই, বরং পুণ্য তার যে ব্যক্তি আল্লাহ, আখিরাত, মালাইকা/ফেরেশতা, কিতাব ও নাবীগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাঁরই প্রেমে ধন-সম্পদের প্রতি আকর্ষণ থাকা সত্ত্বেও সে তা আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, দরিদ্র, পথিক ও ভিক্ষুকদেরকে এবং দাসত্ব মোচনের জন্য ব্যয় করে, আর সালাত প্রতিষ্ঠিত করে ও যাকাত প্রদান করে এবং অঙ্গীকার করলে তা পূরণ করে এবং যারা অভাবে ও ক্লেশে এবং যুদ্ধকালে ধৈর্যশীল তারাই সত্য পরায়ণ এবং তারাই ধর্মভীরু। ১৭৭ নামাজ
184 ২. আল-বাকারা হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! নিহতদের সম্বন্ধে তোমাদের জন্য প্রতিশোধ গ্রহণ বিধিবদ্ধ করা হল; স্বাধীনের পরিবর্তে স্বাধীন, দাসের পরিবর্তে দাস এবং নারীর পরিবর্তে নারী। কিন্তু যদি কেহ তার ভাই কর্তৃক কোন বিষয়ে ক্ষমা প্রাপ্ত হয় তাহলে যেন ন্যায় সঙ্গতভাবে পাওনা সাব্যস্ত করা হয় এবং সদ্ভাবে তা পরিশোধ করে। এটা তোমাদের রবের পক্ষ হতে লঘু বিধান ও করুণা; অতঃপর যে কেহ সীমা লংঘন করবে তার জন্য যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি রয়েছে। ১৭৮
185 ২. আল-বাকারা হে জ্ঞানবান লোকেরা! কিসাসের মধ্যে তোমাদের জন্য জীবন রয়েছে, যেন তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করতে পার। ১৭৯
186 ২. আল-বাকারা যখন তোমাদের কারও মৃত্যু নিকটবর্তী বলে মনে হয়, তখন সে যদি ধন সম্পত্তি রেখে যায় তাহলে মাতা-পিতা ও আত্মীয়-স্বজনের জন্য বৈধভাবে অসীয়াত করা তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ হল, ধর্ম-ভীরুদের এটা অবশ্য করণীয়। ১৮০
187 ২. আল-বাকারা অতঃপর যে ব্যক্তি শোনার পর তা পরিবর্তন করে, তাহলে এর পাপ তাদেরই হবে যারা একে পরিবর্তন করবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। ১৮১
188 ২. আল-বাকারা অনন্তর যদি কেহ অসীয়াতকারীর পক্ষে পক্ষপাতিত্ব অথবা পাপের আশঙ্কা করে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়, তাতে তার পাপ নেই; নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১৮২
189 ২. আল-বাকারা হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমাদের পূর্ববতী লোকদের ন্যায় তোমাদের উপরও সিয়ামকে অপরিহার্য কর্তব্য রূপে নির্ধারণ করা হল যেন তোমরা সংযমশীল হতে পারো। ১৮৩ রোজা
190 ২. আল-বাকারা ওটা নির্দিষ্ট কয়েক দিন। কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে কেহ পীড়িত কিংবা প্রবাসী হয় তার জন্য অপর কোন দিন হতে গণনা করবে, আর যারা ওতে অক্ষম তারা তৎপরিবর্তে একজন দরিদ্রকে আহার্য দান করবে। অতএব যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সৎ কাজ করে তার জন্য কল্যাণ এবং তোমরা যদি বুঝে থাক তাহলে সিয়াম পালনই তোমাদের জন্য কল্যাণকর। ১৮৪ রোজা
191 ২. আল-বাকারা রামাযান মাস, যে মাসে বিশ্বমানবের জন্য পথ প্রদর্শন এবং সু-পথের উজ্জ্বল নিদর্শন এবং হক ও বাতিলের প্রভেদকারী কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। অতএব তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সেই মাসে (নিজ আবাসে) উপস্থিত থাকে সে যেন সিয়াম পালন করে এবং যে ব্যক্তি পীড়িত অথবা প্রবাসী, তার জন্য অপর কোন দিন হতে গণনা করবে; তোমাদের পক্ষে যা সহজসাধ্য আল্লাহ তা’ই ইচ্ছা করেন ও তোমাদের পক্ষে যা দুঃসাধ্য তা ইচ্ছা করেননা এবং যেন তোমরা নির্ধারিত সংখ্যা পূরণ করে নিতে পার এবং তোমাদেরকে যে সুপথ দেখিয়েছেন তজ্জন্য তোমরা আল্লাহকে মহিমান্বিত কর এবং যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। ১৮৫ রোজা
192 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমার সেবকবৃন্দ (বান্দা) আমার সম্বন্ধে তোমাকে জিজ্ঞেস করে তখন তাদেরকে বলে দাওঃ নিশ্চয়ই আমি সন্নিকটবর্তী। কোন আহবানকারী যখনই আমাকে আহবান করে তখনই আমি তার আহবানে সাড়া দিই; সুতরাং তারাও যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমাকে বিশ্বাস করে - তাহলেই তারা সঠিক পথপ্রাপ্ত হতে পারবে। ১৮৬
193 ২. আল-বাকারা রামাযানের রাতে আপন স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করা তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে, তারা তোমাদের জন্য এবং তোমরা তাদের জন্য আবরণ, তোমরা যে নিজেদের ক্ষতি করছিলে আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেন, এ জন্য তিনি তোমাদের প্রতি প্রত্যাবৃত্ত হলেন এবং তোমাদের (ভার) লাঘব করে দিলেন; অতএব এক্ষণে তোমরা (রামাযানের রাতেও) তাদের সাথে মিলিত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিপিবদ্ধ করেছেন তা অনুসন্ধান কর এবং প্রত্যুষে কালো সূতা হতে সাদা সূতা প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত তোমরা আহার ও পান কর, অতঃপর রাত সমাগম পর্যন্ত তোমরা সিয়াম পূর্ণ কর; তোমরা মাসজিদে ই‘তিকাফ করার সময় (তোমাদের স্ত্রীদের সাথে) মিলিত হবেনা; এটিই আল্লাহর সীমা। অতএব তোমরা উহার নিকটেও যাবেনা; এভাবে আল্লাহ মানবমন্ডলীর জন্য তাঁর নিদর্শনসমূহ বিবৃত করেন, যেন তারা সংযত হয়। ১৮৭ রোজা
194 ২. আল-বাকারা এবং তোমরা নিজেদের মধ্যে পরস্পরের ধন সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করনা এবং তা বিচারকের নিকট টোপ হিসাবে উপস্থাপন করনা যাতে তোমরা জ্ঞাতসারে লোকের সম্পদের অংশ অন্যায়ভাবে উদরস্থ করতে পার। ১৮৮
195 ২. আল-বাকারা তারা তোমাকে নতুন চাঁদসমূহ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করছে। তুমি বলঃ এগুলি হচ্ছে সমগ্র মানব জাতির জন্য সময়সমূহ (মাসসমূহ) নির্ধারণ (গণনা বা হিসাব) করার মাধ্যম এবং হাজ্জের জন্য; আর (ঐ হাজ্জের চাঁদে) তোমরা যে পশ্চাৎ দিক দিয়ে গৃহে প্রবেশ কর এটি পুণ্যের কাজ নয়, বরং পুণ্যের কাজ হল যে ব্যক্তি সংযমশীলতা অবলম্বন করল। এবং তোমরা গৃহসমূহে ওগুলির দরযা দিয়ে প্রবেশ কর এবং আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সুফল প্রাপ্ত হও। ১৮৯
196 ২. আল-বাকারা এবং যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে, তোমরাও তাদের সাথে আল্লাহর পথে যুদ্ধ কর এবং সীমা অতিক্রম করনা; নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমা লংঘনকারীদেরকে ভালবাসেননা। ১৯০
197 ২. আল-বাকারা তাদেরকে যেখানেই পাও, হত্যা কর এবং তারা তোমাদেরকে যেখান হতে বহিস্কার করেছে তোমরাও তাদেরকে সেখান হতে বহিস্কার কর এবং হত্যা অপেক্ষা অশান্তি (ফিতনা) গুরুতর এবং তোমরা তাদের সাথে পবিত্রতম মাসজিদের নিকট যুদ্ধ করনা, যে পর্যন্ত না তারা তোমাদের সাথে তন্মধ্যে যুদ্ধ করে; কিন্তু যদি তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে তাহলে তোমরাও তাদেরকে হত্যা কর; অবিশ্বাসীদের জন্য এটাই প্রতিফল। ১৯১
198 ২. আল-বাকারা অতঃপর যদি নিবৃত্ত হয় তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১৯২
199 ২. আল-বাকারা ফিতনা দূর হয়ে আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ কর; অতঃপর যদি তারা নিবৃত্ত হয় তাহলে অত্যাচারীদের উপর ব্যতীত শত্রুতা নেই। ১৯৩
200 ২. আল-বাকারা নিষিদ্ধ মাসের পরিবর্তে নিষিদ্ধ মাস ও সমস্ত নিষিদ্ধ বিষয় পরস্পর সমান; অতঃপর যে কেহ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করে, তাহলে সে তোমাদের প্রতি যেরূপ অত্যাচার করবে তোমরাও তার প্রতি সেরূপ অত্যাচার কর এবং আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখ যে, আল্লাহ সংযমশীলদের সঙ্গী। ১৯৪
201 ২. আল-বাকারা এবং তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় কর এবং স্বীয় হস্ত ধ্বংসের দিকে প্রসারিত করনা এবং কল্যাণ সাধন করতে থাকো, নিশ্চয়ই আল্লাহ কল্যাণ সাধনকারীদের ভালবাসেন। ১৯৫
202 ২. আল-বাকারা তোমরা আল্লাহর উদ্দেশে হাজ্জ ও ‘ওমরাহ সম্পূর্ণ কর; কিন্তু তোমরা যদি বাধাপ্রাপ্ত হও তাহলে যা সহজ প্রাপ্র তাই উৎসর্গ কর এবং কুরবানীর জন্তুগুলি স্বস্থানে না পৌঁছা পর্যন্ত তোমাদের মস্তক মুন্ডন করনা। কিন্তু কেহ যদি তোমাদের মধ্যে পীড়িত হয়, অথবা তার মস্তিস্ক যন্ত্রনাগ্রস্ত হয় তাহলে সে সিয়াম কিংবা সাদাকাহ অথবা কুরবানী দ্বারা ওর বিনিময় করবে, অতঃপর যখন তোমরা শান্তিতে থাকো তখন যে ব্যক্তি ওমরাহ্ ও হাজ্জ একত্রে কামনা করে তাহলে যা সহজ প্রাপ্য তা’ই উৎসর্গ করবে। কিন্তু কেহ যদি তা প্রাপ্ত না হয় তাহলে হাজ্জের সময় তিন দিন এবং যখন তোমরা প্রত্যাবর্তিত হও তখন সাত দিন - এই পূর্ণ দশ দিন সিয়াম পালন করবে; এটা তারই জন্য - যার পরিজন পবিত্রতম মাসজিদে উপস্থিত না থাকে এবং আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখ যে, আল্লাহ কঠিন শাস্তি দাতা। ১৯৬ রোজা
203 ২. আল-বাকারা হাজ্জের মাসগুলি সুবিদিত। কেহ যদি ঐ মাসগুলির মধ্যে হাজ্জের সংকল্প করে তাহলে সে হাজ্জের সময়ে সহবাস, দুস্কার্য ও কলহ করতে পারবেনা এবং তোমরা যে কোন সৎ কাজ করনা কেন আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেন। আর তোমরা তোমাদের সাথে পাথেয় নিয়ে নাও। বস্ত্ততঃ উৎকৃষ্ট পাথেয় হচ্ছে তাকওয়া বা আত্মসংযম। সুতরাং হে জ্ঞানবানগণ! আমাকে ভয় কর। ১৯৭
204 ২. আল-বাকারা তোমরা স্বীয় রবের অনুগ্রহ লাভের চেষ্টা করলে তাতে তোমাদের পক্ষে কোন অপরাধ নেই; অতঃপর যখন তোমরা আরাফাত হতে প্রত্যাবর্তিত হও তখন পবিত্র স্মৃতি-স্থানের নিকট আল্লাহকে স্মরণ কর; এবং তিনি তোমাদেরকে যেরূপ নির্দেশ দিয়েছেন তদ্রুপ তাঁকে স্মরণ কর; এবং নিশ্চয়ই তোমরা এর পূর্বে বিভ্রান্তদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে। ১৯৮
205 ২. আল-বাকারা অতঃপর অন্যান্যরা যেখান হতে প্রত্যাবর্তন করে তোমরাও প্রত্যাবর্তন কর এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১৯৯
206 ২. আল-বাকারা অনন্তর যখন তোমরা তোমাদের (হাজ্জের) অনুষ্ঠানগুলি সম্পন্ন করে ফেল তখন যেরূপ তোমাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে স্মরণ করতে তদ্রুপ আল্লাহকে স্মরণ কর, বরং তদপেক্ষা দৃঢ়তরভাবে স্মরণ কর; কিন্তু মানবমন্ডলীর মধ্যে কেহ কেহ এরূপ আছে যারা বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে ইহকালেই দান কর এবং তাদের জন্য আখিরাতে কোনই অংশ নেই। ২০০
207 ২. আল-বাকারা আর তাদের মধ্যে কেহ কেহ বলে - হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দান করুন ও আখিরাতে কল্যাণ দান করুন এবং জাহান্নামের শাস্তি হতে আমাদেরকে রক্ষা করুন। ২০১ জাহান্নাম
208 ২. আল-বাকারা তারা যা অর্জন করেছে, তাদের জন্য তারই অংশ রয়েছে এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ সত্ত্বর হিসাব গ্রহণকারী। ২০২
209 ২. আল-বাকারা এবং নির্ধারিত দিনসমূহে আল্লাহকে স্মরণ কর; অতঃপর কেহ যদি দু’ দিনের মধ্যে (মাক্কায় ফিরে যেতে) তাড়াহুড়া করে তাহলে তার জন্য কোন পাপ নেই। পক্ষান্তরে কেহ যদি দু‘ দিন বিলম্ব করে তাহলে তার জন্যও পাপ নেই এবং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখ যে, তোমাদের সকলকে তাঁরই সন্নিধানে সমবেত করা হবে। ২০৩
210 ২. আল-বাকারা এবং মানুষের মধ্যে এমনও আছে যার পার্থিব জীবন সংক্রান্ত কথা তোমাকে চমৎকৃত করে, আর সে নিজের (অন্তরস্থ সততা) সম্বন্ধে আল্লাহকে সাক্ষী করে থাকে, কিন্তু বস্তুতঃ সে হচ্ছে কঠোর কলহপরায়ণ ব্যক্তি। ২০৪
211 ২. আল-বাকারা যখন সে প্রত্যাবর্তন করে তখন তার উদ্দেশ্য থাকে দুনিয়ায় অশান্তি সৃষ্টি করা এবং শস্য-ক্ষেত্র ও জীব-জন্তু বিনাশ করা; এবং আল্লাহ অশান্তি ভালবাসেন না। ২০৫
212 ২. আল-বাকারা যখন তাকে বলা হয়, তুমি আল্লাহকে ভয় কর, তখন প্রতিপত্তির অহমিকা তাকে অধিকতর অনাচারে লিপ্ত করে। অতএব জাহান্নামই তার জন্য যথেষ্ট এবং নিশ্চয়ই ওটা নিকৃষ্ট আশ্রয় স্থল। ২০৬ জাহান্নাম
213 ২. আল-বাকারা পক্ষান্তরে কোন কোন লোক এরূপ আছে যে আল্লাহর সন্তুষ্টি সাধনের জন্য আত্মবির্সজন করে, এবং আল্লাহ হচ্ছেন সমস্ত বান্দার প্রতি স্নেহ-পরায়ণ। ২০৭
214 ২. আল-বাকারা হে মু’মিনগণ! তোমরা পূর্ণ রূপে ইসলামে প্রবিষ্ট হও এবং শাইতানের পদাংক অনুসরণ করনা, নিশ্চয়ই সে তোমাদের জন্য প্রকাশ্য শত্রু। ২০৮
215 ২. আল-বাকারা অতঃপর স্পষ্ট দলীল প্রমাণাদী তোমাদের নিকট সমাগত হওয়ার পরেও যদি তোমরা পদস্খলিত হয়ে যাও তাহলে জেনে রেখ, আল্লাহ হচ্ছেন মহাপরাক্রান্ত, বিজ্ঞানময়। ২০৯
216 ২. আল-বাকারা তারা শুধু এই অপেক্ষাই করছে যে, আল্লাহ শুভ্র মেঘমালার ছায়াতলে মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে সঙ্গে নিয়ে তাদের নিকট সমাগত হবেন ও সমস্ত কাজের নিস্পত্তি করবেন। এবং আল্লাহরই নিকট সমস্ত কার্য প্রত্যাবর্তিত হয়ে থাকে। ২১০
217 ২. আল-বাকারা ইসরাঈল বংশীয়দেরকে জিজ্ঞেস কর, আমি কত স্পষ্ট প্রমাণ তাদেরকে প্রদান করেছি। এবং যে কেহ তার নিকট আল্লাহর অনুগ্রহ সম্পদ আসার পর তা পরিবর্তন করে তাহলে জেনে রেখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা। ২১১
218 ২. আল-বাকারা যারা অবিশ্বাস করেছে তাদের পার্থিব জীবন সুশোভিত করা হয়েছে এবং তারা বিশ্বাস স্থাপনকারীদেরকে উপহাস করে থাকে, এবং যারা ধর্মভীরু তাদেরকে উত্থান দিনে সমুন্নত করা হবে; এবং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন অপরিমিত জীবিকা দান করে থাকেন। ২১২
219 ২. আল-বাকারা মানব জাতি একই সম্প্রদায়ভুক্ত ছিল; অতঃপর আল্লাহ সুসংবাদ বাহক ও ভয় প্রদর্শক রূপে নাবীগণকে প্রেরণ করলেন এবং তিনি তাদের সাথে সত্যসহ গ্রন্থ অবতীর্ণ করলেন যেন (ঐ কিতাব) তাদের মতভেদের বিষয়গুলি সম্বন্ধে মীমাংসা করে দেয়, অথচ যারা কিতাব প্রাপ্ত হয়েছিল, স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ তাদের নিকট সমাগত হওয়ার পর, পরস্পরের প্রতি হিংসা বিদ্বেষ বশতঃ তারা সেই কিতাবকে নিয়ে মতভেদ ঘটিয়ে বসলো, বিশ্বাস স্থাপনকারীরা যে বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করত আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে সেই বিষয়ে তাদেরকে সত্য পথে পরিচালিত করেন। আল্লাহর যাকে ইচ্ছা সঠিক পথে পরিচালিত করেন। ২১৩
220 ২. আল-বাকারা তোমরা কি মনে করেছ যে, তোমরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ তোমরা এখনও তাদের অবস্থা প্রাপ্ত হওনি যারা তোমাদের পূর্বে বিগত হয়েছে; তাদেরকে বিপদ ও দুঃখ স্পর্শ করেছিল এবং তাদেরকে প্রকম্পিত করা হয়েছিল; এমন কি রাসূল ও তৎসহ বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ বলেছিলঃ কখন আল্লাহর সাহায্য আসবে? সতর্ক হও, নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী। ২১৪
221 ২. আল-বাকারা তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করছে, তারা কিরূপে ব্যয় করবে? তুমি বলঃ তোমরা ধন সম্পত্তি হতে যা ব্যয় করবে তা মাতা-পিতার, আত্মীয়-স্বজনের, পিতৃহীনদের, দরিদ্রদের ও পথিকবৃন্দের জন্য কর; এবং তোমরা যে সব সৎকাজ কর নিশ্চয়ই আল্লাহ তা সম্যক রূপে অবগত। ২১৫
222 ২. আল-বাকারা জিহাদকে তোমাদের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য রূপে অবধারিত করা হয়েছে এবং এটি তোমাদের নিকট অপ্রীতিকর; বস্ত্ততঃ তোমরা এমন বিষয়কে অপছন্দ করছ যা তোমাদের পক্ষে বাস্তবিকই মঙ্গলজনক, পক্ষান্তরে তোমরা এমন বিষয়কে পছন্দ করছ যা তোমাদের জন্য বাস্তবিকই অনিষ্টকর এবং আল্লাহই (তোমাদের ভাল-মন্দ) অবগত আছেন এবং তোমরা অবগত নও। ২১৬
223 ২. আল-বাকারা তারা তোমাকে নিষিদ্ধ মাসে যুদ্ধ করা সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করছে। তুমি বলঃ ওর মধ্যে যুদ্ধ করা অতীব অন্যায়। আর আল্লাহর পথে প্রতিরোধ করা এবং তাঁকে অবিশ্বাস করা ও পবিত্র মাসজিদ হতে তার অধিবাসীদেরকে বহিস্কার করা আল্লাহর নিকট তদপেক্ষা গুরুতর অপরাধ; এবং অশান্তি সৃষ্টি হত্যা অপেক্ষা গুরুতর এবং যদি তারা সক্ষম হয় তাহলে তারা তোমাদেরকে তোমাদের ধর্ম হতে ফিরাতে না পারা পর্যন্ত নিবৃত্ত হবেনা; আর তোমাদের মধ্যকার কেহ যদি স্বধর্ম হতে ফিরে যায় এবং ঐ কাফির অবস্থায়ই তার মৃত্যু ঘটে তাহলে তার ইহকাল ও পরকাল সংক্রান্ত সমস্ত সাধনাই ব্যর্থ হয়ে যাবে; তারাই অগ্নির অধিবাসী এবং তারই মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। ২১৭
224 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং আল্লাহর পথে দেশ ত্যাগ করেছে ও ধর্ম-যুদ্ধ করেছে, তারাই আল্লাহর অনুগ্রহ প্রত্যাশী এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ২১৮
225 ২. আল-বাকারা মাদক দ্রব্য ও জুয়া খেলা সম্বন্ধে তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করছে। তুমি বলঃ এ দু’টোর মধ্যে গুরুতর পাপ রয়েছে এবং কোন কোন লোকের (কিছু) উপকার আছে, কিন্তু ও দু’টোর লাভ অপেক্ষা পাপই গুরুতর; তারা তোমাকে (আরও) জিজ্ঞেস করছে, তারা কি (পরিমান) ব্যয় করবে? তুমি বলঃ যা তোমাদের উদ্ধৃত্ত; এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য নিদর্শনাবলী ব্যক্ত করেন যেন তোমরা চিন্তা-ভাবনা কর। ২১৯
226 ২. আল-বাকারা পার্থিব ও পারলৌকিক বিষয়ে। তারা তোমাকে ইয়াতীমদের সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করছে; তুমি বলঃ তাদের হিত সাধন করাই উত্তম; এবং যদি তোমরা তাদেরকে সম্মিলিত করে নাও তাহলে তারা তোমাদের ভাই; আর কে অনিষ্টকারী, কে হিতাকাংখী আল্লাহ তা অবগত আছেন এবং যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন তাহলে তিনি তোমাদেরকে বিপদে ফেলতেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রান্ত, বিজ্ঞানময়। ২২০
227 ২. আল-বাকারা এবং মুশরিক নারীকে ঈমান না আনা পর্যন্ত তোমরা বিয়ে করনা এবং নিশ্চয়ই মু’মিন কৃতদাসী মুশরিক মহিলা অপেক্ষা উত্তম যদিও সে তোমাদেরকে মোহিত করে; এবং অংশীবাদীরা বিশ্বাস স্থাপন না করা পর্যন্ত তাদের সাথে (মুসলিম নারীদের) বিয়ে দিওনা এবং নিশ্চয়ই অংশীবাদী তোমাদের মনঃপুত হলেও বিশ্বাসী দাস তদপেক্ষা শ্রেয়তর; এরাই জাহান্নামের দিকে আহবান করে এবং আল্লাহ স্বীয় ইচ্ছায় জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহবান করেন ও মানবমন্ডলীর জন্য স্বীয় নিদর্শনাবলী বিবৃত করেন যেন তারা শিক্ষা গ্রহণ করে। ২২১ জাহান্নাম
228 ২. আল-বাকারা এবং তারা তোমাকে (স্ত্রীলোকদের) ঋতু সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করছে; তুমি বলঃ ওটা হচ্ছে অশুচি। অতএব ঋতুকালে স্ত্রীলোকদেরকে অন্তরাল কর এবং উত্তম রূপে শুদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটে যেওনা; অতঃপর যখন তারা পবিত্র হবে তখন আল্লাহর নির্দেশ মত তোমরা তাদের নিকট গমন কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাহকারীদেরকে ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরকেও ভালবাসেন। ২২২
229 ২. আল-বাকারা তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য ক্ষেত্র স্বরূপ; অতএব তোমরা যখন যেভাবে ইচ্ছা স্বীয় জীবনের জন্য ব্যবহার কর এবং নিজেদের আগামী দিনের জন্য ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখ, একদিন আল্লাহর সাথে সাক্ষাত হবে। আর বিশ্বাসীদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও। ২২৩
230 ২. আল-বাকারা এবং মানবমন্ডলীর মধ্যে হিত সাধন, পরহেযগারী ও মীমাংসা করে দেয়ার ক্ষেত্রে তোমরা স্বীয় শপথসমূহের জন্য আল্লাহর নামকে লক্ষ্যবস্তু বানিও না। বস্তুতঃ আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা। ২২৪
231 ২. আল-বাকারা তোমাদের নিরর্থক শপথসমূহের জন্য তোমাদেরকে আল্লাহ পাকড়াও করবেননা, কিন্তু তিনি তোমাদেরকে ঐ সব শপথ সম্বন্ধে ধরবেন যেগুলি তোমাদের মনের সংকল্প অনুসারে সাধিত হয়েছে; এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, ধৈর্যশীল। ২২৫
232 ২. আল-বাকারা যারা স্বীয় স্ত্রীগণ হতে পৃথক থাকার শপথ করে তারা চার মাস প্রতীক্ষা করবে, অতঃপর যদি তারা প্রত্যাবর্তিত হয় তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ২২৬
233 ২. আল-বাকারা পক্ষান্তরে যদি তারা তালাক দিতেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয় তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। ২২৭
234 ২. আল-বাকারা এবং তালাক প্রাপ্তাগণ তিন ঋতু পর্যন্ত অপেক্ষা করবে; এবং যদি তারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে তাহলে আল্লাহ তাদের গর্ভে যা সৃষ্টি করেছেন তা গোপন করা তাদের পক্ষে বৈধ হবেনা; এবং এর মধ্যে যদি তারা সন্ধি কামনা করে তাহলে তাদের স্বামীই তাদেরকে প্রতিগ্রহণ করতে সমধিক স্বত্ববান; আর নারীদের উপর তাদের স্বামীদের যেরূপ স্বত্ব আছে, স্ত্রীদেরও তাদের পুরুষদের (স্বামীর) উপর তদনুরূপ ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে; এবং তাদের উপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে; আল্লাহ হচ্ছেন মহা পরাক্রান্ত, বিজ্ঞানময়। ২২৮
235 ২. আল-বাকারা তালাক দুইবার; অতঃপর (স্ত্রীকে) হয় বিহিতভাবে রাখতে হবে অথবা সদ্ভাবে পরিত্যাগ করতে হবে; আর নিজেদের দেয় সম্পদ থেকে কিছু ফিরিয়ে নেয়া তোমাদের জন্য জায়েয নয় স্ত্রীদের কাছ থেকে, যদি উভয়ে আশংকা করে যে, তারা আল্লাহর সীমা স্থির রাখতে পারবেনা। অনন্তর তোমরা যদি আশংকা কর যে, আল্লাহর নির্দেশ ঠিক রাখতে পারবেনা, সেই অবস্থায় স্ত্রী নিজের মুক্তি লাভের জন্য কিছু বিনিময় দিলে তাতে উভয়ের কোন দোষ নেই; এগুলি হচ্ছে আল্লাহর সীমাসমূহ। অতএব তা অতিক্রম করনা এবং যারা আল্লাহর সীমা অতিক্রম করে বস্তুতঃ তারাই অত্যাচারী। ২২৯
236 ২. আল-বাকারা অতঃপর যদি সে তালাক প্রদান করে তাহলে এরপরে অন্য স্বামীর সাথে বিবাহিতা না হওয়া পর্যন্ত সে তার জন্য বৈধ হবেনা, অতঃপর সে তাকে তালাক প্রদান করলে যদি উভয়ে পরস্পর প্রত্যাবর্তিত হয় তাতে উভয়ের পক্ষে কোনই দোষ নেই, যদি আল্লাহর সীমারেখা বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। এবং এগুলিই আল্লাহর সীমাসমূহ, তিনি জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য এগুলি ব্যক্ত করে থাকেন। ২৩০
237 ২. আল-বাকারা এবং তোমরা যখন স্ত্রীদেরকে তালাক দাও, আর তারা তাদের নির্ধারিত সময়ে পৌঁছে যায়, তখন তাদেরকে নিয়মিতভাবে রাখতে পার অথবা নিয়মিতভাবে পরিত্যাগ করতে পার; এবং তাদেরকে যন্ত্রণা দেয়ার জন্য আবদ্ধ করে রেখনা, তাহলে সীমা লংঘন করবে; আর যে ব্যক্তি এরূপ করে সে নিশ্চয়ই নিজের প্রতি অবিচার করে থাকে। এবং আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে বিদ্রুপাচ্ছলে গ্রহণ করনা, তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ এবং তোমাদেরকে উপদেশ দানের জন্য গ্রন্থ ও বিজ্ঞান হতে যা অবতীর্ণ করেছেন তা স্মরণ কর, আর আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রেখ যে, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে মহাজ্ঞানী। ২৩১
238 ২. আল-বাকারা এবং যখন তোমরা স্ত্রীলোকদেরকে তালাক দাও, অতঃপর তারা তাদের নির্ধারিত সময়ে পৌছে যায়, তখন তারা উভয়েই যদি পরস্পরের প্রতি বিহিতভাবে সম্মত হয়ে থাকে, সেই অবস্থায় স্ত্রীরা নিজ স্বামীদেরকে বিয়ে করতে গেলে তোমরা তাদেরকে বাঁধা প্রদান করনা; তোমাদের মধ্যে যে আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে এর দ্বারা তাদেরকেই উপদেশ দেয়া হচ্ছে; তোমাদের জন্য এটি শুদ্ধতম ও পবিত্রতম (ব্যবস্থা) এবং আল্লাহ অবগত আছেন ও তোমরা অবগত নও। ২৩২
239 ২. আল-বাকারা এবং যদি কেহ স্তন্য পানের কাল পূর্ণ করতে ইচ্ছা করে তার জন্য জননীগণ পূর্ণ দুই বছর স্বীয় সন্তানদেরকে স্তন্য দান করবে; আর সন্তানের জনকগণ বিহিতভাবে প্রসূতিদের খোরাক ও তাদের পোশাক দিতে বাধ্য; কেহকেও তার সাধ্যের অতীত কষ্ট দেয়া যাবেনা, নিজ সন্তানের কারণে জননীকে ক্ষতিগ্রস্ত করা চলবেনা, এবং পিতার জন্যও একই বিধান, কিন্তু যদি তারা পরস্পর পরামর্শ ও সম্মতি অনুসারে স্তন্য ত্যাগ করাতে ইচ্ছা করে তাতে উভয়ের কোন দোষ নেই; আর তোমরা যদি নিজ সন্তানদেরকে স্তন্য পানের জন্য সমর্পণ করে বিহিতভাবে কিছু প্রদান কর তাহলেও তোমাদের কোন দোষ নেই; এবং আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখ যে, তোমরা যা করছ আল্লাহ তা প্রত্যক্ষকারী। ২৩৩
240 ২. আল-বাকারা এবং তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রীদেরকে রেখে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তারা (বিধবাগণ) চার মাস ও দশ দিন প্রতীক্ষা করবে; অতঃপর যখন তারা স্বীয় নির্ধারিত সময়ে উপনীত হয় তখন তারা নিজেদের সম্বন্ধে বিহিতভাবে যা করবে তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই; এবং তোমরা যা করছো তদ্বিষয়ে আল্লাহ সম্যক খবর রাখেন। ২৩৪
241 ২. আল-বাকারা এবং তোমরা স্ত্রীলোকদের প্রস্তাব সম্বন্ধে পরোক্ষভাবে যা ব্যক্ত কর অথবা নিজেদের মনে গোপনে যা পোষণ কর তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই; আল্লাহ অবগত আছেন যে, তোমরা তাদের বিষয় আলোচনা করবে, কিন্তু গোপনভাবে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দান করনা, বরং বিহিতভাবে তাদের সাথে কথা বল; এবং নির্ধারিত সময় পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সংকল্প করনা; এবং এটিও জেনে রেখ যে, তোমাদের অন্তরে যা আছে আল্লাহ তা অবগত। অতএব তোমরা তাঁকে ভয় কর এবং জেনে রেখ যে, আল্লাহ ক্ষমাশীল, সহিষ্ণু। ২৩৫
242 ২. আল-বাকারা যদি তোমরা স্ত্রীদেরকে স্পর্শ না করে অথবা তাদের প্রাপ্য নির্ধারণ করার পূর্বে তালাক প্রদান কর তাহলে তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই, এবং তোমরা তাদেরকে কিছু সংস্থান করে দিবে, অবস্থাপন্ন লোক নিজের অবস্থানুসারে এবং অভাবগ্রস্ত লোক তার সাধ্যানুসারে বিহিত সংস্থান (করে দিবে); সৎ কর্মশীল লোকদের উপর ইহাই কর্তব্য। ২৩৬
243 ২. আল-বাকারা আর তোমরা যদি তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বেই তালাক প্রদান কর এবং তাদের মোহর নির্ধারণ করে থাক তাহলে যা নির্ধারণ করেছিলে তার অর্ধেক দিয়ে দাও; কিন্তু যদি তারা ক্ষমা করে কিংবা যার হাতে বিবাহ বন্ধন সে ক্ষমা করে তাহলে তা স্বতন্ত্র কথা; অথবা তোমরা পুরুষরা যদি ক্ষমা কর তাহলে এটা পরহেজগারীর অতি নিকটবর্তী; এবং পরস্পরের উপকারকে যেন ভুলে যেওনা; তোমরা যা কর নিশ্চয়ই আল্লাহ তা প্রত্যক্ষকারী। ২৩৭
244 ২. আল-বাকারা তোমরা সালাতের প্রতি যত্নবান হবে বিশেষতঃ মধ্যবর্তী সালাতের এবং আল্লাহর উদ্দেশে তোমরা বিনীতভাবে দন্ডায়মান হও। ২৩৮ নামাজ
245 ২. আল-বাকারা তবে তোমরা যদি আশংকা কর, সেই অবস্থায় পদব্রজে বা যানবাহনের উপর সালাত সমাপন করে নিবে, পরে যখন নিরাপদ হও তখন তোমাদেরকে যেভাবে শিখিয়ে দেয়া হয়েছে সেইভাবে আল্লাহর প্রশংসা কর যা তোমরা ইতোপূর্বে জানতেনা। ২৩৯ নামাজ
246 ২. আল-বাকারা এবং তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুমুখে পতিত হয় ও স্ত্রীগণকে ছেড়ে যায় তারা যেন স্বীয় স্ত্রীগণকে বহিস্কৃত না করে এক বছর পর্যন্ত তাদেরকে ভরণ-পোষণ প্রদান করার জন্য অসীয়াত করে যায়, কিন্তু যদি তারা (স্বেচ্ছায়) বের হয়ে যায় তাহলে নিজেদের সম্বন্ধে বিহিতভাবে তারা যে ব্যবস্থা করে তজ্জন্য তোমাদের কোন দোষ নেই, এবং আল্লাহ মহাপরাক্রান্ত, বিজ্ঞানময়। ২৪০
247 ২. আল-বাকারা আর তালাক প্রাপ্তদের জন্য বিহিতভাবে ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করা ধর্মভীরুগণের কর্তব্য। ২৪১
248 ২. আল-বাকারা এভাবে আল্লাহ স্বীয় নিদর্শনাবলী বিবৃত করেন, যেন তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর। ২৪২
249 ২. আল-বাকারা তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি, মৃত্যুর বিভীষিকাকে এড়ানোর জন্য যারা নিজেদের গৃহ হতে বহির্গত হয়েছিল? অথচ তারা ছিল বহু সহস্র; তখন আল্লাহ তাদেরকে বললেনঃ তোমরা মর; পুনরায় তিনি তাদেরকে জীবন দান করলেন; নিশ্চয়ই মানবগণের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহশীল, কিন্তু অধিকাংশ লোক কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেনা। ২৪৩
250 ২. আল-বাকারা তোমরা আল্লাহর পথে সংগ্রাম কর এবং জেনে রেখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ হচ্ছেন সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা। ২৪৪
251 ২. আল-বাকারা কে সে, যে আল্লাহকে উত্তম ঋণদান করে? অনন্তর তিনি তাকে দ্বিগুণ, বহুগুণ বর্ধিত করেন এবং আল্লাহই (মানুষের আর্থিক অবস্থাকে) কৃচ্ছ বা স্বচ্ছল করে থাকেন এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। ২৪৫
252 ২. আল-বাকারা তুমি কি মূসার পরে ইসরাঈল বংশীয় প্রধানদের প্রতি লক্ষ্য করনি? নিজেদের এক নাবীকে যখন তারা বলেছিলঃ আমাদের জন্য একজন রাজা নিযুক্ত করে দাও (যেন) আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে পারি। সে বলেছিলঃ এটা কি সম্ভবপর নয় যে, যখন তোমাদের উপর যুদ্ধ বিধিবদ্ধ হয়ে যাবে তখন তোমরা যুদ্ধ করবেনা? তারা বলেছিলঃ আমরা যুদ্ধ করবনা এটা কিরূপে (সম্ভব), অথচ নিজেদের আবাস হতে ও স্বজনদের নিকট হতে আমরা বহিস্কৃত হয়েছি? অনন্তর যখন তাদের উপর যুদ্ধ বিধিবদ্ধ হল তখন তাদের অল্প সংখ্যক ব্যতীত সবাই পশ্চাৎপদ হয়ে পড়ল এবং অত্যাচারীদেরকে আল্লাহ সম্যক রূপে অবগত আছেন। ২৪৬
253 ২. আল-বাকারা এবং তাদের নাবী তাদেরকে বলেছিলঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তালূতকে তোমাদের জন্য রাজা রূপে নির্বাচিত করেছেন; তারা বললঃ আমাদের উপর তালূতের রাজত্ব কি রূপে (সঙ্গত) হতে পারে? রাজত্বে তার অপেক্ষা আমাদেরই স্বত্ব অধিক, পক্ষান্তরে যথেষ্ট আর্থিক স্বচ্ছলতাও তার নেই; তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাকেই মনোনীত করেছেন এবং তাকে প্রচুর জ্ঞান ও দৈহিক শক্তি দান করেছেন, আল্লাহ তাঁর রাজত্ব যাকে ইচ্ছা প্রদান করেন এবং আল্লাহ হচ্ছেন দানশীল, সর্বজ্ঞাতা। ২৪৭
254 ২. আল-বাকারা এবং তাদের নাবী তাদের বলেছিলঃ তার রাজত্বের নিদর্শন এই যে, তোমাদের নিকট সিন্দুক সমাগত হবে, যাতে থাকবে তোমাদের রবের নিকট হতে শান্তি এবং মূসা ও হারুনের পরিবারের (পরিত্যক্ত) কিছু সামগ্রী, মালাইকা/ফেরেশতা ওটা বহন করে আনবে, তোমরা যদি বিশ্বাস স্থাপনকারী হও তাহলে ওর মধ্যে নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য নিদর্শন রয়েছে। ২৪৮
255 ২. আল-বাকারা অতঃপর যখন তালূত সৈন্যদলসহ বহির্গত হয়েছিল তখন সে বলেছিল, নিশ্চয়ই আল্লাহ একটি নদী দ্বারা তোমাদেরকে পরীক্ষা করবেন, ওটা হতে যে পান করবে সে আমার দলভুক্ত নয় এবং যে স্বীয় হস্ত দ্বারা অঞ্জলি পূর্ণ করে নিবে এবং তদ্ব্যতীত সে আর আস্বাদন করবেনা সে নিশ্চয়ই আমার লোক; কিন্তু তাদের মধ্যে অল্প সংখ্যক ব্যতীত অন্য সবাই সেই নদীর পানি পান করল, অতঃপর যখন সে ও তার সঙ্গী বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ নদী অতিক্রম করে গেল তখন তারা বললঃ জালুত ও তার সেনাবাহিনীর মুকাবিলা করার শক্তি আজ আমাদের নেই; পক্ষান্তরে যারা বিশ্বাস করত যে, তাদেরকে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করতে হবে তারা বললঃ আল্লাহর হুকুমে কত ক্ষুদ্র দল কত বৃহৎ দলকে পরাজিত করেছে; বস্তুতঃ ধৈর্যশীলদের সঙ্গী হচ্ছেন আল্লাহ! ২৪৯
256 ২. আল-বাকারা এবং যখন তারা জালুত ও তার সেনাবাহিনীর সম্মুখীন হল, বলতে লাগলঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে পূর্ণ সহিষ্ণুতা দান করুন, আর আমাদের চরণগুলি অটল রাখুন এবং কাফির জাতির উপর আমাদেরকে সাহায্য করুন! ২৫০
257 ২. আল-বাকারা তখন তারা আল্লাহর হুকুমে জালুতের সৈন্যদেরকে পরাজিত করল এবং দাঊদ জালুতকে হত্যা করল। এবং আল্লাহ দাউদকে রাজ্য ও প্রজ্ঞা দান করলেন এবং তাকে ইচ্ছানুযায়ী শিক্ষা দান করলেন; আর যদি আল্লাহ এক দলকে অপর দলের দ্বারা প্রদমিত না করতেন তাহলে নিশ্চয়ই পৃথিবী অশান্তিপূর্ণ হত, কিন্তু আল্লাহ বিশ্ব জগতের প্রতি অনুগ্রহকারী। ২৫১
258 ২. আল-বাকারা এগুলো আল্লাহর নিদর্শন - তোমার নিকট এগুলি সত্যরূপে উপস্থাপন করেছি এবং নিশ্চয়ই তুমি রাসূলগণের অন্তর্ভুক্ত। ২৫২
259 ২. আল-বাকারা এই সকল রাসূল, আমি যাদের কারও উপর কেহকে মর্যাদা প্রদান করেছি, তাদের মধ্যে কারও সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন এবং কেহকে পদমর্যাদায় সমুন্নত করেছেন, আর মারইয়াম নন্দন ঈসাকে প্রকাশ্য নিদর্শনাবলী দান করেছি এবং তাকে পবিত্র আত্মাযোগে সাহায্য করেছি, আর আল্লাহ ইচ্ছা করলে নাবীগণের পরবর্তী লোকেরা, তাদের নিকট স্পষ্ট প্রমাণপুঞ্জ সমাগত হওয়ার পর পরস্পরের সাথে যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত হতনা। কিন্তু তারা পরস্পর মতবিরোধ করেছিল; ফলে তাদের কতক হল মু’মিন, আর কতক হল কাফির। বস্ত্ততঃ আল্লাহ ইচ্ছা করলে তারা পরস্পর যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত হতনা, কিন্তু আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা’ই সম্পন্ন করে থাকেন। ২৫৩
260 ২. আল-বাকারা হে বিশ্বাসীগণ! আমি তোমাদেরকে যে জীবনোপকরণ দান করেছি তা হতে সেদিন সমাগত হওয়ার পূর্বে ব্যয় কর যেদিন ক্রয়-বিক্রয়, বন্ধুত্ব ও সুপারিশ নেই, আর অবিশ্বাসীরাই অত্যাচারী। ২৫৪
261 ২. আল-বাকারা আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সুপ্রতিষ্ঠিত ধারক। তাঁকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করে না। তাঁর জন্যই আসমানসমূহে যা রয়েছে তা এবং যমীনে যা আছে তা। কে সে, যে তাঁর নিকট সুপারিশ করবে তাঁর অনুমতি ছাড়া? তিনি জানেন যা আছে তাদের সামনে এবং যা আছে তাদের পেছনে। আর তারা তাঁর জ্ঞানের সামান্য পরিমাণও আয়ত্ব করতে পারে না, তবে তিনি যা চান তা ছাড়া। তাঁর কুরসী আসমানসমূহ ও যমীন পরিব্যাপ্ত করে আছে এবং এ দু’টোর সংরক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয় না। আর তিনি সুউচ্চ, মহান। ২৫৫ আয়াতুল কুরসী
262 ২. আল-বাকারা দীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি কিংবা বাধ্যবাধকতা নেই। নিশ্চয়ই ভ্রান্তি হতে সুপথ প্রকাশিত হয়েছে। অতএব যে তাগুতকে অবিশ্বাস করে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে সে দৃঢ়তর রজ্জুকে আঁকড়ে ধরলো যা কখনও ছিন্ন হবার নয় এবং আল্লাহ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। ২৫৬
263 ২. আল-বাকারা আল্লাহই হচ্ছেন মু’মিনদের অভিভাবক। তিনি তাদেরকে অন্ধকার হতে আলোর দিকে নিয়ে যান; আর যারা অবিশ্বাস করেছে তাগুত তাদের পৃষ্ঠপোষক, সে তাদেরকে আলো হতে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, ওখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। ২৫৭ জাহান্নাম
264 ২. আল-বাকারা তুমি কি তার প্রতি লক্ষ্য করনি যে ইবরাহীমের সাথে তার রাব্ব সম্বন্ধে বিতর্ক করেছিল, যেহেতু আল্লাহ তাকে রাজত্ব প্রদান করেছিলেন। ইবরাহীম বলেছিলঃ আমার রাব্ব তিনিই যিনি জীবিত করেন ও মৃত্যু দান করেন। সে বলেছিলঃ আমিই জীবন ও মৃত্যু দান করি। ইবরাহীম বলেছিলঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ সূর্যকে পূর্ব দিক হতে আনয়ন করেন, কিন্তু তুমি ওকে পশ্চিম দিক হতে আনয়ন কর; এতে সেই অবিশ্বাসকারী হতবুদ্ধি হয়েছিল; এবং আল্লাহ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেননা। ২৫৮
265 ২. আল-বাকারা অথবা ঐ ব্যক্তির অনুরূপ যে কোন এক জনপদ অতিক্রম করছিল এবং তা ছিল শূণ্য - নিজ ভিত্তির উপর পতিত। সে বললঃ এই নগরের মৃত্যুর পর আল্লাহ আবার তাকে জীবন দান করবেন কিরূপে? অনন্তর আল্লাহ তাকে একশ বছরের জন্য মৃত্যু দান করলেন, অতঃপর তাকে পুনর্জীবিত করলেন এবং বললেনঃ এ অবস্থায় তুমি কতক্ষণ অতিবাহিত করেছ? সে বললঃ একদিন অথবা একদিনের কিয়দংশ। তিনি বললেনঃ তা নয়, বরং তুমিতো এভাবে একশ বছর ছিলে। তোমার খাদ্য ও পানীয়ের প্রতি লক্ষ্য কর - ওটা বিকৃত হয়নি এবং তোমার গর্দভের প্রতি দৃষ্টিপাত কর; এবং যেহেতু আমি তোমাকে মানবের জন্য নিদর্শন বানাতে চাই; আরও লক্ষ্য কর অস্থিপুঞ্জের দিকে, ওকে কিরূপে আমি সংযুক্ত করি; অতঃপর ওকে মাংসাবৃত করি। অনন্তর যখন ওটা তার নিকট স্পষ্ট হয়ে গেল তখন সে বললঃ আমি জানি, আল্লাহ সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান। ২৫৯
266 ২. আল-বাকারা এবং যখন ইবরাহীম বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! আপনি কিরূপে মৃতকে জীবিত করেন তা আমাকে প্রদর্শন করুন। তিনি বললেনঃ তাহলে কি তুমি বিশ্বাস করনা? সে বললঃ হ্যাঁ অবশ্যই, কিন্তু তাতে আমার অন্তর পরিতৃপ্ত হবে। তিনি বললেনঃ তাহলে চারটি পাখী গ্রহণ কর, তারপর ওদেরকে টুকরা টুকরা করে মিশ্রিত কর, অনন্তর প্রত্যেক পাহাড়ের উপর ওদের এক এক খন্ড রেখে দাও, অতঃপর ওদেরকে আহবান কর, ওরা তোমার নিকট দৌড়ে আসবে; এবং জেনে রেখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রান্ত, বিজ্ঞানময়। ২৬০
267 ২. আল-বাকারা যারা আল্লাহর পথে স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে তাদের উপমা যেমন একটি শস্যবীজ, তা হতে উৎপন্ন হল সাতটি শীষ, প্রত্যেক শীষে (উৎপন্ন হল) এক শত শস্য, এবং আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা করেন বর্ধিত করে দেন; বস্তুতঃ আল্লাহ হচ্ছেন অতি দানশীল, সর্বজ্ঞ। ২৬১
268 ২. আল-বাকারা যারা আল্লাহর পথে নিজেদের ধন সম্পদ ব্যয় করে, এবং ব্যয় করার পর অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করেনা, কষ্টও দেয়না, তাদের জন্য তাদের রবের নিকট রয়েছে পুরস্কার; বস্তুতঃ তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্তও হবেনা। ২৬২
269 ২. আল-বাকারা যে দানের পশ্চাতে থাকে ক্লেশ, সেই দান অপেক্ষা উত্তম বাক্য ও ক্ষমাই উৎকৃষ্ট এবং আল্লাহ মহা সম্পদশালী, সহিষ্ণু। ২৬৩
270 ২. আল-বাকারা হে মু’মিনগণ! কৃপা প্রকাশ ও ক্লেশ দান করে নিজেদের দানগুলি ব্যর্থ করে ফেলনা সেই ব্যক্তির ন্যায় যে নিজের ধন ব্যয় করে লোক দেখানোর জন্য, অথচ আল্লাহ ও আখিরাতে সে বিশ্বাস করেনা। ফলতঃ তার উপমা, যেমন এক বৃহৎ মসৃন প্রস্তর খন্ড যার উপর কিছু মাটি (জমে) আছে, এ অবস্থায় তাতে বর্ষিত হল প্রবল বর্ষা, অতঃপর তা পরিষ্কার হয়ে গেল। তারা যা অর্জন করেছে তন্মধ্য হতে কোন বিষয়েই তারা সুফল পাবেনা এবং আল্লাহ অবিশ্বাসী সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেননা। ২৬৪
271 ২. আল-বাকারা এবং যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি সাধন ও স্বীয় জীবনের প্রতিষ্ঠার জন্য ধন সম্পদ ব্যয় করে তাদের উপমা - যেমন উর্বর ভূভাগে অবস্থিত একটি উদ্যান, তাতে প্রবল বৃষ্টিধারা পতিত হয়, ফলে সেই উদ্যান দ্বিগুণ খাদ্যশস্য দান করে; কিন্তু যদি তাতে বৃষ্টিপাত না হয় তাহলে শিশিরই যথেষ্ট এবং তোমরা যা করছ আল্লাহ তা প্রত্যক্ষকারী। ২৬৫
272 ২. আল-বাকারা তোমাদের কারও যদি এমন একটি খেজুর ও আঙ্গুর উদ্যান থাকে যার তলদেশ দিয়ে নদী-নালা প্রবাহিত, সেখানে সর্ব প্রকার ফলের সংস্থান তার রয়েছে, আর সে বার্ধক্যে উপনীত হল, অথচ তার কতকগুলি দুর্বল (অপ্রাপ্ত বয়স্ক) সন্তান-সন্ততি রয়েছে, এ অবস্থায় সেই বাগানে উপস্থিত হল অগ্নিসহ এক বাত্যাবর্ত, আর তা পুড়ে (ভস্মীভূত হয়ে) গেল; তোমরা কেহ এটা পছন্দ করবে কি? এ রূপে আল্লাহ তোমাদের জন্য নিদর্শনাবলী ব্যক্ত করেন, যেন তোমরা চিন্তা-ভাবনা কর। ২৬৬
273 ২. আল-বাকারা হে মু’মিনগণ! তোমরা যা উপার্জন করেছ এবং আমি যা তোমাদের জন্য ভূমি হতে উৎপন্ন করেছি, তা হতে উৎকৃষ্ট বস্ত্ত খরচ কর এবং তা হতে এরূপ নিকৃষ্ট বস্ত্ত ব্যয় করতে মনস্থ করনা যা তোমরা মুদিত চক্ষু ব্যতীত গ্রহণ করনা; এবং তোমরা জেনে রেখ, আল্লাহ মহা সম্পদশালী, প্রশংসিত। ২৬৭
274 ২. আল-বাকারা শাইতান তোমাদেরকে অভাবের ভীতি প্রদর্শন করে এবং তোমাদেরকে অশ্লীলতার আদেশ করে এবং আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর নিকট হতে ক্ষমা ও দয়ার অংগীকার করেন। আল্লাহ হচ্ছেন বিপুল দাতা, সর্বজ্ঞ। ২৬৮
275 ২. আল-বাকারা তিনি যাকে ইচ্ছা প্রজ্ঞা দান করেন এবং যাকে প্রজ্ঞা দান করা হয় সে নিশ্চয়ই প্রচুর কল্যাণ লাভ করে; বস্ত্ততঃ জ্ঞানবান ব্যক্তিগণ ব্যতীত কেহই উপলদ্ধি করতে পারেনা। ২৬৯
276 ২. আল-বাকারা এবং যে কোন বস্তু তোমরা ব্যয় করনা কেন, অথবা যে কোন প্রতিজ্ঞা (নযর) তোমরা গ্রহণ করনা কেন, আল্লাহ নিশ্চয়ই তা অবগত হন; আর অত্যাচারীদের কোনই সাহায্যকারী নেই। ২৭০
277 ২. আল-বাকারা যদি তোমরা প্রকাশ্যভাবে দান কর তাহলে তা উৎকৃষ্ট এবং যদি তোমরা তা গোপন কর ও দরিদ্রদেরকে প্রদান কর তাহলে ওটাও তোমাদের জন্য উত্তম, এবং এর দ্বারা তোমাদের কিছু পাপ (এর কালিমা) বিদূরিত হবে; বস্ত্ততঃ তোমাদের কার্যকলাপ সম্বন্ধে আল্লাহ বিশেষ রূপে খবর রাখেন। ২৭১
278 ২. আল-বাকারা তাদেরকে সুপথে আনার দায়িত্ব তোমার নয়, বরং যাকে ইচ্ছা আল্লাহ তাকে সৎ পথে পরিচালিত করেন এবং তোমরা ধনসম্পদ হতে যা ব্যয় কর বস্তুতঃ তা তোমাদের নিজেদের জন্য, আর একমাত্র আল্লাহর সন্তোষ লাভের চেষ্টা ব্যতীত (অন্য কোন উদ্দেশে) অর্থ ব্যয় করনা; এবং তোমরা হালাল সম্পদ হতে যা ব্যয় করবে তা সম্পূর্ণভাবে পুনঃপ্রাপ্ত হবে, আর তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবেনা। ২৭২
279 ২. আল-বাকারা দান খয়রাত ঐ সব লোকদের জন্য যারা আল্লাহর কাছে আবদ্ধ হয়ে গেছে, জীবিকার সন্ধানে অন্যত্র ঘোরাফিরা করতে সক্ষম নয়। তাদের সাবলিল চলাচলের জন্য অজ্ঞ লোকেরা তাদেরকে অভাবহীন মনে করে, তুমি তাদেরকে তাদের লক্ষণ দ্বারা চিনবে। তারা মানুষের কাছে যাঞ্চা করেনা। এবং তোমরা বৈধ সম্পদ থেকে যা ব্যয় কর সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যকরূপে অবগত। ২৭৩
280 ২. আল-বাকারা যারা রাতে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে তাদের রবের নিকট তাদের পুরস্কার রয়েছে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবেনা। ২৭৪
281 ২. আল-বাকারা যারা সুদ ভক্ষণ করে তারা শাইতানের স্পর্শে মোহাভিভূত ব্যক্তির অনুরূপ কিয়ামাত দিবসে দন্ডায়মান হবে; এর কারণ এই যে, তারা বলে, ব্যবসা সুদের অনুরূপ বৈ তো নয়; অথচ আল্লাহ তা‘আলা ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন; অতঃপর যার নিকট তার রবের পক্ষ হতে উপদেশ সমাগত হয়, ফলে সে নিবৃত্ত হয়; সুতরাং যা অতীত হয়েছে তার কৃতকর্ম আল্লাহর উপর নির্ভর; এবং যারা পুনরায় সুদ গ্রহণ করবে তারাই হচ্ছে জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানেই চিরকাল অবস্থান করবে। ২৭৫ জাহান্নাম
282 ২. আল-বাকারা আল্লাহ সুদকে ক্ষয় করেন এবং দানকে বর্ধিত করেন, বস্তুতঃ আল্লাহ অতি কৃতঘ্ন পাপাচারীদেরকে ভালবাসেননা। ২৭৬
283 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে এবং সৎ কার্যাবলী সম্পাদন করে, সালাতকে প্রতিষ্ঠিত রাখে ও যাকাত প্রদান করে, তাদের জন্য তাদের রবের নিকট পুরষ্কার রয়েছে; এবং তাদের কোনো আশংকা নেই এবং তারা দুঃখিত হবেনা। ২৭৭ নামাজ ও যাকাত
284 ২. আল-বাকারা হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং যদি তোমরা মু’মিন হও তাহলে সুদের মধ্যে যা অবশিষ্ট রয়েছে তা বর্জন কর। ২৭৮
285 ২. আল-বাকারা কিন্তু যদি না কর তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্ত্তত হয়ে যাও। আর যদি তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা কর তাহলে তোমাদের মূলধন পেয়ে যাবে, তোমরা অত্যাচার করবেনা এবং তোমরাও অত্যাচারিত হবেনা। ২৭৯
286 ২. আল-বাকারা আর যদি সে অভাবগ্রস্ত হয় তাহলে স্বচ্ছলতার প্রতীক্ষা করবে এবং যদি তোমরা বুঝে থাক তাহলে তোমাদের জন্য দান করাই উত্তম। ২৮০
287 ২. আল-বাকারা আর তোমরা সেই দিনের ভয় কর যেদিন তোমরা আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে, তখন যে যা অর্জন করেছে তা সম্পূর্ণ রূপে প্রদত্ত হবে এবং তারা অত্যাচারিত হবেনা। ২৮১
288 ২. আল-বাকারা হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! যখন তোমরা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ঋণের আদান প্রদান করবে তখন তা লিখে নিবে; আর কোন একজন লেখক যেন ন্যায্যভাবে তোমাদের মধ্যে (ঐ আদান প্রদানের দলীল) লিখে দেয়, আর কোন লেখক যেন (দলীল) লিখে দিতে অস্বীকার না করে, আল্লাহ তাকে যেরূপ শিক্ষা দিয়েছেন, তার উচিত তা লিখে দেয়া, এবং ঋণ গ্রহিতা যেন লেখার বিষয় বলে দেয় এবং তার উচিত স্বীয় রাব্ব আল্লাহকে ভয় করা এবং ওর মধ্যে কিছুমাত্র ব্যতিক্রম না করা; অতঃপর ঋণ গ্রহীতা যদি নির্বোধ বা অযোগ্য অথবা লিখিয়ে নিতে অসমর্থ হয় তাহলে তার অভিভাবকরা ন্যায় সঙ্গতভাবে লিখিয়ে নিবে এবং তোমাদের মধ্যে দু’জন পুরুষ সাক্ষীকে সাক্ষী করবে; কিন্তু যদি দু’জন পুরুষ না পাওয়া যায় তাহলে সাক্ষীগণের মধ্যে তোমরা একজন পুরুষ ও দু’জন নারী মনোনীত করবে, যদি নারীদ্বয়ের একজন ভুলে যায় তাহলে একজন অপর জনকে স্মরণ করিয়ে দিবে; এবং যখন আহবান করা হয় তখন সাক্ষীগণের অস্বীকার না করা উচিত, এবং ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ বিষয়ের নির্দিষ্ট সময় লিখে দিতে তোমরা অবহেলা করনা, এটা আল্লাহর নিকট অতি সঙ্গত এবং সাক্ষ্যের জন্য এটাই দৃঢ়তর ও সন্দেহে পতিত না হওয়ার নিকটতর; কিন্তু যদি তোমরা কারবারে পরস্পর হাতে হা ২৮২
289 ২. আল-বাকারা এবং যদি তোমরা প্রবাসে থাক ও লেখক না পাও তাহলে বন্ধকী বস্তু নিজের দখলে রাখ। অতঃপর কেহ যদি কেহকে বিশ্বাস করে তাহলে যাকে বিশ্বাস করা হয়েছে তার পক্ষে গচ্ছিত দ্রব্য প্রত্যর্পণ করা উচিত এবং স্বীয় রাব্ব আল্লাহকে ভয় করা উচিৎ। সাক্ষ্য গোপন করনা; এবং যে কেহ তা গোপন করবে, নিশ্চয়ই তার মন পাপাচারী; বস্তুতঃ আল্লাহ তোমাদের কার্যকলাপ সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞাত। ২৮৩
290 ২. আল-বাকারা নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে সবই আল্লাহর এবং তোমাদের অন্তরে যা রয়েছে তা প্রকাশ কর অথবা গোপন রাখ, আল্লাহ তার হিসাব তোমাদের নিকট হতে গ্রহণ করবেন; অতঃপর তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন, যাকে ইচ্ছা শাস্তি দিবেন; এবং আল্লাহ সর্ব বিষয়োপরি শক্তিমান। ২৮৪
291 ২. আল-বাকারা রাসূল তার রাব্ব হতে তার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা বিশ্বাস করে এবং মু’মিনগণও (বিশ্বাস করে); তারা সবাই আল্লাহকে, তাঁর মালাইকাকে, তাঁর গ্রন্থসমূহকে এবং তাঁর রাসূলগণকে বিশ্বাস করে; (তারা বলে) আমরা তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কেহকেও পার্থক্য করিনা। এবং তারা বলে, আমরা শুনলাম এবং স্বীকার করলাম; হে আমাদের রাব্ব! আমরা আপনারই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আপনারই দিকে শেষ প্রত্যাবর্তন। ২৮৫
292 ২. আল-বাকারা কোন ব্যক্তিকেই আল্লাহ তার সাধ্যের অতিরিক্ত কর্তব্য পালনে বাধ্য করেননা; সে যা উপার্জন করেছে তা তারই জন্য এবং যা সে অর্জন করেছে তা তারই উপর বর্তাবে। হে আমাদের রাব্ব! আমরা যদি ভুলে যাই অথবা ভুল করি সেজন্য আমাদেরকে অপরাধী করবেননা। হে আমাদের রাব্ব! আমাদের পূর্ববর্তীগণের উপর যেরূপ গুরুভার অর্পণ করেছিলেন আমাদের উপর তদ্রুপ ভার অর্পণ করবেননা। হে আমাদের রাব্ব! যা আমাদের শক্তির বাইরে ঐরূপ ভার বহনে আমাদেরকে বাধ্য করবেননা, এবং আমাদের পাপ মোচন করুন ও আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আমাদেরকে দয়া করুন, আপনিই আমাদের আশ্রয়দাতা! অতএব কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে জয়যুক্ত করুন। ২৮৬ দোয়া
293 ৩. আলে-ইমরান আলিফ, লাম, মীম।
294 ৩. আলে-ইমরান আল্লাহ ছাড়া কোনই ইলাহ (উপাস্য) নেই, তিনি চিরঞ্জীব ও নিত্য বিরাজমান।
295 ৩. আলে-ইমরান তিনি সত্যসহ তোমার প্রতি গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন, যা পূর্ববর্তী বিষয়ের সত্যতা প্রতিপাদনকারী। এবং এর পূর্বে তাওরাত ও ইঞ্জীল অবতীর্ণ করেছিলেন।
296 ৩. আলে-ইমরান মানবমন্ডলীর জন্য সৎপথ প্রদর্শনের জন্য এবং তিনিই ফুরকান অবতীর্ণ করেছেন। যারা আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি অবিশ্বাস করে নিশ্চয়ই তাদের জন্য কঠোর শাস্তি রয়েছে এবং আল্লাহ পরাক্রান্ত, প্রতিশোধ গ্রহণকারী।
297 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট ভূমন্ডল ও নভোমন্ডলের কোন বিষয়ই লুকায়িত নেই।
298 ৩. আলে-ইমরান তিনিই স্বীয় ইচ্ছানুযায়ী জরায়ুর মধ্যে তোমাদের আকৃতি গঠন করেছেন। তিনি ব্যতীত অন্য কোনই উপাস্য নেই, তিনি পরাক্রান্তশালী, বিজ্ঞানময় ।
299 ৩. আলে-ইমরান তিনিই তোমার প্রতি গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন যাতে সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ রয়েছে - ওগুলি গ্রন্থের জননী স্বরূপ এবং অন্যান্য আয়াতসমূহ অস্পষ্ট; অতএব যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে, ফলতঃ তারাই অশান্তি সৃষ্টি ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের উদ্দেশে অস্পষ্টের অনুসরণ করে; এবং আল্লাহ ব্যতীত ওর অর্থ কেহই অবগত নয়, আর যারা জ্ঞানে সুপ্রতিষ্ঠিত তারা বলেঃ আমরা ওতে বিশ্বাস করি, সমস্তই আমাদের রবের নিকট হতে সমাগত এবং জ্ঞানবান ব্যতীত কেহই উপদেশ গ্রহণ করেনা।
300 ৩. আলে-ইমরান হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে পথ প্রদর্শনের পর আমাদের অন্তরসমূহ বক্র করবেন না এবং আমাদেরকে আপনার নিকট হতে করুণা প্রদান করুন, নিশ্চয়ই আপনি প্রভূত প্রদানকারী।
301 ৩. আলে-ইমরান হে আমাদের রাব্ব! নিশ্চয়ই আপনি সকল মানুষকে সমবেতকারী, ঐ দিনে মোটেই সন্দেহ নেই, নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গকারী নন।
302 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাস করেছে, তাদের ধন-সম্পদ ও তাদের সন্তান-সন্ততি আল্লাহর নিকট কোন বিষয়েই ফলপ্রদ হবেনা এবং তারাই জাহান্নামের ইন্ধন। ১০ জাহান্নাম
303 ৩. আলে-ইমরান ফির‘আউন সম্প্রদায় এবং তাদের পূর্ববর্তীদের প্রকৃতির ন্যায় তারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি অসত্যারোপ করেছে, এই হেতু আল্লাহ তাদের ধৃত করেছেন এবং আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা। ১১
304 ৩. আলে-ইমরান যারা অবিশ্বাস করেছে, তুমি তাদেরকে বলঃ অচিরেই তোমরা পরাভূত হবে এবং তোমরা জাহান্নামের দিকে একত্রিত হবে এবং ওটা নিকৃষ্টতর স্থান। ১২ জাহান্নাম
305 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য দু’টি দলের পরস্পর সম্মুখীন হওয়ার মধ্যে মহান নমুনা রয়েছে, তাদের একদল আল্লাহর পথে সংগ্রাম করছিল এবং অপর দল অবিশ্বাসী ছিল; তারা প্রত্যক্ষ দৃষ্টিতে মুসলিমদেরকে দ্বিগুণ দেখেছিল এবং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তদ্বীয় সাহায্য দানে শক্তিশালী করেন, নিশ্চয়ই এর মধ্যে চক্ষুস্মানদের জন্য উপদেশ রয়েছে। ১৩
306 ৩. আলে-ইমরান মানবমন্ডলীকে রমণী, সন্তান-সন্ততি, পুঞ্জীকৃত স্বর্ণ ও রৌপ্যভান্ডার, সুশিক্ষিত অশ্ব ও পালিত পশু এবং শস্য ক্ষেত্রের আকর্ষণীয় বস্ত্ত দ্বারা সুশোভিত করা হয়েছে, এটা পার্থিব জীবনের সম্পদ এবং আল্লাহর নিকট রয়েছে শ্রেষ্ঠতম অবস্থান। ১৪
307 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ আমি কি তোমাদেরকে এটা অপেক্ষাও উত্তম বিষয়ের সংবাদ দিব? যারা ধর্মভীরু তাদের জন্য তাদের রবের নিকট জান্নাত রয়েছে যার তলদেশে স্রোতস্বিনীসমূহ প্রবাহিতা, তন্মধ্যে তারা সদা অবস্থান করবে এবং সেখানে শুদ্ধা সহধর্মিনীগণ ও আল্লাহর প্রসন্নতা রয়েছে এবং আল্লাহ বান্দাদের প্রতি লক্ষ্যকারী। ১৫
308 ৩. আলে-ইমরান যারা বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! নিশ্চয়ই আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি, অতএব আমাদের অপরাধ ক্ষমা করুন এবং জাহান্নামের আগুনের শাস্তি হতে আমাদেরকে বাঁচান। ১৬ জাহান্নাম
309 ৩. আলে-ইমরান যারা সহিষ্ণু, সত্যপরায়ণ, সেবানুগত, দানশীল এবং ঊষাকালে ক্ষমাপ্রার্থী। ১৭
310 ৩. আলে-ইমরান আল্লাহ সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, নিশ্চয়ই তিনি ব্যতীত কেহ ইলাহ (উপাস্য) নেই এবং মালাইকা/ফেরেশতা, জ্ঞানবানগণ ও সুবিচারে আস্থা স্থাপনকারীগণও সাক্ষ্য দেয় যে, এই মহা পরাক্রান্ত বিজ্ঞানময় ব্যতীত আর কোনই উপাস্য নেই। ১৮
311 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই ইসলামই আল্লাহর নিকট একমাত্র ধর্ম। এবং যাদেরকে গ্রন্থ প্রদত্ত হয়েছে তাদের জ্ঞান আসার পরও তারা মতবিরোধে লিপ্ত রয়েছে শুধুমাত্র পরস্পর বিদ্বেষ বশতঃ; এবং যে আল্লাহর নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করে নিশ্চয়ই আল্লাহ সত্ত্বর হিসাব গ্রহণকারী। ১৯
312 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর যদি তারা তোমার সাথে কলহ করে তাহলে তুমি বলঃ আমি ও আমার অনুসারীগণ আল্লাহর উদ্দেশ্যে আত্মসমর্পণ করেছি এবং যাদেরকে গ্রন্থ প্রদত্ত হয়েছে ও যারা নিরক্ষর তাদেরকে বলঃ তোমরাও কি আত্মসমর্পণ করেছ? অতঃপর যদি তারা ‌আত্মসমর্পণ করে তাহলে নিশ্চয়ই তারা সুপথ পেয়ে যাবে, আর যদি ফিরে যায় তাহলে তোমার উপর দায়িত্ব হচ্ছে প্রচার করা মাত্র এবং আল্লাহ বান্দাদের প্রতি লক্ষ্যকারী। ২০
313 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহ অবিশ্বাস করে ও অন্যায়ভাবে নাবীদেরকে হত্যা করে এবং হত্যা করে তাদের যারা মানবমন্ডলীর মধ্যে ন্যায়ের আদেশকারী, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও। ২১
314 ৩. আলে-ইমরান এদের কৃতকর্মসমূহ ইহকাল ও আখিরাতে ব্যর্থ হবে এবং তাদের জন্য কেহ সাহায্যকারী নেই। ২২
315 ৩. আলে-ইমরান তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি যাদেরকে গ্রন্থের একাংশ প্রদত্ত হয়েছে? তাদেরকে গ্রন্থের দিকে আহবান করা হয়েছে যেন এটা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে, অতঃপর তাদের একদল প্রতিগমন করল এবং তারা প্রতিগমনকারী। ২৩
316 ৩. আলে-ইমরান এটা এ জন্য যে, তারা বলেঃ নির্দিষ্ট সংখ্যক দিন ব্যতীত জাহান্নামের আগুন আমাদেরকে স্পর্শ করবেনা; এবং তারা যা স্থির করেছে, তাদের ধর্ম বিষয়ে ওটা তাদেরকে প্রতারিত করেছে। ২৪ জাহান্নাম
317 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর যে দিন আমি তাদেরকে একত্রিত করব, যাতে কোন সন্দেহ নেই, তখন তাদের কি দশা হবে? এবং প্রত্যেক ব্যক্তি যা অর্জন করেছে তা সম্যক রূপে প্রদত্ত হবে এবং তারা অত্যাচারিত হবেনা। ২৫
318 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ হে রাজ্যাধিপতি আল্লাহ! আপনি যাকে ইচ্ছা রাজত্ব দান করেন এবং যার নিকট হতে ইচ্ছা রাজত্ব ছিনিয়ে নেন; যাকে ইচ্ছা সম্মান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন; আপনারই হাতে রয়েছে কল্যাণ। নিশ্চয়ই আপনিই সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান। ২৬
319 ৩. আলে-ইমরান আপনি রাতকে দিনে পরিবর্তিত করেন এবং দিনকে রাতে পরিণত করেন, এবং জীবিতকে মৃত হতে নির্গত করেন ও মৃতকে জীবিত হতে বহির্গত করেন এবং আপনি যাকে ইচ্ছা অপরিমিত জীবিকা দান করেন। ২৭
320 ৩. আলে-ইমরান মু’মিনগণ যেন মু’মিনগণকে ছেড়ে কাফিরদেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ না করে, এবং তাদের আশংকা হতে আত্মরক্ষা ব্যতীত যে এরূপ করে সে আল্লাহর নিকট সম্পর্কহীন; আর আল্লাহ তোমাদেরকে স্বীয় পবিত্র অস্তিত্বের ভয় প্রদর্শন করছেন এবং আল্লাহরই দিকে ফিরে যেতে হবে। ২৮
321 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ তোমাদের অন্তরসমূহে যা রয়েছে তা তোমরা গোপন কর অথবা প্রকাশ কর আল্লাহ তা অবগত আছেন এবং নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেন; এবং আল্লাহ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান। ২৯
322 ৩. আলে-ইমরান সেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি সৎকাজ হতে যা করেছে ও দুস্কর্ম হতে যা করেছে তা দেখতে পাবে; তখন সে ইচ্ছা করবে - যদি তার মধ্যে এবং ঐ দুস্কর্মের মধ্যে সুদূর ব্যবধান হত! আল্লাহ তোমাদেরকে স্বীয় পবিত্র অস্তিত্বের ভয় প্রদর্শন করছেন এবং আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের প্রতি স্নেহশীল। ৩০
323 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস তাহলে আমার অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসেন ও তোমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করেন; এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ৩১
324 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের অনুসরণ কর; কিন্তু যদি তারা ফিরে যায় তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ অবিশ্বাসীদেরকে ভালবাসেন না। ৩২
325 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই আল্লাহ আদম ও নূহকে এবং ইবরাহীম ও ইমরানের সন্তানগণকে বিশ্ব জগতের উপর মনোনীত করেছেন। ৩৩
326 ৩. আলে-ইমরান তারা একে অপরের বংশধর এবং আল্লাহ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। ৩৪
327 ৩. আলে-ইমরান যখন ইমরান-পত্নী নিবেদন করল, হে আমার রাব্ব! নিশ্চয়ই আমার গর্ভে যা রয়েছে তা আমি মুক্ত করে আপনার উদ্দেশে উৎসর্গ করলাম, সুতরাং আপনি আমা হতে তা গ্রহণ করুন, নিশ্চয়ই আপনি শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। ৩৫
328 ৩. আলে-ইমরান অনন্তর যখন সে তা প্রসব করল তখন বললঃ হে আমার রাব্ব! আমিতো কন্যা প্রসব করেছি; এবং সে যা প্রসব করেছে তা আল্লাহ সম্যক অবগত আছেন, এবং কোনো পুত্র এই কন্যার সমকক্ষ নয়! আর আমি কন্যার নাম রাখলাম ‘মারইয়াম’ এবং আমি তাকে ও তার সন্তানগণকে বিতাড়িত শাইতান হতে আপনার আশ্রয়ে সমর্পন করলাম। ৩৬
329 ৩. আলে-ইমরান অনন্তর তার রাব্ব তাকে উত্তম রূপে গ্রহণ করলেন এবং তাকে উত্তম প্রবৃদ্ধি দান করলেন এবং যাকারিয়াকে তার ভারার্পন করলেন; যখনই যাকারিয়া তার নিকট উক্ত প্রকোষ্ঠে প্রবেশ করত তখন তার নিকট খাদ্য সম্ভার দেখতে পেত; সে বলতঃ হে মারইয়াম! এটা কোথা হতে প্রাপ্ত হলে? সে বলতঃ এটা আল্লাহর নিকট হতে, নিশ্চয়ই আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অপরিমিত জীবিকা দান করেন। ৩৭
330 ৩. আলে-ইমরান তখন যাকারিয়া তার রবের নিকট প্রার্থনা করেছিল, সে বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! আমাকে আপনার নিকট হতে পবিত্র সন্তান প্রদান করুন, নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী। ৩৮
331 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর যখন সে মেহরাবের মধ্যে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করছিল তখন মালাইকা/ফেরেশতাগণ তাকে সম্বোধন করে বলেছিলঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে ইয়াহইয়া সম্বন্ধে সুসংবাদ দিচ্ছেন - তার অবস্থা এই হবে যে, সে আল্লাহর একটি বাক্যের সত্যতা প্রকাশকারী হবে, নেতা হবে, স্বীয় প্রবৃত্তিকে দমনকারী হবে এবং সৎ কর্মশীলগণের মধ্যে নাবী হবে। ৩৯
332 ৩. আলে-ইমরান সে বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! কিরূপে আমার পুত্র হবে? নিশ্চয়ই আমার বার্ধক্য উপস্থিত হয়েছে এবং আমার স্ত্রী বন্ধ্যা; তিনি বললেনঃ এইরূপে আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা’ই করে থাকেন। ৪০
333 ৩. আলে-ইমরান সে বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! আমার জন্য কোন নিদর্শন নির্দিষ্ট করুন; তিনি বললেনঃ তোমার নিদর্শন এই যে, তুমি তিন দিন ইঙ্গিত ব্যতীত লোকের সাথে কথা বলতে পারবেনা; এবং স্বীয় রাব্বকে বেশী বেশী স্মরণ কর এবং সন্ধ্যায় ও প্রভাতে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। ৪১
334 ৩. আলে-ইমরান এবং যখন মালাক/ফেরেশতা বলেছিলঃ ওহে মারইয়াম! নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে মনোনীত করেছেন ও তোমাকে পবিত্র করেছেন এবং বিশ্ব জগতের নারীগণের উপর তোমাকে মনোনীত করেছেন। ৪২
335 ৩. আলে-ইমরান হে মারইয়াম! তোমার রবের ইবাদাত কর এবং সাজদাহ কর ও রুকুকারীগণের সাথে রুকু কর। ৪৩
336 ৩. আলে-ইমরান এটা সেই অদৃশ্য বিষয়ক সংবাদ যা আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করছি; এবং যখন তারা স্বীয় লেখনীসমূহ নিক্ষেপ করছিল যে, তাদের মধ্যে কে মারইয়ামের প্রতিপালন করবে তখন তুমি তাদের নিকট ছিলেনা; এবং যখন তারা কলহ করছিল তখনও তুমি তাদের নিকট ছিলেনা। ৪৪
337 ৩. আলে-ইমরান যখন মালাইকা/ফেরেশতারা বলেছিলঃ হে মারইয়াম! নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর নিকট হতে একটি বাক্য দ্বারা তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছেন নন্দন ঈসা মসীহ - সে ইহলোক ও পরলোকে সম্মানিত এবং সান্নিধ্য প্রাপ্তগণের অন্তর্ভুক্ত। ৪৫
338 ৩. আলে-ইমরান আর সে দোলনা হতে ও পরিণত বয়সে লোকের সাথে কথা বলবে এবং সে পুণ্যবানগণের অন্তর্ভুক্ত হবে। ৪৬
339 ৩. আলে-ইমরান সে বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! কিরূপে আমার পুত্র হবে? কোন পুরুষ মানুষতো আমাকে স্পর্শ করেনি; তিনি বললেনঃ এরূপে আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন, সৃষ্টি করে থাকেন, যখন তিনি কোন কাজের মনস্থ করেন তখন তিনি ওকে ‘হও’ বলেন, ফলতঃ তাতেই হয়ে যায়। ৪৭
340 ৩. আলে-ইমরান তিনি তাকে গ্রন্থ, বিজ্ঞান এবং তাওরাত ও ইঞ্জীল শিক্ষা দিবেন। ৪৮
341 ৩. আলে-ইমরান আর তাকে ইসরাঈল বংশীয়গণের জন্য রাসূল করবেন। নিশ্চয়ই আমি (ঈসা) তোমাদের রবের নিকট হতে নিদর্শনসহ তোমাদের নিকট আগমন করেছি; নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য মাটি হতে পাখির আকার গঠন করব, অতঃপর ওর মধ্যে ফুৎকার দিব, অনন্তর আল্লাহর আদেশে ওটা পাখি হয়ে যাবে, এবং জন্মান্ধকে ও কুষ্ঠ রোগীকে নিরাময় করি এবং আল্লাহর আদেশে মৃতকে জীবিত করি এবং তোমরা যা আহার কর ও তোমরা যা স্বীয় গৃহের মধ্যে সংগ্রহ করে রাখ তদ্বিষয়ে সংবাদ দিচ্ছি - যদি তোমরা বিশ্বাসী হও তাহলে নিশ্চয়ই এতে তোমাদের জন্য নিদর্শন রয়েছে। ৪৯
342 ৩. আলে-ইমরান এবং আমি এসেছি আমার পূর্বে তাওরাতে যা ছিল তার সত্যতা প্রদান করতে এবং তোমাদের জন্য যা অবৈধ হয়েছে তার কতিপয় তোমাদের জন্য বৈধ করতে, আর তোমাদের রবের নিকট হতে তোমাদের জন্য নিদর্শন নিয়ে; অতএব আল্লাহকে ভয় কর ও আমার অনুগত হও। ৫০
343 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার রাব্ব এবং তোমাদের রাব্ব; অতএব তাঁর ইবাদাত কর - এটাই সরল পথ। ৫১
344 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর যখন ঈসা তাদের মধ্যে প্রত্যাখ্যান প্রত্যক্ষ করল তখন সে বললঃ আল্লাহর উদ্দেশে কে আমার সাহায্যকারী হবে? হাওয়ারিগণ বললঃ আমরাই আল্লাহর সাহায্যকারী, আমরা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি, এবং সাক্ষী থেকো যে, আমরা আত্মসমর্পণকারী। ৫২
345 ৩. আলে-ইমরান হে আমাদের রাব্ব! আপনি যা অবতীর্ণ করেছেন, আমরা তা বিশ্বাস করি এবং আমরা রাসূলের অনুসরণ করছি, অতএব সাক্ষীগণের সাথে আমাদেরকে লিপিবদ্ধ করুন। ৫৩
346 ৩. আলে-ইমরান আর তারা (কাফিরেরা) ষড়যন্ত্র করেছিল ও আল্লাহও কৌশল করলেন এবং আল্লাহ শ্রেষ্ঠতম কৌশলী। ৫৪
347 ৩. আলে-ইমরান যখন আল্লাহ বললেনঃ হে ঈসা! নিশ্চয়ই আমি তোমাকে আমার দিকে প্রতিগ্রহণ করব এবং তোমাকে উত্তোলন করব এবং অবিশ্বাসকারীদের হতে তোমাকে পবিত্র করব, আর যারা অবিশ্বাস করেছে তাদের উপর তোমার অনুসারীগণকে উত্থান দিন পর্যন্ত সমুন্নত করব; অনন্তর আমারই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন; অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে বিষয়ে মতভেদ ছিল তার মীমাংসা করব। ৫৫
348 ৩. আলে-ইমরান অনন্তর যারা কুফরী করেছে (অবিশ্বাসী হয়েছে), বস্তুতঃ তাদেরকে ইহকাল ও আখিরাতে কঠোর শাস্তি প্রদান করব এবং তাদের জন্য কেহ সাহায্যকারী নেই। ৫৬
349 ৩. আলে-ইমরান আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকাজ করেছে ফলতঃ তিনি তাদেরকে পূর্ণ প্রতিদান প্রদান করবেন এবং আল্লাহ অত্যাচারীদেরকে ভালবাসেননা। ৫৭
350 ৩. আলে-ইমরান আমি তোমার প্রতি বিজ্ঞানময় বর্ণনা ও নিদর্শনাবলী হতে এটা আবৃত্তি করছি। ৫৮
351 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের অনুরূপ; তিনি তাকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করলেন, অতঃপর বললেন হও, ফলতঃ তাতেই হয়ে গেল। ৫৯
352 ৩. আলে-ইমরান এই বাস্তব ঘটনা তোমার রবের পক্ষ হতে; সুতরাং তুমি সংশয়ীদের অন্তর্ভুক্ত হয়োনা। ৬০
353 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর তোমার নিকট যে জ্ঞান এসেছে, তারপরে তদ্বিষয়ে যে তোমার সাথে কলহ করে, তুমি বলঃ এসো, আমরা আমাদের সন্তানগণ ও তোমাদের সন্তানগণকে, আমাদের নারীগণ ও তোমাদের নারীগণকে এবং স্বয়ং আমাদের ও তোমাদেরকে আহবান করি। অতঃপর প্রার্থনা করি যে, অসত্যবাদীদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত বর্ষিত হোক। ৬১
354 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই এটাই সত্য বিবরণ এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ (উপাস্য) নেই, নিশ্চয়ই সেই আল্লাহ বিজ্ঞানময়, মহাপরাক্রান্ত। ৬২
355 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ দুস্কার্যকারীদের জ্ঞাত আছেন। ৬৩
356 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ হে আহলে কিতাব! আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে যে বাক্যে সুসাদৃশ্য রয়েছে তার দিকে এসো, যেন আমরা আল্লাহ ব্যতীত কারও ইবাদাত না করি এবং তাঁর সাথে কোন অংশী স্থির না করি এবং আল্লাহকে পরিত্যাগ করে আমরা পরস্পর কেহকে রাব্ব রূপে গ্রহণ না করি। অতঃপর যদি তারা ফিরে যায় তাহলে বলঃ সাক্ষী থেকো যে, আমরা মুসলিম (আল্লাহর নিকট আত্মসমপর্নকারী)। ৬৪
357 ৩. আলে-ইমরান হে আহলে কিতাব! তোমরা ইবরাহীম সম্বন্ধে কেন বির্তক করছ? অথচ তার পরে ব্যতীত তাওরাত ও ইঞ্জীল অবতীর্ণ হয়নি - তবুও কি তোমরা বুঝছনা? ৬৫
358 ৩. আলে-ইমরান হ্যাঁ, তোমরা এমন যে, যে বিষয়ে তোমাদের জ্ঞান ছিল তা নিয়েও তোমরা কলহ করেছিলে, কিন্তু যদ্বিষয়ে তোমাদের কোনই জ্ঞান নেই তা নিয়ে তোমরা কেন কলহ করছ এবং আল্লাহ জ্ঞাত আছেন ও তোমরা অবগত নও। ৬৬
359 ৩. আলে-ইমরান ইবরাহীম ইয়াহুদী ছিলনা এবং খৃষ্টানও ছিলনা, বরং সে সুদৃঢ় মুসলিম ছিল এবং সে মুশরিকদের (অংশীবাদী) অন্তর্ভুক্ত ছিলনা। ৬৭
360 ৩. আলে-ইমরান নিঃসন্দেহে ঐ সব লোক ইবরাহীমের নিকটতম যারা তার অনুসরণ করেছে এবং এই নাবী এবং (তাঁর সাথের) মু’মিনগণ; এবং আল্লাহ বিশ্বাসীগণের অভিভাবক। ৬৮
361 ৩. আলে-ইমরান এবং কিতাবীদের মধ্যে এক দলের বাসনা যে, তোমাদেরকে পথভ্রান্ত করে; কিন্তু তারা নিজেদের ব্যতীত অন্য কেহকে বিপথগামী করেনা এবং তারা তা বুঝছেনা। ৬৯
362 ৩. আলে-ইমরান হে আহলে কিতাব! তোমরা কেন আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি অবিশ্বাস করছো? অথচ তোমরাই ওর সাক্ষী। ৭০
363 ৩. আলে-ইমরান হে কিতাবীরা! তোমরা কেন সত্যের সঙ্গে মিথ্যাকে মিলিয়ে নিচ্ছ এবং সত্যকে গোপন করছ? অথচ তোমরাতো অবগত আছ। ৭১
364 ৩. আলে-ইমরান আর আহলে কিতাবের মধ্যে একদল এটাই বলে যে, বিশ্বাস স্থাপনকারীদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তৎপ্রতি পূর্বাহ্নে বিশ্বাস স্থাপন কর এবং অপরাহ্নে তা অস্বীকার কর, তাহলে তারা ফিরে যাবে। ৭২
365 ৩. আলে-ইমরান আর যারা তোমাদের ধর্মের অনুসরণ করে তারা ব্যতীত অন্যদের বিশ্বাস করনা। তুমি তাদেরকে বলঃ আল্লাহর পথই একমাত্র সুপথ। এই আহলে কিতাবীরা বিশ্বাস করেনা যে, তাদের পরিবর্তে অন্য কারও উপর অহী অবতীর্ণ হতে পারে। অথবা তারা তোমার রবের কাছে পৌঁছা পর্যন্ত তর্ক/বিতর্ক করতেই থাকবে। তুমি বলঃ অনুগ্রহ আল্লাহরই হাতে, তিনি যাকে ইচ্ছা ইহা দান করেন এবং আল্লাহই রক্ষাকারী, মহাজ্ঞানী। ৭৩
366 ৩. আলে-ইমরান তিনি যার প্রতি ইচ্ছা করেন স্বীয় করুনা নির্দিষ্ট করেন এবং আল্লাহ মহান, অনুগ্রহশীল। ৭৪
367 ৩. আলে-ইমরান কিতাবীদের মধ্যে এরূপ আছে যে, যদি তুমি তার নিকট পুঞ্জীভূত ধনরাশিও গচ্ছিত রেখে দাও তবুও সে তা তোমার নিকট প্রত্যর্পণ করবে এবং তাদের মধ্যে এরূপও আছে যে, যদি তুমি তার নিকট একটি দীনারও গচ্ছিত রাখ তাহলে সে তাও তোমাকে প্রত্যর্পণ করবেনা যে পর্যন্ত তুমি তার শিরোপরি দন্ডায়মান থাক। কারণ তারা বলে যে, আমাদের উপর ঐ অশিক্ষিতদের কোন দায় দায়িত্ব নেই এবং তারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, যা তারাও জানে। ৭৫
368 ৩. আলে-ইমরান হ্যাঁ, যারা স্বীয় অঙ্গীকার পূর্ণ করে ও সংযত হয়, তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ ধর্মভীরুগণকে ভালবাসেন। ৭৬
369 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর প্রতি অঙ্গীকার ও স্বীয় শপথ সামান্য মূল্যে বিক্রি করে, পরলোকে তাদের কোনই অংশ নেই এবং উত্থান দিনে আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেননা এবং তাদের প্রতি দৃষ্টিপাতও করবেননা এবং পরিশুদ্ধও করবেননা। তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। ৭৭
370 ৩. আলে-ইমরান আর তাদের মধ্যে নিশ্চয়ই এরূপ একদল আছে যারা কুঞ্চিত ভাষায় গ্রন্থ আবৃত্তি করে, যেন তোমরা ওটাকে গ্রন্থের অংশ মনে কর, অথচ ওটা গ্রন্থের অংশ নয়; এবং তারা বলে যে, এটা আল্লাহর নিকট হতে সমাগত, অথচ ওটা আল্লাহর নিকট হতে নয়, এবং তারা আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা বলে এবং তারাও তা অবগত আছে। ৭৮
371 ৩. আলে-ইমরান এটা কোন মানুষের পক্ষে উপযোগী নয় যে, আল্লাহ যাকে গ্রন্থ, বিজ্ঞান ও নবুওয়াত দান করেন, অতঃপর সে মানবমন্ডলীর মধ্যে বলে - তোমরা আল্লাহকে পরিত্যাগ করে আমার উপাসক হও; বরং বলবেঃ রবের ইবাদাতকারী হও - কারণ তোমরাই কুরআন শিক্ষা দান কর এবং ওটা পাঠ করে থাক। ৭৯
372 ৩. আলে-ইমরান আর তিনি আদেশ করেননা যে, তোমরা মালাক/ফেরেশতা ও নাবীগণকে রাব্ব রূপে গ্রহণ কর; তোমরা আত্মসমর্পণকারী হবার পর তিনি কি তোমাদেরকে পুনরায় কুফরীতে ফিরে যাবার আদেশ করবেন? ৮০
373 ৩. আলে-ইমরান এবং আল্লাহ যখন নাবীগণের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন, আমি তোমাদেরকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান হতে দান করার পর তোমাদের সঙ্গে যা আছে তার সত্যতা প্রত্যায়নকারী একজন রাসূল আগমন করবে, তখন তোমরা অবশ্যই তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং তার সাহায্যকারী হবে; তিনি আরও বলেছিলেনঃ তোমরা কি এতে স্বীকৃত হলে এবং প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করলে? তারা বলেছিল - আমরা স্বীকার করলাম। তিনি বললেনঃ তাহলে তোমরা সাক্ষী থেক এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষীগণের অন্তর্ভুক্ত রইলাম। ৮১
374 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর এর পরে যারা ফিরে যাবে তারাই দুস্কার্যকারী। ৮২
375 ৩. আলে-ইমরান তাহলে কি তারা আল্লাহর ধর্ম ব্যতীত অন্য কিছু কামনা করে? অথচ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, ইচ্ছা ও অনিচ্ছাক্রমে সবাই তাঁর উদ্দেশে আত্মসমর্পণ করেছে এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। ৮৩
376 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ আমরা আল্লাহর প্রতি এবং যা আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাদের বংশধরগণের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নাবীগণকে তাদের রাব্ব কর্তৃক প্রদত্ত হয়েছে তৎপ্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম, আমরা তাদের মধ্যে কেহকেও পার্থক্য জ্ঞান করিনা এবং আমরা তাঁরই প্রতি আত্মসমর্পণকারী। ৮৪
377 ৩. আলে-ইমরান আর যে কেহ ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্ম অন্বেষণ করে তা কখনই তার নিকট হতে গৃহীত হবেনা এবং পরলোকে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। ৮৫
378 ৩. আলে-ইমরান কিরূপে আল্লাহ সেই সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করবেন যারা বিশ্বাস স্থাপনের পর, রাসূলের সত্যতা বিষয়ে সাক্ষ্যদানের পর এবং তাদের নিকট প্রকাশ্য নিদর্শনসমূহ আসার পরও অবিশ্বাসী হয়েছে? আর আল্লাহ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেননা। ৮৬
379 ৩. আলে-ইমরান ওরাই - যাদের প্রতিফল এই যে, নিশ্চয়ই তাদের উপর আল্লাহর, তাঁর মালাইকা/ফেরেশতার এবং সমস্ত মানবের অভিসম্পাত। ৮৭
380 ৩. আলে-ইমরান তারা তন্মধ্যে সদা অবস্থান করবে - তাদের উপর হতে শাস্তি প্রশমিত হবেনা এবং তাদেরকে বিরাম দেয়া হবেনা। ৮৮
381 ৩. আলে-ইমরান কিন্তু যারা এরপর ক্ষমা প্রার্থনা করে ও সংশোধিত হয়, তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ৮৯
382 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস স্থাপনের পর অবিশ্বাসী হয়েছে, অতঃপর অবিশ্বাস পরিবর্ধিত করেছে - তাদের ক্ষমা প্রার্থনা কখনই গৃহীত হবেনা এবং তারাই পথভ্রান্ত। ৯০
383 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাস করেছে ও অবিশ্বাসী অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে তাদের মুক্তির বিনিময়ে যদি পৃথিবীপূর্ণ স্বর্ণ দেয়া হয় তবুও কক্ষনো তা গ্রহণ করা হবেনা। ওদেরই জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে এবং ওদের জন্য কোনই সাহায্যকারী নেই। ৯১
384 ৩. আলে-ইমরান তোমরা যা ভালবাস তা হতে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনই কল্যাণ লাভ করতে পারবেনা; এবং তোমরা যা কিছুই ব্যয় কর, আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেন। ৯২
385 ৩. আলে-ইমরান প্রত্যেক খাদ্যই বানী ইসরাঈলের জন্য হালাল ছিল। একমাত্র তাওরাত অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে বানী ইসরাঈল নিজের উপর যা হারাম করে নিয়েছিল তাই তাদের উপর হারাম করা হয়েছিল। তুমি বলঃ যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে তাওরাত আনয়ন কর, অতঃপর ওটা পাঠ কর। ৯৩
386 ৩. আলে-ইমরান সুতরাং যদি কেহ এরপর আল্লাহর প্রতি অসত্যারোপ করে তাহলে তারাই অত্যাচারী। ৯৪
387 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ আল্লাহ সত্য বলেছেন; অতএব তোমরা ইবরাহীমের সুদৃঢ় ধর্মের অনুসরণ কর এবং সে অংশীবাদীদের অন্তর্গত ছিলনা। ৯৫
388 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই সর্ব প্রথম গৃহ, যা মানবমন্ডলীর জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে তা ঐ ঘর যা বাক্কায় (মাক্কায়) অবিস্থত; ওটি সৌভাগ্যযুক্ত এবং সমস্ত বিশ্ববাসীর জন্য পথ প্রদর্শক। ৯৬
389 ৩. আলে-ইমরান ওর মধ্যে প্রকাশ্য নিদর্শনসমূহ বিদ্যমান রয়েছে, মাকামে ইবরাহীম উক্ত নিদর্শনসমূহের অন্যতম। আর যে ওর মধ্যে প্রবেশ করে সে নিরাপত্তা প্রাপ্ত হয় এবং আল্লাহর উদ্দেশে এই গৃহের হাজ্জ করা সেই সব মানুষের কর্তব্য যারা সফর করার আর্থিক সামর্থ্য রাখে এবং যদি কেহ অস্বীকার করে তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ সমগ্র বিশ্ববাসী হতে প্রত্যাশামুক্ত। ৯৭
390 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ হে কিতাবধারীরা! তোমরা কেন আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি অবিশ্বাস করছো? তোমরা যা করছো আল্লাহ তদ্বিষয়ে সাক্ষী। ৯৮
391 ৩. আলে-ইমরান হে গ্রন্থপ্রাপ্তরা! যে ব্যক্তি বিশ্বাস স্থাপন করেছে তার মধ্যে কুটিলতার কামনায় কেন তোমরা তাকে আল্লাহর পথে রোধ করছো, অথচ তোমরা এ পথের সত্যতা প্রত্যক্ষ করছ এবং তোমরাই সাক্ষী রয়েছ? আর তোমরা যা করছো তদ্বিষয়ে আল্লাহ অমনোযোগী নন। ৯৯
392 ৩. আলে-ইমরান হে মু’মিনগণ! যাদেরকে গ্রন্থ প্রদত্ত হয়েছে, যদি তোমরা তাদের এক দলের অনুসরণ কর তাহলে তারা তোমাদেরকে তোমাদের ঈমান আনয়নের পর কাফির বানিয়ে দিবে। ১০০
393 ৩. আলে-ইমরান আর কিরূপে তোমরা অবিশ্বাস করতে পার - যখন আল্লাহর নিদর্শনাবলী তোমাদের সামনে পঠিত হয় এবং তোমাদের মধ্যে তাঁর রাসূল বিদ্যমান রয়েছে? আর যে আল্লাহর পথ দৃঢ় রূপে ধারণ করে, অবশ্যই সে সরল পথ প্রদর্শিত হবে। ১০১
394 ৩. আলে-ইমরান হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর যেমনভাবে করা উচিৎ এবং তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যু বরণ করনা। ১০২
395 ৩. আলে-ইমরান আর তোমরা একযোগে আল্লাহর রজ্জু সুদৃঢ় রূপে ধারণ কর ও বিভক্ত হয়ে যেওনা, এবং তোমাদের প্রতি আল্লাহর যে দান রয়েছে তা স্মরণ কর। যখন তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে তখন তিনিই তোমাদের অন্তঃকরণে প্রীতি স্থাপন করেছিলেন, অতঃপর তোমরা তাঁর অনুগ্রহে ভ্রাতৃত্বে আবদ্ধ হলে এবং তোমরা অনল-কুন্ডের ধারে ছিলে, অনন্তর তিনিই তোমাদেরকে ওটা হতে উদ্ধার করেছেন; এরূপে আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় নিদর্শনাবলী ব্যক্ত করেন, যেন তোমরা সুপথ প্রাপ্ত হও। ১০৩
396 ৩. আলে-ইমরান এবং তোমাদের মধ্যে এরূপ এক সম্প্রদায় হওয়া উচিত যারা কল্যাণের দিকে আহবান করে এবং সৎ কাজে আদেশ করে ও অসৎ কাজে নিষেধ করে, আর তারাই সুফল প্রাপ্ত হবে। ১০৪
397 ৩. আলে-ইমরান এবং তাদের মতো হয়োনা যাদের নিকট স্পষ্ট প্রমাণ আসার পরও বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে ও পরস্পর মতভেদে লিপ্ত রয়েছে; তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। ১০৫
398 ৩. আলে-ইমরান সেদিন কতগুলি মুখমন্ডল হবে শ্বেতবর্ণ এবং কতক মুখমন্ডল হবে কৃষ্ণবর্ণ; অতঃপর যাদের মুখমন্ডল কৃষ্ণবর্ণ হবে, (তাদেরকে বলা হবে) তাহলে কি তোমরা বিশ্বাস স্থাপনের পর অবিশ্বাসী হয়েছ? অতএব তোমরা শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ কর, যেহেতু তোমরা অবিশ্বাস করেছিলে। ১০৬
399 ৩. আলে-ইমরান আর যাদের মুখমন্ডল শুভ্র হবে, তারা আল্লাহর করুণার অন্তর্ভুক্ত, তারা তন্মধ্যে সদা অবস্থান করবে। ১০৭
400 ৩. আলে-ইমরান এগুলি হচ্ছে আল্লাহর নিদর্শন - যা আমি তোমার প্রতি সত্যসহ আবৃত্তি করছি এবং আল্লাহ বিশ্ব জগতের প্রতি অত্যাচারের ইচ্ছা করেননা। ১০৮
401 ৩. আলে-ইমরান আর যা নভোমন্ডলের মধ্যে আছে ও যা ভূমন্ডলের মধ্যে রয়েছে তা আল্লাহর এবং আল্লাহর কাছেই সব কিছু প্রত্যাবর্তনশীল। ১০৯
402 ৩. আলে-ইমরান তোমরাই সর্বোত্তম উম্মাত, মানব জাতির কল্যাণের জন্য তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে, তোমরা সৎ কাজে আদেশ করবে ও অসৎ কাজে নিষেধ করবে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে; আর যদি গ্রন্থ প্রাপ্তরা বিশ্বাস স্থাপন করত তাহলে অবশ্যই তাদের জন্য মঙ্গল হত; তাদের মধ্যে কেহ কেহ মু’মিন এবং তাদের অধিকাংশই দুস্কার্যকারী। ১১০
403 ৩. আলে-ইমরান সামান্য দুঃখ প্রদান ব্যতীত তারা তোমাদের কোন অনিষ্ট করতে পারবেনা; আর যদি তারা তোমাদের সাথে লড়াই করে তাহলে তারা তোমাদেরকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে; অতঃপর তাদেরকে সাহায্য করা হবেনা। ১১১
404 ৩. আলে-ইমরান আল্লাহর নিকট আশ্রয় গ্রহণ এবং মনুষ্যগণের নিকট অত্মসমর্পণ ব্যতীত তারা যেখানেই অবস্থান করুক না কেন, লাঞ্ছনায় আক্রান্ত হয়েছে, আল্লাহর কোপে নিপতিত হয়েছে এবং গলগ্রহতা ওদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এটা এ কারণে যে, তারা আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি অবিশ্বাস করেছিল এবং নাবীগণকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছিল; যেহেতু তারা বিরুদ্ধাচরণ করেছিল ও সীমা অতিক্রম করেছিল। ১১২
405 ৩. আলে-ইমরান তারা সকলে সমান নয়; আহলে কিতাবের মধ্যে কিছু লোক রয়েছে যারা গভীর রাত পর্যন্ত আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করে এবং সাজদাহ করে। ১১৩
406 ৩. আলে-ইমরান তারা আল্লাহ ও আখিরাত বিশ্বাস করে এবং সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করে এবং সৎ কাজসমূহে তৎপর থাকে, আর তারাই সৎ কর্মশীলগণের অন্তর্ভুক্ত। ১১৪
407 ৩. আলে-ইমরান আর তারা যে সৎ কাজ করবে তা কখনও অবজ্ঞা করা হবেনা; এবং আল্লাহ ধর্মভীরুগণকে অবগত আছেন। ১১৫
408 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাস করেছে তাদের ধনরাশি ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহর নিকট কিছুমাত্র কাজে আসবেনা; এবং তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, তন্মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। ১১৬ জাহান্নাম
409 ৩. আলে-ইমরান তারা পার্থিব জীবনে যা ব্যয় করে তার দৃষ্টান্ত শৈত্যপূর্ণ ঝঞ্ঝা-বায়ুর অনুরূপ - যারা স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করেছে - ওটা সেই সকল সম্প্রদায়ের শস্যক্ষেতে নিপতিত হয় এবং তা বিধ্বস্ত করে। এবং আল্লাহ তাদের প্রতি অত্যাচার করেননি, বরং তারাই স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করেছে। ১১৭
410 ৩. আলে-ইমরান হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমরা নিজেদের সম্প্রদায় ব্যতিরেকে অন্য কেহকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করনা, তারা তোমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে সংকুচিত হবেনা; এবং তোমরা যাতে বিপন্ন হও তারা তা’ই কামনা করে; বস্তুতঃ তাদের মুখ হতেই শত্রুতা প্রকাশিত হয়, এবং তাদের অন্তর যা গোপন করে তা আরও গুরুতর; নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য নিদর্শনাবলী ব্যক্ত করছি, যেন তোমরা বুঝতে পার। ১১৮
411 ৩. আলে-ইমরান সাবধান হও - তোমরাই তাদেরকে ভালবাস, অথচ তারা তোমাদেরকে ভালবাসেনা; এবং তোমরা সমস্ত গ্রন্থই বিশ্বাস কর; আর তারা যখন তোমাদের সাথে মিলিত হয় তখন বলেঃ আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি এবং যখন তোমাদের হতে পৃথক হয়ে যায় তখন তোমাদের প্রতি আক্রোশে আঙ্গুলের অগ্রভাগসমূহ দংশন করে। তুমি বলঃ তোমরা নিজেদের আক্রোশে মরে যাও! নিশ্চয়ই আল্লাহ অন্তরের কথা জ্ঞাত আছেন। ১১৯
412 ৩. আলে-ইমরান যদি তোমাদেরকে কল্যাণ স্পর্শ করে তাহলে তারা অসন্তষ্ট হয়; আর যদি অমঙ্গল উপস্থিত হয় তখন তারা আনন্দিত হয়ে থাকে, এবং যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর ও সংযমী হও তাহলে তাদের চক্রান্ত তোমাদের কোনই ক্ষতি করতে পারবেনা। তারা যা করে - নিশ্চয়ই আল্লাহ তার পরিবেষ্টনকারী। ১২০
413 ৩. আলে-ইমরান (স্মরণ কর) যখন তুমি বিশ্বাসীদেরকে যুদ্ধার্থে যথাস্থানে সংস্থাপিত করার জন্য প্রভাতে স্বীয় পরিজন হতে বের হয়েছিলে এবং আল্লাহ সব কিছু শ্রবণ করেন ও জানেন। ১২১
414 ৩. আলে-ইমরান যখন তোমাদের দুই দল ভীরুতা প্রকাশের সংকল্প করেছিল এবং আল্লাহ সেই দলদ্বয়ের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন; এবং মু’মিনগণই আল্লাহর উপর নির্ভর করে থাকে। ১২২
415 ৩. আলে-ইমরান আর নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে বদরে সাহায্য করেছিলেন এবং তোমরা দুর্বল ছিলে; অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যেন তোমরা কৃতজ্ঞ হও। ১২৩
416 ৩. আলে-ইমরান যখন মু’মিনদেরকে বলেছিলেনঃ এটা কি তোমাদের পক্ষে যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের রাব্ব তিন সহস্র মালাইকা/ফেরেশতা প্রেরণ করে তোমাদের সাহায্য করবেন? ১২৪
417 ৩. আলে-ইমরান বরং যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর ও সংযমী হও এবং তারা যদি স্বেচ্ছায় তোমাদের উপর নিপতিত হয় তাহলে তোমাদের রাব্ব পাঁচ সহস্র বিশিষ্ট মালাইকা দ্বারা তোমাদেরকে সাহায্য করবেন। ১২৫
418 ৩. আলে-ইমরান আর আল্লাহ এই সাহায্য শুধু এ জন্যই করেছেন যেন তোমাদের জন্য সুসংবাদ হয় এবং তোমাদের অন্তরে শান্তি আসে। আর সাহায্য শুধু আল্লাহর পক্ষ হতেই হয়ে থাকে, যিনি পরাক্রান্ত, বিজ্ঞানময়। ১২৬
419 ৩. আলে-ইমরান যারা অবিশ্বাসী হয়েছে - তিনি এরূপে তাদের একাংশকে কর্তিত করেন অথবা তাদেরকে দুর্বল করেন, যাতে তারা অকৃতকার্য সহকারে ফিরে যায়। ১২৭
420 ৩. আলে-ইমরান এ ব্যাপারে তোমার কোনই করণীয় নেই, তিনি তাদেরকে ক্ষমা করেন অথবা শাস্তি প্রদান করেন; নিশ্চয়ই তারা অত্যাচারী। ১২৮
421 ৩. আলে-ইমরান আর নভোমন্ডলে যা রয়েছে ও ভূমন্ডলে যা আছে তা আল্লাহরই; তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি প্রদান করেন এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়। ১২৯
422 ৩. আলে-ইমরান হে ঈমানদারগণ! তোমরা দ্বিগুণের উপর দ্বিগুণ সুদ ভক্ষণ করনা এবং আল্লাহকে ভয় কর যেন তোমরা সুফল প্রাপ্ত হও। ১৩০
423 ৩. আলে-ইমরান আর তোমরা সেই জাহান্নামের ভয় কর, যা অবিশ্বাসীদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১৩১ জাহান্নাম
424 ৩. আলে-ইমরান আর আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য স্বীকার কর যেন তোমরা করুণা প্রাপ্ত হও। ১৩২
425 ৩. আলে-ইমরান তোমরা স্বীয় রবের ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে ধাবিত হও, যার প্রসারতা নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সদৃশ, ওটা ধর্মভীরুদের জন্য নির্মিত হয়েছে। ১৩৩
426 ৩. আলে-ইমরান যারা স্বচ্ছলতা ও অভাবের মধ্যে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানবদেরকে ক্ষমা করে; এবং আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন। ১৩৪
427 ৩. আলে-ইমরান এবং যখন কেহ অশ্লীল কাজ করে কিংবা স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করে অতঃপর আল্লাহকে স্মরণ করে এবং অপরাধসমূহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, এবং আল্লাহ ব্যতীত কে অপরাধসমূহ ক্ষমা করতে পারে? এবং তারা যা করছে সেই ব্যাপারে জেনে শুনে হঠকারিতা করেনা। ১৩৫
428 ৩. আলে-ইমরান তাদের পুরস্কার হবে তাদের রবের নিকট হতে মার্জনা এবং এমন উদ্যানসমূহ যেগুলির তলদেশ দিয়ে স্রোতস্বিনীসমূহ প্রবাহিত থাকবে, তন্মধ্যে তারা সদা অবস্থান করবে, এবং কর্মীদের জন্য কি সুন্দর প্রতিদান! ১৩৬ বেহেস্ত
429 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই তোমাদের পূর্বে বহু জীবনাচরণ অতিক্রান্ত হয়েছে, পৃথিবীতে বিচরণ কর, এবং লক্ষ্য কর যে, অবিশ্বাসীদের পরিণাম কিরূপ হয়েছে। ১৩৭
430 ৩. আলে-ইমরান এটা মানবমন্ডলীর জন্য বিবরণ এবং আল্লাহভীরুগণের জন্য পথ প্রদর্শন ও উপদেশ। ১৩৮
431 ৩. আলে-ইমরান আর তোমরা নিরাশ হয়োনা ও বিষন্ন হয়োনা এবং যদি তোমরা বিশ্বাসী হও তাহলে তোমরাই বিজয়ী হবে। ১৩৯
432 ৩. আলে-ইমরান যদি তোমাদের আঘাত লেগে থাকে তাহলে নিশ্চয়ই সেই সম্প্রদায়েরও তদ্রুপ আঘাত লেগেছে, এবং এই দিনসমূহকে আমি মানবগণের মধ্যে পরিক্রমণ করাই; এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে তাদেরকে আল্লাহ এই রূপে প্রকাশ করেন; এবং তোমাদের মধ্য হতে কতককে শহীদ রূপে গ্রহণ করবেন, আর আল্লাহ অত্যাচারীদেরকে ভালবাসেননা। ১৪০
433 ৩. আলে-ইমরান আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে তাদেরকে আল্লাহ এইরূপে পবিত্র করেন এবং অবিশ্বাসীদেরকে ধ্বংস করেন। ১৪১
434 ৩. আলে-ইমরান তোমরা কি ধারণা করছ যে, তোমরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ কারা জিহাদ করে ও কারা ধৈর্যশীল আল্লাহ তোমাদের মধ্য হতে তাদেরকে এখনও পরীক্ষা করেননি? ১৪২
435 ৩. আলে-ইমরান এবং নিশ্চয়ই তোমরা মৃত্যুর পূর্বেই ওর সাক্ষাৎ কামনা করছিলে, অনন্তর নিশ্চয়ই তোমরা এখন তা প্রত্যক্ষ করছ তোমাদের নিজেদের চোখে। ১৪৩
436 ৩. আলে-ইমরান এবং মুহাম্মাদ রাসূল ব্যতীত কিছুই নয়, নিশ্চয়ই তার পূর্বে রাসূলগণ বিগত হয়েছে, অনন্তর যদি তার মৃত্যু হয় অথবা সে নিহত হয় তাহলে কি তোমরা পশ্চাদপদে ফিরে যাবে? এবং যে কেহ পশ্চাদপদে ফিরে যায় তাতে সে আল্লাহর কোনই অনিষ্ট করবেনা এবং আল্লাহ কৃতজ্ঞগণকে পুরস্কার প্রদান করেন। ১৪৪
437 ৩. আলে-ইমরান আর আল্লাহর আদেশে লিপিবদ্ধ নির্দিষ্ট সময় ব্যতীত কেহই মৃত্যুমুখে পতিত হয়না; এবং যে কেহ ইহলোকের প্রতিদান কামনা করে, আমি তাকে তা দুনিয়ায় প্রদান করে থাকি; পক্ষান্তরে যে লোক আখিরাতে বিনিময় কামনা করে আমি তাকে তা প্রদান করব এবং আমি কৃতজ্ঞগণকে অচিরেই পুরস্কার প্রদান করব। ১৪৫
438 ৩. আলে-ইমরান আর এমন অনেক নাবী ছিল যারা সঙ্গীসহযোগে অনুবর্তী হয়ে যুদ্ধ করেছিল; পরন্ত আল্লাহর পথে যা সংঘটিত হয়েছিল তাতে তারা নিরুৎসাহ হয়নি ও শক্তিহীন হয়নি এবং বিচলিত হয়নি। এবং আল্লাহ ধৈর্যশীলগণকে ভালবাসেন। ১৪৬
439 ৩. আলে-ইমরান আর এতদ্ব্যতীত তাদের কথা ছিলনা যে, তারা বলতঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদের অপরাধ ও আমাদের কাজের বাড়াবাড়ি হেতু কৃত অন্যায়সমূহ ক্ষমা করুন, আমাদেরকে দৃঢ় রাখুন এবং অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন। ১৪৭
440 ৩. আলে-ইমরান অনন্তর আল্লাহ তাদেরকে পার্থিব পুরস্কার প্রদান করলেন এবং পরলোকের পুরস্কার শ্রেষ্ঠতর; এবং আল্লাহ সৎকর্মশীলগণকে ভালবাসেন। ১৪৮
441 ৩. আলে-ইমরান হে মু’মিনগণ! যারা অবিশ্বাস করেছে, যদি তোমরা তাদের আজ্ঞাবহ হও তাহলে তারা তোমাদেরকে পশ্চাদপদে ফিরিয়ে নিবে, তাতে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ১৪৯
442 ৩. আলে-ইমরান বরং আল্লাহ তোমাদের অভিভাবক এবং তিনিই শ্রেষ্ঠতর সাহায্যকারী। ১৫০
443 ৩. আলে-ইমরান যারা অবিশ্বাস করেছে, আমি সত্ত্বর তাদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করব, যেহেতু তারা আল্লাহর সাথে সেই বিষয়ে অংশী স্থাপন করেছে যদ্বিষয়ে তিনি কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি এবং জাহান্নাম তাদের অবস্থান স্থল এবং ওটা অত্যাচারীদের জন্য নিকৃষ্ট বাসস্থান! ১৫১ জাহান্নাম
444 ৩. আলে-ইমরান আর নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি দেয়া তাঁর অঙ্গীকার পূর্ণ করেছেন যখন তোমরা তাঁর অনুমতিক্রমে তোমাদের শত্রুদের বিনাশ করছিলে তোমরা সাহসহারা হয়ে যাওয়া পর্যন্ত এবং নির্দেশ সম্পর্কে বিবাদ করছিলে ও অবাধ্য হয়েছিলে। অতঃপর তোমরা যা পছন্দ কর (বিজয়) তা তোমাদের প্রত্যক্ষ করালেন। তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা পার্থিব বস্ত্ত কামনা করে এবং কিছু লোক পরকাল পছন্দ করে। অতঃপর তিনি তোমাদের পরীক্ষা করার জন্য শত্রুদের থেকে ফিরিয়ে দিলেন এবং নিশ্চয়ই তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করলেন। আল্লাহ বিশ্বাসীদের প্রতি অনুগ্রহশীল। ১৫২
445 ৩. আলে-ইমরান আর যখন তোমরা আরোহণ করে যাচ্ছিলে এবং কারও দিকে ফিরেও দেখছিলেনা এবং রাসূল তোমাদেরকে পশ্চাদ হতে আহবান করছিল; অনন্তর তিনি তোমাদেরকে দুঃখের উপর দুঃখ প্রদান করলেন। কিন্তু যা অতিক্রান্ত হয়েছে এবং তোমাদের উপর যা উপনীত হয়নি, তোমরা তজ্জন্য দুঃখ করনা; এবং তোমরা যা করছ আল্লাহ তদ্বিষয়ে অভিজ্ঞ। ১৫৩
446 ৩. আলে-ইমরান অনন্তর তিনি দুঃখের পরে তোমাদের উপর শান্তি অবতরণ করলেন, তা ছিল তন্দ্রা, যা তোমাদের এক দলকে তন্দ্রাচ্ছন্ন করেছিল, আর একদল নিজেদের জীবনের জন্য চিন্তা করছিল; তারা আল্লাহ সম্বন্ধে অজ্ঞতার অনুরূপ ধারণা পোষণ করছিল। তারা বলেছিলঃ এ বিষয়ে কি আমাদের কোন অধিকার নেই? তুমি বলঃ সকল বিষয়ে আল্লাহর অধিকার। তারা নিজেদের অন্তরে যা গোপন রাখে তা তোমার নিকট প্রকাশ করেনা; তারা বলেঃ যদি এ বিষয়ে আমাদের কোন অধিকার থাকতো তাহলে এখানে আমরা নিহত হতামনা। তুমি বলঃ যদি তোমরা তোমাদের গৃহের মধ্যেও থাকতে তবুও যাদের প্রতি মৃত্যু বিধিবদ্ধ হয়েছে তারা নিশ্চয়ই স্বীয় মৃত্যু স্থানে এসে উপস্থিত হত; তোমাদের অন্তরের মধ্যে যা আছে, আল্লাহ তা পরীক্ষা করে থাকেন; এবং আল্লাহ মনের অন্তর্নিহিত ভাব জ্ঞাত আছেন। ১৫৪
447 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে যারা দু’দলের সম্মুখীন হওয়ার দিন পশ্চাদবর্তীত হয়েছিল তার কারণ শাইতান তাদেরকে প্রতারিত করেছিল তাদেরই কোনো পাপের কারণে। কিন্তু আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করেছেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, সহিষ্ণু। ১৫৫
448 ৩. আলে-ইমরান হে মু’মিনগণ! যারা অবিশ্বাস করেছে তোমরা তাদের মত হয়োনা; এবং যখন তাদের ভ্রাতৃগণ পৃথিবীতে কোন অভিযানে বের হয় অথবা যুদ্ধে নিহত হয় তখন তারা বলেঃ যদি ওরা আমাদের নিকট থাকতো তাহলে মৃত্যুমুখে পতিত হতনা অথবা নিহত হতনা; আল্লাহ এরূপে তাদের অন্তরে দুঃখ ও অনুতাপ সঞ্চার করেন, আল্লাহই জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন এবং তোমরা যা করছ তৎপ্রতি আল্লাহ লক্ষ্যকারী। ১৫৬
449 ৩. আলে-ইমরান আর যদি তোমরা আল্লাহর পথে নিহত অথবা মৃত্যুমুখে পতিত হও তাহলে আল্লাহর নিকট হতেই ক্ষমা রয়েছে এবং তারা যা সঞ্চয় করেছে তদপেক্ষা তাঁর করুণা শ্রেষ্ঠতর। ১৫৭
450 ৩. আলে-ইমরান আর যদি তোমরা মৃত্যুবরণ কর কিংবা নিহত হও তাহলে তোমাদেরকে অবশ্যই আল্লাহর দিকে একত্রিত করা হবে। ১৫৮
451 ৩. আলে-ইমরান অতএব আল্লাহর অনুগ্রহ এই যে, তুমি তাদের প্রতি কোমল চিত্ত; এবং তুমি যদি কর্কশভাষী, কঠোর হৃদয় হতে তাহলে নিশ্চয়ই তারা তোমার সংসর্গ হতে অন্তর্হিত হত। অতএব তুমি তাদেরকে ক্ষমা কর ও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং কার্য সম্বন্ধে তাদের সাথে পরামর্শ কর; অতঃপর তুমি যখন সংকল্প কর তখন আল্লাহর প্রতি নির্ভর কর; এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর উপর ভরসাকারীগণকে ভালবাসেন। ১৫৯
452 ৩. আলে-ইমরান যদি আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করেন তাহলে কেহই তোমাদের উপর জয়যুক্ত হবেনা; এবং যদি তিনি তোমাদেরকে পরিত্যাগ করেন তাহলে তাঁর পরে আর কে আছে যে তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারে? এবং বিশ্বাসীগণ আল্লাহর উপরেই নির্ভর করে থাকে। ১৬০
453 ৩. আলে-ইমরান আর কোন নাবীর পক্ষে কোন বিষয় গোপন করা শোভনীয় নয়; এবং যে কেহ গোপন করবে তাহলে সে যা গোপন করেছে তা উত্থান দিনে আনয়ন করা হবে; অনন্তর প্রত্যেক ব্যক্তি যা অর্জন করেছে তা পূর্ণরূপে প্রদত্ত হবে এবং তারা নির্যাতিত হবেনা। ১৬১
454 ৩. আলে-ইমরান যে আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসরণ করেছে সে কি তার মত হতে পারে, যে আল্লাহর আক্রোশে পতিত হয়েছে? এবং তার বাসস্থান জাহান্নাম এবং ওটা নিকৃষ্ট গন্তব্য স্থান। ১৬২ জাহান্নাম
455 ৩. আলে-ইমরান আল্লাহর নিকট মানুষের বিভিন্ন পদমর্যাদা রয়েছে এবং তোমরা যা করছ তদ্বিষয়ে আল্লাহ লক্ষ্যকারী। ১৬৩
456 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, তিনি তাদের নিজেদেরই মধ্য হতে রাসূল প্রেরণ করেছেন, যে তাদের নিকট তাঁর নিদর্শনাবলী পাঠ করে ও তাদেরকে পবিত্র করে এবং তাদেরকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান শিক্ষা দান করে এবং নিশ্চয়ই তারা এর পূর্বে প্রকাশ্য ভ্রান্তির মধ্যে ছিল। ১৬৪
457 ৩. আলে-ইমরান হ্যাঁ, যখন তোমাদের উপর বিপদ উপস্থিত হল, বস্তুতঃ তোমরাও তাদের প্রতি তদনুরূপ দু’বার বিপদ উপস্থিত করেছিলে, তোমরা বলেছিলেঃ এটা কোথা হতে হল? তুমি বলঃ ওটা তোমাদের নিজেদেরই নিকট হতে; নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়োপরি শক্তিমান। ১৬৫
458 ৩. আলে-ইমরান এই দুই দলের সম্মুখীন হওয়ার দিনে তোমাদের উপর যা আপতিত হয়েছিল তা আল্লাহরই ইচ্ছাক্রমে; এবং তদ্দারা আল্লাহ বিশ্বাসীদেরকে পরীক্ষা করেন। ১৬৬
459 ৩. আলে-ইমরান আর তদ্দারা তিনি মুনাফিকদেরকে পরিচিত করেন; এবং তাদেরকে বলা হয়েছিলঃ এসো, আল্লাহর পথে সংগ্রাম কর অথবা শত্রুদেরকে প্রতিহত কর; তারা বলেছিলঃ যদি আমরা জানতাম যে, লড়াই হবে তাহলে অবশ্যই আমরা তোমাদের অনুগমন করতাম। তারা সেদিন বিশ্বাস অপেক্ষা অবিশ্বাসের নিকটবর্তী ছিল; তাদের অন্তরে যা নেই তা’ই তারা মুখে বলে থাকে; তারা যে বিষয় গোপন করে আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেন। ১৬৭
460 ৩. আলে-ইমরান ওরা তারা, যারা গৃহে বসে স্বীয় নিহত ভাইদের সম্বন্ধে বলেঃ যদি তারা আমাদের কথা মান্য করত তাহলে নিহত হতনা; তুমি বলঃ যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে নিজেদেরকে মৃত্যু হতে রক্ষা কর। ১৬৮
461 ৩. আলে-ইমরান যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে কখনও মৃত মনে করনা; বরং তারা জীবিত, তারা তাদের রাব্ব হতে জীবিকা প্রাপ্ত। ১৬৯
462 ৩. আলে-ইমরান আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহ হতে যা দান করেছেন তাতেই তারা পরিতুষ্ট; এবং তাদের ভাইয়েরা যারা এখনো তাদের সাথে সম্মিলিত হয়নি তাদের এই অবস্থার প্রতিও তারা সন্তুষ্ট হয় যে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবেনা। ১৭০
463 ৩. আলে-ইমরান তারা আল্লাহর নিকট হতে অনুগ্রহ ও নি‘আমাত লাভ করার কারণে আনন্দিত হয়; আর এ জন্য যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বাসীগণের প্রতিদান বিনষ্ট করেননা। ১৭১
464 ৩. আলে-ইমরান যারা আঘাত পাওয়ার পরেও আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশকে মান্য করেছে তাদের মধ্যে যারা সৎ কাজ করেছে ও সংযত হয়েছে তাদের জন্য রয়েছে মহান প্রতিদান। ১৭২
465 ৩. আলে-ইমরান যাদেরকে লোকেরা বলেছিলঃ নিশ্চয়ই তোমাদের বিরুদ্ধে সেই সব লোক সমবেত হয়েছে; অতএব তোমরা তাদেরকে ভয় কর; কিন্তু এতে তাদের বিশ্বাস পরিবর্ধিত হয়েছিল এবং তারা বলেছিলঃ আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি মঙ্গলময়, কর্মবিধায়ক। ১৭৩
466 ৩. আলে-ইমরান অনন্তর তারা আল্লাহর অনুগ্রহ সম্পদসহ প্রত্যাবর্তীত হয়েছিল, তাদেরকে অমঙ্গল স্পর্শ করেনি এবং তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসরণ করেছিল; আর আল্লাহর অনুগ্রহ অতি ব্যাপক। ১৭৪
467 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই শাইতান শুধুমাত্র তার অলী হতে তোমাদেরকে ভয় প্রদর্শন করে; কিন্তু যদি তোমরা বিশ্বাসী হও তাহলে তাদেরকে ভয় করনা; এবং আমাকেই ভয় কর। ১৭৫
468 ৩. আলে-ইমরান আর যারা অবিশ্বাসে তৎপর, তুমি তাদের জন্য বিষন্ন হয়োনা; বস্তুতঃ তারা আল্লাহর কোন অনিষ্ট করতে পারবেনা; আল্লাহ তাদের জন্য আখিরাতে কোন কল্যাণ ইচ্ছা করেননা এবং তাদেরই জন্য কঠোর শাস্তি রয়েছে। ১৭৬
469 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাসের পরিবর্তে অবিশ্বাস ক্রয় করেছে তারা আল্লাহর কোনই অনিষ্ট করতে পারবেনা এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। ১৭৭
470 ৩. আলে-ইমরান অবিশ্বাসীরা যেন এ ধারণা না করে যে, আমি তাদেরকে যে অবকাশ দিয়েছি তা তাদের জীবনের জন্য কল্যাণকর; তারা স্বীয় পাপ বর্ধিত করবে এ জন্যই আমি তাদেরকে অবকাশ প্রদান করি; এবং তাদের জন্য অপমানকর শাস্তি রয়েছে। ১৭৮
471 ৩. আলে-ইমরান সৎকে অসৎ (মুনাফিক) হতে পৃথক না করা পর্যন্ত আল্লাহ মু’মিনদেরকে, তারা যে অবস্থায় আছে ঐ অবস্থায় রেখে দিতে পারেননা, আর গাইবের খবরও তাদেরকে অবহিত করবেননা, তবে তাঁর রাসূলদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা গ্রহণ করেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ও তাঁর রাসূলকে বিশ্বাস কর। এবং যদি বিশ্বাস কর ও ভাল ‘আমল কর তাহলে তোমাদের জন্য রয়েছে মহা পুরস্কার। ১৭৯
472 ৩. আলে-ইমরান আর আল্লাহ যাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে কিছু দান করেছেন তদ্বিষয়ে যারা কার্পণ্য করে তারা যেন এরূপ ধারণা না করে যে, ওটা তাদের জন্য কল্যাণকর; বরং ওটা তাদের জন্য ক্ষতিকর; তারা যে বিষয়ে কৃপণতা করেছে উত্থান দিনে ওটাই তাদের কন্ঠ-নিগড় হবে; এবং আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের স্বত্বাধিকারী এবং যা তোমরা করছ আল্লাহ তদ্বিষয়ে পূর্ণ খবর রাখেন। ১৮০
473 ৩. আলে-ইমরান অবশ্যই আল্লাহ তাদের কথা শ্রবণ করেছেন যারা বলে থাকে যে, আল্লাহ দরিদ্র ও তারা ধনবান; তারা যা বলছে এবং তাদের অন্যায়ভাবে নাবীগণকে হত্যা করা আমি লিপিবদ্ধ করব; এবং তাদেরকে বলবঃ তোমরা জ্বলন্ত আগুনের শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ কর। ১৮১
474 ৩. আলে-ইমরান এটা তা’ই যা তোমাদের হস্তসমূহ পূর্বে প্রেরণ করেছে এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ অত্যাচারী নন, যারা তাঁকে সেবা করে তাদের প্রতি। ১৮২
475 ৩. আলে-ইমরান যারা বলে থাকে, অবশ্যই আল্লাহ আমাদের থেকে অঙ্গীকার নিয়েছেন যে, অগ্নি যা গ্রাস করে, আমাদের জন্য এমন কুরবানী আনয়ন না করা পর্যন্ত আমরা যেন কোন নাবীর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করি; তুমি বলঃ নিশ্চয়ই আমার পূর্বে সমুজ্জ্বল নিদর্শনাবলী এবং তোমরা যা বল তৎসহ রাসূলগণ আগমন করেছিল; যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে কেন তোমরা তাদেরকে হত্যা করেছিলে? ১৮৩
476 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর যদি তারা তোমার প্রতি অসত্যারোপ করে তাহলে তোমার পূর্বেও রাসূলগণকে অবিশ্বাস করা হয়েছিল, যারা প্রকাশ্য নিদর্শনাবলী ও ক্ষুদ্র পুস্তিকা এবং উজ্জ্বল গ্রন্থসহ আগমন করেছিল। ১৮৪
477 ৩. আলে-ইমরান সমস্ত জীবই মৃত্যুর আস্বাদ গ্রহণ করবে; এবং নিশ্চয়ই উত্থান দিনে তোমাদেরকে পূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে; অতএব যে কেহ জাহান্নাম হতে বিমুক্ত হয় এবং জান্নাতে প্রবিষ্ট হয় - ফলতঃ নিশ্চয়ই সে সফলকাম; আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত আর কিছুই নয়। ১৮৫ জাহান্নাম
478 ৩. আলে-ইমরান অবশ্যই তোমরা তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন সম্পর্কে পরীক্ষিত হবে। তোমাদের পূর্বে যাদেরকে গ্রন্থ প্রদত্ত হয়েছে ও যারা অংশী স্থাপন করেছে তাদের নিকট হতে তোমাদেরকে বহু দুঃখজনক বাক্য শুনতে হবে; এবং যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর ও সংযমী হও তাহলে অবশ্যই এটা সুদৃঢ় কার্যাবলীর অন্তর্গত। ১৮৬
479 ৩. আলে-ইমরান আর আল্লাহ যখন যাদেরকে গ্রন্থ প্রদান করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন যে, তারা নিশ্চয়ই এটি লোকদের মধ্যে ব্যক্ত করবে এবং তা গোপন করবেনা; কিন্তু তারা ওটা তাদের পশ্চাতে নিক্ষেপ করল এবং ওটা অল্প মূল্যে বিক্রি করল। অতএব তারা যা ক্রয় করেছিল তা নিকৃষ্টতর। ১৮৭
480 ৩. আলে-ইমরান যারা স্বীয় কৃতকর্মে সন্তষ্ট এবং তারা যা করেনি তজ্জন্য প্রশংসা প্রার্থী এরূপ লোকদের সম্বন্ধে ধারণা করনা যে, তারা শাস্তি হতে বিমুক্ত, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ১৮৮
481 ৩. আলে-ইমরান আল্লাহরই জন্য নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের আধিপত্য এবং আল্লাহ সর্ব বিষয়োপরি শক্তিমান। ১৮৯
482 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টিতে এবং দিন ও রাতের পরিবর্তনে জ্ঞানবানদের জন্য স্পষ্ট নিদর্শনাবলী রয়েছে। ১৯০
483 ৩. আলে-ইমরান যারা দন্ডায়মান, উপবেশন ও এলায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃষ্টি বিষয়ে চিন্তা-গবেষনা করে এবং বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! আপনি এসব বৃথা সৃষ্টি করেননি; আপনিই পবিত্রতম! অতএব আমাদেরকে জাহান্নাম হতে রক্ষা করুন! ১৯১ জাহান্নাম
484 ৩. আলে-ইমরান হে আমাদের রাব্ব! আপনি যাকে জাহান্নামে প্রবিষ্ট করান, ফলতঃ নিশ্চয়ই তাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে; এবং অত্যাচারীদের জন্য কেহই সাহায্যকারী নেই। ১৯২ জাহান্নাম
485 ৩. আলে-ইমরান হে আমাদের রাব্ব! নিশ্চয়ই আমরা এক আহবানকারীকে ঈমানের প্রতি আহবান করতে শুনেছিলাম যে, তোমরা স্বীয় রবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর; আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি; হে আমাদের রাব্ব! অতএব আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন ও আমাদের সকল দোষক্রটি দূর করুন এবং পুন্যবানদের সাথে আমাদের মৃত্যু দান করুন। ১৯৩
486 ৩. আলে-ইমরান হে আমাদের রাব্ব! আপনি স্বীয় রাসূলগণের মাধ্যমে আমাদের সাথে যে অঙ্গীকার করেছিলেন তা দান করুন এবং উত্থান দিবসে আমাদেরকে লাঞ্ছিত করবেননা। নিশ্চয়ই আপনি অঙ্গীকার ভঙ্গ করেননা। ১৯৪
487 ৩. আলে-ইমরান অনন্তর তাদের রাব্ব তাদের জন্য ওটা স্বীকার করলেন এবং বললেনঃ আমি তোমাদের পুরুষ অথবা নারীর মধ্য হতে কোন কর্মীর কৃতকর্ম ব্যর্থ করবনা, তোমরা পরস্পর এক, অতএব যারা দেশ ত্যাগ করেছে অথবা স্বীয় গৃহসমূহ হতে বিতাড়িত হয়েছে ও আমার পথে নির্যাতিত হয়েছে এবং সংগ্রাম করেছে ও নিহত হয়েছে - নিশ্চয়ই তাদের জন্য আমি তাদের অমঙ্গলসমূহ অপসারণ করাব এবং নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাব, যার নিম্নে স্রোতস্বিনী নদীসমূহ প্রবাহিত; এটা আল্লাহর নিকট হতে প্রতিদান এবং আল্লাহর নিকটই উত্তম প্রতিদান রয়েছে। ১৯৫
488 ৩. আলে-ইমরান যারা অবিশ্বাসী হয়েছে তাদের নগরসমূহে প্রত্যাগমন যেন তোমাদেরকে প্রতারিত না করে। ১৯৬
489 ৩. আলে-ইমরান এটা মাত্র কয়েকদিনের সম্ভোগ; অনন্তর তাদের অবস্থান জাহান্নাম এবং ওটা নিকৃষ্ট স্থান। ১৯৭ জাহান্নাম
490 ৩. আলে-ইমরান কিন্তু যারা স্বীয় রাব্বকে ভয় করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত-যার নিম্নে স্রোতস্বিনীসমূহ প্রবাহিত, তম্মধ্যে তারা সদা অবস্থান করবে, এটা আল্লাহর নিকট রয়েছে, তা সৎকর্মশীলদের জন্য বহুগুণে উত্তম। ১৯৮
491 ৩. আলে-ইমরান এবং নিশ্চয়ই আহলে কিতাবের মধ্যে এরূপ লোকও রয়েছে যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে এবং তোমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা তাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছিল তদ্বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং আল্লাহর সম্মুখে বিনয়াবনত থাকে। যারা অল্প মূল্যে আল্লাহর নিদর্শনাবলী বিক্রি করেনা তাদেরই জন্য তাদের রবের নিকট প্রতিদান রয়েছে; নিশ্চয়ই আল্লাহ সত্ত্বর হিসাব গ্রহণকারী। ১৯৯
492 ৩. আলে-ইমরান হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমরা ধৈর্য অবলম্বন কর এবং সহিষ্ণু ও সুপ্রতিষ্ঠিত হও; এবং আল্লাহকে ভয় কর যেন তোমরা সুফল প্রাপ্ত হও। ২০০
493 ৪. আন-নিসা হে মানবমন্ডলী! তোমরা তোমাদের রাব্বকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে একই ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন এবং তা হতে তদীয় সহধর্মিনী সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের উভয় হতে বহু নর ও নারী ছড়িয়ে দিয়েছেন এবং সেই আল্লাহকে ভয় কর যাঁর নামের দোহাই দিয়ে তোমরা একে অপরকে যাঞ্চা কর, এবং আত্মীয়-জ্ঞাতিদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর। নিশ্চয়ই আল্লাহই তত্ত্বাবধানকারী।
494 ৪. আন-নিসা আর ইয়াতীমদেরকে তাদের ধন সম্পত্তি বুঝিয়ে দাও এবং পবিত্রতার সাথে অপবিত্রতার বিনিময় করনা ও তোমাদের ধন সম্পত্তির সাথে তাদের ধন সম্পত্তি মিশ্রিত করে ভোগ করনা; নিশ্চয়ই এটা গুরুতর অপরাধ।
495 ৪. আন-নিসা আর যদি তোমরা আশংকা কর যে, ইয়াতীমদের প্রতি সুবিচার করতে পারবেনা তাহলে নারীদের মধ্য হতে তোমাদের পছন্দ মত দু’টি, তিনটি কিংবা চারটিকে বিয়ে করে নাও; কিন্তু যদি তোমরা আশংকা কর যে, তাদের সাথে ন্যায় সঙ্গত আচরণ করতে পারবেনা তাহলে মাত্র একটি অথবা তোমাদের ডান হাত যার অধিকারী (ক্রীতদাসী); এটা আরও উত্তম; এটা অবিচার না করার নিকটবর্তী।
496 ৪. আন-নিসা আর সন্তুষ্ট চিত্তে নারীদেরকে তাদের দেয় মোহর প্রদান কর, কিন্তু যদি তারা স্বেচ্ছায় কিয়দংশ প্রদান করে তাহলে সঠিক বিবেচনা মত তৃপ্তির সাথে ভোগ কর।
497 ৪. আন-নিসা আল্লাহ তোমাদের জন্য যে ধন-সম্পত্তি নির্ধারণ করেছেন তা অবোধদেরকে প্রদান করনা; বরং তা হতে তাদেরকে ভক্ষণ করাতে থাক, পরিধান করাতে থাক এবং তাদের সাথে সদ্ভাবে কথা বল।
498 ৪. আন-নিসা আর ইয়াতীমরা বিয়ের যোগ্য না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে পরীক্ষা করে নাও; অতঃপর যদি তাদের মধ্যে বিবেক-বুদ্ধি পরিদৃষ্ট হয় তাহলে তাদের ধন-সম্পত্তি তাদেরকে সমর্পণ কর; ইয়াতীমের ধন-সম্পদ অপব্যয় করনা অথবা তারা বয়ঃপ্রাপ্ত হবে বলে ওটা সত্ত্বরতা সহকারে আত্মসাৎ করনা; এবং দেখাশোনাকারী যদি অভাবমুক্ত হয় তাহলে ইয়াতীমের মাল খরচ করা হতে সে নিজকে সম্পূর্ণ বিরত রাখবে, আর যে ব্যক্তি অভাবগ্রস্ত সে সঙ্গত পরিমাণ ভোগ করবে, অনন্তর যখন তাদের সম্পত্তি তাদেরকে সমর্পণ করতে চাও তখন তাদের জন্য সাক্ষী রেখ এবং আল্লাহই হিসাব গ্রহণে যথেষ্ট।
499 ৪. আন-নিসা পুরুষদের জন্য মাতা-পিতা ও আত্মীয় স্বজনের পরিত্যক্ত বিষয়ে অংশ রয়েছে- অল্প বা অধিক, তা নির্দিষ্ট পরিমাণ।
500 ৪. আন-নিসা বন্টনের সময়ে যখন স্বজনগণ, ইয়াতীমগণ এবং দরিদ্রগণ উপস্থিত হয় তখন তা হতে তাদেরকেও জীবিকা দান কর এবং তাদের সাথে সদ্ভাবে কথা বল।
501 ৪. আন-নিসা তাদের মনে এই ভেবে শংকা থাকা উচিৎ যে, যদি তারা মৃত্যুকালে তাদের পশ্চাতে অসহায় পরিবার রেখে যায় তাহলে তাদেরও একই অবস্থা ঘটতে পারে। সুতরাং তারা যেন আল্লাহকে ভয় করে এবং সঙ্গত কথা বলে।
502 ৪. আন-নিসা যারা অন্যায়ভাবে পিতৃহীনদের ধন সম্পত্তি গ্রাস করে, নিশ্চয়ই তা স্বীয় উদরে অগ্নি ব্যতীত কিছুই ভক্ষণ করেনা এবং সত্ত্বরই তারা অগ্নি শিখায় প্রবেশ করবে। ১০
503 ৪. আন-নিসা আল্লাহ তোমাদের সন্তানদের সম্বন্ধে তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেনঃ এক পুত্রের জন্য দুই কন্যার অংশের তুল্য; আর যদি শুধু কন্যাগণ দুই জনের অধিক হয় তাহলে তারা মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে দুই তৃতীয়াংশ প্রাপ্ত হবে। আর যদি একটি মাত্র কন্যা হয় তাহলে সে অর্ধেকাংশ প্রাপ্ত হবে; এবং যদি মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান থাকে তাহলে মাতা-পিতার জন্য অর্থাৎ উভয়ের প্রত্যেকেরই জন্য তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে এক ষষ্ঠাংশ রয়েছে, আর যদি তার কোন সন্তান না থাকে এবং শুধু মাতা-পিতাই তার উত্তরাধিকারী হয় তাহলে তার মাতার জন্য রয়েছে এক তৃতীয়াংশ এবং যদি তার ভাই থাকে তাহলে সে যা নির্দেশ করে গেছে সেই নির্দেশ ও ঋণ অন্তে তার জননীর জন্য এক ষষ্ঠাংশ; তোমাদের পিতা ও তোমাদের পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের অধিকতর উপকারী তা তোমরা অবগত নও, এটাই আল্লাহর নির্দেশ। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও বিজ্ঞানময়। ১১
504 ৪. আন-নিসা আর তোমাদের পত্নীগণের যদি সন্তান-সন্ততি না থাকে তাহলে তারা যা পরিত্যাগ করে যায় তা থেকে তোমাদের জন্য উহার অর্ধাংশ; কিন্তু যদি তাদের সন্তান-সন্ততি থাকে তাহলে তারা যা অসীয়াত করেছে সেই অসীয়াত ও ঋণ পরিশোধের পর তাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে তোমাদের জন্য এক চতুর্থাংশ; এবং যদি তোমাদের স্ত্রীদের কোন সন্তান-সন্ততি না থাকে তাহলে তোমরা যা পরিত্যাগ করে যাবে, তাদের জন্য তার এক চতুর্থাংশ; কিন্তু যদি তোমাদের সন্তুান-সন্ততি থাকে তাহলে তোমরা যা অসীয়াত করবে সেই অসীয়াত ও ঋণ পরিশোধের পর তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে তাদের জন্য এক অষ্টমাংশ; যদি কোন মূল ও শাখাবিহীন পুরুষ কিংবা স্ত্রী মারা যায় এবং তার এক ভাই অথবা এক ভগ্নী থাকে তাহলে এতদুভয়ের মধ্য হতে প্রত্যেকেই এক ষষ্ঠাংশ পাবে, আর যদি তারা তদপেক্ষা অধিক হয় তাহলে কৃত অসীয়াত পূরণ করার পর অথবা ঋণ শোধের পর, কারও অনিষ্ট না করে তারা উহার এক তৃতীয়াংশ প্রাপ্ত হবে; এটাই আল্লাহর নির্দেশ এবং আল্লাহ মহাজ্ঞানী, সহিষ্ণু। ১২
505 ৪. আন-নিসা এটাই আল্লাহর নির্দিষ্ট সীমাসমূহ; এবং যে কেহ আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের অনুগত হয় তিনি তাকে এরূপ জান্নাতে প্রবিষ্ট করাবেন যার নিম্নে স্রোতস্বিনীসমূহ প্রবাহিতা, তম্মধ্যে তারা সদা অবস্থান করবে; এবং এটাই বড় সফলতা। ১৩
506 ৪. আন-নিসা আর যে কেহ আল্লাহ ও তদীয় রাসূলকে অমান্য করে এবং তাঁর নির্দিষ্ট সীমাসমূহ অতিক্রম করে তিনি তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। তন্মধ্যে সে সদা অবস্থান করবে এবং তার জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি রয়েছে। ১৪ জাহান্নাম
507 ৪. আন-নিসা আর তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা নির্লজ্জ কাজ করে, তোমরা তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য হতে চার জন সাক্ষী উপস্থিত কর; অনন্তর যদি তারা সাক্ষ্য প্রদান করে তাহলে তাদেরকে তোমরা গৃহসমূহের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখ যে পর্যন্ত মৃত্যু তাদেরকে উঠিয়ে না নেয় কিংবা আল্লাহ তাদের জন্য কোন পথ নির্দেশ না করেন। ১৫
508 ৪. আন-নিসা আর তোমাদের মধ্য হতে যে কোন দুইজন এই নির্লজ্জতার কাজ করবে, তাদের উভয়কেই শাস্তি প্রদান কর; কিন্তু তারা যদি তাওবাহ করে এবং সদাচারী হয় তাহলে এতদুভয় হতে প্রত্যাবর্তিত হও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাহ গ্রহণকারী, করুণাময়। ১৬
509 ৪. আন-নিসা তাওবাহ কবূল করার দায়িত্ব যে আল্লাহর উপর রয়েছে তাতো শুধু তাদেরই জন্য যারা অজ্ঞতা বশতঃ পাপ করে থাকে, অতঃপর অবিলম্বে ক্ষমা প্রার্থনা করে; সুতরাং আল্লাহ তাদেরকেই ক্ষমা করবেন; আল্লাহ মহাজ্ঞানী, বিজ্ঞানময়। ১৭
510 ৪. আন-নিসা আর তাদের জন্য কোন ক্ষমা নেই যারা ঐ পর্যন্ত পাপ করতে থাকে যখন তাদের কারও নিকট মৃত্যু উপস্থিত হয় তখন বলে, নিশ্চয়ই আমি এখন ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাদের জন্যও ক্ষমা নয় যারা অবিশ্বাসী অবস্থায় মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে; তাদেরই জন্য আমি বেদনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। ১৮
511 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! এটা তোমাদের জন্য বৈধ নয় যে, তোমরা বলপূর্বক নারীদের উত্তরাধিকারী হও; এবং প্রকাশ্য অশ্লীলতা ব্যতীত তোমরা তাদেরকে যা প্রদান করেছ উহার কিয়দংশ গ্রহণের জন্য তাদেরকে বাধ্য করনা এবং তাদের সাথে সদ্ভাবে সম মর্যাদায় অবস্থান কর; কিন্তু যদি অপছন্দ কর তাহলে তোমরা যে বিষয় অপছন্দ কর আল্লাহ সেটাকে প্রচুর কল্যাণকর করতে পারেন। ১৯
512 ৪. আন-নিসা আর যদি তোমরা এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রী পরিবর্তন করতে ইচ্ছা কর এবং তাদের একজনকে প্রচুর ধন-সম্পদ প্রদান করে থাক তাহলে তোমরা তন্মধ্য হতে কিছুই প্রতিগ্রহণ করনা; তাহলে কি তোমরা অপবাদ প্রয়োগ এবং প্রকাশ্য পাপ করে সেটা গ্রহণ করবে? ২০
513 ৪. আন-নিসা এবং কিরূপে তোমরা তা গ্রহণ করবে? বস্তুতঃ তোমরা পরস্পর একে অন্যের নিকট গমন করেছিলে এবং তারা তোমাদের নিকট হতে সুদৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিল। ২১
514 ৪. আন-নিসা তোমাদের পিতৃগণ নারীকূলের মধ্যে যাদেরকে বিয়ে করেছে তোমরা তাদেরকে বিয়ে করনা, কিন্তু যা বিগত হয়েছে। নিশ্চয়ই এটি অশ্লীল, অরুচিকর এবং নিকৃষ্ট আচরণ। ২২
515 ৪. আন-নিসা তোমাদের জন্য অবৈধ করা হয়েছে - তোমাদের মাতৃগণ, কন্যাগণ, ভগ্নিগণ, ফুফুগণ, খালাগণ, ভ্রাতৃকন্যাগণ, ভগ্নির কন্যাগণ, তোমাদের সেই মাতৃগণ যারা তোমাদেরকে স্তন্য দান করেছে, তোমাদের দুগ্ধ ভগ্নিগণ, তোমাদের স্ত্রীদের মাতৃগণ, তোমরা যাদের অভ্যন্তরে উপনীত হয়েছ সেই স্ত্রীদের যে সকল কন্যা তোমাদের ক্রোড়ে অবস্থিত; কিন্তু যদি তোমরা তাদের মধ্যে উপনীত না হয়ে থাক তাহলে তোমাদের জন্য কোন অপরাধ নেই; এবং ঔরসজাত পুত্রদের পত্নীগণ; এবং যা অতীত হয়ে গেছে, তদ্ব্যতীত দুই ভগ্নিকে একত্রে বিয়ে করা; নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ২৩
516 ৪. আন-নিসা এবং নারীদের মধ্যে বিবাহিতগণ তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে; কিন্তু তোমাদের ডান হাত যাদের অধিকারী - আল্লাহ তোমাদের জন্য তাদেরকে বিধিবদ্ধ করেছেন, এতদ্ব্যতীত তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে অন্যান্য নারীদের; তোমরা স্বীয় ধনের দ্বারা ব্যভিচারের উদ্দেশ্য ব্যতীত বিবাহ করার জন্য তাদের অনুসন্ধান কর; অনন্তর তাদের দ্বারা যে ফল ভোগ করবে তজ্জন্য তাদেরকে তাদের নির্ধারিত দেয় প্রদান কর এবং কোন অপরাধ হবেনা যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পর সম্মত হও, নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী, বিজ্ঞানময়। ২৪
517 ৪. আন-নিসা আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বাধীনা ও মুসলিম নারীকে বিয়ে করার সামর্থ্য রাখেনা তাহলে তোমাদের ডান হাত অধিকারী সেই বিশ্বাসিনী দাসীকে বিয়ে করে। আল্লাহ তোমাদের বিশ্বাস বিষয়ে জ্ঞাত আছেন, তোমরা একে অপর হতে সমুদ্ভুত। অতএব তাদের মনিবদের অনুমতিক্রমে তাদেরকে বিয়ে কর এবং নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে তাদের প্রাপ্য (মোহরানা) প্রদান কর এমতাবস্থায় যে, তারা ব্যভিচারিণী কিংবা উপ-পতি গ্রহণকারিণী হবেনা। অতঃপর যখন তারা বিবাহবদ্ধ হয়, তৎপর যদি তারা ব্যভিচার করে তাহলে তাদের প্রতি স্বাধীনা নারীদের শাস্তির অর্ধেক, এটা তাদেরই জন্য তোমাদের মধ্যে যারা দুস্কার্যকে ভয় করে। এবং যদি বিরত থাক তাহলে এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ২৫
518 ৪. আন-নিসা আল্লাহ তোমাদের জন্য সবকিছু পরিস্কার বর্ণনা করতে এবং তোমাদেরকে তোমাদের পূর্ববর্তীগণের আদর্শসমূহ প্রদর্শন করতে ও তোমাদেরকে ক্ষমা করতে ইচ্ছা করেন এবং আল্লাহ মহাজ্ঞানী, বিজ্ঞানময়। ২৬
519 ৪. আন-নিসা আর আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করতে ইচ্ছা করেন এবং যারা প্রবৃত্তির পূজারী তারা ইচ্ছা করে যে, তোমরা ঘোর অধঃপতনে পতিত হও। ২৭
520 ৪. আন-নিসা আল্লাহ তোমাদের বোঝা লঘু করতে চান যেহেতু মানুষ দুর্বল (রূপে) সৃষ্ট হয়েছে। ২৮
521 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! তোমরা অন্যায়ভাবে পরস্পরের ধন-সম্পদ গ্রাস করনা; কেবলমাত্র পরস্পর সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা কর তা বৈধ এবং তোমরা নিজেদের হত্যা করনা; নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল। ২৯
522 ৪. আন-নিসা আর যে কেহ সীমা অতিক্রম করে অথবা যলমের বশবর্তী হয়ে এ কাজ করে, ফলতঃ নিশ্চয়ই আমি তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব এবং আল্লাহর পক্ষে এটা খুবই সহজসাধ্য। ৩০ জাহান্নাম
523 ৪. আন-নিসা তোমরা যদি সেই বড় বড় পাপসমূহ হতে বিরত হও যা তোমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে, তাহলেই আমি তোমাদের ক্রটি বিচ্যুতিগুলি ক্ষমা করে দিব এবং তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে প্রবিষ্ট করাব। ৩১
524 ৪. আন-নিসা এবং তোমরা ওর আকাংখা করনা যদ্বারা আল্লাহ একের উপর অপরকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন; পুরুষেরা যা উপার্জন করেছে তাতে তাদের অংশ রয়েছে এবং নারীরা যা উপার্জন করেছে তাতে তাদের অংশ রয়েছে এবং তোমরা আল্লাহরই নিকট অনুগ্রহ প্রার্থনা কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে মহাজ্ঞানী। ৩২
525 ৪. আন-নিসা আমি সবাইকেই উত্তরাধিকারী করেছি যা তাদের মাতা-পিতা ও আত্মীয়-স্বজন পরিত্যাগ করে যায় এবং দক্ষিণ হস্ত যাদের সাথে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ; অতএব তোমরা তাদেরকে তাদের অংশ প্রদান কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ সব বিষয়ে সাক্ষী। ৩৩
526 ৪. আন-নিসা পুরুষেরা নারীদের উপর তত্ত্বাবধানকারী ও ভরণপোষণকারী, যেহেতু আল্লাহ তাদের মধ্যে একের উপর অপরকে বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এই হেতু যে, তারা স্বীয় ধন সম্পদ হতে তাদের জন্য ব্যয় করে থাকে; সুতরাং যে সমস্ত নারী পুণ্যবতী তারা আনুগত্য করে, আল্লাহর সংরক্ষিত প্রচ্ছন্ন বিষয় সংরক্ষণ করে; যদি নারীদের অবাধ্যতার আশংকা হয় তাহলে তাদেরকে সদুপদেশ প্রদান কর, তাদেরকে শয্যা হতে পৃথক কর এবং তাদেরকে প্রহার কর; অনন্তর যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তাহলে তাদের জন্য অন্য পন্থা অবলম্বন করনা; নিশ্চয়ই আল্লাহ সমুন্নত, মহা মহীয়ান। ৩৪
527 ৪. আন-নিসা আর যদি তোমরা উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদের আশংকা কর তাহলে তোমাদের বংশ হতে একজন বিচারক এবং তোমাদের স্ত্রীদের বংশ হতে একজন বিচারক নির্দিষ্ট কর; যদি তারা মীমাংসার আকাংখা করে তাহলে আল্লাহ তাদের মধ্যে সম্প্রীতি সঞ্চার করবেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী, অভিজ্ঞ। ৩৫
528 ৪. আন-নিসা এবং তোমরা আল্লাহরই ইবাদাত কর এবং তাঁর সাথে কোন বিষয়ে অংশী স্থাপন করনা; এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার কর এবং আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, দরিদ্র, সম্পর্কবিহীন প্রতিবেশী, পার্শ্ববতী সহচর ও পথিক এবং তোমাদের দাস-দাসীদের সাথেও সদ্ব্যবহার কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ অহংকারী আত্মাভিমানীকে ভালবাসেননা। ৩৬
529 ৪. আন-নিসা যারা কৃপণতা করে ও লোকদের কার্পণ্য শিক্ষা দেয় এবং আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহে যা দান করেছেন তা গোপন করে, বস্তুতঃ আমি সেই অবিশ্বাসীদের জন্য অপমানজনক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। ৩৭
530 ৪. আন-নিসা এবং যারা লোকদের দেখানোর জন্য স্বীয় ধন সম্পদ ব্যয় করে এবং আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেনা, আর যাদের সহচর শাইতান - সে নিকৃষ্ট সঙ্গীই বটে। ৩৮
531 ৪. আন-নিসা আর এতে তাদের কি ক্ষতি হত - যদি তারা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করত এবং আল্লাহ তাদেরকে যা দান করেছেন তা হতে ব্যয় করত? এবং আল্লাহ তাদের বিষয়ে যথার্থই অবগত। ৩৯
532 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই আল্লাহ অণু পরিমাণও অত্যাচার করেননা এবং যদি কেহ কোন সৎ কাজ করে তাহলে তিনি ওটা দ্বিগুণ করে দেন এবং স্বীয় পক্ষ হতে ওর মহান প্রতিদান প্রদান করেন। ৪০
533 ৪. আন-নিসা অতঃপর তখন কি দশা হবে যখন আমি প্রত্যেক ধর্ম/সম্প্রদায় হতে সাক্ষী আনয়ন করব এবং তোমাকেই তাদের প্রতি সাক্ষী করব? ৪১
534 ৪. আন-নিসা যারা অবিশ্বাসী হয়েছে ও রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করেছে তারা সেদিন কামনা করবে - যেন ভূমন্ডলের সাথে তারা মিশে যায় এবং আল্লাহর নিকট তারা কোন কথাই গোপন করতে পারবেনা। ৪২
535 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সালাতের কাছেও যেওনা, যখন নিজের উচ্চারিত বাক্যের অর্থ নিজেই বুঝতে সক্ষম নও - এ অবস্থায় অথবা গোসল যরুরী হলে তা সমাপ্ত না করে সালাতের জন্য দান্ডায়মান হয়োনা। কিন্তু মুসাফির অবস্থার কথা স্বতন্ত্র। যদি তোমরা পীড়িত হও, কিংবা প্রবাসে অবস্থান কর অথবা তোমাদের মধ্যে কেহ পায়খানা হতে প্রত্যাগত হয় কিংবা রমণী স্পর্শ করে এবং পানি না পাওয়া যায় তাহলে বিশুদ্ধ মাটির অম্বেষণ কর, তদ্বারা তোমাদের মুখমন্ডল ও হস্তসমূহ মুছে ফেল; নিশ্চয়ই আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। ৪৩ নামাজ
536 ৪. আন-নিসা তোমরা কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি যাদেরকে গ্রন্থের এক অংশ প্রদত্ত হয়েছে? তারা পথভ্রষ্টতা ক্রয় করেছে এবং ইচ্ছা করে যে, তোমরাও সঠিক পথ হতে দূরে সরে যাও। ৪৪
537 ৪. আন-নিসা এবং আল্লাহ তোমাদের শত্রুদেরকে সম্যক অবগত আছেন; পৃষ্ঠপোষক এবং সাহায্যকারী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। ৪৫
538 ৪. আন-নিসা ইয়াহুদীদের মধ্যে কেহ কেহ যথাস্থান হতে বাক্যাবলী পরিবতির্ত করে এবং বলেঃ আমরা শ্রবণ করলাম ও আগ্রহ্য করলাম; এবং বলে, শোন - না শোনার মত; এবং তারা স্বীয় জিহবা বিকৃত করে ও ধর্মের প্রতি দোষারোপ করে বলে ‘রাইনা’; এবং যদি তারা বলত, ‘আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম; এবং আমাদেরকে বুঝার শক্তি দাও’ তাহলে এটা তাদের পক্ষে উত্তম ও সঠিক হত; কিন্তু আল্লাহ তাদের অবিশ্বাস হেতু তাদেরকে অভিসম্পাত করেছেন; অতএব অল্প সংখ্যক ব্যতীত তারা বিশ্বাস করেনা। ৪৬
539 ৪. আন-নিসা হে গ্রন্থ প্রাপ্তরা! তোমাদের সঙ্গে যা আছে তার সত্যতা প্রতিপাদনকারী যা অবতীর্ণ করেছি তৎপ্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর ঐ সময় আসার পূর্বে, যখন আমি অনেক মুখমন্ডল বিকৃত করে দিব। অতঃপর তাদেরকে পৃষ্ঠের দিকে উল্টিয়ে দিব অথবা আসহাবে সাবতের প্রতি যেরূপ অভিসম্পাত করেছিলাম তদ্রুপ তাদের প্রতিও অভিসম্পাত করি; এবং আল্লাহর আদেশ কার্যকরী হয়েই থাকে। ৪৭
540 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে অংশী স্থাপনকারীকে ক্ষমা করবেননা এবং তদ্ব্যতীত যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন এবং যে কেহ আল্লাহর অংশী স্থির করে সে মহাপাপে আবদ্ধ হল। ৪৮
541 ৪. আন-নিসা তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি যারা স্বীয় পবিত্রতা প্রকাশ করে? বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পবিত্র করেন এবং তারা এক সূতা পরিমাণও অত্যাচারিত হবেনা। ৪৯
542 ৪. আন-নিসা লক্ষ্য করঃ তারা কিরূপে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে! স্পষ্ট অপরাধী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট। ৫০
543 ৪. আন-নিসা তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি যাদেরকে গ্রন্থের একাংশ প্রদত্ত হয়েছে? তারা মূর্তি ও শাইতানের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং কাফিরদেরকে বলে, মুসলিমদের অপেক্ষা তারাই অধিকতর সুপথগামী। ৫১
544 ৪. আন-নিসা এদেরই প্রতি আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন; এবং আল্লাহ যাকে অভিসম্পাত করেন, তুমি তার জন্য কোনই সাহায্যকারী খুঁজে পাবেনা। ৫২
545 ৪. আন-নিসা তাহলে কি রাজত্বে তাদের কোন অংশ রয়েছে? বস্তুতঃ তখন তারা লোকদেরকে কণা পরিমাণও প্রদান করবেনা। ৫৩
546 ৪. আন-নিসা তাহলে কি তারা লোকদের প্রতি এ জন্য হিংসা করে যে, আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় সম্পদ হতে কিছু দান করেছেন? ফলতঃ নিশ্চয়ই আমি ইবরাহীম বংশীয়গণকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান দান করেছি এবং তাদেরকে বিশাল সাম্রাজ্য প্রদান করেছি। ৫৪
547 ৪. আন-নিসা অতঃপর তাদের মধ্যে অনেকে ওর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং অনেকেই ওটা হতে বিরত রয়েছে; এবং (তাদের জন্য) শিখা বিশিষ্ট জাহান্নামই যথেষ্ট। ৫৫ জাহান্নাম
548 ৪. আন-নিসা যারা আমার নিদর্শনসমূহের প্রতি অবিশ্বাসী হয়েছে তাদেরকে অবশ্যই আমি জাহান্নামের আগুনে প্রবেশ করাব। যখন তার চর্ম বিদগ্ধ হবে, আমি তৎপরিবর্তে তাদের চর্ম পরিবর্তন করে দিব, যেন তারা শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রান্ত, হিকমাতের অধিকারী। ৫৬ জাহান্নাম
549 ৪. আন-নিসা আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে সৎ কার্যাবলী সম্পাদন করেছে, নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাব, যার নিম্নে স্রোতস্বিনীসমূহ প্রবাহিতা, তন্মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে; সেখানে তাদের জন্য পবিত্রা সহধর্মিণীগণ রয়েছে এবং আমি তাদেরকে সুবিস্তৃত ছায়া শীতল স্থানে প্রবেশ করাব। ৫৭
550 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করছেন, গচ্ছিত বিষয় ওর অধিকারীকে অর্পণ কর; এবং যখন তোমরা লোকদের মধ্যে বিচার মীমাংসা কর তখন ন্যায় বিচার কর; অবশ্যই আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম উপদেশ দান করছেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণকারী, পরিদর্শক। ৫৮
551 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহর ও রাসূলের অনুগত হও এবং তোমাদের জন্য যারা বিচারক তাদের; অতঃপর যদি তোমাদের মধ্যে কোন বিষয়ে কোন মতবিরোধ হয় তাহলে আল্লাহ ও রাসূলের দিকে প্রত্যাবর্তিত হও, যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস করে থাক; এটাই কল্যাণকর ও শ্রেষ্ঠতর পরিসমাপ্তি। ৫৯
552 ৪. আন-নিসা তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি যারা দাবী করে যে, তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং তোমার পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছিল তৎপ্রতি তারা বিশ্বাস করে? অথচ তারা নিজেদের মুকাদ্দামা তাগুতের নিকট নিয়ে যেতে চায়, যদিও তাদেরকে আদেশ করা হয়েছিল যেন তাকে অবিশ্বাস করে; পক্ষান্তরে শাইতান তাদেরকে প্রতারিত করে পথভ্রষ্ট করতে চায়। ৬০
553 ৪. আন-নিসা আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন সেই দিকে এবং রাসূলের দিকে এসো তখন তুমি মুনাফিকদেরকে দেখবে, তারা তোমা হতে মুখ ফিরিয়ে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। ৬১
554 ৪. আন-নিসা অনন্তর তখন কিরূপ হবে, যখন তাদের হস্তসমূহ যা পূর্বে প্রেরণ করেছে, তজ্জন্য তাদের উপর বিপদ উপনীত হয়? তখন তারা আল্লাহর শপথ করতে করতে তোমার কাছে এসে বলবে - কল্যাণ ও সম্প্রীতি ব্যতীত আমরা কিছুই কামনা করিনি। ৬২
555 ৪. আন-নিসা তাদের অন্তরসমূহে যা আছে আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেন। অতএব তুমি তাদের দিক হতে নির্লিপ্ত হও এবং তাদেরকে সদুপদেশ প্রদান কর এবং তাদেরকে তাদের সম্বন্ধে হৃদয়স্পর্শী কথা বল। ৬৩
556 ৪. আন-নিসা আমি এতদ্ব্যতীত কোনই রাসূল প্রেরণ করিনি যে, আল্লাহর আদেশে তাঁর আনুগত্য স্বীকার করবে, এবং যদি তারা স্বীয় জীবনের উপর অত্যাচার করার পর তোমার নিকট আগমন করত, অতঃপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করত আর রাসূলও তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইত তাহলে নিশ্চয়ই তারা আল্লাহকে তাওবাহ কবূলকারী, করুণাময় দেখতে পেত। ৬৪
557 ৪. আন-নিসা অতএব তোমার রবের শপথ! তারা কখনই বিশ্বাস স্থাপনকারী হতে পারবেনা, যে পর্যন্ত তোমাকে তাদের সৃষ্ট বিরোধের বিচারক না করে, অতঃপর তুমি যে বিচার করবে তা দ্বিধাহীন অন্তরে গ্রহণ না করে এবং ওটা সন্তষ্ট চিত্তে কবূল না করে। ৬৫
558 ৪. আন-নিসা আর আমি যদি তাদের উপর বিধিবদ্ধ করতাম যে, তোমরা নিজেদেরকে হত্যা কর অথবা স্বীয় গৃহ প্রাচীর হতে নিস্ক্রান্ত হও তাহলে তাদের অল্প সংখ্যক ব্যতীত ওটা করতনা এবং যদ্বিষয়ে তাদেরকে উপদেশ দেয়া হয়েছিল তা যদি তারা করত তাহলে নিশ্চয়ই ওটা হত তাদের জন্য কল্যাণকর এবং ধর্মের উপর সুদৃঢ় থাকার জন্যও। ৬৬
559 ৪. আন-নিসা এবং তখন আমি তাদেরকে অবশ্যই স্বীয় সন্নিধান হতে বৃহত্তর প্রতিদান প্রদান করতাম। ৬৭
560 ৪. আন-নিসা এবং নিশ্চয়ই তাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন করতাম। ৬৮
561 ৪. আন-নিসা আর যে কেহ আল্লাহ ও রাসূলের অনুগত হয়, তারা ঐ ব্যক্তিদের সঙ্গী হবে যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন; অর্থাৎ নাবীগণ, সত্য সাধকগণ, শহীদগণ ও সৎ কর্মশীলগণ; এবং এরাই সর্বোত্তম সঙ্গী। ৬৯
562 ৪. আন-নিসা এটাই আল্লাহর অনুগ্রহ এবং আল্লাহর জ্ঞানই যথেষ্ট। ৭০
563 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! তোমরা স্বীয় আত্মরক্ষার সরঞ্জাম তুলে নাও, অতঃপর পৃথকভাবে বহির্গত হও অথবা সম্মিলিতভাবে অভিযান কর। ৭১
564 ৪. আন-নিসা আর তোমাদের মধ্যে এরূপ লোকও রয়েছে যে শৈথিল্য করে; অনন্তর যদি তোমাদের উপর বিপদ নিপতিত হয় তাহলে বলেঃ আমার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ছিল যে, আমি তখন তাদের সাথে উপস্থিত ছিলামনা। ৭২
565 ৪. আন-নিসা পক্ষান্তরে যদি আল্লাহর সন্নিধান হতে তোমাদের উপর অনুগ্রহ, সম্পদ অবতীর্ণ হয় তাহলে এরূপভাবে বলে যেন তোমাদের ও তাদের মধ্যে কোনই সম্বন্ধ ছিলনা - হায়! যদি আমিও তাদের সঙ্গী হতাম তাহলে মহান ফলপ্রদ সুফল লাভ করতাম! ৭৩
566 ৪. আন-নিসা অতএব যারা দুনিয়ার বিনিময়ে আখিরাত ক্রয় করে তারা যেন আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে; এবং যে আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে, অতঃপর নিহত অথবা বিজয়ী হয়, তাহলে আমি তাকে মহান প্রতিদান প্রদান করব। ৭৪
567 ৪. আন-নিসা তোমাদের কি হয়েছে যে, তোমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করছনা? অথচ নারী, পুরুষ এবং শিশুদের মধ্যে যারা দুর্বল তারা বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে অত্যাচারী এই নগর হতে নিস্কৃতি দিন এবং স্বীয় সন্নিধান হতে আমাদের পৃষ্ঠপোষক ও নিজের নিকট হতে আমাদের জন্য সাহায্যকারী প্রেরণ করুন। ৭৫
568 ৪. আন-নিসা যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে তারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে এবং যারা কাফির তারা শাইতানের পক্ষে যুদ্ধ করে; সুতরাং তোমরা শাইতানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর; নিশ্চয়ই শাইতানের কৌশল দুর্বল। ৭৬
