কুরআন বাংলা এন্ট্রি আপডেট ফরম

Back

ক্র. সূরা বাংলা অর্থ আয়াত নং মূল বিষয়বস্তু/কী ওয়ার্ড এডিট
1 ১. আল-ফাতিহা আল্লাহরই জন্য সমস্ত প্রশংসা, যিনি বিশ্বজগতের রব।
2 ১. আল-ফাতিহা যিনি পরম দয়ালু, অতিশয় করুণাময়।
3 ১. আল-ফাতিহা যিনি বিচার দিনের মালিক।
4 ১. আল-ফাতিহা আমরা আপনারই ইবাদাত করি এবং আপনারই নিকট সাহায্য চাই।
5 ১. আল-ফাতিহা আমাদেরকে সরল সঠিক পথ প্রদর্শন করুন।
6 ১. আল-ফাতিহা তাদের পথ, যাদের প্রতি আপনি অনুগ্রহ করেছেন। তাদের পথে নয়, যাদের প্রতি আপনার গযব বর্ষিত হয়েছে, তাদের পথও নয় যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
7 ২. আল-বাকারা আলিফ-লাম-মীম।
8 ২. আল-বাকারা ইহা ঐ গ্রন্থ যার মধ্যে কোন সন্দেহ-সংশয়ের অবকাশ নেই; ধর্ম-ভীরুদের জন্য এ গ্রন্থ পথনির্দেশ।
9 ২. আল-বাকারা যারা অদৃশ্য বিষয়গুলিতে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সালাত প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদেরকে যে উপজীবিকা প্রদান করেছি তা হতে দান করে থাকে । নামাজ
10 ২. আল-বাকারা এবং তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে ও তোমার পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছিল, যারা তদ্বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং আখিরাতের প্রতি যারা দৃঢ় বিশ্বাস রাখে।
11 ২. আল-বাকারা এরাই তাদের রবের পক্ষ হতে প্রাপ্ত হিদায়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছে এবং এরাই পূর্ণ সফলকাম।
12 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাস করছে তাদের জন্য উভয়ই সমান; তুমি তাদেরকে ভয় প্রদর্শন কর বা না কর, তারা ঈমান আনবেনা।
13 ২. আল-বাকারা আল্লাহ তাদের অন্তরসমূহের উপর ও তাদের কর্ণসমূহের উপর মোহরাংকিত করে দিয়েছেন এবং তাদের চক্ষুসমূহের উপর আবরণ পড়ে আছে এবং তাদের জন্য রয়েছে ভয়ানক শাস্তি। জাহান্নাম
14 ২. আল-বাকারা আর মানুষের মধ্যে এমন লোক আছে যারা বলে, আমরা আল্লাহর উপর এবং শেষ দিনের উপর ঈমান এনেছি, অথচ তারা মোটেই ঈমানদার নয়।
15 ২. আল-বাকারা তারা আল্লাহ ও মু’মিনদের সঙ্গে ধোঁকাবাজী করে। প্রকৃত পক্ষে তারা নিজেদের ব্যতীত আর কারও সাথে ধোঁকাবাজী করেনা, অথচ তারা এ সম্বন্ধে অনুভব করতে পারেনা।
16 ২. আল-বাকারা তাদের অন্তরে পীড়া রয়েছে, পরন্ত আল্লাহ তাদের পীড়া আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন এবং তাদের জন্য গুরুতর শাস্তি রয়েছে যেহেতু তারা অসত্য বলত। ১০ জাহান্নাম
17 ২. আল-বাকারা এবং যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ তোমরা পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করনা তখন তারা বলেঃ আমরাতো শুধুই শান্তি স্থাপনকারী। ১১
18 ২. আল-বাকারা সাবধান! নিশ্চয়ই তারাই অশান্তি সৃষ্টিকারী, কিন্তু তারা বুঝেনা। ১২
19 ২. আল-বাকারা এবং যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ লোকে যেরূপ বিশ্বাস করেছে তোমরাও তদ্রুপ বিশ্বাস স্থাপন কর, তখন তারা বলেঃ নির্বোধেরা যেরূপ বিশ্বাস করেছে আমরাও কি সেইরূপ বিশ্বাস করব? সাবধান! নিশ্চয়ই তারাই নির্বোধ, কিন্তু তা তারা অবগত নয়। ১৩