569 ৪. আন-নিসা তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি যাদেরকে বলা হয়েছিল যে, তোমাদের হস্তসমূহ সংযত রাখ এবং সালাত প্রতিষ্ঠিত কর ও যাকাত প্রদান কর। অনন্তর যখন তাদের প্রতি জিহাদ ফরয করে দেয়া হল তখন তাদের একদল আল্লাহকে যেরূপ ভয় করবে তদ্রুপ মানুষকে ভয় করতে লাগল, বরং তদপেক্ষাও অধিক; এবং তারা বললঃ হে আমাদের রাব্ব! আপনি কেন আমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করলেন? কেন আমাদেরকে আর কিছুকালের জন্য অবসর দিলেননা? তুমি বলঃ পার্থিব আনন্দ খুবই সীমিত এবং ধর্মভীরুগণের জন্য পরকালই কল্যাণকর; এবং তোমরা খেজুর বীজ পরিমাণও অত্যাচারিত হবেনা। ৭৭ নামাজ
570 ৪. আন-নিসা তোমরা যেখানেই থাক না কেন, মৃত্যু তোমাদেরকে পেয়ে যাবে, যদিও তোমরা সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান কর; এবং যদি তাদের উপর কোন কল্যাণ অবতীর্ণ হয় তাহলে তারা বলেঃ এটা আল্লাহর নিকট হতে এবং যদি তাদের প্রতি অমঙ্গল নিপতিত হয় তাহলে বলে যে, এটা তোমার নিকট হতে হয়েছে। তুমি বলঃ সমস্তই আল্লাহর নিকট হতে হয়; অতএব ঐ সম্প্রদায়ের কি হয়েছে যে, তারা কোন কথা বুঝতে চেষ্টা করেনা! ৭৮
571 ৪. আন-নিসা তোমার নিকট যে কল্যাণ উপস্থিত হয় তা আল্লাহর সন্নিধান হতে এবং তোমার উপর যে অকল্যাণ নিপতিত হয় তা তোমার নিজ হতে হয়ে থাকে, এবং আমি তোমাকে মানবমন্ডলীর জন্য রাসূল রূপে প্রেরণ করেছি; এবং আল্লাহর সাক্ষীই যথেষ্ট। ৭৯
572 ৪. আন-নিসা যে কেহ রাসূলের অনুগত হয় নিশ্চয়ই সে আল্লাহরই অনুগত হয়ে থাকে, এবং যে ফিরে যায় আমি তার জন্য তোমাকে রক্ষক রূপে প্রেরণ করিনি। ৮০
573 ৪. আন-নিসা আর তারা বলেঃ আমরা অনুগত। কিন্তু যখন তারা তোমার নিকট হতে বের হয়ে যায় তখন তাদের একদল, তুমি যা বল তার বিরুদ্ধে পরামর্শ করে; এবং তারা যা পরামর্শ করে আল্লাহ তা লিপিবদ্ধ করেন; অতএব তাদের প্রতি নিস্পৃহ হও এবং আল্লাহর উপর নির্ভর কর; এবং আল্লাহই কার্য সম্পাদনে যথেষ্ট। ৮১
574 ৪. আন-নিসা তারা কেন কুরআন সম্বন্ধে গবেষনা করেনা? আর যদি ওটা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও নিকট হতে হত তাহলে তারা ওতে বহু বৈপরিত্য দেখতে পেত। ৮২
575 ৪. আন-নিসা আর যখন তাদের নিকট কোন শাস্তি অথবা ভীতিজনক বিষয় উপস্থিত হয় তখন তারা ওটা রটনা করতে থাকে এবং যদি তারা ওটা রাসূলের কিংবা তাদের আদেশ দাতাদের প্রতি সমর্পন করত তাহলে তাদের মধ্যে সঠিক তথ্য পেয়ে যেত এবং যদি তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা না হত তাহলে অল্প সংখ্যক ব্যতীত তোমরা শাইতানের অনুসরণ করতে। ৮৩
576 ৪. আন-নিসা অতএব আল্লাহর পথে যুদ্ধ কর; তোমার নিজের ছাড়া তোমার উপর অন্য কারও ভার অর্পণ করা হয়নি এবং বিশ্বাসীদেরকে উদ্ধুদ্ধ কর; অচিরেই আল্লাহ অবিশ্বাসীদের সংগ্রাম প্রতিরোধ করবেন; এবং আল্লাহ সংগ্রামে সুদৃঢ় ও শাস্তি দানে কঠোর। ৮৪
577 ৪. আন-নিসা যে কেহ সৎ সুপারিশ করবে সে ওর অংশ পাবে এবং যে কেহ অসৎ সুপারিশ করবে সেও ওর অংশ প্রাপ্ত হবে; এবং আল্লাহ সর্বশক্তিমান। ৮৫
578 ৪. আন-নিসা আর যখন তোমরা শুভাশীষে সম্ভাষিত হও তখন তোমরাও তা হতে শ্রেষ্ঠতর শুভ সম্ভাষণ কর অথবা ওটাই প্রত্যর্পণ কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে হিসাব গ্রহণকারী। ৮৬
579 ৪. আন-নিসা আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কেহ উপাস্য নেই; নিশ্চয়ই এতে সন্দেহ নেই যে, তিনি তোমাদেরকে একত্রিত করবেন; এবং বাক্যে আল্লাহ অপেক্ষা কে বেশি সত্যপরায়ন? ৮৭
580 ৪. আন-নিসা অনন্তর তোমাদের কি হয়েছে যে, তোমরা মুনাফিকদের সম্বন্ধে দুই দল হলে? এবং তারা যা অর্জন করেছে তজ্জন্য আল্লাহ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছেন; আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তুমি কি তাকে পথ প্রদর্শন করতে চাও? এবং আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেছেন বস্তুতঃ তুমি তার জন্য কোনই পথ পাবেনা। ৮৮
581 ৪. আন-নিসা তারা ইচ্ছা করে যে, তারা যেরূপ কাফির তোমরাও যেন তদ্রুপ কাফির হয়ে যাও, যাতে তোমরাও তাদের সদৃশ হও। অতএব তাদের মধ্য হতে বন্ধু গ্রহণ করনা, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে দেশ ত্যাগ করে; অতঃপর যদি তারা প্রতিগমন করে তাহলে তাদেরকে ধর এবং যেখানে পাও তাদেরকে সংহার কর; এবং তাদের মধ্য হতে বন্ধু অথবা সাহায্যকারী গ্রহণ করনা। ৮৯
582 ৪. আন-নিসা কিন্তু তোমাদের মধ্যে ও তাদের মধ্যে সন্ধিবদ্ধ সম্প্রদায়ের সাথে যারা সম্মিলিত হয়, অথবা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে সংকুচিত চিত্ত হয়ে যারা তোমাদের নিকট উপস্থিত হয়। যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন তাহলে তোমাদের উপর তাদেরকে শক্তিশালী করতেন। তাহলে নিশ্চয়ই তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করত। অতঃপর যদি তারা তোমাদের দিক হতে সন্ধি প্রার্থনা করে তাহলে আল্লাহ তাদের প্রতিকূলে তোমাদের জন্য কোন পন্থা রাখেননি। ৯০
583 ৪. আন-নিসা অচিরেই তুমি এরূপও প্রাপ্ত হবে, যারা তোমাদের দিক হতে ও স্বীয় সম্প্রদায় হতে শান্তির সাথে থাকতে ইচ্ছা করে, যখন তাদের বিরোধের প্রতি প্রলুব্ধ করানো হয় তখন তাতেই নিপতিত হয়; অনন্তর যদি তোমাদের দিক হতে নিবৃত্ত না হয় ও সন্ধি প্রার্থনা না করে এবং তাদের হস্তসমূহ সংযত না করে তাহলে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও তাদেরকে সংহার কর; এদেরই জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে প্রকাশ্য যুক্তি প্রমাণ দান করেছেন। ৯১
584 ৪. আন-নিসা কোন মু’মিনের উচিত নয় যে, ভ্রম ব্যতীত কোন মু’মিনকে হত্যা করে; যে কেহ ভ্রম বশতঃ কোন মু’মিনকে হত্যা করে তাহলে সে জনৈক মু’মিন দাসকে মুক্ত করে দিবে এবং তার আত্মীয় স্বজনকে হত্যার বিনিময় সমর্পণ করবে; কিন্তু যদি তারা ক্ষমা করে দেয় এবং যদি সে তোমাদের শত্রু সম্প্রদায়ের অন্তর্গত ও মু’মিন হয় তাহলে জনৈক মু’মিন দাসকে মুক্তি দান করবে; এবং যদি সে তোমাদের মধ্যে ও তাদের মধ্যে সন্ধিবদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্তর্গত হয় তাহলে তার স্বজনদেরকে হত্যার বিনিময় অর্পণ করবে এবং জনৈক মু’মিন দাসকে মুক্ত করবে; কিন্তু যদি সে ওটায় অক্ষম হয় তাহলে আল্লাহর নিকট হতে ক্ষমা প্রাপ্তির জন্য একাদিক্রমে দুই মাস সিয়াম পালন করবে। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, বিজ্ঞানময়। ৯২ রোজা
585 ৪. আন-নিসা আর যে কেহ ইচ্ছা করে কোন মু’মিনকে হত্যা করে তাহলে তার শাস্তি জাহান্নাম, তন্মধ্যে সে সদা অবস্থান করবে এবং আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন ও তাকে অভিশপ্ত করেছেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। ৯৩ জাহান্নাম
586 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! যখন তোমরা আল্লাহর পথে বহির্গত হও তখন প্রত্যেক কাজ যাচাই করে নাও, এবং কেহ তোমাদেরকে ‘সালাম’ করলে তাকে বলনা যে, ‘তুমি মু’মিন নও’; তোমরা কি পার্থিব জীবনের সম্পদ অনুসন্ধান করছো? তাহলে আল্লাহর নিকট প্রচুর সম্পদ রয়েছে; প্রথমে তোমরা ঐরূপই ছিলে, অতঃপর আল্লাহ তোমাদের উপর অনুগ্রহ করেছেন। অতএব তোমরা স্থির করে নাও যে, তোমরা যা করছ নিশ্চয়ই আল্লাহ তদ্বিষয়ে অভিজ্ঞ। ৯৪
587 ৪. আন-নিসা মু’মিনদের মধ্যে যারা কোন দুঃখ পীড়া ব্যতীতই গৃহে বসে থাকে, আর যারা স্বীয় ধন ও প্রাণ দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে তারা সমান নয়; যারা ধন-প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে আল্লাহ তাদেরকে গৃহে অবস্থানকারীদের উপর উচ্চ মর্যাদা দিয়েছেন; এবং সকলকেই আল্লাহ কল্যাণপ্রদ প্রতিশ্রুতি দান করেছেন। এবং উপবিষ্টদের উপর ধর্মযোদ্ধাগণকে মহান প্রতিদানে গৌরবান্বিত করেছেন। ৯৫
588 ৪. আন-নিসা স্বীয় সন্নিধান হতে পদমর্যাদা, ক্ষমা ও করুনা (দ্বারা গৌরবান্বিত করেছেন) এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ৯৬
589 ৪. আন-নিসা যারা স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করেছিল, মালাক/ফেরেশতা তাদের প্রাণ হরণ করে বলে, তোমরা কি অবস্থায় ছিলে? তারা বলে, আমরা দুনিয়ায় অসহায় ছিলাম; তারা বলে, আল্লাহর পৃথিবী কি প্রশস্ত ছিলনা যে, তন্মধ্যে তোমরা হিজরাত করতে? অতএব ওদেরই বাসস্থান জাহান্নাম এবং কত নিকৃষ্ট ঐ জায়গা! ৯৭ জাহান্নাম
590 ৪. আন-নিসা কিন্তু পুরুষ, নারী এবং শিশুদের মধ্যে অসহায়তা বশতঃ যারা কোন উপায় করতে পারেনা অথবা কোন পথ প্রাপ্ত হয়না। ৯৮
591 ৪. আন-নিসা ফলতঃ তাদেরই আশা আছে যে, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন এবং আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। ৯৯
592 ৪. আন-নিসা আর যে কেহ আল্লাহর পথে দেশ ত্যাগ করে সে পৃথিবীতে বহু প্রশস্ত স্থান ও স্বচ্ছলতা প্রাপ্ত হবে। এবং যে কেহ গৃহ হতে বহির্গত হয়ে আল্লাহ ও রাসূলের উদ্দেশে দেশ ত্যাগ করে, অতঃপর সে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাহলে নিশ্চয়ই এর প্রতিদান আল্লাহর উপর ন্যস্ত রয়েছে; এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১০০
593 ৪. আন-নিসা আর যখন তোমরা ভূপৃষ্ঠে ভ্রমণ কর তখন সালাত সংক্ষেপ করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই, যদি তোমরা আশংকা কর যে, যারা অবিশ্বাসী তারা তোমাদেরকে বিব্রত করবে; নিশ্চয়ই কাফিরেরা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। ১০১ নামাজ
594 ৪. আন-নিসা এবং যখন তুমি তাদের (সৈন্যদের) মধ্যে থাক, অতঃপর সালাতে দন্ডায়মান হও তখন যেন তাদের একদল তোমার সাথে দন্ডায়মান হয় এবং স্ব স্ব অস্ত্র গ্রহণ করে; অতঃপর যখন সাজদাহ্ সম্পন্ন করে তখন যেন তারা তোমার পশ্চাদ্বর্তী হয়; এবং অন্য দল যারা সালাত আদায় করেনি তারা যেন অগ্রসর হয়ে তোমার সাথে সালাত আদায় করে এবং স্ব স্ব আত্মরক্ষিকা ও অস্ত্র গ্রহণ করে। অবিশ্বাসীরা ইচ্ছা করে যে, তোমরা স্বীয় অস্ত্রশস্ত্র ও দ্রব্য সম্ভার সম্বন্ধে অসতর্ক হলেই তারা একযোগে তোমাদের উপর নিপতিত হয়; এবং এতে তোমাদের অপরাধ নেই যদি তোমরা বৃষ্টিপাতে বিব্রত হয়ে অথবা পীড়িত অবস্থায় স্ব স্ব অস্ত্র পরিত্যাগ কর এবং স্বীয় আত্মরক্ষিকা সঙ্গে গ্রহণ কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ অবিশ্বাসীদের জন্য অবমাননাকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। ১০২ নামাজ
595 ৪. আন-নিসা অতঃপর যখন তোমরা সালাত সম্পন্ন কর তখন দন্ডায়মান, উপবিষ্ট এবং শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর; অতঃপর যখন তোমরা নিরাপদ হও তখন সালাত প্রতিষ্ঠিত কর; নিশ্চয়ই সালাত বিশ্বাসীগণের উপর নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্ধারিত। ১০৩ নামাজ
596 ৪. আন-নিসা এবং সেই সম্প্রদায়ের পশ্চাদ্ধাবনে শৈথিল্য করনা; যদি তোমরা কষ্ট পেয়ে থাক তাহলে তারাও তোমাদের অনুরূপ কষ্ট ভোগ করেছে; এবং তৎসহ আল্লাহ হতে তোমাদের যে ভরসা আছে তাদের সেই ভরসা নেই; এবং আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। ১০৪
597 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই আমি তোমার প্রতি সত্যসহ গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছি - যেন তুমি তদনুযায়ী মানবদেরকে আদেশ প্রদান কর, যা আল্লাহ তোমাকে শিক্ষা দান করেছেন এবং তুমি বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষে বিতর্ককারী হয়োনা। ১০৫
598 ৪. আন-নিসা এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১০৬
599 ৪. আন-নিসা এবং যারা স্বীয় জীবনের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করে, তুমি তাদের পক্ষে বির্তক করনা; নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বাসঘাতক পাপীকে ভালবাসেননা। ১০৭
600 ৪. আন-নিসা তারা মানব হতে গোপন করতে চায়, কিন্তু আল্লাহ হতে গোপন করতে পারেনা; এবং তিনি তাদের সঙ্গে রয়েছেন যখন তারা রজনীতে এমন বিষয়ে পরামর্শ করে যাতে তিনি সম্মত নন; এবং তারা যা করছে আল্লাহ তার পরিবেষ্টনকারী। ১০৮
601 ৪. আন-নিসা সাবধান! তোমরাই ঐ লোক যারা ওদের পক্ষ হতে পার্থিব জীবন সম্বন্ধে বিতর্ক করছ; কিন্তু কিয়ামাত দিবসে তাদের পক্ষ হতে কে আল্লাহর সাথে বিতর্ক করবে এবং কে তাদের কার্য সম্পাদনকারী হবে? ১০৯
602 ৪. আন-নিসা এবং যে কেহ দুস্কার্য করে অথবা স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করে, অতঃপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থী হয়, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় দেখতে পাবে। ১১০
603 ৪. আন-নিসা এবং যে কেহ পাপ অর্জন করে, বস্তুতঃ সে স্বীয় আত্মার প্রতিই এর প্রতিক্রিয়া পৌঁছিয়ে থাকে এবং আল্লাহ মহাজ্ঞানী, বিজ্ঞানময়। ১১১
604 ৪. আন-নিসা আর যে কেহ অপরাধ অথবা পাপ অর্জন করে, অতঃপর ওটা নিরপরাধীর প্রতি আরোপ করে, তাহলে সে নিজেই সেই অপরাধ ও প্রকাশ্য পাপ বহন করবে। ১১২
605 ৪. আন-নিসা আর যদি তোমার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা না হত তাহলে তাদের একদল তোমাকে পথভ্রষ্ট করতে ইচ্ছুক হয়েছিল, এবং তারা নিজেদেরকে ছাড়া বিপদগামী করেনি ও তারা তোমাকে কোন বিষয়ে ক্লেশ দিতে পারবেনা; এবং আল্লাহ তোমার প্রতি গ্রন্থ ও প্রজ্ঞা অবতীর্ণ করেছেন এবং তুমি যা জানতেনা তিনি তা তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন; এবং তোমার প্রতি আল্লাহর অসীম করুণা রয়েছে। ১১৩
606 ৪. আন-নিসা সাধারণ লোকের অধিকাংশ গুপ্ত পরামর্শে কোন মঙ্গল নিহিত থাকেনা, তবে হ্যাঁ যে ব্যক্তি দান খয়রাত করে অথবা কোন সৎ কাজ করে কিংবা লোকের মধ্যে পরস্পর সন্ধি স্থাপন করে দেয়ার উদ্দেশে তা করে তাহলে তা স্বতন্ত্র এবং যে আল্লাহর প্রসন্নতা সন্ধানের জন্য ঐরূপ করে, আমি তাকে মহান বিনিময় প্রদান করব। ১১৪
607 ৪. আন-নিসা আর সুপথ প্রকাশিত হওয়ার পর যে রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং বিশ্বাসীগণের বিপরীত পথের অনুগামী হয়, তাহলে সে যাতে অভিনিবিষ্ট আমি তাকে তাতেই প্রত্যাবর্তিত করাব এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব; এবং ওটা নিকৃষ্টতর প্রত্যাবর্তন স্থল। ১১৫ জাহান্নাম
608 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে অংশী স্থাপনকারীকে ক্ষমা করেননা এবং এতদ্ব্যতীত তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে থাকেন; এবং যে আল্লাহর সাথে অংশী স্থাপন করে সে নিশ্চয়ই সুদূর বিপথে বিভ্রান্ত হয়েছে। ১১৬
609 ৪. আন-নিসা তারা তাঁকে পরিত্যাগ করে নারী মূর্তিদেরকেই আহবান করে এবং তারা বিদ্রোহী শাইতানকে ব্যতীত আহবান করেনা। ১১৭
610 ৪. আন-নিসা আল্লাহ তাকে অভিসম্পাত করেছেন; এবং শাইতান বলেছিল, আমি অবশ্যই তোমার সেবকবৃন্দ হতে এক নির্দিষ্ট অংশ গ্রহণ করব । ১১৮
611 ৪. আন-নিসা এবং নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে পথভ্রান্ত করব, তাদেরকে কু-মন্ত্রনা দিব এবং তাদেরকে আদেশ করব যেন তারা পশুর কর্ণ ছেদন করে এবং তাদেরকে আদেশ করব আল্লাহর সৃষ্ট আকৃতি পরিবর্তন করতে। যে আল্লাহকে পরিত্যাগ করে শাইতানকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করে, নিশ্চয়ই সে প্রকাশ্য ক্ষতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ১১৯
612 ৪. আন-নিসা শাইতান তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেয় ও আশ্বাস দান করে, কিন্তু শাইতান প্রতারণা ব্যতীত তাদেরকে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেনা। ১২০
613 ৪. আন-নিসা তাদেরই বাসস্থান জাহান্নাম এবং সেখান হতে তারা পালাবার কোন জায়গা পাবেনা। ১২১ জাহান্নাম
614 ৪. আন-নিসা এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎ কাজ করে, আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবিষ্ট করাব যার নিম্নে স্রোতস্বিনীসমূহ প্রবাহিতা, তন্মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে, আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য; এবং কে আল্লাহ অপেক্ষা বাক্যে অধিকতর সত্যপরায়ণ? ১২২
615 ৪. আন-নিসা না তোমাদের বৃথা আশায় কাজ হবে, আর না আহলে কিতাবের বৃথা আশায়; যে অসৎ কাজ করবে সে তার প্রতিফল পাবে এবং সে আল্লাহর পরিবর্তে কেহকে বন্ধু অথবা সাহায্যকারী প্রাপ্ত হবেনা। ১২৩
616 ৪. আন-নিসা পুরুষ অথবা নারীর মধ্যে যারা সৎ কাজ করে এবং সে বিশ্বাসীও হয়, তাহলে তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তারা খর্জুর দানার কণা পরিমাণও অত্যাচারিত হবেনা। ১২৪
617 ৪. আন-নিসা আর যে আল্লাহর উদ্দেশে স্বীয় আনন সমর্পণ করেছে ও সৎ কাজ করে এবং ইবরাহীমের সুদৃঢ় ধর্মের অনুসরণ করে, তার অপেক্ষা কার ধর্ম উৎকৃষ্ট? এবং আল্লাহ ইবরাহীমকে স্বীয় বন্ধু রূপে গ্রহণ করেছিলেন। ১২৫
618 ৪. আন-নিসা এবং নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে যা কিছু আছে সবই আল্লাহরই জন্য; আল্লাহ সর্ব বিষয়ে পরিবেষ্টনকারী। ১২৬
619 ৪. আন-নিসা এবং তারা তোমার নিকট নারীদের সম্বন্ধে ব্যবস্থা জিজ্ঞেস করছে; তুমি বল, আল্লাহ তোমাদেরকে তাদের সম্বন্ধে ব্যবস্থা দান করেছেন এবং পিতৃহীনা নারীদের সম্বন্ধে তোমাদের প্রতি গ্রন্থ হতে পাঠ করা হয়েছে যে, তাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ হয়েছে তা তোমরা প্রদান করছনা, অথচ তাদেরকে বিয়ে করতে বাসনা কর এবং শিশুদের মধ্যে দুর্বলদের ও পিতৃহীনদের প্রতি সুবিচার প্রতিষ্ঠা কর এবং তোমরা যে সৎ কাজ কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ তদ্বিষয়ে খুব ভাল জানেন । ১২৭
620 ৪. আন-নিসা কোন নারী যদি তার স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ অথবা উপেক্ষার আশংকা করে তাহলে তারা উভয়ে আপোষ মীমাংসা করে নিলে তাতে তাদের উভয়ের কোন অপরাধ নেই। বস্তুতঃ আপোষ মীমাংসাই উত্তম। এবং লোভের কারণে স্বভাবতঃই মানুষের হৃদয় কৃপণ; এবং যদি তোমরা সৎ ব্যবহার কর ও সংযমী হও তাহলে তোমরা যা করছো তদ্বিষয়ে আল্লাহ অভিজ্ঞ। ১২৮
621 ৪. আন-নিসা তোমরা কখনও স্ত্রীগণের মধ্যে সুবিচার করতে পারবেনা যদিও তোমরা তা কামনা কর, সুতরাং তোমরা কোন একজনের প্রতি সম্পূর্ণরূপে ঝুকে পড়োনা ও অপরজনকে ঝুলন্ত অবস্থায় রেখোনা এবং যদি তোমরা পরস্পর সমঝতায় আসো ও সংযমী হও তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১২৯
622 ৪. আন-নিসা এবং যদি তারা উভয়ে বিচ্ছিন্ন হয় তাহলে আল্লাহ স্বীয় প্রাচুর্য হতে তাদের প্রত্যেককে সম্পদশালী করবেন এবং আল্লাহ সুপ্রশস্ত মহাজ্ঞানী। ১৩০
623 ৪. আন-নিসা নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে যা কিছু রয়েছে তা আল্লাহরই জন্য; এবং নিশ্চয়ই তোমাদের পূর্বে যাদেরকে গ্রন্থ প্রদত্ত হয়েছিল - আমি তাদেরকে ও তোমাদেরকে আদেশ করেছিলাম যে, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, এবং যদি অবিশ্বাস কর তাহলে নিশ্চয়ই নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে যা কিছু আছে তা আল্লাহরই এবং আল্লাহ মহাসম্পদশালী, প্রশংসিত। ১৩১
624 ৪. আন-নিসা এবং আকাশসমূহে যা কিছু রয়েছে ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা আল্লাহরই; এবং কর্মবিধানে (ওয়াকিল) আল্লাহই যথেষ্ট। ১৩২
625 ৪. আন-নিসা হে লোক সকল! যদি তিনি ইচ্ছা করেন তাহলে তোমাদেরকে বিলুপ্ত করে অন্যদেরকে আনয়ন করতে পারেন এবং আল্লাহ এ ব্যাপারে শক্তিমান। ১৩৩
626 ৪. আন-নিসা যে ইহলোকের প্রতিদান আকাংখা করে, আল্লাহর নিকট ইহলোক ও পরলোকের প্রতিদান রয়েছে; এবং আল্লাহ শ্রবণকারী, পরিদর্শক। ১৩৪
627 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহর উদ্দেশে সাক্ষ্য দানকারী, সুবিচার প্রতিষ্ঠাতা হও এবং যদিও এটা তোমাদের নিজের অথবা মাতা-পিতা ও আত্মীয়-স্বজনের প্রতিকূল হয়, যদিও সে সম্পদশালী কিংবা দরিদ্র হয় তাহলে আল্লাহই তাদের জন্য যথেষ্ট; অতএব সুবিচারে স্বীয় প্রবৃত্তির অনুসরণ করনা, আর তোমরা যদি ঘুরিয়ে পেচিয়ে কথা বল কিংবা পাশ কাটিয়ে যাও তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের সমস্ত কর্মের পূর্ণ সংবাদ রাখেন। ১৩৫
628 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! তোমরা বিশ্বাস স্থাপন কর আল্লাহর প্রতি ও তাঁর রাসূলের প্রতি এবং এই কিতাবের প্রতি যা তিনি তাঁর রাসূলের উপর অবতীর্ণ করেছেন এবং ঐ কিতাবের প্রতি যা পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছিল, এবং যে কেহ আল্লাহ, তদ্বীয় ফেরেশ্তা, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ এবং পরকাল সম্বন্ধে অবিশ্বাস করে, নিশ্চয়ই সে সুদূর বিপথে বিভ্রান্ত হয়েছে। ১৩৬
629 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস স্থাপন করে, অতঃপর অবিশ্বাসী হয়, পুনরায় বিশ্বাস স্থা্পন করে এবং আবার অবিশ্বাসী হয়, অনন্তর অবিশ্বাসে পরিবর্ধিত হয়, তাহলে আল্লাহ কখনই তাদেরকে ক্ষমা করবেননা এবং তাদেরকে পথ প্রদর্শন করবেননা। ১৩৭
630 ৪. আন-নিসা মুনাফিকদের সুসংবাদ দাও যে, তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। ১৩৮
631 ৪. আন-নিসা যারা মু’মিনদেরকে পরিত্যাগ করে কাফিরদের বন্ধু রূপে গ্রহণ করে, তারা কি তাদের নিকট সম্মান অনুসন্ধান করে? কিন্তু যাবতীয় সম্মানই আল্লাহর। ১৩৯
632 ৪. আন-নিসা এবং নিশ্চয়ই তিনি গ্রন্থের মাধ্যমে তোমাদের আদেশ করছেন যে, তোমরা যখন আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি অবিশ্বাস করা এবং তাঁর প্রতি উপহাস করা হচ্ছে শ্রবণ কর তখন তাদের সাথে (বৈঠকে) উপবেশন করনা, যে পর্যন্ত না তারা অন্য কথার আলোচনা করে; অন্যথায় তোমরাও তাদের সদৃশ হয়ে যাবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সেই সমস্ত মুনাফিক ও কাফিরদেরকে জাহান্নামে একত্রিত করবেন। ১৪০ জাহান্নাম
633 ৪. আন-নিসা ওরা এমন যারা তোমাদের সম্বন্ধে প্রতীক্ষা করছে; এবং যদি তোমরা আল্লাহর পক্ষ হতে জয়লাভ কর তাহলে তারা বলেঃ আমরা কি তোমাদের সঙ্গে ছিলামনা? এবং যদি ওটা অবিশ্বাসীদের ভাগ্যে ঘটে তাহলে বলে- আমরা কি তোমাদের নেতৃত্ব করিনি এবং বিশ্বাসীগণ হতে তোমাদেরকে রক্ষা করিনি? অতঃপর আল্লাহ উত্থান দিবসে তোমাদের মধ্যে বিচার করবেন; এবং আল্লাহ কখনও মু’মিনদের বিরুদ্ধে কাফিরদেরকে বিজয়ী করবেননা। ১৪১
634 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহর সাথে প্রতারণা করে এবং তিনিও তাদেরকে ঐ প্রতারণা প্রত্যার্পণ করছেন; এবং যখন তারা সালাতের জন্য দাঁড়ায় তখন লোকদেরকে দেখানোর জন্য আলস্যভরে দাঁড়ায় এবং আল্লাহকে খুব কমই স্মরণ করে। ১৪২ নামাজ
635 ৪. আন-নিসা এরা সন্দেহের দোলায় দোদুল্যমান রয়েছে। তারা এ দিকেও নয় ওদিকেও নয়; এবং আল্লাহ যাকে পথভ্রান্ত করেছেন, বস্তুতঃ তুমি তার জন্য কোনই পথ পাবেনা। ১৪৩
636 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! তোমরা মু’মিনদেরকে ছেড়ে কাফিরদেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করনা, তোমরা কি আল্লাহর জন্য তোমাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট প্রমাণ দিতে চাও? ১৪৪
637 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে অবস্থান করবে এবং তুমি কখনও তাদের জন্য সাহায্যকারী পাবেনা। ১৪৫ জাহান্নাম
638 ৪. আন-নিসা কিন্তু যারা ক্ষমা প্রার্থনা করে ও সংশোধিত হয় এবং আল্লাহর পথকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে ও আল্লাহর ধর্মে বিশুদ্ধ হয়, ফলতঃ তারাই মু’মিনদের সঙ্গী এবং অচিরেই আল্লাহ মু’মিনদেরকে উত্তম প্রতিদান দিবেন। ১৪৬
639 ৪. আন-নিসা আল্লাহ কেনইবা তোমাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও ও বিশ্বাস স্থাপন কর? এবং আল্লাহতো অতিশয় গুণগ্রাহী, মহাজ্ঞানী। ১৪৭
640 ৪. আন-নিসা আল্লাহ কোন মন্দ কথার প্রচারণা ভালবাসেন না, তবে কেহ অত্যাচারিত হয়ে থাকলে তার কথা স্বতন্ত্র; এবং আল্লাহ শ্রবণকারী মহাজ্ঞানী। ১৪৮
641 ৪. আন-নিসা যদি তোমরা সৎ কাজ প্রকাশ্যে কর অথবা গোপনে কর অথবা যদি তোমরা অপরাধ ক্ষমা করে দাও তাহলে জেনে রেখ যে, আল্লাহ নিজেও ক্ষমাকারী, সর্বশক্তিমান। ১৪৯
642 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি অবিশ্বাস করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের মধ্যে পার্থক্য করতে ইচ্ছা করে এবং বলে, আমরা কতিপয়কে বিশ্বাস করি ও কতিপয়কে অবিশ্বাস করি এবং তারা এর মধ্যবর্তী পথ অবলম্বন করতে ইচ্ছা করে । ১৫০
643 ৪. আন-নিসা ওরাই প্রকৃত অবিশ্বাসী, এবং আমি অবিশ্বাসীদের জন্য অবমাননাকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। ১৫১
644 ৪. আন-নিসা এবং যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কোন পার্থক্য করেনা - আল্লাহ শীঘ্রই তাদের প্রতিদান প্রদান করবেন এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১৫২
645 ৪. আন-নিসা আহলে কিতাব তোমার নিকট আবেদন জানায় যে, তুমি তাদের প্রতি আকাশ হতে কোন গ্রন্থ নাযিল কর - পরন্ত তারা মূসার নিকট এটা অপেক্ষাও বৃহত্তর দাবী করেছিল। তারা বলেছিল, আল্লাহকে প্রকাশ্যভাবে প্রদর্শন কর; অতঃপর তাদের অবাধ্যতার জন্য বজ্রপাত তাদেরকে আক্রমণ করেছিল, অতঃপর তাদের নিকট নিদর্শনাবলী আসার পরেও তারা গো-বৎসকে উপাস্য হিসাবে গ্রহণ করেছিল। কিন্তু ওটাও আমি ক্ষমা করেছিলাম, এবং মূসাকে প্রকাশ্য প্রভাব প্রদান করেছিলাম। ১৫৩
646 ৪. আন-নিসা এবং আমি তাদের প্রতিশ্রুতির জন্য তাদের উপর তূর পর্বত সমুচ্চ করেছিলাম এবং তাদেরকে বলেছিলাম অবনত শিরে দ্বারে প্রবেশ কর। এবং তাদেরকে আরও বলেছিলাম, শনিবারের সীমা অতিক্রম করনা। এভাবে তাদের নিকট হতে কঠোর প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছিলাম। ১৫৪
647 ৪. আন-নিসা কিন্তু তারা লা‘নতগ্রস্ত হয়েছিল তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ এবং আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি তাদের অবিশ্বাস ও অন্যায়ভাবে তাদের নাবীদের হত্যা এবং ‘‘তাদের স্ব স্ব অন্তরসমূহ আচ্ছাদিত’’ এই উক্তি করার জন্য; হ্যাঁ - তাদের অবিশ্বাস হেতু আল্লাহ ওদের অন্তরে মোহর এঁটে দিয়েছেন, এ কারণে তারা অল্প সংখ্যক ব্যতীত বিশ্বাস করেনা । ১৫৫
648 ৪. আন-নিসা এবং তাদের কুফরী ও মারইয়ামের প্রতি তাদের ভয়ানক অপবাদের জন্য। ১৫৬
649 ৪. আন-নিসা এবং ‘‘আল্লাহর রাসূল ও মারইয়াম নন্দন ঈসাকে আমরা হত্যা করেছি’’ বলার জন্য। অথচ তারা না তাকে হত্যা করেছে আর না শুলে চড়িয়েছে; বরং তারা ধাঁধাঁয় পতিত হয়েছিল। তারা তদ্বিষয়ে সন্দেহাচ্ছন্ন ছিল, কল্পনার অনুসরণ ব্যতীত এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান ছিলনা। প্রকৃত পক্ষে তারা তাকে হত্যা করেনি। ১৫৭
650 ৪. আন-নিসা বরং আল্লাহ তাকে নিজের দিকে উঠিয়ে নিয়েছেন, এবং আল্লাহ পরাক্রান্ত মহাজ্ঞানী। ১৫৮
651 ৪. আন-নিসা এবং আহলে কিতাবের মধ্যে এমন কেহ নেই যে, তার মৃত্যুর পূর্বে ব্যতীত এটা বিশ্বাস করবে; এবং উত্থান দিনে সে (ঈসা) তাদের উপর সাক্ষ্য দান করবে। ১৫৯
652 ৪. আন-নিসা আমি ইয়াহুদীদের অবাধ্যতা হেতু তাদের জন্য যে সমস্ত বস্ত্ত বৈধ ছিল তা তাদের প্রতি অবৈধ করেছি; এবং যেহেতু তারা অনেককে আল্লাহর পথ হতে প্রতিরোধ করত। ১৬০
653 ৪. আন-নিসা এবং তারা নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও সুদ গ্রহণ করত এবং তারা অন্যায়ভাবে লোকদের ধন সম্পদ গ্রাস করত এবং আমি তাদের মধ্যস্থ অবিশ্বাসীদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। ১৬১
654 ৪. আন-নিসা কিন্তু তাদের মধ্যে যারা জ্ঞানে সুদৃঢ় এবং বিশ্বাসী তারা তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং তোমার পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছিল তৎপ্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। এবং যারা সালাত আদায়কারী ও যাকাত প্রদানকারী এবং আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী তাদেরকেই আমি প্রচুর প্রতিদান প্রদান করব। ১৬২ নামাজ
655 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করেছি, যেরূপ আমি নূহ ও তৎপরবর্তী নাবীগণের প্রতি প্রত্যাদেশ করেছিলাম এবং ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তদ্বংশীয়গণের প্রতি এবং ঈসা, আইযুব, ইউনুস, হারূণ, সুলাইমানের প্রতি প্রত্যাদেশ করেছিলাম এবং আমি দাঊদকে যাবুর প্রদান করেছিলাম। ১৬৩
656 ৪. আন-নিসা আর নিশ্চয়ই আমি তোমার পূর্বের বহু রাসূলের প্রসঙ্গ তোমাকে বর্ণনা করেছি এবং অনেক রাসূল যাদের কথা তোমাকে বলিনি; আল্লাহ মূসার সাথে প্রত্যক্ষ কথা বলেছেন। ১৬৪
657 ৪. আন-নিসা আমি সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শক রূপে রাসূলগণকে প্রেরণ করেছি যাতে রাসূলগণের পরে লোকদের মধ্যে আল্লাহ সম্বন্ধে কোন অপবাদ দেয়ার অবকাশ না থাকে এবং আল্লাহ পরাক্রান্ত, মহাজ্ঞানী। ১৬৫
658 ৪. আন-নিসা কিন্তু আল্লাহ তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছেন, তৎসম্বন্ধে তিনি সজ্ঞানে অবতারণের সাক্ষ্য প্রদান করেছেন; এবং সাক্ষ্য দানে আল্লাহই যথেষ্ট। ১৬৬
659 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাস করেছে এবং অপরকে আল্লাহর পথ হতে প্রতিরোধ করেছে, অবশ্যই তারা সুদূর বিপথে বিভ্রান্ত হয়েছে। ১৬৭
660 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাসী হয়েছে ও অত্যাচার করেছে, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেননা এবং তাদেরকে সুপথ প্রদর্শন করবেন না । ১৬৮
661 ৪. আন-নিসা জাহান্নামের পথ ব্যতীত, তন্মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে এবং এটা আল্লাহর পক্ষে সহজসাধ্য। ১৬৯ জাহান্নাম
662 ৪. আন-নিসা হে লোক সকল! নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালকের সন্নিধান হতে সত্যসহ রাসুল আগমন করেছেন, অতএব বিশ্বাস স্থাপন কর- তোমাদের কল্যাণ হবে, আর যদি অবিশ্বাস কর তবে নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডেলে যা কিছু আছে তা আল্লাহর এবং আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। ১৭০
663 ৪. আন-নিসা হে আহলে কিতাব! তোমরা স্বীয় ধর্মে সীমা অতিক্রম করনা এবং আল্লাহর বিরুদ্ধে সত্য ব্যতীত বলনা; নিশ্চয়ই মারইয়াম নন্দন ঈসা মাসীহ্ আল্লাহর রাসূল ও তাঁর বাণী - যা তিনি মারইয়ামের প্রতি সঞ্চারিত করেছিলেন এবং তাঁর আদিষ্ট আত্মা; অতএব আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর বিশ্বাস স্থাপন কর। আর ‘‘আল্লাহ তিন জনের একজন’’- এ কথা বলা পরিহার কর। তোমাদের কল্যাণ হবে; নিশ্চয়ই আল্লাহই একমাত্র ইলাহ; তিনি কোন সন্তান হওয়া হতে পুতঃ, মুক্ত। নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে যা আছে তা তাঁরই এবং আল্লাহই কার্য সম্পাদনে যথেষ্ট। ১৭১
664 ৪. আন-নিসা আল্লাহর বান্দা হওয়ার ব্যাপারে মাসীহ্ এবং সান্নিধ্য প্রাপ্ত মালাইকাদের কোনই সংকোচ নেই; এবং যারা তাঁর সেবায় সংকুচিত হয় ও অহংকার করে তিনি তাদের সকলকে নিজের দিকে একত্রিত করবেন। ১৭২
665 ৪. আন-নিসা কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎ কাজ করে থাকে তাদেরকে তিনি সম্যক প্রতিদান প্রদান করবেন এবং স্বীয় সম্পদ হতে অধিকতর দান করবেন এবং যারা সংকুচিত হয় অহংকার করে, তাদেরকে তিনি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রদান করবেন। এবং আল্লাহ ব্যতীত তারা নিজেদের জন্য কোন অভিভাবক বা সাহায্যকারী পাবেনা। ১৭৩
666 ৪. আন-নিসা হে লোক সকল! তোমাদের রবের সন্নিধান হতে তোমাদের নিকট প্রত্যক্ষ প্রমাণ এসেছে এবং আমি তোমাদের প্রতি সমুজ্জ্বল জ্যোতি অবতীর্ণ করেছি। ১৭৪
667 ৪. আন-নিসা অতঃপর যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং তাঁকে সুদৃঢ় রূপে ধারণ করেছে, ফলতঃ তিনি তাদেরকে স্বীয় করুণা ও কল্যাণের দিকে প্রবিষ্ট করাবেন এবং স্বীয় সরল পথ প্রদর্শন করবেন। ১৭৫
668 ৪. আন-নিসা তারা তোমাদের নিকট ব্যবস্থা প্রার্থনা করছে, তুমি বলঃ আল্লাহ তোমাদেরকে পিতা-পুত্রহীন সম্বন্ধে ব্যবস্থা দান করেছেন। যদি কোন ব্যক্তি নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যায় এবং তার ভগ্নী থাকে তাহলে সে তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে অর্ধাংশ পাবে; এবং যদি কোন নারীর সন্তান না থাকে তাহলে তার ভাইই তদীয় উত্তরাধিকারী হবে; কিন্তু যদি দুই ভগ্নী থাকে তাহলে তাদের উভয়ের জন্য পরিত্যক্ত বিষয়ের দুই তৃতীয়াংশ এবং যদি তার ভাই ভগ্নী-পুরুষ ও নারীগণ থাকে তাহলে পুরুষ দুই নারীর তুল্য অংশ পাবে; আল্লাহ তোমাদের জন্য বর্ণনা করছেন যেন তোমরা বিভ্রান্ত না হও, এবং আল্লাহ সর্ব বিষয়ে মহাজ্ঞানী। ১৭৬
669 ৫. আল-মায়েদা হে মু’মিনগণ! তোমরা তোমাদের ও‘য়াদাগুলি পূর্ণ কর। তোমাদের জন্য চতুস্পদ জন্তু হালাল করা হয়েছে। তবে যেগুলি হারাম হওয়া সম্পর্কে তোমাদের উপর পবিত্র কুরআনের আয়াতগুলি অবতীর্ণ হয়েছে সেগুলি এবং ইহরাম বাঁধা অবস্থায় তোমাদের শিকার করা জন্তুগুলি হালাল নয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী হুকুম করে থাকেন।
670 ৫. আল-মায়েদা হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর নিদর্শনাবলী, নিষিদ্ধ মাসগুলি, কুরবানীর পশুগুলির গলায় ব্যবহৃত চিহ্নগুলি এবং যারা তাদের রবের সন্তুষ্টি ও অনুগ্রহ পাবার জন্য সম্মানিত ঘরে যাবার ইচ্ছা করে তাদের অবমাননা করা বৈধ মনে করনা। আর তোমরা যখন ইহরাম থেকে মুক্ত হও তখন শিকার কর। যারা তোমাদেরকে পবিত্র মাসজিদে যেতে বাঁধা দিয়েছে সেই সম্প্রদায়ের দুশমনি যেন তোমাদেরকে সীমা ছাড়িয়ে যেতে উৎসাহিত না করে। সৎ কাজ করতে ও সংযমী হতে তোমরা পরস্পরকে সাহায্য কর। তবে পাপ ও শক্রতার ব্যাপারে তোমরা একে অপরকে সাহায্য করনা। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠিন শাস্তিদাতা।
671 ৫. আল-মায়েদা তোমাদের জন্য মৃত জীব, রক্ত, শুকরের মাংস, আল্লাহ ছাড়া অপরের নামে উৎসর্গীকৃত পশু, কন্ঠরোধে মারা পশু, আঘাত লেগে মরে যাওয়া পশু, পতনের ফলে মৃত পশু, শৃংগাঘাতে মৃত পশু এবং হিংস্র জন্তুতে খাওয়া পশু হারাম করা হয়েছে; তবে যা তোমরা যবাহ দ্বারা পবিত্র করেছ তা হালাল। আর যে সমস্ত পশুকে পূজার বেদীর উপর বলি দেয়া হয়েছে তা এবং জুয়ার তীর দ্বারা ভাগ্য নির্ণয় করাও তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে। এসব কাজ পাপ। আজ কাফিরেরা তোমাদের দীনের বিরুদ্ধাচরণের ব্যাপারে হতাশ হয়ে পড়েছে। সুতরাং তোমরা তাদেরকে ভয় করনা; শুধু আমাকেই ভয় কর। আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দীন হিসাবে মনোনীত করলাম। তবে কেহ পাপের দিকে না ঝুঁকে ক্ষুধার তাড়নায় আহার করতে বাধ্য হলে সেগুলি খাওয়া তার জন্য হারাম হবেনা। কারণ নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
672 ৫. আল-মায়েদা তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করে - তাদের জন্য কি কি হালাল করা হয়েছে? তুমি বলঃ পবিত্র জিনিসগুলি তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। আল্লাহর নির্দেশিত নিয়মানুযায়ী তোমরা যে সমস্ত পশু-পক্ষীকে শিকার করা শিক্ষা দিয়েছ; তারা যা শিকার করে আনে তা তোমরা খাও এবং ওগুলিকে শিকারের জন্য পাঠানোর সময় আল্লাহর নাম স্মরণ কর। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ হিসাব গ্রহণে তৎপর।
673 ৫. আল-মায়েদা আজ তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তুগুলি হালাল করা হল। আহলে কিতাবের যবাহকৃত জীবও তোমাদের জন্য হালাল এবং তোমাদের যবাহকৃত জীবও তাদের জন্য হালাল। আর সতী সাধ্বী মুসলিম নারীরাও এবং তোমাদের পূর্ববর্তী আহলে কিতাবের মধ্যকার সতী-সাধ্বী নারীরাও (তোমাদের জন্য হালাল), যখন তোমরা তাদেরকে তাদের বিনিময় (মোহর) প্রদান কর, এ রূপে যে, তোমরা (তাদেরকে) পত্নী রূপে গ্রহণ করে নাও, না প্রকাশ্যে ব্যভিচার কর, আর না গোপন প্রণয় কর; আর যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে কুফরী মিশ্রিত করবে তার ‘আমল নিস্ফল হয়ে যাবে এবং সে আখিরাতে সম্পূর্ণ রূপে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
674 ৫. আল-মায়েদা হে মু’মিনগণ! যখন তোমরা সালাতের উদ্দেশে দন্ডায়মান হও তখন (সালাতের পূর্বে) তোমাদের মুখমন্ডল ধৌত কর এবং হাতগুলিকে কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও, আর মাথা মাসাহ কর এবং পা’গুলিকে টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে ফেল। যদি তোমরা অপবিত্র হও তাহলে গোসল করে সমস্ত শরীর পবিত্র করে নাও। কিন্তু যদি রোগগ্রস্ত হও কিংবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেহ পায়খানা হতে ফিরে আস কিংবা তোমরা স্ত্রীদেরকে স্পর্শ কর (স্ত্রী-সহবাস কর), অতঃপর পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও, তখন তোমরা তা দ্বারা তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত মাসাহ কর, আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা আনয়ন করতে চাননা, বরং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে ও তোমাদের উপর স্বীয় নি‘আমাত পূর্ণ করতে চান, যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। নামাজ
675 ৫. আল-মায়েদা আর তোমরা তোমাদের প্রতি বর্ষিত আল্লাহর অনুগ্রহকে স্মরণ কর এবং তাঁর ঐ অঙ্গীকারকেও স্মরণ কর, যে অঙ্গীকার তিনি তোমাদের নিকট থেকে গ্রহণ করেছিলেন। তোমরা বলেছিলে, আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয়ই তিনি অন্তরের কথাগুলিরও পূর্ণ খবর রাখেন।
676 ৫. আল-মায়েদা হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহর উদ্দেশে বিধানসমূহ পূর্ণ রূপে প্রতিষ্ঠাকারী ও ন্যায়ের সাথে সাক্ষ্যদানকারী হয়ে যাও, কোন বিশেষ সম্প্রদায়ের শক্রতা যেন তোমাদেরকে এর প্রতি প্ররোচিত না করে যে, তোমরা ন্যায়বিচার করবেনা। তোমরা ন্যায়বিচার কর, এটা আল্লাহ-ভীতির অধিকতর নিকটবর্তী। আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে পূর্ণ ওয়াকিফহাল।
677 ৫. আল-মায়েদা যারা ঈমান এনেছে ও ভাল কাজ করেছে তাদেরকে আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তাদের জন্য ক্ষমা ও মহান পুরস্কার রয়েছে।
678 ৫. আল-মায়েদা পক্ষান্তরে যারা কুফরী করেছে এবং আমার বিধানসমূহকে মিথ্যা জেনেছে তারাই হচ্ছে জাহান্নামের অধিবাসী। ১০
679 ৫. আল-মায়েদা হে মু’মিনগণ! তোমাদের প্রতি যে আল্লাহর অনুগ্রহ রয়েছে তা স্মরণ কর, যখন এক সম্প্রদায় এই চিন্তায় ছিল যে, তোমাদের দিকে তাদের হস্ত প্রসারিত করবে, কিন্তু আল্লাহ তাদের হাতকে তোমাদের দিক থেকে থামিয়ে দিয়েছেন, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, এবং মু’মিনদের আল্লাহর উপরই ভরসা করা উচিত। ১১
680 ৫. আল-মায়েদা আর আল্লাহ বানী ইসরাঈলের নিকট থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন, আমি তাদের মধ্য হতে বারো জন দলপতি নিযুক্ত করেছিলাম; এবং আল্লাহ বলেছিলেনঃ আমি তোমাদের সাথে রয়েছি, যদি তোমরা সালাত সুপ্রতিষ্ঠিত কর ও যাকাত দিতে থাক এবং আমার রাসূলদের উপর ঈমান আন ও তাদেরকে সাহায্য কর এবং আল্লাহকে উত্তমরূপে কর্জ দিতে থাক; তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের পাপগুলি তোমাদের থেকে মুছে দিব এবং অবশ্যই তোমাদেরকে এমন উদ্যানসমূহে দাখিল করব যার তলদেশে নহরসমূহ বইতে থাকবে, অতঃপর যে ব্যক্তি এরপরও কুফরী করবে, নিশ্চয়ই সে সোজা পথ থেকে দূরে সরে পড়ল। ১২ বেহেস্ত
681 ৫. আল-মায়েদা বস্তুতঃ শুধু তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণেই আমি তাদেরকে স্বীয় অভিশপ্ত করলাম এবং অন্তরকে কঠোর করে দিলাম। তারা কালামকে (তাওরাত) ওর স্থানসমূহ হতে পরিবর্তন করে দেয় এবং তাদেরকে যা কিছু উপদেশ দেয়া হয়েছিল তারা তার মধ্য হতে এক বড় অংশকে বিস্মৃত হতে বসেছে, আর আগামীতেও (অবিরত) তাদের কোন না কোন খিয়ানতের সংবাদ তোমার নিকট আসতে থাকবে, তাদের অল্প কয়েকজন ব্যতীত। অতএব তুমি তাদেরকে ক্ষমা করতে থাক এবং তাদেরকে মার্জনা করতে থাক; নিশ্চয়ই আল্লাহ সদাচারী লোকদেরকে ভালবাসেন। ১৩
682 ৫. আল-মায়েদা আর যারা বলেঃ ‘আমরা নাসারাহ,’ আমি তাদের নিকট থেকেও ও‘য়াদা নিয়েছিলাম, অনন্তর তাদেরকেও যা কিছু উপদেশ দেয়া হয়েছিল তার মধ্য হতে তারা নিজেদের এক বড় অংশ বিস্মৃত হয়েছে। সুতরাং আমি তাদের পরস্পরের মধ্যে হিংসা ও শক্রতা সঞ্চার করে দিলাম কিয়ামাতের দিন পর্যন্ত এবং অচিরেই আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে সংবাদ দিবেন। ১৪
683 ৫. আল-মায়েদা হে আহলে কিতাব! তোমাদের কাছে আমার রাসূল এসেছে, তোমরা কিতাবের যে সব বিষয় গোপন কর তন্মধ্য হতে বহু বিষয় সে তোমাদের সামনে পরিস্কারভাবে ব্যক্ত করে, আর বহু বিষয় (প্রকাশ করা) বর্জন করে, তোমাদের কাছে আল্লাহর নিকট থেকে এক আলোকময় বস্ত্ত এসেছে এবং তা একটি স্পষ্ট কিতাব (কুরআন)। ১৫
684 ৫. আল-মায়েদা তা দ্বারা আল্লাহ এরূপ লোকদেরকে শান্তির পন্থাসমূহ বলে দেন যারা তাঁর সন্তুষ্টি অম্বেষণ করে এবং তিনি তাদেরকে নিজ তাওফীকে (ও করুণায়) কুফরীর অন্ধকার থেকে বের করে (ঈমানের) আলোর দিকে আনয়ন করেন এবং তাদেরকে সরল (সঠিক) পথে প্রতিষ্ঠিত রাখেন। ১৬
685 ৫. আল-মায়েদা নিশ্চয়ই তারা কাফির যারা বলেঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ স্বয়ং হচ্ছেন মসীহ্ (ঈসা) ইবনে মারইয়াম! তুমি বলঃ যদি আল্লাহ মসীহ্ (ঈসা) ইবনু মারইয়ামকে ও তার মাতাকে এবং ভূ-পৃষ্ঠে যারা আছে তাদের সবাইকে ধ্বংস করার ইচ্ছা করেন তাহলে এরূপ কে আছে যে তাদেরকে আল্লাহ হতে এতটুকু রক্ষা করতে পারে? আল্লাহরই কর্তৃত্ব নির্দিষ্ট রয়েছে আকাশসমূহে ও যমীনে এবং এতদুভয়ের মধ্যস্থিত যাবতীয় কিছুর উপর; তিনি যা ইচ্ছা করেন তাই সৃষ্টি করেন, আর আল্লাহ সকল বস্তুর উপর পূর্ণ ক্ষমতাবান। ১৭
686 ৫. আল-মায়েদা ইয়াহুদী ও নাসারাহ্ বলেঃ আমরা আল্লাহর পুত্র ও তাঁর প্রিয়পাত্র। তুমি তাদের বলে দাও, আচ্ছা তাহলে তিনি তোমাদেরকে তোমাদের পাপের দরুণ কেন শাস্তি প্রদান করবেন? বরং তোমরাও অন্যান্য সৃষ্টির ন্যায় সাধারণ মানুষ মাত্র, তিনি যাকে ইচ্ছা মার্জনা করবেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দিবেন, আর আল্লাহর কর্তৃত্ব রয়েছে আকাশসমূহে ও যমীনে এবং এতদুভয়ের মধ্যস্থিত সবকিছুতেও; আর সবাইকে আল্লাহর দিকেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে। ১৮
687 ৫. আল-মায়েদা হে আহলে কিতাব! রাসূলদের আগমন দীর্ঘকাল বন্ধ থাকার পর তোমাদের নিকট আমার রাসূল এসে পৌঁছেছে, যে তোমাদেরকে স্পষ্টভাবে (আল্লাহর হুকুম) বলে দিচ্ছে, যেন তোমরা (কিয়ামাত দিনে) বলতে না পার যে, তোমাদের নিকট কোন সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রর্দশনকারী আগমন করেনি। (এখন তো) তোমাদের নিকট সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রর্দশনকারী এসে গেছে, আর আল্লাহ সকল বস্তুর উপর পূর্ণ ক্ষমতাবান। ১৯
688 ৫. আল-মায়েদা আর যখন মূসা স্বীয় সম্প্রদায়কে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমাদের প্রতি আল্লাহর নি’আমতকে স্মরণ কর, যখন তিনি তোমাদের মধ্যে বহু নাবী সৃষ্টি করলেন, রাজ্যাধিপতি করলেন এবং তোমাদেরকে এমন বস্তুসমূহ দান করলেন যা বিশ্ববাসীদের মধ্যে কেহকেও দান করেননি। ২০
689 ৫. আল-মায়েদা হে আমার সম্প্রদায়! এই পুণ্য ভূমিতে প্রবেশ কর যা আল্লাহ তোমাদের জন্য লিখে দিয়েছেন, আর পিছনের দিকে ফিরে যেওনা, তাহলে তোমরা সম্পূর্ণ রূপে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ২১
690 ৫. আল-মায়েদা তারা বললঃ হে মূসা! সেখানেতো পরাক্রমশালী লোক রয়েছে। অতএব তারা যে পর্যন্ত সেখান হতে বের হয়ে না যায় সে পর্যন্ত আমরা সেখানে কখনও প্রবেশ করবনা। হ্যাঁ, যদি তারা সেখান হতে বেরিয়ে যায় তাহলে নিশ্চয়ই আমরা যেতে প্রস্তুত আছি। ২২
691 ৫. আল-মায়েদা সেই দুই ব্যক্তি (যারা আল্লাহকে ভয়কারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছিলেন) বললঃ তোমরা তাদের উপর আক্রমণ চালিয়ে (নগরের) দ্বারদেশ পর্যন্ত যাও, অনন্তর যখনই তোমরা দ্বারদেশে পা রাখবে তখনই জয় লাভ করবে; এবং তোমরা আল্লাহর উপরই নির্ভর কর, যদি তোমরা মু’মিন হও। ২৩
692 ৫. আল-মায়েদা তারা বললঃ হে মূসা! নিশ্চয়ই আমরা কখনও সেখানে পা রাখবনা যে পর্যন্ত তারা সেখানে বিদ্যমান থাকে। অতএব আপনি ও আপনার রাব্ব (আল্লাহ) চলে যান এবং উভয়ে যুদ্ধ করুন, আমরা এখানেই বসে থাকব। ২৪
693 ৫. আল-মায়েদা মূসা বলল- হে আমার রাব্ব! আমি শুধু নিজের উপর ও নিজের ভাইয়ের উপর অধিকার রাখি, সুতরাং আপনি আমাদের উভয়ের এবং এই অবাধ্য সম্প্রদায়ের মধ্যে মীমাংসা করে দিন। ২৫
694 ৫. আল-মায়েদা তিনি (আল্লাহ) বললেনঃ (তাহলে মীমাংসা এই যে) এই দেশ চল্লিশ বছর পর্যন্ত এদের হস্তগত হবেনা, এ রূপেই তারা ভূ-পৃষ্ঠে উদভ্রান্ত হয়ে ফিরবে, সুতরাং তুমি অবাধ্য সম্প্রদায়ের জন্য (একটুও) বিষন্ন হয়োনা। ২৬
695 ৫. আল-মায়েদা তুমি তাদেরকে (আহলে কিতাবদেরকে) আদমের পুত্রদ্বয়ের (হাবীল ও কাবীলের) ঘটনা সঠিকভাবে পাঠ করে শুনিয়ে দাও; যখন তারা উভয়েই এক একটি কুরবানী উপস্থিত করল এবং তন্মধ্য হতে একজনের (হাবীলের) কুরবানী কবূল হল এবং অপরজনের কবূল হলনা। অপরজন বলতে লাগলঃ আমি তোমাকে নিশ্চয়ই হত্যা করব; প্রথমজন বললঃ আল্লাহ আল্লাহভীরুদের ‘আমলই কবূল করে থাকেন। ২৭
696 ৫. আল-মায়েদা তুমি যদি আমাকে হত্যা করার জন্য হাত প্রসারিত কর, তথাপি আমি তোমাকে হত্যা করার জন্য তোমার দিকে কখনও আমার হাত বাড়াবনা; আমিতো বিশ্ব জাহানের রাব্ব আল্লাহকে ভয় করি। ২৮
697 ৫. আল-মায়েদা আমি চাই যে, (আমার দ্বারা কোন পাপ না হোক) তুমি আমার পাপ এবং তোমার পাপ সমস্তই নিজের মাথায় তুলে নাও; অনন্তর তুমি জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও, অত্যাচারীদের শাস্তি এরূপই হয়ে থাকে। ২৯ জাহান্নাম
698 ৫. আল-মায়েদা অতঃপর তার প্রবৃত্তি তাকে স্বীয় ভ্রাতৃ হত্যার প্রতি প্রলুব্ধ করে তুলল। সুতরাং সে তাকে হত্যা করেই ফেলল, ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ল। ৩০
699 ৫. আল-মায়েদা অতঃপর আল্লাহ একটি কাক প্রেরণ করলেন, সে মাটি খুঁড়তে লাগল, যেন সে তাকে (কাবীলকে) শিখিয়ে দেয় যে, স্বীয় ভাইয়ের মৃতদেহ কিভাবে ঢাকবে, সে বলতে লাগলঃ আমার অবস্থার প্রতি আফসোস! আমি ঐ কাকের সমতুল্য হতে পারলামনা এবং নিজ ভাইয়ের মৃতদেহ আবৃত করতে অক্ষম হয়ে গেলাম। ফলে সে অত্যন্ত লজ্জিত হল। ৩১
700 ৫. আল-মায়েদা এ কারণেই আমি বানী ইসরাঈলের প্রতি এই নির্দেশ দিয়েছি যে, যে ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে হত্যা করে অন্য প্রাণের বিনিময় ব্যতীত, কিংবা তার দ্বারা ভূ-পৃষ্ঠে কোন ফিতনা-ফাসাদ বিস্তার ব্যতীত, তাহলে সে যেন সমস্ত মানুষকে হত্যা করে ফেলল; আর যে ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে রক্ষা করল, তাহলে সে যেন সমস্ত মানুষকে রক্ষা করল; আর তাদের (বানী ইসরাঈলের) কাছে আমার বহু রাসূলও স্পষ্ট প্রমাণসমূহ নিয়ে আগমন করেছিল, তবু এর পরেও তন্মধ্য হতে অনেকেই ভূ-পৃষ্ঠে সীমা লংঘনকারী হয়ে গেছে। ৩২
701 ৫. আল-মায়েদা যারা আল্লাহর বিরুদ্ধে ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে, আর ভূ-পৃষ্ঠে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের শাস্তি এটাই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শুলে চড়ান হবে, অথবা এক দিকের হাত ও অপর দিকের পা কেটে ফেলা হবে, অথবা তাদের দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে; এটাতো দুনিয়ায় তাদের জন্য ভীষণ অপমান, আর আখিরাতেও তাদের জন্য ভীষণ শাস্তি রয়েছে। ৩৩
702 ৫. আল-মায়েদা কিন্তু হ্যাঁ, তোমরা তাদেরকে গ্রেফতার করার পূর্বে যারা তাওবাহ করে, তাহলে জেনে রেখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। ৩৪
703 ৫. আল-মায়েদা হে মু’মিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং তাঁর সান্নিধ্য অম্বেষণ কর ও আল্লাহর পথে জিহাদ করতে থাক। আশা করা যায় যে, তোমরা সফলকাম হবে। ৩৫
704 ৫. আল-মায়েদা নিশ্চয়ই যারা কাফির, যদি তাদের কাছে বিশ্বের সমস্ত সম্পদও থাকে এবং ওর সাথে তৎপরিমান আরও থাকে, এবং এগুলোর বিনিময়ে কিয়ামাতের শাস্তি থেকে মুক্তি পেতে চায়, তবুও এই সম্পদ তাদের থেকে কবূল করা হবেনা, আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ৩৬
705 ৫. আল-মায়েদা নিশ্চয়ই তারা এটা কামনা করবে যে, জাহান্নাম থেকে বের ৩৭ জাহান্নাম
706 ৫. আল-মায়েদা আর যে পুরুষ চুরি করে এবং যে নারী চুরি করে, তোমরা তাদের কৃতকর্মের সাজা হিসাবে তাদের (ডান হাত) কেটে ফেল, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি, আর আল্লাহ অতিশয় ক্ষমতাবান, মহা প্রজ্ঞাময়। ৩৮
707 ৫. আল-মায়েদা অতঃপর যে ব্যক্তি সীমা লংঘন করার পর (চুরি করার পর) তাওবাহ করে এবং ‘আমলকে সংশোধন করে, তাহলে আল্লাহ তার প্রতি (রাহমাতের) দৃষ্টি বর্ষণ করবেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, অতি দয়ালু। ৩৯
708 ৫. আল-মায়েদা তুমি কি জাননা যে, আল্লাহরই জন্য রয়েছে আধিপত্য আসমানসমূহে এবং যমীনে, তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন এবং যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন! আর আল্লাহ সর্ব বিষয়ের উপর পূর্ণ ক্ষমতাবান। ৪০
709 ৫. আল-মায়েদা হে রাসূল! যারা দৌড়ে দৌড়ে কুফরীতে পতিত হয় তাদের এই কাজ যেন তোমাকে চিন্তিত না করে, তারা ঐ সব লোকের মধ্য থেকেই হোক যারা নিজেদের মুখেতো (মিছামিছি) বলেঃ আমরা ঈমান এনেছি; অথচ তাদের অন্তর বিশ্বাস করেনি, অথবা তারা সেই সব ইয়াহুদী যারা মিথ্যা কথা শুনতে অভ্যস্ত, তারা তোমার কথাগুলি অন্য সম্প্রদায়ের জন্য কান পেতে শোনে; সেই সম্প্রদায়ের অবস্থা এরূপ যে, তারা তোমার নিকট আসেনি (বরং অন্যকে পাঠিয়েছে); তারা কালামকে ওর স্বস্থান থেকে পরিবর্তন করে থাকে। তারা বলেঃ যদি তোমরা (সেখানে গিয়ে) এই (বিকৃত) বিধান পাও তাহলে তা কবূল করবে, আর যদি এই (বিকৃত) বিধান না পাও তাহলে বিরত থাকবে। আল্লাহ যাকে পরীক্ষায় ফেলার ইচ্ছা করেন তুমি তার জন্য আল্লাহর সাথে কোন কিছুই করার অধিকারী নও; তারা এরূপ যে, তাদের অন্তরগুলি পবিত্র করা আল্লাহর অভিপ্রায় নয়; তাদের জন্য দুনিয়ায় রয়েছে অপমান এবং আখিরাতেও তাদের জন্য রয়েছে ভীষণ শাস্তি। ৪১
710 ৫. আল-মায়েদা তারা মিথ্যা কথা শুনতে অভ্যস্ত, হারাম বস্তু খেতে অভ্যস্ত। অতএব তারা যদি তোমার কাছে আসে তাহলে তুমি তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও, কিংবা তাদের ব্যাপারে নিলিপ্ত থাক, আর যদি তুমি তাদের থেকে নিলিপ্তই থাক তাহলে তাদের সাধ্য নেই যে, তোমার বিন্দুমাত্রও ক্ষতি করে। আর যদি তুমি বিচার-মীমাংসা কর তাহলে তাদের মধ্যে ন্যায়সঙ্গত বিচার করবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়বিচারকদেরকে ভালবাসেন। ৪২
711 ৫. আল-মায়েদা আর তারা কিরূপে তোমাকে মীমাংসাকারী বানিয়ে নিচ্ছে? অথচ তাদের কাছে তাওরাত রয়েছে, যাতে আল্লাহর বিধান বিদ্যমান! অতঃপর তারা (তোমার মীমাংসা হতে) ফিরে যায়, আর তারা কখনও বিশ্বাসী নয়। ৪৩
712 ৫. আল-মায়েদা আমি তাওরাত নাযিল করেছিলাম, যাতে হিদায়াত ছিল এবং (আনুষ্ঠানিক বিধানাবলীর) আলো ছিল, আল্লাহর অনুগত নাবীগণ তদনুযায়ী ইয়াহুদীদেরকে আদেশ করত আর আল্লাহওয়ালাগণ এবং আলিমগণও। কারণ এই যে, তাদেরকে এই কিতাবুল্লাহর সংরক্ষণের আদেশ দেয়া হয়েছিল এবং তারা এর সাক্ষী। অতএব (হে ইয়াহুদী আলিমগণ!) তোমরা মানুষকে ভয় করনা, বরং আমাকে ভয় কর; আর আমার বিধানসমূহের বিনিময়ে (পার্থিব) সামান্য বস্তু গ্রহণ করনা; আর যে ব্যক্তি আল্লাহর অবতারিত (বিধান) অনুযায়ী বিচার করেনা, এমন লোকতো পূর্ণ কাফির। ৪৪
713 ৫. আল-মায়েদা আর আমি তাদের প্রতি তাতে (তাওরাতে) এটা ফরয করেছিলাম যে, প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ, চক্ষুর বিনিময়ে চক্ষু, নাকের বিনিময়ে নাক, কানের বিনিময়ে কান, দাঁতের বিনিময়ে দাঁত এবং (তদ্রুপ অন্যান্য) যখমেরও বিনিময়ে যখম রয়েছে; কিন্তু যে ব্যক্তি তাকে ক্ষমা করে দেয়, তাহলে এটা তার জন্য (পাপের) কাফ্ফারা হয়ে যাবে; আর যে ব্যক্তি আল্লাহর অবতারিত বিধান অনুযায়ী ফাইসালা করেনা, তাহলেতো এমন ব্যক্তি পূর্ণ যালিম। ৪৫
714 ৫. আল-মায়েদা আর আমি তাদের পর ঈসা ইবনে মারইয়ামকে এই অবস্থায় প্রেরণ করেছিলাম, সে তার পূর্ববর্তী কিতাবের অর্থাৎ তাওরাতের সত্যায়নকারী ছিল এবং আমি তাকে ইঞ্জীল প্রদান করেছি, যাতে হিদায়াত এবং আলো ছিল, আর ওটা তার পূর্ববর্তী কিতাব অর্থাৎ তাওরাতের সত্যতা সমর্থন করত এবং এটা সম্পূর্ণ রূপে মুত্তাকীদের জন্য হিদায়াত ও নসীহত ছিল। ৪৬
715 ৫. আল-মায়েদা আহলে ইঞ্জীলের উচিত-আল্লাহ তাতে যা কিছু অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী হুকুম প্রদান করা, আর যে ব্যক্তি আল্লাহর অবতারিত (বিধান) অনুযায়ী হুকুম প্রদান করেনা, তাহলে তো এ রূপ লোকই পাপাচারী ফাসিক। ৪৭
716 ৫. আল-মায়েদা আর আমি এই কিতাবকে (কুরআন) তোমার প্রতি নাযিল করেছি যা নিজেও সত্যতা গুণে বিভূষিত, (এবং) ওর পূর্ববর্তী কিতাবসমূহেরও সত্যায়নকারী এবং ঐ সব কিতাবের বিষয় বস্তুর সংরক্ষকও। অতএব তুমি তাদের পারস্পরিক বিষয়ে আল্লাহর অবতারিত এই কিতাব অনুযায়ী মীমাংসা কর, যা তুমি প্রাপ্ত হয়েছ, তা থেকে বিরত হয়ে তাদের প্রবৃত্তি অনুযায়ী কাজ করনা, তোমাদের প্রত্যেকের (সম্প্রদায়) জন্য আমি নির্দিষ্ট শারীয়াত এবং নির্দিষ্ট পন্থা নির্ধারণ করেছিলাম; আর যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন তাহলে তোমাদের সকলকে একই উম্মাত করে দিতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি এ কারণে যে, যে ধর্ম তিনি তোমাদেরকে প্রদান করেছেন তাতে তোমাদের সকলকে পরীক্ষা করবেন, সুতরাং তোমরা কল্যাণকর বিষয়সমূহের দিকে ধাবিত হও; তোমাদের সকলকে আল্লাহরই সমীপে প্রত্যাবর্তন করতে হবে, তখন তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন যে বিষয়ে তোমরা মতবিরোধ করছিলে। ৪৮
717 ৫. আল-মায়েদা আর আমি নির্দেশ দিচ্ছি যে, তুমি তাদের পারস্পরিক ব্যাপারে এই প্রেরিত কিতাব অনুযায়ী মীমাংসা করবে এবং তাদের প্রবৃত্তি অনুযায়ী কাজ করবেনা, এবং তাদের দিক থেকে সতর্ক থাকবে যেন তারা তোমাকে আল্লাহ প্রেরিত কোন নির্দেশ হতে বিভ্রান্ত করতে না পারে; অনন্তর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে দৃঢ় বিশ্বাস রেখ, আল্লাহর ইচ্ছা এটাই যে, তাদেরকে কোন কোন পাপের কারণে শাস্তি প্রদান করবেন; আর বহু লোকতো নাফরমানই হয়ে থাকে। ৪৯
718 ৫. আল-মায়েদা তাহলে কি তারা অজ্ঞতা যুগের মীমাংসা কামনা করে? আর দৃঢ় বিশ্বাসীদের কাছে মীমাংসা কার্যে আল্লাহর চেয়ে কে উত্তম ফাইসালাকারী? ৫০
719 ৫. আল-মায়েদা হে মু’মিনগণ! তোমরা ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করনা, তারা পরস্পর বন্ধু; আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে নিশ্চয়ই সে তাদেরই মধ্যে গণ্য হবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে সুপথ প্রদর্শন করেননা। ৫১
720 ৫. আল-মায়েদা এ কারণেই যাদের অন্তরে পীড়া রয়েছে তাদেরকে তোমরা দেখেছ যে, তারা দৌড়ে দৌড়ে তাদের (কাফিরদের) মধ্যে প্রবেশ করছে, এবং তারা বলেঃ আমাদের ভয় হচ্ছে যে, আমাদের উপর কোন বিপদ এসে পড়ে না কি! অতএব আশা করা যায় যে, অচিরেই আল্লাহ (মুসলিমদের) পূর্ণ বিজয় দান করবেন অথবা অন্য কোন বিষয় বিশেষভাবে নিজ পক্ষ হতে (প্রকাশ করবেন), অনন্তর তারা নিজেদের অন্তরে লুকায়িত মনোভাবের কারণে লজ্জিত হবে। ৫২
721 ৫. আল-মায়েদা আর মুসলিমরা বলবেঃ আরে! এরাই নাকি তারা, যারা অতি দৃঢ়তার সাথে আল্লাহর নামে শপথ করত, আমরা তোমাদের সাথেই আছি? এদের সমস্ত কাজই ব্যর্থ হয়ে গেছে, ফলে তারা অকৃতকার্য হয়ে রইল। ৫৩
722 ৫. আল-মায়েদা হে মু’মিনগণ! তোমাদের মধ্য হতে যে ব্যক্তি স্বীয় ধর্ম হতে বিচ্যুত হবে, (এতে ইসলামের কোন ক্ষতি নেই, কেননা) আল্লাহ সত্ত্বরই (তাদের স্থলে) এমন এক সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন যাদেরকে আল্লাহ ভালবাসবেন এবং তারাও আল্লাহকে ভালবাসবে, তারা মুসলিমদের প্রতি মেহেরবান থাকবে, কাফিরদের প্রতি কঠোর হবে, তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে আর তারা কোন নিন্দুকের নিন্দার পরওয়া করবেনা; এটা আল্লাহর অনুগ্রহ, তা তিনি যাকে ইচ্ছা প্রদান করেন; বস্তুতঃ আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী। ৫৪
723 ৫. আল-মায়েদা তোমাদের বন্ধুতো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং মু’মিনগণ - যারা সালাত সুপ্রতিষ্ঠিত করে, যাকাত প্রদান করে এবং বিনম্র। ৫৫ নামাজ
724 ৫. আল-মায়েদা আর যারা বন্ধুত্ব রাখবে আল্লাহর সাথে, তাঁর রাসূলের সাথে এবং মু’মিনদের সাথে, তাহলে তারা আল্লাহর দলভুক্ত হল এবং নিশ্চয়ই আল্লাহর দলই বিজয়ী। ৫৬
725 ৫. আল-মায়েদা হে মু’মিনগণ! যারা তোমাদের পূর্বে কিতাব প্রাপ্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে যারা তোমাদের ধর্মকে হাসি-তামাশার বস্তু মনে করে তাদেরকে এবং অন্যান্য কাফিরদেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করনা, এবং আল্লাহকে ভয় কর, যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। ৫৭
726 ৫. আল-মায়েদা আর যখন তোমরা সালাতের (আযান দ্বারা) আহবান কর তখন তারা ওর সাথে উপহাস করে; এর কারণ এই যে, তারা এরূপ লোক যারা মোটেই জ্ঞান রাখেনা। ৫৮ নামাজ
727 ৫. আল-মায়েদা তুমি বলে দাও, হে আহলে কিতাব! তোমরা আমাদের মধ্যে কোন্ কাজটি দুষণীয় পাচ্ছ এটা ব্যতীত যে, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি এবং ঐ কিতাবের প্রতি যা আমাদের নিকট প্রেরিত হয়েছে এবং ঐ কিতাবের প্রতিও যা অতীতে প্রেরিত হয়েছে, অথচ তোমাদের অধিকাংশ লোক (উল্লিখিত কিতাবসমূহের) প্রতি ঈমান (এর গন্ডি) হতে বহির্ভূত। ৫৯
728 ৫. আল-মায়েদা তুমি বলে দাওঃ আমি কি তোমাদেরকে এরূপ পন্থা হিসাবে ওটা হতেও (যাকে তোমরা মন্দ বলে জান) এরূপ সংবাদ দিব যা আল্লাহর কাছে অধিক নিকৃষ্ট? ওটা ঐ সব লোকের পন্থা, যাদেরকে আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন এবং যাদের প্রতি গযব নাযিল করেছেন ও যাদেরকে বানর ও শুকরে রূপান্তরিত করেছেন এবং যারা তাগুতের ইবাদাত করছে তারা মর্যাদার দিক দিয়ে নিকৃষ্টতর এবং সরল পথ হতে সর্বাধিক বিচ্যুত । ৬০
729 ৫. আল-মায়েদা আর যখন তারা তোমাদের নিকট আসে তখন বলে, আমরা ঈমান এনেছি; অথচ তারা কুফরী নিয়েই এসেছিল এবং তারা কুফরী নিয়েই চলে গেছে; এবং আল্লাহতো খুব ভাল জানেন যা তারা গোপন রাখে। ৬১
730 ৫. আল-মায়েদা আর তুমি তাদের মধ্যে অনেককে দেখবে, দৌড়ে দৌড়ে পাপ, যুলম ও হারাম ভক্ষণে নিপতিত হচ্ছে; বাস্তবিকই তারা খুব মন্দ কাজ করছে। ৬২
731 ৫. আল-মায়েদা তাদেরকে আল্লাহওয়ালা এবং আলিমগণ পাপের বাক্য হতে এবং হারাম মাল ভক্ষণ করা হতে কেন নিষেধ করছেনা? তাদের এ অভ্যাস নিন্দনীয়। ৬৩
732 ৫. আল-মায়েদা আর ইয়াহুদীরা বলেঃ আল্লাহর হাত বন্ধ হয়ে গেছে। তাদেরই হাত বন্ধ, এবং তাদের এই উক্তির দরুণ তারা অভিশপ্ত। বরং তাঁর (আল্লাহর) তো উভয় হাত উম্মুক্ত, যেরূপ ইচ্ছা তিনি ব্যয় করেন; আর যে বিষয় তোমার নিকট তোমার রবের পক্ষ হতে প্রেরিত হয় তা তাদের মধ্যে অনেকের নাফরমানী ও কুফর বৃদ্ধির কারণ হয়, এবং তাদের পরস্পরের মধ্যে শক্রতা ও হিংসা নিক্ষেপ করেছি কিয়ামাত পর্যন্ত; যখনই (মুসলিমদের বিরুদ্ধে) যুদ্ধাগ্নি প্রজ্জ্বলিত করতে চায়, আল্লাহ তা নির্বাপিত করে দেন; তারা ভূ-পৃষ্ঠে অশান্তি ছড়িয়ে বেড়ায়; আর আল্লাহ অশান্তি বিস্তারকারীদেরকে ভালবাসেননা। ৬৪
733 ৫. আল-মায়েদা আর এই আহলে কিতাব (ইয়াহুদী ও নাসারাহ্) যদি ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত, আমি অবশ্যই তাদের সমস্ত অন্যায় ক্ষমা করে দিতাম এবং অবশ্যই তাদেরকে নি‘আমাতের উদ্যানসমূহে দাখিল করতাম। ৬৫ বেহেস্ত
734 ৫. আল-মায়েদা আর যদি তারা তাওরাত ও ইঞ্জীলের এবং যে কিতাব (অর্থাৎ কুরআন) তাদের রবের পক্ষ হতে তাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে, ওর থেকে যথারীতি ‘আমলকারী হত তাহলে তারা উপর (অর্থাৎ আকাশ) হতে এবং নিম্ন (অর্থাৎ যমীন) হতে প্রাচুর্যের সাথে আহার পেত; তাদের একদলতো সরল পথের অনুগামী; আর তাদের অধিকাংশই এরূপ যে, তাদের কার্যকলাপ অতি জঘন্য। ৬৬
735 ৫. আল-মায়েদা হে রাসূল! যা কিছু তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার উপর অবতীর্ণ করা হয়েছে, তুমি (মানুষকে) সব কিছুই পৌঁছে দাও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমাকে অর্পিত দায়িত্ব পালন করলেনা; আল্লাহ তোমাকে মানুষ (অর্থাৎ কাফির) হতে রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে সুপথ প্রদর্শন করেননা। ৬৭
736 ৫. আল-মায়েদা তুমি বলে দাওঃ হে আহলে কিতাব! তোমরা কোনো পথেই প্রতিষ্ঠিত নও যে পর্যন্ত না তাওরাত, ইঞ্জীল এবং যে কিতাব (অর্থাৎ কুরআন) তোমাদের নিকট তোমাদের রবের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে তার উপর আমল কর; আর অবশ্যই যা তোমার প্রতি তোমার রবের পক্ষ থেকে প্রেরণ করা হয়, তা তাদের মধ্যে অনেকেরই নাফরমানী ও কুফর বৃদ্ধির কারণ হয়ে যায়। অতএব তুমি এই কাফিরদের জন্য মনঃক্ষুন্ন হয়োনা। ৬৮
737 ৫. আল-মায়েদা এটা সুনিশ্চিত যে, মুসলিম, ইয়াহুদী, সাবেঈ এবং খৃষ্টানদের মধ্যে যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং সৎ কাজ করে, এইরূপ লোকদের জন্য শেষ দিনে না কোন প্রকার ভয় থাকবে আর না তারা চিন্তান্বিত হবে। ৬৯
738 ৫. আল-মায়েদা আমি বানী ইসরাঈল হতে অঙ্গীকার নিয়েছি এবং তাদের কাছে বহু রাসূল প্রেরণ করেছি; যখনই তাদের কাছে কোন নাবী আগমন করত এমন কোন বিধান নিয়ে যা তাদের মনঃপুত হতনা, তখনই তারা কতিপয়কে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করত এবং কতিপয়কে হত্যাই করে ফেলত। ৭০
739 ৫. আল-মায়েদা আর তারা এই ধারণাই করেছিল যে, কোন শাস্তিই হবেনা, ফলে তারা আরও অন্ধ ও বধির হয়ে গেল, অতঃপর দীর্ঘকাল পর আল্লাহ তাদের প্রতি করুণা করলেন; তবুও তাদের অধিকাংশই অন্ধ ও বধিরই রইল। বস্তুতঃ আল্লাহ তাদের কার্যকলাপসমূহ প্রত্যক্ষ করেন। ৭১
740 ৫. আল-মায়েদা নিশ্চয়ই তারা কাফির হয়েছে যারা বলে - মসীহ ইবনে মারইয়ামই আল্লাহ। অথচ মসীহ্ নিজেই বলেছিলঃ হে বানী ইসরাঈল! তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর! যিনি আমার রাব্ব এবং তোমাদেরও রাব্ব; নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি আল্লাহর অংশী স্থাপন করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন এবং তার বাসস্থান হবে জাহান্নাম; এবং এরূপ অত্যাচারীদের জন্য কোন সাহায্যকারী থাকবেনা। ৭২ জাহান্নাম
741 ৫. আল-মায়েদা নিঃসন্দেহে তারাও কাফির যারা বলেঃ ‘আল্লাহ তিনের (অর্থাৎ তিন মা‘বূদের) এক’, অথচ ইবাদাত পাবার যোগ্য এক আল্লাহ ছাড়া অন্য কেহই নেই; আর যদি তারা স্বীয় উক্তিসমূহ হতে নিবৃত্ত না হয় তাহলে তাদের মধ্যে যারা কুফরীতে অটল থাকবে তাদের উপর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি পতিত হবে। ৭৩
742 ৫. আল-মায়েদা তারা আল্লাহর সমীপে কেন তাওবাহ করেনা এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেনা? অথচ আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়। ৭৪
743 ৫. আল-মায়েদা মারইয়াম পুত্র মাসীহ কেবল একজন রাসূল। তার পূর্বে অনেক রাসূল বিগত হয়েছে এবং তার মা ছিল অতি সত্যবাদী। তারা উভয়ে খাবার খেত। দেখ, কীভাবে আমি তাদের জন্য আয়াতসমূহ বর্ণনা করছি। অতঃপর দেখ, কীভাবে তাদেরকে সত্যবিমুখ করা হচ্ছে। ৭৫
744 ৫. আল-মায়েদা তুমি বলে দাওঃ তোমরা কি আল্লাহ ছাড়া এমন বস্তুর ইবাদাত কর যা তোমাদের না কোন অপকার করার ক্ষমতা রাখে, আর না কোন উপকার করার? অথচ আল্লাহই সব শুনেন, জানেন। ৭৬
745 ৫. আল-মায়েদা তুমি বলঃ হে আহলে কিতাব! তোমরা নিজেদের ধর্মে অন্যায়ভাবে সীমা লংঘন করনা, এবং ঐ সম্প্রদায়ের (ভিত্তিহীন) কল্পনার উপর চলোনা যারা অতীতে নিজেরাও ভ্রান্তিতে পতিত হয়েছে এবং অন্যান্যদেরকে ভ্রান্তিতে নিক্ষেপ করেছে। বস্তুতঃ তারা সরল পথ থেকে দূরে সরে পড়েছিল। ৭৭
746 ৫. আল-মায়েদা বানী ইসরাঈলের মধ্যে যারা কাফির ছিল, তাদের উপর অভিসম্পাত করা হয়েছিল দাঊদ ও ঈসা ইবনে মারইয়ামের মুখে; এই লা’নত এ কারণে করা হয়েছিল যে, তারা অবাধ্য ছিল এবং সীমালংঘন করত। ৭৮
747 ৫. আল-মায়েদা তারা যে অন্যায় কাজ করেছিল তা হতে একে অপরকে নিষেধ করতনা; বাস্তবিকই তাদের কাজ ছিল অত্যন্ত গর্হিত। ৭৯
748 ৫. আল-মায়েদা তুমি তাদের (ইয়াহুদীদের) অনেককে দেখবে, তারা কাফিরদের সাথে বন্ধুত্ব করছে; যে কাজ তারা ভবিষ্যতের জন্য করেছে তা নিঃসন্দেহে মন্দ, আল্লাহ তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন। ফলতঃ তারা আযাবে চিরকাল থাকবে। ৮০
749 ৫. আল-মায়েদা আর যদি তারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনতো এবং নাবীর প্রতি এবং ঐ কিতাবের (তাওরাতের) প্রতি যা তাঁর নাবীর নিকট প্রেরিত হয়েছিল, তাহলে তাদেরকে (মুশরিকদেরকে) কখনও বন্ধু রূপে গ্রহণ করতনা, কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোকই ফাসিক। ৮১
750 ৫. আল-মায়েদা তুমি মানবমন্ডলীর মধ্যে ইয়াহুদী ও মুশরিকদেরকে মুসলিমদের সাথে অধিক শক্রতা পোষণকারী পাবে, আর তন্মধ্যে মুসলিমদের সাথে বন্ধুত্ব রাখার অধিকতর নিকটবর্তী ঐ সব লোককে পাবে যারা নিজেদেরকে নাসারাহ্ (খৃষ্টান) বলে; এটা এ কারণে যে, তাদের মধ্যে বহু আলিম এবং বহু দরবেশ রয়েছে; আর এ কারণে যে, তারা অহংকারী নয়। ৮২
751 ৫. আল-মায়েদা আর যখন রাসূলের কাছে যা অবতীর্ণ হয়েছে তা শ্রবণ করে তখন তুমি দেখতে পাও যে, তাদের অশ্রু বইছে; এ কারণে যে, তারা সত্যকে উপলদ্ধি করতে পেরেছে। তারা এরূপ বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমরা মু’মিন হয়ে গেলাম, সুতরাং আমাদেরকেও ঐ সব লোকের সাথে লিপিবদ্ধ করে নিন, যারা (মুহাম্মাদ ও কুরআনকে সত্য বলে) স্বীকার করে । ৮৩
752 ৫. আল-মায়েদা আর আমাদের কি এমন ওযর আছে, যে জন্য আমরা ঈমান আনবনা আল্লাহর প্রতি এবং সেই সত্যের প্রতি যা আমাদের কাছে পৌঁছেছে; অথচ এ আশা রাখবো যে, আমাদের রাব্ব নেককারদের সাথে আমাদেরকে শামিল করবেন? ৮৪
753 ৫. আল-মায়েদা ফলতঃ তাদের এই উক্তির বিনিময়ে আল্লাহ তাদেরকে এমন উদ্যানসমূহ প্রদান করবেন, যার তলদেশে নহর বইতে থাকবে, তারা তাতে অনন্তকাল অবস্থান করবে। সৎ কর্মশীলদের জন্য এটাই প্রতিদান! ৮৫ বেহেস্ত
754 ৫. আল-মায়েদা আর যারা কাফির হয়েছে এবং আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলেছে তারা হবে জাহান্নামের অধিবাসী। ৮৬ জাহান্নাম
755 ৫. আল-মায়েদা হে মু’মিনগণ! আল্লাহ যে সব বস্তু তোমাদের জন্য হালাল করেছেন তন্মধ্যে সুস্বাদু বস্তুগুলিকে হারাম করনা এবং সীমা লংঘন করনা; নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমা লংঘনকারীদেরকে পছন্দ করেননা। ৮৭
756 ৫. আল-মায়েদা আর আল্লাহ তোমাদেরকে যা দান করেছেন তন্মধ্য হতে হালাল ও পবিত্র বস্তুগুলি আহার কর, এবং আল্লাহকে ভয় কর - যাঁর প্রতি তোমরা বিশ্বাসী। ৮৮
757 ৫. আল-মায়েদা আল্লাহ তোমাদের অর্থহীন কসমের জন্য তোমাদের পাকড়াও করবেননা, কিন্তু তিনি তোমাদেরকে ঐ কসমসমূহের জন্য পাকড়া করবেন যেগুলিকে তোমরা (ভবিষ্যত বিষয়ের প্রতি) দৃঢ় কর, সুতরাং ওর কাফফারা হচ্ছে দশজন অভাবগ্রস্তকে মধ্যম ধরণের খাদ্য প্রদান করা, যা তোমরা নিজ পরিবারের লোকদেরকে খাইয়ে থাক, কিংবা তাদেরকে পরিধেয় বস্ত্র দান করা (মধ্যম ধরণের), কিংবা একজন গোলাম কিংবা বাঁদী মুক্ত করা। আর যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখেনা সে (একাধারে) তিন দিন সিয়াম পালন করবে; এটা তোমাদের কসমসমূহের কাফ্ফারা যখন তোমরা কসম কর এবং অতঃপর ভঙ্গ কর এবং নিজেদের কসমসমূহকে রক্ষা করবে। এই রূপেই আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় বিধানসমূহ বর্ণনা করেন যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। ৮৯ রোজা
758 ৫. আল-মায়েদা হে মু’মিনগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, মূর্তি ইত্যাদি এবং লটারীর তীর, এ সব গর্হিত বিষয়, শাইতানী কাজ ছাড়া আর কিছুই নয়। সুতরাং এ থেকে সম্পূর্ণ রূপে দূরে থাক, যেন তোমাদের কল্যাণ হয়। ৯০
759 ৫. আল-মায়েদা শাইতানতো এটাই চায় যে, মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের পরস্পরের মধ্যে শক্রতা ও হিংসা সৃষ্টি হোক এবং আল্লাহর স্মরণ হতে ও সালাত হতে তোমাদেরকে বিরত রাখে। সুতরাং এখনো কি তোমরা নিবৃত্ত হবেনা? ৯১ নামাজ
760 ৫. আল-মায়েদা আর তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করতে থাক ও রাসূলের অনুগত হও এবং সতর্ক থাকো, আর যদি বিমুখ থাকো তাহলে জেনে রেখ যে, আমার রাসূলের দায়িত্ব ছিল শুধু স্পষ্টভাবে (আদেশ) পৌঁছে দেয়া। ৯২
761 ৫. আল-মায়েদা যারা ঈমান এনেছে ও ভাল কাজ করে, এরূপ লোকদের উপর কোন পাপ নেই যা তারা পূর্বে আহার করেছে যখন তারা ভবিষ্যতের জন্য পরহেয করে, ঈমান রাখে ও ভাল কাজ করে, পুনরায় সংযত থাকে এবং বিশ্বাস স্থাপন করে। পুনরায় সংযত থাকে ও ভাল কাজ করতে থাকে; বস্তুত আল্লাহ এরূপ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন। ৯৩
762 ৫. আল-মায়েদা হে মু’মিনগণ! আল্লাহ তোমাদেরকে কতক শিকারের দ্বারা পরীক্ষা করবেন, যে শিকার পর্যন্ত তোমাদের হাত ও তোমাদের বল্লম পৌঁছতে পারবে, এই উদ্দেশে যে, আল্লাহ জেনে নিবেন কে তাঁকে না দেখে ভয় করে। সুতরাং যে ব্যক্তি এরপরও সীমা লংঘন করবে, তার জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। ৯৪
763 ৫. আল-মায়েদা হে মু’মিনগণ! তোমরা ইহ্রামের অবস্থায় নিষিদ্ধ এলাকায় বণ্য শিকারকে হত্যা করনা; আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ইচ্ছা পূর্বক শিকার বধ করবে তার উপর তখন বিনিময় ওয়াজিব হবে, যা (মূল্যের দিক দিয়ে) সেই জানোয়ারের সমতুল্য হয় যাকে সে হত্যা করেছে, যার (আনুমানিক মূল্যের) মীমাংসা তোমাদের মধ্য হতে দু‘জন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি করে দিবে। (অতঃপর নিরূপিত মূল্য দ্বারা) সেই বিনিময় গৃহপালিত চতুস্পদ জন্তু নেয়ায্ স্বরূপ কা‘বা ঘর পর্যন্ত পৌঁছে দিবে, না হয় কাফফারা স্বরূপ (নিরূপিত মূল্যের খাদ্যদ্রব্য) মিসকীনদের মধ্যে বিতরণ করবে, অথবা এর সম পরিমাণ সিয়াম পালন করবে, যেন নিজের কৃতকর্মের পরিণামের স্বাদ গ্রহণ করে; অতীত (ক্রটি) আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন; আর পুনরায় যে ব্যক্তি এরূপ কাজই করবে, আল্লাহ সেই ব্যক্তি হতে (এর) প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন; আল্লাহ পরাক্রান্ত, প্রতিশোধ গ্রহণে সক্ষম। ৯৫ রোজা
764 ৫. আল-মায়েদা তোমাদের জন্য সামুদ্রিক শিকার ধরা ও খাওয়া হালাল করা হয়েছে তোমাদের ও মুসাফিরদের উপকারের জন্য, আর স্থলচর শিকার ধরা তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে যতক্ষণ তোমরা ইহ্রাম অবস্থায় থাক; আর আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর সমীপে তোমাদেরকে একত্রিত করা হবে। ৯৬
765 ৫. আল-মায়েদা সম্মানিত গৃহ কা‘বাকে আল্লাহ মানুষের স্থিতিশীলতার কারণ রূপে তৈরী করেছেন এবং সম্মানিত মাসসমূহকে, হারামে কুরবানীর জন্তুকে এবং সেই পশুকেও যার গলায় বিশেষ ধরণের বেড়ী পড়ানো হয়েছে। এটা এ জন্য যেন তোমরা দৃঢ় বিশ্বাস রাখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ আকাশসমূহ ও যমীনস্থিত সব বস্তুরই খবর রাখেন, আর নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে মহাজ্ঞানী। ৯৭
766 ৫. আল-মায়েদা তোমরা জেনে রেখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠিন শাস্তিদাতা এবং নিশ্চয়ই অতি ক্ষমাশীল । ৯৮
767 ৫. আল-মায়েদা রাসূলের দায়িত্ব শুধু পৌঁছে দেয়া মাত্র; আর তোমরা যা কিছু প্রকাশ কর এবং যা কিছু গোপন কর তা সবকিছুই আল্লাহ জানেন। ৯৯
768 ৫. আল-মায়েদা তুমি বলে দাওঃ পবিত্র ও অপবিত্র সমান নয়, যদিও অপবিত্রের আধিক্য তোমাকে চমৎকৃত করে। অতএব হে জ্ঞানীগণ! আল্লাহকে ভয় করতে থাক যেন তোমরা (পূর্ণ) সফলকাম হতে পার। ১০০
769 ৫. আল-মায়েদা হে মু’মিনগণ! তোমরা এমন সব বিষয় জিজ্ঞেস করনা, যদি তা তোমাদের নিকট প্রকাশ করে দেয়া হয় তাহলে তোমাদের খারাপ লাগবে, আর যদি তোমরা কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার সময় উক্ত বিষয়সমূহ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস কর তাহলে তোমাদের জন্য প্রকাশ করে দেয়া হবে, অতীতের জিজ্ঞাসাবাদ আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন। বস্তুতঃ আল্লাহ মহাক্ষমাশীল, অতিশয় সহিষ্ণু। ১০১
770 ৫. আল-মায়েদা এরূপ বিষয় তোমাদের পূর্বে অন্যান্য লোকেরাও জিজ্ঞেস করেছিল, অতঃপর ঐ সব বিষয়ের হক তারা আদায় করেনি। ১০২
771 ৫. আল-মায়েদা আল্লাহ না বাহীরাহর প্রচলন করেছেন, না সায়েবাহর; না ওয়াছীলার আর না হা‘মীর; কিন্তু যারা কাফির তারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করে, আর অধিকাংশই (ধর্ম) জ্ঞান রাখে না। ১০৩
772 ৫. আল-মায়েদা আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহর অবতীর্ণ বিধানসমূহের দিকে এসো এবং রাসূলের দিকে’ তখন তারা বলেঃ আমাদের জন্য ওটাই যথেষ্ট যার উপর আমরা আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে পেয়েছি; যদিও তাদের পূর্ব-পুরুষরা না কোন জ্ঞান রাখতো, আর না হিদায়াত প্রাপ্ত ছিল। তবুও কি তারা তাই করবে? ১০৪
773 ৫. আল-মায়েদা হে মু’মিনগণ! তোমাদের (সংশোধন করার) দায়িত্ব তোমাদের, যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে তারা তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবেনা যদি তোমরা দীনের পথে চল; তোমরা সবাই আল্লাহরই সমীপে প্রত্যাবর্তিত হবে, অতঃপর তোমরা যা কিছু করছিলে সে সম্পর্কে তিনি তোমাদেরকে অবহিত করবেন। ১০৫
774 ৫. আল-মায়েদা হে মু’মিনগণ! যখন তোমাদের মধ্যে কারও মৃত্যু আসন্ন হয় তখন অসীয়াত করার সময় তোমাদের মধ্য হতে দু’জন লোক সাক্ষী থাকা সঙ্গত। এই দু’ব্যক্তি হবে দীনদার এবং তোমাদের মধ্য হতে; অথবা ভিন্ন সম্প্রদায় হতে দু’জন হবে, যদি তোমরা সফরে থাক এবং ঐ অবস্থায় মৃত্যু তোমাদের উপর উপস্থিত হয়; যদি তোমাদের সন্দেহ হয় তাহলে ওসীদ্বয়কে সালাতের (জামা‘আতের) পর রুখে নাও, অতঃপর তারা আল্লাহর নামে শপথ করে বলবে, আমরা এই শপথের বিনিময়ে কোন স্বার্থ ভোগ করবনা যদি আত্মীয়ও হয়; আর আল্লাহর সাক্ষ্য প্রমাণকে আমরা গোপন করবনা, (যদি এরূপ করি) এমতাবস্থায় আমরা ভীষণ পাপী হব। ১০৬ নামাজ
775 ৫. আল-মায়েদা অতঃপর যদি জানা যায় যে, ওসীদ্বয় কোন পাপে জড়িত হয়ে পড়েছিল তাদের মধ্য হতে (মৃতের) সর্বাপেক্ষা নিকটতম অপর দু’ব্যক্তি তাদের স্থলাভিষিক্ত হবে, অতঃপর উভয়ে (এরূপে) আল্লাহর নামে শপথ করে বলবেঃ নিশ্চয়ই আমাদের এই শপথ তাদের শপথ অপেক্ষা অধিক সত্য এবং আমরা বিন্দুমাত্র ব্যতিক্রম করিনি, (যদি করি তাহলে) এমতাবস্থায় যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হব। ১০৭
776 ৫. আল-মায়েদা এটাই এ বিষয়ে অতীব সহজ পন্থা যে, তারা ঘটনা যথাযথভাবে প্রকাশ করে দিবে, অথবা এই ভয় করবে যে, তাদের শপথ গ্রহণ করার পর (পুনঃ) শপথ করানো হবে; আল্লাহকে ভয় কর এবং (বিধানসমূহ) শ্রবণ কর, আর আল্লাহ ফাসিকদেরকে পথ দেখাবেননা। ১০৮
777 ৫. আল-মায়েদা যে দিন আল্লাহ সমস্ত রাসূলদেরকে সমবেত করবেন, অতঃপর বলবেনঃ তোমরা (উম্মাতদের নিকট থেকে) কি উত্তর পেয়েছিলে? তারা বলবেঃ (তাদের অন্তরের কথা) আমাদের কিছুই জানা নেই; নিশ্চয়ই আপনি সমস্ত গোপনীয় বিষয়ে সম্পূর্ণ জ্ঞাত। ১০৯
778 ৫. আল-মায়েদা যখন আল্লাহ বলবেনঃ হে ঈসা ইবনে মারইয়াম! আমার অনুগ্রহ স্মরণ কর যা তোমার উপর ও তোমার মাতার উপর (প্রদত্ত) হয়েছে। যখন আমি তোমাকে রূহুল কুদুস দ্বারা সাহায্য করেছি, (এবং) তুমি মানুষের সাথে (মাতার) ক্রোধের কথা বলেছ এবং পৌঁঢ় বয়সেও; আর যখন আমি তোমাকে কিতাবসমূহ, প্রগাঢ় জ্ঞান এবং তাওরাত ও ইঞ্জীল শিক্ষা দিয়েছি এবং যখন তুমি আমার আদেশে মাটি দ্বারা পাখীর আকৃতি সদৃশ এক আকৃতি প্রস্তুত করেছিলে, অতঃপর তুমি ওতে ফুৎকার দিলে, যার ফলে ওটা আমার আদেশে পাখী হয়ে যেত, আর তুমি আমার আদেশে জন্মান্ধ ও কুষ্ঠ রোগী নিরাময় করে দিতে আর যখন তুমি আমার আদেশে মৃতদেরকে বের করে দাঁড় করাতে, আর যখন আমি বানী ইসরাঈলকে (তোমাকে হত্যা করা হতে) নিবৃত্ত রেখেছি যখন তুমি তাদের কাছে (স্বীয় নবুওয়াতের) প্রমাণাদী নিয়ে হাজির হয়েছিলে, অতঃপর তাদের মধ্যে যারা কাফির ছিল তারা বলেছিলঃ এটা (মু’জিযাসমূহ) স্পষ্ট যাদু ছাড়া আর কিছুই নয়। ১১০
779 ৫. আল-মায়েদা আর যখন আমি হাওয়ারীদেরকে আদেশ করলামঃ আমার প্রতি এবং আমার রাসূলের প্রতি ঈমান আন তখন তারা বললঃ আমরা ঈমান আনলাম এবং আপনি সাক্ষী থাকুন যে, আমরা মুসলিম। ১১১
780 ৫. আল-মায়েদা যখন হাওয়ারীরা বললঃ হে ঈসা ইবনে মারইয়াম! আপনার রাব্ব কি এরূপ করতে পারেন যে, আমাদের জন্য আকাশ হতে কিছু খাদ্য প্রেরণ করেন? ঈসা বললঃ আল্লাহকে ভয় কর যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। ১১২
781 ৫. আল-মায়েদা তারা বললঃ আমাদের উদ্দেশ্য এই যে, আমরা তা থেকে আহার করি এবং আমাদের অন্তর সম্পূর্ণ প্রশান্ত হয়ে যায়, আর আমাদের এই বিশ্বাস আরও সুদৃঢ় হয় যে, আপনি আমাদের নিকট সত্য বলেছেন এবং আমরা এর প্রতি সাক্ষ্যদানকারীদের অন্তর্ভুক্ত হই। ১১৩
782 ৫. আল-মায়েদা ঈসা ইবনে মারইয়াম দু‘আ করলঃ হে আল্লাহ! আমাদের প্রতি আকাশ হতে খাদ্য অবতীর্ণ করুন যেন ওটা আমাদের, অগ্র ও পশ্চাতবর্তীদের জন্য একটি আনন্দের বিষয় হয় এবং আপনার পক্ষ হতে এক নিদর্শন হয়ে থাকে। আর আমাদেরকে রিয্ক প্রদান করুন, বস্তুতঃ আপনিতো সর্বোত্তম জীবিকা প্রদানকারী। ১১৪
783 ৫. আল-মায়েদা আল্লাহ বললেনঃ আমি এই খাদ্য তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করব, অনন্তর তোমাদের মধ্য হতে যে এরপর অকৃতজ্ঞ হবে, আমি তাকে এমন শাস্তি দিব যে, বিশ্ববাসীদের মধ্যে ঐ শাস্তি আর কেহকেও দিবনা। ১১৫
784 ৫. আল-মায়েদা আর যখন আল্লাহ বলবেনঃ হে ঈসা ইবনে মারইয়াম! তুমি কি লোকদেরকে বলেছিলেঃ তোমরা আল্লাহর সাথে আমার ও আমার মায়েরও ইবাদাত কর? ঈসা নিবেদন করবেঃ আপনি পবিত্র! আমার পক্ষে কোনক্রমেই শোভনীয় ছিলনা যে, আমি এমন কথা বলি যা বলার আমার কোন অধিকার নেই; যদি আমি বলে থাকি তাহলে অবশ্যই আপনার জানা থাকবে; আপনিতো আমার অন্তরে যা আছে তাও জানেন, পক্ষান্তরে আপনার জ্ঞানে যা কিছু রয়েছে আমি তা জানিনা; সমস্ত গাইবের বিষয় আপনিই জ্ঞাত। ১১৬
785 ৫. আল-মায়েদা আমি তাদেরকে উহা ব্যতীত কিছুই বলিনি যা আপনি আমাকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, যিনি আমার রাব্ব এবং তোমাদেরও রাব্ব। আমি যতদিন তাদের মধ্যে ছিলাম ততদিন তাদের সম্পর্কে অবগত ছিলাম, অতঃপর আপনি যখন আমাকে তুলে নিলেন তখন আপনিই ছিলেন তাদের রক্ষক, বস্তুতঃ আপনিই সর্ব বিষয়ে পূর্ণ খবর রাখেন। ১১৭
786 ৫. আল-মায়েদা আপনি যদি তাদেরকে শাস্তি প্রদান করেন তাহলে ওরাতো আপনার বান্দা; আর যদি তাদেরকে ক্ষমা করেন তাহলেতো আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ১১৮
787 ৫. আল-মায়েদা আল্লাহ বলবেনঃ এটি সেই দিন যেদিন সত্যবাদীদের সত্যবাদীতা কাজে আসবে, তারা উদ্যান প্রাপ্ত হবে, যার তলদেশে নহরসমূহ বইতে থাকবে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট; এটাই হচ্ছে মহাসফলতা। ১১৯
788 ৫. আল-মায়েদা আল্লাহরই জন্য অধিপত্য রয়েছে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল এবং ঐ সমস্ত কিছুর যা এতদুভয়ের মাঝে বিদ্যমান; আর তিনি সকল বিষয়ে পূর্ণ ক্ষমতাবান। ১২০
789 ৬. আল-আন’আম সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই জন্য যিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং সৃষ্টি করেছেন আলো ও অন্ধকার; এ সত্ত্বেও যারা কাফির হয়েছে তারা অপর কিছুকে তাদের রবের সমকক্ষ নিরূপণ করেছে।
790 ৬. আল-আন’আম অথচ তিনি তোমাদের মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাদের জীবনের জন্য একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ নির্ধারণ করেছেন, এছাড়া আরও একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ তাঁর নিকট নির্ধারিত রয়েছে, কিন্তু এরপরেও তোমরা সন্দেহ করে থাক।
791 ৬. আল-আন’আম আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে ঐ এক আল্লাহই রয়েছেন, তোমাদের অপ্রকাশ্য ও প্রকাশ্য সব অবস্থাই তিনি জানেন, আর তোমরা যা কিছু কর তাও তিনি পূর্ণরূপে অবগত আছেন।
792 ৬. আল-আন’আম আর তাদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, তাদের নিকট তাদের রবের নিদর্শনসমূহ হতে যে কোন নিদর্শনই আসুক না কেন, তা হতেই তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়।
793 ৬. আল-আন’আম সুতরাং তাদের নিকট যখন সত্য বাণী এসেছে, ওটাও তারা মিথ্যা জেনেছে। অতএব অতি সত্ত্বরই তাদের নিকট সেই বিষয়ের সংবাদ এসে পৌঁছবে, যে ব্যাপারে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত।
794 ৬. আল-আন’আম তারা কি ভেবে দেখেনি যে, আমি তাদের পূর্বে বহু দল ও সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি, যাদেরকে দুনিয়ায় এমন শক্তি সামর্থ্য ও প্রতিপত্তি দিয়েছিলাম যা তোমাদেরকে দিইনি, আর আমি তাদের প্রতি আকাশ হতে প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করেছি এবং তাদের নিম্নভূমি হতে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত করেছি, কিন্তু আমার নি‘আমাতের শোকর না করার পাপের কারণে আমি তাদেরকে ধ্বংস করেছি, এবং তাদের পর অন্য নতুন নতুন জাতি ও সম্প্রদায়সমূহ সৃষ্টি করেছি।
795 ৬. আল-আন’আম যদি আমি তোমার প্রতি কাগজে লিখিত কোন কিতাব অবতীর্ণ করতাম, অতঃপর তারা তা নিজেদের হাত দ্বারা স্পর্শও করত; তবুও কাফির ও অবিশ্বাসী লোকেরা বলতঃ এটা প্রকাশ্য যাদু ছাড়া আর কিছুই নয়।
796 ৬. আল-আন’আম আর তারা বলে থাকে, তাদের কাছে কোন মালাক/ফেরেশতা কেন পাঠানো হয়না? আমি যদি প্রকৃতই কোন মালাক/ফেরেশতা অবতীর্ণ করতাম তাহলে যাবতীয় বিষয়েরই চূড়ান্ত সমাধান হয়ে যেত, অতঃপর তাদেরকে কিছুমাত্রই অবকাশ দেয়া হতনা।
797 ৬. আল-আন’আম আর যদি কোন মালাককেও/ফেরেশতাকেও রাসূল করে পাঠাতাম তাহলে তাকে মানুষ রূপেই পাঠাতাম; এতেও তারা ঐ সন্দেহই করত, যে সন্দেহ ও প্রশ্ন এখন তারা করছে।
798 ৬. আল-আন’আম তোমার পূর্বে যে সব নাবী রাসূল এসেছিল, তাদের সাথেও ঠাট্টা বিদ্রুপ করা হয়েছে, ফলতঃ এই সব ব্যঙ্গ বিদ্রুপের পরিণাম ফল বিদ্রুপকারীদেরকেই পরিবেষ্টন করে ফেলেছিল। ১০
799 ৬. আল-আন’আম তুমি বলঃ তোমরা ভূ-পৃষ্ঠ পরিভ্রমণ কর, অতঃপর সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্নকারীদের পরিণাম কি হয়েছে তা গভীর অভিনিবেশ সহকারে লক্ষ্য কর। ১১
800 ৬. আল-আন’আম তুমি জিজ্ঞেস করঃ আকাশমন্ডলী ও ধরাধামে অবস্থিত যা কিছু রয়েছে তার মালিক কে? তুমি বলঃ তা সবই আল্লাহর মালিকানায়, অনুগ্রহ করা তিনি তাঁর নীতি বলে গ্রহণ করেছেন, তিনি তোমাদের সকলকে কিয়ামাত দিবসে অবশ্যই সমবেত করবেন যে দিন সম্পর্কে কোন সন্দেহই নেই; যারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি ও ধবংসের মুখে ফেলেছে তারাই বিশ্বাস করেনা। ১২
801 ৬. আল-আন’আম রাতের অন্ধকারে এবং দিনের আলোয় যা কিছু বসবাস করে ও বর্তমান রয়েছে তা সব কিছুই আল্লাহর। তিনি সব কিছুই শোনেন ও জানেন। ১৩
802 ৬. আল-আন’আম বলঃ আমি কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কেহকেও আমার অভিভাবক রূপে গ্রহণ করব, যিনি হলেন আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা? তিনি রিয্ক দান করেন, কিন্তু কারও রিয্ক গ্রহণ করেননা। তুমি বলঃ আমাকে এই আদেশই করা হয়েছে যে, আমি সকলের আগেই ইসলাম গ্রহণ করে তাঁর সামনে মাথা নত করে দিব। আর তুমি মুশরিকদের মধ্যে শামিল হয়োনা। ১৪
803 ৬. আল-আন’আম তুমি বলঃ আমি আমার রবের অবাধ্য হলে, আমি মহাবিচারের দিনের শাস্তির ভয় করছি। ১৫
804 ৬. আল-আন’আম সেদিন যার উপর হতে শাস্তি প্রত্যাহার করা হবে তার প্রতি আল্লাহ বড়ই অনুগ্রহ করবেন, আর এটাই হচ্ছে প্রকাশ্য মহাসাফল্য। ১৬
805 ৬. আল-আন’আম আল্লাহ যদি কারও ক্ষতি সাধন করেন তাহলে তিনি ছাড়া সেই ক্ষতি দূর করার আর কেহ নেই, আর যদি তিনি কারও কল্যাণ করেন, (তাহলে আল্লাহ সেটাও করতে পারেন, কেননা) তিনি সমস্ত কিছুর উপর ক্ষমতাবান। ১৭
806 ৬. আল-আন’আম তিনিই তাঁর বান্দাদের উপর একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী, তিনিই মহাজ্ঞানী ও সর্ব বিষয়ে ওয়াকিফহাল। ১৮
807 ৬. আল-আন’আম তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করঃ কার সাক্ষ্য সবচেয়ে বেশি গণ্য? তুমি বলে দাওঃ আমার ও তোমাদের মধ্যে আল্লাহই হচ্ছেন সাক্ষী, আর এই কুরআন আমার নিকট অহীর মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে, যেন আমি তোমাদেরকে এবং যাদের নিকট এটি পৌঁছবে তাদের সকলকে এর দ্বারা সতর্ক করি। বাস্তবিকই তোমরা কি এই সাক্ষ্য দিতে পার যে, আল্লাহর সাথে অন্য কোন মা‘বূদ রয়েছে? তুমি বলঃ আমি এই সাক্ষ্য দিতে পারিনা। তুমি ঘোষণা করঃ তিনিই একমাত্র ইলাহ, আর তোমরা যে শিরকে লিপ্ত রয়েছ, আমার সাথে ওর কোনই সম্পর্ক নেই। ১৯
808 ৬. আল-আন’আম যাদেরকে আমি কিতাব দান করেছি, তারা রাসূলকে এমনভাবে জানে ও চিনে, যেরূপ তারা নিজেদের সন্তান-সন্ততিদেরকে জানে ও চিনে, কিন্তু যারা নিজেদেরকে ধ্বংসের মুখে ফেলে দিয়েছে তারা ঈমান আনবেনা। ২০
809 ৬. আল-আন’আম যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি মিথ্যা দোষারোপ করে, কিংবা আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, তার চেয়ে বড় যালিম আর কে হতে পারে? এরূপ যালিম লোক কক্ষনোই সাফল্য লাভ করতে পারবে না। ২১
810 ৬. আল-আন’আম সেই দিনটিও স্মরণযোগ্য যেদিন আমি সকলকে একত্রিত করব, অতঃপর যারা আমার সাথে শির্‌ক করেছে তাদেরকে আমি বলবঃ যাদেরকে তোমরা মা‘বূদ বলে ধারণা করতে তারা এখন কোথায়? ২২
811 ৬. আল-আন’আম তখন তাদের এ কথা বলা ব্যতীত আর কোন কথা বলার থাকবেনা, তারা বলবেঃ আল্লাহর শপথ, হে আমাদের রাব্ব! আমরা মুশরিক ছিলামনা। ২৩
812 ৬. আল-আন’আম লক্ষ্য কর, তারা নিজেদের সম্পর্কে কিরূপ মিথ্যা বলছে! তখন যাদেরকে তারা মিথ্যা মা‘বূদ মনোনীত করেছিল তারা সবাই নিরুদ্দেশ হয়ে যাবে। ২৪
813 ৬. আল-আন’আম তাদের মধ্যে এমন লোকও রয়েছে যারা মনোযোগ সহকারে কান লাগিয়ে তোমার কথা শুনে থাকে, (অথচ গ্রহণ করেনা) তোমার কথা যাতে তারা ভাল রূপে বুঝতে না পারে সেজন্য আমি তাদের অন্তরের উপর আবরণ রেখে দিয়েছি এবং তাদের কর্ণে কঠিন ভার (বধিরতা) অর্পণ করেছি। তারা যদি সমস্ত নিদর্শনও অবলোকন করে তবুও তারা ঈমান আনবেনা, এমনকি যখন তারা তোমার কাছে আসে তখন তোমার সাথে অর্থহীন বির্তক জুড়ে দেয়, আর তাদের কাফির লোকেরা (সব কথা শোনার পর) বলেঃ এটা প্রাচীন কালের লোকদের কিস্সা কাহিনী ব্যতীত আর কিছুই নয়। ২৫
814 ৬. আল-আন’আম তারা নিজেরাতো তা থেকে বিরত থাকে, অধিকন্ত লোকদেরকেও তারা তা থেকে বিরত রাখতে চায়; বস্তুতঃ তারা ধ্বংস করছে শুধুমাত্র নিজেদেরকেই অথচ তারা অনুভব করছেনা। ২৬
815 ৬. আল-আন’আম তুমি যদি তাদের সেই সময়ের অবস্থাটি অবলোকন করতে যখন তাদেরকে জাহান্নামের কিনারায় দাঁড় করানো হবে। তখন তারা বলবেঃ হায়! কতই না ভাল হত আমরা যদি আবার দুনিয়ায় ফিরে যেতে পারতাম, আমরা সেখানে আমাদের রবের নিদর্শনসমূহকে অবিশ্বাস করতামনা এবং আমরা ঈমানদার হয়ে যেতাম! ২৭
816 ৬. আল-আন’আম যে সত্য তারা পূর্বে গোপন করেছিল তা তখন তাদের নিকট সুস্পষ্ট রূপে প্রতিভাত হয়ে পড়বে, আর যদি তাদেরকে সাবেক পার্থিব জীবনে ফিরে যেতেও দেয়া হয়, তবুও যা করতে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল তারা তা’ই করবে, নিঃসন্দেহে তারা মিথ্যাবাদী। ২৮
817 ৬. আল-আন’আম তারা বলেঃ এই পার্থিব জীবনই প্রকৃত জীবন, এরপর আর কোন জীবন নেই, আর আমাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবেনা। ২৯
818 ৬. আল-আন’আম হায়! তুমি যদি সেই দৃশ্যটি দেখতে, যখন তাদেরকে তাদের রবের সম্মুখে দন্ডায়মান করা হবে, তখন আল্লাহ তা‘আলা জিজ্ঞেস করবেনঃ এটা (কিয়ামাত) কি সত্য নয়? তখন তারা উত্তরে বলবেঃ হ্যাঁ, আমরা আমাদের রবের (আল্লাহর) শপথ করে বলছি! এটা বাস্তব ও সত্য বিষয়। তখন আল্লাহ বলবেনঃ তাহলে তোমরা এটাকে অস্বীকার ও অমান্য করার ফল স্বরূপ শাস্তির স্বাদ গ্রহণ কর। ৩০
819 ৬. আল-আন’আম ঐ সব লোকই ক্ষতিগ্রস্ত যারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাত হওয়াকে মিথ্যা ভেবেছে। যখন সেই নির্দিষ্ট সময়টি হঠাৎ তাদের কাছে এসে পড়বে তখন তারা বলবেঃ হায়! পিছনে আমরা কতই না দোষ ক্রটি করেছি! তারা নিজেরাই নিজেদের বোঝা পিঠে বহন করবে। শুনে রেখ! তারা যা কিছু বহন করেছে তা কতই না নিকৃষ্টতর বোঝা! ৩১
820 ৬. আল-আন’আম এই পার্থিব জীবন খেল-তামাশা ও আমোদ প্রমোদের ব্যাপার ছাড়া আর কিছুই নয়, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, পরকালের জীবনই হবে তাদের জন্য উৎকৃষ্টতর। তোমরা কি চিন্তা ভাবনা করবেনা? ৩২
821 ৬. আল-আন’আম তাদের কথাবার্তায় তোমার যে দুঃখ ও মনঃকষ্ট হয় তা আমি খুব ভালভাবেই জানি, তারা শুধুমাত্র তোমাকেই মিথ্যা প্রতিপন্ন করছেনা, বরং এই পাপিষ্ঠ যালিমরা আল্লাহর আয়াতসমূহকেও অস্বীকার ও অমান্য করছে। ৩৩
822 ৬. আল-আন’আম তোমার পূর্বে বহু নাবী ও রাসূলকেও মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, অতঃপর তারা এই মিথ্যা প্রতিপন্নকে এবং তাদের প্রতি কৃত নির্যাতন ও উৎপীড়নকে অম্লান বদনে সহ্য করেছে, যে পর্যন্ত না তাদের কাছে আমার সাহায্য এসে পৌঁছেছে। আল্লাহর আদেশকে পরিবর্তন করার কেহ নেই। তোমার কাছে পূর্ববর্তী কোন কোন নাবীর কিছু কিছু সংবাদ ও কাহিনীতো পৌঁছে গেছে। ৩৪
823 ৬. আল-আন’আম আর যদি তাদের অনাগ্রহ ও উপেক্ষা সহ্য করা তোমার কাছে কঠিন হয়ে পড়ে তাহলে ক্ষমতা থাকলে মাটির কোন সুড়ঙ্গ পথ অনুসন্ধান কর অথবা আকাশে সিঁড়ি লাগিয়ে দাও; অতঃপর তাদের কাছে কোন নিদর্শন নিয়ে এসো, আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের সকলকে হিদায়াতের উপর সমবেত করতেন। সুতরাং তুমি অবুঝদের মত হয়োনা। ৩৫
824 ৬. আল-আন’আম যারা শুনে তারাই সত্যের ডাকে সাড়া দেয়। আল্লাহ মৃতদেরকে জীবিত করে উঠাবেন, অতঃপর তারা তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে। ৩৬
825 ৬. আল-আন’আম তারা বলেঃ রবের পক্ষ হতে তার প্রতি কোন নিদর্শন কেন অবতীর্ণ করা হলনা? তুমি বলে দাওঃ নিদর্শন অবতীর্ণ করায় আল্লাহ নিঃসন্দেহে পূর্ণ ক্ষমতাবান, কিন্তু অধিকাংশ লোকই তা জ্ঞাত নয়। ৩৭
826 ৬. আল-আন’আম ভূ-পৃষ্ঠে চলাচলকারী প্রতিটি জীব এবং বায়ুমন্ডলে ডানার সাহায্যে উড়ন্ত প্রতিটি পাখীই তোমাদের ন্যায় এক একটি জাতি, আমি কিতাবে কোন বিষয়ই লিপিবদ্ধ করতে বাদ রাখিনি। অতঃপর তাদের সকলকে তাদের রবের কাছে সমবেত করা হবে। ৩৮
827 ৬. আল-আন’আম আর যারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা মনে করে তারা অন্ধকারে নিমজ্জিত মূক ও বধির, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা হিদায়াতের সরল সহজ পথের সন্ধান দেন। ৩৯
828 ৬. আল-আন’আম তুমি তাদেরকে বলঃ তোমরা যদি নিজেদের আদর্শে সত্যবাদী হও তাহলে চিন্তা করে দেখ, যদি তোমাদের প্রতি আল্লাহর শাস্তি এসে পড়ে অথবা তোমাদের নিকট কিয়ামাত দিবস এসে উপস্থিত হয় তখনও কি তোমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেহকে ডাকবে? ৪০
829 ৬. আল-আন’আম বরং তাঁকেই তোমরা ডাকতে থাকবে। অতএব যে বিপদের জন্য তোমরা তাঁকে ডাকছো, ইচ্ছা করলে তিনি তা তোমাদের থেকে দূর করে দিবেন, আর যাদেরকে তোমরা অংশী করেছিলে তাদের কথা ভুলে যাবে। ৪১
830 ৬. আল-আন’আম আর অবশ্যই আমি তোমার পূর্বে বিভিন্ন কওমের কাছে রাসূল প্রেরণ করেছি। অতঃপর আমি তাদেরকে দারিদ্র্য ও দুঃখ দ্বারা পাকড়াও করেছি, যাতে তারা অনুনয় বিনয় করে। ৪২
831 ৬. আল-আন’আম সুতরাং তাদের প্রতি যখন আমার শাস্তি এসে পৌঁছল তখন তারা কেন নম্রতা ও বিনয় প্রকাশ করলনা? বরং তাদের অন্তর আরও কঠিন হয়ে পড়ল, আর শাইতান তাদের কাজকে তাদের চোখের সামনে সুশোভিত করে দেখাল। ৪৩
832 ৬. আল-আন’আম অতঃপর তাদেরকে যা কিছু উপদেশ ও নাসীহাত করা হয়েছিল তা যখন তারা ভুলে গেল তখন আমি সুখ শান্তির জন্য প্রতিটি বস্তুর দরজা উন্মুক্ত করে দিলাম। যখন তারা তাদেরকে দানকৃত বস্তু লাভ করে খুব আনন্দিত ও উল্লসিত হল তখন হঠাৎ একদিন আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম, আর তারা সেই অবস্থায় নিরাশ হয়ে পড়ল। ৪৪
833 ৬. আল-আন’আম অতঃপর অত্যাচারী সম্প্রদায়ের মূল শিকড় কেটে ফেলা হল, আর সমস্ত প্রশংসা বিশ্বের রাব্ব আল্লাহরই জন্য। ৪৫
834 ৬. আল-আন’আম তুমি জিজ্ঞেস করঃ আল্লাহ যদি তোমাদের শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেন এবং তোমাদের মনের কপাটে তালা লাগিয়ে মোহর এটে দেন তাহলে এই শক্তি তোমাদেরকে আবার দান করতে পারে এমন কোন সত্তা আল্লাহ ব্যতীত আছে কি? লক্ষ্য করতো! আমি আমার নিদর্শনসমূহ ও দলীল প্রমাণাদী কিভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বর্ণনা করছি। এর পরেও তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়! ৪৬
835 ৬. আল-আন’আম তুমি আরও জিজ্ঞেস করঃ আল্লাহর শাস্তি যদি হঠাৎ করে অথবা প্রকাশ্যে তোমাদের উপর এসে পড়ে তাহলে কি অত্যাচারীরা ছাড়া আর কেহ ধ্বংস হবে? ৪৭
836 ৬. আল-আন’আম আমি রাসূলদেরকে শুধু এ উদ্দেশে পাঠিয়ে থাকি যে, তারা (সৎ লোকদেরকে) সুসংবাদ দিবে এবং (অসৎ লোকদেরকে) ভয় দেখাবে। সুতরাং যারা ঈমান এনেছে ও চরিত্র সংশোধন করেছে তাদের জন্য কোন ভয়-ভীতি থাকবেনা এবং তারা চিন্তিতও হবেনা। ৪৮
837 ৬. আল-আন’আম আর যারা আমার আয়াত ও নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে তারা তাদের নিজেদের ফাসেকীর কারণে শাস্তি ভোগ করবে। ৪৯
838 ৬. আল-আন’আম তুমি বলঃ আমি তোমাদেরকে এ কথা বলিনা যে, আমার কাছে আল্লাহর ধন ভান্ডার রয়েছে, আর আমি অদৃশ্য জগতেরও কোন জ্ঞান রাখিনা, এবং আমি তোমাদেরকে এ কথাও বলিনা যে, আমি একজন মালাক/ফেরেশতা। আমার কাছে যা কিছু অহী রূপে পাঠানো হয়, আমি শুধুমাত্র তারই অনুসরণ করে থাকি। তুমি (তাদেরকে) জিজ্ঞেস করঃ অন্ধ ও চক্ষুস্মান কি সমান হতে পারে? সুতরাং তোমরা কেন চিন্তা ভাবনা করনা? ৫০
839 ৬. আল-আন’আম তুমি এর (কুরআন) সাহায্যে ঐ সব লোককে ভীতি প্রদর্শন কর যারা ভয় করে যে, তাদেরকে তাদের রবের কাছে এমন অবস্থায় সমবেত করা হবে যেখানে তিনি ছাড়া তাদের না কোন সাহায্যকারী থাকবে, আর না থাকবে কোন সুপারিশকারী, হয়ত তারা সাবধান হবে। ৫১
840 ৬. আল-আন’আম আর যে সব লোক সকাল সন্ধ্যায় তাদের রবের ইবাদাত করে এবং এর মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টিই কামনা করে, তাদেরকে তুমি দূরে সরিয়ে দিবেনা, তাদের হিসাব-নিকাশের কোন কিছুর দায়িত্ব তোমার উপর নয় এবং তোমার হিসাব-নিকাশের কোন কিছুর দায়িত্বও তাদের উপর নয়। এর পরও যদি তুমি তাদেরকে দূরে সরিয়ে দাও তাহলে তুমি যালিমদের মধ্যে শামিল হয়ে যাবে। ৫২
841 ৬. আল-আন’আম এভাবেই আমি কিছু লোককে কিছু লোক দ্বারা পরীক্ষায় নিপতিত করি। তারা বলতে থাকেঃ এরাই কি ঐ সব লোক, আমাদের মধ্য থেকে যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ ও মেহেরবাণী করেছেন? আল্লাহ কি কৃতজ্ঞদের সম্পর্কে অবগত নন? ৫৩
842 ৬. আল-আন’আম আমার আয়াতসমূহের উপর বিশ্বাস স্থাপনকারীরা যখন তোমার নিকট আসে তখন তাদেরকে বলঃ তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, তোমাদের রাব্ব নিজের উপর দয়া ও অনুগ্রহ করার নীতি বাধ্যতামূলক করে নিয়েছেন। তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অজ্ঞতা ও মূর্খতাবশতঃ কোন খারাপ কাজ করে, অতঃপর সে যদি তাওবাহ করে এবং নিজেকে সংশোধন করে তাহলে জানবে যে, তিনি হচ্ছেন ক্ষমাপরায়ণ, করুণাময়। ৫৪
843 ৬. আল-আন’আম এমনিভাবে আমি আমার আয়াত ও নিদর্শনসমূহ সবিস্তার বর্ণনা করে থাকি যেন, অপরাধী লোকদের পথটি সুস্পষ্ট হয়ে পড়ে। ৫৫
844 ৬. আল-আন’আম তুমি কাফিরদেরকে বলে দাওঃ তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে যার ইবাদাত কর, আমাকে তার ইবাদাত করতে নিষেধ করা হয়েছে। বলঃ আমি তোমাদের খেয়াল খুশির অনুসরণ করবনা, তাহলে আমি পথভ্রান্ত হয়ে যাব এবং আমি আর পথ প্রাপ্তদের মধ্যে শামিল থাকবনা। ৫৬
845 ৬. আল-আন’আম তুমি বলঃ আমি আমার রবের প্রদত্ত একটি সুস্পষ্ট উজ্জ্বল যুক্তি প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত, অথচ তোমরা সেই দলীলকে মিথ্যারোপ করছো। যে বিষয়টি তোমরা খুব তাড়াতাড়ি পেতে চাও তার এখতিয়ার আমার হাতে নেই। হুকুমের মালিক আল্লাহ ছাড়া আর কেহ নয়, তিনি সত্য ও বাস্তবানুগ কথা বর্ণনা করেন, তিনিই হচ্ছেন সর্বোত্তম ফাইসালাকারী। ৫৭
846 ৬. আল-আন’আম তুমি বলঃ তোমরা যে বস্তুটি তাড়াতাড়ি পেতে চাও তা যদি আমার এখতিয়ারভুক্ত থাকতো তাহলেতো আমার ও তোমাদের মধ্যে চূড়ান্ত ফাইসালা অনেক আগেই হয়ে যেত, যালিমদেরকে আল্লাহ খুব ভাল করেই জানেন। ৫৮
847 ৬. আল-আন’আম অদৃশ্য জগতের চাবিকাঠি তাঁরই নিকট রয়েছে; তিনি ছাড়া আর কেহই তা জ্ঞাত নয়। পৃথিবীতে ও সমুদ্রের সব কিছুই তিনি অবগত আছেন, তাঁর অবগতি ব্যতীত বৃক্ষ হতে একটি পাতাও ঝরে পড়েনা এবং ভূ-পৃষ্ঠের অন্ধকারের মধ্যে একটি দানাও পতিত হয়না, এমনিভাবে কোন সরস ও নিরস বস্তুও পতিত হয়না; সমস্ত কিছুই সুস্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। ৫৯
848 ৬. আল-আন’আম আর সেই মহান সত্তা রাতে নিদ্রারূপে তোমাদের এক প্রকার মৃত্যু ঘটিয়ে থাকেন, আর দিনের বেলা তোমরা যে পরিশ্রম কর তিনি সেটাও সম্যক পরিজ্ঞাত; অতঃপর তিনি নির্দিষ্ট সময়কাল পূরণের নিমিত্ত তোমাদেরকে নিদ্রা থেকে জাগিয়ে থাকেন, পরিশেষে তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে, তখন তিনি তোমাদেরকে তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অবহিত করবেন। ৬০
849 ৬. আল-আন’আম আর আল্লাহই স্বীয় বান্দাদের উপর প্রতাপশালী, তিনি তোমাদের উপর রক্ষণাবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠিয়ে থাকেন, এমনকি যখন তোমাদের কারও মৃত্যু সময় সমুপস্থিত হয় তখন আমার প্রেরিত দূতগণ তার প্রাণ হরণ করে নেয়, এ ব্যাপারে তারা বিন্দুমাত্র ক্রটি করেনা। ৬১
850 ৬. আল-আন’আম তারপর সকলকে তাদের সত্যিকার অভিভাবক আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত করানো হয়। তোমরা জেনে রেখ যে, ঐ দিন একমাত্র আল্লাহই রায় প্রদানকারী হবেন, আর তিনি খুবই ত্বরিৎ হিসাব গ্রহণকারী। ৬২
851 ৬. আল-আন’আম তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করঃ স্থলভাগ ও পানিস্থিত অন্ধকার (বিপদ) থেকে তোমাদেরকে কে পরিত্রাণ দিয়ে থাকেন, যখন কাতর কন্ঠে বিনীতভাবে এবং চুপে চুপে তাঁর কাছে প্রার্থনা করে থাক, আর বলতে থাকঃ তিনি যদি আমাদেরকে এই বিপদ থেকে মুক্তি দেন তাহলে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হব। ৬৩
852 ৬. আল-আন’আম তুমি বলে দাওঃ আল্লাহই তোমাদেরকে ঐ বিপদ এবং অন্যান্য প্রতিটি বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করেন, কিন্তু এরপরও তোমরা শিরক কর। ৬৪
853 ৬. আল-আন’আম তুমি বলে দাওঃ আল্লাহ তোমাদের ঊর্ধ্বলোক হতে এবং তোমাদের পায়ের তলদেশ হতে শাস্তি প্রেরণ করতে যথেষ্ট ক্ষমতাবান, অথবা তোমাদেরকে দলে দলে বিচ্ছিন্ন করে এক দলের দ্বারা অপর দলের শক্তির স্বাদ গ্রহণ করাবেন; লক্ষ্য কর! আমি বার বার বিভিন্ন উপায়ে আমার নিদর্শন ও যুক্তি প্রমাণ বর্ণনা করছি - উদ্দেশ্য হল, যেন বিষয়টিকে তারা পূর্ণ রূপে জ্ঞানায়ত্ব ও হৃদয়ঙ্গম করে নিতে পারে। ৬৫
854 ৬. আল-আন’আম তোমার সম্প্রদায়ের লোকেরা ওকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করছে, অথচ ওটা প্রমানিত সত্য। তুমি বলে দাওঃ আমি তোমাদের উকিল হয়ে আসিনি। ৬৬
855 ৬. আল-আন’আম প্রত্যেকটি সংবাদ প্রকাশের একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে এবং অচিরেই তোমরা তা জানতে পারবে। ৬৭
856 ৬. আল-আন’আম যখন তুমি দেখবে যে, লোকেরা আমার আয়াতসমূহে দোষ-ক্রটি অনুসন্ধান করছে তখন তুমি তাদের নিকট হতে দূরে সরে যাবে, যতক্ষণ না তারা অন্য কোন প্রসঙ্গে নিমগ্ন হয়। শাইতান যদি তোমাকে এটা বিস্মৃত করে তাহলে স্মরণ হওয়ার পর আর ঐ যালিম লোকদের সাথে তুমি বসবেনা। ৬৮
857 ৬. আল-আন’আম ওদের যখন বিচার হবে তখন মুত্তাকীদের উপর এর কোন প্রভাব পরবেনা, কিন্তু ওদেরকে উপদেশ প্রদানের জন্য তাদের উপর দায়িত্ব রয়েছে, হয়তো বা উপদেশের ফলে ওরা পাপাচার হতে বেঁচে থাকতে পারবে। ৬৯
858 ৬. আল-আন’আম যারা নিজেদের দীনকে খেল-তামাশার বস্তুতে পরিণত করেছে তুমি তাদেরকে বর্জন করে চলবে, পার্থিব জীবন যাদেরকে সম্মোহিত করে ধোঁকায় নিপতিত করেছে, কুরআন দ্বারা তাদেরকে উপদেশ দিতে থাক, যাতে কোন ব্যক্তি স্বীয় কাজ দোষে ধ্বংস হয়ে না যায়। আল্লাহ ছাড়া তার কোন বন্ধু, সাহায্যকারী ও সুপারিশকারী থাকবে না, আর যেন এই অবস্থার সম্মুখীন না হয় যে, দুনিয়ার সমস্ত কিছুর বিনিময় দিয়েও মুক্তি পেতে চাইলে সেই বিনিময় গ্রহণ করা হবেনা। তারা এমনই লোক যারা নিজেদের কর্মদোষে আটকা পড়ে গেছে; তাদের কুফরী করার কারণে তাদের জন্য ফুটন্ত গরম পানীয় এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। ৭০
859 ৬. আল-আন’আম তুমি বলে দাওঃ আমরা কি আল্লাহ ছাড়া এমন কিছুর ইবাদাত করব, যারা আমাদের কোন উপকার করতে পারবেনা এবং আমাদের কোন ক্ষতিও করতে পারবেনা? অধিকন্তু আমাদেরকে সুপথ প্রদর্শনের পর আমরা কি উল্টা পথে ফিরে যাব? আমরা কি ঐ ব্যক্তির ন্যায় হব যাকে শাইতান মরুভূমির মধ্যে বিভ্রান্ত করে ফেলেছে এবং যে দিশেহারা-লক্ষ্যহারা হয়ে ঘুরে মরছে? তার সহচরেরা তাকে হিদায়াতের দিকে ডেকে বলছে - তুমি আমাদের সঙ্গে এসো। তুমি বলঃ আল্লাহর হিদায়াতই হচ্ছে সত্যিকারের সঠিক হিদায়াত, আর আমাকে সারা জাহানের রবের সামনে মাথা নত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ৭১
860 ৬. আল-আন’আম আর তুমি নিয়মিতভাবে সালাত কায়েম কর এবং সেই রাব্বকে ভয় করে চল যাঁর নিকট তোমাদের সকলকে সমবেত করা হবে। ৭২ নামাজ
861 ৬. আল-আন’আম সেই সত্তা আকাশমন্ডল ও ভূ-মন্ডলকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন। যেদিন তিনি বলবেনঃ ‘হাশর হও‘ সেদিন হাশর হয়ে যাবে। তাঁর কথা খুবই যথার্থ বাস্তবানুগ। যেদিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে সেদিন একমাত্র তাঁরই হবে বাদশাহী ও রাজত্ব। গোপন ও প্রকাশ্য সব কিছু তাঁর জ্ঞানায়ত্বে। তিনি হচ্ছেন প্রজ্ঞাময়, সর্ববিদিত। ৭৩
862 ৬. আল-আন’আম স্মরণ কর, যখন ইবরাহীম তার পিতা আযারকে বললঃ আপনি মূর্তিগুলোকে মা‘বূদ মনোনীত করেছেন? নিঃসন্দেহে আমি আপনাকে ও আপনার সম্প্রদায়কে প্রকাশ্য ভ্রান্তির মধ্যে নিপতিত দেখছি। ৭৪
863 ৬. আল-আন’আম এমনিভাবেই আমি ইবরাহীমকে আসমান ও যমীনের সৃষ্টি অবলোকন করিয়েছি, যাতে সে বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। ৭৫
864 ৬. আল-আন’আম যখন রাতের অন্ধকার তাকে আবৃত করল তখন সে আকাশের একটি নক্ষত্র দেখতে পেল, আর বললঃ এটাই আমার রাব্ব! কিন্তু যখন ওটা অস্তমিত হল তখন সে বললঃ আমি অস্তমিত বস্তুকে ভালবাসিনা। ৭৬
865 ৬. আল-আন’আম আর যখন সে আকাশে চাঁদকে উজ্জ্বল আভায় দেখতে পেল তখন বললঃ এটাই আমার রাব্ব! কিন্তু ওটাও যখন অস্তমিত হল তখন বললঃ আমার রাব্ব যদি আমাকে পথ প্রদর্শন না করেন তাহলে আমি পথভ্রষ্ট সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব। ৭৭
866 ৬. আল-আন’আম অতঃপর যখন সে সূর্যকে উদ্ভাসিত দেখতে পেল তখন সে বললঃ এটিই আমার রাব্ব! এটি বৃহত্তর। অতঃপর যখন ওটা ডুবে গেল তখন বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমাদের শিরকের সাথে আমার আদৌ কোন সম্পর্ক নেই, আমি মুক্ত। ৭৮
867 ৬. আল-আন’আম আমার মুখমন্ডলকে আমি একনিষ্ঠভাবে সেই মহান সত্তার দিকে ফিরাচ্ছি যিনি নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছেন, আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই। ৭৯
868 ৬. আল-আন’আম আর তার জাতির লোকেরা তার সাথে ঝগড়া করতে থাকলে সে তাদেরকে বললঃ তোমরা কি আল্লাহর ব্যাপারে আমার সাথে ঝগড়া করছো? অথচ তিনি আমাকে সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছেন! তোমরা আল্লাহর সাথে যা কিছু শরীক করছো আমি ওদের ভয় করিনা, তবে যদি আমার রাব্ব কিছু চান। প্রতিটি বস্তু সম্পর্কে আমার রবের জ্ঞান খুবই ব্যাপক, এর পরেও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবেনা? ৮০
869 ৬. আল-আন’আম তোমাদের মনগড়া ও বানানো শরীকদেরকে আমি কিরূপে ভয় করতে পারি? অথচ তোমরা এই ভয় করছনা যে, আল্লাহর সাথে যাদেরকে তোমরা শরীক করছ তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তোমাদের কাছে কোন দলীল প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি, আমাদের দুই দলের মধ্যে কারা অধিকতর শান্তি ও নিরাপত্তা লাভের অধিকারী যদি তোমাদের জানা থাকে তাহলে বলত? ৮১
870 ৬. আল-আন’আম প্রকৃত পক্ষে তারাই শান্তি ও নিরাপত্তার অধিকারী এবং তারাই সঠিক পথে পরিচালিত, যারা নিজেদের ঈমানকে যুলমের সাথে (শির্‌কের সাথে) মিশ্রিত করেনি। ৮২
871 ৬. আল-আন’আম আর এটাই ছিল আমার যুক্তি প্রমাণ, যা আমি ইবরাহীমকে তার স্বজাতির মুকাবিলায় দান করেছিলাম। আমি যাকে ইচ্ছা করি, সম্মান-মর্তবা ও মহত্ত্ব বাড়িয়ে দেই, নিঃসন্দেহে তোমার রাব্ব প্রজ্ঞাময় ও বিজ্ঞ। ৮৩
872 ৬. আল-আন’আম আমি তাকে ইসহাক ও ইয়াকূবকে দান করেছি এবং উভয়কেই সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছি, আর তার পূর্বে নূহকেও সঠিক পথের হিদায়াত দিয়েছি; আর তার (ইবরাহীমের) বংশের মধ্যে দাঊদ, সুলাইমান, আইউব, ইউসুফ, মূসা ও হারূনকে এমনিভাবেই সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছি। এমনিভাবেই আমি সৎ ও পুণ্যশীল লোকদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি। ৮৪
873 ৬. আল-আন’আম আর যাকারিয়া, ইয়াহইয়া, ঈসা ও ইলিয়াস - তারা প্রত্যেকেই সৎ লোকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ৮৫
874 ৬. আল-আন’আম আর ইসমাঈল, ঈসা, ইউনুস ও লূত - এদের প্রত্যেককেই আমি নবুওয়াত দান করে সমগ্র বিশ্বের উপর মহত্ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি। ৮৬
875 ৬. আল-আন’আম আর এদের বাপ-দাদা, সন্তান, সন্ততি ও ভাইদের মধ্যে অনেককে আমি মনোনীত করে সঠিক ও সোজা পথে পরিচালিত করেছি। ৮৭
876 ৬. আল-আন’আম এটাই আল্লাহর হিদায়াত; তিনি তাঁর বান্দার মধ্যে যাকে চান এই পথে পরিচালিত করেন। কিন্তু তারা যদি শির্‌ক করত তাহলে তারা যা কিছুই করত, সবই ব্যর্থ হয়ে যেত। ৮৮
877 ৬. আল-আন’আম এরা ছিল সেই লোক, যাদেরকে আমি কিতাব, শাসনভার ও নবুওয়াত দান করেছি। সুতরাং যদি এরা তোমার নবুওয়াতকে অস্বীকার করে তাহলে তাদের স্থলে আমি এমন এক জাতিকে নিয়োগ করব, যারা ওটা অস্বীকার করেনা। ৮৯
878 ৬. আল-আন’আম এরা হচ্ছে ওরাই, যাদেরকে আল্লাহ সুপথ প্রদর্শন করেছিলেন। সুতরাং তুমি তাদের পথ অনুসরণ করে চল। তুমি বলে দাওঃ আমি কুরআন ও দীনের তাবলীগের বিনিময়ে তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাইনা। এই কুরআন সমগ্র জগতবাসীর জন্য উপদেশের ভান্ডার ছাড়া কিছুই নয়। ৯০
879 ৬. আল-আন’আম এই লোকেরা আল্লাহর যথাযথ মর্যাদা উপলব্ধি করেনি। কেননা তারা বললঃ আল্লাহ কোন মানুষের উপর কোন কিছু অবতীর্ণ করেননি; তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করঃ মানুষের হিদায়াত ও আলোকবর্তিকা রূপে যে কিতাব মূসা এনেছিল তা কে অবতীর্ণ করেছেন? তোমরা সেই কিতাব খন্ড খন্ড করে বিভিন্ন পত্রে রেখেছ, ওর কিয়দংশ তোমরা প্রকাশ করছ এবং বহুলাংশ গোপন করছ। (ঐ কিতাব দ্বারা) তোমাদেরকে বহু বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে, যা তোমরা ও তোমাদের পূর্ব-পুরুষরা জানতেনা; তুমি বলে দাওঃ তা আল্লাহই অবতীর্ণ করেছেন। সুতরাং তুমি তাদেরকে তাদের বাতিল ধারণার উপর ছেড়ে দাও, তারা খেলা করতে থাকুক। ৯১
880 ৬. আল-আন’আম আর এই কিতাবও (কুরআন) আমিই অবতীর্ণ করেছি; যা খুবই বারাকাতময় কিতাব এবং পূর্বের সকল কিতাবকে সত্যায়িত করে থাকে, যেন তুমি কেন্দ্রীয় মাক্কা নগরী এবং ওর চতুস্পার্শ্বস্থ জনপদের লোকদেরকে ওর দ্বারা ভীতি প্রদর্শন কর। যারা পরকালে বিশ্বাস রাখে তারা এই কিতাবকেও বিশ্বাস করবে এবং ওর প্রতি ঈমান আনবে, আর তারা নিয়মিতভাবে সালাতও আদায় করে থাকে। ৯২ নামাজ
881 ৬. আল-আন’আম আর ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক অত্যাচারী কে হতে পারে যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছে? অথবা এরূপ বলেঃ আমার উপর অহী নাযিল করা হয়েছে, অথচ তার উপর প্রকৃত পক্ষে কোন অহী নাযিল করা হয়নি এবং যে ব্যক্তি এও বলেঃ যেরূপ কালাম আল্লাহ নাযিল করেছেন, তদ্রুপ আমিও আনয়ন করছি। আর তুমি যদি দেখতে পেতে (ঐ সময়ের অবস্থা) যে সময় যালিমরা হবে মৃত্যু সংকটে (পরিবেষ্টিত); আর মালাইকা/ফেরেশতারা হাত বাড়িয়ে বলবেঃ নিজেদের প্রাণগুলি বের কর, আজ তোমাদেরকে সেই সব অপরাধের শাস্তি হিসাবে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি দেয়া হবে যা তোমরা আল্লাহর উপর মিথ্যা দোষারোপ করে অকারণ প্রলাপ বকেছিলে এবং তাঁর আয়াতসমূহ কবূল করা হতে অহংকার করেছিলে। ৯৩
882 ৬. আল-আন’আম আর তোমরা আমার কাছে নিঃসঙ্গ এসেছ, যেভাবে প্রথমবার আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিলাম, আর যা কিছু আমি তোমাদেরকে দিয়েছিলাম তা তোমরা নিজেদের পশ্চাতেই ছেড়ে এসেছ, আর আমিতো তোমাদের সাথে তোমাদের সেই সুপারিশকারীদেরকে দেখছিনা যাদের সম্বন্ধে তোমরা দাবী করতে যে, তারা তোমাদের কাজকর্মে (আমার) শরীক; বাস্তবিকই তোমাদের পরস্পরের সম্পর্কতো বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, আর তোমরা যা কিছু ধারণা করতে তা সবই আজ তোমাদের নিকট থেকে উধাও হয়ে গেছে। ৯৪
883 ৬. আল-আন’আম নিশ্চয়ই দানা ও বীজ দানকারী হচ্ছেন আল্লাহ। তিনিই জীবন্তকে প্রাণহীন থেকে বের করেন এবং তিনিই প্রাণহীনকে জীবন্ত হতে নিগর্তকারী; তিনিইতো আল্লাহ, তাহলে তোমরা কোথায় যাচ্ছো? ৯৫
884 ৬. আল-আন’আম তিনিই রাতের আবরণ বিদীর্ণ করে রঙ্গিন প্রভাতের উন্মেষকারী, তিনিই রাতকে বিশ্রামকাল এবং সূর্য ও চাঁদকে সময়ের নিরূপক করে দিয়েছেন; এটা হচ্ছে সেই পরম পরাক্রান্ত ও সর্ব পরিজ্ঞাতার (আল্লাহর) নির্ধারণ। ৯৬
885 ৬. আল-আন’আম আর তিনিই তোমাদের জন্য নক্ষত্ররাজিকে সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা ওগুলির সাহায্যে অন্ধকারে পথের সন্ধান পেতে পার স্থল ভাগে এবং সমুদ্রে। নিশ্চয়ই আমি প্রমাণসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করে দিয়েছি ঐ সমস্ত লোকের জন্য যারা জ্ঞান রাখে। ৯৭
886 ৬. আল-আন’আম তিনিই তোমাদেরকে এক ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর (প্রত্যেকের জন্য) একটি স্থান অধিক দিন থাকার জন্য এবং একটি স্থান অল্প দিন থাকার জন্য রয়েছে, এই নিদর্শনসমূহ আমি তাদের জন্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করলাম যাদের বুদ্ধি বিবেচনা আছে। ৯৮
887 ৬. আল-আন’আম আর তিনি আকাশ হতে পানি বর্ষণ করেন, ওর সাহায্যে সব রকমের উদ্ভিদ আমি (আল্লাহ) উৎপন্ন করি; অতঃপর তা থেকে সবুজ শাখা বের করি, ফলতঃ তা থেকে আমি উপর্যুপরি উত্থিত বীজ উৎপন্ন করি। এবং খেজুর বৃক্ষ থেকে অর্থাৎ ওর পুস্পকণিকা থেকে ছড়া হয় যা নিম্ন দিকে ঝুঁকে পড়ে, আর আঙ্গুরসমূহের উদ্যান এবং যাইতূন ও আনার যা পরস্পর সাদৃশ্যযুক্ত। প্রত্যেক ফলের প্রতি লক্ষ্য কর যখন ওটা ফলে এবং ওর পরিপক্ক হওয়ার প্রতি লক্ষ্য কর। এই সমুদয়ের মধ্যে নিদর্শনসমূহ রয়েছে তাদেরই জন্য যারা ঈমান রাখে। ৯৯
888 ৬. আল-আন’আম আর এই (অজ্ঞ) লোকেরা জিনদেরকে আল্লাহর শরীক বানিয়ে নিয়েছে, অথচ আল্লাহই ঐগুলিকে সৃষ্টি করেছেন, আর না জেনে না বুঝে তারা তাঁর জন্য পুত্র কন্যা রচনা করে; তিনি মহিমান্বিত (পবিত্র), এদের আরোপিত বিশেষণগুলি হতে বহু উর্ধ্বে তিনি। ১০০
889 ৬. আল-আন’আম তিনি আসমান ও যমীনের স্রষ্টা; তাঁর সন্তান হবে কি করে? অথচ তাঁর জীবন সঙ্গিনীই কেহ নেই। তিনিই প্রত্যেকটি জিনিস সৃষ্টি করেছেন, প্রত্যেকটি জিনিস সম্পর্কে তাঁর ভাল রুপে জ্ঞান রয়েছে। ১০১
890 ৬. আল-আন’আম তিনি আল্লাহ, তোমাদের প্রতিপালক। তিনি ছাড়া অন্য কেহই মা‘বূদ নেই, প্রত্যেক বস্তুরই স্রষ্টা তিনি, অতএব তোমরা তাঁরই ইবাদাত কর, তিনিই সব জিনিসের উপর দায়িত্বশীল। ১০২
891 ৬. আল-আন’আম কোন মানব-দৃষ্টি তাঁকে দেখতে পারেনা, অথচ তিনি সকল কিছুই দেখতে পান এবং তিনি অতীব সূক্ষ্মদর্শী এবং সর্ব বিষয়ে ওয়াকিফহাল। ১০৩
892 ৬. আল-আন’আম এখন নিশ্চয়ই তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ হতে সত্য দর্শনের উপায়সমূহ পৌঁছেছে, অতএব যে ব্যক্তি নিজের গভীর দৃষ্টিতে অবলোকন করবে সে নিজেরই কল্যাণ সাধন করবে, আর যে অন্ধ থাকবে সে নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আর আমিতো তোমাদের প্রহরী নই। ১০৪
893 ৬. আল-আন’আম এ রূপেই আমি নিদর্শনসমূহ প্রকাশ করি, যেন লোকেরা না বলে - তুমি কারও নিকট থেকে পাঠ করে নিয়েছ, আর যেন আমি একে বুদ্ধিমান লোকদের জন্য প্রকাশ করে দিই। ১০৫
894 ৬. আল-আন’আম তোমার প্রতি তোমার রবের পক্ষ থেকে যে অহী নাযিল হয়েছে, তুমি তারই অনুসরণ করে চল, তিনি ছাড়া অন্য কেহই মা‘বূদ নেই, আর অংশীবাদীদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও। ১০৬
895 ৬. আল-আন’আম আর আল্লাহর যদি অভিপ্রায় হত তাহলে এরা শির্‌ক করতনা; আর আমি তোমাকে এদের রক্ষক নিযুক্ত করিনি এবং তুমি তাদের উপর ক্ষমতাপ্রাপ্ত নও। ১০৭
896 ৬. আল-আন’আম এরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের ইবাদাত (পূজা-অর্চনা) করে তোমরা তাদেরকে গালাগালি করনা, তাহলে তারা অজ্ঞতা বশতঃ বৈরীভাবে আল্লাহকেই গালাগালি দিতে শুরু করবে। আমিতো এ রূপেই প্রতিটি জনগোষ্ঠীর জন্য তাদের ‘আমলকে চাকচিক্যময় করে দিয়েছি। শেষ পর্যন্ত তাদেরকে তাদের রবের কাছে ফিরে যেতে হবে, তখন তারা কি কি কাজ করেছিল তা তিনি তাদেরকে জানিয়ে দিবেন। ১০৮
897 ৬. আল-আন’আম আর কঠিন অঙ্গীকার সহকারে আল্লাহর নামে কসম করে তারা বলেঃ কোন নিদর্শন (মু’জিযা) তাদের কাছে এলে তারা ঈমান আনবে; তুমি বলে দাওঃ নিদর্শনগুলি সমস্তই আল্লাহর অধিকারে, আর (হে মুসলিমরা!) কি করে তোমাদেরকে বুঝানো যাবে যে, নিদর্শন এলেও তারা ঈমান আনবেনা! ১০৯
898 ৬. আল-আন’আম আর যেহেতু তারা প্রথমবার ঈমান আনেনি, এর ফলে তাদের মনোভাবের ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করে দিব এবং তাদেরকে তাদের অবাধ্যতার মধ্যেই বিভ্রান্তের ন্যায় ঘুরে বেড়াতে ছেড়ে দিব। ১১০
899 ৬. আল-আন’আম আমি যদি তাদের কাছে মালাক অবতীর্ণ করতাম, আর মৃতরাও যদি তাদের সাথে কথা বলত এবং দুনিয়ার সমস্তই যদি আমি তাদের চোখের সামনে সমবেত করতাম, তবুও তারা ঈমান আনতনা আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত। কিন্তু তাদের অধিকাংশই মূর্খ। ১১১
900 ৬. আল-আন’আম আর এমনিভাবেই আমি প্রত্যেক নাবীর জন্য বহু শাইতানকে শত্রুরূপে সৃষ্টি করেছি; তাদের কতক মানুষ শাইতানের মধ্য হতে এবং কতক জিন শাইতানের মধ্য হতে হয়ে থাকে, এরা একে অন্যকে কতকগুলি মনোমুগ্ধকর ধোকাপূর্ণ ও প্রতারণাময় কথা দ্বারা প্ররোচিত করে থাকে। তোমার রবের ইচ্ছা হলে, তারা এমন কাজ করতে পারতনা। সুতরাং তুমি তাদেরকে এবং তাদের মিথ্যা রচনাগুলিকে বর্জন করে চলবে। ১১২
901 ৬. আল-আন’আম যারা পরকালের প্রতি ঈমান রাখেনা তাদের অন্তরকে ঐ দিকে অনুরক্ত হতে দাও; এবং তারা যেন তাতে সন্তুষ্ট থাকে, আর তারা যেসব কাজ করে তা যেন তারা আরও করতে থাকে। ১১৩
902 ৬. আল-আন’আম (তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর) তাহলে কি আমি আল্লাহকে বর্জন করে অন্য কেহকে মীমাংসাকারী ও বিচারক রূপে অনুসন্ধান করব? অথচ তিনিই তোমাদের কাছে এই কিতাবকে বিস্তারিতভাবে অবতীর্ণ করেছেন! আমি যাদেরকে কিতাব দান করেছি তারা জানে যে, এই কিতাব তোমার রবের পক্ষ হতেই যথার্থ ও সঠিকভাবে অবতীর্ণ করা হয়েছে, সুতরাং তুমি সন্দেহ পোষণকারীদের মধ্যে শামিল হয়োনা। ১১৪
903 ৬. আল-আন’আম তোমার রবের বাণী সত্যতা ও ইনসাফের দিক দিয়ে পরিপূর্ণ, তাঁর বাণী পরিবর্তনকারী কেহই নেই, তিনি সবকিছু শোনেন ও সবকিছু জানেন। ১১৫
904 ৬. আল-আন’আম তুমি যদি দুনিয়াবাসী অধিকাংশ লোকের কথামত চল তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যূত করে ফেলবে, তারাতো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে, আর তারা শুধু অনুমানভিত্তিক কথা বলে। ১১৬
905 ৬. আল-আন’আম কোন্ ব্যক্তি আল্লাহর পথ হতে বিভ্রান্ত হয়েছে তা তোমার রাব্ব নিশ্চিতভাবে অবগত আছেন, আর তিনি তাঁর পথের পথিকগণ সম্পর্কেও খুব ভালভাবে জ্ঞাত রয়েছেন। ১১৭
906 ৬. আল-আন’আম অতএব যে জীবকে আল্লাহর নাম নিয়ে যবাহ করা হয়েছে তা তোমরা আহার কর, যদি তোমরা আল্লাহর বিধানের প্রতি ঈমান রাখ। ১১৮
907 ৬. আল-আন’আম যে জন্তুর উপর যবাহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়েছে, তা আহার না করার তোমাদের কাছে কি কারণ থাকতে পারে? অথচ আল্লাহ তোমাদের উপর যা কিছু হারাম করেছেন তা তিনি সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন, তবে নিরূপায় অবস্থায় তোমরা উক্ত হারাম বস্তুও আহার করতে পার, নিঃসন্দেহে কোন দীনী জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও নিজেদের ইচ্ছা, বাসনা ও ভ্রান্ত ধারণার ভিত্তিতে অনেকে বহু লোককে পথভ্রষ্ট করেছে, নিশ্চয়ই তোমার রাব্ব সীমা লংঘনকারীদের সম্পর্কে ভালভাবেই ওয়াকিফহাল। ১১৯
908 ৬. আল-আন’আম তোমরা প্রকাশ্য পাপ কাজ পরিত্যাগ কর এবং পরিত্যাগ কর গোপনীয় পাপ কাজও। যারা পাপ কাজ করে তাদেরকে অতি সত্ত্বরই তাদের মন্দ কাজের প্রতিফল দেয়া হবে। ১২০
909 ৬. আল-আন’আম আর যে জন্তু যবাহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়না তা তোমরা আহার করনা। কেননা এটা গর্হিত বস্তু, শাইতানরা নিজেদের সঙ্গী সাথীদের মনে নানা প্রকার সন্দেহ ও প্রশ্ন সৃষ্টি করে, যেন তারা তোমাদের সাথে ঝগড়া ও বিতর্ক করতে পারে। যদি তোমরা তাদের ‘আকীদাহ্ বিশ্বাস ও কাজ কর্মে আনুগত্য কর তাহলে নিঃসন্দেহে তোমরা মুশরিক হয়ে যাবে। ১২১
910 ৬. আল-আন’আম এমন ব্যক্তি-যে ছিল প্রাণহীন, অতঃপর তাকে আমি জীবন দান করি এবং তার জন্য আমি এমন আলোকের ব্যবস্থা করে দিই, যার সাহায্যে সে জনগণের মধ্যে চলাফিরা করতে থাকে, সে কি এমন কোন লোকের মত হতে পারে যে ডুবে আছে অন্ধকারে এবং তা হতে বের হওয়ার পথ পাচ্ছেনা? এ রূপেই কাফিরদের জন্য তাদের কার্যকলাপ মনোমুগ্ধকর করে দেয়া হয়েছে। ১২২
911 ৬. আল-আন’আম আর এমনিভাবেই আমি প্রত্যেক জনপদে অপরাধীদের জন্য কিছু সর্দার নিয়োগ করেছি যেন তারা সেখানে চক্রান্ত করে। তাদের সে চক্রান্ত নিজেদের বিরুদ্ধেই। কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করতে পারেনা। ১২৩
912 ৬. আল-আন’আম তাদের সামনে যখন কোন নিদর্শন আসে তখন তারা বলেঃ আল্লাহর রাসূলদেরকে যা কিছু দেয়া হয়েছিল, আমাদের অনুরূপ জিনিস না দেয়া পর্যন্ত আমরা ঈমান আনবনা। রিসালাতের দায়িত্ব কার উপর অর্পণ করতে হবে তা আল্লাহ ভালভাবেই জানেন। এই অপরাধী লোকেরা অতি সত্ত্বরই তাদের ষড়যন্ত্র ও প্রতারণার জন্য আল্লাহর নিকট লাঞ্ছনা ও কঠিন শাস্তি প্রাপ্ত হবে। ১২৪
913 ৬. আল-আন’আম অতএব আল্লাহ যাকে হিদায়াত করতে চান, ইসলামের জন্য তার অন্তঃকরণ উন্মুক্ত করে দেন, আর যাকে পথভ্রষ্ট করার ইচ্ছা করেন, তিনি তার অন্তঃকরণ সংকুচিত করে দেন - খুবই সংকুচিত করে দেন, এমনভাবে সংকুচিত করেন যেন মনে হয় সে আকাশে আরোহণ করছে। এমনিভাবেই যারা ঈমান আনেনা তাদেরকে আল্লাহ কলুষময় করে থাকেন। ১২৫
914 ৬. আল-আন’আম আর এটাই হচ্ছে তোমার রবের সহজ সরল পথ, আমি উপদেশ গ্রহণকারী লোকদের জন্য আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করে দিয়েছি। ১২৬
915 ৬. আল-আন’আম তাদের জন্য তাদের রবের নিকট রয়েছে এক শান্তির আবাস তাদের কৃতকর্মের কারণে, তিনিই হচ্ছেন তাদের অভিভাবক। ১২৭
916 ৬. আল-আন’আম আর যেদিন আল্লাহ তাদের সকলকে একত্রিত করবেন, সেদিন তিনি বলবেনঃ হে জিন সম্প্রদায়! তোমরা মানুষের মধ্যে অনেককে বিভ্রান্ত করে অনুগামী করেছ, আর ওদের মধ্যে যাদের মানুষের সাথে বন্ধুৃত্বের সম্পর্ক ছিল তারা স্বীকারোক্তিতে বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমরা একে অপরের দ্বারা উপকৃত হয়েছি। হায়! আপনি আমাদের জন্য যে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করেছেন তা এসে গেছে! তখন (কিয়ামাত দিবসে) আল্লাহ (সমস্ত কাফির জিন ও মানুষকে) বলবেনঃ জাহান্নামই হচ্ছে তোমাদের বাসস্থান, তাতে তোমরা চিরস্থায়ীভাবে থাকবে, তবে আল্লাহ যাদেরকে চাইবেন (তারাই তা থেকে মুক্তি পেতে পারে) তোমাদের রাব্ব অতিশয় সম্মানিত এবং অত্যন্ত জ্ঞানবান। ১২৮
917 ৬. আল-আন’আম এমনিভাবেই আমি যালিমদেরকে (কাফিরদেরকে) তাদের কৃতকর্মের ফলে পরস্পরকে পরস্পরের উপর প্রভাবশালী ও কর্তৃত্বশালী বানিয়ে দিব। ১২৯
918 ৬. আল-আন’আম (কিয়ামাত দিবসে আল্লাহ জিজ্ঞেস করবেন) হে জিন ও মানব জাতি! তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্য হতেই নাবী রাসূল আসেনি যারা তোমাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ বর্ণনা করত এবং আজকের এ দিনের ব্যাপারে তোমাদের সাক্ষাত হওয়ার ভীতি প্রদর্শন করেনি? তারা জবাব দিবেঃ হ্যাঁ, আমরাই আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছি (অর্থাৎ আমরা অপরাধ করেছি), পার্থিব জীবনই তাদেরকে ধোঁকায় নিপতিত করেছিল। আর তারাই নিজেদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে যে, তারা কাফির ছিল। ১৩০
919 ৬. আল-আন’আম এই রাসূল প্রেরণ এ জন্য যে, তোমার রাব্ব কোন জনপদকে উহার অধিবাসীরা সত্য সম্পর্কে অজ্ঞাত থাকা অবস্থায় অন্যায়ভাবে ধ্বংস করেন না। ১৩১
920 ৬. আল-আন’আম আর প্রত্যেক লোকই নিজ নিজ ‘আমলের কারণে মর্যাদা লাভ করবে, তারা কি ‘আমল করত সে বিষয়ে তোমার রাব্ব উদাসীন নন। ১৩২
921 ৬. আল-আন’আম তোমার রাব্ব অমুখাপেক্ষী ও দয়াশীল, তাঁর ইচ্ছা হলে তোমাদেরকে অপসারিত করবেন এবং তোমাদের পরে তোমাদের স্থানে যাকে ইচ্ছা স্থলাভিষিক্ত করবেন, যেমন তিনি তোমাদেরকে অন্য এক জাতির বংশধর হতে সৃষ্টি করেছেন। ১৩৩
922 ৬. আল-আন’আম তোমাদের নিকট যে বিষয় সম্পর্কে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা অবশ্যম্ভাবী, তোমরা আল্লাহকে অক্ষম ও দুর্বল করতে পারবেনা। ১৩৪
923 ৬. আল-আন’আম তুমি বলে দাওঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা নিজ নিজ অবস্থায় ‘আমল করতে থাক, আমিও ‘আমল করছি, অতঃপর শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে যে, কার পরিণাম কল্যাণকর। নিঃসন্দেহে অত্যাচারীরা কখনও মুক্তি ও সাফল্য লাভ করতে পারবেনা। ১৩৫
924 ৬. আল-আন’আম আর আল্লাহ যে সব শস্য ও পশু সৃষ্টি করেছেন, তারা (মুশরিকরা) ওর একটি অংশ আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করে থাকে। অতঃপর নিজেদের ধারণা মতে তারা বলে যে, এই অংশ আল্লাহর জন্য এবং এই অংশ আমাদের শরীকদের জন্য। কিন্তু যা তাদের শরীকদের জন্য নির্ধারিত হয়ে থাকে, তাতো আল্লাহর দিকে পৌঁছেনা, পক্ষান্তরে যা আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল তা তাদের শরীকদের কাছে পৌঁছে থাকে। এই লোকদের ফাইসালা ও বন্টন নীতি কতই না নিকৃষ্ট! ১৩৬
925 ৬. আল-আন’আম আর এমনিভাবে অনেক মুশরিকের দৃষ্টিতে তাদের উপাস্যরা তাদের সন্তান হত্যা করাকে শোভণীয় করে দিয়েছে, যেন তারা তাদের সর্বনাশ করতে পারে এবং তাদের কাছে তাদের ধর্মকে বিভ্রান্ত করে দিতে পারে। আল্লাহ চাইলে তারা এসব কাজ করতে পারতনা। সুতরাং তুমি তাদেরকে এবং তাদের ভ্রান্ত উক্তিগুলিকে ছেড়ে দাও। ১৩৭
926 ৬. আল-আন’আম আর তারা বলে থাকেঃ এই সব নির্দিষ্ট পশু ও ক্ষেতের ফসল সুরক্ষিত, কেহই তা আহার করতে পারবেনা, তবে যাদেরকে আমরা অনুমতি দিব (তারাই আহার করতে পারবে), আর (তারা বলে) এই বিশেষ পশুগুলির উপর আরোহণ করা ও ভার বহন নিষেধ করে দেয়া হয়েছে। আর কতকগুলি বিশেষ পশু রয়েছে যেগুলিকে যবাহ করার সময় তারা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করেনা, শুধু আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করার উদ্দেশে। আল্লাহ এসব মিথ্যা আরোপের প্রতিফল অতি সত্ত্বরই দান করবেন। ১৩৮
927 ৬. আল-আন’আম আর তারা এ কথাও বলে থাকে যে, এই সব বিশেষ পশুগুলির গর্ভে যা কিছু রয়েছে তা বিশেষভাবে তাদের পুরুষদের জন্য রক্ষিত, আর তাদের নারীদের জন্য ওটা হারাম; কিন্তু গর্ভ হতে প্রসূত বাচ্চা যদি মৃত হয় তাহলে নারী-পুরুষ সবাই তা ভক্ষণে অংশী হতে পারবে। তাদের কৃত এই সব বর্ণনার প্রতিদান অতি সত্ত্বরই আল্লাহ তাদেরকে দিবেন, নিঃসন্দেহে তিনি হচ্ছেন প্রজ্ঞাময়, সর্ববিদিত। ১৩৯
928 ৬. আল-আন’আম যারা নিজেদের সন্তানদেরকে মূর্খতা ও অজ্ঞানতার কারণে হত্যা করেছে আর আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা রচনা করে তাঁর প্রদত্ত রিয্ককে হারাম করে নিয়েছে, তারা নিশ্চিত রূপে পথভ্রষ্ট হয়েছে; বস্তুতঃ তারা হিদায়াত গ্রহণ করার পাত্রও ছিলনা। ১৪০
929 ৬. আল-আন’আম আর সেই আল্লাহই নানা প্রকার বাগান ও গুল্মলতা সৃষ্টি করেছেন যার কতক স্বীয় কান্ডের উপর সন্নিবিষ্ট হয়, আর কতক কান্ডের উপর সন্নিবিষ্ট হয়না; আর খেজুর বৃক্ষ ও শস্যক্ষেত্র যাতে বিভিন্ন প্রকারের খাদ্য উৎপন্ন হয়ে থাকে, আর তিনি যাইতূন (জলপাই) ও আনারের (ডালিমের) বৃক্ষও সৃষ্টি করেছেন যা দৃশ্যতঃ অভিন্ন হলেও স্বাদে বিভিন্ন, এই সব ফল তোমরা আহার কর যখন ওতে ফল ধরে, আর তা হতে শারীয়াতের নির্ধারিত যে অংশ রয়েছে তা ফসল কাটার দিন আদায় করে নাও, অপব্যয় করে সীমা লংঘন করনা। নিশ্চয়ই তিনি (আল্লাহ) অপব্যয়কারী ও সীমালংঘনকারীকে ভালবাসেন না। ১৪১
930 ৬. আল-আন’আম আর চতুস্পদ জন্তুগুলির মধ্যে কতকগুলি (উঁচু আকৃতির) ভারবাহী রয়েছে; আর কতকগুলি রয়েছে ছোট আকৃতির, গোশত খাওয়ার ও চামড়া দ্বারা বিছানা বানানোর যোগ্য। আল্লাহ যা কিছু দান করেছেন তোমরা তা আহার কর, আর শাইতানের পদাঙ্ক অনুসরণ করনা, নিঃসন্দেহে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। ১৪২
931 ৬. আল-আন’আম এই পশুগুলি আট প্রকার রয়েছে, ভেড়ার এক জোড়া স্ত্রী-পুরুষ এবং বকরীর এক জোড়া স্ত্রী-পুরুষ। তুমি জিজ্ঞেস করঃ আল্লাহ কি উভয় পুরুষ পশুগুলিকে হারাম করেছেন, নাকি উভয় স্ত্রী পশুগুলিকে, অথবা স্ত্রী দু‘টির গর্ভে যা আছে তা হারাম করেছেন? তোমরা জ্ঞানের সাথে আমাকে উত্তর দাও যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক। ১৪৩
932 ৬. আল-আন’আম আর উটের স্ত্রী-পুরুষ দু‘টি এবং গরুর স্ত্রী-পুরুষ দু‘টি পশু, তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করঃ আল্লাহ কি এ দু‘টি পুরুষ পশুকে বা এ দু‘টি স্ত্রী পশুকে হারাম করেছেন, অথবা উভয় স্ত্রী গরু ও উটের গর্ভে যা রয়েছে তা হারাম করেছেন? আল্লাহ যখন এসব পশু হালাল-হারাম হওয়ার বিধান জারি করেন তখন কি তোমরা হাযির ছিলে? যে ব্যক্তি বিনা প্রমাণে না জেনে (অজ্ঞতাবশতঃ) মানুষকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশে আল্লাহর নামে এরূপ মিথ্যা আরোপ করে তার চেয়ে বড় যালিম আর কে হতে পারে? আল্লাহ যালিমদেরকে সুপথ প্রদর্শন করেননা। ১৪৪
933 ৬. আল-আন’আম তুমি বলঃ অহীর মাধ্যমে আমার কাছে যে বিধান পাঠানো হয়েছে তাতে কোন আহারকারীর জন্য কোন বস্তু হারাম করা হয়েছে এমন কিছু আমি পাইনি; তবে মৃত জন্তু, প্রবাহিত রক্ত, শুকরের মাংস এবং যা আল্লাহর নামে যবাহ করা হয়নি তা হারাম করা হয়েছে। কেননা ওটা নাপাক ও শারীয়াত বিগর্হিত বস্তু। কিন্তু যদি কোন লোক স্বাদ আস্বাদন ও সীমা লংঘনের উদ্দেশ্য ব্যতীত নিরূপায় হয়ে পড়ে (তার পক্ষে ওটাও খাওয়া বৈধ)। কেননা আল্লাহ ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহশীল। ১৪৫
934 ৬. আল-আন’আম ইয়াহুদীদের প্রতি আমি সর্ব প্রকার অবিভক্ত নখ বিশিষ্ট জীব হারাম করেছিলাম। আর গরু ও ভেড়া হতে উৎপন্ন উভয়ের চর্বি তাদের জন্য আমি হারাম করেছিলাম, কিন্তু পৃষ্ঠদেশের চর্বি, নাড়ি ভুড়ির চর্বি ও হাড়ের সাথে মিশ্রিত চর্বি এই হারামের অন্তর্ভুক্ত ছিলনা। তাদের বিদ্রোহমূলক আচরণের জন্য আমি তাদেরকে এই শাস্তি দিয়েছিলাম, আর আমি নিঃসন্দেহে সত্যবাদী। ১৪৬
935 ৬. আল-আন’আম সুতরাং এ সব বিষয়ে যদি তারা তোমাকে মিথ্যাবাদী মনে করে তাহলে তুমি বলে দাওঃ তোমাদের রাব্ব খুবই করুণাময়, আর অপরাধী সম্প্রদায় হতে তাঁর শাস্তির বিধান কখনই প্রত্যাহার করা হবেনা। ১৪৭
936 ৬. আল-আন’আম মুশরিকরা (তোমার কথার উত্তরে) অবশ্যই বলবেঃ আল্লাহ যদি চাইতেন তাহলে আমরা শির্‌ক করতামনা, আর না আমাদের বাপ-দাদারা করত, আর কোনো জিনিসও আমরা হারাম করতামনা। বস্তুতঃ এভাবেই তাদের পূর্ব যুগের কাফিরেরা(রাসূলদেরকে) মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল। শেষ পর্যন্ত তারা আমার শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছিল। তুমি জিজ্ঞেস করঃ তোমাদের কাছে কি কোন দলীল প্রমাণ আছে? থাকলে আমার সামনে পেশ কর। তোমরা ধারণা ও অনুমান ব্যতীত আর কিছুরই অনুসরণ করনা, তোমরা সম্পূর্ণ আনুমানিক কথা ছাড়া আর কিছুই বলছনা। ১৪৮
937 ৬. আল-আন’আম তুমি বলে দাওঃ সত্য ভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ দলীল প্রমাণতো একমাত্র আল্লাহরই রয়েছে, তিনি চাইলে তোমাদের সবাইকে হিদায়াত দান করতেন। ১৪৯
938 ৬. আল-আন’আম তুমি আরও বলঃ আল্লাহ এসব পশু হারাম করেছেন, এর সাক্ষ্য যারা দিবে সেই সাক্ষীদেরকে তোমরা নিয়ে এসো। তারা যদি সাক্ষ্য দেয় তাহলে তুমি তাদের সাথে সাক্ষ্য দিবেনা, তুমি এমন লোকদের খেয়াল খুশির (বাতিল ধ্যান ধারণার) অনুসরণ করনা যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, পরকালের প্রতি ঈমান আনেনা এবং তারা অন্যান্যদেরকে নিজেদের রবের সমমর্যাদা দান করে। ১৫০
939 ৬. আল-আন’আম লোকদেরকে বলঃ তোমরা এসো! তোমাদের রাব্ব তোমাদের প্রতি কি কি বিধি-নিষেধ আরোপ করেছেন তা আমি তোমাদেরকে পাঠ করে শোনাই; তা এই যে, তোমরা তাঁর সাথে কেহকেই শরীক করবেনা, মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে, দারিদ্রতার ভয়ে নিজেদের সন্তানদেরকে হত্যা করবেনা। কেননা আমিই তোমাদেরকে ও তাদেরকে জীবিকা দিই; আর অশ্লীল কাজ ও কথার নিকটেও যেওনা, তা প্রকাশ্যই হোক কিংবা গোপনীয়ই হোক, আর আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন - যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করনা। এসব বিষয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তোমরা অনুধাবন করতে পার। ১৫১
940 ৬. আল-আন’আম আর ইয়াতীমরা বয়ঃপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সদুদ্দেশ্য ব্যতীত তাদের বিষয় সম্পত্তির কাছেও যেওনা, আর আদান-প্রদান, পরিমান-ওজন সঠিকভাবে করবে, আমি কারও উপর তার সাধ্যাতীত ভার (দায়িত্ব/কর্তব্য) অর্পন করিনা, আর তোমরা যখন কথা বলবে তখন স্বজনের বিরুদ্ধে হলেও ন্যায়ানুগ কথা বলবে, আর আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদেরকে এসব বিষয় নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তোমরা তাঁর এ নির্দেশ ও উপদেশ গ্রহণ কর। ১৫২
941 ৬. আল-আন’আম আর নিশ্চয়ই এই পথই আমার সরল পথ; এই পথই তোমরা অনুসরণ করে চলবে, এই পথ ছাড়া অন্য কোন পথের অনুসরণ করবেনা, তাহলে তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দূরে সরিয়ে নিবে। আল্লাহ তোমাদেরকে এই নির্দেশ দিচ্ছেন, যেন তোমরা সতর্ক হও। ১৫৩
942 ৬. আল-আন’আম অতঃপর মূসাকে আমি এমন কিতাব প্রদান করেছিলাম, যা ছিল সৎ কর্মপরায়ণদের জন্য পূর্ণাঙ্গ কিতাব। আর তাতে ছিল প্রত্যেকটি বস্তুর বিশদ বিবরণ, পথ নির্দেশ সম্বলিত আল্লাহর রাহমাতের প্রতীক স্বরূপ, যাতে তারা তাদের রবের সাথে সাক্ষাৎ হওয়া সম্বন্ধে পূর্ণ বিশ্বাস লাভ করতে পারে। ১৫৪
943 ৬. আল-আন’আম আর আমি এই কিতাব অবতীর্ণ করেছি যা বারাকাতময় ও কল্যাণময়। সুতরাং তোমরা এর অনুসরণ কর এবং এর বিরোধিতা হতে বেঁচে থাক, হয়ত তোমাদের প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ প্রদর্শন করা হবে। ১৫৫