20 ২. আল-বাকারা এবং যখন তারা মু’মিনদের সাথে মিলিত হয় তখন তারা বলেঃ আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি; এবং যখন তারা নিজেদের দলপতি ও দুষ্ট নেতাদের সাথে গোপনে মিলিত হয় তখন বলেঃ আমরা তোমাদের সঙ্গেই আছি, আমরাতো শুধু ঠাট্টা-বিদ্রুপ ও প্রহসন করে থাকি। ১৪
21 ২. আল-বাকারা আল্লাহ তাদের সঙ্গে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করছেন এবং তাদেরকে অবকাশ দিচ্ছেন। ফলে তারা নিজেদের অবাধ্যতার মধ্যে উদ্ভ্রান্ত হয়ে ফিরছে। ১৫
22 ২. আল-বাকারা এরা তারাই যারা সু-পথের পরিবর্তে কু-পথকে ক্রয় করেছে, সুতরাং তাদের বাণিজ্য লাভজনক হয়নি এবং তারা সরল সঠিক পথে চলেনি। ১৬
23 ২. আল-বাকারা এদের অবস্থা ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে আগুন প্রজ্জ্বলিত করল, অতঃপর যখন তার পার্শ্ববর্তী সমস্ত স্থান আলোকিত হল, তখন আল্লাহ তাদের আলো ছিনিয়ে নিলেন এবং তাদেরকে অন্ধকারের মধ্যে ছেড়ে দিলেন, সুতরাং তারা কিছুই দেখতে পায়না। ১৭
24 ২. আল-বাকারা তারা বধির, মূক, অন্ধ। অতএব তারা প্রত্যাবৃত্ত হবেনা। ১৮
25 ২. আল-বাকারা অথবা আকাশ হতে বারি বর্ষণের ন্যায় যাতে অন্ধকার, গর্জন ও বিদ্যুৎ রয়েছে, তারা বজ্রধ্বনি বশতঃ মৃত্যুভয়ে তাদের কর্ণসমূহে স্ব স্ব অঙ্গুলী গুজে দেয়, এবং আল্লাহ অবিশ্বাসীদের পরিবেষ্টনকারী। ১৯
26 ২. আল-বাকারা অচিরে বিদ্যুৎ তাদের দৃষ্টি হরণ করবে, যখন তাদের প্রতি আলোক প্রদীপ্ত হয় তখন তারা চলতে থাকে এবং যখন তাদের উপর অন্ধকার আচ্ছন্ন হয় তখন তারা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে এবং যদি আল্লাহ ইচ্ছা করেন - নিশ্চয়ই তাদের শ্রবণশক্তি ও তাদের দৃষ্টিশক্তি হরণ করতে পারেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান। ২০
27 ২. আল-বাকারা হে মানববৃন্দ! তোমরা তোমাদের রবের ইবাদাত কর যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যেন তোমরা ধর্মভীরু হও। ২১
28 ২. আল-বাকারা যিনি তোমাদের জন্য ভূতলকে শয্যা ও আকাশকে ছাদ স্বরূপ সৃষ্টি করেছেন এবং আকাশ হতে বারি বর্ষণ করেন, অতঃপর তদ্বারা তোমাদের জন্য উপজীবিকা স্বরূপ ফলপুঞ্জ উৎপাদন করেন, অতএব তোমরা আল্লাহর সমকক্ষ স্থির করনা এবং তোমরা এটা অবগত আছ। ২২
29 ২. আল-বাকারা এবং আমি আমার বান্দার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছি, যদি তোমরা তাতে সন্দিহান হও তাহলে তৎসদৃশ একটি ‘‘সূরা’’ আনয়ন কর এবং তোমাদের সেই সাহায্যকারীদেরকে ডেকে নাও যারা আল্লাহ হতে পৃথক, যদি তোমরা সত্যবাদী হও! ২৩
30 ২. আল-বাকারা অতঃপর যদি তোমরা তা করতে না পার এবং তোমরা তা কখনও করতে পারবেনা, তাহলে তোমরা সেই জাহান্নামের ভয় কর যার খোরাক মনুষ্য ও প্রস্তর খন্ড - যা অবিশ্বাসীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ২৪ জাহান্নাম
31 ২. আল-বাকারা এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎ কার্যাবলী সম্পাদন করে থাকে তাদেরকে সুসংবাদ প্রদান কর যে, তাদের জন্য এমন জান্নাত রয়েছে যার তলদেশ দিয়ে নদীসমূহ প্রবাহিত হচ্ছে; যখনই সেখানে তাদেরকে খাবার হিসাবে ফলপুঞ্জ প্রদান করা হবে তখনই তারা বলবেঃ আমাদেরতো এটা পূর্বেই প্রদত্ত হয়েছিল, বস্তুতঃ তাদেরকে একই সদৃশ ফল প্রদান করা হবে, এবং তাদের জন্য তন্মধ্যে শুদ্ধা সহধর্মিনীগণ রয়েছে, এবং তন্মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। ২৫ বেহেস্ত