944 ৬. আল-আন’আম যেন তোমরা না বলতে পার : ঐ কিতাবতো আমাদের পূর্ববর্তী দুই সম্প্রদায়ের প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছিল এবং আমরা তাদের পঠন পাঠনে সম্পূর্ণ অজ্ঞ ছিলাম। ১৫৬
945 ৬. আল-আন’আম অথবা তোমরা যেন এ কথাও বলতে না পার, আমাদের প্রতি কিতাব নাযিল করা হলে আমরা তাদের তুলনায় বেশি হিদায়াত লাভ করতাম। এখন তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে এক সুস্পষ্ট দলীল এবং পথ নির্দেশ ও রাহমাত সমাগত হয়েছে। এরপর আল্লাহর আয়াতকে যে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে এবং তা থেকে এড়িয়ে চলবে তার চেয়ে বড় যালিম আর কে হতে পারে? যারা আমার আয়াতসমূহ এড়িয়ে চলে, অতি সত্ত্বর তাদেরকে আমি কঠিন শাস্তি দিব, জঘণ্য শাস্তি-তাদের এড়িয়ে চলার জন্য! ১৫৭
946 ৬. আল-আন’আম তারা কি শুধু এ প্রতীক্ষায় রয়েছে যে, তাদের কাছে মালাইকা/ফেরেশতা আসবে? কিংবা স্বয়ং তোমার রাব্ব আসবেন? অথবা তোমার রবের কোন কোন নিদর্শন প্রকাশ হয়ে পড়বে? যেদিন তোমার রবের কতক নিদর্শন প্রকাশ হয়ে পড়বে সেই দিনের পূর্বে যারা ঈমান আনেনি অথবা যারা নিজেদের ঈমান দ্বারা কোন নেক কাজ করেনি তখন তাদের ঈমান আনয়নে কোন উপকার হবেনা, তুমি এসব পাপিষ্ঠকে জানিয়ে দাওঃ তোমরা (এরূপ আশা নিয়ে) প্রতীক্ষা করতে থাক, আমিও প্রতীক্ষা করছি। ১৫৮
947 ৬. আল-আন’আম নিশ্চয়ই যারা নিজেদের দীনের মধ্যে নানা মতবাদ সৃষ্টি করে ওকে খন্ড বিখন্ড করেছে এবং বিভিন্ন দলে উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, তাদের সাথে কোন ব্যাপারে তোমার কোন দায়িত্ব নেই, তাদের বিষয়টি নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সমর্পিত, পরিশেষে তিনিই তাদেরকে তাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবহিত করবেন। ১৫৯
948 ৬. আল-আন’আম কেহ কোন ভাল কাজ করলে সে তার দশ গুণ প্রতিদান পাবে, আর কেহ পাপ ও অসৎ কাজ করলে তাকে শুধু ততটুকুই প্রতিফল দেয়া হবে যতটুকু সে করেছে, আর তারা অত্যাচারিত হবেনা। ১৬০
949 ৬. আল-আন’আম তুমি বলঃ নিঃসন্দেহে আমার রাব্ব আমাকে সঠিক ও নির্ভুল পথে পরিচালিত করেছেন। ওটাই সুপ্রতিষ্ঠিত দীন এবং ইবরাহীমের অবলম্বিত আদর্শ যা সে ঐকান্তিক নিষ্ঠার সাথে গ্রহণ করেছিল। আর সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলনা। ১৬১
950 ৬. আল-আন’আম তুমি বলে দাওঃ আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মরণ সব কিছু সারা জাহানের রাব্ব আল্লাহর জন্য। ১৬২ নামাজ
951 ৬. আল-আন’আম তাঁর কোন শরীক নেই, আমি এর জন্য আদিষ্ট হয়েছি, আর মুসলিমদের মধ্যে আমিই হলাম প্রথম। ১৬৩
952 ৬. আল-আন’আম তুমি জিজ্ঞেস করঃ আমি কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য রবের সন্ধান করব? অথচ তিনিই হচ্ছেন প্রতিটি বস্তুর রাব্ব! প্রত্যেক ব্যক্তিই স্বীয় কৃতকর্মের জন্য দায়ী হবে, কেহ কারও কোন বোঝা বহন করবেনা, পরিশেষে তোমাদের রবের নিকট তোমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে, অতঃপর তিনি তোমরা যে বিষয়ে মতবিরোধ করেছিলে সে বিষয়ের মূল তত্ত্ব তোমাদেরকে অবহিত করবেন। ১৬৪
953 ৬. আল-আন’আম আর তিনি এমন, যিনি তোমাদেরকে দুনিয়ার প্রতিনিধি করেছেন এবং তোমাদের কতককে কতকের উপর মর্যাদায় উন্নীত করেছেন, উদ্দেশ্য হল তোমাদেরকে তিনি যা কিছু দিয়েছেন তাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করা। নিঃসন্দেহে তোমার রাব্ব ত্বরিত শাস্তিদাতা, আর নিঃসন্দেহে তিনি ক্ষমাশীল ও কৃপানিধান। ১৬৫
954 ৭. আল-আ’রাফ আলিফ লাম-মিম-সাদ।
955 ৭. আল-আ’রাফ এ একটি কিতাব যা তোমার উপর অবতীর্ণ করা হয়েছে, সুতরাং তোমার অন্তরে যেন মোটেই সংকীর্ণতা না আসে। আর মু’মিনদের জন্য এটা উপদেশ।
956 ৭. আল-আ’রাফ তোমার রবের পক্ষ থেকে যা তোমার প্রতি নাযিল করা হয়েছে তুমি তা অনুসরণ কর এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে অভিভাবক অথবা সাহায্যকারী হিসাবে গ্রহণ করনা। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ করে থাকো।
957 ৭. আল-আ’রাফ কত জনপদকেই না আমি ধ্বংস করেছি! আমার শাস্তি তাদের উপর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় অথবা দ্বিপ্রহরে যখন তারা বিশ্রামরত ছিল তখনই আপতিত হয়েছে।
958 ৭. আল-আ’রাফ আমার শাস্তি যখন তাদের কাছে এসে পড়েছিল তখন তাদের মুখে ‘‘বাস্তবিকই আমরা অত্যাচারী ছিলাম’’ এ কথা ছাড়া আর কিছুই ছিলনা।
959 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর আমি (কিয়ামাত দিবসে) যাদের কাছে রাসূল প্রেরণ করা হয়েছিল তাদেরকে এবং রাসূলদেরকেও অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করব।
960 ৭. আল-আ’রাফ তখন আমি তাদের সমস্ত বিবরণ অকপটে প্রকাশ করে দিব, যেহেতু আমি পূর্ণরূপে জ্ঞাত আছি, আর আমিতো কোন কালে বেখবর ছিলামনা।
961 ৭. আল-আ’রাফ আর সেদিন (কিয়ামাতের দিন) ন্যায় ও সঠিকভাবে (প্রত্যেকের ‘আমল) ওযন করা হবে, সুতরাং যাদের (পুণ্যের) পাল্লা ভারী হবে তারাই হবে কৃতকার্য ও সফলকাম।
962 ৭. আল-আ’রাফ আর যাদের পাল্লা হালকা হবে, তারা হবে সেই সব লোক যারা নিজেদের ধ্বংস ও ক্ষতি নিজেরাই করেছে। কেননা তারা আমার নিদর্শনসমূহকে (আয়াত) প্রত্যাখ্যান করত।
963 ৭. আল-আ’রাফ আর নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে ভূ-পৃষ্ঠে প্রতিষ্ঠিত করেছি এবং আমি তোমাদের জন্য ওতে জীবিকা নির্বাহের উপকরণসমূহ সৃষ্টি করেছি, তোমরা খুব কমই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাক। ১০
964 ৭. আল-আ’রাফ আমিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর তোমাদেরকে রূপ দান করেছি, তারপর আমি মালাইকাদেরকে/ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিয়েছি - তোমরা আদমকে সাজদাহ কর। তখন ইবলীস ছাড়া সবাই সাজদাহ করল, যারা সাজদাহ করল সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হলনা। ১১
965 ৭. আল-আ’রাফ তিনি (আল্লাহ) তাকে (ইবলীসকে) জিজ্ঞেস করলেনঃ আমি যখন তোকে সাজদাহ (আদমকে) করতে আদেশ করলাম তখন কোন বস্তু তোকে নত শির হতে নিবৃত্ত করল? সে উত্তরে বললঃ আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ, আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে সৃষ্টি করেছেন কাদামাটি দ্বারা। ১২
966 ৭. আল-আ’রাফ আল্লাহ বললেনঃ এই স্থান থেকে নেমে যা, এখানে থেকে অহংকার করা যেতে পারেনা; সুতরাং বের হয়ে যা, নিশ্চয়ই তুই ইতরদের অন্তর্ভুক্ত। ১৩
967 ৭. আল-আ’রাফ সে বললঃ আমাকে পুনরুত্থান দিন পর্যন্ত অবকাশ দিন! ১৪
968 ৭. আল-আ’রাফ আল্লাহ বললেনঃ তোকে অবকাশ দেয়া হল। ১৫
969 ৭. আল-আ’রাফ (ইবলীস) বললঃ আপনি যে আমাকে পথভ্রষ্ট করলেন এ কারণে আমিও শপথ করে বলছি - আমি আপনার সরল পথে অবশ্যই ওৎ পেতে বসে থাকব। ১৬
970 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর আমি তাদের সম্মুখ দিয়ে, পিছন দিয়ে, ডান দিক দিয়ে এবং বাম দিক দিয়ে তাদের কাছে আসব, আপনি তাদের অধিকাংশকেই কৃতজ্ঞ পাবেননা। ১৭
971 ৭. আল-আ’রাফ তিনি (আল্লাহ) বললেনঃ তুই এখান থেকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত অবস্থায় বের হয়ে যা, তাদের (বানী আদমের) মধ্যে যারা তোর অনুসরণ করবে, নিশ্চয়ই আমি তোদের সকলের দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করব। ১৮
972 ৭. আল-আ’রাফ আর হে আদম! তুমি এবং তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর এবং এখানে তোমাদের মনে যা চায় তাই খাও, কিন্তু এই বৃক্ষের নিকটবর্তী হয়োনা, তাহলে অত্যাচারীদের মধ্যে গণ্য হবে। ১৯
973 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর তাদের লজ্জাস্থান যা পরস্পরের কাছে গোপন রাখা হয়েছিল তা প্রকাশ করার জন্য শাইতান তাদেরকে কুমন্ত্রণা দিল, সে বললঃ তোমাদের রাব্ব এই বৃক্ষের কাছে যেতে নিষেধ করেছেন, এর কারণ এ ছাড়া কিছুই নয় যে, তোমরা যেন মালাইকা/ফেরেশতা হয়ে না যাও, অথবা এখানে (এই জান্নাতে) চিরন্তন জীবন লাভ করতে না পার। ২০
974 ৭. আল-আ’রাফ সে তাদের উভয়ের নিকট শপথ করে বললঃ আমি তোমাদের হিতাকাংখীদের অন্যতম। ২১
975 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর সে (শাইতান) তাদের উভয়কে বিভ্রান্ত করল। যখন তারা সেই নিষিদ্ধ গাছের ফলের স্বাদ গ্রহণ করল তখন তাদের লজ্জাস্থান তাদের কাছে প্রকাশ হয়ে পড়ল এবং তারা বাগানের বৃক্ষপত্র দ্বারা নিজেদেরকে আবৃত করতে লাগল। তাদের রাব্ব তাদেরকে সম্বোধন করে বললেনঃ আমি কি এই বৃক্ষ সম্পর্কে তোমাদেরকে নিষেধ করিনি এবং বলিনি যে, শাইতান তোমাদের প্রকাশ্য শক্র? ২২
976 ৭. আল-আ’রাফ তারা বললঃ হে আমাদের রাব্ব! আমরা নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছি, আপনি যদি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ব। ২৩
977 ৭. আল-আ’রাফ তিনি (আল্লাহ) বললেনঃ তোমরা একে অন্যের শক্র রূপে এখান থেকে নেমে যাও, তোমাদের জন্য পৃথিবীতে বাসস্থান রয়েছে, একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত সেখানে জীবন ধারণের উপযোগী সামগ্রীর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ২৪
978 ৭. আল-আ’রাফ তিনি বললেনঃ সেই পৃথিবীতেই তোমরা জীবন যাপন করবে, সেখানেই তোমাদের মৃত্যু সংঘটিত হবে এবং সেখান হতেই তোমাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবে। ২৫
979 ৭. আল-আ’রাফ হে বানী আদম! আমি তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করার ও বেশভূষার জন্য তোমাদের পোশাক পরিচ্ছদের উপকরণ অবতীর্ণ করেছি। (বেশ-ভূষার তুলনায়) আল্লাহভীতির পরিচ্ছদই হচ্ছে সর্বোত্তম পরিচ্ছদ। এটা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম নিদর্শন, সম্ভবতঃ মানুষ এটা হতে উপদেশ গ্রহণ করবে। ২৬
980 ৭. আল-আ’রাফ হে আদম সন্তান! শাইতান যেন তোমাদেরকে সেরূপ প্রলুব্ধ করতে না পারে যেরূপ তোমাদের মাতা-পিতাকে (প্রলুব্ধ করে) জান্নাত হতে বহিস্কার করেছিল এবং তাদেরকে তাদের লজ্জাস্থান দেখানোর জন্য বিবস্ত্র করেছিল। সে (শাইতান) নিজে এবং তার দল তোমাদেরকে দেখতে পায়, অথচ তোমরা তাদেরকে দেখতে পাওনা। নিঃসন্দেহে আমি অবিশ্বাসীদের জন্য শাইতানকে বন্ধু ও অভিভাবক বানিয়ে দিয়েছি। ২৭
981 ৭. আল-আ’রাফ যখন তারা কোন লজ্জাস্কর ও অশ্লীল আচরণ করে তখন তারা বলেঃ আমরা আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে এসব কাজ করতে দেখেছি এবং আল্লাহও আমাদেরকে এটা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তুমি বলঃ না আল্লাহ কখনও অশ্লীল ও লজ্জাস্কর আচরণের নির্দেশ দেননা, তোমরা কি আল্লাহ সম্পর্কে এমন সব কথা বলছ যে বিষয়ে তোমাদের কোন জ্ঞান নেই? ২৮
982 ৭. আল-আ’রাফ তুমি বলঃ আমার রাব্ব ন্যায় বিচারের আদেশ দিয়েছেন এবং তোমরা প্রত্যেক সালাতে তোমাদের মনযোগ স্থির রেখ এবং তাঁর আনুগত্যে বিশুদ্ধ মনে একনিষ্ঠভাবে তাঁকেই ডাক; তোমাদেরকে প্রথম যেভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে, তোমরা তেমনিভাবে ফিরে আসবে। ২৯ নামাজ
983 ৭. আল-আ’রাফ আল্লাহ এক দলকে সৎ পথে পরিচালিত করেছেন এবং অপর দলের জন্য সংগত কারণেই ভ্রান্তি নির্ধারিত হয়েছে,তারা আল্লাহকে ছেড়ে শাইতানকে অভিভাবক ও বন্ধু বানিয়েছিল এবং নিজেদেরকে সৎ পথগামী মনে করত। ৩০
984 ৭. আল-আ’রাফ হে আদম সন্তান! প্রত্যেক সালাতের সময় সুন্দর পোশাক পরিচ্ছদ গ্রহণ কর, আর খাও এবং পান কর। তবে অপব্যয় ও অমিতাচার করবেনা, নিশ্চয়ই আল্লাহ অপব্যয়কারীদের ভালবাসেননা। ৩১ নামাজ
985 ৭. আল-আ’রাফ তুমি জিজ্ঞেস করঃ আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য যে সব শোভনীয় বস্তু ও পবিত্র জীবিকা সৃষ্টি করেছেন তা কে নিষিদ্ধ করেছে? তুমি ঘোষণা করে দাও - এই সমস্ততো তাদের জন্যই যারা পার্থিব জীবনে এবং বিশেষ করে কিয়ামাত দিবসে বিশ্বাস করে। এমনিভাবে আমি জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বিবৃত করে থাকি। ৩২
986 ৭. আল-আ’রাফ তুমি বলঃ আমার রাব্ব প্রকাশ্য, অপ্রকাশ্য অশ্লীলতা, পাপ কাজ, অন্যায় ও অসংগত বিদ্রোহ ও বিরোধিতা এবং আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করা যার পক্ষে আল্লাহ কোন দলীল প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি, আর আল্লাহ সম্বন্ধে এমন কিছু বলা যে সম্বন্ধে তোমাদের কোন জ্ঞান নেই, (ইত্যাদি কাজ ও বিষয়সমূহ) নিষিদ্ধ করেছেন। ৩৩
987 ৭. আল-আ’রাফ প্রত্যেক জাতির জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে, সুতরাং যখন সেই নির্দিষ্ট সময় সমুপস্থিত হবে তখন তা এক মুহুর্তকালও আগে কিংবা পরে হবেনা। ৩৪
988 ৭. আল-আ’রাফ হে আদম সন্তান! তোমাদের মধ্য হতে যদি কোন রাসূল তোমাদের নিকট আগমন করে এবং আমার বাণী ও নিদর্শন তোমাদের কাছে বিবৃত করে; তখন যারা সতর্ক হবে এবং নিজেদেরকে সংশোধন করে নিবে এবং সৎ কাজ করবে, তাদের কোন ভয়-ভীতি থাকবেনা। ৩৫
989 ৭. আল-আ’রাফ আর যারা আমার নিদর্শন ও বিধানকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে এবং অহংকার করে ওটা হতে দূরে সরে থাকে তারাই হবে জাহান্নামী, সেখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। ৩৬
990 ৭. আল-আ’রাফ যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করে এবং তাঁর নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে সে অপেক্ষা বড় যালিম আর কে হতে পারে? তাদের ‘আমলনামায় লিখিত নির্ধারিত অংশ তাদের নিকট পৌঁছবেই, পরিশেষে যখন আমার প্রেরিত মালাক/ফেরেশতা তাদের প্রাণ হরণের জন্য তাদের নিকট পৌঁছবে, তখন তারা (ফেরেশতারা) জিজ্ঞেস করবেঃ আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে তোমরা ডাকতে তারা কোথায়? তখন তারা উত্তরে বলবেঃ আমাদের হতে তারা উধাও হয়ে গেছে। আর নিজেরাই স্বীকারোক্তি করবে যে, তারা কাফির বা সত্য প্রত্যাখ্যানকারী ছিল। ৩৭
991 ৭. আল-আ’রাফ আল্লাহ বলেনঃ তোমাদের পূর্বে মানব ও জিন হতে যে সব সম্প্রদায় গত হয়েছে, তাদের সাথে তোমরাও জাহান্নামে প্রবেশ কর। যখন কোন দল তাতে প্রবেশ করবে তখনই অপর দলকে তারা অভিসস্পাত করবে, পরিশেষে যখন তাতে সকলে জমায়েত হবে তখন পরবর্তীরা পূর্ববর্তীদের সম্পর্কে বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! এরাই আমাদেরকে বিভ্রান্ত করেছে, সুতরাং আপনি এদের দ্বিগুণ শাস্তি দিন! তখন আল্লাহ বলবেনঃ তাদের প্রত্যেকের জন্যই রয়েছে দ্বিগুণ শাস্তি, কিন্তু তোমরা জাননা। ৩৮
992 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর পূর্ববর্তী লোকেরা পরবর্তী লোকদেরকে বলবেঃ আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই, তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের ফল স্বরূপ শাস্তি ভোগ করতে থাক। ৩৯
993 ৭. আল-আ’রাফ নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে এবং অহংকার বশতঃ তা থেকে ফিরে থাকে, তাদের জন্য আকাশের দ্বার উন্মুক্ত করা হবেনা এবং তারা জান্নাতেও প্রবেশ করবেনা, যতক্ষণ না সুচের ছিদ্র পথে উট প্রবেশ করে, এমনিভাবেই আমি অপরাধীদেরকে প্রতিফল দিয়ে থাকি। ৪০
994 ৭. আল-আ’রাফ তাদের জন্য হবে জাহান্নামের (আগুনের) শয্যা এবং তাদের উপরের আচ্ছাদনও হবে (আগুনের তৈরী) চাদর, এমনিভাবেই আমি যালিমদেরকে প্রতিফল দিয়ে থাকি। ৪১
995 ৭. আল-আ’রাফ যারা ঈমান এনেছে ও ভাল কাজ করেছে এমন কোন ব্যক্তিকে আমি তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব অর্পণ করিনা - তারাই হবে জান্নাতবাসী, সেখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। ৪২
996 ৭. আল-আ’রাফ আর তাদের অন্তরে যা কিছু ঈর্ষা ও বিদ্বেষ রয়েছে তা আমি দূর করে দিব, তাদের নিম্নদেশ দিয়ে নদী প্রবাহিত হবে; তখন তারা বলবেঃ সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি আমাদেরকে পথ প্রদর্শন করেছেন, আল্লাহ আমাদেরকে পথ প্রদর্শন না করলে আমরা পথ পেতামনা, আমাদের রবের প্রেরিত রাসূলগণ সত্য বাণী নিয়ে এসেছিলেন। আর তাদেরকে সম্বোধন করে বলা হবেঃ তোমরা যে (ভাল) ‘আমল করতে তারই জন্য তোমাদেরকে এই জান্নাতের উত্তরাধিকারী বানানো হয়েছে। ৪৩
997 ৭. আল-আ’রাফ আর জান্নাতের অধিবাসীগণ আগুনের অধিবাসীদেরকে ডাকবে যে, ‘আমাদের রব আমাদেরকে যে ওয়াদা দিয়েছেন তা আমরা সত্য পেয়েছি। সুতরাং তোমাদের রব তোমাদেরকে যে ওয়াদা দিয়েছেন, তা কি তোমরা সত্যই পেয়েছ’? তারা বলবে, ‘হ্যাঁ’। অতঃপর এক ঘোষক তাদের মধ্যে ঘোষণা দেবে যে, আল্লাহর লা’নত যালিমদের উপর’। ৪৪
998 ৭. আল-আ’রাফ যারা আল্লাহর পথে চলতে (মানুষকে) বাধা দিত এবং তাতে বক্রতা অনুসন্ধান করত তারা পরকালকেও অস্বীকার করত। ৪৫
999 ৭. আল-আ’রাফ এই উভয় শ্রেণীর লোকদের মাঝে পার্থক্যকারী একটি পর্দা রয়েছে। এবং আ‘রাফে (জান্নাত ও জাহান্নামের ঊর্ধ্বস্থানে) কিছু লোক থাকবে, তারা প্রত্যেককে লক্ষণ ও চিহ্ন দ্বারা চিনতে পারবে। তারা জান্নাতবাসীকে ডেকে বলবেঃ তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক; তখনো তারা জান্নাতে প্রবেশ করেনি বটে, কিন্তু তারা প্রবেশ করার আকাংখা করবে। ৪৬
1000 ৭. আল-আ’রাফ পরন্ত জাহান্নামীদের প্রতি তাদের দৃষ্টি ফিরিয়ে দেয়া হবে, তখন তারা (আ‘রাফবাসীরা) বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! আপনি আমাদেরকে যালিম সম্প্রদায়ের সঙ্গী করবেননা। ৪৭
1001 ৭. আল-আ’রাফ আ‘রাফবাসীদের কয়েকজন জাহান্নামী লোককে তাদের লক্ষণ দ্বারা চিনতে পেরে ডাক দিয়ে বলবেঃ তোমাদের দলবল ও পার্থিব জীবনের ধন-সম্পদ এবং তোমাদের গর্ব, অহংকার তোমাদের কোনই উপকারে এলোনা। ৪৮
1002 ৭. আল-আ’রাফ এই জান্নাতবাসীরা কি তারা নয় যাদের সম্পর্কে তোমরা কসম করে বলতে যে, এদের প্রতি আল্লাহ দয়া প্রদর্শন করবেননা? তোমরা জান্নাতে প্রবেশ কর, তোমাদের কোন ভয় নেই এবং তোমরা চিন্তিত ও দুঃখিত হবেনা। ৪৯
1003 ৭. আল-আ’রাফ জাহান্নামীরা জান্নাতীদেরকে সম্বোধন করে বলবেঃ আমাদের উপর কিছু পানি ঢেলে দাও অথবা আল্লাহ প্রদত্ত তোমাদের জীবিকা হতে কিছু প্রদান কর। তারা বলবেঃ আল্লাহ এ দু’টি জিনিস কাফিরদের জন্য হারাম করে দিয়েছেন। ৫০
1004 ৭. আল-আ’রাফ তারা নিজেদের দীনকে ক্রীড়া-কৌতুকের বস্তুতে পরিণত করেছিল এবং পার্থিব জীবন তাদেরকে ধোকায় ফেলে রেখেছিল। সুতরাং আজ আমি তাদেরকে তেমনিভাবে ভুলে থাকব যেমনিভাবে তারা এই দিনের সাক্ষাতের কথা ভুলে গিয়েছিল এবং যেমনভাবে তারা আমার নিদর্শন ও আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছিল। ৫১
1005 ৭. আল-আ’রাফ আর আমি তাদের নিকট এমন একটি কিতাব পৌঁছিয়েছিলাম যাকে আমি স্বীয় জ্ঞান দ্বারা বিস্তারিত বর্ণনা করেছিলাম এবং যা ছিল মু’মিনদের জন্য পথ নির্দেশ ও রাহমাতের প্রতীক। ৫২
1006 ৭. আল-আ’রাফ তারা কি এই অপেক্ষায়ই আছে যে, এর বিষয় বস্তু প্রকাশ করা হোক? যেদিন এর বিষয় বস্তু প্রকাশিত হবে সেদিন যারা এর আগমনের কথা ভুলে গিয়েছিল তারা বলবেঃ বাস্তবিকই আমাদের রবের রাসূলগণ সত্য বাণী নিয়ে এসেছিলেন, এমন কোন সুপারিশকারী আছে কি যারা আমাদের জন্য সুপারিশ করবে? অথবা আমাদেরকে কি পুনরায় দুনিয়ায় পাঠানো যেতে পারে যাতে আমরা পূর্বের কৃতকর্মের তুলনায় ভিন্ন কিছু করতে পারি? নিঃসন্দেহে তারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করেছে, আর তারা যেসব মিথ্যা (মা‘বূদ ও রসম রেওয়াজ) রচনা করেছিল, তাও তাদের হতে অন্তর্হিত হয়ে যাবে। ৫৩
1007 ৭. আল-আ’রাফ নিশ্চয়ই তোমাদের রাব্ব হচ্ছেন সেই আল্লাহ যিনি আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি স্বীয় আরশের উপর সমাসীন হন। তিনি দিনকে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন যাতে ওরা একে অন্যকে অনুসরণ করে চলে ত্বরিত গতিতে; সূর্য, চাঁদ ও নক্ষত্ররাজী সবই তাঁর হুকুমের অনুগত। জেনে রেখ, সৃষ্টির একমাত্র কর্তা তিনিই, আর হুকুমের একমাত্র মালিকও তিনি, সারা জাহানের রাব্ব আল্লাহ হলেন বারাকাতময় ৫৪
1008 ৭. আল-আ’রাফ তোমরা বিনীতভাবে ও সংগোপনে তোমাদের রাব্বকে ডাকবে, তিনি সীমা লংঘনকারীদেরকে ভালবাসেননা। ৫৫
1009 ৭. আল-আ’রাফ দুনিয়ায় শান্তি শৃংখলা স্থাপনের পর বিপর্যয় ও বিশৃংখলা সৃষ্টি করনা, আল্লাহকে ভয়-ভীতি ও আশা আকাংখার সাথে ডাক, নিঃসন্দেহে আল্লাহর রাহমাত সৎকর্মশীলদের অতি সন্নিকটে। ৫৬
1010 ৭. আল-আ’রাফ সেই আল্লাহই স্বীয় রাহমাতের (বৃষ্টির) আগে বাতাসকে সুসংবাদ বহনকারী রূপে প্রেরণ করেন। যখন ঐ বাতাস ভারী মেঘমালাকে বহন করে নিয়ে আসে তখন আমি ঐ মেঘমালাকে কোন নির্জীব ভূ-খন্ডের দিকে প্রেরণ করি। অতঃপর ওটা হতে বারিধারা বর্ষণ করি, তারপর সেই পানির সাহায্যে সেখানে সর্ব প্রকার ফল ফলাদি উৎপাদন করি। এমনিভাবেই আমি মৃতকে জীবিত করি, যাতে তোমরা এটা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পার। ৫৭
1011 ৭. আল-আ’রাফ আর উৎকৃষ্ট ভূমি ওর রবের নির্দেশক্রমে খুব উৎকৃষ্ট ফসল ফলায়, আর যা নিকৃষ্ট ভূমি - তাতে খুব কমই ফসল ফলে থাকে। এমনিভাবেই আমি কৃতজ্ঞ পরায়ণদের জন্য আমার আয়াতসমূহ বিভিন্নভাবে বর্ণনা করে থাকি। ৫৮
1012 ৭. আল-আ’রাফ আমি নূহকে তার সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করেছিলাম। সে তাদেরকে বলেছিলঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা শুধু আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের আর কোন ইলাহ নেই, আমি তোমাদের প্রতি এক গুরুতর দিনের শাস্তির আশংকা করছি। ৫৯
1013 ৭. আল-আ’রাফ তার সম্প্রদায়ের প্রধান ও নেতারা বললঃ আমরা তোমাকে স্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে দেখছি। ৬০
1014 ৭. আল-আ’রাফ সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! আমি কোন ভুল ভ্রান্তি ও গুমরাহীর মধ্যে লিপ্ত নই, বরং আমি সারা জাহানের রবের (প্রেরিত) একজন রাসূল। ৬১
1015 ৭. আল-আ’রাফ আমি আমার রবের বার্তা তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি, আর আমি তোমাদেরকে হিতোপদেশ দিচ্ছি। তোমরা যা জাননা আমি তা আল্লাহর নিকট থেকে জেনে থাকি। ৬২
1016 ৭. আল-আ’রাফ তোমাদের মধ্য থেকে একজন লোকের মাধ্যমে তোমাদের রবের পক্ষ হতে উপদেশ বাণী আসায় কি তোমরা বিস্মিত হয়েছ, যাতে সে তোমাদেরকে সতর্ক ও হুশিয়ার করতে পারে, যেন তোমরা সাবধান হও এবং যেন আল্লাহভীতি অবলম্বন করতে পার, হয়ত তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন করা হবে? ৬৩
1017 ৭. আল-আ’রাফ কিন্তু তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করল, ফলে তাকে এবং তার সাথে নৌকায় যারা ছিল তাদেরকে (আযাব হতে) রক্ষা করলাম, আর যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে অমান্য করেছিল, তাদেরকে ডুবিয়ে মারলাম। বস্তুতঃ নিঃসন্দেহে তারা ছিল এক অন্ধ সম্প্রদায়। ৬৪
1018 ৭. আল-আ’রাফ ‘আদ জাতির নিকট তাদের ভাই হুদকে (নাবী রূপে) পাঠিয়েছিলাম। সে বললঃ হে আমার জাতি! তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের আর কোন মা‘বূদ নেই, তোমরা কি সাবধান হবেনা? ৬৫
1019 ৭. আল-আ’রাফ তার জাতির নেতারা বললঃ আমরা তোমাকে নির্বোধ দেখছি এবং আমরাতো তোমাকে নিশ্চিত রূপে মিথ্যাবাদী মনে করি। ৬৬
1020 ৭. আল-আ’রাফ সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! আমি নির্বোধ নই, বরং আমি হলাম সারা জাহানের রবের মনোনীত রাসূল। ৬৭
1021 ৭. আল-আ’রাফ আমি আমার রবের বার্তা তোমাদের নিকট পৌঁছে দিচ্ছি, আর আমি তোমাদের একজন বিশ্বস্ত হিতাকাংখী । ৬৮
1022 ৭. আল-আ’রাফ তোমরা কি এতে বিস্মিত হচ্ছ যে, তোমাদের জাতিরই একটি লোকের মাধ্যমে তোমাদের রবের পক্ষ হতে তাঁর বিধান ও উপদেশসহ তোমাদেরকে সতর্ক করার উদ্দেশে তোমাদের কাছে এসেছে? তোমরা সেই অবস্থার কথা স্মরণ কর যখন নূহের সম্প্রদায়ের পর আল্লাহ তোমাদেরকে তাদের স্থলাভিষিক্ত করেছেন এবং তোমাদেরকে অন্যদের অপেক্ষা শক্তিতে অধিকতর বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করেছেন। তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর, হয়তো তোমরা সফলকাম হবে। ৬৯
1023 ৭. আল-আ’রাফ তারা বললঃ তুমি কি আমাদের নিকট শুধু এই উদ্দেশে এসেছো যে, আমরা যেন একমাত্র আল্লাহরই ইবাদাত করি এবং আমাদের পূর্ব-পুরুষরা যাদের পূজা করত তাদেরকে বর্জন করি? তুমি তোমার কথা ও দাবীতে সত্যবাদী হলে আমাদেরকে যে শাস্তির ভয় দেখাচ্ছ তা আনয়ন কর। ৭০
1024 ৭. আল-আ’রাফ সে বললঃ তোমাদের রবের শাস্তি ও ক্রোধ তোমাদের উপর অবধারিত হয়ে আছে। তোমরা কি আমার সাথে এমন কতকগুলি নাম সম্বন্ধে বিতর্ক করছ যার নামকরণ করেছ তোমরা এবং তোমাদের বাপ দাদারা, আর যে বিষয়ে আল্লাহ কোন দলীল প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি? সুতরাং তোমরা (শাস্তির জন্য) অপেক্ষা করতে থাক, আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করছি। ৭১
1025 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর আমি তাকে (হুদকে) এবং তার সঙ্গী-সাথীদেরকে আমার অনুগ্রহে রক্ষা করলাম, আর যারা আমার নিদর্শনকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল এবং যারা ঈমানদার ছিলনা তাদের মূলোৎপাটন করে ছাড়লাম। ৭২
1026 ৭. আল-আ’রাফ আর আমি ছামূদ জাতির নিকট তাদের ভাই সালিহকে প্রেরণ করেছিলাম। সে বলেছিলঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, আল্লাহ ছাড়া তোমাদের আর কোন মা‘বূদ নেই, তোমাদের রবের পক্ষ হতে এক স্পষ্ট নিদর্শন তোমাদের নিকট এসেছে, এটি আল্লাহর উষ্ট্রী - তোমাদের জন্য একটি নিদর্শন স্বরূপ। তোমরা একে ছেড়ে দাও - আল্লাহর যমীনে চরে খাবে, ওকে খারাপ উদ্দেশে স্পর্শ করনা, (কেহ কোন কষ্ট দিলে) এক যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তোমাদেরকে গ্রাস করে ফেলবে। ৭৩
1027 ৭. আল-আ’রাফ তোমরা স্মরণ কর সেই বিষয়টি যখন তিনি ‘আদ জাতির পর তোমাদেরকে তাদের স্থলাভিষিক্ত করেছেন, আর তিনি তোমাদেরকে পৃথিবীতে এমনভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন যে, তোমরা সমতল ভূমিতে প্রাসাদ ও পাহাড় কেটে আবাস গৃহ নির্মাণ করেছ। সুতরাং তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহের কথা স্মরণ কর এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় ছড়িয়ে দিওনা। ৭৪
1028 ৭. আল-আ’রাফ তার সম্প্রদায়ের দাম্ভিক প্রধানরা তাদের মধ্যকার দুর্বল ও উৎপীড়িত মু’মিনদেরকে বললঃ তোমরা কি বিশ্বাস কর যে, সালিহ তার রাব্ব কর্তৃক প্রেরিত হয়েছে? তারা উত্তরে বললঃ নিশ্চয়ই যে বার্তাসহ সে প্রেরিত হয়েছে, আমরা তা বিশ্বাস করি। ৭৫
1029 ৭. আল-আ’রাফ দাম্ভিকরা বললঃ তোমরা যা বিশ্বাস কর আমরা তা বিশ্বাস করিনা। ৭৬
1030 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর তারা সেই উষ্ট্রীটিকে মেরে ফেললো এবং গর্ব ও দাম্ভিকতার সাথে তাদের রবের নির্দেশের বিরোদ্ধাচরণ করল এবং বললঃ হে সালিহ! তুমি সত্য রাসূল হয়ে থাকলে আমাদেরকে যে শাস্তির ভয় দেখাচ্ছ তা আনয়ন কর। ৭৭
1031 ৭. আল-আ’রাফ সুতরাং ভূমিকম্প তাদেরকে গ্রাস করে নিলো, ফলে তারা নিজেদের গৃহের মধ্যেই নতজানু হয়ে পড়ে রইল। ৭৮
1032 ৭. আল-আ’রাফ সালিহ এ কথা বলে তাদের জনপদ হতে বের হয়ে গেলঃ হে আমার সম্প্রদায়! আমি আমার রবের বার্তা তোমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি, আর আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিয়েছিলাম, কিন্তু তোমরাতো হিতৈষী বন্ধুদেরকে পছন্দ করনা। ৭৯
1033 ৭. আল-আ’রাফ আর আমি লূতকে পাঠিয়েছিলাম। সে তার কাওমকে বলেছিলঃ তোমরা এমন অশ্লীল ও কু-কর্ম করছো যা তোমাদের পূর্বে বিশ্বে আর কেহই করেনি। ৮০
1034 ৭. আল-আ’রাফ তোমরা স্ত্রীলোকদের বাদ দিয়ে পুরুষদের দ্বারা নিজেদের যৌন ইচ্ছা নিবারণ করে নিচ্ছ। প্রকৃত পক্ষে, তোমরা হচ্ছ সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়। ৮১
1035 ৭. আল-আ’রাফ তার জাতির লোকদের এটা ছাড়া আর কোন জবাবই ছিলনা যে, এদের তোমাদের জনপদ থেকে বের করে দাও, এরা নিজেদেরকে বড় পবিত্র রাখতে চায়। ৮২
1036 ৭. আল-আ’রাফ পরিশেষে, আমি তাকে এবং তার পরিবারের লোকদেরকে, তার স্ত্রী ছাড়া, শাস্তি হতে রক্ষা করেছিলাম, তার স্ত্রী তাদের সাথে পিছনেই রয়ে গিয়েছিল। ৮৩
1037 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর আমি তাদের উপর মুষলধারে বারিপাত ঘটালাম, অতঃপর লক্ষ্য কর, অপরাধী লোকদের পরিণাম কি হয়েছিল। ৮৪
1038 ৭. আল-আ’রাফ আর আমি মাদইয়ানবাসীদের কাছে তাদেরই ভাই শু‘আইবকে পাঠিয়েছিলাম। সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা একমাত্র আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের আর কোন মা‘বূদ নেই। তোমাদের রবের পক্ষ হতে তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট দলীল এসে গেছে। সুতরাং তোমরা ওযন ও পরিমাণ পূর্ণ মাত্রায় দিবে, মানুষকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করবেনা। আর দুনিয়ায় শান্তি শৃংখলা স্থাপনের পর ঝগড়া ফাসাদ ও বিপর্যয় ঘটাবেনা, তোমরা বাস্তবিক পক্ষে ঈমানদার হলে এই পথই হল তোমাদের জন্য কল্যাণকর। ৮৫
1039 ৭. আল-আ’রাফ আর (জীবনের) প্রতিটি পথে এমনিভাবে দস্যি হয়ে যেওনা যে, ঈমানদার লোকদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আল্লাহর পথ হতে বিরত রাখতে থাকবে এবং সহজ সরল পথকে বক্র করায় ব্যস্ত থাকবে। ঐ অবস্থানটির কথা স্মরণ কর, যখন তোমরা সংখ্যায় স্বল্প ছিলে, অতঃপর তিনি (আল্লাহ) তোমাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে দিলেন, আর এই জগতে বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পরিণতি কি হয়েছে তা জ্ঞানচক্ষু খুলে লক্ষ্য কর। ৮৬
1040 ৭. আল-আ’রাফ আমার নিকট যা (আল্লাহর পক্ষ হতে) প্রেরিত হয়েছে তা যদি তোমাদের কোন দল বিশ্বাস করে এবং কোন দল অবিশ্বাস করে তাহলে ধৈর্য ধারণ কর যতক্ষণ না আল্লাহ আমাদের মধ্যে চুড়ান্ত ফাইসালা করে দেন। তিনিই হলেন উত্তম ফাইসালাকারী। ৮৭
1041 ৭. আল-আ’রাফ আর তার সম্প্রদায়ের দাম্ভিক ও অহংকারী প্রধানরা বলেছিলঃ হে শু‘আইব! আমরা অবশ্যই তোমাকে, তোমার সংগী সাথী মু’মিনদেরকে আমাদের জনপদ হতে বহিস্কার করব অথবা তোমরা আমাদের ধর্মাদর্শে ফিরে আসবে। সে বললঃ আমরা যদি তাতে রাযী না হই? ৮৮
1042 ৭. আল-আ’রাফ তোমাদের ধর্মাদর্শ হতে আল্লাহ আমাদেরকে মুক্তি দেয়ার পর আমরা যদি তাতে আবার ফিরে যাই তাহলে নিশ্চিতভাবে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপকারী হব! আমাদের রাব্ব আল্লাহ না চাইলে ওতে আবার ফিরে যাওয়া আমাদের পক্ষে কোন ক্রমেই সম্ভব নয়। সবকিছুই আমাদের রবের জ্ঞানায়ত্ত, আমরা আল্লাহর উপরই নির্ভর করছি। হে আমাদের রাব্ব! আমাদের ও আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে সঠিকভাবে ফাইসালা করে দিন, আপনিইতো সর্বোত্তম ফাইসালাকারী। ৮৯
1043 ৭. আল-আ’রাফ আর তাদের সম্প্রদায়ের কাফির সর্দাররা বললঃ তোমরা যদি শু‘আইবকে অনুসরণ কর তাহলে তোমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ৯০
1044 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর ভূ-কম্পন তাদেরকে গ্রাস করল, ফলে তারা নিজেদের গৃহেই উপুড় হয়ে পড়ে রইল। ৯১
1045 ৭. আল-আ’রাফ অবস্থা দেখে মনে হল, যারা শু‘আইবকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল তারা যেন কখনও সেখানে বসবাস করেনি, শু‘আইবকে মিথ্যা প্রতিপন্নকারী লোকেরাই শেষ পর্যন্ত ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ৯২
1046 ৭. আল-আ’রাফ সে তাদের নিকট হতে এ কথা বলে বেরিয়ে এলোঃ হে আমার জাতি! আমি আমার রবের বার্তা তোমাদের নিকট পৌঁছিয়েছি এবং সৎ উপদেশ দিয়েছি। সুতরাং আমি কাফির সম্প্রদায়ের জন্য কি করে আক্ষেপ করতে পারি? ৯৩
1047 ৭. আল-আ’রাফ আমি কোন জনপদে নাবী রাসূল পাঠালে, ওর অধিবাসীদেরকে দুঃখ-দারিদ্র ও রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত করে থাকি, উদ্দেশ্য হল, তারা যেন নম্র ও বিনয়ী হয়। ৯৪
1048 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর আমি তাদের দুরাবস্থাকে সুখ স্বাচ্ছন্দ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দিয়েছি। অবশেষে তারা খুব প্রাচুর্যের অধিকারী হয়, আর তারা (অকৃতজ্ঞ স্বরে) বলেঃ আমাদের পূর্ব-পুরুষরাও এভাবে দুঃখ ভোগ করেছে। অতঃপর অকস্মাৎ আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম, কিন্তু তারা কিছুই বুঝতে পারলনা। ৯৫
1049 ৭. আল-আ’রাফ জনপদের অধিবাসীরা যদি ঈমান আনত এবং আল্লাহভীতি অবলম্বন করত তাহলে আমি তাদের জন্য আকাশ ও পৃথিবীর বরকতের দ্বারসমূহ খুলে দিতাম, কিন্তু তারা নাবী রাসূলদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, ফলে তাদের কৃতকর্মের জন্য আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম। ৯৬
1050 ৭. আল-আ’রাফ রাতে যখন তারা ঘুমিয়ে থাকে তখন আমার শাস্তি এসে তাদেরকে গ্রাস করে ফেলবে - এটা হতে কি জনপদের অধিবাসীরা নির্ভয় হয়ে পড়েছে ? ৯৭
1051 ৭. আল-আ’রাফ অথবা জনপদের লোকেরা কি এই ভয় রাখেনা যে, আমার শাস্তি তাদের উপর তখন আপতিত হবে যখন তারা পূর্বাহ্নে আমোদ প্রমোদে রত থাকবে ? ৯৮
1052 ৭. আল-আ’রাফ তারা কি আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিরাপদ হয়ে গেছে ? সর্বনাশগ্রস্থ সম্প্রদায় ছাড়া আল্লাহর পাকড়াও থেকে কেহই নি:শঙ্ক হতে পারেনা। ৯৯
1053 ৭. আল-আ’রাফ কোন এলাকার অধিবাসী ধ্বংস হওয়ার পর সেই এলাকার যারা উত্তরাধিকারী হয়, তাদের কাছে কি এটা প্রতীয়মান হয়নি যে, আমি ইচ্ছা করলে তাদের পাপের কারণে তাদেরকে শাস্তি দিতে পারি, আর তাদের অন্তঃকরণের উপর মোহর এটে দিতে পারি যাতে তারা কিছুই শুনতে পারেনা? ১০০
1054 ৭. আল-আ’রাফ ঐ জনপদগুলির কিছু ঘটনা আমি তোমার নিকট বর্ণনা করছি, তাদের কাছে রাসূলগণ সুস্পষ্ট দলীল প্রমাণসহ এসেছিল, কিন্তু পূর্বে তারা যা প্রত্যাখ্যান করেছিল তার প্রতি তারা ঈমান আনার ছিলনা, এমনিভাবেই আল্লাহ অবিশ্বাসীদের অন্তঃকরণের উপর মোহর মেরে দিয়েছেন। ১০১
1055 ৭. আল-আ’রাফ আমি তাদের অধিকাংশকে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারীরূপে পাইনি, তবে তাদের অধিকাংশকে পাপাচারী রূপে পেয়েছি। ১০২
1056 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর আমি মূসাকে আমার আয়াত ও নিদর্শনসহ ফির‘আউন ও তার পরিষদবর্গের নিকট পাঠালাম, কিন্তু তারা যুলম করল। সুতরাং এই বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পরিণাম কি হয়েছিল তা তুমি লক্ষ্য কর। ১০৩
1057 ৭. আল-আ’রাফ মূসা বললঃ হে ফির‘আউন! আমি বিশ্বের রবের একজন রাসূল। ১০৪
1058 ৭. আল-আ’রাফ আমি আল্লাহ সম্বন্ধে সত্য ছাড়া আর কিছুই বলবনা, আমি তোমাদের রবের পক্ষ হতে তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে এসেছি। সুতরাং বানী ইসরাঈলকে আমার সাথে যেতে দাও। ১০৫
1059 ৭. আল-আ’রাফ ফির‘আউন বললঃ তুমি যদি বাস্তবিকই স্পষ্ট দলীল ও কোন নিদর্শন এনে থাক তাহলে উপস্থিত কর, যদি তুমি সত্যবাদী হও। ১০৬
1060 ৭. আল-আ’রাফ তখন মূসা তার লাঠি নিক্ষেপ করল এবং সহসাই ওটা এক জীবিত অজগরে পরিণত হল। ১০৭
1061 ৭. আল-আ’রাফ আর সে তার হাত বের করল, তৎক্ষণাৎই ওটা দর্শকদের দৃষ্টিতে শুভ্র ও উজ্জ্বল আলোকময় প্রতিভাত হল। ১০৮
1062 ৭. আল-আ’রাফ ফির‘আউন সম্প্রদায়ের প্রধানরা বললঃ নিঃসন্দেহে এ ব্যক্তি বড় সুদক্ষ যাদুকর। ১০৯
1063 ৭. আল-আ’রাফ সে তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বহিস্কার করতে চায়, এখন তোমাদের পরামর্শ কী? ১১০
1064 ৭. আল-আ’রাফ তারা বললঃ তাকে এবং তার ভাইকে (হারুন) কিছু দিনের জন্য অবকাশ দিন, আর শহরে শহরে সংগ্রাহক পাঠিয়ে দিন। ১১১
1065 ৭. আল-আ’রাফ যেন তারা আপনার (ফির‘আউন) নিকট প্রত্যেক সুদক্ষ যাদুকরকে উপস্থিত করে। ১১২
1066 ৭. আল-আ’রাফ যাদুকরেরা ফির‘আউনের কাছে এসে বললঃ আমরা যদি বিজয় লাভ করতে পারি তাহলে আমাদের জন্য পুরস্কার থাকবে তো? ১১৩
1067 ৭. আল-আ’রাফ সে বললঃ হ্যাঁ, তোমরাই হবে আমার দরবারের নিকটতম ব্যক্তি। ১১৪
1068 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর যাদুকরেরা বললঃ হে মূসা! তুমি কি তোমার লাঠি নিক্ষেপ করবে, নাকি আমরাই (প্রথমে) নিক্ষেপ করব? ১১৫
1069 ৭. আল-আ’রাফ বললঃ তোমরাই নিক্ষেপ কর। সুতরাং যখন যাদুকরেরা নিক্ষেপ করল তখন লোকের চোখে ধাঁধাঁর সৃষ্টি করল এবং তাদেরকে ভীত ও আতংকিত করল, তারা এক বড় রকমের যাদু দেখাল। ১১৬
1070 ৭. আল-আ’রাফ আমি মূসার নিকট এই প্রত্যাদেশ পাঠালাম, তুমি তোমার লাঠিখানা নিক্ষেপ কর। মূসা তা নিক্ষেপ করলে ওটা (এক বিরাট অজগর হয়ে) সহসা ওদের অলীক সৃষ্টিগুলিকে গ্রাস করতে লাগল। ১১৭
1071 ৭. আল-আ’রাফ পরিশেষে যা হক ছিল তা সত্য প্রমাণিত হল, আর তারা যা কিছু করেছিল তা বাতিল প্রতিপন্ন হল। ১১৮
1072 ৭. আল-আ’রাফ আর ফির‘আউন ও তার দলবলের লোকেরা মুকাবিলার মাইদানে পরাজিত হল এবং লাঞ্ছিত ও অপমানিত হল। ১১৯
1073 ৭. আল-আ’রাফ যাদুকরেরা তখন সাজদাহবনত হল। ১২০
1074 ৭. আল-আ’রাফ তারা বললঃ আমরা বিশ্বের রবের প্রতি ঈমান আনলাম। ১২১
1075 ৭. আল-আ’রাফ মূসা ও হারূনের রবের প্রতি। ১২২
1076 ৭. আল-আ’রাফ ফির‘আউন বললঃ আমি অনুমতি দেয়ার আগেই তোমরা তার উপর ঈমান আনলে? নিশ্চয়ই তোমরা এক চক্রান্ত পাকিয়েছ শহরবাসীদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়ার জন্য। কিন্তু সত্ত্বরই তোমরা এর পরিণাম জ্ঞাত হবে। ১২৩
1077 ৭. আল-আ’রাফ অবশ্যই আমি তোমাদের বিপরীত হস্ত-পদ কর্তন করব, তারপর তোমাদের সবাইকে আমি শুলে চড়াব। ১২৪
1078 ৭. আল-আ’রাফ তারা (যাদুকরেরা) বললঃ নিশ্চয়ই আমরা আমাদের রবের নিকট ফিরে যাব। ১২৫
1079 ৭. আল-আ’রাফ তুমি আমাদের মধ্যে এছাড়া কোনই দোষ পাচ্ছনা যে, আমাদের কাছে যখন আমাদের রবের নিদর্শনাবলী এসে গেল তখন আমরা ঈমান এনেছি। হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে ধৈর্য দান করুন এবং মুসলিম রূপে আমাদের মৃত্যু দান করুন! ১২৬
1080 ৭. আল-আ’রাফ ফির‘আউন সম্প্রদায়ের সর্দাররা তাকে বললঃ তুমি কি মূসা ও তার সম্প্রদায়কে রাজ্যে অশান্তি ও বিপর্যয় সৃষ্টির জন্য মুক্ত ছেড়ে দিবে এবং তোমাকে ও তোমার দেবতাদেরকে বর্জন করে চলার সুযোগ দিবে? সে বললঃ আমি তাদের সন্তানদের হত্যা করব এবং তাদের নারীদেরকে জীবিত রাখব, তাদের উপর আমাদের শক্তি ও ক্ষমতা প্রবল ও সুপ্রতিষ্ঠিত রয়েছে। ১২৭
1081 ৭. আল-আ’রাফ মূসা তার সম্প্রদায়কে বললঃ তোমরা আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা কর এবং ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা অবলম্বন কর। এই পৃথিবীর সার্বভৌম মালিক আল্লাহ, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা উহার উত্তরাধিকারী করেন, শুভ পরিণাম ও শেষ সাফল্য লাভ হয় আল্লাহভীরুদের জন্য। ১২৮
1082 ৭. আল-আ’রাফ তারা বললঃ আপনি আমাদের নিকট (নাবী রূপে) আগমনের পূর্বেও আমরা (ফির‘আউন কর্তৃক) নির্যাতিত হয়েছি এবং আপনার আগমনের পরও নির্যাতিত হচ্ছি। সে (মূসা) বললঃ সম্ভবতঃ শীঘ্রই তোমাদের রাব্ব তোমাদের শক্রকে ধ্বংস করবেন এবং তোমাদেরকে তাদের রাজ্যে স্থলাভিষিক্ত করবেন, অতঃপর তোমরা কিরূপ কাজ কর তা তিনি লক্ষ্য করবেন। ১২৯
1083 ৭. আল-আ’রাফ আমি ফির‘আউনের অনুসারীদেরকে বছরের পর বছর দুর্ভিক্ষ, অজন্ম ও ফসলহানির মধ্যে বিপন্ন রেখেছিলাম, যাতে তারা ঈমান আনে। ১৩০
1084 ৭. আল-আ’রাফ যখন তাদের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ হত তখন তারা বলতঃ এটা আমাদের প্রাপ্য, আর যদি তাদের দুঃখ দৈন্য ও বিপদ আপদ হত তখন তারা ওটাকে মূসা ও তার সঙ্গী সাথীদের মন্দ ভাগ্যের কারণ রূপে নিরূপণ করত। তোমরা জেনে রেখ যে, তাদের অকল্যাণ আল্লাহরই নিয়ন্ত্রণাধীন, কিন্তু তাদের অধিকাংশ সে সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখেনা। ১৩১
1085 ৭. আল-আ’রাফ তারা বললঃ আমাদেরকে যাদু করার জন্য যে কোন নিদর্শনই পেশ করনা কেন আমরা তাতে ঈমান আনবনা। ১৩২
1086 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর আমি তাদের উপর প্লাবণ, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্ত ধারার শাস্তি পাঠিয়ে ক্লিষ্ট করি, ওগুলি ছিল আমার সুস্পষ্ট নিদর্শন, কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত দাম্ভিকতা ও অহংকারেই মেতে রইল, তারা ছিল একটি অপরাধী জাতি। ১৩৩
1087 ৭. আল-আ’রাফ তাদের উপর কোন বালা মুসীবত ও বিপদ-আপদ আপতিত হলে তারা বলতঃ হে মূসা! আমাদের পক্ষ থেকে তোমার রবের নিকট দু‘আ কর। তার সাথে তোমার যে অঙ্গীকার রয়েছে তদনুযায়ী যদি আমাদের উপর থেকে প্লেগ দূর করে দিতে পার তাহলে আমরা তোমার প্রতি ঈমান আনবো এবং তোমার সাথে বানী ইসরাঈলদেরকে পাঠিয়ে দিব। ১৩৪
1088 ৭. আল-আ’রাফ কিন্তু যখনই আমি তাদের উপর হতে প্লেগের শাস্তির সেই সময়টি অপসারিত করতাম যা তাদের জন্য নির্ধারিত ছিল, তখনই আবার তারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করত। ১৩৫
1089 ৭. আল-আ’রাফ সুতরাং আমি তাদের হতে প্রতিশোধ নিলাম এবং তাদেরকে অতল সমুদ্রে ডুবিয়ে মারলাম, কেননা তারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, আর এই ব্যাপারে তারা ছিল সম্পূর্ণ গাফিল বা উদাসীন। ১৩৬
1090 ৭. আল-আ’রাফ যে জাতিকে দুর্বল ও দীনহীন ভাবা হত আমি তাদেরকে আমার কল্যাণ প্রাপ্ত রাজ্যের পূর্ব ও পশ্চিমের উত্তরাধিকারী বানাই, আর বানী ইসরাঈল জাতি সম্পর্কে তোমার রবের শুভ ও কল্যাণময় বাণী (প্রতিশ্রুতি) পূর্ণ হল যেহেতু তারা ধৈর্য ধারণ করেছিল। আর ফির‘আউন ও তার সম্প্রদায়ের কীর্তিকলাপ ও উচ্চ প্রাসাদসমূহকে আমি ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছি। ১৩৭
1091 ৭. আল-আ’রাফ আমি বানী ইসরাঈলকে সমুদ্র পার করিয়ে দিলাম, অতঃপর তারা মূর্তি পূজারত এক জাতির সংস্পর্শে এল। তারা বললঃ হে মূসা! তাদের যেরূপ মা‘বূদ রয়েছে, আমাদের জন্যও ঐরূপ মা‘বূদ বানিয়ে দাও। সে বললঃ তোমরা একটি মূর্খ সম্প্রদায়। ১৩৮
1092 ৭. আল-আ’রাফ এ সব লোক যে কাজে লিপ্ত রয়েছে তাতো ধ্বংস করা হবে, আর তারা যা করছে তা অমূলক ও বাতিল বিষয়। ১৩৯
1093 ৭. আল-আ’রাফ সে বললঃ আমি কি আল্লাহকে ছেড়ে তোমাদের জন্য অন্য মা‘বূদের সন্ধান করব? অথচ তিনিই হলেন একমাত্র আল্লাহ যিনি তোমাদেরকে বিশ্ব জগতে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন! ১৪০
1094 ৭. আল-আ’রাফ স্মরণ কর সেই সময়টির কথা, যখন আমি তোমাদেরকে ফির‘আউনের অনুসারীদের দাসত্ব হতে মুক্তি দিয়েছি, যারা তোমাদেরকে অতিশয় মর্মান্তিক, কষ্টদায়ক ও ন্যাক্কারজনক শাস্তি দিত, তোমাদের পুত্রদেরকে হত্যা করত এবং নারীদেরকে জীবিত রাখত। এটা ছিল তোমাদের জন্য তোমাদের রবের পক্ষ থেকে বিরাট পরীক্ষা। ১৪১
1095 ৭. আল-আ’রাফ আমি মূসাকে ও‘য়াদা দিয়েছিলাম ত্রিশ রাতের জন্য এবং আরো দশ দ্বারা ওটা পূর্ণ করেছিলাম। এভাবে তার রবের নির্ধারিত সময়টি চল্লিশ রাত দ্বারা পূর্ণতা লাভ করে। মূসা তার ভাই হারুনকে বলেছিলঃ তুমি আমার কাওমের মধ্যে আমার স্থলাভিষিক্তরূপে কাজ করবে এবং তাদেরকে সংশোধন করার কাজ করতে থাকবে, এবং বিপর্যয় ও ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের অনুসরণ করবেনা। ১৪২
1096 ৭. আল-আ’রাফ মূসা যখন নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হল, তখন তার রাব্ব তার সাথে কথা বললেন। সে তখন নিবেদন করলঃ হে আমার রাব্ব! আপনি আমাকে দর্শন দিন। আল্লাহ বললেনঃ তুমি আমাকে আদৌ দেখতে পারবেনা, তবে তুমি ঐ পাহাড়ের দিকে তাকাও। যদি ঐ পাহাড় স্বস্থানে স্থির থাকে তাহলে তুমি আমাকে দেখতে পারবে। অতঃপর তার রাব্ব যখন পাহাড়ে জ্যোতিস্মান হলেন তখন তা পাহাড়কে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দিল, আর মূসা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে গেল। যখন চেতনা ফিরে এলো তখন সে বললঃ আপনি মহিমাময়, আপনার পবিত্র সত্তার কাছে আমি তাওবাহ করছি এবং আমিই সর্বপ্রথম ঈমান আনলাম। ১৪৩
1097 ৭. আল-আ’রাফ আল্লাহ বললেনঃ হে মূসা! আমি তোমাকেই আমার রিসালাত ও আমার সাথে বাক্যালাপের জন্য লোকদের মধ্য হতে মনোনীত করেছি। অতএব আমি তোমাকে যা কিছু দিই তা তুমি গ্রহণ কর এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারীদের অন্তর্ভুক্ত হও। ১৪৪
1098 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর আমি তার জন্য ফলকের উপর সর্ব বিষয়ের উপদেশ এবং সর্ব বিষয়ের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা লিখে দিয়েছি, (অতঃপর তাকে বললাম) এই হিদায়াতকে দৃঢ় হস্তে শক্তভাবে গ্রহণ কর এবং তোমার সম্প্রদায়কে এর সুন্দর সুন্দর বিধানগুলি মেনে চলতে আদেশ কর। আমি ফাসেক বা সত্যত্যাগীদের আবাসস্থান শীঘ্রই তোমাদেরকে প্রদর্শন করাব। ১৪৫
1099 ৭. আল-আ’রাফ পৃথিবীতে যারা অন্যায়ভাবে অহংকার করে বেড়ায় আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনসমূহ হতে ফিরিয়ে রাখব, প্রত্যেকটি নিদর্শন দেখার পরেও তারা তাতে ঈমান আনবে না, তারা যদি সৎ পথ দেখতে পায় তবুও সেই পথ সৎ পথ বলে গ্রহণ করবে না। কিন্তু তারা ভ্রান্ত ও গুমরাহীর পথ দেখলে তাকেই তারা গ্রহণ করবে। এর কারণ হল-তারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং তারা তা থেকে সম্পূর্ণরূপে অমনোযোগী ছিল। ১৪৬
1100 ৭. আল-আ’রাফ যারা আমার নিদর্শনসমূহ ও আখিরাতের সাক্ষাত মিথ্যা প্রতিপন্ন করে তাদের সমূদয় ‘আমল বিনষ্ট হয়ে যায়, তারা যা করে তদনুযায়ী তাদেরকে প্রতিফল দেয়া হবে। ১৪৭
1101 ৭. আল-আ’রাফ আর মূসার চলে যাবার পর অলংকার দ্বারা একটি বাছুরের (মত) পুতুল তৈরী করল, ওটা হতে গরুর মত শব্দ বের হত। তারা কি দেখেনি যে, ওটা তাদের সাথে কথা বলেনা এবং তাদেরকে কোন পথও দেখিয়ে দেয়না? তবুও তারা ওটাকে মা‘বূদ রূপে গ্রহণ করল। বস্তুতঃ তারা ছিল বড় অত্যাচারী। ১৪৮
1102 ৭. আল-আ’রাফ আর যখন তারা লজ্জিত হল এবং দেখল যে, (প্রকৃত পক্ষে) তারা বিভ্রান্ত হয়েছে, তখন তারা বললঃ আমাদের প্রভু যদি আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব। ১৪৯
1103 ৭. আল-আ’রাফ মূসা রাগাম্বিত বিক্ষুদ্ধ অবস্থায় নিজ জাতির নিকট ফিরে এসে বললঃ আমার চলে যাওয়ার পর তোমরা কত নিকৃষ্ট প্রতিনিধিত্ব করেছ, তোমরা তোমাদের প্রভুর নির্দেশের পূর্বেই কেন তাড়াহুড়া করতে গেলে? অতঃপর সে ফলকগুলি ফেলে দিল এবং স্বীয় ভাইয়ের মস্তক (চুল) ধরে নিজের দিকে টানতে লাগল। সে (হারূন) বললঃ হে আমার মাতার পুত্র! এই লোকগুলি আমাকে পরাভূত করে ফেলেছিল এবং আমাকে মেরে ফেলতে উদ্যত হয়েছিল। অতএব তুমি আমাকে শক্র সমক্ষে হাস্যস্পদ করনা, আর এই যালিম লোকদের মধ্যে আমাকে গণ্য করনা। ১৫০
1104 ৭. আল-আ’রাফ তখন মূসা বললঃ হে আমার রাব্ব! আমাকে ও আমার ভাইকে ক্ষমা করুন! আর আমাদেরকে আপনার রাহমাতের মধ্যে দাখিল করুন! আপনি সব চেয়ে দয়াবান। ১৫১
1105 ৭. আল-আ’রাফ যারা গো-বৎসকে উপাস্য রূপে গ্রহণ করেছে, অবশ্যই তারা এই পার্থিব জীবনে তাদের রবের গযব ও লাঞ্ছনায় নিপতিত হবে, মিথ্যা রচনাকারীদেরকে আমি এভাবেই প্রতিফল দিয়ে থাকি। ১৫২
1106 ৭. আল-আ’রাফ যারা খারাপ কাজ করে, এরপর তাওবাহ করলে ও ঈমান আনলে, তোমার আল্লাহতো ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। ১৫৩
1107 ৭. আল-আ’রাফ মূসার ক্রোধ যখন প্রশমিত হল তখন সে প্রস্তর ফলকগুলি তুলে নিল, তাতে লেখা ছিলঃ যারা তাদের রাব্বকে ভয় করে তাদের জন্য রয়েছে হিদায়াত ও রাহমাত। ১৫৪
1108 ৭. আল-আ’রাফ মূসা তার সম্প্রদায় হতে সত্তর জন নেতৃস্থানীয় লোক আমার নির্ধারিত স্থানে সমবেত হওয়ার জন্য নির্বাচন করল, যখন ঐ লোকগুলি একটি কঠিন ভূ-কম্পনে আক্রান্ত হল তখন মূসা বললঃ হে আমার রাব্ব! আপনি ইচ্ছা করলে এর পূর্বেও ওদেরকে এবং আমাকে ধ্বংস করতে পারতেন, আমাদের মধ্যকার কতক নির্বোধ লোকের অন্যায়ের কারণে কি আপনি আমাদেরকে ধ্বংস করবেন? এটাতো আপনার পরীক্ষা, আপনি যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎ পথে পরিচালিত করেন, আপনিইতো আমাদের অভিভাবক। সুতরাং আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করুন, এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করুন, ক্ষমাকারীদের মধ্যে আপনিইতো উত্তম ক্ষমাকারী। ১৫৫
1109 ৭. আল-আ’রাফ অতএব আমাদের জন্য এই দুনিয়ায় ও পরকালে কল্যাণ নির্ধারিত করে দিন, আমরা আপনার নিকটই প্রত্যাবর্তন করেছি। তিনি (আল্লাহ) বললেনঃ যাকে ইচ্ছা আমি আমার শাস্তি দিয়ে থাকি, আর আমার করুণা ও দয়া প্রতিটি জিনিসকেই পরিব্যপ্ত করে রয়েছে, সুতরাং আমি তাদের জন্যই কল্যাণ অবধারিত করব যারা পাপাচার হতে বিরত থাকে, যাকাত দেয় এবং আমার নিদর্শনসমূহের প্রতি ঈমান আনে। ১৫৬
1110 ৭. আল-আ’রাফ যারা সেই নিরক্ষর রাসূলের অনুসরণ করে চলে যার কথা তারা তাদের নিকট রক্ষিত তাওরাত ও ইঞ্জীল কিতাবে লিখিত পায়, যে মানুষকে সৎ কাজের নির্দেশ দেয় ও অন্যায় কাজ করতে নিষেধ করে, আর সে তাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ বৈধ করে এবং অপবিত্র ও খারাপ বস্তুকে তাদের প্রতি অবৈধ করে, আর তাদের উপর চাপানো বোঝা ও বন্ধন হতে তাদেরকে মুক্ত করে। সুতরাং তার প্রতি যারা ঈমান রাখে, তাকে সম্মান করে এবং সাহায্য করে ও সহানুভূতি প্রকাশ করে, আর সেই আলোকের অনুসরণ করে চলে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, তারাই (ইহকালে ও পরকালে) সাফল্য লাভ করবে। ১৫৭
1111 ৭. আল-আ’রাফ বলঃ হে মানবমন্ডলী! আমি তোমাদের সকলের জন্য সেই আল্লাহর রাসূল রূপে প্রেরিত হয়েছি, যিনি আকাশ ও ভূ-মন্ডলের সার্বভৌম একচ্ছত্র মালিক, তিনি ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, তিনিই জীবিত করেন ও মৃত্যু ঘটান। সুতরাং আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর সেই বার্তাবাহক নিরক্ষর নাবীর প্রতি ঈমান আন। যে আল্লাহ ও তাঁর কালামে বিশ্বাস স্থাপন করে, তোমরা তারই অনুসরণ কর। আশা করা যায়, তোমরা সরল সঠিক পথের সন্ধান পাবে। ১৫৮
1112 ৭. আল-আ’রাফ মূসার সম্প্রদায়ের মধ্যে এমন একদল লোক রয়েছে যারা সঠিক ও নির্ভুল পথ প্রদর্শন করে এবং ন্যায় বিচার করে। ১৫৯
1113 ৭. আল-আ’রাফ আমি বানী ইসরাঈলকে দ্বাদশ গোত্রে বিভক্ত করেছি। মূসার সম্প্রদায়ের লোকেরা যখন তার কাছে পানির দাবী জানাল, তখন আমি মূসার কাছে প্রত্যাদেশ পাঠালাম - তোমার লাঠি দ্বারা পাথরে আঘাত কর, ফলে ওটা হতে দ্বাদশ প্রস্রবণ উৎসারিত হল, প্রত্যেক গোত্র নিজ নিজ পানস্থান জেনে নিল। আর আমি তাদের উপর মেঘ দ্বারা ছায়া বিস্তার করলাম এবং তাদের জন্য আকাশ হতে ‘মান্না’ ও ‘সালওয়া’ খাদ্যরূপী নি‘আমাত অবতীর্ণ করলাম। সুতরাং (আমি বললাম) তোমাদেরকে যা কিছু পবিত্র জীবিকা দান করা হয়েছে তা আহার কর। (কিন্তু ওরা আমার শর্ত উপেক্ষা করে যুলম করল) তারা আমার উপর কোন যুলম করেনি, বরং তারা নিজেদের উপরই যুলম করেছে। ১৬০
1114 ৭. আল-আ’রাফ যখন আমি তাদেরকে বলেছিলামঃ এই (বাইতুল মুকাদ্দাস ও তৎসংশ্লিষ্ট) জনপদে বসবাস কর এবং যা ইচ্ছা আহার কর, আর তোমরা বলঃ (হে রাব্ব!) ক্ষমা চাই, আর দ্বারদেশ দিয়ে নত শিরে প্রবেশ কর; আমি তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করব এবং সৎ কর্মশীল লোকদের জন্য আমার দান বৃদ্ধি করব। ১৬১
1115 ৭. আল-আ’রাফ কিন্তু তাদের মধ্যে যারা যালিম ও সীমা লংঘনকারী ছিল, তারা সেই কথা পরিবর্তন করে ফেললো যা তাদেরকে বলতে বলা হয়েছিল, সুতরাং তাদের সীমা লংঘনের কারণে আমি আসমান হতে তাদের উপর শাস্তি প্রেরণ করলাম। ১৬২
1116 ৭. আল-আ’রাফ আর তাদেরকে সেই জনপদের অবস্থাও জিজ্ঞেস কর যা সমুদ্রের তীরে অবস্থিত ছিল। যখন তারা শনিবারের আদেশ লংঘন করেছিল। শনিবার উদযাপনের দিন মাছ পানিতে ভেসে তাদের নিকট আসত, কিন্তু যেদিন তারা শনিবার উদযাপন করতনা, সেদিন ওগুলি তাদের কাছে আসতনা, এভাবে আমি তাদের নাফরমানীর কারণে তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম। ১৬৩
1117 ৭. আল-আ’রাফ যখন তাদের একদল লোক অপর দলের নিকট বলেছিলঃ ঐ জাতিকে তোমরা কেন উপদেশ দিচ্ছ যাদেরকে আল্লাহ ধ্বংস করবেন অথবা কঠিন শাস্তি দিবেন? তারা উত্তরে বললঃ তোমাদের রবের নিকট দোষমুক্তির জন্য এবং এই আশা করছি যে, হয়তো তারা তাঁকে ভয় করবে। ১৬৪
1118 ৭. আল-আ’রাফ তাদেরকে যে উপদেশ দেয়া হয় তা যখন তারা বিস্মৃত হয় তখন যারা অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করত তাদেরকে আমি উদ্ধার করি, আর যালিমদেরকে তাদের অসৎ কর্মের কারণে কঠোর শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করলাম। ১৬৫
1119 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর যখন তারা বেপরোয়াভাবে নিষিদ্ধ কাজগুলি করতে থাকল তখন আমি বললামঃ তোমরা ঘৃণিত ও লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও। ১৬৬
1120 ৭. আল-আ’রাফ তোমার রাব্ব ঘোষণা করলেন যে, তিনি তাদের (ইয়াহুদীদের) উপর কিয়ামাত পর্যন্ত এমন সব লোককে শক্তিশালী করে প্রেরণ করতে থাকবেন যারা তাদেরকে কঠিনতর শাস্তি দিতে থাকবে। নিঃসন্দেহে তোমার রাব্ব শাস্তি দানে ক্ষিপ্র হস্ত, আর নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহশীল। ১৬৭
1121 ৭. আল-আ’রাফ আমি তাদেরকে বিভিন্ন দলে দুনিয়ায় বিস্তৃত করেছি, তাদের কতক লোক সদাচারী, আর কিছু লোক ভিন্নতর। আর আমি ভাল ও মন্দের মধ্যে নিপতিত করে তাদেরকে পরীক্ষা করে থাকি যাতে তারা আমার পথে ফিরে আসে। ১৬৮
1122 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর তাদের অযোগ্য উত্তরসুরীরা একের পর এক তাদের স্থলাভিষিক্ত হয় এবং তারা কিতাবেরও উত্তরাধিকারী হয়। কিন্তু তারা এই নিকৃষ্ট দুনিয়ার স্বার্থাবলী করায়ত্ত্ব করে আর বলেঃ আমাদেরকে ক্ষমা করা হবে। বস্তুতঃ ওর অনুরূপ সামগ্রী আবার তাদের নিকট এলে ওটাও তারা গ্রহণ করে। তাদের নিকট হতে কি কিতাবের প্রতিশ্রুতি নেয়া হয়নি যে, আল্লাহর নামে সত্য ছাড়া কিছুই বলবেনা? আর কিতাবে যা রয়েছে তাতো তারা অধ্যয়নও করে। মুত্তাকী ও আল্লাহভীরু লোকদের জন্য পরকালের সামগ্রী, তোমরা কি এতটুকু কথাও অনুধাবণ করতে পারনা? ১৬৯
1123 ৭. আল-আ’রাফ যারা আল্লাহর কিতাবকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে এবং সালাত কায়েম করে; আমিতো সৎ কর্মশীলদের কর্মফল নষ্ট করিনা। ১৭০
1124 ৭. আল-আ’রাফ যখন আমি বানী ইসরাঈলের উপর পাহাড়কে স্থাপন করি, ওটা ছিল কোন একটি ছায়ার ন্যায়, তারা তখন মনে করেছিল যে, ওটা তাদের উপর পড়ে যাবে। তোমাদেরকে যা দিয়েছি তা দৃঢ়ভাবে শক্ত হাতে ধারণ কর এবং ওতে যা রয়েছে তা স্মরণ রেখ। আশা করা যায় যে, তোমরা তাকওয়ার অধিকারী হবে। ১৭১
1125 ৭. আল-আ’রাফ যখন তোমার রাব্ব বানী আদমের পৃষ্ঠদেশ হতে তাদের বংশধরদেরকে বের করলেন এবং তাদেরকেই তাদের উপর সাক্ষী বানিয়ে জিজ্ঞেস করলেনঃ আমি কি তোমাদের রাব্ব (প্রভু) নই? তারা সমস্বরে উত্তর দিলঃ ‘হ্যাঁ! আমরা সাক্ষী থাকলাম।’ (এটা এ জন্য যে) যাতে তোমরা কিয়ামাত দিবসে বলতে না পার, ‘‘আমরা এ বিষয়ে সম্পূর্ণ অনবহিত ছিলাম।’’ ১৭২
1126 ৭. আল-আ’রাফ অথবা তোমরা যেন কিয়ামাত দিবসে এ কথা বলতে না পার - আমাদের পূর্ব-পুরুষরাইতো আমাদের পূর্বে শির্‌ক করেছিল, আমরা ছিলাম (শুধুমাত্র) তাদের পরবর্তী বংশধর। সুতরাং আপনি কি আমাদেরকে সেই ভ্রান্ত ও বাতিলদের কৃতকর্মের দরুণ ধ্বংস করবেন? ১৭৩
1127 ৭. আল-আ’রাফ এভাবেই আমি নিদর্শনাবলী বিশদভাবে বিবৃত করি যাতে তারা ফিরে আসে। ১৭৪
1128 ৭. আল-আ’রাফ তুমি এদেরকে সেই ব্যক্তির বৃত্তান্ত শুনিয়ে দাও, যাকে আমি নিদর্শন দান করেছিলাম, কিন্তু সে উহা বর্জন করে। ফলে শাইতান তার পিছনে লেগে যায়, আর সে পথভ্রষ্টদের মধ্যে শামিল হয়ে যায়। ১৭৫
1129 ৭. আল-আ’রাফ আর আমি ইচ্ছা করলে তাকে এই আয়াতসমূহের সাহায্যে উন্নত করতাম, কিন্তু সে দুনিয়ার প্রতি অধিক ঝুঁকে পড়ে এবং স্বীয় কামনা বাসনার (প্রবৃত্তির) অনুসরণ করতে থাকে। তার উদাহরণ একটি কুকুরের ন্যায়, ওকে যদি তুমি কষ্ট দাও তাহলে জিহবা বের করে হাঁপায়, আবার কষ্ট না দিলেও জিহবা বের করে হাঁপাতে থাকে। যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, এই উদাহরণ হল সেই সম্প্রদায়ের জন্য। তুমি কাহিনী বর্ণনা করে শোনাতে থাক, হয়তো তারা এটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে। ১৭৬
1130 ৭. আল-আ’রাফ কতই না মন্দ উদাহরণ সেই সম্প্রদায়ের জন্য যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে এবং তারা নিজেরাই নিজেদের উপর অত্যাচার করতে থাকে। ১৭৭
1131 ৭. আল-আ’রাফ আল্লাহ যাকে পথ দেখান সে’ই পথ প্রাপ্ত হয়, আর যাকে তিনি পথ প্রদর্শন হতে বঞ্চিত করেন সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৭৮
1132 ৭. আল-আ’রাফ আমি বহু জিন ও মানুষকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি। তাদের হৃদয় রয়েছে, কিন্তু তারা তদ্বারা উপলব্ধি করেনা; তাদের চক্ষু রয়েছে, কিন্তু তারা তদ্বারা দেখেনা। তাদের কর্ণ রয়েছে, কিন্তু তদ্বারা তারা শোনেনা। তারাই হল পশুর ন্যায়, বরং তা অপেক্ষাও অধিক বিভ্রান্ত। তারাই হল গাফিল বা উদাসীন। ১৭৯
1133 ৭. আল-আ’রাফ আর আল্লাহর জন্য সুন্দর সুন্দর নাম রয়েছে, সুতরাং তোমরা তাঁকে সেই সব নামেই ডাকবে, আর তাদেরকে বর্জন কর যারা তাঁর নাম বিকৃত করে, সত্ত্বরই তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের প্রতিফল দেয়া হবে। ১৮০
1134 ৭. আল-আ’রাফ আর আমি যাদেরকে সৃষ্টি করেছি তাদের মধ্যে এমন একটি দলও রয়েছে যারা সত্য পথের দা‘ওয়াত দেয় এবং ন্যায় বিচার করে। ১৮১
1135 ৭. আল-আ’রাফ যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, আমি তাদের অজ্ঞাতে তাদেরকে ধীরে ধীরে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাব। ১৮২
1136 ৭. আল-আ’রাফ আমি তাদেরকে অবকাশ দিচ্ছি, নিশ্চয়ই আমার কৌশল অতি শক্ত। ১৮৩
1137 ৭. আল-আ’রাফ তারা কি এটা চিন্তা করেনা যে, তাদের সঙ্গী পাগল নয়? সে নিছক একজন সুস্পষ্ট ভয় প্রদর্শনকারী! ১৮৪
1138 ৭. আল-আ’রাফ তারা কি আল্লাহর সৃষ্টি আকাশসমূহ ও পৃথিবীর ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কোন গভীর চিন্তা করেনা? এবং তাদের জীবনে নির্দিষ্ট মেয়াদটি পূর্ণ হওয়ার সময়টি হয়তো বা নিকটে এসে পড়েছে, তারা কি এটাও চিন্তা করেনা? এরপর তারা আর কোন কথায় ঈমান আনবে? ১৮৫
1139 ৭. আল-আ’রাফ যাদেরকে আল্লাহ বিপথগামী করেন, তাদের কোন পথ প্রদর্শক নেই, আর আল্লাহ তাদেরকে তাদেরই বিভ্রান্তির মধ্যে উদভ্রান্তের ন্যায় ঘুরে বেড়াতে ছেড়ে দেন। ১৮৬
1140 ৭. আল-আ’রাফ তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করছে, কিয়ামাত কখন সংঘটিত হবে? তুমি বলে দাওঃ এ বিষয়ে আমার রাব্বই একমাত্র জ্ঞানের অধিকারী, শুধু তিনিই ওটা ওর নির্ধারিত সময়ে প্রকাশ করবেন, তা হবে আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে এক ভয়ংকর ঘটনা। তোমাদের উপর ওটা আকস্মিকভাবেই আসবে। তুমি যেন এ বিষয় সবিশেষ অবগত, এটা ভেবে তারা তোমাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। তুমি বলে দাওঃ এ সম্পর্কীয় জ্ঞান একমাত্র আমার রবেরই রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ লোকই এ কথা বুঝেনা। ১৮৭
1141 ৭. আল-আ’রাফ তুমি বলঃ আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা ছাড়া আমার নিজের ভাল-মন্দ বিষয়ে আমার কোন অধিকার নেই। আমি যদি অদৃশ্য তত্ত্ব ও খবর জানতাম তাহলে আমি রবের কল্যাণ লাভ করতে পারতাম, আর কোন অকল্যাণই আমাকে স্পর্শ করতে পারতনা, আমিতো শুধু মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্য একজন ভয় প্রদর্শনকারী ও সুসংবাদবাহী। ১৮৮
1142 ৭. আল-আ’রাফ তিনিই আল্লাহ যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন এবং সেই ব্যক্তি হতেই তার সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যেন সে তার নিকট থেকে প্রশান্তি লাভ করতে পারে। অতঃপর যখন সে তার সাথে মিলনে প্রবৃত্ত হয় তখন সেই মহিলাটি এক গোপন ও লঘু গর্ভ ধারণ করে, আর ওটা নিয়ে চলাফেরা করতে থাকে। যখন তার গর্ভ গুরুভার হয় তখন তারা উভয়েই তাদের রবের কাছে প্রার্থনা করেঃ আপনি যদি আমাদেরকে সৎ সন্তান দান করেন তাহলে আমরা আপনার কৃতজ্ঞ বান্দা হব। ১৮৯
1143 ৭. আল-আ’রাফ অতঃপর তিনি যখন তাদেরকে সৎ ও সুস্থ সন্তান দান করেন তখন তারা আল্লাহর দেয়া এই দানে অংশী স্থাপন করে, কিন্তু তারা যাকে অংশী করে আল্লাহ তার অনেক উর্ধ্বে। ১৯০
1144 ৭. আল-আ’রাফ তারা কি এমন বস্তুকে (আল্লাহর সাথে) অংশী করে যারা কোন বস্তুই সৃষ্টি করেনা, বরং তারা নিজেরাই (আল্লাহর দ্বারা) সৃষ্ট? ১৯১
1145 ৭. আল-আ’রাফ তারা যেমন তাদের কোন সাহায্য করার ক্ষমতা রাখেনা, তেমনি নিজেরাও কোন সাহায্য করতে পারেনা। ১৯২
1146 ৭. আল-আ’রাফ তোমরা যদি ওদেরকে সৎ পথে ডাক তাহলে তারা তোমাদের অনুসরণ করবেনা, তাদেরকে ডাকা অথবা চুপ করে থাকা উভয়ই তোমাদের পক্ষে সমান। ১৯৩
1147 ৭. আল-আ’রাফ আল্লাহ ছাড়া তোমরা যাদেরকেই ডাক, তারাতো তোমাদেরই মত বান্দা। সুতরাং যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে তাদেরকে উপাস্য হিসাবে ডাকতে থাক, দেখ তোমাদের ডাকে সাড়া দেয় কি না! ১৯৪
1148 ৭. আল-আ’রাফ তাদের কি পা আছে যা দ্বারা চলছে? তাদের কি হাত আছে যদ্বারা কোন কিছু ধরে থাকে অথবা চক্ষু আছে যা দ্বারা দেখতে পায়? তাদের কি কর্ণ আছে যা দ্বারা শুনে থাকে? তুমি বলঃ আল্লাহর সাথে তোমরা যাদেরকে অংশী করছ তাদেরকে ডাক, তারপর (সকলে একত্রিত হয়ে) আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতে থাক, আমাকে আদৌ কোন অবকাশ দিওনা। ১৯৫
1149 ৭. আল-আ’রাফ আমার অভিভাবক হলেন সেই আল্লাহ যিনি কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, আর তিনিই সৎ কর্মশীলদের অভিভাবকত্ব করে থাকেন। ১৯৬
1150 ৭. আল-আ’রাফ আল্লাহ ছাড়া তোমরা যাদেরকে ডাক তারা তোমাদের সাহায্য করার কোন ক্ষমতা রাখেনা এবং নিজেদেরকেও সাহায্য করতে পারেনা। ১৯৭
1151 ৭. আল-আ’রাফ যদি তুমি তাদেরকে (মূর্তি) হিদায়াতের পথে ডাক তাহলে সে ডাক তারা শুনবেনা। আর তুমি দেখবে যে, তারা তোমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে, আসলে তারা কিছুই দেখছেনা। ১৯৮
1152 ৭. আল-আ’রাফ তুমি বিনয় ও ক্ষমা পরায়ণতার নীতি গ্রহণ কর, এবং লোকদেরকে সৎ কাজের নির্দেশ দাও, আর মূর্খদেরকে এড়িয়ে চল। ১৯৯
1153 ৭. আল-আ’রাফ শাইতানের কু-মন্ত্রণা যদি তোমাকে প্ররোচিত করে তাহলে তুমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর, তিনি সর্ব শ্রোতা ও সর্বজ্ঞ। ২০০
1154 ৭. আল-আ’রাফ যারা আল্লাহভীরু, শাইতান যখন তাদেরকে কু-মন্ত্রণা দেয়, সাথে সাথে তারা আত্মসচেতন হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তাদের জ্ঞান চক্ষু ফিরে পায়। ২০১
1155 ৭. আল-আ’রাফ শাইতান যাদের অনুগত সাথী, তারা আরও বিভ্রান্তি ও গুমরাহীর মধ্যে প্রবেশ করে, এ প্রচেষ্টায় তারা আদৌ থেমে থাকেনা। ২০২
1156 ৭. আল-আ’রাফ তুমি যখন কোন নিদর্শন ও মু’জিযা তাদের কাছে পেশ করনা, তখন তারা বলেঃ আপনি এ সব মু’জিযা কেন পেশ করেননা? তুমি বলঃ আমার রবের নিকট থেকে আমার কাছে যা কিছু প্রত্যাদেশ পাঠানো হয়, আমি শুধুমাত্র তারই অনুসরণ করি। এই কুরআন তোমার রবের নিকট থেকে বিশেষ নিদর্শন, আর এটা ঈমানদার সম্প্রদায়ের জন্য হিদায়াত ও রাহমাত। ২০৩
1157 ৭. আল-আ’রাফ যখন কুরআন পাঠ করা হয় তখন তোমরা মনোযোগের সাথে তা শ্রবণ করবে এবং নীরব নিশ্চুপ হয়ে থাকবে, হয়তো তোমাদের প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ প্রদর্শন করা হবে। ২০৪
1158 ৭. আল-আ’রাফ তোমার রাব্বকে মনে মনে সবিনয় ও সশংক চিত্তে অনুচ্চস্বরে প্রত্যুষে ও সন্ধ্যায় স্মরণ করবে, আর (হে নাবী!) তুমি এ ব্যাপারে গাফিল ও উদাসীন হয়ো না । ২০৫
1159 ৭. আল-আ’রাফ যারা (অর্থাৎ ফেরেশতা) তোমাদের রবের সান্নিধ্যে থাকে তারা তাঁরই গুণগান ও মহিমা প্রকাশ করে এবং তাঁরই সম্মুখে সাজদাহবনত হয়। [সাজদাহ] ২০৬
1160 ৮. আল-আনফাল হে নাবী! লোকেরা তোমাকে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। তুমি বলঃ যুদ্ধলব্ধ সম্পদ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্য। অতএব তোমরা এ ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমাদের নিজেদের পারস্পরিক সম্পর্ক সঠিক রূপে গড়ে নাও, আর যদি তোমরা মু’মিন হয়ে থাক তাহলে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর।
1161 ৮. আল-আনফাল নিশ্চয়ই মু’মিনরা এরূপই হয় যে, যখন (তাদের সামনে) আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয় তখন তাদের অন্তরসমূহ ভীত হয়ে পড়ে, আর যখন তাদের সামনে তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তাদের ঈমান আরও বৃদ্ধি পায়, আর তারা নিজেদের রবের উপর নির্ভর করে।
1162 ৮. আল-আনফাল যারা সালাত সুপ্রতিষ্ঠিত করে এবং আমি যা কিছু তাদেরকে দিয়েছি তা থেকে তারা খরচ করে।
1163 ৮. আল-আনফাল এরাই সত্যিকারের ঈমানদার, এদের জন্য রয়েছে তাদের রবের সন্নিধানে উচ্চ পদসমূহ, আরও রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা।
1164 ৮. আল-আনফাল যেরূপ তোমার রাব্ব তোমাকে তোমার গৃহ হতে (বদরের দিকে) বের করলেন, আর মুসলিমদের একটি দল তা পছন্দ করেনি ।
1165 ৮. আল-আনফাল সেই যথার্থ বিষয় প্রকাশ হওয়ার পরও ওতে তারা তোমার সাথে এরূপ বিবাদ করছিল যেন কেহ তাদেরকে মৃত্যুর দিকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, আর তারা তা প্রত্যক্ষ করছে।
1166 ৮. আল-আনফাল স্মরণ কর, যখন আল্লাহ তোমাদেরকে দু’টি দলের মধ্য হতে একটি সম্বন্ধে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, ওটা তোমাদের করতলগত হবে। তোমরা এই আশা করেছিলে যেন নিরস্ত্র দলটি তোমাদের আয়ত্তে এসে পড়ে, আর আল্লাহর ইচ্ছা ছিল এই যে, তিনি স্বীয় নির্দেশাবলী দ্বারা সত্যকে সত্যরূপে প্রতিষ্ঠা করেন এবং কাফিরদেরকে নির্মূল করেন।
1167 ৮. আল-আনফাল ইহা এ জন্য যাতে সত্য সত্যরূপে এবং অসত্য অসত্যরূপে প্রতিভাত হয়ে যায়, যদিও এটা অপরাধীরা অপ্রীতিকরই মনে করে।
1168 ৮. আল-আনফাল স্মরণ কর সেই সংকট মুহুর্তের কথা, যখন তোমরা তোমাদের রবের নিকট কাতর কন্ঠে প্রার্থনা করেছিলে, আর তিনি সেই প্রার্থনা কবূল করে বলেছিলেনঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে এক হাজার মালাইকা/ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করব, যারা একের পর এক আসবে।
1169 ৮. আল-আনফাল আল্লাহ এটা করেছিলেন শুভ সংবাদ হিসাবে এবং যাতে তোমাদের চিত্ত আশ্বস্ত হয়। বস্তুতঃ সাহায্যতো শুধু আল্লাহর তরফ থেকেই হয়ে থাকে। আল্লাহ মহা পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ১০
1170 ৮. আল-আনফাল যখন তিনি (আল্লাহ) তাঁর পক্ষ থেকে প্রশান্তির জন্য তোমাদেরকে তন্দ্রায় আচ্ছন্ন করেন, আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন, (উদ্দেশ্য ছিল) তোমাদেরকে এর দ্বারা পবিত্র করবেন এবং তোমাদের হতে শাইতানের কু-মন্ত্রনা দূর করবেন, আর তোমাদের হৃদয়কে সুদৃঢ় করবেন এবং তোমাদের পা স্থির ও প্রতিষ্ঠিত রাখবেন। ১১
1171 ৮. আল-আনফাল স্মরণ কর, যখন তোমার রাব্ব মালাক/ফেরেশতার নিকট প্রত্যাদেশ করলেনঃ আমি তোমাদের সাথে আছি। সুতরাং তোমরা ঈমানদারদের সুপ্রতিষ্ঠিত ও অবিচল রাখ, আর যারা কাফির, আমি তাদের হৃদয়ে ভীতি সৃষ্টি করে দিব। অতএব তোমরা তাদের স্কন্ধে আঘাত হান, আর আঘাত হান তাদের অঙ্গুলিসমূহের প্রতিটি জোড়ায়। ১২
1172 ৮. আল-আনফাল এটা এ কারণে যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করে তার জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহ শাস্তি দানে খুবই কঠোর। ১৩
1173 ৮. আল-আনফাল সুতরাং তোমরা এর স্বাদ গ্রহণ কর, সত্য অস্বীকারকারীদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের লেলিহান আগুনের শাস্তি। ১৪
1174 ৮. আল-আনফাল হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন কাফির বাহিনীর সম্মুখীন হবে তখন তাদের মুকাবিলা করা হতে কখনোই পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবেনা। ১৫
1175 ৮. আল-আনফাল আর সেদিন যুদ্ধ কৌশল বা স্বীয় বাহিনীর কেন্দ্রস্থলে স্থান নেয়া ব্যতীত কেহ তাদের থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করলে অর্থাৎ পালিয়ে গেলে সে আল্লাহর গযবে পরিবেষ্টিত হবে, তার আশ্রয়স্থল হবে জাহান্নাম, আর জাহান্নাম কতই না নিকৃষ্ট স্থান। ১৬
1176 ৮. আল-আনফাল তোমরা তাদেরকে হত্যা করনি, বরং আল্লাহই তাদেরকে হত্যা করেছেন। আর (হে নাবী!) যখন তুমি (ধূলাবালি) নিক্ষেপ করেছিলে তখন তা মূলতঃ তুমি নিক্ষেপ করনি, বরং আল্লাহই তা নিক্ষেপ করেছিলেন। এটা করা হয়েছিল মু’মিনদেরকে উত্তম পুরস্কার দান করার জন্য, নিঃসন্দেহে আল্লাহ সব কিছু শোনেন ও জানেন। ১৭
1177 ৮. আল-আনফাল আর এমনিভাবেই আল্লাহ কাফিরদের চক্রান্ত দুর্বল ও নস্যাৎ করে থাকেন। ১৮
1178 ৮. আল-আনফাল (হে কাফিরেরা!) তোমরাতো ফাইসালা চাচ্ছ, ফাইসালাতো তোমাদের সামনেই এসে গেছে। তোমরা যদি এখনও (মুসলিমদের অনিষ্ট করা হতে) বিরত থাক তাহলে তা তোমাদের পক্ষেই কল্যাণকর, আর যদি পুনরায় তোমরা এ কাজ কর তাহলে আমিও তোমাদেরকে পুনরায় শাস্তি দিব, আর তোমাদের বিরাট বাহিনী তোমাদের কোনই উপকারে আসবেনা। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মু’মিনদের সাথে রয়েছেন। ১৯
1179 ৮. আল-আনফাল হে মু’মিনগণ! আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর, তোমরা যখন তার কথা শুনছ তখন তোমরা তার আনুগত্য হতে মুখ ফিরিয়ে নিওনা। ২০
1180 ৮. আল-আনফাল তোমরা ঐ সব লোকের মত হয়োনা, যারা বলে - আমরা আপনাদের কথা শুনলাম, কার্যতঃ তারা কিছুই শোনেনা। ২১
1181 ৮. আল-আনফাল আল্লাহর কাছে নিকৃষ্টতম জীব হচ্ছে ঐ সব মূক ও বধির লোক, যারা কিছুই বুঝেনা (অর্থাৎ বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগায়না)। ২২
1182 ৮. আল-আনফাল আল্লাহ যদি জানতেন যে, তাদের মধ্যে কল্যাণকর কিছু নিহিত রয়েছে তাহলে অবশ্যই তিনি তাদেরকে শোনার তাওফীক দিতেন, তিনি যদি তাদেরকে শোনাতেন তাহলেও তারা উপেক্ষা করে মুখ ফিরিয়ে অন্য দিকে চলে যেত। ২৩
1183 ৮. আল-আনফাল হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দাও যখন তিনি তোমাদেরকে তোমাদের জীবন সঞ্চারক বস্তুর দিকে আহবান করেন। আর জেনে রেখ, আল্লাহ মানুষ ও তার অন্তরের অন্তরালে থাকেন, পরিশেষে তাঁর কাছেই তোমাদেরকে সমবেত করা হবে। ২৪
1184 ৮. আল-আনফাল তোমরা সেই ফিতনাকে ভয় কর যা তোমাদের মধ্যকার শুধুমাত্র যালিম ও পাপিষ্ঠদেরকেই বিশেষভাবে ক্লিষ্ট করবেনা। তোমরা জেনে রেখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তি দানে খুবই কঠোর। ২৫
1185 ৮. আল-আনফাল স্মরণ কর, যখন তোমরা ভূ-পৃষ্ঠে খুব দুর্বলরূপে পরিগণিত হতে, আর তোমরা এই শংকায় নিপতিত থাকতে যে, লোকেরা অকস্মাৎ তোমাদেরকে ধরে নিয়ে যাবে। (এই অবস্থায়) আল্লাহই তোমাদেরকে (মাদীনায়) আশ্রয় দেন এবং স্বীয় সাহায্য দ্বারা তোমাদেরকে শক্তিশালী করেন, আর পবিত্র বস্তু দ্বারা তোমাদের জীবিকা দান করেন যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। ২৬
1186 ৮. আল-আনফাল হে মু’মিনগণ! তোমরা জেনে শুনে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করনা এবং তোমাদের পরস্পরের আমানত সম্পর্কেও বিশ্বাস ভঙ্গ করনা। ২৭
1187 ৮. আল-আনফাল আর তোমরা জেনে রেখ যে, তোমাদের ধন সম্পদ ও সন্তান সন্ততি প্রকৃত পক্ষে পরীক্ষার সামগ্রী মাত্র, আর আল্লাহর নিকট মহাপুরস্কার রয়েছে। ২৮
1188 ৮. আল-আনফাল হে মু’মিনগণ! তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় কর তাহলে তিনি তোমাদেরকে ন্যায়-অন্যায় পার্থক্য করার একটি মান নির্ণয়ক শক্তি দান করবেন, আর তোমাদের দোষক্রটি তোমাদের হতে দূর করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন, আল্লাহ বড়ই অনুগ্রহশীল ও মঙ্গলময়। ২৯
1189 ৮. আল-আনফাল আর স্মরণ কর, যখন কাফিরেরা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল, তোমাকে বন্দী করবে অথবা হত্যা করবে কিংবা নির্বাসিত করবে। তারাও ষড়যন্ত্র করতে থাকুক এবং আল্লাহও (স্বীয় নাবীকে বাঁচানোর) কৌশল করতে থাকেন, আল্লাহ হচ্ছেন শ্রেষ্ঠ কৌশলী। ৩০
1190 ৮. আল-আনফাল তাদেরকে যখন আমার আয়াতসমূহ পাঠ করে শোনানো হয় তখন তারা বলেঃ আমরা শুনেছি, ইচ্ছা করলে আমরাও এর অনুরূপ বলতে পারি, নিঃসন্দেহে এটা পুরাকালের উপাখ্যান ছাড়া কিছু নয়। ৩১
1191 ৮. আল-আনফাল আর স্মরণ কর, যখন তারা বলেছিলঃ হে আল্লাহ! ইহা (কুরআন) যদি আপনার পক্ষ হতে সত্য হয় তাহলে আকাশ থেকে আমাদের উপর প্রস্তর বর্ষণ করুন অথবা আমাদের উপর কঠিন পীড়াদায়ক শাস্তি এনে দিন। ৩২
1192 ৮. আল-আনফাল (হে নাবী!) তুমি তাদের মধ্যে থাকা অবস্থায় তাদেরকে শাস্তি দেয়া আল্লাহর অভিপ্রায় নয়, আর আল্লাহ এটাও চাননা যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দিবেন। ৩৩
1193 ৮. আল-আনফাল কিন্তু তাদের কি বলার আছে যে জন্য আল্লাহ তাদের শাস্তি দিবেননা, যখন তারা মাসজিদুল হারামের পথ রোধ করছে, অথচ তারা মাসজিদুল হারামের তত্ত্বাবধায়ক নয়? আল্লাহভীরু লোকেরাই উহার তত্ত্বাবধায়ক, কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোক এটা অবগত নয়। ৩৪
1194 ৮. আল-আনফাল কা’বা ঘরের কাছে তাদের সালাত হল শিস দেয়া ও করতালি প্রদান ছাড়া অন্য কিছুই নয়, সুতরাং তোমরা কুফরী করার কারণে এখন শাস্তির স্বাদ গ্রহণ কর। ৩৫
1195 ৮. আল-আনফাল নিশ্চয়ই কাফিরেরা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে নিবৃত্ত করার উদ্দেশে তাদের ধন সম্পদ ব্যয় করে, তারা তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করতেই থাকবে, অতঃপর ওটাই শেষ পর্যন্ত তাদের জন্য দুঃখ ও আফসোসের কারণ হবে এবং তারা পরাভূতও হবে। আর যারা কুফরী করে তাদেরকে জাহান্নামে একত্রিত করা হবে। ৩৬
1196 ৮. আল-আনফাল এটা এ কারণে যে, আল্লাহ ভাল থেকে মন্দকে পৃথক করবেন, আর কু-জনদের সকলকে একজনের উপর অপর জনকে স্তপীকৃত করবেন এবং অতঃপর জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। এরাই চরম ক্ষতিগ্রস্ত লোক। ৩৭
1197 ৮. আল-আনফাল তুমি কাফিরদেরকে বলঃ তারা যদি অনাচার থেকে বিরত থাকে তাহলে তাদের পূর্বের অপরাধ যা হয়েছে তা আল্লাহ ক্ষমা করবেন। কিন্তু তারা যদি অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি করে তাহলে পূর্ববর্তীদের দৃষ্টান্ততো রয়েছেই। ৩৮
1198 ৮. আল-আনফাল তোমরা সদা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিতনার অবসান হয় এবং দীন সম্পূর্ণ রূপে আল্লাহর জন্য হয়ে যায়। আর তারা যদি ফিতনা ও বিপর্যয় সৃষ্টি হতে বিরত থাকে তাহলে তারা কি করেছে তা আল্লাহই দেখবেন। ৩৯
1199 ৮. আল-আনফাল আর যদি তোমাকে না’ই মানে এবং দীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে জেনে রেখ যে, আল্লাহই তোমাদের (মুসলিমদের) অভিভাবক। তিনি কতইনা উত্তম অভিভাবক ও সাহায্যকারী! ৪০
1200 ৮. আল-আনফাল আর তোমরা জেনে রেখ যে, যুদ্ধে তোমরা যা কিছু গাণীমাতের মাল লাভ করেছ ওর এক পঞ্চমাংশ আল্লাহ, তাঁর রাসূল, (রাসূলের) নিকটাত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন এবং মূসাফিরের জন্য - যদি তোমরা ঈমান এনে থাক আল্লাহর প্রতি এবং যা আমি অবতীর্ণ করেছি আমার বান্দার উপর সেই চুড়ান্ত ফাইসালার দিন, যেদিন দু‘দল পরস্পরের সম্মুখীন হয়েছিল। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান। ৪১
1201 ৮. আল-আনফাল আর স্মরণ কর, যখন তোমরা প্রান্তরের এই দিকে ছিলে, আর তারা প্রান্তরের অপর দিকে শিবির রচনা করেছিল, আর উষ্ট্রারোহী কাফেলা তোমাদের অপেক্ষা নিম্নভূমিতে ছিল, যদি পূর্ব হতেই তোমাদের ও তাদের মধ্যে যুদ্ধ সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে চাইতে তাহলে তোমাদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হত, কিন্তু যা ঘটানোর ছিল তা আল্লাহ সম্পন্ন করার জন্য উভয় দলকে যুদ্ধক্ষেত্রে সমবেত করলেন, তাতে যে ধ্বংস হবে সে যেন সত্য সুস্পষ্ট রূপে প্রতিভাত হবার পর ধ্বংস হয়, আর যে জীবিত থাকবে সে যেন সত্য সুস্পষ্ট রূপে প্রতিভাত হবার পর জীবিত থাকে। আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী। ৪২
1202 ৮. আল-আনফাল আর স্মরণ কর, যখন আল্লাহ তোমাকে স্বপ্নযোগে ওদের সংখ্যা অল্প দেখিয়েছিলেন, যদি তোমাকে তাদের সংখ্যা অধিক দেখাতেন তাহলে তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলতে এবং যুদ্ধ সম্পর্কে তোমাদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হত, কিন্তু আল্লাহ তোমাদেরকে রক্ষা করেছেন। অন্তরে যা কিছু আছে সে সম্পর্কে তিনি সবিশেষ অবহিত। ৪৩
1203 ৮. আল-আনফাল আরও স্মরণ কর, যা ঘটানোর ছিল, চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন করার জন্য যখন দু’দল মুখোমুখী দন্ডায়মান হয়েছিল তখন তোমাদের দৃষ্টিতে ওদের সংখ্যা খুব অল্প দেখাচ্ছিল, আর ওদের চোখেও তোমাদেরকে খুব স্বল্প সংখ্যক পরিদৃষ্ট হচ্ছিল, সমস্ত বিষয় ও সমস্যাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করে। ৪৪
1204 ৮. আল-আনফাল হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর এবং অবিচল থাকবে যখন কোন দলের সম্মুখীন হও, আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে। ৪৫
1205 ৮. আল-আনফাল তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুগত হও। তোমরা সাহস ও ক্ষমতাহারা হয়ে যাবে যদি নিজেদের মধ্যে বিবাদ কর। তোমরা ধৈর্য ধারণ কর। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন। ৪৬
1206 ৮. আল-আনফাল তোমরা তাদের মতো আচরণ করনা যারা নিজেদের গৃহ হতে সদর্পে এবং লোকদেরকে (নিজেদের শক্তি) প্রদর্শন করে বের হয় ও মানুষকে আল্লাহর পথ হতে নিবৃত্ত রাখে, তারা যা করে আল্লাহ তা পরিবেষ্টন করে রয়েছেন। ৪৭
1207 ৮. আল-আনফাল স্মরণ কর, যখন শাইতান তাদের কার্যাবলীকে তাদের দৃষ্টিতে খুব চাকচিক্যময় ও শোভনীয় করে দেখাচ্ছিল, সে গর্বভরে বলেছিলঃ কোন মানুষই আজ তোমাদের উপর বিজয় লাভ করতে পারবেনা, আমি সাহায্যার্থে তোমাদের নিকটই থাকব। কিন্তু উভয় বাহিনীর মধ্যে যখন প্রত্যক্ষ যুদ্ধ শুরু হল তখন সে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে সরে পড়ল এবং বললঃ আমি তোমাদের বিষয়ে দায়িত্ব মুক্ত, আমি যা দেখেছি তোমরা তা দেখনা, আমি আল্লাহকে ভয় করি, আর আল্লাহ শাস্তি দানে খুবই কঠোর। ৪৮
1208 ৮. আল-আনফাল যারা মুনাফিক, অন্তরে যাদের ব্যাধি রয়েছে তারা বলে, তাদের ধর্ম তাদেরকে বিভ্রান্ত করেছে। যে কেহ আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ মহা পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়। ৪৯
1209 ৮. আল-আনফাল তুমি যদি ঐ অবস্থা দেখতে যখন মালাইকা/ফেরেশতারা কাফিরদের মুখমন্ডল ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত হেনে তাদের মৃত্যু ঘটিয়েছে, (আর বলছে) তোমরা জাহান্নামের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির স্বাদ গ্রহণ কর। ৫০
1210 ৮. আল-আনফাল এই শাস্তি হল তোমাদের সেই কাজেরই পরিণাম ফল যা তোমাদের দু’হাত পূর্বাহ্নেই আয়োজন করেছিল, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপর কখনও অত্যাচারী নন। ৫১
1211 ৮. আল-আনফাল এটা ফির‘আউনের বংশ ও তাদের পূর্ববর্তী লোকদের অবস্থার ন্যায়; তারা আল্লাহর নিদর্শনকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। ফলে আল্লাহ তাদের পাপের কারণে তাদেরকে পাকড়াও করলেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহাশক্তিমান ও কঠিন শাস্তিদাতা। ৫২
1212 ৮. আল-আনফাল এই শাস্তির কারণ এই যে, আল্লাহ যদি কোন জাতির উপর নি‘আমাত দান করেন সেই নি‘আমাত ততক্ষণ পর্যন্ত পরিবর্তন করেননা, যতক্ষণ পর্যন্ত সেই জাতি নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন না করে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহাশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী। ৫৩
1213 ৮. আল-আনফাল ফির‘আউনের বংশধর ও তৎপূর্বের জাতিসমূহের ন্যায় তারা তাদের রবের নিদর্শনসমূহ মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। ফলে আমি তাদের পাপের কারণে তাদেরকে ধ্বংস করেছি এবং ফির‘আউনের বংশধরকে (সমুদ্রে) নিমজ্জিত করেছি, তারা প্রত্যেকেই ছিল যুলমকারী। ৫৪
1214 ৮. আল-আনফাল নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট নিকৃষ্ট জীব তারাই যারা কুফরী করে এবং যারা ঈমান আনেনা। ৫৫
1215 ৮. আল-আনফাল ওদের মধ্যে যাদের সাথে তুমি চুক্তিবদ্ধ হয়েছ তারাও নিকৃষ্ট, তারা প্রতিবারেই কৃত চুক্তি ভঙ্গ করেছে, (চুক্তি ভঙ্গের ব্যাপারে আল্লাহকে কিছুমাত্র) তারা ভয় করেনা। ৫৬
1216 ৮. আল-আনফাল অতএব তোমরা যদি তাদেরকে যুদ্ধের মাইদানে আয়ত্তে আনতে পার তাহলে তাদেরকে তাদের পিছনে যারা রয়েছে তাদের হতে বিচ্ছিন্ন করে এমনভাবে শায়েস্তা কর যাতে তারা শিক্ষা পায়। ৫৭
1217 ৮. আল-আনফাল (হে নাবী!) তুমি যদি কোন সম্প্রদায়ের বিশ্বাস ভঙ্গের আশংকা কর তাহলে তোমার চুক্তিকেও প্রকাশ্যভাবে তাদের সামনে চুক্তি ভঙ্গের খবর দিয়ে দাও, নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বাস ভঙ্গকারীদেরকে পছন্দ করেননা। ৫৮
1218 ৮. আল-আনফাল যারা কাফির তারা (বদর প্রান্তরে প্রাণ বাঁচাতে পেরে) যেন মনে না করে যে, তারা পরিত্রাণ পেয়েছে, তারা মু’মিনগণকে হতবল করতে পারবেনা। ৫৯
1219 ৮. আল-আনফাল তোমরা কাফিরদের মুকাবিলা করার জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও সদাসজ্জিত অশ্ববাহিনী প্রস্তুত রাখবে যদ্দবারা আল্লাহর শক্র ও তোমাদের শক্রদেরকে ভীত সন্ত্রস্ত করবে, এছাড়া অন্যান্যদেরকেও যাদেরকে তোমরা জাননা, কিন্তু আল্লাহ জানেন। আর তোমরা আল্লাহর পথে যা কিছু ব্যয় কর, তার প্রতিদান তোমাদেরকে পুরোপুরি প্রদান করা হবে, তোমাদের প্রতি (কম দিয়ে) অত্যাচার করা হবেনা ৬০
1220 ৮. আল-আনফাল যদি তারা (কাফিরেরা) সন্ধির দিকে ঝুঁকে পড়ে তাহলে তুমিও সন্ধি করতে আগ্রহী হও, আর আল্লাহর উপর ভরসা কর, নিঃসন্দেহে তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞাত। ৬১
1221 ৮. আল-আনফাল আর তারা যদি তোমাকে প্রতারিত করার ইচ্ছা করে তাহলে তোমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি এমন (মহাশক্তিশালী) যে, (গাইবি) সাহায্য (ফেরেশতা) দ্বারা এবং মু’মিনগণ দ্বারা তোমাকে শক্তিশালী করেছেন। ৬২
1222 ৮. আল-আনফাল আর তিনি মু’মিনদের অন্তরে প্রীতি ও ঐক্য স্থাপন করেছেন, তুমি যদি পৃথিবীর সমুদয় সম্পদও ব্যয় করতে তবুও তাদের অন্তরে প্রীতি, সদ্ভাব ও ঐক্য স্থাপন করতে পারতেনা, কিন্তু আল্লাহই ওদের পরস্পরের মধ্যে প্রীতি ও সদ্ভাব স্থাপন করে দিয়েছেন, নিঃসন্দেহে তিনি মহাশক্তিমান ও মহাকৌশলী। ৬৩
1223 ৮. আল-আনফাল হে নাবী! তোমার জন্য ও তোমার অনুসারী মু’মিনদের জন্য (সর্বক্ষেত্রে) আল্লাহই যথেষ্ট ৬৪
1224 ৮. আল-আনফাল হে নাবী! মু’মিনদেরকে জিহাদের জন্য উদ্ধুদ্ধ কর, তোমাদের মধ্যে যদি বিশজন ধৈর্যশীল মুজাহিদ থাকে তাহলে তারা দু’শ জন কাফিরের উপর জয়যুক্ত হবে, আর তোমাদের মধ্যে এক‘শ জন থাকলে তারা এক হাজার কাফিরের উপর বিজয়ী হবে, কারণ তারা এমন এক সম্প্রদায় যাদের বোধশক্তি নেই, কিছুই বোঝেনা। ৬৫
1225 ৮. আল-আনফাল আল্লাহ এক্ষণে তোমাদের গুরু দায়িত্ব লাঘব করে দিলেন, তোমাদের মধ্যে যে দৈহিক দুর্বলতা রয়েছে সে সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন, এতদসত্ত্বেও তোমাদের মধ্যে একশ’ জন ধৈর্যশীল লোক থাকলে তারা দু’শ’ জন কাফিরের উপর জয়যুক্ত হবে, আর এক হাজার জন থাকলে তারা আল্লাহর হুকুমে দু’হাজার কাফিরের উপর বিজয় লাভ করবে, আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন। ৬৬
1226 ৮. আল-আনফাল কোন নাবীর পক্ষে তখন পর্যন্ত বন্দী (জীবিত) রাখা শোভা পায়না, যতক্ষণ পর্যন্ত ভূ-পৃষ্ঠ (দেশ) হতে শক্র বাহিনী নির্মূল না হয়, তোমরা দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী সম্পদ কামনা করছ, অথচ আল্লাহ চান তোমাদের পরকালের কল্যাণ, আল্লাহ মহা পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ৬৭
1227 ৮. আল-আনফাল আল্লাহর লিপি পূর্বেই লিখিত না হলে তোমরা যা কিছু গ্রহণ করেছ তজ্জন্য তোমাদের উপর কঠিন শাস্তি আপতিত হত। ৬৮
1228 ৮. আল-আনফাল সুতরাং যুদ্ধে তোমরা যা কিছু গণীমাত রূপে লাভ করেছ তা হালাল ও পবিত্র রূপে ভোগ কর, আর আল্লাহকে ভয় কর, নিঃসন্দেহে আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু। ৬৯
1229 ৮. আল-আনফাল হে নাবী! তোমাদের হাতে যারা বন্দী হয়েছে তাদেরকে বল, আল্লাহ যদি তোমাদের অন্তরে কল্যাণকর কিছু রয়েছে বলে অবগত হন তাহলে তোমাদের হতে (মুক্তিপণ রূপে) যা কিছু নেয়া হয়েছে তা অপেক্ষা উত্তম কিছু দান করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু। ৭০
1230 ৮. আল-আনফাল আর তারা যদি তোমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করার ইচ্ছা রাখে তাহলে এর পূর্বে আল্লাহর সাথেও তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। সুতরাং তিনি তাদের উপর তোমাকে শক্তিশালী করেছেন; আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়। ৭১
1231 ৮. আল-আনফাল যারা ঈমান এনেছে, দীনের জন্য হিজরাত করেছে, নিজেদের জানমাল দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে এবং যারা আশ্রয় দান ও সাহায্য করেছে, তারা পরস্পরের বন্ধু। আর যারা ঈমান এনেছে কিন্তু হিজরাত করেনি, তারা হিজরাত না করা পর্যন্ত তাদের অভিভাবকত্বের কোন দায়িত্ব তোমাদের নেই, কিন্তু তারা যদি দীনের ব্যাপারে তোমাদের নিকট সাহায্য প্রার্থী হয় তাহলে তাদের সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য, তবে তোমাদের এবং যে জাতির মধ্যে চুক্তি রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে নয়, তোমরা যা করছ আল্লাহ তা খুব ভাল রূপেই লক্ষ্য করেন ৭২
1232 ৮. আল-আনফাল যারা কুফরী করছে তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু, তোমরা যদি (উপরোক্ত) বিধান কার্যকর না কর তাহলে ভূ-পৃষ্ঠে ফিতনা ও মহা বিপর্যয় দেখা দিবে। ৭৩
1233 ৮. আল-আনফাল যারা ঈমান এনেছে, (দীনের জন্য) হিজরাত করেছে এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে, আর যারা (মু’মিনদেরকে) আশ্রয় দিয়েছে এবং যাবতীয় সাহায্য সহানুভূতি প্রকাশ করেছে, তারাই হল প্রকৃত মু’মিন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা। ৭৪
1234 ৮. আল-আনফাল আর যারা এর পরে ঈমান এনেছে ও হিজরাত করেছে এবং তোমাদের সাথে একত্রে জিহাদ করেছে, তারা তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত; আল্লাহর বিধানে আত্মীয়গণ একে অন্যের অপেক্ষা বেশি হকদার, নিঃসন্দেহে আল্লাহ প্রতিটি বস্তু সম্পর্কে ভাল রূপে অবহিত। ৭৫
1235 ৯. আত-তাওবা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ হতে অব্যাহতি (ঘোষণা করা) হচ্ছে ঐ মুশরিকদের প্রতি যাদের সাথে তোমরা সন্ধি করেছিলে।
1236 ৯. আত-তাওবা সুতরাং (হে মুশরিকরা!) তোমরা এই ভূ-মন্ডলে চার মাস বিচরণ করে নাও এবং জেনে রেখ যে, তোমরা আল্লাহকে অক্ষম করতে পারবেনা, আর নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফিরদেরকে অপদস্থ করবেন।
1237 ৯. আত-তাওবা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে বড় হাজ্জের তারিখসমূহে জনগণের সামনে ঘোষণা করা হচ্ছে যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল উভয়ই এই মুশরিকদের (নিরাপত্তা প্রদান করা) হতে নিঃসম্পর্ক হচ্ছেন; তবে যদি তোমরা তাওবাহ কর তাহলে তা তোমাদের জন্য উত্তম, আর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে জেনে রেখ যে, তোমরা আল্লাহকে অক্ষম করতে পারবেনা, আর (হে নাবী!) এই কাফিরদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও।
1238 ৯. আত-তাওবা কিন্তু হ্যাঁ ঐ সব মুশরিক হচ্ছে স্বতন্ত্র যাদের নিকট থেকে তোমরা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছ, অতঃপর তারা তোমাদের বিরুদ্ধে কেহকেও সাহায্য করেনি। সুতরাং তাদের সন্ধি চুক্তিতে তাদের নির্ধারিত সময় পর্যন্ত পূর্ণ কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের পছন্দ করেন ।
1239 ৯. আত-তাওবা অতঃপর যখন নিষিদ্ধ মাসগুলি অতীত হয়ে যায় তখন ঐ মুশরিকদেরকে যেখানে পাবে তাদের সাথে যুদ্ধ কর এবং হত্যা কর, তাদেরকে ধরে ফেল, তাদেরকে অবরোধ করে রাখো এবং তাদের সন্ধানে ঘাঁটিসমূহে অবস্থান কর। অতঃপর যদি তারা তাওবাহ করে, সালাত আদায় করে এবং যাকাত প্রদান করে তাহলে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাপরায়ণ, পরম করুণাময়।
1240 ৯. আত-তাওবা মুশরিকদের মধ্য হতে যদি কেহ তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে তাহলে তুমি তাকে আশ্রয় দান কর, যাতে সে আল্লাহর কালাম শুনতে পায়; অতঃপর তাকে তার নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দাও, এই আদেশ এ জন্য যে, এরা এমন লোক যারা জ্ঞান রাখেনা।
1241 ৯. আত-তাওবা এই (কুরাইশ) মুশরিকদের অঙ্গীকার আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নিকট কি রূপে (বলবৎ) থাকবে যদি না তাদের সাথে তোমরা মাসজিদুল হারামের সন্নিকটে অঙ্গীকার নিয়ে থাক? অতএব যে পর্যন্ত তারা তোমাদের সাথে সরলভাবে থাকে, তোমরাও তাদের সাথে সরলভাবে থাকবে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ সংযমশীলদের পছন্দ করেন।
1242 ৯. আত-তাওবা কি করে চুক্তি রক্ষা হবে, যদি অবস্থা এই হয় যে, তারা যদি তোমাদের উপর প্রাধান্য লাভ করে তাহলে তোমাদের আত্মীয়তার মর্যাদাও রক্ষা করবেনা এবং অঙ্গীকারেরও না। তারা তোমাদেরকে নিজেদের মুখের কথায় সন্তুষ্ট রাখে, কিন্তু তাদের অন্তরসমূহ অস্বীকার করে, আর তাদের অধিকাংশ লোকই ফাসিক ।
1243 ৯. আত-তাওবা তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে নগণ্য মূল্যে বিক্রি করেছে এবং তারা আল্লাহর পথ থেকে (মু’মিনদেরকে) সরিয়ে রেখেছে। নিশ্চয়ই তাদের কাজ অতি মন্দ।
1244 ৯. আত-তাওবা তারা কোন মু’মিনের সাথে আত্মীয়তার মর্যাদা রক্ষা করেনা এবং না অঙ্গীকারের; আর তারাই সীমালংঘনকারী। ১০
1245 ৯. আত-তাওবা অতঃপর যদি তারা তাওবাহ করে এবং সালাত আদায় করে ও যাকাত দেয় তাহলে তারা তোমাদের দীনী ভাই; আর আমি জ্ঞানী লোকদের জন্য বিধানাবলী বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করে থাকি। ১১
1246 ৯. আত-তাওবা আর যদি তারা অঙ্গীকার করার পর নিজেদের শপথগুলিকে ভঙ্গ করে এবং তোমাদের ধর্মের প্রতি দোষারোপ করে তাহলে তোমরা কুফরের অগ্রনায়কদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, (এই অবস্থায়) তাদের শপথ রইলনা, হয়তো তারা বিরত থাকবে। ১২
1247 ৯. আত-তাওবা তোমরা এমন লোকদের বিরুদ্ধে কেন যুদ্ধ করবেনা যারা নিজেদের শপথগুলিকে ভঙ্গ করেছে, আর রাসূলকে দেশান্তর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং তারা তোমাদের বিরুদ্ধে নিজেরাই প্রথমে আক্রমণ করেছে? তোমরা কি তাদেরকে ভয় করছ? বস্তুতঃ আল্লাহকেই তোমাদের ভয় করা উচিত, যদি তোমরা মু’মিন হয়ে থাক। ১৩
1248 ৯. আত-তাওবা তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ কর। আল্লাহ তোমাদের হাতে তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন এবং তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন, আর তোমাদেরকে তাদের উপর বিজয়ী করবেন এবং মু’মিনের অন্তরসমূহকে প্রশান্ত ও ঠান্ডা করবেন। ১৪
1249 ৯. আত-তাওবা আর তাদের অন্তরসমূহের ক্ষোভ দূর করে দিবেন এবং যার প্রতি ইচ্ছা, আল্লাহ করুণা প্রদর্শন করবেন, আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। ১৫
1250 ৯. আত-তাওবা তোমরা কি ধারণা করেছ যে, তোমাদেরকে এভাবেই ছেড়ে দেয়া হবে? অথচ আল্লাহতো এখনও তোমাদেরকে পরীক্ষা করেননি যে, কারা তোমাদের মধ্য হতে জিহাদ করেছে এবং আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মু’মিনগণ ছাড়া অন্য কেহকেও অন্তরঙ্গ বন্ধু রূপে গ্রহণ করেনি? আর আল্লাহ তোমাদের সমস্ত কর্মের পূর্ণ খবর রাখেন। ১৬
1251 ৯. আত-তাওবা মুশরিকরা যখন নিজেরাই নিজেদের কুফরী স্বীকার করে তখন তারা আল্লাহর মাসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করবে এমনতো হতে পারেনা। তারা এমন যাদের সমস্ত কাজ ব্যর্থ; এবং তারা জাহান্নামে স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে। ১৭
1252 ৯. আত-তাওবা আল্লাহর মাসজিদগুলি সংরক্ষণ করা তাদেরই কাজ, যারা আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামাত দিবসের প্রতি ঈমান আনে এবং সালাত কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ছাড়া কেহকেও ভয় করেনা। আশা করা যায় যে, এরাই সঠিক পথ প্রাপ্ত। ১৮
1253 ৯. আত-তাওবা তোমরা কি হাজীদের পানি পান করানোকে এবং মাসজিদুল হারামের রক্ষণাবেক্ষণ করাকে তাদের সমান সাব্যস্ত করে রেখেছ যারা আল্লাহ ও কিয়ামাত দিবসের প্রতি ঈমান আনে ও আল্লাহর পথে জিহাদ করে? তারা আল্লাহর সমীপে সমান নয়; যারা সীমা লংঘনকারী তাদেরকে আল্লাহ সুপথ প্রদর্শন করেননা। ১৯
1254 ৯. আত-তাওবা যারা ঈমান এনেছে ও হিজরাত করেছে, আর নিজেদের ধন ও প্রাণ দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে তারা মর্যাদায় আল্লাহর কাছে অতি বড়, আর তারাই হচ্ছে পূর্ণ সফলকাম । ২০
1255 ৯. আত-তাওবা তাদের রাব্ব তাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে সুসংবাদ দিচ্ছেন রাহমাতের ও অতি সন্তুষ্টির, আর এমন জান্নাতের যার মধ্যে তাদের জন্য চিরস্থায়ী নি’আমাত থাকবে। ২১
1256 ৯. আত-তাওবা ওর মধ্যে তারা অনন্তকাল থাকবে, নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট রয়েছে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। ২২
1257 ৯. আত-তাওবা হে মু’মিনগণ! তোমরা নিজেদের পিতাদেরকে ও ভাইদেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করনা যদি তারা ঈমানের মুকাবিলায় কুফরকে প্রিয় মনে করে; আর তোমাদের মধ্য হতে যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখবে, বস্তুতঃ ঐ সব লোকই হচ্ছে বড় অত্যাচারী। ২৩
1258 ৯. আত-তাওবা (হে নাবী!) তুমি তাদেরকে বলে দাওঃ যদি তোমাদের পিতা, তোমাদের পুত্রগণ, তোমাদের ভাইগণ, তোমাদের স্ত্রীগণ, তোমাদের স্বগোত্র, আর ঐ সব ধন সম্পদ যা তোমরা অর্জন করেছ, আর ঐ ব্যবসায় যাতে তোমরা মন্দা পড়ার আশংকা করছ অথবা ঐ গৃহসমূহ যেখানে অতি আনন্দে বসবাস করছ, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের চেয়ে এবং তাঁর পথে জিহাদ করার চেয়ে যদি (এই সব) তোমাদের নিকট অধিক প্রিয় হয় তাহলে তোমরা প্রতীক্ষা করতে থাক যে পর্যন্ত আল্লাহ নিজের নির্দেশ পাঠিয়ে দেন। আর আল্লাহ আদেশ অমান্যকারীদেরকে পথ প্রদশর্ন করেন না। ২৪
1259 ৯. আত-তাওবা অবশ্যই আল্লাহ তোমাদেরকে (যুদ্ধে) বহু ক্ষেত্রে বিজয়ী করেছেন এবং হুনাইনের দিনেও। যখন তোমাদেরকে তোমাদের সংখ্যাধিক্য গর্বে উম্মত্ত করেছিল, অতঃপর সেই সংখ্যাধিক্য তোমাদের কোনই কাজে আসেনি, আর ভূ-পৃষ্ঠ প্রশস্ত থাকা সত্ত্বেও তা তোমাদের উপর সংকীর্ণ হয়ে গেল, অতঃপর তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন পূর্বক পলায়ন করলে। ২৫
1260 ৯. আত-তাওবা অতঃপর আল্লাহ নিজ রাসূলের প্রতি এবং অন্যান্য মু’মিনদের প্রতি তাঁর সাকিনা (প্রশান্তি) নাযিল করলেন এবং এমন সৈন্যদল (অর্থাৎ ফেরেশতা) নাযিল করলেন যাদেরকে তোমরা দেখনি, আর কাফিরদেরকে শাস্তি প্রদান করলেন; আর এটা হচ্ছে কাফিরদের কর্মফল। ২৬
1261 ৯. আত-তাওবা অতঃপর আল্লাহ (ঐ কাফিরদের মধ্য হতে) যাকে ইচ্ছা দয়া প্রদর্শন করেন, আর আল্লাহ হচ্ছেন অতি ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়। ২৭
1262 ৯. আত-তাওবা হে মু’মিনগণ! মুশরিকরা হচ্ছে একেবারেই অপবিত্র, অতএব তারা যেন এ বছরের পর মাসজিদুল হারামের নিকটেও আসতে না পারে, আর যদি তোমরা দারিদ্রতার ভয় কর তাহলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তোমাদেরকে অভাবমুক্ত করবেন, যদি তিনি চান। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতিশয় জ্ঞানী, বড়ই হিকমাতওয়ালা। ২৮
1263 ৯. আত-তাওবা যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখেনা এবং কিয়ামাত দিনের প্রতিও না, আর ঐ বস্তুগুলিকে হারাম মনে করেনা যেগুলিকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল হারাম বলেছেন, আর সত্য ধর্ম (অর্থাৎ ইসলাম) গ্রহণ করেনা, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাক যে পর্যন্ত না তারা অধীনতা স্বীকার করে প্রজা রূপে জিযিয়া দিতে স্বীকার করে। ২৯
1264 ৯. আত-তাওবা ইয়াহুদীরা বলেঃ উযায়ের আল্লাহর পুত্র এবং নাসারারা বলেঃ মাসীহ্ আল্লাহর পুত্র। এটা তাদের মুখের কথা মাত্র (বাস্তবে তা কিছুই নয়), তারাতো তাদের মতই কথা বলছে যারা তাদের পূর্বে কাফির হয়েছে। আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন! তারা উল্টা কোন দিকে যাচ্ছে! ৩০
1265 ৯. আত-তাওবা তারা আল্লাহকে ছেড়ে নিজেদের পন্ডিত ও ধর্ম যাজকদেরকে রাব্ব বানিয়ে নিয়েছে এবং মারইয়ামের পুত্র মসীহকেও। অথচ তাদের প্রতি শুধু এই আদেশ করা হয়েছে যে, তারা শুধুমাত্র এক মা‘বূদের ইবাদাত করবে যিনি ব্যতীত ইলাহ হওয়ার যোগ্য কেহই নয়। তিনি তাদের অংশী স্থির করা হতে পবিত্র। ৩১
1266 ৯. আত-তাওবা তারা এরূপ চাচ্ছে যে, আল্লাহর নূরকে নিজেদের মুখের ফুৎকার দ্বারা নির্বাপিত করে দেয়, অথচ আল্লাহ স্বীয় নূরকে (দীন ইসলাম) পূর্ণত্বে পৌঁছানো ব্যতীত নিরস্ত হবেননা, যদিও কাফিরেরা অপ্রীতিকরই মনে করে। ৩২
1267 ৯. আত-তাওবা সেই আল্লাহ এমন যে, তিনি নিজ রাসূলকে হিদায়াত (কুরআন) এবং সত্য ধর্ম সহকারে প্রেরণ করেছেন, যেন ওকে সকল ধর্মের উপর প্রবল করে দেন, যদিও মুশরিকরা অপ্রীতিকর মনে করে। ৩৩
1268 ৯. আত-তাওবা হে মু’মিনগণ! অধিকাংশ আহবার এবং রুহবান (ইয়াহুদ ও খৃষ্টানদের আলেম ও ধর্ম যাজক) মানুষের ধন-সম্পদ শারীয়াত বিরুদ্ধ উপায়ে ভক্ষণ করে এবং আল্লাহর পথ হতে বিরত রাখে, আর যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করেনা, তুমি তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক এক শাস্তির সুসংবাদ শুনিয়ে দাও। ৩৪
1269 ৯. আত-তাওবা সেদিন জাহান্নামের আগুনে ঐগুলিকে উত্তপ্ত করা হবে, অতঃপর ঐগুলি দ্বারা তাদের ললাটসমূহে, পার্শ্বদেশসমূহে এবং পৃষ্ঠদেশসমূহে দাগ দেয়া হবে, আর বলা হবেঃ এটা হচ্ছে ওটাই যা তোমরা নিজেদের জন্য সঞ্চয় করে রেখেছিলে, সুতরাং এখন নিজেদের সঞ্চয়ের স্বাদ গ্রহণ কর। ৩৫
1270 ৯. আত-তাওবা নিশ্চয়ই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহর বিধানে মাস গণনায় বারটি। এর মধ্যে বিশেষ রূপে চারটি মাস হচ্ছে সম্মানিত। এটাই হচ্ছে সুপ্রতিষ্ঠিত ধর্ম। অতএব তোমরা এ মাসগুলিতে (ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ করে) নিজেদের ক্ষতি সাধন করনা, আর মুশরিকদের বিরুদ্ধে সকলে একযোগে যুদ্ধ কর, যেমন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সকলে একযোগে যুদ্ধ করে। আর জেনে রেখ যে, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন। ৩৬
1271 ৯. আত-তাওবা নিশ্চয়ই এই (মাসগুলির) স্থানান্তর কুফরের মধ্যে আরও কুফরী বৃদ্ধি করা, যদ্বারা কাফিরদেরকে পথভ্রষ্ট করা হয়। (তা এ রূপে যে) তারা সেই হারাম মাসকে কোন বছর হালাল করে নেয় এবং কোন বছর হারাম মনে করে, আল্লাহ যে মাসগুলিকে হারাম করেছেন, যেন তারা ওগুলির সংখ্যা পূর্ণ করে নিতে পারে, অতঃপর তারা আল্লাহর নিষিদ্ধ মাসগুলিকে হালাল করে নেয়, তাদের দুস্কর্মগুলি তাদের কাছে শোভনীয় মনে হয়, আর আল্লাহ এইরূপ কাফিরদেরকে হিদায়াত (এর তাওফীক দান) করেননা। ৩৭
1272 ৯. আত-তাওবা হে মু’মিনগণ! তোমাদের কি হল যে, যখন তোমাদেরকে বলা হয়, বের হও আল্লাহর পথে, তখন তোমরা মাটিতে লেগে থাক (অলসভাবে বসে থাক)। তাহলে কি তোমরা পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবনের উপর পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? বস্তুতঃ পার্থিব জীবনের ভোগ বিলাসতো আখিরাতের তুলনায় কিছুই নয়, অতি সামান্য। ৩৮
1273 ৯. আত-তাওবা যদি তোমরা বের না হও তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে কঠোর শাস্তি প্রদান করবেন এবং তোমাদের পরিবর্তে অন্য এক জাতিকে স্থলাভিষিক্ত করবেন, আর তোমরা আল্লাহর (দীনের) কোনই ক্ষতি করতে পারবেনা। আল্লাহ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। ৩৯
1274 ৯. আত-তাওবা যদি তোমরা তাকে (রাসূলুল্লাহকে) সাহায্য না কর তাহলে আল্লাহই তাকে সাহায্য করবেন যেমন তিনি তাকে সাহায্য করেছিলেন সেই সময়ে যখন কাফিরেরা তাকে দেশান্তর করেছিল, যখন দু’জনের মধ্যে একজন ছিল সে, যে সময় উভয়ে গুহার মধ্যে ছিল, যখন সে স্বীয় সঙ্গীকে (আবূ বাকরকে) বলেছিলঃ তুমি বিষণ্ণ হয়োনা, নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। অতঃপর আল্লাহ তার প্রতি স্বীয় প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং তাকে শক্তিশালী করলেন এমন সেনাদল দ্বারা যাদেরকে তোমরা দেখতে পাওনি এবং আল্লাহ কাফিরদের বাক্য নীচু করে দিলেন, আর আল্লাহর বাণী সমুচ্চ রইল, আর আল্লাহ হচ্ছেন প্রবল প্রজ্ঞাময়। ৪০
1275 ৯. আত-তাওবা অভিযানে বের হও স্বল্প সরঞ্জামের সাথেই হোক, অথবা প্রচুর সরঞ্জামের সাথেই হোক এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধন সম্পদ ও প্রাণ দ্বারা যুদ্ধ কর, এটাই তোমাদের জন্য অতি উত্তম, যদি তোমরা জানতে। ৪১
1276 ৯. আত-তাওবা যদি কিছু আশু লভ্য হত এবং সফরও সহজ হত তাহলে তারা অবশ্যই তোমার সহগামী হত; কিন্তু তাদেরতো পথের দূরত্বই দীর্ঘতর বোধ হতে লাগল; আর তারা অচিরেই আল্লাহর নামে শপথ করে বলবেঃ যদি আমাদের সাধ্য থাকত তাহলে আমরা নিশ্চয়ই তোমাদের সাথে বের হতাম; তারা (মিথ্যা বলে) নিজেরাই নিজেদেরকে ধ্বংস করছে; আর আল্লাহ জানেন যে, তারা মিথ্যাবাদী। ৪২
1277 ৯. আত-তাওবা আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করেছেন (কিন্তু) তুমি তাদেরকে কেন অনুমতি দিলে যে পর্যন্ত না সত্যবাদী লোকেরা তোমার কাছে প্রকাশ হয়ে যেত এবং তুমি মিথ্যাবাদীদেরকে জেনে নিতে? ৪৩
1278 ৯. আত-তাওবা যারা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে তারা নিজেদের ধন-সম্পদ ও প্রাণ দ্বারা জিহাদ করার ব্যাপারে তোমার কাছে অব্যাহতি প্রার্থনা করবেনা, আর আল্লাহ এই পরহেজগার লোকদের সম্বন্ধে খুবই অবগত আছেন। ৪৪
1279 ৯. আত-তাওবা অবশ্যই ঐসব লোক তোমার কাছে অব্যাহতি চেয়ে থাকে যারা আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখেনা, তারা তাদের অন্তরসমূহ সন্দেহে নিপতিত রয়েছে। অতএব তারা নিজেদের সন্দেহে হতবুদ্ধি হয়ে রয়েছে। ৪৫
1280 ৯. আত-তাওবা আর যদি তারা (যুদ্ধে) যাত্রা করার ইচ্ছা করত তাহলে সেজন্য কিছু সরঞ্জামতো প্রস্তুত করত, কিন্তু আল্লাহ তাদের যাত্রাকে অপছন্দ করেছেন, এ জন্য তাদেরকে তাওফীক দেননি এবং বলে দেয়া হল, তোমরাও এখানেই অক্ষম লোকদের সাথে বসে থাকো। ৪৬
1281 ৯. আত-তাওবা যদি তারা তোমাদের সাথে বের হত তাহলে দ্বিগুণ বিভ্রাট সৃষ্টি করা ব্যতীত আর কি হত? তারা তোমাদের মধ্যে ফাসাদ সৃষ্টি করার উদ্দেশে দৌড়াদৌড়ি করে ফিরত, আর তোমাদের মধ্যের কতিপয় উহা শ্রবণ করত; আল্লাহ এই যালিমদের সম্বন্ধে খুব অবগত আছেন। ৪৭
1282 ৯. আত-তাওবা পূর্বেও তারা ফিতনা ফাসাদ সৃষ্টি করেছিল এবং তোমার কার্যক্রম ব্যর্থ করার চেষ্টায় রত ছিল। শেষ পর্যন্ত হক ও আল্লাহর নির্দেশ প্রকাশমান হল, যদিও তা তাদের মনঃপুত ছিলনা। ৪৮
1283 ৯. আত-তাওবা আর তাদের মধ্যে কেহ কেহ এমনও আছে যে বলেঃ আমাকে (যুদ্ধে গমন না করার) অনুমতি দিন এবং আমাকে বিপদে ফেলবেননা। ভাল রূপে বুঝে নাও যে, তারাতো বিপদে পড়েই আছে। আর নিশ্চয়ই জাহান্নাম এই কাফিরদের বেষ্টন করবেই। ৪৯
1284 ৯. আত-তাওবা যদি তোমার প্রতি কোন মঙ্গল উপস্থিত হয় তাহলে তাদের জন্য তা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, আর যদি তোমার উপর কোন বিপদ এসে পড়ে তখন তারা বলেঃ আমরাতো প্রথম থেকেই নিজেদের জন্য সাবধানতার পথ অবলম্বন করেছিলাম এবং তারা খুশী হয়ে চলে যায়। ৫০
1285 ৯. আত-তাওবা বলঃ আল্লাহ আমাদের জন্য যা নির্ধারণ করে দিয়েছেন তা ছাড়া অন্য কোন বিপদ আমাদের উপর আপতিত হবেনা, তিনিই আমাদের কর্ম বিধায়ক, আর সকল মু’মিনের কর্তব্য হল, তারা যেন নিজেদের যাবতীয় কাজে আল্লাহর উপরই নির্ভর করে। ৫১
1286 ৯. আত-তাওবা বলঃ তোমরাতো আমাদের জন্য দু’টি মঙ্গলের মধ্যে একটি মঙ্গলের প্রতীক্ষায় রয়েছ; আর আমরা তোমাদের জন্য এই প্রতীক্ষা করছি যে, আল্লাহ তোমাদের উপর কোন্ শাস্তি সংঘটন করবেন - নিজের পক্ষ হতে অথবা আমাদের দ্বারা; অতএব তোমরা অপেক্ষা করতে থাক, আমরাও তোমাদের সাথে অপেক্ষমান রইলাম। ৫২
1287 ৯. আত-তাওবা তুমি বলঃ তোমরা সন্তুষ্টির সাথে ব্যয় কর কিংবা অসন্তুষ্টির সাথে, তোমাদের পক্ষ থেকে তা কক্ষণই গৃহীত হবেনা; নিঃসন্দেহে তোমরা হচ্ছ আদেশ লংঘনকারী সম্প্রদায়। ৫৩
1288 ৯. আত-তাওবা আর তাদের দান খয়রাত গ্রহণ না হওয়ার কারণ এই যে, তারা আল্লাহর সাথে ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরী করেছে, আর তারা শৈথিল্যের সাথে ছাড়া সালাত আদায় করেনা, আর তারা দান করেনা। কিন্তু অনিচ্ছার সাথে। ৫৪
1289 ৯. আত-তাওবা অতএব তাদের ধন-সম্পদ এবং সন্তান-সন্ততি যেন তোমাকে বিস্মিত না করে; আল্লাহর ইচ্ছা শুধু এটাই যে, এসব বস্তুর কারণে তাদেরকে পার্থিব জীবনে আযাবে আবদ্ধ রাখেন এবং তাদের প্রাণ কুফরী অবস্থায় বের হয়। ৫৫
1290 ৯. আত-তাওবা আর তারা আল্লাহর কসম করে বলে যে, তারা (মুনাফিকরা) তোমাদেরই অন্তর্ভুক্ত; অথচ তারা তোমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়, বরং তারা হচ্ছে কাপুরুষের দল। ৫৬
1291 ৯. আত-তাওবা যদি তারা কোন আশ্রয়স্থল পেত, অথবা গুহা কিংবা লুকিয়ে থাকার একটু স্থান পেত তাহলে তারা অবশ্যই ক্ষিপ্র গতিতে সেদিকে ধাবিত হত। ৫৭
1292 ৯. আত-তাওবা আর তাদের মধ্যে এমন কতক লোক রয়েছে যারা সাদাকাহর (বন্টন) ব্যাপারে তোমার প্রতি দোষারোপ করে, অতঃপর যদি তারা ঐ সমস্ত সাদাকাহ হতে (অংশ) প্রাপ্ত হয় তাহলে তারা সন্তুষ্ট হয়, আর যদি তারা তা থেকে বঞ্চিত হয় তাহলে তারা অসন্তুষ্ট হয়। ৫৮
1293 ৯. আত-তাওবা তাদের জন্য উত্তম হত যদি তারা ওর প্রতি সন্তুষ্ট থাকতো যা কিছু তাদেরকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল দান করেছিলেন, আর বলতঃ আমাদের পক্ষে আল্লাহই যথেষ্ট, ভবিষ্যতে আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহে আমাদেরকে আরও দান করবেন এবং তাঁর রাসূলও, আমরা আল্লাহরই প্রতি আগ্রহান্বিত রইলাম। ৫৯
1294 ৯. আত-তাওবা সাদাকাহ হচ্ছে শুধুমাত্র গরীবদের এবং অভাবগ্রস্তদের, আর এই সাদাকাহর (আদায়ের) জন্য নিযুক্ত কর্মচারীদের এবং (দীনের ব্যাপারে) যাদের মন রক্ষা করতে (অভিপ্রায়) হয় (তাদের), আর গোলামদের আযাদ করার কাজে এবং কর্জদারদের কর্জে (কর্জ পরিশোধে), আর জিহাদে (অর্থাৎ যুদ্ধ সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য) আর মুসাফিরদের সাহায্যার্থে। এই হুকুম আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, অতি প্রজ্ঞাময়। ৬০
1295 ৯. আত-তাওবা আর তাদের মধ্যে এমন কতিপয় লোক আছে, যারা নাবীকে যাতনা দেয় এবং বলেঃ তিনি প্রত্যেক কথায় কর্ণপাত করে থাকেন। বলে দাওঃ এই নাবীতো কর্ণপাত করে সেই কথায় যা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, সে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে, আর মু’মিনদের বিশ্বাস করে, আর সে ঐ সব লোকের প্রতি রাহমাত স্বরূপ যারা মু’মিন। আর যারা আল্লাহর রাসূলকে যাতনা দেয় তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ৬১
1296 ৯. আত-তাওবা তারা তোমাদের কাছে আল্লাহর নামে শপথ করে যেন তারা তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করতে পারে। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে সন্তুষ্ট করা তাদের জন্য বেশি যরুরী, যদি তারা সত্যিকারের মু’মিন হয়ে থাকে। ৬২
1297 ৯. আত-তাওবা তারা কি জানেনা যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের যারা বিরুদ্ধাচরণ করে, এমন লোকের ভাগ্যে রয়েছে জাহান্নামের আগুন? তারা তাতে অনন্তকাল থাকবে, এটা হচ্ছে চরম লাঞ্ছনা। ৬৩
1298 ৯. আত-তাওবা মুনাফিকরা আশংকা করে যে, তাদের (মুসলিমদের) প্রতি না জানি এমন কোন সূরা নাযিল হয় যা তাদের (মুনাফিকদের) অন্তরের কথা অবহিত করে দেয়। তুমি বলে দাওঃ হ্যাঁ, তোমরা বিদ্রুপ করতে থাক, নিশ্চয়ই আল্লাহ সেই বিষয়কে প্রকাশ করেই দিবেন যে সম্বন্ধে তোমরা আশংকা করছিলে। ৬৪
1299 ৯. আত-তাওবা আর যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর তাহলে তারা বলে দিবেঃ আমরাতো শুধু আলাপ আলোচনা ও হাসি তামাশা করছিলাম। তুমি বলঃ তাহলে কি তোমরা আল্লাহ, তাঁর আয়াতসমূহ এবং তাঁর রাসূলের প্রতি হাসি তামাসা করছিলে? ৬৫
1300 ৯. আত-তাওবা তোমরা এখন অজুহাত দেখিয়োনা, তোমরাতো ঈমান আনার পর কুফরী করেছ, যদিও আমি তোমাদের মধ্য হতে কতককে ক্ষমা করে দিই, তবুও কতককে শাস্তি দিবই। কারণ তারা অপরাধী ছিল। ৬৬
1301 ৯. আত-তাওবা মুনাফিক পুরুষ এবং মুনাফিক নারীরা সবাই এক রকম, অসৎ কর্মের শিক্ষা দেয় এবং সৎ কাজ হতে বিরত রাখে, আর নিজেদের হাতসমূহকে (আল্লাহর পথে ব্যয় করা হতে) বন্ধ করে রাখে, তারা আল্লাহকে ভুলে গেছে। সুতরাং তিনিও তাদেরকে ভুলে গেছেন, নিঃসন্দেহে মুনাফিকরা হচ্ছে অতি অবাধ্য। ৬৭
1302 ৯. আত-তাওবা আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ ও নারীদের এবং কাফিরদের সাথে জাহান্নামের আগুনের অঙ্গীকার করেছেন, তাতে তারা চিরকাল থাকবে, ওটাই তাদের জন্য যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদেরকে লা’নত করেছেন এবং তাদের জন্য রয়েছে চিরস্থায়ী শাস্তি। ৬৮
1303 ৯. আত-তাওবা তোমাদের পূর্বে যারা গত হয়েছে, যারা ছিল তোমাদের চেয়ে অধিকতর শক্তিশালী এবং ধন-সম্পদ ও সন্তানাদীর প্রাচুর্য্যও ছিল তোমাদের চেয়ে অনেক বেশী; তারা তাদের (পার্থিব) অংশ দ্বারা যথেষ্ট উপকার লাভ করেছে। অতঃপর তোমরাও তোমাদের (পার্থিব) অংশ দ্বারা খুব উপকার লাভ করলে যেমন, তোমাদের পূর্ববর্তীরা নিজেদের অংশ দ্বারা ফল ভোগ করেছিল; আর তোমরাও ব্যাঙ্গাত্মক হাসি তামাসায় এরূপভাবে নিমগ্ন রয়েছ যেমন তারা নিমগ্ন হয়েছিল। তাদের কার্যসমূহ বিনষ্ট হয়ে গেছে দুনিয়ায় ও আখিরাতে, আর তারাই ক্ষতিগ্রস্ত। ৬৯
1304 ৯. আত-তাওবা তাদের কাছে কি ঐ সব লোকের সংবাদ পৌঁছেনি যারা তাদের পূর্বে গত হয়েছে, নূহ সম্প্রদায় এবং আদ ও ছামূদ সম্প্রদায়, আর ইবরাহীমের সম্প্রদায় এবং মাদইয়ানের অধিবাসীরা এবং বিধ্বস্ত জনপদগুলির? তাদের কাছে তাদের রাসূলগণ স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে এসেছিল। বস্তুতঃ আল্লাহ তাদের প্রতি অত্যাচার করেননি, বরং তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি অত্যাচার করেছিল। ৭০
1305 ৯. আত-তাওবা আর মু’মিন পুরুষরা ও মু’মিনা নারীরা হচ্ছে পরস্পর একে অন্যের বন্ধু। তারা সৎ বিষয়ের শিক্ষা দেয় এবং অসৎ বিষয় হতে নিষেধ করে, আর সালাতের পাবন্দী করে ও যাকাত প্রদান করে, আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ মেনে চলে, এসব লোকের প্রতি আল্লাহ অবশ্যই করুণা বর্ষণ করবেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ অতিশয় ক্ষমতাবান, হিকমাতওয়ালা। ৭১
1306 ৯. আত-তাওবা আর মু’মিন পুরুষ ও মু’মিনা নারীদেরকে আল্লাহ এমন উদ্যানসমূহের ও‘য়াদা দিয়ে রেখেছেন যেগুলির নিম্নদেশে বইতে থাকবে নহরসমূহ, যেখানে তারা অনন্ত কাল থাকবে, আরও (ও‘য়াদা দিয়েছেন) উত্তম বাসস্থানসমূহের, ঐ স্থায়ী জান্নাতে। আর আল্লাহর সন্তুষ্টি হচ্ছে সর্বাপেক্ষা বড় নি‘আমাত, এটা হচ্ছে অতি বড় সফলতা। ৭২
1307 ৯. আত-তাওবা হে নাবী! কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর এবং তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বন কর। তাদের বাসস্থান হচ্ছে জাহান্নাম; এবং ওটা নিকৃষ্ট স্থান। ৭৩
1308 ৯. আত-তাওবা তারা আল্লাহর নামে শপথ করে বলছে যে, তারা কিছুই বলেনি; অথচ নিশ্চয়ই তারা কুফরী কথা বলেছিল এবং ইসলাম গ্রহণের পর কাফির হয়ে গেল, আর তারা এমন বিষয়ের সংকল্প করেছিল যা তারা কার্যকর করতে পারেনি; তারা শুধু এ কারণে প্রতিশোধ নিয়েছে যে, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল স্বীয় অনুগ্রহে তাদেরকে সম্পদশালী করেছেন। যদি তারা তাওবাহ করে তাহলে তা তাদের জন্য উত্তম হবে; আর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে আল্লাহ তাদেরকে ইহকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রদান করবেন, আর ভূ-পৃষ্ঠে তাদের না কোন অলী থাকবে আর না কোন সাহায্যকারী। ৭৪
1309 ৯. আত-তাওবা আর তাদের মধ্যে এমন কতিপয় লোক রয়েছে যারা আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার করেঃ আল্লাহ যদি আমাদেরকে নিজ অনুগ্রহে (প্রচুর সম্পদ) দান করেন তাহলে আমরা অনেক দান খয়রাত করব এবং খুব ভাল কাজ করব। ৭৫
1310 ৯. আত-তাওবা কার্যতঃ যখন আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহ প্রদান করলেন, তখন তারা তাতে কার্পণ্য করতে লাগল এবং (আনুগত্য করা হতে) মুখ ফিরিয়ে নিল, আর তারাতো মুখ ফিরিয়ে রাখতেই অভ্যস্ত। ৭৬
1311 ৯. আত-তাওবা অতঃপর তাদের শাস্তি স্বরূপ আল্লাহ তাদের অন্তরসমূহে নিফাক (সৃষ্টি) করে দিলেন, যা আল্লাহর সামনে হাযির হওয়ার দিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকবে এ কারণে যে, তারা আল্লাহর সাথে নিজেদের ও‘য়াদার খেলাফ করেছে; আর এ কারণে যে, তারা মিথ্যা বলেছিল। ৭৭
1312 ৯. আত-তাওবা তাদের কি জানা নেই যে, আল্লাহ তাদের মনের গুপ্ত কথা এবং গোপন পরামর্শ সবই অবগত আছেন? আর তাদের কি এ খবর জানা নেই যে, আল্লাহ সমস্ত গাইবের কথা খুবই জ্ঞাত আছেন? ৭৮
1313 ৯. আত-তাওবা স্বতঃপ্রবৃদ্ধ হয়ে সাদাকাহ প্রদানকারী মু’মিন এবং যারা নিজ পরিশ্রম থেকে দেয়া ছাড়া অন্য কিছু দিতে পারেনা তাদের প্রতি যারা দোষারোপ করে/উপহাস করে, আল্লাহ তাদেরকে এই উপহাসের প্রতিফল দিবেন এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ৭৯
1314 ৯. আত-তাওবা তুমি তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর অথবা না কর (উভয়ই সমান), যদি তুমি তাদের জন্য সত্তর বারও ক্ষমা প্রার্থনা কর তবুও আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেননা। কারণ তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরী করেছে। আর এরূপ সত্যত্যাগী সম্প্রদায়কে আল্লাহ পথ প্রদর্শন করেননা। ৮০
1315 ৯. আত-তাওবা রাসূলুল্লাহকে (যুদ্ধে গমনের পর) পিছনে পরে থাকা লোকেরা নিজেদের গৃহে বসে থেকে উল্লাস প্রকাশ করছিল এবং তারা আল্লাহর পথে নিজেদের ধন ও প্রাণ দিয়ে জিহাদ করাকে অপছন্দ করল। অধিকন্ত বলতে লাগলঃ তোমরা এই গরমের মধ্যে বের হয়োনা। তুমি বলে দাও -জাহান্নামের আগুন অধিকতর গরম, কত ভাল হত যদি তারা বুঝতে পারত! ৮১
1316 ৯. আত-তাওবা অতএব তারা অল্প কয়েকদিন (হেসে-খেলে) কাটিয়ে দিক, আর প্রচুর তারা কাঁদবে, ঐ সব কাজের বিনিময়ে যা তারা অর্জন করেছিল। ৮২
1317 ৯. আত-তাওবা আল্লাহ যদি তোমাকে (মাদীনায়) তাদের কোন সম্প্রদায়ের কাছে ফিরিয়ে আনেন, অতঃপর তারা কোন জিহাদে বের হতে অনুমতি চায়, তাহলে তুমি বলে দাওঃ তোমরা কখনও আমার সাথী হয়ে বের হবেনা এবং আমার সাথী হয়ে কোন শক্রর বিরুদ্ধে যুদ্ধও করবেনা; তোমরা পূর্বেও বসে থাকাকে পছন্দ করেছিলে। অতএব এখনো তোমরা ঐ সব লোকের সাথে বসে থাক যারা পশ্চাদবর্তী থাকার যোগ্য। ৮৩
1318 ৯. আত-তাওবা আর ভবিষ্যতে তাদের (মুনাফিকদের) কোন লোক মারা গেলে তার (জানাযার) সালাত তুমি কখনই আদায় করবেনা এবং তাদের কাবরের পাশে কখনও দাঁড়াবেনা। তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরী করেছে এবং তারা কুফরী অবস্থায়ই মৃত্যু বরণ করেছে। ৮৪
1319 ৯. আত-তাওবা আর তাদের ধন-সস্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাকে যেন বিস্মিত না করে; আল্লাহ শুধু এটাই চাচ্ছেন যে, এ সমস্ত বস্তুর কারণে দুনিয়ায় তাদেরকে শাস্তিতে আবদ্ধ রাখেন এবং তাদের প্রাণবায়ু কুফরী অবস্থায়ই বের হয়ে যায়। ৮৫
1320 ৯. আত-তাওবা আর যখনই কুরআনের কোন অংশ এ বিষয়ে অবতীর্ণ করা হয় যে, তোমরা আল্লাহর উপর ঈমান আন এবং তাঁর রাসূলের সঙ্গী হয়ে জিহাদ কর তখন তাদের মধ্যকার সম্পদশালী ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা তোমার কাছে অব্যাহতি চায় ও বলেঃ আমাদেরকে অনুমতি দিন, আমরাও এখানে অবস্থানকারীদের সাথে থেকে যাই। ৮৬
1321 ৯. আত-তাওবা তারা অন্তঃপুরবাসিনী নারীদের সাথে থাকতে পছন্দ করল, তাদের অন্তরসমূহের উপর মোহর লাগিয়ে দেয়া হল, কাজেই তারা বুঝতে পারেনা। ৮৭
1322 ৯. আত-তাওবা কিন্তু রাসূল ও তার সঙ্গীদের মধ্যে যারা মুসলিম ছিল তারা নিজেদের ধন সম্পদ ও প্রাণ দ্বারা জিহাদ করল; তাদেরই জন্য রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ এবং তারাই হচ্ছে সফলকাম। ৮৮
1323 ৯. আত-তাওবা আল্লাহ তাদের জন্য এমন উদ্যানসমূহ প্রস্তুত করে রেখেছেন যেগুলির নিম্নদেশ দিয়ে নহরসমূহ বয়ে চলবে, আর তারা ওর মধ্যে অনন্তকাল অবস্থান করবে; এটাই হচ্ছে (তাদের) বিরাট সফলতা। ৮৯
1324 ৯. আত-তাওবা আর গ্রামবাসীদের মধ্য হতে কতিপয় বাহানাকারী লোক এলো যেন তারা অনুমতি পায়। আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে সম্পূর্ণ রূপেই মিথ্যা বলেছিল তারা একেবারেই বসে রইল; তাদের মধ্যে যেসব লোক কুফরী করেছে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ৯০
1325 ৯. আত-তাওবা দুর্বল লোকদের উপর কোন পাপ নেই, আর না রুগ্নদের উপর, আর না ঐ সব লোকের উপর যাদের খরচ করার সামর্থ্য নেই। যদি এই সব লোক আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি নিষ্ঠা রাখে (এবং আন্তরিকতার সাথে আনুগত্য স্বীকার করে) তাহলে এ সব সৎ লোকের প্রতি কোন প্রকার অভিযোগ নেই। আর আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়। ৯১
1326 ৯. আত-তাওবা আর ঐ লোকদের উপরও নয়, যখন তারা তোমার নিকট এ উদ্দেশে আসে যে, তুমি তাদেরকে বাহন দান করবে, আর তুমি বলে দিয়েছ - আমার নিকটতো কোন বাহন নেই যার উপর আমি তোমাদেরকে উপবিষ্ট করাই, তখন তারা এমন অবস্থায় ফিরে যায় যে, তাদের চক্ষুসমূহ হতে অশ্রু বইতে থাকে এই অনুতাপে যে, তাদের ব্যয় করার মত কোন সম্বল নেই। ৯২
1327 ৯. আত-তাওবা অভিযোগতো শুধুমাত্র ঐ লোকদেরই উপর যারা সামর্থ্যশালী হওয়া সত্ত্বেও (যুদ্ধে গমন না করার) অনুমতি প্রার্থনা করছে, তারা অন্তঃপুরবাসিনী মহিলাদের সাথে থাকাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। আল্লাহ তাদের অন্তরসমূহের উপর মোহর মেরে দিলেন, কাজেই তারা (পাপ-পুণ্যকে) বুঝতে পারেনা। ৯৩
1328 ৯. আত-তাওবা তারা তোমাদের কাছে ওযর পেশ করবে যখন তোমরা তাদের কাছে ফিরে যাবে; (হে নাবী) তুমি বলে দাওঃ তোমরা ওযর পেশ করনা, আমরা কখনও তোমাদেরকে সত্যবাদী বলে মনে করবনা, আল্লাহ আমাদেরকে তোমাদের (জিহাদে না যাওয়ার) বৃত্তান্ত জানিয়ে দিয়েছেন, আর ভবিষ্যতেও আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল তোমাদের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করবেন, অতঃপর তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে এমন সত্তার কাছে যিনি অদৃশ্য এবং প্রকাশ্য সকল বিষয় অবগত আছেন, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন যা কিছু তোমরা করেছিলে। ৯৪
1329 ৯. আত-তাওবা হ্যাঁ, তারা তখন তোমাদের সামনে শপথ করে বলবে, যখন তোমরা তাদের কাছে ফিরে যাবে, যেন তোমরা তাদেরকে তাদের অবস্থার উপর ছেড়ে দাও; অতএব তোমরা তাদেরকে তাদের অবস্থার উপর ছেড়েই দাও; তারা হচ্ছে অতিশয় অপবিত্র, আর তাদের ঠিকানা হচ্ছে জাহান্নাম, ঐ সব কর্মের বিনিময়ে যা তারা করত । ৯৫
1330 ৯. আত-তাওবা তারা এ জন্য শপথ করবে যেন তোমরা তাদের প্রতি খুশী হয়ে যাও, অতঃপর যদি তোমরা তাদের প্রতি খুশী হও তাহলে আল্লাহতো এমন দুস্কর্মকারী লোকদের প্রতি খুশী হবেননা। ৯৬
1331 ৯. আত-তাওবা পল্লীবাসী লোকেরা কুফরী ও কপটতায় অতি কঠোর, আর আল্লাহ তাঁর রাসূলের প্রতি যা অবতীর্ণ করেছেন তাদের ঐ সব আহকামের জ্ঞান না থাকায় তাদের এইরূপ হওয়াই উচিত; আর আল্লাহ হচ্ছেন মহাজ্ঞানী, অতি প্রজ্ঞাময়। ৯৭
1332 ৯. আত-তাওবা আর এই গ্রামবাসীদের মধ্যে এমন লোক রয়েছে যে, তারা যা কিছু ব্যয় করে তা জরিমানা মনে করে এবং তোমাদের জন্য দুর্দিনের প্রতীক্ষায় থাকে; (বস্তুতঃ) অশুভ আবতর্ন তাদের উপরই পতিত প্রায়, আর আল্লাহ খুব শোনেন, খুব জানেন । ৯৮
1333 ৯. আত-তাওবা আর গ্রামবাসীদের মধ্যে কতিপয় লোক এমনও আছে যারা আল্লাহর প্রতি এবং কিয়ামাত দিনের প্রতি পূর্ণ ঈমান রাখে, আর যা কিছু ব্যয় করে ওকে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের উপকরণ ও রাসূলের দু‘আ লাভের উপকরণ রূপে গ্রহণ করে। স্মরণ রেখ, তাদের এই ব্যয় কার্য নিঃসন্দেহে তাদের জন্য (আল্লাহর) নৈকট্য লাভের কারণ; নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরকে নিজের রাহ্মাতে দাখিল করে নিবেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ হচ্ছেন অতি ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়। ৯৯
1334 ৯. আত-তাওবা আর যে সব মুহাজির ও আনসার (ঈমান আনায়) অগ্রবর্তী এবং প্রথম, আর যে সব লোক সরল অন্তরে তাদের অনুগামী, আল্লাহ তাদের প্রতি রাযী-খুশি হয়েছেন যেমনভাবে তারা তাঁর প্রতি রাযী হয়েছে, আর আল্লাহ তাদের জন্য এমন উদ্যানসমূহ প্রস্তুত করে রেখেছেন যার তলদেশে নহরসমূহ বইতে থাকবে, যার মধ্যে তারা চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করবে, তা হচ্ছে বিরাট কৃতকার্যতা। ১০০
1335 ৯. আত-তাওবা আর তোমাদের মরুবাসীদের মধ্য হতে কতিপয় লোক এবং মাদীনাবাসীদের মধ্য হতেও কতিপয় লোক এমন মুনাফিক রয়েছে যারা নিফাকের চরমে পৌঁছে গেছে। তুমি তাদেরকে জাননা, আমিই তাদেরকে জানি, আমি তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি প্রদান করব, অতঃপর (পরকালেও) তারা মহা শাস্তির দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। ১০১
1336 ৯. আত-তাওবা এবং আরও কতকগুলি লোক আছে যারা নিজেদের অপরাধসমূহ স্বীকার করেছে, যারা মিশ্রিত ‘আমল করেছিল, কিছু ভাল, আর কিছু মন্দ, আশা রয়েছে যে, আল্লাহ তাদের প্রতি করুণা দৃষ্টি করবেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়। ১০২
1337 ৯. আত-তাওবা তুমি তাদের ধন-সম্পদ হতে সাদাকাহ গ্রহণ কর, যদ্বারা তুমি তাদেরকে পবিত্র করে দিবে, আর তাদের জন্য দু‘আ কর। নিঃসন্দেহে তোমার দু‘আ হচ্ছে তাদের জন্য শান্তির কারণ, আর আল্লাহ খুব শোনেন, খুব জানেন। ১০৩
1338 ৯. আত-তাওবা তারা কি এটা অবগত নয় যে, আল্লাহই নিজ বান্দাদের তাওবাহ কবূল করেন, আর তিনিই দান খয়রাত কবূল করে থাকেন, আর এটাও যে, আল্লাহ হচ্ছেন তাওবাহ কবূল করতে এবং অনুগ্রহ করতে পূর্ণ সামর্থ্যবান? ১০৪
1339 ৯. আত-তাওবা হে নাবী! তুমি বলে দাওঃ তোমরা কাজ করতে থাক, অতঃপর তোমাদের কার্যকে অচিরেই দেখে নিবেন আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও ঈমানদারগণ। আর নিশ্চয়ই তোমাদেরকে প্রত্যাবর্তিত হতে হবে এমন এক সত্তার নিকট যিনি হচ্ছেন সকল অদৃশ্য ও প্রকাশ্য বিষয়ের জ্ঞাতা, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তোমাদের সকল কৃতকর্ম জানিয়ে দিবেন। ১০৫
1340 ৯. আত-তাওবা এবং আরও কতক লোক আছে যাদের ব্যাপার মুলতবী রয়েছে আল্লাহর আদেশ আসা পর্যন্ত, হয় তিনি তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন, অথবা তাদের তাওবাহ কবূল করবেন, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। ১০৬
1341 ৯. আত-তাওবা আর কেহ কেহ এমন আছে যারা এ উদ্দেশে মাসজিদ নির্মাণ করেছে যেন তারা (ইসলামের) ক্ষতি সাধন করে এবং কুফরী কথাবার্তা বলে, আর মু’মিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে, আর ঐ ব্যক্তির অবস্থানের ব্যবস্থা করে যে এর পূর্ব হতেই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধী, আর তারা শপথ করে বলবে, মঙ্গল ভিন্ন আমাদের আর কোন উদ্দেশ্য নেই; আর আল্লাহ সাক্ষী আছেন যে, তারা সম্পূর্ণ মিথ্যাবাদী। ১০৭
1342 ৯. আত-তাওবা (হে মুহাম্মাদ!) তুমি কখনও ওতে (সালাতের জন্য) দাঁড়াবেনা; অবশ্য যে মাসজিদের ভিত্তি প্রথম দিন হতেই তাকওয়ার উপর স্থাপিত হয়েছে তা এর উপযোগী যে, তুমি তাতে (সালাতের জন্য) দাঁড়াবে; ওতে এমন সব লোক রয়েছে যারা উত্তম রূপে পবিত্র হওয়াকে পছন্দ করে, আর আল্লাহ উত্তম রূপে পবিত্রতা সম্পাদনকারীদেরকে পছন্দ করেন। ১০৮
1343 ৯. আত-তাওবা তাহলে কোন্ ব্যক্তি উত্তম, যে ব্যক্তি স্বীয় ইমারাতের ভিত্তি আল্লাহভীতির উপর এবং তাঁর সন্তুষ্টির উপর স্থাপন করেছে অথবা সেই ব্যক্তি যে স্বীয় ইমারাতের ভিত্তি স্থাপন করেছে কোন গহবরের কিনারায়, যা ধ্বসে পড়ার উপক্রম, অতঃপর তা তাকে নিয়ে জাহান্নামের আগুনে পতিত হয়? আর আল্লাহ এমন যালিমদেরকে (ধর্মের) জ্ঞান দান করেননা। ১০৯
1344 ৯. আত-তাওবা তাদের এই ইমারাত যা তারা নির্মাণ করেছে, তা সদা তাদের মনে খট্কা সৃষ্টি করতে থাকবে, যে পর্যন্ত তাদের অন্তরই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়, আর আল্লাহ হচ্ছেন মহাজ্ঞানী। ১১০
1345 ৯. আত-তাওবা নিঃসন্দেহে আল্লাহ মু’মিনদের নিকট থেকে তাদের প্রাণ ও তাদের ধন সম্পদসমূহকে এর বিনিময়ে ক্রয় করে নিয়েছেন যে, তাদের জন্য জান্নাত রয়েছে, তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে, যাতে তারা (কখনও) হত্যা করে এবং (কখনও) নিহত হয়, এর কারণে (জান্নাত প্রদানের) সত্য অঙ্গীকার করা হয়েছে তাওরাতে, ইঞ্জীলে এবং কুরআনে। নিজের অঙ্গীকার পালনকারী আল্লাহ অপেক্ষা অধিক আর কে আছে? অতএব তোমরা আনন্দ করতে থাক তোমাদের এই ক্রয় বিক্রয়ের উপর, যা তোমরা সম্পাদন করেছ, আর এটা হচ্ছে বিরাট সফলতা। ১১১
1346 ৯. আত-তাওবা তারা হচ্ছে তাওবাহকারী, ইবাদাতকারী, আল্লাহর প্রশংসাকারী, সিয়াম পালনকারী, রুকু ও সাজদাহকারী, সৎ বিষয় শিক্ষা প্রদানকারী এবং মন্দ বিষয়ে বাধা প্রদানকারী, আল্লাহর সীমাসমূহের (অর্থাৎ আহকামের) সংরক্ষণকারী; আর তুমি এমন মু’মিনদেরকে সুসংবাদ শুনিয়ে দাও। ১১২ রোজা
1347 ৯. আত-তাওবা নাবী ও অন্যান্য মু’মিনদের জন্য জায়েয নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, যদিও তারা আত্মীয়ই হোক না কেন, এ কথা প্রকাশ হবার পর যে, তারা জাহান্নামের অধিবাসী। ১১৩
1348 ৯. আত-তাওবা আর ইবরাহীমের নিজ পিতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা শুধু সেই ও‘য়াদার কারণে ছিল, যে ও‘য়াদা সে তার সাথে করেছিল। অতঃপর যখন তার নিকট এ বিষয় প্রকাশ পেল যে, সে (পিতা) আল্লাহর দুশমন, তখন সে তা হতে সম্পূর্ণ রূপে নির্লিপ্ত হয়ে গেল। বাস্তবিকই ইবরাহীম ছিল অতিশয় কোমল হৃদয়, সহনশীল। ১১৪
1349 ৯. আত-তাওবা আর আল্লাহ এরূপ নন যে, কোন জাতিকে হিদায়াত করার পর পথভ্রষ্ট করেন, যে পর্যন্ত না তাদেরকে সেই সব বিষয় পরিস্কারভাবে বলে দেন, যে বিষয়ে তারা তাকওয়া অবলম্বন করবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ হচ্ছেন সকল বিষয়ে সর্বজ্ঞ। ১১৫
1350 ৯. আত-তাওবা নিশ্চয়ই আল্লাহরই রাজত্ব রয়েছে আসমানসমূহে ও যমীনে। তিনিই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান; আল্লাহ ছাড়া তোমাদের না কোন বন্ধু আছে, আর না কোন সাহায্যকারী। ১১৬
1351 ৯. আত-তাওবা আল্লাহ অনুগ্রহের দৃষ্টি করলেন নাবীর অবস্থার প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের অবস্থার প্রতিও, যারা নাবীর অনুগামী হয়েছিল এমন সংকট মুহুর্তে যখন তাদের মধ্যকার এক দলের অন্তর বিচলিত হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। অতঃপর আল্লাহ তাদের প্রতি অনুগ্রহ দৃষ্টি করলেন; নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাদের সকলের উপর স্নেহশীল, করুণাময়। ১১৭
1352 ৯. আত-তাওবা আর ঐ তিন ব্যক্তির অবস্থার প্রতিও (অনুগ্রহ করলেন) যাদের ব্যাপার মুলতবী রাখা হয়েছিল এই পর্যন্ত যে, তখন ভূ-পৃষ্ঠ নিজ প্রশস্ততা সত্ত্বেও তাদের প্রতি সংকীর্ণ হতে লাগল এবং তারা নিজেরা নিজেদের জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ল; আর তারা বুঝতে পারল যে, আল্লাহর পাকড়াও হতে কোথাও আশ্রয় পাওয়া যেতে পারেনা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করা ব্যতীত; অতঃপর তাদের অবস্থার প্রতিও অনুগ্রহের দৃষ্টি করলেন, যাতে তারা তাওবাহ করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ হচ্ছেন অতিশয় অনুগ্রহকারী, করুণাময়। ১১৮
1353 ৯. আত-তাওবা হে মু’মিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাক। ১১৯
1354 ৯. আত-তাওবা মাদীনার অধিবাসী এবং তাদের আশেপাশে যে সব পল্লী রয়েছে তাদের পক্ষে এটা উচিত ছিলনা যে, তারা আল্লাহর রাসূলের সঙ্গী না হয়; আর এটাও (উচিত ছিল) না যে, নিজেদের প্রাণ তার প্রাণ অপেক্ষা প্রিয় মনে করে। এর কারণ এই যে, আল্লাহর পথে তাদের যে পিপাসা, ক্লান্তি আর ক্ষুধা পায় এবং তাদের এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করায় কাফিরদের যে ক্রোধের কারণ হয়ে থাকে, আর দুশমনদের হতে তারা যা কিছু প্রাপ্ত হয় - এর প্রত্যেকটি সৎ কাজ বলে গণ্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎ কর্মশীল লোকদের শ্রমফল (সাওয়াব) বিনষ্ট করেননা। ১২০
1355 ৯. আত-তাওবা আর ছোট-বড় যা কিছু তারা ব্যয় করেছে, আর যত প্রান্তর তাদের অতিক্রম করতে হয়েছে, তৎসমুদয়ও তাদের নামে লিখিত হয়েছে, যেন আল্লাহ তাদের কৃতকর্মসমূহের অতি উত্তম বিনিময় প্রদান করেন। ১২১
1356 ৯. আত-তাওবা আর মু’মিনদের এটাও সমীচীন নয় যে, (জিহাদের জন্য) সবাই একত্রে বের হয়ে পড়ে; সুতরাং এমন কেন করা হয়না যে, তাদের প্রত্যেকটি বড় দল হতে এক একটি ছোট দল (জিহাদে) বহির্গত হয়, যাতে অবশিষ্ট লোক ধর্মজ্ঞান অর্জন করতে থাকে, আর যাতে তারা নিজ কাওমকে (নাফরমানী হতে) ভয় প্রদর্শন করে যখন তারা তাদের নিকট প্রত্যাবর্তন করে, যেন তারা পরহেয করে চলতে পারে। ১২২
1357 ৯. আত-তাওবা হে মু’মিনগণ! ঐ কাফিরদের সাথে যুদ্ধ কর যারা তোমাদের আশেপাশে অবস্থান করছে, যেন তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা খুঁজে পায়; আর জেনে রেখ যে, আল্লাহ পরহেযগারদের সাথে রয়েছেন। ১২৩
1358 ৯. আত-তাওবা আর যখন কোন সূরা অবতীর্ণ করা হয় তখন কেহ কেহ বলে, তোমাদের মধ্যে এই সূরা কার ঈমান বৃদ্ধি করল? অবশ্যই যে সব লোক ঈমান এনেছে, এই সূরা তাদের ঈমানকে বর্ধিত করেছে এবং তারাই আনন্দ লাভ করছে। ১২৪
1359 ৯. আত-তাওবা কিন্তু যাদের অন্তরসমূহে ব্যাধি রয়েছে, এই সূরা তাদের মধ্যে তাদের কলুষতার সাথে আরও কলুষতা বর্ধিত করেছে, আর তাদের কুফরী অবস্থায়ই মৃত্যু হয়েছে। ১২৫
1360 ৯. আত-তাওবা আর তারা কি লক্ষ্য করেনা যে, তারা প্রতি বছর একবার অথবা দু’বার কোন না কোন বিপদে পতিত হয়? তবুও তারা তাওবাহ করেনা, আর না তারা উপদেশ গ্রহণ করে। ১২৬
1361 ৯. আত-তাওবা আর যখন কোন সূরা নাযিল করা হয় তখন তারা একে অপরের দিকে তাকাতে থাকে (এবং ইঙ্গিতে বলে) তোমাদেরকে কেহ দেখছেনা তো? অতঃপর তারা চলে যায়; আল্লাহ তাদের অন্তরগুলিকে (আলো থেকে) ফিরিয়ে দিয়েছেন, কারণ তারা হচ্ছে নির্বোধ সমাজ! ১২৭
1362 ৯. আত-তাওবা তোমাদের নিকট আগমন করেছে তোমাদেরই মধ্যকার এমন একজন রাসূল যার কাছে তোমাদের ক্ষতিকর বিষয় অতি কষ্টদায়ক মনে হয়, যে হচ্ছে তোমাদের খুবই হিতাকাংখী, মু’মিনদের প্রতি বড়ই স্নেহশীল, করুণাপরায়ণ। ১২৮
1363 ৯. আত-তাওবা অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তুমি বলে দাওঃ আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া অন্য কেহ মা‘বূদ নেই, আমি তাঁরই উপর নির্ভর করছি, আর তিনি হচ্ছেন অতি বড় আরশের মালিক। ১২৯
1364 ১০. ইউনুস আলিফ লাম রা, এটা হচ্ছে অতি সূক্ষ্ম তত্ত্বপূর্ণ কিতাবের আয়াত।
1365 ১০. ইউনুস লোকদের জন্য এটা কি বিস্ময়কর মনে হয়েছে যে, আমি তাদের মধ্য হতে একজনের নিকট অহী প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তুমি সকলকে ভয় প্রদর্শন কর এবং যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে এই সুসংবাদ দাও যে, তারা তাদের রবের নিকট পূর্ণ মর্যাদা লাভ করবে। কাফিরেরা বলতে লাগল যে, এ ব্যক্তিতো নিঃসন্দেহে প্রকাশ্য যাদুকর।
1366 ১০. ইউনুস নিশ্চয়ই আল্লাহই হচ্ছেন তোমাদের রাব্ব, যিনি আসমানসমূহকে এবং যমীনকে সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে, অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হলেন, তিনি প্রত্যেক কাজ পরিচালনা করে থাকেন। তাঁর অনুমতি ছাড়া সুপারিশ করার কেহ নেই; এমন আল্লাহ হচ্ছেন তোমাদের রাব্ব। অতএব তোমরা তাঁর ইবাদাত কর; তবুও কি তোমরা বুঝছনা?