32 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই আল্লাহ মশা অথবা তদপেক্ষা ক্ষুদ্রতর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করতে লজ্জাবোধ করেননা। সুতরাং যারা ঈমান এনেছে তারাতো বিশ্বাস করবে যে, এ উপমা তাদের রবের পক্ষ হতে খুবই স্থানোপযোগী হয়েছে, আর যারা কাফির সর্বাবস্থায় তারা এটাই বলবে যে, এ সব নগণ্য বস্ত্তর উপমা দ্বারা আল্লাহর উদ্দেশ্যই বা কি? তিনি এর দ্বারা অনেককে বিপথগামী করেন এবং এর দ্বারা অনেককে সঠিক পথ প্রদর্শন করেন, আর এর দ্বারা তিনি শুধু ফাসিকদেরকেই বিপথগামী করে থাকেন। ২৬
33 ২. আল-বাকারা যারা আল্লাহর সঙ্গে দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে এবং ঐ সব সম্বন্ধ ছিন্ন করে যা অবিচ্ছিন্ন রাখতে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন এবং যারা ভূপৃষ্ঠে বিবাদ সৃষ্টি করে তারাই পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত। ২৭
34 ২. আল-বাকারা কিরূপে তোমরা আল্লাহকে অবিশ্বাস করছ? অথচ তোমরা ছিলে প্রাণহীন? অতঃপর তিনিই তোমাদেরকে সঞ্জীবিত করেছেন, পুনরায় তিনি তোমাদেরকে নির্জীব করবেন এবং পুনরায় তোমাদেরকে জীবিত করা হবে। অবশেষে তোমাদেরকে তাঁরই দিকে প্রত্যাগমন করতে হবে। ২৮ কিয়ামত
35 ২. আল-বাকারা পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই তিনি তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন; অতঃপর তিনি আকাশের প্রতি মনঃসংযোগ করেন, অতঃপর সপ্ত আকাশ সুবিন্যস্ত করেন এবং তিনি সর্ব বিষয়ে মহাজ্ঞানী। ২৯
36 ২. আল-বাকারা এবং যখন তোমার রাব্ব মালাইকা/ফেরেশতাদের বললেনঃ নিশ্চয়ই আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করব; তারা বললঃ আপনি কি যমীনে এমন কেহকে সৃষ্টি করবেন যারা তন্মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত করবে? এবং আমরাইতো আপনার গুণগান করছি এবং আপনারই পবিত্রতা বর্ণনা করে থাকি। তিনি বললেনঃ তোমরা যা অবগত নও নিশ্চয়ই আমি তা জ্ঞাত আছি। ৩০
37 ২. আল-বাকারা এবং তিনি আদমকে সমস্ত নাম শিক্ষা দিলেন, অনন্তর তৎসমূদয় মালাইকা/ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপিত করলেন, অতঃপর বললেনঃ যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে আমাকে এ সব বস্তুর নামসমূহ বর্ণনা কর। ৩১
38 ২. আল-বাকারা তারা বলেছিলঃ আপনি পরম পবিত্র! আপনি আমাদেরকে যা শিক্ষা দিয়েছেন তদ্ব্যতীত আমাদের কোনই জ্ঞান নেই, নিশ্চয়ই আপনি মহাজ্ঞানী, বিজ্ঞানময়। ৩২
39 ২. আল-বাকারা তিনি বলেছিলেনঃ হে আদম! তুমি তাদেরকে ঐ সকলের নামসমূহ বর্ণনা কর; অতঃপর যখন সে তাদেরকে ঐগুলির নামসমূহ বলেছিল তখন তিনি বলেছিলেনঃ আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, নিশ্চয়ই আমি আসমান ও যমীনের অদৃশ্য বিষয় অবগত আছি এবং তোমরা যা প্রকাশ কর ও যা গোপন কর আমি তাও পরিজ্ঞাত আছি? ৩৩