1367 ১০. ইউনুস তোমাদের সকলকে তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে, আল্লাহর ও‘য়াদা সত্য; নিশ্চয়ই তিনিই প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনিই পুনর্বার সৃষ্টি করবেন, যাতে এরূপ লোকদের যারা ঈমান এনেছে এবং ভাল কাজ করেছে তাদেরকে ইনসাফ মত প্রতিফল প্রদান করেন; আর যারা অবিশ্বাসী তারা পান করার জন্য পাবে উত্তপ্ত পানি এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি তাদের কুফরীর কারণে।
1368 ১০. ইউনুস আল্লাহ এমন, যিনি সূর্যকে দীপ্তিমান এবং চাঁদকে আলোকময় বানিয়েছেন এবং ওর (গতির) জন্য মানযিলসমূহ নির্ধারিত করেছেন যাতে তোমরা বছরসমূহের সংখ্যা ও হিসাব জানতে পার; আল্লাহ এসব বস্তু অযথা সৃষ্টি করেননি, তিনি এই প্রমাণসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন ঐসব লোকের জন্য যারা জ্ঞানবান।
1369 ১০. ইউনুস নিঃসন্দেহে রাত ও দিনের পরিবর্তনের মধ্যে এবং আল্লাহ যা কিছু আসমানসমূহে ও যমীনে সৃষ্টি করেছেন তৎসমুদয়ের মধ্যে প্রমাণসমূহ রয়েছে ঐ লোকদের জন্য যারা আল্লাহর ভয় পোষণ করে।
1370 ১০. ইউনুস যারা আমার সাথে সাক্ষাতের আশা পোষণ করেনা এবং পার্থিব জীবনেই পরিতৃপ্ত এবং এতেই নিশ্চিন্ত থাকে এবং যারা আমার নিদর্শনাবলী সম্বন্ধে গাফিল ।
1371 ১০. ইউনুস এইরূপ লোকদের ঠিকানা হচ্ছে জাহান্নাম, তাদের কার্যকলাপের কারণে।
1372 ১০. ইউনুস নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং ভাল কাজ করেছে, তাদের রাব্ব তাদেরকে লক্ষ্য স্থলে (জান্নাতে) পৌঁছে দিবেন তাদের ঈমানের কারণে, শান্তির উদ্যানসমূহে, তাদের (বাসস্থানের) তলদেশ দিয়ে নহরসমূহ বইতে থাকবে।
1373 ১০. ইউনুস সেখানে তাদের বাক্য হবেঃ হে আল্লাহ! তুমি মহান, পবিত্র! এবং পরস্পরের অভিবাদন হবে সালাম (আসসালামু ‘আলাইকুম), আর তাদের দু‘আর শেষ বাক্য হবে ‘আলহামদুলিল্লাহি রাবিবল ‘আলামীন’ (সমস্ত প্রশংসা সারা জাহানের রাব্ব মহান আল্লাহর জন্য)। ১০
1374 ১০. ইউনুস আর আল্লাহ যদি মানুষের উপর ত্বরিত ক্ষতি সাধন করতেন, যেমন তারা ত্বরিত উপকার লাভ করতে আগ্রহ রাখে, তাহলে তাদের অঙ্গীকার কবেই পূর্ণ হয়ে যেত! অনন্তর আমি সেই লোকদেরকে, যারা আমার নিকট উপস্থিত হওয়ার চিন্তা করেনা, ছেড়ে দিই তাদের অবস্থার উপর, যেন তারা তাদের অবাধ্যতার মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে। ১১
1375 ১০. ইউনুস আর যখন মানুষকে কোন ক্লেশ স্পর্শ করে তখন আমাকে ডাকতে থাকে শুয়ে, বসে এবং দাঁড়িয়েও; অতঃপর যখন আমি তার সেই কষ্ট দূর করে দিই তখন সে নিজের পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে। যে কষ্ট তাকে স্পর্শ করেছিল তা মোচন করার জন্য সে যেন আমাকে কখনও ডাকেইনি; এই সীমা লংঘনকারীদের কার্যকলাপ তাদের কাছে এইরূপই পছন্দনীয় মনে হয়। ১২
1376 ১০. ইউনুস আমি তোমাদের পূর্বে বহু সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছি, যখন তারা যুলম করেছিল, অথচ তাদের নিকট তাদের রাসূলগণও প্রমাণাদীসহ আগমন করেছিল, কিন্তু কিছুতেই তারা ঈমান আনলনা। আর আমি অপরাধীদেরকে এই রূপেই শাস্তি দিয়ে থাকি। ১৩
1377 ১০. ইউনুস অতঃপর আমি তাদের স্থলে তোমাদেরকে তাদের পর ভূমন্ডলে আবাদ করলাম, যেন আমি প্রত্যক্ষ করি যে, তোমরা কি রূপ কাজ কর। ১৪
1378 ১০. ইউনুস আর যখন তাদের সামনে আমার আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় - যা অতি স্পষ্ট, তখন ঐ সব লোক, যাদের আমার নিকট উপস্থিত হওয়ার চিন্তা নেই - এইরূপ বলেঃ এটা ছাড়া অন্য কোন কুরআন আনয়ন করুন অথবা এতেই কিছু পরিবর্তন করে দিন। বলঃ আমার দ্বারা ইহা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, আমিতো শুধুমাত্র উহারই অনুসরণ করব যা অহীযোগে আমার কাছে পৌঁছেছে। আমি যদি আমার রবের নাফরমানী করি তাহলে আমি এক অতি ভীষণ দিনের শাস্তির আশংকা রাখি। ১৫
1379 ১০. ইউনুস তুমি বলে দাওঃ যদি আল্লাহর ইচ্ছা হত তাহলে, না আমি তোমাদেরকে এটা পাঠ করে শোনাতাম আর না আল্লাহ তোমাদেরকে ওটা জানাতেন। কেননা আমি এর পূর্বেওতো জীবনের এক দীর্ঘ সময় তোমাদের মধ্যে অতিবাহিত করেছি; তাহলে কি তোমরা এতটুকু জ্ঞান রাখনা? ১৬
1380 ১০. ইউনুস অতএব সেই ব্যক্তির চেয়ে অধিক অত্যাচারী (যালিম) কে যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে অথবা তাঁর আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে? নিঃসন্দেহে এমন পাপাচারীদের কিছুতেই মঙ্গল হবেনা। ১৭
1381 ১০. ইউনুস আর তারা আল্লাহ ছাড়া এমন বস্তুসমূহের ইবাদাত করে যারা তাদের কোন অপকার করতে পারেনা এবং তাদের কোন উপকারও করতে পারেনা। আর তারা বলে, এরা হচ্ছে আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী। তুমি বলে দাওঃ তোমরা কি আল্লাহকে এমন বিষয়ের সংবাদ দিচ্ছ যা তিনি অবগত নন, না আসমানে, আর না যমীনে? তিনি পবিত্র এবং তাদের মুশরিকী কার্যকলাপ হতে তিনি অনেক উর্ধ্বে। ১৮
1382 ১০. ইউনুস আর সমস্ত মানুষ (প্রথম) এক উম্মাতই ছিল, অতঃপর তারা মতভেদ সৃষ্টি করল। আর যদি তোমার রবের পক্ষ হতে এক নির্দেশ বাণী প্রথমে সাব্যস্ত হয়ে না থাকত তাহলে যে বিষয়ে তারা মতভেদ করছে তার চূড়ান্ত মীমাংসা হয়ে যেত। ১৯
1383 ১০. ইউনুস আর তারা বলেঃ তার প্রতি তার রবের পক্ষ হতে কোন মু’জিযা কেন নাযিল হলনা? তুমি বলে দাওঃ গাইবের খবর শুধুমাত্র আল্লাহই জানেন। অতএব তোমরা প্রতীক্ষায় থাক, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষায় থাকলাম। ২০
1384 ১০. ইউনুস আর যখন আমি মানুষকে কোন নি‘আমাতের স্বাদ উপভোগ করাই তাদের উপর কোন বিপদ পতিত হওয়ার পর, তখনই তারা আমার আয়াতসমূহ সম্বন্ধে দুরভিসন্ধি করতে থাকে। তুমি বলে দাওঃ আল্লাহ অতি দ্রুত কলাকৌশল তৈরী করতে পারেন। নিশ্চয়ই আমার মালাইকা/ফেরেশতাগণ তোমাদের সকল দুরভিসন্ধি লিপিবদ্ধ করছে। ২১
1385 ১০. ইউনুস তিনি এমন, যিনি তোমাদেরকে স্থলভাগে ও পানি পথে পরিভ্রমণ করান; যখন তোমরা নৌকায় অবস্থান কর, আর সেই নৌকাগুলি লোকদেরকে নিয়ে অনুকূল বায়ুর সাহায্যে চলতে থাকে, আর তারা তাতে আনন্দিত হয়, (হঠাৎ) তাদের উপর এক প্রচন্ড (প্রতিকূল) বায়ু এসে পড়ে এবং প্রত্যেক দিক হতে তাদের উপর তরঙ্গমালা ধেয়ে আসে, আর তারা মনে করে যে, তারা (বিপদে) বেষ্টিত হয়ে পড়েছে, (তখন) সকলে খাঁটি বিশ্বাসের সাথে আল্লাহকেই ডাকতে থাকেঃ (হে আল্লাহ!) আপনি যদি আমাদেরকে এটা হতে রক্ষা করেন তাহলে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞ হয়ে যাব। ২২
1386 ১০. ইউনুস অতঃপর যখনই মা‘বূদ তাদেরকে উদ্ধার করেন তখনই তারা ভূপৃষ্ঠে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহাচরণ করতে থাকে। হে লোক সকল! (শুনে রেখ), তোমাদের বিদ্রোহাচরণ তোমাদেরই (প্রাণের) জন্য বিপদ হবে, পার্থিব জীবনে (এটা দ্বারা কিছু ফল) ভোগ করে নাও, অতঃপর আমারই কাছে তোমাদেরকে ফিরে আসতে হবে, অতঃপর আমি তোমাদের যাবতীয় কৃতকর্ম তোমাদেরকে জানিয়ে দিব। ২৩
1387 ১০. ইউনুস বস্তুতঃ পার্থিব জীবনের অবস্থাতো এরূপ, যেমন আমি আসমান হতে পানি বর্ষণ করলাম, অতঃপর তা দ্বারা উৎপন্ন হয় যমীনের উদ্ভিদগুলি অতিশয় ঘন হয়ে, যা মানুষ ও পশুরা আহার করে; এমন কি, যখন সেই যমীন নিজের সুদৃশ্যতার পূর্ণ রূপ ধারণ করল এবং তা শোভনীয় হয়ে উঠল, আর ওর মালিকরা মনে করল যে, তারা এখন ওর পূর্ণ অধিকারী হয়েছে, তখন দিনে অথবা রাতে ওর উপর আমার পক্ষ হতে কোন আপদ এসে পড়ল। সুতরাং আমি ওকে এমন নিশ্চিহ্ন করে দিলাম, যেন গতকাল ওর অস্তিত্বই ছিলনা। এরূপেই আয়াতগুলিতে আমি বিশদ রূপে বর্ণনা করি এমন লোকদের জন্য যারা চিন্তা ভাবনা করে। ২৪
1388 ১০. ইউনুস আর আল্লাহ তোমাদেরকে শান্তির নিবাসের দিকে আহবান করেন; এবং যাকে ইচ্ছা সরল পথে চলার ক্ষমতা দান করেন। ২৫
1389 ১০. ইউনুস যারা সৎ কাজ করেছে তাদের জন্য উত্তম বস্তু (জান্নাত) রয়েছে; এবং অতিরিক্ত কিছুও বটে; আর না তাদের মুখমন্ডলকে মলিনতা আচ্ছন্ন করবে, আর না অপমান; তারাই হচ্ছে জান্নাতের অধিবাসী, তারা ওর মধ্যে অনন্তকাল থাকবে। ২৬
1390 ১০. ইউনুস পক্ষান্তরে যারা মন্দ কাজ করেছে তারা তাদের মন্দ কাজের শাস্তি পাবে ওর অনুরূপ, এবং অপমান তাদেরকে আচ্ছাদিত করে নিবে; তাদেরকে আল্লাহ (এর শাস্তি) হতে কেহই রক্ষা করতে পারবেনা, যেন তাদের মুখমন্ডলকে আচ্ছাদিত করে দেয়া হয়েছে রাতের অন্ধকার স্তরসমূহ দ্বারা। এরা হচ্ছে জাহান্নামের অধিবাসী, তারা ওর মধ্যে অনন্ত কাল থাকবে। ২৭
1391 ১০. ইউনুস আর সেই দিনটিও উল্লেখযোগ্য যেদিন আমি মুশরিকদেরকে একত্রিত করব, অতঃপর বলবঃ তোমরা ও তোমাদের নিরূপিত শরীকরা স্ব স্ব স্থানে অবস্থান কর, অতঃপর আমি তাদের মধ্যে পরস্পর বিচ্ছিন্ন করে দিব এবং তাদের সেই শরীকরা বলবেঃ তোমরাতো আমাদের ইবাদাত করতেনা। ২৮
1392 ১০. ইউনুস বস্তুতঃ আমাদের ও তোমাদের মধ্যে আল্লাহই হচ্ছেন যথোপযুক্ত সাক্ষী যে, আমরা তোমাদের ইবাদাত সম্বন্ধে অবগত ছিলামনা। ২৯
1393 ১০. ইউনুস সেখানে প্রত্যেক ব্যক্তিই স্বীয় পূর্ব কৃতকর্মগুলি পরীক্ষা করে নিবে, এবং তাদেরকে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তিত করা হবে, যিনি তাদের প্রকৃত মালিক। আর যে সব মিথ্যা মা‘বূদ তারা বানিয়ে নিয়েছিল তারা সবাই তাদের থেকে দূরে সরে যাবে। ৩০
1394 ১০. ইউনুস তুমি বলঃ তিনি কে, যিনি তোমাদেরকে আসমান ও যমীন হতে রিয্ক পৌঁছিয়ে থাকেন? অথবা কে তিনি, যিনি কর্ণ ও চক্ষুসমূহের উপর পূর্ণ অধিকার রাখেন? আর তিনি কে, যিনি জীবন্তকে প্রাণহীন হতে বের করেন, আর প্রাণহীনকে জীবন্ত হতে বের করেন? আর তিনি কে যিনি সমস্ত কাজ পরিচালনা করেন? তখন অবশ্যই তারা বলবেঃ আল্লাহ! অতএব তুমি বলঃ তাহলে কেন তোমরা (শির্‌ক হতে) নিবৃত্ত থাকছনা? ৩১
1395 ১০. ইউনুস সুতরাং তিনিই হচ্ছেন আল্লাহ, যিনি তোমাদের প্রকৃত রাব্ব, অতএব সত্যের পর ভ্রষ্টতা ছাড়া আর কি রইল? তাহলে তোমরা (সত্যকে ছেড়ে) কোথায় ফিরে যাচ্ছ? ৩২
1396 ১০. ইউনুস এভাবে সমস্ত অবাধ্য লোকদের সম্পর্কে তোমার রবের এই কথা সাব্যস্ত হয়ে গেল যে, তারা ঈমান আনবেনা। ৩৩
1397 ১০. ইউনুস (হে নাবী) তুমি বলঃ তোমাদের (নিরূপিত) শরীকদের মধ্যে এমন কেহ আছে কি যে প্রথমবারও সৃষ্টি করে এবং পুনরাবর্তন করতে পারে? তুমি বলে দাওঃ আল্লাহই প্রথমবারও সৃষ্টি করেন, অতঃপর তিনিই পুনর্বারও সৃষ্টি করবেন, অতএব তোমরা (সত্য হতে) কোথায় ফিরে যাচ্ছ? ৩৪
1398 ১০. ইউনুস তুমি বলঃ তোমাদের শরীকদের মধ্যে এমন কেহ আছে কি যে সত্য বিষয়ের সন্ধান দেয়? তুমি বলে দাও, আল্লাহই সত্য বিষয়ের পথ প্রদর্শন করেন; তাহলে কি যিনি সত্য বিষয়ের পথ প্রদর্শন করেন তিনি অনুসরণ করার সর্বাধিক যোগ্য, নাকি ঐ ব্যক্তি যে অন্যের পথ প্রদর্শন করা ছাড়া নিজেই পথ প্রাপ্ত হয়না? তাহলে তোমাদের কি হল? তোমরা কিরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছ? ৩৫
1399 ১০. ইউনুস আর তাদের অধিকাংশ লোক শুধু অলীক কল্পনার পিছনে চলছে; নিশ্চয়ই অলীক কল্পনা বাস্তব ব্যাপারে মোটেই ফলপ্রসু নয়; নিশ্চয়ই আল্লাহ সবই জানেন, যা কিছু তারা করছে । ৩৬
1400 ১০. ইউনুস আর এই কুরআন কল্পনা প্রসূত নয় যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও দ্বারা প্রকাশিত হয়েছে, ইহাতো সেই কিতাবের সত্যতা প্রমাণকারী যা এর পূর্বে (নাযিল) হয়েছে, এবং আবশ্যকীয় বিধানসমূহের বিশদ বর্ণনাকারী, (এবং) এতে কোন সন্দেহ নেই (ইহা) বিশ্বের রবের পক্ষ হতে (নাযিল) হয়েছে। ৩৭
1401 ১০. ইউনুস তারা কি এরূপ বলে যে, এটা তার (নাবীর) স্বরচিত? তুমি বলে দাওঃ তাহলে তোমরা এর অনুরূপ একটি সূরা রচনা কর এবং গাইরুল্লাহ হতে যাকে ইচ্ছা ডেকে নাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। ৩৮
1402 ১০. ইউনুস বরং তারা এমন বিষয়কে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে, যাকে নিজ জ্ঞানের পরিধিতে আনয়ন করেনি, আর এখনো তাদের প্রতি ওর পরিণাম (আযাব) পৌঁছেনি; এরূপভাবে তারাও মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিল, যারা তাদের পূর্বে গত হয়েছে। অতএব দেখ সেই অত্যাচারীদের পরিণাম কি হল? ৩৯
1403 ১০. ইউনুস আর তাদের মধ্যে এমন কতক লোক আছে, যারা এর প্রতি ঈমান আনবে এবং এমন কতক লোকও আছে যে, তারা এর প্রতি ঈমান আনবেনা, আর তোমার রাব্ব অত্যাচারীদেরকে ভাল রূপে জানেন। ৪০
1404 ১০. ইউনুস আর (এতদসত্ত্বেও) যদি তারা তোমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করতে থাকে তাহলে তুমি বলে দাওঃ আমার কর্মফল আমি পাব, আর তোমাদের কর্মফল তোমরা পাবে। তোমরা আমার কৃতকর্মের জন্য দায়ী নও, আর আমিও তোমাদের কর্মের জন্য দায়ী নই। ৪১
1405 ১০. ইউনুস আর তাদের কতক এমন আছে যারা তোমার (কথার) প্রতি কান পেতে রাখে। কিন্তু কি তুমি বধিরদেরকে শোনাবে, যদি তাদের বোধশক্তি না থাকে? ৪২
1406 ১০. ইউনুস আর তাদের কতক এমনও আছে যারা তোমাকে দেখছে; তুমি কি অন্ধকে পথ দেখাতে পারবে, যদি তাদের অর্ন্তদৃষ্টি না থাকে? ৪৩
1407 ১০. ইউনুস নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের প্রতি কোন যুলম করেননা, বরং মানুষ নিজেরাই নিজেদেরকে ধ্বংস করছে। ৪৪
1408 ১০. ইউনুস আর (ঐ দিনটি তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দাও) যে দিন তিনি (আল্লাহ) তাদেরকে এইরূপ অবস্থায় একত্রিত করবেন যেন তারা পূর্ণ দিনের মুহুর্তকাল মাত্র অবস্থান করেছিল, এবং তারা পরস্পর পরস্পরকে চিনবে; বাস্তবিকই ক্ষতিগ্রস্ত হল ঐ সব লোক যারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাত হওয়াকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং তারা হিদায়াত প্রাপ্ত ছিলনা। ৪৫
1409 ১০. ইউনুস আর আমি তাদের সাথে যে শাস্তির অঙ্গীকার করছি, যদি ওর সামান্য অংশও তোমাকে দেখিয়ে দিই, অথবা তোমাকে মৃত্যু দান করি, সর্বাবস্থায় তাদেরকে আমারই পানে আসতে হবে, আর আল্লাহ তাদের সকল কৃতকর্মেরই খবর রাখেন। ৪৬
1410 ১০. ইউনুস প্রত্যেক উম্মাতের জন্য রাসূল রয়েছে, যখন তাদের সেই রাসূল (বিচার দিবসে) এসে পড়বে, (তখন) তাদের মীমাংসা করা হবে ন্যায়ভাবে, আর তাদের প্রতি কোন অবিচার করা হবেনা। ৪৭
1411 ১০. ইউনুস আর তারা বলেঃ (আমাদের) এই অঙ্গীকার কখন (সংঘটিত) হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও? ৪৮
1412 ১০. ইউনুস তুমি বলে দাওঃ আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত আমি আমার নিজের জন্যও কোন উপকার বা ক্ষতির অধিকারী নই, প্রত্যেক উম্মাতের (আযাবের) জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় আছে; যখন তাদের সেই নির্দিষ্ট সময় এসে পৌঁছে তখন তারা মুহুর্তকাল না পশ্চাদপদ হতে পারবে, আর না অগ্রসর হতে পারবে। ৪৯
1413 ১০. ইউনুস তুমি বলে দাওঃ বল তো, যদি তোমাদের উপর আল্লাহর আযাব রাতে অথবা দিনে আসে তাহলে আযাবের মধ্যে এমন কোন্ জিনিস রয়েছে যা অপরাধীরা তাড়াতাড়ি চাচ্ছে? ৫০
1414 ১০. ইউনুস তাহলে কি ওটা যখন এসেই পড়বে, তখন ওটা বিশ্বাস করবে? (বলা হবে) হ্যাঁ, এখন মেনে নিলে। অথচ তোমরা ওর জন্য তাড়াহুড়া করছিলে। ৫১
1415 ১০. ইউনুস অতঃপর যালিমদেরকে বলা হবেঃ চিরস্থায়ী শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করতে থাক, তোমরাতো তোমাদেরই কৃতকর্মের ফল পাচ্ছ। ৫২
1416 ১০. ইউনুস তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করছে, ওটা (শাস্তি) কি যথার্থ বিষয়? তুমি বলে দাওঃ হ্যাঁ, আমার রবের কসম! ওটা নিশ্চিত সত্য; আর তোমরা কিছুতেই আল্লাহকে অপারগ করতে পারবেনা। ৫৩
1417 ১০. ইউনুস আর যদি প্রত্যেক মুশরিকের কাছে এই পরিমাণ (মাল) থাকে যে, তা সমগ্র পৃথিবীর সম পরিমাণ হয় তাহলে সে তা দান করেও নিজের প্রাণ রক্ষা করতে চাবে; এবং যখন তারা আযাব দেখতে পাবে তখন (নিজেদের) অনুশোচনা প্রকাশ করতে সক্ষম হবেনা, আর তাদের ফাইসালা করা হবে ন্যায়ভাবে এবং তাদের প্রতি অবিচার করা হবেনা। ৫৪
1418 ১০. ইউনুস সাবধান! আসমানসমূহে এবং যমীনে যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহর; সাবধান! আল্লাহর অঙ্গীকার সত্য, কিন্তু অধিকাংশ লোকই বিশ্বাস করেনা ৫৫
1419 ১০. ইউনুস তিনিই জীবন দান করেন এবং তিনিই মৃত্যু ঘটান, আর তোমরা সবাই তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে। ৫৬
1420 ১০. ইউনুস (হে মানব জাতি!) তোমাদের কাছে তোমাদের রবের তরফ হতে এমন বিষয় সমাগত হয়েছে যা হচ্ছে নাসীহাত এবং অন্তরসমূহের সকল রোগের আরোগ্যকারী, আর মু’মিনদের জন্য ওটা পথ প্রদর্শক ও রাহমাত। ৫৭
1421 ১০. ইউনুস তুমি বলে দাওঃ আল্লাহর এই দান ও রাহমাতের প্রতি সকলেরই আনন্দিত হওয়া উচিত; তা ওটা (পার্থিব সম্পদ) হতে বহু গুণে উত্তম যা তারা সঞ্চয় করছে। ৫৮
1422 ১০. ইউনুস তুমি বলঃ আল্লাহ তোমাদের জন্য যা কিছু রিয্ক পাঠিয়েছিলেন, অতঃপর তোমরা ওর কতক অংশ হারাম এবং কতক অংশ হালাল সাব্যস্ত করে নিলে; তুমি জিজ্ঞেস করঃ আল্লাহ কি তোমাদেরকে অনুমতি দিয়েছেন, না কি তোমরা আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করছ? ৫৯
1423 ১০. ইউনুস আর যারা আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করে তাদের কিয়ামাতের দিন সম্বন্ধে কি ধারণা? বাস্তবিক, মানুষের উপর আল্লাহর খুবই অনুগ্রহ রয়েছে, কিন্তু অধিকাংশ লোকই অকৃতজ্ঞ। ৬০
1424 ১০. ইউনুস আর তুমি যে অবস্থায়ই থাক না কেন, আর যে কোন অংশ হতে কুরআন পাঠ কর এবং তোমরা (অন্যান্য লোক) যে কাজই কর, আমার কাছে সব কিছুরই খবর থাকে, যখন তোমরা সেই কাজ করতে শুরু কর। কণা পরিমাণও কোন বস্তু তোমার রবের (জ্ঞানের) অগোচর নয় - না যমীনে, না আসমানে। আর তা হতে ক্ষুদ্রতর, কিংবা বৃহত্তর, সমস্তই সুস্পষ্ট কিতাবে (কুরআনে) লিপিবদ্ধ রয়েছে। ৬১
1425 ১০. ইউনুস মনে রেখ, আল্লাহর বন্ধুদের না কোন আশংকা আছে, আর না তারা বিষন্ন হবে। ৬২
1426 ১০. ইউনুস তারা হচ্ছে সেই লোক যারা ঈমান এনেছে এবং (পাপ হতে) পরহেয করে থাকে। ৬৩
1427 ১০. ইউনুস তাদের জন্য সুসংবাদ রয়েছে পার্থিব জীবনে এবং পরকালেও। আল্লাহর বাক্যসমূহে কোন পরিবর্তন হয়না; এটা হচ্ছে বিরাট সফলতা। ৬৪
1428 ১০. ইউনুস আর তোমাকে যেন তাদের উক্তিগুলি বিষণ্ণ না করে। সকল ক্ষমতা এবং ইয্যাত আল্লাহরই জন্য; তিনি শোনেন, জানেন। ৬৫
1429 ১০. ইউনুস মনে রেখ, যা কিছু আসমানসমূহে আছে এবং যা কিছু যমীনে আছে, এই সমস্তই আল্লাহর। আর যারা আল্লাহকে ছেড়ে অন্য শরীকদের ইবাদাত করে তারা কোন্ বস্তুর অনুসরণ করছে? তারা শুধু অবাস্তব খেয়ালের তাবেদারী করে চলছে এবং শুধু অনুমান প্রসূত কথা বলছে। ৬৬
1430 ১০. ইউনুস তিনি এমন যিনি তোমাদের জন্য রাত বানিয়েছেন, যেন তোমরা তাতে স্বস্তি লাভ কর। আর দিনকেও এভাবে সৃষ্টি করেছেন যে, তা হচ্ছে দেখাশোনার উপকরণ। ওতে (তাওহীদের) প্রমাণসমূহ রয়েছে তাদের জন্য যারা শোনে। ৬৭
1431 ১০. ইউনুস তারা বলেঃ আল্লাহর সন্তান আছে, সুবহানাল্লাহ! তিনিতো কারও মুখাপেক্ষী নন। তাঁরই অধীনে রয়েছে যা কিছু আসমানসমূহে আছে এবং যা কিছু যমীনে আছে। তোমাদের কাছে এর (উক্ত দাবীর) কোন প্রমাণও নেই; আল্লাহ সম্বন্ধে কি তোমরা এমন কথা আরোপ করছো যা তোমাদের জানা নেই? ৬৮
1432 ১০. ইউনুস বল, যারা আল্লাহর উপর মিথ্যা রচনা করে নিশ্চয়ই তারা সফলকাম হবেনা। ৬৯
1433 ১০. ইউনুস এটা দুনিয়ার সামান্য আরাম-আয়েশ মাত্র। অতঃপর আমারই দিকে তাদের ফিরে আসতে হবে, তখন আমি তাদেরকে তাদের কুফরীর কারণে কঠিন শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করাব। ৭০
1434 ১০. ইউনুস আর তুমি তাদেরকে নূহের ইতিবৃত্ত পড়ে শোনাও, যখন সে নিজের কাওমকে বললঃ হে আমার কাওম! যদি তোমাদের কাছে দুর্বহ মনে হয় আমার অবস্থান এবং আল্লাহর আদেশাবলীর নাসীহাত করা, তাহলে আমারতো আল্লাহরই উপর ভরসা। সুতরাং তোমরা তোমাদের (কল্পিত) শরীকদেরকে সঙ্গে নিয়ে নিজেদের ষড়যন্ত্র মাযবূত করে নাও, অতঃপর তোমাদের সেই তদবীর (গোপন ষড়যন্ত্র) যেন তোমাদের দুশ্চিন্তার কারণ না হয়, তারপর আমার সাথে (যা করতে চাও) করে ফেল, আর আমাকে মোটেই অবকাশ দিওনা। ৭১
1435 ১০. ইউনুস অতঃপর যদি তোমরা পরোম্মুখই থাক তাহলে আমিতো তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাইনা, আমার পারিশ্রমিকতো শুধু আল্লাহরই যিম্মায় রয়েছে। আর আমাকে হুকুম করা হয়েছে, আমি যেন মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত থাকি। ৭২
1436 ১০. ইউনুস অতঃপর তারা তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে থাকে; অতএব আমি তাকে এবং যারা তার সাথে নৌকায় ছিল তাদেরকে নাজাত দিলাম ও তাদেরকে আবাদ করলাম, আর যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিল তাদেরকে নিমজ্জিত করলাম। সুতরাং দেখ কি পরিণাম হয়েছিল তাদের যাদেরকে সাবধান করা হয়েছিল। ৭৩
1437 ১০. ইউনুস আবার আমি তার পরে অপর রাসূলদেরকে তাদের সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করলাম। তারা তাদের নিকট মু’জিযা’সমূহ নিয়ে এলো। এতদসত্ত্বেও তারা পূর্বে যা মিথ্যা সাব্যস্ত করেছিল পরে তা মেনে নেয়ার ছিলনা; এভাবেই আল্লাহ কাফিরদের অন্তরসমূহে মোহর লাগিয়ে দেন। ৭৪
1438 ১০. ইউনুস অতঃপর আমি তাদের পর মূসা ও হারুনকে আমার মু’জিযা সহকারে ফির‘আউন ও তার প্রধানদের নিকট পাঠালাম, অতঃপর তারা অহংকার করল, আর সেই লোকগুলি ছিল পাপাচারীপরায়ণ। ৭৫
1439 ১০. ইউনুস অতঃপর যখন তাদের প্রতি আমার সন্নিধান হতে প্রমাণ পৌঁছল তখন তারা বলতে লাগল, নিশ্চয়ই এটা সুস্পষ্ট যাদু। ৭৬
1440 ১০. ইউনুস মূসা বললঃ তোমরা কি এই যথার্থ প্রমাণ সম্পর্কে এমন কথা বলছ, যখন ওটা তোমাদের নিকট পৌঁছল? এটা কি যাদু? অথচ যাদুকররাতো সফলকাম হয়না! ৭৭
1441 ১০. ইউনুস তারা বলতে লাগলঃ তুমি কি আমাদের নিকট এ জন্য এসেছ যে, আমাদেরকে সরিয়ে দাও সেই তরীকা হতে, যাতে আমরা আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে পেয়েছি, আর পৃথিবীতে তোমাদের দু’জনের আধিপত্য স্থাপিত হয়ে যায়? আমরা তোমাদের দু’জনকে কখনও মানবনা। ৭৮
1442 ১০. ইউনুস এবং ফির‘আউন বললঃ আমার কাছে সমস্ত সুদক্ষ যাদুকরদের উপস্থিত কর। ৭৯
1443 ১০. ইউনুস অতঃপর যখন যাদুকররা এলো, তখন মূসা তাদেরকে বললঃ নিক্ষেপ কর যা কিছু তোমরা নিক্ষেপ করতে চাও। ৮০
1444 ১০. ইউনুস অতঃপর যখন তারা নিক্ষেপ করল তখন মূসা বললঃ যাদু এটাই, নিশ্চয়ই আল্লাহ এখনই এটাকে বানচাল করে দিবেন; (কেননা) আল্লাহ অশান্তি সৃষ্টিকারীদের কাজ সার্থক করেন না। ৮১
1445 ১০. ইউনুস আর আল্লাহ তাঁর বাণী অনুযায়ী সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন, যদিও পাপাচারীরা তা অপ্রীতিকর মনে করে। ৮২
1446 ১০. ইউনুস কিন্তু মূসার প্রতি তার কওমের ক্ষুদ্র একটি দল ছাড়া কেউ ঈমান আনল না, এ ভয়ে যে, ফিরআউন ও তাদের পারিষদবর্গ তাদেরকে ফিতনায় ফেলবে। আর নিশ্চয় ফির‘আউন ছিল যমীনে প্রতাপশালী এবং নিশ্চয় সে সীমালঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত। ৮৩
1447 ১০. ইউনুস আর মূসা বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! যদি তোমরা আল্লাহর উপর ঈমান রাখ তাহলে তাঁরই উপর ভরসা কর, যদি তোমরা মুসলিম হও। ৮৪
1448 ১০. ইউনুস তারা বললঃ আমরা আল্লাহরই উপর ভরসা করলাম। হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে এই যালিমদের লক্ষ্যস্থল বানাবেননা । ৮৫
1449 ১০. ইউনুস আর আমাদেরকে নিজ অনুগ্রহে এই কাফিরদের (কবল) হতে মুক্তি দিন। ৮৬
1450 ১০. ইউনুস আর আমি মূসা ও তার ভাইয়ের প্রতি অহী পাঠালামঃ তোমরা উভয়ে তোমাদের এই লোকদের জন্য মিসরে বাসস্থান বহাল রাখ, আর (সালাতের সময়) তোমরা সবাই নিজেদের সেই গৃহগুলিকে সালাত আদায় করার স্থান রূপে গণ্য কর এবং সালাত কায়েম কর, আর মু’মিনদেরকে শুভ সংবাদ জানিয়ে দাও। ৮৭
1451 ১০. ইউনুস আর মূসা বললঃ হে আমাদের রাব্ব! আপনি ফির‘আউন ও তার প্রধানবর্গকে দান করেছেন জাঁকজমকের সামগ্রী এবং বিভিন্ন রকমের জীবনোপকরণ। হে আমাদের রাব্ব! এর ফলে তারা আপনার পথ হতে (মানব মন্ডলীকে) বিভ্রান্ত করছে। হে আমাদের রাব্ব! তাদের সম্পদগুলিকে নিশ্চিহ্ন করে দিন এবং তাদের অন্তরসমূহকে কঠিন করুন যাতে তারা ঈমান আনতে না পারে ঐ পর্যন্ত যতক্ষণ তারা যন্ত্রণাদায়ক আযাবকে প্রত্যক্ষ করে। ৮৮
1452 ১০. ইউনুস তিনি (আল্লাহ) বললেনঃ তোমাদের উভয়ের দু‘আ কবূল করা হল। অতএব তোমরা দৃঢ় থেক এবং তাদের পথ অনুসরণ করনা যাদের জ্ঞান নেই। ৮৯
1453 ১০. ইউনুস আর আমি বানী ইসরাঈলকে সমুদ্র পার করে দিলাম, অতঃপর ফির‘আউন তার সৈন্যদলসহ তাদের পশ্চাদানুসরণ করল যুলম ও নির্যাতনের উদ্দেশে; এমনকি যখন সে নিমজ্জিত হতে লাগল তখন বলতে লাগলঃ আমি ঈমান এনেছি বানী ইসরাঈল যাঁর উপর ঈমান এনেছে, তিনি ছাড়া অন্য মা‘বূদ নেই এবং আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছি। ৯০
1454 ১০. ইউনুস এখন ঈমান আনছ? অথচ পূর্ব (মুহুর্ত) পর্যন্ত তুমি নাফরমানী করছিলে এবং বিশৃংখলা সৃষ্টিকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে। ৯১
1455 ১০. ইউনুস অতএব আমি আজ তোমার লাশকে উদ্ধার করব, যেন তুমি তোমার পরবর্তী লোকদের জন্য উপদেশ গ্রহণের উপকরণ হয়ে থাক; আর প্রকৃত পক্ষে অনেক লোক আমার উপদেশাবলী হতে উদাসীন রয়েছে। ৯২
1456 ১০. ইউনুস আর আমি বানী ইসরাঈলকে থাকার জন্য অতি উত্তম বাসস্থান প্রদান করলাম, আর আমি তাদেরকে আহার করার জন্য উৎকৃষ্ট বস্তুসমূহ দান করলাম, তারা মতভেদ করেনি ঐ পর্যন্ত যতক্ষণ তাদের নিকট (আহকামের) জ্ঞান পৌঁছল। নিঃসন্দেহে তোমার রাব্ব কিয়ামাত দিবসে তাদের মধ্যে সেই সব বিষয়ের মীমাংসা করবেন, যাতে তারা মতভেদ করছিল। ৯৩
1457 ১০. ইউনুস অতঃপর (হে নাবী) যদি তুমি এ (কিতাব) সম্পর্কে সন্দিহান হও, যা আমি তোমার নিকট পাঠিয়েছি, তাহলে তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করে দেখ, যারা তোমার পূর্বেকার কিতাবসমূহ পাঠ করে। নিঃসন্দেহে তোমার নিকট এসেছে তোমার রবের পক্ষ হতে সত্য কিতাব, সুতরাং তুমি কখনই সংশয়ীদের অন্তর্ভুক্ত হয়োনা। ৯৪
1458 ১০. ইউনুস আর ঐ সব লোকেরও অন্তর্ভুক্ত হয়োনা যারা আল্লাহর আয়াতগুলিকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, যেন তুমি ধ্বংসপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত না হও। ৯৫
1459 ১০. ইউনুস নিঃসন্দেহে যাদের সম্বন্ধে তোমার রবের বাক্য সাব্যস্ত হয়েছে, তারা কখনও ঈমান আনবেনা । ৯৬
1460 ১০. ইউনুস যদিও তাদের নিকট সমস্ত প্রমাণ পৌঁছে যায়, যে পর্যন্ত না তারা যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি প্রত্যক্ষ করে। ৯৭
1461 ১০. ইউনুস সুতরাং এমন কোন জনপদই ঈমান আনেনি যে, তাদের ঈমান আনা উপকারী হয়েছে, ইউনুসের কাওম ছাড়া। যখন তারা ঈমান আনল, তখন আমি তাদের থেকে পার্থিব জীবনের অপমানজনক শাস্তি বিদূরিত করলাম এবং তাদেরকে সুখ স্বাচ্ছন্দে থাকতে দিলাম এক নির্ধারিত কাল পর্যন্ত। ৯৮
1462 ১০. ইউনুস আর যদি তোমার রাব্ব ইচ্ছা করতেন তাহলে বিশ্বের সকল লোকই ঈমান আনত। তাহলে তুমি কি মানুষের উপর যবরদস্তি করতে পার, যাতে তারা ঈমান আনেই? ৯৯
1463 ১০. ইউনুস অথচ আল্লাহর হুকুম ছাড়া কারও ঈমান আনা সম্ভব নয়; আর আল্লাহ নির্বোধ লোকদের উপর (কুফরীর) অপবিত্রতা স্থাপন করে দেন। ১০০
1464 ১০. ইউনুস বলে দাওঃ তোমরা লক্ষ্য কর, যা কিছু রয়েছে আসমানসমূহে ও যমীনে; আর যারা ঈমান আনেনা, প্রমাণাদী ও ভয় প্রদর্শন তাদের কোন উপকার সাধন করতে পারেনা। ১০১
1465 ১০. ইউনুস অতএব তারা শুধু ঐ লোকদের অনুরূপ ঘটনাবলীর প্রতীক্ষা করছে যারা তাদের পূর্বে গত হয়েছে। তুমি বলে দাওঃ আচ্ছা তাহলে তোমরা ওর প্রতীক্ষায় থাক, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষারতদের মধ্যে রইলাম। ১০২
1466 ১০. ইউনুস শেষ পর্যন্ত আমি স্বীয় রাসূলদেরকে এবং মু’মিনদেরকে নাজাত দিলাম, এ রূপেই আমি মু’মিনদেরকে নাজাত দিয়ে থাকি। ১০৩
1467 ১০. ইউনুস বলে দাওঃ হে লোকসকল! যদি তোমরা আমার দীন সম্বন্ধে সন্দিহান হও তাহলে আমি সেই মা‘বূদদের ইবাদাত করিনা, আল্লাহকে ছেড়ে তোমরা যাদের ইবাদাত কর; কিন্তু আমি সেই আল্লাহর ইবাদাত করি যিনি তোমাদের তোমাদের মৃত্যু ঘটান, আর আমাকে এই আদেশ করা হয়েছে যে, আমি যেন ঈমান আনয়নকারীদের দলভুক্ত থাকি। ১০৪
1468 ১০. ইউনুস আর এটাও যে, নিজকে নিজে এই ধর্মের প্রতি এভাবে নিবিষ্ট করে রাখবে যে, অন্যান্য সকল তরীকা হতে পৃথক হয়ে যাও, আর কখনও মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়োনা। ১০৫
1469 ১০. ইউনুস আর আল্লাহকে ছেড়ে এমন কিছুর ইবাদাত করনা যা না তোমার কোন উপকার করতে পারে, আর না কোন ক্ষতি করতে পারে। বস্তুতঃ যদি এরূপ কর তাহলে তুমি এমতাবস্থায় যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। ১০৬
1470 ১০. ইউনুস আল্লাহ যদি তোমাকে কোন কষ্টে নিপতিত করেন তাহলে তিনি ছাড়া কেহ তা মোচনকারী নেই, আর যদি তিনি তোমার প্রতি কোন কল্যাণ ও শান্তি পৌঁছাতে চান তাহলে তাঁর অনুগ্রহের কোন অপসারণকারী নেই; তিনি স্বীয় অনুগ্রহ নিজের বান্দাদের মধ্য হতে যাকে চান দান করেন; এবং তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অতিশয় দয়ালু। ১০৭
1471 ১০. ইউনুস বলঃ হে লোক সকল! তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ হতে সত্য (ধর্ম) এসেছে, অতএব যে ব্যক্তি সঠিক পথে আসবে, বস্তুতঃ সে নিজের জন্যই পথে আসবে; আর যে ব্যক্তি পথভ্রষ্ট থাকবে তার পথভ্রষ্টতা তারই উপরে বর্তাবে, আর আমাকে (রাসূলকে) তোমাদের উপর দায়িত্বশীল করা হয়নি। ১০৮
1472 ১০. ইউনুস আর তুমি তোমার প্রতি প্রেরিত অহীর অনুসরণ কর, আর ধৈর্য ধারণ কর এই পর্যন্ত যে, আল্লাহ মীমাংসা করে দেন, এবং তিনিই উত্তম মীমাংসাকারী। ১০৯
1473 ১১. হূদ আলিফ লাম রা। এটি (কুরআন) এমন কিতাব যার আয়াতগুলি (প্রমাণাদী দ্বারা) মাযবূত করা হয়েছে। অতঃপর বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে; প্রজ্ঞাময়ের (আল্লাহর) পক্ষ হতে।
1474 ১১. হূদ এ (উদ্দেশে) যে, আল্লাহ ছাড়া কারও ইবাদাত করনা; আমি (নাবী) তাঁর (আল্লাহর) পক্ষ হতে তোমাদেরকে সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা।
1475 ১১. হূদ আর (এ উদ্দেশে) যে, তোমরা নিজেদের রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর তাঁর প্রতি নিবিষ্ট থাক। তিনি তোমাদেরকে সুখ-সম্ভোগ দান করবেন নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত এবং প্রত্যেক অধিক ‘আমলকারীকে অধিক সাওয়াব দিবেন; আর যদি তোমরা মুখ ফিরাতেই থাক তাহলে আমি ভীষণ দিনের শাস্তির আশংকা করি।
1476 ১১. হূদ আল্লাহরই নিকট তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে এবং তিনি প্রত্যেক বস্তুর উপর পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন।
1477 ১১. হূদ জেনে রেখ, তারা কুঞ্চিত করে নিজেদের বক্ষকে, যেন নিজেদের কথাগুলি আল্লাহ হতে লুকাতে পারে। সাবধান, তারা যখন কাপড় (নিজেদের দেহে) জড়ায়, তিনি তখনও সব জানেন তারা যা কিছু গোপন করে অথবা প্রকাশ করে। নিশ্চয়ই তিনি অন্তরের কথাও জানেন।
1478 ১১. হূদ আর ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী এমন কোন প্রাণী নেই যাদের রিয্ক আল্লাহর যিম্মায় না রয়েছে, আর তিনি প্রত্যেকের দীর্ঘ অবস্থানের স্থান এবং অল্প অবস্থানের স্থানকে জানেন, সবই কিতাবে মুবীনে (লাউহে মাহফুযে) রয়েছে।
1479 ১১. হূদ আর তিনি এমন, যিনি সমস্ত আসমান ও যমীনকে সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে এবং সেই সময় তাঁর আরশ পানির উপর ছিল, যেন তোমাদেরকে পরীক্ষা করে নেন যে, তোমাদের মধ্যে উত্তম ‘আমলকারী কে? আর যদি তুমি বলঃ নিশ্চয়ই তোমাদেরকে মৃত্যুর পর জীবিত করা হবে, তখন যে সব লোক কাফির তারা বলেঃ এটাতো নিছক স্পষ্ট যাদু।
1480 ১১. হূদ আর যদি আমি কিছু দিনের জন্য তাদের থেকে শাস্তিকে মুলতবী করে রাখি তাহলে তারা বলতে থাকেঃ সেই শাস্তিকে কিসে আটকে রেখেছে? স্মরণ রেখ, যেদিন ওটা তাদের উপর এসে পড়বে তখন তা কারও নিবারণে কিছুতেই নিবারিত হবেনা, আর যা নিয়ে তারা উপহাস করছিল তা এসে তাদেরকে ঘিরে নিবে।
1481 ১১. হূদ আমি যদি মানুষকে আমার পক্ষ হতে করুণার স্বাদ গ্রহণ করাই, অতঃপর তার রাশ টেনে ধরি তাহলে সে নিরাশ ও অকৃতজ্ঞ হয়ে যায়।
1482 ১১. হূদ আর তাকে বিপদ-আপদ স্পর্শ করার পর আমি যদি তাকে নি‘আমাতের স্বাদ গ্রহণ করাই তখন সে বলতে শুরু করেঃ আমার সব দুঃখ কষ্ট দূর হয়ে গেল। (আর) সে গর্ব করতে থাকে, আত্মপ্রশংসা করতে থাকে। ১০
1483 ১১. হূদ কিন্তু যারা ধৈর্য ধারণ করে ও ভাল কাজ করে এমন লোকদের জন্য রয়েছে ক্ষমা এবং বিরাট প্রতিদান। ১১
1484 ১১. হূদ তুমি কি অংশবিশেষ বর্জন করতে চাও ঐ নির্দেশাবলী হতে যা তোমার প্রতি অহী যোগে প্রেরিত হয়? আর তোমার মন সংকুচিত হয় এই কথায় যে, তারা বলেঃ তার প্রতি কোন ধন-ভান্ডার কেন নাযিল হলনা, অথবা কেন তার সাথে একজন (মালাইকা/ফেরেশতা) আসেনা? তুমিতো একজন সতর্ককারী মাত্র, আল্লাহই সবকিছু পরিবেষ্টনকারী। ১২
1485 ১১. হূদ তাহলে কি তারা বলে যে, ওটা সে নিজেই রচনা করেছে? তুমি বলে দাওঃ তাহলে তোমরাও ওর অনুরূপ রচিত দশটি সূরা আনয়ন কর এবং (নিজ সাহায্যার্থে) যে সমস্ত গাইরুল্লাহকে ডাকতে পার ডেকে আন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। ১৩
1486 ১১. হূদ অতঃপর যদি তারা তোমাদের ফরমায়েশ পূর্ণ করতে না পারে তাহলে তোমরা দৃঢ় বিশ্বাস রেখ যে, এই কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে আল্লাহরই জ্ঞান (ও ক্ষমতা) দ্বারা; আর এটাও যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তাহলে এখন তোমরা মুসলিম হবে কি? ১৪
1487 ১১. হূদ যারা শুধু পার্থিব জীবন এবং ওর জাকজমকতা কামনা করে, আমি তাদের কৃতকর্মগুলির ফল দুনিয়ায়ই দিয়ে দিই, তাদের জন্য কিছুই কম করা হয়না। ১৫
1488 ১১. হূদ এরা এমন লোক যে, তাদের জন্য আখিরাতে জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই নেই; আর তারা যা কিছু করছে তাও বিফল হবে। ১৬
1489 ১১. হূদ তারা কি এমন ব্যক্তিদের সমান হতে পারে যারা কায়েম আছে তাদের রবের পক্ষ হতে প্রেরিত স্পষ্ট প্রমাণের উপর এবং যার কাছে তাঁর প্রেরিত এক সাক্ষী আবৃত্তি করে; এবং তাদের কাছে মূসার কিতাব রয়েছে, যা পথনির্দেশ ও রাহমাত স্বরূপ? এমন লোকেরাই এর প্রতি ঈমান রাখে। আর অন্যান্য সম্প্রদায়ের যে ইহা (কুরআন) অমান্য করবে, জাহান্নাম হবে তার প্রতিশ্রুত স্থান। অতএব তুমি কুরআন সম্পর্কে সন্দেহে পতিত হয়োনা, নিঃসন্দেহে এটি সত্য কিতাব তোমার রবের সন্নিধান হতে। কিন্তু অধিকাংশ লোক ঈমান আনেনা। ১৭
1490 ১১. হূদ আর ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক অত্যাচারী (যালিম) কে হবে যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে? এরূপ লোকদেরকে তাদের রবের সামনে পেশ করা হবে এবং সাক্ষী (মালাইকাগণ) বলবেঃ এরা ঐ লোক যারা নিজেদের রাব্ব সম্বন্ধে মিথ্যা আরোপ করেছিল। জেনে রেখ, এমন যালিমদের জন্য আল্লাহর লা’নত। ১৮
1491 ১১. হূদ যারা অপরকে আল্লাহর পথ হতে নিবৃত্ত রাখত এবং ওতে বক্রতা বের করার চেষ্টায় লিপ্ত থাকত; আর তারাতো আখিরাতেও অমান্যকারী। ১৯
1492 ১১. হূদ তারা (সমগ্র) ভূ-পৃষ্ঠে আল্লাহকে অক্ষম করতে পারেনি, আর না তাদের জন্য আল্লাহ ছাড়া কেহ সহায়কও হল। এরূপ লোকদের জন্য দ্বিগুণ শাস্তি হবে; এরা (অবজ্ঞার কারণে আহকামসমূহ) না শুনতে সক্ষম হচ্ছিল, আর না তারা (সত্য পথ) দেখছিল। ২০
1493 ১১. হূদ এরা সেই লোক যারা নিজেরা নিজেদের সর্বনাশ করে ফেলেছে, আর যে সব উপাস্য (দেবতা) তারা গড়ে রেখেছিল, তাদের দিক থেকে ওরা সবাই উধাও হয়ে গেছে। ২১
1494 ১১. হূদ এটা সুনিশ্চিত যে, আখিরাতে এরাই হবে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত। ২২
1495 ১১. হূদ নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে এবং সৎ কার্যাবলী সম্পন্ন করেছে, আর নিজেদের রবের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে এরূপ লোকেরাই হচ্ছে জান্নাতবাসী, তাতে তারা অনন্তকাল থাকবে। ২৩
1496 ১১. হূদ উভয় সম্প্রদায়ের দৃষ্টান্ত এরূপ যেমন এক ব্যক্তি, যে অন্ধ ও বধির, এবং আর এক ব্যক্তি যে দেখতেও পায় এবং শুনতেও পায়, এই দু’ ব্যক্তি কি তুলনায় সমান হবে? তবুও কি তোমরা বুঝনা? ২৪
1497 ১১. হূদ আর আমি নূহকে তার কাওমের নিকট রাসূল রূপে প্রেরণ করেছি, (নূহ বলল) আমি তোমাদের জন্য স্পষ্ট পষ্ট সতর্ককারী। ২৫
1498 ১১. হূদ তোমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারও ইবাদাত করনা; আমি তোমাদের উপর এক ভীষণ যন্ত্রণাদায়ক দিনের শাস্তির আশংকা করছি। ২৬
1499 ১১. হূদ অতঃপর তার সম্প্রদায়ের মধ্যে যে সব নেতৃস্থানীয় লোক কাফির ছিল তারা বলতে লাগলঃ আমরাতো তোমাকে আমাদেরই মত মানুষ দেখতে পাচ্ছি; আর আমরা দেখছি যে, শুধু ঐ লোকেরাই তোমার অনুসরণ করছে যারা আমাদের মধ্যে নিতান্তই হীন ও ইতর, কোন রকম চিন্তা-ভাবনা না করেই; আর আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্বও আমরা দেখছিনা, বরং আমরা তোমাদেরকে মিথ্যাবাদী বলে মনে করছি। ২৭
1500 ১১. হূদ সে বললঃ হে আমার কাওম! আচ্ছা বলত, আমি যদি স্বীয় রবের পক্ষ হতে প্রমাণের উপর (প্রতিষ্ঠিত হয়ে) থাকি এবং তিনি আমাকে নিজ সন্নিধান হতে রাহমাত (নবুওয়াত) দান করেন, অতঃপর ওটা তোমাদের বোধগম্য না হয়, তাহলে কি ঐ বিষয়ে তোমাদের বাধ্য করতে পারি যখন তোমরা ওটা অবজ্ঞা করতে থাক? ২৮
1501 ১১. হূদ আর হে আমার কাওম! আমি এতে তোমাদের কাছে কোন ধন সম্পদ চাচ্ছিনা; আমার বিনিময়তো শুধু আল্লাহর যিম্মায় রয়েছে, আর আমি এই মু’মিনদেরকে বের করে দিতে পারিনা; নিশ্চয়ই তারা নিজেদের রবের সমীপে গমনকারী, পরন্ত আমি তোমাদেরকে নির্বোধ কাওম রূপে দেখছি। ২৯
1502 ১১. হূদ হে আমার কাওম! আমি যদি তাদেরকে বের করেই দিই তাহলে আল্লাহর পাকড়াও হতে কে আমাকে রক্ষা করবে? তোমরা কি এতটুকু বুঝনা? ৩০
1503 ১১. হূদ আর আমি তোমাদেরকে এ কথা বলছিনা যে, আমার নিকট আল্লাহর সকল ভান্ডার রয়েছে এবং না আমি অদৃশ্যের কথা জানি, আর আমি এটাও বলিনা যে, আমি মালাক/ফেরেশতা। আর যারা তোমাদের চোখে হীন, আমি তাদের সম্বন্ধে এটা বলতে পারিনা যে, আল্লাহ কখনও তাদেরকে কোন নি’আমাত দান করবেন না; তাদের অন্তরে যা কিছু আছে তা আল্লাহ উত্তম রূপে জানেন, আমি এরূপ বললে অন্যায়ই করে ফেলব। ৩১
1504 ১১. হূদ তারা বললঃ হে নূহ! তুমি আমাদের সাথে বির্তক করেছ, অনন্তর সেই বির্তক অনেক বেশি করেছ। সুতরাং যে সম্বন্ধে তুমি আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছ তা আমাদের সামনে আনয়ন কর, যদি তুমি সত্যবাদী হও। ৩২
1505 ১১. হূদ সে বললঃ ওটাতো আল্লাহ তোমাদের সামনে আনয়ন করবেন যদি তিনি ইচ্ছা করেন এবং তোমরা তাঁকে অক্ষম করতে পারবেনা। ৩৩
1506 ১১. হূদ আর আমার মঙ্গল কামনা (নাসীহত) করা তোমাদের উপকারে আসতে পারেনা, তা আমি তোমাদের যতই মঙ্গল কামনা করতে চাইনা কেন, যদি আল্লাহরই তোমাদেরকে পথভ্রষ্ট করার ইচ্ছা হয়। তিনিই তোমাদের রাব্ব, আর তাঁরই কাছে তোমাদেরকে ফিরে যেতে হবে। ৩৪
1507 ১১. হূদ তাহলে কি তারা (মাক্কার কাফিরেরা) বলে, সে (মুহাম্মাদ) এটা (কুরআন) নিজেই রচনা করেছে? তুমি বলে দাওঃ যদি আমি তা নিজে রচনা করে থাকি তাহলে আমার এই অপরাধ আমার উপর বর্তাবে, আর তোমরা যে অপরাধ করছ তা থেকে আমি সম্পূর্ণ মুক্ত। ৩৫
1508 ১১. হূদ আর নূহের প্রতি অহী প্রেরিত হলঃ যারা ঈমান এনেছে তারা ছাড়া তোমার কাওম হতে আর কেহই ঈমান আনবেনা, অতএব যা তারা করছে তাতে তুমি মোটেই দুঃখ করনা। ৩৬
1509 ১১. হূদ আর তুমি আমার তত্ত্বাবধানে ও আমার নির্দেশক্রমে নৌকা নির্মাণ কর, আর আমার কাছে যালিমদের (কাফিরদের) সম্পর্কে কোন কথা বলনা, তাদের সকলকে নিমজ্জিত করা হবে। ৩৭
1510 ১১. হূদ সে নৌকা নির্মাণ করতে লাগল, আর যখনই তার কাওমের প্রধানদের কোন দল উহার নিকট দিয়ে গমন করত তখনই তার সাথে উপহাস করত। সে বলতঃ যদি তোমরা আমাদেরকে উপহাস কর তাহলে আমরাও (একদিন) তোমাদেরকে উপহাস করব, যেমন তোমরা আমাদেরকে উপহাস করছ। ৩৮
1511 ১১. হূদ সুতরাং সত্ত্বরই তোমরা জানতে পারবে যে, কোন ব্যক্তির উপর এমন আযাব আসার উপক্রম হয়েছে যা তাকে লাঞ্ছিত করবে এবং তার উপর চিরস্থায়ী আযাব নাযিল হবে। ৩৯
1512 ১১. হূদ অবশেষে যখন আমার ফরমান এসে পৌঁছল এবং যমীন হতে পানি উথলে উঠতে লাগল, আমি বললামঃ প্রত্যেক শ্রেণীর প্রাণী হতে একটি নর এবং একটি মাদী অর্থাৎ দু’ দু’টি করে তাতে (নৌকায়) উঠিয়ে নাও এবং নিজ পরিবারবর্গকেও, তাকে ছাড়া যার সম্বন্ধে পূর্বে নির্দেশ হয়ে গেছে, এবং অন্যান্য মু’মিনদেরকেও। আর অল্প কয়েকজন ছাড়া কেহই তাঁর সাথে ঈমান আনেনি। ৪০
1513 ১১. হূদ আর সে বললঃ তোমরা এতে আরোহণ কর, এর গতি ও এর স্থিতি আল্লাহরই নামে; নিশ্চয়ই আমার রাব্ব ক্ষমাশীল, দয়াবান। ৪১
1514 ১১. হূদ আর সেই নৌকাটি তাদেরকে নিয়ে পবর্ততুল্য তরঙ্গের মধ্যে চলতে লাগল, আর নূহ স্বীয় পুত্রকে ডাকতে লাগল এবং সে ছিল ভিন্ন স্থানে; হে আমার পুত্র! আমাদের সাথে সাওয়ার হয়ে যাও এবং কাফিরদের সাথে থেকনা। ৪২
1515 ১১. হূদ সে বললঃ আমি এখনই কোন পাহাড়ে আশ্রয় গ্রহণ করব যা আমাকে পানি হতে রক্ষা করবে। সে (নূহ) বললঃ আজ আল্লাহর শাস্তি হতে কেহই রক্ষাকারী নেই, কিন্তু যার উপর তিনি দয়া করেন। ইতোমধ্যে তাদের উভয়ের মাঝে একটি তরঙ্গ অন্তরাল হয়ে পড়ল, অতঃপর সে নিমজ্জিতদের অন্তর্ভুক্ত হল। ৪৩
1516 ১১. হূদ আর আদেশ হলঃ হে যমীন! স্বীয় পানি শুষে নাও, এবং হে আসমান! থেমে যাও। তখন পানি কমে গেল ও ঘটনার পরিসমাপ্তি ঘটল, আর নৌকা জূদী (পাহাড়) এর উপর এসে থামল। আর বলা হল, অন্যায়কারীরা আল্লাহর রাহমাত হতে দূরে। ৪৪
1517 ১১. হূদ আর নূহ নিজ রাব্বকে ডাকল এবং বললঃ হে আমার রাব্ব! আমার এই পুত্রটি আমার পরিবারবর্গেরই অন্তর্ভুক্ত, আর আপনার ও‘য়াদাও সম্পূর্ণ সত্য এবং আপনি সমস্ত বিচারকের শ্রেষ্ঠ বিচারক। ৪৫
1518 ১১. হূদ তিনি (আল্লাহ) বললেনঃ হে নূহ! এই ব্যক্তি তোমার পরিবারের অন্তর্ভুক্ত নয়, সে অসৎ কর্মপরায়ণ। অতএব তুমি আমার কাছে এমন বিষয়ের আবেদন করনা যে সম্বন্ধে তোমার জ্ঞান নেই। আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি যে, তুমি অজ্ঞ লোকদের অন্তর্ভুক্ত হয়োনা। ৪৬
1519 ১১. হূদ সে বললঃ হে আমার রাব্ব! আমি আপনার নিকট এমন বিষয়ের আবেদন করা হতে আশ্রয় চাচ্ছি যে সম্বন্ধে আমার জ্ঞান নেই, আর আপনি যদি আমাকে ক্ষমা না করেন তাহলে আমি সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস হয়ে যাব। ৪৭
1520 ১১. হূদ বলা হলঃ হে নূহ! অবতরণ কর, আমার পক্ষ হতে সালাম ও বারাকাতসমূহ নিয়ে, যা তোমার উপর নাযিল করা হবে এবং সেই দলসমূহের উপর যারা তোমার সাথে রয়েছে; আর অনেক দল এরূপও হবে যাদেরকে আমি কিছুকাল (দুনিয়ার) সুখ স্বাচ্ছন্দ্য দান করব, অতঃপর তাদের উপর পতিত হবে আমার পক্ষ হতে কঠিন শাস্তি। ৪৮
1521 ১১. হূদ এটা হচ্ছে গাইবি সংবাদসমূহের অন্তর্ভুক্ত, যা আমি তোমার কাছে অহী মারফত পৌঁছে দিচ্ছি। ইতোপূর্বে এটা না তুমি জানতে, আর না তোমার কাওম। অতএব তুমি ধৈর্য ধারণ কর; নিশ্চয়ই শুভ পরিণাম মুত্তাকীদের জন্যই। ৪৯
1522 ১১. হূদ আর ‘আদ (সম্প্রদায়) এর প্রতি তাদের ভাই হুদকে (রাসূল রূপে) প্রেরণ করলাম। সে বললঃ হে আমার কাওম! তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া কেহ তোমাদের মা‘বূদ নেই; তোমরা শুধু মিথ্যা উদ্ভাবনকারী। ৫০
1523 ১১. হূদ হে আমার কাওম! আমি এর জন্য তোমাদের কাছে কোন বিনিময় চাইনা; আমার বিনিময় শুধু তাঁরই জিম্মায় রয়েছে যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। তবুও কি তোমরা বুঝনা? ৫১
1524 ১১. হূদ আর হে আমার কাওম! তোমরা (তোমাদের পাপের জন্য) তোমাদের রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর তাঁরই প্রতি নিবিষ্ট হও। তিনি তোমাদের উপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদেরকে আরও শক্তি প্রদান করে তোমাদের শক্তিকে বর্ধিত করে দিবেন, আর তোমরা পাপে লিপ্ত হওয়ার জন্য মুখ ঘুরিয়ে নিওনা। ৫২
1525 ১১. হূদ তারা বললঃ হে হুদ! তুমিতো আমাদের সামনে কোন প্রমাণ উপস্থাপন করনি এবং আমরা তোমার কথায় আমাদের উপাস্য দেবতাদেরকে বর্জন করতে পারিনা, আর আমরা কিছুতেই তোমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী নই। ৫৩
1526 ১১. হূদ আমাদের কথা এই যে, আমাদের উপাস্য দেবতাদের মধ্য হতে কেহ তোমাকে দুর্দশায় ফেলে দিয়েছে। সে বললঃ আমি আল্লাহকে সাক্ষী রাখছি এবং তোমরাও সাক্ষী থেক যে, আমি তা থেকে মুক্ত, তোমরা যে ইবাদাতে শরীক সাব্যস্ত করছ, ৫৪
1527 ১১. হূদ তাঁর (আল্লাহর) সাথে। সুতরাং তোমরা সবাই মিলে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাক, অতঃপর আমাকে সামান্য অবকাশ দিওনা। ৫৫
1528 ১১. হূদ আমি আল্লাহর উপর ভরসা করেছি, যিনি আমার রাব্ব এবং তোমাদেরও রাব্ব; ভূ-পৃষ্ঠে যত বিচরণকারী রয়েছে সবাই তাঁর মুষ্টিতে আবদ্ধ; নিশ্চয়ই আমার রাব্ব সরল পথে রয়েছেন। ৫৬
1529 ১১. হূদ অতঃপর যদি তোমরা ফিরে যাও তাহলে আমাকে যে বার্তা দিয়ে তোমাদের প্রতি পাঠানো হয়েছে, আমি ওটা তোমাদের কাছে পৌঁছিয়েছি; আর আমার রাব্ব ভূ-পৃষ্ঠে তোমাদের পরিবর্তে অন্য লোকদেরকে আবাদ করবেন এবং তোমরা তাঁর কোনই ক্ষতি করতে পারবেনা। নিশ্চয়ই আমার রাব্ব প্রত্যেক বস্তুর রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকেন। ৫৭
1530 ১১. হূদ আর যখন আমার (শাস্তির) হুকুম এসে পৌঁছল তখন আমি হুদকে এবং যারা তার সাথে ঈমানদার ছিল তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে রক্ষা করলাম, আর তাদেরকে বাঁচালাম অতি কঠিন শাস্তি হতে। ৫৮
1531 ১১. হূদ আর তারা ছিল ‘আদ সম্প্রদায়. যারা নিজের রবের নিদর্শনগুলিকে অস্বীকার করল এবং রাসূলদেরকে অমান্য করল, পক্ষান্তরে তারা প্রত্যেক উদ্ধত স্বৈরাচারীর নির্দেশ অনুসরণ করত। ৫৯
1532 ১১. হূদ আর এই দুনিয়ায়ও অভিসম্পাত তাদের সঙ্গে রইল এবং কিয়ামাত দিবসেও; ভাল রূপে জেনে রেখ! ‘আদ নিজ রবের সাথে কুফরী করল; আরও জেনে রেখ! দূরে পড়ে রইল ‘আদ, রাহমাত হতে, যারা হুদের কাওম ছিল। ৬০
1533 ১১. হূদ আর আমি সামূদ(সম্প্রদায়) এর নিকট তাদের ভাই সালিহকে নাবী রূপে প্রেরণ করলাম। সে বললঃ হে আমার কাওম! তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া কেহ তোমাদের মা‘বূদ নেই, তিনি তোমাদেরকে যমীন হতে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে তাতে আবাদ করেছেন। অতএব তোমরা তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর মনোনিবেশ কর তাঁরই দিকে; নিশ্চয়ই আমার রাব্ব নিকটে রয়েছেন এবং তিনি আবেদন গ্রহণকারী। ৬১
1534 ১১. হূদ তারা বললঃ হে সালিহ! তুমিতো ইতোপূর্বে আমাদের মধ্যে আশা-ভরসা স্থল ছিলে। তুমি কি আমাদেরকে ঐ বস্তুর ইবাদাত করতে নিষেধ করছ যাদের ইবাদাত আমাদের পিতৃ-পুরুষেরা করে এসেছে? আর যে ধর্মের দিকে তুমি আমাদের ডাকছ, বস্তুতঃ আমরা তৎসম্বন্ধে গভীর সন্দেহের মধ্যে রয়েছি, যা আমাদেরকে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ফেলে রেখেছে। ৬২
1535 ১১. হূদ সে বললঃ হে আমার কাওম! আচ্ছা বলত, আমি যদি নিজ রবের পক্ষ হতে প্রমাণের উপর থাকি (এবং) তিনি আমার প্রতি নিজের রাহমাত (নবুওয়াত) দান করে থাকেন, আমি যদি আল্লাহর কথা না মানি তাহলে আমাকে আল্লাহ (শাস্তি) হতে কে রক্ষা করবে? তাহলেতো তোমরা শুধু আমার ক্ষতিই করছ। ৬৩
1536 ১১. হূদ আর হে আমার কাওম! এটা হচ্ছে আল্লাহর উষ্ট্রী যা তোমাদের জন্য নিদর্শন। অতএব ওকে ছেড়ে দাও যেন আল্লাহর যমীনে চরে খায়, আর ওকে খারাপ উদ্দেশে স্পর্শ করনা, অন্যথায় তোমাদেরকে আকস্মিক শাস্তি এসে পাকড়াও করতে পারে। ৬৪
1537 ১১. হূদ অনন্তর তারা ওকে মেরে ফেলল। তখন সে বললঃ তোমরা নিজেদের ঘরে আরও তিন দিন বাস করে নাও; এটা ও‘য়াদা, যাতে বিন্দুমাত্র মিথ্যা নেই। ৬৫
1538 ১১. হূদ অতঃপর যখন আমার হুকুম এসে পৌঁছল, আমি সালিহকে এবং যারা তার সাথে ঈমানদার ছিল তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে রক্ষা করলাম, আর বাঁচালাম সেই দিনের বড় লাঞ্ছনা হতে; নিশ্চয়ই তোমার রাব্ব শক্তিমান, পরাক্রমশালী। ৬৬
1539 ১১. হূদ আর সেই যালিমদেরকে এক প্রচন্ড ধ্বনি এসে আক্রমন করল যাতে তারা নিজ নিজ গৃহে উপুড় হয়ে পড়ে রইল। ৬৭
1540 ১১. হূদ যেন তারা সেই গৃহগুলিতে কখনও বসবাস করেনি। ভাল রূপে জেনে রেখ! ছামূদ সম্প্রদায় নিজ রবের সাথে কুফরী করল। জেনে রেখ, ছামূদ সম্প্রদায় রাহমাত হতে দূরে ছিটকে পড়ল। ৬৮
1541 ১১. হূদ আর আমার প্রেরিত মালাইকা/ফেরেশতা ইবরাহীমের নিকট সুসংবাদ নিয়ে আগমন করল। (এবং) তারা বললঃ সালাম! ইবরাহীম বললঃ সালাম! অতঃপর অনতি বিলম্বে একটা ভাজা গো-বৎস আনয়ন করল। ৬৯
1542 ১১. হূদ কিন্তু যখন সে দেখল যে, তাদের হাত সেই খাদ্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছেনা তখন তাদেরকে অদ্ভুত ভাবতে লাগল এবং মনে মনে তাদের থেকে শংকিত হল। (এ দেখে) তারা বললঃ ভয় করবেননা, আমরা লূত সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরিত হয়েছি। ৭০
1543 ১১. হূদ আর তার স্ত্রী দন্ডায়মান ছিল, সে হেসে উঠলো। তখন আমি তাকে (ইবরাহীমের স্ত্রীকে) সুসংবাদ দিলাম ইসহাকের এবং ইসহাকের পর ইয়াকূবের। ৭১
1544 ১১. হূদ সে বললঃ হায় কপাল! এখন আমি সন্তান প্রসব করব বৃদ্ধা হয়ে! আর আমার এই স্বামী অতি বৃদ্ধ। বাস্তবিক এটাতো একটা বিস্ময়কর ব্যাপার! ৭২
1545 ১১. হূদ তারা (মালাক) বললঃ আপনি কি আল্লাহর কাজে বিস্ময় বোধ করছেন? (হে) এই পরিবারের লোকেরা! আপনাদের প্রতি রয়েছে আল্লাহর রাহমাত ও বারাকাত; নিশ্চয়ই তিনি সমস্ত প্রশংসার যোগ্য, মহিমান্বিত। ৭৩
1546 ১১. হূদ অতঃপর যখন ইবরাহীমের সেই ভয় দূর হয়ে গেল এবং সে সুসংবাদ প্রাপ্ত হল তখন আমার প্রেরিত মালাইকার সাথে লূতের কাওম সম্বন্ধে তর্ক-বিতর্ক (জোর সুপারিশ) করতে শুরু করল। ৭৪
1547 ১১. হূদ বাস্তবিক ইবরাহীম ছিল বড় সহিষ্ণু প্রকৃতির, দয়ালু স্বভাব, কোমল হৃদয়। ৭৫
1548 ১১. হূদ হে ইবরাহীম! এ কথা ছেড়ে দাও, তোমার রবের আদেশ এসে গেছে এবং তাদের উপর এমন এক শাস্তি আসছে যা কিছুতেই প্রতিহত করার নয়। ৭৬
1549 ১১. হূদ আর যখন আমার ঐ মালাইকাগণ লূতের নিকট উপস্থিত হল তখন সে তাদের জন্য চিন্তিত হয়ে পড়ল এবং সেই কারণে অন্তর সংকুচিত হল, আর বললঃ আজকের দিনটি অতি কঠিন। ৭৭
1550 ১১. হূদ আর তার কাওম তার কাছে ছুটে এলো, এবং তারা পূর্ব হতে কু-কার্যসমূহ করেই আসছিল। লূত বললঃ হে আমার কাওম! (তোমাদের ঘরে) আমার এই কন্যারা রয়েছে, এরা তোমাদের জন্য অতি উত্তম, অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমাকে আমার মেহমানদের সামনে অপমানিত করনা; তোমাদের মধ্যে কি সুবোধ লোক কেহ নেই? ৭৮
1551 ১১. হূদ তারা বললঃ তুমিতো অবগত আছ যে, তোমার এই কন্যাগুলির আমাদের কোন প্রয়োজন নেই, আর আমাদের অভিপ্রায় কি তাও তোমার জানা আছে। ৭৯
1552 ১১. হূদ সে বললঃ কি উত্তম হত যদি তোমাদের উপর আমার কিছু ক্ষমতা চলত, অথবা আমি কোন দৃঢ় স্তম্ভের আশ্রয় নিতাম! ৮০
1553 ১১. হূদ তারা (মালাইকা) বললঃ হে লূত! আমরাতো আপনার রবের প্রেরিত বার্তাবাহক, তারা কখনও আপনার নিকট পৌঁছতে পারবেনা, অতএব আপনি রাতের কোন এক ভাগে নিজের পরিবারবর্গকে নিয়ে চলে যান, আপনাদের কেহ যেন পিছনের দিকে ফিরেও না চায়; কিন্তু হ্যাঁ, আপনার স্ত্রী যাবেনা, তার উপরও ঐ আপদ আসবে যা অন্যান্যদের প্রতি আসবে, তাদের (শাস্তির) অঙ্গীকার কৃত সময় হচ্ছে প্রাতঃকাল, প্রভাত কি নিকটবর্তী নয়? ৮১
1554 ১১. হূদ অতঃপর যখন আমার হুকুম এসে পৌঁছল, আমি ঐ ভূ-খন্ডের উপরি ভাগকে নীচে করে দিলাম এবং ওর উপর ঝামা পাথর বর্ষণ করতে লাগলাম, যা একাধারে ছিল (বর্ষিত হচ্ছিল), ৮২
1555 ১১. হূদ যা বিশেষ চিহ্নিত করা ছিল তোমার রবের নিকট; আর ঐ জনপদগুলি এই যালিমদের হতে বেশি দূরে নয়। ৮৩
1556 ১১. হূদ আর আমি মাদইয়ানের (অধিবাসীদের) প্রতি তাদের ভাই শু‘আইবকে প্রেরণ করলাম। সে বললঃ হে আমার কাওম! তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া আর কেহ তোমাদের ইলাহ নেই; আর তোমরা পরিমাপে ও ওযনে কম করনা। আমি তোমাদেরকে স্বচ্ছল দেখতে পাচ্ছি, আর আমি তোমাদের প্রতি এমন এক দিনের শাস্তির ভয় করছি যা নানাবিধ বিপদের সমষ্টি হবে। ৮৪
1557 ১১. হূদ আর হে আমার কাওম! তোমরা পরিমাপ ও ওযনকে পুরাপুরিভাবে সম্পন্ন কর এবং লোকদেরকে তাদের দ্রব্যাদিতে কম করনা, আর ভূ-পৃষ্ঠে ফাসাদ সৃষ্টি করে সীমা অতিক্রম করনা। ৮৫
1558 ১১. হূদ আল্লাহ প্রদত্ত যা অবশিষ্ট থাকে তা’ই তোমাদের জন্য অতি উত্তম যদি তোমাদের বিশ্বাস হয়, আর আমি তোমাদের পাহারাদার নই। ৮৬
1559 ১১. হূদ তারা বললঃ হে শু‘আইব! তোমার ধর্মনিষ্ঠা কি তোমাকে এই শিক্ষা দিচ্ছে যে, আমরা ঐ সব উপাস্য বর্জন করি যাদের উপাসনা আমাদের পিতৃ-পুরুষরা করে আসছে? অথবা এটা বর্জন করতে বল যে, আমরা নিজেদের মালে নিজেদের ইচ্ছানুসারে ব্যবস্থা অবলম্বন করি? বাস্তবিকই তুমি হচ্ছ বড় সহিষ্ণু, সদাচারী। ৮৭
1560 ১১. হূদ সে বললঃ হে আমার কাওম! আচ্ছা বলত, যদি আমি আমার রবের পক্ষ হতে প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকি এবং তিনি আমাকে নিজ সন্নিধান হতে একটি উত্তম সম্পদ (নবুওয়াত) দান করেন, তাহলে আমি কি রূপে প্রচার না করে পারি? আর আমি এটা চাইনা যে, আমি তোমাদের বিপরীত সেই সব কাজ করি যা হতে তোমাদেরকে নিষেধ করছি; আমিতো সংশোধন করে দিতে চাচ্ছি, যে পর্যন্ত আমার সাধ্যে হয়, আর আমার যা কিছু প্রচেষ্টা তা শুধু আল্লাহরই সাহায্যে হয়ে থাকে; আমি তাঁরই উপর ভরসা রাখি এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করি। ৮৮
1561 ১১. হূদ আর হে আমার কাওম! আমার প্রতি তোমাদের জন্য হটকারিতা যেন এই কারণ না হয়ে পড়ে যে, তোমাদের উপর সেই রূপ বিপদসমূহ এসে পড়ে যেমন নূহের কাওম অথবা হুদের কাওম অথবা সালিহর কাওমের উপর পতিত হয়েছিল; আর লূতের কাওমতো তোমাদের হতে দূরে (যুগে) নয়। ৮৯
1562 ১১. হূদ আর তোমরা তোমাদের (পাপের জন্য) রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর তাঁর দিকে মনোনিবেশ কর; নিশ্চয়ই আমার রাব্ব পরম দয়ালু, অতি প্রেমময়। ৯০
1563 ১১. হূদ তারা বললঃ হে শু‘আইব! তোমার বর্ণিত অনেক কথা আমাদের বুঝে আসেনা এবং আমরা নিজেদের মধ্যে তোমাকে দুর্বল দেখছি, আর যদি তোমার প্রতি তোমার স্বজনবর্গের লক্ষ্য না থাকতো তাহলে আমরা তোমাকে প্রস্তরাঘাতে চূর্ণ করে ফেলতাম, আর আমাদের নিকট তোমার কোনই মর্যাদা নেই। ৯১
1564 ১১. হূদ সে বললঃ হে আমার কাওম! আমার পরিজনবর্গ কি তোমাদের কাছে আল্লাহ অপেক্ষাও অধিক মর্যাদাবান? আর তোমরা তাঁকে পশ্চাতে ফেলে রেখেছ? নিশ্চয়ই আমার রাব্ব তোমাদের সমস্ত কার্যকলাপকে বেষ্টন করে আছেন। ৯২
1565 ১১. হূদ আর হে আমার কাওম! তোমরা নিজেদের অবস্থায় কাজ করতে থাক, আমিও (আমার) কাজ করছি। সত্ত্বরই তোমরা জানতে পারবে যে, কে সেই ব্যক্তি যার উপর এমন শাস্তি আসন্ন যা তাকে অপমানিত করবে এবং কে সেই ব্যক্তি যে মিথ্যাবাদী ছিল; আর তোমরা প্রতীক্ষায় থাক, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষায় রইলাম। ৯৩
1566 ১১. হূদ (আল্লাহ বলেন) আর যখন আমার হুকুম এসে পৌঁছল তখন আমি মুক্তি দিলাম শু‘আইবকে, আর যারা তার সাথে ঈমানদার ছিল তাদেরকে নিজ রাহমাতে এবং ঐ যালিমদেরকে আক্রমণ করল এক বিকট গর্জন। অতঃপর তারা নিজ গৃহে উপুড় হয়ে পড়ে রইল, ৯৪
1567 ১১. হূদ যেন তারা এই গৃহগুলিতে বাস করেনি। ভাল রূপে জেনে নাও, রাহমাত হতে দূরে সরে পড়ল মাদইয়ান, যেমন দূর হয়েছিল ছামূদ (সম্প্রদায়) রাহমাত হতে। ৯৫
1568 ১১. হূদ এবং আমি মূসাকে প্রেরণ করলাম আমার মু’জিযাসমূহ ও সুস্পষ্ট প্রমাণ সহকারে ৯৬
1569 ১১. হূদ ফির‘আউন ও তার প্রধানদের নিকট। অতঃপর তারাও ফির‘আউনের মতানুসারে চলতে রইল এবং ফির‘আউনের কোন কথা মোটেই সঠিক ছিলনা। ৯৭
1570 ১১. হূদ কিয়ামাত দিবসে সে নিজ সম্প্রদায়ের আগে আগে থাকবে, অতঃপর তাদেরকে উপনীত করবেন জাহান্নামে, আর তা অতি নিকৃষ্ট স্থান, যাতে তারা উপনীত হবে। ৯৮
1571 ১১. হূদ এই দুনিয়ায় তাদেরকে করা হয়েছিল অভিশাপগ্রস্ত এবং অভিশাপগ্রস্ত হবে তারা কিয়ামাতের দিনেও। কত নিকৃষ্ট সেই পুরস্কার যা তারা লাভ করবে। ৯৯
1572 ১১. হূদ এটা ছিল এই যে, জনপদসমূহের কতিপয় অবস্থা যা আমি তোমার নিকট বর্ণনা করছি, ওগুলির মধ্যে কোন কোনটির সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ঘটেছে। ১০০
1573 ১১. হূদ আমি তাদের প্রতি অত্যাচার করিনি, কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের উপর অত্যাচার করেছে। বস্তুতঃ তাদের কোনই উপকার করেনি তাদের সেই উপাস্যগুলি যাদের তারা ইবাদাত করত আল্লাহকে ছেড়ে, যখন এসে পৌঁছল তোমার রবের হুকুম; তাদের ক্ষতি সাধন ছাড়া তারা আর কোনো কিছুই বৃদ্ধি করলনা। ১০১
1574 ১১. হূদ ‘এরূপই তোমার রবের পাকড়াও। তিনি কোন জনপদের অধিবাসীদের পাকড়াও করেন যখন তারা অত্যাচার করে। নিঃসন্দেহে তাঁর পাকড়াও হচ্ছে অত্যন্ত যন্ত্রনাদায়ক, কঠোর। ১০২
1575 ১১. হূদ এসব ঘটনায় সেই ব্যক্তিদের জন্য বড় উপদেশ রয়েছে যারা পরকালের শাস্তিকে ভয় করে; ওটা এমন একটি দিন হবে যেদিন সমস্ত মানুষকে সমবেত করা হবে এবং ওটা হল সকলের উপস্থিতির দিন। ১০৩
1576 ১১. হূদ আর আমি ওটা শুধু সামান্য কালের জন্য স্থগিত রেখেছি। ১০৪
1577 ১১. হূদ যখন সেই দিন আসবে তখন কোন ব্যক্তি আমার অনুমতি ছাড়া কথাও বলতে পারবেনা। অতঃপর তাদের মধ্যে কতক দুর্ভাগা হবে এবং কতক হবে ভাগ্যবান। ১০৫
1578 ১১. হূদ অতএব যারা দুর্ভাগা হবে তারাতো জাহান্নামে এরূপ অবস্থায় থাকবে যে, তাতে তাদের চীৎকার ও আর্তনাদ হতে থাকবে। ১০৬
1579 ১১. হূদ তারা অনন্তকাল সেখানে থাকবে, যে পর্যন্ত আসমান ও যমীন স্থায়ী থাকে। তবে যদি আল্লাহর ইচ্ছা হয় তাহলে ভিন্ন কথা; নিশ্চয়ই তোমার রাব্ব যা কিছু চান তা তিনি পূর্ণরূপে সমাধা করতে পারেন। ১০৭
1580 ১১. হূদ পক্ষান্তরে যারা হয়েছে ভাগ্যবান, বস্তুতঃ তারা থাকবে জান্নাতে (এবং) তাতে তারা অনন্ত কাল থাকবে, যে পর্যন্ত আসমান ও যমীন স্থায়ী থাকে, কিন্তু যদি আল্লাহর ইচ্ছা হয় তাহলে ভিন্ন কথা; ওটা অফুরন্ত দান হবে। ১০৮
1581 ১১. হূদ সুতরাং এরা যার উপাসনা করে ওর সম্বন্ধে তুমি এতটুকুও সংশয় বোধ করনা; তারাও ঠিক সেই রূপেই ইবাদাত করছে যে রূপে তাদের পূর্ব-পুরুষরা ইবাদাত করত। এবং নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে তাদের (শাস্তির) অংশ পূর্ণভাবে দিয়ে দিব, একটুও কম না করে। ১০৯
1582 ১১. হূদ আর আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম, অতঃপর ওতে মতভেদ করা হল। আর যদি একটি উক্তি তোমার রবের পক্ষ হতে পূর্বেই স্থিরীকৃত হয়ে না থাকত তাহলে ওদের চুড়ান্ত মীমাংসা হয়ে যেত। এবং এই লোকেরা এর সম্বন্ধে এমন সন্দেহে (পতিত) আছে যা তাদেরকে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ফেলে রেখেছে। ১১০
1583 ১১. হূদ আর নিশ্চিত এই যে, তোমার রাব্ব তাদেরকে তাদের কর্মের পূর্ণ অংশ প্রদান করবেন; নিশ্চয়ই তিনি তাদের কার্যকলাপের পূর্ণ খবর রাখেন। ১১১
1584 ১১. হূদ অতএব তুমি যেভাবে আদিষ্ট হয়েছ, দৃঢ় থাক এবং সেই লোকেরাও যারা কুফরী হতে তাওবাহ করে তোমার সাথে রয়েছে, আর (ধর্মের) গন্ডি হতে একটুও বের হয়োনা; নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের কার্যকলাপ সম্যকভাবে প্রত্যক্ষ করেন। ১১২
1585 ১১. হূদ আর যালিমদের প্রতি ঝুকে পড়না, অন্যথায় তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে, আর আল্লাহ ছাড়া তোমরা কোন সাহায্যকারী পাবেনা, অতঃপর তোমাদেরকে কোন সাহায্যও করা হবেনা। ১১৩
1586 ১১. হূদ এবং সালাতের পাবন্দী হও দিনের দু’ প্রান্তে ও রাতের কিছু অংশে; নিঃসন্দেহে সৎ কার্যসমূহ অসৎ কার্যসমূহকে মিটিয়ে দেয়; এটা হচ্ছে একটি (ব্যাপক) নাসীহাত, নাসীহাত মান্যকারীদের জন্য। ১১৪
1587 ১১. হূদ আর ধৈর্য ধারণ কর। কেননা আল্লাহ সৎ কর্মশীলদের কর্মফলকে পন্ড করেননা। ১১৫
1588 ১১. হূদ বস্তুতঃ যে সব সম্প্রদায় তোমাদের পূর্বে গত হয়েছে তাদের মধ্যে এমন বুদ্ধিমান লোক হয়নি, যারা দেশে ফাসাদ বিস্তারে বাধা প্রদান করত, সামান্য কয়েকজন ছাড়া, যাদেরকে আমি তাদের মধ্য হতে রক্ষা করেছিলাম। আর যারা অবাধ্য ছিল তারা যে আরাম আয়েশে ছিল, ওর পিছনেই পড়ে রইল এবং অপরাধ প্রবণ হয়ে পড়ল। ১১৬
1589 ১১. হূদ আর তোমার রাব্ব এমন নন যে, জনপদসমূহকে অন্যায়ভাবে ধ্বংস করবেন, অথচ ওর অধিবাসীরা সৎ কাজে লিপ্ত রয়েছে। ১১৭
1590 ১১. হূদ এবং যদি তোমার রবের ইচ্ছা হত তাহলে তিনি সকল মানুষকে একই মতাবলম্বী করে দিতেন, কিন্তু তারা মতভেদ করতেই থাকবে, ১১৮
1591 ১১. হূদ কিন্তু যার প্রতি তোমার রবের অনুগ্রহ হয়। আর এ জন্যই তিনি তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন; এবং তোমার রবের এই বাণীও পূর্ণ হবে যে, আমি জিন ও মানব সকলের দ্বারা জাহান্নামকে পূর্ণ করবই। ১১৯
1592 ১১. হূদ রাসূলদের ঐ সব বৃত্তান্ত আমি তোমার কাছে বর্ণনা করছি, যদ্দারা আমি তোমার চিত্তকে দৃঢ় করি। এর মাধ্যমে তোমার কাছে এসেছে সত্য এবং মু’মিনদের জন্য এসেছে উপদেশ ও সাবধানবাণী। ১২০
1593 ১১. হূদ যারা বিশ্বাস করেনা তাদেরকে বলঃ তোমরা যেমন করছ, করতে থাক এবং আমরাও আমাদের কাজ করছি। ১২১
1594 ১১. হূদ এবং তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমরাও প্রতীক্ষা করছি। ১২২
1595 ১১. হূদ আকাশসমূহ ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান আল্লাহরই এবং তাঁরই কাছে সবকিছু প্রত্যাবর্তিত হবে। সুতরাং তাঁর ইবাদাত কর এবং তাঁর উপর নির্ভর কর, আর তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে তোমার রাব্ব অনবহিত নন। ১২৩
1596 ১২. ইউসুফ আলিফ-লাম-রা এগুলি সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।
1597 ১২. ইউসুফ আমি অবতীর্ণ করেছি আরাবী ভাষায় কুরআন যাতে তোমরা বুঝতে পার।
1598 ১২. ইউসুফ আমি তোমার কাছে উত্তম কাহিনী বর্ণনা করছি, অহীর মাধ্যমে তোমার কাছে এই কুরআন প্রেরণ করে, যদিও এর পূর্বে তুমি ছিলে অনবহিতদের অন্তর্ভুক্ত।
1599 ১২. ইউসুফ যখন ইউসুফ তার পিতাকে বললঃ হে পিতা! আমি এগারটি নক্ষত্র, সূর্য এবং চাঁদকে দেখেছি - দেখেছি ওদেরকে আমার প্রতি সাজদাহবনত অবস্থায়।
1600 ১২. ইউসুফ সে বললঃ হে আমার পুত্র! তোমার স্বপ্নের বৃত্তান্ত তোমার ভাইদের নিকট বর্ণনা করনা; করলে তারা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে; শাইতানতো মানুষের প্রকাশ্য শত্রু।
1601 ১২. ইউসুফ এভাবে তোমার রাব্ব তোমাকে মনোনীত করবেন এবং তোমাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দিবেন, আর তোমার প্রতি ও ইয়াকূবের পরিবার পরিজনের প্রতি অনুগ্রহ পূর্ণ করবেন যেভাবে তিনি এটা পূর্বে পূর্ণ করেছিলেন তোমার পিতৃপুরুষ ইবরাহীম ও ইসহাকের প্রতি। নিশ্চয়ই তোমার রাব্ব সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
1602 ১২. ইউসুফ ইউসুফ ও তার ভাইদের ঘটনায় জিজ্ঞাসুদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।
1603 ১২. ইউসুফ যখন তারা (ভাইয়েরা) বলেছিলঃ আমাদের পিতার নিকট ইউসুফ এবং তার ভাইই (বিন ইয়ামীন) অধিক প্রিয়, অথচ আমরা একটি সংহত দল, আমাদের পিতাতো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতেই রয়েছেন ।
1604 ১২. ইউসুফ ইউসুফকে হত্যা কর অথবা তাকে কোন স্থানে ফেলে এসো। ফলে তোমাদের পিতার দৃষ্টি শুধু তোমাদের প্রতি নিবিষ্ট হবে এবং তারপর তোমরা ভাল লোক হয়ে যাবে।
1605 ১২. ইউসুফ তাদের মধ্যে একজন বললঃ ইউসুফকে হত্যা করনা, বরং যদি তোমরা কিছু করতেই চাও তাহলে তাকে কোন গভীর কুপে নিক্ষেপ কর, যাত্রী দলের কেহ তাকে তুলে নিয়ে যাবে। ১০
1606 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ হে আমাদের পিতা! ইউসুফের ব্যাপারে আপনি আমাদেরকে অবিশ্বাস করছেন কেন, যদিও আমরা তার হিতাকাংখী? ১১
1607 ১২. ইউসুফ আপনি আগামীকাল তাকে আমাদের সাথে প্রেরণ করুন, সে ফলমূল খাবে ও খেলাধুলা করবে, আমরা অবশ্যই তার রক্ষণাবেক্ষণ করব। ১২
1608 ১২. ইউসুফ সে বললঃ এটা আমাকে কষ্ট দিবে যে, তোমরা তাকে নিয়ে যাবে এবং আমি ভয় করি, তোমরা তার প্রতি অমনোযোগী হলে তাকে নেকড়ে বাঘ খেয়ে ফেলবে। ১৩
1609 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ আমরা একটি সংহত দল হওয়া সত্ত্বেও যদি তাকে নেকড়ে বাঘ খেয়ে ফেলে তাহলেতো আমরা ক্ষতিগ্রস্তই হব। ১৪
1610 ১২. ইউসুফ অতঃপর যখন তারা তাকে নিয়ে গেল এবং তাকে গভীর কূপে নিক্ষেপ করতে একমত হল, এমতাবস্থায় আমি তাকে জানিয়ে দিলামঃ তুমি তাদেরকে তাদের এই কর্মের কথা অবশ্যই বলে দিবে যখন তারা তোমাকে চিনবেনা। ১৫
1611 ১২. ইউসুফ তারা রাতে কাঁদতে কাঁদতে তাদের পিতার নিকট এলো। ১৬
1612 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ হে আমাদের পিতা! আমরা দৌড়ের প্রতিযোগিতা করেছিলাম এবং ইউসুফকে আমাদের মালপত্রের নিকট রেখে গিয়েছিলাম, অতঃপর তাকে নেকড়ে বাঘ খেয়ে ফেলেছে; কিন্তু আপনিতো আমাদের বিশ্বাস করবেননা, যদিও আমরা সত্যবাদী। ১৭
1613 ১২. ইউসুফ আর তারা তার জামায় মিথ্যা রক্ত লেপন করে এনেছিল। সে বললঃ না, তোমাদের মন তোমাদের জন্য একটি কাহিনী সাজিয়ে দিয়েছে। সুতরাং পূর্ণ ধৈর্যই শ্রেয়, তোমরা যা বলছ সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহই আমার সাহায্যস্থল। ১৮
1614 ১২. ইউসুফ এক যাত্রী দল এলো, তারা তাদের পানি সংগ্রাহককে প্রেরণ করল। সে তার পানির বালতি নামিয়ে দিল, সে বলে উঠলঃ কি সুখবর! এ যে এক কিশোর! অতঃপর তারা তাকে পণ্য রূপে লুকিয়ে রাখল, তারা যা করছিল সেই বিষয়ে আল্লাহ সবিশেষ অবগত ছিলেন। ১৯
1615 ১২. ইউসুফ আর তারা তাকে বিক্রি করল স্বল্প মূল্যে, মাত্র কয়েক দিরহামের বিনিময়ে, তারা এতে ছিল নির্লোভ। ২০
1616 ১২. ইউসুফ মিসরের যে ব্যক্তি তাকে ক্রয় করেছিল, সে তার স্ত্রীকে বললঃ সম্মানজনকভাবে এর থাকার ব্যবস্থা কর, সম্ভবতঃ সে আমাদের উপকারে আসবে অথবা আমরা একে পুত্র রূপেও গ্রহণ করতে পারি এবং এভাবে আমি ইউসুফকে সেই দেশে প্রতিষ্ঠিত করলাম তাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দেয়ার জন্য। আল্লাহ তাঁর কার্য সম্পাদনে অপ্রতিহত; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটা অবগত নয়। ২১
1617 ১২. ইউসুফ সে যখন পূর্ণ যৌবনে উপনীত হল তখন আমি তাকে হিকমাত ও জ্ঞান দান করলাম, এবং এভাবেই আমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে পুরস্কৃত করি। ২২
1618 ১২. ইউসুফ সে যে স্ত্রী লোকের গৃহে ছিল সে তার কাছ থেকে অসৎ কাজ কামনা করল এবং দরজাগুলি বন্ধ করে দিল ও বললঃ চলে এসো (আমরা কাম প্রবৃত্তি চরিতার্থ করি), সে বললঃ আমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি, তিনি (আযীয) আমার প্রভু! তিনি আমাকে সম্মানজনকভাবে থাকতে দিয়েছেন, সীমালংঘনকারীরা সফলকাম হয়না। ২৩
1619 ১২. ইউসুফ সেই রমণীতো তার প্রতি আসক্ত হয়ে ছিল এবং সেও তার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ত যদি না সে তার রবের নিদর্শন প্রত্যক্ষ করত। তাকে মন্দ কাজ ও অশ্লীলতা হতে বিরত রাখার জন্য এভাবে নিদর্শন দেখিয়েছিলাম। সে ছিল আমার বিশুদ্ধ চিত্ত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত। ২৪
1620 ১২. ইউসুফ তারা উভয়ে দৌড়ে দরযার দিকে গেল এবং স্ত্রী লোকটি পিছন হতে তার জামা ছিড়ে ফেলল, তারা স্ত্রী লোকটির স্বামীকে দরযার কাছে দেখতে পেল। স্ত্রী লোকটি বললঃ যে তোমার পরিবারের সাথে কু-কাজ কামনা করে তার জন্য কারাগারে প্রেরণ অথবা অন্য কোন বেদনাদায়ক শাস্তি ব্যতীত আর কি দন্ড হতে পারে? ২৫
1621 ১২. ইউসুফ সে (ইউসুফ) বললঃ সে’ই আমা হতে অসৎ কাজ কামনা করেছিল। স্ত্রী লোকটির পরিবারের একজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিলঃ যদি তার জামার সম্মুখ দিক ছিন্ন করা হয়ে থাকে তাহলে স্ত্রী লোকটি সত্য কথা বলেছে এবং পুরুষটি মিথ্যাবাদী । ২৬
1622 ১২. ইউসুফ আর যদি তার জামা পিছন দিক হতে ছিন্ন করা হয়ে থাকে তাহলে স্ত্রী লোকটি মিথ্যা কথা বলেছে এবং পুরুষটি সত্যবাদী। ২৭
1623 ১২. ইউসুফ সুতরাং গৃহস্বামী যখন দেখল যে, তার জামা পিছন দিক হতে ছিন্ন করা হয়েছে তখন সে বললঃ ভীষণ তোমাদের ছলনা। ২৮
1624 ১২. ইউসুফ হে ইউসুফ! তুমি এটা উপেক্ষা কর এবং হে নারী! তুমি তোমার অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর, নিশ্চয়ই তুমিই অপরাধী। ২৯
1625 ১২. ইউসুফ নগরে কতিপয় নারী বললঃ আযীযের স্ত্রী তার যুবক দাস হতে অসৎ কাজ কামনা করেছে; প্রেম তাকে উম্মত্ত করেছে, আমরাতো তাকে দেখছি স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে। ৩০
1626 ১২. ইউসুফ স্ত্রী লোকটি যখন তাদের ষড়যন্ত্রের কথা শুনল, তখন সে তাদেরকে ডেকে পাঠাল, তাদের প্রত্যেককে একটি করে চাকু দিল এবং যুবককে বললঃ তাদের সামনে বের হও। অতঃপর তারা যখন তাকে দেখল তখন তারা তার সৌন্দর্যে অভিভূত হল এবং নিজেদের হাত কেটে ফেলল। তারা বললঃ অদ্ভুত আল্লাহর মাহাত্য! এতো মানুষ নয়, এতো এক মহিমান্বিত মালাক/ফেরেশতা! ৩১
1627 ১২. ইউসুফ সে বললঃ এই সে যার সম্বন্ধে তোমরা আমার নিন্দা করেছ, আমি তার হতে অসৎ কাজ কামনা করেছি; কিন্তু সে নিজকে পবিত্র রেখেছে; আমি তাকে যা আদেশ করেছি, সে যদি তা না করে তাহলে সে কারারুদ্ধ হবেই এবং হীনদের অন্তর্ভুক্ত হবে। ৩২
1628 ১২. ইউসুফ ইউসুফ বললঃ হে আমার রাব্ব! এই নারীরা আমাকে যার প্রতি আহবান করছে তা অপেক্ষা কারাগার আমার কাছে অধিক প্রিয়। আপনি যদি আমাকে ওদের ছলনা হতে রক্ষা না করেন তাহলে ওদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব এবং অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হব। ৩৩
1629 ১২. ইউসুফ অতঃপর তার রাব্ব তার আহবানে সাড়া দিলেন এবং তাদের ছলনা হতে রক্ষা করলেন, তিনিতো সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। ৩৪
1630 ১২. ইউসুফ নিদর্শনাবলী দেখার পর তাদের মনে হল যে, তাকে কিছু কালের জন্য কারারুদ্ধ করতেই হবে। ৩৫
1631 ১২. ইউসুফ তার সাথে দু’জন যুবক কারাগারে প্রবেশ করল, তাদের একজন বললঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমি আংগুর নিংড়িয়ে রস বের করছি এবং অপরজন বললঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমি আমার মাথায় রুটি বহন করছি এবং পাখী তা হতে খাচ্ছে, আমাদেরকে আপনি এর তাৎপর্য জানিয়ে দিন, আমরা আপনাকে সৎকর্মপরায়ণ দেখছি। ৩৬
1632 ১২. ইউসুফ ইউসুফ বললঃ তোমাদেরকে যে খাদ্য দেয়া হয় তা আসার পূর্বে আমি তোমাদেরকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানিয়ে দিব, আমি যা তোমাদেরকে বলব তা আমার রাব্ব আমাকে যা শিক্ষা দিয়েছেন তা হতে বলব, যে সম্প্রদায় আল্লাহকে বিশ্বাস করেনা ও পরলোকে অবিশ্বাসী হয় আমি তাদের মতবাদ বর্জন করেছি। ৩৭
1633 ১২. ইউসুফ আমি আমার পিতৃ পুরুষ ইবরাহীম, ইসহাক এবং ইয়াকূবের মতবাদ অনুসরণ করি। আল্লাহর সাথে কোন বস্তুকে শরীক করা আমাদের কাজ নয়, এটা আমাদের ও সমস্ত মানুষের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ; কিন্তু অধিকাংশ মানুষই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেনা। ৩৮
1634 ১২. ইউসুফ হে আমার কারা সঙ্গীদ্বয়! ভিন্ন ভিন্ন বহু রাব্ব শ্রেয়, নাকি পরাক্রমশালী এক আল্লাহ? ৩৯
1635 ১২. ইউসুফ তাঁকে ছেড়ে তোমরা শুধু কতকগুলি নামের ইবাদাত করছ, যে নাম তোমাদের পিতৃপুরুষ ও তোমরা রেখেছ, এইগুলির কোন প্রমাণ আল্লাহ পাঠাননি। হুকুম (বিধান) দেয়ার অধিকার শুধু আল্লাহরই। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদাত করবে, আর কারও ইবাদাত করবেনা; এটাই সরল সঠিক দীন, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটা অবগত নয়। ৪০
1636 ১২. ইউসুফ হে আমার কারা সঙ্গীদ্বয়! তোমাদের একজনের ব্যাপার এই যে, সে তার প্রভুকে মদ পান করাবে এবং অপর সম্বন্ধে কথা এই যে, সে শুলবিদ্ধ হবে; অতঃপর তার মস্তক হতে পাখী আহার করবে, যে বিষয়ে তোমরা জানতে চেয়েছ তার সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। ৪১
1637 ১২. ইউসুফ ইউসুফ তাদের মধ্যে যে মুক্তি পাবে মনে করল, তাকে বললঃ তোমার প্রভুর কাছে আমার কথা বল; কিন্তু শাইতান তাকে তার প্রভুর কাছে তার বিষয়ে বলার কথা ভুলিয়ে দিল। সুতরাং ইউসুফ কয়েক বছর কারাগারে রইল। ৪২
1638 ১২. ইউসুফ বাদশাহ বললঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম, সাতটি স্থূলকায় গাভী, ওগুলিকে সাতটি শীর্ণকায় গাভী ভক্ষণ করছে এবং সাতটি সবুজ শীষ এবং অপর সাতটি শুস্ক। হে প্রধানগণ! যদি তোমরা স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে পার তাহলে আমার স্বপ্ন সম্বন্ধে অভিমত দাও। ৪৩
1639 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ এটা অর্থহীন স্বপ্ন এবং আমরা এরূপ স্বপ্ন ব্যাখ্যায় অভিজ্ঞ নই। ৪৪
1640 ১২. ইউসুফ দু’জন কারারুদ্ধের মধ্যে যে মুক্তি পেয়েছিল এবং দীর্ঘকাল পরে তার স্মরণ হলে সে বললঃ আমি এর তাৎপর্য তোমাদেরকে জানিয়ে দিব, সুতরাং তোমরা আমাকে পাঠিয়ে দাও। ৪৫
1641 ১২. ইউসুফ সে বললঃ হে ইউসুফ! হে সত্যবাদী! সাতটি স্থুলকায় গাভী, ওগুলিকে সাতটি শীর্ণকায় গাভী ভক্ষণ করছে এবং সাতটি সবুজ শীষ ও অপর সাতটি শুস্ক শীষ সম্বন্ধে আপনি আমাদেরকে ব্যাখ্যা দিন, যাতে আমি লোকদের কাছে ফিরে যেতে পারি এবং যাতে তারা অবগত হতে পারে। ৪৬
1642 ১২. ইউসুফ ইউসুফ বললঃ তোমরা সাত বছর একাদিক্রমে চাষ করবে, অতঃপর তোমরা শস্য সংগ্রহ করবে; তার মধ্যে যে সামান্য পরিমাণ তোমরা আহার করবে, তা ব্যতীত সমস্ত শস্য শীষ সমেত রেখে দিবে। ৪৭
1643 ১২. ইউসুফ এরপর আসবে সাতটি কঠিন বছর; এই সাত বছর যা পূর্বে সঞ্চয় করে রাখবে - লোকে তা খাবে; শুধু সামান্য কিছু যা তোমরা সংরক্ষণ করবে তা ব্যতীত। ৪৮
1644 ১২. ইউসুফ এবং এরপর আসবে এক বছর, সেই বছর মানুষের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে এবং সেই বছর মানুষ প্রচুর ফলের রস নিংড়াবে। ৪৯
1645 ১২. ইউসুফ বাদশাহ বললঃ তোমরা ইউসুফকে আমার কাছে নিয়ে এসো। যখন দূত তার কাছে উপস্থিত হল তখন সে বললঃ তুমি তোমার প্রভুর কাছে ফিরে যাও এবং তাকে জিজ্ঞেস করঃ যে নারীরা তাদের হাত কেটে ফেলেছিল তাদের অবস্থা কি? আমার রাব্ব তাদের ছলনা সম্যক অবগত। ৫০
1646 ১২. ইউসুফ বাদশাহ নারীদেরকে বললঃ যখন তোমরা ইউসুফ হতে অসৎ কাজ কামনা করেছিলে তখন তোমাদের কি হয়েছিল? তারা বললঃ অদ্ভুত আল্লাহর মাহাত্ম্য! আমরা তার মধ্যে কোন দোষ দেখিনি। আযীযের স্ত্রী বললঃ এক্ষণে সত্য প্রকাশ হয়ে গেল, আমিই তার হতে অসৎ কাজ কামনা করেছিলাম, সেতো সত্যবাদী। ৫১
1647 ১২. ইউসুফ সে বললঃ আমি এটা বলেছিলাম যাতে সে জানতে পারে যে, তার অনুপস্থিতিতে আমি তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করিনি এবং আল্লাহ বিশ্বাস ঘাতকদের ষড়যন্ত্র সফল করেননা। ৫২
1648 ১২. ইউসুফ আমি নিজকে নির্দোষ মনে করিনা, মানুষের মন অবশ্যই মন্দ কর্ম-প্রবণ। কিন্তু সে নয় যার প্রতি আমার রাব্ব অনুগ্রহ করেন। নিশ্চয়ই আমার রাব্ব অতি ক্ষমাশীল ও দয়ালু। ৫৩
1649 ১২. ইউসুফ বাদশাহ বললঃ ইউসুফকে আমার কাছে নিয়ে এসো, আমি তাকে একান্ত সহচর নিযুক্ত করব। অতঃপর বাদশাহ যখন তার সাথে কথা বলল তখন রাজা বললঃ আজ তুমি আমাদের কাছে মর্যাদাবান ও বিশ্বাস ভাজন হলে। ৫৪
1650 ১২. ইউসুফ সে বললঃ আমাকে কোষাগারের দায়িত্বে নিয়োজিত করুন। নিশ্চয়ই আমি উত্তম সংরক্ষণকারী, অতিশয় জ্ঞানবান। ৫৫
1651 ১২. ইউসুফ এভাবে আমি ইউসুফকে সেই দেশে প্রতিষ্ঠিত করলাম। সে সেই দেশে যথা ইচ্ছা অবস্থান করতে পারত। আমি যাকে ইচ্ছা তার প্রতি দয়া করি, আর আমি সৎ কর্মপরায়ণদের শ্রমফল বিনষ্ট করিনা। ৫৬
1652 ১২. ইউসুফ যারা মু’মিন ও মুত্তাকী তাদের পরকালের পুরস্কারই উত্তম। ৫৭
1653 ১২. ইউসুফ ইউসুফের ভাইয়েরা এলো এবং তার নিকট উপস্থিত হল। সে তাদেরকে চিনল, কিন্তু তারা তাকে চিনতে পারলনা। ৫৮
1654 ১২. ইউসুফ আর সে যখন তাদের সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দিল তখন সে বললঃ তোমরা আমার নিকট তোমাদের বৈমাত্রেয় ভাইকে নিয়ে এসো; তোমরা কি দেখছনা যে, আমি মাপে পূর্ণ মাত্রায় দিই? এবং আমি উত্তম মেযবান? ৫৯
1655 ১২. ইউসুফ কিন্তু তোমরা যদি তাকে আমার নিকট নিয়ে না আস তাহলে আমার নিকট তোমাদের জন্য কোন বরাদ্দ থাকবেনা এবং তোমরা আমার নিকটবর্তী হবেনা। ৬০
1656 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ ওর বিষয়ে আমরা ওর পিতাকে সম্মত করার চেষ্টা করব এবং আমরা নিশ্চয়ই এটা করব। ৬১
1657 ১২. ইউসুফ ইউসুফ তার ভৃত্যদেরকে বললঃ তারা যে পণ্য মূল্য দিয়েছে তা তাদের মালপত্রের মধ্যে রেখে দাও, যাতে স্বজনদের কাছে প্রত্যাবর্তনের পর তারা বুঝতে পারে যে, ওটা প্রত্যর্পন করা হয়েছে, তা হলে তারা পুনরায় আসতে পারে। ৬২
1658 ১২. ইউসুফ অতঃপর যখন তারা তাদের পিতার নিকট ফিরে এলো তখন তারা বললঃ হে আমাদের পিতা! আমাদের জন্য বরাদ্দ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সুতরাং আমাদের ভাইকে আমাদের সাথে পাঠিয়ে দিন যাতে আমরা রসদ পেতে পারি, আমরা অবশ্যই তার রক্ষণাবেক্ষণ করব। ৬৩
1659 ১২. ইউসুফ সে বললঃ আমি কি তোমাদেরকে ওর সম্বন্ধে সেইরূপ বিশ্বাস করব, যেরূপ বিশ্বাস পূর্বে তোমাদেরকে করেছিলাম ওর ভাইয়ের ব্যাপারে? আল্লাহই রক্ষণাবেক্ষণে শ্রেষ্ঠ এবং তিনি শ্রেষ্ঠতম দয়ালু। ৬৪
1660 ১২. ইউসুফ যখন তারা তাদের মালপত্র খুলল তখন তারা দেখতে পেল, তাদের পণ্যমূল্য তাদেরকে প্রত্যর্পন করা হয়েছে। তারা বললঃ হে আমাদের পিতা! আমরা আর কি প্রত্যাশা করতে পারি? এটা আমাদের প্রদত্ত পণ্যমূল্য, আমাদেরকে প্রত্যর্পন করা হয়েছে; পুনরায় আমরা আমাদের পরিবারবর্গকে খাদ্যসামগ্রী এনে দিব এবং আমরা আমাদের ভাইয়ের রক্ষণাবেক্ষণ করব এবং আমরা অতিরিক্ত আর এক উট বোঝাই পণ্য আনব, যা এনেছি তা পরিমাণে অল্প। ৬৫
1661 ১২. ইউসুফ পিতা বললঃ আমি ওকে কখনও তোমাদের সাথে পাঠাবনা যতক্ষণ না তোমরা আল্লাহর নামে অঙ্গীকার কর যে, তোমরা তাকে আমার নিকট নিয়ে আসবেই, অবশ্য যদি তোমরা একান্ত অসহায় হয়ে না পড়। অতঃপর যখন তারা তার নিকট প্রতিজ্ঞা করল তখন সে বললঃ আমরা যে বিষয়ে কথা বলছি, আল্লাহ তার বিধায়ক। ৬৬
1662 ১২. ইউসুফ সে বললঃ হে আমার পুত্রগণ! তোমরা এক দরযা দিয়ে প্রবেশ করনা, ভিন্ন ভিন্ন দরযা দিয়ে প্রবেশ করবে, আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে আমি তোমাদের জন্য কিছুই করতে পারিনা। বিধান আল্লাহরই; আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং যারা নির্ভর করতে চায় তারা তাঁরই (আল্লাহরই) উপর নির্ভর করুক। ৬৭
1663 ১২. ইউসুফ যখন তারা, তাদের পিতা তাদেরকে যেভাবে আদেশ করেছিল সেভাবেই প্রবেশ করল, তখন আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে ওটা তাদের কোন কাজে এলোনা; ইয়াকূব শুধু তার মনের একটি অভিপ্রায় পূর্ণ করেছিল এবং সে অবশ্যই জ্ঞানী ছিল। কারণ আমি তাকে শিক্ষা দিয়েছিলাম, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটা অবগত নয়। ৬৮
1664 ১২. ইউসুফ তারা যখন ইউসুফের সামনে হাযির হল তখন ইউসুফ তার (সহোদর) ভাইকে নিজের কাছে রাখল এবং বললঃ আমিই তোমার (সহোদর) ভাই। সুতরাং তারা যা করত সেজন্য দুঃখ করনা। ৬৯
1665 ১২. ইউসুফ অতঃপর সে যখন তাদের সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দিল তখন সে তার (সহোদর) ভাইয়ের মালপত্রের মধ্যে পানপাত্র রেখে দিল, অতঃপর এক ঘোষক উচ্চৈঃস্বরে বললঃ হে যাত্রীদল! তোমরা নিশ্চয়ই চোর। ৭০
1666 ১২. ইউসুফ তারা তাদের দিকে ফিরে তাকাল এবং বললঃ তোমরা কি হারিয়েছ? ৭১
1667 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ আমরা রাজার পানপাত্র হারিয়েছি; যে ওটা এনে দিবে সে এক উট বোঝাই মাল পাবে এবং আমি ওর যামীন। ৭২
1668 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ আল্লাহর শপথ! তোমরাতো জান যে, আমরা এই দেশে দুস্কৃতি করতে আসিনি এবং আমরা চোরও নই। ৭৩
1669 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ যদি তোমরা মিথ্যাবাদী হও তাহলে তার শাস্তি কি? ৭৪
1670 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ এর শাস্তি এই যে, যার মালপত্রের মধ্যে পাত্রটি পাওয়া যাবে, সে’ই তার বিনিময়, এভাবে আমরা সীমালংঘনকারীদের শাস্তি দিয়ে থাকি। ৭৫
1671 ১২. ইউসুফ অতঃপর সে তার (সহোদর) ভাইয়ের মালপত্র তল্লাশির পূর্বে তাদের মাল-পত্র তল্লাশি করতে লাগল, পরে তার সহোদরের মাল-পত্রের মধ্য হতে পাত্রটি বের করল। এভাবে আমি ইউসুফের জন্য কৌশল করেছিলাম, রাজার আইনে তার সহোদরকে সে আটক করতে পারতনা, আল্লাহ ইচ্ছা না করলে। আমি যাকে ইচ্ছা মর্যাদায় উন্নীত করি, প্রত্যেক জ্ঞানবান ব্যক্তির উপর আছেন সর্বজ্ঞানী। ৭৬
1672 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ সে যদি চুরি করে থাকে তার (সহোদর) ভাইওতো ইতোপূর্বে চুরি করেছিল, এতে ইউসুফ প্রকৃত ব্যাপার নিজের মনে গোপন রাখল এবং তাদের কাছে প্রকাশ করলনা। সে মনে মনে বললঃ তোমাদের অবস্থাতো হীনতর এবং তোমরা যা বলছ সে সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবগত। ৭৭
1673 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ হে আযীয! এর পিতা আছেন অতিশয় বৃদ্ধ, সুতরাং এর স্থলে আপনি আমাদের একজনকে রাখুন! আমরাতো আপনাকে দেখছি মহানুভব ব্যক্তিদের একজন। ৭৮
1674 ১২. ইউসুফ সে বললঃ যার নিকট আমরা আমাদের মাল পেয়েছি, তাকে ছাড়া অন্যকে রাখার অপরাধ হতে আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এরূপ করলে আমরা অবশ্যই সীমালংঘনকারী হব। ৭৯
1675 ১২. ইউসুফ যখন তারা তার নিকট হতে সম্পূর্ণ নিরাশ হল তখন তারা নির্জনে গিয়ে পরামর্শ করতে লাগল, ওদের মধ্যে যে ছিল বয়োজ্যেষ্ঠ সে বললঃ তোমরা কি জাননা যে, তোমাদের পিতা তোমাদের নিকট হতে আল্লাহর নামে অঙ্গীকার নিয়েছেন এবং পূর্বেও তোমরা ইউসুফের ব্যাপারে ক্রটি করেছিলে; সুতরাং আমি কিছুতেই এই দেশ ত্যাগ করবনা যতক্ষণ না আমার পিতা আমাকে অনুমতি দেন অথবা আল্লাহ আমার জন্য কোন ব্যবস্থা করেন এবং তিনিই বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। ৮০
1676 ১২. ইউসুফ তোমরা তোমাদের পিতার নিকট ফিরে যাও এবং বলঃ হে আমাদের পিতা! আপনার পুত্র চুরি করেছে এবং আমরা যা জানি তারই প্রত্যক্ষ বিবরণ দিলাম, অদৃশ্যের ব্যাপারে আমরা অবহিত ছিলামনা। ৮১
1677 ১২. ইউসুফ যে জনপদে আমরা ছিলাম ওর অধিবাসীদেরকে জিজ্ঞেস করুন এবং যে যাত্রীদলের সাথে আমরা এসেছি তাদেরকেও, আমরা অবশ্যই সত্যবাদী। ৮২
1678 ১২. ইউসুফ ইয়াকূব বললঃ না, তোমাদের মন তোমাদের জন্য একটি কাহিনী সাজিয়ে দিয়েছে; সুতরাং পূর্ণ ধৈর্যই শ্রেয়; হয়তো আল্লাহ ওদেরকে এক সাথে আমার কাছে এনে দিবেন, তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। ৮৩
1679 ১২. ইউসুফ সে ওদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল এবং বললঃ আফসোস ইউসুফের জন্য। শোকে তার চক্ষুদ্বয় সাদা হয়ে গিয়েছিল এবং সে ছিল অসহনীয় মনস্তাপে ক্লিষ্ট। ৮৪
1680 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ আল্লাহর শপথ! আপনিতো ইউসুফের কথা ভুলবেননা যতক্ষণ না আপনি শারীরিকভাবে বিধ্বস্ত হবেন, অথবা মৃত্যু বরণ করবেন। ৮৫
1681 ১২. ইউসুফ সে বললঃ আমি আমার অসহনীয় বেদনা, আমার দুঃখ আল্লাহর নিকট নিবেদন করছি এবং আমি আল্লাহর নিকট হতে যা জানি তোমরা তা জাননা। ৮৬
1682 ১২. ইউসুফ হে আমার পুত্রগণ! তোমরা যাও, ইউসুফ ও তার সহোদরের অনুসন্ধান কর এবং আল্লাহর করুণা হতে তোমরা নিরাশ হয়োনা, কারণ কাফির ব্যতীত কেহই আল্লাহর করুণা হতে নিরাশ হয়না। ৮৭
1683 ১২. ইউসুফ যখন তারা তার নিকট উপস্থিত হল তখন বললঃ হে আযীয! আমরা ও আমাদের পরিবার পরিজন বিপন্ন হয়ে পড়েছি এবং আমরা তুচ্ছ পণ্য নিয়ে এসেছি; আপনি আমাদের রসদ পূর্ণ মাত্রায় দিন এবং আমাদেরকে দান করুন; আল্লাহ দাতাদেরকে পুরস্কৃত করেন। ৮৮
1684 ১২. ইউসুফ সে বললঃ তোমরা কি জান, তোমরা ইউসুফ ও তার সহোদরের প্রতি কিরূপ আচরণ করেছিলে, যখন তোমরা ছিলে অজ্ঞ? ৮৯
1685 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ তাহলে কি তুমিই ইউসুফ? সে বললঃ আমিই ইউসুফ এবং এই আমার সহোদর; আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। যে ব্যক্তি মুত্তাকী ও ধৈর্যশীল, আল্লাহ সেইরূপ সৎকর্মপরায়ণদের শ্রমফল নষ্ট করেননা। ৯০
1686 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ আল্লাহর শপথ! আল্লাহ নিশ্চয়ই তোমাকে আমাদের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন এবং আমরা নিশ্চয়ই অপরাধী ছিলাম। ৯১
1687 ১২. ইউসুফ সে বললঃ আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন, এবং তিনি দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু। ৯২
1688 ১২. ইউসুফ তোমরা আমার এ জামাটি নিয়ে যাও এবং এটা আমার পিতার মুখমন্ডলের উপর রেখ, তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন, আর তোমরা তোমাদের পরিবারের সকলকেই আমার নিকট নিয়ে এসো। ৯৩
1689 ১২. ইউসুফ অতঃপর যাত্রীদল যখন বের হয়ে পড়ল তখন তাদের পিতা বললঃ তোমরা যদি আমাকে অপ্রকৃতিস্থ মনে না কর তাহলে বলিঃ আমি ইউসুফের ঘ্রাণ পাচ্ছি। ৯৪
1690 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ আল্লাহর শপথ! আপনিতো আপনার পূর্ব বিভ্রান্তিতেই রয়েছেন। ৯৫
1691 ১২. ইউসুফ অতঃপর যখন সুসংবাদ বাহক উপস্থিত হল এবং তার মুখমন্ডলের উপর জামাটি রাখল তখন সে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেল। সে বললঃ আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আমি আল্লাহর নিকট হতে যা জানি তোমরা তা জাননা। ৯৬
1692 ১২. ইউসুফ তারা বললঃ হে আমাদের পিতা! আমাদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন; আমরাতো অপরাধী। ৯৭
1693 ১২. ইউসুফ সে বললঃ আমি আমার রবের নিকট তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব, তিনিতো অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ৯৮
1694 ১২. ইউসুফ অতঃপর তারা যখন ইউসুফের নিকট উপস্থিত হল তখন সে তার মাতা-পিতাকে আলিঙ্গন করল এবং বললঃ আপনারা আল্লাহর ইচ্ছায় নিরাপদে মিসরে প্রবেশ করুন! ৯৯
1695 ১২. ইউসুফ আর ইউসুফ তার মাতা-পিতাকে উচ্চাসনে বসাল এবং তারা সবাই তার সামনে সাজদাহয় লুটিয়ে পড়ল। সে বললঃ হে আমার পিতা! এটাই আমার পূর্বেকার স্বপ্নের ব্যাখ্যা; আমার রাব্ব ওটা সত্যে পরিণত করেছেন এবং তিনি আমাকে কারাগার হতে মুক্ত করেছেন এবং শাইতান আমার ও আমার ভাইদের সম্পর্ক নষ্ট করার পরও আপনাদেরকে মরু অঞ্চল হতে এখানে এনে দিয়ে আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, আমার রাব্ব যা ইচ্ছা তা নিপুণতার সাথে করে থাকেন, তিনিতো সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। ১০০
1696 ১২. ইউসুফ হে আমার রাব্ব! আপনি আমাকে রাজ্য দান করেছেন এবং স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দিয়েছেন। হে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা! আপনিই ইহলোক ও পরলোকে আমার অভিভাবক, আপনি আমাকে মুসলিম হিসাবে মৃত্যু দান করুন এবং আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করুন! ১০১
1697 ১২. ইউসুফ এটা অদৃশ্যলোকের সংবাদ যা তোমাকে আমি অহী দ্বারা অবহিত করছি, ষড়যন্ত্রকালে যখন তারা মতৈক্যে পৌঁছেছিল তখন তুমি তাদের সাথে ছিলেনা। ১০২
1698 ১২. ইউসুফ তুমি যতই চাও না কেন, অধিকাংশ লোকই ঈমান আনার নয়। ১০৩
1699 ১২. ইউসুফ আর তুমিতো তাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক দাবী করছোনা, এটাতো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ ছাড়া কিছু নয়। ১০৪
1700 ১২. ইউসুফ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে অনেক নিদর্শন রয়েছে, তারা এ সমস্ত প্রত্যক্ষ করে, কিন্তু তারা এ সবের প্রতি উদাসীন। ১০৫
1701 ১২. ইউসুফ তাদের অধিকাংশ আল্লাহকে বিশ্বাস করে, কিন্তু তাঁর সাথে শরীক করে। ১০৬
1702 ১২. ইউসুফ তাহলে কি তারা আল্লাহর সর্বগ্রাসী শাস্তি হতে অথবা তাদের অজ্ঞাতসারে কিয়ামাতের আকস্মিক উপস্থিতি হতে নিরাপদ? ১০৭
1703 ১২. ইউসুফ তুমি বলঃ এটাই আমার (আল্লাহর) পথ; প্রতিটি মানুষকে আমি আহবান করি সজ্ঞানে, আমি এবং আমার অনুসারীগণও; আল্লাহ মহিমান্বিত এবং যারা আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করে আমি তাদের অন্তভুর্ক্ত নই। ১০৮
1704 ১২. ইউসুফ তোমার পূর্বেও জনপদবাসীদের মধ্য হতে পুরুষদেরকেই পাঠিয়েছিলাম, যাদের নিকট অহী পাঠাতাম; তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি এবং তাদের পূর্ববর্তীদের কি পরিণাম হয়েছিল তা কি দেখেনি? যারা মুত্তাকী তাদের জন্য পরকালই শ্রেয়; তোমরা কি বুঝনা? ১০৯
1705 ১২. ইউসুফ অবশেষে যখন রাসূলগণ নিরাশ হল এবং লোকে ভাবল যে, রাসূলদেরকে মিথ্যা আশ্বাস দেয়া হয়েছে তখন তাদের কাছে আমার সাহায্য এলো। এভাবে আমি যাকে ইচ্ছা করি সে উদ্ধার পায়, আর অপরাধী সম্প্রদায় হতে আমার শাস্তি রদ করা হয়না। ১১০
1706 ১২. ইউসুফ তাদের বৃত্তান্তে বোধশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য আছে শিক্ষা, ইহা এমন বাণী যা মিথ্যা প্রবন্ধ নয়, কিন্তু মু’মিনদের জন্য এটা পূর্ব গ্রন্থে যা আছে উহার সমর্থন এবং সমস্ত কিছুর বিশদ বিবরণ, হিদায়াত ও রাহমাত। ১১১
1707 ১৩. আর-রাদ আলিফ লাম মীম রা, এগুলি কুরআনের আয়াত; যা তোমার রাব্ব হতে তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা’ই সত্য; কিন্তু অধিকাংশ এতে বিশ্বাস করেনা।
1708 ১৩. আর-রাদ আল্লাহই উর্ধ্বদেশে আকাশমন্ডলী স্থাপন করেছেন স্তম্ভ ব্যতীত, তোমরা এটা দেখছ। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হলেন এবং সূর্য ও চাঁদকে নিয়মাধীন করলেন; প্রত্যেকে নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত আবর্তন করে, তিনি সকল বিষয় নিয়ন্ত্রণ করেন এবং নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেন যাতে তোমরা তোমাদের রবের সাথে সাক্ষাৎ সম্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাস করতে পার।
1709 ১৩. আর-রাদ তিনিই ভূতলকে বিস্তৃত করেছেন এবং ওতে পর্বত ও নদী সৃষ্টি করেছেন এবং প্রত্যেক প্রকারের ফল সৃষ্টি করেছেন জোড়ায় জোড়ায়; তিনি দিনকে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন; এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য।
1710 ১৩. আর-রাদ পৃথিবীতে রয়েছে পরস্পর সংলগ্ন ভূখন্ড; ওতে আছে আঙ্গুর-কানন, শষ্যক্ষেত, একাধিক শির বিশিষ্ট অথবা এক শির বিশিষ্ট খেজুর-বৃক্ষ, সিঞ্চিত একই পানিতে; এবং ফল হিসাবে ওগুলির কতককে কতকের উপর আমি শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে থাকি, অবশ্যই বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য এতে রয়েছে নিদর্শন।
1711 ১৩. আর-রাদ যদি তুমি বিস্মিত হও তাহলে বিস্ময়ের বিষয় তাদের বক্তব্যঃ মাটিতে পরিণত হওয়ার পরও কি আমরা নতুন জীবন লাভ করব? ওরাই ওদের রাব্বকে অস্বীকার করে এবং ওদেরই গলদেশে থাকবে লৌহ-শৃংখল, ওরাই জাহান্নামী এবং সেখানে ওরা চিরস্থায়ীভাবে অবস্থানকারী।
1712 ১৩. আর-রাদ মঙ্গলের পূর্বে তারা তোমাকে শাস্তি ত্বরান্বিত করতে বলে, যদিও তাদের পূর্বে এর বহু দৃষ্টান্ত গত হয়েছে। বস্তুতঃ মানুষের সীমালংঘন সত্ত্বেও তোমার রাব্ব মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল এবং তোমার রাব্ব শাস্তি দানেও কঠোর।
1713 ১৩. আর-রাদ যারা কুফরী করেছে তারা বলেঃ তার রবের নিকট হতে তার নিকট কোন নিদর্শন অবতীর্ণ হয়না কেন? হে নাবী! কথা এই যে, তুমিতো শুধুমাত্র ভয় প্রদর্শনকারী এবং প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে পথ প্রদর্শক।
1714 ১৩. আর-রাদ প্রত্যেক নারী যা গর্ভে ধারণ করে এবং জরায়ুতে যা কিছু কমে ও বাড়ে আল্লাহ তা জানেন। এবং তাঁর বিধানে প্রত্যেক বস্তুরই এক নির্দিষ্ট পরিমাণ আছে।
1715 ১৩. আর-রাদ যা অদৃশ্য ও যা দৃশ্যমান তিনি তা অবগত; তিনি মহান, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান।
1716 ১৩. আর-রাদ তোমাদের মধ্যে যে কথা গোপন রাখে এবং যে তা প্রকাশ করে, রাতে যে আত্মগোপন করে এবং দিনে যে প্রকাশ্যে বিচরণ করে, তারা সমভাবে তাঁর (আল্লাহর) জ্ঞানগোচর। ১০
1717 ১৩. আর-রাদ মানুষের জন্য তার সামনে ও পিছনে একের পর এক প্রহরী থাকে; তারা আল্লাহর আদেশে তার রক্ষণাবেক্ষণ করে; নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেননা যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা নিজেরা পরিবর্তন করে। কোন সম্প্রদায় সম্পর্কে যদি আল্লাহ অশুভ কিছু ইচ্ছা করেন তাহলে তা রদ করার কেহ নেই এবং তিনি ছাড়া তাদের কোন অভিভাবক (ওয়ালী) নেই। ১১
1718 ১৩. আর-রাদ তিনিই তোমাদেরকে দেখান বিজলী, যা ভয় ও ভরসা সঞ্চার করে এবং তিনিই সৃষ্টি করেন ঘন মেঘ। ১২
1719 ১৩. আর-রাদ বজ্র ধ্বনি ও মালাইকা সভয়ে তাঁর সপ্রশংস মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি বজ্রপাত ঘটান এবং যাকে ইচ্ছা ওটা দ্বারা আঘাত করেন। তথাপি ওরা আল্লাহ সম্বন্ধে বিতন্ডা করে; যদিও তিনি মহা শক্তিশালী । ১৩
1720 ১৩. আর-রাদ সত্যের আহবান তাঁরই। যারা তাঁকে ছাড়া আহবান করে অপরকে তারা (অপরেরা) তাদেরকে কোনই সাড়া দেয়না; তাদের দৃষ্টান্ত সেই ব্যক্তির মত যে তার মুখে পানি পৌঁছবে এই আশায় তার হস্তদ্বয় প্রসারিত করে এমন পানির দিকে যা তার মুখে পৌঁছার নয়, কাফিরদের আহবান নিষ্ফল। ১৪
1721 ১৩. আর-রাদ আল্লাহর প্রতি সাজদাহবনত হয় আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এবং তাদের ছায়াগুলিও সকাল-সন্ধ্যায়। [সাজদাহ] ১৫
1722 ১৩. আর-রাদ বলঃ কে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর রাব্ব? বলঃ তিনি আল্লাহ! বলঃ তাহলে কি তোমরা অভিভাবক রূপে গ্রহণ করেছ আল্লাহর পরিবর্তে অপরকে, যারা নিজেদের লাভ বা ক্ষতি সাধনে সক্ষম নয়? বলঃ অন্ধ ও চক্ষুস্মান কি সমান অথবা অন্ধকার ও আলো কি এক? তাহলে কি তারা আল্লাহর এমন শরীক স্থাপন করছে যারা (আল্লাহর সৃষ্টির মত) সৃষ্টি করেছে, যে কারণে সৃষ্টি তাদের মধ্যে বিভ্রাট ঘটিয়েছে? বলঃ আল্লাহ সকল কিছুর স্রষ্টা, তিনি এক, পরাক্রমশালী। ১৬
1723 ১৩. আর-রাদ তিনি আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করেন, ফলে নদীসমূহ ওদের পরিমাণ অনুযায়ী প্লাবিত হয় এবং প্লাবন তার উপরিস্থিত আবর্জনা বহন করে। এভাবে আবর্জনা উপরি ভাগে আসে যখন অলংকার অথবা তৈজসপত্র নির্মানের উদ্দেশে কিছু অগ্নিতে উত্তপ্ত করা হয় তার। এভাবে আল্লাহ সত্য ও অসত্যের দৃষ্টান্ত দিয়ে থাকেন; যা আবর্জনা তা ফেলে দেয়া হয় এবং যা মানুষের উপকারে আসে তা যমীনে থেকে যায়, এভাবে আল্লাহ উপমা দিয়ে থাকেন। ১৭
1724 ১৩. আর-রাদ মঙ্গল তাদের, যারা তাদের রবের আহবানে সাড়া দেয়। এবং যারা তাঁর ডাকে সাড়া দেয়না তাদের যদি পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা সমস্তই থাকত এবং উহার সাথে সম পরিমাণ আরও থাকত তাহলে অবশ্যই তারা মুক্তিপণ স্বরূপ তা প্রদান করত; তাদের হিসাব হবে কঠোর এবং জাহান্নাম হবে তাদের আবাস; ওটা কত নিকৃষ্ট আশ্রয়স্থল! ১৮
1725 ১৩. আর-রাদ তোমার রাব্ব হতে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা যে ব্যক্তি সত্য বলে জানে সে, আর অন্ধ কি সমান? উপদেশ গ্রহণ করে শুধু বিবেকবুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তিরাই। ১৯
1726 ১৩. আর-রাদ যারা আল্লাহকে প্রদত্ত অঙ্গীকার রক্ষা করে এবং প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেনা । ২০
1727 ১৩. আর-রাদ আর আল্লাহ যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখতে আদেশ করেছেন যারা তা অক্ষুণ্ণ রাখে, ভয় করে তাদের রাব্বকে এবং ভয় করে কঠোর হিসাবকে । ২১
1728 ১৩. আর-রাদ আর যারা তাদের রবের সন্তুষ্টি লাভের জন্য ধৈর্য ধারণ করে, সালাত সুপ্রতিষ্ঠিত করে, আমি তাদেরকে যে জীবনোপকরণ দিয়েছি তা হতে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে এবং যারা ভাল দ্বারা মন্দ দূর করে তাদের জন্য শুভ পরিণাম । ২২
1729 ১৩. আর-রাদ স্থায়ী জান্নাত, তাতে তারা প্রবেশ করবে এবং তাদের মাতা-পিতা, পতি-পত্নী ও সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে যারা সৎ কাজ করেছে তারাও এবং মালাইকা/ফেরেশতারা তাদের কাছে হাযির হবে প্রত্যেক দরজা দিয়ে। ২৩
1730 ১৩. আর-রাদ (তারা বলবেঃ) তোমরা ধৈর্য ধারণ করেছ বলে তোমাদের প্রতি শান্তি (সালাম)! কতই না ভাল এই পরিণাম! ২৪
1731 ১৩. আর-রাদ যারা আল্লাহর সাথে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে, যে সম্পর্ক অক্ষুন্ন রাখতে আল্লাহ আদেশ করেছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের জন্য আছে অভিসম্পাত এবং আছে মন্দ আবাস।
1732 ১৩. আর-রাদ আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা করেন তার জীবনোপকরণ বর্ধিত করেন কিংবা সংকুচিত করেন; কিন্তু তারা পাথির্ব জীবন নিয়েই উল্লসিত, অথচ ইহজীবনতো পরজীবনের তুলনায় ক্ষণস্থায়ী ভোগ মাত্র। ২৬
1733 ১৩. আর-রাদ যারা কুফরী করেছে তারা বলেঃ তার রবের নিকট হতে তার নিকট কোন নিদর্শন অবতীর্ণ হয়না কেন? তুমি বলঃ আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন এবং তিনি তাদেরকে তাঁর পথ দেখান যারা তাঁর অভিমুখী। ২৭
1734 ১৩. আর-রাদ যারা ঈমান আনে এবং আল্লাহর স্মরণে যাদের চিত্ত প্রশান্ত হয়; জেনে রেখ, আল্লাহর স্মরণেই চিত্ত প্রশান্ত হয়। ২৮
1735 ১৩. আর-রাদ যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে, কল্যাণ ও শুভ পরিণাম তাদেরই। ২৯
1736 ১৩. আর-রাদ এভাবে আমি তোমাকে পাঠিয়েছি এক জাতির প্রতি, যার পূর্বে বহু জাতি গত হয়েছে, তাদের নিকট আবৃত্তি করার জন্য, যা আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করেছি; তথাপি তারা দয়াময়কে অস্বীকার করে। তুমি বলঃ তিনিই আমার রাব্ব! তিনি ছাড়া অন্য কোন মা‘বূদ নেই, তাঁরই উপর আমি নির্ভর করি এবং আমার প্রত্যাবর্তন তাঁরই কাছে। ৩০
1737 ১৩. আর-রাদ যদি কোন কুরআন এমন হত যদ্বারা পর্বতকে গতিশীল করা যেত অথবা পৃথিবীকে বিদীর্ণ করা যেত অথবা মৃতের সাথে কথা বলা যেত, তবুও তারা তাতে বিশ্বাস করতনা; কিন্তু সমস্ত বিষয়ই আল্লাহর এখতিয়ারভুক্ত; তাহলে কি যারা ঈমান এনেছে তাদের প্রত্যয় হয়নি যে, আল্লাহ ইচ্ছা করলে নিশ্চয়ই সকলকে সৎ পথে পরিচালিত করতে পারতেন? যারা কুফরী করেছে তাদের কর্মফলের জন্য তাদের বিপর্যয় ঘটতেই থাকবে, অথবা বিপর্যয় তাদের আশেপাশে আপতিত হতেই থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহর প্রতিশ্রুতি ঘটবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রতিশ্রুতি পালনে অক্ষম নন। ৩১
1738 ১৩. আর-রাদ তোমার পূর্বেও অনেক রাসূলকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা হয়েছে এবং যারা কুফরী করেছে তাদেরকে কিছু অবকাশ দিয়েছিলাম, অতঃপর তাদেরকে পাকড়াও করেছিলাম; কেমন ছিল আমার পাকড়াও! ৩২
1739 ১৩. আর-রাদ তাহলে কি প্রত্যেক মানুষ যা করে, তার যিনি পর্যবেক্ষক তিনি অক্ষম এদের উপাস্যগুলির মত? অথচ তারা আল্লাহর বহু শরীক করেছে। তুমি বলঃ তোমরা তাদের পরিচয় দাও; তোমরা কি পৃথিবীর এমন কিছুর সংবাদ তাঁকে দিতে চাও যা তিনি জানেননা? না বরং ওদের ছলনা ওদের নিকট শোভন প্রতীয়মান হয় এবং তারা সৎ পথ হতে নিবৃত্ত হয়; আল্লাহ যাকে বিভ্রান্ত করেন তার কোন পথ প্রদর্শক নেই। ৩৩
1740 ১৩. আর-রাদ তাদের জন্য পার্থিব জীবনে আছে শাস্তি এবং পরকালের শাস্তিতো আরও কঠোর! এবং আল্লাহর শাস্তি হতে রক্ষা করার তাদের কেহ নেই। ৩৪
1741 ১৩. আর-রাদ মুত্তাকীদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তার উপমা এইরূপঃ ওর পাদদেশে নদী প্রবাহিত, ওর ফলসমূহ এবং ওর ছায়া চিরস্থায়ী; যারা মুত্তাকী এটা তাদের কর্মফল, এবং কাফিরদের কর্মফল আগুন। ৩৫
1742 ১৩. আর-রাদ আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি তারা যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তাতে আনন্দ পায়, কিন্তু কোন কোন দল ওর কতক অংশ অস্বীকার করে। তুমি বলঃ আমিতো আল্লাহরই ইবাদাত করতে ও তাঁর কোন শরীক না করতে আদিষ্ট হয়েছি; আমি তাঁরই প্রতি আহবান করি এবং তাঁরই নিকট আমার প্রত্যাবর্তন। ৩৬
1743 ১৩. আর-রাদ আর এভাবে আমি ইহা (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি এক বিধান, আরাবী ভাষায়। জ্ঞান প্রাপ্তির পর তুমি যদি তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ কর তাহলে আল্লাহর বিরুদ্ধে তোমার কোন অভিভাবক ও রক্ষক থাকবেনা। ৩৭
1744 ১৩. আর-রাদ তোমার পূর্বেও আমি অনেক রাসূল প্রেরণ করেছিলাম এবং তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দিয়েছিলাম। আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কোন নিদর্শন উপস্থিত করা কোন রাসূলের কাজ নয়; প্রত্যেক বিষয়ের নির্ধারিত কাল লিপিবদ্ধ। ৩৮
1745 ১৩. আর-রাদ আল্লাহর যা ইচ্ছা তা নিশ্চিহ্ন করেন এবং যা ইচ্ছা তা প্রতিষ্ঠিত রাখেন এবং তাঁরই নিকট আছে কিতাবের মূল। ৩৯
1746 ১৩. আর-রাদ আমি তাদেরকে যে শাস্তির কথা বলি, তার কিছু যদি তোমাকে দেখিয়েই দিই অথবা যদি এর পূর্বে তোমার মৃত্যু ঘটিয়েই দিই - তোমার কর্তব্যতো শুধু প্রচার করা; আর হিসাব গ্রহণের দায়িত্ব আমার। ৪০
1747 ১৩. আর-রাদ তারা কি দেখেনা যে, আমি তাদের দেশকে চারদিক হতে সংকুচিত করে আনছি? আল্লাহ আদেশ করেন, তাঁর আদেশ রদ করার কেহ নেই এবং তিনি হিসাব গ্রহণে তৎপর। ৪১
1748 ১৩. আর-রাদ তাদের পূর্বে যারা ছিল তারাও চক্রান্ত করেছিল, কিন্তু সমস্ত চক্রান্ত আল্লাহর এখতিয়ারে; প্রত্যেক ব্যক্তি যা করে তা তিনি জানেন এবং কাফিরেরা শীঘ্রই জানবে শুভ পরিণাম কাদের জন্য। ৪২
1749 ১৩. আর-রাদ যারা কুফরী করেছে তারা বলেঃ তুমি (আল্লাহর) প্রেরিত নও; তুমি বলঃ আল্লাহ এবং যাদের নিকট কিতাবের জ্ঞান আছে তারা আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসাবে যথেষ্ট। ৪৩
1750 ১৪. ইব্রাহীম আলিফ লাম রা। এই কিতাব আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি যাতে তুমি মানব জাতিকে বের করে আনতে পার অন্ধকার হতে আলোর দিকে; তাঁর পথে, যিনি পরাক্রমশালী, প্রশংসা ।
1751 ১৪. ইব্রাহীম আল্লাহ, আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু আছে তা তাঁরই; কঠিন শাস্তির দুর্ভোগ কাফিরদের জন্য।
1752 ১৪. ইব্রাহীম যারা পার্থিব জীবনকে পরকালিন জীবনের উপর প্রাধান্য দেয়, মানুষকে নিবৃত্ত করে আল্লাহর পথ হতে এবং তা (আল্লাহর পথ) বক্র করতে চায়; তারাইতো ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছে।
1753 ১৪. ইব্রাহীম আমি প্রত্যেক রাসূলকেই তার স্বজাতির ভাষাভাষী করে পাঠিয়েছি তাদের নিকট পরিস্কারভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎ পথে পরিচালিত করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
1754 ১৪. ইব্রাহীম মূসাকে আমি আমার নিদর্শনসহ প্রেরণ করেছিলাম এবং বলেছিলামঃ তোমার সম্প্রদায়কে অন্ধকার হতে আলোতে আনয়ন কর, এবং তাদেরকে আল্লাহর দিনগুলি দ্বারা উপদেশ দাও, এতেতো নিদর্শন রয়েছে পরম ধৈর্যশীল ও পরম কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য।
1755 ১৪. ইব্রাহীম যখন মূসা তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর যখন তিনি তোমাদেরকে রক্ষা করেছিলেন ফির‘আউন সম্প্রদায়ের কবল হতে যারা তোমাদেরকে নিকৃষ্ট শাস্তি দিত, তোমাদের পুত্রদেরকে যবাহ করত ও তোমাদের নারীদেরকে জীবিত রাখত; এবং এতে ছিল তোমাদের রবের পক্ষ হতে এক মহা পরীক্ষা।
1756 ১৪. ইব্রাহীম যখন তোমাদের রাব্ব ঘোষণা করেনঃ তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদেরকে অবশ্যই অধিক দিব, আর অকৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমার শাস্তি হবে কঠোর।
1757 ১৪. ইব্রাহীম মূসা বলেছিলঃ তোমরা এবং পৃথিবীর সকলেও যদি অকৃতজ্ঞ হও তথাপি আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং প্রশংসা ।
1758 ১৪. ইব্রাহীম তোমাদের কাছে কি সংবাদ আসেনি তোমাদের পূর্ববর্তীদের; নূহের সম্প্রদায়ের, ‘আদ ও ছামূদের এবং তাদের পূর্ববর্তীদের? তাদের বিষয় আল্লাহ ছাড়া অন্য কেহ জানেনা; তাদের কাছে স্পষ্ট নিদর্শনসহ তাদের রাসূল এসেছিল; তারা তাদের হাত তাদের মুখে স্থাপন করত এবং বলতঃ যা নিয়ে তোমরা প্রেরিত হয়েছ তা আমরা প্রত্যাখ্যান করি এবং আমরা অবশ্যই বিভ্রান্তিকর সন্দেহ পোষণ করি সেই বিষয়ে, যার প্রতি তোমরা আমাদেরকে আহবান করছ।
1759 ১৪. ইব্রাহীম তাদের রাসূলগণ বলেছিলঃ আল্লাহ সম্বন্ধে কি কোন সন্দেহ আছে, যিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা? তিনি তোমাদেরকে আহবান করেন তোমাদের পাপ ক্ষমা করার জন্য এবং নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত তোমাদেরকে অবকাশ দেয়ার জন্য। তারা বলতঃ তোমরাতো আমাদের মতই মানুষ; আমাদের পিতৃ পুরুষগণ যাদের ইবাদাত করত তোমরা তাদের ইবাদাত হতে আমাদেরকে বিরত রাখতে চাও; অতএব তোমরা আমাদের কাছে কোন অকাট্য প্রমাণ উপস্থিত কর। ১০
1760 ১৪. ইব্রাহীম তাদের রাসূলগণ তাদেরকে বলতঃ সত্য বটে আমরা তোমাদের মত মানুষ, কিন্তু আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন; আল্লাহর অনুমতি ছাড়া তোমাদের নিকট প্রমাণ উপস্থিত করা আমাদের কাজ নয়; মু’মিনদের আল্লাহর উপরই নির্ভর করা উচিত। ১১
1761 ১৪. ইব্রাহীম আমরা আল্লাহর উপর নির্ভর করবনা কেন? তিনিইতো আমাদেরকে পথ প্রদর্শন করেছেন; তোমরা আমাদেরকে যে ক্লেশ দিচ্ছ, আমরা অবশ্যই তা ধৈর্যের সাথে সহ্য করব এবং নির্ভরকারীদের আল্লাহরই উপর নির্ভর করা উচিত। ১২
1762 ১৪. ইব্রাহীম কাফিরেরা তাদের রাসূলদেরকে বলেছিলঃ আমরা তোমাদেরকে অবশ্যই আমাদের দেশ হতে বহিস্কার করব, অথবা তোমাদেরকে আমাদের ধর্মাদর্শে ফিরে আসতেই হবে। অতঃপর রাসূলদেরকে তাদের রাব্ব অহী প্রেরণ করলেন; যালিমদেরকে আমি অবশ্যই বিনাশ করব ১৩
1763 ১৪. ইব্রাহীম তাদের পরে আমি তোমাদেরকে দেশে প্রতিষ্ঠিত করবই; এটা তাদের জন্য যারা ভয় রাখে আমার সম্মুখে উপস্থিত হওয়ার এবং ভয় রাখে আমার শাস্তির। ১৪
1764 ১৪. ইব্রাহীম তারা বিচার কামনা করল এবং প্রত্যেক উদ্ধত স্বৈরাচারী ব্যর্থ মনোরথ হল। ১৫
1765 ১৪. ইব্রাহীম তাদের প্রত্যেকের জন্য পরিণামে জাহান্নাম রয়েছে এবং প্রত্যেককে পান করানো হবে গলিত পুঁজ । ১৬
1766 ১৪. ইব্রাহীম যা সে অতি কষ্টে গলধঃকরণ করবে এবং তা গলধঃকরণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। সর্ব দিক হতে তার নিকট আসবে মৃত্যু যন্ত্রণা, কিন্তু তার মৃত্যু ঘটবেনা এবং সে কঠোর শাস্তি ভোগ করতেই থাকবে। ১৭
1767 ১৪. ইব্রাহীম যারা তাদের রাব্বকে অস্বীকার করে তাদের উপমা - তাদের কাজসমূহ ছাই সদৃশ যা ঝড়ের দিনে বাতাস প্রচন্ড বেগে উড়িয়ে নিয়ে যায়; যা তারা উপার্জন করে তার কিছুই তারা তাদের কাজে লাগাতে পারেনা; এটাতো ঘোর বিভ্রান্তি। ১৮
1768 ১৪. ইব্রাহীম তুমি কি লক্ষ্য করনা যে, আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী যথাবিধি সৃষ্টি করেছেন? তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদের অস্তিত্ব বিলোপ করতে পারেন এবং এক নতুন সৃষ্টি অস্তিত্বে আনতে পারেন। ১৯
1769 ১৪. ইব্রাহীম আর এটা আল্লাহর জন্য আদৌ কঠিন নয়। ২০
1770 ১৪. ইব্রাহীম সবাই আল্লাহর নিকট উপস্থিত হবেই। যারা অহংকার করত, দুর্বলেরা তাদেরকে বলবেঃ আমরাতো তোমাদের অনুসারী ছিলাম; এখন তোমরা আল্লাহর শাস্তি হতে কি আমাদেরকে কিছু মাত্র রক্ষা করতে পারবে? তারা বলবেঃ আল্লাহ আমাদেরকে সৎ পথে পরিচালিত করলে আমরাও তোমাদেরকে সৎ পথে পরিচালিত করতাম; এখন আমাদের ধৈর্যচ্যূত হওয়া অথবা ধৈর্যশীল হওয়া একই কথা; আমাদের কোন নিস্কৃতি নেই। ২১
1771 ১৪. ইব্রাহীম যখন সব কিছুর মীমাংসা হয়ে যাবে তখন শাইতান বলবেঃ আল্লাহ তোমাদেরকে দিয়েছিলেন সত্য প্রতিশ্রুতি, আমিও তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, কিন্তু আমি তোমাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি রক্ষা করিনি; আমারতো তোমাদের উপর কোন আধিপত্য ছিলনা, আমি শুধু তোমাদেরকে আহবান করেছিলাম এবং তোমরা আমার আহবানে সাড়া দিয়েছিলে; সুতরাং তোমরা আমার প্রতি দোষারোপ করনা, তোমরা তোমাদের প্রতিই দোষারোপ কর; আমি তোমাদের উদ্ধারে সাহায্য করতে সক্ষম নই এবং তোমরাও আমার উদ্ধারে সাহায্য করতে সক্ষম নও; তোমরা যে পূর্বে আমাকে (আল্লাহর) শরীক করেছিলে তার সাথে আমার কোনই সম্পর্ক নেই; যালিমদের জন্যতো বেদনাদায়ক শাস্তি আছেই। ২২
1772 ১৪. ইব্রাহীম যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে তাদেরকে দাখিল করা হবে জান্নাতে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। সেখানে তারা চিরস্থায়ীভাবে অবস্থানকারী হবে তাদের রবের অনুমতিক্রমে। সেখানে তাদের অভিবাদন হবে ‘সালাম’। ২৩
1773 ১৪. ইব্রাহীম তুমি কি লক্ষ্য করনা আল্লাহ কিভাবে উপমা দিয়ে থাকেন? সৎ বাক্যের তুলনা উৎকৃষ্ট বৃক্ষ যার মূল সুদৃঢ় এবং যার প্রশাখা উর্ধ্বে বিস্তৃত । ২৪
1774 ১৪. ইব্রাহীম যা প্রত্যেক মওসুমে ফল দান করে তার রবের অনুমতিক্রমে, এবং আল্লাহ মানুষের জন্য উপমা দিয়ে থাকেন যাতে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে। ২৫
1775 ১৪. ইব্রাহীম কু-বাক্যের তুলনা এক মন্দ বৃক্ষ যার মূল ভূ-পৃষ্ঠ হতে বিচ্ছিন্ন, যার কোন স্থায়িত্ব নেই। ২৬
1776 ১৪. ইব্রাহীম যারা শাশ্বত বাণীতে বিশ্বাসী তাদেরকে ইহজীবনে ও পরজীবনে আল্লাহ সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন এবং যারা যালিম, আল্লাহ তাদেরকে বিভ্রান্তিতে রাখবেন; আল্লাহ যা ইচ্ছা তা করেন। ২৭
1777 ১৪. ইব্রাহীম তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনা যারা আল্লাহর অনুগ্রহের পরিবর্তে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং তাদের সম্প্রদায়কে নামিয়ে আনে ধ্বংসের আলয়ে । ২৮
1778 ১৪. ইব্রাহীম জাহান্নাম, যার মধ্যে তারা প্রবেশ করবে, কত নিকৃষ্ট ঐ আবাসস্থল! ২৯
1779 ১৪. ইব্রাহীম আর তারা আল্লাহর সমকক্ষ উদ্ভাবন করে তাঁর পথ হতে বিভ্রান্ত করার জন্য; তুমি বলঃ ভোগ করে নাও, পরিণামে আগুনই তোমাদের প্রত্যাবর্তন স্থল। ৩০
1780 ১৪. ইব্রাহীম আমার বান্দাদের মধ্যে যারা মু’মিন তাদেরকে বল সালাত কায়েম করতে এবং আমি তাদেরকে যা দিয়েছি তা হতে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করতে, সেই দিন আসার পূর্বে যেদিন ক্রয়-বিক্রয় ও বন্ধুত্ব থাকবেনা। ৩১
1781 ১৪. ইব্রাহীম তিনিই আল্লাহ যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, যিনি আকাশ হতে পানি বর্ষণ করে তদ্বারা তোমাদের জীবিকার জন্য ফল-মূল উৎপাদন করেন, যিনি নৌযানকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন যাতে তাঁর বিধানে ওটা সমুদ্রে বিচরণ করে এবং যিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন নদীসমূহকে। ৩২
1782 ১৪. ইব্রাহীম তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন সূর্য ও চাঁদকে, যারা অবিরাম একই নিয়মের অনুবর্তী এবং তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন রাত ও দিনকে । ৩৩
1783 ১৪. ইব্রাহীম আর তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন তোমরা তাঁর নিকট যা কিছু চেয়েছ; তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ গণনা করলে ওর সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবেনা; মানুষ অবশ্যই অতিমাত্রায় যালিম, অকৃতজ্ঞ। ৩৪
1784 ১৪. ইব্রাহীম স্মরণ কর, ইবরাহীম বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! এই শহরকে নিরাপদ করুন এবং আমাকে ও আমার পুত্রদেরকে মূর্তি পূজা হতে দূরে রাখুন। ৩৫
1785 ১৪. ইব্রাহীম হে আমার রাব্ব! এই সব মূর্তি বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে; সুতরাং যে আমার অনুসরণ করবে সে’ই আমার দলভুক্ত, কিন্তু কেহ আমার অবাধ্য হলে আপনিতো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ৩৬
1786 ১৪. ইব্রাহীম হে আমাদের রাব্ব! আমি আমার বংশধরদের কতককে বসবাস করালাম অনুর্বর উপত্যকায় আপনার পবিত্র গৃহের নিকট। হে আমাদের রাব্ব! এ জন্য যে, তারা যেন সালাত কায়েম করে; সুতরাং আপনি কিছু লোকের অন্তর ওদের প্রতি অনুরাগী করে দিন এবং ফলফলাদি দ্বারা তাদের রিয্কের ব্যবস্থা করুন যাতে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। ৩৭
1787 ১৪. ইব্রাহীম হে আমাদের রাব্ব! আপনিতো জানেন যা আমরা গোপন করি এবং যা আমরা প্রকাশ করি; আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর কোন কিছুই আল্লাহর নিকট গোপন থাকেনা। ৩৮
1788 ১৪. ইব্রাহীম সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই প্রাপ্য যিনি আমাকে আমার বার্ধক্যে ইসমাঈল ও ইসহাককে দান করেছেন; আমার রাব্ব অবশ্যই প্রার্থনা শুনে থাকেন। ৩৯
1789 ১৪. ইব্রাহীম হে আমার রাব্ব! আমাকে সালাত কায়েমকারী করুন এবং আমার বংশধরদের মধ্য হতেও; হে আমাদের রাব্ব! আমার প্রার্থনা কবূল করুন। ৪০
1790 ১৪. ইব্রাহীম হে আমার রাব্ব! যেদিন হিসাব হবে সেদিন আমাকে, আমার মাতাপিতাকে এবং মু’মিনদেরকে ক্ষমা করুন। ৪১
1791 ১৪. ইব্রাহীম তুমি কখনও মনে করনা যে, যালিমরা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ উদাসীন। তবে তিনি সেদিন পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দেন যেদিন তাদের চক্ষু হবে স্থির। ৪২
1792 ১৪. ইব্রাহীম ভীতি বিহবল চিত্তে (আকাশের দিকে চেয়ে) ছুটাছুটি করবে। নিজেদের প্রতি তাদের দৃষ্টি ফিরবেনা এবং তাদের অন্তর হবে শূন্য। ৪৩
1793 ১৪. ইব্রাহীম যেদিন তাদের শাস্তি আসবে সেদিন সম্পর্কে তুমি মানুষকে সতর্ক কর। তখন যালিমরা বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদের কিছুকালের জন্য অবকাশ দিন, আমরা আপনার আহবানে সাড়া দিব এবং রাসূলদের অনুসরণ করবই। তোমরা কি পূর্বে শপথ করে বলতে না যে, তোমাদের পতন নেই? ৪৪
1794 ১৪. ইব্রাহীম অথচ তোমরা বাস করতে তাদের বাসভূমিতে যারা নিজেদের প্রতি যুলম করেছিল এবং তাদের প্রতি আমি কি করেছিলাম তাও তোমাদের নিকট সুবিদিত ছিল এবং তোমাদের নিকট আমি তাদের দৃষ্টান্তও উপস্থিত করেছিলাম। ৪৫
1795 ১৪. ইব্রাহীম তারা ভীষণ চক্রান্ত করেছিল, কিন্তু আল্লাহর নিকট তাদের চক্রান্ত রক্ষিত রয়েছে। তাদের চক্রান্ত এমন ছিলনা যাতে পর্বত টলে যেত। ৪৬
1796 ১৪. ইব্রাহীম তুমি কখনও মনে করনা যে, আল্লাহ তাঁর রাসূলদের প্রতি প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন; আল্লাহ পরাক্রমশালী, দন্ড বিধায়ক। ৪৭
1797 ১৪. ইব্রাহীম যেদিন এই পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে অন্য পৃথিবী হবে এবং আকাশমন্ডলীও এবং মানুষ উপস্থিত হবে আললাহর সামনে, যিনি এক, পরাক্রমশালী। ৪৮
1798 ১৪. ইব্রাহীম সেদিন তুমি অপরাধীদেরকে দেখবে শৃংখলিত অবস্থায়। ৪৯
1799 ১৪. ইব্রাহীম তাদের পোশাক হবে আলকাতরার এবং আগুন আচ্ছন্ন করবে তাদের মুখমন্ডল। ৫০
1800 ১৪. ইব্রাহীম যাতে আল্লাহ প্রতিদান দেন প্রত্যেক নাফসকে যা সে অর্জন করেছে। নিশ্চয় আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী। ৫১
1801 ১৪. ইব্রাহীম ইহা মানুষের জন্য এক বার্তা যাতে এর দ্বারা তারা সতর্ক হয় এবং জানতে পারে যে, তিনি একমাত্র উপাস্য এবং যাতে বোধশক্তি সম্পন্নরা উপদেশ গ্রহণ করে। ৫২
1802 ১৫. আল-হিজর আলিফ লাম রা। এগুলি আয়াত, মহাগ্রন্থের, সুস্পষ্ট কুরআনের।
1803 ১৫. আল-হিজর যারা কুফরী করেছে, তারা একসময় কামনা করবে যদি তারা মুসলিম হত!
1804 ১৫. আল-হিজর তাদের ছেড়ে দাও, তারা খেতে থাকুক, ভোগ করতে থাকুক এবং মিথ্যা আশা ওদেরকে মোহাচ্ছন্ন করে রাখুক, পরিণামে তারা বুঝবে।
1805 ১৫. আল-হিজর আমি কোন জনপদকে তার নির্দিষ্ট কাল পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ধ্বংস করিনি।
1806 ১৫. আল-হিজর কোন জাতি তার নির্দিষ্ট কালকে ত্বরান্বিত করতে পারেনা এবং বিলম্বিতও করতে পারেনা।
1807 ১৫. আল-হিজর তারা বলেঃ ওহে, যার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে! তুমিতো নিশ্চয়ই উম্মাদ।
1808 ১৫. আল-হিজর তুমি সত্যবাদী হলে আমাদের নিকট মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে হাযির করছনা কেন?
1809 ১৫. আল-হিজর আমি মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে যথার্থ কারণ ব্যতীত প্রেরণ করিনা; মালাইকা/ফেরেশতারা হাযির হলে তারা অবকাশ পাবেনা।
1810 ১৫. আল-হিজর আমিই জিকর (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি এবং আমিই উহার সংরক্ষক।
1811 ১৫. আল-হিজর তোমার পূর্বে আমি পূর্বের অনেক সম্প্রদায়ের নিকট রাসূল পাঠিয়েছি। ১০
1812 ১৫. আল-হিজর তাদের নিকট এমন কোন রাসূল আসেনি যাকে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করতনা। ১১
1813 ১৫. আল-হিজর এভাবে আমি অপরাধীদের অন্তরে তা সঞ্চার করি। ১২
1814 ১৫. আল-হিজর তারা কুরআনে বিশ্বাস করবেনা এবং অতীতে পূর্ববর্তীদেরও এই আচরণ ছিল। ১৩
1815 ১৫. আল-হিজর যদি তাদের জন্য আমি আকাশের দরযা খুলে দিই এবং তারা সারাদিন তাতে আরোহণ করতে থাকে । ১৪
1816 ১৫. আল-হিজর তবুও তারা বলবেঃ আমাদের দৃষ্টি সম্মোহিত করা হয়েছে; না, বরং আমরা এক যাদুগ্রস্ত সম্প্রদায়। ১৫
1817 ১৫. আল-হিজর আকাশে আমি গ্রহ নক্ষত্র সৃষ্টি করেছি এবং ওকে করেছি সুশোভিত, দর্শকদের জন্য। ১৬
1818 ১৫. আল-হিজর প্রত্যেক অভিশপ্ত শাইতান হতে আমি ওকে রক্ষা করি। ১৭
1819 ১৫. আল-হিজর আর কেহ চুরি করে সংবাদ শুনতে চাইলে ওর পশ্চাদ্ধাবন করে প্রদীপ্ত শিখা। ১৮
1820 ১৫. আল-হিজর পৃথিবীকে আমি বিস্তৃত করেছি এবং ওতে পর্বতমালা স্থাপন করেছি; আমি ওতে প্রত্যেক বস্তু উৎপন্ন করেছি সুপরিমিতভাবে। ১৯
1821 ১৫. আল-হিজর আর আমি ওতে জীবিকার ব্যবস্থা করেছি তোমাদের জন্য, আর তোমরা যাদের জীবিকাদাতা নও তাদের জন্যও। ২০
1822 ১৫. আল-হিজর আমারই কাছে আছে প্রত্যেক বস্তুর ভান্ডার এবং আমি তা সুসম পরিমাণেই সরবরাহ করে থাকি। ২১
1823 ১৫. আল-হিজর আমি বৃষ্টিগর্ভ বায়ু প্রেরণ করি, অতঃপর আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করি এবং তা তোমাদেরকে পান করতে দিই; ওর ভান্ডার তোমাদের কাছে নেই। ২২
1824 ১৫. আল-হিজর আমিই জীবন দান করি ও মৃত্যু ঘটাই এবং আমিই চূড়ান্ত মালিকানার অধিকারী। ২৩
1825 ১৫. আল-হিজর তোমাদের পূর্বে যারা গত হয়েছে আমি তাদেরকে জানি এবং পরে যারা আসবে তাদেরকেও জানি। ২৪
1826 ১৫. আল-হিজর তোমার রাব্বই তাদেরকে সমবেত করবেন; তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ। ২৫
1827 ১৫. আল-হিজর আমিতো মানুষকে সৃষ্টি করেছি ছাঁচে ঢালা শুষ্ক ঠনঠনে মাটি হতে। ২৬
1828 ১৫. আল-হিজর এর পূর্বে সৃষ্টি করেছি জিনকে, প্রখর শিখাযুক্ত অগ্নি হতে। ২৭
1829 ১৫. আল-হিজর স্মরণ কর, যখন তোমার রাব্ব মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে বললেনঃ আমি ছাঁচে ঢালা শুষ্ক ঠনঠনে মাটি হতে মানুষ সৃষ্টি করব। ২৮
1830 ১৫. আল-হিজর যখন আমি তাকে সুঠাম করব এবং তাতে আমার রূহ সঞ্চার করব তখন তোমরা তার প্রতি সাজদাহবনত হও। ২৯
1831 ১৫. আল-হিজর মালাইকা/ফেরেশতাগণ সবাই একত্রে সাজদাহ করল। ৩০
1832 ১৫. আল-হিজর কিন্তু ইবলীস করলনা, সে সাজদাহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে অস্বীকার করল। ৩১
1833 ১৫. আল-হিজর (আল্লাহ) বললেনঃ হে ইবলীস! তোর কি হল, তুই কেন সাজদাহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হলিনা? ৩২
1834 ১৫. আল-হিজর সে উত্তরে বললঃ ছাঁচে ঢালা শুষ্ক ঠনঠনে মৃত্তিকা হতে যে মানুষ আপনি সৃষ্টি করেছেন, আমি তাকে সাজদাহ করার নই। ৩৩
1835 ১৫. আল-হিজর (আল্লাহ) বললেনঃ তাহলে তুই এখান হতে বের হয়ে যা, কারণ তুই অভিশপ্ত। ৩৪
1836 ১৫. আল-হিজর কর্মফল দিন পর্যন্ত তোর প্রতি রইল লা’নত। ৩৫
1837 ১৫. আল-হিজর ইবলীস বললঃ হে আমার রাব্ব! পুনরুত্থান দিন পর্যন্ত আমাকে অবকাশ দিন। ৩৬
1838 ১৫. আল-হিজর আল্লাহ বললেনঃ তোকে অবকাশ দেয়া হল । ৩৭
1839 ১৫. আল-হিজর অবধারিত সময় উপস্থিত হওয়ার দিন পর্যন্ত। ৩৮
1840 ১৫. আল-হিজর সে বললঃ হে আমার রাব্ব! আপনি যে আমাকে বিপথগামী করলেন তজ্জন্য আমি পৃথিবীতে মানুষের নিকট পাপ কাজকে শোভনীয় করে তুলব এবং আমি তাদের সকলকে বিপথগামী করব। ৩৯
1841 ১৫. আল-হিজর তবে তাদের মধ্য হতে আপনার নির্বাচিত বান্দাগণ ব্যতীত। ৪০
1842 ১৫. আল-হিজর তিনি বললেনঃ এটাই আমার নিকট পৌঁছার সরল পথ। ৪১
1843 ১৫. আল-হিজর বিভ্রান্তদের মধ্যে যারা তোর অনুসরণ করবে তারা ছাড়া আমার বান্দাদের উপর তোর কোন ক্ষমতা থাকবেনা। ৪২
1844 ১৫. আল-হিজর অবশ্যই তোর অনুসারীদের সবারই নির্ধারিত স্থান হবে জাহান্নাম। ৪৩
1845 ১৫. আল-হিজর ওর সাতটি দরযা আছে, প্রত্যেক দরযার জন্য পৃথক পৃথক দল আছে। ৪৪
1846 ১৫. আল-হিজর নিশ্চয়ই মুত্তাকীরা থাকবে প্রস্রবন বহুল জান্নাতে। ৪৫
1847 ১৫. আল-হিজর (তাদেরকে বলা হবে) তোমরা শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে এখানে প্রবেশ কর। ৪৬
1848 ১৫. আল-হিজর আমি তাদের অন্তর হতে ঈর্ষা দূর করব; তারা ভ্রাতৃভাবে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে অবস্থান করবে। ৪৭
1849 ১৫. আল-হিজর সেখানে তাদেরকে অবসাদ স্পর্শ করবেনা এবং তারা সেখান হতে বহিস্কৃতও হবেনা। ৪৮
1850 ১৫. আল-হিজর আমার বান্দাদেরকে বলে দাওঃ নিশ্চয়ই আমি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ৪৯
1851 ১৫. আল-হিজর আর আমার শাস্তি! তা অতি মর্মন্তদ শাস্তি। ৫০
1852 ১৫. আল-হিজর আর তুমি তাদেরকে ইবরাহীমের মেহমানদের সংবাদ দাও। ৫১
1853 ১৫. আল-হিজর যখন তারা তার নিকট উপস্থিত হয়ে বললঃ ‘সালাম’ তখন সে বলেছিলঃ আমরা তোমাদের আগমনে আতংকিত। ৫২
1854 ১৫. আল-হিজর তারা বললঃ ভয় করনা, আমরা তোমাকে এক জ্ঞানী পুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি। ৫৩
1855 ১৫. আল-হিজর সে বললঃ তোমরা কি আমাকে সুসংবাদ দিচ্ছ আমি বার্ধক্যগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও? তোমরা কি বিষয়ে সুসংবাদ দিচ্ছ? ৫৪
1856 ১৫. আল-হিজর তারা বললঃ আমরা সত্য সংবাদ দিচ্ছি; সুতরাং তুমি নিরাশ হয়োনা। ৫৫
1857 ১৫. আল-হিজর সে বললঃ যারা পথভ্রষ্ট তারা ব্যতীত আর কে তার রবের অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়? ৫৬
1858 ১৫. আল-হিজর সে বললঃ হে প্রেরিতগণ! অতঃপর তোমরা কি বিশেষ কাজ নিয়ে এসেছ? ৫৭
1859 ১৫. আল-হিজর তারা বললঃ আমাদেরকে এক অপরাধী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে প্রেরণ করা হয়েছে। ৫৮
1860 ১৫. আল-হিজর তবে লূতের পরিবারবর্গের বিরুদ্ধে নয়, আমরা অবশ্যই তাদের সকলকে রক্ষা করব। ৫৯
1861 ১৫. আল-হিজর কিন্তু তার স্ত্রীকে নয়; আমরা স্থির করেছি যে, সে অবশ্যই পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত। ৬০
1862 ১৫. আল-হিজর মালাইকা/ফেরেশতাগণ যখন লূত পরিবারের নিকট এলো ৬১
1863 ১৫. আল-হিজর তখন লূত বললঃ তোমরাতো অপরিচিত লোক। ৬২
1864 ১৫. আল-হিজর তারা বললঃ না, তারা যে বিষয়ে সন্দিগ্ধ ছিল আমরা তোমার নিকট তা নিয়ে এসেছি। ৬৩
1865 ১৫. আল-হিজর আমরা তোমার নিকট সত্য সংবাদ নিয়ে এসেছি এবং অবশ্যই আমরা সত্যবাদী। ৬৪
1866 ১৫. আল-হিজর সুতরাং তুমি রাতের শেষ প্রহরে তোমার পরিবারবর্গসহ বের হয়ে পড় এবং তুমি তাদের পশ্চাদনুসরণ কর এবং তোমাদের মধ্যে কেহ যেন পিছন ফিরে না তাকায়, তোমাদেরকে যেখানে যেতে বলা হয়েছে সেখানে চলে যাও। ৬৫
1867 ১৫. আল-হিজর আমি তাকে এ বিষয়ে প্রত্যাদেশ দিলাম যে, প্রত্যুষে তাদেরকে সমূলে বিনাশ করা হবে। ৬৬
1868 ১৫. আল-হিজর নগরবাসীরা আনন্দোম্মাদ হয়ে উপস্থিত হল। ৬৭
1869 ১৫. আল-হিজর সে বললঃ নিশ্চয়ই এরা আমার অতিথি; সুতরাং তোমরা আমাকে বেইয্যাত করনা। ৬৮
1870 ১৫. আল-হিজর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ও আমাকে লজ্জিত করনা। ৬৯
1871 ১৫. আল-হিজর তারা বললঃ আমরা কি দুনিয়াবাসী লোককে আশ্রয় দিতে আপনাকে নিষেধ করিনি? ৭০
1872 ১৫. আল-হিজর লূত বললঃ একান্তই যদি তোমরা কিছু করতে চাও তাহলে আমার এই কন্যাগণ রয়েছে। ৭১
1873 ১৫. আল-হিজর তোমার জীবনের শপথ! ওরাতো আপন নেশায় মত্ত ছিল। ৭২
1874 ১৫. আল-হিজর অতঃপর সূর্যোদয়ের সময়ে মহানাদ তাদেরকে আঘাত করল। ৭৩
1875 ১৫. আল-হিজর সুতরাং আমি জনপদকে উল্টে দিলাম এবং তাদের উপর প্রস্তর কংকর নিক্ষেপ করলাম। ৭৪
1876 ১৫. আল-হিজর অবশ্যই এতে নিদর্শন রয়েছে বোধশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য। ৭৫
1877 ১৫. আল-হিজর ওটা লোক চলাচলের পথপার্শ্বে এখনও বিদ্যমান। ৭৬
1878 ১৫. আল-হিজর অবশ্যই এতে মু’মিনদের জন্য রয়েছে নিদর্শন। ৭৭
1879 ১৫. আল-হিজর আর ‘আয়কা’বাসীরাওতো ছিল সীমা লংঘনকারী। ৭৮
1880 ১৫. আল-হিজর সুতরাং আমি তাদেরকে শাস্তি দিয়েছি, ওদের উভয়ই প্রকাশ্য পথপার্শ্বে অবস্থিত। ৭৯
1881 ১৫. আল-হিজর হিজরবাসীরা রাসূলদের প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছিল। ৮০
1882 ১৫. আল-হিজর আমি তাদেরকে আমার নিদর্শন দেখিয়েছিলাম, কিন্তু তারা তা উপেক্ষা করেছিল। ৮১
1883 ১৫. আল-হিজর তারা পাহাড় কেটে গৃহ নির্মাণ করত নিরাপদ বসবাসের জন্য। ৮২
1884 ১৫. আল-হিজর অতঃপর প্রভাতকালে মহানাদ তাদেরকে আঘাত করল। ৮৩
1885 ১৫. আল-হিজর সুতরাং তারা যা অর্জন করেছিল তা তাদের কোন কাজে আসেনি। ৮৪
1886 ১৫. আল-হিজর আকাশসমূহ ও পৃথিবী এবং এ দু’য়ের অন্তবর্তী কোন কিছুই আমি অযথা সৃষ্টি করিনি; এবং কিয়ামাত অবশ্যম্ভাবী; সুতরাং তুমি পরম সৌজন্যের সাথে তাদেরকে ক্ষমা কর। ৮৫
1887 ১৫. আল-হিজর নিশ্চয়ই তোমার রাব্বই মহান স্রষ্টা, মহাজ্ঞানী। ৮৬
1888 ১৫. আল-হিজর আমিতো তোমাকে দিয়েছি সাত আয়াত যা পুনঃ পুনঃ আবৃত্তি করা হয় এবং দিয়েছি মহান কুরআন। ৮৭
1889 ১৫. আল-হিজর আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে ভোগ বিলাসের যে উপকরণ দিয়েছি তার প্রতি তুমি কখনও তোমার চক্ষুদ্বয় প্রসারিত করনা; তাদেরকে যা দেয়া হয়েছে সেই জন্য তুমি ক্ষোভ করনা; তুমি মু’মিনদের জন্য তোমার বাহু অবনমিত কর। ৮৮
1890 ১৫. আল-হিজর আর বলঃ আমিতো একজন ভয় প্রদর্শনকারী মাত্র। ৮৯
1891 ১৫. আল-হিজর যেভাবে আমি অবতীর্ণ করেছিলাম বিভক্তকারীদের উপর, ৯০
1892 ১৫. আল-হিজর যারা কুরআনকে বিভিন্নভাবে বিভক্ত করেছে। ৯১
1893 ১৫. আল-হিজর সুতরাং তোমার রবের শপথ! আমি তাদের সকলকে প্রশ্ন করবই, ৯২
1894 ১৫. আল-হিজর সেই বিষয়ে, যা তারা করে। ৯৩
1895 ১৫. আল-হিজর অতএব তুমি যে বিষয়ে আদিষ্ট হয়েছ তা প্রকাশ্যে প্রচার কর এবং মুশরিকদের উপেক্ষা কর। ৯৪
1896 ১৫. আল-হিজর আমিই যথেষ্ট তোমার জন্য, বিদ্রুপকারীদের বিরুদ্ধে। ৯৫
1897 ১৫. আল-হিজর যারা আল্লাহর সাথে অপর মা‘বূদ প্রতিষ্ঠা করেছে। এবং শীঘ্রই তারা জানতে পারবে! ৯৬
1898 ১৫. আল-হিজর আমিতো জানি যে, তারা যা বলে তাতে তোমার অন্তর সংকুচিত হয়। ৯৭
1899 ১৫. আল-হিজর সুতরাং তুমি তোমার রবের প্রশংসা দ্বারা তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর এবং সাজদাহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হও। ৯৮
1900 ১৫. আল-হিজর আর তোমার মৃত্যু উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত তুমি তোমার রবের ইবাদাত কর। ৯৯
1901 ১৬. আন-নাহাল আল্লাহর আদেশ আসবেই; সুতরাং ওটা ত্বরান্বিত করতে চেওনা; তিনি মহিমান্বিত এবং তারা যাকে শরীক করে তিনি তার উর্ধ্বে।
1902 ১৬. আন-নাহাল তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা নির্দেশ সম্বলিত ওহীসহ মালাক/ফেরেশতা প্রেরণ করেন, এই মর্মে সতর্ক করার জন্য, আমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই; সুতরাং আমাকে ভয় কর।
1903 ১৬. আন-নাহাল তিনি যথাযথভাবে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন; তারা যাকে শরীক করে তিনি তার উর্ধ্বে।
1904 ১৬. আন-নাহাল তিনি শুক্র হতে মানুষ সৃষ্টি করেছেন। অথচ দেখ, সে প্রকাশ্য বিতন্ডাকারী।
1905 ১৬. আন-নাহাল তিনি চতুস্পদ জন্তু সৃষ্টি করেছেন; তোমাদের জন্য ওতে শীত নিবারক উপকরণ এবং আরও বহু উপকার রয়েছে; এবং ওটা হতে তোমরা আহার্য পেয়ে থাক।
1906 ১৬. আন-নাহাল আর যখন তোমরা গোধূলি লগ্নে ওদেরকে চারণভূমি হতে গৃহে নিয়ে আসো এবং প্রভাতে যখন ওদেরকে চারণভূমিতে নিয়ে যাও তখন তোমরা ওর সৌন্দর্য উপভোগ কর এবং গৌরব অনুভব কর।
1907 ১৬. আন-নাহাল আর ওরা তোমাদের ভার বহন করে নিয়ে যায় দূরদেশে যেখানে প্রাণান্ত ক্লেশ ব্যতীত তোমরা পৌঁছতে পারতেনা; তোমাদের রাব্ব অবশ্যই দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু।
1908 ১৬. আন-নাহাল তোমাদের আরোহনের জন্য ও শোভার জন্য তিনি সৃষ্টি করেছেন অশ্ব, খচ্চর, গর্দভ এবং তিনি সৃষ্টি করেন এমন অনেক কিছু যা তোমরা অবগত নও।
1909 ১৬. আন-নাহাল সরল পথ আল্লাহর কাছে পৌঁছায়, কিন্তু পথগুলির মধ্যে বক্র পথও রয়েছে। তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদের সকলকেই সৎ পথে পরিচালিত করতেন।
1910 ১৬. আন-নাহাল তিনিই আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন। ওতে তোমাদের জন্য রয়েছে পানীয় এবং তা হতে জন্মায় উদ্ভিদ যাতে তোমরা পশু চারণ করে থাক। ১০
1911 ১৬. আন-নাহাল তিনি তোমাদের জন্য ওর দ্বারা উৎপন্ন করেন শস্য, যাইতূন, খেজুর বৃক্ষ, আঙ্গুর এবং সর্বপ্রকার ফল; অবশ্যই এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন। ১১
1912 ১৬. আন-নাহাল তিনিই তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন রাত্রী, দিন, সূর্য এবং চাঁদকে। আর নক্ষত্ররাজিও অধীন হয়েছে তাঁরই আদেশে; অবশ্যই এতে বোধশক্তিসম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন। ১২
1913 ১৬. আন-নাহাল আর বিবিধ প্রকাশ্য বস্তুও, যা তোমাদের জন্য পৃথিবীতে সৃষ্টি করেছেন। এতে রয়েছে নিদর্শন সেই সম্প্রদায়ের জন্য যারা উপদেশ গ্রহণ করে। ১৩
1914 ১৬. আন-নাহাল তিনিই সমুদ্রকে অধীন করেছেন যাতে তোমরা তা হতে তাজা গোশত আহার করতে পার এবং যাতে তা হতে আহরণ করতে পার রত্নাবলী যা তোমরা ভূষণ রূপে পরিধান কর; এবং তোমরা দেখতে পাও, ওর বুক চিরে নৌযান চলাচল করে এবং তা এ জন্য যে, তোমরা যেন তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার এবং তোমরা যেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। ১৪
1915 ১৬. আন-নাহাল আর তিনি পৃথিবীতে সুদৃঢ় পর্বত স্থাপন করেছেন, যাতে পৃথিবী তোমাদেরকে নিয়ে আন্দোলিত না হয় এবং স্থাপন করেছেন নদ-নদী ও পথ, যাতে তোমরা তোমাদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পার। ১৫
1916 ১৬. আন-নাহাল আর পথ নির্ণায়ক চিহ্নসমূহও; এবং নক্ষত্রের সাহায্যেও মানুষ পথের নির্দেশ পায়। ১৬
1917 ১৬. আন-নাহাল তবে কি যিনি সৃষ্টি করেন তিনি তারই মত যে সৃষ্টি করেনা? তবুও কি তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবেনা? ১৭
1918 ১৬. আন-নাহাল তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ গণনা করলে ওর সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবেনা; আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমা পরায়ণ, পরম দয়ালু। ১৮
1919 ১৬. আন-নাহাল তোমরা যা গোপন রাখ এবং যা প্রকাশ কর, আল্লাহ তা জানেন। ১৯
1920 ১৬. আন-নাহাল তারা আল্লাহ ছাড়া অপর যাদেরকে আহবান করে তারা কিছুই সৃষ্টি করেনা, তাদেরকেই সৃষ্টি করা হয়। ২০
1921 ১৬. আন-নাহাল তারা নিস্প্রাণ নির্জীব এবং পুনরুত্থান কবে হবে সে বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই। ২১
1922 ১৬. আন-নাহাল তোমাদের মা‘বূদ একই মা‘বূদ। সুতরাং যারা আখিরাতে বিশ্বাস করেনা তাদের অন্তর সত্যবিমুখ এবং তারা অহংকারী। ২২
1923 ১৬. আন-নাহাল এটা নিঃসন্দেহ যে, আল্লাহ জানেন যা তারা গোপন করে এবং যা তারা প্রকাশ করে; তিনি অহংকারীকে পছন্দ করেননা। ২৩
1924 ১৬. আন-নাহাল যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ তোমাদের রাব্ব কি অবতীর্ণ করেছেন? উত্তরে তারা বলেঃ পূর্ববর্তীদের কিস্সা-কাহিনী। ২৪
1925 ১৬. আন-নাহাল ফলে কিয়ামাত দিবসে তারা বহন করবে তাদের পাপভার পূর্ণমাত্রায় এবং পাপভার তাদেরও যাদেরকে তারা অজ্ঞতা বশতঃ বিভ্রান্ত করেছে; হায়! তারা যা বহন করবে তা কতই না নিকৃষ্ট! ২৫
1926 ১৬. আন-নাহাল তাদের পূর্ববর্তীরাও চক্রান্ত করেছিল। আল্লাহ তাদের ইমারাতের ভিত্তিমূলে আঘাত করেছিলেন; ফলে ইমারাতের ছাদ তাদের উপর ধ্বসে পড়ল এবং তাদের প্রতি শাস্তি নেমে এলো এমন দিক হতে যা ছিল তাদের ধারনার বাহির। ২৬
1927 ১৬. আন-নাহাল পরে কিয়ামাত দিবসে তিনি তাদের লাঞ্ছিত করবেন এবং বলবেনঃ কোথায় আমার সেই সব শরীক যাদের সম্বন্ধে তোমরা বিতন্ডা করতে? যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছিল তারা বলবেঃ নিশ্চয়ই আজ লাঞ্ছনা ও অমঙ্গল কাফিরদের জন্য। ২৭
1928 ১৬. আন-নাহাল মালাইকা/ফেরেশতাগণ তাদের মৃত্যু ঘটায় তাদের নিজেদের প্রতি যুলম করতে থাকা অবস্থায়; অতঃপর তারা আত্মসমর্পণ করে বলবেঃ আমরা কোন মন্দ কাজ করতামনা। হ্যাঁ, তোমরা যা করতে সে বিষয়ে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত। ২৮
1929 ১৬. আন-নাহাল সুতরাং তোমরা দ্বারগুলি দিয়ে জাহান্নামে প্রবেশ কর, সেখানে স্থায়ী হওয়ার জন্য। দেখ, অহংকারীদের আবাসস্থল কত নিকৃষ্ট! ২৯
1930 ১৬. আন-নাহাল আর যারা মুত্তাকী তাদেরকে বলা হবেঃ তোমাদের রাব্ব কি অবতীর্ণ করেছিলেন? তারা বলবেঃ মহা কল্যাণ। যারা সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে এই দুনিয়ার মঙ্গল এবং আখিরাতের আবাস আরও উৎকৃষ্ট; আর মুত্তাকীদের আবাসস্থল কত উত্তম! ৩০
1931 ১৬. আন-নাহাল ওটা স্থায়ী জান্নাত, যাতে তারা প্রবেশ করবে; ওর পাদদেশে স্রোতস্বিনী নদী প্রবাহিত; তারা যা কিছু কামনা করবে তাতে তাদের জন্য তা’ই থাকবে; এভাবেই আল্লাহ পুরস্কৃত করেন মুত্তাকীদেরকে। ৩১
1932 ১৬. আন-নাহাল মালাইকা/ফেরেশতাগণ যাদের মৃত্যু ঘটায় পবিত্র থাকা অবস্থায়, (তাদেরকে) বলবেঃ তোমাদের প্রতি শান্তি! তোমরা যা করতে তার প্রতিদানে জান্নাতে প্রবেশ কর। ৩২
1933 ১৬. আন-নাহাল তারা শুধু প্রতীক্ষা করে তাদের কাছে মালাক/ফেরেশতা আগমনের অথবা তোমার রবের শাস্তি আগমনের; আল্লাহ তাদের প্রতি কোন যুলম করেননি, কিন্তু তারাই নিজেদের প্রতি যুলম করত। ৩৩
1934 ১৬. আন-নাহাল সুতরাং তাদের প্রতি আপতিত হয়েছিল তাদেরই মন্দ কর্মের শাস্তি এবং তাদেরকে পরিবেষ্টন করেছিল ওটাই যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করত। ৩৪
1935 ১৬. আন-নাহাল মুশরিকরা বলেঃ আল্লাহ ইচ্ছা করলে আমাদের পিতৃ-পুরুষরা ও আমরা তিনি ব্যতীত অপর কোন কিছুর ইবাদাত করতাম না এবং তাঁর অনুমতি ব্যতীত আমরা কোন কিছু নিষিদ্ধ করতাম না। তাদের পূর্ববর্তীরাও এই রূপই করত; রাসূলদের কর্তব্য তো শুধু সুস্পষ্ট বাণী প্রচার করা। ৩৫
1936 ১৬. আন-নাহাল আল্লাহর ইবাদাত করার ও তাগুতকে বর্জন করার নির্দেশ দেয়ার জন্য আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি; অতঃপর তাদের কতককে আল্লাহ সৎ পথে পরিচালিত করেন এবং তাদের কতকের উপর পথভ্রান্তি সাব্যস্ত হয়েছিল। সুতরাং পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ, যারা সত্যকে মিথ্যা বলেছে তাদের পরিনাম কি হয়েছে! ৩৬
1937 ১৬. আন-নাহাল তুমি তাদেরকে পথ প্রদর্শন করতে আগ্রহী হলেও আল্লাহ যাকে বিভ্রান্ত করেছেন তাকে তিনি সৎ পথে পরিচালিত করবেননা এবং তাদের কোন সাহায্যকারীও নেই। ৩৭
1938 ১৬. আন-নাহাল তারা দৃঢ়তার সাথে আল্লাহর শপথ করে বলেঃ যার মৃত্যু হয় আল্লাহ তাকে পুনরুজ্জীবিত করবেননা। কেন নয়? তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করবেনই; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটা অবগত নয়। ৩৮
1939 ১৬. আন-নাহাল তিনি পুনরুত্থিত করবেন, যে বিষয়ে তাদের মতানৈক্য ছিল তা তাদেরকে স্পষ্টভাবে দেখানোর জন্য এবং যাতে কাফিরেরা জানতে পারে যে, তারাই ছিল মিথ্যাবাদী। ৩৯
1940 ১৬. আন-নাহাল আমি কোন কিছু ইচ্ছা করলে সেই বিষয়ে আমার কথা শুধু এই যে, আমি বলি ‘হও,’ ফলে তা হয়ে যায়। ৪০
1941 ১৬. আন-নাহাল যারা অত্যাচারিত হওয়ার পর আল্লাহর পথে হিজরাত করেছে আমি অবশ্যই তাদেরকে দুনিয়ায় উত্তম আবাস প্রদান করব এবং আখিরাতের পুরষ্কারইতো শ্রেষ্ঠ। হায়! তারা যদি ওটা জানত! ৪১
1942 ১৬. আন-নাহাল তারা ধৈর্য ধারণ করে এবং তাদের রবের উপর নির্ভর করে। ৪২
1943 ১৬. আন-নাহাল তোমার পূর্বে আমি অহীসহ (পুরুষ) মানুষই প্রেরণ করেছিলাম, তোমরা যদি না জান তাহলে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর। ৪৩
1944 ১৬. আন-নাহাল তাদের প্রেরণ করেছিলাম স্পষ্ট নিদর্শন ও গ্রন্থসহ এবং তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করেছি মানুষকে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য, যা তাদের প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছিল, যাতে তারা চিন্তা ভাবনা করে। ৪৪
1945 ১৬. আন-নাহাল যারা দুস্কর্মের ষড়যন্ত্র করে তারা কি এ বিষয়ে নিশ্চিত যে, আল্লাহ তাদেরকে ভূ-গর্ভে বিলীন করবেন না, অথবা এমন দিক হতে শাস্তি আসবে না যা তাদের ধারণাতীত? ৪৫
1946 ১৬. আন-নাহাল অথবা চলাফিরা করতে থাকাকালে তিনি তাদেরকে ধৃত করবেননা? তারাতো এটা ব্যর্থ করতে পারবেনা। ৪৬
1947 ১৬. আন-নাহাল অথবা তাদেরকে তিনি ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় পাকড়াও করবেননা? তোমাদের রাব্বতো অবশ্যই ক্ষমাকারী, পরম দয়ালু। ৪৭
1948 ১৬. আন-নাহাল তারা কি লক্ষ্য করেনা আল্লাহর সৃষ্ট বস্তুর প্রতি, যার ছায়া ডানে ও বামে ঢলে পড়ে আল্লাহর প্রতি সাজদাহয় নত হয়? ৪৮
1949 ১৬. আন-নাহাল আল্লাহকেই সাজদাহ করে যা কিছু সৃষ্টি রয়েছে আকাশমন্ডলীতে এবং পৃথিবীতে এবং মালাইকাগণও; তারা অহংকার করেনা। ৪৯
1950 ১৬. আন-নাহাল তারা ভয় করে, তাদের উপর পরাক্রমশালী তাদের রাব্বকে এবং তাদেরকে যা আদেশ করা হয় তারা তা পালন করে। ৫০
1951 ১৬. আন-নাহাল আল্লাহ বলেনঃ তোমরা দুই ইলাহ গ্রহণ করনা; তিনিই একমাত্র ইলাহ, সুতরাং তোমরা আমাকেই ভয় কর। ৫১
1952 ১৬. আন-নাহাল আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা তাঁরই; এবং নিরবচ্ছিন্ন আনুগত্য তাঁরই প্রাপ্য; তোমরা কি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে ভয় করবে? ৫২
1953 ১৬. আন-নাহাল তোমরা যে সব অনুগ্রহ ভোগ কর তাতো আল্লাহরই নিকট হতে। অধিকন্ত যখন দুঃখ দৈন্য তোমাদেরকে স্পর্শ করে তখন তোমরা তাঁকেই ব্যাকুলভাবে আহবান কর। ৫৩
1954 ১৬. আন-নাহাল আবার যখন (আল্লাহ) তোমাদের দুঃখ-দৈন্য দূর করেন তখন তোমাদের এক দল তাদের রবের সাথে শরীক করে । ৫৪
1955 ১৬. আন-নাহাল আমি তাদেরকে যা দান করেছি তা অস্বীকার করার জন্য, সুতরাং তোমরা ভোগ করে নাও, অচিরেই জানতে পারবে। ৫৫
1956 ১৬. আন-নাহাল আমি তাদেরকে যে রিয্ক দান করি তারা তার এক অংশ নির্ধারিত করে তাদের জন্য যাদের সম্বন্ধে তারা কিছুই জানেনা। শপথ আল্লাহর! তোমরা যে মিথ্যা উদ্ভাবন কর সেই সম্বন্ধে তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হবেই। ৫৬
1957 ১৬. আন-নাহাল তারা নির্ধারণ করে আল্লাহর জন্য কন্যা সন্তান। তিনি পবিত্র মহিমান্বিত, এবং তাদের জন্য ওটাই যা তারা কামনা করে। ৫৭
1958 ১৬. আন-নাহাল তাদের কেহকে যখন কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয় তখন তার মুখমন্ডল কালো হয়ে যায় এবং সে অসহনীয় মনস্তাপে ক্লিষ্ট হয়। ৫৮
1959 ১৬. আন-নাহাল তাকে যে সংবাদ দেয়া হয়, তার গ্লানি হেতু সে নিজ সম্প্রদায় হতে আত্মগোপন করে। সে চিন্তা করে যে, হীনতা সত্ত্বেও সে তাকে রেখে দিবে, নাকি মাটিতে পুঁতে ফেলবে। সাবধান! তারা যা সিদ্ধান্ত নেয় তা কতই না নিকৃষ্ট! ৫৯
1960 ১৬. আন-নাহাল যারা আখিরাতে বিশ্বাস করেনা তারা নিকৃষ্ট প্রকৃতির সদৃশ। আর আল্লাহতো মহত্তম প্রকৃতির অধিকারী; এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ৬০
1961 ১৬. আন-নাহাল আল্লাহ যদি মানুষকে তাদের সীমা লংঘনের জন্য শাস্তি দিতেন তাহলে ভূপৃষ্ঠে কোন জীব জন্তুকেই রেহাই দিতেননা; কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন। অতঃপর যখন তাদের সময় আসে তখন তারা মুহুর্তকাল বিলম্ব অথবা ত্বরা করতে পারবেনা। ৬১
1962 ১৬. আন-নাহাল যা তারা অপছন্দ করে তাই তারা আল্লাহর প্রতি আরোপ করে। তাদের জিহবা মিথ্যা বর্ণনা করে যে, মঙ্গল তাদেরই জন্য। নিশ্চয়ই তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম এবং তাদেরকেই সর্বাগ্রে তাতে নিক্ষেপ করা হবে। ৬২
1963 ১৬. আন-নাহাল শপথ আল্লাহর! আমি তোমার পূর্বেও বহু জাতির নিকট রাসূল প্রেরণ করেছি; কিন্তু শাইতান ঐ সব জাতির কার্যকলাপ তাদের দৃষ্টিতে শোভন করেছিল; সুতরাং সে’ই আজ তাদের অভিভাবক এবং তাদেরই জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ৬৩
1964 ১৬. আন-নাহাল আমিতো তোমার প্রতি এই কিতাব অবতীর্ণ করেছি যারা এ বিষয়ে মতভেদ করে তাদেরকে সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য এবং মু’মিনদের জন্য পথ-নির্দেশ ও দয়া স্বরূপ। ৬৪
1965 ১৬. আন-নাহাল আর আল্লাহ আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন। অতঃপর তা দিয়ে যমীনকে তার মৃত্যুর পর সজীব করেছেন। নিশ্চয় এতে নিদর্শন রয়েছে সেই কওমের জন্যা যারা শুনে। ৬৫
1966 ১৬. আন-নাহাল অবশ্যই (গৃহপালিত) চতুস্পদ জন্তুর মধ্যে তোমাদের জন্য শিক্ষা রয়েছে; ওগুলির উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য হতে তোমাদেরকে আমি পান করাই বিশুদ্ধ দুগ্ধ, যা পানকারীদের জন্য সুস্বাদু। ৬৬
1967 ১৬. আন-নাহাল অবশ্যই (গৃহপালিত) চতুস্পদ জন্তুর মধ্যে তোমাদের জন্য শিক্ষা রয়েছে; ওগুলির উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য হতে তোমাদেরকে আমি পান করাই বিশুদ্ধ দুগ্ধ, যা পানকারীদের জন্য সুস্বাদু। ৬৬
1968 ১৬. আন-নাহাল আর খেজুর গাছের ফল ও আঙ্গুর হতে তোমরা মাদক ও উত্তম খাদ্য গ্রহণ করে থাক, এতে অবশ্যই বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে নিদর্শন। ৬৭
1969 ১৬. আন-নাহাল তোমার রাব্ব মৌমাছির অন্তরে ইঙ্গিত দ্বারা নির্দেশ দিয়েছেনঃ তুমি গৃহ নির্মাণ কর পাহাড়, বৃক্ষ এবং মানুষ যে গৃহ নির্মাণ করে তাতে। ৬৮
1970 ১৬. আন-নাহাল এর পর প্রত্যেক ফল হতে কিছু কিছু আহার কর, অতঃপর তোমার রবের সহজ পথ অনুসরণ কর। ওর উদর হতে নির্গত হয় বিবিধ বর্ণের পানীয়, যাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিষেধক। অবশ্যই এতে রয়েছে নিদর্শন চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য। ৬৯
1971 ১৬. আন-নাহাল আল্লাহই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন এবং তোমাদের মধ্যে কেহকে কেহকে উপনীত করা হয় জরাজীর্ণ বয়সে। ফলে তারা যা কিছু জানত সে সম্বন্ধে তারা সজ্ঞান থাকেনা; আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান। ৭০
1972 ১৬. আন-নাহাল আল্লাহ জীবনোপকরণে তোমাদের একজনকে অন্যজনের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। যাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে তারা তাদের অধীনস্থ দাস দাসীদেরকে নিজেদের জীবনোপকরণ হতে এমন কিছু দেয়না যাতে তারা এ বিষয়ে সমান হয়ে যায়; তাহলে কি তারা আল্লাহর অনুগ্রহ অস্বীকার করে? ৭১
1973 ১৬. আন-নাহাল আর আল্লাহ তোমাদের হতেই তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের যুগল হতে তোমাদের জন্য পুত্র-পৌত্রাদি সৃষ্টি করেছেন এবং উত্তম জীবনোপকরণ দান করেছেন। তবুও কি তারা মিথ্যা বিষয়ে বিশ্বাস করবে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৭২
1974 ১৬. আন-নাহাল এবং তারা কি ইবাদাত করবে আল্লাহ ছাড়া অপরের যাদের আকাশমন্ডলী অথবা পৃথিবী হতে কোন জীবনোপকরণ সরবরাহ করার শক্তি নেই? এবং তারা কিছুই করতে সক্ষম নয় । ৭৩
1975 ১৬. আন-নাহাল সুতরাং তোমরা আল্লাহর কোন সদৃশ স্থির করনা; নিশ্চয়ই আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জাননা। ৭৪
1976 ১৬. আন-নাহাল আল্লাহ উপমা দিচ্ছেন অপরের অধিকারভুক্ত এক দাসের, যে কোন কিছুর উপর শক্তি রাখেনা। এবং অপর এক ব্যক্তি যাকে তিনি নিজ হতে উত্তম রিয্ক দান করেছেন এবং সে তা হতে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে; তারা কি উভয়ে একে অপরের সমান? সকল প্রশংসা আল্লাহরই প্রাপ্য; অথচ তাদের অধিকাংশ এটা জানেনা। ৭৫
1977 ১৬. আন-নাহাল আল্লাহ আরও উপমা দিচ্ছেন দু’ ব্যক্তির। ওদের একজন মূক, কোন কিছুরই শক্তি রাখেনা এবং সে তার মালিকের জন্য বোঝা স্বরূপ। তাকে যেখানেই পাঠানো হোক না কেন সে ভাল কিছুই করে আসতে পারেনা; সে কি ঐ ব্যক্তির মত সমান হবে যে ন্যায়ের নির্দেশ দেয় এবং যে আছে সরল পথে? ৭৬
1978 ১৬. আন-নাহাল আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান আল্লাহরই এবং কিয়ামাতের ব্যাপারতো চোখের পলকের ন্যায়, বরং ওর চেয়েও সত্ত্বর; আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। ৭৭
1979 ১৬. আন-নাহাল আর আল্লাহ তোমাদেরকে নির্গত করেছেন তোমাদের মাতৃগর্ভ হতে এমন অবস্থায় যে, তোমরা কিছুই জানতেনা, এবং তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি এবং হৃদয়, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। ৭৮
1980 ১৬. আন-নাহাল তারা কি লক্ষ্য করেনা আকাশের শূন্য গর্ভে নিয়ন্ত্রণাধীন বিহংগের প্রতি? আল্লাহই ওদেরকে স্থির রাখেন; অবশ্যই এতে নিদর্শন রয়েছে মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্য। ৭৯
1981 ১৬. আন-নাহাল এবং আল্লাহ তোমাদের গৃহকে করেন তোমাদের আবাসস্থল, আর তিনি তোমাদের জন্য পশুচর্মের তাবুর ব্যবস্থা করেন; ওটা বহনকালে (তোমাদের ভ্রমণকালে) এবং ওতে অবস্থানকালে তোমরা তা সহজে বহন করতে পার। তিনি তোমাদের জন্য ব্যবস্থা করেন ওদের পশম, লোম ও কেশ হতে কিছু কালের জন্য গৃহ সামগ্রী ও ব্যবহার উপকরণ। ৮০
1982 ১৬. আন-নাহাল আর আল্লাহ যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তাতে তোমাদের জন্য ছায়ার ব্যবস্থা করেন এবং তিনি তোমাদের জন্য পাহাড়ে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেন এবং তোমাদের জন্য ব্যবস্থা করেন পরিধেয় বস্ত্রের; ওটা তোমাদেরকে তাপ হতে রক্ষা করে এবং তিনি ব্যবস্থা করেন তোমাদের জন্য বর্মের, ওটা তোমাদেরকে যুদ্ধে রক্ষা করে; এভাবে তিনি তোমাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ পূর্ণ করেন যাতে তোমরা আত্মসমর্পণ কর। ৮১
1983 ১৬. আন-নাহাল অতঃপর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তোমার কর্তব্যতো শুধু স্পষ্টভাবে বাণী পৌঁছে দেয়া। ৮২
1984 ১৬. আন-নাহাল তারা আল্লাহর অনুগ্রহ জ্ঞাত আছে; কিন্তু সেগুলি তারা অস্বীকার করে এবং তাদের অধিকাংশই কাফির। ৮৩
1985 ১৬. আন-নাহাল যেদিন আমি প্রত্যেক সম্প্রদায় হতে এক একজন সাক্ষী উত্থিত করব সেদিন কাফিরদেরকে অনুমতি দেয়া হবেনা এবং তাদেরকে (আল্লাহর) সন্তুষ্টি লাভের সুযোগ দেয়া হবেনা। ৮৪
1986 ১৬. আন-নাহাল যখন যালিমরা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন তাদের শাস্তি লঘু করা হবেনা এবং তাদেরকে কোন বিরাম দেয়া হবেনা। ৮৫
1987 ১৬. আন-নাহাল মুশরিকরা যাদেরকে (আল্লাহর) শরীক করেছিল তাদেরকে দেখে বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! এরাই তারা যাদেরকে আমরা আপনার শরীক করেছিলাম, যাদেরকে আমরা আহবান করতাম আপনার পরিবর্তে; অতঃপর তদুত্তরে তারা বলবেঃ তোমরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। ৮৬
1988 ১৬. আন-নাহাল সেদিন তারা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করবে এবং তারা যে মিথ্যা উদ্ভাবন করত তা তাদের জন্য নিষ্ফল হবে। ৮৭
1989 ১৬. আন-নাহাল যারা কুফরী করেছে ও আল্লাহর পথ হতে বাধা দিয়েছে, আমি তাদের শাস্তির উপর শাস্তি বৃদ্ধি করব। ৮৮
1990 ১৬. আন-নাহাল সেদিন আমি উত্থিত করব প্রত্যেক সম্প্রদায় হতে তাদের বিষয়ে এক একজন সাক্ষী এবং তোমাকে আমি আনব সাক্ষী রূপে এদের বিষয়ে; আমি আত্মসমর্পণকারীদের (মুসলিম) জন্য প্রত্যেক বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যাস্বরূপ, পথ নির্দেশ, দয়া ও সুসংবাদ স্বরূপ তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি। ৮৯
1991 ১৬. আন-নাহাল নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায় পরায়ণতা, সদাচরণ ও আত্মীয় স্বজনকে দানের নির্দেশ দেন এবং তিনি নিষেধ করেন অশ্লীলতা, অসৎ কাজ ও সীমা লংঘন করতে। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর। ৯০
1992 ১৬. আন-নাহাল তোমরা আল্লাহর অঙ্গীকার পূর্ণ কর যখন পরস্পর অঙ্গীকার কর এবং তোমরা শপথ দৃঢ় করার পর তা ভঙ্গ করনা; তোমরা যা কর আল্লাহ তা জানেন। ৯১
1993 ১৬. আন-নাহাল তোমরা সেই নারীর মত হয়োনা, যে তার সূতা মাযবূত করে পাকানোর পর ওর পাক খুলে নষ্ট করে দেয়। তোমাদের শপথ তোমরা পরস্পরকে প্রবঞ্চনা করার জন্য ব্যবহার করে থাকো, যাতে একদল অন্যদল অপেক্ষা অধিক লাভবান হও; আল্লাহতো এটা দ্বারা শুধু তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন; তোমাদের যে বিষয়ে মতভেদ রয়েছে, কিয়ামাত দিবসে তিনি তা নিশ্চয়ই স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে দিবেন। ৯২
1994 ১৬. আন-নাহাল যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন তাহলে তোমাদেরকে এক জাতি করতে পারতেন, কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎ পথে পরিচালিত করেন; তোমরা যা কর সে বিষয়ে অবশ্যই তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হবে। ৯৩
1995 ১৬. আন-নাহাল পরস্পর প্রবঞ্চনা করার জন্য তোমরা তোমাদের শপথকে ব্যবহার করনা; তাহলে পা স্থির হওয়ার পর পিছলে যাবে এবং আল্লাহর পথে বাধা দেয়ার কারণে তোমরা শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ করবে। তোমাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। ৯৪
1996 ১৬. আন-নাহাল তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কৃত অংগীকার তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করনা; আল্লাহর কাছে যা আছে শুধু তা’ই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে। ৯৫
1997 ১৬. আন-নাহাল তোমাদের কাছে যা আছে তা নিঃশেষ হবে এবং আল্লাহর কাছে যা আছে তা স্থায়ী; যারা ধৈর্য ধারণ করে আমি নিশ্চয়ই তাদেরকে তারা যে উত্তম কাজ করে তা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব। ৯৬
1998 ১৬. আন-নাহাল মু’মিন পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেহ সৎকাজ করবে তাকে আমি নিশ্চয়ই আনন্দময় জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার প্রদান করব। ৯৭
1999 ১৬. আন-নাহাল যখন তুমি কুরআন পাঠ করবে তখন অভিশপ্ত শাইতান হতে আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করবে। ৯৮
2000 ১৬. আন-নাহাল তার কোন আধিপত্য নেই তাদের উপর যারা ঈমান আনে ও তাদের রবের উপরই নির্ভর করে। ৯৯
2001 ১৬. আন-নাহাল তার আধিপত্য শুধু তাদেরই উপর যারা তাকে অভিভাবক রূপে গ্রহণ করে এবং যারা (আল্লাহর) সাথে শরীক করে। ১০০
2002 ১৬. আন-নাহাল আমি যখন এক আয়াতের পরিবর্তে অন্য এক আয়াত উপস্থিত করি, আর আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেন তা তিনিই ভাল জানেন, তখন তারা বলেঃ তুমিতো শুধু মিথ্যা উদ্ভাবনকারী, কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানেনা। ১০১
2003 ১৬. আন-নাহাল তুমি বলঃ তোমার রবের নিকট হতে রূহুল কুদুস (জিবরাঈল) সত্যসহ কুরআন অবতীর্ণ করেছেন যারা মু’মিন তাদেরকে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এবং হিদায়াত ও সুসংবাদ স্বরূপ আত্মসমর্পনকারীদের জন্য। ১০২
2004 ১৬. আন-নাহাল আমিতো জানিই তারা বলেঃ তাকে শিক্ষা দেয় জনৈক ব্যক্তি। তারা যার প্রতি এটা আরোপ করে তার ভাষাতো আরাবী নয়; কিন্তু কুরআনের ভাষা স্পষ্ট আরাবী ভাষা। ১০৩
2005 ১৬. আন-নাহাল যারা আল্লাহর আয়াত বিশ্বাস করেনা তাদেরকে আল্লাহ হিদায়াত করেননা এবং তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। ১০৪
2006 ১৬. আন-নাহাল যারা আল্লাহর নিদর্শনে বিশ্বাস করেনা তারাতো শুধু মিথ্যা উদ্ভাবক এবং তারাই মিথ্যাবাদী। ১০৫
2007 ১৬. আন-নাহাল কেহ ঈমান আনার পর আল্লাহকে অস্বীকার করলে এবং কুফরীর জন্য হৃদয় উন্মুক্ত রাখলে তার উপর আপতিত হবে আল্লাহর গযব এবং তার জন্য আছে মহা শাস্তি; তবে তার জন্য নয়, যাকে কুফরীর জন্য বাধ্য করা হয়, কিন্তু তার চিত্ত ঈমানে অবিচল। ১০৬
2008 ১৬. আন-নাহাল এটা এ জন্য যে, তারা দুনিয়ার জীবনকে আখিরাতের উপর প্রাধান্য দেয় এবং এ জন্য যে, আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেননা। ১০৭
2009 ১৬. আন-নাহাল ওরাই তারা, আল্লাহ যাদের অন্তর, কর্ণ ও চক্ষুর উপর মোহর করে দিয়েছেন এবং তারাই গাফিল। ১০৮
2010 ১৬. আন-নাহাল নিশ্চয়ই তারা আখিরাতে হবে ক্ষতিগ্রস্ত। ১০৯
2011 ১৬. আন-নাহাল (তোমার রবের পথে থেকে) যারা নির্যাতিত হবার পর হিজরাত করে এবং পরে জিহাদ করে এবং ধৈর্য ধারণ করে; তোমার রাব্ব এসব কিছুর পর, তাদের প্রতি অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ১১০
2012 ১৬. আন-নাহাল স্মরণ কর সেই দিনকে যেদিন আত্মপক্ষ সমর্থনে যুক্তি উপস্থিত করতে আসবে প্রত্যেক ব্যক্তি এবং প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের পূর্ণ ফল দেয়া হবে এবং তাদের প্রতি যুলম করা হবেনা। ১১১
2013 ১৬. আন-নাহাল আল্লাহ দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন এক জনপদের যা ছিল নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত, যেখানে আসত সব দিক হতে প্রচুর জীবনোপকরণ; অতঃপর ওরা আল্লাহর অনুগ্রহ অস্বীকার করল। ফলে তাদের কৃতকর্মের কারণে আল্লাহ তাদেরকে আস্বাদ গ্রহণ করালেন ক্ষুধা ও ভীতির। ১১২
2014 ১৬. আন-নাহাল তাদের নিকট এসেছিল এক রাসূল তাদেরই মধ্য হতে, কিন্তু তারা তাকে অস্বীকার করেছিল; ফলে সীমা লংঘন করা অবস্থায় শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করল। ১১৩
2015 ১৬. আন-নাহাল আল্লাহ তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তম্মধ্যে যা বৈধ ও পবিত্র তা তোমরা আহার কর এবং তোমরা যদি শুধু আল্লাহরই ইবাদাত কর তাহলে তাঁর অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। ১১৪
2016 ১৬. আন-নাহাল তিনি (আল্লাহ) শুধুমাত্র মৃত, রক্ত, শূকরের মাংস এবং যা যবাহকালে আল্লাহর পরিবর্তে অন্যের নাম নেয়া হয়েছে তা’ই তোমাদের জন্য অবৈধ করেছেন, কিন্তু কেহ অনন্যোপায় কিংবা সীমা লংঘনকারী না হয়ে অনন্যোপায়ী হলে আল্লাহতো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ১১৫
2017 ১৬. আন-নাহাল তোমাদের জিহবা থেকে সাধারণতঃ যে সব মিথ্যা কথা বের হয়ে আসে সেরূপ তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে বলনা - এটা হালাল এবং ওটা হারাম। যারা আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করবে তারা সফলকাম হবেনা। ১১৬
2018 ১৬. আন-নাহাল তাদের সুখ সম্ভোগ সামান্য এবং তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। ১১৭
2019 ১৬. আন-নাহাল ইয়াহুদীদের জন্য আমি শুধু তা’ই নির্ধারণ করেছিলাম যা তোমার নিকট আমি পূর্বে উল্লেখ করেছি এবং আমি তাদের উপর কোন যুলম করিনি, কিন্তু তারাই যুলম করত তাদের নিজেদের প্রতি। ১১৮
2020 ১৬. আন-নাহাল যারা অজ্ঞতা বশতঃ খারাপ কাজ করে তারা পরে তাওবাহ করলে এবং নিজেদেরকে সংশোধন করলে তাদের জন্য তোমার রাব্ব অবশ্যই অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ১১৯
2021 ১৬. আন-নাহাল নিশ্চয়ই ইবরাহীম ছিল এক উম্মাত আল্লাহর অনুগত, একনিষ্ঠ এবং সে ছিলনা মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত। ১২০
2022 ১৬. আন-নাহাল সে ছিল আল্লাহর অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞ; আল্লাহ তাকে মনোনীত করেছিলেন এবং তাকে পরিচালিত করেছিলেন সরল পথে। ১২১
2023 ১৬. আন-নাহাল আমি তাকে দুনিয়ায় দিয়েছিলাম মঙ্গল এবং আখিরাতেও নিশ্চয়ই সে সৎকর্মপরায়ণদের অন্যতম। ১২২
2024 ১৬. আন-নাহাল এখন আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করলাম, তুমি একনিষ্ঠ ইবরাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর; এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলনা। ১২৩
2025 ১৬. আন-নাহাল শনিবার পালনতো শুধু তাদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল যারা এ সম্বন্ধে মতভেদ করত। যে বিষয়ে তারা মতভেদ করত তোমার রাব্ব অবশ্যই কিয়ামাত দিবসে সেই বিষয়ে তাদের মীমাংসা করে দিবেন। ১২৪
2026 ১৬. আন-নাহাল তুমি মানুষকে তোমার রবের পথে আহবান কর হিকমাত ও সদুপদেশ দ্বারা এবং তাদের সাথে আলোচনা কর সুন্দরভাবে। তোমার রাব্ব ভাল করেই জানেন কে তাঁর পথ ছেড়ে বিপথগামী এবং কে সৎ পথে আছে। ১২৫
2027 ১৬. আন-নাহাল যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর তাহলে ঠিক ততখানি করবে যতখানি অন্যায় তোমাদের প্রতি করা হয়েছে; তবে তোমরা ধৈর্য ধারণ করলে ধৈর্যশীলদের জন্য ওটাই উত্তম। ১২৬
2028 ১৬. আন-নাহাল তুমি ধৈর্য ধারণ কর; তোমার ধৈর্য হবে আল্লাহরই সাহায্যে; তাদের জন্য দুঃখ করনা এবং তাদের ষড়যন্ত্রে তুমি মনঃক্ষুন্ন হয়োনা। ১২৭
2029 ১৬. আন-নাহাল নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরই সঙ্গে আছেন যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং যারা সৎ কর্মপরায়ণ। ১২৮
2030 ১৭. আল-ইসরা পবিত্র ও মহিমাময় তিনি যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মাসজিদুল হারাম হতে মাসজিদুল আকসায়, যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বারাকাতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
2031 ১৭. আল-ইসরা আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম এবং তাকে করেছিলাম বানী ইসরাঈলের জন্য পথ নির্দেশক। আমি আদেশ করেছিলাম, তোমরা আমি ব্যতীত অপর কেহকেও কর্ম বিধায়করূপে গ্রহণ করনা।
2032 ১৭. আল-ইসরা তোমরাইতো তাদের বংশধর যাদেরকে আমি নূহের সাথে নৌকায় আরোহণ করিয়েছিলাম, সে ছিল পরম কৃতজ্ঞ দাস।
2033 ১৭. আল-ইসরা এবং আমি কিতাবে (তাওরাতে) প্রত্যাদেশ দ্বারা বানী ইসরাঈলকে জানিয়েছিলাম, নিশ্চয়ই তোমরা পৃথিবীতে দু’বার বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং তোমরা অতিশয় উদ্ধত্যকারী হবে।
2034 ১৭. আল-ইসরা অতঃপর এই দু’এর প্রথমটির নির্ধারিত কাল যখন উপস্থিত হল তখন আমি তোমাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলাম আমার দাসদেরকে, যুদ্ধে অতিশয় শক্তিশালী; তারা ঘরে ঘরে প্রবেশ করে সমস্ত কিছু ধ্বংস করেছিল; শাস্তির প্রতিজ্ঞা কার্যকরী হয়েই থাকে।
2035 ১৭. আল-ইসরা অতঃপর আমি তোমাদের পুনরায় তাদের উপর প্রতিষ্ঠিত করলাম, তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা সাহায্য করলাম ও সংখ্যাগরিষ্ঠ করলাম।
2036 ১৭. আল-ইসরা তোমরা সৎ কাজ করলে তা নিজেদেরই জন্য করবে এবং মন্দ কাজ করলে তাও করবে নিজেদের জন্য; অতঃপর পরবর্তী নির্ধারিত সময় উপস্থিত হলে আমি আমার দাসদেরকে প্রেরণ করলাম তোমাদের মুখমন্ডল কালিমাচ্ছন্ন করার জন্য, প্রথমবার তারা যেভাবে মাসজিদে প্রবেশ করেছিল পুনরায় সেভাবেই তাতে প্রবেশ করার জন্য এবং তারা যা অধিকার করেছিল তা সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস করার জন্য।
2037 ১৭. আল-ইসরা সম্ভবতঃ তোমাদের রাব্ব তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। কিন্তু তোমরা যদি তোমাদের পূর্ব আচরণের পুনরাবৃত্তি কর তাহলে তিনিও তাঁর আচরণের পুনরাবৃত্তি করবেন; জাহান্নামকে আমি করেছি সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের জন্য কারাগার।
2038 ১৭. আল-ইসরা এই কুরআন সর্বশ্রেষ্ঠ পথ নির্দেশ করে এবং সৎ কর্মপরায়ণ বিশ্বাসীদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহা পুরস্কার।
2039 ১৭. আল-ইসরা আর যারা পরকাল বিশ্বাস করেনা তাদের জন্য আমি প্রস্তুত করে রেখেছি মর্মন্তুদ শাস্তি। ১০
2040 ১৭. আল-ইসরা মানুষ যেভাবে কল্যাণ কামনা করে সেভাবেই অকল্যাণ কামনা করে। মানুষতো অতি ত্বরাপ্রবণ। ১১
2041 ১৭. আল-ইসরা আমি রাত ও দিনকে করেছি দু’টি নিদর্শন; রাতকে করেছি নিরালোক এবং দিনকে করেছি আলোকময়, যাতে তোমরা তোমাদের রবের অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার এবং যাতে তোমরা বর্ষ সংখ্যা ও হিসাব স্থির করতে পার; এবং আমি সব কিছু বিশদভাবে বর্ণনা করেছি। ১২
2042 ১৭. আল-ইসরা প্রত্যেক মানুষের কৃতকর্ম আমি তার গ্রীবালগ্ন করেছি এবং কিয়ামাত দিবসে আমি তার জন্য বের করব এক কিতাব, যা সে পাবে উন্মুক্ত। ১৩
2043 ১৭. আল-ইসরা (আমি বলব) তুমি তোমার কিতাব পাঠ কর; আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব নিকাশের জন্য যথেষ্ট। ১৪
2044 ১৭. আল-ইসরা যারা সৎ পথ অবলম্বন করবে তারাতো নিজেদেরই মঙ্গলের জন্য তা অবলম্বন করবে এবং যারা পথভ্রষ্ট হবে তারাতো পথভ্রষ্ট হবে নিজেদেরই ধ্বংসের জন্য এবং কেহ অন্য কারও ভার বহন করবেনা; আমি রাসূল না পাঠানো পর্যন্ত কেহকেও শাস্তি দিইনা। ১৫
2045 ১৭. আল-ইসরা যখন আমি কোন জনপদ ধ্বংস করার ইচ্ছা করি তখন ওর সমৃদ্ধশালী ব্যক্তিদেরকে সৎ কাজ করতে আদেশ করি, কিন্তু তারা সেখানে অসৎ কাজ করে। অতঃপর ওর প্রতি দন্ডাজ্ঞা ন্যায় সঙ্গত হয়ে যায় এবং আমি ওটাকে সম্পূর্ণ রূপে বিধ্বস্ত করি। ১৬
2046 ১৭. আল-ইসরা নূহের পর আমি কত মানবগোষ্ঠী ধ্বংস করেছি। তোমার রাব্বই তাঁর দাসদের পাপাচারণের সংবাদ রাখা ও পর্যবেক্ষণের জন্য যথেষ্ট। ১৭
2047 ১৭. আল-ইসরা কেহ পার্থিব সুখ সম্ভোগ কামনা করলে আমি যাকে যা ইচ্ছা সত্ত্বর দিয়ে থাকি; পরে তার জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত করি যেখানে সে প্রবেশ করবে নিন্দিত ও অনুগ্রহ হতে বঞ্চিত অবস্থায়। ১৮
2048 ১৭. আল-ইসরা যারা বিশ্বাসী হয়ে পরকাল কামনা করে এবং ওর জন্য যথাযথ চেষ্টা করে তাদের প্রচেষ্টাসমূহ আল্লাহর কাছে গৃহীত হবে। ১৯
2049 ১৭. আল-ইসরা তোমার রাব্ব তাঁর দান দ্বারা এদেরকে এবং ওদেরকে সাহায্য করেন এবং তোমার রবের দান অবারিত। ২০
2050 ১৭. আল-ইসরা লক্ষ্য কর, আমি কিভাবে তাদের এক দলকে অপরের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছিলাম। পরকালতো নিশ্চয়ই মর্যাদায় শ্রেষ্ঠ ও শ্রেয়ত্বে শ্রেষ্ঠতর। ২১
2051 ১৭. আল-ইসরা আল্লাহর সাথে অপর কোন মা‘বূদ স্থির করনা; তাহলে নিন্দিত ও নিঃসহায় হয়ে পড়বে। ২২
2052 ১৭. আল-ইসরা তোমার রাব্ব নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তিনি ছাড়া অন্য কারও ইবাদাত করবেনা এবং মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার করবে; তাদের একজন অথবা উভয়ে তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদেরকে বিরক্তিসূচক কিছু বলনা এবং তাদেরকে ভৎর্সনা করনা; তাদের সাথে কথা বল সম্মানসূচক নম্রভাবে। ২৩
2053 ১৭. আল-ইসরা অনুকম্পায় তাদের প্রতি বিনয়াবনত থাক এবং বলঃ হে আমার রাব্ব! তাঁদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তাঁরা আমাকে লালন পালন করেছিলেন। ২৪
2054 ১৭. আল-ইসরা তোমাদের রাব্ব তোমাদের অন্তরে যা আছে তা ভাল জানেন; তোমরা যদি সৎ কর্মপরায়ণ হও তাহলে তিনি তাদের (আল্লাহ অভিমুখীদের) প্রতি ক্ষমাশীল। ২৫
2055 ১৭. আল-ইসরা আত্মীয় স্বজনকে দিবে তার প্রাপ্য এবং অভাবগ্রস্ত ও পর্যটককেও (মুসাফিরকেও), এবং কিছুতেই অপব্যয় করনা। ২৬
2056 ১৭. আল-ইসরা নিশ্চয়ই যারা অপব্যয় করে তারা শাইতানের ভাই এবং শাইতান তার রবের প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। ২৭
2057 ১৭. আল-ইসরা আর তুমি যদি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও এবং তুমি তোমার রবের নিকট হতে অনুকম্পা লাভের প্রত্যাশায় ও সন্ধানে থাক তাহলে তাদের সাথে নম্রভাবে কথা বল। ২৮
2058 ১৭. আল-ইসরা তুমি বদ্ধমুষ্টি হয়োনা এবং একেবারে মুক্ত হস্তও হয়োনা; তাহলে তুমি নিন্দিত ও নিঃস্ব হবে। ২৯
2059 ১৭. আল-ইসরা তোমার রাব্ব যার জন্য ইচ্ছা তার জীবনোপকরণ বর্ধিত করেন এবং যার জন্য ইচ্ছা তা হ্রাস করেন; তিনি তাঁর দাসদেরকে ভালভাবে জানেন ও দেখেন। ৩০
2060 ১৭. আল-ইসরা তোমাদের সন্তানদেরকে তোমরা দারিদ্রতার ভয়ে হত্যা করনা, তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই জীবনোপকরণ দিই; তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ। ৩১
2061 ১৭. আল-ইসরা তোমরা অবৈধ যৌন সংযোগের নিকটবর্তী হয়োনা, ওটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ। ৩২
2062 ১৭. আল-ইসরা আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করনা; কেহ অন্যায়ভাবে নিহত হলে তার উত্তরাধিকারীকে আমি প্রতিশোধ গ্রহণের অধিকার দিয়েছি। কিন্তু হত্যার ব্যাপারে সে যেন বাড়াবাড়ি না করে; সেতো সাহায্য প্রাপ্ত হয়েছেই। ৩৩
2063 ১৭. আল-ইসরা পিতৃহীন বয়ঃপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সদুদ্দেশ্য ছাড়া তার সম্পত্তির নিকটবর্তী হয়োনা এবং প্রতিশ্রুতি পালন কর; নিশ্চয়ই প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে কৈফিয়ত তলব করা হবে। ৩৪
2064 ১৭. আল-ইসরা মেপে দেয়ার সময় পূর্ণ মাপে দিবে এবং ওযন করবে সঠিক দাঁড়ি পাল্লায়, এটাই উত্তম ও পরিণামে উৎকৃষ্ট। ৩৫
2065 ১৭. আল-ইসরা যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সেই বিষয়ে অনুমান দ্বারা পরিচালিত হয়োনা। কর্ণ, চক্ষু, হৃদয় - ওদের প্রত্যেকের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হবে। ৩৬
2066 ১৭. আল-ইসরা ভূপৃষ্ঠে দম্ভ ভরে বিচরণ করনা, তুমিতো কখনই পদভরে ভূ-পৃষ্ঠ বিদীর্ণ করতে পারবেনা এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত সমান হতে পারবেনা। ৩৭
2067 ১৭. আল-ইসরা এ সবের মধ্যে যেগুলি মন্দ সেগুলি তোমার রবের নিকট ঘৃণ্য। ৩৮
2068 ১৭. আল-ইসরা তোমার রাব্ব অহীর দ্বারা তোমাকে যে হিকমাত দান করেছেন এগুলি উহার অন্তর্ভুক্ত; তুমি আল্লাহর সাথে কোন ইলাহ স্থির করনা, তাহলে তুমি নিন্দিত ও (আল্লাহর) অনুগ্রহ হতে দূরীকৃত অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। ৩৯
2069 ১৭. আল-ইসরা তোমাদের রাব্ব কি তোমাদের জন্য পুত্র সন্তান নির্ধারণ করেছেন এবং তিনি নিজে (ফেরেশতাদের) কন্যা রূপে গ্রহণ করেছেন? তোমরাতো নিশ্চয়ই ভয়ানক কথা বলে থাক। ৪০
2070 ১৭. আল-ইসরা এই কুরআনে বহু নীতিবাক্য আমি বারবার বিবৃত করেছি যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে; কিন্তু তাতে তাদের বিমুখতাই বৃদ্ধি পায়। ৪১
2071 ১৭. আল-ইসরা বলঃ তাদের কথা মত যদি তাঁর সাথে আরও মা‘বূদ থাকত তাহলে তারা আরশ অধিপতির সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার উপায় অন্বেষন করত। ৪২
2072 ১৭. আল-ইসরা তিনি পবিত্র, মহিমান্বিত এবং তারা যা বলে তা হতে তিনি বহু উর্ধ্বে। ৪৩
2073 ১৭. আল-ইসরা সপ্ত আকাশ, পৃথিবী এবং ওদের অর্ন্তবর্তী সব কিছু তাঁরই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং এমন কিছু নেই যা তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করেনা। কিন্তু ওদের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা তোমরা অনুধাবন করতে পারনা; তিনি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ। ৪৪
2074 ১৭. আল-ইসরা তুমি যখন কুরআন পাঠ কর তখন তোমার ও যারা পরলোকে বিশ্বাস করেনা তাদের মধ্যে এক প্রচ্ছন্ন পর্দা টেনে দিই। ৪৫
2075 ১৭. আল-ইসরা আমি তাদের অন্তরের উপর আবরণ দিয়েছি যেন তারা উপলদ্ধি করতে না পারে এবং তাদেরকে বধির করেছি। তোমার রাব্ব এক, এটা যখন তুমি কুরআন হতে আবৃত্তি কর তখন তারা সরে পড়ে। ৪৬
2076 ১৭. আল-ইসরা যখন তারা কান পেতে তোমার কথা শুনে তখন তারা কেন তা শুনে আমি তা ভাল জানি, এবং এটাও জানি যে, গোপনে আলোচনা কালে সীমা লংঘনকারীরা বলেঃ তোমরাতো এক যাদুগ্রস্ত ব্যক্তির অনুসরণ করছ। ৪৭
2077 ১৭. আল-ইসরা দেখ, তারা তোমার কি উপমা দেয়! তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং তারা সৎ পথ খুঁজে পাবেনা। ৪৮
2078 ১৭. আল-ইসরা তারা বলেঃ আমরা অস্থিতে পরিণত ও চূর্ণ-বিচূর্ণ হলেও কি নতুন সৃষ্টি রূপে পুনরুত্থিত হব? ৪৯
2079 ১৭. আল-ইসরা বলঃ তোমরা হয়ে যাও পাথর অথবা লৌহ ৫০
2080 ১৭. আল-ইসরা অথবা এমন কিছু যা তোমাদের ধারণায় খুবই কঠিন। তারা বলবেঃ কে আমাদেরকে পুনরুত্থিত করবে? বলঃ তিনিই যিনি তোমাদেরকে প্রথম বার সৃষ্টি করেছেন; অতঃপর তারা তোমার সামনে মাথা নাড়াবে এবং বলবেঃ ওটা কবে হবে? বলঃ হবে সম্ভবতঃ শীঘ্রই ৫১
2081 ১৭. আল-ইসরা যেদিন তিনি তোমাদেরকে আহবান করবেন এবং তোমরা প্রশংসার সাথে তাঁর আহবানে সাড়া দিবে এবং তোমরা মনে করবে, তোমরা অল্পকালই অবস্থান করেছিলে। ৫২
2082 ১৭. আল-ইসরা আমার বান্দাদেরকে যা উত্তম তা বলতে বল; শাইতান তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উস্কানি দেয়; শাইতান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। ৫৩
2083 ১৭. আল-ইসরা তোমাদের রাব্ব তোমাদেরকে ভালভাবে জানেন; ইচ্ছা করলে তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করেন এবং ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে শাস্তি দেন; আমি তোমাকে তাদের অভিভাবক করে পাঠাইনি। ৫৪
2084 ১৭. আল-ইসরা যারা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে আছে তাদেরকে তোমার রাব্ব ভালভাবে জানেন; আমিতো নাবীদের কতককে কতকের উপর মর্যাদা দিয়েছি; দাউদকে আমি যাবুর দিয়েছি। ৫৫
2085 ১৭. আল-ইসরা বলঃ তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে মা‘বূদ মনে কর তাদেরকে আহবান কর; করলে দেখবে তোমাদের দুঃখ দৈন্য দূর করার অথবা পরিবর্তন করার শক্তি তাদের নেই। ৫৬
2086 ১৭. আল-ইসরা তারা যাদেরকে আহবান করে তাদের মধ্যে যারা নিকটতর তারাইতো তাদের রবের নৈকট্য লাভের উপায় সন্ধান করে যে, কে কত নিকটতর হতে পারে, তাঁর দয়া প্রত্যাশা করে এবং তাঁর শাস্তিকে ভয় করে। নিশ্চয়ই তোমার রবের শাস্তি ভয়াবহ। ৫৭
2087 ১৭. আল-ইসরা এমন কোন জনপদ নেই যা আমি কিয়ামাত দিনের পূর্বে ধ্বংস করবনা অথবা কঠোর শাস্তি দিবনা; এটাতো কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। ৫৮
2088 ১৭. আল-ইসরা পূর্ববর্তীগণ কর্তৃক নিদর্শন অস্বীকার করার কারণেই আমাকে নিদর্শন প্রেরণ করা হতে বিরত রাখে; আমি স্পষ্ট নিদর্শন স্বরূপ সামূদের নিকট উষ্ট্রী পাঠিয়েছিলাম, অতঃপর তারা ওর প্রতি যুলম করেছিল; আমি ভয় প্রদর্শনের জন্যই নিদর্শন প্রেরণ করি। ৫৯
2089 ১৭. আল-ইসরা স্মরণ কর, আমি তোমাকে বলেছিলাম, তোমার রাব্ব মানুষকে পরিবেষ্টন করে আছেন; আমি যে দৃশ্য তোমাকে দেখিয়েছি কিংবা কুরআনে উল্লিখিত অভিশপ্ত বৃক্ষ শুধু মানুষের পরীক্ষার জন্য আমি তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করি। কিন্তু এটা তাদের তীব্র অবাধ্যতাই বৃদ্ধি করে। ৬০
2090 ১৭. আল-ইসরা স্মরণ কর, যখন আমি মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে বললামঃ আদমের প্রতি সাজদাহবনত হও; তখন ইবলীস ছাড়া সবাই সাজদাহবনত হল; সে বললঃ আমি কি তাকে সাজদাহ করব যাকে আপনি মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন? ৬১
2091 ১৭. আল-ইসরা সে আরও বললঃ লক্ষ্য করুন, তাকে যে আপনি আমার উপর মর্যাদা দান করলেন, কিয়ামাতের দিন পর্যন্ত যদি আমাকে অবকাশ দেন তাহলে আমি অল্প কয়েকজন ছাড়া তার বংশধরদেরকে সমূলে বিনষ্ট করব। ৬২
2092 ১৭. আল-ইসরা (আল্লাহ) বললেনঃ যা, জাহান্নামই তোর এবং তাদের সম্যক শাস্তি যারা তোর অনুসরণ করবে। ৬৩
2093 ১৭. আল-ইসরা তোর আহবানে তাদের মধ্য থেকে যাকে পারিস সত্যচূত কর, তোর অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী দ্বারা তাদেরকে আক্রমণ কর এবং তাদের ধন-সম্পদে ও সন্তান-সন্ততিতে শরীক হয়ে যা, এবং তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দে। শাইতান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয় তা ছলনা মাত্র। ৬৪
2094 ১৭. আল-ইসরা নিশ্চয়ই আমার দাসদের উপর তোর কোন ক্ষমতা নেই; কর্ম বিধায়ক হিসাবে তোর রাব্বই যথেষ্ট। ৬৫
2095 ১৭. আল-ইসরা তোমাদের রাব্ব তিনিই যিনি তোমাদের জন্য সমুদ্রে নৌযান পরিচালিত করেন যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার; তিনি তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু। ৬৬
2096 ১৭. আল-ইসরা সমুদ্রে যখন তোমাদেরকে বিপদ স্পর্শ করে তখন শুধু তিনি ছাড়া অপর যাদেরকে তোমরা আহবান কর তারা তোমাদের মন হতে উধাও হয়ে যায়। অতঃপর তিনি যখন স্থলে ভিড়িয়ে তোমাদেরকে উদ্ধার করেন তখন তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও; বস্তুতঃ মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ। ৬৭
2097 ১৭. আল-ইসরা তোমরা কি নিশ্চিত আছ যে, তিনি তোমাদেরকে স্থলে কোথাও ভূ-গর্ভস্থ করবেননা অথবা তোমাদের উপর কংকর বর্ষণ করবেননা? তখন তোমরা তোমাদের কোন কর্ম বিধায়ক পাবেনা। ৬৮
2098 ১৭. আল-ইসরা অথবা তোমরা কি নিশ্চিন্ত আছ যে, তোমাদেরকে আর একবার সমুদ্রে নিয়ে যাবেননা এবং তোমাদের বিরুদ্ধে প্রচন্ড ঝটিকা পাঠাবেননা এবং তোমাদের সত্য প্রত্যাখ্যান করার জন্য তোমাদেরকে নিমজ্জিত করবেননা? তখন তোমরা এ বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে কোন সাহায্যকারী পাবেনা। ৬৯
2099 ১৭. আল-ইসরা আমিতো আদম-সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, স্থলে ও সমুদ্রে তাদের চলাচলের বাহন দিয়েছি; আর তাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ দান করেছি এবং আমি যাদেরকে সৃষ্টি করেছি তাদের অনেকের উপর তাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। ৭০
2100 ১৭. আল-ইসরা স্মরণ কর সেই দিনকে যখন আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়কে তাদের নেতাসহ আহবান করব; যাদেরকে ডান হাতে ‘আমলনামা দেয়া হবে তারা তাদের ‘আমলনামা পাঠ করবে (আনন্দের সাথে) এবং তাদের উপর সামান্য পরিমাণও যুলম করা হবে না। ৭১
2101 ১৭. আল-ইসরা যে ইহলোকে অন্ধ পরলোকেও সে অন্ধ এবং অধিকতর পথভ্রষ্ট। ৭২
2102 ১৭. আল-ইসরা আমি তোমার প্রতি যা প্রত্যাদেশ করেছি তা হতে তোমার পদস্খলন ঘটানোর জন্য তারা চূড়ান্ত চেষ্টা করেছে যাতে তুমি আমার সম্বন্ধে কিছু মিথ্যা উদ্ভাবন কর। সফলকাম হলে তারা অবশ্যই তোমাকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করত। ৭৩
2103 ১৭. আল-ইসরা আমি তোমাকে অবিচলিত না রাখলে তুমি তাদের দিকে প্রায় কিছুটা ঝুঁকেই পড়তে। ৭৪
2104 ১৭. আল-ইসরা তুমি ঝুঁকে পড়লে অবশ্যই তোমাকে ইহজীবনে ও পরজীবনে দ্বিগুণ শাস্তি আস্বাদন করাতাম; তখন আমার বিরুদ্ধে তোমার জন্য কোন সাহায্যকারী পেতেনা। ৭৫
2105 ১৭. আল-ইসরা তারা তোমাকে দেশ হতে উৎখাত করার চূড়ান্ত চেষ্টা করেছিল তোমাকে সেখান হতে বহিস্কার করার জন্য। তাহলে তোমার পর তারাও সেখানে অল্পকালই টিকে থাকত। ৭৬
2106 ১৭. আল-ইসরা আমার রাসূলদের মধ্যে তোমার পূর্বে যাদেরকে আমি পাঠিয়েছিলাম তাদের ক্ষেত্রেও ছিল এরূপ নিয়ম এবং তুমি আমার নিয়মের কোন পরিবর্তন দেখতে পাবেনা। ৭৭
2107 ১৭. আল-ইসরা সূর্য হেলে পড়ার পর হতে রাতের ঘন অন্ধকার পর্যন্ত সালাত কায়েম করবে এবং কায়েম করবে ফাজরের কুরআন পাঠও। কারণ ভোরের কুরআন পাঠ সাক্ষী স্বরূপ। ৭৮
2108 ১৭. আল-ইসরা আর রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ কায়েম করবে; এটা তোমার এক অতিরিক্ত কর্তব্য; আশা করা যায় তোমার রাব্ব তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রশংসিত স্থানে ৭৯
2109 ১৭. আল-ইসরা বলঃ হে আমার রাব্ব! যেখানে গমন শুভ ও সন্তোষজনক আপনি আমাকে সেখানে নিয়ে যান এবং যেখান হতে নির্গমন শুভ ও সন্তোষজনক সেখান হতে আমাকে বের করে নিন এবং আপনার নিকট হতে আমাকে দান করুন সাহায্যকারী শক্তি। ৮০
2110 ১৭. আল-ইসরা আর বলঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে; মিথ্যাতো বিলুপ্ত হয়েই থাকে। ৮১
2111 ১৭. আল-ইসরা আমি অবতীর্ণ করেছি কুরআন, যা বিশ্বাসীদের জন্য সুচিকিৎসা ও দয়া, কিন্তু তা সীমা লংঘনকারীদের ক্ষতিই বৃদ্ধি করে। ৮২
2112 ১৭. আল-ইসরা যখন আমি মানুষের উপর অনুগ্রহ করি তখন সে মুখ ফিরিয়ে নেয় ও অহংকারে দূরে সরে যায় এবং তাকে অনিষ্ট স্পর্শ করলে সে একেবারে হতাশ হয়ে পড়ে। ৮৩
2113 ১৭. আল-ইসরা বলঃ প্রত্যেকে তার নিজ নিজ রীতি অনুসারে কাজ করে। কিন্তু তোমার রাব্ব ভাল করে জানেন, কে সর্বাপেক্ষা নির্ভুল পথে আছে। ৮৪
2114 ১৭. আল-ইসরা তোমাকে তারা রূহ্ সম্পর্কে প্রশ্ন করে, তুমি বলঃ রূহ্ আমার রবের আদেশ ঘটিত; এ বিষয়ে তোমাদেরকে সামান্য জ্ঞানই দেয়া হয়েছে। ৮৫
2115 ১৭. আল-ইসরা ইচ্ছা করলে আমি তোমার প্রতি যা প্রত্যাদেশ করেছি তা অবশ্যই প্রত্যাহার করতে পারতাম; তাহলে তুমি এ বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে কোন কর্মবিধায়ক পেতেনা। ৮৬
2116 ১৭. আল-ইসরা এটা প্রত্যাহার না করা তোমার রবের দয়া; তোমার প্রতি আছে তাঁর মহা অনুগ্রহ। ৮৭
2117 ১৭. আল-ইসরা বলঃ যদি এই কুরআনের অনুরূপ কুরআন রচনা করার জন্য মানুষ ও জিন সমবেত হয় এবং তারা পরস্পরকে সাহায্য করে তবুও তারা এর অনুরূপ কুরআন রচনা করতে পারবেনা। ৮৮
2118 ১৭. আল-ইসরা আমি এই কুরআনে মানুষের জন্য বিভিন্ন উপমা দ্বারা আমার বাণী বিশদভাবে বর্ণনা করেছি। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কুফরী করা ছাড়া ক্ষান্ত হয়না। ৮৯
2119 ১৭. আল-ইসরা আর তারা বলেঃ কখনই আমরা তোমাতে বিশ্বাস স্থাপন করবনা, যতক্ষণ না তুমি আমাদের জন্য ভূমি হতে এক প্রস্রবণ উৎসারিত করবে। ৯০
2120 ১৭. আল-ইসরা অথবা তোমার খর্জুরের অথবা আঙ্গুরের এক বাগান হবে যার ফাঁকে ফাঁকে তুমি অজস্র ধারায় প্রবাহিত করে দিবে নদীনালা। ৯১
2121 ১৭. আল-ইসরা অথবা তুমি যেমন বলে থাক, তদনুযায়ী আকাশকে খন্ড বিখন্ড করে আমাদের উপর ফেলবে, অথবা আল্লাহ ও মালাইকাদেরকে আমাদের সামনে উপস্থিত করবে। ৯২
2122 ১৭. আল-ইসরা অথবা তোমার একটি স্বর্ণ নির্মিত গৃহ হবে, অথবা তুমি আকাশে আরোহণ করবে, কিন্তু তোমার আকাশে আরোহণ আমরা তখনও বিশ্বাস করবনা যতক্ষণ না তুমি আমাদের প্রতি এক কিতাব অবতীর্ণ করবে যা আমরা পাঠ করব। বলঃ পবিত্র আমার মহান রাব্ব! আমিতো শুধু একজন মানুষ, একজন রাসূল। ৯৩
2123 ১৭. আল-ইসরা ‘আল্লাহ কি মানুষকে রাসূল করে পাঠিয়েছেন?’ - তাদের এই উক্তিই বিশ্বাস স্থাপন হতে লোকদেরকে বিরত রাখে, যখন তাদের নিকট আসে পথ নির্দেশ। ৯৪
2124 ১৭. আল-ইসরা বলঃ মালাইকা/ফেরেশতারা যদি নিশ্চিত হয়ে পৃথিবীতে বিচরণ করত তাহলে আমি আকাশ হতে মালাক/ফেরেশতাকেই তাদের নিকট রাসূল করে পাঠাতাম। ৯৫
2125 ১৭. আল-ইসরা বলঃ আমার ও তোমাদের মধ্যে স্বাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট; তিনি তাঁর দাসদেরকে সবিশেষ জানেন ও দেখেন। ৯৬
2126 ১৭. আল-ইসরা আল্লাহ যাদের পথ প্রদর্শন করেন তারাইতো সঠিক পথপ্রাপ্ত এবং যাদেরকে পথভ্রষ্ট করেন তাদের জন্য তুমি আল্লাহ ছাড়া কোন সাহায্যকারী পাবেনা। কিয়ামাতের দিন আমি তাদেরকে সমবেত করব তাদের মুখে ভর দিয়ে চলা অবস্থায়, অন্ধ অবস্থায়, বোবা অবস্থায় এবং বধির অবস্থায়। তাদের আবাসস্থল জাহান্নাম! যখনই তা স্তিমিত হবে আমি তখন তাদের জন্য আগুন বৃদ্ধি করে দিব। ৯৭
2127 ১৭. আল-ইসরা এটাই তাদের প্রতিফল, কারণ তারা আমার নিদর্শন অস্বীকার করেছিল ও বলেছিলঃ আমরা অস্থিতে পরিণত ও চূর্ণ বিচূর্ণ হলেও কি নতুন সৃষ্টি রূপে পুনরুত্থিত হব? ৯৮
2128 ১৭. আল-ইসরা তারা কি লক্ষ্য করেনা যে, আল্লাহ! যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তিনি ওগুলির অনুরূপ সৃষ্টি করতে ক্ষমতাবান? তিনি তাদের জন্য স্থির করেছেন এক নির্দিষ্ট কাল, যাতে কোন সন্দেহ নেই; তথাপি সীমা লংঘনকারীরা প্রত্যাখ্যান করা ছাড়া আর সবই অস্বীকার করে। ৯৯
2129 ১৭. আল-ইসরা বলঃ যদি তোমরা আমার রবের দয়ার ভান্ডারের অধিকারী হতে তবুও ‘ব্যয় হয়ে যাবে’ এই আশংকায় তোমরা ওটা ধরে রাখতে, মানুষতো অতিশয় কৃপণ। ১০০
2130 ১৭. আল-ইসরা তুমি বানী ইসরাঈলকে জিজ্ঞেস করে দেখ, আমি মূসাকে নয়টি সুস্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলাম; যখন সে তাদের নিকট এসেছিল তখন ফির‘আউন তাকে বলেছিলঃ হে মূসা! আমিতো মনে করি তুমি যাদুগ্রস্ত। ১০১
2131 ১৭. আল-ইসরা মূসা বলেছিলঃ তুমি অবশ্যই অবগত আছ যে, এই সমস্ত স্পষ্ট নিদর্শন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর রাব্বই অবতীর্ণ করেছেন প্রত্যক্ষ প্রমাণ স্বরূপ। হে ফির‘আউন! আমিতো দেখছি, তুমি ধ্বংস হয়ে গেছ। ১০২
2132 ১৭. আল-ইসরা অতঃপর ফির‘আউন তাদেরকে দেশ হতে উচ্ছেদ করার সংকল্প করল; তখন ফির‘আউন ও তার সঙ্গীদের সকলকে আমি নিমজ্জিত করলাম। ১০৩
2133 ১৭. আল-ইসরা এরপর আমি বানী ইসরাঈলকে বললামঃ তোমরা এই দেশে বসবাস কর এবং যখন কিয়ামাতের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হবে তখন তোমাদের সকলকে আমি একত্রিত করে উপস্থিত করব। ১০৪
2134 ১৭. আল-ইসরা আমি সত্য সত্যই কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং তা সত্যসহই অবতীর্ণ হয়েছে; আমিতো তোমাকে শুধু সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করেছি। ১০৫
2135 ১৭. আল-ইসরা আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি খন্ড খন্ডভাবে যাতে তুমি তা মানুষের কাছে পাঠ করতে পার ক্রমে ক্রমে; এবং আমি তা যথাযথভাবে অবতীর্ণ করেছি। ১০৬
2136 ১৭. আল-ইসরা বলঃ তোমরা বিশ্বাস কর অথবা না কর, যাদেরকে এর পূর্বে জ্ঞান দান করা হয়েছে তাদের সামনে যখন আবৃত্তি করা হয় তখন তারা বিনয়ের সাথে কাঁদতে কাঁদতে ভূমিতে লুটিয়ে পড়ে । ১০৭
2137 ১৭. আল-ইসরা এবং বলেঃ আমাদের রাব্ব পবিত্র, মহান! আমাদের রবের প্রতিশ্রুতি কার্যকর হয়েই থাকে। ১০৮
2138 ১৭. আল-ইসরা এবং কাঁদতে কাঁদতে তাদের মুখমন্ডল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং এতে তাদের বিনয়ই বৃদ্ধি পায়। ১০৯
2139 ১৭. আল-ইসরা বলঃ তোমরা ‘আল্লাহ’ নামে আহবান কর অথবা ‘রাহমান’ নামে আহবান কর, তোমরা যে নামেই আহবান করনা কেন, সব সুন্দর নামইতো তাঁর! তোমরা সালাতে তোমাদের স্বর উচু করনা এবং অতিশয় ক্ষীণও করনা; এই দুই এর মধ্য পন্থা অবলম্বন কর। ১১০
2140 ১৭. আল-ইসরা বলঃ প্রশংসা আল্লাহরই যিনি সন্তান গ্রহণ করেননি, তাঁর সার্বভৌমত্বে কোন অংশী নেই এবং তিনি দুর্দশাগ্রস্ত হননা যে কারণে তাঁর অভিভাবকের প্রয়োজন হতে পারে; সুতরাং স্বসম্ভ্রমে তাঁর মাহাত্ম্য ঘোষণা কর। ১১১
2141 ১৮. আল-কাহফ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই যিনি তাঁর দাসের প্রতি এই কিতাব অবতীর্ণ করেছেন এবং এতে তিনি অসঙ্গতি রাখেননি।
2142 ১৮. আল-কাহফ একে করেছেন সুপ্রতিষ্ঠিত তাঁর কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য এবং বিশ্বাসীগণ, যারা সৎকাজ করে তাদেরকে এই সুসংবাদ দেয়ার জন্য যে, তাদের জন্য রয়েছে উত্তম পুরস্কার
2143 ১৮. আল-কাহফ যেখানে তারা হবে চিরস্থায়ী
2144 ১৮. আল-কাহফ এবং সতর্ক করার জন্য তাদেরকে যারা বলে যে, আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন।
2145 ১৮. আল-কাহফ এ বিষয়ে তাদের কোনই জ্ঞান নেই এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরও ছিলনা; তাদের মুখ-নিঃসৃত বাক্য কি উদ্ভট! তারাতো শুধু মিথ্যাই বলে।
2146 ১৮. আল-কাহফ তারা এই বাণী বিশ্বাস না করলে তাদের পিছনে পিছনে ঘুরে সম্ভবতঃ তুমি দুঃখে আত্মবিনাশী হয়ে পড়বে।
2147 ১৮. আল-কাহফ পৃথিবীর উপর যা কিছু আছে আমি সেগুলিকে ওর শোভনীয় করেছি মানুষকে এই পরীক্ষা করার জন্য যে, তাদের মধ্যে কর্মে কে শ্রেষ্ঠ?
2148 ১৮. আল-কাহফ ওর উপর যা কিছু আছে তা অবশ্যই আমি উদ্ভিদশূন্য মৃত্তিকায় পরিণত করব।
2149 ১৮. আল-কাহফ তুমি কি মনে কর যে, গুহা ও রাকীমের অধিবাসীরা আমার নিদর্শনাবলীর মধ্যে বিস্ময়কর?
2150 ১৮. আল-কাহফ যুবকরা যখন গুহায় আশ্রয় নিল তখন তারা বলেছিলঃ হে আমাদের রাব্ব! আপনি নিজ হতে আমাদেরকে অনুগ্রহ দান করুন এবং আমাদের জন্য আমাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা করুন। ১০
2151 ১৮. আল-কাহফ অতঃপর আমি তাদেরকে গুহায় কয়েক বছর ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে দিলাম। ১১
2152 ১৮. আল-কাহফ পরে আমি তাদেরকে জাগরিত করলাম এটা জানার জন্য যে, দুই দলের মধ্যে কোন দল তাদের অবস্থিতি কাল সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারে। ১২
2153 ১৮. আল-কাহফ আমি তোমার কাছে তাদের সঠিক বৃত্তান্ত বর্ণনা করছিঃ তারা ছিল কয়েকজন যুবক, তারা তাদের রবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল এবং আমি তাদের সৎ পথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করেছিলাম। ১৩
2154 ১৮. আল-কাহফ আর আমি তাদের চিত্ত দৃঢ় করেছিলাম; তারা যখন উঠে দাঁড়াল তখন বললঃ আমাদের রাব্ব আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর রাব্ব; আমরা কখনই তাঁর পরিবর্তে অন্য কোন মা‘বূদকে আহবান করবনা; যদি করি তাহলে তা অতিশয় গর্হিত হবে। ১৪
2155 ১৮. আল-কাহফ আমাদেরই এই স্বজাতিরা তাঁর পরিবর্তে অনেক মা‘বূদ গ্রহণ করেছে, তারা এই সব মা‘বূদ সম্বন্ধে স্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করে না কেন? যে আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করে তার চেয়ে অধিক সীমালংঘনকারী আর কে? ১৫
2156 ১৮. আল-কাহফ তোমরা যখন তাদের হতে বিচ্ছিন্ন হলে এবং তারা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের ইবাদাত করে তাদের হতে, তখন তোমরা গুহায় আশ্রয় গ্রহণ কর; তোমাদের রাব্ব তোমাদের জন্য তাঁর দয়া বিস্তার করবেন এবং তিনি তোমাদের কর্মসমূহকে ফলপ্রসূ করার ব্যবস্থা করবেন। ১৬
2157 ১৮. আল-কাহফ তুমি সূর্যকে দেখবে যখন উদিত হয়, তাদের গুহা থেকে পাশ কেটে ডান দিকে চলে যায় এবং যখন অস্ত যায়, তাদের থেকে পাশ কেটে বাম দিকে চলে যায়, অথচ তারা গুহার প্রশস্ত চত্বরে শায়িত। এসবই আল্লাহর নিদর্শন। আল্লাহ যাকে সৎ পথে পরিচালিত করেন সে সৎ পথ প্রাপ্ত এবং তিনি যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তুমি কখনও তার কোন পথ প্রদর্শনকারী অভিভাবক পাবেনা। ১৭
2158 ১৮. আল-কাহফ তুমি মনে করতে তারা জাগ্রত, কিন্তু তারা ছিল নিদ্রিত; আমি তাদেরকে পার্শ্ব পরিবর্তন করাতাম ডানে ও বামে এবং তাদের কুকুর ছিল সম্মুখের পা দু’টি গুহাদ্বারে প্রসারিত করে; তাকিয়ে তাদেরকে দেখলে তুমি পিছন ফিরে পালিয়ে যেতে এবং তাদের ভয়ে আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়তে। ১৮
2159 ১৮. আল-কাহফ এবং এভাবেই আমি তাদের জাগ্রত করলাম যাতে তারা পরস্পরের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করে; তাদের একজন বললঃ তোমরা কতকাল অবস্থান করেছ? কেহ কেহ বললঃ এক দিন অথবা এক দিনের কিছু অংশ; কেহ কেহ বললঃ তোমরা কতকাল অবস্থান করেছ তা তোমাদের রাব্বই ভাল জানেন; এখন তোমাদের একজনকে তোমাদের এই মুদ্রাসহ নগরে প্রেরণ কর; সে যেন দেখে কোন্ খাদ্য উত্তম এবং তা হতে যেন কিছু খাদ্য নিয়ে আসে তোমাদের জন্য; সে যেন বিচক্ষণতার সাথে কাজ করে এবং কিছুতেই যেন তোমাদের সম্বন্ধে কেহকেও কিছু জানতে না দেয়। ১৯
2160 ১৮. আল-কাহফ তারা যদি তোমাদের বিষয় জানতে পারে তাহলে তোমাদেরকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করবে অথবা তোমাদেরকে তাদের ধর্মে ফিরিয়ে নিবে এবং সেক্ষেত্রে তোমরা কখনই সাফল্য লাভ করবেনা। ২০
2161 ১৮. আল-কাহফ এবং এভাবে আমি মানুষকে তাদের বিষয় জানিয়ে দিলাম যাতে তারা জ্ঞাত হয় যে, আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং কিয়ামাতে কোন সন্দেহ নেই; যখন তারা তাদের কর্তব্য বিষয়ে নিজেদের মধ্যে বিতর্ক করছিল তখন অনেকে বললঃ তাদের উপর সৌধ নির্মাণ কর; তাদের রাব্ব তাদের বিষয় ভাল জানেন; তাদের কর্তব্য বিষয়ে যাদের মত প্রবল হল তারা বললঃ আমরাতো নিশ্চয়ই তাদের উপর মাসজিদ নির্মাণ করব। ২১
2162 ১৮. আল-কাহফ অজানা বিষয়ে অনুমানের উপর নির্ভর করে কেহ কেহ বলেঃ তারা ছিল তিন জন, তাদের চতুর্থটি ছিল তাদের কুকুর; এবং কেহ কেহ বলেঃ তারা ছিল পাঁচ জন, ষষ্ঠটি ছিল তাদের কুকুর; আবার কেহ কেহ বলেঃ তারা ছিল সাত জন, অষ্টমটি ছিল তাদের কুকুর; বলঃ আমার রাব্বই তাদের সংখ্যা ভাল জানেন; তাদের সংখ্যা অল্প কয়েকজনই জানে; সাধারণ আলোচনা ব্যতীত তুমি তাদের বিষয়ে বিতর্ক করনা এবং তাদের কেহকেও তাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করনা। ২২
2163 ১৮. আল-কাহফ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলনা - আমি ওটা আগামীকাল করব ২৩
2164 ১৮. আল-কাহফ ‘আল্লাহ ইচ্ছা করলে’ - এই কথা না বলে; যদি ভুলে যাও তাহলে তোমার রাব্বকে স্মরণ কর ও বলঃ সম্ভবতঃ আমার রাব্ব আমাকে গুহাবাসীর বিবরণ অপেক্ষা সত্যের নিকটতর পথ নির্দেশ করবেন। ২৪
2165 ১৮. আল-কাহফ তারা তাদের গুহায় ছিল তিন শ’ বছর, আরও নয় বছর। ২৫
2166 ১৮. আল-কাহফ তুমি বলঃ তারা কত কাল ছিল তা আল্লাহই ভাল জানেন, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর অজ্ঞাত বিষয়ের জ্ঞান তাঁরই; তিনি কত সুন্দর দ্রষ্টা ও শ্রোতা! তিনি ছাড়া তাদের অন্য কোন অভিভাবক নেই; তিনি কেহকেও নিজ কর্তৃত্বে শরীক করেননা। ২৬
2167 ১৮. আল-কাহফ তুমি তোমার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট তোমার রবের কিতাব আবৃত্তি কর; তাঁর বাক্য পরিবর্তন করার কেহ নেই; তুমি কখনই তাঁকে ব্যতীত অন্য কোন আশ্রয় পাবেনা। ২৭
2168 ১৮. আল-কাহফ নিজকে তুমি রাখবে তাদেরই সংসর্গে যারা সকাল-সন্ধ্যায় আহবান করে তাদের রাব্বকে তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে এবং তুমি পার্থিব জীবনের শোভা কামনা করে তাদের দিক হতে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিওনা; যার চিত্তকে আমি আমার স্মরণে অমনোযোগী করে দিয়েছি সে তার খেয়াল খুশীর অনুসরণ করে এবং যার কার্যকলাপ সীমা অতিক্রম করে তুমি তার আনুগত্য করনা। ২৮
2169 ১৮. আল-কাহফ বলঃ সত্য তোমাদের রবের নিকট হতে প্রেরিত; সুতরাং যার ইচ্ছা বিশ্বাস করুক এবং যার ইচ্ছা প্রত্যাখ্যান করুক; আমি সীমা লংঘনকারীদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি অগ্নি, যার বেষ্টনী তাদেরকে পরিবেষ্টন করে থাকবে; তারা পানীয় চাইলে তাদেরকে দেয়া হবে গলিত ধাতুর ন্যায় পানীয়, যা তাদের মুখমন্ডল বিদগ্ধ করবে, কত নিকৃষ্ট পানীয় এটা এবং অগ্নি কত নিকৃষ্ট আশ্রয়! ২৯
2170 ১৮. আল-কাহফ যারা বিশ্বাস করে এবং সৎ কাজ করে আমি তাদেরকে পুরস্কৃত করি, যে সৎ কাজ করে আমি তার কর্মফল নষ্ট করিনা। ৩০
2171 ১৮. আল-কাহফ তাদেরই জন্য আছে স্থায়ী জান্নাত যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তাদেরকে স্বর্ণ-কংকনে অলংকৃত করা হবে, তারা পরিধান করবে সূক্ষ্ম ও স্থূল রেশমের সবুজ বস্ত্র ও সমাসীন হবে সুসজ্জিত আসনে; কত সুন্দর পুরস্কার ও উত্তম আশ্রয়স্থল! ৩১
2172 ১৮. আল-কাহফ তুমি তাদের কাছে পেশ কর দুই ব্যক্তির একটি উপমা; তাদের এক জনকে আমি দিয়েছিলাম দু’টি দ্রাক্ষা উদ্যান এবং এই দু’টিকে আমি খেজুর বৃক্ষ দ্বারা পরিবেষ্টিত করেছিলাম এবং এই দু’য়ের মধ্যবর্তী স্থানকে করেছিলাম শস্যক্ষেত্র। ৩২
2173 ১৮. আল-কাহফ উভয় উদ্যানই ফল দান করত এবং এতে কোন ক্রটি করতনা এবং উভয়ের ফাঁকে ফাঁকে প্রবাহিত করেছিলাম নহর। ৩৩
2174 ১৮. আল-কাহফ এবং তার প্রচুর ধন-সম্পদ ছিল; অতঃপর কথা প্রসঙ্গে সে তার বন্ধুকে বললঃ ধন-সম্পদে আমি তোমা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ এবং জনবলে তোমা অপেক্ষা শক্তিশালী। ৩৪
2175 ১৮. আল-কাহফ এভাবে নিজের প্রতি যুলম করে সে তার উদ্যানে প্রবেশ করল। সে বললঃ আমি মনে করিনা যে, এটা কখনও ধ্বংস হবে। ৩৫
2176 ১৮. আল-কাহফ আমি মনে করিনা যে, কিয়ামাত হবে, আর আমি যদি আমার রবের নিকট প্রত্যাবৃত্ত হই-ই তাহলে আমিতো নিশ্চয়ই এটা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট স্থান পাব। ৩৬
2177 ১৮. আল-কাহফ তদুত্তরে তাকে তার বন্ধু বললঃ তুমি কি তাঁকে অস্বীকার করছ যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন মৃত্তিকা ও পরে শুক্র হতে এবং তারপর পূর্ণাঙ্গ করেছেন মানব আকৃতির? ৩৭
2178 ১৮. আল-কাহফ কিন্তু আমি বলিঃ আল্লাহই আমার রাব্ব এবং আমি কেহকেও আমার রবের সাথে শরীক করিনা। ৩৮
2179 ১৮. আল-কাহফ তুমি যখন ধনে ও সন্তানে আমাকে তোমা অপেক্ষা কম দেখলে তখন তোমার উদ্যানে প্রবেশ করে তুমি কেন বললেনাঃ আল্লাহ যা চেয়েছেন তা’ই হয়েছে, আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত কোন শক্তি নেই। ৩৯
2180 ১৮. আল-কাহফ সম্ভবতঃ আমার রাব্ব আমাকে তোমার উদ্যান অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর কিছু দিবেন এবং তোমার উদ্যানে আকাশ হতে অগ্নি বর্ষণ করবেন যার ফলে তা উদ্ভিদশূণ্য মাইদানে পরিণত হবে। ৪০
2181 ১৮. আল-কাহফ অথবা ওর পানি ভূ-গর্ভে অন্তর্হিত হবে এবং তুমি কখনও ওকে ফিরিয়ে আনতে পারবেনা। ৪১
2182 ১৮. আল-কাহফ তার ধন-সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেল এবং সে তাতে যা ব্যয় করেছিল তার জন্য হাতে হাত রেখে আক্ষেপ করতে লাগল, যখন তা ধ্বংস হয়ে গেল। সে বলতে লাগলঃ হায়! আমি যদি কেহকেও আমার রবের সাথে শরীক না করতাম! ৪২
2183 ১৮. আল-কাহফ এবং আল্লাহ ব্যতীত তাকে সাহায্য করার কোন লোকজন ছিলনা এবং সে নিজেও প্রতিকারে সামর্থ্য হলনা। ৪৩
2184 ১৮. আল-কাহফ এ ক্ষেত্রে সাহায্য করার অধিকার আল্লাহরই যিনি সত্য; পুরস্কার দানে ও পরিণাম নির্ধারণে তিনিই শ্রেষ্ঠ। ৪৪
2185 ১৮. আল-কাহফ তাদের কাছে পেশ কর পার্থিব জীবনের উপমা - এটা পানির ন্যায় যা আমি বর্ষণ করি আকাশ হতে, যদ্বারা ভূমির উদ্ভিদ ঘন সন্নিবিষ্ট হয়ে উদ্গত হয়, অতঃপর তা বিশুস্ক হয়ে এমন চূর্ণ বিচূর্ণ হয় যে, বাতাস ওকে উড়িয়ে নিয়ে যায়; আল্লাহ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান। ৪৫
2186 ১৮. আল-কাহফ ধনৈশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের শোভা এবং সৎ কার্য - যার ফল স্থায়ী, ওটা তোমার রবের নিকট পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং বাঞ্ছা লাভের ব্যাপারেও উৎকৃষ্ট। ৪৬
2187 ১৮. আল-কাহফ আর যেদিন আমি পাহাড়কে চলমান করব এবং তুমি যমীনকে দেখতে পাবে দৃশ্যমান, আর আমি তাদেরকে একত্র করব। অতঃপর তাদের কাউকেই ছাড়ব না। ৪৭
2188 ১৮. আল-কাহফ আর তাদেরকে তোমার রবের নিকট উপস্থিত করা হবে সারিবদ্ধভাবে এবং বলা হবেঃ তোমাদেরকে প্রথমবার যেভাবে সৃষ্টি করেছিলাম সেভাবেই তোমরা আমার নিকট উপস্থিত হয়েছ; অথচ তোমরা মনে করতে যে, তোমাদের জন্য প্রতিশ্রুত ক্ষণ আমি উপস্থিত করবনা। ৪৮
2189 ১৮. আল-কাহফ এবং সেদিন উপস্থিত করা হবে ‘আমলনামা এবং তাতে যা লিপিবদ্ধ আছে তার কারণে তুমি অপরাধীদেরকে দেখবে আতংকগ্রস্ত এবং তারা বলবেঃ হায়! দুর্ভোগ আমাদের! এটা কেমন গ্রন্থ! ওটাতো ছোট বড় কিছুই বাদ দেয়নি, বরং ওটা সমস্ত হিসাব রেখেছে। তারা তাদের কৃতকর্ম সম্মুখে উপস্থিত পাবে; তোমার রাব্ব কারও প্রতি যুলম করেন না। ৪৯
2190 ১৮. আল-কাহফ এবং স্মরণ কর, আমি যখন মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে বলেছিলামঃ তোমরা আদমের প্রতি নত হও। তখন সবাই নত হল ইবলীস ছাড়া; সে জিনদের একজন, সে তার রবের আদেশ অমান্য করল; তাহলে কি তোমরা আমার পরিবর্তে তাকে ও তার বংশধরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করছ? তারা তো তোমাদের শত্রু; সীমালংঘনকারীদের জন্য রয়েছে কত নিকৃষ্ট বদলা। ৫০
2191 ১৮. আল-কাহফ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিকালে আমি তাদেরকে ডাকিনি এবং তাদের সৃজনকালেও নয়, এবং আমি বিভ্রান্তকারীদের সাহায্য গ্রহণ করার নই। ৫১
2192 ১৮. আল-কাহফ এবং সেদিনের কথা স্মরণ কর যেদিন তিনি বলবেনঃ তোমরা যাদেরকে আমার শরীক মনে করতে তাদেরকে আহবান কর; তারা তখন তাদেরকে আহবান করবে, কিন্তু তারা তাদের আহবানে সাড়া দিবেনা এবং আমি তাদের উভয়ের মধ্যস্থলে রেখে দিব এক ধ্বংস গহবর। ৫২
2193 ১৮. আল-কাহফ পাপীরা আগুন অবলোকন করে আশংকা করবে যেন ওরা ওতেই পতিত হবে, বস্তুতঃ ওটা হতে ওরা পরিত্রাণ পাবেনা। ৫৩
2194 ১৮. আল-কাহফ আমি মানুষের জন্য এই কুরআনে বিভিন্ন উপমার দ্বারা আমার বাণী বিশদভাবে বর্ণনা করেছি; মানুষ অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্ক প্রিয়। ৫৪
2195 ১৮. আল-কাহফ হিদায়াত আসার পর এ প্রতীক্ষাই শুধু মানুষকে বিশ্বাস স্থাপন এবং তাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে বিরত রাখে যে, কখন আসবে তাদের পূর্ব-পুরুষদের অনুরূপ আযাব অথবা কখনই বা তারা তা প্রত্যক্ষ করবে। ৫৫
2196 ১৮. আল-কাহফ আমি শুধু সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারী রূপেই রাসূলদেরকে পাঠিয়ে থাকি, কিন্তু সত্য প্রত্যাখ্যানকারীরা মিথ্যা অবলম্বনে বিতন্ডা করে সত্যকে ব্যর্থ করে দেয়ার জন্য এবং আমার নিদর্শনাবলী ও যদ্বারা তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে সেই সবকে তারা বিদ্রুপের বিষয় রূপে গ্রহণ করে থাকে। ৫৬
2197 ১৮. আল-কাহফ কোন ব্যক্তিকে তার রবের নিদর্শনাবলী স্মরণ করিয়ে দেয়ার পর সে যদি তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং তার কৃতকর্মসমূহ ভুলে যায় তাহলে তার অপেক্ষা অধিক সীমা লংঘনকারী আর কে? আমি তাদের অন্তরের উপর আবরণ দিয়েছি যেন তারা কুরআন বুঝতে না পারে এবং তাদেরকে বধির করেছি; তুমি তাদেরকে সৎ পথে আহবান করলেও তারা কখনও সৎ পথে আসবেনা। ৫৭
2198 ১৮. আল-কাহফ এবং তোমার রাব্ব ক্ষমাশীল, দয়াবান। তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদেরকে শাস্তি দিতে চাইলে তিনি তাদের শাস্তি ত্বরান্বিত করতেন; কিন্তু তাদের জন্য রয়েছে এক প্রতিশ্রুত মুহুর্ত, যা হতে তাদের পরিত্রাণ নেই। ৫৮
2199 ১৮. আল-কাহফ ঐ সব জনপদ - তাদের অধিবাসীবৃন্দকে আমি ধ্বংস করেছিলাম যখন তারা সীমা লংঘন করেছিল এবং তাদের ধ্বংসের জন্য আমি স্থির করেছিলাম এক নির্দিষ্ট ক্ষণ। ৫৯
2200 ১৮. আল-কাহফ স্মরণ কর সেই সময়ের কথা যখন মূসা তার সঙ্গীকে বলেছিলঃ দুই সমুদ্রের সংযোগস্থলে না পৌঁছে আমি থামবনা, আমি যুগ যুগ ধরে চলতে থাকব। ৬০
2201 ১৮. আল-কাহফ তারা যখন উভয়ের সংগমস্থলে পৌঁছল, তারা নিজেদের মাছের কথা ভুলে গেল; ওটা সুরঙ্গের মত পথ করে সমুদ্রে নেমে গেল। ৬১
2202 ১৮. আল-কাহফ যখন তারা আরও অগ্রসর হল, মূসা তার সংগীকে বললঃ আমাদের প্রাতঃরাশ নিয়ে এসো, আমরাতো আমাদের এই সফরে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। ৬২
2203 ১৮. আল-কাহফ সে বললঃ আপনি কি লক্ষ্য করেছেন, আমরা যখন শিলাখন্ডে বিশ্রাম করছিলাম তখন আমি মাছের কথা ভুলে গিয়েছিলাম? শাইতানই এ কথা বলতে আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছিল; মাছটি আশ্চর্যজনকভাবে নিজের পথ করে নেমে গেল সমুদ্রে। ৬৩
2204 ১৮. আল-কাহফ মূসা বললঃ আমরাতো ঐ স্থানটিরই অনুসন্ধান করছিলাম; অতঃপর তারা নিজেদের পদচিহ্ন ধরে ফিরে চলল। ৬৪
2205 ১৮. আল-কাহফ অতঃপর তারা সাক্ষাৎ পেল আমার দাসদের মধ্যে একজনের যাকে আমি আমার নিকট হতে দিয়েছিলাম এক বিশেষ জ্ঞান। ৬৫
2206 ১৮. আল-কাহফ মূসা তাকে বললঃ সত্য পথের যে জ্ঞান আপনাকে দান করা হয়েছে তা হতে আমাকে শিক্ষা দিবেন - এই শর্তে আমি আপনার অনুসরণ করব কি? ৬৬
2207 ১৮. আল-কাহফ সে বললঃ তুমি কিছুতেই আমার সঙ্গে ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারবেনা। ৬৭
2208 ১৮. আল-কাহফ যে বিষয় তোমার জ্ঞানায়ত্ত নয় সে বিষয়ে তুমি ধৈর্য ধারণ করবে কেমন করে? ৬৮
2209 ১৮. আল-কাহফ মূসা বললঃ আল্লাহ চাইলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন এবং আপনার কোন আদেশ আমি অমান্য করবনা। ৬৯
2210 ১৮. আল-কাহফ সে বললঃ আচ্ছা, তুমি যদি আমার অনুসরণ করই তাহলে কোনো বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করনা, যতক্ষণ না আমি সে সম্বন্ধে তোমাকে কিছু বলি। ৭০
2211 ১৮. আল-কাহফ অতঃপর তারা যাত্রা শুরু করল। পরে যখন তারা নৌকায় আরোহণ করল তখন সে তাতে ছিদ্র করে দিল; মূসা বললঃ আপনি কি আরোহীদেরকে নিমজ্জিত করে দেয়ার জন্য তাতে ছিদ্র করলেন? আপনিতো এক গুরুতর অন্যায় কাজ করলেন। ৭১
2212 ১৮. আল-কাহফ সে বললঃ আমি কি বলিনি যে, তুমি আমার সঙ্গে কিছুতেই ধৈর্য ধারণ করতে পারবেনা? ৭২
2213 ১৮. আল-কাহফ মূসা বললঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেননা এবং আমার ব্যাপারে অত্যধিক কঠোরতা অবলম্বন করবেননা। ৭৩
2214 ১৮. আল-কাহফ অতঃপর তারা চলতে লাগল, চলতে চলতে তাদের সাথে এক বালকের সাক্ষাৎ হলে সে তাকে হত্যা করল; তখন মূসা বললঃ আপনি এক নিস্পাপ জীবন নাশ করলেন হত্যার অপরাধ ছাড়াই! আপনিতো এক গুরুতর অন্যায় কাজ করলেন। ৭৪
2215 ১৮. আল-কাহফ সে বললঃ আমি কি বলিনি যে, তুমি আমার সাথে কিছুতেই ধৈর্য ধারণ করতে পারবেনা? ৭৫
2216 ১৮. আল-কাহফ (মূসা) বললঃ এরপর যদি আমি আপনাকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞেস করি তাহলে আপনি আমাকে সঙ্গে রাখবেননা; তখন আমার ওযর আপত্তি চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে যাবে। ৭৬
2217 ১৮. আল-কাহফ অতঃপর উভয়ে চলতে লাগল; চলতে চলতে তারা এক জনপদের অধিবাসীদের নিকট পৌঁছল এবং তাদের নিকট খাদ্য চাইল। কিন্তু তারা তাদের মেহমানদারী করতে অস্বীকার করল; অতঃপর সেখানে তারা এক পতনোম্মুখ প্রাচীর দেখতে পেল এবং সে ওটাকে সুদৃঢ় করে দিল; (মূসা) বললঃ আপনিতো ইচ্ছা করলে এর জন্য পারিশ্রমিক গ্রহণ করতে পারতেন। ৭৭
2218 ১৮. আল-কাহফ সে বললঃ এখানেই তোমার ও আমার মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হল; যে বিষয়ে তুমি ধৈর্য ধারণ করতে পারনি আমি তার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করছি। ৭৮
2219 ১৮. আল-কাহফ নৌকাটির ব্যাপারে - (কথা এই যে), ওটা ছিল কতিপয় দরিদ্র ব্যক্তির, তারা সমুদ্রে জীবিকা অন্বেষণ করত; আমি ইচ্ছা করলাম নৌকাটিকে ক্রটিযুক্ত করতে; কারণ তাদের সামনে ছিল এক রাজা, যে বল প্রয়োগে প্রত্যেক (নিখুত) নৌকা ছিনিয়ে নিত। ৭৯
2220 ১৮. আল-কাহফ আর কিশোরটি, তার মাতাপিতা ছিল মু’মিন - আমি আশংকা করলাম যে, সে বিদ্রোহাচরণ ও কুফরীর দ্বারা তাদের বিব্রত করবে। ৮০
2221 ১৮. আল-কাহফ অতঃপর আমি চাইলাম যে, তাদের রাব্ব যেন তাদেরকে তার পরিবর্তে এক সন্তান দান করেন যে হবে পবিত্রতায় মহত্তর ও ভক্তি ভালবাসায় ঘনিষ্টতর। ৮১
2222 ১৮. আল-কাহফ আর ঐ প্রাচীরটি - ওটা ছিল নগরবাসী দুই পিতৃহীন কিশোরের, এর নিম্নদেশে আছে তাদের গুপ্তধন এবং তাদের পিতা ছিল সৎকর্ম পরায়ণ। সুতরাং তোমার রাব্ব দয়াপরবশ হয়ে ইচ্ছা করলেন যে, তারা বয়ঃপ্রাপ্ত হোক এবং তারা তোমার রবের দেয়া তাদের ধনভান্ডার উদ্ধার করুক; আমি নিজ হতে কিছু করিনি; তুমি যে বিষয়ে ধৈর্য ধারণে অপারগ হয়েছিলে এটাই তার ব্যাখ্যা। ৮২
2223 ১৮. আল-কাহফ তারা তোমাকে যুলকারনাইন সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করছে; তুমি বলে দাওঃ আমি তোমাদের নিকট তার বিষয় বর্ণনা করব। ৮৩
2224 ১৮. আল-কাহফ আমি তাকে পৃথিবীতে কর্তৃত্ব দিয়েছিলাম এবং প্রত্যেক বিষয়ের উপায় ও পন্থা নির্দেশ করেছিলাম। ৮৪
2225 ১৮. আল-কাহফ সে এক পথ অবলম্বন করল। ৮৫
2226 ১৮. আল-কাহফ চলতে চলতে যখন সে সূর্যের অস্তগমন স্থানে পৌঁছল তখন সে সূর্যকে এক পংকিল পানিতে অস্ত যেতে দেখল এবং সে সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেল; আমি বললামঃ হে যুলকারনাইন! তুমি তাদেরকে শাস্তি দিতে পার অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পার। ৮৬
2227 ১৮. আল-কাহফ সে বললঃ যে কেহ সীমা লংঘন করবে আমি তাকে শাস্তি দিব। অতঃপর সে তার রবের নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে এবং তিনি তাকে কঠিন শাস্তি দিবেন। ৮৭
2228 ১৮. আল-কাহফ তবে যে বিশ্বাস করে এবং সৎ কাজ করে তার জন্য প্রতিদান স্বরূপ আছে কল্যাণ এবং আমার কাজে তাকে সহজ নির্দেশ দিব। ৮৮
2229 ১৮. আল-কাহফ আবার সে এক পথ ধরল। ৮৯
2230 ১৮. আল-কাহফ চলতে চলতে যখন সে সূর্যোদয় স্থলে পৌঁছল তখন সে দেখলো - ওটা এমন এক সম্প্রদায়ের উপর উদিত হচ্ছে যাদের জন্য সূর্য তাপ হতে আত্মরক্ষার কোন অন্তরাল আমি সৃষ্টি করিনি। ৯০
2231 ১৮. আল-কাহফ প্রকৃত ঘটনা এটাই যে, তার বৃত্তান্ত আমি সম্যক অবগত আছি। ৯১
2232 ১৮. আল-কাহফ আবার সে এক পথ ধরল। ৯২
2233 ১৮. আল-কাহফ চলতে চলতে সে যখন পর্বত প্রাচীরের মধ্যবর্তী স্থানে পৌঁছল তখন সেখানে সে এক সম্প্রদায়কে পেল যারা তার কথা মোটেই বুঝতে পারছিলনা। ৯৩
2234 ১৮. আল-কাহফ তারা বললঃ হে যুলকারনাইন! ইয়াজুজ ও মা‘জুজ পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করছে; আমরা কি তোমাকে রাজস্ব দিব এই শর্তে যে, তুমি আমাদের ও তাদের মধ্যে এক প্রাচীর গড়ে দিবে? ৯৪
2235 ১৮. আল-কাহফ সে বললঃ আমার রাব্ব আমাকে যে ক্ষমতা দিয়েছেন তা’ই উৎকৃষ্ট; সুতরাং তোমরা আমাকে শ্রম দ্বারা সাহায্য কর, আমি তোমাদের ও তাদের মধ্যস্থলে এক মাযবূত প্রাচীর গড়ে দিব। ৯৫
2236 ১৮. আল-কাহফ তোমরা আমার নিকট লৌহপিন্ডসমূহ আনয়ন কর; অতঃপর মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থান পূর্ণ হয়ে যখন লৌহস্ত্তপ দুই পর্বতের সমান হল তখন সে বললঃ তোমরা হাঁপরে দম দিতে থাক। যখন ওটা অগ্নিবৎ উত্তপ্ত হল তখন সে বললঃ তোমরা গলিত তামা নিয়ে এসো, আমি ওটা ঢেলে দিই ওর উপর। ৯৬
2237 ১৮. আল-কাহফ এরপর ইয়াজুজ ও মা’জুজ তা অতিক্রম করতে পারলনা বা ভেদ করতে পারলনা। ৯৭
2238 ১৮. আল-কাহফ যুলকারনাইন বললঃ এটা আমার রবের অনুগ্রহ; যখন আমার রবের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ হবে তখন তিনি ওটাকে চূর্ন-বিচূর্ণ করে দিবেন এবং আমার রবের প্রতিশ্রুতি সত্য। ৯৮
2239 ১৮. আল-কাহফ সেদিন আমি তাদেরকে ছেড়ে দিব একের পর এক তরঙ্গের আকারে এবং শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে; অতঃপর আমি তাদের সবাইকে একত্রিত করব। ৯৯
2240 ১৮. আল-কাহফ আর সেদিন আমি জাহান্নামকে প্রত্যক্ষভাবে উপস্থিত করব সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের নিকট ১০০
2241 ১৮. আল-কাহফ যাদের চক্ষু ছিল অন্ধ, আমার নিদর্শনের প্রতি এবং যারা শুনতেও ছিল অপারগ। ১০১
2242 ১৮. আল-কাহফ যারা সত্য প্রত্যাখ্যান করেছে তারা কি মনে করে যে, তারা আমার পরিবর্তে আমার বান্দাদেরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করবে? আমি সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের অভ্যর্থনার জন্য প্রস্তুত রেখেছি জাহান্নাম। ১০২
2243 ১৮. আল-কাহফ বলঃ আমি কি তোমাদেরকে সংবাদ দিব কর্মে বিশেষ ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাপারে? ১০৩
2244 ১৮. আল-কাহফ ওরাই তারা, পার্থিব জীবনে যাদের প্রচেষ্টা পন্ড হয়, যদিও তারা মনে করে যে, তারা সৎ কাজ করছে। ১০৪
2245 ১৮. আল-কাহফ ওরাই তারা, যারা অস্বীকার করে তাদের রবের নিদর্শনাবলী ও তাঁর সাথে তাদের সাক্ষাতের বিষয়। ফলে তাদের কাজ নিষ্ফল হয়ে যায়; সুতরাং কিয়ামাত দিবসে তাদের জন্য কোন ওজনের ব্যবস্থা রাখব না। ১০৫
2246 ১৮. আল-কাহফ জাহান্নাম-এটাই তাদের প্রতিফল, যেহেতু তারা কুফরী করেছে এবং আমার নিদর্শনাবলী ও রাসূলগণকে গ্রহণ করেছে বিদ্রুপের বিষয়স্বরূপ। ১০৬
2247 ১৮. আল-কাহফ যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে তাদের আপ্যায়নের জন্য আছে জান্নাতুল ফিরদাউস। ১০৭
2248 ১৮. আল-কাহফ সেখানে তারা স্থায়ী হবে; তা হতে স্থানান্তর কামনা করবেনা। ১০৮
2249 ১৮. আল-কাহফ বলঃ আমার রবের কথা লিপিবদ্ধ করার জন্য সমুদ্র যদি কালি হয় তাহলেও আমার রবের কথা শেষ হবার পূর্বেই সমুদ্র নিঃশেষ হয়ে যাবে-সাহায্যার্থে এর অনুরূপ আরও সমুদ্র নিয়ে এলেও। ১০৯
2250 ১৮. আল-কাহফ বলঃ আমিতো তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহ একমাত্র ইলাহ। সুতরাং যে তার রবের সাথে সাক্ষাত কামনা করে সে যেন সৎ কাজ করে এবং তার রবের ইবাদাতে কেহকেও শরীক না করে। ১১০
2251 ১৯. মারইয়াম কাফ্ হা ইয়া ‘আঈন সাদ
2252 ১৯. মারইয়াম এটা তোমার রবের অনুগ্রহের বিবরণ, তাঁর দাস যাকারিয়ার প্রতি।
2253 ১৯. মারইয়াম যখন সে তার রাব্বকে আহবান করেছিল নিভৃতে।
2254 ১৯. মারইয়াম সে বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! আমার অস্থি দুর্বল হয়েছে, বার্ধক্যে আমার মস্তক শুভ্রোজ্জ্বল হয়েছে; হে আমার রাব্ব! আপনাকে আহবান করে আমি কখনও ব্যর্থকাম হইনি।
2255 ১৯. মারইয়াম আমি আশংকা করি আমার পর আমার স্বগোত্ররা দীনকে ধ্বংস করে দিবে; আমার স্ত্রী বন্ধ্যা। সুতরাং আপনি আপনার তরফ হতে আমাকে দান করুন উত্তরাধিকারী
2256 ১৯. মারইয়াম যে আমার উত্তরাধিকারী হবে এবং উত্তরাধিকারীত্ব পাবে ইয়াকূবের বংশের এবং হে আমার রাব্ব! তাকে করুন সন্তোষভাজন।
2257 ১৯. মারইয়াম তিনি বললেনঃ হে যাকারিয়া! আমি তোমাকে এক পুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি - তার নাম হবে ইয়াহইয়া। এই নামে আমি পূর্বে কারও নামকরণ করিনি।
2258 ১৯. মারইয়াম সে বললঃ হে আমার রাব্ব! কেমন করে আমার পুত্র হবে যখন আমার স্ত্রী বন্ধ্যা এবং আমি বার্ধক্যের শেষ সীমায় পৌঁছে গেছি!
2259 ১৯. মারইয়াম তিনি বললেনঃ এরূপই হবে। তোমার রাব্ব বললেনঃ এটা আমার জন্য সহজসাধ্য; আমিতো পূর্বে তোমাকে সৃষ্টি করেছি যখন তুমি কিছুই ছিলেনা।
2260 ১৯. মারইয়াম যাকারিয়া বললঃ হে আমার রাব্ব! আমাকে একটি নিদর্শন দিন। তিনি বললেনঃ তোমার নিদর্শন এই যে, তুমি সুস্থাবস্থায় কারও সাথে তিন দিন বাক্যালাপ করবেনা। ১০
2261 ১৯. মারইয়াম অতঃপর সে কক্ষ হতে বের হয়ে তার সম্প্রদায়ের নিকট এলো এবং ইঙ্গিতে তাদেরকে সকাল-সন্ধ্যায় (আল্লাহর) পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করতে বলল। ১১
2262 ১৯. মারইয়াম আমি বললামঃ হে ইয়াহ্ইয়া! এই কিতাব দৃঢ়তার সাথে গ্রহণ কর; আমি তাকে শৈশবেই দান করেছিলাম জ্ঞান ১২
2263 ১৯. মারইয়াম এবং আমার নিকট হতে হৃদয়ের কোমলতা ও পবিত্রতা; সে ছিল সাবধানী ১৩
2264 ১৯. মারইয়াম মাতা-পিতার অনুগত এবং সে ছিলনা উদ্ধ্যত, অবাধ্য ছিলনা। ১৪
2265 ১৯. মারইয়াম তার প্রতি ছিল শান্তি যেদিন সে জন্ম গ্রহণ করে এবং শান্তি যেদিন তার মৃত্যু হয় এবং যেদিন সে পুনরুজ্জীবিত হবে। ১৫
2266 ১৯. মারইয়াম বর্ণনা কর এই কিতাবে উল্লেখিত মারইয়ামের কথা, যখন সে তার পরিবারবর্গ হতে পৃথক হয়ে নিরালায় পূর্ব দিকে এক স্থানে আশ্রয় নিল। ১৬
2267 ১৯. মারইয়াম অতঃপর তাদের হতে নিজেকে আড়াল করার জন্য সে পর্দা করল; অতঃপর আমি তার নিকট আমার রূহকে (জিবরাঈলকে) পাঠালাম, সে তার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করল। ১৭
2268 ১৯. মারইয়াম মারইয়াম বললঃ তুমি যদি (আল্লাহকে) ভয় কর তাহলে আমি তোমা হতে দয়াময়ের কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। ১৮
2269 ১৯. মারইয়াম সে বললঃ আমিতো শুধু তোমার রাব্ব হতে প্রেরিত, তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করার (সুসংবাদ জানানোর) জন্য। ১৯
2270 ১৯. মারইয়াম মারইয়াম বললঃ কেমন করে আমার পুত্র হবে যখন আমাকে কোন পুরুষ স্পর্শ করেনি এবং আমি ব্যভিচারিণীও নই। ২০
2271 ১৯. মারইয়াম সে বললঃ এরূপই হবে; তোমার রাব্ব বলেছেন - এটা আমার জন্য সহজ সাধ্য এবং তাকে আমি এ জন্য সৃষ্টি করব যেন সে হয় মানুষের জন্য এক নিদর্শন এবং আমার নিকট হতে এক অনুগ্রহ; এটাতো এক স্থিরীকৃত ব্যাপার। ২১
2272 ১৯. মারইয়াম অতঃপর সে গর্ভে সন্তান ধারণ করল এবং ঐ অবস্থায় এক দূরবর্তী স্থানে চলে গেল। ২২
2273 ১৯. মারইয়াম প্রসব বেদনা তাকে এক খর্জুর বৃক্ষ তলে আশ্রয় নিতে বাধ্য করল; সে বললঃ হায়! এর পূর্বে আমি যদি মরে যেতাম এবং লোকের স্মৃতি হতে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হতাম! ২৩
2274 ১৯. মারইয়াম মালাক/ফেরেশতা তার নিম্ন পার্শ্ব হতে আহবান করে তাকে বললঃ তুমি দুঃখ করনা, তোমার পাদদেশে তোমার রাব্ব এক নহর সৃষ্টি করেছেন। ২৪
2275 ১৯. মারইয়াম তুমি তোমার দিকে খেজুর বৃক্ষের কান্ডে নাড়া দাও, ওটা তোমাকে সুপক্ক তাজা খেজুর দান করবে। ২৫
2276 ১৯. মারইয়াম সুতরাং আহার কর, পান কর ও চক্ষু জুড়িয়ে নাও; মানুষের মধ্যে কেহকে যদি তুমি দেখ তখন বলঃ আমি দয়াময়ের উদ্দেশে মৌনতা অবলম্বনের মানত করেছি; সুতরাং আজ আমি কিছুতেই কোন মানুষের সাথে বাক্যালাপ করবনা। ২৬
2277 ১৯. মারইয়াম অতঃপর সে সন্তানকে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের নিকট উপস্থিত হল; তারা বললঃ হে মারইয়াম! তুমিতো এক অদ্ভুত কান্ড করেছ! ২৭
2278 ১৯. মারইয়াম হে হারূন ভগ্নি! তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিলনা এবং তোমার মাতাও ছিলনা ব্যভিচারিণী। ২৮
2279 ১৯. মারইয়াম অতঃপর মারইয়াম ইঙ্গিতে সন্তানকে দেখাল; তারা বললঃ যে কোলের শিশু তার সাথে আমরা কেমন করে কথা বলব? ২৯
2280 ১৯. মারইয়াম সে (ঈসা) বললঃ আমিতো আল্লাহর দাস; তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন, আমাকে নাবী করেছেন। ৩০
2281 ১৯. মারইয়াম যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে আশিষ ভাজন করেছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যত দিন জীবিত থাকি ততদিন সালাত ও যাকাত আদায় করতে ৩১
2282 ১৯. মারইয়াম আর আমার মাতার প্রতি অনুগত থাকতে এবং তিনি আমাকে করেননি উদ্ধত ও হতভাগা। ৩২
2283 ১৯. মারইয়াম আমার প্রতি শান্তি যেদিন আমি জন্ম লাভ করেছি ও শান্তি থাকবে যেদিন আমার মৃত্যু হবে এবং যেদিন আমি জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হব। ৩৩
2284 ১৯. মারইয়াম এই মারইয়াম তনয় ঈসা! আমি বললাম সত্য কথা, যে বিষয়ে তারা বিতর্ক করে। ৩৪
2285 ১৯. মারইয়াম সন্তান গ্রহণ করা আল্লাহর কাজ নয়, তিনি পবিত্র, মহিমাময়; তিনি যখন কিছু স্থির করেন তখন বলেনঃ ‘হও’ এবং তা হয়ে যায়। ৩৫
2286 ১৯. মারইয়াম আল্লাহই আমার রাব্ব এবং তোমাদের রাব্ব। সুতরাং তাঁর ইবাদাত কর, এটাই সরল পথ। ৩৬
2287 ১৯. মারইয়াম অতঃপর দলগুলি নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি করল; সুতরাং এই কাফিরদের মহা দিনের আগমনে ভীষণ দুর্দশা রয়েছে। ৩৭
2288 ১৯. মারইয়াম তারা যেদিন আমার নিকট আসবে সেদিন তারা কত স্পষ্ট শুনবে ও দেখবে! কিন্তু সীমা লংঘনকারীরা আজ স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছে। ৩৮
2289 ১৯. মারইয়াম তাদেরকে সতর্ক করে দাও পরিতাপের দিন সম্বন্ধে, যখন সকল সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে; এখন তারা অনুধাবন এবং বিশ্বাস স্থাপন করবেনা। ৩৯
2290 ১৯. মারইয়াম চূড়ান্ত মালিকানার অধিকারী আমি, পৃথিবীর এবং ওর উপর যা আছে তাদেরও এবং তারা আমারই নিকট প্রত্যানীত হবে। ৪০
2291 ১৯. মারইয়াম বর্ণনা কর এই কিতাবে উল্লিখিত ইবরাহীমের কথা; সে ছিল সত্যবাদী ও নাবী। ৪১
2292 ১৯. মারইয়াম যখন সে তার পিতাকে বললঃ হে আমার পিতা! যে শোনেনা, দেখেনা এবং তোমার কোন কাজে আসেনা তুমি তার ইবাদাত কর কেন? ৪২
2293 ১৯. মারইয়াম হে আমার পিতা! আমার নিকটতো এসেছে জ্ঞান যা তোমার নিকট আসেনি। সুতরাং আমার অনুসরণ কর, আমি তোমায় সঠিক পথ দেখাব। ৪৩
2294 ১৯. মারইয়াম হে আমার পিতা! শাইতানের ইবাদাত করনা; শাইতান আল্লাহর অবাধ্য। ৪৪
2295 ১৯. মারইয়াম হে আমার পিতা! আমি আশংকা করি, তোমাকে আল্লাহর শাস্তি স্পর্শ করবে এবং তুমি শাইতানের সাথী হয়ে পড়বে। ৪৫
2296 ১৯. মারইয়াম পিতা বললঃ হে ইবরাহীম! তুমি কি আমার দেব-দেবী হতে বিমুখ হচ্ছ? যদি নিবৃত্ত না হও তাহলে আমি প্রস্তরাঘাতে তোমার প্রাণ নাশ করবই; তুমি চিরদিনের জন্য আমার নিকট হতে দূর হয়ে যাও। ৪৬
2297 ১৯. মারইয়াম ইবরাহীম বললঃ তোমার নিকট হতে বিদায়; আমি আমার রবের নিকট তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব, তিনি আমার প্রতি অতিশয় অনুগ্রহশীল। ৪৭
2298 ১৯. মারইয়াম আমি তোমাদের দিক হতে এবং তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদের ইবাদাত কর তাদের দিক হতে পৃথক হচ্ছি; আমি আমার রবের আহবান করি; আশা করি আমার রবের আহবান করে আমি ব্যর্থকাম হবনা। ৪৮
2299 ১৯. মারইয়াম অতঃপর সে যখন তাদের থেকে এবং তারা আল্লাহ ব্যতীত যাদের ইবাদাত করত সেই সব হতে পৃথক হয়ে গেল তখন আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়াকূব এবং প্রত্যেককে নাবী করলাম। ৪৯
2300 ১৯. মারইয়াম এবং তাদেরকে আমি দান করলাম আমার অনুগ্রহ ও তাদের দিলাম সমুচ্চ বংশ। ৫০
2301 ১৯. মারইয়াম এই কিতাবে উল্লেখিত মূসার কথা বর্ণনা কর, সে ছিল বিশুদ্ধ চিত্ত এবং সে ছিল রাসূল, নাবী। ৫১
2302 ১৯. মারইয়াম আমি তাকে আহবান করেছিলাম তূর পর্বতের দক্ষিণ দিক হতে এবং আমি গুঢ়তত্ত্ব আলোচনারত অবস্থায় তাকে নিকটবর্তী করেছিলাম। ৫২
2303 ১৯. মারইয়াম আমি নিজ অনুগ্রহে তাকে দিলাম তার ভাই হারূনকে, নাবীরূপে। ৫৩
2304 ১৯. মারইয়াম এই কিতাবে উল্লেখিত ইসমাঈলের কথা বর্ণনা কর, সে ছিল প্রতিশ্রুতি পালনে সত্যাশ্রয়ী এবং সে ছিল রাসূল, নাবী। ৫৪
2305 ১৯. মারইয়াম সে তার পরিজনবর্গকে সালাত ও যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিত এবং সে ছিল তার রবের সন্তোষভাজন। ৫৫
2306 ১৯. মারইয়াম এই কিতাবে উল্লেখিত ইদরীসের কথা বর্ণনা কর, সে ছিল সত্যবাদী নাবী। ৫৬
2307 ১৯. মারইয়াম এবং আমি তাকে দান করেছিলাম উচ্চ মর্যাদা। ৫৭
2308 ১৯. মারইয়াম নাবীদের মধ্যে যাদেরকে আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন এরাই তারা, আদমের এবং যাদেরকে আমি নূহের সাথে নৌকায় আরোহণ করিয়েছিলাম তাদের বংশদ্ভুত, ইবরাহীম ও ইসরাঈলের বংশদ্ভুত ও যাদেরকে আমি পথ নির্দেশ করেছিলাম ও মনোনীত করেছিলাম তাদের অন্তর্ভুক্ত; তাদের নিকট দয়াময়ের আয়াত আবৃত্তি করা হলে তারা সাজদাহয় লুটিয়ে পড়ত ক্রন্দন করতে করতে। [সাজদাহ] ৫৮
2309 ১৯. মারইয়াম তাদের পরে এলো অপদার্থ পরবর্তীরা; তারা সালাত নষ্ট করল ও লালসা পরবশ হল; সুতরাং তারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। ৫৯
2310 ১৯. মারইয়াম কিন্তু তারা নয় - যারা তাওবাহ করেছে, ঈমান আনয়ন করেছে ও সৎ কাজ করেছে; তারাতো জান্নাতে প্রবেশ করবে, তাদের প্রতি কোন যুলম করা হবেনা ৬০
2311 ১৯. মারইয়াম এটা স্থায়ী জান্নাত, যে অদৃশ্য বিষয়ের প্রতিশ্রুতি দয়াময় তাঁর বান্দাদেরকে দিয়েছেন, তাঁর প্রতিশ্রুত বিষয় অবশ্যম্ভাবী। ৬১
2312 ১৯. মারইয়াম সেখানে তারা শান্তি ছাড়া কোন অসার বাক্য শুনবেনা এবং সেখানে সকাল-সন্ধ্যা তাদের জন্য থাকবে জীবনোপকরণ। ৬২
2313 ১৯. মারইয়াম এই সেই জান্নাত, যার অধিকারী করব আমি আমার বান্দাদের মধ্যে মুত্তাকীদেরকে। ৬৩
2314 ১৯. মারইয়াম আমরা আপনার রবের আদেশ ব্যতীত অবতরণ করিনা; যা আমাদের অগ্রে ও পশ্চাতে আছে এবং যা এই দু’এর অন্তবর্তী তা তাঁরই এবং তোমার রাব্ব কোনো কিছু ভুলেননা। ৬৪
2315 ১৯. মারইয়াম তিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী এবং এতদুভয়ের অন্তর্বতী যা কিছু আছে সবারই রাব্ব; সুতরাং তুমি তাঁরই ইবাদাতে ধৈর্যশীল থাক; তুমি কি তাঁর সমগুণ সম্পন্ন কেহকে জান? ৬৫
2316 ১৯. মারইয়াম মানুষ বলেঃ আমার মৃত্যু হলে আমি কি জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হব? ৬৬
2317 ১৯. মারইয়াম মানুষ কি স্মরণ করেনা যে, আমি তাকে পূর্বে সৃষ্টি করেছি যখন সে কিছুই ছিলনা? ৬৭
2318 ১৯. মারইয়াম সুতরাং শপথ তোমার রবের! আমিতো তাদেরকে শাইতানদেরসহ একত্রে সমবেত করবই এবং পরে আমি তাদেরকে নতজানু অবস্থায় জাহান্নামের চতুর্দিকে উপস্থিত করবই। ৬৮
2319 ১৯. মারইয়াম অতঃপর প্রত্যেক দলের মধ্যে যে দয়াময়ের প্রতি সর্বাধিক অবাধ্য আমি তাকে টেনে বের করবই। ৬৯
2320 ১৯. মারইয়াম তারপর আমিতো তাদের মধ্যে যারা জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ হওয়ার অধিকতর যোগ্য তাদের বিষয় ভাল জানি। ৭০
2321 ১৯. মারইয়াম এবং তোমাদের প্রত্যেকেই ওটা অতিক্রম করবে; ওটা তোমার রবের অনিবার্য সিদ্ধান্ত। ৭১
2322 ১৯. মারইয়াম পরে আমি মুত্তাকীদেরকে উদ্ধার করব এবং যালিমদের সেখানে নতজানু অবস্থায় রেখে দিব। ৭২
2323 ১৯. মারইয়াম তাদের নিকট আমার সুস্পষ্ট আয়াত আবৃত্তি করা হলে কাফিরেরা মু’মিনদেরকে বলেঃ দু’ দলের মধ্যে কোনটি মর্যাদায় শ্রেয়তর ও মজলিস হিসাবে কোনটি উত্তম? ৭৩
2324 ১৯. মারইয়াম তাদের পূর্বে কত মানবগোষ্ঠীকে আমি ধ্বংস করেছি যারা তাদের অপেক্ষা সম্পদ ও বাহ্য দৃষ্টিতে শ্রেষ্ঠ ছিল। ৭৪
2325 ১৯. মারইয়াম বলঃ যারা বিভ্রান্তিতে আছে, দয়াময় তাদেরকে প্রচুর অবকাশ দিবেন যতক্ষণ না তারা, যে বিষয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হচ্ছে তা প্রত্যক্ষ করবে, তা শাস্তি হোক অথবা কিয়ামাতই হোক; অতঃপর তারা জানতে পারবে কে মর্যাদায় নিকৃষ্ট এবং কে দলবলে দুর্বল। ৭৫
2326 ১৯. মারইয়াম এবং যারা সৎ পথে চলে আল্লাহ তাদেরকে অধিক হিদায়াত দান করেন এবং স্থায়ী সৎ কাজ তোমার রবের পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং প্রতিদান হিসাবেও শ্রেষ্ঠ। ৭৬
2327 ১৯. মারইয়াম তুমি কি লক্ষ্য করেছ তাকে, যে আমার আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান করে এবং বলেঃ আমাকে ধন সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দেয়া হবেই। ৭৭
2328 ১৯. মারইয়াম সে কি অদৃশ্য সম্বন্ধে অবহিত হয়েছে অথবা দয়াময়ের নিকট হতে প্রতিশ্রুতি লাভ করেছে? ৭৮
2329 ১৯. মারইয়াম কখনই নয়, তারা যা বলে আমি তা লিখে রাখবো এবং তাদের শাস্তি বৃদ্ধি করতে থাকব। ৭৯
2330 ১৯. মারইয়াম সে যে বিষয়ের কথা বলে তা থাকবে আমার অধিকারে এবং সে আমার নিকট আসবে একা। ৮০
2331 ১৯. মারইয়াম তারা আল্লাহ ছাড়া অন্য কেহকে মা‘বূদ রূপে গ্রহণ করে এ জন্য যে, যাতে তারা তাদের সহায় হয়। ৮১
2332 ১৯. মারইয়াম কখনই নয়; তারা তাদের ইবাদাত অস্বীকার করবে এবং তাদের বিরোধী হয়ে যাবে। ৮২
2333 ১৯. মারইয়াম তুমি কি লক্ষ্য করনা যে, আমি কাফিরদের জন্য শাইতানদেরকে ছেড়ে রেখেছি তাদেরকে মন্দ কর্মে বিশেষভাবে প্রলুব্ধ করার জন্য। ৮৩
2334 ১৯. মারইয়াম সুতরাং তাদের বিষয়ে তাড়া করনা; আমিতো গণনা করছি তাদের নির্ধারিত কাল। ৮৪
2335 ১৯. মারইয়াম যেদিন আমি দয়াময়ের নিকট মুত্তাকীদের সম্মানিত মেহমান রূপে সমবেত করব। ৮৫
2336 ১৯. মারইয়াম এবং অপরাধীদেরকে পিপাসার্ত অবস্থায় জাহান্নামের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাব। ৮৬
2337 ১৯. মারইয়াম যে দয়াময়ের নিকট প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছে সে ব্যতীত অন্য কারও সুপারিশ করার ক্ষমতা থাকবেনা। ৮৭
2338 ১৯. মারইয়াম তারা বলেঃ দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন। ৮৮
2339 ১৯. মারইয়াম তোমরাতো এক ভয়ংকর কথার অবতারণা করেছ। ৮৯
2340 ১৯. মারইয়াম এতে যেন আকাশসমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাবে, পৃথিবী খন্ড বিখন্ড হবে এবং পর্বতসমূহ চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে ৯০
2341 ১৯. মারইয়াম যেহেতু তারা দয়াময়ের উপর সন্তান আরোপ করে। ৯১
2342 ১৯. মারইয়াম অথচ সন্তান গ্রহণ করা দয়াময়ের জন্য শোভন নয়। ৯২
2343 ১৯. মারইয়াম আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে এমন কেহ নেই যে দয়াময়ের নিকট উপস্থিত হবেনা বান্দা রূপে। ৯৩
2344 ১৯. মারইয়াম তিনি তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন এবং তিনি তাদেরকে বিশেষভাবে গণনা করেছেন। ৯৪
2345 ১৯. মারইয়াম এবং কিয়ামাত দিবসে তাদের সকলেই তাঁর নিকট আসবে একাকী অবস্থায়। ৯৫
2346 ১৯. মারইয়াম যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে দয়াময় তাদের জন্য সৃষ্টি করবেন ভালবাসা। ৯৬
2347 ১৯. মারইয়াম আমিতো তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি যাতে তুমি ওর দ্বারা মুত্তাকীদেরকে সুসংবাদ দিতে পার এবং বিতন্ডা প্রবণ সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পার। ৯৭
2348 ১৯. মারইয়াম তাদের পূর্বে আমি কত মানব গোষ্ঠীকে বিনাশ করেছি! তুমি কি তাদের কেহকেও দেখতে পাও অথবা ক্ষীণতম শব্দও শুনতে পাও? ৯৮
2349 ২০. ত্ব-হা ত্ব-হা
2350 ২০. ত্ব-হা তোমাকে ক্লেশ দেয়ার জন্য আমি তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করিনি।
2351 ২০. ত্ব-হা বরং যারা ভয় করে তাদের উপদেশার্থে
2352 ২০. ত্ব-হা যিনি সমুচ্চ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এটা তাঁর নিকট হতে অবতীর্ণ।
2353 ২০. ত্ব-হা দয়াময় (আল্লাহ্‌) আরশে সমুন্নত।
2354 ২০. ত্ব-হা যা আছে আকাশমন্ডলীতে, পৃথিবীতে, এ দু’য়ের অন্তর্বতী স্থানে ও ভূগর্ভে তা তাঁরই।
2355 ২০. ত্ব-হা তুমি যদি উচ্চ কন্ঠে বল, তিনি যা গুপ্ত ও অব্যক্ত সবই জানেন।
2356 ২০. ত্ব-হা আল্লাহ! তিনি ছাড়া অন্য কোন মা‘বূদ নেই, সমস্ত উত্তম নাম তাঁরই।
2357 ২০. ত্ব-হা মূসার বৃত্তান্ত তোমার কাছে পৌঁছেছে কি?
2358 ২০. ত্ব-হা সে যখন আগুন দেখল তখন তার পরিবারবর্গকে বললঃ তোমরা এখানে থাক আমি আগুন দেখেছি; সম্ভবতঃ আমি তোমাদের জন্য তা হতে কিছু জ্বলন্ত অঙ্গার আনতে পারবো অথবা ওর নিকটে কোন পথ প্রদর্শক পাব। ১০
2359 ২০. ত্ব-হা অতঃপর যখন সে আগুনের নিকট এলো তখন আহবান করে বলা হলঃ হে মূসা! ১১
2360 ২০. ত্ব-হা আমিই তোমার রাব্ব। অতএব তোমার পাদুকা খুলে ফেলো, কারণ তুমি পবিত্র তূওয়া উপত্যকায় রয়েছ। ১২
2361 ২০. ত্ব-হা এবং আমি তোমাকে মনোনীত করেছি, অতএব যা অহী প্রেরণ করা হচ্ছে তুমি তা মনোযোগের সাথে শ্রবণ কর। ১৩
2362 ২০. ত্ব-হা আমি আল্লাহ! আমি ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই; অতএব আমার ইবাদাত কর এবং আমার স্মরণার্থে সালাত কায়েম কর। ১৪
2363 ২০. ত্ব-হা কিয়ামাত অবশ্যম্ভাবী, আমি এটা গোপন রাখতে চাই যাতে প্রত্যেকেই নিজ কর্মানুযায়ী ফল লাভ করতে পারে। ১৫
2364 ২০. ত্ব-হা সুতরাং যে ব্যক্তি কিয়ামাত বিশ্বাস করেনা এবং নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে সে যেন তোমাকে তাতে বিশ্বাস স্থাপনে প্রবৃত্ত না করে, তাহলে তুমি ধ্বংস হয়ে যাবে। ১৬
2365 ২০. ত্ব-হা হে মূসা! তোমার ডান হাতে ওটা কি? ১৭
2366 ২০. ত্ব-হা সে বললঃ এটা আমার লাঠি; আমি এতে ভর দিই এবং এটা দ্বারা আঘাত করে আমি আমার মেষপালের জন্য বৃক্ষ পত্র ফেলে থাকি এবং এটা আমার অন্যান্য কাজেও লাগে। ১৮
2367 ২০. ত্ব-হা (আল্লাহ) বললেনঃ হে মূসা! তুমি ওটা নিক্ষেপ কর। ১৯
2368 ২০. ত্ব-হা অতঃপর সে তা নিক্ষেপ করল, সাথে সাথে তা সাপ হয়ে ছুটতে লাগল। ২০
2369 ২০. ত্ব-হা তিনি বললেনঃ তুমি একে ধর। ভয় করনা, আমি একে এর পূর্বরূপে ফিরিয়ে দিব। ২১
2370 ২০. ত্ব-হা এবং তুমি হাত বগলে রাখ, ওটি বের হয়ে আসবে নির্মল উজ্জ্বল হয়ে অপর এক নিদর্শন স্বরূপ। ২২
2371 ২০. ত্ব-হা এটা এ জন্য যে, আমি তোমাকে দেখাবো আমার মহা নিদর্শনগুলির কিছু। ২৩
2372 ২০. ত্ব-হা ফির‘আউনের নিকট যাও, সে সীমালংঘন করেছে। ২৪
2373 ২০. ত্ব-হা মূসা বললঃ হে আমার রাব্ব! আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিন, ২৫
2374 ২০. ত্ব-হা আমার কাজকে সহজ করে দিন, ২৬
2375 ২০. ত্ব-হা আমার জিহবার জড়তা দূর করে দিন, ২৭ দোয়া
2376 ২০. ত্ব-হা যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে। ২৮
2377 ২০. ত্ব-হা আমার জন্য করে দিন একজন সাহায্যকারী আমার স্বজনবর্গের মধ্য হতে। ২৯
2378 ২০. ত্ব-হা আমার ভাই হারূণ ৩০
2379 ২০. ত্ব-হা তার দ্বারা আমার শক্তি সুদৃঢ় করুন। ৩১
2380 ২০. ত্ব-হা এবং তাকে আমার কাজে অংশী করুন। ৩২
2381 ২০. ত্ব-হা যাতে আমরা আপনার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করতে পারি প্রচুর। ৩৩
2382 ২০. ত্ব-হা এবং আপনাকে স্মরণ করতে পারি অধিক। ৩৪
2383 ২০. ত্ব-হা আপনিতো আমাদের সম্যক দ্রষ্টা। ৩৫
2384 ২০. ত্ব-হা তিনি বললেনঃ হে মূসা, তুমি যা চেয়েছ তা তোমাকে দেয়া হল। ৩৬
2385 ২০. ত্ব-হা এবং আমিতো তোমার প্রতি আর একবার অনুগ্রহ করেছিলাম। ৩৭
2386 ২০. ত্ব-হা যখন আমি তোমার মায়ের অন্তরে ইংগিত দ্বারা নির্দেশ দিয়েছিলাম যা এখানে বর্ণিত হচ্ছে ৩৮
2387 ২০. ত্ব-হা যে, তুমি তাকে সিন্দুকের মধ্যে রাখ, অতঃপর তা নদীতে ভাসিয়ে দাও যাতে নদী ওকে তীরে ঠেলে দেয়, ওকে আমার শত্রু ও তার শত্রু নিয়ে যাবে; আমি আমার নিকট হতে তোমার উপর ভালবাসা ঢেলে দিয়েছিলাম যাতে তুমি আমার দৃষ্টির সামনে প্রতিপালিত হও। ৩৯
2388 ২০. ত্ব-হা যখন তোমার বোন এসে বললঃ আমি কি তোমাদেরকে বলে দিব কে এই শিশুর দায়িত্ব নিবে? তখন আমি তোমাকে তোমার মায়ের নিকট ফিরিয়ে দিলাম যাতে তার চোখ জুড়ায় এবং সে দুঃখ না পায়; এবং তুমি এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে; অতঃপর আমি তোমাকে মনঃপীড়া হতে মুক্তি দিই, আমি তোমাকে বহু পরীক্ষা করেছি। অতঃপর তুমি কয়েক বছর মাদইয়ানবাসীদের মধ্যে ছিলে। হে মূসা! এরপরে তুমি নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হলে। ৪০
2389 ২০. ত্ব-হা এবং আমি তোমাকে আমার নিজের জন্য প্রস্তুত করে নিয়েছি। ৪১
2390 ২০. ত্ব-হা তুমি ও তোমার ভাই আমার নিদর্শনসমূহ সহ যাত্রা শুরু কর এবং আমার স্মরণে তোমরা উভয়ে শৈথিল্য করনা। ৪২
2391 ২০. ত্ব-হা তোমরা উভয়ে ফির‘আউনের নিকট যাও, সেতো সীমালংঘন করেছে। ৪৩
2392 ২০. ত্ব-হা তোমরা তার সাথে নম্র কথা বলবে, হয়তো সে উপদেশ গ্রহণ করবে, অথবা ভয় করবে। ৪৪
2393 ২০. ত্ব-হা তারা বললঃ হে আমাদের রাব্ব! আমরা আশংকা করি যে, সে আমাদেরকে ত্বরায় শাস্তি দিতে উদ্যত হবে অথবা অন্যায় আচরণে সীমালংঘন করবে। ৪৫
2394 ২০. ত্ব-হা তিনি বললেনঃ তোমরা ভয় করনা, আমিতো তোমাদের সংগে আছি, আমি শুনি ও দেখি। ৪৬
2395 ২০. ত্ব-হা সুতরাং তোমরা তার নিকট যাও এবং বলঃ অবশ্যই আমরা তোমার রবের পক্ষ থেকে প্রেরিত রাসূল। সুতরাং আমাদের সাথে বানী ইসরাঈলকে যেতে দাও এবং তাদেরকে কষ্ট দিওনা, আমরাতো তোমার নিকট এনেছি তোমার রবের নিকট হতে নিদর্শন। এবং শান্তি তাদের প্রতি যারা সৎ পথের অনুসরণ করে। ৪৭
2396 ২০. ত্ব-হা আমাদের প্রতি অহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, শাস্তি তার জন্য যে মিথ্যা আরোপ করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়। ৪৮
2397 ২০. ত্ব-হা ফির‘আউন বললঃ হে মূসা! কে তোমাদের রাব্ব? ৪৯
2398 ২০. ত্ব-হা মূসা বললঃ আমার রাব্ব তিনি যিনি প্রত্যেক বস্তুকে তার যোগ্য আকৃতি দান করেছেন; অতঃপর পথ নির্দেশ করেছেন। ৫০
2399 ২০. ত্ব-হা ফির‘আউন বললঃ তাহলে অতীত যুগের লোকদের অবস্থা কি? ৫১
2400 ২০. ত্ব-হা মূসা বললঃ এর জ্ঞান আমার রবের নিকট লিপিবদ্ধ রয়েছে; আমার রাব্ব ভুল করেননা এবং বিস্মৃত হননা। ৫২
2401 ২০. ত্ব-হা যিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে করেছেন বিছানা এবং তাতে করে দিয়েছেন তোমাদের চলার পথ, তিনি আকাশ হতে বারি বর্ষন করেন। আমি উহা দ্বারা বিভিন্ন প্রকারের উদ্ভিদ উৎপন্ন করি। ৫৩
2402 ২০. ত্ব-হা তোমরা আহার কর ও তোমাদের গবাদি পশু চরাও; অবশ্যই এতে নিদর্শন রয়েছে বিবেক সম্পন্নদের জন্য। ৫৪
2403 ২০. ত্ব-হা আমি মাটি হতে তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি; তাতেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে দিব এবং তা হতে পুনর্বার বের করব। ৫৫
2404 ২০. ত্ব-হা আমিতো তাকে আমার সমস্ত নিদর্শন দেখিয়েছিলাম; কিন্তু সে মিথ্যা আরোপ করেছে ও অমান্য করেছে। ৫৬
2405 ২০. ত্ব-হা সে বললঃ হে মূসা! তুমি কি আমাদের নিকট এসেছ তোমার যাদু দ্বারা আমাদেরকে আমাদের দেশ হতে বহিস্কার করে দেয়ার জন্য? ৫৭
2406 ২০. ত্ব-হা আমরাও অবশ্যই তোমার নিকট উপস্থিত করব এর অনুরূপ যাদু। সুতরাং আমাদের ও তোমার মাঝে নির্ধারণ কর এক নির্দিষ্ট সময় এবং এক মধ্যবর্তী স্থান, যার ব্যতিক্রম আমরাও করবনা এবং তুমিও করবেনা। ৫৮
2407 ২০. ত্ব-হা মূসা বললঃ তোমাদের নির্ধারিত সময় উৎসবের দিন এবং সেদিন পূর্বাহ্নে জনগণকে সমবেত করা হোক। ৫৯
2408 ২০. ত্ব-হা অতঃপর ফির‘আউন উঠে গেল এবং তার কৌশলসমূহ একত্রিত করল ও অতঃপর ফিরে এলো। ৬০
2409 ২০. ত্ব-হা মূসা তাদেরকে বললঃ দুর্ভোগ তোমাদের! তোমরা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করনা, তা করলে তিনি তোমাদেরকে শাস্তি দ্বারা সমূলে ধ্বংস করবেন; যে মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে সে’ই ব্যর্থ হয়েছে। ৬১
2410 ২০. ত্ব-হা তারা নিজেদের মধ্যে নিজেদের কাজ সম্বন্ধে বিতর্ক করল এবং তারা গোপনে পরামর্শ করল। ৬২
2411 ২০. ত্ব-হা তারা বললঃ এই দু’জন অবশ্যই যাদুকর, তারা চায় তাদের যাদু দ্বারা তোমাদেরকে তোমাদের দেশ হতে বহিস্কার করতে এবং তোমাদের উৎকৃষ্ট জীবন ব্যবস্থার অস্তিত্ব বিনাশ করতে। ৬৩
2412 ২০. ত্ব-হা অতএব তোমরা তোমাদের যাদু ক্রিয়া সংহত কর, অতঃপর সারিবদ্ধ হয়ে উপস্থিত হও এবং যে আজ জয়ী হবে সেই সফল হবে। ৬৪
2413 ২০. ত্ব-হা তারা বললঃ হে মূসা! হয় তুমি নিক্ষেপ কর অথবা প্রথমে আমরাই নিক্ষেপ করি। ৬৫
2414 ২০. ত্ব-হা মূসা বললঃ বরং তোমরাই নিক্ষেপ কর। তাদের যাদুর প্রভাবে অকস্মাৎ মূসার মনে হল যে, তাদের দড়ি ও লাঠিগুলি ছুটাছুটি করছে। ৬৬
2415 ২০. ত্ব-হা মূসা তার অন্তরে কিছু ভীতি অনুভব করল। ৬৭
2416 ২০. ত্ব-হা আমি বললামঃ ভয় করনা, তুমিই প্রবল। ৬৮
2417 ২০. ত্ব-হা তোমার ডান হাতে যা আছে তা নিক্ষেপ কর, এটা তারা যা করেছে তা গ্রাস করে ফেলবে, তারা যা করেছে তাতো শুধু যাদুকরের কৌশল; যাদুকরেরা যা’ই করুক কখনও সফল হবেনা। ৬৯
2418 ২০. ত্ব-হা অতঃপর যাদুকরেরা সাজদাহবনত হল ও বললঃ আমরা হারূণ ও মূসার রবের প্রতি ঈমান আনলাম। ৭০
2419 ২০. ত্ব-হা ফির‘আউন বললঃ কি, আমি তোমাদের অনুমতি দেয়ার পূর্বেই তোমরা মূসাতে বিশ্বাস স্থাপন করলে! সেতো দেখছি তোমাদের প্রধান, সে তোমাদেরকে যাদু শিক্ষা দিয়েছে; সুতরাং আমি তোমাদেরকে খেজুর বৃক্ষের কান্ডে শূলবিদ্ধ করবই এবং তোমরা অবশ্যই জানতে পারবে আমাদের মধ্যে কার শাস্তি কঠোর ও অধিক স্থায়ী। ৭১
2420 ২০. ত্ব-হা তারা বললঃ আমাদের নিকট যে স্পষ্ট নিদর্শন এসেছে তার উপর এবং যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর উপর তোমাকে কিছুতেই আমরা প্রাধান্য দিবনা, সুতরাং তুমি কর যা তুমি করতে চাও, তুমিতো শুধু এই পার্থিব জীবনের উপর কর্তৃত্ব করতে পার। ৭২
2421 ২০. ত্ব-হা আমরা আমাদের রবের প্রতি ঈমান এনেছি যাতে তিনি ক্ষমা করেন আমাদের অপরাধ এবং তুমি আমাদেরকে যাদু করতে বাধ্য করেছ তা; আর আল্লাহ শ্রেষ্ঠ ও স্থায়ী। ৭৩
2422 ২০. ত্ব-হা যে তার রবের নিকট অপরাধী হয়ে উপস্থিত হবে তার জন্য রয়েছে জাহান্নাম, সেখানে সে মরবেও না, বাঁচবেও না। ৭৪
2423 ২০. ত্ব-হা আর যারা তাঁর নিকট উপস্থিত হবে মু’মিন অবস্থায়, সৎ কাজ করে, তাদের জন্য রয়েছে উচ্চ মর্যাদা – ৭৫
2424 ২০. ত্ব-হা স্থায়ী জান্নাত, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা স্থায়ী হবে এবং এই পুরস্কার তাদেরই জন্য যারা পবিত্র। ৭৬
2425 ২০. ত্ব-হা আমি অবশ্যই মূসার প্রতি প্রত্যাদেশ করেছিলাম এই মর্মে, আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রজনীযোগে বহির্গত হও এবং তাদের জন্য সমুদ্রের মধ্য দিয়ে এক শুস্ক পথ নির্মাণ কর; পিছন হতে এসে তোমাকে ধরে ফেলা হবে এই আশংকা করনা এবং ভয়ও করনা। ৭৭
2426 ২০. ত্ব-হা অতঃপর ফির‘আউন তার সৈন্যবাহিনীসহ তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল, অতঃপর সমুদ্র তাদেরকে সম্পূর্ণ রূপে নিমজ্জিত করল। ৭৮
2427 ২০. ত্ব-হা আর ফির‘আউন তার সম্প্রদায়কে পথভ্রষ্ট করেছিল এবং সৎ পথ দেখায়নি। ৭৯
2428 ২০. ত্ব-হা হে বানী ইসরাঈল! আমিতো তোমাদেরকে তোমাদের শত্রু হতে উদ্ধার করেছিলাম, আমি তোমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তূর পর্বতের দক্ষিণ পার্শ্বে এবং তোমাদের নিকট মান্না ও সালওয়া প্রেরণ করেছিলাম। ৮০
2429 ২০. ত্ব-হা তোমাদেরকে আমি যা দান করেছিলাম তা হতে ভাল ভাল বস্তু আহার কর এবং এই বিষয়ে সীমা লংঘন করনা, করলে তোমাদের উপর আবার ক্রোধ অবধারিত এবং যার উপর আমার ক্রোধ অবধারিত সেতো ধ্বংস হয়ে যায়। ৮১
2430 ২০. ত্ব-হা এবং আমি অবশ্যই ক্ষমাশীল তার প্রতি যে তাওবাহ’ করে, ঈমান আনে, সৎ কাজ করে ও সৎ পথে অবিচল থাকে। ৮২
2431 ২০. ত্ব-হা হে মূসা! তোমার সম্প্রদায়কে পশ্চাতে ফেলে তোমাকে ত্বরা করতে বাধ্য করল কিসে? ৮৩
2432 ২০. ত্ব-হা সে বললঃ এইতো তারা আমার পশ্চাতে এবং হে আমার রাব্ব! আমি ত্বরায় আপনার নিকট এলাম, আপনি সন্তষ্ট হবেন এ জন্য। ৮৪
2433 ২০. ত্ব-হা তিনি বললেনঃ আমি তোমার সম্প্রদায়কে পরীক্ষায় ফেলেছি তোমার চলে আসার পর এবং সামেরী তাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে। ৮৫
2434 ২০. ত্ব-হা অতঃপর মূসা তার সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে গেল ক্রুদ্ধ হয়ে; সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমাদের রাব্ব কি তোমাদেরকে এক উত্তম প্রতিশ্রুতি দেননি? তাহলে কি প্রতিশ্রুত কাল তোমাদের নিকট সুদীর্ঘ হয়েছে, না তোমরা চেয়েছো তোমাদের প্রতি আপতিত হোক তোমাদের রবের ক্রোধ, যে কারণে তোমরা আমার প্রতি প্রদত্ত অঙ্গীকার ভঙ্গ করলে? ৮৬
2435 ২০. ত্ব-হা তারা বললঃ আমরা তোমার প্রতি প্রদত্ত অঙ্গীকার স্বেচ্ছায় ভঙ্গ করিনি; তবে আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল লোকের অলংকারের বোঝা এবং আমরা তা অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করি, অনুরূপভাবে সামেরীও নিক্ষেপ করে। ৮৭
2436 ২০. ত্ব-হা অতঃপর সে তাদের জন্য গড়লো এক গো-বৎস, এক অবয়ব, যা হাম্বা আওয়াজ করত; তারা বললঃ এটা তোমাদের মা‘বূদ এবং মূসারও মা‘বূদ, কিন্তু মূসা ভুলে গেছে। ৮৮
2437 ২০. ত্ব-হা তাহলে কি তারা দেখেনা যে, ওটা তাদের কথায় সাড়া দেয়না এবং তাদের কোন ক্ষতি অথবা উপকার করার ক্ষমতাও রাখেনা? ৮৯
2438 ২০. ত্ব-হা হারূন তাদেরকে পূর্বেই বলেছিলঃ হে আমার সম্প্রদায়! এটা দ্বারা তো শুধু তোমাদেরকে পরীক্ষায় ফেলা হয়েছে; তোমাদের রাব্ব দয়াময়, সুতরাং তোমরা আমার অনুসরণ কর এবং আমার আদেশ মেনে চল। ৯০
2439 ২০. ত্ব-হা তারা বলেছিলঃ আমাদের নিকট মূসা ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা এর পূজা হতে কিছুতেই বিরত হবনা। ৯১
2440 ২০. ত্ব-হা মূসা বললঃ হে হারূণ! তুমি যখন দেখলে যে, তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে তখন কিসে তোমাকে নিবৃত্ত করল – ৯২
2441 ২০. ত্ব-হা আমার অনুসরণ হতে? তাহলে কি তুমি আমার আদেশ অমান্য করলে? ৯৩
2442 ২০. ত্ব-হা হারূণ বললঃ হে আমার সহোদর! আমার শ্মশ্রু ও কেশ ধরে আকর্ষণ করনা; আমি আশংকা করেছিলাম যে, তুমি বলবেঃ তুমি বানী ইসরাঈলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছ ও আমার বাক্য পালনে যত্নবান হওনি। ৯৪
2443 ২০. ত্ব-হা মূসা বললঃ ওহে সামেরী! তোমার ব্যাপার কি? ৯৫
2444 ২০. ত্ব-হা সে বললঃ আমি যা দেখেছিলাম তারা তা দেখেনি; অতঃপর আমি সেই দূতের পদচিহ্ন হতে এক মুষ্টি নিয়েছিলাম এবং আমি তা নিক্ষেপ করেছিলাম, আর আমার মন আমার জন্য শোভন করেছিল এইরূপ করা। ৯৬
2445 ২০. ত্ব-হা মূসা বললঃ দূর হও, তোমার জীবদ্দশায় তোমার জন্য এটাই রইল যে, তুমি বলবেঃ আমি অস্পৃশ্য এবং তোমার জন্য রইল এক নির্দিষ্ট কাল, তোমার বেলায় যার ব্যতিক্রম হবেনা এবং তুমি তোমার সেই মা‘বূদের প্রতি লক্ষ্য কর যার পূজায় তুমি রত ছিলে; আমরা ওকে জ্বালিয়ে দিবই, অতঃপর ওকে বিক্ষিপ্ত করে সাগরে নিক্ষেপ করবই। ৯৭
2446 ২০. ত্ব-হা তোমাদের ইলাহতো শুধুমাত্র আল্লাহই যিনি ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই, তাঁর জ্ঞান সর্ব বিষয়ে ব্যাপ্ত। ৯৮
2447 ২০. ত্ব-হা পূর্বে যা ঘটেছে উহার সংবাদ আমি এভাবে তোমার নিকট বিবৃত করি এবং আমি আমার নিকট হতে তোমাকে দান করেছি উপদেশ। ৯৯
2448 ২০. ত্ব-হা এটা হতে যে বিমুখ হবে সে কিয়ামাত দিবসে মহাভার বহন করবে। ১০০
2449 ২০. ত্ব-হা তাতে তারা স্থায়ী হবে এবং কিয়ামাত দিবসে এই বোঝা তাদের জন্য কত মন্দ! ১০১
2450 ২০. ত্ব-হা যেদিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে সেই দিন আমি অপরাধীদেরকে দৃষ্টিহীন অবস্থায় সমবেত করব। ১০২
2451 ২০. ত্ব-হা তারা নিজেদের মধ্যে চুপি চুপি বলাবলি করবেঃ তোমরা মাত্র দশ দিন অবস্থান করেছিলে। ১০৩
2452 ২০. ত্ব-হা তারা কি বলবে তা আমি ভাল জানি। তাদের মধ্যে যে অপেক্ষাকৃত সৎ পথে ছিল সে বলবেঃ তোমরা এক দিনের বেশি অবস্থান করনি। ১০৪
2453 ২০. ত্ব-হা তারা তোমাকে পর্বতসমূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে, তুমি বলঃ আমার রাব্ব ওগুলিকে সমূলে উৎপাটন করে বিক্ষিপ্ত করে দিবেন। ১০৫
2454 ২০. ত্ব-হা অতঃপর তিনি ওকে পরিণত করবেন মসৃণ সমতল মাইদানে। ১০৬
2455 ২০. ত্ব-হা যাতে তুমি বক্রতা ও উচ্চতা দেখবেনা। ১০৭
2456 ২০. ত্ব-হা সেদিন তারা আহবানকারীর অনুসরণ করবে, এ ব্যাপারে এদিক ওদিক করতে পারবেনা; দয়াময়ের সামনে সব শব্দ স্তদ্ধ হয়ে যাবে; সুতরাং মৃদু পদধ্বনি ছাড়া তুমি কিছুই শুনতে পাবেনা। ১০৮
2457 ২০. ত্ব-হা দয়াময় যাকে অনুমতি দিবেন ও যার কথা তিনি পছন্দ করবেন সে ব্যতীত কারও সুপারিশ সেদিন কোন কাজে আসবেনা। ১০৯
2458 ২০. ত্ব-হা তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে যা কিছু রয়েছে তা তিনি অবগত, কিন্তু তারা জ্ঞান দ্বারা তাঁকে আয়ত্ত করতে পারে না। ১১০
2459 ২০. ত্ব-হা স্বাধীন, স্বধিষ্ঠ- পালনকর্তার নিকট সকলেই হবে অধোবদন এবং সে’ই ব্যর্থ হবে যে যুলমের ভার বহন করবে। ১১১
2460 ২০. ত্ব-হা এবং যে সৎ কাজ করে মু’মিন হয়, তার আশংকা নেই অবিচারের এবং ক্ষতিরও। ১১২
2461 ২০. ত্ব-হা এ রূপেই আমি কুরআনকে অবতীর্ণ করেছি আরাবী ভাষায় এবং তাতে বিশদভাবে বিবৃত করেছি সতর্কবাণী যাতে তারা ভয় করে অথবা এটা হয় তাদের জন্য উপদেশ। ১১৩
2462 ২০. ত্ব-হা আল্লাহ অতি মহান, প্রকৃত অধিপতি। তোমার প্রতি কুরআনের আয়াত সম্পূর্ণ হবার পূর্বে তুমি ত্বরা করনা এবং বলঃ হে আমার রাব্ব! আমার জ্ঞানকে বৃদ্ধি করুন। ১১৪
2463 ২০. ত্ব-হা আমিতো ইতোপূর্বে আদমের প্রতি নির্দেশ দান করেছিলাম, কিন্তু সে ভুলে গিয়েছিল; আমি তাকে সংকল্পে দৃঢ় পাইনি। ১১৫
2464 ২০. ত্ব-হা স্মরণ কর, যখন আমি মালাইকাগণকে বললামঃ আদমের প্রতি সাজদাহবনত হও, তখন ইবলীস ছাড়া সবাই সাজদাহ করল; সে অমান্য করল। ১১৬
2465 ২০. ত্ব-হা অতঃপর আমি বললামঃ হে আদম! এ তোমার ও তোমার স্ত্রীর শত্রু; সুতরাং সে যেন কিছুতেই তোমাদেরকে জান্নাত হতে বের করে না দেয়, দিলে তোমরা দুঃখ পাবে। ১১৭
2466 ২০. ত্ব-হা তোমার জন্য এটাই রইল যে, তুমি জান্নাতে ক্ষুধার্ত হবেনা এবং নগ্নও হবেনা। ১১৮
2467 ২০. ত্ব-হা এবং তুমি সেখানে পিপাসার্ত হবেনা এবং রৌদ্র ক্লিষ্টও হবেনা। ১১৯
2468 ২০. ত্ব-হা অতঃপর শাইতান তাকে কুমন্ত্রণা দিল; সে বললঃ হে আদম! আমি কি তোমাকে বলে দিব অনন্ত জীবনপ্রদ বৃক্ষের কথা ও অক্ষয় রাজ্যের কথা? ১২০
2469 ২০. ত্ব-হা অতঃপর তারা তা হতে আহার করল; তখন তাদের লজ্জাস্থান তাদের নিকট প্রকাশ হয়ে পড়ল এবং তারা জান্নাতের বৃক্ষপত্র দ্বারা নিজেদেরকে আবৃত করতে লাগল; আদম তার রবের হুকুম অমান্য করল, ফলে সে ভ্রমে পতিত হল ১২১
2470 ২০. ত্ব-হা এরপর তার রাব্ব তাকে মনোনীত করলেন, তার প্রতি ক্ষমা পরায়ণ হলেন এবং তাকে পথ নির্দেশ করলেন। ১২২
2471 ২০. ত্ব-হা তিনি বললেনঃ তোমরা উভয়ে একই সঙ্গে জান্নাত হতে নেমে যাও, তোমরা পরস্পর পরস্পরের শত্রু। পরে আমার পক্ষ হতে তোমাদের নিকট সৎ পথের নির্দেশ এলে, যে আমার পথ অনুসরণ করবে সে বিপথগামী হবেনা ও দুঃখ কষ্ট পাবেনা। ১২৩
2472 ২০. ত্ব-হা যে আমার স্মরণে বিমুখ তার জীবন যাপন হবে সংকুচিত এবং আমি তাকে কিয়ামাত দিবসে উত্থিত করব অন্ধ অবস্থায়। ১২৪
2473 ২০. ত্ব-হা সে বলবেঃ হে আমার রাব্ব! কেন আমাকে অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করলেন? আমিতো ছিলাম চক্ষুস্মান! ১২৫
2474 ২০. ত্ব-হা তিনি বলবেনঃ এ রূপেই আমার নিদর্শনাবলী তোমার নিকট এসেছিল, কিন্তু তুমিতো ভুলে গিয়েছিলে এবং সেভাবে আজ তুমিও বিস্মৃত হলে। ১২৬
2475 ২০. ত্ব-হা এবং এভাবেই আমি প্রতিফল দিই তাকে, যে বাড়াবাড়ি করে এবং তার রবের নিদর্শনে বিশ্বাস স্থাপন করেনা; পরকালের শাস্তিতো অবশ্যই কঠিনতর ও অধিক স্থায়ী। ১২৭
2476 ২০. ত্ব-হা এটাও কি তাদেরকে সৎ পথ দেখালনা যে, আমি তাদের পূর্বে ধ্বংস করেছি কত মানবগোষ্ঠী যাদের বাসভূমিতে তারা বিচরণ করে? অবশ্যই এতে বিবেক সম্পন্নদের জন্য রয়েছে নিদর্শন। ১২৮
2477 ২০. ত্ব-হা তোমার রবের পূর্ব সিদ্ধান্ত এবং এক নির্ধারিত সময় না থাকলে অবশ্যম্ভাবী হত ত্বরিত শাস্তি। ১২৯
2478 ২০. ত্ব-হা সুতরাং তারা যা বলে সে বিষয়ে তুমি ধৈর্য ধারণ কর এবং সূর্যোদয়ের পূর্বে এবং সূর্যাস্তের পূর্বে তোমার রবের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর, এবং রাতে পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর, আর দিনের প্রান্তসমূহে যাতে তুমি সন্তষ্ট হতে পার। ১৩০
2479 ২০. ত্ব-হা তুমি তোমার চক্ষুদ্বয় কখনও প্রসারিত করনা ওর প্রতি যা আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য স্বরূপ উপভোগের উপকরণ হিসাবে দিয়েছি তদ্বারা তাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য। তোমার রাব্ব প্রদত্ত জীবনোপকরণ উৎকৃষ্ট ও অধিক স্থায়ী। ১৩১
2480 ২০. ত্ব-হা আর তোমার পরিবারবর্গকে সালাতের আদেশ দাও এবং তাতে অবিচল থাক। আমি তোমার নিকট কোন জীবনোপকরণ চাইনা, আমিই তোমাকে জীবনোপকরণ দিই এবং শুভ পরিণামতো মুত্তাকীদের জন্য। ১৩২
2481 ২০. ত্ব-হা তারা বলেঃ সে তার রবের নিকট হতে আমাদের জন্য কোন নিদর্শন কেন আনয়ন করেনা? তাদের নিকট কি আসেনি সুস্পষ্ট প্রমাণ যা আছে পূর্ববর্তী গ্রন্থসমূহে? ১৩৩
2482 ২০. ত্ব-হা যদি আমি তাদেরকে ইতোপূর্বে শাস্তি দ্বারা ধ্বংস করতাম তাহলে তারা বলতঃ হে আমাদের রাব্ব! আপনি আমাদের নিকট একজন রাসূল প্রেরণ করলেন না কেন? তা হলে আমরা লাঞ্ছিত ও অপমানিত হবার পূর্বে আপনার নিদর্শন মেনে চলতাম। ১৩৪
2483 ২০. ত্ব-হা বলঃ প্রত্যেকেই প্রতীক্ষা করছে, সুতরাং তোমরাও প্রতীক্ষা কর, অতঃপর তোমরা জানতে পারবে কারা রয়েছে সরল পথে এবং কারা সৎ পথ প্রাপ্ত হয়েছে। ১৩৫
2484 ২১. আল-আম্বিয়া মানুষের হিসাব নিকাশের সময় আসন্ন, কিন্তু তারা উদাসীনতায় মুখ ফিরিয়ে রয়েছে।
2485 ২১. আল-আম্বিয়া যখনই তাদের নিকট তাদের রবের কোন নতুন উপদেশ আসে তখন তারা তা শ্রবণ করে কৌতুকচ্ছলে।
2486 ২১. আল-আম্বিয়া তাদের অন্তর থাকে অমনোযোগী, সীমা লংঘনকারীরা গোপনে পরামর্শ করেঃ এতো তোমাদের মতই একজন মানুষ, তবুও কি তোমরা দেখে শুনে যাদুর কবলে পড়বে?
2487 ২১. আল-আম্বিয়া বলঃ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সমস্ত কথাই আমার রাব্ব অবগত আছেন এবং তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
2488 ২১. আল-আম্বিয়া তারা এটাও বলেঃ এ সব অলীক কল্পনা হয় সে উদ্ভাবন করেছে, না হয় সে একজন কবি; অতএব সে আনয়ন করুক আমাদের নিকট এক নিদর্শন যেরূপ নিদর্শনসহ প্রেরিত হয়েছিল পূর্ববর্তীগণ।
2489 ২১. আল-আম্বিয়া তাদের পূর্বে যে সব জনপদ আমি ধ্বংস করেছি ওর অধিবাসীরা ঈমান আনেনি; তাহলে কি তারা ঈমান আনবে?