40 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে বলেছিলাম যে, তোমরা আদমকে সাজদাহ কর, তখন ইবলীস ব্যতীত সকলে সাজদাহ করেছিল; সে অগ্রাহ্য করল ও অহংকার করল এবং কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। ৩৪ সিজদাহ
41 ২. আল-বাকারা এবং আমি বললামঃ হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে অবস্থান কর এবং তা হতে যা ইচ্ছা স্বচ্ছন্দে আহার কর; কিন্তু ঐ বৃক্ষের নিকটবর্তী হয়োনা, তাহলে তোমরা অত্যাচারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। ৩৫ বেহেস্ত
42 ২. আল-বাকারা অনন্তর শাইতান তাদের উভয়কে সেখান হতে বিচ্যুত করল, অতঃপর তারা উভয়ে যেখানে ছিল সেখান হতে তাদেরকে বর্হিগত করল; এবং আমি বললামঃ তোমরা নীচে নেমে যাও, তোমরা পরস্পর পরস্পরের শত্রু; এবং পৃথিবীতেই রয়েছে তোমাদের জন্য এক নির্দিষ্ট কালের অবস্থিতি ও ভোগ সম্পদ। ৩৬
43 ২. আল-বাকারা অতঃপর আদম স্বীয় রাব্ব হতে কতিপয় বাণী শিক্ষা লাভ করল, আল্লাহ তখন তার প্রতি কৃপা দৃষ্টি দিলেন; নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল, করুণাময়! ৩৭
44 ২. আল-বাকারা আমি বললামঃ তোমরা সবাই এখান থেকে নীচে নেমে যাও; অনন্তর আমার পক্ষ হতে তোমাদের নিকট যে উপদেশ উপস্থিত হবে-যারা আমার সেই উপদেশ অনুসরণ করবে বস্তুতঃ তাদের কোনই ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবেনা। ৩৮
45 ২. আল-বাকারা আর যারা অবিশ্বাস করবে এবং আমার নিদর্শনসমূহে অসত্যারোপ করবে, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী - তন্মধ্যে তারা সদা অবস্থান করবে। ৩৯ জাহান্নাম
46 ২. আল-বাকারা হে ইসরাঈলী বংশধর! আমি তোমাদেরকে যে সুখ সম্পদ দান করেছি তা স্মরণ কর এবং আমার অঙ্গীকার পূর্ণ কর - আমিও তোমাদের প্রতি কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করব এবং তোমরা শুধু আমাকেই ভয় কর। ৪০
47 ২. আল-বাকারা এবং আমি যা অবতীর্ণ করেছি তৎপ্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, ইহা (কুরআন) তোমাদের কাছে যা আছে উহারই সত্যতা প্রনয়নকারী এবং এতে তোমরাই প্রথম অবিশ্বাসী হয়োনা এবং আমার নিদর্শনাবলীর পরিবর্তে সামান্য মূল্য গ্রহণ করনা এবং তোমরা বরং আমাকেই ভয় কর। ৪১
48 ২. আল-বাকারা এবং তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করনা এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করনা। ৪২
49 ২. আল-বাকারা আর তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠিত কর ও যাকাত প্রদান কর এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু কর। ৪৩ নামাজ
50 ২. আল-বাকারা তোমরা কি লোকদেরকে সৎ কাজে আদেশ করছ এবং তোমাদের নিজেদের সম্বন্ধে বিস্মৃত হচ্ছ? অথচ তোমরা গ্রন্থ পাঠ কর; তাহলে কি তোমরা হৃদয়ঙ্গম করছনা? ৪৪
51 ২. আল-বাকারা এবং তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও; অবশ্যই ওটা কঠিন, কিন্তু বিনীতদের পক্ষে নয়। ৪৫ নামাজ
52 ২. আল-বাকারা যারা ধারণা করে যে, নিশ্চয়ই তারা তাদের রবের সাথে সম্মিলিত হবে এবং তারা তাঁরই দিকে প্রতিগমন করবে। ৪৬ কিয়ামত