2490 ২১. আল-আম্বিয়া তোমার পূর্বে আমি অহীসহ মানুষই পাঠিয়েছিলাম; তোমরা যদি না জান তাহলে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর।
2491 ২১. আল-আম্বিয়া আর আমি তাদেরকে এমন দেহ বিশিষ্ট করিনি যে, তারা আহার্য গ্রহণ করতনা। তারা চিরস্থায়ীও ছিলনা।
2492 ২১. আল-আম্বিয়া অতঃপর আমি তাদের প্রতি আমার প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করলাম, আমি তাদেরকে ও যাদেরকে ইচ্ছা রক্ষা করেছিলাম এবং যালিমদেরকে করেছিলাম ধ্বংস।
2493 ২১. আল-আম্বিয়া আমিতো তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করেছি কিতাব যাতে আছে তোমাদের জন্য উপদেশ, তবুও কি তোমরা বুঝবেনা? ১০
2494 ২১. আল-আম্বিয়া আমি ধ্বংস করেছি কত জনপদ যার অধিবাসীরা ছিল যালিম এবং তাদের পরে সৃষ্টি করেছি অপর জাতি। ১১
2495 ২১. আল-আম্বিয়া অতঃপর যখন তারা আমার শাস্তি প্রত্যক্ষ করল তখনই তারা জনপদ হতে পালাতে লাগল। ১২
2496 ২১. আল-আম্বিয়া তাদেরকে বলা হলঃ পলায়ন করনা এবং ফিরে এসো তোমাদের ভোগ সম্ভারের নিকট এবং তোমাদের আবাসগৃহে, হয়তো এ বিষয়ে তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হতে পারে। ১৩
2497 ২১. আল-আম্বিয়া তারা বললঃ হায় দুর্ভোগ আমাদের! আমরাতো ছিলাম যালিম। ১৪
2498 ২১. আল-আম্বিয়া তাদের এই আর্তনাদ চলতে থাকে যতক্ষণ না আমি তাদেরকে কর্তিত শস্য ও নির্বাপিত আগুন সদৃশ করি। ১৫
2499 ২১. আল-আম্বিয়া আকাশ ও পৃথিবী এবং যা এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে তা আমি ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি। ১৬
2500 ২১. আল-আম্বিয়া আমি যদি ক্রীড়ার উপকরণ চাইতাম তাহলে আমি আমার নিকট যা আছে তা দিয়েই ওটা করতাম, আমি তা করিনি। ১৭
2501 ২১. আল-আম্বিয়া কিন্তু আমি সত্য দ্বারা আঘাত হানি মিথ্যার উপর; ফলে ওটা মিথ্যাকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয় এবং তৎক্ষণাৎ মিথ্যা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। দুর্ভোগ তোমাদের! তোমরা যা বলছ তার জন্য। ১৮
2502 ২১. আল-আম্বিয়া আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা আছে তা তাঁরই, তাঁর সান্নিধ্যে যারা আছে তারা অহংকার করে তাঁর ইবাদাত করা হতে বিমুখ হয়না এবং ক্লান্তিও বোধ করেনা। ১৯
2503 ২১. আল-আম্বিয়া তারা দিন-রাত তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, শৈথিল্য করেনা। ২০
2504 ২১. আল-আম্বিয়া তারা মাটি হতে তৈরী যে সব দেবতা গ্রহণ করেছে সেগুলি কি মৃতকে জীবিত করতে সক্ষম? ২১
2505 ২১. আল-আম্বিয়া আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যদি আল্লাহ ছাড়া বহু মা‘বূদ থাকত তাহলে উভয়ই ধ্বংস হয়ে যেত। অতএব তারা যা বলে তা হতে আরশের রাব্ব (অধিপতি) আল্লাহ পবিত্র, মহান। ২২
2506 ২১. আল-আম্বিয়া তিনি যা করেন সেই বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা যাবেনা; বরং তাদেরকেই প্রশ্ন করা হবে। ২৩
2507 ২১. আল-আম্বিয়া তারা তাঁকে ছাড়া বহু মা‘বূদ গ্রহণ করেছে? বলঃ তোমরা তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর। এটাই আমার সাথে যারা আছে তাদের জন্য উপদেশ এবং এটাই উপদেশ ছিল আমার পূর্ববর্তীদের জন্য। কিন্তু তাদের অধিকাংশই প্রকৃত সত্য জানেনা, ফলে তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়। ২৪
2508 ২১. আল-আম্বিয়া আমি তোমার পূর্বে এমন কোন রাসূল প্রেরণ করিনি তার প্রতি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এই অহী ব্যতীত। সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদাত কর। ২৫
2509 ২১. আল-আম্বিয়া তারা বলেঃ দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন। তিনি পবিত্র মহান! তারাতো তাঁর সম্মানিত বান্দা। ২৬
2510 ২১. আল-আম্বিয়া তারা তাঁর আগে বেড়ে কথা বলে না; তারা তো তাঁর আদেশ অনুসারেই কাজ করে। ২৭
2511 ২১. আল-আম্বিয়া তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে যা কিছু আছে তা তিনি অবগত। তারা সুপারিশ করে শুধু তাদের জন্য যাদের প্রতি তিনি সন্তষ্ট এবং তারা তাঁর ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত। ২৮
2512 ২১. আল-আম্বিয়া তাদের মধ্যে যে বলবেঃ তিনি ব্যতীত আমিই মা‘বূদ, তাকে আমি প্রতিফল দিব জাহান্নাম, এভাবেই আমি যালিমদেরকে প্রতিফল দিয়ে থাকি। ২৯
2513 ২১. আল-আম্বিয়া যারা কুফরী করে তারা কি ভেবে দেখেনা যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী মিশে ছিল ওতপ্রোতভাবে; অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম এবং প্রাণবান সমস্ত কিছু সৃষ্টি করলাম পানি হতে; তবুও কি তারা বিশ্বাস করবেনা? ৩০
2514 ২১. আল-আম্বিয়া এবং আমি পৃথিবীতে সৃষ্টি করেছি সুদৃঢ় পর্বত যাতে পৃথিবী তাদেরকে নিয়ে এদিক-ওদিক টলে না যায় এবং আমি তাতে করে দিয়েছি প্রশস্ত পথ যাতে তারা গন্তব্য স্থলে পৌঁছতে পারে। ৩১
2515 ২১. আল-আম্বিয়া এবং আকাশকে করেছি সুরক্ষিত ছাদ। কিন্তু তারা আকাশস্থিত নিদর্শনাবলী হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়। ৩২
2516 ২১. আল-আম্বিয়া (আল্লাহই) সৃষ্টি করেছেন রাত ও দিন এবং সূর্য ও চাঁদ; প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে বিচরণ করে। ৩৩
2517 ২১. আল-আম্বিয়া আমি তোমার পূর্বেও কোন মানুষকে চিরস্থায়ী জীবন দান করিনি; সুতরাং তোমার মৃত্যু হলে তারা কি চিরঞ্জীব হয়ে থাকবে? ৩৪
2518 ২১. আল-আম্বিয়া জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে; আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভাল দ্বারা বিশেষভাবে পরীক্ষা করি এবং আমারই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। ৩৫
2519 ২১. আল-আম্বিয়া কাফিরেরা যখন তোমাকে দেখে তখন তারা তোমাকে শুধু বিদ্রুপের পাত্র রূপেই গ্রহণ করে। তারা বলেঃ এই কি সে যে তোমাদের দেবতাগুলির সমালোচনা করে? অথচ তারাইতো ‘রাহমান’ এর উল্লেখের বিরোধিতা করে। ৩৬
2520 ২১. আল-আম্বিয়া মানুষ সৃষ্টিগতভাবে ত্বরা প্রবণ, শীঘ্রই আমি তোমাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী দেখাব; সুতরাং তোমরা আমাকে ত্বরা করতে বলনা। ৩৭
2521 ২১. আল-আম্বিয়া আর তারা বলেঃ তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলে বল, এই প্রতিশ্রুতি কখন পূর্ণ হবে? ৩৮
2522 ২১. আল-আম্বিয়া হায়! যদি কাফিরেরা সেই সময়ের কথা জানতো যখন তারা তাদের সম্মুখ ও পশ্চাত হতে আগুন প্রতিরোধ করতে পারবেনা এবং তাদেরকে সাহায্য করাও হবেনা। ৩৯
2523 ২১. আল-আম্বিয়া বস্তুতঃ ওটা তাদের উপর আসবে অতর্কিতে এবং তাদেরকে হতভম্ব করে দিবে; ফলে তারা ওটা রোধ করতে পারবেনা এবং তাদেরকে অবকাশ দেয়া হবেনা। ৪০
2524 ২১. আল-আম্বিয়া তোমার পূর্বেও অনেক রাসূলকেই ঠাট্টা বিদ্রুপ করা হয়েছিল; পরিণামে তারা যা নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করত তা বিদ্রুপকারীদেরকে পরিবেষ্টন করেছিল। ৪১
2525 ২১. আল-আম্বিয়া বলঃ ‘রাহমান’ এর পরিবর্তে কে তোমাদেরকে রক্ষা করছে রাতে ও দিনে? তবুও তারা তাদের রবের স্মরণ হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়। ৪২
2526 ২১. আল-আম্বিয়া তাহলে কি আমি ব্যতীত তাদের এমন আরাধ্য আছে যারা তাদেরকে রক্ষা করতে পারে? তারাতো নিজেদেরকেই সাহায্য করতে পারেনা এবং আমার বিরুদ্ধে তাদের সাহায্যকারীও থাকবেনা। ৪৩
2527 ২১. আল-আম্বিয়া বস্তুতঃ আমিই তাদেরকে এবং তাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে ভোগ সম্ভার দিয়েছিলাম; অধিকন্ত তাদের আয়ুস্কালও হয়েছিল দীর্ঘ; তারা কি দেখছেনা যে, আমি তাদের দেশকে চতুর্দিক হতে সংকুচিত করে আনছি; তবুও কি তারা বিজয়ী হবে? ৪৪
2528 ২১. আল-আম্বিয়া বলঃ আমিতো শুধু অহী দ্বারাই তোমাদেরকে সতর্ক করি, কিন্তু যারা বধির তাদেরকে যখন সতর্ক করা হয় তখন তারা সতর্কবাণী শোনেনা। ৪৫
2529 ২১. আল-আম্বিয়া তোমার রবের শাস্তির কিছুমাত্রও তাদেরকে স্পর্শ করলে তারা নিশ্চয়ই বলে উঠবেঃ হায়! দুর্ভোগ আমাদের, আমরাতো ছিলাম যালিম! ৪৬
2530 ২১. আল-আম্বিয়া এবং কিয়ামাত দিবসে আমি স্থাপন করব ন্যায়বিচারের মানদন্ড। সুতরাং কারও প্রতি কোন অবিচার করা হবেনা এবং কাজ যদি সরিষার দানা পরিমাণ ওজনেরও হয় তাও আমি উপস্থিত করব। হিসাব গ্রহণকারীরূপে আমিই যথেষ্ট। ৪৭
2531 ২১. আল-আম্বিয়া আমিতো মূসা ও হারূনকে দিয়েছিলাম মীমাংসাকারী গ্রন্থ, জ্যোতি এবং মুত্তাকীদের জন্য উপদেশ। ৪৮
2532 ২১. আল-আম্বিয়া যারা না দেখেও তাদের রাব্বকে ভয় করে এবং কিয়ামাত সম্পর্কে থাকে ভীত-সন্ত্রস্ত। ৪৯
2533 ২১. আল-আম্বিয়া এটি কল্যাণময় উপদেশ; আমিই এটি অবতীর্ণ করেছি; তবুও কি তোমরা এটাকে অস্বীকার করবে? ৫০
2534 ২১. আল-আম্বিয়া আমি এর পূর্বে ইবরাহীমকে সৎ পথের জ্ঞান দিয়েছিলাম এবং আমি তার সম্বন্ধে ছিলাম সম্যক অবগত। ৫১
2535 ২১. আল-আম্বিয়া যখন সে তার পিতা ও তার সম্প্রদায়কে বললঃ এই মূর্তিগুলি কি, যাদের পূজায় তোমরা রত রয়েছ? ৫২
2536 ২১. আল-আম্বিয়া তারা বললঃ আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এদের পূজা করতে দেখেছি। ৫৩
2537 ২১. আল-আম্বিয়া সে বললঃ তোমরা নিজেরা এবং তোমাদের পূর্ব-পুরুষরাও রয়েছ স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে। ৫৪
2538 ২১. আল-আম্বিয়া তারা বললঃ তুমি কি আমাদের নিকট সত্য এনেছ, নাকি তুমি কৌতুক করছ? ৫৫
2539 ২১. আল-আম্বিয়া সে বললঃ না, তোমাদের রাব্বতো আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর রাব্ব, যিনি ওগুলি সৃষ্টি করেছেন এবং এই বিষয়ে আমি অন্যতম সাক্ষী। ৫৬
2540 ২১. আল-আম্বিয়া শপথ আল্লাহর! তোমরা চলে গেলে আমি তোমাদের মূর্তিগুলি সম্বন্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা অবলম্বন করব। ৫৭
2541 ২১. আল-আম্বিয়া অতঃপর সে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিল মূর্তিগুলিকে, তাদের বড় (প্রধান) মূর্তিটি ব্যতীত, যাতে তারা তার দিকে ফিরে আসে। ৫৮
2542 ২১. আল-আম্বিয়া তারা বললঃ আমাদের উপাস্যগুলির প্রতি এরূপ করল কে? সে নিশ্চয়ই সীমালংঘনকারী। ৫৯
2543 ২১. আল-আম্বিয়া কেহ কেহ বললঃ আমরা এক যুবককে ওদের সমালোচনা করতে শুনেছি, তাকে বলা হয় ইবরাহীম। ৬০
2544 ২১. আল-আম্বিয়া তারা বললঃ তাকে উপস্থিত কর লোক সম্মুখে, যাতে তারা সাক্ষ্য দিতে পারে। ৬১
2545 ২১. আল-আম্বিয়া তারা বললঃ ইবরাহীম! তুমিই কি আমাদের উপাস্যগুলির উপর এরূপ করেছ? ৬২
2546 ২১. আল-আম্বিয়া সে বললঃ সে’ই তো এটা করেছে, এইতো এদের প্রধান। এদেরকে জিজ্ঞেস কর যদি এরা কথা বলতে পারে। ৬৩
2547 ২১. আল-আম্বিয়া তখন তারা মনে মনে চিন্তা করে দেখল এবং একে অপরকে বলতে লাগলঃ তোমরাইতো সীমালংঘনকারী। ৬৪
2548 ২১. আল-আম্বিয়া অতঃপর তাদের মাথা নত হয়ে গেল এবং তারা বললঃ তুমিতো জানই যে, এরা কথা বলেনা। ৬৫
2549 ২১. আল-আম্বিয়া সে বললঃ তাহলে কি তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদাত কর যারা তোমাদের কোন উপকার করতে পারেনা, ক্ষতিও করতে পারেনা? ৬৬
2550 ২১. আল-আম্বিয়া ধিক তোমাদেরকে এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদাত কর তাদেরকে! তোমরা কি বুঝবেনা? ৬৭
2551 ২১. আল-আম্বিয়া তারা বললঃ তাকে পুড়িয়ে দাও এবং সাহায্য কর তোমাদের দেবতাগুলিকে, যদি তোমরা কিছু করতে চাও। ৬৮
2552 ২১. আল-আম্বিয়া আমি বললামঃ হে আগুন! তুমি ইবরাহীমের জন্য শীতল ও নিরাপদ হয়ে যাও। ৬৯
2553 ২১. আল-আম্বিয়া তারা তার ক্ষতি সাধনের ইচ্ছা করেছিল। কিন্তু আমি তাদেরকে করে দিলাম সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত। ৭০
2554 ২১. আল-আম্বিয়া আর আমি তাকে ও লূতকে উদ্ধার করে নিয়ে গেলাম সেই দেশে যেথায় আমি কল্যাণ রেখেছি বিশ্ববাসীর জন্য। ৭১
2555 ২১. আল-আম্বিয়া এবং আমি ইবরাহীমকে দান করেছিলাম ইসহাক এবং পুরস্কার স্বরূপ ইয়াকূব; এবং প্রত্যেককেই করেছিলাম সৎকর্মপরায়ণ। ৭২
2556 ২১. আল-আম্বিয়া আর আমি তাদেরকে করেছিলাম নেতা; তারা আমার নির্দেশ অনুসারে মানুষকে পথ প্রদর্শন করত। তাদের কাছে আমি অহী প্রেরণ করেছিলাম সৎ কাজ করতে, সালাত কায়েম করতে এবং যাকাত প্রদান করতে; তারা আমারই ইবাদাত করত। ৭৩
2557 ২১. আল-আম্বিয়া এবং লূতকে দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও জ্ঞান, আর তাকে উদ্ধার করেছিলাম এমন এক জনপদ হতে যার অধিবাসীরা লিপ্ত ছিল অশ্লীল কাজে। তারা ছিল এক মন্দ সম্প্রদায়; সত্যত্যাগী। ৭৪
2558 ২১. আল-আম্বিয়া এবং তাকে আমি আমার অনুগ্রহভাজন করেছিলাম; সে ছিল সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত। ৭৫
2559 ২১. আল-আম্বিয়া স্মরণ কর নূহকে; পূর্বে সে যখন আহবান করেছিল তখন আমি সাড়া দিয়েছিলাম তার আহবানে এবং তাকে ও তার পরিজনবর্গকে মহাসংকট হতে উদ্ধার করেছিলাম। ৭৬
2560 ২১. আল-আম্বিয়া এবং আমি তাকে সাহায্য করেছিলাম সেই সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যারা আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করেছিল, তারা ছিল এক মন্দ সম্প্রদায়; এ জন্য তাদের সবাইকে আমি নিমজ্জিত করেছিলাম। ৭৭
2561 ২১. আল-আম্বিয়া এবং স্মরণ কর দাউদ ও সুলাইমানের কথা, যখন তারা বিচার করছিল শস্যক্ষেত্র সম্পর্কে; তাতে রাতে প্রবেশ করেছিল কোন সম্প্রদায়ের মেষ; আমি প্রত্যক্ষ করছিলাম তাদের বিচার। ৭৮
2562 ২১. আল-আম্বিয়া এবং আমি সুলাইমানকে এ বিষয়ের মীমাংসা বুঝিয়ে দিয়েছিলাম এবং তাদের প্রত্যেককে আমি দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও জ্ঞান। আমি পর্বত ও বিহঙ্গকূলের জন্য নিয়ম করে দিয়েছিলাম যেন ওরা দাউদের সাথে আমার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে; এ সমস্ত আমিই করেছিলাম। ৭৯
2563 ২১. আল-আম্বিয়া আমি তাকে তোমাদের জন্য বর্ম নির্মাণ শিক্ষা দিয়েছিলাম যাতে ওটা তোমাদের যুদ্ধে তোমাদেরকে রক্ষা করে; সুতরাং তোমরা কি কৃতজ্ঞ হবেনা? ৮০
2564 ২১. আল-আম্বিয়া এবং সুলাইমানের বশীভূত করে দিয়েছিলাম উদ্দাম বায়ুকে; ওটা তার আদেশক্রমে প্রবাহিত হত সেই দেশের দিকে যেখানে আমি কল্যাণ রেখেছি। প্রত্যেক বিষয় সম্পর্কে আমিই সম্যক অবগত। ৮১
2565 ২১. আল-আম্বিয়া এবং শাইতানদের মধ্যে কতক তার জন্য ডুবুরীর কাজ করত, এটা ছাড়া অন্য কাজও করত; আমি তাদের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতাম। ৮২
2566 ২১. আল-আম্বিয়া আর স্মরণ কর আইয়ুবের কথা, যখন সে তার রাব্বকে আহবান করে বলেছিলঃ আমি দুঃখ কষ্টে পতিত হয়েছি, আপনিতো দয়ালুদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। ৮৩
2567 ২১. আল-আম্বিয়া তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিলাম, তার দুঃখ কষ্ট দূরীভূত করে দিলাম, তাকে তার পরিবার পরিজন ফিরিয়ে দিয়েছিলাম, তাদের সাথে তাদের মত আরও দিয়েছিলাম আমার বিশেষ রাহমাত রূপে এবং ইবাদাতকারীদের জন্য উপদেশ স্বরূপ। ৮৪
2568 ২১. আল-আম্বিয়া আর স্মরণ কর ইসমাঈল, ইদরীস এবং যুলকিফল- এর কথা, তাদের প্রত্যেকেই ছিল ধৈর্যশীল। ৮৫
2569 ২১. আল-আম্বিয়া এবং তাদেরকে আমি আমার অনুগ্রহ ভাজন করেছিলাম, তারা ছিল সৎকর্মপরায়ণ। ৮৬
2570 ২১. আল-আম্বিয়া আর স্মরণ কর যুন-নূন এর কথা, যখন সে ক্রোধভরে বের হয়ে গিয়েছিল এবং মনে করেছিল আমি তার জন্য শাস্তি নির্ধারণ করবনা; অতঃপর সে অন্ধকার হতে আহবান করেছিলঃ আপনি ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই; আপনি পবিত্র, মহান; আমিতো সীমালংঘনকারী। ৮৭
2571 ২১. আল-আম্বিয়া তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম এবং তাকে উদ্ধার করেছিলাম দুশ্চিন্তা হতে এবং এভাবেই আমি মু'মিনদেরকে উদ্ধার করে থাকি। ৮৮
2572 ২১. আল-আম্বিয়া এবং স্মরণ কর যাকারিয়ার কথা, যখন সে তার রাব্বকে আহবান করে বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! আমাকে একা ছেড়ে দিবেননা, আপনি চূড়ান্ত মালিকানার অধিকারী। ৮৯
2573 ২১. আল-আম্বিয়া অতঃপর আমি তার আহবানে সাড়া দিয়েছিলাম এবং তাকে দান করেছিলাম ইয়াহইয়াকে, আর তার জন্য তার স্ত্রীকে যোগ্যতা সম্পন্ন করেছিলাম; তারা সৎকর্মে প্রতিযোগিতা করত, তারা আমাকে ডাকত আশা ও ভীতির সাথে এবং তারা ছিল আমার নিকট বিনীত। ৯০
2574 ২১. আল-আম্বিয়া আর স্মরণ কর সেই নারীকে যে নিজ সতীত্বকে রক্ষা করেছিল এবং আমি তার মধ্যে আত্মা ফুঁকে দিয়েছি, এবং তাকে ও তার পুত্রকে করেছিলাম বিশ্ববাসীর জন্য এক নিদর্শন। ৯১
2575 ২১. আল-আম্বিয়া এই যে তোমাদের জাতি, এটাতো একই জাতি এবং আমিই তোমাদের রাব্ব, অতএব আমার ইবাদাত কর। ৯২
2576 ২১. আল-আম্বিয়া কিন্তু মানুষ নিজেদের কার্যকলাপে পরস্পরের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে; প্রত্যেকেই প্রত্যাবর্তিত হবে আমার নিকট। ৯৩
2577 ২১. আল-আম্বিয়া সুতরাং যদি কেহ মু’মিন হয়ে সৎ কাজ করে তাহলে তার কাজ প্রচেষ্টা অগ্রাহ্য হবেনা এবং আমিতো তা লিখে রাখি। ৯৪
2578 ২১. আল-আম্বিয়া যে সব জনপদকে আমি ধ্বংস করেছি তার অধিবাসীদের ফিরে না আসা অবধারিত। ৯৫
2579 ২১. আল-আম্বিয়া যে পর্যন্ত না ইয়াজুজ ও মা’জুজকে বন্ধনমুক্ত করে দেয়া হবে এবং তারা প্রত্যক উঁচু ভূমি থেকে দ্রুত ছুটে আসবে। ৯৬
2580 ২১. আল-আম্বিয়া অমোঘ প্রতিশ্রুত কাল আসন্ন হলে অকস্মাৎ কাফিরদের চক্ষু স্থির হয়ে যাবে। তারা বলবেঃ হায় দুর্ভোগ আমাদের! আমরাতো ছিলাম এ বিষয়ে উদাসীন; না, বরং আমরা ছিলাম সীমালংঘনকারী। ৯৭
2581 ২১. আল-আম্বিয়া তোমরা এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদাত কর সেগুলিতো জাহান্নামের ইন্ধন; তোমরা সবাই তাতে প্রবেশ করবে। ৯৮
2582 ২১. আল-আম্বিয়া যদি তারা উপাস্য হত তাহলে তারা জাহান্নামে প্রবেশ করত না; তাদের সবাই তাতে স্থায়ী হবে। ৯৯
2583 ২১. আল-আম্বিয়া সেখানে থাকবে তাদের আর্তনাদ এবং সেখানে তারা কিছুই শুনতে পাবেনা। ১০০
2584 ২১. আল-আম্বিয়া যাদের জন্য আমার নিকট থেকে পূর্ব হতে কল্যাণ নির্ধারিত রয়েছে তাদেরকে তা হতে দূরে রাখা হবে। ১০১
2585 ২১. আল-আম্বিয়া তারা ওর ক্ষীণতম শব্দও শুনতে পাবেনা এবং সেখানে তারা তাদের মন যা চায় চিরকাল তা ভোগ করবে। ১০২
2586 ২১. আল-আম্বিয়া মহাভীতি তাদেরকে বিষাদ ক্লিষ্ট করবেনা এবং মালাইকারা তাদেরকে অভ্যর্থনা করবে এই বলেঃ এই তোমাদের সেই দিন যার প্রতিশ্রুতি তোমাদেরকে দেয়া হয়েছিল। ১০৩
2587 ২১. আল-আম্বিয়া সেদিন আমি আকাশকে গুটিয়ে ফেলবো, যেভাবে গুটানো হয় লিখিত দফতর। যেভাবে আমি সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব; প্রতিশ্রুতি পালন আমার কর্তব্য, আমি এটা পালন করবই। ১০৪
2588 ২১. আল-আম্বিয়া আমি উপদেশের পর কিতাবে লিখে দিয়েছি যে, আমার যোগ্যতাসম্পন্ন বান্দারা পৃথিবীর অধিকারী হবে। ১০৫
2589 ২১. আল-আম্বিয়া এতে রয়েছে বাণী, সেই সম্প্রদায়ের জন্য, যারা ইবাদাত করে। ১০৬
2590 ২১. আল-আম্বিয়া আমিতো তোমাকে বিশ্ব জগতের প্রতি শুধু রাহমাত রূপেই প্রেরণ করেছি। ১০৭
2591 ২১. আল-আম্বিয়া বলঃ আমার প্রতি অহী হয় যে, তোমাদের মা‘বূদ একই মা‘বূদ; সুতরাং তোমরা হয়ে যাও আত্মসমর্পনকারী। ১০৮
2592 ২১. আল-আম্বিয়া যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তুমি বলঃ আমি তোমাদেরকে যথাযথভাবে জানিয়ে দিয়েছি এবং তোমাদেরকে যে বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, আমি জানিনা, তা আসন্ন, না দূরস্থিত। ১০৯
2593 ২১. আল-আম্বিয়া তিনি জানেন যা কথায় ব্যক্ত কর এবং যা তোমরা গোপন কর। ১১০
2594 ২১. আল-আম্বিয়া আমি জানিনা, হয়তো এটা তোমাদের জন্য এক পরীক্ষা এবং জীবন উপভোগ কিছু কালের জন্য। ১১১
2595 ২১. আল-আম্বিয়া রাসূল বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! আপনি ন্যায়ের সাথে ফাইসালা করে দিন, আমাদের রাব্বতো দয়াময়, তোমরা যা বলেছ সে বিষয়ে একমাত্র সহায়স্থল তিনিই। ১১২
2596 ২২. আল-হজ্জ হে মানবমন্ডলী! তোমরা ভয় কর তোমাদের রাব্বকে; (জেনে রেখ) কিয়ামাতের প্রকম্পন এক ভয়ানক ব্যাপার।
2597 ২২. আল-হজ্জ যেদিন তোমরা তা প্রত্যক্ষ করবে সেদিন প্রত্যেক স্তন্যদাত্রী বিস্মৃত হবে তার দুগ্ধ পোষ্য শিশুকে এবং প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত করে ফেলবে; মানুষকে দেখবে মাতাল সদৃশ, যদিও তারা নেশাগ্রস্ত নয়; বস্তুতঃ আল্লাহর শাস্তি কঠিন।
2598 ২২. আল-হজ্জ মানুষের কতক অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহ সম্বন্ধে বিতন্ডা করে এবং অনুসরণ করে প্রত্যেক বিদ্রোহী শাইতানের।
2599 ২২. আল-হজ্জ তার সম্বন্ধে এই নিয়ম করে দেয়া হয়েছে যে, যে কেহ তার সাথে বন্ধুত্ব করবে সে তাকে পথভ্রষ্ট করবে এবং তাকে পরিচালিত করবে প্রজ্জ্বলিত অগ্নির দিকে।
2600 ২২. আল-হজ্জ হে মানুষ! পুনরুত্থান সম্বন্ধে যদি তোমরা সন্দিহান হও তাহলে (জেনে রেখ), আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি মাটি হতে, তারপর শুক্র হতে, এরপর জমাট বাধা রক্ত থেকে, তারপর পূর্ণাকৃতি অথবা অপূর্ণাকৃতি মাংসপিন্ড হতে; তোমাদের নিকট ব্যক্ত করার জন্য। আমি যা ইচ্ছা করি তা এক নির্দিষ্ট কালের জন্য মাতৃগর্ভে স্থিতি রাখি, তারপর আমি তোমাদেরকে শিশু রূপে বের করি, পরে যাতে তোমরা পরিণত বয়সে উপনীত হও; তোমাদের মধ্যে কারও মৃত্যু ঘটানো হয় এবং তোমাদের মধ্যে কেহকে কেহকে প্রত্যাবৃত্ত করা হয় হীনতম বয়সে, যার ফলে তারা যা কিছু জানত সেআ সম্বন্ধে তারা সজ্ঞান থাকেনা। তুমি ভূমিকে দেখ শুস্ক, অতঃপর তাতে আমি বারি বর্ষণ করলে তা শস্য শ্যামল হয়ে আন্দোলিত ও স্ফীত হয় এবং উদগত করে সর্বপ্রকার নয়নাভিরাম উদ্ভিদ।
2601 ২২. আল-হজ্জ এটা এ জন্য যে, আল্লাহ সত্য এবং তিনিই মৃত্যুকে জীবন দান করেন এবং তিনি সর্ব বিষয়ে শক্তিমান।
2602 ২২. আল-হজ্জ আর কিয়ামাত অবশ্যম্ভাবী, এতে কোন সন্দেহ নেই এবং কবরে যারা আছে তাদেরকে আল্লাহ নিশ্চয়ই পুনরুত্থিত করবেন।
2603 ২২. আল-হজ্জ মানুষের মধ্যে কেহ কেহ আল্লাহ সম্বন্ধে বিতন্ডা করে, তাদের না আছে জ্ঞান, না আছে পথ নির্দেশক, আর না আছে কোন দীপ্তিমান কিতাব।
2604 ২২. আল-হজ্জ সে বিতন্ডা করে ঘাড় বাঁকিয়ে, লোকদেরকে আল্লাহর পথ হতে ভ্রষ্ট করার জন্য; তার জন্য রয়েছে লাঞ্ছনা। ইহলোকে এবং কিয়ামাত দিবসে আমি তাকে আস্বাদন করাব দহন যন্ত্রণা।
2605 ২২. আল-হজ্জ (সেদিন তাকে বলা হবে) এটা তোমার কৃতকর্মের ফল। কারণ আল্লাহ বান্দাদের প্রতি অত্যাচার করেন না। ১০
2606 ২২. আল-হজ্জ মানুষের মধ্যে কেহ কেহ আল্লাহর ইবাদাত করে দ্বিধার সাথে; তার মঙ্গল হলে তাতে তার চিত্ত প্রশস্ত হয় এবং কোন বিপর্যয় ঘটলে সে তার পূর্বাবস্থায় ফিরে যায়। সে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দুনিয়ায় ও আখিরাতে; এটাইতো সুস্পষ্ট ক্ষতি। ১১
2607 ২২. আল-হজ্জ সে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে যা তার কোন অপকার করতে পারেনা, উপকারও করতে পারেনা, এটাই চরম বিভ্রান্তি! ১২
2608 ২২. আল-হজ্জ সে ডাকে এমন কিছুকে যার ক্ষতিই তার উপকার অপেক্ষা নিকটতর। কত নিকৃষ্ট এই অভিভাবক এবং নিকৃষ্ট এই সহচর! ১৩
2609 ২২. আল-হজ্জ যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে আল্লাহ তাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত; আল্লাহ যা ইচ্ছা তা-ই করেন। ১৪
2610 ২২. আল-হজ্জ যে মনে করে, আল্লাহ কখনই দুনিয়া ও আখিরাতে সাহায্য করবেননা, সে আকাশের দিকে রজ্জু প্রলম্বিত করুক এবং এরপর কেটে দিক; অতঃপর দেখুক তার প্রচেষ্টা তাঁর আক্রোশের হেতু দূর করে কি না! ১৫
2611 ২২. আল-হজ্জ এভাবেই আমি সুস্পষ্ট নিদর্শন রূপে ওটা অবতীর্ণ করেছি; আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সৎ পথ প্রদর্শন করেন। ১৬
2612 ২২. আল-হজ্জ যারা ঈমান এনেছে এবং যারা ইয়াহুদী হয়েছে, যারা সাবিয়ী, খৃষ্টান, অগ্নিপূজক এবং যারা মুশরিক - কিয়ামাত দিবসে আল্লাহ তাদের মধ্যে ফাইসালা করে দিবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রত্যেক জিনিসের উপর সাক্ষী। ১৭
2613 ২২. আল-হজ্জ তুমি কি দেখনা যে, আল্লাহকে সাজদাহ করে যা কিছু আছে আকাশমন্ডলীতে ও পৃথিবীতে - সূর্য, চাঁদ, নক্ষত্রমন্ডলী, পবর্তরাজি, বৃক্ষলতা, জীব-জন্তু এবং সাজদাহ করে মানুষের মধ্যে অনেকে? আবার অনেকের প্রতি অবধারিত হয়েছে শাস্তি। আল্লাহ যাকে হেয় করেন তার সম্মানদাতা কেহই নেই; আল্লাহ যা ইচ্ছা তা করেন। (সাজদাহ)। ১৮
2614 ২২. আল-হজ্জ এরা দু’টি বিবাদমান পক্ষ, তারা তাদের রাব্ব সম্বন্ধে বিতর্ক করে। যারা কুফরী করে তাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে আগুনের পোশাক; তাদের মাথার উপর ঢেলে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি ১৯
2615 ২২. আল-হজ্জ যা দ্বারা উদরে যা আছে তা এবং তাদের চর্ম বিগলিত করা হবে। ২০
2616 ২২. আল-হজ্জ আর তাদের জন্য থাকবে লৌহ-মুগুর। ২১
2617 ২২. আল-হজ্জ যখনই তারা যন্ত্রণাকাতর হয়ে জাহান্নাম হতে বের হতে চাবে তখনই তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। তাদেরকে বলা হবেঃ স্বাদ গ্রহণ কর দহন যন্ত্রণার। ২২
2618 ২২. আল-হজ্জ যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে, আল্লাহ তাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তাদেরকে অলংকৃত করা হবে স্বর্ণ কংকন ও মুক্তা দ্বারা এবং সেখানে তাদের পোশাক পরিচ্ছদ হবে রেশমের। ২৩
2619 ২২. আল-হজ্জ তাদেরকে পবিত্র বাক্যের অনুগামী করা হয়েছিল এবং তারা পরিচালিত হয়েছিল পরম প্রশংসা ভাজন (আল্লাহর) পথে। ২৪
2620 ২২. আল-হজ্জ যারা কুফরী করে এবং মানুষকে নিবৃত্ত করে আল্লাহর পথ হতে ও মাসজিদুল হারাম হতে, যা আমি করেছি স্থানীয় ও বহিরাগত সবারই জন্য সমান, আর যে ইচ্ছা করে ওতে পাপ কাজের সীমা লংঘন করে তাকে আমি আস্বাদন করাব মর্মন্তদ শাস্তি। ২৫
2621 ২২. আল-হজ্জ আর স্মরণ কর, যখন আমি ইবরাহীমের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম সেই গৃহের স্থান তখন বলেছিলামঃ আমার সাথে কোন শরীক স্থির করনা এবং আমার গৃহকে পবিত্র রেখ তাদের জন্য যারা তাওয়াফ করে এবং যারা দন্ডায়মান থাকে, রুকু করে ও সাজদাহ করে। ২৬
2622 ২২. আল-হজ্জ এবং মানুষের কাছে হাজ্জের ঘোষণা করে দাও, তারা তোমার কাছে আসবে পদব্রজে ও সর্ব প্রকার ক্ষীণকায় উষ্ট্রসমূহের পিঠে, তারা আসবে দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে। ২৭
2623 ২২. আল-হজ্জ যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলিতে উপস্থিত হতে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুস্পদ জন্তু হতে যা রিয্ক হিসাবে দান করেছেন ওর উপর নির্দিষ্ট দিনগুলিতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে; অতঃপর তোমরা ওটা হতে আহার কর এবং দুস্থ, অভাবগ্রস্তকে আহার করাও। ২৮
2624 ২২. আল-হজ্জ অতঃপর তারা যেন তাদের অপরিচ্ছন্নতা দূর করে এবং তাদের মানত পূর্ণ করে ও তাওয়াফ করে প্রাচীন গৃহের। ২৯
2625 ২২. আল-হজ্জ এটাই বিধান এবং কেহ আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত বিধানাবলীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তার রবের নিকট তা উত্তম। তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে চতুস্পদ পশু, ঐগুলি ব্যতীত যা তোমাদেরকে বলা হয়েছে। সুতরাং তোমরা বর্জন কর মূর্তি পূজার অপবিত্রতা এবং দূরে থাক মিথ্যা বলা হতে। ৩০
2626 ২২. আল-হজ্জ আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠ হয়ে এবং তাঁর কোন শরীক না করে। আর যে আল্লাহর শরীক করে সে যেন আকাশ হতে পড়ল, অতঃপর পাখী তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল, কিংবা বায়ু তাকে উড়িয়ে নিয়ে দূরবর্তী এক স্থানে নিক্ষেপ করল। ৩১
2627 ২২. আল-হজ্জ এটাই আল্লাহর বিধান এবং কেহ (আল্লাহর) নিদর্শনাবলীকে সম্মান করলে এটাতো তার হৃদয়ের তাকওয়ারই বহিঃপ্রকাশ। ৩২
2628 ২২. আল-হজ্জ এ সবগুলিতে তোমাদের জন্য নানাবিধ উপকার রয়েছে এক নির্দিষ্ট কালের জন্য; অতঃপর ওগুলির কুরবানীর স্থান প্রাচীন গৃহের নিকট। ৩৩
2629 ২২. আল-হজ্জ আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কুরবানীর নিয়ম করে দিয়েছি যাতে আমি তাদেরকে জীবনোপকরণ স্বরূপ যে সব চতুস্পদ জন্তু দিয়েছি সেগুলির উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। তোমাদের মা‘বূদ একই মা‘বূদ, সুতরাং তাঁরই নিকট আত্মসমর্পন কর এবং সুসংবাদ দাও বিনীতজনদেরকে। ৩৪
2630 ২২. আল-হজ্জ যাদের হৃদয় ভয়-কম্পিত হয় আল্লাহর নাম স্মরণ করা হলে, যারা তাদের বিপদ আপদে ধৈর্য ধারণ করে এবং সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রিয্ক দিয়েছি তা হতে ব্যয় করে। ৩৫
2631 ২২. আল-হজ্জ এবং উৎসর্গীকৃত উষ্ট্রকে করেছি আল্লাহর নিদর্শনগুলির অন্যতম; তোমাদের জন্য তাতে মঙ্গল রয়েছে; সুতরাং সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান অবস্থায় ওগুলির উপর তোমরা আল্লাহর নাম নাও। যখন ওরা কাত হয়ে পড়ে যায় তখন তোমরা তা হতে আহার কর এবং আহার করাও ধৈর্যশীল অভাবগ্রস্তকে ও যাঞ্চাকারী অভাবগ্রস্তকে। এভাবে আমি ওদেরকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছি যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। ৩৬
2632 ২২. আল-হজ্জ আল্লাহর কাছে পৌঁছেনা ওগুলির গোশত এবং রক্ত, বরং পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া। এভাবে তিনি ওগুলিকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন যাতে তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর এ জন্য যে, তিনি তোমাদেরকে পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং তুমি সুসংবাদ দাও সৎকর্মশীলদেরকে। ৩৭
2633 ২২. আল-হজ্জ আল্লাহ রক্ষা করেন মু’মিনদেরকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেননা। ৩৮
2634 ২২. আল-হজ্জ যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হল তাদেরকে যারা আক্রান্ত হয়েছে। কারণ তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে। আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করতে সক্ষম। ৩৯
2635 ২২. আল-হজ্জ তাদেরকে তাদের ঘর বাড়ী হতে অন্যায়ভাবে বহিস্কৃত করা হয়েছে শুধু এ কারণে যে, তারা বলেঃ আমাদের রাব্ব আল্লাহ! আল্লাহ যদি মানব জাতির এক দলকে অন্য দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন তাহলে বিধ্বস্ত হয়ে যেত খৃষ্টান, সংসার বিরাগীদের উপাসনা স্থল, গীর্জা, ইয়াহুদীদের উপাসনালয় এবং মাসজিদসমূহ যাতে অধিক স্মরণ করা হয় আল্লাহর নাম; নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন যে নিজকে সাহায্য করে; নিশ্চয়ই আল্লাহ শক্তিমান, পরাক্রমশালী। ৪০
2636 ২২. আল-হজ্জ আমি তাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করলে তারা সালাত কায়েম করবে, যাকাত দিবে এবং সৎ কাজের আদেশ করবে ও অসৎ কার্য হতে নিষেধ করবে। সকল কাজের পরিণাম আল্লাহর ইখতিয়ারে। ৪১
2637 ২২. আল-হজ্জ এবং লোকে যদি তোমাকে অস্বীকার করে তাহলে তাদের পূর্বেতো অস্বীকার করেছিল নূহের কাওম, ‘আদ ও ছামূদ। ৪২
2638 ২২. আল-হজ্জ এবং ইবরাহীম ও লূতের কাওম। ৪৩
2639 ২২. আল-হজ্জ এবং মাদইয়ানবাসী তাদের নাবীদেরকে অস্বীকার করেছিল; এবং অস্বীকার করা হয়েছিল মূসাকেও; আমি কাফিরদের অবকাশ দিয়েছিলাম এবং পরে তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিলাম। অতঃপর কেমন ছিল আমার শাস্তি! ৪৪
2640 ২২. আল-হজ্জ আমি ধ্বংস করেছি কত জনপদ যেগুলির বাসিন্দা ছিল যালিম। এই সব জনপদ তাদের ঘরের ছাদসহ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল এবং কত কূপ পরিত্যক্ত হয়েছিল ও কত সুদৃঢ় প্রাসাদও। ৪৫
2641 ২২. আল-হজ্জ তারা কি দেশ ভ্রমণ করেনি? তাহলে তারা জ্ঞান বুদ্ধি সম্পন্ন হৃদয় ও শ্রুতিশক্তি সম্পন্ন কর্ণের অধিকারী হতে পারত। বস্তুতঃ চক্ষুতো অন্ধ নয়, বরং অন্ধ হচ্ছে বক্ষস্থিত হৃদয়। ৪৬
2642 ২২. আল-হজ্জ তারা তোমাকে শাস্তি ত্বরান্বিত করতে বলে, অথচ আল্লাহ তাঁর প্রতিশ্রুতি কখনও ভংগ করেননা। তোমার রবের একদিন তোমাদের গণনায় সহস্র বছরের সমান। ৪৭
2643 ২২. আল-হজ্জ এবং আমি অবকাশ দিয়েছি কত জনপদকে যখন তারা ছিল অত্যাচারী। অতঃপর তাদেরকে শাস্তি দিয়েছি এবং প্রত্যাবর্তন আমারই নিকট। ৪৮
2644 ২২. আল-হজ্জ বলঃ হে মানুষ! আমিতো তোমাদের জন্য এক স্পষ্ট সতর্ককারী। ৪৯
2645 ২২. আল-হজ্জ সুতরাং যারা ঈমান আনে এবং সৎ কাজ করে তাদের জন্য আছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা। ৫০
2646 ২২. আল-হজ্জ আর যারা আমার আয়াত ব্যর্থ করার চেষ্টা করে তারাই হবে জাহান্নামের অধিবাসী। ৫১
2647 ২২. আল-হজ্জ আমি তোমার পূর্বে যে সব রাসূল কিংবা নাবী প্রেরণ করেছি তাদের কেহ যখনই কিছু আকাংখা করেছে তখনই শাইতান তার আকাংখায় কিছু প্রক্ষিপ্ত করেছে। কিন্তু শাইতান যা প্রক্ষিপ্ত করে আল্লাহ তা বিদূরিত করেন; অতঃপর আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। ৫২
2648 ২২. আল-হজ্জ এটা এ জন্য যে, শাইতান যা প্রক্ষিপ্ত করে তিনি ওকে পরীক্ষা স্বরূপ করেন তাদের জন্য যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, যাদের হৃদয় পাষাণ। নিশ্চয়ই যালিমরা দুস্তর মতভেদে রয়েছে। ৫৩
2649 ২২. আল-হজ্জ এবং এ জন্য যে, যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তারা যেন জানতে পারে যে, এটা (কুরআন) তোমার রবের নিকট হতে প্রেরিত সত্য। অতঃপর তারা যেন তাতে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর যেন ওর প্রতি অনুগত হয়। যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে আল্লাহ সরল পথে পরিচালিত করেন। ৫৪
2650 ২২. আল-হজ্জ যারা কুফরী করেছে তারা ওতে সন্দেহ পোষণ করা হতে বিরত হবেনা, যতক্ষণ না তাদের নিকট কিয়ামাত এসে পড়বে আকস্মিকভাবে, অথবা এসে পড়বে ঐ দিনের শাস্তি যা থেকে রক্ষার উপায় নেই। ৫৫
2651 ২২. আল-হজ্জ সেদিন আল্লাহরই আধিপত্য; তিনিই তাদের বিচার করবেন। সুতরাং যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে তারা অবস্থান করবে সুখময় জান্নাতে। ৫৬
2652 ২২. আল-হজ্জ আর যারা কুফরী করে এবং আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে তাদেরই জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। ৫৭
2653 ২২. আল-হজ্জ আর যারা হিজরাত করেছে, আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে অথবা মৃত্যু বরণ করেছে, তাদেরকে আল্লাহ অবশ্যই উৎকৃষ্ট জীবিকা দান করবেন; এবং আল্লাহ তিনিইতো সর্বোৎকৃষ্ট রিয্কদাতা। ৫৮
2654 ২২. আল-হজ্জ তিনি তাদেরকে অবশ্যই এমন স্থানে দাখিল করবেন যা তারা পছন্দ করবে এবং আল্লাহতো সম্যক প্রজ্ঞাময়, পরম সহনশীল। ৫৯
2655 ২২. আল-হজ্জ এটাই হয়ে থাকে, কোন ব্যক্তি নিপীড়িত হয়ে সমপরিমান প্রতিশোধ গ্রহণ করলে এবং পুনরায় সে অত্যাচারিত হলে আল্লাহ অবশ্যই তাকে সাহায্য করবেন; আল্লাহ নিশ্চয়ই পাপ মোচনকারী, ক্ষমাশীল। ৬০
2656 ২২. আল-হজ্জ ওটা এ জন্য যে, আল্লাহ রাতকে প্রবিষ্ট করেন দিনের মধ্যে এবং দিনকে প্রবিষ্ট করেন রাতের মধ্যে এবং আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সম্যক দ্রষ্টা। ৬১
2657 ২২. আল-হজ্জ এ জন্যও যে, আল্লাহ সত্য এবং তারা তাঁর পরিবর্তে যাকে ডাকে ওটাতো অসত্য এবং আল্লাহ তো সমুচ্চ, মহান। ৬২
2658 ২২. আল-হজ্জ তুমি কি লক্ষ্য করনি যে, আল্লাহ বারি বর্ষণ করেন আকাশ হতে যাতে সবুজ শ্যামল হয়ে ওঠে ধরিত্রী? আল্লাহ সম্যক সূক্ষ্মদর্শী, পরিজ্ঞাত। ৬৩
2659 ২২. আল-হজ্জ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা তাঁরই এবং আল্লাহই তো অভাবমুক্ত, প্রশংসা। ৬৮
2660 ২২. আল-হজ্জ তুমি কি লক্ষ্য করনি যে, আল্লাহ তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন পৃথিবীতে যা কিছু আছে তৎসমূদয়কে এবং তাঁর নির্দেশে সমুদ্রে বিচরণশীল নৌযানসমূহকে এবং তিনিই আকাশকে স্থির রাখেন যাতে ওটা পতিত না হয় পৃথিবীর উপর তাঁর অনুমতি ছাড়া? আল্লাহ নিশ্চয়ই মানুষের প্রতি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু। ৬৫
2661 ২২. আল-হজ্জ এবং তিনিই তোমাদেরকে জীবন দান করেছেন, অতঃপর তিনিই তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন, পুনরায় তোমাদেরকে জীবন দান করবেন। মানুষতো অতি মাত্রায় অকৃতজ্ঞ। ৬৬
2662 ২২. আল-হজ্জ আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছি ইবাদাত-পদ্ধতি যা তারা অনুসরণ করবে। সুতরাং তারা যেন তোমার সাথে এ ব্যাপারে বিতর্ক না করে। তুমি তাদেরকে তোমার রবের দিকে আহবান কর, তুমিতো সরল পথেই প্রতিষ্ঠিত। ৬৭
2663 ২২. আল-হজ্জ তারা যদি তোমার সাথে বিতন্ডা করে তাহলে বলঃ তোমরা যা কর সেই সম্বন্ধে আল্লাহ সম্যক অবহিত। ৬৮
2664 ২২. আল-হজ্জ তোমরা যে বিষয়ে মতভেদ করছ আল্লাহ কিয়ামাত দিবসে সেই বিষয়ে তোমাদের মধ্যে বিচার মীমাংসা করে দিবেন। ৬৯
2665 ২২. আল-হজ্জ তুমি কি জাননা যে, আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে আল্লাহ তা অবগত আছেন? এ সবই লিপিবদ্ধ আছে এক কিতাবে; এটা আল্লাহর নিকট সহজ। ৭০
2666 ২২. আল-হজ্জ এবং তারা ইবাদাত করে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর যে সম্পর্কে তিনি কোন দলীল প্রেরণ করেননি এবং যার সম্বন্ধে তাদের কোন জ্ঞান নেই। বস্তুতঃ যালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই। ৭১
2667 ২২. আল-হজ্জ এবং তাদের নিকট আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ আবৃত্তি করা হলে তুমি কাফিরদের মুখমন্ডলে অসন্তোষের লক্ষণ দেখবে। যারা তাদের নিকট আমার আয়াত আবৃত্তি করে তাদেরকে তারা আক্রমণ করতে উদ্যত হয়। তুমি বলঃ তাহলে কি আমি তোমাদেরকে এটা অপেক্ষা অন্য কিছুর সংবাদ দিব? ওটা আগুন। এ বিষয়ে আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কাফিরদেরকে এবং ওটা কত নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল! ৭২
2668 ২২. আল-হজ্জ হে লোকসকল! একটি উপমা দেয়া হচ্ছে, মনোযোগ সহকারে তা শ্রবণ কর। তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ডাক তারাতো কখনও একটি মাছিও সৃষ্টি করতে পারবেনা, এ উদ্দেশে তারা সবাই একত্রিত হলেও; এবং মাছি যদি তাদের নিকট হতে কিছু ছিনিয়ে নিয়ে যায় ওটাও তারা ওর নিকট হতে উদ্ধার করতে পারবেনা। পূজারী ও পূজিত কতই না দুর্বল! ৭৩
2669 ২২. আল-হজ্জ তারা আল্লাহর যথোচিত মর্যাদা উপলব্ধি করেনা। আল্লাহ নিশ্চয়ই ক্ষমতাবান, পরাক্রমশালী। ৭৪
2670 ২২. আল-হজ্জ আল্লাহ মালাইকাদের মধ্য হতে মনোনীত করেন বাণীবাহক এবং মানুষের মধ্য হতেও; আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সম্যক দ্রষ্টা। ৭৫
2671 ২২. আল-হজ্জ তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে যা কিছু আছে তিনি তা জানেন এবং সমস্ত বিষয় আল্লাহর নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে। ৭৬
2672 ২২. আল-হজ্জ হে মু’মিনগণ! তোমরা রুকু কর, সাজদাহ কর এবং তোমাদের রবের ইবাদাত কর ও সৎ কাজ কর যাতে সফলকাম হতে পার। ৭৭
2673 ২২. আল-হজ্জ এবং জিহাদ কর আল্লাহর পথে যেভাবে জিহাদ করা উচিত; তিনি তোমাদেরকে মনোনীত করেছেন। তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর কঠোরতা আরোপ করেননি। এটা তোমাদের পিতা ইবরাহীমের মিল্লাত; তিনি পূর্বে তোমাদের নামকরণ করেছেন মুসলিম এবং এই কিতাবেও, যাতে রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষী স্বরূপ হয় এবং তোমরা স্বাক্ষী হও মানব জাতির জন্য। সুতরাং তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে অবলম্বন কর; তিনিই তোমাদের অভিভাবক, কত উত্তম অভিভাবক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী তিনি! ৭৮
2674 ২৩. আল-মুমিনুন অবশ্যই সফলকাম হয়েছে মু’মিনগণ।
2675 ২৩. আল-মুমিনুন যারা নিজেদের সালাতে বিনয়, নম্র।
2676 ২৩. আল-মুমিনুন যারা অসার ক্রিয়া-কলাপ হতে বিরত থাকে।
2677 ২৩. আল-মুমিনুন যারা যাকাত প্রদানে সক্রিয়।
2678 ২৩. আল-মুমিনুন যারা নিজেদের যৌনাংগকে সংযত রাখে।
2679 ২৩. আল-মুমিনুন নিজেদের পত্নী অথবা অধিকারভুক্ত দাসীগণ ব্যতীত, এতে তারা নিন্দনীয় হবেনা।
2680 ২৩. আল-মুমিনুন সুতরাং কেহ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা হবে সীমালংঘনকারী,
2681 ২৩. আল-মুমিনুন এবং যারা আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে –
2682 ২৩. আল-মুমিনুন আর যারা নিজেদের সালাতে যত্নবান –
2683 ২৩. আল-মুমিনুন তারাই হবে উত্তরাধিকারী। ১০
2684 ২৩. আল-মুমিনুন অধিকারী হবে ফিরদাউসের, যাতে তারা বসবাস করবে চিরকাল। ১১
2685 ২৩. আল-মুমিনুন আমিতো মানুষকে সৃষ্টি করেছি মাটির উপাদান হতে। ১২
2686 ২৩. আল-মুমিনুন অতঃপর আমি ওকে শুক্রবিন্দু রূপে স্থাপন করি এক নিরাপদ আধারে। ১৩
2687 ২৩. আল-মুমিনুন পরে আমি শুক্রবিন্দুকে পরিণত করি রক্তপিন্ডে, অতঃপর রক্তপিন্ডকে পরিণত করি মাংসপিন্ডে এবং মাংসপিন্ডকে পরিণত করি অস্থিপঞ্জরে; অতঃপর অস্থিপঞ্জরকে ঢেকে দিই মাংস দ্বারা; অবশেষে ওকে গড়ে তুলি অন্য এক সৃষ্টি রূপে; অতএব নিপুণতম স্রষ্টা আল্লাহ কত কল্যাণময়! ১৪
2688 ২৩. আল-মুমিনুন এরপর অবশ্যই তোমরা মৃত্যু বরণ করবে। ১৫
2689 ২৩. আল-মুমিনুন অতঃপর কিয়ামাত দিবসে তোমাদের পুনরুত্থিত করা হবে। ১৬
2690 ২৩. আল-মুমিনুন আমিতো তোমাদের উর্ধ্বে সৃষ্টি করেছি সপ্ত স্তর এবং আমি সৃষ্টি বিষয়ে অসতর্ক নই। ১৭
2691 ২৩. আল-মুমিনুন এবং আমি আকাশ হতে বারি বর্ষণ করি পরিমিতভাবে, অতঃপর আমি তা মাটিতে সংরক্ষিত করি; আমি ওকে অপসারিত করতেও সক্ষম। ১৮
2692 ২৩. আল-মুমিনুন অতঃপর আমি ওটা দ্বারা তোমাদের জন্য খেজুর ও আঙ্গুরের বাগান সৃষ্টি করি; এতে তোমাদের জন্য আছে প্রচুর ফল; আর তা হতে তোমরা আহার কর। ১৯
2693 ২৩. আল-মুমিনুন এবং সৃষ্টি করি এক বৃক্ষ যা জন্মে সিনাই পর্বতে, এতে উৎপন্ন হয় ভোজনকারীদের জন্য তেল ও ব্যঞ্জন। ২০
2694 ২৩. আল-মুমিনুন এবং তোমাদের জন্য অবশ্যই শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে চতুস্পদ জন্তুসমূহের মধ্যে। তোমাদেরকে আমি পান করাই ওদের যা আছে তা থেকে; এবং এতে তোমাদের জন্য রয়েছে প্রচুর উপকারিতা এবং তোমরা উহা হতে আহার কর। ২১
2695 ২৩. আল-মুমিনুন এবং তোমরা তাতে এবং নৌযানে আরোহণও করে থাক। ২২
2696 ২৩. আল-মুমিনুন আমি নূহকে পাঠিয়েছিলাম তার সম্প্রদায়ের নিকট। সে বলেছিলঃ হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোন মা‘বূদ নেই, তবুও কি তোমরা সাবধান হবেনা? ২৩
2697 ২৩. আল-মুমিনুন তার সম্প্রদায়ের কাফির প্রধানরা বলেছিলঃ এ লোকতো তোমাদের মতই একজন মানুষ, সে তোমাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করতে চাচ্ছে, আল্লাহ ইচ্ছা করলে মালাক/ফেরেশতা পাঠাতেন; আমরাতো আমাদের পূর্ব-পুরুষদের যামানায় এরূপ ঘটেছে বলে শুনিনি। ২৪
2698 ২৩. আল-মুমিনুন সেতো এক উম্মাদ ব্যক্তি বৈ নয়; সুতরাং এর সম্পর্কে তোমরা কিছুকাল অপেক্ষা কর। ২৫
2699 ২৩. আল-মুমিনুন নূহ বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! আমাকে সাহায্য করুন। কারণ তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলেছে। ২৬
2700 ২৩. আল-মুমিনুন অতঃপর আমি তার কাছে অহী করলামঃ তুমি আমার তত্ত্বাবধানে ও আমার অহী অনুযায়ী নৌযান নির্মাণ কর, অতঃপর যখন আমার আদেশ আসবে ও উনূন উথলে উঠবে তখন উঠিয়ে নিবে প্রত্যেক জীবের এক এক জোড়া স্ত্রী ও পুরুষ এবং তোমার পরিবার-পরিজনকে, তাদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে পূর্বে সিদ্ধান্ত হয়েছে তাদের সম্পর্কে তুমি আমাকে কিছু বলনা, তারাতো নিমজ্জিত হবে। ২৭
2701 ২৩. আল-মুমিনুন যখন তুমি ও তোমার সঙ্গীরা নৌযানে আরোহণ করবে তখন বলঃ সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহরই যিনি আমাদের উদ্ধার করেছেন যালিম সম্প্রদায় হতে। ২৮
2702 ২৩. আল-মুমিনুন আর বলঃ হে আমার রাব্ব! আমাকে এমনভাবে অবতরণ করিয়ে নিন যা হবে কল্যাণকর; আর আপনিই শ্রেষ্ঠ অবতরণকারী। ২৯
2703 ২৩. আল-মুমিনুন এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে; আমিতো তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম। ৩০
2704 ২৩. আল-মুমিনুন অতঃপর তাদের পর আমি অন্য এক সম্প্রদায় সৃষ্টি করেছিলাম। ৩১
2705 ২৩. আল-মুমিনুন এরপর তাদেরই একজনকে তাদের নিকট রাসূল করে পাঠিয়েছিলাম; সে বলেছিলঃ তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোন মা‘বূদ নেই, তবুও কি তোমরা সাবধান হবেনা? ৩২
2706 ২৩. আল-মুমিনুন তার সম্প্রদায়ের প্রধানরা যারা কুফরী করেছিল ও আখিরাতের সাক্ষাতকে অস্বীকার করেছিল এবং যাদেরকে আমি দিয়েছিলাম পার্থিব জীবনে প্রচুর ভোগ সম্ভার, তারা বলেছিলঃ এতো তোমাদেরই মত একজন মানুষ; তোমরা যা আহার কর সেতো তা’ই আহার করে এবং তোমরা যা পান কর সেও তা’ই পান করে। ৩৩
2707 ২৩. আল-মুমিনুন যদি তোমরা তোমাদেরই মত একজন মানুষের আনুগত্য কর তাহলে তোমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ৩৪
2708 ২৩. আল-মুমিনুন সে কি তোমাদেরকে এই প্রতিশ্রুতিই দেয় যে, তোমাদের মৃত্যু হলে এবং তোমরা মাটি ও অস্থিতে পরিণত হলেও তোমাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবে? ৩৫
2709 ২৩. আল-মুমিনুন অসম্ভব, তোমাদেরকে যে বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা অসম্ভব! ৩৬
2710 ২৩. আল-মুমিনুন একমাত্র পার্থিব জীবনই আমাদের জীবন, আমরা মরি বাঁচি এখানেই এবং আমরা পুনরুত্থিত হবনা। ৩৭
2711 ২৩. আল-মুমিনুন সে তো এমন ব্যক্তি যে আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে এবং আমরা তাকে বিশ্বাস করার নই। ৩৮
2712 ২৩. আল-মুমিনুন সে বললঃ হে আমার রাব্ব! আমাকে সাহায্য করুন; কারণ তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে। ৩৯
2713 ২৩. আল-মুমিনুন (আল্লাহ) বললেনঃ অচিরেই তারা অনুতপ্ত হবেই। ৪০
2714 ২৩. আল-মুমিনুন অতঃপর সত্য সত্যই এক বিকট শব্দ তাদেরকে আঘাত করল এবং আমি তাদেরকে তরঙ্গ তাড়িত আবর্জনা সদৃশ করে দিলাম; সুতরাং ধ্বংস হয়ে গেল যালিম সম্প্রদায়। ৪১
2715 ২৩. আল-মুমিনুন অতঃপর তাদের পরে আমি বহু জাতি সৃষ্টি করেছি। ৪২
2716 ২৩. আল-মুমিনুন কোন জাতিই তার নির্ধারিত কালকে ত্বরান্বিত করতে পারেনা, আর না পারে বিলম্বিত করতে। ৪৩
2717 ২৩. আল-মুমিনুন অতঃপর আমি একের পর এক আমার রাসূল প্রেরণ করেছি। যখনই কোন জাতির নিকট তাদের রাসূল এসেছে তখনই তারা তাকে মিথ্যাবাদী বলেছে। অতঃপর আমি তাদের একের পর এককে ধ্বংস করলাম; আমি তাদেরকে কাহিনীর বিষয় করেছি; সুতরাং ধ্বংস হোক অবিশ্বাসীরা! ৪৪
2718 ২৩. আল-মুমিনুন অতঃপর আমি আমার নিদর্শন ও সুস্পষ্ট প্রমাণসহ মূসা ও তার ভাই হারূনকে পাঠালাম । ৪৫
2719 ২৩. আল-মুমিনুন ফির‘আউন ও তার পরিষদবর্গের নিকট; কিন্তু তারা অহঙ্কার করল; তারা ছিল উদ্ধত সম্প্রদায়। ৪৬
2720 ২৩. আল-মুমিনুন তারা বললঃ আমরা কি এমন দু’ ব্যক্তিতে বিশ্বাস স্থাপন করব যারা আমাদেরই মত এবং যাদের সম্প্রদায় আমাদের দাসত্ব করে? ৪৭
2721 ২৩. আল-মুমিনুন অতঃপর তারা তাদেরকে মিথ্যাবাদী বলল। ফলে তারা ধ্বংসপ্রাপ্তদের শামিল হল। ৪৮
2722 ২৩. আল-মুমিনুন আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম যাতে তারা সৎপথ প্রাপ্ত হয়। ৪৯
2723 ২৩. আল-মুমিনুন এবং আমি মারইয়াম তনয় ও তার জননীকে করেছিলাম এক নিদর্শন, তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছিলাম এক নিরাপদ ও প্রস্রবন বিশিষ্ট উচ্চ ভূমিতে। ৫০
2724 ২৩. আল-মুমিনুন হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু হতে আহার কর ও সৎ কাজ কর; তোমরা যা কর সেই সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবগত। ৫১
2725 ২৩. আল-মুমিনুন এবং তোমাদের এই যে জাতি এটাতো একই জাতি এবং আমিই তোমাদের রাব্ব; অতএব আমাকে ভয় কর। ৫২
2726 ২৩. আল-মুমিনুন কিন্তু মানুষ নিজেদের মধ্যে তাদের দীনকে বহুধা বিভক্ত করেছে; প্রত্যেক দলই তাদের নিকট যা আছে তা নিয়েই সন্তুষ্ট। ৫৩
2727 ২৩. আল-মুমিনুন সুতরাং কিছুকালের জন্য তাদেরকে স্বীয় বিভ্রান্তিতে থাকতে দাও। ৫৪
2728 ২৩. আল-মুমিনুন তারা কি মনে করে যে, আমি তাদেরকে সাহায্য স্বরূপ যে ধনৈশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি দান করি তদ্দারা – ৫৫
2729 ২৩. আল-মুমিনুন তাদের জন্য সর্ব প্রকার মঙ্গল ত্বরান্বিত করছি? না, তারা বুঝেনা। ৫৬
2730 ২৩. আল-মুমিনুন যারা তাদের রবের ভয়ে সন্ত্রস্ত – ৫৭
2731 ২৩. আল-মুমিনুন যারা তাদের রবের নিদর্শনাবলীতে ঈমান আনে – ৫৮
2732 ২৩. আল-মুমিনুন যারা তাদের রবের সাথে শরীক করেনা। ৫৯
2733 ২৩. আল-মুমিনুন আর যারা তাদের রবের নিকট প্রত্যাবর্তন করবে, এই বিশ্বাসে তাদের যা দান করার তা দান করে ভীত-কম্পিত হৃদয়ে। ৬০
2734 ২৩. আল-মুমিনুন তারাই দ্রুত সম্পাদন করে কল্যাণকর কাজ এবং তারা তাতে অগ্রগামী হয়। ৬১
2735 ২৩. আল-মুমিনুন আমি কেহকেও তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব অর্পন করিনা এবং আমার নিকট আছে এক কিতাব যা সত্য ব্যক্ত করে এবং তাদের প্রতি যুল্‌ম করা হবেনা। ৬২
2736 ২৩. আল-মুমিনুন বরং এ বিষয়ে তাদের অন্তর অজ্ঞানতায় আচ্ছন্ন, এতদ্ব্যতীত আরও কাজ আছে যা তারা করে থাকে। ৬৩
2737 ২৩. আল-মুমিনুন আর আমি যখন তাদের ঐশ্বর্যশালী ব্যক্তিদেরকে শাস্তি দ্বারা ধৃত করি তখনই তারা আর্তনাদ করে উঠে। ৬৪
2738 ২৩. আল-মুমিনুন তাদেরকে বলা হবেঃ আজ আর্তনাদ করনা, তোমরা আমার সাহায্য পাবেনা। ৬৫
2739 ২৩. আল-মুমিনুন আমার আয়াত তোমাদের কাছে পাঠ করা হত, কিন্তু তোমরা পিছন ফিরে সরে পড়তে – ৬৬
2740 ২৩. আল-মুমিনুন দম্ভ ভরে, এ বিষয়ে অর্থহীন গল্প গুজব করতে। ৬৭
2741 ২৩. আল-মুমিনুন তাহলে কি তারা এই বাণী অনুধাবন করেনা? অথচ তাদের নিকট কি এমন কিছু এসেছে যা তাদের পূর্ব-পুরুষদের নিকট আসেনি? ৬৮
2742 ২৩. আল-মুমিনুন অথচ তারা কি তাদের রাসূলকে চিনেনা বলে তাকে অস্বীকার করে? ৬৯
2743 ২৩. আল-মুমিনুন অথবা তারা কি বলে যে, সে উন্মাদ? বস্তুতঃ সে তাদের নিকট সত্য এনেছে এবং তাদের অধিকাংশ সত্যকে অপছন্দ করে। ৭০
2744 ২৩. আল-মুমিনুন সত্য যদি তাদের কামনার অনুগামী হত তাহলে বিশৃংখল হয়ে পড়ত আকাশমন্ডলী, পৃথিবী এবং ওদের মধ্যবর্তী সব কিছুই। পক্ষান্তরে আমি তাদেরকে দিয়েছি উপদেশ, কিন্তু তারা উপদেশ হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়। ৭১
2745 ২৩. আল-মুমিনুন অথবা তুমি কি তাদের কাছে কোন প্রতিদান চাও? তোমার রবের প্রতিদানই শ্রেষ্ঠ এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ রিয্কদাতা। ৭২
2746 ২৩. আল-মুমিনুন তুমিতো তাদেরকে সরল পথে আহবান করছ। ৭৩
2747 ২৩. আল-মুমিনুন যারা আখিরাতে বিশ্বাস করেনা তারাতো সরল পথ হতে বিচ্যুত। ৭৪
2748 ২৩. আল-মুমিনুন আমি তাদের উপর দয়া করলেও এবং তাদের দুঃখ-দৈন্য দূর করলেও তারা অবাধ্যতায় বিভ্রান্তের ন্যায় ঘুরতে থাকবে। ৭৫
2749 ২৩. আল-মুমিনুন আমি তাদেরকে শাস্তি দ্বারা ধৃত করলাম, কিন্তু তারা তাদের রবের প্রতি বিনত হলনা এবং কাতর প্রার্থনাও করলনা। ৭৬
2750 ২৩. আল-মুমিনুন অবশেষে যখন আমি তাদের জন্য কঠিন শাস্তির দ্বার খুলে দিই তখনই তারা হতাশ হয়ে পড়ে। ৭৭
2751 ২৩. আল-মুমিনুন তিনিই তোমাদের জন্য কর্ণ, চক্ষু ও অন্তঃকরণ সৃষ্টি করেছেন; তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাক। ৭৮
2752 ২৩. আল-মুমিনুন তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে বিস্তৃত করেছেন এবং তোমাদেরকে তাঁরই নিকট একত্রিত করা হবে। ৭৯
2753 ২৩. আল-মুমিনুন তিনিই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান, আর তাঁরই অধিকারে রাত ও দিনের পরিবর্তন, তবুও কি তোমরা বুঝবেনা? ৮০
2754 ২৩. আল-মুমিনুন এতদসত্ত্বেও তারা তা’ই বলে যেমন বলেছিল পূর্ববর্তীরা। ৮১
2755 ২৩. আল-মুমিনুন তারা বলেঃ আমাদের মৃত্যু ঘটলে এবং আমরা মাটি ও অস্থিতে পরিণত হলেও কি আমরা পুনরুত্থিত হব? ৮২
2756 ২৩. আল-মুমিনুন আমাদেরকে তো এ বিষয়েই প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছে এবং অতীতে আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকেও; এটাতো প্রাচীন কালের কল্পকথা ব্যতীত আর কিছুই নয়। ৮৩
2757 ২৩. আল-মুমিনুন জিজ্ঞেস করঃ এই পৃথিবী এবং এতে যা আছে তা কার, যদি তোমরা জান তো বল? ৮৪
2758 ২৩. আল-মুমিনুন তারা বলবেঃ আল্লাহর! বলঃ তবুও কি তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবেনা? ৮৫
2759 ২৩. আল-মুমিনুন জিজ্ঞেস করঃ কে সপ্তাকাশের রাব্ব এবং কে’ইবা মহান আরশের রাব্ব? ৮৬
2760 ২৩. আল-মুমিনুন তারা বলবেঃ আল্লাহ! বলঃ তবুও কি তোমরা আল্লাহভীরু হবেনা? ৮৭
2761 ২৩. আল-মুমিনুন জিজ্ঞেস করঃ যদি তোমরা জান তাহলে বল সব কিছুর কর্তৃত্ব কার হাতে, কে আশ্রয় দান করেন, যাঁর উপর আশ্রয়দাতা নেই? ৮৮
2762 ২৩. আল-মুমিনুন তারা বলবেঃ আল্লাহর! বলঃ তবুও তোমরা কেমন করে বিভ্রান্ত হচ্ছ? ৮৯
2763 ২৩. আল-মুমিনুন বরং আমিতো তাদের নিকট সত্য পৌঁছিয়েছি; কিন্তু তারা মিথ্যাবাদী। ৯০
2764 ২৩. আল-মুমিনুন আল্লাহ কোন সন্তান গ্রহণ করেননি এবং তাঁর সাথে অপর কোন মা‘বূদ নেই; যদি থাকত তাহলে প্রত্যেক মা‘বূদ স্বীয় সৃষ্টি নিয়ে পৃথক হয়ে যেত এবং একে অপরের উপর প্রাধান্য বিস্তার করত। তারা যা বলে তা হতে আল্লাহ অতি পবিত্র! ৯১
2765 ২৩. আল-মুমিনুন তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, তারা যাকে শরীক করে তিনি তার উর্ধ্বে। ৯২
2766 ২৩. আল-মুমিনুন বলঃ হে আমার রাব্ব! যে বিষয়ে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছে, তা যদি আপনি আমাকে দেখাতেন – ৯৩
2767 ২৩. আল-মুমিনুন তবে হে আমার রাব্ব! আপনি আমাকে যালিম সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করবেননা। ৯৪
2768 ২৩. আল-মুমিনুন আমি তাদেরকে যে বিষয়ে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছি তা আমি তোমাকে দেখাতে অবশ্যই সক্ষম। ৯৫
2769 ২৩. আল-মুমিনুন মন্দের মুকাবিলা কর উত্তম দ্বারা, তারা যা বলে আমি সেই সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত। ৯৬
2770 ২৩. আল-মুমিনুন আর বলঃ হে আমার রাব্ব! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি শাইতানের প্ররোচনা হতে। ৯৭
2771 ২৩. আল-মুমিনুন হে আমার রাব্ব! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি আমার নিকট ওদের উপস্থিতি হতে। ৯৮
2772 ২৩. আল-মুমিনুন যখন তাদের কারও মৃত্যু উপস্থিত হয় তখন সে বলেঃ হে আমার রাব্ব! আমাকে পুনরায় প্রেরণ করুন। ৯৯
2773 ২৩. আল-মুমিনুন যাতে আমি সৎ কাজ করতে পারি যা আমি পূর্বে করিনি। না এটা হবার নয়; এটাতো তার একটা উক্তি মাত্র; তাদের সামনে বারযাখ থাকবে পুনরুত্থান দিন পর্যন্ত। ১০০
2774 ২৩. আল-মুমিনুন অতঃপর যে দিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে সেদিন পরস্পরের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন থাকবেনা, এবং একে অপরের খোঁজ খবর নিবেনা। ১০১
2775 ২৩. আল-মুমিনুন সুতরাং যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই হবে সফলকাম। ১০২
2776 ২৩. আল-মুমিনুন আর যাদের পাল্লা হালকা হবে তারাই নিজেদের ক্ষতি করেছে; তারা জাহান্নামে স্থায়ী হবে। ১০৩
2777 ২৩. আল-মুমিনুন আগুন তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা সেখানে থাকবে বীভৎস চেহারায়। ১০৪
2778 ২৩. আল-মুমিনুন তোমাদের নিকট কি আমার আয়াতসমূহ আবৃত্তি হতনা? অথচ তোমরা ওগুলি অস্বীকার করতে! ১০৫
2779 ২৩. আল-মুমিনুন তারা বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! দুর্ভাগ্য আমাদেরকে পেয়ে বসেছিল এবং আমরা ছিলাম এক বিভ্রান্ত সম্প্রদায়। ১০৬
2780 ২৩. আল-মুমিনুন হে আমাদের রাব্ব! এই আগুন হতে আমাদেরকে উদ্ধার করুন; অতঃপর আমরা যদি পুনরায় কুফরী করি তাহলেতো আমরা অবশ্যই সীমালংঘনকারী হব। ১০৭
2781 ২৩. আল-মুমিনুন আল্লাহ বলবেনঃ তোমরা হীন অবস্থায় এখানেই থাক এবং আমার সাথে কোন কথা বলনা। ১০৮
2782 ২৩. আল-মুমিনুন আমার বান্দাদের মধ্যে একদল ছিল যারা বলতঃ হে আমাদের রাব্ব! আমরা ঈমান এনেছি, সুতরাং আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করুন এবং আমাদের উপর দয়া করুন, আপনিতো দয়ালুগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু। ১০৯
2783 ২৩. আল-মুমিনুন কিন্তু তাদেরকে নিয়ে তোমরা এতো ঠাট্টা বিদ্রুপ করতে যে, তা তোমাদেরকে আমার স্মরণ ভুলিয়ে দিয়েছিল; তোমরাতো তাদেরকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টাই করতে। ১১০
2784 ২৩. আল-মুমিনুন আমি আজ তাদেরকে তাদের ধৈর্যের কারণে এমনভাবে পুরস্কৃত করলাম যে, তারাই হল সফলকাম। ১১১
2785 ২৩. আল-মুমিনুন তিনি বলবেনঃ তোমরা পৃথিবীতে কত বছর অবস্থান করেছিলে? ১১২
2786 ২৩. আল-মুমিনুন তারা বলবেঃ আমরা অবস্থান করেছিলাম একদিন অথবা একদিনের কিছু অংশ, আপনি না হয় গণনাকারীদেরকে জিজ্ঞেস করুন। ১১৩
2787 ২৩. আল-মুমিনুন তিনি বলবেনঃ তোমরা অল্পকালই অবস্থান করেছিলে, যদি তোমরা জানতে। ১১৪
2788 ২৩. আল-মুমিনুন তোমরা কি মনে করেছিলে যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার নিকট প্রত্যাবর্তিত হবেনা? ১১৫
2789 ২৩. আল-মুমিনুন মহিমান্বিত আল্লাহ যিনি প্রকৃত মালিক, তিনি ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই; সম্মানিত আরশের তিনিই রাব্ব। ১১৬
2790 ২৩. আল-মুমিনুন যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে ডাকে অন্য ইলাহকে যার নিকট কোন সনদ নেই, তার হিসাব রয়েছে তার রবের নিকট, নিশ্চয়ই কাফিরেরা সফলকাম হবেনা। ১১৭
2791 ২৩. আল-মুমিনুন বলঃ হে আমার রাব্ব! ক্ষমা করুন ও দয়া করুন, দয়ালুদের মধ্যে আপনিইতো শ্রেষ্ঠ দয়ালু। ১১৮
2792 ২৪. আন-নূর এটি একটি সূরা, এটি আমি অবতীর্ণ করেছি এবং এর বিধানকে অবশ্য পালনীয় করেছি, এতে আমি অবতীর্ণ করেছি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।
2793 ২৪. আন-নূর ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী - নারী ও পুরুষ প্রত্যেককে একশ’ কশাঘাত করবে, আল্লাহর বিধান কার্যকরী করতে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে প্রভাবান্বিত না করে, যদি তোমরা আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাসী হও; মু’মিনদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।
2794 ২৪. আন-নূর ব্যভিচারী ব্যভিচারিনী অথবা মুশরিক নারীকে ব্যতীত বিয়ে করেনা এবং ব্যভিচারিনীকে ব্যভিচারী অথবা মুশরিক ব্যতীত কেহ বিয়ে করেনা, মু’মিনদের জন্য এদেরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
2795 ২৪. আন-নূর যারা সতী-সাধ্বী রমনীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে এবং চারজন সাক্ষী হাজির করেনা, তাদেরকে আশিটি কশাঘাত করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করবেনা; তারাই সত্যত্যাগী।
2796 ২৪. আন-নূর তবে যদি এরপর তারা তাওবাহ করে ও নিজেদেরকে সংশোধন করে, আল্লাহতো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
2797 ২৪. আন-নূর এবং যারা নিজেদের স্ত্রীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অথচ নিজেরা ব্যতীত তাদের কোন সাক্ষী নেই, তাদের প্রত্যেকের সাক্ষ্য এই হবে যে, সে আল্লাহর নামে চার বার শপথ করে বলবে যে, সে অবশ্যই সত্যবাদী।
2798 ২৪. আন-নূর আর পঞ্চম বারে বলবে যে, সে যদি মিথ্যাবাদী হয় তাহলে তার উপর নেমে আসবে আল্লাহর লা’নত।
2799 ২৪. আন-নূর তবে স্ত্রীর শাস্তি রহিত হবে যদি সে চার বার আল্লাহর নামে শপথ করে সাক্ষ্য দেয় যে, তার স্বামীই মিথ্যাবাদী।
2800 ২৪. আন-নূর আর পঞ্চমবারে বলবে যে, তার স্বামী সত্যবাদী হলে তার নিজের উপর নেমে আসবে আল্লাহর গযব।
2801 ২৪. আন-নূর তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তোমাদের কেহই অব্যাহতি পেতেনা; এবং আল্লাহ তাওবাহ গ্রহণকারী ও প্রজ্ঞাময়। ১০
2802 ২৪. আন-নূর যারা এই অপবাদ রচনা করেছে তারাতো তোমাদেরই একটি দল; এটাকে তোমরা তোমাদের জন্য অনিষ্টকর মনে করনা; বরং এটাতো তোমাদের জন্য কল্যাণকর; তাদের প্রত্যেকের জন্য রয়েছে তাদের কৃত পাপ কাজের ফল, এবং তাদের মধ্যে যে এ ব্যাপারে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে তার জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। ১১
2803 ২৪. আন-নূর এ কথা শোনার পর মু’মিন পুরুষ এবং নারীগণ কেন নিজেদের লোক সম্পর্কে উত্তম ধারনা করেনি এবং বলেনিঃ এটাতো সুস্পষ্ট অপবাদ? ১২
2804 ২৪. আন-নূর তারা কেন এ ব্যাপারে চার জন সাক্ষী হাযির করেনি? যেহেতু তারা সাক্ষী হাযির করেনি, সেই কারণে তারা আল্লাহর বিধানে মিথ্যাবাদী। ১৩
2805 ২৪. আন-নূর দুনিয়া ও আখিরাতে তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে, তোমরা যাতে লিপ্ত ছিলে তজ্জন্য কঠিন শাস্তি তোমাদেরকে স্পর্শ করত। ১৪
2806 ২৪. আন-নূর যখন তোমরা লোকমুখে এটা ছড়াচ্ছিলে এবং এমন বিষয় মুখে উচ্চারণ করছিলে যার কোন জ্ঞান তোমাদের ছিলনা এবং তোমরা একে তুচ্ছ গন্য করেছিলে, যদিও আল্লাহর নিকট ছিল এটা গুরুতর বিষয়। ১৫
2807 ২৪. আন-নূর এবং তোমরা যখন এটা শ্রবণ করলে তখন কেন বললেনাঃ এ বিষয়ে বলাবলি করা আমাদের উচিৎ নয়; আল্লাহ পবিত্র, মহান! এটাতো এক গুরুতর অপবাদ। ১৬
2808 ২৪. আন-নূর আল্লাহ তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছেনঃ তোমরা যদি মু’মিন হও তাহলে কখনও অনুরূপ আচরণের পুনরাবৃত্তি করনা। ১৭
2809 ২৪. আন-নূর আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ সুস্পষ্টভাবে বিবৃত করেন এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। ১৮
2810 ২৪. আন-নূর যারা মু’মিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে মর্মন্তদ শাস্তি এবং আল্লাহ জানেন, তোমরা জাননা। ১৯
2811 ২৪. আন-নূর তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তোমাদের কেহই অব্যাহতি পেতেনা, এবং আল্লাহ দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু। ২০
2812 ২৪. আন-নূর হে মু’মিনগণ! তোমরা শাইতানের পদাংক অনুসরণ করনা; কেহ শাইতানের পদাংক অনুসরণ করলে শাইতানতো অশ্লীলতা ও মন্দ কাজের নির্দেশ দেয়; আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহ না থাকলে তোমাদের কেহই কখনও পবিত্র হতে পারতেনা, তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পবিত্র করেন, এবং আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। ২১
2813 ২৪. আন-নূর তোমাদের মধ্যে যারা ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্যের অধিকারী তারা যেন শপথ গ্রহণ না করে যে, তারা আত্মীয়-স্বজন ও অভাবগ্রস্তদেরকে এবং আল্লাহর পথে যারা গৃহত্যাগ করেছে তাদেরকে কিছুই দিবেনা। তারা যেন তাদের দোষ-ক্রটি উপেক্ষা করে। তোমরা কি চাওনা যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করেন? এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ২২
2814 ২৪. আন-নূর যারা সাধ্বী, সরলমনা ও বিশ্বাসী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে তারা দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত এবং তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি। ২৩
2815 ২৪. আন-নূর যেদিন তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে তাদের জিহবা, তাদের হাত এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে – ২৪
2816 ২৪. আন-নূর সেদিন আল্লাহ তাদের প্রাপ্ত প্রতিফল পুরোপুরি দিবেন এবং তারা জানবে যে, আল্লাহই সত্য, স্পষ্ট প্রকাশক। ২৫
2817 ২৪. আন-নূর দুশ্চরিত্রা নারী দুশ্চরিত্র পুরুষের জন্য; দুশ্চরিত্র পুরুষ দুশ্চরিত্রা নারীর জন্য; সচ্চরিত্রা নারী সচ্চরিত্র পুরুষের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষ সচ্চরিত্রা নারীর জন্য। লোকে যা বলে এরা তা থেকে পবিত্র; এদের জন্য রয়েছে ক্ষমা এবং সম্মানজনক জীবিকা। ২৬
2818 ২৪. আন-নূর হে মু’মিনগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য কারও গৃহে গৃহবাসীদের অনুমতি না নিয়ে এবং তাদেরকে সালাম না করে প্রবেশ করনা; এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর। ২৭
2819 ২৪. আন-নূর যদি তোমরা গৃহে কেহকে না পাও তাহলে তাতে প্রবেশ করবে না যতক্ষণ না তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া হয়। যদি তোমাদেরকে বলা হয় ফিরে যাও, তাহলে তোমরা ফিরে যাবে, এটাই তোমাদের জন্য উত্তম এবং তোমরা যা কর সেই সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত। ২৮
2820 ২৪. আন-নূর যে গৃহে কেহ বাস করেনা তাতে তোমাদের জন্য দ্রব্য সামগ্রী থাকলে সেখানে তোমাদের প্রবেশে কোনো পাপ নেই এবং আল্লাহ জানেন যা তোমরা প্রকাশ কর এবং যা তোমরা গোপন কর। ২৯
2821 ২৪. আন-নূর মু’মিনদেরকে বলঃ তারা যেন দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযাত করে। এতে তাদের জন্য উত্তম পবিত্রতা রয়েছে; তারা যা করে সেই বিষয়ে আল্লাহ অবহিত। ৩০
2822 ২৪. আন-নূর ঈমান আনয়নকারিনী নারীদেরকে বলঃ তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযাত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান তা ব্যতীত তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে। তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নীপুত্র, আপন নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা রহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কারও নিকট তাদের আভরণ প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের গোপন আভরণ প্রকাশের উদ্দেশে সজোরে পদক্ষেপ না ফেলে। হে মু’মিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। ৩১
2823 ২৪. আন-নূর তোমাদের মধ্যে যারা ‘‘আইয়িম’’ (বিপত্নীক পুরুষ বা বিধবা মহিলা) তাদের বিবাহ সম্পাদন কর এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎ তাদেরও। তারা অভাবগ্রস্ত হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দিবেন; আল্লাহতো প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। ৩২
2824 ২৪. আন-নূর যাদের বিয়ের সামর্থ্য নেই আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে এবং তোমাদের মালিকানাধীন দাসদাসীদের মধ্যে কেহ তার মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তি করতে চাইলে তাদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হও, যদি তোমরা তাদের মধ্যে মঙ্গলের সন্ধান পাও; আল্লাহ তোমাদের যে সম্পদ দিয়েছেন তা হতে তোমরা তাদেরকে দান করবে। তোমাদের দাসীরা সততা রক্ষা করতে চাইলে পার্থিব জীবনের ধন সম্পদের লালসায় তাদেরকে ব্যভিচারিণী হতে বাধ্য করনা, আর যে তাদেরকে বাধ্য করে, সেরূপ ক্ষেত্রে তাদের উপর যবরদস্তির পর আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। ৩৩
2825 ২৪. আন-নূর আমি তোমাদের নিকট অবতীর্ণ করেছি সুস্পষ্ট আয়াত, তোমাদের পূর্ববর্তীদের দৃষ্টান্ত এবং মুত্তাকীদের জন্য উপদেশ। ৩৪
2826 ২৪. আন-নূর আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর জ্যোতি, তাঁর জ্যোতির উপমা যেন একটি দীপাধার, যার মধ্যে আছে একটি প্রদীপ; প্রদীপটি একটি কাঁচের আবরণের মধ্যে স্থাপিত, কাঁচের আবরণটি উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ; এটা প্রজ্জ্বলিত করা হয় পুতঃপবিত্র যাইতূন বৃক্ষের তেল দ্বারা যা প্রাচ্যের নয়, প্রতিচ্যেরও নয়, আগুন ওকে স্পর্শ না করলেও যেন ওর তেল উজ্জ্বল আলো দিচ্ছে; জ্যোতির উপর জ্যোতি! আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ নির্দেশ করেন তাঁর জ্যোতির দিকে; আল্লাহ মানুষের জন্য উপমা দিয়ে থাকেন এবং আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ। ৩৫
2827 ২৪. আন-নূর সেই সব গৃহ, যাকে মর্যাদায় সমুন্নত করতে এবং যাতে তাঁর নাম স্মরণ করতে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন, সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। ৩৬
2828 ২৪. আন-নূর সেই সব লোক, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রয় বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ হতে এবং সালাত কায়েম ও যাকাত প্রদান হতে বিরত রাখেনা, তারা ভয় করে সেই দিনকে যেদিন তাদের অন্তর ও দৃষ্টি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে । ৩৭
2829 ২৪. আন-নূর যাতে তারা যে কাজ করে তজ্জন্য আল্লাহ তাদেরকে উত্তম পুরস্কার দেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদের প্রাপ্যের অধিক দেন; আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অপরিমিত জীবিকা দান করে। ৩৮
2830 ২৪. আন-নূর যারা কুফরী করে, তাদের আমলসমূহ মরুভূমির মরীচিকা সদৃশ। পিপাসার্ত যাকে পানি মনে করে থাকে, কিন্তু সে ওর নিকট উপস্থিত হলে দেখবে ওটা কিছু নয়, কিন্তু সে পাবে সেখানে আল্লাহকে। অতঃপর তিনি তার কর্মফল পূর্ণ মাত্রায় দিবেন; আল্লাহ হিসাব গ্রহণে তৎপর। ৩৯
2831 ২৪. আন-নূর অথবা (কাফিরদের কাজ) প্রমত্ত সমুদ্রের বুকে গভীর অন্ধকারের ন্যায়, যাকে উদ্বেলিত করে তরঙ্গের উপর তরঙ্গ, যার উপরে রয়েছে ঘন কালো মেঘ, একের উপর এক অন্ধকার। তার হাতকে বের করলে সে তা আদৌ দেখতে পায়না। আল্লাহ যাকে জ্যোতি দান করেননা তার জন্য কোন জ্যোতি নেই। ৪০
2832 ২৪. আন-নূর তুমি কি দেখনা যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যারা আছে তারা এবং উড্ডীয়মান বিহংগকূল আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে? তারা প্রত্যেকেই জানে তাঁর যোগ্য প্রার্থনা এবং পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণার পদ্ধতি এবং তারা যা করে সেই বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবগত। ৪১
2833 ২৪. আন-নূর আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন। ৪২
2834 ২৪. আন-নূর তুমি কি দেখনা আল্লাহ সঞ্চালিত করেন মেঘমালাকে, অতঃপর তাদেরকে একত্রিত করেন এবং পরে পুঞ্জীভূত করেন? অতঃপর তুমি দেখতে পাও, ওর মধ্য হতে নির্গত হয় বারিধারা। আকাশস্থিত শিলাস্তুপ হতে তিনি শিলা বর্ষণ করেন এবং এর দ্বারা তিনি যাকে ইচ্ছা তার উপর হতে এটা অন্য দিকে ফিরিয়ে দেন; মেঘের বিদ্যুৎঝলক দৃষ্টিশক্তি প্রায় কেড়ে নেয়। ৪৩
2835 ২৪. আন-নূর আল্লাহ দিন ও রাতের পরিবর্তন ঘটান, এতে শিক্ষা রয়েছে অন্তঃদৃষ্টি সম্পন্নদের জন্য। ৪৪
2836 ২৪. আন-নূর আল্লাহ সমস্ত জীব সৃষ্টি করেছেন পানি হতে, ওদের কতক পেটে ভর দিয়ে চলে এবং কতক দু’ পায়ে ভর করে চলে এবং কতক চলে চার পায়ে, আল্লাহ যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। ৪৫
2837 ২৪. আন-নূর আমিতো সুস্পষ্ট নিদর্শন অবতীর্ণ করেছি। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সরল সঠিক পথ প্রদর্শন করেন। ৪৬
2838 ২৪. আন-নূর তারা বলেঃ আমরা আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছি এবং আমরা আনুগত্য স্বীকার করছি। কিন্তু এরপর তাদের একদল মুখ ফিরিয়ে নেয়; বস্তুতঃ তারা মু’মিন নয়। ৪৭
2839 ২৪. আন-নূর আর যখন তাদেরকে ফাইসালা করে দেয়ার জন্য আহবান করা হয় আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে তখন তাদের একদল মুখ ফিরিয়ে নেয়। ৪৮
2840 ২৪. আন-নূর আর সত্য তাদের স্বপক্ষে হলে তারা বিনীতভাবে রাসূলের নিকট ছুটে আসে। ৪৯
2841 ২৪. আন-নূর তাদের অন্তরে কি ব্যাধি আছে, না তারা সংশয় পোষণ করে, না কি তারা ভয় করে যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তাদের প্রতি যুল্‌ম করবেন? বরং তারাইতো যালিম। ৫০
2842 ২৪. আন-নূর মু’মিনদের উক্তিতো এই, যখন তাদের মধ্যে ফাইসালা করে দেয়ার জন্য আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের দিকে আহবান করা হয় তখন তারা বলেঃ আমরা শ্রবণ করলাম ও মান্য করলাম। আর তারাইতো সফলকাম। ৫১
2843 ২৪. আন-নূর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর অবাধ্যতা হতে সাবধান থাকে তারাই সফলকাম। ৫২
2844 ২৪. আন-নূর তারা দৃঢ়ভাবে আল্লাহর শপথ করে বলে, তুমি তাদেরকে আদেশ করলে তারা বের হবেই; তুমি বলঃ শপথ করনা, যথার্থ আনুগত্যই কাম্য। তোমরা যা কর আল্লাহ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত। ৫৩
2845 ২৪. আন-নূর বলঃ তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর; অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে তার উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য সে দায়ী এবং তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরা দায়ী; এবং তোমরা তার আনুগত্য করলে সৎ পথ পাবে, রাসূলের দায়িত্বতো শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া। ৫৪
2846 ২৪. আন-নূর তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে, তিনি তাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব দান করবেনই, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য সুদৃঢ় করবেন তাদের দীনকে যা তিনি তাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তাদের ভয় ভীতির পরিবর্তে তাদেরকে অবশ্যই নিরাপত্তা দান করবেন; তারা আমার ইবাদাত করবে, আমার সাথে কোন শরীক করবেনা, অতঃপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে তারাতো সত্যত্যাগী। ৫৫
2847 ২৪. আন-নূর তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর, যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হতে পার। ৫৬
2848 ২৪. আন-নূর তুমি কাফিরদেরকে পৃথিবীতে প্রবল মনে করনা; তাদের আশ্রয়স্থল আগুন; কত নিকৃষ্ট এই পরিণাম! ৫৭
2849 ২৪. আন-নূর হে মু’মিনগণ! তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা বয়ঃপ্রাপ্ত হয়নি তারা যেন তোমাদের কক্ষে প্রবেশ করতে তিন সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে। ফাজরের সালাতের পূর্বে, দ্বিপ্রহরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখ এবং ইশার সালাতের পর। এই তিন সময় তোমাদের দেহ খোলা রাখার সময়; এই তিন সময় ছাড়া অন্য সময়ে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করলে তোমাদের জন্য ও তাদের জন্য কোন দোষ নেই; তোমাদের এক জনকে অপর জনের নিকটতো যাতায়াত করতেই হয়। এভাবে আল্লাহ তোমাদের নিকট তাঁর নির্দেশ সুস্পষ্ট রূপে বিবৃত করেন; আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। ৫৮
2850 ২৪. আন-নূর এবং তোমাদের সন্তান-সন্ততি বয়ঃপ্রাপ্ত হলে তারাও যেন অনুমতি প্রার্থনা করে তাদের বয়ঃজ্যেষ্ঠদের ন্যায়। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নির্দেশ সুস্পষ্টভাবে বিবৃত করেন; আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। ৫৯
2851 ২৪. আন-নূর আর বৃদ্ধা নারী, যারা বিয়ের আশা রাখেনা, তাদের জন্য অপরাধ নেই যদি তারা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে তাদের বহির্বাস খুলে রাখে; তবে এটা হতে বিরত থাকাই তাদের জন্য উত্তম। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। ৬০
2852 ২৪. আন-নূর অন্ধের জন্য দোষ নেই, খোঁড়ার জন্য দোষ নেই, আর দোষ নেই রোগীর জন্য এবং তোমাদের নিজেদের জন্যও দোষ নেই আহার করায় নিজেদের গৃহে অথবা তোমাদের পিতাদের গৃহে অথবা তোমাদের মাতাদের গৃহে অথবা তোমাদের ভাইদের গৃহে অথবা তোমাদের বোনদের গৃহে অথবা তোমাদের চাচাদের গৃহে অথবা তোমাদের ফুফুদের গৃহে অথবা তোমাদের মামাদের গৃহে অথবা তোমাদের খালাদের গৃহে অথবা সেই গৃহে যার চাবি রয়েছে তোমাদের কাছে অথবা তোমাদের প্রকৃত বন্ধুদের গৃহে। তোমরা একত্রে আহার কর অথবা পৃথকভাবে আহার কর তাতে তোমাদের জন্য কোনো অপরাধ নেই। তবে যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম করবে অভিবাদন স্বরূপ, যা আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণময় ও পবিত্র। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর নির্দেশ বিশদভাবে বর্ণনা করেন যাতে তোমরা বুঝতে পার। ৬১
2853 ২৪. আন-নূর তারাই মু’মিন যারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনে এবং রাসূলের সঙ্গে সমষ্টিগত ব্যাপারে একত্র হলে তার অনুমতি ব্যতীত তারা সরে পড়েনা; যারা অনুমতি প্রার্থনা করে তারাই আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলে বিশ্বাসী; অতএব তারা তাদের কোন কাজে বাইরে যাবার জন্য তোমার অনুমতি চাইলে তাদের মধ্যে যাদেরকে ইচ্ছা তুমি অনুমতি দিবে এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে; আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ৬২
2854 ২৪. আন-নূর রাসূলের আহবানকে তোমরা একে অপরের প্রতি আহবানের মত গণ্য করনা; তোমাদের মধ্যে যারা চুপি চুপি সরে পড়ে আল্লাহ তাদেরকে জানেন। সুতরাং যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদের উপর আপতিত হবে অথবা আপতিত হবে তাদের উপর কঠিন শাস্তি। ৬৩
2855 ২৪. আন-নূর জেনে রেখ, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে তা আল্লাহরই, তোমরা যাতে ব্যাপৃত তিনি তা জানেন; যেদিন তারা তাঁর নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে সেদিন তিনি তাদেরকে জানিয়ে দিবেন তারা যা করত; আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ। ৬৪
2856 ২৫. আল-ফুরকান কত মহান তিনি যিনি তাঁর বান্দার প্রতি ‘ফুরকান’ অবতীর্ণ করেছেন যাতে সে বিশ্ব জগতের জন্য সতর্ককারী হতে পারে!
2857 ২৫. আল-ফুরকান যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্বের অধিকারী; তিনি কোন সন্তান গ্রহণ করেননি; সার্বভৌমত্বে তাঁর কোন অংশীদার নেই। তিনি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং প্রত্যেককে পরিমিত করেছেন যথাযথ অনুপাতে।
2858 ২৫. আল-ফুরকান আর তারা তাঁর পরিবর্তে মা‘বূদ রূপে গ্রহণ করেছে অপরকে যারা কিছুই সৃষ্টি করেনা, বরং তারা নিজেরাই সৃষ্ট এবং তারা নিজেদের অপকার অথবা উপকার করার ক্ষমতা রাখেনা এবং জীবন, মৃত্যু ও পুনরুত্থানের উপরও কোন ক্ষমতা রাখেনা।
2859 ২৫. আল-ফুরকান কাফিরেরা বলেঃ এটা মিথ্যা ব্যতীত কিছু নয়, সে এটা উদ্ভাবন করেছে এবং ভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক তাকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছে; অবশ্যই তারা যুল্‌ম ও মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছে।
2860 ২৫. আল-ফুরকান এবং তারা বলেঃ এগুলিতো সেকালের উপকথা যা সে লিখিয়ে নিয়েছে; এগুলি সকাল-সন্ধ্যায় তার নিকট পাঠ করা হয়।
2861 ২৫. আল-ফুরকান বলঃ এটা তিনিই অবতীর্ণ করেছেন যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সমুদয় রহস্য অবগত আছেন; তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
2862 ২৫. আল-ফুরকান তারা বলেঃ এ কেমন রাসূল যে আহার করে এবং হাটে বাজারে চলাফিরা করে? তার কাছে কোন মালাক/ফেরেশতা কেন অবতীর্ণ করা হলনা যে তার সাথে থাকত সতর্ককারী রূপে?
2863 ২৫. আল-ফুরকান তাকে ধন ভান্ডার দেয়া হয়নি কেন, অথবা কেন একটি বাগান দেয়া হলনা যা হতে সে খাদ্য সংগ্রহ করতে পারে? সীমালংঘনকারীরা আরও বলেঃ তোমরাতো এক যাদুগ্রস্ত ব্যক্তিরই অনুসরণ করছ।
2864 ২৫. আল-ফুরকান দেখ, তারা তোমার কি উপমা দেয়। তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং তারা পথ পাবেনা।
2865 ২৫. আল-ফুরকান কত মহান তিনি যিনি ইচ্ছা করলে তোমাকে দিতে পারেন এটা অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর বস্তু - উদ্যানসমূহ, যার নিম্নদেশে নদ-নদী প্রবাহিত এবং দিতে পারেন প্রাসাদসমূহ। ১০
2866 ২৫. আল-ফুরকান বরং তারা কিয়ামাতকে অস্বীকার করেছে এবং যারা কিয়ামাতকে অস্বীকার করে তাদের জন্য আমি প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত আগুন। ১১
2867 ২৫. আল-ফুরকান দূর হতে আগুন যখন তাদেরকে দেখবে তখন তারা শুনতে পাবে ওর ক্রুদ্ধ গর্জন ও হুঙ্কার। ১২
2868 ২৫. আল-ফুরকান এবং যখন তাদেরকে শৃংখলিত অবস্থায় ওর কোন সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে তখন তারা সেখানে ধ্বংস কামনা করবে। ১৩
2869 ২৫. আল-ফুরকান তাদেরকে বলা হবেঃ আজ তোমরা একবারের জন্য ধ্বংস কামনা করনা, বরং বহুবার ধ্বংস হওয়ার কামনা করতে থাক। ১৪
2870 ২৫. আল-ফুরকান তাদেরকে জিজ্ঞেস করঃ এটাই শ্রেয়, নাকি স্থায়ী জান্নাত, যার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে মুত্তাকীদেরকে! এটাই তাদের পুরস্কার ও প্রত্যাবর্তন স্থল। ১৫
2871 ২৫. আল-ফুরকান সেখানে তারা যা কামনা করবে তা’ই পাবে এবং তারা স্থায়ী হবে। এই প্রতিশ্রুতি পূরণ তোমার রবেরই দায়িত্ব। ১৬
2872 ২৫. আল-ফুরকান এবং যেদিন তিনি একত্রিত করবেন তাদেরকে এবং তারা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের ইবাদাত করত তাদেরকে, তিনি সেদিন জিজ্ঞেস করবেনঃ তোমরাই কি আমার এই বান্দাদেরকে বিভ্রান্ত করেছিলে, নাকি তারা নিজেরাই পথভ্রষ্ট হয়েছিল? ১৭
2873 ২৫. আল-ফুরকান তারা বলবেঃ আপনি পবিত্র ও মহান! আপনার পরিবর্তে আমরা অন্যকে অভিভাবক রূপে গ্রহণ করতে পারিনা। আপনিইতো এদেরকে ও এদের পিতৃ-পুরুষদেরকে ভোগ-সম্ভার দিয়েছিলেন। পরিণামে তারা উপদেশ বিস্মৃত হয়েছিল এবং পরিণত হয়েছিল এক ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিতে। ১৮
2874 ২৫. আল-ফুরকান আল্লাহ (মুশরিকদেরকে) বলবেনঃ তোমরা যা বলতে তারা তা মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে। সুতরাং তোমরা শাস্তি প্রতিরোধ করতে পারবে না, সাহায্যও পাবে না। তোমাদের মধ্যে যে সীমালংঘন করবে আমি তাকে মহাশাস্তি আস্বাদ করাব। ১৯
2875 ২৫. আল-ফুরকান তোমার পূর্বে আমি যে সব রাসূল প্রেরণ করেছি তারা সবাই আহার করত ও হাটে-বাজারে চলাফিরা করত। হে লোক সকল! আমি তোমাদের মধ্যে এককে অপরের জন্য পরীক্ষা স্বরূপ করেছি। তোমরা ধৈর্য ধারণ করবে কি? তোমার রাব্ব সব কিছু দেখেন। ২০
2876 ২৫. আল-ফুরকান যারা আমার সাক্ষাৎ কামনা করেনা তারা বলেঃ আমাদের নিকট মালাক/ফেরেশতা অবতীর্ণ করা হয়না কেন? অথবা আমরা আমাদের রাব্বকে প্রত্যক্ষ করি না কেন? তারা তাদের অন্তরে অহংকার পোষণ করে এবং তারা সীমালংঘন করেছে গুরুতর রূপে। ২১
2877 ২৫. আল-ফুরকান যেদিন তারা মালাইকাকে/ফেরেশতাদেরকে প্রত্যক্ষ করবে সেদিন অপরাধীদের জন্য সুসংবাদ থাকবে না এবং তারা বলবেঃ যদি কোনো বাধা থাকত! ২২
2878 ২৫. আল-ফুরকান আমি তাদের কৃতকর্মগুলি বিবেচনা করব, অতঃপর সেগুলিকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করব। ২৩
2879 ২৫. আল-ফুরকান সেদিন জান্নাতবাসীদের বাসস্থান হবে উৎকৃষ্ট এবং বিশ্রামস্থল হবে মনোরম। ২৪
2880 ২৫. আল-ফুরকান যেদিন আকাশ মেঘপুঞ্জসহ বিদীর্ণ হবে এবং মালাইকাকে (ফেরেশতাদেরকে) নামিয়ে দেয়া হবে। ২৫
2881 ২৫. আল-ফুরকান সেদিন প্রকৃত রাজত্ব হবে দয়াময় আল্লাহর এবং কাফিরদের জন্য সেদিন হবে কঠিন। ২৬
2882 ২৫. আল-ফুরকান যালিম ব্যক্তি সেদিন নিজ হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবেঃ হায়! আমি যদি রাসূলের সাথে সৎ পথ অবলম্বন করতাম! ২৭
2883 ২৫. আল-ফুরকান হায় দুর্ভোগ আমার! আমি যদি অমুককে বন্ধু রূপে গ্রহণ না করতাম! ২৮
2884 ২৫. আল-ফুরকান আমাকেতো সে বিভ্রান্ত করেছিল আমার নিকট উপদেশ পৌঁছার পর; শাইতানতো মানুষের জন্য মহাপ্রতারক। ২৯
2885 ২৫. আল-ফুরকান তখন রাসূল বলবেঃ হে আমার রাব্ব! আমার সম্প্রদায়তো এই কুরআনকে পরিত্যাজ্য মনে করেছিল। ৩০
2886 ২৫. আল-ফুরকান এভাবেই প্রত্যেক নাবীর জন্য আমি অপরাধীদের মধ্য থেকে শত্রু করেছি। তোমার জন্য তোমার রাব্ব পথ প্রদর্শক ও সাহায্যকারী রূপে যথেষ্ট। ৩১
2887 ২৫. আল-ফুরকান কাফিরেরা বলেঃ সমগ্র কুরআন তার নিকট একবারেই অবতীর্ণ হলনা কেন? এভাবেই অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমার হৃদয় ওর দ্বারা মযবূত হয় এবং তা সম্পূর্ণ রুপে আস্তে আস্তে আত্মস্থ করতে পার। ৩২
2888 ২৫. আল-ফুরকান তারা তোমার নিকট এমন কোন সমস্যা উপস্থিত করেনি যার সঠিক সমাধান ও সুন্দর ব্যাখ্যা আমি তোমাকে দান করিনি। ৩৩
2889 ২৫. আল-ফুরকান যাদেরকে মুখে ভর দিয়ে দিয়ে চলা অবস্থায় জাহান্নামের দিকে একত্র করা হবে, তাদেরই স্থান হবে অতি নিকৃষ্ট এবং তারাই পথভ্রষ্ট। ৩৪
2890 ২৫. আল-ফুরকান আমিতো মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম এবং তার ভাই হারূনকে তার সাহায্যকারী করেছিলাম। ৩৫
2891 ২৫. আল-ফুরকান এবং বলেছিলামঃ তোমরা সেই সম্প্রদায়ের নিকট যাও যারা আমার নিদর্শনাবলীকে অস্বীকার করেছে; অতঃপর আমি তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছিলাম। ৩৬
2892 ২৫. আল-ফুরকান আর নূহের সম্প্রদায় যখন রাসূলদের প্রতি মিথ্যারোপ করল তখন আমি তাদেরকে নিমজ্জিত করলাম এবং তাদেরকে মানবজাতির জন্য নিদর্শন স্বরূপ করে রাখলাম; যালিমদের জন্য আমি মর্মন্তদ শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। ৩৭
2893 ২৫. আল-ফুরকান আমি ধ্বংস করেছিলাম ‘আদ, ছামূদ, রা’স্ এবং তাদের অর্ন্তবর্তী কালের বহু সম্প্রদায়কেও। ৩৮
2894 ২৫. আল-ফুরকান আমি তাদের প্রত্যেকের জন্য দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছিলাম, আর তাদের সকলকেই আমি সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস করেছিলাম। ৩৯
2895 ২৫. আল-ফুরকান তারাতো সেই জনপদ দিয়েই যাতায়াত করে যার উপর বর্ষিত হয়েছিল অকল্যাণের বৃষ্টি; তাহলে কি তারা এটা প্রত্যক্ষ করেনা? বস্তুতঃ তারা পুনরুত্থানের আশংকা করেনা। ৪০
2896 ২৫. আল-ফুরকান তারা যখন তোমাকে দেখে তখন তারা তোমাকে শুধু ঠাট্টা-বিদ্রুপের পাত্র রূপে গণ্য করে এবং বলেঃ এ-ই কি সে, যাকে আল্লাহ রাসূল করে পাঠিয়েছেন! ৪১
2897 ২৫. আল-ফুরকান সেতো আমাদেরকে আমাদের দেবতাদের হতে দূরে সরিয়ে দিত যদি না আমরা তাদের আনুগত্যে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাকতাম। যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন তারা জানবে কে সর্বাধিক পথভ্রষ্ট। ৪২
2898 ২৫. আল-ফুরকান তুমি কি দেখনা তাকে, যে তার কামনা বাসনাকে উপাস্য রূপে গ্রহণ করে? তবুও কি তুমি তার যিম্মাদার হবে? ৪৩
2899 ২৫. আল-ফুরকান তুমি কি মনে কর যে, তাদের অধিকাংশ শোনে ও বুঝে? তারাতো পশুরই মত; বরং তারা আরও অধম। ৪৪
2900 ২৫. আল-ফুরকান তুমি কি তোমার রবের প্রতি লক্ষ্য করনা, কিভাবে তিনি ছায়া সম্প্রসারিত করেন? তিনি ইচ্ছা করলে এটাকে তো স্থির রাখতে পারতেন। অনন্তর আমি সূর্যকে করেছি এর নির্দেশক। ৪৫
2901 ২৫. আল-ফুরকান অতঃপর আমি একে আমার দিকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে আনি। ৪৬
2902 ২৫. আল-ফুরকান এবং তিনিই তোমাদের জন্য রাতকে করেছেন আবরণ স্বরূপ, বিশ্রামের জন্য তোমাদের দিয়েছেন নিদ্রা এবং সমুত্থানের জন্য দিয়েছেন দিন। ৪৭
2903 ২৫. আল-ফুরকান তিনিই স্বীয় রাহমাতের প্রাক্কালে সুসংবাদবাহী রূপে বায়ু প্রেরণ করেন এবং আমি আকাশ হতে বিশুদ্ধ পানি বর্ষণ করি। ৪৮
2904 ২৫. আল-ফুরকান যদ্বারা আমি মৃত ভূ-খন্ডকে সঞ্জীবিত করি এবং আমার সৃষ্টির মধ্যের বহু জীব জন্তু ও মানুষকে তা পান করাই। ৪৯
2905 ২৫. আল-ফুরকান আর আমি এটা তাদের মধ্যে বিতরণ করি যাতে তারা স্মরণ করে; কিন্তু অধিকাংশ লোক শুধু অকৃতজ্ঞতাই প্রকাশ করে। ৫০
2906 ২৫. আল-ফুরকান আমি ইচ্ছা করলে প্রতিটি জনপদের জন্য একজন সতর্ককারী প্রেরণ করতে পারতাম। ৫১
2907 ২৫. আল-ফুরকান সুতরাং তুমি কাফিরদের আনুগত্য করনা এবং তুমি কুরআনের সাহায্যে তাদের সাথে প্রবল সংগ্রাম চালিয়ে যাও। ৫২
2908 ২৫. আল-ফুরকান তিনিই দুই সমুদ্রকে মিলিতভাবে প্রবাহিত করেছেন; একটি মিষ্টি, সুপেয় এবং অপরটি লবণাক্ত, খর; উভয়ের মধ্যে রেখে দিয়েছেন এক অন্তরায়, এক অনতিক্রম্য ব্যবধান। ৫৩
2909 ২৫. আল-ফুরকান এবং তিনিই মানুষকে সৃষ্টি করেছেন পানি হতে; অতঃপর তিনি তার বংশগত ও বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপন করেছেন। তোমার রাব্ব সর্বশক্তিমান। ৫৪
2910 ২৫. আল-ফুরকান তারা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদাত করে যা তাদের উপকার করতে পারেনা, অপকারও করতে পারেনা; কাফিরতো স্বীয় রবের বিরোধী। ৫৫
2911 ২৫. আল-ফুরকান আমিতো তোমাকে শুধু সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারী রূপেই প্রেরণ করেছি। ৫৬
2912 ২৫. আল-ফুরকান বলঃ আমি তোমাদের নিকট এ জন্য কোন প্রতিদান চাইনা, তবে যে ইচ্ছা করে সে তার রবের পথ অবলম্বন করুক। ৫৭
2913 ২৫. আল-ফুরকান তুমি নির্ভর কর তাঁর উপর যিনি চিরঞ্জীব, যাঁর মৃত্যু নেই এবং তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। তিনি তাঁর বান্দাদের পাপ সম্পর্কে যথেষ্ট অবহিত। ৫৮
2914 ২৫. আল-ফুরকান তিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী এবং ওগুলির মধ্যবর্তী সমস্ত কিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেন; অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন; তিনিই রাহমান। তাঁর সম্বন্ধে যে অবগত আছে তাকে জিজ্ঞেস করে দেখ। ৫৯
2915 ২৫. আল-ফুরকান যখন তাদেরকে বল হয়ঃ সাজদাহবনত হও ‘রাহমান’ এর প্রতি তখন তারা বলেঃ রাহমান আবার কে? তুমি কেহকে সাজদাহ করতে বললেই কি আমরা তাকে সাজদাহ করব? এতে তাদের বিমুখতাই বৃদ্ধি পায়। ৬০
2916 ২৫. আল-ফুরকান কত মহান তিনি, যিনি নভোমন্ডলে সৃষ্টি করেছেন তারকারাজি এবং তাতে স্থাপন করেছেন প্রদীপ ও জ্যোতির্ময় চাঁদ! ৬১
2917 ২৫. আল-ফুরকান এবং যারা উপদেশ গ্রহণ করতে ও কৃতজ্ঞ হতে চায় তাদের জন্য তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত এবং দিনকে পরস্পরের অনুগামী রূপে। ৬২
2918 ২৫. আল-ফুরকান ‘রাহমান’ এর বান্দা তারাই যারা নম্রভাবে চলাফিরা করে পৃথিবীতে এবং তাদেরকে যখন অজ্ঞ লোকেরা সম্বোধন করে তখন তারা বলেঃ সালাম। ৬৩
2919 ২৫. আল-ফুরকান এবং তারা রাত অতিবাহিত করে তাদের রবের উদ্দেশে সাজদাহবনত হয়ে ও দন্ডায়মান থেকে। ৬৪
2920 ২৫. আল-ফুরকান এবং তারা বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদের হতে জাহান্নামের শাস্তি বিদূরিত করুন; ওর শাস্তিতো নিশ্চিত বিনাশ। ৬৫
2921 ২৫. আল-ফুরকান নিশ্চয়ই আশ্রয়স্থল ও বসতি হিসাবে ওটা কত নিকৃষ্ট! ৬৬
2922 ২৫. আল-ফুরকান আর যখন তারা ব্যয় করে তখন তারা অপব্যয় করেনা এবং কার্পন্যও করেনা; বরং তারা আছে এতদুভয়ের মাঝে মধ্যম পন্থায়। ৬৭
2923 ২৫. আল-ফুরকান এবং তারা আল্লাহর সাথে কোন উপাস্যকে ডাকেনা; আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন, যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে তারা হত্যা করেনা এবং ব্যভিচার করেনা; যে এগুলি করে সে শাস্তি ভোগ করবে। ৬৮
2924 ২৫. আল-ফুরকান কিয়ামাত দিবসে তার শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং সেখানে সে স্থায়ী হবে হীন অবস্থায়। ৬৯
2925 ২৫. আল-ফুরকান তারা নয় - যারা তাওবাহ করে, ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে; আল্লাহ তাদের পাপ পরিবর্তন করে দিবেন উত্তম আমলের দ্বারা; আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ৭০
2926 ২৫. আল-ফুরকান যে ব্যক্তি তাওবাহ করে ও সৎ কাজ করে সে সম্পূর্ণ রূপে আল্লাহর অভিমুখী হয়। ৭১
2927 ২৫. আল-ফুরকান আর যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়না এবং যখন তারা অসার ক্রিয়া-কলাপের সম্মুখীন হয় তখন স্বীয় মর্যাদার সাথে তা পরিহার করে চলে। ৭২
2928 ২৫. আল-ফুরকান এবং যারা তাদের রবের আয়াত স্মরণ করিয়ে দিলে ওর প্রতি অন্ধ এবং বধির সদৃশ আচরণ করেনা। ৭৩
2929 ২৫. আল-ফুরকান আর যারা প্রার্থনা করেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান করুন যারা আমাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শ স্বরূপ করুন। ৭৪
2930 ২৫. আল-ফুরকান তাদেরকে প্রতিদান স্বরূপ দেয়া হবে জান্নাত, যেহেতু তারা ধৈর্যশীল। তাদেরকে সেখানে অভ্যর্থনা করা হবে অভিবাদন ও সালাম সহকারে। ৭৫
2931 ২৫. আল-ফুরকান সেখানে তারা চিরকাল বসবাস করবে, কত উত্তম সেখানে অবস্থান ও আবাসস্থল! ৭৬
2932 ২৫. আল-ফুরকান বলঃ তোমরা আমার রাব্বকে না ডাকলে তাঁর কিছুই আসে যায়না। তোমরা অস্বীকার করেছ, ফলে অচিরেই নেমে আসবে অপরিহার্য শাস্তি। ৭৭
2933 ২৬. আশ-শুআরা তা-সীন মীম।
2934 ২৬. আশ-শুআরা এগুলো সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত।
2935 ২৬. আশ-শুআরা তারা মু’মিন হচ্ছেনা বলে তুমি হয়ত মনকষ্টে আত্মবিনাশী হয়ে পড়বে।
2936 ২৬. আশ-শুআরা আমি ইচ্ছা করলে আকাশ হতে তাদের নিকট এক নিদর্শন প্রেরণ করতাম, ফলে তাদের গ্রীবা বিনত হয়ে পড়ত ওর প্রতি।
2937 ২৬. আশ-শুআরা যখনই তাদের কাছে দয়াময়ের নিকট হতে কোন নতুন উপদেশ আসে তখনই তারা তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
2938 ২৬. আশ-শুআরা তারাতো মিথ্যা জেনেছে, সুতরাং তারা যা নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করত তার প্রকৃত বার্তা তাদের নিকট শীঘ্রই এসে পড়বে।
2939 ২৬. আশ-শুআরা তারা কি পৃথিবীর দিকে দৃষ্টিপাত করেনা? আমি তাতে প্রত্যেক প্রকারের কত উৎকৃষ্ট জিনিস উদগত করেছি।
2940 ২৬. আশ-শুআরা নিশ্চয়ই তাতে আছে নিদর্শন, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু’মিন নয়।
2941 ২৬. আশ-শুআরা তোমার রাব্ব, তিনিতো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
2942 ২৬. আশ-শুআরা স্মরণ কর, যখন তোমার রাব্ব মূসাকে ডেকে বললেনঃ তুমি যালিম সম্প্রদায়ের নিকট চলে যাও – ১০
2943 ২৬. আশ-শুআরা ফির‘আউনের সম্প্রদায়ের নিকট; তারা কি ভয় করেনা? ১১
2944 ২৬. আশ-শুআরা তখন সে বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! আমি আশংকা করি যে, তারা আমাকে অস্বীকার করবে। ১২
2945 ২৬. আশ-শুআরা এবং আমার হৃদয় সংকুচিত হয়ে পড়ছে, আর আমার জিহবাতো সাবলীল নয়, সুতরাং হারুনের প্রতিও প্রত্যাদেশ পাঠান। ১৩
2946 ২৬. আশ-শুআরা আমার বিরুদ্ধে তাদের এক অভিযোগ রয়েছে, আমি আশংকা করি যে, তারা আমাকে হত্যা করবে। ১৪
2947 ২৬. আশ-শুআরা আল্লাহ বললেনঃ না কখনই নয়, অতএব তোমরা উভয়ে আমার নিদর্শনসহ যাও, আমি তোমাদের সঙ্গে আছি শ্রবণকারী। ১৫
2948 ২৬. আশ-শুআরা অতএব তোমরা উভয়ে ফির‘আউনের নিকট যাও এবং বলঃ আমরা জগতসমূহের রবের রাসূল। ১৬
2949 ২৬. আশ-শুআরা আমাদের সাথে যেতে দাও বানী ইসরাঈলকে। ১৭
2950 ২৬. আশ-শুআরা ফির‘আউন বললঃ আমরা কি তোমাকে শৈশবে আমাদের মধ্যে লালন পালন করিনি? এবং তুমিতো তোমার জীবনের বহু বছর আমাদের মধ্যে কাটিয়েছ। ১৮
2951 ২৬. আশ-শুআরা তুমিতো তোমার কাজ যা করার তা করেছ; তুমি অকৃতজ্ঞ। ১৯
2952 ২৬. আশ-শুআরা মূসা বললঃ আমিতো এটা করেছিলাম তখন যখন আমি অজ্ঞ ছিলাম। ২০
2953 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর আমি যখন তোমাদের ভয়ে ভীত হলাম তখন আমি তোমাদের নিকট হতে পালিয়ে গিয়েছিলাম; অতঃপর আমার রাব্ব আমাকে জ্ঞান দান করেছেন এবং আমাকে রাসূল করেছেন। ২১
2954 ২৬. আশ-শুআরা আর আমার প্রতি তোমার যে অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করেছ তাতো এই যে, তুমি বানী ইসরাঈলকে দাসে পরিণত করেছ। ২২
2955 ২৬. আশ-শুআরা ফির‘আউন বললঃ জগতসমূহের রাব্ব আবার কি? ২৩
2956 ২৬. আশ-শুআরা মূসা বললঃ তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর রাব্ব, যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাসী হও। ২৪
2957 ২৬. আশ-শুআরা ফির‘আউন তার পরিষদবর্গকে লক্ষ্য করে বললঃ তোমরা শুনেছ তো! ২৫
2958 ২৬. আশ-শুআরা মূসা বললঃ তিনি তোমাদের রাব্ব এবং তোমাদের পূর্ব-পুরুষদেরও রাব্ব। ২৬
2959 ২৬. আশ-শুআরা ফির‘আউন বললঃ তোমাদের প্রতি প্রেরিত তোমাদের রাসূলটি নিশ্চয়ই পাগল। ২৭
2960 ২৬. আশ-শুআরা মূসা বললঃ তিনি পূর্ব ও পশ্চিমের এবং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর রাব্ব, যদি তোমরা বুঝতে। ২৮
2961 ২৬. আশ-শুআরা ফির‘আউন বললঃ তুমি যদি আমার পরিবর্তে অন্যকে মা‘বূদ রূপে গ্রহণ কর তাহলে আমি তোমাকে অবশ্যই কারারুদ্ধ করব। ২৯
2962 ২৬. আশ-শুআরা মূসা বললঃ আমি তোমার নিকট স্পষ্ট কোন নিদর্শন আনয়ন করলেও? ৩০
2963 ২৬. আশ-শুআরা ফির‘আউন বললঃ তুমি যদি সত্যবাদী হও তাহলে তা উপস্থিত কর। ৩১
2964 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর মূসা তার লাঠি নিক্ষেপ করলে তৎক্ষণাৎ তা এক সুস্পষ্ট অজগর হল। ৩২
2965 ২৬. আশ-শুআরা আর মূসা হাত বের করল, তৎক্ষণাৎ তা দর্শকদের দৃষ্টিতে শুভ্র উজ্জ্বল প্রতিভাত হল। ৩৩
2966 ২৬. আশ-শুআরা ফির‘আউন তার পারিষদবর্গকে বললঃ এতো এক সুদক্ষ যাদুকর। ৩৪
2967 ২৬. আশ-শুআরা এ তোমাদেরকে তোমাদের দেশ হতে তার যাদুবলে বহিস্কার করতে চায়! এখন তোমরা কি করতে বল? ৩৫
2968 ২৬. আশ-শুআরা তারা বললঃ তাকে ও তার ভাইকে কিঞ্চিৎ অবকাশ দাও এবং নগরে সংগ্রাহকদেরকে পাঠাও – ৩৬
2969 ২৬. আশ-শুআরা যেন তারা তোমার নিকট প্রতিটি সুদক্ষ যাদুকর উপস্থিত করে। ৩৭
2970 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর এক নির্ধারিত দিনে নির্দিষ্ট সময়ে যাদুকরদেরকে একত্রিত করা হল। ৩৮
2971 ২৬. আশ-শুআরা আর লোকদেরকে বলা হলঃ তোমরাও সমবেত হচ্ছ কি? ৩৯
2972 ২৬. আশ-শুআরা যেন আমরা যাদুকরদের অনুসরণ করতে পারি, যদি তারা বিজয়ী হয়। ৪০
2973 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর যাদুকররা এসে ফির‘আউনকে বললঃ আমরা যদি বিজয়ী হই তাহলে আমাদের জন্য পুরস্কার থাকবে তো? ৪১
2974 ২৬. আশ-শুআরা ফির‘আউন বললঃ হ্যাঁ, তখন তোমরা অবশ্যই আমার নিকটজনদের অন্তর্ভুক্ত হবে। ৪২
2975 ২৬. আশ-শুআরা মূসা তাদেরকে বললঃ তোমাদের যা নিক্ষেপ করার তা নিক্ষেপ কর। ৪৩
2976 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর তারা তাদের রজ্জু ও লাঠি নিক্ষেপ করল এবং তারা বললঃ ফির‘আউনের শপথ! আমরাই বিজয়ী হব। ৪৪
2977 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর মূসা তার লাঠি নিক্ষেপ করল; সহসা ওটা তাদের অলীক সৃষ্টিগুলিকে গ্রাস করতে লাগল। ৪৫
2978 ২৬. আশ-শুআরা তখন যাদুকরেরা সাজদাহবনত হয়ে পড়ল। ৪৬
2979 ২৬. আশ-শুআরা তারা বললঃ আমরা ঈমান আনলাম জগতসমূহের রবের প্রতি – ৪৭
2980 ২৬. আশ-শুআরা যিনি মূসা ও হারুনেরও রাব্ব। ৪৮
2981 ২৬. আশ-শুআরা ফির‘আউন বললঃ আমি তোমাদেরকে অনুমতি দেয়ার পূর্বেই তোমরা তাতে বিশ্বাস করলে? এইতো তোমাদের প্রধান যে তোমাদেরকে যাদু শিক্ষা দিয়েছে; শীঘ্রই তোমরা এর পরিণাম জানবে; আমি অবশ্যই তোমাদের হাত এবং তোমাদের পা বিপরীত দিক হতে কেটে ফেলব এবং তোমাদের সবাইকে শুলবিদ্ধ করবই। ৪৯
2982 ২৬. আশ-শুআরা তারা বললঃ কোন ক্ষতি নেই, আমরা আমাদের রবের নিকট প্রত্যাবর্তন করব। ৫০
2983 ২৬. আশ-শুআরা আমরা আশা করি যে, আমাদের রাব্ব আমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন, কারণ আমরা মু’মিনদের মধ্যে অগ্রণী। ৫১
2984 ২৬. আশ-শুআরা আমি মূসার প্রতি অহী করেছিলাম এই মর্মেঃ আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাতে বহির্গত হও; তোমাদেরতো পশ্চাদ্ধাবন করা হবে। ৫২
2985 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর ফির‘আউন শহরে শহরে লোক সংগ্রহকারী পাঠাল – ৫৩
2986 ২৬. আশ-শুআরা এই বলেঃ এরাতো ক্ষুদ্র একটি দল। ৫৪
2987 ২৬. আশ-শুআরা এবং তারা আমাদের ক্রোধের সৃষ্টি করেছে। ৫৫
2988 ২৬. আশ-শুআরা এবং আমরাতো সদা সতর্ক একটি দল। ৫৬
2989 ২৬. আশ-শুআরা পরিণামে আমি ফির‘আউন গোষ্ঠিকে বহিস্কৃত করলাম তাদের উদ্যানরাজি ও প্রস্রবণ হতে। ৫৭
2990 ২৬. আশ-শুআরা এবং ধন ভান্ডার ও সুরম্য সৌধমালা হতে। ৫৮
2991 ২৬. আশ-শুআরা এরূপই ঘটেছিল এবং বানী ইসরাঈলকে আমি করেছিলাম এ সমুদয়ের অধিকারী। ৫৯
2992 ২৬. আশ-শুআরা তারা সূর্যোদয় কালে তাদের পশ্চাতে এসে পড়ল। ৬০
2993 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর যখন দু’ দল পরস্পরকে দেখল তখন মূসার সঙ্গীরা বললঃ আমরাতো ধরা পড়ে যাচ্ছি! ৬১
2994 ২৬. আশ-শুআরা মূসা বললঃ কক্ষণই নয়। আমার সঙ্গে আছেন আমার রাব্ব; সত্ত্বর তিনি আমাকে পথ নির্দেশ করবেন। ৬২
2995 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর আমি মূসার প্রতি অহী করলামঃ তোমার লাঠি দ্বারা সমুদ্রে আঘাত কর, ফলে তা বিভক্ত হয়ে প্রত্যেক ভাগ বিশাল পর্বত সদৃশ হয়ে গেল। ৬৩
2996 ২৬. আশ-শুআরা আমি সেখানে উপনীত করলাম অপর দলটিকে। ৬৪
2997 ২৬. আশ-শুআরা এবং আমি উদ্ধার করলাম মূসা ও তার সঙ্গী সকলকে। ৬৫
2998 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর নিমজ্জিত করলাম অপর দলটিকে। ৬৬
2999 ২৬. আশ-শুআরা এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু’মিন নয়। ৬৭
3000 ২৬. আশ-শুআরা এবং তোমার রাব্ব - তিনিতো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু। ৬৮
3001 ২৬. আশ-শুআরা তাদের নিকট ইবরাহীমের বৃত্তান্ত বর্ণনা কর। ৬৯
3002 ২৬. আশ-শুআরা সে যখন তার পিতা ও তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমরা কিসের ইবাদাত কর? ৭০
3003 ২৬. আশ-শুআরা তারা বললঃ আমরা মূর্তি পূজা করি এবং আমরা নিষ্ঠার সাথে তাদের পূজায় রত থাকব। ৭১
3004 ২৬. আশ-শুআরা সে বললঃ তোমরা প্রার্থনা করলে তারা কি শোনে? ৭২
3005 ২৬. আশ-শুআরা অথবা তারা কি তোমাদের উপকার কিংবা অপকার করতে পারে? ৭৩
3006 ২৬. আশ-শুআরা তারা বললঃ না, তবে আমরা আমাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে এরূপই করতে দেখেছি। ৭৪
3007 ২৬. আশ-শুআরা সে বললঃ তোমরা কি তার সম্বন্ধে ভেবে দেখেছ যার পূজা করছ – ৭৫
3008 ২৬. আশ-শুআরা তোমরা এবং তোমাদের পূর্ব-পুরুষরা? ৭৬
3009 ২৬. আশ-শুআরা তারা সবাই আমার শত্রু, জগতসমূহের রাব্ব ব্যতীত। ৭৭
3010 ২৬. আশ-শুআরা তিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, তিনিই আমাকে পথ প্রদর্শন করেন। ৭৮
3011 ২৬. আশ-শুআরা তিনিই আমাকে দান করেন আহার্য ও পানীয়। ৭৯
3012 ২৬. আশ-শুআরা এবং অসুস্থ হলে তিনিই আমাকে রোগমুক্ত করেন। ৮০
3013 ২৬. আশ-শুআরা আর তিনিই আমার মৃত্যু ঘটাবেন, অতঃপর আমাকে পুনরুজ্জীবিত করবেন। ৮১
3014 ২৬. আশ-শুআরা এবং আশা করি, তিনি কিয়ামাত দিবসে আমার অপরাধসমূহ ক্ষমা করে দিবেন। ৮২
3015 ২৬. আশ-শুআরা হে আমার রাব্ব! আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং সৎ কর্মপরায়ণদের সাথে আমাকে মিলিত করুন। ৮৩
3016 ২৬. আশ-শুআরা আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে সত্যভাষী করুন! ৮৪
3017 ২৬. আশ-শুআরা এবং আমাকে সুখময় জান্নাতের অধিকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন! ৮৫
3018 ২৬. আশ-শুআরা আর আমার পিতাকে ক্ষমা করুন, সেতো পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত। ৮৬
3019 ২৬. আশ-শুআরা এবং আমাকে লাঞ্ছিত করবেননা পুনরুত্থান দিবসে – ৮৭
3020 ২৬. আশ-শুআরা যেদিন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোন কাজে আসবেনা। ৮৮
3021 ২৬. আশ-শুআরা সেদিন উপকৃত হবে শুধু সে, যে আল্লাহর নিকট আসবে বিশুদ্ধ অন্তঃকরণ নিয়ে। ৮৯
3022 ২৬. আশ-শুআরা মুত্তাকীদের নিকটবর্তী করা হবে জান্নাত। ৯০
3023 ২৬. আশ-শুআরা আর পথভ্রষ্টদের জন্য উম্মোচিত করা হবে জাহান্নাম। ৯১
3024 ২৬. আশ-শুআরা তাদেরকে বলা হবেঃ তারা কোথায়, তোমরা যাদের ইবাদাত করতে – ৯২
3025 ২৬. আশ-শুআরা আল্লাহর পরিবর্তে? তারা কি তোমাদের সাহায্য করতে পারে অথবা তারা কি আত্মরক্ষা করতে সক্ষম? ৯৩
3026 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর তাদেরকে ও পথভ্রষ্টদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। ৯৪
3027 ২৬. আশ-শুআরা এবং ইবলীস বাহিনীর সবাইকেও। ৯৫
3028 ২৬. আশ-শুআরা তারা সেখানে বিতর্কে লিপ্ত হয়ে বলবে – ৯৬
3029 ২৬. আশ-শুআরা আল্লাহর শপথ! আমরাতো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতেই ছিলাম। ৯৭
3030 ২৬. আশ-শুআরা যখন আমরা তোমাদেরকে জগতসমূহের রবের সমকক্ষ মনে করতাম। ৯৮
3031 ২৬. আশ-শুআরা আমাদেরকে দুস্কৃতকারীরাই বিভ্রান্ত করেছিল। ৯৯
3032 ২৬. আশ-শুআরা পরিণামে আমাদের কোন সুপারিশকারী নেই। ১০০
3033 ২৬. আশ-শুআরা কোন সহৃদয় বন্ধুও নেই। ১০১
3034 ২৬. আশ-শুআরা হায়! যদি আমাদের একবার প্রত্যাবর্তনের সুযোগ ঘটত তাহলে আমরা মু’মিনদের অন্তর্ভুক্ত হতাম! ১০২
3035 ২৬. আশ-শুআরা এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশ মু’মিন নয়। ১০৩
3036 ২৬. আশ-শুআরা তোমার রাব্ব, তিনিতো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু। ১০৪
3037 ২৬. আশ-শুআরা নূহের সম্প্রদায় রাসূলদের প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছিল। ১০৫
3038 ২৬. আশ-শুআরা যখন তাদের ভাই নূহ তাদেরকে বললঃ তোমরা কি সাবধান হবেনা? ১০৬
3039 ২৬. আশ-শুআরা আমিতো তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল। ১০৭
3040 ২৬. আশ-শুআরা অতএব আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর। ১০৮
3041 ২৬. আশ-শুআরা আমি তোমাদের নিকট এ জন্য কোন প্রতিদান চাইনা; আমার পুরস্কারতো জগতসমূহের রবের নিকটই রয়েছে। ১০৯
3042 ২৬. আশ-শুআরা সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর। ১১০
3043 ২৬. আশ-শুআরা তারা বললঃ আমরা কি তোমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করব, অথচ ইতর লোকেরা তোমার অনুসরণ করছে? ১১১
3044 ২৬. আশ-শুআরা নূহ বললঃ তারা কি কাজ করছে তা জানা আমার কি দরকার? ১১২
3045 ২৬. আশ-শুআরা তাদের হিসাব গ্রহণতো আমার রবেরই কাজ; যদি তোমরা বুঝতে। ১১৩
3046 ২৬. আশ-শুআরা মু’মিনদেরকে তাড়িয়ে দেয়া আমার কাজ নয়, ১১৪
3047 ২৬. আশ-শুআরা আমিতো শুধু একজন স্পষ্ট সতর্ককারী। ১১৫
3048 ২৬. আশ-শুআরা তারা বললঃ হে নূহ! তুমি যদি নিবৃত্ত না হও তাহলে তুমি অবশ্যই প্রস্তরাঘাতে নিহতদের অন্তর্ভুক্ত হবে। ১১৬
3049 ২৬. আশ-শুআরা নূহ বললঃ হে আমার রাব্ব! আমার সম্প্রদায়তো আমাকে অস্বীকার করছে। ১১৭
3050 ২৬. আশ-শুআরা সুতরাং আমার ও তাদের মধ্যে স্পষ্ট মীমাংসা করে দিন এবং আমাকে এবং আমার সাথে যে সব মু’মিন রয়েছে তাদেরকে রক্ষা করুন। ১১৮
3051 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর আমি তাকে ও তার সঙ্গে যারা ছিল তাদেরকে রক্ষা করলাম বোঝাই করা নৌ-যানে। ১১৯
3052 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর অবশিষ্ট সবাইকে নিমজ্জিত করলাম। ১২০
3053 ২৬. আশ-শুআরা এতে অবশ্যই রয়েছে নিদর্শন, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়। ১২১
3054 ২৬. আশ-শুআরা এবং তোমার রাব্ব, তিনিতো পরাক্রমশালী, দয়ালু। ১২২
3055 ২৬. আশ-শুআরা ‘আদ সম্প্রদায় রাসূলদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল। ১২৩
3056 ২৬. আশ-শুআরা যখন তাদের ভাই হুদ তাদেরকে বললঃ তোমরা কি সাবধান হবেনা? ১২৪
3057 ২৬. আশ-শুআরা আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল। ১২৫
3058 ২৬. আশ-শুআরা অতএব আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর। ১২৬
3059 ২৬. আশ-শুআরা আমি তোমাদের নিকট এর জন্য কোন প্রতিদান চাইনা, আমার পুরস্কারতো জগতসমূহের রবের নিকট রয়েছে। ১২৭
3060 ২৬. আশ-শুআরা তোমরা কি প্রতিটি উঁচু স্থানে নিরর্থক স্মৃতিসৌধ/ভাস্কর্য নির্মাণ করছ? ১২৮
3061 ২৬. আশ-শুআরা আর তোমরা প্রাসাদ নির্মাণ করছ এই মনে করে যে, তোমরা চিরস্থায়ী হবে? ১২৯
3062 ২৬. আশ-শুআরা এবং যখন তোমরা আঘাত হান তখন আঘাত হেনে থাক কঠোরভাবে। ১৩০
3063 ২৬. আশ-শুআরা তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর। ১৩১
3064 ২৬. আশ-শুআরা ভয় কর তাঁকে, যিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন সেই সমূদয় জ্ঞান যা তোমরা জান। ১৩২
3065 ২৬. আশ-শুআরা তোমাদের দিয়েছেন পশু-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি। ১৩৩
3066 ২৬. আশ-শুআরা উদ্যান ও প্রস্রবন। ১৩৪
3067 ২৬. আশ-শুআরা আমি তোমাদের জন্য আশংকা করি মহা দিনের শাস্তির। ১৩৫
3068 ২৬. আশ-শুআরা তারা বললঃ তুমি উপদেশ দাও অথবা না’ই দাও, উভয়ই আমাদের জন্য সমান। ১৩৬
3069 ২৬. আশ-শুআরা এটাতো পূর্ববর্তীদেরই স্বভাব। ১৩৭
3070 ২৬. আশ-শুআরা আমরা শাস্তি প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত নই। ১৩৮
3071 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর তারা তাকে প্রত্যাখ্যান করল এবং আমি তাদের ধ্বংস করলাম। এতে অবশ্যই রয়েছে নিদর্শন; কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু’মিন নয়। ১৩৯
3072 ২৬. আশ-শুআরা এবং তোমার রাব্ব পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু। ১৪০
3073 ২৬. আশ-শুআরা সামূদ সম্প্রদায় রাসূলদের মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল। ১৪১
3074 ২৬. আশ-শুআরা যখন তাদের ভাই সালিহ তাদেরকে বললঃ তোমরা কি সাবধান হবেনা? ১৪২
3075 ২৬. আশ-শুআরা আমিতো তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল। ১৪৩
3076 ২৬. আশ-শুআরা অতএব আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর। ১৪৪
3077 ২৬. আশ-শুআরা আমি তোমাদের নিকট এ জন্য কোন প্রতিদান চাইনা, আমার পুরস্কারতো জগতসমূহের রবের নিকটই রয়েছে। ১৪৫
3078 ২৬. আশ-শুআরা তোমাদেরকে কি এ জগতে ভোগ বিলাসের মধ্যে নিরাপদে ছেড়ে দেয়া হবে – ১৪৬
3079 ২৬. আশ-শুআরা উদ্যানে, প্রস্রবণে – ১৪৭
3080 ২৬. আশ-শুআরা ও শস্যক্ষেতে এবং সুকোমল গুচ্ছ বিশিষ্ট খেজুর বাগানে? ১৪৮
3081 ২৬. আশ-শুআরা তোমরাতো নৈপুণ্যের সাথে পাহাড় কেটে গৃহ নির্মাণ করেছ। ১৪৯
3082 ২৬. আশ-শুআরা তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর। ১৫০
3083 ২৬. আশ-শুআরা এবং সীমা লংঘনকারীদের আদেশ মান্য করনা – ১৫১
3084 ২৬. আশ-শুআরা যারা পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে এবং শান্তি স্থাপন করেনা। ১৫২
3085 ২৬. আশ-শুআরা তারা বললঃ তুমিতো যাদুগ্রস্তদের অন্যতম। ১৫৩
3086 ২৬. আশ-শুআরা তুমিতো আমাদের মত একজন মানুষ, অতএব তুমি যদি সত্যবাদী হও তাহলে একটি নিদর্শন উপস্থিত কর। ১৫৪
3087 ২৬. আশ-শুআরা সালিহ বললঃ এই যে উষ্ট্রী, এর জন্য রয়েছে পানি পানের এবং তোমাদের জন্য রয়েছে পানি পানের পালা নির্ধারিত এক এক দিনে। ১৫৫
3088 ২৬. আশ-শুআরা এবং তোমরা ওর কোন অনিষ্ট সাধন করনা; তাহলে মহা দিনের শাস্তি তোমাদের উপর আপতিত হবে। ১৫৬
3089 ২৬. আশ-শুআরা কিন্তু তারা ওকে বধ করল, পরিণামে তারা অনুতপ্ত হল। ১৫৭
3090 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করল; এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু’মিন নয়। ১৫৮
3091 ২৬. আশ-শুআরা তোমার রাব্ব, তিনি পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু। ১৫৯
3092 ২৬. আশ-শুআরা লূতের সম্প্রদায় রাসূলদেরকে অস্বীকার করেছিল। ১৬০
3093 ২৬. আশ-শুআরা যখন তাদের ভাই লূত তাদেরকে বললঃ তোমরা কি সাবধান হবেনা? ১৬১
3094 ২৬. আশ-শুআরা আমিতো তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল। ১৬২
3095 ২৬. আশ-শুআরা সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর। ১৬৩
3096 ২৬. আশ-শুআরা আমি এ জন্য তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাইনা, আমার পুরস্কারতো জগতসমূহের রবের নিকটই রয়েছে। ১৬৪
3097 ২৬. আশ-শুআরা সৃষ্টির মধ্যে তোমরা কি শুধু পুরুষের সাথেই উপগত হবে? ১৬৫
3098 ২৬. আশ-শুআরা আর তোমাদের রাব্ব তোমাদের জন্য যে স্ত্রীলোক সৃষ্টি করেছেন তাদেরকে তোমরা বর্জন করে থাক, বরং তোমরা সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়। ১৬৬
3099 ২৬. আশ-শুআরা তারা বললঃ হে লূত! তুমি যদি নিবৃত্ত না হও তাহলে অবশ্যই তুমি নির্বাসিত হবে। ১৬৭
3100 ২৬. আশ-শুআরা লূত বলল, আমি তোমাদের এই কাজকে ঘৃণা করি। ১৬৮
3101 ২৬. আশ-শুআরা হে আমার রাব্ব! আমাকে ও আমার পরিবারবর্গকে, তারা যা করে তা হতে রক্ষা কর। ১৬৯
3102 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর আমি তাকে এবং তার পরিবার পরিজনের সবাইকে রক্ষা করলাম – ১৭০
3103 ২৬. আশ-শুআরা এক বৃদ্ধা ব্যতীত, সে ছিল পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত। ১৭১
3104 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর অন্যদেরকে ধ্বংস করলাম। ১৭২
3105 ২৬. আশ-শুআরা তাদের উপর শাস্তিমূলক বৃষ্টি বর্ষণ করেছিলাম, এবং ভীতি প্রদর্শনের জন্য এই বৃষ্টি ছিল কত নিকৃষ্ট! ১৭৩
3106 ২৬. আশ-শুআরা এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু’মিন নয়। ১৭৪
3107 ২৬. আশ-শুআরা তোমার রাব্ব, তিনিতো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু। ১৭৫
3108 ২৬. আশ-শুআরা আইকাবাসীরা রাসূলদেরকে অস্বীকার করেছিল – ১৭৬
3109 ২৬. আশ-শুআরা যখন শু‘আইব তাদেরকে বলেছিলঃ তোমরা কি সাবধান হবেনা? ১৭৭
3110 ২৬. আশ-শুআরা আমিতো তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত রাসূল। ১৭৮
3111 ২৬. আশ-শুআরা সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর। ১৭৯
3112 ২৬. আশ-শুআরা আমি তোমাদের নিকট এ জন্য কোন প্রতিদান চাইনা; আমার পুরস্কারতো জগতসমূহের রবের নিকটই রয়েছে। ১৮০
3113 ২৬. আশ-শুআরা তোমরা মাপে পূর্ণ মাত্রায় দিবে; যারা মাপে কমতি করে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়োনা। ১৮১
3114 ২৬. আশ-শুআরা এবং তোমরা ওজন করবে সঠিক দাঁড়িপাল্লায়। ১৮২
3115 ২৬. আশ-শুআরা লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিবেনা এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে ফিরনা। ১৮৩
3116 ২৬. আশ-শুআরা এবং তোমরা ভয় কর তাঁকে, যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্বে যারা গত হয়েছে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। ১৮৪
3117 ২৬. আশ-শুআরা তারা বললঃ তুমিতো যাদুগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত। ১৮৫
3118 ২৬. আশ-শুআরা তুমি আমাদেরই মত একজন মানুষ বলে আমরা মনে করি, তুমি মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত। ১৮৬
3119 ২৬. আশ-শুআরা তুমি যদি সত্যবাদী হও তাহলে আকাশের একটি খন্ড আমাদের উপর ফেলে দাও। ১৮৭
3120 ২৬. আশ-শুআরা সে বললঃ আমার রাব্ব ভাল জানেন, যা তোমরা কর। ১৮৮
3121 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর তারা তাকে প্রত্যাখ্যান করল, পরে তাদেরকে মেঘাচ্ছন্ন দিনের শাস্তি গ্রাস করল; এটাতো ছিল এক ভীষণ দিনের শাস্তি। ১৮৯
3122 ২৬. আশ-শুআরা এতে অবশ্যই রয়েছে নিদর্শন, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু’মিন নয়। ১৯০
3123 ২৬. আশ-শুআরা তোমার রাব্ব! তিনিতো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু। ১৯১
3124 ২৬. আশ-শুআরা নিশ্চয়ই ইহা (আল কুরআন) জগতসমূহের রাব্ব হতে অবতারিত। ১৯২
3125 ২৬. আশ-শুআরা জিবরাঈল ইহা নিয়ে অবতরণ করেছে – ১৯৩
3126 ২৬. আশ-শুআরা তোমার হৃদয়ে, যাতে তুমি সতর্ককারী হতে পার। ১৯৪
3127 ২৬. আশ-শুআরা অবতীর্ণ করা হয়েছে সুস্পষ্ট আরাবী ভাষায়। ১৯৫
3128 ২৬. আশ-শুআরা পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে অবশ্যই এর উল্লেখ রয়েছে। ১৯৬
3129 ২৬. আশ-শুআরা বানী ইসরাঈলের পন্ডিতরা এটা অবগত আছে, এটা কি তাদের জন্য নিদর্শন নয়? ১৯৭
3130 ২৬. আশ-শুআরা আমি যদি ইহা কোন আজমীর (ভিন্ন ভাষী) প্রতি অবতীর্ণ করতাম – ১৯৮
3131 ২৬. আশ-শুআরা এবং ওটা সে তাদের নিকট পাঠ করত, তাহলে তারা তাতে ঈমান আনতনা। ১৯৯
3132 ২৬. আশ-শুআরা এভাবেই আমি পাপীদের অন্তরে অবিশ্বাস সঞ্চার করেছি। ২০০
3133 ২৬. আশ-শুআরা তারা এতে ঈমান আনবেনা যতক্ষণ না তারা মর্মন্তদ শাস্তি প্রত্যক্ষ করে। ২০১
3134 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর এটা তাদের নিকট এসে পড়বে আকস্মিকভাবে, তারা কিছুই বুঝতে পারবেনা। ২০২
3135 ২৬. আশ-শুআরা তখন তারা বলবেঃ আমাদেরকে কি অবকাশ দেয়া হবে? ২০৩
3136 ২৬. আশ-শুআরা তারা কি তাহলে আমার শাস্তি ত্বরান্বিত করতে চায়? ২০৪
3137 ২৬. আশ-শুআরা তুমি চিন্তা করে দেখ, যদি আমি তাদেরকে দীর্ঘকাল ভোগ-বিলাস করতে দিই, ২০৫
3138 ২৬. আশ-শুআরা অতঃপর তাদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল তা তাদের নিকট এসে পড়ে – ২০৬
3139 ২৬. আশ-শুআরা তখন তাদের ভোগ-বিলাসের উপকরণ তাদের কোন কাজে আসবে কি? ২০৭
3140 ২৬. আশ-শুআরা আমি এমন কোন জনপদ ধ্বংস করিনি যার জন্য সতর্ককারী ছিলনা। ২০৮
3141 ২৬. আশ-শুআরা এটা উপদেশ স্বরূপ, আর আমি অত্যাচারী নই। ২০৯
3142 ২৬. আশ-শুআরা শাইতানরা ইহাসহ অবতীর্ণ হয়নি। ২১০
3143 ২৬. আশ-শুআরা তারা এ কাজের যোগ্য নয় এবং তারা এর সামর্থ্যও রাখেনা। ২১১
3144 ২৬. আশ-শুআরা তাদেরকে শ্রবণের সুযোগ হতে দূরে রাখা হয়েছে। ২১২
3145 ২৬. আশ-শুআরা অতএব তুমি অন্য কোন মা‘বূদকে আল্লাহর সাথে ডেকোনা, তাহলে তুমি শাস্তি প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। ২১৩
3146 ২৬. আশ-শুআরা তোমার নিকটতম আত্মীয়বর্গকে সতর্ক করে দাও। ২১৪
3147 ২৬. আশ-শুআরা এবং যারা তোমার অনুসরণ করে, সেই সব মু’মিনের প্রতি বিনয়ী হও। ২১৫
3148 ২৬. আশ-শুআরা তারা যদি তোমার অবাধ্যতা করে তাহলে তুমি বলঃ তোমরা যা কর তার জন্য আমি দায়ী নই। ২১৬
3149 ২৬. আশ-শুআরা তুমি নির্ভর কর পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু আল্লাহর উপর। ২১৭
3150 ২৬. আশ-শুআরা যিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি দন্ডায়মান হও (সালাতের জন্য)। ২১৮
3151 ২৬. আশ-শুআরা এবং দেখেন সাজদাহকারীদের সাথে তোমার উঠা বসা। ২১৯
3152 ২৬. আশ-শুআরা তিনিতো সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। ২২০
3153 ২৬. আশ-শুআরা তোমাদেরকে কি জানাব, কার নিকট শাইতানরা অবতীর্ণ হয়? ২২১
3154 ২৬. আশ-শুআরা তারাতো অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক চরম মিথ্যাবাদী ও পাপীর নিকট। ২২২
3155 ২৬. আশ-শুআরা তারা কান পেতে থাকে এবং তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী। ২২৩
3156 ২৬. আশ-শুআরা এবং কবিদের অনুসরণ করে তারা, যারা বিভ্রান্ত। ২২৪
3157 ২৬. আশ-শুআরা তুমি কি দেখনা, তারা বিভ্রান্ত হয়ে প্রত্যেক উপত্যকায় ঘুরে বেড়ায়? ২২৫
3158 ২৬. আশ-শুআরা এবং যা তারা করেনা, তা বলে। ২২৬
3159 ২৬. আশ-শুআরা কিন্তু তারা ব্যতীত, যারা ঈমান আনে ও সৎকার্য করে এবং আল্লাহকে বার বার স্মরণ করে ও অত্যাচারিত হবার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। অত্যাচারীরা শীঘ্রই জানবে তাদের গন্তব্যস্থল কোথায়? ২২৭
3160 ২৭. আন-নামাল তা সীন; এগুলি আয়াত আল-কুরআনের এবং সুস্পষ্ট কিতাবের।
3161 ২৭. আন-নামাল পথ নির্দেশ ও সুসংবাদ মু’মিনদের জন্য।
3162 ২৭. আন-নামাল যারা সালাত কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে এবং যারা আখিরাতে নিশ্চিত বিশ্বাসী।
3163 ২৭. আন-নামাল যারা আখিরাতে বিশ্বাস করেনা তাদের দৃষ্টিতে তাদের কাজকে আমি শোভন করেছি, ফলে তারা বিভ্রান্তিতে ঘুরে বেড়ায়।
3164 ২৭. আন-নামাল এদেরই জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি এবং এরাই আখিরাতে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত।
3165 ২৭. আন-নামাল নিশ্চয়ই তোমাকে আল কুরআন দেয়া হয়েছে প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞের নিকট হতে।
3166 ২৭. আন-নামাল স্মরণ কর সেই সময়ের কথা, যখন মূসা তার পরিবারবর্গকে বলেছিলঃ আমি আগুন দেখেছি, সত্ত্বর আমি সেখান হতে তোমাদের জন্য কোন খবর আনব অথবা তোমাদের জন্য আনব জ্বলন্ত অঙ্গার, যাতে তোমরা আগুন পোহাতে পার।
3167 ২৭. আন-নামাল অতঃপর সে যখন ওর নিকট এলো তখন ঘোষিত হলঃ ধন্য সেই ব্যক্তি যে আছে এই আগুনের মধ্যে এবং যারা আছে ওর চতুস্পার্শ্বে। জগতসমূহের রাব্ব আল্লাহ পবিত্র ও মহিমান্বিত।
3168 ২৭. আন-নামাল হে মূসা! আমিতো আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
3169 ২৭. আন-নামাল তুমি তোমার লাঠি নিক্ষেপ কর, অতঃপর যখন সে ওটাকে সর্পের ন্যায় ছুটাছুটি করতে দেখল তখন সে পিছনের দিকে ছুটতে লাগল এবং ফিরেও তাকালনা। বলা হলঃ হে মূসা! ভীত হয়োনা, নিশ্চয়ই আমি এমন, আমার সান্নিধ্যে রাসূলগণ ভয় পায়না। ১০
3170 ২৭. আন-নামাল তবে যারা যুল্‌ম করার পর মন্দ কাজের পরিবর্তে সৎ কাজ করে তাদের প্রতি আমি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ১১
3171 ২৭. আন-নামাল তোমার হাত তোমার বক্ষপার্শ্বে বস্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করাও। এটা বের হয়ে আসবে শুভ্র নির্দোষ হয়ে; এটা ফির‘আউন ও তার সম্প্রদায়ের নিকট আনীত নয়টি নিদর্শনের অন্তর্গত; তারাতো সত্যত্যাগী সম্প্রদায়। ১২
3172 ২৭. আন-নামাল অতঃপর যখন তাদের নিকট আমার স্পষ্ট আয়াত এলো তখন তারা বললঃ এটাতো সুস্পষ্ট যাদু। ১৩
3173 ২৭. আন-নামাল তারা অন্যায় ও উদ্ধতভাবে নিদর্শনগুলি প্রত্যাখ্যান করল, যদিও তাদের অন্তর ঐগুলিকে সত্য বলে গ্রহণ করেছিল। দেখ, বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পরিণাম কি হয়েছিল! ১৪
3174 ২৭. আন-নামাল আমি অবশ্যই দাউদকে ও সুলাইমানকে জ্ঞান দান করেছিলাম এবং তারা বলেছিলঃ প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমাদেরকে তাঁর বহু মু’মিন বান্দাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। ১৫
3175 ২৭. আন-নামাল সুলাইমান হয়েছিল দাউদের উত্তরাধিকারী এবং সে বলেছিলঃ হে লোক সকল! আমাকে পক্ষীকুলের ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়েছে এবং আমাকে সব কিছু হতে প্রদান করা হয়েছে; এটা অবশ্যই সুস্পষ্ট অনুগ্রহ। ১৬
3176 ২৭. আন-নামাল সুলাইমানের সামনে সমবেত করা হল তার বাহিনীকে, জিন, মানুষ ও পক্ষীকুলকে এবং তাদেরকে বিন্যস্ত করা হল বিভিন্ন বুহ্যে। ১৭
3177 ২৭. আন-নামাল যখন তারা পিপীলিকা অধ্যুষিত উপত্যকায় পৌঁছল তখন এক পিপীলিকা বললঃ হে পিপীলিকা বাহিনী! তোমরা তোমাদের গৃহে প্রবেশ কর, যেন সুলাইমান এবং তার বাহিনী তাদের অজ্ঞাতসারে তোমাদেরকে পদতলে পিষে না ফেলে। ১৮
3178 ২৭. আন-নামাল সুলাইমান ওর উক্তিতে মৃদু হাস্য করল এবং বললঃ হে আমার রাব্ব! আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন যাতে আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার মাতা-পিতার প্রতি আপনি যে অনুগ্রহ করেছেন তজ্জন্য এবং যাতে আমি সৎ কাজ করতে পারি, যা আপনি পছন্দ করেন এবং আপনার অনুগ্রহে আমাকে আপনার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের শ্রেণীভুক্ত করুন। ১৯
3179 ২৭. আন-নামাল সুলাইমান পক্ষীকুলের সন্ধান নিল এবং বললঃ ব্যাপার কি, হুদহুদকে দেখছিনা যে! সে অনুপস্থিত না কি? ২০
3180 ২৭. আন-নামাল সে উপযুক্ত কারণ দর্শাতে না পারলে আমি অবশ্যই তাকে কঠিন শাস্তি দিব অথবা যবাহ করব। ২১
3181 ২৭. আন-নামাল অনতি বিলম্বে হুদহুদ এসে পড়ল এবং বললঃ আপনি যা অবগত নন আমি তা অবগত হয়েছি এবং ‘সাবা’ হতে সুনিশ্চিত সংবাদ নিয়ে এসেছি। ২২
3182 ২৭. আন-নামাল আমি এক নারীকে দেখলাম যে তাদের উপর রাজত্ব করছে; তাকে সব কিছু দেয়া হয়েছে এবং তার আছে এক বিরাট সিংহাসন। ২৩
3183 ২৭. আন-নামাল আমি তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখলাম, তারা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যকে সাজদাহ করছে; শাইতান তাদের কার্যাবলী তাদের নিকট শোভন করেছে এবং তাদেরকে সৎ পথ হতে নিবৃত্ত করেছে; ফলে তারা সৎ পথ প্রাপ্ত হয়না – ২৪
3184 ২৭. আন-নামাল তারা নিবৃত্ত রয়েছে আল্লাহকে সাজদাহ করা হতে, যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর লুকায়িত বস্তুকে প্রকাশ করেন, এবং যিনি জানেন যা তোমরা গোপন কর এবং যা তোমরা প্রকাশ কর। ২৫
3185 ২৭. আন-নামাল আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই। তিনি মহাআরশের অধিপতি। [সাজদাহ] ২৬
3186 ২৭. আন-নামাল সুলাইমান বললঃ আমি দেখব, তুমি সত্য বলেছ, না কি তুমি মিথ্যাবাদী? ২৭
3187 ২৭. আন-নামাল তুমি যাও আমার এই পত্র নিয়ে এবং এটা তাদের নিকট অর্পন কর; অতঃপর তাদের নিকট হতে দূরে সরে থেক এবং লক্ষ্য কর তাদের প্রতিক্রিয়া কি? ২৮
3188 ২৭. আন-নামাল সেই নারী বললঃ হে পরিষদবর্গ! আমাকে এক সম্মানিত পত্র দেয়া হয়েছে। ২৯
3189 ২৭. আন-নামাল ইহা সুলাইমানের নিকট হতে এবং ইহা দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে। ৩০
3190 ২৭. আন-নামাল অহমিকা বশে আমাকে অমান্য করনা, এবং আনুগত্য স্বীকার করে আমার নিকট উপস্থিত হও ৩১
3191 ২৭. আন-নামাল সেই নারী বললঃ হে পরিষদবর্গ! আমার এই সমস্যায় তোমাদের অভিমত দাও; আমি যা সিদ্ধান্ত নিই তাতো তোমাদের উপস্থিতিতেই নিই। ৩২
3192 ২৭. আন-নামাল তারা বললঃ আমরাতো শক্তিশালী ও কঠোর যোদ্ধা; তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা আপনারই। কি আদেশ করবেন তা আপনি ভেবে দেখুন। ৩৩
3193 ২৭. আন-নামাল সে বললঃ রাজা-বাদশাহরা যখন কোন জনপদে প্রবেশ করে তখন ওকে বিপর্যস্ত করে দেয় এবং সেখানকার মর্যাদাবান ব্যক্তিদেরকে অপদস্থ করে; এরাও এ রূপই করবে। ৩৪
3194 ২৭. আন-নামাল আমি তাদের নিকট উপঢৌকন পাঠাচ্ছি, দেখি দূতেরা কি বার্তা নিয়ে ফিরে আসে! ৩৫
3195 ২৭. আন-নামাল অতঃপর যখন দূত সুলাইমানের নিকট এলো তখন সুলাইমান বললঃ তোমরা আমাকে ধন-সম্পদ দিয়ে কি সাহায্য করবে? আল্লাহ আমাকে যা দিয়েছেন তা তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তা হতে উৎকৃষ্ট। অথচ তোমরা তোমাদের উপঢৌকন নিয়ে আনন্দ বোধ করছ। ৩৬
3196 ২৭. আন-নামাল তাদের নিকট ফিরে যাও, আমি অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে নিয়ে আসব এক সৈন্যবাহিনী যার মুকাবিলা করার শক্তি তাদের নেই। আমি অবশ্যই তাদেরকে সেখান হতে বহিস্কার করব লাঞ্ছিতভাবে এবং তারা হবে অপমানিত। ৩৭
3197 ২৭. আন-নামাল সুলাইমান আরও বললঃ হে আমার পরিষদবর্গ! তারা আমার নিকট এসে আত্মসমর্পন করার পূর্বে তোমাদের মধ্যে কে তার সিংহাসন আমার নিকট নিয়ে আসবে? ৩৮
3198 ২৭. আন-নামাল এক শক্তিশালী জিন বললঃ আপনি আপনার স্থান হতে উঠার পূর্বে আমি ওটা আপনার নিকট এনে দিব এবং এ ব্যাপারে আমি অবশ্যই ক্ষমতাবান, বিশ্বস্ত। ৩৯
3199 ২৭. আন-নামাল কিতাবের জ্ঞান যার ছিল সে বললঃ আপনি চোখের পলক ফেলার পূর্বেই আমি ওটা আপনাকে এনে দিব। সুলাইমান যখন ওটা সামনে রক্ষিত অবস্থায় দেখল তখন সে বললঃ এটা আমার রবের অনুগ্রহ যাতে তিনি আমাকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, আমি কৃতজ্ঞ না অকৃতজ্ঞ; যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সে তা করে তার নিজের কল্যাণের জন্য এবং যে অকৃতজ্ঞ হয় সে জেনে রাখুক যে, আমার রাব্ব অভাবমুক্ত, মহানুভব। ৪০
3200 ২৭. আন-নামাল সুলাইমান বললঃ তার সিংহাসনের আকৃতি বদলে দাও; দেখি সে সঠিক দিশা পায়, না কি সে বিভ্রান্তের অন্তর্ভুক্ত হয়। ৪১
3201 ২৭. আন-নামাল ঐ নারী যখন এলো, তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলঃ তোমার সিংহাসন কি এইরূপই? সে বললঃ এটাতো যেন ওটাই; আমাদেরকে ইতোপূর্বেই প্রকৃত জ্ঞান দান করা হয়েছে এবং আমরা আত্মসমর্পনও করেছি। ৪২
3202 ২৭. আন-নামাল আল্লাহর পরিবর্তে সে যার পূজা করত তা’ই তাকে সত্য হতে নিবৃত করেছিল, সে ছিল কাফির সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। ৪৩
3203 ২৭. আন-নামাল তাকে বলা হলঃ এই প্রাসাদে প্রবেশ কর। যখন সে ওটা দেখল তখন সে ওটাকে এক গভীর জলাশয় মনে করল এবং সে তার উভয় পায়ের গোছা অনাবৃত করল। সুলাইমান বললঃ স্বচ্ছ স্ফটিক মন্ডিত প্রাসাদ। সেই নারী বললঃ হে আমার রাব্ব! আমিতো নিজের প্রতি যুল্‌ম করেছিলাম, আমি সুলাইমানের সাথে জগতসমূহের রাব্ব আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পন করছি। ৪৪
3204 ২৭. আন-নামাল আমি ছামূদ সম্প্রদায়ের নিকট তাদের ভাই সালিহকে পাঠিয়েছিলাম এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর। কিন্তু তারা দ্বিধা বিভক্ত হয়ে বিতর্কে লিপ্ত হল। ৪৫
3205 ২৭. আন-নামাল সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা কেন কল্যাণের পূর্বে অকল্যাণ ত্বরান্বিত করতে চাচ্ছ? কেন তোমরা আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছনা, যাতে তোমরা অনুগ্রহ ভাজন হতে পার? ৪৬
3206 ২৭. আন-নামাল তারা বললঃ তোমাকে ও তোমার সঙ্গে যারা আছে তাদেরকে আমরা অমঙ্গলের কারণ মনে করি। সালিহ বললঃ তোমাদের শুভাশুভ আল্লাহর এখতিয়ারে, বস্তুতঃ তোমরা এমন এক সম্প্রদায় যাদেরকে পরীক্ষা করা হচ্ছে। ৪৭
3207 ২৭. আন-নামাল আর সেই শহরে ছিল এমন নয় ব্যক্তি যারা দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করত এবং সৎ কাজ করতনা। ৪৮
3208 ২৭. আন-নামাল তারা বললঃ তোমরা আল্লাহর নামে শপথ গ্রহণ কর; আমরা রাতে তাকে ও তার পরিবার পরিজনকে অবশ্যই আক্রমণ করব, অতঃপর তার অভিভাবককে নিশ্চিত বলবঃ তার পরিবার পরিজনের হত্যা আমরা প্রত্যক্ষ করিনি; আমরা অবশ্যই সত্যবাদী। ৪৯
3209 ২৭. আন-নামাল তারা এক চক্রান্ত করেছিল এবং আমিও এক কৌশল অবলম্বন করলাম, কিন্তু তারা বুঝতে পারেনি। ৫০
3210 ২৭. আন-নামাল অতএব দেখ, তাদের চক্রান্তের পরিণাম কি হয়েছে। আমি অবশ্যই তাদেরকে ও তাদের সম্প্রদায়ের সকলকে ধ্বংস করেছি। ৫১
3211 ২৭. আন-নামাল এইতো তাদের ঘরবাড়ী সীমা লংঘন হেতু যা জনশূন্য অবস্থায় পড়ে আছে; এতে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। ৫২
3212 ২৭. আন-নামাল এবং যারা মু’মিন ও মুত্তাকী ছিল তাদেরকে আমি উদ্ধার করেছি। ৫৩
3213 ২৭. আন-নামাল স্মরণ কর লূতের কথা, সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমরা জেনে শুনে কেন অশ্লীল কাজ করছ? ৫৪
3214 ২৭. আন-নামাল তোমরা কি কাম-তৃপ্তির জন্য নারীকে ছেড়ে পুরুষে উপগত হবে? তোমরাতো এক অজ্ঞ সম্প্রদায়। ৫৫
3215 ২৭. আন-নামাল উত্তরে তার সম্প্রদায় শুধু বললঃ লূত পরিবারকে তোমাদের জনপদ হতে বহিস্কার কর, এরাতো এমন লোক যারা অতি পবিত্র সাজতে চায়। ৫৬
3216 ২৭. আন-নামাল অতঃপর তাকে ও তার পরিজনবর্গকে আমি উদ্ধার করলাম, তার স্ত্রী ব্যতীত, তাকে করেছিলাম ধ্বংসপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত। ৫৭
3217 ২৭. আন-নামাল তাদের উপর ভয়ঙ্কর বৃষ্টি বর্ষণ করেছিলাম; যাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল তাদের জন্য এই বর্ষণ ছিল কত মারাত্মক। ৫৮
3218 ২৭. আন-নামাল বলঃ প্রশংসা আল্লাহই এবং শান্তি তাঁর মনোনীত বান্দাদের প্রতি। শ্রেষ্ঠ কি আল্লাহ, নাকি তারা যাদেরকে শরীক করা হয়? ৫৯
3219 ২৭. আন-নামাল বরং তিনি সৃষ্টি করেছেন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং আকাশ হতে তোমাদের জন্য বর্ষণ করেন বৃষ্টি; অতঃপর আমি ওটা দ্বারা মনোরম উদ্যান সৃষ্টি করি। ওর বৃক্ষাদি উদ্গত করার ক্ষমতা তোমাদের নেই। আল্লাহর সাথে অন্য কোন মা‘বূদ আছে কি? তবুও তারা এমন এক সম্প্রদায় যারা সত্য হতে বিচ্যুত। ৬০
3220 ২৭. আন-নামাল বলত, কে পৃথিবীকে করেছেন বাসোপযোগী এবং ওর মাঝে মাঝে প্রবাহিত করেছেন নদ-নদী এবং তাকে স্থির রাখার জন্য স্থাপন করেছেন সুদৃঢ় পর্বত ও দুই সমুদ্রের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন অন্তরায়; আল্লাহর সাথে অন্য কোন মা‘বূদ আছে কি? তবুও তাদের অনেকেই জানেনা। ৬১
3221 ২৭. আন-নামাল কে আর্তের আহবানে সাড়া দেন, যখন সে তাঁকে ডাকে এবং বিপদ-আপদ দূর করেন এবং তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেন? আল্লাহর সাথে অন্য কোন মা‘বূদ আছে কি? তোমরা উপদেশ অতি সামান্যই গ্রহণ করে থাকো। ৬২
3222 ২৭. আন-নামাল কে তোমাদেরকে স্থলের ও পানির অন্ধকারে পথ প্রদর্শন করেন এবং কে স্বীয় অনুগ্রহের প্রাক্কালে সুসংবাদবাহী বায়ু প্রেরণ করেন? আল্লাহর সাথে অন্য কোন মা‘বূদ আছে কি? তারা যাকে শরীক করে আল্লাহ তা হতে বহু উর্ধ্বে। ৬৩
3223 ২৭. আন-নামাল বলত, কে আদিতে সৃষ্টি করেন, অতঃপর ওর পুনরাবৃত্তি করবেন, এবং কে তোমাদেরকে আকাশ ও পৃথিবী হতে জীবনোপকরণ দান করেন? আল্লাহর সাথে অন্য কোন মা‘বূদ আছে কি? বলঃ তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলে তোমাদের প্রমাণ পেশ কর। ৬৪
3224 ২৭. আন-নামাল বলঃ আল্লাহ ব্যতীত আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে কেহই অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান রাখেনা এবং তারা জানেনা তারা কখন পুনরুত্থিত হবে। ৬৫
3225 ২৭. আন-নামাল বরং আখিরাত সম্পর্কে তাদের জ্ঞান নিঃশেষ হয়েছে; তারাতো এ বিষয়ে সন্দেহের মধ্যে রয়েছে, বরং এ বিষয়ে তারা অন্ধ। ৬৬
3226 ২৭. আন-নামাল কাফিরেরা বলেঃ আমরা ও আমাদের পিতৃ-পুরুষরা মাটিতে পরিণত হয়ে গেলেও কি আমাদের পুনরুত্থিত করা হবে? ৬৭
3227 ২৭. আন-নামাল এ বিষয়েতো আমাদেরকে এবং পূর্ব-পুরুষদেরকে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল। এটাতো পূর্ববর্তী উপকথা ব্যতীত আর কিছুই নয়। ৬৮
3228 ২৭. আন-নামাল বলঃ পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর এবং দেখ অপরাধীদের পরিণাম কিরূপ হয়েছে। ৬৯
3229 ২৭. আন-নামাল তাদের সম্পর্কে তুমি দুঃখ করনা এবং তাদের ষড়যন্ত্রে মনঃক্ষুন্ন হয়োনা। ৭০
3230 ২৭. আন-নামাল তারা বলেঃ তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলে বল, কখন এই প্রতিশ্রুতি পূর্ণ হবে? ৭১
3231 ২৭. আন-নামাল বলঃ তোমরা যে বিষয়ে ত্বরান্বিত করতে চাচ্ছ সম্ভবতঃ তার কিছু তোমাদের নিকটবর্তী হয়েছে। ৭২
3232 ২৭. আন-নামাল নিশ্চয়ই তোমার রাব্ব মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল; কিন্তু তাদের অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ। ৭৩
3233 ২৭. আন-নামাল তাদের অন্তর যা গোপন করে এবং তারা যা প্রকাশ করে তা তোমার রাব্ব অবশ্যই জানেন। ৭৪
3234 ২৭. আন-নামাল আকাশে ও পৃথিবীতে এমন কোন গোপন রহস্য নেই যা সুস্পষ্ট কিতাবে নেই। ৭৫
3235 ২৭. আন-নামাল বানী ইসরাঈল যে সমস্ত বিষয়ে মতভেদ করে, এই কুরআন তার অধিকাংশ তাদের নিকট বিবৃত করে। ৭৬
3236 ২৭. আন-নামাল আর নিশ্চয়ই এটি মু’মিনদের জন্য হিদায়াত ও রাহমাত। ৭৭
3237 ২৭. আন-নামাল তোমার রাব্ব নিজ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের মধ্যে ফাইসালা করে দিবেন। তিনি পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ। ৭৮
3238 ২৭. আন-নামাল অতএব আল্লাহর উপর নির্ভর কর; তুমিতো স্পষ্ট সত্যে প্রতিষ্ঠিত। ৭৯
3239 ২৭. আন-নামাল মৃতকে তুমি কথা শোনাতে পারবেনা, বধিরকেও পারবেনা আহবান শোনাতে, যখন তারা পিছন ফিরে চলে যায়। ৮০
3240 ২৭. আন-নামাল তুমি অন্ধদেরকে তাদের পথভ্রষ্টতা হতে পথে আনতে পারবে না। তুমি শোনাতে পারবে শুধু তাদেরকে যারা বিশ্বাস করে। আর তারাই আত্মসমর্পনকারী। ৮১
3241 ২৭. আন-নামাল যখন ঘোষিত শাস্তি তাদের উপর এসে যাবে তখন আমি মাটির গহবর হতে বের করব এক জীব, যা তাদের সাথে কথা বলবে; এ জন্য যে, মানুষ আমার নিদর্শনে অবিশ্বাসী। ৮২
3242 ২৭. আন-নামাল স্মরণ কর সেই দিনের কথা যেদিন আমি সমবেত করব প্রত্যেক সম্প্রদায় হতে এক একটি দলকে, যারা আমার নির্দেশাবলী প্রত্যাখ্যান করত এবং তাদেরকে সারিবদ্ধ করা হবে। ৮৩
3243 ২৭. আন-নামাল যখন তারা সমবেত হবে তখন (আল্লাহ তাদেরকে) বলবেনঃ তোমরা আমার নিদর্শন প্রত্যাখ্যান করেছিলে, অথচ ওটা তোমরা জ্ঞানায়ত্ত করতে পারনি? না তোমরা অন্য কিছু করছিলে? ৮৪
3244 ২৭. আন-নামাল সীমা লংঘন হেতু তাদের উপর ঘোষিত শাস্তি এসে পড়বে; ফলে তারা কিছুই বলতে পারবেনা। ৮৫
3245 ২৭. আন-নামাল তারা কি অনুধাবন করেনা যে, আমি রাত সৃষ্টি করেছি তাদের বিশ্রামের জন্য এবং দিনকে করেছি আলোকপ্রদ? এতে মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। ৮৬
3246 ২৭. আন-নামাল আর যেদিন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে সেদিন আল্লাহ যাদেরকে চান তারা ব্যতীত আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সবাই ভীত-বিহবল হয়ে পড়বে এবং সবাই তাঁর নিকট আসবে বিনীত অবস্থায়। ৮৭
3247 ২৭. আন-নামাল তুমি পর্বতমালা দেখে অচল মনে করছ, অথচ সেদিন ওগুলি হবে মেঘপুঞ্জের ন্যায় চলমান, এটা আল্লাহরই সৃষ্টি-নৈপুণ্য, যিনি সব কিছুকে করেছেন সুষম। তোমরা যা কর সেই সম্বন্ধে তিনি সম্যক অবগত। ৮৮
3248 ২৭. আন-নামাল যে কেহ সৎ কাজ নিয়ে আসবে, সে উৎকৃষ্টতর প্রতিফল পাবে এবং সেদিন তারা শংকা হতে নিরাপদ থাকবে। ৮৯
3249 ২৭. আন-নামাল আর যে কেহ অসৎ কাজ নিয়ে আসবে, তাকে অধোমুখে নিক্ষেপ করা হবে আগুনে (এবং তাদেরকে বলা হবে) তোমরা যা করতে তারই প্রতিফল তোমাদেরকে দেয়া হচ্ছে। ৯০
3250 ২৭. আন-নামাল আমিতো আদিষ্ট হয়েছি এই নগরীর রবের ইবাদাত করতে, যিনি একে করেছেন সম্মানিত। সব কিছু তাঁরই। আমি আরও আদিষ্ট হয়েছি যেন আমি আত্মসমর্পনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হই। ৯১
3251 ২৭. আন-নামাল আমি আরও আদিষ্ট হয়েছি কুরআন আবৃত্তি করতে। অতঃপর যে ব্যক্তি সৎ পথ অনুসরণ করে, সে তা অনুসরণ করে নিজেরই কল্যাণের জন্য এবং কেহ ভ্রান্ত পথ অবলম্বন করলে তুমি বলঃ আমিতো শুধু সর্তককারীদের মধ্যে একজন। ৯২
3252 ২৭. আন-নামাল আর বলঃ প্রশংসা আল্লাহরই, তিনি তোমাদেরকে সত্ত্বর দেখাবেন তাঁর নিদর্শন, তখন তোমরা তা বুঝতে পারবে। তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে তোমাদের রাব্ব গাফিল নন। ৯৩
3253 ২৮. আল-কাসাস তা-সীন-মীম।
3254 ২৮. আল-কাসাস এই আয়াতগুলি সুস্পষ্ট কিতাবের।
3255 ২৮. আল-কাসাস আমি তোমার নিকট মূসা ও ফির‘আউনের কিছু বৃত্তান্ত যথাযথভাবে বিবৃত করছি, মু’মিন সম্প্রদায়ের উদ্দেশে।
3256 ২৮. আল-কাসাস নিশ্চয়ই ফির‘আউন তার দেশে পরাক্রমশালী হয়েছিল এবং সেখানকার অধিবাসীবৃন্দকে বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করে তাদের একটি শ্রেণীকে সে হীনবল করেছিল, তাদের পুত্রদেরকে সে হত্যা করত এবং নারীদেরকে সে জীবিত রাখত। সেতো ছিল বিপর্যয় সৃষ্টিকারী।
3257 ২৮. আল-কাসাস আমি ইচ্ছা করলাম, সে দেশে যাদেরকে হীনবল করা হয়েছিল তাদের প্রতি অনুগ্রহ করতে; তাদেরকে নেতৃত্ব দান করতে ও দেশের অধিকারী করতে,
3258 ২৮. আল-কাসাস আর তাদেরকে দেশের ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করতে; এবং ফির‘আউন, হামান ও তাদের বাহিনীকে তা দেখিয়ে দিতে যা তাদের নিকট থেকে তারা আশংকা করত।
3259 ২৮. আল-কাসাস আমি মূসার মায়ের অন্তরে ইংগিতে নির্দেশ করলামঃ শিশুটিকে তুমি স্তন্য দান করতে থাক; যখন তুমি তার সম্পর্কে কোন আশংকা করবে তখন তাকে দরিয়ায় নিক্ষেপ কর এবং ভয় করনা, দুঃখ করনা; আমি তাকে তোমার নিকট ফিরিয়ে দিব এবং তাকে রাসূলদের একজন করব।
3260 ২৮. আল-কাসাস অতঃপর ফির‘আউনের লোকজন তাকে কুড়িয়ে নিল। এর পরিণামতো এই ছিল যে, সে তাদের শত্রু ও দুঃখের কারণ হবে। ফির‘আউন, হামান ও তাদের বাহিনী ছিল অপরাধী।
3261 ২৮. আল-কাসাস ফির‘আউনের স্ত্রী বললঃ এই শিশু আমার ও তোমার নয়ন প্রীতিকর। তাকে হত্যা করনা, সে আমাদের উপকারে আসতে পারে, আমরা তাকে সন্তান হিসাবেও গ্রহণ করতে পারি। প্রকৃত পক্ষে তারা এর পরিণাম বুঝতে পারেনি।
3262 ২৮. আল-কাসাস মূসা-জননীর হৃদয় অস্থির হয়ে পড়েছিল; যাতে সে আস্থাশীল হয় তজ্জন্য আমি তার হৃদয়কে দৃঢ় করে না দিলে সে তার পরিচয়তো প্রকাশ করেই দিত। ১০
3263 ২৮. আল-কাসাস সে মূসার বোনকে বললঃ এর পিছনে পিছনে যাও, সে তাদের অজ্ঞাতসারে দূর হতে তাকে দেখছিল। ১১
3264 ২৮. আল-কাসাস পূর্ব হতেই আমি ধাত্রীস্তন্য পানে তাকে বিরত রেখেছিলাম। মূসার বোন বললঃ তোমাদেরকে কি আমি এমন এক পরিবারের সন্ধান দিব যারা তোমাদের হয়ে একে লালন পালন করবে এবং এর মঙ্গলকামী হবে? ১২
3265 ২৮. আল-কাসাস অতঃপর আমি তাকে ফিরিয়ে দিলাম তার জননীর নিকট যাতে তার চক্ষু জুড়ায়, সে দুঃখ না করে এবং বুঝতে পারে যে, আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য; কিন্তু অধিকাংশ মানুষই এটা জানেনা। ১৩
3266 ২৮. আল-কাসাস যখন মূসা পূর্ণ যৌবনে উপনীত ও পরিণত বয়স্ক হল তখন আমি তাকে হিকমাত ও জ্ঞান দান করলাম। এভাবে আমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে পুরস্কার প্রদান করে থাকি। ১৪
3267 ২৮. আল-কাসাস সে নগরীতে প্রবেশ করল, যখন এর অধিবাসীরা ছিল অসতর্ক। সেখানে সে দু’টি লোককে সংঘর্ষে লিপ্ত দেখল - একজন তার নিজ দলের এবং অপর জন তার শত্রু দলের। মূসার দলের লোকটি তার শত্রুর বিরুদ্ধে তার সাহায্য প্রার্থনা করল। তখন মূসা তাকে ঘুষি মারল, এতেই তার মৃত্যু হল। মূসা বললঃ এটা শাইতানের কান্ড, সেতো প্রকাশ্য শত্রু ও পথভ্রষ্টকারী। ১৫
3268 ২৮. আল-কাসাস সে বললঃ হে আমার রাব্ব! আমিতো আমার নিজের প্রতি যুলম করেছি; সুতরাং আমাকে ক্ষমা করুন! অতঃপর তিনি তাকে ক্ষমা করলেন। তিনিতো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ১৬
3269 ২৮. আল-কাসাস সে আরও বললঃ হে আমার রাব্ব! আপনি যেহেতু আমার উপর অনুগ্রহ করেছেন, আমি কখনও অপরাধীদের সাহায্যকারী হবনা। ১৭
3270 ২৮. আল-কাসাস অতঃপর ভীত সতর্ক অবস্থায় সেই নগরীতে তার প্রভাত হল। হঠাৎ সে শুনতে পেলো, পূর্বদিন যে ব্যক্তি তার সাহায্য চেয়েছিল সে তার সাহায্যের জন্য চীৎকার করছে। মূসা তাকে বললঃ তুমিতো সুস্পষ্টই একজন বিভ্রান্ত ব্যক্তি। ১৮
3271 ২৮. আল-কাসাস অতঃপর মূসা যখন উভয়ের শত্রুকে ধরতে উদ্যত হল তখন সেই ব্যক্তি বলে উঠলঃ হে মূসা! গতকল্য তুমি যেমন এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছ সেভাবে আমাকেও কি হত্যা করতে চাচ্ছ? তুমিতো পৃথিবীতে স্বেচ্ছাচারী হতে চাচ্ছ, শান্তি স্থাপনকারী হতে চাওনা? ১৯
3272 ২৮. আল-কাসাস নগরীর দূর প্রান্ত হতে এক ব্যক্তি ছুটে এলো এবং বললঃ হে মূসা! পরিষদবর্গ তোমাকে হত্যা করার পরামর্শ করেছে। সুতরাং তুমি বাইরে চলে যাও, আমিতো তোমার মঙ্গলকামী। ২০
3273 ২৮. আল-কাসাস ভীত সতর্ক অবস্থায় সে সেখান হতে বের হয়ে পড়ল এবং বললঃ হে আমার রাব্ব! আপনি যালিম সম্প্রদায় হতে আমাকে রক্ষা করুন। ২১
3274 ২৮. আল-কাসাস যখন মূসা মাদইয়ান অভিমুখে যাত্রা শুরু করল তখন বললঃ আশা করি, আমার রাব্ব আমাকে সরল পথ প্রদর্শন করবেন। ২২
3275 ২৮. আল-কাসাস যখন সে মাদইয়ানের কূপের নিকট পৌঁছল তখন দেখল যে, একদল লোক তাদের পশুগুলিকে পানি পান করাচ্ছে এবং তাদের পশ্চাতে দু’জন নারী তাদের পশুগুলিকে আগলাচ্ছে। মূসা বললঃ তোমাদের কি ব্যাপার? তারা বললঃ আমরা আমাদের পশুগুলিকে পানি পান করাতে পারিনা, যতক্ষণ রাখালরা তাদের পশুগুলিকে নিয়ে সরে না যায়, আমাদের পিতা অতি বৃদ্ধ। ২৩
3276 ২৮. আল-কাসাস মূসা তখন তাদের পশুগুলিকে পানি পান করালো। অতঃপর সে ছায়ার নীচে আশ্রয় গ্রহণ করল ও বললঃ হে আমার রাব্ব! আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ করবেন আমি তার কাঙ্গাল। ২৪
3277 ২৮. আল-কাসাস তখন নারীদ্বয়ের একজন লজ্জা জড়িত চরণে তার নিকট এলো এবং বললঃ আমার পিতা আপনাকে আমন্ত্রণ করেছেন, আমাদের পশুগুলিকে পানি পান করানোর পারিশ্রমিক আপনাকে দেয়ার জন্য। অতঃপর মূসা তার নিকট এসে সমস্ত বৃত্তান্ত বর্ণনা করলে সে বললঃ ভয় করনা, তুমি যালিম সম্প্রদায়ের কবল হতে বেঁচে গেছ। ২৫
3278 ২৮. আল-কাসাস তাদের একজন বললঃ হে পিতা! আপনি একে মজুর নিযুক্ত করুন; কারণ আপনার মজুর হিসাবে উত্তম হবে সেই ব্যক্তি যে শক্তিশালী, বিশ্বস্ত। ২৬
3279 ২৮. আল-কাসাস সে মূসাকে বললঃ আমি আমার এই কন্যাদ্বয়ের একজনকে তোমার সাথে বিয়ে দিতে চাই এই শর্তে যে, তুমি আট বছর আমার কাজ করবে, যদি তুমি দশ বছর পূর্ণ কর সেটা তোমার ইচ্ছা। আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনা। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তুমি আমাকে সদাচারী পাবে। ২৭
3280 ২৮. আল-কাসাস মূসা বললঃ আপনার ও আমার মধ্যে এই চুক্তিই রইল। এ দু’টি মেয়াদের কোন একটি আমি পূর্ণ করলে আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকবেনা। আমরা যে বিষয়ে কথা বলছি আল্লাহ তার স্বাক্ষী। ২৮
3281 ২৮. আল-কাসাস মূসা যখন মেয়াদ পূর্ণ করার পর স্বপরিবারে যাত্রা শুরু করল তখন সে তূর পর্বতের দিকে আগুন দেখতে পেল। সে তার পরিজনবর্গকে বললঃ তোমরা অপেক্ষা কর, আমি আগুন দেখেছি, সম্ভবতঃ আমি সেথা হতে তোমাদের জন্য খবর আনতে পারি, অথবা এক খন্ড জ্বলন্ত কাষ্ঠ আনতে পারি যাতে তোমরা আগুন পোহাতে পার। ২৯
3282 ২৮. আল-কাসাস যখন মূসা আগুনের নিকট পৌঁছল তখন উপত্যকার দক্ষিণ পাশে পবিত্র ভূমিস্থিত এক বৃক্ষ হতে তাকে আহবান করে বলা হলঃ হে মূসা! আমিই আল্লাহ, জগতসমূহের রাব্ব। ৩০
3283 ২৮. আল-কাসাস আরও বলা হলঃ তুমি তোমার লাঠি নিক্ষেপ কর। অতঃপর যখন সে ওটাকে সর্পের ন্যায় ছুটাছুটি করতে দেখল তখন পিছনের দিকে ছুটতে লাগল এবং ফিরে তাকালোনা। তাকে বলা হলঃ হে মূসা! সামনে এসো, ভয় করনা, তুমিতো নিরাপদ। ৩১
3284 ২৮. আল-কাসাস তোমার হাত তোমার বগলে রাখ, ওটা বের হয়ে আসবে শুভ্র সমুজ্জ্বল নির্দোষ হয়ে। ভয় দূর করার জন্য তোমার হস্তদ্বয় তোমার উপর চেপে ধর। এ দু’টি তোমার রাব্ব প্রদত্ত প্রমাণ, ফির‘আউন ও তার পরিষদবর্গের জন্য। তারাতো সত্যত্যাগী সম্প্রদায়। ৩২
3285 ২৮. আল-কাসাস মূসা বললঃ হে আমার রাব্ব! আমিতো তাদের একজনকে হত্যা করেছি। ফলে আমি আশংকা করছি যে, তারা আমাকে হত্যা করবে। ৩৩
3286 ২৮. আল-কাসাস আমার ভাই হারূন আমা অপেক্ষা বাগ্মী; অতএব তাকে আমার সাহায্যকারী রূপে প্রেরণ করুন, সে আমাকে সমর্থন করবে। আমি আশংকা করি যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলবে। ৩৪
3287 ২৮. আল-কাসাস (আল্লাহ) বললেনঃ আমি তোমার ভাইয়ের দ্বারা তোমার বাহু শক্তিশালী করব এবং তোমাদের উভয়কে প্রাধান্য দান করব। তারা তোমাদের কাছে পৌঁছতে পারবেনা। তোমরা এবং তোমাদের অনুসারীরা আমার নিদর্শন বলে তাদের উপর প্রবল হবে। ৩৫
3288 ২৮. আল-কাসাস মূসা যখন তাদের নিকট আমার সুস্পষ্ট নিদর্শনগুলি নিয়ে এলো তখন তারা বললঃ এটাতো অলীক ইন্দ্রজাল মাত্র! আমাদের পূর্ব-পুরুষদের কাছে আমরা কখনও এরূপ কথা শুনিনি। ৩৬
3289 ২৮. আল-কাসাস মূসা বললঃ আমার রাব্ব সম্যক অবগত, কে তাঁর নিকট হতে পথ নির্দেশ নিয়ে এসেছে, এবং আখিরাতে কার পরিণাম শুভ হবে। নিশ্চয়ই যালিমরা সফলকাম হবেনা। ৩৭
3290 ২৮. আল-কাসাস ফির‘আউন বললঃ হে পরিষদবর্গ! আমি ছাড়া তোমাদের অন্য উপাস্য আছে বলে আমি জানিনা। হে হামান! তুমি আমার জন্য ইট পোড়াও এবং একটি সুউচ্চ প্রাসাদ তৈরী কর; হয়তো আমি তাতে উঠে মূসার মা‘বূদকে দেখতে পাব। তবে আমি অবশ্য মনে করি যে, সে মিথ্যাবাদী। ৩৮
3291 ২৮. আল-কাসাস ফির‘আউন ও তার বাহিনী অন্যায়ভাবে পৃথিবীতে অহংকার করেছিল যে, তারা আমার নিকট প্রত্যাবর্তিত হবেনা। ৩৯
3292 ২৮. আল-কাসাস অতএব আমি তাকে ও তার বাহিনীকে পাকড়াও করলাম এবং তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম। দেখ, যালিমদের পরিণাম কি হয়ে থাকে। ৪০
3293 ২৮. আল-কাসাস তাদেরকে আমি নেতা করেছিলাম। তারা লোকদেরকে জাহান্নামের দিকে আহবান করত। কিয়ামাত দিবসে তাদেরকে সাহায্য করা হবেনা। ৪১
3294 ২৮. আল-কাসাস এই পৃথিবীতে আমি তাদের পশ্চাতে লাগিয়ে দিয়েছি অভিসম্পাত এবং কিয়ামাত দিবসেও তারা দুর্দশাগ্রস্ত লোকদের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ৪২
3295 ২৮. আল-কাসাস আমিতো পূর্ববর্তী বহু মানব গোষ্ঠিকে বিনাশ করার পর মূসাকে দিয়েছিলাম কিতাব, মানব জাতির জন্য জ্ঞান-বর্তিকা, পথ নির্দেশ ও দয়া স্বরূপ, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। ৪৩
3296 ২৮. আল-কাসাস মূসাকে যখন আমি বিধান দিয়েছিলাম তখন তুমি পশ্চিম প্রান্তে উপস্থিত ছিলেনা এবং তুমি প্রত্যক্ষদর্শীও ছিলেনা। ৪৪
3297 ২৮. আল-কাসাস বস্তুতঃ আমি অনেক মানব গোষ্ঠির আবির্ভাব ঘটিয়েছিলাম, অতঃপর তাদের বহু যুগ অতিবাহিত হয়েছে। তুমিতো মাদইয়ানবাসীদের মধ্যে বিদ্যমান ছিলেনা, তাদের নিকট আমার আয়াত আবৃত্তি করার জন্য। আমিই ছিলাম রাসূল প্রেরণকারী। ৪৫
3298 ২৮. আল-কাসাস মূসাকে যখন আমি আহবান করেছিলাম তখন তুমি তূর পর্বত-পার্শ্বে উপস্থিত ছিলেনা। বস্তুতঃ এটা তোমার রবের নিকট হতে দয়া স্বরূপ যাতে তুমি এমন এক সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পার যাদের নিকট তোমার পূর্বে কোন সতর্ককারী আসেনি, যেন তারা উপদেশ গ্রহণ করে। ৪৬
3299 ২৮. আল-কাসাস রাসূল না পাঠালে তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদের কোন বিপদ হলে তারা বলতঃ হে আমাদের রাব্ব! আপনি আমাদের নিকট কোন রাসূল প্রেরণ করলেন না কেন? তাহলে আমরা আপনার নিদর্শন মেনে চলতাম এবং আমরা হতাম মু’মিন। ৪৭
3300 ২৮. আল-কাসাস অতঃপর যখন আমার নিকট হতে তাদের নিকট সত্য এসে গেল, তারা বলতে লাগলঃ মূসাকে যেরূপ দেয়া হয়েছিল অনুরূপ তাকে দেয়া হলনা কেন? কিন্তু পূর্বে মূসাকে যা দেয়া হয়েছিল তা কি তারা অস্বীকার করেনি? তারা বলেছিলঃ উভয়ই যাদু, একে অপরকে সমর্থন করে; এবং তারা বলেছিলঃ আমরা প্রত্যেককে প্রত্যাখ্যান করি। ৪৮
3301 ২৮. আল-কাসাস বলঃ তোমরা সত্যবাদী হলে আল্লাহর নিকট হতে এক কিতাব আনয়ন কর, যে পথ নির্দেশ এতদুভয় হতে উৎকৃষ্টতর হবে, আমি সেই কিতাব অনুসরণ করব। ৪৯
3302 ২৮. আল-কাসাস অতঃপর তারা যদি তোমার আহবানে সাড়া না দেয় তাহলে জানবে যে, তারা শুধু নিজেদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করে। আল্লাহর পথ-নির্দেশ অগ্রাহ্য করে যে ব্যক্তি নিজ খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করে সে অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত আর কে? আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেননা। ৫০
3303 ২৮. আল-কাসাস আমিতো তাদের নিকট উপর্যুপরি বাণী পৌঁছে দিয়েছি যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। ৫১
3304 ২৮. আল-কাসাস এর পূর্বে আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছিলাম তারা এতে বিশ্বাস করে। ৫২
3305 ২৮. আল-কাসাস যখন তাদের নিকট এটি আবৃত্তি করা হয় তখন তারা বলেঃ আমরা এতে ঈমান এনেছি, এটি আমাদের রাব্ব হতে আগত সত্য। আমরাতো পূর্বেও আত্মসমর্পনকারী ছিলাম। ৫৩
3306 ২৮. আল-কাসাস তাদেরকে দু’বার পারিশ্রমিক প্রদান করা হবে; কারণ তারা ধৈর্যশীল এবং তারা ভাল দ্বারা মন্দের মুকাবিলা করে এবং আমি তাদেরকে যা দিয়েছি তা হতে তারা ব্যয় করে। ৫৪
3307 ২৮. আল-কাসাস তারা যখন অসার বাক্য শ্রবণ করে তখন তা উপেক্ষা করে চলে এবং বলেঃ আমাদের কাজের ফল আমাদের জন্য এবং তোমাদের কাজের ফল তোমাদের জন্য; তোমাদের প্রতি সালাম। আমরা অজ্ঞদের সঙ্গ চাইনা। ৫৫
3308 ২৮. আল-কাসাস তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎ পথে আনতে পারবেনা। তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সৎ পথে আনেন এবং তিনিই ভাল জানেন কারা সৎ পথ অনুসরণকারী। ৫৬
3309 ২৮. আল-কাসাস তারা বলেঃ আমরা যদি তোমার সাথে সৎ পথ অনুসরণ করি তাহলে আমাদেরকে দেশ হতে উৎখাত করা হবে। (আল্লাহ বলেন) আমি কি তাদের জন্য এক নিরাপদ ‘‘হারাম’’ প্রতিষ্ঠিত করিনি, যেখানে সর্ব প্রকার ফলমূল আমদানী হয় আমার দেয়া রিয্ক স্বরূপ? কিন্তু তাদের অধিকাংশই এটা জানেনা। ৫৭
3310 ২৮. আল-কাসাস কত জনপদকে আমি ধ্বংস করেছি যার বাসিন্দারা নিজেদের ভোগ সম্পদের দম্ভ করত। এগুলিইতো তাদের ঘরবাড়ী, তাদের পরে এগুলিতে লোকজন সামান্যই বসবাস করেছে; আর আমিতো চূড়ান্ত মালিকানার অধিকারী। ৫৮
3311 ২৮. আল-কাসাস তোমার রাব্ব জনপদসমূহকে ধ্বংস করেন না, ওর কেন্দ্রে তাঁর আয়াত আবৃত্তি করার জন্য রাসূল প্রেরণ না করা পর্যন্ত এবং আমি জনপদসমূহকে তখনই ধ্বংস করি যখন ওর বাসিন্দারা যুল্‌ম করে। ৫৯
3312 ২৮. আল-কাসাস তোমাদের যা কিছু দেয়া হয়েছে তাতো পার্থিব জীবনের ভোগ শোভা এবং যা আল্লাহর নিকট রয়েছে তা উত্তম এবং স্থায়ী। তোমরা কি অনুধাবন করবেনা? ৬০
3313 ২৮. আল-কাসাস যাকে আমি উত্তম পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি সে যা পাবে, সে কি ঐ ব্যক্তির সমান যাকে আমি পার্থিব জীবনের ভোগ সম্ভার দিয়েছি, অতঃপর যাকে কিয়ামাত দিবসে অপরাধী রূপে হাযির করা হবে? ৬১
3314 ২৮. আল-কাসাস আর সেদিন তিনি তাদেরকে আহবান করে বলবেনঃ তোমরা যাদেরকে আমার শরীক গণ্য করতে তারা কোথায়? ৬২
3315 ২৮. আল-কাসাস যাদের জন্য শাস্তি অবধারিত হয়েছে তারা বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! এদেরকেও আমরা বিভ্রান্ত করেছিলাম, যেমন আমরা বিভ্রান্ত হয়েছিলাম; আপনার সমীপে আমরা দায়িত্ব হতে অব্যাহতি চাচ্ছি। এরা আমাদের ইবাদাত করতনা। ৬৩
3316 ২৮. আল-কাসাস তাদেরকে বলা হবেঃ তোমাদের দেবতাগুলিকে আহবান কর। তখন তারা তাদেরকে ডাকবে। কিন্তু তারা তাদের ডাকে সাড়া দিবেনা। তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে; হায়! তারা যদি সৎ পথ অনুসরণ করত! ৬৪
3317 ২৮. আল-কাসাস আর সেদিন (আল্লাহ) তাদেরকে ডেকে বলবেনঃ তোমরা রাসূলদেরকে কি জবাব দিয়েছিলে? ৬৫
3318 ২৮. আল-কাসাস সেদিন সকল তথ্য তাদের নিকট হতে বিলুপ্ত হবে এবং তারা একে অপরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেনা। ৬৬
3319 ২৮. আল-কাসাস তবে যে ব্যক্তি তাওবাহ করেছিল এবং ঈমান এনেছিল ও সৎ কাজ করেছিল সেতো সাফল্য অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। ৬৭
3320 ২৮. আল-কাসাস তোমার রাব্ব যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং যাকে ইচ্ছা মনোনীত করেন, এতে তাদের কোন ক্ষমতা নেই, আল্লাহ পবিত্র মহান এবং তারা যাকে শরীক করে তা হতে তিনি উর্ধ্বে। ৬৮
3321 ২৮. আল-কাসাস আর তোমার রাব্ব জানেন তাদের অন্তর যা গোপন করে এবং তারা যা ব্যক্ত করে। ৬৯
3322 ২৮. আল-কাসাস তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই; দুনিয়া ও আখিরাতে প্রশংসা তাঁরই, বিধান তাঁরই আয়ত্বাধীন; তোমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। ৭০
3323 ২৮. আল-কাসাস বলঃ তোমরা কি ভেবে দেখেছ, আল্লাহ যদি রাতকে কিয়ামাতের দিন পর্যন্ত স্থায়ী করেন তাহলে আল্লাহ ব্যতীত এমন কোন ইলাহ আছে কি যে তোমাদেরকে আলোক দান করতে পারে? তোমরা কি কর্ণপাত করবেনা? ৭১
3324 ২৮. আল-কাসাস বলঃ ভেবে দেখ তো, আল্লাহ যদি দিনকে কিয়ামাতের দিন পর্যন্ত স্থায়ী করেন তাহলে আল্লাহ ব্যতীত এমন ইলাহ কে আছে যে তোমাদেরকে রাত দান করতে পারে, যাতে তোমরা বিশ্রাম করবে? তোমরা কি তবুও ভেবে দেখবেনা? ৭২
3325 ২৮. আল-কাসাস তিনিই তাঁর রাহমাতের দ্বারা তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন দিন ও রাত, যাতে তোমরা বিশ্রাম গ্রহণ কর এবং তাঁর অনুগ্রহ তালাশ কর, এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। ৭৩
3326 ২৮. আল-কাসাস সেদিন তিনি তাদেরকে আহবান করে বলবেনঃ তোমরা যাদেরকে শরীক গণ্য করতে তারা কোথায়? ৭৪
3327 ২৮. আল-কাসাস প্রত্যেক সম্প্রদায় হতে আমি একজন সাক্ষী আলাদা করব এবং বলবঃ তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর। তখন তারা জানতে পারবে, মা‘বূদ হবার অধিকার আল্লাহরই এবং তারা যা উদ্ভাবন করত তা তাদের নিকট হতে অন্তর্হিত হবে। ৭৫
3328 ২৮. আল-কাসাস কারূন ছিল মূসার সম্প্রদায়ভুক্ত, বস্তুতঃ সে তাদের প্রতি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছিল। আমি তাকে দান করেছিলাম এমন ধনভান্ডার যার চাবিগুলি বহন করা একদল বলবান লোকের পক্ষেও কষ্টসাধ্য ছিল। স্মরণ কর, তার সম্প্রদায় তাকে বলেছিলঃ দম্ভ করনা, নিশ্চয়ই আল্লাহ দাম্ভিকদের পছন্দ করেননা। ৭৬
3329 ২৮. আল-কাসাস আল্লাহ তোমাকে যা দান করেছেন তদ্বারা আখিরাতের আবাস অনুসন্ধান কর। আর দুনিয়া হতে তোমার অংশ ভুলে যেওনা; এবং পরোপকার কর যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, আর পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চেওনা। নিশ্চয়ই আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীকে ভালবাসেন না । ৭৭
3330 ২৮. আল-কাসাস সে বললঃ এই সম্পদ আমি আমার জ্ঞান বলে প্রাপ্ত হয়েছি। সে কি জানতোনা যে, আল্লাহ তার পূর্বে ধ্বংস করেছেন বহু মানব গোষ্ঠিকে, যারা তার চেয়ে শক্তিতে ছিল প্রবল এবং ছিল অধিক প্রাচুর্যশালী? কিন্তু অপরাধীদেরকে তাদের অপরাধ সম্পর্কে তৎক্ষণাৎ প্রশ্ন করা হয়না। ৭৮
3331 ২৮. আল-কাসাস কারূন তার সম্প্রদায়ের সামনে উপস্থিত হয়েছিল জাকজমক সহকারে। যারা পার্থিব জীবন কামনা করত তারা বললঃ আহা! কারূনকে যেরূপ দেয়া হয়েছে আমাদেরকে যদি তা দেয়া হত! প্রকৃতই সে মহা ভাগ্যবান! ৭৯
3332 ২৮. আল-কাসাস আর যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছিল তারা বললঃ ধিক্ তোমাদেরকে! যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে তাদের জন্য আল্লাহর পুরস্কার শ্রেষ্ঠ এবং ধৈর্যশীল ব্যতীত এটা কেহ পাবেনা। ৮০
3333 ২৮. আল-কাসাস অতঃপর আমি কারূনকে ও তার প্রাসাদকে ভূগর্ভে প্রোথিত করলাম। তার স্বপক্ষে এমন কোন দল ছিলনা যে আল্লাহর শাস্তি হতে তাকে সাহায্য করতে পারত এবং সে নিজেও আত্মরক্ষায় সক্ষম ছিলনা। ৮১
3334 ২৮. আল-কাসাস পূর্বদিন যারা তার অবস্থা কামনা করেছিল তারা বলতে লাগলঃ দেখলেতো আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা তার রিয্ক বর্ধিত করেন এবং যার জন্য ইচ্ছা হ্রাস করেন। যদি আল্লাহ আমাদের প্রতি সদয় না হতেন তাহলে আমাদেরকেও তিনি ভূগর্ভে প্রোথিত করতেন। দেখলে তো! কাফিরেরা সফলকাম হয়না। ৮২
3335 ২৮. আল-কাসাস এটা আখিরাতের সেই আবাস যা আমি নির্ধারিত করি তাদের জন্য যারা এই পৃথিবীতে ঔদ্ধতা প্রকাশ করতে ও বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চায়না। শুভ পরিণাম মুত্তাকীদের জন্য। ৮৩
3336 ২৮. আল-কাসাস কেহ যদি সৎ কাজ করে তাহলে সে তার কাজ অপেক্ষা উত্তম ফল পাবে, আর যে মন্দ কাজ করে সেতো শাস্তি পাবে শুধু তার কাজ অনুপাতে। ৮৪
3337 ২৮. আল-কাসাস যিনি তোমার জন্য কুরআনকে করেছেন বিধান তিনি তোমাকে অবশ্যই ফিরিয়ে আনবেন প্রত্যাবর্তন স্থানে। বলঃ আমার রাব্ব ভাল জানেন কে সৎ পথের নির্দেশ এনেছে এবং কে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছে। ৮৫
3338 ২৮. আল-কাসাস তুমি আশা করনি যে, তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ হবে। এটাতো শুধু তোমার রবের অনুগ্রহ। সুতরাং তুমি কখনও কাফিরদের সাহায্যকারী হয়োনা। ৮৬
3339 ২৮. আল-কাসাস তোমার প্রতি আল্লাহর আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর কেহ যেন তোমাকে কিছুতেই সেগুলি হতে বিরত না রাখে। তুমি তোমার রবের দিকে আহবান করতে থাক এবং কিছুতেই মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়োনা। ৮৭
3340 ২৮. আল-কাসাস তুমি আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহকে ডেকনা, তিনি ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই। আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সব কিছু ধ্বংসশীল। বিধান তাঁরই এবং তাঁরই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। ৮৮
3341 ২৯. আল-আনকাবূত আলিফ লাম মীম,
3342 ২৯. আল-আনকাবূত মানুষ কি মনে করেছে যে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’ এ কথা বললেই তাদেরকে অব্যাহতি দেয়া হবে এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবেনা?
3343 ২৯. আল-আনকাবূত আমিতো তাদের পূর্ববর্তীদেরকেও পরীক্ষা করেছিলাম; আল্লাহ অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন কারা সত্যবাদী ও কারা মিথ্যাবাদী।
3344 ২৯. আল-আনকাবূত যারা মন্দ কাজ করে তারা কি মনে করে যে, তারা আমার আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে? তাদের সিদ্ধান্ত কত মন্দ!