53 ২. আল-বাকারা হে বানী ইসরাঈল! আমি তোমাদেরকে যে সুখ সম্পদ দান করেছি তা স্মরণ কর এবং নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে সমগ্র পৃথিবীর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি। ৪৭
54 ২. আল-বাকারা এবং তোমরা সেই দিনের ভয় কর, যে দিন এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তি হতে কিছুমাত্র উপকৃত হবেনা এবং কোন ব্যক্তি হতে কোন সুপারিশও গৃহীত হবেনা, কোন ব্যক্তি হতে কোন বিনিময়ও গ্রহণ করা হবেনা এবং তাদেরকে সাহায্য করাও হবেনা। ৪৮ কিয়ামত
55 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি তোমাদেরকে ফির‘আউনের সম্প্রদায় হতে বিমুক্ত করেছিলাম - তারা তোমাদেরকে কঠোর শাস্তি প্রদান করত, তোমাদের পুত্রদেরকে হত্যা করত এবং তোমাদের কন্যাদেরকে জীবিত রাখত এবং এতে তোমাদের রাব্ব হতে তোমাদের জন্য মহা পরীক্ষা ছিল। ৪৯
56 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি তোমাদের জন্য সমুদ্রকে বিভক্ত করেছিলাম, অতঃপর তোমাদেরকে উদ্ধার করেছিলাম ও ফির‘আউনের স্বজনদেরকে নিমজ্জিত করেছিলাম এবং তোমরা তা প্রত্যক্ষ করেছিলে। ৫০ মোজেজা
57 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি মূসার সঙ্গে চল্লিশ রজনীর অঙ্গীকার করেছিলাম, অনন্তর তোমরা গো-বৎসকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিলে এবং তোমরা ছিলে অত্যাচারী। ৫১
58 ২. আল-বাকারা এর পরেও আমি তোমাদেরকে মার্জনা করেছিলাম - যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। ৫২
59 ২. আল-বাকারা আর যখন আমি মূসাকে গ্রন্থ এবং সত্য ও মিথ্যার প্রভেদকারী নির্দেশ দিয়েছিলাম, যেন তোমরা সুপথ প্রাপ্ত হও। ৫৩
60 ২. আল-বাকারা আর যখন মূসা স্বীয় সম্প্রদায়কে বললঃ হে আমার সম্প্রদায়! নিশ্চয়ই তোমরা গো-বৎসকে উপাস্য রূপে গ্রহণ করে তোমাদের নিজেদের প্রতি অত্যাচার করেছ। অতএব তোমরা তোমাদের রবের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর তোমরা তোমাদের নিজ নিজ প্রাণ বিসর্জন দাও, তোমাদের রবের নিকট এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর; অতপর তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করলেন, নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল, করুণাময়। ৫৪
61 ২. আল-বাকারা এবং যখন তোমরা বলেছিলেঃ হে মূসা! আমরা আল্লাহকে প্রকাশ্যভাবে দর্শন না করা পর্যন্ত তোমাকে বিশ্বাস করবনা - তখন বজ্রপাত তোমাদেরকে আক্রমণ করেছিল এবং তোমরা তা প্রত্যক্ষ করেছিলে। ৫৫
62 ২. আল-বাকারা অতঃপর তোমাদের মৃত্যুর পর আমি তোমাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করেছিলাম, যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। ৫৬ মোজেজা
63 ২. আল-বাকারা এবং আমি তোমাদের উপর মেঘমালার ছায়া দান করেছিলাম এবং তোমাদের প্রতি ‘মান্না’ ও ‘সালওয়া’ অবতীর্ণ করেছিলাম; আমি তোমাদেরকে যে উপজীবিকা দান করেছি সেই পবিত্র জিনিস হতে আহার কর; এবং তারা আমার কোন অনিষ্ট করেনি, বরং তারা নিজেদের অনিষ্ট করেছিল। ৫৭