3345 ২৯. আল-আনকাবূত যে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ কামনা করে সে জেনে রাখুক যে, আল্লাহর নির্ধারিত কাল আসবেই। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
3346 ২৯. আল-আনকাবূত যে কেহ (কঠোর) সাধনা করে, সে তা করে নিজেরই জন্য; আল্লাহতো বিশ্বজগত হতে অনপেক্ষ।
3347 ২৯. আল-আনকাবূত আর যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে, নিশ্চয়ই আমি তাদের মন্দ কর্মগুলি মিটিয়ে দিব এবং তাদের কাজের উত্তম ফল দান করব।
3348 ২৯. আল-আনকাবূত আমি মানুষকে নির্দেশ দিয়েছি তার মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে; কিন্তু তারা যদি তোমার উপর বল প্রয়োগ করে, আমার সাথে এমন কিছু শরীক করতে যে সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই তাহলে তুমি তাদেরকে মান্য করনা। আমারই নিকট তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দিব যা তোমরা করতে।
3349 ২৯. আল-আনকাবূত যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করব।
3350 ২৯. আল-আনকাবূত মানুষের মধ্যে কতক লোক বলেঃ ‘‘আমরা আল্লাহতে বিশ্বাস করি।’’ কিন্তু আল্লাহর পথে যখন তারা কষ্টে পতিত হয় তখন তারা মানুষের পীড়নকে আল্লাহর শাস্তির মত গণ্য করে এবং তোমার রবের নিকট হতে কোন সাহায্য এলে তারা বলতে থাকে, ‘আমরাতো তোমাদের সাথেই ছিলাম’। বিশ্ববাসীর অন্তরে যা আছে আল্লাহ কি তা সম্যক অবগত নন? ১০
3351 ২৯. আল-আনকাবূত আল্লাহ অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন কারা ঈমান এনেছে এবং অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন কারা মুনাফিক। ১১
3352 ২৯. আল-আনকাবূত কাফিরেরা মু’মিনদেরকে বলেঃ ‘আমাদের পথ অনুসরণ কর, আমরা তোমাদের পাপভার বহন করব।’ কিন্তু তারাতো তাদের পাপভারের কিছুই বহন করবেনা। তারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। ১২
3353 ২৯. আল-আনকাবূত এবং তারা নিজেদের বোঝা বহন করবে এবং নিজেদের বোঝার সাথে আরও বোঝা; এবং তারা যে মিথ্যা উদ্ভাবন করে সেই সম্পর্কে কিয়ামাত দিবসে অবশ্যই তাদেরকে প্রশ্ন করা হবে। ১৩
3354 ২৯. আল-আনকাবূত আমিতো নূহকে তার সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করেছিলাম এবং সে তাদের মধ্যে পঞ্চাশ কম হাজার বছর অবস্থান করেছিল। অতঃপর প্লাবন তাদেরকে গ্রাস করে। কারণ তারা ছিল সীমালংঘনকারী। ১৪
3355 ২৯. আল-আনকাবূত অতঃপর আমি তাকে এবং যারা তরণীতে আরোহণ করেছিল তাদেরকে রক্ষা করলাম এবং বিশ্ব জগতের জন্য একে করলাম একটি নিদর্শন। ১৫
3356 ২৯. আল-আনকাবূত স্মরণ কর ইবরাহীমের কথা, সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং তাঁকে ভয় কর, তোমাদের জন্য এটাই শ্রেয় যদি তোমরা জানতে। ১৬
3357 ২৯. আল-আনকাবূত তোমরাতো আল্লাহ ব্যতীত শুধু মূর্তি পূজা করছ এবং মিথ্যা উদ্ভাবন করছ। তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদের পূজা কর তারা তোমাদের জীবনোপকরনের মালিক নয়। সুতরাং তোমরা জীবনোপকরণ কামনা কর আল্লাহর নিকট এবং তাঁরই ইবাদাত কর ও তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। তোমরা তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে। ১৭
3358 ২৯. আল-আনকাবূত তোমরা যদি আমাকে মিথ্যাবাদী বল তাহলে জেনে রেখ যে, তোমাদের পূর্ববর্তীরাও নাবীদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল। সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা ছাড়া রাসূলের আর কোন দায়িত্ব নেই। ১৮
3359 ২৯. আল-আনকাবূত তারা কি লক্ষ্য করেনা যে, কিভাবে আল্লাহ সৃষ্টিকে অস্তিত্ব দান করেন? অতঃপর পুনরায় সৃষ্টি করবেন। এটাতো আল্লাহর জন্য সহজ। ১৯
3360 ২৯. আল-আনকাবূত বলঃ পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর এবং অনুধাবন কর কিভাবে তিনি সৃষ্টি শুরু করেছেন? অতঃপর আল্লাহ পুনর্বার সৃষ্টি করবেন পরবর্তী সৃষ্টি। আল্লাহতো সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। ২০
3361 ২৯. আল-আনকাবূত তিনি যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন, যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। তোমরা তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে। ২১
3362 ২৯. আল-আনকাবূত আর তোমরা (তাঁকে) অক্ষমকারী নও যমীনে এবং না আসমানে। আর আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী নেই। ২২
3363 ২৯. আল-আনকাবূত যারা আল্লাহর নিদর্শন ও তাঁর সাক্ষাৎকার অস্বীকার করে তারাই আমার অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ২৩
3364 ২৯. আল-আনকাবূত সুতরাং ইবরাহীমের সম্প্রদায়ের লোকেরা এ ছাড়া কোন জবাব দিলনা, তারা বললঃ তাকে হত্যা কর অথবা অগ্নিদগ্ধ কর। অতঃপর আল্লাহ তাকে আগুন থেকে রক্ষা করলেন। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্য। ২৪
3365 ২৯. আল-আনকাবূত ইবরাহীম বললঃ তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে মূর্তিগুলিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছ পার্থিব জীবনে তোমাদের পারস্পরিক বন্ধুত্বের খাতিরে; কিন্তু কিয়ামাত দিবসে তোমরা একে অপরকে অস্বীকার করবে এবং পরস্পরকে অভিসম্পাত দিবে। তোমাদের আবাস হবে জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না। ২৫
3366 ২৯. আল-আনকাবূত লূত তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করল। (ইবরাহীম) বললঃ আমি আমার রবের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করছি। তিনিতো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ২৬
3367 ২৯. আল-আনকাবূত আমি ইবরাহীমকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়াকূব এবং তার বংশধরদের জন্য স্থির করলাম নবুওয়াত ও কিতাব এবং আমি তাকে পুরষ্কৃত করেছিলাম দুনিয়ায় এবং আখিরাতেও। নিশ্চয়ই সে হবে সৎকর্মপরায়ণদের অন্যতম। ২৭
3368 ২৯. আল-আনকাবূত স্মরণ কর লূতের কথা, সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমরা এমন অশ্লীল কাজ করছো যা তোমাদের পূর্বে বিশ্বে কেহ করেনি। ২৮
3369 ২৯. আল-আনকাবূত তোমরা পুরুষের উপর উপগত হচ্ছ এবং তোমরা রাহাজানি করে থাক এবং তোমরা নিজেদের মজলিশে প্রকাশ্য ঘৃণ্য কাজ করে থাক। উত্তরে তার সম্প্রদায় শুধু এই বললঃ আমাদের উপর আল্লাহর শাস্তি আনয়ন কর, যদি তুমি সত্যবাদী হও। ২৯
3370 ২৯. আল-আনকাবূত সে বললঃ হে আমার রাব্ব! বিপর্যয় সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করুন। ৩০
3371 ২৯. আল-আনকাবূত যখন আমার প্রেরিত মালাইকা/ফেরেশতারা সুসংবাদসহ ইবরাহীমের নিকট এলো, তারা বলেছিলঃ আমরা এই জনপদবাসীকে ধ্বংস করব, এর অধিবাসীতো সীমা লংঘনকারী। ৩১
3372 ২৯. আল-আনকাবূত ইবরাহীম বললঃ এই জনপদে লূত রয়েছে। তারা বললঃ সেখানে কারা আছে তা আমরা ভাল জানি; আমরাতো লূতকে ও তাঁর পরিজনবর্গকে রক্ষা করবই, তাঁর স্ত্রীকে ব্যতীত; সে পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত। ৩২
3373 ২৯. আল-আনকাবূত এবং যখন আমার প্রেরিত মালাইকা/ফেরেশতারা লূতের নিকট এলো তখন তাদের জন্য সে বিষণ্ণ হয়ে পড়ল এবং নিজেকে তাদের রক্ষায় অসমর্থ মনে করল। তারা বললঃ ভয় করনা, দুঃখও করনা; আমরা তোমাকে ও তোমার পরিবারবর্গকে রক্ষা করব, তোমার স্ত্রী ব্যতীত; সে পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত। ৩৩
3374 ২৯. আল-আনকাবূত আমরা এই জনপদবাসীর উপর আকাশ হতে শাস্তি নাযিল করব, কারণ তারা ছিল পাপাচারী। ৩৪
3375 ২৯. আল-আনকাবূত আমি বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য এতে একটি স্পষ্ট নিদর্শন রেখেছি। ৩৫
3376 ২৯. আল-আনকাবূত আমি মাদইয়ানবাসীদের প্রতি তাদের ভাই শুআ’ইবকে পাঠিয়েছিলাম। সে বলেছিলঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, শেষ দিনকে ভয় কর এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় ঘটিওনা। ৩৬
3377 ২৯. আল-আনকাবূত কিন্তু তারা তার প্রতি মিথ্যা আরোপ করল; অতঃপর তারা ভূমিকম্প দ্বারা আক্রান্ত হল; ফলে তারা নিজ গৃহে নতজানু অবস্থায় শেষ হয়ে গেল। ৩৭
3378 ২৯. আল-আনকাবূত এবং আমি ‘আদ ও ছামূদকে ধ্বংস করেছিলাম; তাদের বাড়ীঘরই তোমাদের জন্য এর সুস্পষ্ট প্রমাণ। শাইতান তাদের কাজকে তাদের দৃষ্টিতে সুশোভিত করেছিল এবং তাদেরকে সৎপথ অবলম্বনে বাধা দিয়েছিল, যদিও তারা ছিল বিচক্ষণ। ৩৮
3379 ২৯. আল-আনকাবূত স্মরণ কর কারূন, ফির‘আউন ও হামানকে; মূসা তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে এসেছিল; তখন তারা দেশে দম্ভ করত; কিন্তু তারা আমার শাস্তি এড়াতে পারেনি। ৩৯
3380 ২৯. আল-আনকাবূত তাদের প্রত্যেককেই তাদের অপরাধের জন্য শাস্তি দিয়েছিলাম; তাদের কারও প্রতি প্রেরণ করেছি প্রস্তরসহ প্রচন্ড ঝটিকা, তাদের কেহকে আঘাত করেছিল মহানাদ, কেহকে আমি প্রোথিত করেছিলাম ভূ-গর্ভে এবং কেহকে করেছিলাম নিমজ্জিত। আল্লাহ তাদের প্রতি কোন যুল্‌ম করেননি; তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুল্‌ম করেছিল। ৪০
3381 ২৯. আল-আনকাবূত আল্লাহর পরিবর্তে যারা অপরকে অভিভাবক রূপে গ্রহণ করে তাদের দৃষ্টান্ত মাকড়সা, যে নিজের জন্য ঘর তৈরী করে; এবং ঘরের মধ্যে মাকড়সার ঘরইতো দুর্বলতম, যদি তারা জানত। ৪১
3382 ২৯. আল-আনকাবূত তারা আল্লাহর পরিবর্তে যা কিছুকে আহবান করে আল্লাহ তা জানেন এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ৪২
3383 ২৯. আল-আনকাবূত মানুষের জন্য এ সব দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে থাকি, কিন্তু শুধু জ্ঞানী ব্যক্তিরাই এটা বুঝে। ৪৩
3384 ২৯. আল-আনকাবূত আল্লাহ যথাযথভাবে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্য। ৪৪
3385 ২৯. আল-আনকাবূত তুমি তোমার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব আবৃত্তি কর এবং সালাত প্রতিষ্ঠিত কর। নিশ্চয়ই সালাত বিরত রাখে অশ্লীল ও মন্দ কাজ হতে। আল্লাহর স্মরণই সর্বশ্রেষ্ঠ। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা জানেন। ৪৫
3386 ২৯. আল-আনকাবূত তোমরা উত্তম পন্থা ব্যতীত কিতাবীদের সাথে বিতর্ক করবেনা, তবে তাদের সাথে করতে পার যারা তাদের মধ্যে সীমালংঘনকারী এবং বলঃ আমাদের প্রতি ও তোমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে আমরা বিশ্বাস করি এবং আমাদের মা‘বূদ ও তোমাদের মা‘বূদতো একই এবং আমরা তাঁরই প্রতি আত্মসমর্পণকারী। ৪৬
3387 ২৯. আল-আনকাবূত এভাবেই আমি তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছিলাম তারা এতে বিশ্বাস করে এবং এদেরও (মাক্কাবাসী) কেহ কেহ এতে বিশ্বাস করে। শুধু কাফিরেরাই আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করে। ৪৭
3388 ২৯. আল-আনকাবূত তুমিতো এর পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করনি এবং স্বহস্তে কোন দিন কিতাব লিখনি যে, মিথ্যাচারীরা সন্দেহ পোষণ করবে। ৪৮
3389 ২৯. আল-আনকাবূত বস্তুতঃ যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তাদের অন্তরে এটা স্পষ্ট নিদর্শন। শুধু যালিমরাই আমার নিদর্শন অস্বীকার করে। ৪৯
3390 ২৯. আল-আনকাবূত তারা বলেঃ রবের নিকট হতে তার প্রতি নিদর্শন প্রেরিত হয়না কেন? বলঃ নিদর্শন আল্লাহর ইচ্ছাধীন, আমিতো একজন প্রকাশ্য সতর্ককারী মাত্র। ৫০
3391 ২৯. আল-আনকাবূত এটা কি তাদের জন্য যথেষ্ট নয় যে, আমি তোমার নিকট কুরআন অবতীর্ণ করেছি যা তাদের নিকট পাঠ করা হয়? এতে অবশ্যই মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্য অনুগ্রহ ও উপদেশ রয়েছে। ৫১
3392 ২৯. আল-আনকাবূত বলঃ আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে তা তিনি অবগত। যারা বাতিলকে বিশ্বাস করে ও আল্লাহকে অস্বীকার করে তারাইতো ক্ষতিগ্রস্ত। ৫২
3393 ২৯. আল-আনকাবূত তারা তোমাকে শাস্তি ত্বরান্বিত করতে বলে; যদি নির্ধারিত সময় না থাকত তাহলে শাস্তি তাদের উপর এসে যেত। নিশ্চয়ই তাদের উপর শাস্তি আসবে আকস্মিকভাবে, তাদের অজ্ঞাতসারে। ৫৩
3394 ২৯. আল-আনকাবূত তারা তোমাকে শাস্তি ত্বরান্বিত করতে বলে; জাহান্নামতো কাফিরদেরকে পরিবেষ্টন করবেই। ৫৪
3395 ২৯. আল-আনকাবূত সেদিন শাস্তি তাদেরকে আচ্ছন্ন করবে উর্ধ্ব ও অধঃদেশ হতে এবং তিনি বলবেনঃ তোমরা যা করতে তার স্বাদ আস্বাদন কর। ৫৫
3396 ২৯. আল-আনকাবূত হে আমার মু’মিন বান্দারা! আমার পৃথিবী প্রশস্ত; সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদাত কর। ৫৬
3397 ২৯. আল-আনকাবূত জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণকারী; অতঃপর তোমরা আমারই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে। ৫৭
3398 ২৯. আল-আনকাবূত যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে আমি অবশ্যই তাদের বসবাসের জন্য সুউচ্চ প্রাসাদ দান করব জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা স্থায়ী হবে, কত উত্তম প্রতিদান সৎ কর্মশীলদের – ৫৮
3399 ২৯. আল-আনকাবূত যারা ধৈর্য অবলম্বন করে এবং তাদের রবের উপর নির্ভর করে। ৫৯
3400 ২৯. আল-আনকাবূত এমন কত জীব জন্তু রয়েছে যারা নিজেদের খাদ্য মওজুদ রাখেনা; আল্লাহই রিয্ক দান করেন তাদেরকে ও তোমাদেরকে এবং তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। ৬০
3401 ২৯. আল-আনকাবূত যদি তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করঃ কে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং চাঁদ-সূর্যকে নিয়ন্ত্রণ করছেন? তারা অবশ্যই বলবেঃ আল্লাহ! তাহলে তারা কোথায় ফিরে যাচ্ছে? ৬১
3402 ২৯. আল-আনকাবূত আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তার রিয্ক বর্ধিত করেন এবং যার জন্য ইচ্ছা তা সীমিত করেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক অবহিত। ৬২
3403 ২৯. আল-আনকাবূত যদি তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করঃ ভূমি মৃত হওয়ার পর আকাশ হতে বারি বর্ষণ করে কে ওকে সঞ্জীবিত করে? তারা অবশ্যই বলবেঃ আল্লাহ! বলঃ প্রশংসা আল্লাহরই। কিন্তু তাদের অধিকাংশই এটা অনুভব করেনা। ৬৩
3404 ২৯. আল-আনকাবূত এই পার্থিব জীবনতো ক্রীড়া-কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়। পারলৌকিক জীবনই প্রকৃত জীবন, যদি তারা জানতো। ৬৪
3405 ২৯. আল-আনকাবূত তারা যখন নৌযানে আরোহণ করে তখন তারা বিশুদ্ধ চিত্তে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে; অতঃপর তিনি যখন স্থলে ভিড়িয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেন তখন তারা শিরকে লিপ্ত হয়। ৬৫
3406 ২৯. আল-আনকাবূত তাদের প্রতি আমার দান তারা অস্বীকার করে এবং ভোগ বিলাসে মত্ত থাকে; অচিরেই তারা জানতে পারবে। ৬৬
3407 ২৯. আল-আনকাবূত তারা কি দেখেনা যে, আমি হারামকে নিরাপদ স্থান করেছি, অথচ এর চতুস্পার্শ্বে যে সব মানুষ আছে তাদের উপর হামলা করা হয়; তাহলে কি তারা অসত্যেই বিশ্বাস করবে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৬৭
3408 ২৯. আল-আনকাবূত যে ব্যক্তি আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে অথবা তাঁর নিকট হতে আগত সত্যকে অস্বীকার করে তার অপেক্ষা অধিক যালিম আর কে? জাহান্নামই কি কাফিরদের আবাসস্থল নয়? ৬৮
3409 ২৯. আল-আনকাবূত যারা আমার উদ্দেশ্যে সংগ্রাম করে, আমি তাদেরকে অবশ্যই আমার পথে পরিচালিত করব। আল্লাহ অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণদের সাথে আছেন। ৬৯
3410 ৩০. আর-রুম আলিফ লাম মীম।
3411 ৩০. আর-রুম রোমকরা পরাজিত হয়েছে
3412 ৩০. আর-রুম নিকটবর্তী অঞ্চলে; কিন্তু তারা তাদের এই পরাজয়ের পর শীঘ্রই বিজয়ী হবে
3413 ৩০. আর-রুম কয়েক বছরের মধ্যেই। পূর্বের ও পরের সিদ্ধান্ত আল্লাহরই। আর সেদিন মু’মিনরা হর্ষোৎফুল্ল হবে –
3414 ৩০. আর-রুম আল্লাহর সাহায্যে, তিনি যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
3415 ৩০. আর-রুম এটা আল্লাহরই প্রতিশ্রুতি; আল্লাহ তাঁর প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেননা, কিন্তু অধিকাংশ লোক জানেনা।
3416 ৩০. আর-রুম তারা পার্থিব জীবনের বাহ্যিক দিক সম্বন্ধে অবগত, আর আখিরাত সম্বন্ধে তারা গাফিল।
3417 ৩০. আর-রুম তারা কি নিজেদের অন্তরে ভেবে দেখেনা যে, আল্লাহ আকাশমন্ডলী, পৃথিবী ও এতদুভয়ের অন্তবর্তী সব কিছু সৃষ্টি করেছেন যথাযথভাবেই এক নির্দিষ্ট কালের জন্য? কিন্তু মানুষের মধ্যে অনেকেই তাদের রবের সাক্ষাতে অবিশ্বাসী।
3418 ৩০. আর-রুম তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনা এবং দেখেনা যে, তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কিরূপ হয়েছে? শক্তিতে তারা ছিল তাদের অপেক্ষা প্রবল; তারা জমি চাষ করত, তারা (পূর্ববর্তীরা) ওটা আবাদ করত তাদের অপেক্ষা অধিক। তাদের নিকট এসেছিল তাদের রাসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ; বস্তুতঃ তাদের প্রতি যুলম করা আল্লাহর কাজ ছিলনা, বরং তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলম করেছিল।
3419 ৩০. আর-রুম অতঃপর যারা মন্দ কাজ করেছিল তাদের পরিণাম হয়েছে মন্দ; কারণ তারা আল্লাহর আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান করত এবং তা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত। ১০
3420 ৩০. আর-রুম আল্লাহ আদিতে সৃষ্টি করেন, অতঃপর তিনি এর পুনরাবৃত্তি করবেন, তখন তোমরা তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে। ১১
3421 ৩০. আর-রুম যেদিন কিয়ামাত হবে সেদিন অপরাধীরা হতাশ হয়ে পড়বে। ১২
3422 ৩০. আর-রুম তাদের দেব-দেবীগুলো তাদের জন্য সুপারিশ করবেনা এবং তারাই তাদের দেব-দেবীগুলোকে অস্বীকার করবে। ১৩
3423 ৩০. আর-রুম যেদিন কিয়ামাত সংঘটিত হবে সেদিন মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়বে। ১৪
3424 ৩০. আর-রুম অতএব যারা ঈমান এনেছে ও সৎ কাজ করেছে তারা জান্নাতে আনন্দে থাকবে। ১৫
3425 ৩০. আর-রুম আর যারা কুফরী করেছে এবং আমার নিদর্শনাবলী ও পরকালের সাক্ষাৎকার অস্বীকার করেছে তারাই শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। ১৬
3426 ৩০. আর-রুম সুতরাং তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর সন্ধ্যায় ও প্রভাতে – ১৭
3427 ৩০. আর-রুম আর অপরাহ্নে ও যুহরের সময়; এবং আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সকল প্রশংসা তাঁরই। ১৮
3428 ৩০. আর-রুম তিনিই মৃত হতে জীবন্তের এবং জীবন্ত হতে মৃতের আবির্ভাব ঘটান এবং ভূমির মৃত্যুর পর ওকে পুনরুজ্জীবিত করেন। এভাবেই তোমরা উত্থিত হবে। ১৯
3429 ৩০. আর-রুম তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদেরকে মাটি হতে সৃষ্টি করেছেন। এখন তোমরা মানুষ, সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছ। ২০
3430 ৩০. আর-রুম এবং তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের সঙ্গিনীদেরকে যাতে তোমরা তাদের সাথে শান্তিতে বাস করতে পার এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য এতে অবশ্যই বহু নিদর্শন রয়েছে। ২১
3431 ৩০. আর-রুম এবং তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। এতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। ২২
3432 ৩০. আর-রুম এবং তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে রাত ও দিনে তোমাদের নিদ্রা এবং তাঁর অনুগ্রহ অন্বেষণ। এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে শ্রবণকারী সম্প্রদায়ের জন্য। ২৩
3433 ৩০. আর-রুম এবং তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদেরকে প্রদর্শন করেন বিদ্যুৎ, ভয় ও ভরসা সঞ্চারক রূপে এবং তিনি আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন এবং তদ্বারা ভূমিকে ওর মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত করেন, এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য। ২৪
3434 ৩০. আর-রুম তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তাঁরই আদেশে আকাশ ও পৃথিবীর স্থিতি; অতঃপর তিনি (আল্লাহ) যখন তোমাদেরকে মাটি হতে উঠার জন্য একবার আহবান করবেন তখন তোমরা উঠে আসবে। ২৫
3435 ৩০. আর-রুম আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা তাঁরই। সবাই তাঁর আজ্ঞাবহ। ২৬
3436 ৩০. আর-রুম তিনিই প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনি এটাকে সৃষ্টি করবেন পুনর্বার; এটা তাঁর জন্য অতি সহজ। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে সর্বোচ্চ মর্যাদা তাঁরই, এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ২৭
3437 ৩০. আর-রুম (আল্লাহ) তোমাদের জন্য তোমাদের নিজেদের মধ্যে একটি দৃষ্টান্ত পেশ করছেনঃ তোমাদেরকে আমি যে রিয্ক দিয়েছি তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের কেহ কি তাতে তোমাদের সমান অংশীদার? তোমরা কি তাদেরকে সেরূপ ভয় কর যেরূপ তোমরা পরস্পরকে ভয় কর? এভাবেই আমি বোধশক্তি সম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য নির্দেশনাবলী বিবৃত করি। ২৮
3438 ৩০. আর-রুম বস্তুতঃ সীমালংঘনকারীরা অজ্ঞতা বশতঃ তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করে, সুতরাং আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, কে তাকে সৎ পথে পরিচালিত করবে? তাদের কোন সাহায্যকারী নেই। ২৯
3439 ৩০. আর-রুম তুমি একনিষ্ঠ হয়ে নিজেকে দীনের উপর প্রতিষ্ঠিত কর। আল্লাহর প্রকৃতির অনুসরণ কর, যে প্রকৃতি অনুযায়ী তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন; আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল দীন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানেনা। ৩০
3440 ৩০. আর-রুম বিশুদ্ধ চিত্তে তাঁর অভিমুখী হয়ে তাঁকে ভয় কর, সালাত কায়েম কর এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়োনা। ৩১
3441 ৩০. আর-রুম যারা নিজেদের দীনে মতভেদ সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে, প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে উৎফুল্ল। ৩২
3442 ৩০. আর-রুম মানুষকে যখন দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করে তখন তারা বিশুদ্ধ চিত্তে তাদের রাববকে ডাকে, অতঃপর তিনি যখন তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহ আস্বাদন করান তখন তাদের এক দল তাদের রবের সাথে শরীক করে ৩৩
3443 ৩০. আর-রুম তাদেরকে আমি যা দিয়েছি তা অস্বীকার করার জন্য। সুতরাং ভোগ করে নাও, শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে। ৩৪
3444 ৩০. আর-রুম আমি কি তাদের নিকট এমন কোন দলীল অবতীর্ণ করেছি যা তাদেরকে আমার শরীক করতে বলে? ৩৫
3445 ৩০. আর-রুম আমি যখন মানুষকে অনুগ্রহের আস্বাদ দিই তখন তারা উৎফুল্ল হয় এবং তাদের কৃতকর্মের ফলে দুর্দশাগ্রস্ত হলেই তারা হতাশ হয়ে পড়ে। ৩৬
3446 ৩০. আর-রুম তারা কি লক্ষ্য করেনা যে, আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা তার রিয্ক প্রশস্ত করেন অথবা তা সীমিত করেন? এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্য। ৩৭
3447 ৩০. আর-রুম অতএব আত্মীয়কে দিয়ে দাও তার প্রাপ্য এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে তাদের জন্য এটা শ্রেয় এবং তারাই সফলকাম। ৩৮
3448 ৩০. আর-রুম মানুষের ধন সম্পদ বৃদ্ধি পাবে, এ আশায় সুদে যা কিছু তোমরা দিয়ে থাক, আল্লাহর দৃষ্টিতে তা বৃদ্ধি পায়না। বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় তোমরা যা দান কর তার পরিবর্তে তোমরা বহুগুণ প্রাপ্ত হবে। ৩৯
3449 ৩০. আর-রুম আল্লাহই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাদেরকে রিয্ক দিয়েছেন; তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন এবং পরে তোমাদেরকে জীবিত করবেন। তোমাদের দেব-দেবীগুলোর এমন কেহ আছে কি, যে এ সবের কোন একটিও করতে পারে? তারা যাদেরকে শরীক করে, আল্লাহ তা হতে পবিত্র, মহান। ৪০
3450 ৩০. আর-রুম মানুষের কৃতকর্মের কারণে সমুদ্রে ও স্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে তাদেরকে কোন কোন কর্মের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে। ৪১
3451 ৩০. আর-রুম বলঃ তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর এবং দেখ, তোমাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কি হয়েছে! তাদের অধিকাংশই ছিল মুশরিক। ৪২
3452 ৩০. আর-রুম তুমি সরল দীনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত কর, আল্লাহর নির্দেশে অনিবার্য দিন আসার পূর্বে, সেদিন মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়বে। ৪৩
3453 ৩০. আর-রুম যে কুফরী করে, কুফরীর শাস্তি তারই; যারা সৎ কাজ করে তারা নিজেদেরই জন্য রচনা করে শান্তির আবাস। ৪৪
3454 ৩০. আর-রুম কারণ যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে, তিনি (আল্লাহ) তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে পুরস্কৃত করেন। তিনি কাফিরদেরকে পছন্দ করেননা। ৪৫
3455 ৩০. আর-রুম তাঁর নিদর্শনাবলীর একটি এই যে, তিনি বায়ু প্রেরণ করেন সুসংবাদ দেয়ার জন্য ও তোমাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ আস্বাদন করানোর জন্য, এবং যেন তাঁর বিধানে নৌযানগুলি বিচরণ করে, যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হও। ৪৬
3456 ৩০. আর-রুম আমি তোমার পূর্বে রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছিলাম তাদের নিজ নিজ সম্প্রদায়ের নিকট। তারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে এসেছিল; অতঃপর আমি অপরাধীদেরকে শাস্তি দিয়েছিলাম। মু’মিনদেরকে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব। ৪৭
3457 ৩০. আর-রুম আল্লাহ! তিনি বায়ু প্রেরণ করেন; ফলে এটা মেঘমালাকে সঞ্চারিত করে, অতঃপর তিনি একে যেমন ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন, পরে একে খন্ড বিখন্ড করেন এবং তুমি দেখতে পাও ওটা হতে নির্গত হয় বারিধারা; অতঃপর যখন তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাদেরকে ইচ্ছা তাদের নিকট ওটা পৌঁছে দেন তখন তারা হয় হর্ষোৎফুল্ল – ৪৮
3458 ৩০. আর-রুম যদিও তারা তাদের প্রতি বৃষ্টি বর্ষণের পূর্বে নিরাশ ছিল। ৪৯
3459 ৩০. আর-রুম আল্লাহর অনুগ্রহের ফল সম্বন্ধে চিন্তা কর - কিভাবে তিনি ভূমির মৃত্যুর পর ওকে পুনরুজ্জীবিত করেন! এভাবেই আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন, কারণ তিনি সর্ব বিষয়ে সর্ব শক্তিমান। ৫০
3460 ৩০. আর-রুম এবং আমি যদি এমন বায়ু প্রেরণ করি যার ফলে তারা দেখে যে, শষ্য পীত বর্ণ ধারণ করেছে তখনতো তারা অকৃতজ্ঞ হয়ে পড়ে। ৫১
3461 ৩০. আর-রুম তুমিতো মৃতকে শোনাতে পারবেনা, বধিরকেও পারবেনা আহবান শোনাতে, যখন তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে সরে পড়ে। ৫২
3462 ৩০. আর-রুম আর তুমি অন্ধকেও ফিরিয়ে আনতে পারবে না তাদের পথভ্রষ্টতা হতে। যারা আমার নিদর্শনাবলীতে বিশ্বাস করে শুধু তাদেরকেই তুমি শোনাতে পারবে, কারণ তারা আত্মসমর্পনকারী। ৫৩
3463 ৩০. আর-রুম তিনিই আল্লাহ! যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেন দুর্বল অবস্থায়; দুর্বলতার পর তিনি দেন শক্তি, শক্তির পর আবার দেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং তিনিই সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান। ৫৪
3464 ৩০. আর-রুম যেদিন কিয়ামাত হবে সেদিন অপরাধীরা শপথ করে বলবে যে, তারা এক ঘন্টার বেশি (দুনিয়ায়) অবস্থান করেনি। এভাবেই তারা সত্যভ্রষ্ট হত। ৫৫
3465 ৩০. আর-রুম কিন্তু যাদেরকে জ্ঞান ও ঈমান দেয়া হয়েছে তারা বলবেঃ তোমরাতো আল্লাহর বিধানে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবস্থান করেছ। এটাইতো পুনরুত্থান দিবস, কিন্তু তোমরা জানতেনা। ৫৬
3466 ৩০. আর-রুম সেদিন সীমা লংঘনকারীর ওযর আপত্তি তাদের কাজে আসবেনা এবং তাদেরকে (আল্লাহর) সন্তুষ্টি লাভের সুযোগও দেয়া হবেনা। ৫৭
3467 ৩০. আর-রুম আমিতো মানুষের জন্য এই কুরআনে সর্ব প্রকার দৃষ্টান্ত দিয়েছি। তুমি যদি তাদের নিকট কোন নিদর্শন হাজির কর তাহলে কাফিরেরা অবশ্যই বলবেঃ তোমরাতো মিথ্যাশ্রয়ী। ৫৮
3468 ৩০. আর-রুম যাদের জ্ঞান নেই আল্লাহ তাদের হৃদয় এভাবে মোহর করে দেন। ৫৯
3469 ৩০. আর-রুম অতএব তুমি ধৈর্য ধারণ কর, নিশ্চয়ই আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। যারা দৃঢ় বিশ্বাসী নয় তারা যেন তোমাকে বিচলিত করতে না পারে। ৬০
3470 ৩১. লুকমান আলিফ-লাম-মীম।
3471 ৩১. লুকমান এগুলি জ্ঞানগর্ভ কিতাবের আয়াত।
3472 ৩১. লুকমান পথ নির্দেশ ও দয়া স্বরূপ, সৎকর্মপরায়ণদের জন্য।
3473 ৩১. লুকমান যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয়, তারাই আখিরাতে নিশ্চিত বিশ্বাসী।
3474 ৩১. লুকমান তারাই তাদের রবের নির্দেশিত পথে রয়েছে এবং তারাই সফলকাম।
3475 ৩১. লুকমান মানুষের মধ্যে কেহ কেহ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করার জন্য অসার বাক্য ক্রয় করেএবং আল্লাহর প্রদর্শিত পথ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে, তাদেরই জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি।
3476 ৩১. লুকমান যখন তার নিকট আমার আয়াত আবৃত্তি করা হয় তখন সে দম্ভভরে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যেন সে এটা শুনতে পায়নি, যেন তার কর্ণ দু’টি বধির; অতএব তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও।
3477 ৩১. লুকমান যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে সুখ কানন,
3478 ৩১. লুকমান সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
3479 ৩১. লুকমান তিনি আকাশমন্ডলী নির্মাণ করেছেন স্তম্ভ ব্যতীত, তোমরা এটা দেখছ। তিনিই পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পবর্তমালা যাতে এটা তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে এবং এতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সর্ব প্রকার জীব-জন্তু এবং আমিই আকাশ হতে বারি বর্ষণ করে এতে উদ্ভব করি সর্বপ্রকার কল্যাণকর উদ্ভিদ। ১০
3480 ৩১. লুকমান এটা আল্লাহর সৃষ্টি! তিনি ছাড়া অন্যরা কি সৃষ্টি করেছে আমাকে দেখাও। সীমালংঘনকারীরাতো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে। ১১
3481 ৩১. লুকমান আমি অবশ্যই লুকমানকে জ্ঞান দান করেছিলাম এবং বলেছিলামঃ আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সেতো তা করে নিজের জন্য এবং কেহ অকৃতজ্ঞ হলে আল্লাহতো অভাবমুক্ত, প্রশংসা। ১২
3482 ৩১. লুকমান স্মরণ কর, যখন লুকমান উপদেশাচ্ছলে তার পুত্রকে বলেছিলঃ হে বৎস! আল্লাহর সাথে কোন শরীক করনা। নিশ্চয়ই শিরক হচ্ছে চরম যুলম। ১৩
3483 ৩১. লুকমান আমিতো মানুষকে তার মাতাপিতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। মা সন্তানকে কষ্টের পর কষ্ট বরণ করে গর্ভে ধারণ করে এবং তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে। সুতরাং আমার প্রতি ও তোমার মাতাপিতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। প্রত্যাবর্তনতো আমারই নিকট। ১৪
3484 ৩১. লুকমান তোমার মাতা-পিতা যদি তোমাকে পীড়াপীড়ি করে আমার সাথে শরীক করতে যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই তাহলে তুমি তাদের কথা মানবেনা। তবে পৃথিবীতে তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে এবং যে বিশুদ্ধ চিত্তে আমার অভিমুখি হয়েছে তার পথ অবলম্বন কর, অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই নিকট এবং তোমরা যা করতে সে বিষয়ে আমি তোমাদেরকে অবহিত করব। ১৫
3485 ৩১. লুকমান হে বৎস! কোন কিছু যদি সরিষার দানা পরিমানও হয় এবং তা যদি থাকে শিলাগর্ভে অথবা আকাশে কিংবা মাটির নীচে, আল্লাহ ওটাও হাযির করবেন। আল্লাহ সূক্ষ্মদর্শী, সর্ববিষয়ে খবর রাখেন। ১৬
3486 ৩১. লুকমান হে বৎস! সালাত কায়েম করবে, ভাল কাজের আদেশ করবে ও মন্দ কাজ হতে নিষেধ করবে এবং আপদে-বিপদে ধৈর্য ধারণ করবে, এটাইতো দৃঢ় সংকল্পের কাজ। ১৭
3487 ৩১. লুকমান অহংকার বশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করনা এবং পৃথিবীতে উদ্ধতভাবে বিচরণ করনা। কারণ আল্লাহ কোন উদ্ধত, অহংকারীকে পছন্দ করেননা। ১৮
3488 ৩১. লুকমান পদচারণায় মধ্য পন্থা অবলম্বন করবে এবং তোমার কন্ঠস্বর করবে নীচু; স্বরের মধ্যে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর। ১৯
3489 ৩১. লুকমান তোমরা কি দেখনা যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই আল্লাহ তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন এবং তোমাদের প্রতি তাঁর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করেছেন? মানুষের মধ্যে কেহ কেহ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহ সম্বন্ধে বিতন্ডা করে, তাদের না আছে পথ নির্দেশক আর না আছে কোন দীপ্তিমান কিতাব। ২০
3490 ৩১. লুকমান তাদেরকে যখন বলা হয় - আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা অনুসরণ কর তখন তারা বলেঃ বরং আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে যাতে পেয়েছি তারই অনুসরণ করব। শাইতান যদি তাদেরকে জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তির দিকে আহবান করে তবুও কি? ২১
3491 ৩১. লুকমান যদি কেহ সৎ কর্মপরায়ণ হয়ে আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পন করে তাহলে সেতো দৃঢ়ভাবে ধারণ করে এক মাযবূত হাতল, যাবতীয় কার্যের পরিণাম আল্লাহর দিকে। ২২
3492 ৩১. লুকমান কেহ কুফরী করলে তার কুফরী যেন তোমাকে ক্লিষ্ট না করে। আমারই নিকট তাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর আমি তাদেরকে অবহিত করব তারা যা করত। অন্তরে যা রয়েছে সে সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত। ২৩
3493 ৩১. লুকমান আমি তাদেরকে জীবনোপকরণ ভোগ করতে দিব স্বল্পকালের জন্য। অতঃপর তাদেরকে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে বাধ্য করব। ২৪
3494 ৩১. লুকমান তুমি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস করঃ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী কে সৃষ্টি করেছেন? তাহলে তারা নিশ্চয়ই বলবেঃ আল্লাহ! বলঃ প্রশংসা আল্লাহর। কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানেনা। ২৫
3495 ৩১. লুকমান আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা আল্লাহরই। আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসা। ২৬
3496 ৩১. লুকমান পৃথিবীর সমস্ত বৃক্ষ যদি কলম হয় এবং এই যে সমুদ্র, এর সাথে যদি আরও সাতটি সমুদ্র যুক্ত হয়ে কালি হয় তবুও আল্লাহর বাণী নিঃশেষ হবেনা। আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ২৭
3497 ৩১. লুকমান তোমাদের সকলের সৃষ্টি ও পুনরুত্থান একটি মাত্র প্রাণীর সৃষ্টি ও পুনরুত্থানের অনুরূপ। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সম্যক দ্রষ্টা। ২৮
3498 ৩১. লুকমান তুমি কি দেখনা যে, আল্লাহ রাতকে দিনে এবং দিনকে রাতে প্রবেশ করান? তিনি চাঁদ-সূর্যকে করেছেন নিয়মাধীন, প্রত্যেকটি বিচরণ করে নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত; তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত। ২৯
3499 ৩১. লুকমান এর কারণ এই যে, আল্লাহ সত্য এবং তারা তাঁর পরিবর্তে যাকে ডাকে তা মিথ্যা। আল্লাহতো সমুচ্চ, মহান। ৩০
3500 ৩১. লুকমান তুমি কি লক্ষ্য করনা যে, আল্লাহর অনুগ্রহে নৌযানগুলি সমুদ্রে বিচরণ করে, যদ্দবারা তিনি তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলীর কিছু প্রদর্শন করেন? এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে প্রত্যেক ধৈর্যশীল, কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য। ৩১
3501 ৩১. লুকমান যখন তরঙ্গ তাদেরকে আচ্ছন্ন করে মেঘচ্ছায়ার মত তখন তারা আল্লাহকে ডাকে বিশুদ্ধ চিত্তে। কিন্তু যখন তিনি তাদেরকে উদ্ধার করে স্থলে পৌঁছান তখন তাদের কেহ কেহ সরল পথে থাকে। শুধু বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞ ব্যক্তিই তাঁর নির্দেশাবলী অস্বীকার করে। ৩২
3502 ৩১. লুকমান হে লোকসকল! তোমরা তোমাদের রাববকে ভয় কর এবং ভয় কর সেই দিনের যখন পিতা সন্তানের কোন উপকারে আসবেনা এবং সন্তানও কোন উপকারে আসবেনা তার পিতার। নিশ্চয়ই আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য, সুতরাং পার্থিব জীবন যেন তোমাদেরকে কিছুতেই প্রতারিত না করে এবং সেই প্রবঞ্চক যেন তোমাদেরকে কিছুতেই আল্লাহ সম্পর্কে প্রবঞ্চিত না করে। ৩৩
3503 ৩১. লুকমান কিয়ামাতের জ্ঞান শুধু আল্লাহর নিকট রয়েছে, তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তিনিই জানেন যা জরায়ুতে রয়েছে। কেহ জানেনা আগামীকাল সে কী অর্জন করবে এবং কেহ জানেনা কোন্ স্থানে তার মৃত্যু ঘটবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ব বিষয়ে অবহিত। ৩৪
3504 ৩২. আস-সাজদাহ আলিফ লাম মীম।
3505 ৩২. আস-সাজদাহ এই কিতাব জগতসমূহের রবের নিকট হতে অবতীর্ণ, এতে কোন সন্দেহ নেই।
3506 ৩২. আস-সাজদাহ তাহলে কি তারা বলেঃ এটি সে নিজে রচনা করেছে? না, এটি তোমার রাবব হতে আগত সত্য, যাতে তুমি এমন এক সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পার যাদের নিকট তোমার পূর্বে কোন সতর্ককারী আসেনি। হয়তো তারা সৎ পথে চলবে।
3507 ৩২. আস-সাজদাহ আল্লাহ, তিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী ও এতদুভয়ের অন্তবর্তী সব কিছু সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন। তিনি ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক নেই এবং সাহায্যকারীও নেই, তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবেনা?
3508 ৩২. আস-সাজদাহ তিনি আকাশ হতে পৃথিবী পর্যন্ত সমুদয় বিষয় পরিচালনা করেন, অতঃপর একদিন সব কিছুই তাঁর সমীপে সমুত্থিত হবে, যে দিনের পরিমাপ হবে তোমাদের হিসাবে হাজার বছরের সমান।
3509 ৩২. আস-সাজদাহ তিনিই দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।
3510 ৩২. আস-সাজদাহ যিনি তাঁর প্রত্যেক সৃষ্টিকে সৃষ্টি করেছেন উত্তম রূপে এবং কাদা মাটি হতে মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন।
3511 ৩২. আস-সাজদাহ অতঃপর তার বংশ উৎপন্ন করেছেন তুচ্ছ তরল পদার্থের নির্যাস হতে।
3512 ৩২. আস-সাজদাহ পরে তিনি ওকে করেছেন সুষম এবং ওতে ফুঁকে দিয়েছেন রুহ্ তাঁর নিকট হতে এবং তোমাদেরকে দিয়েছেন কর্ণ, চক্ষু ও অন্তঃকরণ; তোমরা অতি সামান্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাক।
3513 ৩২. আস-সাজদাহ তারা বলেঃ আমরা মাটিতে পর্যবসিত হলেও কি আমাদেরকে আবার নতুন করে সৃষ্টি করা হবে? বস্তুতঃ তারা তাদের রবের সাক্ষাৎকার অস্বীকার করে। ১০
3514 ৩২. আস-সাজদাহ বলঃ তোমাদের জন্য নিযুক্ত মৃত্যুর মালাক/ফেরেশতা তোমাদের প্রাণ হরণ করবে। অবশেষে তোমরা তোমাদের রবের নিকট প্রত্যাবর্তীত হবে। ১১
3515 ৩২. আস-সাজদাহ এবং হায়! তুমি যদি দেখতে! যখন অপরাধীরা তাদের রবের সামনে অধোবদন হয়ে বলবেঃ হে আমাদের রাবব! আমরা প্রত্যক্ষ করলাম ও শ্রবণ করলাম; এখন আপনি আমাদেরকে পুনরায় প্রেরণ করুন, আমরা সৎ কাজ করব, আমরাতো দৃঢ় বিশ্বাসী। ১২
3516 ৩২. আস-সাজদাহ আমি ইচ্ছা করলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে সৎ পথে পরিচালিত করতে পারতাম; কিন্তু আমার এ কথা অবশ্যই সত্যঃ আমি নিশ্চয়ই জিন ও মানুষ উভয় দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করব। ১৩
3517 ৩২. আস-সাজদাহ এখন শাস্তি আস্বাদন কর, কারণ আজকের এই সাক্ষাৎকারের কথা তোমরা বিস্মৃত হয়েছিলে। আমিও তোমাদেরকে বিস্মৃত হলাম, তোমরা যা করতে তজ্জন্য তোমরা স্থায়ী শাস্তি ভোগ করতে থাক। ১৪
3518 ৩২. আস-সাজদাহ শুধু তারাই আমার নিদর্শনাবলী বিশ্বাস করে যারা ওর দ্বারা উপদিষ্ট হলে সাজদাহয় লুটিয়ে পড়ে এবং তাদের রবের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং অহংকার করেনা। [সাজদাহ] ১৫
3519 ৩২. আস-সাজদাহ তারা শয্যা ত্যাগ করে তাদের রাববকে ডাকে আশায় ও আশংকায়, এবং তাদেরকে যে রিয্ক দান করেছি তা হতে তারা ব্যয় করে। ১৬
3520 ৩২. আস-সাজদাহ কেহই জানেনা, তাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর কি কি প্রতিদান লুকায়িত রয়েছে তাদের কৃতকর্মের পুরস্কার স্বরূপ। ১৭
3521 ৩২. আস-সাজদাহ তাহলে কি যে ব্যক্তি মু’মিন হয়েছে সে পাপাচারীর ন্যায়? তারা সমান নয়। ১৮
3522 ৩২. আস-সাজদাহ যারা ঈমান আনে এবং সৎ কাজ করে তাদের কৃতকর্মের ফল স্বরূপ তাদের আপ্যায়নের জন্য জান্নাত হবে তাদের বাসস্থল। ১৯
3523 ৩২. আস-সাজদাহ আর যারা পাপাচার করেছে তাদের বাসস্থান হবে জাহান্নাম; যখনই তারা জাহান্নাম হতে বের হতে চাবে তখনই তাদের ফিরিয়ে দেয়া হবে তাতে এবং তাদেরকে বলা হবেঃ যে আগুনের শাস্তিকে তোমরা মিথ্যা বলতে তা আস্বাদন কর। ২০
3524 ৩২. আস-সাজদাহ বড় শাস্তির পূর্বে তাদেরকে আমি অবশ্যই লঘু শাস্তি আস্বাদন করাব, যাতে তারা ফিরে আসে। ২১
3525 ৩২. আস-সাজদাহ যে ব্যক্তি তার রবের নির্দেশনাবলী দ্বারা উপদিষ্ট হয়ে তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার অপেক্ষা অধিক যালিম আর কে? আমি অবশ্যই অপরাধীদেরকে শাস্তি দিয়ে থাকি। ২২
3526 ৩২. আস-সাজদাহ আমিতো মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম; অতএব তুমি তার সাক্ষাত সম্বন্ধে সন্দেহ করনা, আমি তাকে বানী ইসরাঈলের জন্য পথ নির্দেশক করেছিলাম। ২৩
3527 ৩২. আস-সাজদাহ আর আমি তাদের মধ্য হতে নেতা মনোনীত করেছিলাম যারা আমার নির্দেশ অনুসারে পথ প্রদর্শন করত। যখন তারা ধৈর্য ধারণ করত তখন তারা ছিল আমার নিদর্শনাবলীতে দৃঢ় বিশ্বাসী। ২৪
3528 ৩২. আস-সাজদাহ তারা নিজেদের মধ্যে যে বিষয়ে মতবিরোধ করছে তোমার রাব্বই কিয়ামাত দিবসে ওর ফাইসালা করে দিবেন। ২৫
3529 ৩২. আস-সাজদাহ এটাও কি তাদেরকে পথ প্রদর্শন করলনা যে, আমি তাদের পূর্বে ধ্বংস করেছি কত মানব গোষ্ঠি, যাদের বাসভূমিতে এরা বিচরণ করছে? এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে; তবুও কি তারা শুনবেনা? ২৬
3530 ৩২. আস-সাজদাহ তারা কি লক্ষ্য করেনা যে, আমি উষর ভূমির পানি প্রবাহিত করে ওর সাহায্যে উদগত করি শস্য, যা হতে আহার্য গ্রহণ করে তাদের গৃহপালিত চতুস্পদ জন্তুগুলি এবং তারা নিজেরাও? তাদের কি দৃষ্টিশক্তি নেই? ২৭
3531 ৩২. আস-সাজদাহ তারা জিজ্ঞেস করেঃ তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলে বল, কখন হবে এই ফাইসালা? ২৮
3532 ৩২. আস-সাজদাহ বলঃ ফাইসালার দিন কাফিরদের ঈমান আনা তাদের কোন কাজে আসবেনা এবং তাদেরকে অবকাশ দেয়া হবেনা। ২৯
3533 ৩২. আস-সাজদাহ অতএব তুমি তাদেরকে উপেক্ষা কর এবং অপেক্ষা কর; তারাও অপেক্ষা করছে। ৩০
3534 ৩৩. আল-আহযাব হে নাবী! আল্লাহকে ভয় কর এবং কাফিরদের ও মুনাফিকদের আনুগত্য করনা। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
3535 ৩৩. আল-আহযাব তোমার রবের নিকট হতে তোমার প্রতি যা অহী হয় উহার অনুসরণ কর; তোমরা যা কর আল্লাহ সেই বিষয়ে সম্যক অবহিত।
3536 ৩৩. আল-আহযাব আর তুমি নির্ভর কর আল্লাহর উপর এবং কর্মবিধায়ক হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট।
3537 ৩৩. আল-আহযাব আল্লাহ কোন মানুষের অভ্যন্তরে দু’টি হৃদয় সৃষ্টি করেননি; তোমাদের স্ত্রীরা, যাদের সাথে তোমরা যিহার করে থাক, তাদেরকে আল্লাহ তোমাদের জননী করেননি এবং তোমাদের পোষ্যপুত্রকে তিনি (আল্লাহ) তোমাদের প্রকৃত পুত্র করেননি; ঐগুলি তোমাদের মুখের কথা। আল্লাহ সত্য কথাই বলেন এবং তিনিই সরল পথ নির্দেশ করেন।
3538 ৩৩. আল-আহযাব তোমরা তাদেরকে ডাক তাদের পিতৃ পরিচয়ে; আল্লাহর দৃষ্টিতে এটা অধিক ন্যায় সঙ্গত, যদি তোমরা তাদের পিতৃ-পরিচয় না জান তাহলে তারা তোমাদের ধর্মীয় ভাই অথবা বন্ধু; এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই, কিন্তু তোমাদের অন্তরে সংকল্প থাকলে অপরাধ হবে। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
3539 ৩৩. আল-আহযাব নাবী মু’মিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা ঘনিষ্টতর এবং তার স্ত্রীরা তাদের মা। আল্লাহর বিধান অনুসারে মু’মিন মুহাজির অপেক্ষা যারা আত্মীয় তারা পরস্পরের নিকটতম। তবে তোমরা যদি তোমাদের বন্ধু-বান্ধবদের প্রতি দাক্ষিণ্য প্রদর্শন করতে চাও তাহলে করতে পার। এটা কিতাবে লিপিবদ্ধ।
3540 ৩৩. আল-আহযাব স্মরণ কর, যখন আমি নাবীদের নিকট হতে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম এবং তোমার নিকট হতেও এবং নূহ, ইবরাহীম, মূসা, মারইয়াম তনয় ঈসার নিকট হতে, তাদের নিকট হতে গ্রহণ করেছিলাম দৃঢ় অঙ্গীকার।
3541 ৩৩. আল-আহযাব সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যবাদিতা সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করার জন্য। তিনি কাফিরদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন মর্মন্তদ শাস্তি!
3542 ৩৩. আল-আহযাব হে মু’মিনগণ! তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহের কথা স্মরণ কর, যখন শত্রুবাহিনী তোমাদের বিরুদ্ধে সমাগত হয়েছিল এবং আমি তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলাম ঝঞ্ঝাবায়ু এবং এক বাহিনী যা তোমরা দেখনি। তোমরা যা কর আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা।
3543 ৩৩. আল-আহযাব যখন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সমাগত হয়েছিল উচ্চ অঞ্চল ও নিম্ন অঞ্চল হতে, তোমাদের চক্ষু বিস্ফোরিত হয়েছিল; তোমাদের প্রাণ হয়ে পড়েছিল কন্ঠাগত এবং তোমরা আল্লাহ সম্বন্ধে নানাবিধ ধারণা পোষণ করছিলে। ১০
3544 ৩৩. আল-আহযাব তখন মু’মিনরা পরীক্ষিত হয়েছিল এবং তারা ভীষণভাবে প্রকম্পিত হয়েছিল। ১১
3545 ৩৩. আল-আহযাব এবং মুনাফিকরাও যাদের অন্তরে ছিল ব্যাধি, তারা বলছিলঃ আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল আমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়। ১২
3546 ৩৩. আল-আহযাব আর তাদের এক দল বলেছিলঃ হে ইয়াসরিববাসী! তোমাদের কোন স্থান নেই, তোমরা ফিরে চল। এবং তাদের মধ্যে একদল নাবীর নিকট অব্যাহতি প্রার্থনা করে বলেছিলঃ আমাদের বাড়ী ঘর অরক্ষিত, অথচ ওগুলি অরক্ষিত ছিলনা, আসলে পলায়ন করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। ১৩
3547 ৩৩. আল-আহযাব যদি শত্রুরা নগরীর বিভিন্ন দিক হতে প্রবেশ করে তাদেরকে বিদ্রোহের জন্য প্ররোচিত করত তাহলে অবশ্যই তারা তাই করে বসত; তারা এতে কালবিলম্ব করতনা। ১৪
3548 ৩৩. আল-আহযাব তারা পূর্বেই আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার করেছিল যে, তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবেনা। আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার সম্বন্ধে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ১৫
3549 ৩৩. আল-আহযাব বলঃ তোমাদের কোন লাভ হবেনা যদি তোমরা মৃত্যু অথবা হত্যার ভয়ে পলায়ন কর এবং সেই ক্ষেত্রে তোমাদেরকে সামান্যই ভোগ করতে দেয়া হবে। ১৬
3550 ৩৩. আল-আহযাব বলঃ কে তোমাদেরকে আল্লাহ হতে রক্ষা করবে যদি তিনি তোমাদের অমঙ্গল ইচ্ছা করেন এবং তিনি যদি তোমাদেরকে অনুগ্রহ করতে ইচ্ছা করেন তাহলে কে তোমাদের ক্ষতি করবে? তারা আল্লাহ ছাড়া নিজেদের কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবেনা। ১৭
3551 ৩৩. আল-আহযাব আল্লাহ অবশ্যই জানেন তোমাদের মধ্যে কারা তোমাদেরকে যুদ্ধে অংশ গ্রহণে বাধা দেয় এবং তাদের ভ্রাতৃবর্গকে বলেঃ আমাদের সঙ্গে এসো। তারা কমই যুদ্ধে অংশ নেয়। ১৮
3552 ৩৩. আল-আহযাব তারা তোমাদের ব্যাপারে ঈর্ষাবোধ করে। যখন বিপদ আসে তখন তুমি দেখবে যে, মৃত্যুভয়ে মূর্ছাতুর ব্যক্তির ন্যায় চক্ষু উল্টিয়ে তারা তোমার দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু যখন বিপদ চলে যায় তখন তারা সম্পদের লোভে তোমাদের সাথে বাক চাতুরীতায় অবতীর্ণ হয়। তারা ঈমান আনেনি, এ জন্য আল্লাহ তাদের কার্যাবলী নিষ্ফল করে দিয়েছেন এবং আল্লাহর পক্ষে এটা সহজ। ১৯
3553 ৩৩. আল-আহযাব তারা মনে করে যে, সম্মিলিত বাহিনী চলে যায়নি। যদি সম্মিলিত বাহিনী আবার এসে পড়ে তখন তারা কামনা করবে যে, ভাল হত যদি তারা যাযাবর মরুবাসীদের সাথে থেকে তোমাদের সংবাদ নিত। তারা তোমাদের সাথে অবস্থান করলেও তারা যুদ্ধ অল্পই করত। ২০
3554 ৩৩. আল-আহযাব তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে তাদের জন্য রাসূলের অনুসরণের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। ২১
3555 ৩৩. আল-আহযাব মু’মিনরা যখন সম্মিলিত বাহিনীকে দেখল তখন তারা বলে উঠলঃ এটাতো তা’ই, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যার প্রতিশ্রুতি আমাদেরকে দিয়েছেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সত্যই বলেছিলেন। আর এতে তাদের ঈমান ও আনুগত্যই বৃদ্ধি পেল। ২২
3556 ৩৩. আল-আহযাব মু’মিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে তাদের কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে; তাদের কেহ কেহ শাহাদাত বরণ করেছে এবং কেহ কেহ প্রতীক্ষায় রয়েছে। তারা তাদের অঙ্গীকারে কোন পরিবর্তন করেনি। ২৩
3557 ৩৩. আল-আহযাব কারণ আল্লাহ সত্যবাদীদেরকে পুরস্কৃত করেন সত্যবাদীতার জন্য এবং তাঁর ইচ্ছা হলে মুনাফিকদেরকে শাস্তি দেন অথবা তাদেরকে ক্ষমা করেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ২৪
3558 ৩৩. আল-আহযাব আল্লাহ কাফিরদেরকে ক্রুদ্ধাবস্থায় বিফল মনোরথ হয়ে ফিরে যেতে বাধ্য করলেন। কোন কল্যাণ তারা লাভ করেনি। যুদ্ধে মু’মিনদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। আল্লাহ সর্বশক্তিমান, পরাক্রমশালী। ২৫
3559 ৩৩. আল-আহযাব কিতাবীদের মধ্যে যারা তাদেরকে সাহায্য করেছিল তাদেরকে তিনি তাদের দুর্গ হতে অবতরণে বাধ্য করলেন এবং তাদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করলেন; ফলে তোমরা তাদের কতককে হত্যা করেছ এবং কতককে করছ বন্দী। ২৬
3560 ৩৩. আল-আহযাব তিনি তোমাদেরকে অধিকারী করলেন তাদের ভূমি, ঘরবাড়ী ও ধন সম্পদের এবং এমন ভূমি যা তোমরা এখনও পদানত করনি। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। ২৭
3561 ৩৩. আল-আহযাব হে নাবী! তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে বলঃ তোমরা যদি পার্থিব জীবন এবং ওর ভুষণ কামনা কর তাহলে এসো, আমি তোমাদের ভোগ-সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দিই এবং সৌজন্যের সাথে তোমাদেরকে বিদায় দিই। ২৮
3562 ৩৩. আল-আহযাব আর যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও আখিরাত কামনা কর তাহলে তোমাদের মধ্যে যারা সৎ কর্মশীল আল্লাহ তাদের জন্য মহা প্রতিদান প্রস্তুত রেখেছেন। ২৯
3563 ৩৩. আল-আহযাব হে নাবী-পত্নীরা! যে কাজ স্পষ্টত অশ্লীল, তোমাদের মধ্যে কেহ তা করলে, তাকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে এবং এটা আল্লাহর জন্য সহজ। ৩০
3564 ৩৩. আল-আহযাব তোমাদের যে কেহ আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের প্রতি অনুগত হবে ও সৎ কার্য করবে তাকে আমি পুরস্কার দিব দু’বার এবং তার জন্য রেখেছি সম্মানজনক রিয্ক। ৩১
3565 ৩৩. আল-আহযাব হে নাবীর পত্নীরা! তোমরা অন্য নারীদের মত নও, যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর তাহলে পর-পুরুষের সাথে কোমল কন্ঠে এমনভাবে কথা বলনা যাতে অন্তরে যার ব্যাধি রয়েছে সে প্রলুব্ধ হয় এবং তোমরা ন্যায় সঙ্গত কথা বলবে। ৩২
3566 ৩৩. আল-আহযাব এবং তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে; প্রাচীন জাহেলী যুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবেনা। তোমরা সালাত কায়েম করবে ও যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুগত থাকবে; হে নাবীর পরিবার! আল্লাহ শুধু চান তোমাদের হতে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণ রূপে পবিত্র করতে। ৩৩
3567 ৩৩. আল-আহযাব আল্লাহর আয়াত ও জ্ঞানের কথা, যা তোমাদের গৃহে পঠিত হয়, তা তোমরা স্মরণ রাখবে; আল্লাহ অতি সূক্ষ্মদর্শী, সর্ব বিষয়ে অবহিত। ৩৪
3568 ৩৩. আল-আহযাব অবশ্যই আত্ম-সমর্পনকারী (মুসলিম) পুরুষ ও আত্ম-সমর্পনকারী (মুসলিম) নারী, মু’মিন পুরুষ ও মু’মিনা নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগতা নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদিনী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীলা নারী, বিনীত পুরুষ ও বিনীতা নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীলা নারী, সিয়াম পালনকারী পুরুষ ও সিয়াম পালনকারী নারী, যৌনাঙ্গ হিফাযাতকারী পুরুষ ও যৌনাঙ্গ হিফাযাতকারী নারী, আল্লাহকে অধিক স্মরণকারী পুরুষ ও অধিক স্মরণকারী নারী - এদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহা প্রতিদান। ৩৫ রোজা
3569 ৩৩. আল-আহযাব আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন বিষয়ে নির্দেশ দিলে কোন মু’মিন পুরুষ কিংবা মু’মিনা নারীর সে বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবেনা। কেহ আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলকে অমান্য করলে সেতো স্পষ্টই পথভ্রষ্ট। ৩৬
3570 ৩৩. আল-আহযাব স্মরণ কর, আল্লাহ যাকে অনুগ্রহ করেছেন এবং তুমিও যার প্রতি অনুগ্রহ করছ, তুমি তাকে বলেছিলেঃ তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক বজায় রাখ এবং আল্লাহকে ভয় কর। তুমি তোমার অন্তরে যা গোপন রেখেছ আল্লাহ তা প্রকাশ করে দিচ্ছেন; তুমি লোকদেরকে ভয় করছিলে, অথচ আল্লাহকে ভয় করাই তোমার পক্ষে অধিকতর সঙ্গত। অতঃপর যায়িদ যখন তার (যাইনাবের) সাথে বিয়ের সর্ম্পক ছিন্ন করল তখন আমি তাকে তোমার সাথে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ করলাম, যাতে মু’মিনদের পোষ্য পুত্ররা নিজ স্ত্রীর সাথে বিবাহ সূত্র ছিন্ন করলে সেই সব রমনীকে বিয়ে করায় মু’মিনদের জন্য কোন বিঘ্ন না হয়। আল্লাহর আদেশ কার্যকরী হয়েই থাকে। ৩৭
3571 ৩৩. আল-আহযাব আল্লাহ নাবীর জন্য যা বিধি সম্মত করেছেন তা করতে তার জন্য কোন বাধা নেই। পূর্বে যে সব নাবী অতীত হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও এটাই ছিল আল্লাহর বিধান। আল্লাহর বিধান সুনির্ধারিত। ৩৮
3572 ৩৩. আল-আহযাব তারা আল্লাহর বাণী প্রচার করত এবং তাঁকে ভয় করত, আর আল্লাহকে ছাড়া অন্য কেহকেও ভয় করতনা। হিসাব গ্রহণে আল্লাহই যথেষ্ট। ৩৯
3573 ৩৩. আল-আহযাব মুহাম্মাদ (সাঃ) তোমাদের মধ্যেকার কোন পুরুষের পিতা নয়, কিন্তু (সে) আল্লাহর রসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞাতা। ৪০
3574 ৩৩. আল-আহযাব হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর। ৪১
3575 ৩৩. আল-আহযাব এবং সকাল সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। ৪২
3576 ৩৩. আল-আহযাব তিনি তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর মালাইকা/ফেরেশতারাও তোমাদের জন্য অনুগ্রহের প্রার্থনা করে অন্ধকার হতে তোমাদেরকে আলোয় নিয়ে আসার জন্য, এবং তিনি মু’মিনদের প্রতি পরম দয়ালু। ৪৩
3577 ৩৩. আল-আহযাব যেদিন তারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে সেদিন তাদের প্রতি অভিবাদন হবে ‘সালাম’। তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন উত্তম প্রতিদান। ৪৪
3578 ৩৩. আল-আহযাব হে নাবী! আমিতো তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী হিসাবে এবং সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী রূপে। ৪৫
3579 ৩৩. আল-আহযাব আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহবানকারী রূপে এবং উজ্জ্বল প্রদীপ রূপে। ৪৬
3580 ৩৩. আল-আহযাব তুমি মু’মিনদেরকে সুসংবাদ দাও যে, তাদের জন্য আল্লাহর নিকট রয়েছে মহা অনুগ্রহ। ৪৭
3581 ৩৩. আল-আহযাব আর তুমি কাফির ও মুনাফিকদের কথা শোননা; তাদের নির্যাতন উপেক্ষা কর এবং নির্ভর কর আল্লাহর উপর; কর্মবিধায়ক রূপে আল্লাহই যথেষ্ট। ৪৮
3582 ৩৩. আল-আহযাব হে মু’মিনগণ! তোমরা মু’মিনা নারীদেরকে বিয়ে করার পর তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিলে তোমাদের জন্য তাদের পালনীয় কোন ইদ্দাত নেই যা তোমরা গননা করবে। তোমরা তাদেরকে কিছু সামগ্রী দিবে এবং সৌজন্যের সাথে তাদেরকে বিদায় করবে। ৪৯
3583 ৩৩. আল-আহযাব হে নাবী! আমি তোমার জন্য বৈধ করেছি তোমার স্ত্রীদেরকে, যাদের মোহর তুমি প্রদান করেছ এবং বৈধ করেছি ‘ফায়’ হিসাবে আল্লাহ তোমাকে যা দান করেছেন তন্মধ্য হতে যারা তোমার মালিকানাধীন হয়েছে তাদেরকে এবং বিয়ের জন্য বৈধ করেছি তোমার চাচার কন্যা ও ফুফুর কন্যাকে, মামার কন্যা ও খালার কন্যাকে, যারা তোমার সাথে দেশ ত্যাগ করেছে এবং কোন মু’মিনা নারী নাবীর নিকট নিজেকে নিবেদন করলে, এবং নাবী তাকে বিয়ে করতে চাইলে সেও বৈধ। এটা বিশেষ করে তোমারই জন্য, অন্য মু’মিনদের জন্য নয়; যাতে তোমার কোন অসুবিধা না হয়। মু’মিনদের স্ত্রী এবং তাদের মালিকানাধীন দাসীদের সম্বন্ধে যা আমি নির্ধারিত করেছি তা আমি জানি। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ৫০
3584 ৩৩. আল-আহযাব তুমি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তোমার নিকট হতে দূরে রাখতে পার এবং যাকে ইচ্ছা তোমার নিকট স্থান দিতে পার এবং তুমি যাকে দূরে রেখেছ তাকে কামনা করলে তোমার কোন অপরাধ নেই। এই বিধান এ জন্য যে, এতে তোমাদের তুষ্টি সহজতর হবে এবং তারা দুঃখ পাবেনা, আর তাদেরকে তুমি যা দিবে তাতে তাদের প্রত্যেকেই প্রীত থাকবে। তোমাদের অন্তরে যা আছে আল্লাহ তা জানেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল। ৫১
3585 ৩৩. আল-আহযাব এরপর, তোমার জন্য কোন নারী বৈধ নয় এবং তোমার স্ত্রীদের পরির্বতে অন্য স্ত্রী গ্রহণও বৈধ নয় যদিও তাদের সৌন্দর্য তোমাকে মুগ্ধ করে, তবে তোমার অধিকারভুক্ত দাসীদের ব্যাপারে এই বিধান প্রযোজ্য নয়। আল্লাহ সব কিছুর উপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখেন। ৫২
3586 ৩৩. আল-আহযাব হে মু’মিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাদ্য প্রস্তুত হওয়ার আগেই আহারের জন্য নাবী-গৃহে প্রবেশ করনা। তবে তোমাদেরকে আহবান করলে তোমরা প্রবেশ কর এবং আহার শেষে তোমরা চলে যেও; তোমরা কথাবার্তায় মশগুল হয়ে পড়না। কারণ তোমাদের এই আচরণ নাবীকে পীড়া দেয়, সে তোমাদেরকে উঠিয়ে দিতে সংকোচ বোধ করে। কিন্তু আল্লাহ সত্য বলতে সংকোচ বোধ করেননা। তোমরা তার স্ত্রীদের নিকট হতে কিছু চাইলে পর্দার অন্তরাল হতে চাইবে। এই বিধান তোমাদের ও তাদের হৃদয়ের জন্য অধিকতর পবিত্র। তোমাদের কারও পক্ষে আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া অথবা তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রীদেরকে বিয়ে করা সংগত নয়। আল্লাহর দৃষ্টিতে এটা ঘোরতর অপরাধ। ৫৩
3587 ৩৩. আল-আহযাব তোমরা কোন বিষয় প্রকাশই কর অথবা গোপনই রাখ আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ। ৫৪
3588 ৩৩. আল-আহযাব নাবী-পত্নীদের জন্য তাদের পিতৃগণ, পুত্রগণ, ভ্রাতৃগণ, ভ্রাতুস্পুত্রগণ, ভগ্নীপুত্রগণ, সেবিকাগণ এবং তাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের সম্মুখে উপস্থিত হওয়ায় কোন অপরাধ নেই। হে নাবীর পত্নিগণ! আল্লাহকে ভয় কর, আল্লাহ সবকিছু অবলোকন করেন। ৫৫
3589 ৩৩. আল-আহযাব আল্লাহ নাবীর প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর মালাইকারাও নাবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করে। হে মু’মিনগণ! তোমরাও নাবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা কর এবং তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও। ৫৬
3590 ৩৩. আল-আহযাব যারা আল্লাহ ও রাসূলকে পীড়া দেয়, আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত করেন এবং তিনি তাদের জন্য রেখেছেন লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। ৫৭
3591 ৩৩. আল-আহযাব মু’মিন পুরুষ ও মু’মিনা নারী কোন অপরাধ না করলেও যারা তাদেরকে পীড়া দেয় তারা অপবাদ ও স্পষ্ট পাপের বোঝা বহন করে। ৫৮
3592 ৩৩. আল-আহযাব হে নাবী! তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মু’মিনা নারীদেরকে বলঃ তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজতর হবে, ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবেনা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ৫৯
3593 ৩৩. আল-আহযাব মুনাফিকরা এবং যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে এবং যারা নগরে গুজব রটনা করে, তারা বিরত না হলে আমি নিশ্চয়ই তাদের বিরুদ্ধে তোমাকে প্রবল করব; এরপর এই নগরীতে তোমার প্রতিবেশী রূপে তারা স্বল্প সময়ই থাকবে। ৬০
3594 ৩৩. আল-আহযাব অভিশপ্ত হয়ে, তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই ধরা হবে এবং নির্দয়ভাবে হত্যা করা হবে। ৬১
3595 ৩৩. আল-আহযাব পূর্বে যারা অতীত হয়ে গেছে তাদের ব্যাপারে এটাই ছিল আল্লাহর বিধান। তুমি কখনও আল্লাহর বিধানে কোন পরিবর্তন পাবেনা। ৬২
3596 ৩৩. আল-আহযাব লোকেরা তোমাকে কিয়ামাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। বলঃ এর জ্ঞান শুধু আল্লাহরই আছে। তুমি এটা কি করে জানবে যে, সম্ভবতঃ কিয়ামাত শীঘ্রই হয়ে যেতে পারে? ৬৩
3597 ৩৩. আল-আহযাব আল্লাহ কাফিরদেরকে অভিশপ্ত করেছেন এবং তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন জ্বলন্ত আগুন। ৬৪
3598 ৩৩. আল-আহযাব সেখানে তারা স্থায়ী হবে এবং তারা কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবেনা। ৬৫
3599 ৩৩. আল-আহযাব যেদিন তাদের মুখ-মন্ডল আগুনে উলট পালট করা হবে সেদিন তারা বলবেঃ হায়! আমরা যদি আল্লাহকে মানতাম ও রাসূলকে মানতাম! ৬৬
3600 ৩৩. আল-আহযাব তারা আরও বলবেঃ হে আমাদের রাবব! আমরা আমাদের নেতা ও বড় লোকদের আনুগত্য করেছিলাম এবং তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল। ৬৭
3601 ৩৩. আল-আহযাব হে আমাদের রাব্ব! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি প্রদান করুন এবং তাদেরকে দিন মহা অভিসম্পাত। ৬৮
3602 ৩৩. আল-আহযাব হে মু’মিনগণ! মূসাকে যারা ক্লেশ দিয়েছে তোমরা তাদের মত হয়োনা; তারা যা রটনা করেছিল আল্লাহ তা হতে তাকে নির্দোষ প্রমাণিত করেন; এবং আল্লাহর নিকট সে মর্যাদাবান। ৬৯
3603 ৩৩. আল-আহযাব হে মু’মিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল। ৭০
3604 ৩৩. আল-আহযাব তাহলে তিনি তোমাদের কাজকে ক্রটিমুক্ত করবেন এবং তোমাদের পাপ ক্ষমা করবেন। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে তারা অবশ্যই মহাসাফল্য অর্জন করবে। ৭১
3605 ৩৩. আল-আহযাব আমিতো আসমান, যমীন ও পবর্তমালার প্রতি এই আমানত অর্পণ করেছিলাম, তারা এটা বহন করতে অস্বীকার করল এবং ওতে শংকিত হল, কিন্তু মানুষ ওটা বহন করল; সেতো অতিশয় যালিম, অতিশয় অজ্ঞ। ৭২
3606 ৩৩. আল-আহযাব পরিণামে আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ ও মুনাফিক নারী এবং মুশরিক পুরুষ ও মুশরিক নারীকে শাস্তি দিবেন এবং আল্লাহ মু’মিন পুরুষ ও মু’মিনা নারীকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ৭৩
3607 ৩৪. সাবা প্রশংসা আল্লাহর যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব কিছুরই মালিক এবং আখিরাতেও প্রশংসা তাঁরই। তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্ব বিষয়ে অবহিত।
3608 ৩৪. সাবা তিনি জানেন যা ভূমিতে প্রবেশ করে, তা হতে যা নির্গত হয় এবং যা আকাশ হতে বর্ষিত হয় ও যা কিছু আকাশে উত্থিত হয়। তিনিই পরম দয়ালু, ক্ষমাশীল।
3609 ৩৪. সাবা কাফিরেরা বলেঃ আমাদের উপর কিয়ামাত আসবেনা। বলঃ আসবেই, শপথ আমার রবের! নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট ওটা আসবে। তিনি অদৃশ্য সম্বন্ধে সম্যক পরিজ্ঞাত; আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে তাঁর অগোচর নয় অণু পরিমাণ কিছু কিংবা তদপেক্ষা ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ কিছু; বরং ওর প্রত্যেকটি লিপিবদ্ধ আছে সুস্পষ্ট কিতাবে।
3610 ৩৪. সাবা এটা এ জন্য যে, যারা মু’মিন ও সৎ কর্মপরায়ণ তিনি তাদেরকে পুরস্কৃত করবেন। তাদেরই জন্য আছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রিয্ক।
3611 ৩৪. সাবা যারা আমার আয়াতসমূহকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করে তাদের জন্য রয়েছে ভয়ংকর মর্মন্তুদ শাস্তি।
3612 ৩৪. সাবা যাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তারা জানে যে, তোমার রবের নিকট হতে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা সত্য। ইহা মানুষকে পরাক্রমশালী ও প্রশংসা আল্লাহর পথ নির্দেশ করে।
3613 ৩৪. সাবা কাফিরেরা বলেঃ আমরা কি তোমাদেরকে এমন ব্যক্তির সন্ধান দিব যে তোমাদেরকে বলে তোমাদের দেহ সম্পূর্ণ ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়লেও তোমরা সৃষ্টি রূপে উত্থিত হবে?
3614 ৩৪. সাবা সে কি আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করে অথবা সে কি উন্মাদ? বস্তুতঃ যারা আখিরাতে বিশ্বাস করেনা তারা শাস্তি ও ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছে।
3615 ৩৪. সাবা তারা কি তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে, আসমান ও যমীনে যা আছে তার প্রতি লক্ষ্য করেনা? আমি ইচ্ছা করলে তাদেরকেসহ ভূমি ধ্বসিয়ে দিব অথবা তাদের উপর আকাশ মন্ডলের পতন ঘটাব; আল্লাহর অভিমুখী প্রতিটি বান্দার জন্য এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে।
3616 ৩৪. সাবা আমি নিশ্চয়ই দাঊদের প্রতি অনুগ্রহ করেছিলাম এবং আদেশ করেছিলাম, হে পবর্তমালা! তোমরা দাঊদের সাথে আমার পবিত্রতা ঘোষণা কর এবং বিহংগকূলকেও। তার জন্য নমনীয় করেছিলাম লৌহ – ১০
3617 ৩৪. সাবা (এই আদেশ করে) ‘তুমি পূর্ণ মাপের বর্ম তৈরী কর, কড়াসমূহ যথাযথভাবে সংযুক্ত কর এবং তোমরা সৎ কাজ কর’, তোমরা যা কিছু কর আমি ওর সম্যক দ্রষ্টা। ১১
3618 ৩৪. সাবা সুলাইমানের অধীন করেছিলাম বায়ুকে যা প্রভাতে এক মাসের পথ অতিক্রম করত এবং সন্ধ্যায় এক মাসের পথ অতিক্রম করত। আমি তার জন্য গলিত তাম্রের এক প্রস্রবন প্রবাহিত করেছিলাম। এবং ছিল জিন সম্প্রদায় যারা তাদের রবের অনুমতিক্রমে নিজেদের কতক তার সামনে কাজ করত। তাদের মধ্যে যে আমার নির্দেশ অমান্য করে তাকে আমি জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তি আস্বাদন করাব। ১২
3619 ৩৪. সাবা তারা সুলাইমানের ইচ্ছানুযায়ী প্রাসাদ, ভাস্কর্য, হাউয সদৃশ বৃহদাকার পাত্র এবং সুদৃঢ় ভাবে চুল্লির উপর স্থাপিত বৃহদাকার ডেগ নির্মাণ করত। (আমি বলেছিলাম) হে দাউদ পরিবার! কৃতজ্ঞতার সাথে তোমরা কাজ করতে থাক। আমার বান্দাদের মধ্যে অল্পই কৃতজ্ঞ। ১৩
3620 ৩৪. সাবা যখন আমি সুলাইমানের মৃত্যু ঘটালাম তখন জিনদেরকে তার মৃত্যু বিষয় জানালো শুধু মাটির পোকা যা সুলাইমানের লাঠি খাচ্ছিল। যখন সুলাইমান পড়ে গেল তখন জিনেরা বুঝতে পারল যে, তারা যদি অদৃশ্য বিষয় অবগত থাকত তাহলে তারা লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতনা। ১৪
3621 ৩৪. সাবা সাবাবাসীদের জন্য তাদের বাসভূমিতে ছিল এক নিদর্শন! দু’টি উদ্যান, একটি ডান দিকে, অপরটি বাম দিকে। তাদেরকে বলা হয়েছিলঃ তোমরা তোমাদের রাবব প্রদত্ত রিয্ক ভোগ কর এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। উত্তম এই স্থান এবং ক্ষমাশীল তোমাদের রাবব! ১৫
3622 ৩৪. সাবা অতঃপর তারা আদেশ অমান্য করল। ফলে আমি তাদের উপর প্রবাহিত করলাম বাঁধভাঙ্গা বন্যা এবং তাদের উদ্যান দু’টি পরিবর্তন করে দিলাম এমন দু’টি উদ্যানে যাতে উৎপন্ন হয় বিস্বাদ ফল-মূল, ঝাউ গাছ এবং কিছু কুল গাছ। ১৬
3623 ৩৪. সাবা আমি তাদেরকে এই শাস্তি দিয়েছিলাম তাদের কুফরীর কারণে। আমি কৃতঘ্ন ব্যতীত আর কেহকেও এমন শাস্তি দিইনা। ১৭
3624 ৩৪. সাবা তাদের এবং যে সব জনপদের প্রতি আমি অনুগ্রহ করেছিলাম সেইগুলির অন্তর্বর্তী স্থানে দৃশ্যমান বহু জনপদ স্থাপন করেছিলাম এবং ঐ সব জনপদে ভ্রমণের যথাযথ ব্যবস্থা করেছিলাম এবং তাদেরকে বলেছিলামঃ তোমরা এই সব জনপদে নিরাপদে ভ্রমণ কর দিনে ও রাতে। ১৮
3625 ৩৪. সাবা কিন্তু তারা বললঃ হে আমাদের রাবব! আমাদের সফরের মানযিলগুলির ব্যবধান বর্ধিত করুন! এভাবে তারা নিজেদের প্রতি যুলম করেছিল। ফলে আমি তাদেরকে কাহিনীর বিষয়বস্তুতে পরিণত করলাম এবং তাদেরকে ছিন্ন-ভিন্ন করে দিলাম। এতে প্রত্যেক ধৈর্যশীল, কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য নিদর্শন রয়েছে। ১৯
3626 ৩৪. সাবা তাদের সম্বন্ধে ইবলীস তার ধারণা সত্য প্রমাণ করল, ফলে তাদের মধ্যে একটি মু’মিন দল ব্যতীত সবাই তার অনুসরণ করল। ২০
3627 ৩৪. সাবা তাদের উপর শাইতানের কোন আধিপত্য ছিলনা। কারা আখিরাতে বিশ্বাসী এবং কারা ওতে সন্দিহান তা প্রকাশ করে দেয়াই ছিল আমার উদ্দেশ্য। তোমার রাবব সর্ব বিষয়ের তত্ত্বাবধায়ক। ২১
3628 ৩৪. সাবা তুমি বলঃ তোমরা আহবান কর তাদেরকে যাদেরকে তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে মা‘বূদ মনে করতে। তারা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে অণু পরিমান কোনো কিছুর মালিক নয় এবং এতদুভয়ে তাদের কোন অংশ নেই এবং না তাঁরা সাহায্যকারী। ২২
3629 ৩৪. সাবা যাকে অনুমতি দেয়া হয় সে ছাড়া আল্লাহর নিকট কারও সুপারিশ ফলপ্রসু হবেনা। অতঃপর যখন তাদের অন্তর হতে ভয় বিদুরিত হবে তখন তারা পরস্পরের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করবেঃ তোমাদের রাবব কি বললেন? তদুত্তরে তারা বলবেঃ যা সত্য তিনি তাই বলেছেন। তিনি সমুচ্চ, মহান। ২৩
3630 ৩৪. সাবা বলঃ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী হতে কে তোমাকে রিয্ক প্রদান করে? বলঃ আল্লাহ! এবং নিশ্চয়ই আমরা অথবা তোমরা সৎ পথে স্থিত অথবা স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পতিত। ২৪
3631 ৩৪. সাবা বলঃ আমাদের অপরাধের জন্য তোমাদেরকে জবাবদিহি করতে হবেনা এবং তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আমাদেরকেও জবাবদিহি করতে হবেনা। ২৫
3632 ৩৪. সাবা বলঃ আমাদের রাবব আমাদেরকে একত্রিত করবেন, অতঃপর তিনি আমাদের মধ্যে ন্যায়ের সাথে ফাইসালা করে দিবেন, তিনিই শ্রেষ্ঠ ফাইসালাকারী, সর্বজ্ঞ। ২৬
3633 ৩৪. সাবা বলঃ তোমরা আমাকে দেখাও তাদেরকে যাদেরকে শরীক রূপে তাঁর সাথে জুড়ে দিয়েছ। না, কখনও নয়। বস্তুতঃ আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ২৭
3634 ৩৪. সাবা আমিতো তোমাকে সমগ্র মানব জাতির প্রতি সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারী রূপে প্রেরণ করেছি। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানেনা। ২৮
3635 ৩৪. সাবা তারা জিজ্ঞেস করেঃ তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলে বল, এই প্রতিশ্রুতি কখন বাস্তবায়িত হবে? ২৯
3636 ৩৪. সাবা বলঃ তোমাদের জন্য আছে এক নির্ধারিত দিন যা মুহুর্তকাল বিলম্বিত করতে পারবেনা, ত্বরান্বিতও করতে পারবেনা। ৩০
3637 ৩৪. সাবা কাফিরেরা বলেঃ আমরা এই কুরআনে কখনও বিশ্বাস স্থাপন করবনা, এর পূর্ববর্তী কিতাবসমূহেও না। হায়! তুমি যদি দেখতে! যালিমদেরকে যখন তাদের রবের সামনে দন্ডায়মান করা হবে তখন তারা পরস্পর বাদ প্রতিবাদ করতে থাকবে। যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তারা ক্ষমতাদর্পীদেরকে বলবেঃ তোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই মু’মিন হতাম। ৩১
3638 ৩৪. সাবা যারা ক্ষমতাদর্পী ছিল তারা যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তাদেরকে বলবেঃ তোমাদের নিকট সৎ পথের দিশা আসার পর আমরা কি তোমাদেরকে ওটা হতে নিবৃত্ত করেছিলাম? বস্তুতঃ তোমরাইতো ছিলে অপরাধী। ৩২
3639 ৩৪. সাবা যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তারা ক্ষমতাদর্পীদেরকে বলবেঃ প্রকৃত পক্ষে তোমরাইতো দিন-রাত চক্রান্তে লিপ্ত ছিলে, আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলে যেন আমরা আল্লাহকে অমান্য করি এবং তাঁর শরীক স্থাপন করি। যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন তারা অনুতাপ গোপন রাখবে এবং আমি কাফিরদের গলদেশে শৃংখল পরিয়ে দিব। তারা যা করত তারই প্রতিফল তাদেরকে দেয়া হবে। ৩৩
3640 ৩৪. সাবা যখনই আমি কোন জনপদে সতর্ককারী প্রেরণ করেছি তখনই ওর বিত্তশালী অধিবাসীরা বলেছেঃ তোমরা যা সহ প্রেরিত হয়েছ আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি। ৩৪
3641 ৩৪. সাবা তারা আরও বলতঃ আমরা ধনে-জনে সমৃদ্ধশালী; সুতরাং আমাদেরকে কিছুতেই শাস্তি দেয়া হবেনা। ৩৫
3642 ৩৪. সাবা বলঃ আমার রাবব যার প্রতি ইচ্ছা রিয্ক বর্ধিত করেন, অথবা এটা সীমিত করেন; কিন্তু অধিকাংশ লোকই এটা জানেনা। ৩৬
3643 ৩৪. সাবা তোমাদের ধন সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি এমন কিছু নয় যা তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করে দিবে; যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে তারাই তাদের কর্মের জন্য পাবে বহুগুণ পুরস্কার; আর তারা প্রাসাদে নিরাপদে থাকবে। ৩৭
3644 ৩৪. সাবা যারা আমার আয়াতকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করবে তারা শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। ৩৮
3645 ৩৪. সাবা বলঃ আমার রাবব তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা তার রিয্ক বর্ধিত করেন অথবা ওটা সীমিত করেন। তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে তিনি তার প্রতিদান দিবেন। তিনি শ্রেষ্ঠ রিয্কদাতা। ৩৯
3646 ৩৪. সাবা যেদিন তাদের একত্র করবেন এবং মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে জিজ্ঞেস করবেনঃ এরা কি তোমাদেরই পূজা করত? ৪০
3647 ৩৪. সাবা মালাইকা বলবেঃ আপনি পবিত্র, মহান! আমাদের সাহায্যকারী আপনিই, তারা নয়, তারাতো পূজা করত জিনদের এবং তাদের অধিকাংশই ছিল তাদের প্রতি বিশ্বাসী। ৪১
3648 ৩৪. সাবা আজ তোমাদের একে অন্যের উপকার কিংবা অপকার করার ক্ষমতা নেই। যারা যুল্‌ম করেছিল তাদেরকে বলবঃ তোমরা যে আগুনের শাস্তি অস্বীকার করতে তা আস্বাদন কর। ৪২
3649 ৩৪. সাবা তাদের নিকট যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ আবৃত্তি করা হয় তখন তারা বলেঃ তোমাদের পূর্ব-পুরুষ যার ইবাদাত করত এই ব্যক্তিইতো তার ইবাদাতে তোমাদেরকে বাঁধা দিতে চায়। তারা আরও বলেঃ এটাতো মিথ্যা উদ্ভাবন ব্যতীত কিছু নয়। এবং কাফিরদের নিকট যখন সত্য আসে তখন তারা বলেঃ এটাতো এক সুস্পষ্ট যাদু! ৪৩
3650 ৩৪. সাবা আমি তাদেরকে পূর্বে কোন কিতাব দিইনি যা তারা অধ্যয়ন করত এবং তোমার পূর্বে তাদের নিকট কোন সতর্ককারীও প্রেরণ করিনি। ৪৪
3651 ৩৪. সাবা তাদের পূর্ববর্তীরাও মিথ্যা আরোপ করেছিল। তাদেরকে আমি যা দিয়েছিলাম এরা তার এক দশমাংশও পায়নি, তবুও তারা আমার রাসূলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল। ফলে কত ভয়ংকর হয়েছিল আমার শাস্তি! ৪৫
3652 ৩৪. সাবা বলঃ আমি তোমাদেরকে একটি বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছি, তোমরা আল্লাহর উদ্দেশে দুই জন অথবা এক জন করে দাঁড়াও, অতঃপর তোমরা চিন্তা করে দেখ - তোমাদের সংগী আদৌ উন্মাদ নয়। সেতো আসন্ন কঠিন শাস্তি সম্পর্কে তোমাদের সতর্ককারী মাত্র। ৪৬
3653 ৩৪. সাবা বলঃ আমি তোমাদের নিকট কোন পারিশ্রমিক চেয়ে থাকলে তা তোমাদেরই, আমার পুরস্কারতো আছে আল্লাহর নিকট এবং তিনি সর্ব বিষয়ে দ্রষ্টা। ৪৭
3654 ৩৪. সাবা বলঃ আমার রাবব সত্য নিক্ষেপ করেন; তিনি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। ৪৮
3655 ৩৪. সাবা বলঃ সত্য এসেছে এবং অসত্য না পারে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে এবং না পারে পুনরাবৃত্তি করতে। ৪৯
3656 ৩৪. সাবা বলঃ আমি বিভ্রান্ত হলে বিভ্রান্তির পরিণাম আমারই এবং যদি আমি সৎ পথে থাকি তাহলে তা এ জন্য যে, আমার প্রতি আমার রাবব অহী প্রেরণ করেন। তিনি সর্বশ্রোতা, সন্নিকট। ৫০
3657 ৩৪. সাবা তুমি যদি দেখতে যখন তারা ভীত বিহবল হয়ে পড়বে! তারা অব্যাহতি পাবেনা এবং তারা নিকটস্থ স্থান হতে ধৃত হবে। ৫১
3658 ৩৪. সাবা আর তারা বলবেঃ আমরা তাঁকে বিশ্বাস করলাম। কিন্তু এত দূরবর্তী স্থান হতে তারা নাগাল পাবে কিরূপে? ৫২
3659 ৩৪. সাবা তারাতো পূর্বে তাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল; তারা দূরবর্তী স্থান হতে অদৃশ্য বিষয়ে বাক্য ছুড়ে মারত। ৫৩
3660 ৩৪. সাবা তাদের ও তাদের প্রবৃত্তির মাঝে অন্তরাল করা হয়েছে, যেমন পূর্বে করা হয়েছিল তাদের সমপন্থীদের ক্ষেত্রে। তারা ছিল বিভ্রান্তিকর সন্দেহের মধ্যে। ৫৪
3661 ৩৫. ফাতির প্রশংসা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা আল্লাহরই যিনি বাণীবাহক করেন মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে যারা দুই দুই, তিন তিন অথবা চার চার পাখা বিশিষ্ট। তিনি তাঁর সৃষ্টিতে যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্ব শক্তিমান।
3662 ৩৫. ফাতির আল্লাহ মানুষের প্রতি কোন অনুগ্রহ অবারিত করলে কেহ ওটা নিবারন করতে পারেনা এবং তিনি কিছু নিরুদ্ধ করতে চাইলে অতঃপর কেহ ওর উম্মুক্তকারী নেই। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
3663 ৩৫. ফাতির হে মানুষ! তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর। আল্লাহ ছাড়া কি কোন স্রষ্টা আছে যে তোমাদেরকে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী হতে রিয্ক দান করে? তিনি ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই। সুতরাং কোথায় তোমরা বিপথে চালিত হচ্ছ?
3664 ৩৫. ফাতির তারা যদি তোমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করে তাহলে তোমার পূর্বেও রাসূলদের প্রতি মিথ্যা আরোপ করা হয়েছিল। আল্লাহর নিকটই সব কিছু প্রমাণিত হবে।
3665 ৩৫. ফাতির হে মানুষ! আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য; সুতরাং পার্থিব জীবন যেন তোমাদেরকে কিছুতেই প্রতারিত না করে এবং সেই প্রবঞ্চক যেন কিছুতেই আল্লাহ সম্পর্কে প্রবঞ্চিত না করে তোমাদেরকে।
3666 ৩৫. ফাতির শাইতান তোমাদের শত্রু; সুতরাং তাকে শত্রু হিসাবে গ্রহণ কর। সেতো তার দলবলকে আহবান করে শুধু এ জন্য যে, তারা যেন উত্তপ্ত জাহান্নামের সাথী হয়।
3667 ৩৫. ফাতির যারা কুফরী করে তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি, কিন্তু যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে তাদের জন্য আছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার।
3668 ৩৫. ফাতির কেহকেও যদি তার মন্দ কাজ শোভন করে দেখানো হয় এবং সে ওটাকে উত্তম মনে করে সেই ব্যক্তি কি তার সমান যে সৎ কাজ করে? আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎ পথে পরিচালিত করেন। অতএব তুমি তাদের জন্য আক্ষেপ করে তোমার প্রাণকে ধ্বংস করনা। তারা যা করে আল্লাহ তা জানেন।
3669 ৩৫. ফাতির আল্লাহই বায়ু প্রেরণ করে তা দ্বারা মেঘমালা সঞ্চালিত করেন। অতঃপর আমি তা নির্জীব ভূ-খন্ডের দিকে পরিচালিত করি, অতঃপর আমি ওটা দ্বারা ধরিত্রীকে ওর মৃত্যুর পর সঞ্জীবিত করি। পুনরুত্থান এ রূপেই হবে।
3670 ৩৫. ফাতির কেহ ক্ষমতা চাইলে সে জেনে রাখুক যে, সমস্ত ক্ষমতাতো আল্লাহরই। তাঁরই দিকে পবিত্র বাণীসমূহ আরোহণ করে এবং সৎ কাজ ওকে উন্নীত করে, আর যারা মন্দ কর্মের ফন্দি আটে তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি। তাদের ফন্দি ব্যর্থ হবেই। ১০
3671 ৩৫. ফাতির আল্লাহ তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি হতে; অতঃপর শুক্র বিন্দু হতে, অতঃপর তোমাদেরকে করেছেন যুগল! আল্লাহর অজ্ঞাতসারে কোন নারী গর্ভ ধারণ করেনা এবং প্রসবও করেনা; কোন দীর্ঘায়ু ব্যক্তির আয়ু বৃদ্ধি করা হয়না অথবা তার আয়ু হ্রাস করা হয়না। কিন্তু তাতো রয়েছে কিতাবে। এটা আল্লাহর জন্য সহজ। ১১
3672 ৩৫. ফাতির দু’টি দরিয়া একরূপ নয়; একটির পানি সুমিষ্ট ও সুপেয়, অপরটির পানি লোনা, খর। প্রত্যেকটি হতে তোমরা তাজা গোশত আহার কর এবং অলংকার যা তোমরা পরিধান কর, এবং রত্নাবলী আহরণ কর এবং তোমরা দেখ যে, ওর বুক চিরে নৌযান চলাচল করে যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করতে পার এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হও। ১২
3673 ৩৫. ফাতির তিনি রাতকে দিনে প্রবেশ করান এবং দিনকে প্রবেশ করান রাতে। তিনি সূর্য ও চাঁদকে করেছেন নিয়ন্ত্রিত; প্রত্যেকে পরিভ্রমণ করে এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত। তিনিই আল্লাহ! তোমাদের রাবব! সার্বভৌমত্ব তাঁরই। আর তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ডাক তারাতো খেজুর বীচির আবরণেরও অধিকারী নয়। ১৩
3674 ৩৫. ফাতির তোমরা তাদেরকে আহবান করলে তারা তোমাদের আহবান শুনবেনা এবং শুনলেও তোমাদের আহবানে সাড়া দিবেনা। তোমরা তাদেরকে যে শরীক করছ তা তারা কিয়ামাত দিবসে অস্বীকার করবে। তাঁর মত কেহই তোমাকে অবহিত করতে পারেনা, তিনি সর্বজ্ঞ। ১৪
3675 ৩৫. ফাতির হে লোক সকল! তোমরাতো আল্লাহর মুখাপেক্ষী, কিন্তু আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসা। ১৫
3676 ৩৫. ফাতির তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে অপসারণ করতে পারেন এবং এক নূতন সৃষ্টি আনয়ন করতে পারেন। ১৬
3677 ৩৫. ফাতির এটা আল্লাহর পক্ষে কঠিন নয়। ১৭
3678 ৩৫. ফাতির কোন বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবেনা, কোন ভারাক্রান্ত ব্যক্তি যদি কেহকেও এটা বহন করতে আহবান করে তাহলে তার কিছুই বহন করা হবেনা, নিকট আত্মীয় হলেও। তুমি শুধু সতর্ক করতে পার তাদেরকে যারা তাদের রাববকে না দেখে ভয় করে এবং সালাত কায়েম করে। যে কেহ নিজেকে পরিশোধন করে সেতো পরিশোধন করে নিজেরই কল্যাণের জন্য। প্রত্যাবর্তনতো আল্লাহরই নিকট। ১৮
3679 ৩৫. ফাতির সমান নয় অন্ধ ও চক্ষুম্মান, ১৯
3680 ৩৫. ফাতির অন্ধকার ও আলো, ২০
3681 ৩৫. ফাতির ছায়া ও রোদ, ২১
3682 ৩৫. ফাতির আর সমান নয় জীবিত ও মৃত। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা শ্রবণ করান। তুমি শোনাতে সমর্থ হবেনা যারা কাবরে রয়েছে তাদেরকে। ২২
3683 ৩৫. ফাতির তুমি একজন সতর্ককারী মাত্র। ২৩
3684 ৩৫. ফাতির আমি তোমাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছি সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারী রূপে; এমন কোন সম্প্রদায় নেই যার নিকট সতর্ককারী প্রেরিত হয়নি। ২৪
3685 ৩৫. ফাতির তারা যদি তোমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করে তাহলে তাদের পূর্ববর্তীরাও মিথ্যা আরোপ করেছিল; তাদের নিকট এসেছিল তাদের রাসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শন, গ্রন্থাদি ও দীপ্তিমান কিতাবসহ। ২৫
3686 ৩৫. ফাতির অতঃপর আমি কাফিরদেরকে শাস্তি দিয়েছিলাম। কি ভয়ংকর আমার শাস্তি! ২৬
3687 ৩৫. ফাতির তুমি কি দেখনা যে, আল্লাহ আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষন করেন এবং উহা দ্বারা আমি বিচিত্র বর্ণের ফলমূল উদ্গত করি? পাহাড়ের মধ্যে আছে বিচিত্র বর্ণের ফল - শুভ্র, লাল ও নিকষ কালো। ২৭
3688 ৩৫. ফাতির এভাবে রং বেরংয়ের মানুষ, জানোয়ার ও চতুস্পদ জন্তু রয়েছে। আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যারা জ্ঞানী তারাই তাঁকে ভয় করে; আল্লাহ পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল। ২৮
3689 ৩৫. ফাতির যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, সালাত কায়েম করে, আমি তাদেরকে যে রিয্ক দিয়েছি তা গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই আশা করতে পারে তাদের এমন ব্যবসায়ের যার ক্ষয় নেই – ২৯
3690 ৩৫. ফাতির এ জন্য যে, আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিবেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে আরো বেশি দিবেন। তিনিতো ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী। ৩০
3691 ৩৫. ফাতির আমি তোমার প্রতি যে কিতাব অবতীর্ণ করেছি তা সত্য। এটা পূর্ববর্তী কিতাবের সমর্থক। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের সব কিছু জানেন ও দেখেন। ৩১
3692 ৩৫. ফাতির অতঃপর আমি কিতাবের অধিকারী করলাম আমার বান্দাদের মধ্যে তাদেরকে যাদেরকে আমি মনোনীত করেছি; তবে তাদের কেহ নিজের প্রতি অত্যাচারী, কেহ মধ্য পন্থী এবং কেহ আল্লাহর ইচ্ছায় কল্যাণের কাজে অগ্রগামী। এটাই মহা অনুগ্রহ। ৩২
3693 ৩৫. ফাতির তারা প্রবেশ করবে স্থায়ী জান্নাতে, সেখানে তাদেরকে স্বর্ণ নির্মিত কংকন ও মুক্তা দ্বারা অলংকৃত করা হবে এবং সেখানে তাদের পোশাক পরিচ্ছদ হবে রেশমের। ৩৩
3694 ৩৫. ফাতির এবং তারা বলবেঃ প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমাদের দুঃখ দুর্দশা দূরীভূত করেছেন! আমাদের রাববতো ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী। ৩৪
3695 ৩৫. ফাতির যিনি নিজ অনুগ্রহে আমাদেরকে স্থায়ী আবাস দিয়েছেন, যেখানে ক্লেশ আমাদেরকে স্পর্শ করে না। এবং ক্লান্তিও স্পর্শ করে না। ৩৫
3696 ৩৫. ফাতির কিন্তু যারা কুফরী করে তাদের জন্য আছে জাহান্নামের আগুন। তাদের মৃত্যুর আদেশ দেয়া হবেনা যে, তারা মরবে এবং তাদের জন্য জাহান্নামের শাস্তিও লাঘব করা হবেনা। এভাবে আমি প্রত্যেক অকৃতজ্ঞকে শাস্তি দিয়ে থাকি। ৩৬
3697 ৩৫. ফাতির সেখানে তারা আর্তনাদ করে বলবেঃ হে আমাদের রাবব! আমাদেরকে নিস্কৃতি দিন, আমরা সৎ কাজ করব, পূর্বে যা করতাম তা করবনা। আল্লাহ বলবেনঃ আমি কি তোমাদেরকে এত দীর্ঘ জীবন দান করিনি যে, তখন কেহ সতর্ক হতে চাইলে সতর্ক হতে পারতে? তোমাদের নিকটতো সতর্ককারীরাও এসেছিল। সুতরাং শাস্তি আস্বাদন কর; যালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই। ৩৭
3698 ৩৫. ফাতির আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয় অবগত আছেন। অন্তরে যা রয়েছে সে সম্বন্ধে তিনি সবিশেষ অবহিত। ৩৮
3699 ৩৫. ফাতির তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছেন। সুতরাং কেহ কুফরী করলে তার কুফরীর জন্য সে নিজেই দায়ী হবে। কাফিরদের কুফরী শুধু তাদের রবের ক্রোধই বৃদ্ধি করে এবং কাফিরদের কুফরী তাদের ক্ষতিই বৃদ্ধি করে। ৩৯
3700 ৩৫. ফাতির বলঃ তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ডাক সেসব দেবদেবীর কথা ভেবে দেখেছ কি? তারা পৃথিবীতে কিছু সৃষ্টি করে থাকলে আমাকে দেখাও; অথবা আকাশমন্ডলী সৃষ্টিতে তাদের কোন অংশ আছে কি? না কি আমি তাদেরকে এমন কোন কিতাব দিয়েছি যার প্রমাণের উপর এরা নির্ভর করে? বস্তুতঃ যালিমরা একে অপরকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। ৪০
3701 ৩৫. ফাতির আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীকে সংরক্ষণ করেন যাতে ওরা স্থানচ্যূত না হয়, ওরা স্থানচ্যূত হলে তিনি ব্যতীত কে ওদেরকে সংরক্ষণ করবে? তিনি অতি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ। ৪১
3702 ৩৫. ফাতির তারা দৃঢ়তার সাথে আল্লাহর শপথ করে বলত যে, তাদের নিকট কোন সতর্ককারী এলে তারা অন্য সব সম্প্রদায় অপেক্ষা সৎ পথের অধিকতর অনুসারী হবে। কিন্তু তাদের নিকট যখন সতর্ককারী এলো তখন তারা শুধু তাদের বিমুখতাই বৃদ্ধি করল – ৪২
3703 ৩৫. ফাতির পৃথিবীতে ঔদ্ধত্য প্রকাশ এবং কূট ষড়যন্ত্রের কারণে। কূট ষড়যন্ত্র ওর উদ্যোক্তাদেরকেই পরিবেষ্টন করে। তাহলে কি তারা প্রতীক্ষা করছে পূর্ববর্তীদের প্রতি প্রযুক্ত বিধানের? কিন্তু তুমি আল্লাহর বিধানের কখনও কোন পরিবর্তন পাবেনা এবং আল্লাহর বিধানের কোন ব্যতিক্রমও দেখবেনা। ৪৩
3704 ৩৫. ফাতির তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি? তাহলে তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কি হয়েছিল তা দেখতে পেত। তারাতো এদের অপেক্ষা অধিকতর শক্তিশালী ছিল। আল্লাহ এমন নন যে, আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবীর কোন কিছুই তাঁকে অক্ষম করতে পারে; তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান। ৪৪
3705 ৩৫. ফাতির আল্লাহ মানুষকে তাদের কৃতকর্মের জন্য শাস্তি দিলে ভূপৃষ্ঠের কোন জীব জন্তুকেই রেহাই দিতেননা, কিন্তু তিনি এক নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত তাদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন। অতঃপর তাদের নির্দিষ্ট কাল এসে গেলে আল্লাহ হবেন তাঁর বান্দাদের সম্যক দ্রষ্টা। ৪৫
3706 ৩৬. ইয়াসীন ইয়া সীন।
3707 ৩৬. ইয়াসীন শপথ জ্ঞানগর্ভ কুরআনের।
3708 ৩৬. ইয়াসীন তুমি অবশ্যই রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত।
3709 ৩৬. ইয়াসীন তুমি সরল পথে প্রতিষ্ঠিত।
3710 ৩৬. ইয়াসীন কুরআন অবতীর্ণ পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু আল্লাহর নিকট হতে।
3711 ৩৬. ইয়াসীন যাতে তুমি সতর্ক করতে পার এমন এক জাতিকে যাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে সতর্ক করা হয়নি, যার ফলে তারা গাফিল।
3712 ৩৬. ইয়াসীন তাদের অধিকাংশের জন্য সেই বাণী অবধারিত হয়েছে; সুতরাং তারা ঈমান আনবেনা।
3713 ৩৬. ইয়াসীন আমি তাদের গলদেশে চিবুক পর্যন্ত বেড়ি পরিয়েছি, ফলে তারা উর্ধ্বমুখী হয়ে গেছে।
3714 ৩৬. ইয়াসীন আমি তাদের সম্মুখে প্রাচীর ও পশ্চাতে প্রাচীর স্থাপন করেছি এবং তাদেরকে আবৃত করেছি, ফলে তারা দেখতে পায়না।
3715 ৩৬. ইয়াসীন তুমি তাদেরকে সতর্ক কর কিংবা না কর তাদের জন্য উভয়ই সমান; তারা ঈমান আনবেনা। ১০
3716 ৩৬. ইয়াসীন তুমি শুধু তাদেরকেই সতর্ক করতে পার যারা উপদেশ মেনে চলে এবং না দেখে দয়াময় রাহমানকে ভয় করে। অতএব তুমি তাদেরকে ক্ষমা ও মহা পুরস্কারের সংবাদ দাও। ১১
3717 ৩৬. ইয়াসীন আমিই মৃতকে করি জীবিত এবং লিখে রাখি যা তারা অগ্রে প্রেরণ করে এবং যা তারা পশ্চাতে রেখে যায়, আমি প্রত্যেক বিষয়কে স্পষ্ট কিতাবে সংরক্ষিত রেখেছি। ১২
3718 ৩৬. ইয়াসীন তাদের নিকট উপস্থিত কর এক জনপদের অধিবাসীদের দৃষ্টান্ত; তাদের নিকট এসেছিল রাসূলগণ। ১৩
3719 ৩৬. ইয়াসীন যখন আমি তাদের নিকট পাঠিয়েছিলাম দু’জন রাসূল, কিন্তু তারা তাদেরকে মিথ্যাবাদী বলল; তখন আমি তাদেরকে শক্তিশালী করেছিলাম তৃতীয় একজন দ্বারা এবং তারা বলেছিলঃ আমরাতো তোমাদের নিকট প্রেরিত হয়েছি। ১৪
3720 ৩৬. ইয়াসীন তারা বললঃ তোমরাতো আমাদের মত মানুষ, দয়াময় কিছুই অবতীর্ণ করেননি, তোমরা শুধু মিথ্যাই বলছ। ১৫
3721 ৩৬. ইয়াসীন তারা বললঃ আমাদের রাব্ব জানেন যে, আমরা অবশ্যই তোমাদের নিকট প্রেরিত হয়েছি। ১৬
3722 ৩৬. ইয়াসীন স্পষ্টভাবে প্রচার করাই আমাদের দায়িত্ব। ১৭
3723 ৩৬. ইয়াসীন তারা বললঃ আমরা তোমাদেরকে অমঙ্গলের কারণ মনে করি। যদি তোমরা বিরত না হও তাহলে তোমাদেরকে অবশ্যই প্রস্তরাঘাতে হত্যা করব এবং আমাদের পক্ষ হতে তোমাদের উপর যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি অবশ্যই আপতিত হবে। ১৮
3724 ৩৬. ইয়াসীন তারা বললঃ তোমাদের অমঙ্গল তোমাদেরই সাথে, এটা কি এ জন্য যে, আমরা তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছি? বস্তুতঃ তোমরা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়। ১৯
3725 ৩৬. ইয়াসীন নগরীর প্রান্ত হতে এক ব্যক্তি ছুটে এলো, সে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! রাসূলদের অনুসরণ কর। ২০
3726 ৩৬. ইয়াসীন অনুসরণ কর তাদের যারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায়না এবং তারা সৎ পথপ্রাপ্ত। ২১
3727 ৩৬. ইয়াসীন আমার কি যুক্তি আছে যে, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং যাঁর নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে আমি তাঁর ইবাদাত করবনা? ২২
3728 ৩৬. ইয়াসীন আমি কি তাঁর পরিবর্তে অন্য মা‘বূদ গ্রহণ করব? দয়াময় (আল্লাহ) আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইলে তাদের সুপারিশ আমার কোন কাজে আসবেনা এবং তারা আমাকে উদ্ধারও করতে পারবেনা। ২৩
3729 ৩৬. ইয়াসীন এরূপ করলে আমি অবশ্যই স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পতিত হব। ২৪
3730 ৩৬. ইয়াসীন আমিতো তোমাদের রবের উপর ঈমান এনেছি, অতএব তোমরা আমার কথা শোন। ২৫
3731 ৩৬. ইয়াসীন তাকে বলা হলঃ জান্নাতে প্রবেশ কর। সে বলে উঠলঃ হায়! আমার সম্প্রদায় যদি জানতে পারত – ২৬
3732 ৩৬. ইয়াসীন কি কারণে আমার রাব্ব আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং সম্মানিত করেছেন। ২৭
3733 ৩৬. ইয়াসীন আমি তার মৃত্যুর পর তার সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আকাশ হতে কোন বাহিনী প্রেরণ করিনি এবং প্রেরণের প্রয়োজনও ছিলনা। ২৮
3734 ৩৬. ইয়াসীন ওটা ছিল শুধুমাত্র এক মহানাদ। ফলে তারা নিথর নিস্তব্ধ হয়ে গেল। ২৯
3735 ৩৬. ইয়াসীন পরিতাপ বান্দাদের জন্য! তাদের নিকট যখনই কোন রাসূল এসেছে তখনই তারা তাকে ঠাট্টা বিদ্রুপ করেছে। ৩০
3736 ৩৬. ইয়াসীন তারা কি লক্ষ্য করেনা যে, তাদের পূর্বে কত মানবগোষ্ঠীকে আমি ধ্বংস করেছি যারা তাদের মধ্যে ফিরে আসবেনা? ৩১
3737 ৩৬. ইয়াসীন এবং অবশ্যই তাদের সকলকে একত্রে আমার নিকট উপস্থিত করা হবে। ৩২
3738 ৩৬. ইয়াসীন তাদের জন্য একটি নিদর্শন মৃত ধরিত্রী, যাকে আমি সঞ্জীবিত করি এবং যা হতে উৎপন্ন করি শস্য, যা তারা আহার করে। ৩৩
3739 ৩৬. ইয়াসীন তাতে আমি সৃষ্টি করি খেজুর ও আঙ্গুরের উদ্যান এবং উৎসারিত করি প্রস্রবণ – ৩৪
3740 ৩৬. ইয়াসীন যাতে তারা আহার করতে পারে এর ফলমূল হতে, অথচ তাদের হাত ওটা সৃষ্টি করেনি। তবুও কি তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেনা? ৩৫
3741 ৩৬. ইয়াসীন পবিত্র মহান তিনি, যিনি উদ্ভিদ, মানুষ এবং তারা যাদেরকে জানেনা তাদের প্রত্যেককে সৃষ্টি করেছেন জোড়ায় জোড়ায়। ৩৬
3742 ৩৬. ইয়াসীন তাদের এক নিদর্শন রাত, ওটা হতে আমি দিবালোক অপসারিত করি, তখন সকলেই অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। ৩৭
3743 ৩৬. ইয়াসীন এবং সূর্য ভ্রমণ করে ওর নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে। এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ। ৩৮
3744 ৩৬. ইয়াসীন এবং চন্দ্রের জন্য আমি নির্দিষ্ট করেছি বিভিন্ন মানযিল, অবশেষে ওটা শুষ্ক বক্র পুরাতন খেজুর শাখার আকার ধারণ করে। ৩৯
3745 ৩৬. ইয়াসীন সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চাঁদের নাগাল পাওয়া এরং রাতের পক্ষে সম্ভব নয় দিনকে অতিক্রম করা; এবং প্রত্যেকে নিজ নিজ কক্ষপথে সাতার কাটে। ৪০
3746 ৩৬. ইয়াসীন তাদের এক নিদর্শন এই যে, আমি তাদের বংশধরদের বোঝাই নৌযানে আরোহণ করিয়েছিলাম। ৪১
3747 ৩৬. ইয়াসীন এবং তাদের জন্য অনুরূপ যানবাহন সৃষ্টি করেছি যাতে তারা আরোহণ করে। ৪২
3748 ৩৬. ইয়াসীন আমি ইচ্ছা করলে তাদেরকে নিমজ্জিত করতে পারি; সেই অবস্থায় তারা কোন সাহায্যকারী পাবেনা এবং তারা পরিত্রাণও পাবেনা – ৪৩
3749 ৩৬. ইয়াসীন আমার অনুগ্রহ না হলে এবং কিছুকালের জন্য জীবনোপকরণ ভোগ করতে না দিলে। ৪৪
3750 ৩৬. ইয়াসীন যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ যা তোমাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে রয়েছে সে সম্বন্ধে সাবধান হও যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পার। ৪৫
3751 ৩৬. ইয়াসীন আর যখনই তাদের রবের নিদর্শনাবলীর কোন নিদর্শন তাদের নিকট আসে তখন তারা তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়। ৪৬
3752 ৩৬. ইয়াসীন যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ তোমাদেরকে যে জীবনোপকরণ দিয়েছেন তা হতে ব্যয় কর তখন কাফিরেরা মু’মিনদেরকে বলেঃ যাকে ইচ্ছা করলে আল্লাহ খাওয়াতে পারতেন আমরা কেন তাকে খাওয়াব? তোমরাতো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছ। ৪৭
3753 ৩৬. ইয়াসীন তারা বলেঃ তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলে বলঃ এই প্রতিশ্রুতি কখন পূর্ণ হবে? ৪৮
3754 ৩৬. ইয়াসীন এরাতো অপেক্ষায় আছে এক মহানাদের যা এদেরকে আঘাত করবে এদের বাক বিতন্ডা কালে। ৪৯
3755 ৩৬. ইয়াসীন তখন তারা অসীয়াত করতে সমর্থ হবেনা এবং নিজেদের পরিবার পরিজনের নিকট ফিরেও আসতে পারবেনা। ৫০
3756 ৩৬. ইয়াসীন যখন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে তখনই তারা কাবর হতে ছুটে আসবে তাদের রবের দিকে। ৫১
3757 ৩৬. ইয়াসীন তারা বলবেঃ হায়! দুর্ভোগ আমাদের! কে আমাদেরকে আমাদের নিদ্রাস্থল হতে উঠালো? দয়াময় (আল্লাহ) তো এরই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং রাসূলগণ সত্যই বলেছিলেন। ৫২
3758 ৩৬. ইয়াসীন এটা হবে শুধুমাত্র এক মহানাদ; তখনই তাদের সকলকে উপস্থিত করা হবে আমার সম্মুখে। ৫৩
3759 ৩৬. ইয়াসীন আজ কারও প্রতি কোন যুলম করা হবেনা এবং তোমরা যা করতে শুধু তারই প্রতিফল দেয়া হবে। ৫৪
3760 ৩৬. ইয়াসীন এ দিন জান্নাতবাসীরা আনন্দে মগ্ন থাকবে। ৫৫
3761 ৩৬. ইয়াসীন তারা এবং তাদের সঙ্গিনীরা সুশীতল ছায়ায় সুসজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে বসবে। ৫৬
3762 ৩৬. ইয়াসীন সেখানে থাকবে তাদের জন্য ফল-মূল এবং থাকবে যা তারা ফরমায়েশ করবে। ৫৭
3763 ৩৬. ইয়াসীন পরম দয়ালু রবের পক্ষ হতে তাদেরকে বলা হবে ‘সালাম’। ৫৮
3764 ৩৬. ইয়াসীন আর হে অপরাধীরা! তোমরা আজ পৃথক হয়ে যাও। ৫৯
3765 ৩৬. ইয়াসীন হে বানী আদম! আমি কি তোমাদেরকে নির্দেশ দেইনি যে, তোমরা শাইতানের দাসত্ব করনা, কারণ সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু? ৬০
3766 ৩৬. ইয়াসীন আর আমার ইবাদাত কর, এটাই সরল পথ? ৬১
3767 ৩৬. ইয়াসীন শাইতানতো তোমাদের বহু দলকে বিভ্রান্ত করেছিল, তবুও কি তোমরা বুঝনি? ৬২
3768 ৩৬. ইয়াসীন এটা সেই জাহান্নাম যার প্রতিশ্রুতি তোমাদেরকে দেয়া হয়েছিল। ৬৩
3769 ৩৬. ইয়াসীন আজ তোমরা এতে প্রবেশ কর; কারণ তোমরা একে অবিশ্বাস করেছিলে। ৬৪
3770 ৩৬. ইয়াসীন আমি আজ এদের মুখে মোহর লাগিয়ে দিব। এদের হাত কথা বলবে আমার সাথে এবং এদের পা সাক্ষ্য দিবে এদের কৃতকর্মের। ৬৫
3771 ৩৬. ইয়াসীন আমি ইচ্ছা করলে এদের চক্ষুগুলিকে লোপ করে দিতে পারতাম, তখন এরা পথ চলতে চাইলে কি করে দেখতে পেত? ৬৬
3772 ৩৬. ইয়াসীন এবং আমি ইচ্ছা করলে এদেরকে স্ব স্ব স্থানে বিকৃত করে দিতে পারতাম, ফলে এরা চলতে পারতো না এবং ফিরেও আসতে পারতো না। ৬৭
3773 ৩৬. ইয়াসীন আমি যাকে দীর্ঘ জীবন দান করি তার স্বাভাবিক গঠনে অবনতি ঘটাই। তবুও কি তারা বুঝেনা? ৬৮
3774 ৩৬. ইয়াসীন আমি তাকে কাব্য রচনা করতে শিখাইনি এবং এটা তার পক্ষে শোভনীয় নয়। ইহাতো শুধু উপদেশ এবং সুস্পষ্ট কুরআন। ৬৯
3775 ৩৬. ইয়াসীন যাতে সে সতর্ক করতে পারে জীবিতদেরকে এবং যাতে কাফিরদের বিরুদ্ধে শাস্তির কথা সত্য হতে পারে। ৭০
3776 ৩৬. ইয়াসীন তারা কি লক্ষ্য করেনা যে, নিজ হতে সৃষ্ট বস্তুর মধ্যে তাদের জন্য আমি সৃষ্টি করেছি গৃহ পালিত পশু এবং তারাই ওগুলির অধিকারী। ৭১
3777 ৩৬. ইয়াসীন এবং আমি ওগুলিকে তাদের বশীভূত করেছি। ওগুলির কতক তাদের বাহন এবং কতক তারা আহার করে। ৭২
3778 ৩৬. ইয়াসীন তাদের জন্য ওগুলিতে রয়েছে বহু উপকারিতা, আর আছে পানীয় বস্তু। তবুও কি তারা কৃতজ্ঞ হবেনা? ৭৩
3779 ৩৬. ইয়াসীন তারাতো আল্লাহর পরিবর্তে অন্য মা‘বূদ গ্রহণ করেছে এ আশায় যে, তারা সাহায্য প্রাপ্ত হবে। ৭৪
3780 ৩৬. ইয়াসীন কিন্তু এসব ইলাহ তাদের সাহায্য করতে সক্ষম নয়, তাদেরকে তাদের বাহিনীরূপে উপস্থিত করা হবে। ৭৫
3781 ৩৬. ইয়াসীন অতএব তাদের কথা তোমাদের যেন দুঃখ না দেয়। আমিতো জানি যা তারা গোপন করে এবং যা তারা ব্যক্ত করে। ৭৬
3782 ৩৬. ইয়াসীন মানুষ কি দেখেনা যে, আমি তাকে সৃষ্টি করেছি শুক্র বিন্দু হতে? অথচ পরে সে হয়ে পড়ে প্রকাশ্য বিতন্ডাকারী। ৭৭
3783 ৩৬. ইয়াসীন আর সে আমার সম্বন্ধে উপমা রচনা করে, অথচ সে নিজের সৃষ্টির কথা ভুলে যায়। বলেঃ অস্থিতে কে প্রাণ সঞ্চার করবে যখন ওটা পচে গলে যাবে? ৭৮
3784 ৩৬. ইয়াসীন বলঃ ওর মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করবেন তিনিই যিনি ওটা প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি প্রত্যেকটি সৃষ্টি সম্বন্ধে সম্যক অবগত। ৭৯
3785 ৩৬. ইয়াসীন তিনি তোমাদের জন্য সবুজ বৃক্ষ হতে আগুন উৎপাদন করেন এবং তোমরা ওটা দ্বারা প্রজ্জ্বলিত কর। ৮০
3786 ৩৬. ইয়াসীন যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তিনি কি তাদের অনুরূপ সৃষ্টি করতে সক্ষম নন? হ্যাঁ, নিশ্চয়ই তিনি মহাস্রষ্টা, সর্বজ্ঞ। ৮১
3787 ৩৬. ইয়াসীন তাঁর ব্যাপারতো শুধু এই যে, যখন তিনি কোন কিছুর ইচ্ছা করেন তখন বলেন ‘হও’, ফলে তা হয়ে যায়। ৮২
3788 ৩৬. ইয়াসীন অতএব পবিত্র ও মহান তিনি যাঁর হাতে রয়েছে প্রত্যেক বিষয়ের সার্বভৌম ক্ষমতা এবং তাঁর নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। ৮৩
3789 ৩৭. আস-সাফফাত শপথ তাদের যারা সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান।
3790 ৩৭. আস-সাফফাত এবং যারা কঠোর পরিচালক।
3791 ৩৭. আস-সাফফাত এবং যারা জিকর আবৃত্তিতে মশগুল।
3792 ৩৭. আস-সাফফাত নিশ্চয়ই তোমাদের মা‘বূদ এক।
3793 ৩৭. আস-সাফফাত যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এতদুভয়ের অন্তবর্তী সব কিছুর রাব্ব, এবং রাব্ব সকল উদয়স্থলের।
3794 ৩৭. আস-সাফফাত আমি নিকটবর্তী আকাশকে নক্ষত্ররাজির সুষমা দ্বারা সুশোভিত করেছি।
3795 ৩৭. আস-সাফফাত এবং রক্ষা করেছি প্রত্যেক বিদ্রোহী শাইতান হতে।
3796 ৩৭. আস-সাফফাত ফলে তারা উর্ধ্ব জগতের কিছু শ্রবণ করতে পারেনা এবং তাদের প্রতি উল্কা নিক্ষিপ্ত হয় সকল দিক হতে –
3797 ৩৭. আস-সাফফাত বিতাড়নের জন্য এবং তাদের জন্য রয়েছে অবিরাম শাস্তি।
3798 ৩৭. আস-সাফফাত তবে কেহ হঠাৎ কিছু শুনে ফেললে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড তার পশ্চাদ্ধাবন করে। ১০
3799 ৩৭. আস-সাফফাত তাদেরকে জিজ্ঞেস করঃ তাদেরকে সৃষ্টি করা কঠিনতর নাকি আমি অন্য যা কিছু সৃষ্টি করেছি তা সৃষ্টি কঠিনতর? তাদেরকে আমি সৃষ্টি করেছি আঠাল মাটি হতে। ১১
3800 ৩৭. আস-সাফফাত তুমিতো বিস্ময় বোধ করছ, আর তারা করছে বিদ্রুপ। ১২
3801 ৩৭. আস-সাফফাত এবং যখন তাদেরকে উপদেশ দেয়া হয় তখন তারা তা গ্রহণ করেনা। ১৩
3802 ৩৭. আস-সাফফাত তারা কোন নিদর্শন দেখলে উপহাস করে। ১৪
3803 ৩৭. আস-সাফফাত এবং বলেঃ এটাতো এক সুস্পষ্ট যাদু ব্যতীত আর কিছুই নয়। ১৫
3804 ৩৭. আস-সাফফাত আমরা যখন মরে যাব এবং মাটি ও অস্থিতে পরিণত হব তখন কি আমাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবে? ১৬
3805 ৩৭. আস-সাফফাত এবং আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকেও? ১৭
3806 ৩৭. আস-সাফফাত বলঃ হ্যাঁ এবং তোমরা হবে লাঞ্ছিত। ১৮
3807 ৩৭. আস-সাফফাত ওটা একটি মাত্র প্রচন্ড শব্দ। আর তখনই তারা প্রত্যক্ষ করবে। ১৯
3808 ৩৭. আস-সাফফাত এবং তারা বলবেঃ হায়! দুর্ভোগ আমাদের! এটাইতো কর্মফল দিন। ২০
3809 ৩৭. আস-সাফফাত এটাই ফাইসালার দিন যা তোমরা অস্বীকার করতে। ২১
3810 ৩৭. আস-সাফফাত (মালাইকাকে বলা হবে) একত্রিত কর যালিম ও তাদের সহচরদেরকে এবং তাদেরকে যাদের ইবাদাত করত, ২২
3811 ৩৭. আস-সাফফাত আল্লাহর পরিবর্তে এবং তাদেরকে ধাবিত কর জাহান্নামের পথে। ২৩
3812 ৩৭. আস-সাফফাত অতঃপর তাদেরকে থামাও, কারণ তাদেরকে প্রশ্ন করা হবে; ২৪
3813 ৩৭. আস-সাফফাত তোমাদের কি হল যে, তোমরা একে অপরকে সাহায্য করছনা? ২৫
3814 ৩৭. আস-সাফফাত বস্তুতঃ সেদিন তারা আত্মসমর্পন করবে। ২৬
3815 ৩৭. আস-সাফফাত এবং তারা একে অপরের সামনাসামনি হয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। ২৭
3816 ৩৭. আস-সাফফাত তারা বলবেঃ তোমরাতো তোমাদের শক্তি নিয়ে আমাদের নিকট আসতে। ২৮
3817 ৩৭. আস-সাফফাত তারা বলবেঃ তোমরা তো বিশ্বাসীই ছিলে না। ২৯
3818 ৩৭. আস-সাফফাত এবং তোমাদের উপর আমাদের কোন কর্তৃত্ব ছিলনা; বস্তুতঃ তোমরাই ছিলে সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়। ৩০
3819 ৩৭. আস-সাফফাত আমাদের বিরুদ্ধে আমাদের রবের কথা সত্য হয়েছে; আমাদেরকে অবশ্যই শাস্তি আস্বাদন করতে হবে। ৩১
3820 ৩৭. আস-সাফফাত আমরা তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করেছিলাম, কারণ আমরা নিজেরাও ছিলাম বিভ্রান্ত। ৩২
3821 ৩৭. আস-সাফফাত তারা সবাই সেদিন শাস্তিতে শরীক হবে। ৩৩
3822 ৩৭. আস-সাফফাত অপরাধীদের প্রতি আমি এরূপই করে থাকি। ৩৪
3823 ৩৭. আস-সাফফাত যখন তাদেরকে বলা হত যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই তখন তারা অহংকার করত। ৩৫
3824 ৩৭. আস-সাফফাত এবং বলতঃ আমরা কি এক পাগল কবির কথায় আমাদের মা‘বূদদেরকে বর্জন করব? ৩৬
3825 ৩৭. আস-সাফফাত বরং সেতো সত্য নিয়ে এসেছে এবং সে সমস্ত রাসূলকে সত্য বলে স্বীকার করেছে। ৩৭
3826 ৩৭. আস-সাফফাত তোমরা অবশ্যই মর্মন্তদ শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করবে। ৩৮
3827 ৩৭. আস-সাফফাত এবং তোমরা যা করতে তারই প্রতিফল পাবে। ৩৯
3828 ৩৭. আস-সাফফাত তবে তারা নয়, যারা আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দা। ৪০
3829 ৩৭. আস-সাফফাত তাদের জন্য রয়েছে নির্ধারিত রিয্ক – ৪১
3830 ৩৭. আস-সাফফাত ফল-মূল এবং তারা হবে সম্মানিত। ৪২
3831 ৩৭. আস-সাফফাত সুখ কাননে। ৪৩
3832 ৩৭. আস-সাফফাত তারা মুখোমুখি আসনে আসীন হবে। ৪৪
3833 ৩৭. আস-সাফফাত তাদেরকে ঘুরে ঘুরে পরিবেশন করা হবে বিশুদ্ধ সূরাপূর্ণ পাত্র – ৪৫
3834 ৩৭. আস-সাফফাত শুভ্র উজ্জ্বল, যা হবে পানকারীদের জন্য সুস্বাদু। ৪৬
3835 ৩৭. আস-সাফফাত তাতে ক্ষতিকর কিছুই থাকবেনা এবং তারা তাতে মাতালও হবেনা। ৪৭
3836 ৩৭. আস-সাফফাত وَ عِنۡدَهُمۡ قٰصِرٰتُ الطَّرۡفِ عِیۡنٌ ৪৮
3837 ৩৭. আস-সাফফাত তারা যেন সুরক্ষিত ডিম্ব। ৪৯
3838 ৩৭. আস-সাফফাত তারা একে অপরের সাথে পরস্পর জিজ্ঞাসাবাদ করবে। ৫০
3839 ৩৭. আস-সাফফাত তাদের কেহ বলবেঃ আমার ছিল এক সঙ্গী। ৫১
3840 ৩৭. আস-সাফফাত সে বলতঃ তুমি কি বিশ্বাস কর যে – ৫২
3841 ৩৭. আস-সাফফাত আমরা যখন মরে যাব এবং আমরা মৃত্তিকা ও অস্থিতে পরিণত হব তখনও আমাদেরকে প্রতিফল দেয়া হবে? ৫৩
3842 ৩৭. আস-সাফফাত (আল্লাহ) বলবেনঃ তোমরা কি তাকে দেখতে চাও? ৫৪
3843 ৩৭. আস-সাফফাত অতঃপর সে ঝুকে দেখবে এবং তাকে দেখতে পাবে জাহান্নামের মধ্যস্থলে। ৫৫
3844 ৩৭. আস-সাফফাত সে বলবেঃ আল্লাহর শপথ! তুমিতো আমাকে প্রায় ধ্বংসই করেছিলে। ৫৬
3845 ৩৭. আস-সাফফাত আমার রবের অনুগ্রহ না থাকলে আমিও আটক ব্যক্তিদের মধ্যে শামিল হতাম। ৫৭
3846 ৩৭. আস-সাফফাত আমাদের আর মৃত্যু হবেনা – ৫৮
3847 ৩৭. আস-সাফফাত প্রথম মৃত্যু ছাড়া এবং আমাদেরকে শাস্তিও দেয়া হবেনা! ৫৯
3848 ৩৭. আস-সাফফাত এটাতো মহা সাফল্য। ৬০
3849 ৩৭. আস-সাফফাত এরূপ সাফল্যের জন্য সাধকদের উচিৎ সাধনা করা। ৬১
3850 ৩৭. আস-সাফফাত আপ্যায়নের জন্য কি এটাই শ্রেষ্ঠ, না কি যাক্কুম বৃক্ষ? ৬২
3851 ৩৭. আস-সাফফাত যালিমদের জন্য আমি ওটা সৃষ্টি করেছি পরীক্ষা স্বরূপ। ৬৩
3852 ৩৭. আস-সাফফাত এই বৃক্ষ উদ্গত হয় জাহান্নামের তলদেশ হতে। ৬৪
3853 ৩৭. আস-সাফফাত ওটার মোচা যেন শাইতানের মাথা। ৬৫
3854 ৩৭. আস-সাফফাত ওটা হতে তারা আহার করবে এবং উদর পূর্ণ করবে ওটা দ্বারা। ৬৬
3855 ৩৭. আস-সাফফাত তদুপরি তাদের জন্য থাকবে ফুটন্ত পানির মিশ্রণ। ৬৭
3856 ৩৭. আস-সাফফাত আর তাদের গন্তব্য হবে অবশ্যই প্রজ্জ্বলিত আগুনের দিকে। ৬৮
3857 ৩৭. আস-সাফফাত তারা তাদের পিতৃপুরুষদেরকে পেয়েছিল বিপথগামী। ৬৯
3858 ৩৭. আস-সাফফাত আর তারা তাদের পদাংক অনুসরণে ধাবিত হয়েছিল। ৭০
3859 ৩৭. আস-সাফফাত তাদের আগেও পূর্ববর্তীদের অধিকাংশ বিপথগামী হয়েছিল। ৭১
3860 ৩৭. আস-সাফফাত এবং আমি তাদের মধ্যে সতর্ককারী প্রেরণ করেছিলাম। ৭২
3861 ৩৭. আস-সাফফাত সুতরাং লক্ষ্য কর, যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল তাদের পরিণাম কি হয়েছিল! ৭৩
3862 ৩৭. আস-সাফফাত তবে আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দাদের কথা স্বতন্ত্র। ৭৪
3863 ৩৭. আস-সাফফাত নূহ আমাকে আহবান করেছিল, আর আমি কত উত্তম সাড়া দানকারী। ৭৫
3864 ৩৭. আস-সাফফাত তাকে ও তার পরিবারবর্গকে আমি উদ্ধার করেছিলাম মহা সংকট হতে। ৭৬
3865 ৩৭. আস-সাফফাত তার বংশধরদেরকেই আমি বিদ্যমান রেখেছি বংশ পরম্পরায়। ৭৭
3866 ৩৭. আস-সাফফাত আমি এটা পরবর্তীদের স্মরণে রেখেছি। ৭৮
3867 ৩৭. আস-সাফফাত সমগ্র বিশ্বের মধ্যে নূহের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। ৭৯
3868 ৩৭. আস-সাফফাত এভাবেই আমি সৎ কর্মশীলদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। ৮০
3869 ৩৭. আস-সাফফাত সে ছিল আমার মু’মিন বান্দাদের অন্যতম। ৮১
3870 ৩৭. আস-সাফফাত অবশিষ্ট সকলকে আমি নিমজ্জিত করেছিলাম। ৮২
3871 ৩৭. আস-সাফফাত ইবরাহীম তার অনুগামীদের অন্তর্ভুক্ত। ৮৩
3872 ৩৭. আস-সাফফাত স্মরণ কর, সে তার রবের নিকট উপস্থিত হয়েছিল বিশুদ্ধ চিত্তে। ৮৪
3873 ৩৭. আস-সাফফাত যখন সে তার পিতা ও তার সম্প্রদায়কে জিজ্ঞেস করেছিলঃ তোমরা কিসের পূজা করছ? ৮৫
3874 ৩৭. আস-সাফফাত তোমরা কি আল্লাহর পরিবর্তে অলীক মা‘বূদগুলিকে চাও? ৮৬
3875 ৩৭. আস-সাফফাত জগতসমূহের রাব্ব সম্বন্ধে তোমাদের ধারণা কি? ৮৭
3876 ৩৭. আস-সাফফাত অতঃপর সে একবার তারকারাজির দিকে একবার তাকালো। ৮৮
3877 ৩৭. আস-সাফফাত এবং বললঃ আমি অসুস্থ। ৮৯
3878 ৩৭. আস-সাফফাত অতঃপর তারা তাকে পশ্চাতে রেখে চলে গেল। ৯০
3879 ৩৭. আস-সাফফাত পরে সে সন্তর্পণে তাদের দেবতাগুলির নিকট গেল এবং বললঃ তোমরা খাদ্য গ্রহণ করছ না কেন? ৯১
3880 ৩৭. আস-সাফফাত তোমাদের কি হয়েছে যে, তোমরা কথা বলনা? ৯২
3881 ৩৭. আস-সাফফাত অতঃপর সে তাদের উপর সবলে ডান হাত দিয়ে আঘাত হানলো। ৯৩
3882 ৩৭. আস-সাফফাত তখন ঐ লোকগুলি তার দিকে ছুটে এল। ৯৪
3883 ৩৭. আস-সাফফাত সে বললঃ তোমরা নিজেরা যাদেরকে খোদাই করে নির্মাণ কর, তোমরা কি তাদেরই পূজা কর? ৯৫
3884 ৩৭. আস-সাফফাত প্রকৃত পক্ষে আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমরা যা তৈরী কর তা’ও। ৯৬
3885 ৩৭. আস-সাফফাত তারা বললঃ এর জন্য এক ইমারাত তৈরী কর, অতঃপর একে জ্বলন্ত আগুনে নিক্ষেপ কর। ৯৭
3886 ৩৭. আস-সাফফাত তারা তার বিরুদ্ধে চক্রান্তের সংকল্প করেছিল; কিন্তু আমি তাদেরকে অতিশয় হেয় করেছিলাম। ৯৮
3887 ৩৭. আস-সাফফাত এবং সে বললঃ আমি আমার রবের দিকে চললাম, তিনি অবশ্যই আমাকে সৎ পথে পরিচালিত করবেন। ৯৯
3888 ৩৭. আস-সাফফাত হে আমার রাব্ব! আমাকে এক সৎকর্মপরায়ণ সন্তান দান করুন। ১০০
3889 ৩৭. আস-সাফফাত অতঃপর আমি তাকে এক স্থির বুদ্ধিসম্পন্ন পুত্রের সুসংবাদ দিলাম। ১০১
3890 ৩৭. আস-সাফফাত অতঃপর সে যখন তার পিতার সাথে কাজ করার মত বয়সে উপনীত হল তখন ইবরাহীম বললঃ বৎস! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে আমি যবাহ করছি, এখন তোমার অভিমত কি, বল। সে বললঃ হে আমার পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন। আল্লাহ ইচ্ছা করলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন। ১০২
3891 ৩৭. আস-সাফফাত যখন তারা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইবরাহীম তার পুত্রকে কাত করে শায়িত করল – ১০৩
3892 ৩৭. আস-সাফফাত তখন আমি তাকে আহবান করে বললামঃ হে ইবরাহীম – ১০৪
3893 ৩৭. আস-সাফফাত তুমিতো স্বপ্নাদেশ সত্যিই পালন করলে। এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। ১০৫
3894 ৩৭. আস-সাফফাত নিশ্চয়ই এটা ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা। ১০৬
3895 ৩৭. আস-সাফফাত আমি তাকে মুক্ত করলাম এক মহান কুরবানীর বিনিময়ে। ১০৭
3896 ৩৭. আস-সাফফাত আমি এটা পরবর্তীদের স্মরণে রেখেছি। ১০৮
3897 ৩৭. আস-সাফফাত ইবরাহীমের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। ১০৯
3898 ৩৭. আস-সাফফাত এভাবে আমি সৎ কর্মশীলদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। ১১০
3899 ৩৭. আস-সাফফাত সে ছিল আমার মু’মিন বান্দাদের অন্যতম। ১১১
3900 ৩৭. আস-সাফফাত আমি তাকে সুসংবাদ দিয়েছিলাম ইসহাকের, সে ছিল এক নাবী, সৎকর্মশীলদের অন্যতম। ১১২
3901 ৩৭. আস-সাফফাত আমি তাকে বারাকাত দান করেছিলাম এবং ইসহাককেও, তাদের বংশধরদের মধ্যে কতক সৎকর্মপরায়ণ এবং কতক নিজেদের প্রতি স্পষ্ট অত্যাচারী। ১১৩
3902 ৩৭. আস-সাফফাত আমি অনুগ্রহ করেছিলাম মূসা ও হারূনের উপর। ১১৪
3903 ৩৭. আস-সাফফাত এবং তাদেরকে ও তাদের সম্প্রদায়কে আমি উদ্ধার করেছিলাম মহা সংকট হতে। ১১৫
3904 ৩৭. আস-সাফফাত আমি সাহায্য করেছিলাম তাদেরকে, ফলে তারা হয়েছিল বিজয়ী। ১১৬
3905 ৩৭. আস-সাফফাত আমি উভয়কে দিয়েছিলাম সুস্পষ্ট কিতাব। ১১৭
3906 ৩৭. আস-সাফফাত এবং তাদেরকে আমি পরিচালিত করেছিলাম সরল পথে। ১১৮
3907 ৩৭. আস-সাফফাত আমি তাদের উভয়কে পরবর্তীতে স্মরণে রেখেছি। ১১৯
3908 ৩৭. আস-সাফফাত মূসা ও হারূনের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। ১২০
3909 ৩৭. আস-সাফফাত এভাবে আমি সৎকর্মশীলদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। ১২১
3910 ৩৭. আস-সাফফাত তারা উভয়েই ছিল আমার মু’মিন বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত । ১২২
3911 ৩৭. আস-সাফফাত ইলিয়াসও ছিল রাসূলদের একজন। ১২৩
3912 ৩৭. আস-সাফফাত স্মরণ কর, সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমরা কি সতর্ক হবেনা? ১২৪
3913 ৩৭. আস-সাফফাত তোমরা কি বা’লকে (দেবমূর্তি) ডাকবে এবং পরিত্যাগ করবে শ্রেষ্ঠ স্রষ্টা – ১২৫
3914 ৩৭. আস-সাফফাত আল্লাহকে, যিনি রাব্ব তোমাদের এবং রাব্ব তোমাদের পূর্ব-পুরুষদের? ১২৬
3915 ৩৭. আস-সাফফাত কিন্তু তারা তাকে মিথ্যাবাদী বলেছিল, অতএব তাদেরকে অবশ্যই শাস্তির জন্য উপস্থিত করা হবে। ১২৭
3916 ৩৭. আস-সাফফাত তবে আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দাদের কথা স্বতন্ত্র। ১২৮
3917 ৩৭. আস-সাফফাত আমি এটা পরবর্তীদের স্মরণে রেখেছি। ১২৯
3918 ৩৭. আস-সাফফাত ইলিয়াসের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। ১৩০
3919 ৩৭. আস-সাফফাত এভাবে আমি সৎকর্মশীলদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। ১৩১
3920 ৩৭. আস-সাফফাত সে ছিল আমার মু’মিন বান্দাদের অন্যতম। ১৩২
3921 ৩৭. আস-সাফফাত লূত ছিল রাসূলদের একজন। ১৩৩
3922 ৩৭. আস-সাফফাত আমি তাকে ও তার পরিবারের সবাইকে উদ্ধার করেছিলাম। ১৩৪
3923 ৩৭. আস-সাফফাত এক বৃদ্ধা ব্যতীত, যে ছিল পশ্চাতে অবস্থানকারীদের অন্তর্ভুক্ত। ১৩৫
3924 ৩৭. আস-সাফফাত অতঃপর অবশিষ্টদেরকে আমি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছিলাম। ১৩৬
3925 ৩৭. আস-সাফফাত তোমরা তাদের ধ্বংসাবশেষগুলি অতিক্রম করে থাক সকালে – ১৩৭
3926 ৩৭. আস-সাফফাত এবং সন্ধ্যায়। তবুও কি তোমরা অনুধাবন করবেনা? ১৩৮
3927 ৩৭. আস-সাফফাত ইউনুসও ছিল রাসূলদের একজন। ১৩৯
3928 ৩৭. আস-সাফফাত স্মরণ কর, যখন সে পালিয়ে বোঝাই নৌযানে পৌঁছল। ১৪০
3929 ৩৭. আস-সাফফাত অতঃপর সে লটারীতে যোগদান করল এবং পরাভূত হল। ১৪১
3930 ৩৭. আস-সাফফাত পরে এক বৃহদাকার মৎস্য তাকে গিলে ফেলল; তখন সে নিজেকে ধিক্কার দিতে লাগল। ১৪২
3931 ৩৭. আস-সাফফাত সে যদি আল্লাহর মহিমা ঘোষণা না করত – ১৪৩
3932 ৩৭. আস-সাফফাত তাহলে তাকে পুনরুত্থান দিন পর্যন্ত থাকতে হত ওর উদরে। ১৪৪
3933 ৩৭. আস-সাফফাত অতঃপর তাকে আমি নিক্ষেপ করলাম এক তৃণহীন প্রান্তরে এবং সে ছিল রুগ্ন। ১৪৫
3934 ৩৭. আস-সাফফাত পরে আমি তার উপর এক লাউ গাছ উদগত করলাম। ১৪৬
3935 ৩৭. আস-সাফফাত তাকে আমি লক্ষ বা ততোধিক লোকের প্রতি প্রেরণ করেছিলাম। ১৪৭
3936 ৩৭. আস-সাফফাত এবং তারা ঈমান এনেছিল; ফলে আমি তাদেরকে কিছু কালের জন্য জীবনোপভোগ করতে দিলাম। ১৪৮
3937 ৩৭. আস-সাফফাত এখন তাদেরকে জিজ্ঞেস করঃ তোমার রবের জন্য কি রয়েছে কন্যা সন্তান এবং তাদের জন্য পুত্র সন্তান? ১৪৯
3938 ৩৭. আস-সাফফাত অথবা আমি কি মালাইকাকে নারী রূপে সৃষ্টি করেছি, আর তারা তা প্রত্যক্ষ করেছিল? ১৫০
3939 ৩৭. আস-সাফফাত দেখ তারা মনগড়া কথা বলে যে – ১৫১
3940 ৩৭. আস-সাফফাত আল্লাহ সন্তান জন্ম দিয়েছেন। তারা নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদী। ১৫২
3941 ৩৭. আস-সাফফাত তিনি কি পুত্র সন্তানের পরিবর্তে কন্যা সন্তান পছন্দ করতেন? ১৫৩
3942 ৩৭. আস-সাফফাত তোমাদের কি হয়েছে, তোমরা কি রূপ বিচার কর? ১৫৪
3943 ৩৭. আস-সাফফাত তাহলে কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবেনা? ১৫৫
3944 ৩৭. আস-সাফফাত তোমাদের কি সুস্পষ্ট দলীল প্রমাণ আছে? ১৫৬
3945 ৩৭. আস-সাফফাত তোমরা সত্যবাদী হলে তোমাদের কিতাব উপস্থিত কর। ১৫৭
3946 ৩৭. আস-সাফফাত আল্লাহ ও জিন জাতির মধ্যে তারা আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থির করেছে; অথচ জিনেরা জানে যে, তাদেরকেও উপস্থিত করা হবে শাস্তির জন্য। ১৫৮
3947 ৩৭. আস-সাফফাত তারা যা বলে তা হতে আল্লাহ পবিত্র, মহান – ১৫৯
3948 ৩৭. আস-সাফফাত আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দারা ব্যতীত। ১৬০
3949 ৩৭. আস-সাফফাত তোমরা এবং তোমরা যাদের ইবাদাত কর – ১৬১
3950 ৩৭. আস-সাফফাত তোমরা কেহই কেহকেও আল্লাহ সম্বন্ধে বিভ্রান্ত করতে পারবেনা – ১৬২
3951 ৩৭. আস-সাফফাত শুধু প্রজ্জ্বলিত আগুনে প্রবেশকারীকে ব্যতীত। ১৬৩
3952 ৩৭. আস-সাফফাত ‘‘আমাদের প্রত্যেকের জন্যই নির্ধারিত স্থান রয়েছে, ১৬৪
3953 ৩৭. আস-সাফফাত আমরাতো সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান, ১৬৫
3954 ৩৭. আস-সাফফাত এবং আমরা অবশ্যই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণাকারী। ১৬৬
3955 ৩৭. আস-সাফফাত তারাইতো বলে এসেছে – ১৬৭
3956 ৩৭. আস-সাফফাত ‘‘পূর্ববর্তীদের কিতাবের মত যদি আমাদের কোন কিতাব থাকত – ১৬৮
3957 ৩৭. আস-সাফফাত তাহলে অবশ্যই আমরা আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দা হতাম’’। ১৬৯
3958 ৩৭. আস-সাফফাত কিন্তু তারা কুরআন প্রত্যাখ্যান করল এবং শীঘ্রই তারা জানতে পারবে। ১৭০
3959 ৩৭. আস-সাফফাত আমার প্রেরিত বান্দাদের সম্পর্কে আমার এই বাক্য পূর্বেই স্থির হয়েছে যে, ১৭১
3960 ৩৭. আস-সাফফাত অবশ্যই তারা জয়ী হবে। ১৭২
3961 ৩৭. আস-সাফফাত এবং আমার বাহিনীই হবে বিজয়ী। ১৭৩
3962 ৩৭. আস-সাফফাত অতএব কিছু কালের জন্য তুমি তাদেরকে উপেক্ষা কর। ১৭৪
3963 ৩৭. আস-সাফফাত তুমি তাদেরকে পর্যবেক্ষণ কর, শীঘ্রই তারা প্রত্যক্ষ করবে। ১৭৫
3964 ৩৭. আস-সাফফাত তারা কি তাহলে আমার শাস্তি ত্বরান্বিত করতে চায়? ১৭৬
3965 ৩৭. আস-সাফফাত তাদের আঙ্গিনায় যখন শাস্তি নেমে আসবে তখন সতর্কীকৃতদের প্রভাত হবে কত মন্দ! ১৭৭
3966 ৩৭. আস-সাফফাত অতএব কিছুকালের জন্য তুমি তাদেরকে উপেক্ষা কর। ১৭৮
3967 ৩৭. আস-সাফফাত তুমি তাদেরকে পর্যবেক্ষণ কর, শীঘ্রই তারা পরিণাম প্রত্যক্ষ করবে। ১৭৯
3968 ৩৭. আস-সাফফাত তারা যা আরোপ করে তা হতে পবিত্র ও মহান তোমার রাব্ব, যিনি সকল ক্ষমতার অধিকারী। ১৮০
3969 ৩৭. আস-সাফফাত শান্তি বর্ষিত হোক রাসূলগণের প্রতি। ১৮১
3970 ৩৭. আস-সাফফাত প্রশংসা জগতসমূহের রাব্ব আল্লাহরই প্রাপ্য। ১৮২
3971 ৩৮. সোয়াদ সা‘দ, শপথ উপদেশপূর্ণ কুরআনের!
3972 ৩৮. সোয়াদ কিন্তু কাফিরেরা ঔদ্ধত্য ও বিরোধিতায় ডুবে আছে।
3973 ৩৮. সোয়াদ এদের পূর্বে আমি কত জনগোষ্ঠী ধ্বংস করেছি, তখন তারা আর্ত চিৎকার করেছিল। কিন্তু তখন পরিত্রাণের কোনই উপায় ছিলনা।
3974 ৩৮. সোয়াদ তারা বিস্ময় বোধ করছে যে, তাদের নিকট তাদেরই মধ্য হতে একজন সতর্ককারী এসেছে এবং কাফিরেরা বলেঃ এতো এক যাদুকর, মিথ্যাবাদী,
3975 ৩৮. সোয়াদ সে কি অনেক মা‘বূদের পরিবর্তে এক মা‘বূদ বানিয়ে নিয়েছে? এতো এক অত্যাশ্চর্য ব্যাপার!
3976 ৩৮. সোয়াদ তাদের প্রধানরা সরে পড়ে এই বলেঃ তোমরা চলে যাও এবং তোমাদের দেবতাগুলির পূজায় তোমরা অটল থাক। নিশ্চয়ই এ ব্যাপারটি উদ্দেশ্যমূলক।
3977 ৩৮. সোয়াদ আমরাতো অন্য ধর্মাদর্শে এরূপ কথা শুনিনি; এটা এক মনগড়া উক্তি মাত্র।
3978 ৩৮. সোয়াদ আমাদের মধ্য হতে কি তারই উপর কুরআন অবতীর্ণ হল? প্রকৃত পক্ষে তারা আমার কুরআনে সন্দিহান, তারা এখনও আমার শাস্তি আস্বাদন করেনি।
3979 ৩৮. সোয়াদ তাদের নিকট কি রয়েছে অনুগ্রহের ভান্ডার তোমার রবের, যিনি পরাক্রমশালী, মহান দাতা?
3980 ৩৮. সোয়াদ তাদের কি সার্বভৌমত্ব আছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এতদুভয়ের অন্তবর্তী সব কিছুর উপর? থাকলে তারা সিড়ি বেয়ে আরোহণ করুক। ১০
3981 ৩৮. সোয়াদ বহু দলের এই বাহিনীও সে ক্ষেত্রে অবশ্যই পরাজিত হবে। ১১
3982 ৩৮. সোয়াদ তাদের পূর্বেও রাসূলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল নূহের সম্প্রদায়, ‘আদ, বহু শিবিরের অধিপতি ফির‘আউন – ১২
3983 ৩৮. সোয়াদ আর সামূদ, লূত সম্প্রদায় ও আইকা’র অধিবাসী। তারা ছিল এক একটি বিশাল বাহিনী। ১৩
3984 ৩৮. সোয়াদ তাদের প্রত্যেকেই রাসূলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছে। ফলে তাদের ক্ষেত্রে আমার শাস্তি হয়েছে যথার্থ। ১৪
3985 ৩৮. সোয়াদ তারাতো অপেক্ষা করছে একটি মাত্র প্রচন্ড নিনাদের যাতে কোন বিরাম থাকবেনা। ১৫
3986 ৩৮. সোয়াদ তারা বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! বিচার দিনের পূর্বেই আমাদের প্রাপ্য আমাদেরকে শীঘ্র দিয়ে দাও। ১৬
3987 ৩৮. সোয়াদ তারা যা বলে তাতে তুমি ধৈর্য ধারণ কর। আর স্মরণ কর, আমার শক্তিশালী বান্দা দাঊদের কথা; সে ছিল অতিশয় আল্লাহর অভিমুখী। ১৭
3988 ৩৮. সোয়াদ আমি নিয়োজিত করেছিলাম পর্বতমালাকে, ওরা সকাল সন্ধ্যায় তার সাথে আমার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করত। ১৮
3989 ৩৮. সোয়াদ এবং সমবেত বিহংকুলকেও, সবাই ছিল তার অভিমুখী। ১৯
3990 ৩৮. সোয়াদ আমি তার রাজ্যকে সুদৃঢ় করেছিলাম এবং তাকে দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও ফাইসালাকারী বাগ্মিতা। ২০
3991 ৩৮. সোয়াদ তোমার নিকট বিবাদকারী লোকের বৃত্তান্ত পৌঁছেছে কি, যখন তারা প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে এল ইবাদাতখানায় – ২১
3992 ৩৮. সোয়াদ এবং দাউদের নিকট পৌঁছল, তখন তাদের কারণে সে ভীত হয়ে পড়ল। তারা বললঃ ভীত হবেননা, আমরা দুই বিবাদমান পক্ষ - আমরা একে অপরের উপর যুল্‌ম করেছি; অতএব আমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করুন, অবিচার করবেননা এবং আমাদেরকে সঠিক পথ নির্দেশ করুন। ২২
3993 ৩৮. সোয়াদ এ আমার ভাই - এর আছে নিরানব্বইটি দুম্বা এবং আমার আছে মাত্র একটি দুম্বা; তবুও সে বলে আমার জিম্মায় এটি দিয়ে দাও, এবং কথায় সে আমার প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন করেছে। ২৩
3994 ৩৮. সোয়াদ দাউদ বললঃ তোমার দুম্বাটিকে তার দুম্বাগুলির সাথে যুক্ত করার দাবী করে সে তোমার প্রতি যুল্‌ম করেছে। শরীকদের অনেকে একে অন্যের উপর অবিচার করে থাকে, করেনা শুধু মু’মিন ও সৎ কর্মশীল ব্যক্তিরা এবং তারা সংখ্যায় স্বল্প। দাউদ বুঝতে পারল যে, আমি তাকে পরীক্ষা করলাম। অতঃপর সে তার রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করল এবং নত হয়ে লুটিয়ে পড়ল ও তাঁর অভিমুখী হল। [সাজদাহ] ২৪
3995 ৩৮. সোয়াদ অতঃপর আমি তার ক্রটি ক্ষমা করলাম। আমার নিকট তার জন্য রয়েছে উচ্চ মর্যাদা ও শুভ পরিণাম। ২৫
3996 ৩৮. সোয়াদ হে দাউদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি, অতএব তুমি লোকদের মধ্যে সুবিচার কর এবং খেয়াল খুশীর অনুসরণ করনা, কেননা এটা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করবে। যারা আল্লাহর পথ পরিত্যাগ করে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি, কারণ তারা বিচার দিনকে বিস্মৃত হয়ে আছে। ২৬
3997 ৩৮. সোয়াদ আমি আকাশ ও পৃথিবী এবং এতদুভয়ের মধ্যস্থিত কোন কিছুই অনর্থক সৃষ্টি করিনি, যদিও কাফিরদের ধারণা তাই। সুতরাং কাফিরদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের দুর্ভোগ। ২৭
3998 ৩৮. সোয়াদ যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে এবং যারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়ায় আমি কি তাদেরকে সমগন্য করব? আমি কি মুত্তাকীদেরকে অপরাধীদের সমান গন্য করব? ২৮
3999 ৩৮. সোয়াদ এক কল্যাণময় কিতাব ইহা, আমি তোমার উপর অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ অনুধাবন করে এবং বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিরা উপদেশ গ্রহণ করে। ২৯
4000 ৩৮. সোয়াদ আমি দাঊদকে দান করলাম সুলাইমান। সে ছিল উত্তম বান্দা এবং সে ছিল অতিশয় আল্লাহ অভিমুখী। ৩০
4001 ৩৮. সোয়াদ যখন অপরাহ্নে তার সামনে ধাবমান উৎকৃষ্ট অশ্বরাজিকে উপস্থিত করা হল – ৩১
4002 ৩৮. সোয়াদ তখন সে বললঃ আমিতো আমার রবের স্মরণ হতে বিমুখ হয়ে ঐশ্বর্য প্রীতিতে মগ্ন হয়ে পড়েছি, এদিকে সূর্য অস্তমিত হয়ে গেছে। ৩২
4003 ৩৮. সোয়াদ ওগুলোকে পুনরায় আমার সামনে নিয়ে এসো। অতঃপর সে ওগুলোর পা ও গলদেশ ছেদন করতে লাগল। ৩৩
4004 ৩৮. সোয়াদ আমি সুলাইমানকে পরীক্ষা করলাম এবং তার আসনের উপর রাখলাম একটি দেহ; অতঃপর সুলাইমান আমার অভিমুখী হল। ৩৪
4005 ৩৮. সোয়াদ সে বললঃ হে আমার রাব্ব! আমাকে ক্ষমা করুন এবং এমন এক রাজ্য দান করুন যার অধিকারী আমি ছাড়া আর কেহ না হয়। আপনিতো পরম দাতা। ৩৫
4006 ৩৮. সোয়াদ তখন আমি তার অধীন করে দিলাম বায়ুকে যা তার আদেশে, সে যেখানে ইচ্ছা করত সেখানে মৃদুমন্দ গতিতে প্রবাহিত হত। ৩৬
4007 ৩৮. সোয়াদ এবং শাইতানদেরকে, যারা সবাই ছিল প্রাসাদ নির্মাণকারী ও ডুবুরী। ৩৭
4008 ৩৮. সোয়াদ এবং শৃংখলে আবদ্ধ করলাম আরও অনেককে। ৩৮
4009 ৩৮. সোয়াদ এসব আমার অনুগ্রহ, এটা তুমি অন্যকে দিতে অথবা নিজে রাখতে পার। এ জন্য তোমাকে হিসাব দিতে হবেনা। ৩৯
4010 ৩৮. সোয়াদ এবং আমার নিকট তার জন্য রয়েছে উচ্চ মর্যাদা ও শুভ পরিণাম। ৪০
4011 ৩৮. সোয়াদ স্মরণ কর আমার বান্দা আইয়ুবকে! যখন সে তার রাব্বকে আহবান করে বলেছিলঃ শাইতানতো আমাকে যন্ত্রণা ও কষ্টে ফেলেছে। ৪১
4012 ৩৮. সোয়াদ আমি তাকে বললামঃ তুমি তোমার পা দ্বারা ভূমিতে আঘাত কর, এইতো গোসলের সুশীতল পানি ও পান করার পানীয়। ৪২
4013 ৩৮. সোয়াদ আমি তাকে দিলাম তার পরিজনবর্গ ও তাদের মত আরও, আমার অনুগ্রহস্বরূপ ও বোধশক্তিসম্পন্ন লোকদের জন্য উপদেশস্বরূপ। ৪৩
4014 ৩৮. সোয়াদ আমি তাকে আদেশ করলামঃ এক মুষ্টি তৃণ তুলে নাও এবং তা দ্বারা আঘাত কর ও শপথ ভঙ্গ করনা। আমি তাকে পেলাম ধৈর্যশীল। কত উত্তম বান্দা সে! সে ছিল আমার অভিমুখী। ৪৪
4015 ৩৮. সোয়াদ স্মরণ কর, আমার বান্দা ইবরাহীম, ইসহাক ও ইয়াকূবের কথা, তারা ছিল শক্তিশালী ও সূক্ষ্মদর্শী। ৪৫
4016 ৩৮. সোয়াদ আমি তাদেরকে অধিকারী করেছিলাম এক বিশেষ গুণের, ওটা ছিল পরকালের স্মরণ। ৪৬
4017 ৩৮. সোয়াদ অবশ্যই তারা ছিল আমার মনোনীত ও উত্তম বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত। ৪৭
4018 ৩৮. সোয়াদ স্মরণ কর ইসমাঈল, আল ইয়াসাআ’ ও যুলকিফলের কথা, তারা প্রত্যেকেই ছিল সজ্জন। ৪৮
4019 ৩৮. সোয়াদ এটা এক স্মরণীয় বর্ণনা এবং মুত্তাকীদের জন্য রয়েছে উত্তম আবাস – ৪৯
4020 ৩৮. সোয়াদ চিরস্থায়ী জান্নাত, তাদের জন্য উম্মুক্ত রয়েছে যার দ্বার। ৫০
4021 ৩৮. সোয়াদ সেখানে তারা আসীন হবে হেলান দিয়ে, সেখানে তারা বহুবিধ ফলমূল ও পানীয়ের জন্য আদেশ দিবে। ৫১
4022 ৩৮. সোয়াদ আর তাদের পাশে থাকবে আনত নয়না সমবয়স্কা তরুণীরা। ৫২
4023 ৩৮. সোয়াদ এটাই হিসাব দিনে তোমাদেরকে দেয়া প্রতিশ্রুতি। ৫৩
4024 ৩৮. সোয়াদ এটাই আমার দেয়া রিয্ক যা নিঃশেষ হবেনা। ৫৪
4025 ৩৮. সোয়াদ এটা এরূপই! আর সীমালংঘনকারীদের জন্য রয়েছে নিকৃষ্টতম ঠিকানা – ৫৫
4026 ৩৮. সোয়াদ জাহান্নাম, সেখানে তারা প্রবেশ করবে, কত নিকৃষ্ট বিশ্রামস্থল। ৫৬
4027 ৩৮. সোয়াদ এটা সীমালংঘনকারীদের জন্য। সুতরাং তারা আস্বাদন করুক ফুটন্ত পানি ও পুঁজ। ৫৭
4028 ৩৮. সোয়াদ আরও আছে এ রূপ বিভিন্ন ধরণের শাস্তি। ৫৮
4029 ৩৮. সোয়াদ এইতো এক বাহিনী, তোমাদের সাথে প্রবেশ করেছে। তাদের জন্য নেই অভিনন্দন, তারাতো জাহান্নামে জ্বলবে। ৫৯
4030 ৩৮. সোয়াদ অনুসারীরা বলবেঃ বরং তোমরাও, তোমাদের জন্যও তো অভিনন্দন নেই। তোমরাইতো পূর্বে ওটা আমাদের জন্য ব্যবস্থা করেছ, কত নিকৃষ্ট এই আবাসস্থল! ৬০
4031 ৩৮. সোয়াদ তারা বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! যে এটা আমাদের সম্মুখীন করেছে জাহান্নামে তার শাস্তি আপনি দ্বিগুণ বর্ধিত করুন! ৬১
4032 ৩৮. সোয়াদ তারা আরও বলবেঃ আমাদের কি হল যে, আমরা যে সব লোককে মন্দ বলে গণ্য করতাম তাদেরকে দেখতে পাচ্ছিনা? ৬২
4033 ৩৮. সোয়াদ তাহলে কি আমরা তাদেরকে অহেতুক ঠাট্টা বিদ্রুপের পাত্র মনে করতাম, নাকি তাদের ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টি বিভ্রম ঘটেছে? ৬৩
4034 ৩৮. সোয়াদ এটা নিশ্চিত সত্য জাহান্নামীদের এই বাদ প্রতিবাদ। ৬৪
4035 ৩৮. সোয়াদ বলঃ আমিতো একজন সতর্ককারী মাত্র এবং আল্লাহ ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই যিনি এক, পরাক্রমশালী – ৬৫
4036 ৩৮. সোয়াদ যিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী এবং এগুলির মধ্যস্থিত সবকিছুর রাব্ব, যিনি পরাক্রমশালী, মহা ক্ষমাশীল। ৬৬
4037 ৩৮. সোয়াদ বলঃ এটা এক মহা সংবাদ – ৬৭
4038 ৩৮. সোয়াদ যা হতে তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ। ৬৮
4039 ৩৮. সোয়াদ উর্ধ্বলোকে তাদের বাদানুবাদ সম্পর্কে আমার কোন জ্ঞান ছিলনা। ৬৯
4040 ৩৮. সোয়াদ আমার নিকটতো এই অহী এসেছে যে, আমি একজন স্পষ্ট সতর্ককারী। ৭০
4041 ৩৮. সোয়াদ স্মরণ কর, তোমার রাব্ব মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে বলেছিলেনঃ আমি মানুষ সৃষ্টি করছি কর্দম হতে। ৭১
4042 ৩৮. সোয়াদ যখন আমি ওকে সুষম করব এবং ওতে আমার সৃষ্টি রূহ সঞ্চার করব তখন তোমরা ওর প্রতি সাজদাহবনত হও। ৭২
4043 ৩৮. সোয়াদ তখন মালাইকা/ফেরেশতারা সবাই সাজদাহবনত হল – ৭৩
4044 ৩৮. সোয়াদ শুধু ইবলীস ব্যতীত; সে অহংকার করল এবং কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হল। ৭৪
4045 ৩৮. সোয়াদ তিনি বললেনঃ হে ইবলীস! আমি যাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছি তার প্রতি সাজদাহবনত হতে তোকে কিসে বাধা দিল? তুই কি ঔদ্ধত্য প্রকাশ করলি, নাকি তুই উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন? ৭৫
4046 ৩৮. সোয়াদ সে বললঃ আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন হতে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি হতে। ৭৬
4047 ৩৮. সোয়াদ তিনি বললেনঃ তুই এখান হতে বের হয়ে যা, নিশ্চয়ই তুই বিতাড়িত। ৭৭
4048 ৩৮. সোয়াদ এবং তোর উপর আমার লা’নত স্থায়ী হবে, কর্মফল দিন পর্যন্ত। ৭৮
4049 ৩৮. সোয়াদ সে বললঃ হে আমার রাব্ব! আপনি আমাকে অবকাশ দিন পুনরুত্থান দিন পর্যন্ত। ৭৯
4050 ৩৮. সোয়াদ তিনি বললেনঃ তুই অবকাশ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হলি – ৮০
4051 ৩৮. সোয়াদ অবধারিত সময় উপস্থিত হওয়ার দিন পর্যন্ত। ৮১
4052 ৩৮. সোয়াদ সে বললঃ আপনার ক্ষমতার শপথ! আমি তাদের সবাইকে পথভ্রষ্ট করব। ৮২
4053 ৩৮. সোয়াদ তবে তাদের মধ্যে আপনার একনিষ্ঠ বান্দাদেরকে নয়। ৮৩
4054 ৩৮. সোয়াদ তিনি বললেনঃ তবে এটাই সত্য, আর আমি সত্যই বলি – ৮৪
4055 ৩৮. সোয়াদ তোর দ্বারা ও তোর অনুসারীদের দ্বারা আমি জাহান্নাম পূর্ণ করবই। ৮৫
4056 ৩৮. সোয়াদ বলঃ আমি এর জন্য তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাইনা এবং যারা মিথ্যা দাবী করে আমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নই। ৮৬
4057 ৩৮. সোয়াদ ইহাতো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ মাত্র। ৮৭
4058 ৩৮. সোয়াদ এর সংবাদ তোমরা অবশ্যই জানবে, কিছুকাল পরে। ৮৮
4059 ৩৯. আয-যুমার এই কিতাব অবতীর্ণ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহর নিকট হতে।
4060 ৩৯. আয-যুমার আমি তোমার নিকট এই কিতাব সত্যসহ অবতীর্ণ করেছি; সুতরাং আল্লাহর ইবাদাত কর তাঁর আনুগত্যে বিশুদ্ধ চিত্ত হয়ে।
4061 ৩৯. আয-যুমার জেনে রেখ, অবিমিশ্র আনুগত্য আল্লাহরই প্রাপ্য। যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্যকে অভিভাবক রূপে গ্রহণ করে তারা বলেঃ আমরা তো এদের পূজা এ জন্যই করি যে, এরা আমাদেরকে আল্লাহর সান্নিধ্য এনে দিবে। তারা যে বিষয়ে নিজেদের মধ্যে মতভেদ করছে আল্লাহ তার ফাইসালা করে দিবেন। যে মিথ্যাবাদী ও কাফির, আল্লাহ তাকে সৎ পথে পরিচালিত করেন না।
4062 ৩৯. আয-যুমার আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করতে ইচ্ছা করলে তিনি তাঁর সৃষ্টির মধ্যে যাকে ইচ্ছা মনোনীত করতে পারতেন। পবিত্র ও মহান তিনি। তিনিই আল্লাহ এক, প্রবল পরাক্রমশালী।
4063 ৩৯. আয-যুমার তিনি যথাযথভাবে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। তিনি রাত দ্বারা দিনকে আচ্ছাদিত করেন এবং রাতকে আচ্ছাদিত করেন দিন দ্বারা। সূর্য ও চন্দ্রকে তিনি করেছেন নিয়মাধীন। প্রত্যেকেই পরিক্রমন করে এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত। জেনে রেখ, তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।
4064 ৩৯. আয-যুমার তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন একই ব্যক্তি হতে। অতঃপর তিনি তা হতে তার সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন। তিনি তোমাদের দিয়েছেন আট প্রকার গৃহপালিত পশু। তিনি তোমাদের মাতৃগর্ভের ত্রিবিধ অন্ধকারে পর্যায়ক্রমে সৃষ্টি করেছেন। তিনিই আল্লাহ! তোমাদের রাব্ব। সার্বভৌমত্ব তাঁরই, তিনি ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই। অতএব তোমরা মুখ ফিরিয়ে কোথায় চলেছ?
4065 ৩৯. আয-যুমার তোমরা অকৃতজ্ঞ হলে আল্লাহ তোমাদের মুখাপেক্ষী নন, তিনি তাঁর বান্দাদের অকৃতজ্ঞতা পছন্দ করেননা। যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও তাহলে তিনি তোমাদের জন্য এটাই পছন্দ করেন। একের বোঝা অন্যে বহন করবেনা। অতঃপর তোমাদের রবের নিকট তোমাদের প্রত্যাবর্তন এবং তোমরা যা করতে তিনি তোমাদেরকে তা অবগত করাবেন। অন্তরে যা আছে তা তিনি সম্যক অবগত।
4066 ৩৯. আয-যুমার মানুষকে যখন দুঃখ দৈন্য স্পর্শ করে তখন সে অনুতপ্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তার রাব্বকে ডাকে। কিন্তু পরে যখন তিনি তার প্রতি অনুগ্রহ করেন তখন সে বিস্মৃত হয়ে যায় পূর্বে যাকে সে ডেকেছিল তাঁকে এবং সে আল্লাহর সমকক্ষ দাঁড় করায়, অপরকে তাঁর পথ হতে বিভ্রান্ত করার জন্য। বলঃ কুফরীর জীবন অবস্থায় তুমি কিছু কাল উপভোগ করে নাও। বস্তুতঃ তুমিতো জাহান্নামেরই অধিবাসী।
4067 ৩৯. আয-যুমার যে ব্যক্তি রাতের বিভিন্ন সময়ে সাজদাহবনত হয়ে ও দাঁড়িয়ে আনুগত্য প্রকাশ করে, আখিরাতকে ভয় করে এবং তার রবের অনুগ্রহ প্রত্যাশা করে সে কি তার সমান যে তা করেনা? বলঃ যারা জানে এবং যারা জানেনা তারা কি সমান? বোধশক্তি সম্পন্ন লোকেরাই শুধু উপদেশ গ্রহণ করে।
4068 ৩৯. আয-যুমার বলঃ (আমার এই কথা) হে আমার মু’মিন বান্দারা! তোমরা তোমাদের রাব্বকে ভয় কর। যারা এই দুনিয়ায় কল্যাণকর কাজ করে তাদের জন্য আছে কল্যাণ। প্রশস্ত আল্লাহর পৃথিবী, ধৈর্যশীলদেরকে অপরিমিত পুরষ্কার দেয়া হবে। ১০
4069 ৩৯. আয-যুমার বলঃ আমি আদিষ্ট হয়েছি আল্লাহর আনুগত্যে একনিষ্ঠ হয়ে তাঁর ইবাদাত করতে। ১১
4070 ৩৯. আয-যুমার আর আদিষ্ট হয়েছি, আমি যেন আত্মসমর্পনকারীদের অগ্রণী হই। ১২
4071 ৩৯. আয-যুমার বলঃ আমি যদি আমার রবের অবাধ্য হই তাহলে আমি ভয় করি মহা দিনের শাস্তির। ১৩
4072 ৩৯. আয-যুমার قُلِ اللّٰهَ اَعۡبُدُ مُخۡلِصًا لَّهٗ دِیۡنِیۡ ১৪
4073 ৩৯. আয-যুমার অতএব তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার ইচ্ছা তার ইবাদাত কর। বলঃ কিয়ামাত দিবসে ক্ষতিগ্রস্ত তারাই যারা নিজেদের ও নিজেদের পরিবারবর্গের ক্ষতিসাধন করে। জেনে রেখ, এটাই সুস্পষ্ট ক্ষতি। ১৫
4074 ৩৯. আয-যুমার তাদের জন্য থাকবে তাদের উর্ধ্বদিকে আগুনের আচ্ছাদন এবং নিম্নদিকেও আচ্ছাদন। এ দ্বারা আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে সতর্ক করেন। হে আমার বান্দারা! তোমরা আমাকে ভয় কর। ১৬
4075 ৩৯. আয-যুমার যারা তাগুতের পূজা হতে দূরে থাকে এবং আল্লাহর অভিমুখী হয় তাদের জন্য আছে সুসংবাদ। অতএব সুসংবাদ দাও আমার বান্দাদেরকে। ১৭
4076 ৩৯. আয-যুমার যারা মনোযোগ সহকারে কথা শুনে এবং ওর মধ্যে যা উত্তম তা গ্রহণ করে তাদেরকে আল্লাহ সৎ পথে পরিচালিত করেন এবং তারাই বোধশক্তি সম্পন্ন। ১৮
4077 ৩৯. আয-যুমার যার উপর দন্ডাদেশ অবধারিত হয়েছে, তুমি কি রক্ষা করতে পারবে সেই ব্যক্তিকে যে জাহান্নামে আছে? ১৯
4078 ৩৯. আয-যুমার তবে যারা তাদের রাব্বকে ভয় করে তাদের জন্য আছে বহু প্রাসাদ, যার উপর নির্মিত আরও প্রাসাদ, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আল্লাহ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেননা। ২০
4079 ৩৯. আয-যুমার তুমি কি দেখনা যে, আল্লাহ আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন; অতঃপর ভূমিতে নির্ঝর রূপে প্রবাহিত করেন এবং তদ্বারা বিবিধ বর্ণের ফসল উৎপন্ন করেন, অতঃপর ওটা শুকিয়ে যায় এবং তোমরা ওটা পীত বর্ণ দেখতে পাও, অবশেষে তিনি ওটা খড়কুটায় পরিণত করেন? এতে অবশ্যই উপদেশ রয়েছে বোধশক্তিসম্পন্নদের জন্য। ২১
4080 ৩৯. আয-যুমার আল্লাহ ইসলামের জন্য যার বক্ষ উন্মুক্ত করে দিয়েছেন এবং যে তার রবের আলোকে আছে সে কি তার সমান (যে এরূপ নয়); দুর্ভোগ সেই কঠোর হৃদয় ব্যক্তিদের জন্য যারা আল্লাহর স্মরণে পরান্মুখ! তারা স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে। ২২
4081 ৩৯. আয-যুমার আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন উত্তম বাণী সম্বলিত কিতাব যা সুসামঞ্জস এবং যা পুনঃ পুনঃ আবৃত্তি করা হয়। এতে যারা তাদের রাব্বকে ভয় করে তাদের গাত্র রোমাঞ্চিত হয়, অতঃপর তাদের দেহ-মন প্রশান্ত হয়ে আল্লাহর স্মরণে ঝুঁকে পড়ে; এটাই আল্লাহর পথনির্দেশ, তিনি যাকে ইচ্ছা এটা দ্বারা পথ প্রদর্শন করেন। আল্লাহ যাকে বিভ্রান্ত করেন তার কোন পথ প্রদর্শক নেই। ২৩
4082 ৩৯. আয-যুমার যে ব্যক্তি কিয়ামাত দিবসে তার মুখমন্ডল দ্বারা কঠিন শাস্তি ঠেকাতে চাবে সে কি তার মত যে নিরাপদ? যালিমদের বলা হবে, তোমরা যা অর্জন করতে তার শাস্তি আস্বাদন কর। ২৪
4083 ৩৯. আয-যুমার তাদের পূর্ববর্তীরাও মিথ্যা আরোপ করেছিল, ফলে শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করল তাদের অজ্ঞাতসারে। ২৫
4084 ৩৯. আয-যুমার ফলে আল্লাহ তাদেরকে পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনা ভোগ করালেন এবং আখিরাতের শাস্তিতো কঠিনতর, যদি তারা জানতো! ২৬
4085 ৩৯. আয-যুমার আমি এই কুরআনে মানুষের জন্য সর্ব প্রকার দৃষ্টান্ত উপস্থিত করেছি যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। ২৭
4086 ৩৯. আয-যুমার আরাবী ভাষার এই কুরআন বক্রতামুক্ত, যাতে মানুষ সাবধানতা অবলম্বন করে। ২৮
4087 ৩৯. আয-যুমার আল্লাহ একটি দৃষ্টান্ত পেশ করছেনঃ এক ব্যক্তির মালিক অনেক যারা পরস্পর বিরুদ্ধ ভাবাপন্ন এবং এক ব্যক্তির মালিক শুধু একজন; এই দুইয়ের অবস্থা কি সমান? প্রশংসা আল্লাহরই প্রাপ্য; কিন্তু তাদের অধিকাংশই এটা জানেনা। ২৯
4088 ৩৯. আয-যুমার তুমিতো মরণশীল এবং তারাও মরণশীল। ৩০
4089 ৩৯. আয-যুমার অতঃপর কিয়ামাত দিবসে তোমরা পরস্পর তোমাদের রবের সামনে বাকবিতন্ডা করবে। ৩১
4090 ৩৯. আয-যুমার যে ব্যক্তি আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা বলে এবং সত্য আসার পর তা প্রত্যাখ্যান করে সে অপেক্ষা যালিম আর কে? কাফিরদের আবাসস্থল কি জাহান্নাম নয়? ৩২
4091 ৩৯. আয-যুমার যারা সত্য এনেছে এবং যারা সত্যকে সত্য বলে মেনেছে তারাইতো মুত্তাকী। ৩৩
4092 ৩৯. আয-যুমার তাদের বাঞ্ছিত সব কিছুই আছে তাদের রবের নিকট। এটাই সৎকর্মশীলদের পুরস্কার। ৩৪
4093 ৩৯. আয-যুমার কারণ তারা যে সব মন্দ কাজ করেছিল আল্লাহ তা ক্ষমা করে দিবেন এবং তাদেরকে তাদের সৎ কাজের জন্য পুরস্কৃত করবেন। ৩৫
4094 ৩৯. আয-যুমার আল্লাহ কি তাঁর বান্দার জন্য যথেষ্ট নন? অথচ তারা তোমাদেরকে আল্লাহর পরিবর্তে অপরের ভয় দেখায়। আল্লাহ যাকে বিভ্রান্ত করেন তার জন্য কোন পথ প্রদর্শক নেই। ৩৬
4095 ৩৯. আয-যুমার এবং যাকে আল্লাহ হিদায়াত দান করেন তার জন্য কোন পথভ্রষ্টকারী নেই, আল্লাহ কি পরাক্রমশালী দন্ডবিধায়ক নন? ৩৭
4096 ৩৯. আয-যুমার তুমি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস করঃ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী কে সৃষ্টি করেছেন? তারা অবশ্যই বলবেঃ আল্লাহ! বলঃ তোমরা কি ভেবে দেখেছ যে, আল্লাহ আমার অনিষ্ট চাইলে তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ডাক তারা কি সেই অনিষ্টতা দূর করতে পারবে? অথবা তিনি আমার প্রতি অনুগ্রহ করতে চাইলে তারা কি সেই অনুগ্রহ রোধ করতে পারবে? বলঃ আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। নির্ভরকারীরা আল্লাহর উপর নির্ভর করে। ৩৮
4097 ৩৯. আয-যুমার বলঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা স্ব স্ব অবস্থায় কাজ করতে থাক, আমিও আমার কাজ করছি। শীঘ্রই জানতে পারবে – ৩৯
4098 ৩৯. আয-যুমার কার উপর আসবে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি এবং কার উপর আপতিত হবে স্থায়ী শাস্তি। ৪০
4099 ৩৯. আয-যুমার আমি তোমার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করেছি মানুষের কল্যাণের জন্য। অতঃপর যে সৎ পথ অবলম্বন করে সে তা করে নিজেরই কল্যাণের জন্য এবং যে বিপথগামী হয় সেতো বিপথগামী হয় নিজেরই ধ্বংসের জন্য এবং তুমি তাদের তত্ত্বাবধায়ক নও। ৪১
4100 ৩৯. আয-যুমার আল্লাহই প্রাণ হরণ করেন জীবসমূহের, তাদের মৃত্যুর সময় এবং যাদের মৃত্যু আসেনি তাদের প্রাণও নিদ্রার সময়। অতঃপর যার জন্য মৃত্যুর সিদ্ধান্ত করেন তার প্রাণ তিনি রেখে দেন এবং অপরগুলি ফিরিয়ে দেন, এক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য। ৪২
4101 ৩৯. আয-যুমার তাহলে কি তারা আল্লাহ ছাড়া অপরকে সুপারিশ সাব্যস্ত করেছে? বলঃ তাদের কোন ক্ষমতা না থাকলেও এবং তারা না বুঝলেও? ৪৩
4102 ৩৯. আয-যুমার বলঃ সুপারিশ ইখতিয়ারে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই। অতঃপর তাঁরই নিকট তোমরা প্রত্যানীত হবে। ৪৪
4103 ৩৯. আয-যুমার একক আল্লাহর কথা বলা হলে, যারা আখিরাতে বিশ্বাস করেনা তাদের অন্তর বিতৃষ্ণায় সংকুচিত হয় এবং আল্লাহর পরিবর্তে তাদের দেবতাগুলির উল্লেখ করা হলে তারা আনন্দে উল্লসিত হয়। ৪৫
4104 ৩৯. আয-যুমার বলঃ হে আল্লাহ! আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা! দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা! আপনার বান্দারা যে বিষয়ে মতবিরোধ করে, আপনি তাদের মধ্যে ওর ফাইসালা করে দিবেন। ৪৬
4105 ৩৯. আয-যুমার যারা যুল্‌ম করেছে, যদি তাদের দুনিয়ায় যা আছে তা সম্পূর্ণ এবং এর সম পরিমাণ সম্পদও থাকে তাহলে কিয়ামাত দিবসে কঠিন শাস্তি হতে মুক্তিপণ স্বরূপ সকল বিষয় সম্পত্তি তারা দিয়ে দিবে এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট হতে এমন কিছু প্রকাশিত হবে যা তারা কল্পনাও করেনি। ৪৭
4106 ৩৯. আয-যুমার তাদের কৃতকর্মের মন্দ ফল তাদের নিকট প্রকাশ হয়ে পড়বে এবং তারা যা নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করত তা তাদেরকে পরিবেষ্টন করবে। ৪৮
4107 ৩৯. আয-যুমার মানুষকে দুঃখ দৈন্য স্পর্শ করলে সে আমাকে আহবান করে। অতঃপর যখন আমি তার প্রতি অনুগ্রহ করি তখন সে বলেঃ আমিতো এটা লাভ করেছি আমার জ্ঞানের মাধ্যমে। বস্তুতঃ এটা এক পরীক্ষা, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বুঝেনা। ৪৯
4108 ৩৯. আয-যুমার তাদের পূর্ববর্তীরাও এটাই বলত, কিন্তু তাদের কৃতকর্ম তাদের কোন কাজে আসেনি। ৫০
4109 ৩৯. আয-যুমার তাদের কর্মের মন্দ ফল তাদের উপর আপতিত হয়েছে, তাদের মধ্যে যারা যুল্‌ম করে তাদের উপরও তাদের কর্মের মন্দ ফল আপতিত হবে এবং তারা ব্যর্থও করতে পারবেনা। ৫১
4110 ৩৯. আয-যুমার তারা কি জানেনা, আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা তার রিয্ক বৃদ্ধি করেন অথবা হ্রাস করেন। এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্য। ৫২
4111 ৩৯. আয-যুমার বলঃ (আমার এ কথা) হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ - আল্লাহর অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়োনা; আল্লাহ সমুদয় পাপ ক্ষমা করে দিবেন। তিনিতো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ৫৩
4112 ৩৯. আয-যুমার তোমরা তোমাদের রবের অভিমুখী হও এবং তাঁর নিকট আত্মসমর্পণ কর তোমাদের নিকট শাস্তি আসার পূর্বে, অতঃপর তোমাদেরকে সাহায্য করা হবেনা। ৫৪
4113 ৩৯. আয-যুমার অনুসরণ কর তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের নিকট হতে উত্তম যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তার, তোমাদের উপর অতর্কিতভাবে তোমাদের অজ্ঞাতে শাস্তি আসার পূর্বে – ৫৫
4114 ৩৯. আয-যুমার যাতে কেহকেও বলতে না হয়ঃ হায়! আল্লাহর প্রতি আমার কর্তব্যে আমি যে শৈথিল্য করেছি তার জন্য আফসোস! আমিতো ঠাট্টাকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। ৫৬
4115 ৩৯. আয-যুমার অথবা কেহ যেন না বলেঃ আল্লাহ আমাকে পথ প্রদর্শন করলে আমিতো অবশ্যই মুত্তাকীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। ৫৭
4116 ৩৯. আয-যুমার অথবা শাস্তি প্রত্যক্ষ করলে যেন কেহকে বলতে না হয়ঃ আহা! যদি একবার পৃথিবীতে আমার প্রত্যাবর্তন ঘটত তাহলে আমি সৎকর্মশীল হতাম। ৫৮
4117 ৩৯. আয-যুমার প্রকৃত ব্যাপারতো এই যে, আমার নিদর্শন তোমার নিকট এসেছিল, কিন্তু তুমি এগুলিকে মিথ্যা বলেছিলে এবং অহংকার করেছিলে; আর তুমিতো ছিলে কাফিরদের একজন। ৫৯
4118 ৩৯. আয-যুমার যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, তুমি কিয়ামাত দিবসে তাদের মুখমন্ডল কালো দেখবে। ঔদ্ধত্যদের আবাসস্থল কি জাহান্নাম নয়? ৬০
4119 ৩৯. আয-যুমার আল্লাহ মুত্তাকীদের উদ্ধার করবেন তাদের সাফল্যসহ; তাদেরকে অমঙ্গল স্পর্শ করবেনা এবং তারা দুঃখও পাবেনা। ৬১
4120 ৩৯. আয-যুমার আল্লাহ সব কিছুর স্রষ্টা এবং তিনি সব কিছুর কর্মবিধায়ক। ৬২
4121 ৩৯. আয-যুমার আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর চাবি তাঁরই নিকট। যারা আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত। ৬৩
4122 ৩৯. আয-যুমার বলঃ হে অজ্ঞ ব্যক্তিরা! তোমরা কি আমাকে আল্লাহ ব্যতীত অন্যের ইবাদাত করতে বলছ? ৬৪
4123 ৩৯. আয-যুমার তোমার প্রতি, তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবশ্যই অহী হয়েছে; তুমি আল্লাহর শরীক স্থির করলে তোমার কাজ নিস্ফল হবে এবং তুমি হবে ক্ষতিগ্রস্ত। ৬৫
4124 ৩৯. আয-যুমার অতএব তুমি আল্লাহরই ইবাদাত কর এবং কৃতজ্ঞ হও। ৬৬
4125 ৩৯. আয-যুমার তারা আল্লাহর যথোচিত সম্মান করেনা। কিয়ামাত দিবসে সমস্ত পৃথিবী থাকবে তাঁর হাতের মুষ্টিতে এবং আকাশমন্ডলী ভাঁজ করা থাকবে তাঁর ডান হাতে। পবিত্র ও মহান তিনি, তারা যাকে শরীক করে তিনি তার উর্ধ্বে। ৬৭
4126 ৩৯. আয-যুমার এবং শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, ফলে যাদেরকে আল্লাহ ইচ্ছা করবেন তারা ব্যতীত আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সবাই মুর্ছিত হয়ে পড়বে। অতঃপর আবার শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা দন্ডায়মান হয়ে তাকাতে থাকবে। ৬৮
4127 ৩৯. আয-যুমার যমীন ওর রবের জ্যোতিতে উদ্ভাসিত হবে, ‘আমলনামা পেশ করা হবে এবং নাবীদেরকে ও সাক্ষীদেরকে হাযির করা হবে এবং সকলের মধ্যে ন্যায় বিচার করা হবে ও তাদের প্রতি যুলম করা হবেনা। ৬৯
4128 ৩৯. আয-যুমার প্রত্যেকের কৃতকর্মের পূর্ণ প্রতিফল দেয়া হবে। তারা যা করে সেই সম্পর্কে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত। ৭০
4129 ৩৯. আয-যুমার কাফিরদেরকে জাহান্নামের দিকে দলে দলে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। যখন তারা সেখানে উপস্থিত হবে তখন ওর প্রবেশ দ্বারগুলি খুলে দেয়া হবে এবং জাহান্নামের রক্ষীরা তাদেরকে বলবেঃ তোমাদের নিকট কি তোমাদের মধ্য হতে রাসূল আসেনি যারা তোমাদের নিকট তোমাদের রবের আয়াত আবৃত্তি করত এবং এই দিনের সাক্ষাৎ সম্বন্ধে সতর্ক করত? তারা বলবেঃ অবশ্যই এসেছিল। বস্তুতঃ কাফিরদের প্রতি শাস্তির কথা বাস্তবায়িত হয়েছে। ৭১
4130 ৩৯. আয-যুমার তাদেরকে বলা হবেঃ জাহান্নামের দ্বারসমূহে প্রবেশ কর, তাতে স্থায়ীভাবে অবস্থিতির জন্য। কত নিকৃষ্ট উদ্ধতদের আবাসস্থল! ৭২
4131 ৩৯. আয-যুমার যারা তাদের রাব্বকে ভয় করত তাদেরকে দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। যখন তারা সেখানে উপস্থিত হবে তখন ওর দ্বারসমূহ খুলে দেয়া হবে এবং জান্নাতের রক্ষীরা তাদেরকে বলবেঃ তোমাদের প্রতি সালাম, তোমরা সুখী হও এবং জান্নাতে প্রবেশ কর স্থায়ীভাবে অবস্থানের জন্য। ৭৩
4132 ৩৯. আয-যুমার তারা প্রবেশ করে বলবেঃ প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমাদের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছেন এবং আমাদের অধিকারী করেছেন এই ভূমির; আমরা জান্নাতে যেখানে ইচ্ছা বসবাস করব। সদাচারীদের পুরস্কার কত উত্তম! ৭৪
4133 ৩৯. আয-যুমার এবং তুমি মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে দেখতে পাবে যে, তারা আরশের চতুস্পার্শ্বে ঘিরে তাদের রবের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছে। আর তাদের বিচার করা হবে ন্যায়ের সাথে। বলা হবেঃ প্রশংসা জগতসমূহের রাব্ব আল্লাহর প্রাপ্য। ৭৫
4134 ৪০. গাফির হা- মীম।
4135 ৪০. গাফির এই কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর নিকট হতে।
4136 ৪০. গাফির যিনি পাপ ক্ষমা করেন এবং তাওবাহ কবূল করেন, যিনি শাস্তি দানে কঠোর, শক্তিশালী। তিনি ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই। প্রত্যাবর্তন তাঁরই নিকট।
4137 ৪০. গাফির শুধু কাফিরেরাই আল্লাহর নিদর্শন সম্বন্ধে বিতর্ক করে; সুতরাং দেশে দেশে তাদের অবাধ বিচরণ যেন তোমাদের বিভ্রান্ত না করে।
4138 ৪০. গাফির তাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায় এবং তাদের পরে অন্যান্য দলও মিথ্যা আরোপ করেছিল। প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ রাসূলকে আবদ্ধ করার জন্য অভিসন্ধি করেছিল এবং তারা অসার তর্কে লিপ্ত হয়েছিল, সত্যকে ব্যর্থ করে দেয়ার জন্য। ফলে আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম এবং কত কঠোর ছিল আমার শাস্তি!