64 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি বললামঃ তোমরা এই নগরে প্রবেশ কর, অতঃপর যা ইচ্ছা স্বচ্ছন্দে আহার কর এবং সাজদাহবনতভাবে দ্বারে প্রবেশ কর এবং তোমরা বলঃ আমরা ক্ষমা প্রার্থনা করছি, তাহলে আমি তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করব এবং অচিরেই সৎকর্মশীলগণকে অধিকতর দান করব। ৫৮
65 ২. আল-বাকারা অনন্তর যারা অত্যাচার করেছিল তাদেরকে যা বলা হয়েছিল, তৎপরিবর্তে তারা সেই কথার পরিবর্তন করল, পরে অত্যাচারীরা যে দুস্কর্ম করেছিল তজ্জন্য আমি তাদের উপর আকাশ হতে শাস্তি অবতীর্ণ করেছিলাম। ৫৯
66 ২. আল-বাকারা এবং যখন মূসা স্বীয় সম্প্রদায়ের জন্য পানি প্রার্থনা করেছিল তখন আমি বলেছিলামঃ তুমি স্বীয় লাঠি দ্বারা প্রস্তরে আঘাত কর, অনন্তর তা হতে দ্বাদশ প্রস্রবন বিনিঃসৃত হল, প্রত্যেকেই স্ব স্ব স্থান জেনে নিল, তোমরা আল্লাহর উপজীবিকা হতে আহার কর ও পান কর এবং পৃথিবীতে শান্তি ভঙ্গকারী রূপে বিচরণ করনা। ৬০ মোজেজা
67 ২. আল-বাকারা এবং যখন তোমরা বলেছিলে - হে মূসা! আমরা একইরূপ খাদ্যে ধৈর্য ধারণ করতে পারছিনা, অতএব তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট প্রার্থনা কর যেন তিনি আমাদের জন্মভূমিতে যা উৎপন্ন হয় তা হতে ওর শাক-শব্জি, ওর কাঁকুড়, ওর গম, ওর মসুর এবং ওর পিয়াজ উৎপাদন করেন। সে বলেছিলঃ যা উৎকৃষ্ট তোমরা কি তার সঙ্গে যা নিকৃষ্ট তার বিনিময় করতে চাও? কোন নগরে উপনীত হও, তোমাদের প্রার্থিত দ্রব্যগুলি অবশ্যই প্রাপ্ত হবে। তাদের উপর লাঞ্ছনা ও দারিদ্রতা নিপতিত হল এবং তারা আল্লাহর কোপে পতিত হল এই হেতু যে, নিশ্চয়ই তারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহে অবিশ্বাস করত এবং অন্যায়ভাবে নাবীগণকে হত্যা করত; এবং এই হেতু যে, তারা অবাধ্যাচরণ করেছিল ও তারা সীমা অতিক্রম করেছিল। ৬১
68 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই মুসলিম, ইয়াহুদী, খৃষ্টান এবং সাবেঈন সম্প্রদায়, (এদের মধ্যে) যারা আল্লাহর প্রতি ও কিয়ামাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং ভাল কাজ করে, তাদের জন্য তাদের রবের নিকট পুরস্কার রয়েছে, তাদের কোন প্রকার ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবেনা। ৬২ কিয়ামত
69 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি তোমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম এবং তোমাদের উপর তূর পর্বত সমুচ্চ করেছিলাম যে, আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি তা দৃঢ় রূপে ধারণ কর এবং এতে যা আছে তা স্মরণ কর - সম্ভবতঃ তোমরা নিস্কৃতি পাবে। ৬৩
70 ২. আল-বাকারা এরপর পুনরায় তোমরা ফিরে গেলে, অতএব যদি তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ এবং তাঁর করুণা না থাকত তাহলে অবশ্যই তোমরা বিনাশ প্রাপ্ত হতে। ৬৪
71 ২. আল-বাকারা এবং অবশ্যই তোমরা অবগত আছ যে, তোমাদের মধ্যে যারা শনিবারের ব্যাপারে সীমা লংঘন করেছিল। আমি তাদেরকে বলেছিলাম যে, তোমরা অধম বানর হয়ে যাও। ৬৫
72 ২. আল-বাকারা অনন্তর আমি এটা তাদের সমসাময়িক ও তাদের পরবর্তীদের জন্য দৃষ্টান্ত এবং ধর্মভীরুগণের জন্য উপদেশ স্বরূপ করেছিলাম। ৬৬