4139 ৪০. গাফির এভাবে কাফিরদের ক্ষেত্রে সত্য হল তোমার রবের বাণী - এরা জাহান্নামী।
4140 ৪০. গাফির যারা আরশ ধারণ করে আছে এবং যারা এর চতুস্পার্শ্ব ঘিরে আছে তারা তাদের রবের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে প্রশংসার সাথে এবং তাতে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং মু’মিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! আপনার দয়া ও জ্ঞান সর্বব্যাপী, অতএব যারা তাওবাহ করে ও আপনার পথ অবলম্বন করে, আপনি তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা করুন।
4141 ৪০. গাফির হে আমাদের রাব্ব! আপনি তাদেরকে দাখিল করুন স্থায়ী জান্নাতে, যার প্রতিশ্রুতি আপনি তাদেরকে দিয়েছেন এবং তাদের মাতা-পিতা, পতি-পত্নী ও সন্তান-সন্ততির মধ্যে যারা সৎ কাজ করেছে তাদেরকেও। আপনিতো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
4142 ৪০. গাফির এবং আপনি তাদেরকে পাপ হতে রক্ষা করুন, সেই দিন আপনি যাকে শাস্তি হতে রক্ষা করবেন তাকেতো অনুগ্রহই করবেন, এটাইতো মহাসাফল্য।
4143 ৪০. গাফির কাফিরদেরকে উচ্চ কন্ঠে বলা হবেঃ তোমাদের নিজেদের প্রতি তোমাদের ক্ষোভ অপেক্ষা আল্লাহর অপ্রসন্নতা ছিল অধিক, যখন তোমাদের ঈমানের প্রতি আহবান করা হয়েছিল, আর তোমরা তা অস্বীকার করেছিলে। ১০
4144 ৪০. গাফির তারা বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! আপনি আমাদেরকে প্রাণহীন অবস্থায় দু’বার রেখেছেন এবং দু’বার আমাদেরকে প্রাণ দিয়েছেন। আমরা আমাদের অপরাধ স্বীকার করছি; এখন নিস্ক্রমণের কোন পথ মিলবে কি? ১১
4145 ৪০. গাফির তোমাদের এই পার্থিব শাস্তি এ জন্য যে, যখন এক আল্লাহকে ডাকা হত তখন তোমরা তাঁকে অস্বীকার করতে এবং আল্লাহর শরীক স্থির করা হলে তোমরা তা বিশ্বাস করতে। বস্তুতঃ মহান আল্লাহরই সমস্ত কর্তৃত্ব। ১২
4146 ৪০. গাফির তিনিই তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখান এবং আকাশ হতে প্রেরণ করেন তোমাদের জন্য রিযক। আল্লাহর অভিমুখী ব্যক্তিই উপদেশ গ্রহণ করে থাকে। ১৩
4147 ৪০. গাফির সুতরাং আল্লাহকে ডাক তাঁর আনুগত্যে একনিষ্ঠ হয়ে, যদিও কাফিরেরা এটা অপছন্দ করে। ১৪
4148 ৪০. গাফির তিনি সুউচ্চ মর্যাদার অধিকারী, আরশের অধিপতি, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা অহী প্রেরণ করেন স্বীয় আদেশসহ যাতে সে সতর্ক করতে পারে কিয়ামাতের দিন সম্পর্কে। ১৫
4149 ৪০. গাফির যেদিন মানুষ বের হয়ে পড়বে। সেদিন আল্লাহর নিকট তাদের কিছুই গোপন থাকবেনা। ঐ দিন কর্তৃত্ব কার? এক, পরাক্রমশালী আল্লাহরই। ১৬
4150 ৪০. গাফির এদিন প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের ফল দেয়া হবে; কারও প্রতি যুলম করা হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ হিসাব গ্রহণে তৎপর। ১৭
4151 ৪০. গাফির তাদেরকে সতর্ক করে দাও আসন্ন দিন সম্পর্কে, যখন দুঃখ কষ্টে তাদের প্রাণ কন্ঠাগত হবে। যালিমদের জন্য কোন অন্তরঙ্গ বন্ধু নেই, যার সুপারিশ গ্রাহ্য হবে এমন কোন সুপারিশকারীও নেই। ১৮
4152 ৪০. গাফির চক্ষুর অপব্যবহার ও অন্তরে যা গোপন আছে সেই সম্বন্ধে তিনি অবহিত। ১৯
4153 ৪০. গাফির আল্লাহ বিচার করেন সঠিকভাবে; আল্লাহর পরিবর্তে তারা যাদেরকে ডাকে তারা বিচার করতে অক্ষম। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। ২০
4154 ৪০. গাফির তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনা? তাহলে দেখতে পেত তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কি হয়েছিল? পৃথিবীতে তারা ছিল এদের অপেক্ষা শক্তিতে এবং কীর্তিতে প্রবলতর। অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিলেন তাদের অপরাধের জন্য এবং আল্লাহর শাস্তি হতে তাদেরকে রক্ষা করার কেহ ছিলনা। ২১
4155 ৪০. গাফির এটা এ জন্য যে, তাদের নিকট তাদের রাসূলগণ নিদর্শনসহ এলে তারা তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। ফলে আল্লাহ তাদেরকে শাস্তি দিলেন। তিনিতো শক্তিশালী, শাস্তি দানে কঠোর। ২২
4156 ৪০. গাফির আমি আমার নিদর্শন ও স্পষ্ট প্রমাণসহ মূসাকে প্রেরণ করেছিলাম। ২৩
4157 ৪০. গাফির ফির‘আউন, হামান ও কারূণের নিকট; কিন্তু তারা বলেছিলঃ এতো এক যাদুকর, চরম মিথ্যাবাদী। ২৪
4158 ৪০. গাফির অতঃপর যখন মূসা আমার নিকট হতে সত্য নিয়ে তাদের নিকট উপস্থিত হল তখন তারা বললঃ মূসার উপর যারা ঈমান এনেছে তাদের পুত্র সন্তানদেরকে হত্যা কর এবং নারীদেরকে জীবিত রাখ। কিন্তু কাফিরদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবেই। ২৫
4159 ৪০. গাফির ফির‘আউন বললঃ আমাকে ছেড়ে দাও, আমি মূসাকে হত্যা করি এবং সে তার রবের শরণাপন্ন হোক। আমি আশংকা করি যে, সে তোমাদের দীনের পরিবর্তন ঘটাবে অথবা সে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। ২৬
4160 ৪০. গাফির মূসা বললঃ যারা বিচার দিনে বিশ্বাস করেনা, সেই সব উদ্ধত ব্যক্তি হতে আমি আমার ও তোমাদের রবের শরণাপন্ন হচ্ছি। ২৭
4161 ৪০. গাফির ফির‘আউন বংশের এক ব্যক্তি যে মু’মিন ছিল এবং নিজ ঈমান গোপন রাখত, বললঃ তোমরা কি এক ব্যক্তিকে এ জন্য হত্যা করবে যে, সে বলেঃ আমার রাব্ব আল্লাহ, অথচ সে তোমাদের রবের নিকট হতে সুস্পষ্ট প্রমাণসহ তোমাদের নিকট এসেছে? সে মিথ্যাবাদী হলে তার মিথ্যাবাদিতার জন্য সে দায়ী হবে, আর যদি সে সত্যবাদী হয় তাহলে সে তোমাদেরকে যে শাস্তির কথা বলে তার কিছুতো তোমাদের উপর আপতিত হবেই। নিশ্চয়ই সীমা লংঘনকারী ও মিথ্যাবাদীকে আল্লাহ সৎ পথে পরিচালিত করেননা। ২৮
4162 ৪০. গাফির হে আমার সম্প্রদায়! আজ কর্তৃত্ব তোমাদের, দেশে তোমরাই প্রবল; কিন্তু আমাদের উপর আল্লাহর শাস্তি এসে পড়লে কে আমাদেরকে সাহায্য করবে? ফির‘আউন বললঃ আমি যা বুঝি, আমি তোমাদের তাই বলছি। আমি তোমাদেরকে শুধু সৎ পথই দেখিয়ে থাকি। ২৯
4163 ৪০. গাফির মু’মিন ব্যক্তিটি বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! আমি তোমাদের জন্য পূর্ববর্তী সম্প্রদায়সমূহের শাস্তির দিনের অনুরূপ দুর্দিনের আশংকা করি। ৩০
4164 ৪০. গাফির যেমন ঘটেছিল নূহের কাওম, আদ, সামূদ এবং তাদের পরবর্তীদের ক্ষেত্রে। আল্লাহতো বান্দাদের প্রতি কোন যুলম করতে চান না। ৩১
4165 ৪০. গাফির হে আমার সম্প্রদায়! আমি তোমাদের জন্য আশংকা করি কিয়ামাত দিবসের। ৩২
4166 ৪০. গাফির যেদিন তোমরা পশ্চাৎ ফিরে পলায়ন করতে চাবে, আল্লাহর শাস্তি হতে তোমাদেরকে রক্ষা করার কেহ থাকবেনা। আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার জন্য কোন পথ প্রদর্শক নেই। ৩৩
4167 ৪০. গাফির পূর্বেও তোমাদের নিকট ইউসুফ এসেছিল স্পষ্ট নিদর্শনসহ; কিন্তু সে যা নিয়ে এসেছিল তোমরা তাতে বার বার সন্দেহ পোষণ করতে। পরিশেষে যখন তার মৃত্যু হল তখন তোমরা বলেছিলেঃ অতঃপর আল্লাহ আর কেহকেও রাসূল করে প্রেরণ করবেন না। এভাবে আল্লাহ বিভ্রান্ত করেন সীমালংঘনকারী ও সংশয়বাদীদেরকে। ৩৪
4168 ৪০. গাফির যারা নিজেদের নিকট কোন দলীল প্রমাণ না থাকলেও আল্লাহর নিদর্শন সম্পর্কে বিতন্ডায় লিপ্ত হয় তাদের এ কাজ আল্লাহ এবং মু’মিনদের দৃষ্টিতে অতিশয় ঘৃণাহ। এভাবে আল্লাহ প্রত্যেক উদ্ধত ও স্বৈরাচারী ব্যক্তির হৃদয়কে মোহর করে দেন। ৩৫
4169 ৪০. গাফির ফির‘আউন বললঃ হে হামান! আমার জন্য তুমি নির্মাণ কর এক সুউচ্চ প্রাসাদ যাতে আমি পাই অবলম্বন। ৩৬
4170 ৪০. গাফির আসমানে আরোহনের অবলম্বন, যেন আমি দেখতে পাই মূসার মা‘বূদকে; তবে আমিতো তাকে মিথ্যাবাদী মনে করি। এভাবেই ফির‘আউনের নিকট শোভনীয় করা হয়েছিল তার মন্দ কাজকে এবং তাকে নিবৃত্ত করা হয়েছিল সরল পথ হতে এবং ফির‘আউনের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছিল সম্পূর্ণ রূপে। ৩৭
4171 ৪০. গাফির মু’মিন ব্যক্তিটি বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আমার অনুসরণ কর, আমি তোমাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করব। ৩৮
4172 ৪০. গাফির হে আমার সম্প্রদায়! এ পার্থিব জীবনতো অস্থায়ী উপভোগের বস্তু এবং আখিরাতই হচ্ছে চিরস্থায়ী আবাস। ৩৯
4173 ৪০. গাফির কেহ মন্দ কাজ করলে সে শুধু তার কাজের অনুরূপ শাস্তি পাবে এবং পুরুষ কিংবা নারীর মধ্যে যারা মু’মিন হয়ে সৎ কাজ করে তারা দাখিল হবে জান্নাতে, সেখানে তাদেরকে দেয়া হবে অপরিমিত জীবনোপকরণ। ৪০
4174 ৪০. গাফির হে আমার সম্প্রদায়! কি আশ্চর্য, আমি তোমাদেরকে আহবান করছি মুক্তির দিকে, আর তোমরা আমাকে আহবান করছ জাহান্নামের দিকে। ৪১
4175 ৪০. গাফির তোমরা আমাকে বলছ আল্লাহকে অস্বীকার করতে এবং তাঁর সমকক্ষ দাঁড় করাতে, যার সম্পর্কে আমার কোন জ্ঞান নেই; পক্ষান্তরে আমি তোমাদেরকে আহবান করছি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল আল্লাহর দিকে। ৪২
4176 ৪০. গাফির নিশ্চয়ই তোমরা আমাকে আহবান করছো এমন এক জনের দিকে যে দুনিয়া ও আখিরাতে কোথাও আহবানযোগ্য নয়। বস্তুতঃ আমাদের প্রত্যাবর্তনতো আল্লাহর নিকট এবং সীমালংঘনকারীরাই জাহান্নামের অধিবাসী। ৪৩
4177 ৪০. গাফির আমি তোমাদেরকে যা বলছি, তোমরা তা অচিরেই স্মরণ করবে এবং আমি আমার ব্যাপার আল্লাহয় অপর্ণ করছি; আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি সবিশেষ দৃষ্টি রাখেন। ৪৪
4178 ৪০. গাফির অতঃপর আল্লাহ তাকে তাদের ষড়যন্ত্রের অনিষ্টতা হতে রক্ষা করলেন এবং কঠিন শাস্তি পরিবেষ্টন করল ফির‘আউন সম্প্রদায়কে। ৪৫
4179 ৪০. গাফির সকাল-সন্ধ্যায় তাদেরকে উপস্থিত করা হয় আগুনের সম্মুখে এবং যেদিন কিয়ামাত সংঘটিত হবে সেদিন বলা হবেঃ ফির‘আউন সম্প্রদায়কে নিক্ষেপ কর কঠিনতম শাস্তিতে। ৪৬
4180 ৪০. গাফির যখন তারা জাহান্নামে পরস্পর বিতর্কে লিপ্ত হবে তখন দুর্বলেরা দাম্ভিকদেরকে বলবেঃ আমরাতো তোমাদের অনুসারী ছিলাম, এখন কি তোমরা আমাদের থেকে জাহান্নামের আগুনের কিয়দংশ নিবারণ করবে? ৪৭
4181 ৪০. গাফির দাম্ভিকেরা বলবেঃ আমরা সবাইতো জাহান্নামে আছি, নিশ্চয়ই আল্লাহ বান্দাদের বিচার করে ফেলেছেন। ৪৮
4182 ৪০. গাফির জাহান্নামীরা ওর প্রহরীদেরকে বলবেঃ তোমাদের রবের নিকট প্রার্থনা কর, তিনি যেন আমাদের হতে লাঘব করেন শাস্তি, এক দিনের জন্য। ৪৯
4183 ৪০. গাফির তারা বলবেঃ তোমাদের নিকট কি স্পষ্ট নিদর্শনসহ তোমাদের রাসূলগণ আসেননি? জাহান্নামীরা বলবেঃ অবশ্যই এসেছিল। প্রহরীরা বলবেঃ তাহলে তোমরাই প্রার্থনা কর, আর কাফিরদের প্রার্থনা ব্যর্থই হয়। ৫০
4184 ৪০. গাফির নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলদেরকে ও মু’মিনদেরকে সাহায্য করব পার্থিব জীবনে এবং যেদিন সাক্ষীগণ দন্ডায়মান হবে। ৫১
4185 ৪০. গাফির যেদিন যালিমদের কোনো ওযর আপত্তি কোন কাজে আসবেনা, তাদের জন্য রয়েছে লা’নত এবং নিকৃষ্ট আবাস। ৫২
4186 ৪০. গাফির আমি অবশ্যই মূসাকে দান করেছিলাম পথনির্দেশ এবং বানী ইসরাঈলকে উত্তরাধিকারী করেছিলাম সেই কিতাবের- ৫৩
4187 ৪০. গাফির পথনির্দেশ ও উপদেশ স্বরূপ; বোধশক্তি সম্পন্ন লোকদের জন্য। ৫৪
4188 ৪০. গাফির অতএব তুমি ধৈর্য ধারণ কর; নিশ্চয়ই আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য, তুমি তোমার ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় তোমার রবের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। ৫৫
4189 ৪০. গাফির যারা নিজেদের নিকট কোন দলীল না থাকলেও আল্লাহর নিদর্শন সম্পর্কে বিতর্কে লিপ্ত হয় তাদের অন্তরে আছে শুধু অহংকার, যা সফল হবার নয়। অতএব আল্লাহর শরণাপন্ন হও, তিনিতো সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। ৫৬
4190 ৪০. গাফির মানব সৃষ্টি অপেক্ষা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিতো কঠিনতর, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটা জানেনা। ৫৭
4191 ৪০. গাফির সমান নয় অন্ধ ও চক্ষুম্মান এবং যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে, আর যারা দুস্কৃতিপরায়ণ। তোমরা অল্পই উপদেশ গ্রহণ করে থাক। ৫৮
4192 ৪০. গাফির কিয়ামাত অবশ্যম্ভাবী, এতে কোন সন্দেহ নেই, কিন্তু অধিকাংশ লোক বিশ্বাস করেনা। ৫৯
4193 ৪০. গাফির তোমাদের রাব্ব বললেনঃ তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব। কিন্তু যারা অহংকারে আমার ইবাদাতে বিমুখ তারা অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত হয়ে। ৬০
4194 ৪০. গাফির আল্লাহই তোমাদের বিশ্রামের জন্য সৃষ্টি করেছেন রাত এবং আলোকজ্জ্বল করেছেন দিনকে। আল্লাহতো মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেনা। ৬১
4195 ৪০. গাফির তিনিই আল্লাহ তোমাদের রাব্ব, সব কিছুর স্রষ্টা; তিনি ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই; সুতরাং তোমরা কিভাবে বিপথগামী হচ্ছ? ৬২
4196 ৪০. গাফির এভাবেই বিপথগামী হয় তারা যারা আল্লাহর নিদর্শনাবলিকে অস্বীকার করে। ৬৩
4197 ৪০. গাফির আল্লাহই তোমাদের জন্য পৃথিবীকে করেছেন বাসোপযোগী এবং আকাশকে করেছেন ছাদ এবং তোমাদের আকৃতি করেছেন উৎকৃষ্ট এবং তোমাদেরকে দান করেছেন উৎকৃষ্ট রিয্ক। এইতো আল্লাহ, তোমাদের রাব্ব। কত মহান জগতসমূহের রাব্ব আল্লাহ! ৬৪
4198 ৪০. গাফির তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই। সুতরাং তোমরা তাঁকেই ডাক, তাঁর আনুগত্যে একনিষ্ঠ হয়ে। প্রশংসা জগতসমূহের রাব্ব আল্লাহর প্রাপ্য। ৬৫
4199 ৪০. গাফির বলঃ আমার রবের নিকট হতে আমার নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন আসার পূর্বে তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদেরকে আহবান কর তাদের ইবাদাত করতে আমাকে নিষেধ করা হয়েছে এবং আমি আদিষ্ট হয়েছি জগতসমূহের রবের নিকট আত্মসমর্পণ করতে। ৬৬
4200 ৪০. গাফির তিনিই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন মাটি হতে, পরে শুক্র বিন্দু হতে, তারপর তাদেরকে বের করেন শিশু রূপে, অতঃপর তোমরা উপনীত হও যৌবনে, তারপর হও বৃদ্ধ। তোমাদের মধ্যে কারও এর পূর্বেই মৃত্যু ঘটে এবং এটা এ জন্য যে, তোমরা নির্ধারিত কাল প্রাপ্ত হও এবং যাতে তোমরা অনুধাবন করতে পার- ৬৭
4201 ৪০. গাফির তিনিই জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান এবং যখন তিনি কিছু করা স্থির করেন তখন তিনি বলেনঃ হও, এবং তা হয়ে যায়। ৬৮
4202 ৪০. গাফির তুমি কি লক্ষ্য করনা তাদের প্রতি যারা আল্লাহর নিদর্শন সম্পর্কে বিতর্ক করে? কিভাবে তাদেরকে বিপথগামী করা হচ্ছে? ৬৯
4203 ৪০. গাফির যারা অস্বীকার করে কিতাব ও যা সহ আমি রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছিলাম তা, শীঘ্রই তারা জানতে পারবে – ৭০
4204 ৪০. গাফির যখন তাদের গলদেশে বেড়ি ও শৃংখল পড়িয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে – ৭১
4205 ৪০. গাফির ফুটন্ত পানিতে। অতঃপর তাদেরকে দগ্ধ করা হবে আগুনে। ৭২
4206 ৪০. গাফির এরপর তাদেরকে বলা হবেঃ কোথায় তারা যাদেরকে তোমরা তাঁর শরীক করতে – ৭৩
4207 ৪০. গাফির আল্লাহ ব্যতীত? তারা বলবেঃ তারাতো আমাদের নিকট হতে অদৃশ্য হয়েছে, বস্তুতঃ পূর্বে আমরা এমন কিছুকেই আহবান করিনি। এভাবে আল্লাহ কাফিরদের বিভ্রান্ত করেন। ৭৪
4208 ৪০. গাফির এটা এ কারণে যে, তোমরা পৃথিবীতে অযথা উল্লাস করতে এবং এ কারণে যে, তোমরা দম্ভ করতে। ৭৫
4209 ৪০. গাফির তোমরা জাহান্নামের বিভিন্ন দরজা দিয়ে প্রবেশ কর তাতে স্থায়ীভাবে অবস্থিতির জন্য, আর কতই না নিকৃষ্ট উদ্ধতদের আবাসস্থল! ৭৬
4210 ৪০. গাফির সুতরাং তুমি ধৈর্য ধারণ কর। আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। আমি তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি প্রদান করি তার কিছু যদি দেখিয়েই দিই অথবা তোমার মৃত্যু ঘটাই - তাদের প্রত্যাবর্তনতো আমারই নিকট। ৭৭
4211 ৪০. গাফির আমিতো তোমার পূর্বে অনেক রাসূল প্রেরণ করেছিলাম; তাদের কারও কারও কথা তোমার নিকট বিবৃত করেছি এবং কারও কারও কথা তোমার নিকট বিবৃত করিনি। আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কোন নিদর্শন উপস্থিত করা কোন রাসূলের কাজ নয়। আল্লাহর আদেশ এলে, ন্যায় সংগতভাবে ফাইসালা হয়ে যাবে। তখন মিথ্যাশ্রয়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ৭৮
4212 ৪০. গাফির আল্লাহই তোমাদের জন্য চতুস্পদ জন্তু সৃষ্টি করেছেন, কতক আরোহণ করার জন্য এবং কতক তোমরা আহার করে থাক। ৭৯
4213 ৪০. গাফির এতে তোমাদের জন্য রয়েছে প্রচুর উপকার; তোমরা যা প্রয়োজন বোধ কর এটা দ্বারা তা পূর্ণ করে থাক এবং এদের উপর ও নৌযানের উপর তোমাদেরকে বহন করা হয়। ৮০
4214 ৪০. গাফির তিনি তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখিয়ে থাকেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহর কোন্ কোন্ নি‘আমাত অস্বীকার করবে? ৮১
4215 ৪০. গাফির তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি ও দেখেনি তাদের পূর্ববর্তীদের কি পরিণাম হয়েছিল? পৃথিবীতে তারা ছিল এদের অপেক্ষা সংখ্যায় অধিক এবং শক্তিতে ও কীর্তিতে অধিক প্রবল। তারা যা করত তা তাদের কোন কাজে আসেনি। ৮২
4216 ৪০. গাফির তাদের নিকট যখন স্পষ্ট নিদর্শনসহ তাদের রাসূল আসত তখন তারা নিজেদের জ্ঞানের দম্ভ করত। তারা যা নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করত তাই তাদেরকে বেষ্টন করল। ৮৩
4217 ৪০. গাফির অতঃপর যখন তারা আমার শাস্তি প্রত্যক্ষ করল তখন বললঃ আমরা এক আল্লাহয়ই ঈমান আনলাম এবং আমরা তাঁর সাথে যাদেরকে শরীক করতাম তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করলাম। ৮৪
4218 ৪০. গাফির তারা যখন আমার শাস্তি প্রত্যক্ষ করল তখন তাদের ঈমান তাদের কোন উপকারে এলোনা। আল্লাহর এই বিধান পূর্ব হতেই তার বান্দাদের মধ্যে চলে আসছে এবং সেই ক্ষেত্রে কাফিরেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ৮৫
4219 ৪১. আল-ফুসসিলাত হা মীম।
4220 ৪১. আল-ফুসসিলাত ইহা দয়াময়, পরম দয়ালুর নিকট হতে অবতীর্ণ।
4221 ৪১. আল-ফুসসিলাত এটা এক কিতাব, বিশদভাবে বিবৃত হয়েছে এর আয়াতসমূহ আরাবী ভাষায়, কুরআনরূপে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য –
4222 ৪১. আল-ফুসসিলাত সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারীরূপে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিমুখ হয়েছে। সুতরাং তারা শুনবে না।
4223 ৪১. আল-ফুসসিলাত তারা বলেঃ তুমি যার প্রতি আমাদেরকে আহবান করছ সেই বিষয়ে আমাদের অন্তর আবরণে আচ্ছাদিত, কর্ণে আছে বধিরতা এবং তোমার ও আমাদের মধ্যে আছে অন্তরাল; সুতরাং তুমি তোমার কাজ কর এবং আমরা আমাদের কাজ করি।
4224 ৪১. আল-ফুসসিলাত বলঃ আমিতো তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি অহী হয় যে, তোমাদের মা‘বূদ একমাত্র মা‘বূদ। অতএব তাঁরই পথ দৃঢ়ভাবে অবলম্বন কর এবং তাঁরই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। দুর্ভোগ অংশীবাদীদের জন্য –
4225 ৪১. আল-ফুসসিলাত যারা যাকাত প্রদান করেনা এবং তারা আখিরাতেও অবিশ্বাসী।
4226 ৪১. আল-ফুসসিলাত যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার।
4227 ৪১. আল-ফুসসিলাত বলঃ তোমরা কি তাকে অস্বীকার করবেই যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দুই দিনে এবং তোমরা তাঁর সমকক্ষ দাঁড় করাতে চাও? তিনিতো জগতসমূহের রাব্ব।
4228 ৪১. আল-ফুসসিলাত তিনি স্থাপন করেছেন অটল পর্বতমালা ভূপৃষ্ঠে এবং তাতে রেখেছেন কল্যাণ এবং চার দিনে ব্যবস্থা করেছেন খাদ্যের - সমভাবে, যাঞ্চাকারীদের জন্য। ১০
4229 ৪১. আল-ফুসসিলাত অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন যা ছিল ধূম্রপুঞ্জ বিশেষ। অতঃপর তিনি ওটাকে এবং পৃথিবীকে বললেনঃ তোমরা উভয়ে এসো স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বললঃ আমরা এলাম অনুগত হয়ে। ১১
4230 ৪১. আল-ফুসসিলাত অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দুই দিনে সপ্তাকাশে পরিণত করলেন এবং প্রত্যেক আকাশে উহার বিধান ব্যক্ত করলেন এবং আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করলাম প্রদীপমালা দ্বারা এবং করলাম সুরক্ষিত। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা। ১২
4231 ৪১. আল-ফুসসিলাত তবুও তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে বলঃ আমিতো তোমাদেরকে সতর্ক করছি এক ধ্বংসকর শাস্তির; আদ ও সামূদ জাতির অনুরূপ। ১৩
4232 ৪১. আল-ফুসসিলাত যখন তাদের নিকট রাসূলগণ এসেছিল তাদের সম্মুখ ও পশ্চাৎ হতে এবং বলেছিলঃ তোমরা আল্লাহ ব্যতীত কারও ইবাদাত করনা তখন তারা বলেছিলঃ আমাদের রবের এই রূপ ইচ্ছা হলে তিনি অবশ্যই মালাক/ফেরেশতা প্রেরণ করতেন। অতএব তোমরা যাসহ প্রেরিত হয়েছ আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি। ১৪
4233 ৪১. আল-ফুসসিলাত আর ‘আদ সম্প্রদায়ের ব্যাপার এই যে, তারা পৃথিবীতে অযথা দম্ভ করত এবং বলতঃ আমাদের অপেক্ষা শক্তিশালী কে আছে? তারা কি তাহলে লক্ষ্য করেনি, যে আল্লাহ তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তিনি তাদের অপেক্ষা শক্তিশালী? অথচ তারা আমার নিদর্শনাবলীকে অস্বীকার করত। ১৫
4234 ৪১. আল-ফুসসিলাত অতঃপর আমি তাদেরকে পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করার জন্য তাদের বিরূদ্ধে প্রেরণ করেছিলাম ঝঞ্ঝা-বায়ু, অমঙ্গলজনক দিনে। আখিরাতের শাস্তিতো অধিকতর লাঞ্ছনাদায়ক এবং তাদের সাহায্য করা হবেনা। ১৬
4235 ৪১. আল-ফুসসিলাত আর সামূদ সম্প্রদায়ের ব্যাপার এই যে, আমি তাদেরকে পথ নির্দেশ করেছিলাম, কিন্তু তারা সৎ পথের পরিবর্তে ভ্রান্ত পথ অবলম্বন করেছিল। অতঃপর তাদেরকে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি আঘাত হানলো তাদের কৃতকর্মের পরিণাম স্বরূপ। ১৭
4236 ৪১. আল-ফুসসিলাত আমি উদ্ধার করলাম তাদেরকে যারা ঈমান এনেছিল এবং যারা তাকওয়া অবলম্বন করত। ১৮
4237 ৪১. আল-ফুসসিলাত যেদিন আল্লাহর শত্রুদেরকে জাহান্নাম অভিমুখে সমবেত করা হবে সেদিন তাদেরকে বিন্যস্ত করা হবে বিভিন্ন দলে। ১৯
4238 ৪১. আল-ফুসসিলাত পরিশেষে যখন তারা জাহান্নামের সন্নিকটে পৌঁছবে তখন তাদের কান, চোখ ও ত্বক তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে সাক্ষ্য দিবে। ২০
4239 ৪১. আল-ফুসসিলাত জাহান্নামীরা তাদের ত্বককে জিজ্ঞেস করবেঃ তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছ কেন? উত্তরে তারা বলবেঃ আল্লাহ! যিনি সব কিছুকে বাকশক্তি দিয়েছেন তিনি আমাদেরকেও বাকশক্তি দিয়েছেন। তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন প্রথমবার এবং তাঁরই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। ২১
4240 ৪১. আল-ফুসসিলাত তোমরা কিছু গোপন করতে না এই বিশ্বাসে যে, তোমাদের কর্ণ, চক্ষু এবং ত্বক তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবেনা; উপরন্ত তোমরা মনে করতে যে, তোমরা যা করতে তার অনেক কিছুই আল্লাহ জানেননা। ২২
4241 ৪১. আল-ফুসসিলাত তোমাদের রাব্ব সম্বন্ধে তোমাদের এই ধারণাই তোমাদের ধ্বংস এনেছে। ফলে তোমরা হয়েছ ক্ষতিগ্রস্ত। ২৩
4242 ৪১. আল-ফুসসিলাত এখন তারা ধৈর্য ধারণ করলেও জাহান্নামই হবে তাদের আবাস স্থল এবং তারা অনুগ্রহ চাইলেও অনুগ্রহ প্রাপ্ত হবেনা। ২৪
4243 ৪১. আল-ফুসসিলাত আমি তাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম সহচর যারা তাদের সম্মুখ ও পশ্চাতে যা আছে তা তাদের দৃষ্টিতে শোভন করে দেখিয়েছিল এবং তাদের ব্যাপারেও তাদের পূর্ববর্তী জিন ও মানবদের ন্যায় শাস্তির কথা বাস্তব হয়েছে। তারাতো ছিল ক্ষতিগ্রস্ত। ২৫
4244 ৪১. আল-ফুসসিলাত কাফিরেরা বলেঃ তোমরা এই কুরআন শ্রবণ করনা এবং তা আবৃত্তি কালে শোরগোল সৃষ্টি কর যাতে তোমরা জয়ী হতে পার। ২৬
4245 ৪১. আল-ফুসসিলাত আমি অবশ্যই কাফিরদের কঠিন শাস্তি আস্বাদন করাব এবং নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে নিকৃষ্ট কার্যকলাপের প্রতিফল দিব – ২৭
4246 ৪১. আল-ফুসসিলাত জাহান্নাম; এটাই আল্লাহর শত্রুদের পরিণাম; সেখানে তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী আবাস, আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকৃতির প্রতিফল স্বরূপ। ২৮
4247 ৪১. আল-ফুসসিলাত কাফিরেরা বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! যে সব জিন ও মানুষ আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল তাদের উভয়কে দেখিয়ে দিন, আমরা উভয়কে পদদলিত করব, যাতে তারা লাঞ্ছিত হয়। ২৯
4248 ৪১. আল-ফুসসিলাত যারা বলেঃ আমাদের রাব্ব আল্লাহ! অতঃপর অবিচল থাকে, তাদের নিকট অবতীর্ণ হয় মালাইকা (ফেরেশতা) এবং বলেঃ তোমরা ভীত হয়োনা, চিন্তিত হয়োনা এবং তোমাদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তার জন্য আনন্দিত হও। ৩০
4249 ৪১. আল-ফুসসিলাত আমরাই তোমাদের বন্ধু - দুনিয়ার জীবনে ও আখিরাতে। সেখানে তোমাদের জন্য রয়েছে যা কিছু তোমাদের মন চায় এবং সেখানে তোমাদের জন্য রয়েছে যা তোমরা ফরমায়েস কর। ৩১
4250 ৪১. আল-ফুসসিলাত এটা হবে ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু আল্লাহর পক্ষ হতে আপ্যায়ন। ৩২
4251 ৪১. আল-ফুসসিলাত ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা কথায় কে উত্তম যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহবান করে, সৎ কাজ করে এবং বলেঃ আমিতো আত্মসমর্পনকারীদের অন্তর্ভুক্ত। ৩৩
4252 ৪১. আল-ফুসসিলাত ভাল কাজ এবং মন্দ কাজ সমান হতে পারেনা। মন্দ প্রতিহত কর উৎকৃষ্ট দ্বারা; ফলে তোমার সাথে যার শত্রুতা আছে সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মত। ৩৪
4253 ৪১. আল-ফুসসিলাত এই গুণের অধিকারী করা হয় শুধু তাদেরকেই যারা ধৈর্যশীল, এই গুণের অধিকারী করা হয় শুধু তাদেরকেই যারা মহা ভাগ্যবান। ৩৫
4254 ৪১. আল-ফুসসিলাত যদি শাইতানের কু-মন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে তাহলে আল্লাহকে স্মরণ করবে; তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। ৩৬
4255 ৪১. আল-ফুসসিলাত তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে রাত ও দিন, সূর্য ও চাঁদ। তোমরা সূর্যকে সাজদাহ করনা, চাঁদকেও নয়; সাজদাহ কর আল্লাহকে, যিনি এগুলি সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা প্রকৃতই তাঁর ইবাদাত কর। ৩৭
4256 ৪১. আল-ফুসসিলাত তারা অহংকার করলেও যারা তোমার রবের সান্নিধ্যে রয়েছে তারাতো দিন ও রাতে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং তারা ক্লান্তিও বোধ করেনা। [সাজদাহ] ৩৮
4257 ৪১. আল-ফুসসিলাত আর তাঁর একটি নিদর্শন এই যে, তুমি ভূমিকে দেখতে পাও শুষ্ক উষর, অতঃপর আমি তাতে বৃষ্টি বর্ষণ করলে তা আন্দোলিত ও স্ফীত হয়; যিনি জীব দেন তিনিই মৃতের জীবন দানকারী। তিনিতো সর্ব বিষয়ে সর্ব শক্তিমান। ৩৯
4258 ৪১. আল-ফুসসিলাত যারা আমার আয়াতসমূহকে বিকৃত করে তারা আমার অগোচর নয়। শ্রেষ্ঠ কে? যে ব্যক্তি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে সে, নাকি যে কিয়ামাত দিবসে নিরাপদে থাকবে সে? তোমাদের যা ইচ্ছা তা কর; তোমরা যা কর তিনি তার দ্রষ্টা। ৪০
4259 ৪১. আল-ফুসসিলাত যারা তাদের নিকট কুরআন আসার পর তা প্রত্যাখ্যান করে তাদের মধ্যে চিন্তা ভাবনার অভাব রয়েছে। ইহা অবশ্যই এক মহিমাময় গ্রন্থ। ৪১
4260 ৪১. আল-ফুসসিলাত কোন মিথ্যা এতে অনুপ্রবেশ করবেনা। সম্মুখ হতেও নয়, পশ্চাৎ হতেও নয়; এটা প্রজ্ঞাময় প্রশংসা আল্লাহর নিকট হতে অবতীর্ণ। ৪২
4261 ৪১. আল-ফুসসিলাত তোমার সম্বন্ধেতো তাই বলা হয় যা বলা হত তোমার পূর্ববর্তী রাসূলদের সম্পর্কে। তোমার রাব্ব অবশ্যই ক্ষমাশীল এবং কঠিন শাস্তিদাতা। ৪৩
4262 ৪১. আল-ফুসসিলাত আমি যদি আরাবী ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ না করতাম তাহলে তারা অবশ্যই বলত, এর আয়াতগুলি বিশদভাবে বিবৃত হয়নি কেন? কি আশ্চর্য যে, এর ভাষা আজমী, অথচ রাসূল আরাবীয়। বলঃ মু’মিনদের জন্য ইহা (কুরআন) পথ নির্দেশ ও ব্যাধির প্রতিকার। কিন্তু যারা অবিশ্বাসী তাদের কর্ণে রয়েছে বধিরতা এবং কুরআন হবে তাদের জন্য অন্ধত্ব। তারা এমন যে, যেন তাদেরকে আহবান করা হয় বহু দূর হতে। ৪৪
4263 ৪১. আল-ফুসসিলাত আমিতো মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম, অতঃপর এতে মতভেদ ঘটেছিল। তোমার রবের পক্ষ হতে পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের মীমাংসা হয়ে যেত। তারা অবশ্যই এ সম্বন্ধে বিভ্রান্তকর সন্দেহে রয়েছে। ৪৫
4264 ৪১. আল-ফুসসিলাত যে সৎ কাজ করে সে নিজের কল্যাণের জন্যই তা করে এবং কেহ মন্দ কাজ করলে ওর প্রতিফল সে’ই ভোগ করবে। তোমার রাব্ব বান্দাদের প্রতি কোন যুলম করেন না। ৪৬
4265 ৪১. আল-ফুসসিলাত কিয়ামাতের জ্ঞান শুধু আল্লাহর কাছেই ন্যস্ত, তাঁর অজ্ঞাতসারে কোন ফল আবরণ হতে বের হয়না, কোন নারী গর্ভধারণ করেনা এবং সন্তানও প্রসব করেনা। যেদিন আল্লাহ তাদেরকে ডেকে বলবেনঃ আমার শরীকরা কোথায়? তখন তারা বলবেঃ আমরা আপনার নিকট নিবেদন করছি যে, এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানিনা। ৪৭
4266 ৪১. আল-ফুসসিলাত পূর্বে তারা যাদেরকে আহবান করত তারা অদৃশ্য হয়ে যাবে এবং অংশীবাদীরা উপলদ্ধি করবে যে, তাদের নিস্কৃতির কোন উপায় নেই। ৪৮
4267 ৪১. আল-ফুসসিলাত মানুষ ধন-সম্পদ প্রার্থনায় কোন ক্লান্তি বোধ করেনা, কিন্তু যখন তাকে দুঃখ দৈন্য স্পর্শ করে তখন সে অত্যন্ত নিরাশ ও হতাশ হয়ে পড়ে। ৪৯
4268 ৪১. আল-ফুসসিলাত দুঃখ দৈন্য স্পর্শ করার পর যদি তাকে আমি অনুগ্রহের আস্বাদ দিই তখন সে বলেই থাকেঃ এটা আমার প্রাপ্য এবং আমি মনে করিনা যে, কিয়ামাত সংঘটিত হবে; আর আমি যদি আমার রবের নিকট প্রত্যাবর্তিত হইও তাহলে তাঁর নিকটতো আমার জন্য কল্যাণই থাকবে। আমি কাফিরদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে অবশ্যই অবহিত করব এবং তাদেরকে আস্বাদন করাব কঠোর শাস্তি। ৫০
4269 ৪১. আল-ফুসসিলাত যখন আমি মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করি তখন সে মুখ ফিরিয়ে নেয় ও দূরে সরে যায় এবং তাকে অনিষ্টতা স্পর্শ করলে সে তখন দীর্ঘ প্রার্থনায় রত হয়। ৫১
4270 ৪১. আল-ফুসসিলাত বলঃ তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি এই কুরআন আল্লাহর নিকট থেকে অবতীর্ণ হয়ে থাকে এবং তোমরা ইহা প্রত্যাখ্যান কর, তাহলে যে ব্যক্তি ঘোর বিরুদ্ধাচরণে লিপ্ত সে অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত আর কে? ৫২
4271 ৪১. আল-ফুসসিলাত আমি শীঘ্র তাদের জন্য আমার নিদর্শনাবলী ব্যক্ত করব বিশ্বজগতে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে। ফলে তাদের নিকট সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে যে ওটাই সত্য। এটা কি যথেষ্ট নয় যে, তোমার রাব্ব সর্ব বিষয়ে অবহিত? ৫৩
4272 ৪১. আল-ফুসসিলাত জেনে রেখ, এরা এদের রবের সাথে সাক্ষাৎকারে সন্ধিহান। জেনে রেখ, সব কিছুকে আল্লাহ পরিবেষ্টন করে রেখেছেন। ৫৪
4273 ৪২. আশ-শূরা হা, মীম।
4274 ৪২. আশ-শূরা আইন, সীন, কাফ।
4275 ৪২. আশ-শূরা পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহ এভাবেই তোমার পূর্ববর্তীদের মতই তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করেন।
4276 ৪২. আশ-শূরা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা তাঁরই। তিনি সমুন্নত, মহান।
4277 ৪২. আশ-শূরা আকাশমন্ডলী উর্ধ্বদেশ হতে ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয় এবং মালাইকা/ফেরেশতারা তাদের রবের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং মর্তবাসীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। জেনে রেখ, আল্লাহতো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
4278 ৪২. আশ-শূরা যারা আল্লাহর পরিবর্তে অপরদেরকে অভিভাবক রূপে গ্রহণ করে, আল্লাহ তাদের প্রতি কঠোর দৃষ্টি রাখেন। তুমি তাদের কর্মবিধায়ক নও।
4279 ৪২. আশ-শূরা এভাবে আমি তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করেছি আরাবী ভাষায় যাতে তুমি সতর্ক করতে পার মাক্কা এবং ওর চতুর্দিকের জনগণকে এবং সতর্ক করতে পার কিয়ামাতের দিন সম্পর্কে, যাতে কোন সন্দেহ নেই। সেদিন একদল জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
4280 ৪২. আশ-শূরা আল্লাহ ইচ্ছা করলে মানুষকে একই উম্মাত করতে পারতেন। বস্তুতঃ তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে স্বীয় অনুগ্রহের অধিকারী করেন। যালিমদের কোন অভিভাবক নেই, কোন সাহায্যকারীও নেই।
4281 ৪২. আশ-শূরা তারা কি আল্লাহর পরিবর্তে অপরকে অভিভাবক রূপে গ্রহণ করেছে? কিন্তু আল্লাহ! অভিভাবকতো তিনিই এবং তিনি মৃতকে জীবিত করেন। তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
4282 ৪২. আশ-শূরা তোমরা যে বিষয়েই মতভেদ কর না কেন, ওর মীমাংসাতো আল্লাহরই নিকট। বলঃ তিনিই আল্লাহ! আমার রাব্ব। আমি নির্ভর করি তাঁর উপর এবং আমি তাঁরই অভিমুখী! ১০
4283 ৪২. আশ-শূরা তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা, তিনি তোমাদের মধ্য হতে তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং আন‘আমের জোড়া; এভাবে তিনি তোমাদের বংশ বিস্তার করেন; কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। ১১
4284 ৪২. আশ-শূরা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর চাবি তাঁরই নিকট। তিনি যার প্রতি ইচ্ছা তার রিয্ক বর্ধিত করেন অথবা সংকুচিত করেন। তিনি সর্ব বিষয়ে সবিশেষ অবহিত। ১২
4285 ৪২. আশ-শূরা তিনি তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন দীন যার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি নূহকে। আর যা আমি অহী করেছিলাম তোমাদের এবং যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকে এই বলে যে, তোমরা দীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং ওতে মতভেদ করনা। তুমি মুশরিকদেরকে যার প্রতি আহবান করছ তা তাদের নিকট দুর্বহ মনে হয়। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা দীনের প্রতি আকৃষ্ট করেন এবং যে তার অভিমুখী হয় তাকে দীনের দিকে পরিচালিত করেন। ১৩
4286 ৪২. আশ-শূরা তাদের নিকট জ্ঞান আসার পর শুধুমাত্র পারস্পরিক বিদ্বেষ বশতঃ তারা নিজেদের মধ্যে মতভেদ ঘটায়। এক নির্ধারিত কাল পর্যন্ত অবকাশ সম্পর্কে তোমার রবের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের বিষয়ে ফাইসালা হয়ে যেত। তাদের পর যারা কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়েছে তারা কুরআন সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে রয়েছে। ১৪
4287 ৪২. আশ-শূরা সুতরাং তুমি ওর দিকে আহবান কর এবং ওতেই দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাক যেভাবে তুমি আদিষ্ট হয়েছ এবং তাদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করনা। বলঃ আল্লাহ যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন আমি তাতে বিশ্বাস করি এবং আমি আদিষ্ট হয়েছি তোমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করতে। আল্লাহই আমাদের রাব্ব এবং তোমাদেরও রাব্ব। আমাদের কাজ আমাদের এবং তোমাদের কাজ তোমাদের। আমাদের এবং তোমাদের মধ্যে বিবাদ নেই। আল্লাহই আমাদেরকে একত্রিত করবেন এবং প্রত্যাবর্তন তাঁরই নিকট। ১৫
4288 ৪২. আশ-শূরা আল্লাহকে স্বীকার করার পর যারা আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্ক করে তাদের যুক্তি-তর্ক তাদের রবের দৃষ্টিতে অসার এবং তারা তাঁর ক্রোধের পাত্র এবং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। ১৬
4289 ৪২. আশ-শূরা আল্লাহই অবতীর্ণ করেছেন সত্যসহ কিতাব এবং তুলাদন্ড। তুমি কি জান, সম্ভবতঃ কিয়ামাত আসন্ন? ১৭
4290 ৪২. আশ-শূরা যারা এটা বিশ্বাস করেনা তারাই এটা ত্বরান্বিত করতে চায়। আর যারা বিশ্বাসী তারা ওকে ভয় করে এবং জানে যে, ওটা সত্য; জেনে রেখ, কিয়ামাত সম্পর্কে যারা বাক-বিতন্ডা করে তারা ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছে। ১৮
4291 ৪২. আশ-শূরা আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি অতি দয়ালু। তিনি যাকে ইচ্ছা রিয্ক দান করেন। তিনি প্রবল পরাক্রমশালী। ১৯
4292 ৪২. আশ-শূরা যে কেহ আখিরাতের প্রতিদান কামনা করে তার জন্য আমি তার ফসল বর্ধিত করে দিই এবং যে দুনিয়ার প্রতিদান কামনা করে আমি তাকে ওরই কিছু দিই। কিন্তু আখিরাতে তার জন্য কিছুই থাকবেনা। ২০
4293 ৪২. আশ-শূরা তাদের কি এমন কতকগুলি দেবতা আছে যারা তাদের জন্য বিধান দিয়েছে এমন দীনের যার অনুমতি আল্লাহ দেননি? ফাইসালার ঘোষণা না থাকলে, তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েই যেত। নিশ্চয়ই যালিমদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। ২১
4294 ৪২. আশ-শূরা তুমি যালিমদেরকে ভীত সন্ত্রস্ত দেখবে তাদের কৃতকর্মের জন্য; আর এটাই আপতিত হবে তাদের উপর। যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে তারা থাকবে জান্নাতের মনোরম স্থানে। তারা যা কিছু চাবে তাদের রবের নিকট তা’ই পাবে। এটাইতো মহা অনুগ্রহ। ২২
4295 ৪২. আশ-শূরা এই সুসংবাদই আল্লাহ দেন তাঁর বান্দাদেরকে যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে। বলঃ আমি এর বিনিময়ে তোমাদের নিকট হতে আত্মীয়ের সৌহার্দ্য ব্যতীত অন্য কোন প্রতিদান চাইনা। যে উত্তম কাজ করে আমি তার জন্য এতে কল্যাণ বর্ধিত করি। আল্লাহ ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী। ২৩
4296 ৪২. আশ-শূরা তারা কি বলে যে, সে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে? যদি তা’ই হত তাহলে আল্লাহ ইচ্ছা করলে তোমার হৃদয় মোহর করে দিতেন। আল্লাহ মিথ্যাকে মুছে দেন এবং নিজ বাণী দ্বারা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেন। অন্তরে যা আছে সেই বিষয়ে তিনি সবিশেষ অবহিত। ২৪
4297 ৪২. আশ-শূরা তিনিই তাঁর বান্দাদের তাওবাহ কবূল করেন এবং পাপ মোচন করেন এবং তোমরা যা কর তিনি তা জানেন। ২৫
4298 ৪২. আশ-শূরা তিনি মু’মিন ও সৎকর্মশীলদের আহবানে সাড়া দেন এবং তাদের প্রতি তার অনুগ্রহ বর্ধিত করেন; কাফিরদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। ২৬
4299 ৪২. আশ-শূরা আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে জীবনোপকরণের প্রাচুর্য দিলে তারা পৃথিবীতে অবশ্যই বিপর্যয় সৃষ্টি করত; কিন্তু তিনি তাঁর ইচ্ছা মত সঠিক পরিমানেই দিয়ে থাকেন। তিনি তাঁর বান্দাদেরকে সম্যক জানেন ও দেখেন। ২৭
4300 ৪২. আশ-শূরা তারা যখন হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে তখনই তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তাঁর করুণা বিস্তার করেন। তিনিই অভিভাবক, প্রশংসা। ২৮
4301 ৪২. আশ-শূরা তাঁর অন্যতম নিদর্শন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং এতদুভয়ের মধ্যে তিনি যে সব জীবজন্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন সেগুলি। তিনি যখন ইচ্ছা তখনই ওদেরকে সমবেত করতে সক্ষম। ২৯
4302 ৪২. আশ-শূরা তোমাদের যে বিপদ-আপদ ঘটে তাতো তোমাদেরই কৃতকর্মের ফল এবং তোমাদের অনেক অপরাধ তিনি ক্ষমা করে দেন। ৩০
4303 ৪২. আশ-শূরা তোমরা পৃথিবীতে আল্লাহর অভিপ্রায়কে ব্যর্থ করতে পারবেনা এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক নেই, সাহায্যকারীও নেই। ৩১
4304 ৪২. আশ-শূরা তাঁর অন্যতম নিদর্শন পর্বত সদৃশ সমুদ্রে চলমান নৌযানসমূহ। ৩২
4305 ৪২. আশ-শূরা তিনি ইচ্ছা করলে বায়ুকে স্তদ্ধ করে দিতে পারেন; ফলে নৌযানসমূহ নিশ্চল হয়ে পড়বে সমুদ্র পৃষ্ঠে। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে ধৈর্যশীল ও কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য। ৩৩
4306 ৪২. আশ-শূরা অথবা তিনি তাদের কৃতকর্মের জন্য সেইগুলিকে বিধ্বস্ত করে দিতে পারেন এবং অনেককে তিনি ক্ষমাও করেন। ৩৪
4307 ৪২. আশ-শূরা আর আমার নিদর্শন সম্পর্কে যারা বির্তক করে তারা যেন জানতে পারে যে, তাদের কোন নিস্কৃতি নেই। ৩৫
4308 ৪২. আশ-শূরা বস্তুতঃ তোমাদেরকে যা কিছু দেয়া হয়েছে তা পার্থিব জীবনের ভোগ। কিন্তু আল্লাহর নিকট যা আছে তা উত্তম ও স্থায়ী - তাদের জন্য, যারা ঈমান আনে ও তাদের রবের উপর নির্ভর করে। ৩৬
4309 ৪২. আশ-শূরা যারা গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কাজ হতে বেঁচে থাকে এবং ক্রোধাবিষ্ট হয়েও ক্ষমা করে দেয় – ৩৭
4310 ৪২. আশ-শূরা যারা তাদের রবের আহবানে সাড়া দেয়, সালাত কায়েম করে, নিজেদের মধ্যে পরামর্শের মাধ্যমে নিজেদের কাজ সম্পাদন করে এবং তাদেরকে আমি যে রিয্ক দিয়েছি তা হতে ব্যয় করে – ৩৮
4311 ৪২. আশ-শূরা এবং যারা অত্যাচারিত হলে প্রতিশোধ গ্রহণ করে – ৩৯
4312 ৪২. আশ-শূরা মন্দের প্রতিফল অনুরূপ মন্দ দ্বারা এবং যে ক্ষমা করে ও আপোষ-নিস্পত্তি করে তার পুরস্কার আল্লাহর নিকট রয়েছে। আল্লাহ যালিমদের পছন্দ করেন না। ৪০
4313 ৪২. আশ-শূরা তবে অত্যাচারিত হওয়ার পর যারা প্রতিবিধান করে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা। ৪১
4314 ৪২. আশ-শূরা শুধু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে যারা মানুষের উপর অত্যাচার করে এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহাচরণ করে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। ৪২
4315 ৪২. আশ-শূরা অবশ্য যে ধৈর্য ধারণ করে এবং ক্ষমা করে দেয় তাতো হবে দৃঢ় সম্পর্কেরই কাজ। ৪৩
4316 ৪২. আশ-শূরা আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার জন্য কোন অভিভাবক নেই। যালিমরা যখন শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন তুমি তাদেরকে বলতে শুনবেঃ প্রত্যাবর্তনের কোন উপায় আছে কি? ৪৪
4317 ৪২. আশ-শূরা তুমি তাদেরকে দেখতে পাবে যে, তাদেরকে (জাহান্নামের সামনে) উপস্থিত করা হচ্ছে, লাঞ্ছিত ও অপমানিত অবস্থায়। মু’মিনরা কিয়ামাত দিবসে বলবেঃ ক্ষতিগ্রস্ত তারাই যারা নিজেদের ও নিজেদের পরিজনবর্গের ক্ষতি সাধন করেছে। জেনে রেখ, যালিমরা ভোগ করবে স্থায়ী শাস্তি। ৪৫
4318 ৪২. আশ-শূরা আল্লাহ ব্যতীত তাদেরকে সাহায্য করার জন্য তাদের কোন অভিভাবক থাকবেনা এবং আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার কোন গতি নেই। ৪৬
4319 ৪২. আশ-শূরা তোমরা তোমাদের রবের আহবানে সাড়া দাও সেই দিন আসার পূর্বে যা আল্লাহর বিধানে অপ্রতিরোদ্ধ, ‘যেদিন তোমাদের কোন আশ্রয়স্থল থাকবেনা, আর না (তোমাদের পাপ) অস্বীকার করার সুযোগ থাকবে।’ ৪৭
4320 ৪২. আশ-শূরা তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তোমাকেতো আমি তাদের রক্ষক করে পাঠাইনি। তোমার কাজতো শুধু প্রচার করে যাওয়া। আমি মানুষকে যখন অনুগ্রহ আস্বাদন করাই তখন সে উৎফুল্ল হয় এবং যখন তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদের বিপদ আপদ ঘটে তখন মানুষ হয়ে যায় অকৃতজ্ঞ। ৪৮
4321 ৪২. আশ-শূরা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই। তিনি যা ইচ্ছা তা’ই সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। ৪৯
4322 ৪২. আশ-শূরা অথবা দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা তাকে করে দেন বন্ধ্যা। তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান। ৫০
4323 ৪২. আশ-শূরা মানুষের এমন মর্যাদা নেই যে, আল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন অহীর মাধ্যম ছাড়া, অথবা পর্দার অন্তরাল ব্যতিত, অথবা এমন দূত প্রেরণ ছাড়া যে দূত তাঁর অনুমতিক্রমে তিনি যা চান তা ব্যক্ত করে। তিনি সমুন্নত, প্রজ্ঞাময়। ৫১
4324 ৪২. আশ-শূরা এভাবে আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করেছি রূহ তথা আমার নির্দেশ; তুমিতো জানতেনা কিতাব কি ও ঈমান কি! পক্ষান্তরে আমি একে করেছি আলো যা দ্বারা আমি আমার বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা পথ-নির্দেশ করি; তুমিতো প্রদর্শন কর শুধু সরল পথ – ৫২
4325 ৪২. আশ-শূরা সেই আল্লাহর পথ যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তার মালিক। জেনে রেখ, সকল বিষয়ের পরিণাম আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তন করে। ৫৩
4326 ৪৩. আয-যুখরুফ হা, মীম।
4327 ৪৩. আয-যুখরুফ শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের!
4328 ৪৩. আয-যুখরুফ আমি এটা অবতীর্ণ করেছি আরাবী ভাষায় কুরআন রূপে, যাতে তোমরা বুঝতে পার।
4329 ৪৩. আয-যুখরুফ এটা রয়েছে আমার নিকট উম্মুল কিতাবে; এটা মহান, জ্ঞানগর্ভ।
4330 ৪৩. আয-যুখরুফ আমি কি তোমাদের হতে এই উপদেশ বাণী সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করে নিব এই কারণে যে, তোমরা সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়?
4331 ৪৩. আয-যুখরুফ পূর্ববর্তীদের নিকট আমি বহু নাবী প্রেরণ করেছিলাম।
4332 ৪৩. আয-যুখরুফ এবং যখনই তাদের নিকট কোন নাবী এসেছে, তারা তাকে ঠাট্টা বিদ্রুপ করেছে।
4333 ৪৩. আয-যুখরুফ তাদের মধ্যে যারা এদের অপেক্ষা শক্তিতে প্রবল ছিল তাদেরকে আমি ধ্বংস করেছিলাম; আর এভাবে চলে আসছে পূর্ববর্তীদের অনুরূপ দৃষ্টান্ত।
4334 ৪৩. আয-যুখরুফ তুমি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস করঃ কে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন? তারা অবশ্যই বলবেঃ এগুলিতো সৃষ্টি করেছেন পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ আল্লাহ –
4335 ৪৩. আয-যুখরুফ যিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে করেছেন শয্যা এবং ওতে করেছেন তোমাদের চলার পথ, যাতে তোমরা সঠিক পথ পেতে পার; ১০
4336 ৪৩. আয-যুখরুফ এবং যিনি আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন পরিমিতভাবে। এবং আমি তদ্বারা সঞ্জীবিত করি নির্জীব ভূখন্ডকে। এভাবেই তোমাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবে। ১১
4337 ৪৩. আয-যুখরুফ এবং যিনি যুগলসমূহের প্রত্যেককে সৃষ্টি করেন এবং যিনি তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেন এমন নৌযান ও চতুস্পদ জন্তু যাতে তোমরা আরোহণ কর – ১২
4338 ৪৩. আয-যুখরুফ যাতে তোমরা ওদের পৃষ্ঠে স্থির হয়ে বসতে পার, তারপর তোমাদের রবের অনুগ্রহ স্মরণ কর যখন তোমরা ওর উপর স্থির হয়ে বস এবং বলঃ পবিত্র ও মহান তিনি যিনি এদেরকে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন যদিও আমরা সমর্থ ছিলামনা এদেরকে বশীভূত করতে। ১৩
4339 ৪৩. আয-যুখরুফ আমরা আমাদের রবের নিকট অবশ্যই প্রত্যাবর্তন করব। ১৪
4340 ৪৩. আয-যুখরুফ তারা তাঁর বান্দাদের মধ্য হতে তাঁর অংশ সাব্যস্ত করেছে। মানুষতো স্পষ্টই অকৃতজ্ঞ। ১৫
4341 ৪৩. আয-যুখরুফ তিনি কি তাঁর সৃষ্টি হতে নিজের জন্য কন্যা সন্তান গ্রহণ করেছেন এবং তোমাদেরকে বিশিষ্ট করেছেন পুত্র সন্তান দ্বারা? ১৬
4342 ৪৩. আয-যুখরুফ দয়াময় আল্লাহর প্রতি তারা যা আরোপ করে তাদের কেহকে সেই সন্তানের সংবাদ দেয়া হলে তার মুখমন্ডল কালো হয়ে যায় এবং সে দুঃসহ মর্ম যাতনায় ক্লিষ্ট হয়। ১৭
4343 ৪৩. আয-যুখরুফ তারা কি আল্লাহর প্রতি আরোপ করে এমন সন্তান, যে অলংকারে আবৃত হয়ে লালিত পালিত হয় এবং তর্ক-বিতর্ক কালে স্পষ্ট বক্তব্যে অসমর্থ? ১৮
4344 ৪৩. আয-যুখরুফ তারা দয়াময় আল্লাহর বান্দা মালাইকাকে নারী গন্য করেছে। এদের সৃষ্টি কি তারা প্রত্যক্ষ করেছিল? তাদের উক্তি লিপিবদ্ধ করা হবে এবং তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে। ১৯
4345 ৪৩. আয-যুখরুফ তারা বলেঃ দয়াময় আল্লাহ ইচ্ছা করলে আমরা এদের পূজা করতামনা। এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই; তারাতো শুধু মিথ্যাই বলছে। ২০
4346 ৪৩. আয-যুখরুফ আমি কি তাদেরকে কুরআনের পূর্বে কোন কিতাব দান করেছি, যা তারা দৃঢ়ভাবে ধারণ করে আছে? ২১
4347 ৪৩. আয-যুখরুফ বরং তারা বলেঃ আমরাতো আমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে পেয়েছি এক মতাদর্শের অনুসারী এবং আমরা তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করছি। ২২
4348 ৪৩. আয-যুখরুফ এভাবে তোমার পূর্বে কোন জনপদে যখনই কোন সতর্ককারী প্রেরণ করেছি তখন ওর সমৃদ্ধশালী ব্যক্তিরা বলতঃ আমরাতো আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে পেয়েছি এক মতাদর্শের অনুসারী এবং আমরা তাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করছি। ২৩
4349 ৪৩. আয-যুখরুফ সেই সতর্ককারী বলতঃ তোমরা তোমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে যে পথে পেয়েছ, আমি যদি তোমাদের জন্য তদপেক্ষা উৎকৃষ্ট পথ-নির্দেশ আনয়ন করি তাহলেও কি তোমরা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে? তারা বলতঃ তোমরা যা সহ প্রেরিত হয়েছ আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি। ২৪
4350 ৪৩. আয-যুখরুফ অতঃপর আমি তাদেরকে তাদের কর্মের প্রতিফল দিলাম; দেখ, মিথ্যাচারীদের পরিণাম কি হয়েছে! ২৫
4351 ৪৩. আয-যুখরুফ স্মরণ কর, ইবরাহীম তার পিতা এবং সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ তোমরা যাদের পূজা কর তাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। ২৬
4352 ৪৩. আয-যুখরুফ সম্পর্ক আছে শুধু তাঁরই সাথে যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই আমাকে সৎ পথে পরিচালিত করবেন। ২৭
4353 ৪৩. আয-যুখরুফ এই ঘোষণাকে সে স্থায়ী বাণী রূপে রেখে গেছে তার পরবর্তীদের জন্য যাতে তারা প্রত্যাবর্তন করে। ২৮
4354 ৪৩. আয-যুখরুফ বরং আমিই তাদেরকে এবং তাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে সুযোগ দিয়েছিলাম ভোগের; অবশেষে তাদের নিকট এলো সত্য ও স্পষ্ট প্রচারক রাসূল। ২৯
4355 ৪৩. আয-যুখরুফ যখন তাদের নিকট সত্য এলো তখন তারা বললঃ এটাতো যাদু এবং আমরা এটা প্রত্যাখ্যান করি। ৩০
4356 ৪৩. আয-যুখরুফ এবং তারা বলেঃ এই কুরআন কেন অবতীর্ণ করা হলনা দুই জনপদের কোন প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তির উপর? ৩১
4357 ৪৩. আয-যুখরুফ তারা কি তোমার রবের করুণা বন্টন করে? আমিই তাদের মধ্যে জীবিকা বন্টন করি তাদের পার্থিব জীবনে এবং একজনকে অপরের উপর মর্যাদায় উন্নীত করি যাতে একে অপরের দ্বারা কাজ করিয়ে নিতে পারে; এবং তারা যা জমা করে তা হতে তোমার রবের অনুগ্রহ উৎকৃষ্টতর। ৩২
4358 ৪৩. আয-যুখরুফ সত্য প্রত্যাখ্যানে মানুষ এক মতাবলম্বী হয়ে পড়বে, এই আশংকা না থাকলে দয়াময় আল্লাহকে যারা অস্বীকার করে তাদেরকে আমি দিতাম তাদের গৃহের জন্য রৌপ্য নির্মিত ছাদ ও সিড়ি যাতে তারা আরোহণ করে। ৩৩
4359 ৪৩. আয-যুখরুফ এবং তাদের গৃহের জন্য দিতাম রৌপ্য নির্মিত দরজা, বিশ্রামের জন্য পালঙ্ক যাতে তারা হেলান দিয়ে বসত। ৩৪
4360 ৪৩. আয-যুখরুফ এবং স্বর্ণের নির্মিতও। আর এই সবইতো শুধু পার্থিব জীবনের ভোগ সম্ভার। মুত্তাকীদের জন্য তোমার রবের নিকট রয়েছে আখিরাতের কল্যাণ। ৩৫
4361 ৪৩. আয-যুখরুফ যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণে বিমুখ হয় আমি তার জন্য নিয়োজিত করি এক শাইতান, অতঃপর সে হয় তার সহচর। ৩৬
4362 ৪৩. আয-যুখরুফ শাইতানরাই মানুষকে সৎ পথ হতে বিরত রাখে, অথচ মানুষ মনে করে যে, তারা সৎ পথে পরিচালিত হচ্ছে। ৩৭
4363 ৪৩. আয-যুখরুফ অবশেষে যখন সে আমার নিকট উপস্থিত হবে তখন সে শাইতানকে বলবেঃ হায়! আমার ও তোমার মধ্যে যদি পূর্ব ও পশ্চিমের ব্যবধান থাকত! কত নিকৃষ্ট সহচর সে! ৩৮
4364 ৪৩. আয-যুখরুফ যেহেতু তোমরা সীমালংঘন করেছিলে, তাই আজ তোমাদের এই অনুতাপ তোমাদের কোন কাজে আসবে না, তোমরা তো সবাই শাস্তিতে শরীক। ৩৯
4365 ৪৩. আয-যুখরুফ তুমি কি শোনাতে পারবে বধিরকে? অথবা যে অন্ধ এবং যে ব্যক্তি স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছে তাকে কি পারবে সৎ পথে পরিচালিত করতে? ৪০
4366 ৪৩. আয-যুখরুফ আমি যদি তোমার মৃত্যু ঘটাই, তবুও আমি তাদেরকে শাস্তি দিব। ৪১
4367 ৪৩. আয-যুখরুফ অথবা আমি তাদেরকে যে শাস্তির ভীতি প্রদর্শন করেছি যদি আমি তোমাকে তা প্রত্যক্ষ করাই তাহলে তাদের উপর আমার পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে। ৪২
4368 ৪৩. আয-যুখরুফ সুতরাং তোমার প্রতি যা অহী করা হয়েছে তা দৃঢ়ভাবে অবলম্বন কর। তুমি সরল পথেই রয়েছ। ৪৩
4369 ৪৩. আয-যুখরুফ নিশ্চয়ই ইহা (কুরআন) তোমার এবং তোমার সম্প্রদায়ের জন্য উপদেশ, তোমাদেরকে অবশ্যই এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। ৪৪
4370 ৪৩. আয-যুখরুফ তোমার পূর্বে আমি যে সব রাসূল প্রেরণ করেছিলাম তাদেরকে তুমি জিজ্ঞেস কর, আমি কি দয়াময় আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য স্থির করেছিলাম যার ইবাদাত করা যায়? ৪৫
4371 ৪৩. আয-যুখরুফ মূসাকে আমি আমার নিদর্শনসহ ফির‘আউন ও তার পরিষদবর্গের নিকট পাঠিয়েছিলাম; সে বলেছিলঃ আমি জগতসমূহের রবের পক্ষ হতে প্রেরিত রাসূল। ৪৬
4372 ৪৩. আয-যুখরুফ সে তাদের নিকট আমার নিদর্শনসহ আসা মাত্র তারা তা নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করতে লাগল। ৪৭
4373 ৪৩. আয-যুখরুফ আমি তাদেরকে এমন কোন নিদর্শন দেখাইনি যা ওর অনুরূপ নিদর্শন অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ নয়। আমি তাদেরকে শাস্তি দিলাম যাতে তারা প্রত্যাবর্তন করে। ৪৮
4374 ৪৩. আয-যুখরুফ তারা বলেছিলঃ হে যাদুকর! তোমার রবের নিকট তুমি আমাদের জন্য তা প্রার্থনা কর যা তিনি তোমার সাথে অংগীকার করেছেন; তাহলে আমরা অবশ্যই সৎ পথ অবলম্বন করব। ৪৯
4375 ৪৩. আয-যুখরুফ অতঃপর যখন আমি তাদের উপর হতে শাস্তি বিদূরিত করলাম তখনই তারা অংগীকার ভংগ করতে লাগল। ৫০
4376 ৪৩. আয-যুখরুফ ফির‘আউন তার সম্প্রদায়ের মধ্যে এই বলে ঘোষণা করলঃ হে আমার সম্প্রদায়! মিসর রাজ্য কি আমার নয়? এই নদীগুলি আমার পাদদেশে প্রবাহিত, তোমরা কি দেখনা? ৫১
4377 ৪৩. আয-যুখরুফ আমি কি শ্রেষ্ঠ নই এই ব্যক্তি হতে যে হীন এবং স্পষ্ট কথা বলতে অক্ষম? ৫২
4378 ৪৩. আয-যুখরুফ মূসাকে কেন দেয়া হল না স্বর্ণ বলয়, অথবা তার সাথে কেন এলো না মালাইকা/ফেরেশতা দলবদ্ধভাবে? ৫৩
4379 ৪৩. আয-যুখরুফ এভাবে সে তার সম্প্রদায়কে হতবুদ্ধি করে দিল। ফলে তারা তার কথা মেনে নিল। তারাতো ছিল এক সত্যত্যাগী সম্প্রদায়। ৫৪
4380 ৪৩. আয-যুখরুফ যখন তারা আমাকে ক্রোধান্বিত করল তখন আমি তাদেরকে শাস্তি দিলাম এবং নিমজ্জিত করলাম তাদের সবাইকে। ৫৫
4381 ৪৩. আয-যুখরুফ অতঃপর পরবর্তীদের জন্য আমি তাদেরকে করে রাখলাম অতীত ইতিহাস ও দৃষ্টান্ত। ৫৬
4382 ৪৩. আয-যুখরুফ যখন মারইয়াম তনয়ের দৃষ্টান্ত উপস্থিত করা হয় তখন তোমার সম্প্রদায় শোরগোল শুরু করে দেয়। ৫৭
4383 ৪৩. আয-যুখরুফ এবং বলেঃ আমাদের দেবতাগুলি শ্রেষ্ঠ, না ঈসা? তারা শুধু বাক-বিতন্ডার উদ্দেশেই তোমাকে এ কথা বলে। বস্তুতঃ তারাতো শুধু বাক-বিতন্ডাকারী সম্প্রদায়। ৫৮
4384 ৪৩. আয-যুখরুফ সেতো ছিল আমারই এক বান্দা, যাকে আমি অনুগ্রহ করেছিলাম এবং করেছিলাম বানী ইসরাঈলের জন্য দৃষ্টান্ত। ৫৯
4385 ৪৩. আয-যুখরুফ আমি ইচ্ছা করলে তোমাদের মধ্য হতে মালাইকা/ফেরেশতা সৃষ্টি করতে পারতাম, যারা পৃথিবীতে উত্তরাধিকারী হত। ৬০
4386 ৪৩. আয-যুখরুফ ঈসাতো কিয়ামাতের নিদর্শন; সুতরাং তোমরা কিয়ামাতে সন্দেহ পোষণ করনা এবং আমাকে অনুসরণ কর। এটাই সরল পথ। ৬১
4387 ৪৩. আয-যুখরুফ শাইতান যেন তোমাদেরকে কিছুতেই নিবৃত্ত না করে, সেতো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। ৬২
4388 ৪৩. আয-যুখরুফ ঈসা যখন স্পষ্ট নিদর্শনসহ এলো তখন সে বললঃ আমিতো তোমাদের নিকট এসেছি প্রজ্ঞাসহ এবং তোমরা যে বিষয়ে মতভেদ করছ তা স্পষ্ট করে দেয়ার জন্য। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার অনুসরণ কর। ৬৩
4389 ৪৩. আয-যুখরুফ আল্লাহই আমার রাব্ব এবং তোমাদের রাব্ব। অতএব তাঁর ইবাদাত কর; এটাই সরল পথ। ৬৪
4390 ৪৩. আয-যুখরুফ অতঃপর তাদের কতিপয় দল মতানৈক্য সৃষ্টি করল; সুতরাং যালিমদের জন্য দুর্ভোগ, যন্ত্রণাদায়ক দিনের শাস্তির। ৬৫
4391 ৪৩. আয-যুখরুফ তারাতো তাদের অজ্ঞাতসারে আকস্মিকভাবে কিয়ামাত আসারই অপেক্ষা করছে। ৬৬
4392 ৪৩. আয-যুখরুফ বন্ধুরা সেই দিন হয়ে পড়বে একে অপরের শত্রু, তবে মু’মিনরা ব্যতীত। ৬৭
4393 ৪৩. আয-যুখরুফ হে আমার বান্দাগণ! আজ তোমাদের কোন ভয় নেই এবং দুঃখিতও হবেনা তোমরা – ৬৮
4394 ৪৩. আয-যুখরুফ যারা আমার আয়াতে বিশ্বাস করেছিল এবং আত্মসমর্পণ করেছিল। ৬৯
4395 ৪৩. আয-যুখরুফ তোমরা এবং তোমাদের সহধর্মিনীগণ সানন্দে জান্নাতে প্রবেশ কর। ৭০
4396 ৪৩. আয-যুখরুফ স্বর্ণের থালা ও পানপাত্র নিয়ে তাদেরকে প্রদক্ষিণ করা হবে; সেখানে রয়েছে সবকিছু, অন্তর যা চায় এবং নয়ন যাতে তৃপ্ত হয়। সেখানে তোমরা স্থায়ী হবে। ৭১
4397 ৪৩. আয-যুখরুফ এটাই জান্নাত, তোমাদেরকে যার অধিকারী করা হয়েছে, তোমাদের কর্মের ফল স্বরূপ। ৭২
4398 ৪৩. আয-যুখরুফ সেখানে তোমাদের জন্য রয়েছে প্রচুর ফলমূল, তোমরা আহার করবে তা হতে। ৭৩
4399 ৪৩. আয-যুখরুফ নিশ্চয়ই অপরাধীরা জাহান্নামের শাস্তিতে থাকবে স্থায়ী। ৭৪
4400 ৪৩. আয-যুখরুফ তাদের শাস্তি লাঘব করা হবেনা এবং তারা হতাশ হয়ে পড়বে। ৭৫
4401 ৪৩. আয-যুখরুফ আমি তাদের প্রতি যুলম করিনি, বরং তারা নিজেরাই ছিল যালিম। ৭৬
4402 ৪৩. আয-যুখরুফ তারা চিৎকার করে বলবেঃ হে মালিক (জাহান্নামের অধিকর্তা) তোমার রাব্ব আমাদেরকে নিঃশেষ করে দিন। সে বলবেঃ তোমরা এভাবেই থাকবে। ৭৭
4403 ৪৩. আয-যুখরুফ আল্লাহ বলবেনঃ আমি তোমাদের নিকট সত্য পৌঁছিয়ে ছিলাম, কিন্তু তোমাদের অধিকাংশই ছিলে সত্য বিমুখ। ৭৮
4404 ৪৩. আয-যুখরুফ তারা কি কোন ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে? আমিই সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী। ৭৯
4405 ৪৩. আয-যুখরুফ তারা কি মনে করে যে, আমি তাদের গোপন বিষয় ও মন্ত্রনার খবর রাখিনা? অবশ্যই রাখি। আমার মালাইকা/ফেরেশতাতো তাদের নিকট থেকে সব কিছু লিপিবদ্ধ করে। ৮০
4406 ৪৩. আয-যুখরুফ বলঃ দয়াময় ‘রাহমানের’ কোন সন্তান থাকলে আমি হতাম তার উপাসকগণের অগ্রণী। ৮১
4407 ৪৩. আয-যুখরুফ তারা যা আরোপ করে তা হতে পবিত্র আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর মহান অধিপতি এবং আরশের অধিকারী। ৮২
4408 ৪৩. আয-যুখরুফ অতএব তাদেরকে যে দিনের কথা বলা হয়েছে তার সম্মুখীন হবার পূর্ব পর্যন্ত বাক-বিতন্ডা ও ক্রীড়া-কৌতুক করতে দাও। ৮৩
4409 ৪৩. আয-যুখরুফ তিনিই মা‘বূদ নভোমন্ডলের, তিনিই মা‘বূদ ভূতলের এবং তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ। ৮৪
4410 ৪৩. আয-যুখরুফ কত মহান তিনি, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এইগুলির মধ্যবর্তী সব কিছুর সার্বভৌম অধিপতি! কিয়ামাতের জ্ঞান শুধু তাঁরই আছে এবং তাঁরই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। ৮৫
4411 ৪৩. আয-যুখরুফ আল্লাহর পরিবর্তে তারা যাদেরকে ডাকে, সুপারিশের ক্ষমতা তাদের নেই, তবে যারা সত্য উপলব্ধি করে ওর সাক্ষ্য দেয় তারা ব্যতীত। ৮৬
4412 ৪৩. আয-যুখরুফ তুমি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর, কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছে তাহলে তারা অবশ্যই বলবেঃ আল্লাহ! তবুও তারা কোথায় ফিরে যাচ্ছে? ৮৭
4413 ৪৩. আয-যুখরুফ আমি অবগত আছি রাসূলের এই উক্তি - হে আমার রাব্ব! এই সম্প্রদায়তো ঈমান আনবেনা। ৮৮
4414 ৪৩. আয-যুখরুফ সুতরাং তুমি তাদেরকে উপেক্ষা কর এবং বলঃ সালাম! তারা শীঘ্রই জানতে পারবে। ৮৯
4415 ৪৪. আদ-দুখান হা মীম।
4416 ৪৪. আদ-দুখান শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের।
4417 ৪৪. আদ-দুখান আমি ইহা অবতীর্ণ করেছি এক মুবারাক রাতে, আমিতো সতর্ককারী।
4418 ৪৪. আদ-দুখান এ রাতে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয় –
4419 ৪৪. আদ-দুখান আমার আদেশক্রমে; আমি রাসূল প্রেরণ করে থাকি –
4420 ৪৪. আদ-দুখান তোমার রবের অনুগ্রহ স্বরূপ, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ –
4421 ৪৪. আদ-দুখান যিনি আকাশমন্ডলী, পৃথিবী এবং ওগুলির মধ্যস্থিত সব কিছুর রাব্ব - যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাসী হও।
4422 ৪৪. আদ-দুখান তিনি ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই, তিনি জীবন দান করেন এবং তিনিই মৃত্যু ঘটান; তিনিই তোমাদের এবং তোমাদের পূর্ব-পুরুষদেরও রাব্ব।
4423 ৪৪. আদ-দুখান বস্তুতঃ তারা সন্দেহের বশবর্তী হয়ে হাসি ঠাট্টা করছে।
4424 ৪৪. আদ-দুখান অতএব তুমি অপেক্ষা কর সেই দিনের যেদিন স্পষ্ট ধুম্রাচ্ছন্ন হবে আকাশ। ১০
4425 ৪৪. আদ-দুখান এবং তা আবৃত করে ফেলবে মানব জাতিকে। এটা হবে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ১১
4426 ৪৪. আদ-দুখান তখন তারা বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে এই শাস্তি হতে মুক্তি দিন, আমরা ঈমান আনব। ১২
4427 ৪৪. আদ-দুখান তারা কি করে উপদেশ গ্রহণ করবে? তাদের নিকটতো এসেছে স্পষ্ট ব্যাখ্যাকারী এক রাসূল; ১৩
4428 ৪৪. আদ-দুখান অতঃপর তারা তাকে অমান্য করে বলেঃ সেতো শিখানো বুলি বলছে, সেতো এক পাগল। ১৪
4429 ৪৪. আদ-দুখান আমি তোমাদের শাস্তি কিছু কালের জন্য রহিত করছি, তোমরাতো তোমাদের পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে। ১৫
4430 ৪৪. আদ-দুখান যেদিন আমি তোমাদেরকে প্রবলভাবে পাকড়াও করব সেদিন আমি তোমাদেরকে শাস্তি দিবই। ১৬
4431 ৪৪. আদ-দুখান এদের পূর্বে আমি ফির‘আউন সম্প্রদায়কে পরীক্ষা করেছিলাম এবং তাদের নিকটও এসেছিল এক মহান রাসূল। ১৭
4432 ৪৪. আদ-দুখান সে বললঃ আল্লাহর বান্দাদেরকে আমার নিকট প্রত্যর্পণ কর। আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল। ১৮
4433 ৪৪. আদ-দুখান এবং তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে উদ্ধত হয়োনা, আমি তোমাদের নিকট উপস্থিত করছি স্পষ্ট প্রমাণ। ১৯
4434 ৪৪. আদ-দুখান তোমরা যাতে আমাকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করতে না পার তজ্জন্য আমি আমার রাব্ব ও তোমাদের রবের আশ্রয় প্রার্থনা করছি। ২০
4435 ৪৪. আদ-দুখান যদি তোমরা আমার কথায় বিশ্বাস স্থাপন না কর তাহলে তোমরা আমা হতে দূরে থাক। ২১
4436 ৪৪. আদ-দুখান অতঃপর মূসা তার রবের নিকট নিবেদন করলঃ এরাতো এক অপরাধী সম্প্রদায়। ২২
4437 ৪৪. আদ-দুখান আমি বলেছিলামঃ তুমি আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাতে বের হয়ে পড়, তোমাদের পশ্চাদ্ধাবন করা হবে। ২৩
4438 ৪৪. আদ-দুখান সমুদ্রকে স্থির থাকতে দাও, তারা এমন এক বাহিনী যারা নিমজ্জিত হবে। ২৪
4439 ৪৪. আদ-দুখান তারা পশ্চাতে রেখে গেল কত উদ্যান ও প্রস্রবণ, ২৫
4440 ৪৪. আদ-দুখান কত শস্য ক্ষেত ও সুরম্য প্রাসাদ, ২৬
4441 ৪৪. আদ-দুখান কত বিলাস উপকরণ, যা তাদেরকে আনন্দ দিত। ২৭
4442 ৪৪. আদ-দুখান এরূপই ঘটেছিল এবং আমি এই সমুদয়ের উত্তরাধিকারী করেছিলাম ভিন্ন সম্প্রদায়কে। ২৮
4443 ৪৪. আদ-দুখান আকাশ এবং পৃথিবীর কেহই তাদের জন্য অশ্রুপাত করেনি এবং তাদেরকে অবকাশও দেয়া হয়নি। ২৯
4444 ৪৪. আদ-দুখান আমি উদ্ধার করেছিলাম বানী ইসরাঈলকে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি হতে – ৩০
4445 ৪৪. আদ-দুখান ফির‘আউনের; সে তো পরাক্রান্ত সীমালংঘনকারীদের মধ্যে। ৩১
4446 ৪৪. আদ-দুখান আমি জেনে শুনেই তাদেরকে বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছিলাম। ৩২
4447 ৪৪. আদ-দুখান এবং তাদেরকে দিয়েছিলাম নিদর্শনাবলী, যাতে ছিল সুস্পষ্ট পরীক্ষা। ৩৩
4448 ৪৪. আদ-দুখান তারা বলেই থাকে – ৩৪
4449 ৪৪. আদ-দুখান আমাদের প্রথম মৃত্যু ব্যতীত আর কিছুই নেই এবং আমরা আর পুনরুত্থিত হবনা। ৩৫
4450 ৪৪. আদ-দুখান অতএব তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলে আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে উপস্থিত কর। ৩৬
4451 ৪৪. আদ-দুখান শ্রেষ্ঠ কি তারা না তুব্বা সম্প্রদায় ও তাদের পূর্ববর্তীরা? আমি তাদেরকে ধ্বংস করেছিলাম, অবশ্যই তারা ছিল অপরাধী। ৩৭
4452 ৪৪. আদ-দুখান আমি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এতদুভয়ের মধ্যস্থিত কোন কিছুই ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি। ৩৮
4453 ৪৪. আদ-দুখান আমি এ দু’টি অযথা সৃষ্টি করিনি, কিন্তু তাদের অধিকাংশই এটা জানেনা। ৩৯
4454 ৪৪. আদ-দুখান নিশ্চয়ই সকলের জন্য নির্ধারিত রয়েছে তাদের বিচার দিবস – ৪০
4455 ৪৪. আদ-দুখান যেদিন এক বন্ধু অপর বন্ধুর কোন কাজে আসবেনা এবং তারা সাহায্যও পাবেনা। ৪১
4456 ৪৪. আদ-দুখান তবে আল্লাহ যার প্রতি দয়া করেন তার কথা স্বতন্ত্র। তিনি পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু। ৪২
4457 ৪৪. আদ-দুখান নিশ্চয়ই যাক্কুম বৃক্ষ হবে – ৪৩
4458 ৪৪. আদ-দুখান পাপীর খাদ্য। ৪৪
4459 ৪৪. আদ-দুখান গলিত তাম্রের মত; ওটা তার উদরে ফুটতে থাকবে – ৪৫
4460 ৪৪. আদ-দুখান ফুটন্ত পানির মত। ৪৬
4461 ৪৪. আদ-দুখান (বলা হবে) তাকে ধর এবং টেনে নিয়ে যাও জাহান্নামের মধ্যস্থলে। ৪৭
4462 ৪৪. আদ-দুখান অতঃপর তার মাথার উপর ফুটন্ত পানি ঢেলে দিয়ে শাস্তি দাও। ৪৮
4463 ৪৪. আদ-দুখান এবং বলা হবেঃ আস্বাদন কর, তুমিতো ছিলে সম্মানিত, অভিজাত। ৪৯
4464 ৪৪. আদ-দুখান এটাতো ওটাই, যে বিষয়ে তোমরা সন্দেহ করতে। ৫০
4465 ৪৪. আদ-দুখান মুত্তাকীরা থাকবে নিরাপদ স্থানে – ৫১
4466 ৪৪. আদ-দুখান উদ্যান ও ঝর্ণার মাঝে। ৫২
4467 ৪৪. আদ-দুখান তারা পরিধান করবে মিহি ও পুরু রেশমী বস্ত্র এবং তারা মুখোমুখী হয়ে বসবে। ৫৩
4468 ৪৪. আদ-দুখান এরূপই ঘটবে; তাদেরকে সঙ্গিনী দিব আয়তলোচনা হুর। ৫৪
4469 ৪৪. আদ-দুখান সেখানে তারা প্রশান্তচিত্তে বিবিধ ফলমূল আনতে বলবে। ৫৫
4470 ৪৪. আদ-দুখান প্রথম মৃত্যুর পর তারা সেখানে আর মৃত্যু আস্বাদন করবেনা। তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা করবেন – ৫৬
4471 ৪৪. আদ-দুখান তোমার রাব্ব নিজ অনুগ্রহে। এটাইতো মহা সাফল্য। ৫৭
4472 ৪৪. আদ-দুখান আমি তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। ৫৮
4473 ৪৪. আদ-দুখান সুতরাং তুমি প্রতীক্ষা কর, তারাওতো প্রতীক্ষমান। ৫৯
4474 ৪৫. আল-জাসিয়া হা মীম।
4475 ৪৫. আল-জাসিয়া এই কিতাব পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহর নিকট হতে অবতীর্ণ।
4476 ৪৫. আল-জাসিয়া আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে নিদর্শন রয়েছে মু’মিনদের জন্য।
4477 ৪৫. আল-জাসিয়া তোমাদের সৃষ্টিতে এবং জীবজন্তুর বিস্তারে নিদর্শন রয়েছে নিশ্চিত বিশ্বাসীদের জন্য।
4478 ৪৫. আল-জাসিয়া নিদর্শন রয়েছে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য, রাত ও দিনের পরিবর্তনে, আল্লাহ আকাশ হতে যে বারি বর্ষণ দ্বারা ধরিত্রীকে ওর মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত করেন তাতে এবং বায়ুর পরিবর্তনে।
4479 ৪৫. আল-জাসিয়া এগুলি আল্লাহর আয়াত যা আমি তোমার নিকট আবৃত্তি করছি যথাযথভাবে; সুতরাং আল্লাহ এবং তাঁর আয়াতের পরিবর্তে তারা আর কোন্ বাণীতে বিশ্বাস করবে?
4480 ৪৫. আল-জাসিয়া দুর্ভোগ প্রত্যেক মিথ্যাবাদী পাপীর।
4481 ৪৫. আল-জাসিয়া যে আল্লাহর আয়াতের আবৃত্তি শোনে, অথচ ঔদ্ধত্যের সাথে অটল থাকে যেন সে তা শোনেনি, তাকে সংবাদ দাও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির
4482 ৪৫. আল-জাসিয়া যখন আমার কোন আয়াত সে অবগত হয় তখন সে তা নিয়ে পরিহাস করে। তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।
4483 ৪৫. আল-জাসিয়া তাদের পশ্চাতে রয়েছে জাহান্নাম; তাদের কৃতকর্ম তাদের কোন কাজে আসবেনা, তারা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে অভিভাবক স্থির করেছে তারাও নয়। তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি। ১০
4484 ৪৫. আল-জাসিয়া কুরআন সৎ পথের দিশারী; যারা তাদের রবের নিদর্শনাবলী প্রত্যাখ্যান করে তাদের জন্য রয়েছে অতিশয় যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ১১
4485 ৪৫. আল-জাসিয়া আল্লাহই সমুদ্রকে তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন, যাতে তাঁর আদেশে তাতে নৌযানসমূহ চলাচল করতে পারে এবং যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করতে পার ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হও। ১২
4486 ৪৫. আল-জাসিয়া তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সব কিছু নিজ অনুগ্রহে। চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য এতে রয়েছে নিদর্শন। ১৩
4487 ৪৫. আল-জাসিয়া মু’মিনদেরকে বলঃ তারা যেন ক্ষমা করে তাদেরকে যারা আল্লাহর দিনগুলির প্রত্যাশা করেনা, এটা এ জন্য যে আল্লাহ প্রত্যেক সম্প্রদায়কে তার কৃতকর্মের জন্য প্রতিদান দিবেন। ১৪
4488 ৪৫. আল-জাসিয়া যে সৎ কাজ করে সে তার কল্যাণের জন্যই তা করে এবং কেহ মন্দ কাজ করলে ওর প্রতিফল সে’ই ভোগ করবে, অতঃপর তোমরা তোমাদের রবের নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে। ১৫
4489 ৪৫. আল-জাসিয়া আমিতো বানী ইসরাঈলকে কিতাব, কর্তৃত্ব ও নবুওয়াত দান করেছিলাম এবং তাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ দিয়েছিলাম এবং দিয়েছিলাম শ্রেষ্ঠত্ব বিশ্বজগতের উপর। ১৬
4490 ৪৫. আল-জাসিয়া তাদেরকে সুস্পষ্ট প্রমাণ দান করেছিলাম দীন সম্পর্কে। তাদের নিকট জ্ঞান আসার পর তারা শুধু পরস্পর বিদ্বেষবশতঃ বিরোধিতা করেছিল, তারা যে বিষয়ে মতবিরোধ করত, তোমার রাব্ব কিয়ামাত দিবসে তাদের মধ্যে সেই বিষয়ের ফায়সালা করে দিবেন। ১৭
4491 ৪৫. আল-জাসিয়া এরপর আমি তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি দীনের বিশেষ বিধানের উপর। সুতরাং তুমি ওর অনুসরণ কর, অজ্ঞদের খেয়াল খুশীর অনুসরণ করনা। ১৮
4492 ৪৫. আল-জাসিয়া আল্লাহর মুকাবিলায় তারা তোমার কোন উপকার করতে পারবেনা; যালিমরা একে অপরের বন্ধু; আর আল্লাহ মুত্তাকীদের বন্ধু। ১৯
4493 ৪৫. আল-জাসিয়া এই কুরআন মানব জাতির জন্য সুস্পষ্ট দলীল এবং নিশ্চিত বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য পথনির্দেশ ও রাহমাত। ২০
4494 ৪৫. আল-জাসিয়া দুস্কৃতিকারীরা কি মনে করে যে, আমি জীবন ও মৃত্যুর দিক দিয়ে তাদেরকে তাদের সমান গণ্য করব, যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে? তাদের সিদ্ধান্ত কতই মন্দ! ২১
4495 ৪৫. আল-জাসিয়া আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন যথাযথভাবে এবং যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি তার কাজ অনুযায়ী ফল পেতে পারে, আর তাদের প্রতি যুলম করা হবে না। ২২
4496 ৪৫. আল-জাসিয়া তুমি কি লক্ষ্য করছ তাকে, যে তার খেয়াল খুশীকে নিজের মা‘বূদ বানিয়ে নিয়েছে? আল্লাহ জেনে শুনেই তাকে বিভ্রান্ত করেছেন এবং তার কর্ণ ও হৃদয় মোহর করে দিয়েছেন এবং তার চক্ষুর উপর রেখেছেন আবরণ। অতএব, কে তাকে পথ নির্দেশ করবে? তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবেনা? ২৩
4497 ৪৫. আল-জাসিয়া তারা বলেঃ একমাত্র পার্থিব জীবনই আমাদের জীবন, আমরা মরি ও বাঁচি, আর সময়ই (কাল) আমাদেরকে ধ্বংস করে। বস্তুতঃ এ ব্যাপারে তাদের কোন জ্ঞান নেই, তারাতো শুধু মনগড়া কথা বলে। ২৪
4498 ৪৫. আল-জাসিয়া তাদের নিকট যখন আমার সুস্পষ্ট আয়াত আবৃত্তি করা হয় তখন তাদের কোন যুক্তি থাকেনা শুধু এই উক্তি ছাড়া যে, তোমরা সত্যবাদী হলে আমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে উপস্থিত কর। ২৫
4499 ৪৫. আল-জাসিয়া বলঃ আল্লাহই তোমাদেরকে জীবন দান করেন ও তোমাদের মৃত্যু ঘটান। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে কিয়ামাত দিবসে একত্রিত করবেন যাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানেনা। ২৬
4500 ৪৫. আল-জাসিয়া আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই; যেদিন কিয়ামাত সংঘটিত হবে সেদিন মিথ্যাশ্রয়ীরা হবে ক্ষতিগ্রস্ত। ২৭
4501 ৪৫. আল-জাসিয়া এবং প্রত্যেক সম্প্রদায়কে দেখবে ভয়ে নতজানু; প্রত্যেক সম্প্রদায়কে তার আমলনামার প্রতি আহবান করা হবে, আজ তোমাদেরকে তারই প্রতিফল দেয়া হবে যা তোমরা করতে। ২৮
4502 ৪৫. আল-জাসিয়া এই আমার লিপি, এটা তোমাদের বিরুদ্ধে সত্য সাক্ষ্য দিবে। তোমরা যা করতে তা আমি লিপিবদ্ধ করেছিলাম। ২৯
4503 ৪৫. আল-জাসিয়া যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে, তাদের রাব্ব তাদেরকে দাখিল করবেন স্বীয় রাহমাতে। এটাই মহা সাফল্য। ৩০
4504 ৪৫. আল-জাসিয়া পক্ষান্তরে যারা কুফরী করে তাদেরকে বলা হবেঃ তোমাদের নিকট কি আমার আয়াত পাঠ করা হয়নি? কিন্তু তোমরা ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছিলে এবং তোমরা ছিলে এক অপরাধী সম্প্রদায়। ৩১
4505 ৪৫. আল-জাসিয়া যখন বলা হয়ঃ আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং কিয়ামাত - এতে কোন সন্দেহ নেই, তখন তোমরা বলে থাকঃ আমরা জানিনা কিয়ামাত কি; আমরা মনে করি এটা একটি ধারনা মাত্র এবং আমরা এ বিষয়ে নিশ্চিত নই। ৩২
4506 ৪৫. আল-জাসিয়া তাদের মন্দ কাজগুলি তাদের নিকট প্রকাশ হয়ে পড়বে এবং যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করত তা তাদেরকে পরিবেষ্টন করবে। ৩৩
4507 ৪৫. আল-জাসিয়া আর বলা হবেঃ আজ আমি তোমাদেরকে বিস্মৃত হব যেমন তোমরা এই দিনের সাক্ষাৎকারকে বিস্মৃত হয়েছিলে। তোমাদের আশ্রয়স্থল হবে জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী থাকবেনা। ৩৪
4508 ৪৫. আল-জাসিয়া এটা এ জন্য যে, তোমরা আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে বিদ্রুপ করেছিলে এবং পার্থিব জীবন তোমাদেরকে প্রতারিত করেছিল। সুতরাং সেদিন তাদেরকে জাহান্নাম হতে বের করা হবেনা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টার সুযোগ দেয়া হবেনা। ৩৫
4509 ৪৫. আল-জাসিয়া প্রশংসা আল্লাহরই যিনি আকাশমন্ডলীর রাব্ব, পৃথিবীর রাব্ব, জগতসমূহের রাব্ব। ৩৬
4510 ৪৫. আল-জাসিয়া আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে গৌরব গরিমা তাঁরই এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ৩৭
4511 ৪৬. আল-আহকাফ হা মীম।
4512 ৪৬. আল-আহকাফ এই কিতাব পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহর নিকট হতে অবতীর্ণ।
4513 ৪৬. আল-আহকাফ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এতদুভয়ের মধ্যস্থিত সব কিছুই আমি যথাযথভাবে নির্দিষ্ট কালের জন্য সৃষ্টি করেছি; কিন্তু কাফিরদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
4514 ৪৬. আল-আহকাফ বলঃ তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে ডাক তাদের কথা ভেবে দেখেছ কি? তারা পৃথিবীতে কি সৃষ্টি করেছে আমাকে দেখাও অথবা আকাশমন্ডলীতে তাদের কোন অংশীদারীত্ব আছে কি? পূর্ববর্তী কোন কিতাব অথবা পরম্পরাগত কোন জ্ঞান থাকলে তা তোমরা আমার নিকট উপস্থিত কর - যদি তোমরা সত্যবাদী হও।
4515 ৪৬. আল-আহকাফ সেই ব্যক্তি অপেক্ষা বিভ্রান্ত কে যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে যা কিয়ামাতের দিন পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দিবেনা? এবং ওগুলি তাদের প্রার্থনা সম্বন্ধে অবহিত নয়।
4516 ৪৬. আল-আহকাফ যখন কিয়ামাত দিবসে মানুষকে একত্রিত করা হবে তখন ঐগুলো হবে তাদের শত্রু, ঐগুলো তাদের ইবাদাত অস্বীকার করবে।
4517 ৪৬. আল-আহকাফ যখন তাদের নিকট আমার সুস্পষ্ট আয়াত আবৃত্তি করা হয় এবং তাদের নিকট সত্য উপস্থিত হয় তখন কাফিরেরা বলেঃ এটাতো সুস্পষ্ট যাদু।
4518 ৪৬. আল-আহকাফ তারা কি তাহলে বলে যে, সে এটা উদ্ভাবন করেছে? বলঃ যদি আমি উদ্ভাবন করে থাকি তাহলে তোমরা আল্লাহর শাস্তি হতে আমাকে কিছুতেই রক্ষা করতে পারবেনা। তোমরা যে বিষয়ে আলোচনায় লিপ্ত আছ সেই সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত। আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসাবে তিনিই যথেষ্ট এবং তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
4519 ৪৬. আল-আহকাফ বলঃ আমি এমন কোন প্রথম ও নতুন নাবী নই। আমি জানিনা, আমার ও তোমাদের ব্যাপারে কি করা হবে; আমি আমার প্রতি যা অহী করা হয় শুধু তারই অনুসরণ করি। আমি এক স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।
4520 ৪৬. আল-আহকাফ বলঃ তোমরা ভেবে দেখেছ কি যে, এই কুরআন আল্লাহর নিকট হতে অবতীর্ণ হয়ে থাকে, আর তোমরা এতে অবিশ্বাস কর, উপরন্ত বানী ইসরাঈলের একজন এর অনুরূপ সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়ে এতে বিশ্বাস স্থাপন করল অথচ তোমরা কর ঔদ্ধত্য প্রকাশ, তাহলে তোমাদের পরিণাম কি হবে? আল্লাহ যালিমদেরকে সৎ পথে চালিত করেননা। ১০
4521 ৪৬. আল-আহকাফ মু’মিনদের সম্পর্কে কাফিরেরা বলেঃ এটা ভাল হলে তারা এর দিকে আমাদের চেয়ে অগ্রগামী হতনা। তারা এর দ্বারা পরিচালিত নয় বলে, বলেঃ এটাতো এক পুরাতন মিথ্যা। ১১
4522 ৪৬. আল-আহকাফ এর পূর্বে ছিল মূসার কিতাব - আদর্শ ও অনুগ্রহ স্বরূপ এই কিতাব - এর সমর্থক, আরাবী ভাষায়, যেন এটা যালিমদেরকে সতর্ক করে এবং যারা সৎ কাজ করে তাদেরকে সুসংবাদ দেয়। ১২
4523 ৪৬. আল-আহকাফ যারা বলেঃ আমাদের রাব্বতো আল্লাহ এবং এই বিশ্বাসে অবিচল থাকে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবেনা। ১৩
4524 ৪৬. আল-আহকাফ এরাই জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে এরা স্থায়ী হবে, এটাই তাদের কর্মফল। ১৪
4525 ৪৬. আল-আহকাফ আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার জননী তাকে গর্ভে ধারণ করে কষ্টের সাথে এবং প্রসব করে কষ্টের সাথে, তার গর্ভধারণ ও দুধ ছাড়ানোর সময়কাল ত্রিশ মাস, ক্রমে সে পূর্ণ শক্তি প্রাপ্ত হয় এবং চল্লিশ বছরে উপনীত হওয়ার পর বলেঃ হে আমার রাব্ব! আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন যাতে আমি আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার মাতা-পিতার প্রতি আপনি যে অনুগ্রহ করেছেন তার জন্য এবং যাতে আমি সৎ কাজ করতে পারি যা আপনি পছন্দ করেন; আমার জন্য আমার সন্তান সন্ততিদেরকে সৎকর্মপরায়ণ করুন, আমি আপনারই অভিমুখী হলাম এবং আত্মসমর্পণ করলাম। ১৫
4526 ৪৬. আল-আহকাফ আমি এদের সৎকাজগুলি গ্রহণ করে থাকি এবং মন্দ কাজগুলি ক্ষমা করি, তারা জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত। এদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা সত্য প্রমাণিত হবে। ১৬
4527 ৪৬. আল-আহকাফ আর এমন লোক আছে, যে তার মাতা-পিতাকে বলেঃ আফসোস তোমাদের জন্য। তোমরা কি আমাকে এ ভয় দেখাতে চাও যে, আমি পুনরুত্থিত হব যদিও আমার পূর্বে বহু পুরুষ গত হয়েছে! তখন তার মাতা-পিতা আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ করে বলেঃ দুর্ভোগ তোমার জন্য! বিশ্বাস স্থাপন কর, আল্লাহর প্রতিশ্রুতি অবশ্যই সত্য। কিন্তু সে বলেঃ এটাতো অতীত কালের উপকথা ব্যতীত কিছুই নয়। ১৭
4528 ৪৬. আল-আহকাফ এদের পূর্বে যে জিন ও মানুষ সম্প্রদায় গত হয়েছে তাদের মত এদের প্রতিও আল্লাহর উক্তি সত্য হয়েছে। এরাই ক্ষতিগ্রস্ত। ১৮
4529 ৪৬. আল-আহকাফ প্রত্যেকের মর্যাদা তার কাজ অনুযায়ী; এটা এ জন্য যে, আল্লাহ প্রত্যেকের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিবেন এবং তার প্রতি অবিচার করা হবেনা। ১৯
4530 ৪৬. আল-আহকাফ যেদিন কাফিরদেরকে জাহান্নামের সন্নিকটে উপস্থিত করা হবে সেদিন তাদেরকে বলা হবেঃ তোমরাতো পার্থিব জীবনে সুখ-সম্ভোগ ভোগ করে নিঃশেষ করেছ, সুতরাং আজ তোমাদেরকে দেয়া হবে অবমাননাকর শাস্তি; কারণ তোমরা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছিলে এবং তোমরা ছিলে সত্যদ্রোহী। ২০
4531 ৪৬. আল-আহকাফ স্মরণ কর, ‘আদ সম্প্রদায়ের ভাইয়ের কথা, যার পূর্বে এবং পরেও সতর্ককারী এসেছিল, সে তার আহকাফবাসী সম্প্রদায়কে বালুকাময় উচ্চ উপত্যকায় সতর্ক করেছিল এই বলেঃ আল্লাহ ব্যতীত কারও ইবাদাত করনা। আমি তোমাদের জন্য মহাদিনের শাস্তির আশংকা করছি। ২১
4532 ৪৬. আল-আহকাফ তারা বলেছিলঃ তুমি আমাদেরকে আমাদের দেব দেবীগুলির পূজা হতে নিবৃত্ত করতে এসেছ? তুমি সত্যবাদী হলে আমাদেরকে যার ভয় দেখাচ্ছ তা আনয়ণ কর। ২২
4533 ৪৬. আল-আহকাফ সে বললঃ এর জ্ঞানতো শুধু আল্লাহর নিকট রয়েছে; আমি যা সহ প্রেরিত হয়েছি শুধু তা’ই তোমাদের নিকট প্রচার করি, কিন্তু আমি দেখছি, তোমরা এক মূঢ় সম্প্রদায়। ২৩
4534 ৪৬. আল-আহকাফ অতঃপর যখন তারা তাদের উপত্যকার দিকে মেঘ আসতে দেখল তখন তারা বলতে লাগলঃ ওটাতো মেঘ, আমাদেরকে বৃষ্টি দান করবে। হুদ বললঃ এটাইতো ওটা যা তোমরা ত্বরান্বিত করতে চেয়েছ, এতে রয়েছে এক ঝড়-মর্মন্তদ শাস্তি বহনকারী। ২৪
4535 ৪৬. আল-আহকাফ আল্লাহর নির্দেশে এটা সব কিছুকে ধ্বংস করে দিবে। অতঃপর তাদের পরিণাম এই হল যে, তাদের বসতিগুলি ছাড়া আর কিছুই রইলনা। এভাবে আমি অপরাধী সম্প্রদায়কে প্রতিফল দিয়ে থাকি। ২৫
4536 ৪৬. আল-আহকাফ আমি তাদেরকে যে প্রতিষ্ঠা দিয়েছিলাম, তোমাদেরকে তা দেইনি; আমি তাদেরকে দিয়েছিলাম কান, চোখ ও হৃদয়; কিন্তু ঐ কান, চোখ ও হৃদয় তাদের কোন কাজে আসেনি; কেননা তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছিল। যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করত তা’ই তাদেরকে পরিবেষ্টন করল। ২৬
4537 ৪৬. আল-আহকাফ আমিতো ধ্বংস করেছিলাম তোমাদের চতুস্পার্শ্ববর্তী জনপদসমূহ; আমি তাদেরকে বিভিন্নভাবে আমার নিদর্শনাবলী বিবৃত করেছিলাম, যাতে তারা ফিরে আসে সৎ পথে। ২৭
4538 ৪৬. আল-আহকাফ তারা আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের জন্য আল্লাহর পরিবর্তে যাদেরকে মা‘বূদ রূপে গ্রহণ করেছিল তারা তাদেরকে সাহায্য করলনা কেন? বস্তুতঃ তাদের মা‘বূদগুলি তাদের নিকট হতে অন্তর্হিত হয়ে পড়ল। তাদের মিথ্যা ও অলীক উদ্ভাবনের পরিণাম এরূপই। ২৮
4539 ৪৬. আল-আহকাফ স্মরণ কর, আমি তোমার প্রতি আকৃষ্ট করেছিলাম একদল জিনকে, যারা কুরআন পাঠ শুনছিল, যখন তারা তার নিকট উপস্থিত হল; তারা একে অপরকে বলতে লাগলঃ চুপ করে শ্রবণ কর। যখন কুরআন পাঠ সমাপ্ত হল তখন তারা তাদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে গেল সতর্ককারীরূপে। ২৯
4540 ৪৬. আল-আহকাফ তারা বলেছিলঃ হে আমাদের সম্প্রদায়! আমরা এক কিতাব পাঠ শ্রবণ করেছি যা অবতীর্ণ হয়েছে মূসার পরে, এটা তার পূর্ববর্তী কিতাবকে সমর্থন করে এবং সত্য ও সরল পথের দিকে পরিচালিত করে। ৩০
4541 ৪৬. আল-আহকাফ হে আমাদের সম্প্রদায়! আল্লাহর দিকে আহবানকারীর প্রতি সাড়া দাও এবং তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, আল্লাহ তোমাদের পাপ ক্ষমা করবেন এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হতে তোমাদেরকে রক্ষা করবেন। ৩১
4542 ৪৬. আল-আহকাফ যদি কেহ আল্লাহর দিকে আহবানকারীর ডাকে সাড়া না দেয় তাহলে সে পৃথিবীতে আল্লাহর অভিপ্রায় ব্যর্থ করতে পারবেনা এবং আল্লাহ ছাড়া তাদের কোন সাহায্যকারী থাকবেনা। তারাতো সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে। ৩২
4543 ৪৬. আল-আহকাফ তারা কি দেখেনা যে, আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এ সবের সৃষ্টিতে কোন ক্লান্তি বোধ করেননি? তিনি মৃতকে জীবন দান করতেও সক্ষম। নিশ্চয়ই তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। ৩৩
4544 ৪৬. আল-আহকাফ যেদিন কাফিরদেরকে উপস্থিত করা হবে জাহান্নামের নিকট, সেদিন তাদেরকে বলা হবেঃ এটা কি সত্য নয়? তারা বলবেঃ আমাদের রবের শপথ! এটা সত্য। তখন তাদেরকে বলা হবেঃ শাস্তি আস্বাদান কর। কারণ তোমরা ছিলে সত্য প্রত্যাখ্যানকারী। ৩৪
4545 ৪৬. আল-আহকাফ অতএব তুমি ধৈর্য ধারণ কর যেমন করেছিল দৃঢ় প্রতিজ্ঞ রাসূলগণ এবং তাদের জন্য (শাস্তির) প্রার্থনায় তড়িঘড়ি করনা। তাদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে তা যেদিন তারা প্রত্যক্ষ করবে সেদিন তাদের মনে হবে, তারা যেন দিনের এক দন্ডের বেশি পৃথিবীতে অবস্থান করেনি। এটা এক স্পষ্ট ঘোষণা, আল্লাহ হতে বিমুখ সম্প্রদায় ব্যতীত কেহকেও ধ্বংস করা হবেনা। ৩৫
4546 ৪৭. মুহাম্মাদ যারা কুফরী করে এবং অপরকে আল্লাহর পথ হতে নিবৃত্ত করে তিনি তাদের কাজ ব্যর্থ করে দেন।
4547 ৪৭. মুহাম্মাদ যারা ঈমান আনে, সৎ কাজ করে এবং মুহাম্মাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে বিশ্বাস করে, আর উহাই (কুরআন) তাদের রাব্ব হতে সত্য; তিনি তাদের মন্দ কাজগুলি ক্ষমা করবেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করবেন।
4548 ৪৭. মুহাম্মাদ এটা এ জন্য যে, যারা কুফরী করে তারা মিথ্যার অনুসরণ করে এবং যারা ঈমান আনে তারা তাদের রাব্ব হতে প্রেরিত সত্যেরই অনুসরণ করে। এভাবে আল্লাহ মানুষের জন্য তাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
4549 ৪৭. মুহাম্মাদ অতএব যখন তোমরা কাফিরদের সাথে যুদ্ধে মুকাবিলা কর তখন তাদের গর্দানে আঘাত কর, পরিশেষে যখন তোমরা তাদেরকে সম্পূর্ণ রূপে পরাভূত করবে তখন তাদেরকে কষে বাঁধবে; অতঃপর হয় অনুকম্পা, না হয় মুক্তিপণ। তোমরা জিহাদ চালাবে যতক্ষণ না ওরা অস্ত্র নামিয়ে ফেলে। এটাই বিধান। এটা এ জন্য যে, আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদেরকে শাস্তি দিতে পারতেন, কিন্তু তিনি চান তোমাদেরকে অপরদের দ্বারা পরীক্ষা করতে। যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তিনি কখনও তাদের আমল বিনষ্ট হতে দেননা।
4550 ৪৭. মুহাম্মাদ তিনি তাদেরকে সৎ পথে পরিচালিত করবেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করে দিবেন।
4551 ৪৭. মুহাম্মাদ তিনি তাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে যার কথা তিনি তাদেরকে জানিয়েছিলেন।
4552 ৪৭. মুহাম্মাদ হে মু’মিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের অবস্থান দৃঢ় করবেন।
4553 ৪৭. মুহাম্মাদ যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য রয়েছে দুর্ভোগ এবং তিনি তাদের কাজ ব্যর্থ করে দিবেন।
4554 ৪৭. মুহাম্মাদ এটা এ জন্য যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তারা তা অপছন্দ করে। সুতরাং আল্লাহ তাদের কাজ নিস্ফল করে দিবেন।
4555 ৪৭. মুহাম্মাদ তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি এবং দেখেনি তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কি হয়েছিল? আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করেছেন এবং কাফিরদের জন্য রয়েছে অনুরূপ পরিণাম। ১০
4556 ৪৭. মুহাম্মাদ এটা এ জন্য যে, আল্লাহ মু’মিনদের অভিভাবক এবং কাফিরদের কোন অভিভাবক নেই। ১১
4557 ৪৭. মুহাম্মাদ যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে আল্লাহ তাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত; কিন্তু যারা কুফরী করে তারা ভোগ বিলাসে লিপ্ত থাকে এবং জন্তু-জানোয়ারের মত উদর পূর্তি করে; তাদের বাসস্থান হবে জাহান্নাম। ১২
4558 ৪৭. মুহাম্মাদ তারা যে জনপদ হতে তোমাকে বিতাড়িত করেছে তা অপেক্ষা অতি শক্তিশালী কত জনপদ ছিল; আমি তাদেরকে ধ্বংস করেছি এবং তাদেরকে সাহায্য করার কেহ ছিলনা। ১৩
4559 ৪৭. মুহাম্মাদ যে ব্যক্তি তার রাব্ব হতে প্রেরিত সুস্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত সে কি তার ন্যায় যার নিকট নিজের মন্দ কাজগুলি শোভন প্রতীয়মান হয় এবং যারা নিজ খেয়াল খুশীর অনুসরণ করে? ১৪
4560 ৪৭. মুহাম্মাদ মুত্তাকীদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্তঃ ওতে আছে নির্মল পানির নহর; আছে দুধের নহর যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, আছে পানকারীদের জন্য সুস্বাদু সুরার নহর এবং পরিশোধিত মধুর নহর। সেখানে তাদের জন্য থাকবে বিবিধ ফলসমূহ ও তাদের রবের ক্ষমা। মুত্তাকীরা কি তাদের ন্যায় যারা জাহান্নামে স্থায়ী হবে এবং যাদেরকে পান করতে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি যা তাদের নাড়িভুড়ি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দিবে? ১৫
4561 ৪৭. মুহাম্মাদ তাদের মধ্যে কতক তোমার কথা শ্রবণ করে, অতঃপর তোমার নিকট হতে বের হয়ে যারা জ্ঞানবান তাদেরকে বলেঃ এই মাত্র সে কি বলল? এদের অন্তরের উপর আল্লাহ মোহর মেরে দিয়েছেন এবং তারা নিজেদের খেয়াল খুশীরই অনুসরণ করে। ১৬
4562 ৪৭. মুহাম্মাদ যারা সৎ পথ অবলম্বন করে আল্লাহ তাদের সৎ পথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করেন এবং তাদেরকে মুত্তাকী হবার শক্তি দান করেন। ১৭
4563 ৪৭. মুহাম্মাদ তারা কি শুধু এ জন্য অপেক্ষা করছে যে, কিয়ামাত তাদের নিকট এসে পড়ূক আকস্মিক ভাবে? কিয়ামাতের লক্ষণসমূহতো এসেই পড়েছে! কিয়ামাত এসে পড়লে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কেমন করে? ১৮
4564 ৪৭. মুহাম্মাদ সুতরাং জেনে রেখ, আল্লাহ ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই; ক্ষমা প্রার্থনা কর তোমার এবং মু’মিন নর নারীদের ত্রুটির জন্য। আল্লাহ তোমাদের গতিবিধি এবং অবস্থান সম্বন্ধে সম্যক অবগত আছেন। ১৯
4565 ৪৭. মুহাম্মাদ মু’মিনরা বলেঃ একটি সূরা অবতীর্ণ হয় না কেন? অতঃপর যদি সুস্পষ্ট মর্ম বিশিষ্ট কোন সূরা অবতীর্ণ হয় এবং তাতে জিহাদের কোন নির্দেশ থাকে তাহলে তুমি দেখবে যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তারা মৃত্যুভয়ে বিহবল মানুষের মত তোমার দিকে তাকাচ্ছে। শোচনীয় পরিণাম ওদের। ২০
4566 ৪৭. মুহাম্মাদ আনুগত্য ও ন্যায় সঙ্গত বাক্য ওদের জন্য উত্তম ছিল; সুতরাং জিহাদের সিদ্ধান্ত হলে যদি তারা আল্লাহর প্রতি প্রদত্ত অঙ্গীকার পূরণ করত তাহলে তাদের জন্য এটা মঙ্গলজনক হত। ২১
4567 ৪৭. মুহাম্মাদ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে সম্ভবতঃ তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে। ২২
4568 ৪৭. মুহাম্মাদ আল্লাহ এদেরকেই করেন অভিশপ্ত, আর করেন বধির ও দৃষ্টিশক্তিহীন। ২৩
4569 ৪৭. মুহাম্মাদ তাহলে কি তারা কুরআন সম্বন্ধে অভিনিবেশ সহকারে চিন্তা করেনা? তাদের অন্তর তালাবদ্ধ – ২৪
4570 ৪৭. মুহাম্মাদ যারা নিজেদের নিকট সৎ পথ ব্যক্ত হওয়ার পর তা পরিত্যাগ করে, শাইতান তাদের কাজকে শোভন করে দেখায় এবং তাদের মিথ্যা আশ্বাস দেয়। ২৫
4571 ৪৭. মুহাম্মাদ এটা এ জন্য যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা যারা অপছন্দ করে তাদেরকে তারা বলেঃ আমরা কোন্ কোন্ বিষয়ে তোমাদের আনুগত্য করব? আল্লাহ তাদের গোপন অভিসন্ধি অবগত আছেন। ২৬
4572 ৪৭. মুহাম্মাদ মালাইকা/ফেরেশতারা যখন তাদের মুখমন্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করতে করতে প্রাণ হরণ করবে তখন তাদের দশা কেমন হবে! ২৭
4573 ৪৭. মুহাম্মাদ এটা এ জন্য যে, যাতে আল্লাহর অসন্তোষ জন্মায় তারা তার অনুসরণ করে এবং তাঁর সন্তুষ্টি লাভের প্রয়াসকে অপ্রিয় গণ্য করে; তিনি তাদের কাজ নিষ্ফল করে দেন। ২৮
4574 ৪৭. মুহাম্মাদ যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তারা কি মনে করে যে, আল্লাহ তাদের বিদ্বেষ ভাব প্রকাশ করে দিবেননা? ২৯
4575 ৪৭. মুহাম্মাদ আমি ইচ্ছা করলে তোমাকে তাদের পরিচয় দিতাম। ফলে তুমি তাদের লক্ষণ দেখে তাদেরকে চিনতে পারতে, তুমি অবশ্যই কথার ভঙ্গিতে তাদেরকে চিনতে পারবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ সম্পর্কে অবগত। ৩০
4576 ৪৭. মুহাম্মাদ আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব, যতক্ষণ না আমি জেনে নেই তোমাদের মধ্যে কে জিহাদকারী ও ধৈর্যশীল এবং আমি তোমাদের কার্যাবলী পরীক্ষা করি। ৩১
4577 ৪৭. মুহাম্মাদ যারা কুফরী করে এবং মানুষকে আল্লাহর পথ হতে নিবৃত্ত করে এবং নিজেদের নিকট পথের দিশা ব্যক্ত হওয়ার পর রাসূলের বিরোধিতা করে, তারা আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবেনা। তিনি তাদের কাজ ব্যর্থ করবেন। ৩২
4578 ৪৭. মুহাম্মাদ হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর, রাসূলের আনুগত্য কর এবং তোমাদের কর্মফল বিনষ্ট করনা। ৩৩
4579 ৪৭. মুহাম্মাদ যারা কুফরী করে এবং আল্লাহর পথ হতে মানুষকে নিবৃত্ত করে, অতঃপর কাফির অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে, আল্লাহ তাদেরকে কিছুতেই ক্ষমা করবেন না। ৩৪
4580 ৪৭. মুহাম্মাদ সুতরাং তোমরা হীনবল হয়ো না এবং সন্ধির প্রস্তাব করনা, তোমরাই প্রবল; আল্লাহ তোমাদের সঙ্গে আছেন, তিনি তোমাদের কর্মফল কখনও ক্ষুন্ন করবেন না। ৩৫
4581 ৪৭. মুহাম্মাদ পার্থিব জীবনতো শুধু ক্রীড়া-কৌতুক। যদি তোমরা ঈমান আন ও তাকওয়া অবলম্বন কর তাহলে আল্লাহ তোমাদের পুরস্কার দিবেন এবং তিনি তোমাদের ধন সম্পদ চাননা। ৩৬
4582 ৪৭. মুহাম্মাদ তোমাদের নিকট হতে তিনি তা চাইলে এবং তজ্জন্য তোমাদের উপর চাপ দিলে তোমরাতো কার্পন্য করবে, এবং তিনি তোমাদের মনের সংকীর্ণতা প্রকাশ করে দিবেন। ৩৭
4583 ৪৭. মুহাম্মাদ দেখ, তোমরাইতো তারা যাদের আল্লাহর পথে ব্যয় করতে বলা হচ্ছে, অথচ তোমাদের অনেকে কৃপণতা করছ; যারা কার্পণ্য করে তারাতো কার্পণ্য করে নিজেদেরই প্রতি। আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্ত, যদি তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন কর তাহলে তিনি অন্য জাতিকে তোমাদের স্থলবর্তী করবেন; তারা তোমাদের মত হবেনা। ৩৮
4584 ৪৮. আল-ফাতহ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে দিয়েছি সুস্পষ্ট বিজয়।
4585 ৪৮. আল-ফাতহ যেন আল্লাহ তোমার অতীত ও ভবিষ্যৎ ত্রুটিসমূহ মার্জনা করেন এবং তোমার প্রতি তাঁর অনুগ্রহ পূর্ণ করেন ও তোমাকে সরল পথে পরিচালিত করেন।
4586 ৪৮. আল-ফাতহ এবং তোমাকে আল্লাহ বলিষ্ঠ সাহায্য দান করেন।
4587 ৪৮. আল-ফাতহ তিনিই মু’মিনদের অন্তরে প্রশান্তি দান করেন যেন তারা তাদের ঈমানের সাথে ঈমান বৃদ্ধি করে নেয়; আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর বাহিনীসমূহ আল্লাহরই এবং আল্লাহই সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
4588 ৪৮. আল-ফাতহ এটা এ জন্য যে, তিনি মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন মহিলাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত; সেখানে তারা স্থায়ী হবে এবং তিনি তাদের পাপ মোচন করবেন; এটাই আল্লাহর দৃষ্টিতে মহা সাফল্য।
4589 ৪৮. আল-ফাতহ এবং মুনাফিক পুরুষ ও মুনাফিক মহিলা, মুশরিক পুরুষ ও মুশরিক মহিলা, যারা আল্লাহ সম্বন্ধে মন্দ ধারণা পোষণ করে তাদেরকে শাস্তি দিবেন। অমঙ্গল চক্র তাদের জন্য, আল্লাহ তাদের প্রতি রুষ্ট হয়েছেন এবং তাদেরকে অভিশপ্ত করেছেন এবং তাদের জন্য জাহান্নাম প্রস্তুত রেখেছেন; ওটা কত নিকৃষ্ট আবাস!
4590 ৪৮. আল-ফাতহ আল্লাহরই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর বাহিনীসমূহ এবং আল্লাহই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
4591 ৪৮. আল-ফাতহ আমি তোমাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে।
4592 ৪৮. আল-ফাতহ যাতে তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান আন এবং রাসূলকে সাহায্য কর ও সম্মান কর; সকাল সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।
4593 ৪৮. আল-ফাতহ যারা তোমার বাইআত গ্রহণ করে তারাতো আল্লাহরই বাইআত গ্রহণ করে। আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর। সুতরাং যে ওটা ভঙ্গ করে, ওটা ভঙ্গ করার পরিনাম তারই এবং যে আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার পূর্ণ করে তিনি তাকে মহা পুরস্কার দেন। ১০
4594 ৪৮. আল-ফাতহ যে সব আরাব মরুবাসী গৃহে রয়ে গেছে তারা তোমাকে বলবেঃ আমাদের ধন সম্পদ ও পরিবার পরিজন আমাদেরকে ব্যস্ত রেখেছে। অতএব আমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তারা মুখে যা বলে তা তাদের অন্তরে নেই। তাদেরকে বলঃ আল্লাহ তোমাদের কারও কোন ক্ষতি কিংবা মঙ্গল সাধনের ইচ্ছা করলে কে তাকে নিবৃত্ত করতে পারে? বস্তুতঃ তোমরা যা কর সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবহিত। ১১
4595 ৪৮. আল-ফাতহ না, তোমরা ধারণা করেছিলে যে, রাসূল ও মু’মিনগণ তাদের পরিবার পরিজনের নিকট কখনই ফিরে আসতে পারবেনা এবং এই ধারণা তোমাদের অন্তরে প্রীতিকর মনে হয়েছিল; তোমরা মন্দ ধারণা করেছিলে, তোমরাতো ধ্বংসম্মুখ এক সম্প্রদায়। ১২
4596 ৪৮. আল-ফাতহ যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনেনা, আমি সেই সব কাফিরের জন্য জ্বলন্ত অগ্নি প্রস্তুত করে রেখেছি। ১৩
4597 ৪৮. আল-ফাতহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহর; তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন। তিনি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। ১৪
4598 ৪৮. আল-ফাতহ তোমরা যখন যুদ্ধলদ্ধ সম্পদ সংগ্রহের জন্য যাবে তখন যারা গৃহে রয়ে গিয়েছিল তারা বলবেঃ আমাদেরকে তোমাদের সাথে যেতে দাও। তারা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায়। বলঃ তোমরা কিছুতেই আমাদের সঙ্গী হতে পারবেনা। আল্লাহ পূর্বেই এরূপ ঘোষণা করেছেন। তারা বলবেঃ তোমরাতো আমাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেছ। বস্তুতঃ তাদের বোধশক্তি সামান্য। ১৫
4599 ৪৮. আল-ফাতহ যে সব আরাব মরুবাসী গৃহে রয়ে গিয়েছিল তাদেরকে বলঃ তোমরা আহুত হবে এক প্রবল পরাক্রান্ত জাতির সাথে যুদ্ধ করতে; তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে যতক্ষণ না তারা আত্মসমর্পণ করে। তোমরা এই নির্দেশ পালন করলে আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম পুরস্কার দান করবেন। আর তোমরা যদি পূর্বানুরূপ পৃষ্ঠ প্রদর্শন কর তাহলে তিনি তোমাদেরকে মর্মন্তদ শাস্তি দিবেন। ১৬
4600 ৪৮. আল-ফাতহ অন্ধের জন্য, খঞ্জের জন্য, রুগ্নের জন্য কোনো অপরাধ নেই। এবং যে কেহ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে আল্লাহ তাকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত; কিন্তু যে ব্যক্তি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে তিনি তাকে বেদনাদায়ক শাস্তি দিবেন। ১৭
4601 ৪৮. আল-ফাতহ মু’মিনরা যখন বৃক্ষতলে তোমার নিকট বাইআত গ্রহণ করল তখন আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হলেন, তাদের অন্তরে যা ছিল তা তিনি অবগত ছিলেন; তাদেরকে তিনি দান করলেন প্রশান্তি এবং তাদেরকে পুরস্কার দিলেন আসন্ন বিজয়। ১৮
4602 ৪৮. আল-ফাতহ এবং বিপুল পরিমাণ যুদ্ধ লদ্ধ সম্পদ যা তারা হস্তগত করবে; আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। ১৯
4603 ৪৮. আল-ফাতহ আল্লাহ তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুদ্ধে লভ্য বিপুল সম্পদের যার অধিকারী হবে তোমরা। তিনি ইহা তোমাদের জন্য ত্বরান্বিত করেছিলেন এবং তিনি তোমাদের হতে মানুষের হস্ত নিবারিত করেছেন যেন তোমরা কৃতজ্ঞ হও এবং এটা মু’মিনদের জন্য এক নিদর্শন এবং আল্লাহ তোমাদেরকে পরিচালিত করেন সরল পথে। ২০
4604 ৪৮. আল-ফাতহ আরও বহু সম্পদ রয়েছে যা এখনো তোমাদের অধিকারে আসেনি, ওটাতো আল্লাহর নিকট রক্ষিত আছে। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। ২১
4605 ৪৮. আল-ফাতহ কাফিরেরা তোমাদের মুকাবিলা করলে পরিণামে তারা অবশ্যই পৃষ্ঠ প্রদর্শন করত, তখন তারা কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পেতনা। ২২
4606 ৪৮. আল-ফাতহ ইহাই আল্লাহর বিধান, প্রাচীনকাল হতে চলে আসছে; তুমি আল্লাহর এই বিধানে কোন পরিবর্তন পাবেনা। ২৩
4607 ৪৮. আল-ফাতহ তিনি মাক্কা উপত্যকায় তাদের হাত তোমাদের হতে এবং তোমাদের হাত তাদের হতে নিবারিত করেছেন তাদের উপর তোমাদেরকে বিজয়ী করার পর। তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা দেখেন। ২৪
4608 ৪৮. আল-ফাতহ তারাইতো কুফরী করেছিল এবং নিবৃত্ত করেছিল তোমাদেরকে মাসজিদুল হারাম হতে এবং বাধা দিয়েছিল কুরবানীর জন্য আবদ্ধ পশুগুলিকে যথাস্থানে পৌঁছতে। তোমাদের যুদ্ধের আদেশ দেয়া হত, যদি না থাকত এমন কতকগুলি মু’মিন নর ও নারী যাদেরকে তোমরা জাননা, তাদেরকে তোমরা পদদলিত করতে অজ্ঞাতসারে। ফলে তাদের কারণে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে। যুদ্ধের নির্দেশ দেয়া হয়নি এ জন্য যে, তিনি যাকে ইচ্ছা নিজ অনুগ্রহ দান করবেন, যদি তারা পৃথক হত, আমি তাদের মধ্যস্থিত কাফিরদেরকে মর্মন্তদ শাস্তি দিতাম। ২৫
4609 ৪৮. আল-ফাতহ যখন কাফিরেরা তাদের অন্তরে পোষণ করত গোত্রীয় অহমিকা-অজ্ঞতা যুগের অহমিকা, তখন আল্লাহ তাঁর রাসূল ও মু’মিনদেরকে স্বীয় প্রশান্তি দান করলেন; আর তাদেরকে তাকওয়ার বাক্যে সুদৃঢ় করলেন এবং তারাই ছিল এর অধিকতর যোগ্য ও উপযুক্ত। আল্লাহ সমস্ত বিষয়ে সম্যক জ্ঞান রাখেন। ২৬
4610 ৪৮. আল-ফাতহ নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর রাসূলের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করেছেন, আল্লাহর ইচ্ছায় তোমরা অবশ্যই মাসজিদুল হারামে প্রবেশ করবে নিরাপদে - কেহ কেহ মাথা মুন্ডন করবে, কেহ কেহ কেশ কর্তন করবে; তোমাদের কোন ভয় থাকবেনা। আল্লাহ জানেন, তোমরা যা জাননা। এটা ছাড়াও তিনি তোমাদের দিয়েছেন এক সদ্য বিজয়। ২৭
4611 ৪৮. আল-ফাতহ তিনি তাঁর রাসূলকে পথ নির্দেশ ও সত্য দীনসহ প্রেরণ করেছেন, অপর সমস্ত দীনের উপর একে জয়যুক্ত করার জন্য। সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। ২৮
4612 ৪৮. আল-ফাতহ মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল; তার সহচরগণ কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদেরকে রুকু ও সাজদাহয় অবনত দেখবে। তাদের মুখে সাজদাহর চিহ্ন থাকবে, তাওরাতে তার বর্ণনা এইরূপই এবং ইঞ্জীলেও। তাদের দৃষ্টান্ত একটি চারাগাছ, যা হতে নিগর্ত হয় কিশলয়, অতঃপর ওটা শক্ত পুষ্ট হয় এবং পরে কান্ডের উপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে যা কৃষকের জন্য আনন্দদায়ক। এভাবে আল্লাহ মু’মিনদের সমৃদ্ধি দ্বারা কাফিরদের অন্তরজ্বালা সৃষ্টি করেন। যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও পুরস্কারের। ২৯
4613 ৪৯. আল-হুজুরাত হে মু’মিনগণ! আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সামনে তোমরা কোন বিষয়ে অগ্রনী হয়োনা এবং আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
4614 ৪৯. আল-হুজুরাত হে মু’মিনগণ! তোমরা নাবীর কন্ঠস্বরের উপর নিজেদের কন্ঠস্বর উচু করনা এবং নিজেদের মধ্যে যেভাবে উচ্চৈঃস্বরে কথা বল তার সাথে সেই রূপ উচ্চৈঃস্বরে কথা বলনা; কারণ এতে তোমাদের কাজ নিস্ফল হয়ে যাবে তোমাদের অজ্ঞাতসারে।
4615 ৪৯. আল-হুজুরাত যারা আল্লাহর রাসূলের সামনে নিজেদের কন্ঠস্বর নীচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্য পরিশোধিত করেছেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার।
4616 ৪৯. আল-হুজুরাত যারা ঘরের পিছন হতে তোমাকে উচ্চৈঃস্বরে ডাকে তাদের অধিকাংশই নির্বোধ।
4617 ৪৯. আল-হুজুরাত তুমি বের হয়ে তাদের নিকট আসা পর্যন্ত যদি তারা ধৈর্য ধারণ করত তাহলে তা’ই তাদের জন্য উত্তম হত। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
4618 ৪৯. আল-হুজুরাত হে মু’মিনগণ! যদি কোন পাপাচারী তোমাদের নিকট কোন বার্তা আনয়ণ করে, তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতা বশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না কর এবং পরে তোমাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হও।
4619 ৪৯. আল-হুজুরাত তোমরা জেনে রেখ যে, তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল রয়েছেন; তিনি বহু বিষয়ে তোমাদের কথা মেনে নিলে তোমরাই কষ্ট পাবে। কিন্তু আল্লাহ তোমাদের নিকট ঈমানকে প্রিয় করেছেন এবং উহা তোমাদের হৃদয়গ্রাহী করেছেন; কুফরী, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে করেছেন তোমাদের নিকট অপ্রিয়। ওরাই সৎ পথ অবলম্বনকারী।
4620 ৪৯. আল-হুজুরাত এটা আল্লাহর দান ও অনুগ্রহ; আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
4621 ৪৯. আল-হুজুরাত মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে; অতঃপর তাদের একদল অপর দলকে আক্রমণ করলে আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। যদি তারা ফিরে আসে তাহলে তাদের মধ্যে ন্যায়ের সাথে ফাইসালা করবে এবং সুবিচার করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালবাসেন।
4622 ৪৯. আল-হুজুরাত মু’মিনরা পরস্পর ভাই ভাই। সুতরাং তোমরা দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও। ১০
4623 ৪৯. আল-হুজুরাত হে মু’মিনগণ! কোন পুরুষ যেন অপর কোন পুরুষকে উপহাস না করে; কেননা যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন মহিলা অপর কোন মহিলাকেও যেন উপহাস না করে; কেননা যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারিনী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করনা এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকনা; ঈমান আনার পর মন্দ নামে ডাকা গর্হিত কাজ। যারা এ ধরণের আচরণ হতে নিবৃত্ত না হয় তারাই যালিম। ১১
4624 ৪৯. আল-হুজুরাত হে মু’মিনগণ! তোমরা বহুবিধ অনুমান হতে দূরে থাক; কারণ অনুমান কোন কোন ক্ষেত্রে পাপ এবং তোমরা একে অপরের গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান করনা এবং একে অপরের পশ্চাতে নিন্দা করনা। তোমাদের মধ্যে কি কেহ তার মৃত ভাইয়ের মাংস ভক্ষণ করতে চায়? বস্তুতঃ তোমরাতো এটাকে ঘৃণাই মনে কর। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আল্লাহ তাওবাহ গ্রহণকারী, পরম দয়ালু। ১২
4625 ৪৯. আল-হুজুরাত হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে, পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদা সম্পন্ন যে অধিক মুত্তাকী। আল্লাহ সব কিছু জানেন, সব কিছুর খবর রাখেন। ১৩
4626 ৪৯. আল-হুজুরাত আরাব মরুবাসীরা বলেঃ আমরা ঈমান আনলাম। তুমি বলঃ তোমরা ঈমান আননি, বরং তোমরা বলঃ আমরা আত্মসমর্পন করেছি; কারণ ঈমান এখনো তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি। যদি তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর তাহলে তোমাদের কর্মফল সামান্য পরিমানও কম করা হবেনা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ১৪
4627 ৪৯. আল-হুজুরাত তারাই মু’মিন যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনার পর সন্দেহ পোষণ করেনা এবং জীবন ও সম্পদ দ্বারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে, তারাই সত্যনিষ্ঠ। ১৫
4628 ৪৯. আল-হুজুরাত বলঃ তোমরা কি তোমাদের দীন সম্পর্কে আল্লাহকে অবহিত করছ? অথচ আল্লাহ জানেন যা কিছু আছে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে। আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক অবহিত। ১৬
4629 ৪৯. আল-হুজুরাত তারা মনে করে আত্মসমর্পণ করে তোমাকে ধন্য করেছে। বলঃ তোমাদের আত্মসমর্পণ আমাকে ধন্য করেছে মনে করনা। বরং আল্লাহই ঈমানের দিকে পরিচালিত করে তোমাদের ধন্য করেছেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। ১৭
4630 ৪৯. আল-হুজুরাত আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে অবগত আছেন। তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন। ১৮
4631 ৫০. কাফ কাফ, শপথ কুরআনের (তুমি অবশ্যই সতর্ককারী)।
4632 ৫০. কাফ কিন্তু কাফিরেরা তাদের মধ্য হতে একজন সতর্ককারী আবির্ভূত হতে দেখে বিস্ময় বোধ করে এবং বলেঃ এটাতো এক আশ্চর্য ব্যাপার।
4633 ৫০. কাফ আমাদের মৃত্যু হলে এবং আমরা মৃত্তিকায় পরিণত হলে আমরা কি পুনরুজ্জীবিত হব? এ প্রত্যাবর্তন সুদূর পরাহত!
4634 ৫০. কাফ আমিতো জানি, মৃত্তিকা ক্ষয় করে তাদের কতটুকু এবং আমার নিকট আছে রক্ষিত ফলক।
4635 ৫০. কাফ বস্তুতঃ তাদের নিকট সত্য আসার পর তা প্রত্যাখ্যান করেছে। ফলে তারা সংশয়ে দোদুল্যমান।
4636 ৫০. কাফ তারা কি তাদের উর্ধ্বস্থিত আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখেনা যে, আমি কিভাবে ওটা নির্মাণ করেছি এবং ওকে সুশোভিত করেছি এবং ওতে কোন ফাটলও নেই?
4637 ৫০. কাফ আমি বিস্তৃত করেছি ভূমিকে ও তাতে স্থাপন করেছি পর্বতমালা এবং ওতে উদ্গত করেছি নয়ন প্রীতিকর সর্বপ্রকার উদ্ভিদ –
4638 ৫০. কাফ আল্লাহর অনুরাগী প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য, জ্ঞান ও উপদেশ স্বরূপ।
4639 ৫০. কাফ আকাশ হতে আমি বর্ষণ করি কল্যাণকর বৃষ্টি এবং তদ্বারা আমি সৃষ্টি করি উদ্যান ও উদগত করি শস্য।
4640 ৫০. কাফ ও সমুন্নত খেজুর বৃক্ষ, যাতে আছে গুচ্ছ খেজুর – ১০
4641 ৫০. কাফ আমার বান্দাদের জীবিকা স্বরূপ; আর আমি সঞ্জীবিত করি মৃত ভূমিকে; এভাবে পুনরুত্থান ঘটবে। ১১
4642 ৫০. কাফ তাদের পূর্বেও সত্য প্রত্যাখ্যান করেছিল নূহের সম্প্রদায়, রাস ও সামূদ সম্প্রদায় – ১২
4643 ৫০. কাফ আদ, ফিরআউন ও লূত সম্প্রদায়। ১৩
4644 ৫০. কাফ এবং আইকাহর অধিবাসী ও তুব্বা সম্প্রদায়; তারা সবাই রাসূলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল। ফলে তাদের উপর আমার শাস্তি আপতিত হয়েছে। ১৪
4645 ৫০. কাফ আমি কি প্রথমবার সৃষ্টি করেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি যে, পুনঃসৃষ্টি বিষয়ে তারা সন্দেহ পোষণ করছে? ১৫
4646 ৫০. কাফ আমিই মানুষকে সৃষ্টি করেছি এবং তার প্রকৃতি তাকে যে কুমন্ত্রনা দেয় তা আমি জানি। আমি তার গ্রীবাস্থিত ধমণী অপেক্ষাও নিকটতর। ১৬
4647 ৫০. কাফ স্মরণ রেখ, দুই মালাক/ফেরেশতা তার ডানে ও বামে বসে তার কাজ লিপিবদ্ধ করে। ১৭
4648 ৫০. কাফ মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে তা গ্রহণ করার জন্য তার কাছে সদা প্রস্তুত প্রহরী রয়েছে। ১৮
4649 ৫০. কাফ মৃত্যুযন্ত্রণা অবশ্যই আসবে। এটা হতেই তোমরা অব্যাহিত চেয়ে আসছ। ১৯
4650 ৫০. কাফ আর শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, ওটাই সেই ভয় প্রদর্শনের দিন। ২০
4651 ৫০. কাফ সেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি উপস্থিত হবে। তার সাথে থাকবে চালক ও তার কর্মের সাক্ষী। ২১
4652 ৫০. কাফ তুমি এই দিন সম্বন্ধে উদাসীন ছিলে, এখন তোমার সম্মুখ হতে পর্দা উম্মোচন করেছি। অদ্য তোমার দৃষ্টি প্রখর। ২২
4653 ৫০. কাফ তার সঙ্গী মালাক/ফেরেশতা বলবেঃ এইতো আমার নিকট ‘আমলনামা প্রস্তুত। ২৩
4654 ৫০. কাফ আদেশ করা হবেঃ তোমরা উভয়েই নিক্ষেপ কর জাহান্নামে, প্রত্যেক উদ্ধত কাফিরকে – ২৪
4655 ৫০. কাফ কল্যাণকর কাজে প্রবল বাধা দানকারী, সীমালংঘনকারী ও সন্দেহ পোষণকারীকে – ২৫
4656 ৫০. কাফ যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য মাবূদ গ্রহণ করত তাকে কঠিন শাস্তিতে নিক্ষেপ কর। ২৬
4657 ৫০. কাফ তার সহচর শাইতান বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমি তাকে অবাধ্য হতে প্ররোচিত করিনি। বস্তুতঃ সে নিজেই ছিল ঘোর বিভ্রান্ত। ২৭
4658 ৫০. কাফ আল্লাহ বলবেনঃ আমার সামনে বাক-বিতন্ডা করনা; তোমাদেরকে আমিতো পূবেই সতর্ক করেছি। ২৮
4659 ৫০. কাফ আমার কথার রদ বদল হয়না এবং আমি আমার বান্দাদের প্রতি কোন অবিচার করিনা। ২৯
4660 ৫০. কাফ সেই দিন আমি জাহান্নামকে জিজ্ঞেস করবঃ তুমি কি পূর্ণ হয়ে গেছ? জাহান্নাম বলবেঃ আরও আছে কি? ৩০
4661 ৫০. কাফ আর জান্নাতকে মুত্তাকীদের নিকটস্থ করা হবে - কোন দূরত্ব থাকবেনা। ৩১
4662 ৫০. কাফ এরই প্রতিশ্রুতি তোমাদেরকে দেয়া হয়েছিল - প্রত্যেক আল্লাহর অনুরাগী, হিফাযাতকারীর জন্য। ৩২
4663 ৫০. কাফ যারা না দেখেই দয়াময় আল্লাহকে ভয় করে এবং বিনীত চিত্তে উপস্থিত হয় – ৩৩
4664 ৫০. কাফ তাদেরকে বলা হবেঃ শান্তির সাথে তোমরা তাতে প্রবেশ কর; এটা অনন্ত জীবনের দিন। ৩৪
4665 ৫০. কাফ সেখানে তারা যা কামনা করবে তা’ই পাবে এবং আমার নিকট রয়েছে তারও অধিক। ৩৫
4666 ৫০. কাফ আমি তাদের পূর্বে আরও কত মানব গোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছি যারা ছিল তাদের অপেক্ষা শক্তিতে প্রবল, তারা দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করে ফিরত। পরে তাদের অন্য কোন আশ্রয়স্থল রইলনা। ৩৬
4667 ৫০. কাফ এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্য যার আছে অন্তঃকরণ, অথবা যে শ্রবণ করে নিবিষ্ট চিত্তে। ৩৭
4668 ৫০. কাফ আমি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এগুলির মধ্যস্থিত সব কিছু সৃষ্টি করেছি ছয় দিনে। আমাকে কোন ক্লান্তি স্পর্শ করেনি। ৩৮
4669 ৫০. কাফ অতএব তারা যা বলে তাতে তুমি ধৈর্য ধারণ কর এবং তোমার রবের প্রশংসা, পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে। ৩৯
4670 ৫০. কাফ তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর রাতের একাংশে এবং সালাতের পরেও। ৪০
4671 ৫০. কাফ শোন, যেদিন এক ঘোষণাকারী নিকটবর্তী স্থান হতে আহবান করবে – ৪১
4672 ৫০. কাফ যেদিন মানুষ অবশ্যই শ্রবণ করবে মহানাদ, সেই দিনই পুনরুত্থান দিন। ৪২
4673 ৫০. কাফ আমিই জীবন দান করি, মৃত্যু ঘটাই এবং সকলের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে। ৪৩
4674 ৫০. কাফ যেদিন পৃথিবী বিদীর্ণ হবে এবং মানুষ বের হয়ে আসবে ব্যস্ত ত্রস্ত হয়ে, এই সমবেত সমাবেশ করণ আমার জন্য সহজ। ৪৪
4675 ৫০. কাফ তারা যা বলে তা আমি জানি, তুমি তাদের উপর জবরদস্তিকারী নও। সুতরাং যে আমার শাস্তিকে ভয় করে তাকে উপদেশ দান কর কুরআনের সাহায্যে। ৪৫
4676 ৫১. আয-যারিয়াত শপথ ধূলি ঝঞ্ঝার,
4677 ৫১. আয-যারিয়াত শপথ বোঝা বহনকারী মেঘপুঞ্জের,
4678 ৫১. আয-যারিয়াত অতঃপর স্বচ্ছন্দ গতিময় নৌযানের,
4679 ৫১. আয-যারিয়াত আর শপথ কর্মবন্টনকারী মালাইকা/ফেরেশতার।
4680 ৫১. আয-যারিয়াত তোমাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অবশ্যই সত্য।
4681 ৫১. আয-যারিয়াত কর্মফল দিন অবশ্যম্ভাবী।
4682 ৫১. আয-যারিয়াত শপথ বহু পথ বিশিষ্ট আকাশের!
4683 ৫১. আয-যারিয়াত তোমরাতো পরস্পর বিরোধী কথায় লিপ্ত।
4684 ৫১. আয-যারিয়াত যে ব্যক্তি সত্যভ্রষ্ট সে’ই তা পরিত্যাগ করে।
4685 ৫১. আয-যারিয়াত অভিশপ্ত হোক মিথ্যাচারীরা। ১০
4686 ৫১. আয-যারিয়াত যারা অজ্ঞ ও উদাসীন – ১১
4687 ৫১. আয-যারিয়াত তারা জিজ্ঞেস করেঃ কর্মফল দিন কবে হবে? ১২
4688 ৫১. আয-যারিয়াত (বলঃ) সেই দিন, যখন তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে অগ্নিতে, ১৩
4689 ৫১. আয-যারিয়াত এবং (বলা হবে) তোমরা তোমাদের শাস্তি আস্বাদন কর, তোমরা এই শাস্তিই ত্বরান্বিত করতে চেয়েছিলে। ১৪
4690 ৫১. আয-যারিয়াত সেদিন মুত্তাকীরা থাকবে প্রস্রবণ বিশিষ্ট জান্নাতে। ১৫
4691 ৫১. আয-যারিয়াত উপভোগ করবে তা যা তাদের রাব্ব তাদেরকে প্রদান করবেন; কারণ পার্থিব জীবনে তারা ছিল সৎকর্মপরায়ণ। ১৬
4692 ৫১. আয-যারিয়াত তারা রাতের সামান্য অংশই অতিবাহিত করত নিদ্রায়, ১৭
4693 ৫১. আয-যারিয়াত রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত, ১৮
4694 ৫১. আয-যারিয়াত এবং তাদের ধন সম্পদে রয়েছে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতের হক। ১৯
4695 ৫১. আয-যারিয়াত নিশ্চিত বিশ্বাসীদের নিদর্শন রয়েছে ধরিত্রীতে – ২০
4696 ৫১. আয-যারিয়াত এবং তোমাদের মধ্যেও। তোমরা কি অনুধাবন করবেনা? ২১
4697 ৫১. আয-যারিয়াত আকাশে রয়েছে তোমাদের রিযকের উৎস ও প্রতিশ্রুত সবকিছু। ২২
4698 ৫১. আয-যারিয়াত আকাশ ও পৃথিবীর রবের শপথ! অবশ্যই তোমাদের বাক স্ফুর্তির মতই এ সব সত্য। ২৩
4699 ৫১. আয-যারিয়াত তোমার নিকট ইবরাহীমের সম্মানিত মেহমানদের বৃত্তান্ত এসেছে কি? ২৪
4700 ৫১. আয-যারিয়াত যখন তারা তার নিকট উপস্থিত হয়ে বললঃ সালাম। উত্তরে সে বললঃ সালাম। এরাতো অপরিচিত লোক! ২৫
4701 ৫১. আয-যারিয়াত অতঃপর সে গৃহাভ্যন্তরে গেল এবং একটি মাংশল ভাজা গো-বৎস নিয়ে এল। ২৬
4702 ৫১. আয-যারিয়াত তাদের সামনে রাখল এবং বললঃ তোমরা খাচ্ছনা কেন? ২৭
4703 ৫১. আয-যারিয়াত এতে তাদের সম্পর্কে তার মনে ভীতির সঞ্চার হল। তারা বললঃ ভীত হয়োনা। অতঃপর তারা তাকে এক জ্ঞানী পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিল। ২৮
4704 ৫১. আয-যারিয়াত তখন তার স্ত্রী চিৎকার করতে করতে সামনে এসে গাল চাপড়িয়ে বললঃ এই বৃদ্ধা বন্ধ্যার সন্তান হবে? ২৯
4705 ৫১. আয-যারিয়াত তারা বললঃ তোমার রাব্ব এরূপই বলেছেন; তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ। ৩০
4706 ৫১. আয-যারিয়াত সে (ইবরাহীম) বললঃ হে প্রেরিত মালাইকা/ফেরেশতাগণ! আপনাদের বিশেষ কাজ কি? ৩১
4707 ৫১. আয-যারিয়াত তারা বললঃ আমাদেরকে এক অপরাধী সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। ৩২
4708 ৫১. আয-যারিয়াত তাদের উপর নিক্ষেপ করার জন্য মাটির শক্ত ঢেলা, ৩৩
4709 ৫১. আয-যারিয়াত যা সীমালংঘনকারীদের জন্য চিহ্নিত তোমার রবের নিকট হতে । ৩৪
4710 ৫১. আয-যারিয়াত সেখানে যেসব মু’মিন ছিল আমি তাদেরকে উদ্ধার করেছিলাম – ৩৫
4711 ৫১. আয-যারিয়াত এবং সেখানে একটি পরিবার ব্যতীত কোন আত্মসমর্পনকারী (মুসলিম) আমি পাইনি – ৩৬
4712 ৫১. আয-যারিয়াত যারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তিকে ভয় করে আমি তাদের জন্য ওতে একটি নিদর্শন রেখেছি, ৩৭
4713 ৫১. আয-যারিয়াত এবং নিদর্শন রেখেছি মূসার বৃত্তান্তে, যখন আমি তাকে প্রমাণসহ ফির‘আউনের নিকট প্রেরণ করেছিলাম। ৩৮
4714 ৫১. আয-যারিয়াত তখন সে ক্ষমতা দম্ভে মুখ ফিরিয়ে নিল এবং বললঃ এই ব্যক্তি হয় এক যাদুকর, না হয় উম্মাদ। ৩৯
4715 ৫১. আয-যারিয়াত সুতরাং আমি তাকে ও তার দলবলকে শাস্তি দিলাম এবং তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করলাম; সেতো ছিল তিরস্কারযোগ্য। ৪০
4716 ৫১. আয-যারিয়াত এবং নিদর্শন রয়েছে আ‘দের ঘটনায় যখন আমি তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেছিলাম অকল্যাণকর বায়ু। ৪১
4717 ৫১. আয-যারিয়াত এটা যা কিছুর উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল তাকেই চূর্ন বিচূর্ণ করে দিয়েছিল। ৪২
4718 ৫১. আয-যারিয়াত আরও নিদর্শন রয়েছে সামূদের বৃত্তান্তে, যখন তাদেরকে বলা হলঃ ভোগ করে নাও স্বল্পকাল, ৪৩
4719 ৫১. আয-যারিয়াত কিন্তু তারা তাদের রবের আদেশ অমান্য করল; ফলে তাদের প্রতি বজ্রাঘাত হল এবং তারা তা দেখতে ছিল। ৪৪
4720 ৫১. আয-যারিয়াত তারা উঠে দাঁড়াতে পারলনা এবং তা প্রতিরোধ করতেও পারলনা। ৪৫
4721 ৫১. আয-যারিয়াত আমি ধ্বংস করেছিলাম তাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়কে, তারা ছিল সত্যত্যাগী সম্প্রদায়। ৪৬
4722 ৫১. আয-যারিয়াত আমি আকাশ নির্মাণ করেছি আমার ক্ষমতা বলে এবং আমি অবশ্যই মহাসম্প্রসারণকারী, ৪৭
4723 ৫১. আয-যারিয়াত এবং আমি ভূমিকে বিছিয়ে দিয়েছি; আমি কত সুন্দরভাবে বিছিয়েছি এটা। ৪৮
4724 ৫১. আয-যারিয়াত আমি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করেছি জোড়ায় জোড়ায়, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর। ৪৯
4725 ৫১. আয-যারিয়াত আল্লাহর দিকে ধাবিত হও; আমি তোমাদের প্রতি আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত সতর্ককারী। ৫০
4726 ৫১. আয-যারিয়াত তোমরা আল্লাহর সাথে কোন মা‘বূদ স্থির করনা; আমি তোমাদের প্রতি আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত স্পষ্ট সতর্ককারী । ৫১
4727 ৫১. আয-যারিয়াত এভাবে তাদের পূর্ববর্তীদের নিকট যখনই কোন রাসূল এসেছে, তারা বলেছেঃ তুমিতো এক যাদুকর, না হয় উম্মাদ! ৫২
4728 ৫১. আয-যারিয়াত তারা কি একে অপরকে এই মন্ত্রণাই দিয়ে এসেছে? বস্তুতঃ তারা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়। ৫৩
4729 ৫১. আয-যারিয়াত অতএব তুমি তাদেরকে উপেক্ষা কর, এতে তুমি অপরাধী হবেনা। ৫৪
4730 ৫১. আয-যারিয়াত তুমি উপদেশ দিতে থাক, কারণ উপদেশ মু’মিনদের উপকারে আসবে। ৫৫
4731 ৫১. আয-যারিয়াত আমি সৃষ্টি করেছি জিন ও মানুষকে এ জন্য যে, তারা আমারই ইবাদাত করবে। ৫৬
4732 ৫১. আয-যারিয়াত আমি তাদের নিকট হতে জীবিকা চাইনা এবং এও চাইনা যে, তারা আমার আহার যোগাবে। ৫৭
4733 ৫১. আয-যারিয়াত আল্লাহই রিয্ক দান করেন এবং তিনি প্রবল, পরাক্রান্ত। ৫৮
4734 ৫১. আয-যারিয়াত যালিমদের প্রাপ্য ওটাই যা অতীতে তাদের সম মতাবলম্বীরা ভোগ করেছে। সুতরাং তারা এর জন্য আমার নিকট যেন ত্বরা না করে। ৫৯
4735 ৫১. আয-যারিয়াত কাফিরদের জন্য দুর্ভোগ তাদের ঐ দিনের যে দিনের বিষয়ে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। ৬০
4736 ৫২. আত-তূর শপথ তুর পর্বতের,
4737 ৫২. আত-তূর শপথ কিতাবের, যা লিখিত আছে –
4738 ৫২. আত-তূর উন্মুক্ত পত্রে।
4739 ৫২. আত-তূর শপথ বায়তুল মা‘মুরের,
4740 ৫২. আত-তূর শপথ সমুন্নত আকাশের,
4741 ৫২. আত-তূর এবং শপথ উদ্বেলিত সমুদ্রের।
4742 ৫২. আত-তূর তোমার রবের শাস্তি অবশ্যম্ভাবী,
4743 ৫২. আত-তূর এর নিবারণ করার কেহ নেই।
4744 ৫২. আত-তূর যেদিন আকাশ আন্দোলিত হবে প্রবলভাবে –
4745 ৫২. আত-তূর এবং পর্বত চলবে দ্রুত। ১০
4746 ৫২. আত-তূর দুর্ভোগ সেইদিন মিথ্যাশ্রয়ীদের – ১১
4747 ৫২. আত-তূর যারা ক্রীড়াচ্ছলে অসার কার্যকলাপে লিপ্ত থাকে। ১২
4748 ৫২. আত-তূর যেদিন তাদেরকে হাকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে জাহান্নামের আগুনের দিকে, ১৩
4749 ৫২. আত-তূর (বলা হবে) এটাই সেই আগুন যাকে তোমরা মিথ্যা মনে করতে। ১৪
4750 ৫২. আত-তূর এটা কি যাদু? না কি তোমরা দেখছনা? ১৫
4751 ৫২. আত-তূর তোমরা এতে প্রবেশ কর, অতঃপর তোমরা ধৈর্য ধারণ কর অথবা না করা উভয়ই তোমাদের জন্য সমান। তোমরা যা করতে তোমাদেরকে তারই প্রতিফল দেয়া হচ্ছে। ১৬
4752 ৫২. আত-তূর মুত্তাকীরা থাকবে জান্নাতে ও ভোগ করবে বিলাস। ১৭
4753 ৫২. আত-তূর তাদের রাব্ব তাদেরকে যা দিবেন তারা তা উপভোগ করবে এবং তিনি তাদেরকে রক্ষা করবেন জাহান্নামের শাস্তি হতে। ১৮
4754 ৫২. আত-তূর তোমরা যা করতে তার প্রতিফল স্বরূপ তোমরা তৃপ্তির সাথে পানাহার করতে থাক। ১৯
4755 ৫২. আত-তূর তারা বসবে শ্রেণীবদ্ধভাবে সজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে; আমি তাদের মিলন ঘটাব আয়তলোচনা হুরের সঙ্গে। ২০
4756 ৫২. আত-তূর এবং যারা ঈমান আনে আর তাদের সন্তান-সন্ততি ঈমানে তাদের অনুগামী হয়, তাদের সাথে মিলিত করাব তাদের সন্তান-সন্ততিকে এবং তাদের কর্মফল আমি কিছুমাত্র হ্রাস করবনা, প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী। ২১
4757 ৫২. আত-তূর আমি তাদেরকে দিব ফল-মূল এবং গোশত যা তারা পছন্দ করে। ২২
4758 ৫২. আত-তূর সেখানে তারা একে অপরের নিকট হতে গ্রহণ করবে পান পাত্র, যা হতে পান করলে কেহ অসার কথা বলবেনা এবং অসৎ কাজেও লিপ্ত হবেনা। ২৩
4759 ৫২. আত-তূর সুরক্ষিত মুক্তা সদৃশ কিশোরেরা সেখানে তাদের জন্য নিয়োজিত থাকবে। ২৪
4760 ৫২. আত-তূর তারা একে অপরের দিকে মুখোমুখি জিজ্ঞসাবাদ করবে – ২৫
4761 ৫২. আত-তূর এবং বলবেঃ পূর্বে আমরা পরিবার-পরিজনের মধ্যে শংকিত অবস্থায় ছিলাম – ২৬
4762 ৫২. আত-তূর অতঃপর আমাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন এবং আমাদেরকে অগ্নির শাস্তি হতে রক্ষা করেছেন, ২৭
4763 ৫২. আত-তূর আমরা পূর্বেও আল্লাহকে আহবান করতাম, তিনিতো কৃপাময়, পরম দয়ালু। ২৮
4764 ৫২. আত-তূর অতএব তুমি উপদেশ দান করতে থাক, তোমার রবের অনুগ্রহে তুমি গণক নও, উম্মাদও নও। ২৯
4765 ৫২. আত-তূর তারা কি বলতে চায় যে, সে একজন কবি, আমরা তার জন্য কালের বিপর্যয়ের প্রতীক্ষা করছি। ৩০
4766 ৫২. আত-তূর বলঃ তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি। ৩১
4767 ৫২. আত-তূর তাহলে কি তাদের বুদ্ধি তাদেরকে এই বিষয়ে প্ররোচিত করে, না তারা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়? ৩২
4768 ৫২. আত-তূর তারা কি বলেঃ এই কুরআন তার নিজের রচনা? বরং তারা অবিশ্বাসী। ৩৩
4769 ৫২. আত-তূর তারা যদি সত্যবাদী হয় তাহলে এই সদৃশ কোন রচনা উপস্থিত করুক। ৩৪
4770 ৫২. আত-তূর তারা কি স্রষ্টা ব্যতীত সৃষ্টি হয়েছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা? ৩৫
4771 ৫২. আত-তূর না কি তারা আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছে? বরং তারাতো অবিশ্বাসী ৩৬
4772 ৫২. আত-তূর তোমার রবের ভান্ডার কি তাদের নিকট রয়েছে, না তারা এ সমুদয়ের নিয়ন্তা? ৩৭
4773 ৫২. আত-তূর না কি তাদের কোন সিড়ি আছে যাতে আরোহণ করে তারা শ্রবণ করে? থাকলে তাদের সেই শ্রোতা সুস্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করুক। ৩৮
4774 ৫২. আত-তূর তাহলে কি কন্যা সন্তান তাঁর জন্য এবং পুত্র সন্তান তোমাদের জন্য? ৩৯
4775 ৫২. আত-তূর তাহলে কি তুমি তাদের নিকট পারিশ্রমিক চাচ্ছ যে, তারা একে একটি দুর্বহ বোঝা মনে করবে? ৪০
4776 ৫২. আত-তূর না কি অদৃশ্য বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান আছে যে, তারা এই বিষয়ে কিছু লিখে? ৪১
4777 ৫২. আত-তূর অথবা তারা কি কোন ষড়যন্ত্র করতে চায়? পরিণামে কাফিরেরাই হবে ষড়যন্ত্রের শিকার। ৪২
4778 ৫২. আত-তূর না কি আল্লাহ ব্যতীত তাদের অন্য কোন মা‘বূদ আছে? তারা যাকে শরীক স্থির করে আল্লাহ তা হতে পবিত্র। ৪৩
4779 ৫২. আত-তূর তারা আকাশের কোন খন্ড ভেঙ্গে পড়তে দেখলেও বলবেঃ এটাতো এক পূঞ্জীভুত মেঘ। ৪৪
4780 ৫২. আত-তূর তাদেরকে উপেক্ষা করে চল সেই দিন পর্যন্ত, যে দিন তারা বজ্রাঘাতের সম্মুখীন হবে। ৪৫
4781 ৫২. আত-তূর যেদিন তাদের ষড়যন্ত্র কোন কাজে আসবেনা এবং তাদেরকে সাহায্যও করা হবেনা। ৪৬
4782 ৫২. আত-তূর এ ছাড়াও আরও শাস্তি রয়েছে যালিমদের জন্য। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানেনা। ৪৭
4783 ৫২. আত-তূর ধৈর্য ধারণ কর তোমার রবের নির্দেশের অপেক্ষায়; তুমি আমার চোখের সামনেই রয়েছ। তুমি তোমার রবের প্রশংসা, পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর যখন তুমি শয্যা ত্যাগ কর – ৪৮
4784 ৫২. আত-তূর এবং তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা কর রাতে ও তারকার অস্ত গমনের পর। ৪৯
4785 ৫৩. আন-নাজম শপথ নক্ষত্রের, যখন ওটা হয় অস্তমিত,
4786 ৫৩. আন-নাজম তোমাদের সঙ্গী বিভ্রান্ত নয়, বিপথগামীও নয়,
4787 ৫৩. আন-নাজম এবং সে মনগড়া কথাও বলেনা।
4788 ৫৩. আন-নাজম এটাতো অহী, যা তার প্রতি প্রত্যাদেশ হয়।
4789 ৫৩. আন-নাজম তাকে শিক্ষা দান করে শক্তিশালী –
4790 ৫৩. আন-নাজম প্রজ্ঞা সম্পন্ন; সে নিজ আকৃতিতে স্থির হয়েছিল,
4791 ৫৩. আন-নাজম তখন সে ঊর্ধ্ব দিগন্তে।
4792 ৫৩. আন-নাজম অতঃপর সে তার নিকটবর্তী হল, অতি নিকটবর্তী।
4793 ৫৩. আন-নাজম ফলে তাদের মধ্যে দুই ধনুকের ব্যবধান রইল, অথবা তারও কম।
4794 ৫৩. আন-নাজম তখন আল্লাহ তাঁর বান্দার প্রতি যা অহী করার তা অহী করলেন। ১০
4795 ৫৩. আন-নাজম যা সে দেখেছে তার অন্তকরণ তা অস্বীকার করেনি। ১১
4796 ৫৩. আন-নাজম সে যা দেখেছে তোমরা কি সে বিষয়ে তার সংগে বিতর্ক করবে? ১২
4797 ৫৩. আন-নাজম নিশ্চয়ই সে তাকে আরেকবার দেখেছিল। ১৩
4798 ৫৩. আন-নাজম সিদরাতুল মুনতাহার নিকট, ১৪
4799 ৫৩. আন-নাজম যার নিকট অবস্থিত বাসোদ্যান। ১৫
4800 ৫৩. আন-নাজম যখন বৃক্ষটি, যদ্বারা আচ্ছাদিত হবার তদ্বারা ছিল আচ্ছাদিত, ১৬
4801 ৫৩. আন-নাজম তার দৃষ্টি বিভ্রম হয়নি, দৃষ্টি লক্ষ্যচ্যূতও হয়নি। ১৭
4802 ৫৩. আন-নাজম সেতো তার প্রতিপালকের মহান নিদর্শনাবলী দেখেছিল। ১৮
4803 ৫৩. আন-নাজম তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত ও উযযা সম্বন্ধে? ১৯
4804 ৫৩. আন-নাজম এবং তৃতীয় আরেকটি ‘মানাত’ সম্বন্ধে? ২০
4805 ৫৩. আন-নাজম তাহলে কি পুত্র-সন্তান তোমাদের জন্য এবং কন্যা-সন্তান আল্লাহর জন্য? ২১
4806 ৫৩. আন-নাজম এ ধরণের বন্টনতো অসঙ্গত। ২২
4807 ৫৩. আন-নাজম এগুলির কতক নামমাত্র যা তোমাদের পূর্ব-পুরুষরা ও তোমরা রেখেছ, যার সমর্থনে আল্লাহ কোন দলীল প্রেরণ করেননি। তারাতো অনুমান এবং নিজেদের প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে, অথচ তাদের নিকট তাদের রবের পথনির্দেশ এসেছে। ২৩
4808 ৫৩. আন-নাজম মানুষ যা চায় তাই কি সে পায়? ২৪
4809 ৫৩. আন-নাজম বস্তুতঃ ইহকাল ও পরকাল আল্লাহরই। ২৫
4810 ৫৩. আন-নাজম আকাশে কত মালাইকা/ফেরেশতা রয়েছে, তাদের কোন সুপারিশ ফলপ্রসু হবেনা যতক্ষণ আল্লাহ যাকে ইচ্ছা এবং যার প্রতি সন্তষ্ট তাকে অনুমতি না দেন। ২৬
4811 ৫৩. আন-নাজম যারা আখিরাতে বিশ্বাস করেনা তারাই নারীবাচক নাম দিয়ে থাকে মালাইকাদেরকে। ২৭
4812 ৫৩. আন-নাজম অথচ এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই, তারা শুধু অনুমানের অনুসরণ করে; সত্যের মুকাবিলায় অনুমানের কোন মূল্য নেই। ২৮
4813 ৫৩. আন-নাজম অতএব যে আমার স্মরণে বিমুখ তাকে উপেক্ষা করে চল; সেতো শুধু পার্থিব জীবন কামনা করে। ২৯
4814 ৫৩. আন-নাজম তাদের জ্ঞানের দৌড় এই পর্যন্ত। তোমার রাব্বই ভাল জানেন কে তাঁর পথ হতে বিচ্যুত; তিনিই ভাল জানেন কে সৎপথ প্রাপ্ত। ৩০
4815 ৫৩. আন-নাজম আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা আল্লাহরই। যারা মন্দ কাজ করে তাদেরকে তিনি দেন মন্দ ফল এবং যারা সৎ কাজ করে তাদেরকে দেন উত্তম পুরস্কার। ৩১
4816 ৫৩. আন-নাজম যারা বিরত থাকে গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কার্য হতে, ছোট- খাট অপরাধ করলেও তোমার রবের ক্ষমা অপরিসীম; তিনি (আল্লাহ) তোমাদের সম্পর্কে সম্যক অবগত, যখন তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছিলেন মাটি হতে এবং যখন তোমরা মাতৃগর্ভে ভ্রুণরূপে অবস্থান কর। অতএব তোমরা আত্মপ্রশংসা করনা, তিনিই সম্যক জানেন মুত্তাকী কে। ৩২
4817 ৫৩. আন-নাজম তুমি কি দেখেছ সেই ব্যক্তিকে যে মুখ ফিরিয়ে নেয়; ৩৩
4818 ৫৩. আন-নাজম এবং দান করে সামান্যই, পরে বন্ধ করে দেয়? ৩৪
4819 ৫৩. আন-নাজম তার কি অদৃশ্যের জ্ঞান আছে যে সে জানবে? ৩৫
4820 ৫৩. আন-নাজম তাকে কি অবগত করা হয়নি যা আছে মূসার কিতাবে, ৩৬
4821 ৫৩. আন-নাজম এবং ইবরাহীমের কিতাবে যে পালন করেছিল তার দায়িত্ব? ৩৭
4822 ৫৩. আন-নাজম ওটা এই যে, কোন বহনকারী অপরের বোঝা বহন করবেনা। ৩৮
4823 ৫৩. আন-নাজম আর এই যে, মানুষ তা’ই পায় যা সে করে, ৩৯
4824 ৫৩. আন-নাজম আর এই যে, তার কাজ অচিরেই দেখানো হবে, ৪০
4825 ৫৩. আন-নাজম অতঃপর তাকে দেয়া হবে পূর্ণ প্রতিদান। ৪১
4826 ৫৩. আন-নাজম আর এই যে, সব কিছুর সমাপ্তিতো তোমার রবের নিকট। ৪২
4827 ৫৩. আন-নাজম আর এই যে, তিনিই হাসান, তিনিই কাঁদান। ৪৩
4828 ৫৩. আন-নাজম এবং এই যে, তিনিই মারেন, তিনিই বাঁচান, ৪৪
4829 ৫৩. আন-নাজম আর এই যে, তিনিই সৃষ্টি করেন যুগল পুরুষ ও নারী – ৪৫
4830 ৫৩. আন-নাজম শুক্র বিন্দু হতে যখন তা স্খলিত হয়; ৪৬
4831 ৫৩. আন-নাজম আর এই যে, পুনরুত্থান ঘটানোর দায়িত্ব তাঁরই। ৪৭
4832 ৫৩. আন-নাজম আর এই যে, তিনিই অভাবমুক্ত করেন ও সম্পদ দান করেন। ৪৮
4833 ৫৩. আন-নাজম আর এই যে, তিনি ‘শি’রা’ নক্ষত্রের মালিক। ৪৯
4834 ৫৩. আন-নাজম এবং এই যে, তিনিই প্রথম ‘আদ সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছিলেন। ৫০
4835 ৫৩. আন-নাজম এবং সামূদ সম্প্রদায়কেও, কেহকেও তিনি বাকী রাখেননি। ৫১
4836 ৫৩. আন-নাজম আর এদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়কেও; তারা ছিল অতিশয় যালিম ও অবাধ্য। ৫২
4837 ৫৩. আন-নাজম উৎপাটিত আবাস ভূমিকে উল্টিয়ে নিক্ষেপ করেছিলেন। ৫৩
4838 ৫৩. আন-নাজম ওকে আচ্ছন্ন করল কি সর্বগ্রাসী শাস্তি! ৫৪
4839 ৫৩. আন-নাজম তুমি তোমার রবের কোন্ অনুগ্রহ সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করবে? ৫৫
4840 ৫৩. আন-নাজম অতীতের সতর্ককারীদের ন্যায় এই নাবীও এক সতর্ককারী; ৫৬
4841 ৫৩. আন-নাজম কিয়ামাত আসন্ন, ৫৭
4842 ৫৩. আন-নাজম আল্লাহ ছাড়া কেহই এটা ব্যক্ত করতে সক্ষম নয়। ৫৮
4843 ৫৩. আন-নাজম তোমরা কি এই কথায় বিস্ময় বোধ করছ! ৫৯
4844 ৫৩. আন-নাজম এবং হাসি- ঠাট্টা করছ! ক্রন্দন করছনা? ৬০
4845 ৫৩. আন-নাজম তোমরাতো উদাসীন, ৬১
4846 ৫৩. আন-নাজম অতএব আল্লাহকে সাজদাহ কর এবং তাঁর ইবাদাত কর। [সাজদাহ] ৬২
4847 ৫৪. আল-কামার কিয়ামাত আসন্ন, চাঁদ বিদীর্ণ হয়েছে,
4848 ৫৪. আল-কামার তারা কোনো নিদর্শন দেখলে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলেঃ এটাতো চিরাচরিত যাদু।
4849 ৫৪. আল-কামার তারা সত্য প্রত্যাখ্যান করে এবং নিজ খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করে, আর প্রত্যেক ব্যাপারই যথাসময়ে লক্ষ্যে পৌঁছবে।
4850 ৫৪. আল-কামার তাদের নিকট এসেছে সুসংবাদ, যাতে আছে সাবধান বাণী।
4851 ৫৪. আল-কামার এটা পরিপূর্ণ জ্ঞান, তবে এই সতর্ক বাণী তাদের কোন উপকারে আসেনি।
4852 ৫৪. আল-কামার অতএব তুমি তাদেরকে উপেক্ষা কর। যেদিন আহবানকারী আহবান করবে এক ভয়াবহ পরিণামের দিকে।
4853 ৫৪. আল-কামার অপমানে অবনমিত নেত্রে সেই দিন তারা কাবর হতে বের হবে বিক্ষিপ্ত পঙ্গপালের ন্যায়।
4854 ৫৪. আল-কামার তারা আহবানকারীর দিকে ছুটে আসবে ভীত-বিহবল হয়ে। কাফিরেরা বলবেঃ কঠিন এই দিন।
4855 ৫৪. আল-কামার এদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়ও মিথ্যা আরোপ করেছিল আমার বান্দার প্রতি এবং বলেছিলঃ এতো এক পাগল। আর তাকে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল।
4856 ৫৪. আল-কামার তখন সে তার রাব্বকে আহবান করে বলেছিলঃ আমিতো অসহায়; অতএব তুমি আমার প্রতিবিধান কর। ১০
4857 ৫৪. আল-কামার ফলে আমি উন্মুক্ত করে দিলাম আকাশের দ্বার, প্রবল বারি বর্ষণে। ১১
4858 ৫৪. আল-কামার এবং মাটি হতে উৎসারিত করলাম প্রস্রবণ। অতঃপর সকল পানি মিলিত হল এক পরিকল্পনা অনুসারে। ১২
4859 ৫৪. আল-কামার তখন নূহকে আরোহণ করালাম কাষ্ঠ ও কীলক নির্মিত এক নৌযানে, ১৩
4860 ৫৪. আল-কামার যা চলত আমার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। এটা পুরস্কার তার জন্য যে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। ১৪
4861 ৫৪. আল-কামার আমি এটাকে রেখে দিয়েছি এক নিদর্শনরূপে; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেহ আছে কি? ১৫
4862 ৫৪. আল-কামার কি কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী! ১৬
4863 ৫৪. আল-কামার কুরআন আমি সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য, সুতরাং উপদেশ গ্রহণকারী কেহ আছে কি? ১৭
4864 ৫৪. আল-কামার আ‘দ সম্প্রদায় সত্য প্রত্যাখ্যান করেছিল, ফলে কি কঠোর হয়েছিল আমার শাস্তি ও সতর্ক বাণী! ১৮
4865 ৫৪. আল-কামার তাদের উপর আমি প্রেরণ করেছিলাম ঝঞ্ঝাবায়ু নিরবিচ্ছিন্ন দুর্ভোগের দিনে। ১৯
4866 ৫৪. আল-কামার মানুষকে ওটা উৎখাত করেছিল উন্মুলিত খেজুর কান্ডের ন্যায়। ২০
4867 ৫৪. আল-কামার কি কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্ক বাণী! ২১
4868 ৫৪. আল-কামার কুরআন আমি সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য; অতএব উপদেশ গ্রহণ করার কেহ আছে কি? ২২
4869 ৫৪. আল-কামার সামূদ সম্প্রদায় সতর্ককারীদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল। ২৩
4870 ৫৪. আল-কামার তারা বলেছিলঃ আমরা কি আমাদেরই সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির অনুসরণ করব? তাহলে তো আমরা বিপথগামী এবং উন্মাদরূপে গন্য হব। ২৪
4871 ৫৪. আল-কামার আমাদের মধ্যে কি তারই প্রতি প্রত্যাদেশ হয়েছে? না, সেতো একজন মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক। ২৫
4872 ৫৪. আল-কামার আগামীকাল তারা জানবে, কে মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক। ২৬
4873 ৫৪. আল-কামার আমি তাদের পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছি এক উষ্ট্রী; অতএব তুমি তাদের আচরণ লক্ষ্য কর এবং ধৈর্যশীল হও, ২৭
4874 ৫৪. আল-কামার আর তুমি তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, তাদের মধ্যে পানি বন্টন নির্ধারিত এবং পানির অংশের জন্য প্রত্যেকে হাযির হবে পালাক্রমে। ২৮
4875 ৫৪. আল-কামার অতঃপর তারা তাদের এক সঙ্গীকে আহবান করল, সে ওকে ধরে হত্যা করল। ২৯
4876 ৫৪. আল-কামার কি কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্ক বাণী! ৩০
4877 ৫৪. আল-কামার আমি তাদেরকে আঘাত হেনেছিলাম এক মহানাদ দ্বারা; ফলে তারা হয়ে গেল খোয়াড় প্রস্তুতকারী বিখন্ডিত শুস্ক শাখা-প্রশাখার ন্যায়। ৩১
4878 ৫৪. আল-কামার আমি কুরআন সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য; অতএব উপদেশ গ্রহণ করার কেহ আছে কি? ৩২
4879 ৫৪. আল-কামার লূত সম্প্রদায় প্রত্যাখ্যান করেছিল সতর্ককারীদেরকে। ৩৩
4880 ৫৪. আল-কামার আমি তাদের উপর প্রেরণ করেছিলাম প্রস্তর বহনকারী প্রচন্ড ঝটিকা, কিন্তু লূত পরিবারের উপর নয়; তাদেরকে আমি উদ্ধার করেছিলাম রাতের শেষাংশে, ৩৪
4881 ৫৪. আল-কামার আমার বিশেষ অনুগ্রহ স্বরূপ; যারা কৃতজ্ঞ আমি এভাবেই তাদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। ৩৫
4882 ৫৪. আল-কামার লূত তাদেরকে সতর্ক করেছিল আমার কঠিন শাস্তি সম্পর্কে। কিন্তু তারা সতর্ক বাণী সম্বন্ধে বিতন্ডা শুরু করল। ৩৬
4883 ৫৪. আল-কামার তারা লূতের নিকট হতে তার মেহমানদেরকে দাবী করল, তখন আমি তাদের দৃষ্টিশক্তি লোপ করে দিলাম এবং বললামঃ আস্বাদন কর আমার শাস্তি এবং সতর্কবাণীর পরিণাম। ৩৭
4884 ৫৪. আল-কামার প্রত্যুষে বিরামহীন শাস্তি তাদেরকে আঘাত করল। ৩৮
4885 ৫৪. আল-কামার (আমি বললাম) আস্বাদন কর আমার শাস্তি এবং সতর্কবাণীর পরিণাম। ৩৯
4886 ৫৪. আল-কামার আমি কুরআন সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেহ আছে কি? ৪০
4887 ৫৪. আল-কামার ফির‘আউন সম্প্রদায়ের নিকটও এসেছিল সতর্ককারী। ৪১
4888 ৫৪. আল-কামার কিন্তু তারা আমার সকল নিদর্শন প্রত্যাখ্যান করল, অতঃপর পরাক্রমশালী ও সর্বশক্তিমান রূপে আমি তাদেরকে সুকঠিন শাস্তি দিলাম। ৪২
4889 ৫৪. আল-কামার তোমাদের মধ্যকার কাফিরেরা কি তাদের অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ? না কি তোমাদের অব্যাহতির কোন সনদ রয়েছে পূর্ববর্তী কিতাবে? ৪৩
4890 ৫৪. আল-কামার এরা কি বলে, আমরা এক সংঘবদ্ধ অপরাজেয় দল? ৪৪
4891 ৫৪. আল-কামার এই দলতো শীঘ্রই পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে, ৪৫
4892 ৫৪. আল-কামার অধিকন্ত কিয়ামাত তাদের শাস্তির নির্ধারিত কাল এবং কিয়ামাত হবে কঠিনতর ও তিক্ততর। ৪৬
4893 ৫৪. আল-কামার নিশ্চয়ই অপরাধীরা বিভ্রান্ত ও বিকারগ্রস্ত। ৪৭
4894 ৫৪. আল-কামার যেদিন তাদেরকে উপুড় করে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে জাহান্নামের দিকে সেই দিন বলা হবেঃ জাহান্নামের যন্ত্রণা আস্বাদন কর। ৪৮
4895 ৫৪. আল-কামার আমি সব কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে। ৪৯
4896 ৫৪. আল-কামার আমার আদেশতো একটি কথায় নিস্পন্ন, চোখের পলকের মত। ৫০
4897 ৫৪. আল-কামার আমি ধ্বংস করেছি তোমাদের মত দলগুলিকে; অতএব উহা হতে উপদেশ গ্রহণকারী কেহ আছে কি? ৫১
4898 ৫৪. আল-কামার তাদের সমস্ত কার্যকলাপ আছে ‘আমলনামায়, ৫২
4899 ৫৪. আল-কামার আছে ক্ষুদ্র ও বৃহৎ সব কিছুই লিপিবদ্ধ; ৫৩
4900 ৫৪. আল-কামার মুত্তাকীরা থাকবে স্রোতস্বিনী বিধৌত জান্নাতে – ৫৪
4901 ৫৪. আল-কামার যোগ্য আসনে, সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহর সান্নিধ্যে। ৫৫
4902 ৫৫. আর-রাহমান দয়াময় আল্লাহ!
4903 ৫৫. আর-রাহমান তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন।
4904 ৫৫. আর-রাহমান তিনিই সৃষ্টি করেছেন মানুষ।
4905 ৫৫. আর-রাহমান তিনিই তাকে শিখিয়েছেন ভাব প্রকাশ করতে।
4906 ৫৫. আর-রাহমান সূর্য ও চাঁদ আবর্তন করে নির্ধারিত কক্ষপথে।
4907 ৫৫. আর-রাহমান ‘তারকা ও বৃক্ষ উভয়ে (আল্লাহকে) সাজদাহ করে।
4908 ৫৫. আর-রাহমান তিনি আকাশকে করেছেন সমুন্নত এবং স্থাপন করেছেন মানদন্ড –
4909 ৫৫. আর-রাহমান যাতে তোমরা ভারসাম্য লংঘন না কর।
4910 ৫৫. আর-রাহমান ওযনের ন্যায্য মান প্রতিষ্ঠিত কর এবং মিযানে কম করনা।
4911 ৫৫. আর-রাহমান তিনি পৃথিবীকে স্থাপন করেছেন সৃষ্ট জীবের জন্য। ১০
4912 ৫৫. আর-রাহমান এতে রয়েছে ফল-মূল এবং খেজুর বৃক্ষ, যার ফল আবরণযুক্ত – ১১
4913 ৫৫. আর-রাহমান এবং খোসাবিশিষ্ট দানা ও সুগন্ধ গুল্ম। ১২
4914 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ১৩
4915 ৫৫. আর-রাহমান মানুষকে তিনি সৃষ্টি করেছেন পোড়া মাটির মত শুস্ক মৃত্তিকা হতে – ১৪
4916 ৫৫. আর-রাহমান আর জিনকে সৃষ্টি করেছেন নির্ধূম অগ্নিশিখা হতে। ১৫
4917 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ১৬
4918 ৫৫. আর-রাহমান তিনিই দুই উদয়াচল ও দুই অস্তাচলের নিয়ন্তা। ১৭
4919 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ১৮
4920 ৫৫. আর-রাহমান তিনি প্রবাহিত করেন দুই দরিয়া, যারা পরস্পর মিলিত হয়, ১৯
4921 ৫৫. আর-রাহমান কিন্তু ওদের মধ্যে রয়েছে এক অন্তরাল যা ওরা অতিক্রম করতে পারেনা। ২০
4922 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ২১
4923 ৫৫. আর-রাহমান উভয় দরিয়া হতে উৎপন্ন হয় মুক্তা ও প্রবাল। ২২
4924 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ২৩
4925 ৫৫. আর-রাহমান সমুদ্রে বিচরণশীল পর্বত সদৃশ নৌযানসমূহ তাঁরই নিয়ন্ত্রণাধীন। ২৪
4926 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ২৫
4927 ৫৫. আর-রাহমান ভূপৃষ্ঠে যা কিছু আছে সব কিছু নশ্বর, ২৬
4928 ৫৫. আর-রাহমান অবিনশ্বর শুধু তোমার রবের মুখমন্ডল যিনি মহিমাময়, মহানুভব। ২৭
4929 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ২৮
4930 ৫৫. আর-রাহমান আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা আছে সবাই তাঁর নিকট প্রার্থী, প্রতিনিয়ত তিনি অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজে রত। ২৯
4931 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৩০
4932 ৫৫. আর-রাহমান হে মানুষ ও জিন! আমি শীঘ্রই তোমাদের প্রতি মনোনিবেশ করব। ৩১
4933 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৩২
4934 ৫৫. আর-রাহমান হে জিন ও মানুষ সম্প্রদায়! আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সীমা তোমরা যদি অতিক্রম করতে পার, অতিক্রম কর; কিন্তু তোমরা তা পারবেনা আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত। ৩৩
4935 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৩৪
4936 ৫৫. আর-রাহমান তোমাদের প্রতি প্রেরিত হবে অগ্নিশিখা ও ধুম্রপুঞ্জ, তখন তোমরা তা প্রতিরোধ করতে পারবেনা। ৩৫
4937 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৩৬
4938 ৫৫. আর-রাহমান যেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে সেইদিন ওটা রক্ত-রঙ্গে রঞ্জিত চর্মের রূপ ধারণ করবে; ৩৭
4939 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৩৮
4940 ৫৫. আর-রাহমান সেদিন মানুষকে তার অপরাধ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হবেনা, আর না জিনকে। ৩৯
4941 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৪০
4942 ৫৫. আর-রাহমান অপরাধীদের পরিচয় পাওয়া যাবে তাদের চেহারা হতে; তাদেরকে পাকড়াও করা হবে পা ও মাথার ঝুঁটি ধরে। ৪১
4943 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৪২
4944 ৫৫. আর-রাহমান এটাই সেই জাহান্নাম, যা অপরাধীরা অবিশ্বাস করত। ৪৩
4945 ৫৫. আর-রাহমান তারা জাহান্নামের আগুন ও ফুটন্ত পানির মধ্যে ছুটাছুটি করবে। ৪৪
4946 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৪৫
4947 ৫৫. আর-রাহমান আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে, তার জন্য রয়েছে দু’টি উদ্যান। ৪৬
4948 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৪৭
4949 ৫৫. আর-রাহমান উভয়ই বহু শাখা-পল্লব বিশিষ্ট বৃক্ষে পূর্ণ। ৪৮
4950 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৪৯
4951 ৫৫. আর-রাহমান উভয় উদ্যানে রয়েছে প্রবাহমান দুই প্রস্রবণ; ৫০
4952 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৫১
4953 ৫৫. আর-রাহমান উভয় উদ্যানে রয়েছে প্রত্যক ফল, জোড়ায় জোড়ায়। ৫২
4954 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৫৩
4955 ৫৫. আর-রাহমান সেখানে তারা হেলান দিয়ে বসবে পুরু রেশমের আস্তর বিশিষ্ট ফরাশে, দুই উদ্যানের ফল হবে তাদের নিকটবর্তী। ৫৪
4956 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৫৫
4957 ৫৫. আর-রাহমান সেই সবের মাঝে রয়েছে বহু আনতনয়না, যাদেরকে পূর্বে কোন মানুষ অথবা জিন স্পর্শ করেনি। ৫৬
4958 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৫৭
4959 ৫৫. আর-রাহমান তারা যেন প্রবাল ও পদ্মরাগ; ৫৮
4960 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৫৯
4961 ৫৫. আর-রাহমান উত্তম কাজের জন্য উত্তম পুরস্কার ব্যতীত আর কি হতে পারে? ৬০
4962 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৬১
4963 ৫৫. আর-রাহমান এই উদ্যানদ্বয় ব্যতীত আরও দু’টি উদ্যান রয়েছে – ৬২
4964 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৬৩
4965 ৫৫. আর-রাহমান ঘন সবুজ এ উদ্যানটি দু’টি। ৬৪
4966 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৬৫
4967 ৫৫. আর-রাহমান উভয় উদ্যানে রয়েছে উচ্ছলিত দুই প্রস্রবন। ৬৬
4968 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৬৭
4969 ৫৫. আর-রাহমান সেখানে রয়েছে ফলমূল, খেজুর ও আনার। ৬৮
4970 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৬৯
4971 ৫৫. আর-রাহমান সেই সকলের মাঝে রয়েছে সুশীলা, সুন্দরীগণ। ৭০
4972 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৭১
4973 ৫৫. আর-রাহমান তারা তাবুতে সুরক্ষিত হুর। ৭২
4974 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৭৩
4975 ৫৫. আর-রাহমান তাদেরকে ইতোপূর্বে কোন মানুষ অথবা জিন স্পর্শ করেনি। ৭৪
4976 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৭৫
4977 ৫৫. আর-রাহমান তারা হেলান দিয়ে বসবে সবুজ তাকিয়ায় ও সুন্দর গালিচার উপর। ৭৬
4978 ৫৫. আর-রাহমান সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের রবের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? ৭৭
4979 ৫৫. আর-রাহমান কত মহান তোমার রবের নাম যিনি মহিমাময় ও মহানুভব! ৭৮
4980 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া যখন কিয়ামাত সংঘটিত হবে –
4981 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া তখন সংঘটন অস্বীকার করার কেহ থাকবেনা।
4982 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া এটা কেহকে করবে নীচ, কেহকে করবে সমুন্নত;
4983 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া যখন প্রবল কম্পনে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী –
4984 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া এবং পবর্তমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়বে।
4985 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া ফলে ওটা পর্যবসিত হবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণায় –
4986 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া এবং তোমরা বিভক্ত হয়ে পড়বে তিন শ্রেণীতে।
4987 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া ডান দিকের দল! কত ভাগ্যবান ডান দিকের দল।
4988 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া এবং বাম দিকের দল! কত হতভাগা বাম দিকের দল!
4989 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া আর অগ্রবর্তীগণইতো অগ্রবর্তী। ১০
4990 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া তারাই নৈকট্য প্রাপ্ত – ১১
4991 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া সুখ উদ্যানের। ১২
4992 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া বহু সংখ্যক হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য হতে; ১৩
4993 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া এবং অল্প সংখ্যক হবে পরবর্তীদের মধ্য হতে, ১৪
4994 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া স্বর্ণ খচিত আসনে – ১৫
4995 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া তারা হেলান দিয়ে বসবে, পরস্পর মুখোমুখী হয়ে। ১৬
4996 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া তাদের সেবায় ঘোরাফিরা করবে চির কিশোরেরা – ১৭
4997 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া পান-পাত্র, কুজা ও প্রস্রবন নিঃসৃত সুরাপূর্ণ পেয়ালা নিয়ে। ১৮
4998 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া সেই সুরা পানে তাদের শিরঃপীড়া হবেনা, তারা জ্ঞানহারাও হবেনা। ১৯
4999 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া এবং তাদের পছন্দ মত ফলমূল – ২০
5000 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া আর তাদের ঈস্পিত পাখীর গোশত দিয়ে; ২১
5001 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া আর তাদের জন্য থাকবে আয়তলোচনা হুর – ২২
5002 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া সুরক্ষিত মুক্তা সদৃশ – ২৩
5003 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া তাদের কর্মের পুরস্কার স্বরূপ। ২৪
5004 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া সেখানে তারা শুনবেনা কোন অসার অথবা পাপ বাক্য, ২৫
5005 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া ‘সালাম’ আর ‘সালাম’ বাণী ব্যতীত। ২৬
5006 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া আর ডান দিকের দল! কত ভাগ্যবান ডান দিকের দল! ২৭
5007 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া তারা থাকবে এক উদ্যানে, সেখানে আছে কন্টকহীন কুল বৃক্ষ, ২৮
5008 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া কাঁদি ভরা কদলী বৃক্ষ, ২৯
5009 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া সম্প্রসারিত ছায়া, ৩০
5010 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া সদ্য প্রবাহমান পানি, ৩১
5011 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া ও প্রচুর ফলমূল – ৩২
5012 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া যা শেষ হবেনা এবং যা নিষিদ্ধও হবেনা, ৩৩
5013 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া আর সমুচ্চ শয্যাসমূহ। ৩৪
5014 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া তাদের জন্য আমি করেছি বিশেষ সৃষ্টি। ৩৫
5015 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া তাদেরকে করেছি কুমারী, ৩৬
5016 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া সোহাগিনী ও সমবয়স্কা – ৩৭
5017 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া (এ সবই) ডান দিকের লোকদের জন্য। ৩৮
5018 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া তাদের অনেকে হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য হতে। ৩৯
5019 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া এবং অনেকে হবে পরবর্তীদের মধ্য হতে। ৪০
5020 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া আর বাম দিকের দল, কত হতভাগা বাম দিকের দল! ৪১
5021 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া তারা থাকবে অত্যুষ্ণ বায়ু ও উত্তপ্ত পানিতে, ৪২
5022 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া কৃষ্ণ বর্ণ ধুম্রের ছায়ায়, ৪৩
5023 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া যা শীতলও নয়, আরামদায়কও নয়। ৪৪
5024 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া ইতোপূর্বে তারাতো মগ্ন ছিল ভোগ বিলাসে। ৪৫
5025 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া এবং তারা অবিরাম লিপ্ত ছিল ঘোরতর পাপ কর্মে। ৪৬
5026 ৫৬. আল-ওয়াকিয়া তারা বলতঃ মরে অস্থি ও মৃত্তিকায় পরিণত হলেও কি পুনরুত্থিত হব আমরা? ৪৭