73 ২. আল-বাকারা এবং যখন মূসা নিজ সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা একটি গরু যবাহ কর। তারা বলেছিলঃ তুমি কি আমাদেরকে উপহাস করছ? সে বলেছিলঃ আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যেন আমি মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত না হই। ৬৭
74 ২. আল-বাকারা তারা বলেছিলঃ তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট প্রার্থনা কর যে, তিনি আমাদেরকে যেন ওটা কি কি গুণ বিশিষ্ট হওয়া দরকার তা বলে দেন। সে বলেছিলঃ তিনি বলেছেন যে, নিশ্চয়ই সেই গরু বয়োঃবৃদ্ধ নয় এবং শাবকও নয়, এ দু’য়ের মধ্যবর্তী; অতএব তোমরা যেরূপ আদিষ্ট হয়েছ তা করে ফেল। ৬৮
75 ২. আল-বাকারা তারা বলেছিলঃ তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট প্রার্থনা কর যে, তিনি যেন ওর বর্ণ কিরূপ তা আমাদেরকে বলে দেন। সে বলেছিলঃ তিনি বলেছেন যে, নিশ্চয়ই সেই গরুর বর্ণ গাঢ় পীত, ওটা দর্শকদেরকে আনন্দ দান করে। ৬৯
76 ২. আল-বাকারা তারা বলেছিলঃ তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট প্রার্থনা কর যে, তিনি যেন ওটা কিরূপ তা আমাদের জন্য বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই আমাদের নিকট সকল গরুই সমতুল্য এবং আল্লাহ ইচ্ছা করলে আমরা সুপথগামী হব। ৭০
77 ২. আল-বাকারা সে বলেছিলঃ নিশ্চয়ই তিনি বলেছেন যে, অবশ্যই সেই গরু সুস্থকায়, নিখুঁত, ওটা চাষাবাদের কাজে লাগানো হয়নি এবং ক্ষেতে পানি সেচনেও নিযুক্ত হয়নি। তারা বলেছিলঃ এক্ষণে তুমি সত্য এনেছ, অতঃপর তারা ওটা যবাহ করল যা তাদের করার ইচ্ছা ছিলনা। ৭১
78 ২. আল-বাকারা এবং যখন তোমরা এক ব্যক্তিকে হত্যা করার পর তদ্বিষয়ে বিরোধ করছিলে এবং তোমরা যা গোপন করছিলে আল্লাহ তার প্রকাশক হলেন। ৭২
79 ২. আল-বাকারা অতঃপর আমি বলেছিলামঃ ওর এক খন্ড দ্বারা তাকে আঘাত কর, এই রূপে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং স্বীয় নিদর্শনসমূহ প্রদর্শন করেন যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর। ৭৩ মোজেজা
80 ২. আল-বাকারা অতঃপর তোমাদের হৃদয় প্রস্তরের ন্যায় কঠিন, বরং ওর চেয়েও কঠিনতর হল এবং নিশ্চয়ই প্রস্তর হতেও প্রস্রবন নির্গত হয় এবং নিশ্চয়ই ওগুলির মধ্যে কোন কোনটি বিদীর্ণ হয়, অতঃপর তা হতে পানি নির্গত হয় এবং নিশ্চয়ই ঐগুলির মধ্যে কোনটি আল্লাহর ভয়ে পতিত হয় এবং তোমরা যা করছ তৎপ্রতি আল্লাহ অমনোযোগী নন। ৭৪
81 ২. আল-বাকারা তোমরা কি আশা কর যে, তোমাদের কথায় তারা ঈমান আনবে? অথচ তাদের মধ্যে এমন কতক লোক গত হয়েছে যারা আল্লাহর কালাম শুনত, অতঃপর উহা বুঝার পর উহাকে বিকৃত করত, অথচ তারা জানত। ৭৫
82 ২. আল-বাকারা যখন তারা মু’মিনদের সাথে মিলিত হয় তখন বলেঃ আমরা ঈমান এনেছি; আর যখন তাদের কেহ কারও (ইয়াহুদীর) নিকট গোপনে যায় তখন তারা বলেঃ তোমরা কি মুসলিমদেরকে এমন কথা বলে দাও যা আল্লাহ তোমাদের নিকট প্রকাশ করেছেন? পরিণামে তারা তোমাদেরকে তর্কে পরাজিত করবে (এই বলে) যে, এ বিষয়টি রবের নিকট হতে তোমাদের কিতাবে রয়েছে, তোমরা কি বুঝনা? ৭৬
83 ২. আল-বাকারা তারা কি জানেনা যে, তারা যা গোপন রাখে এবং যা প্রকাশ করে, আল্লাহ সবই জানেন? ৭৭
84 ২. আল-বাকারা এবং তাদের মধ্যে অনেক অশিক্ষিত লোক আছে যারা প্রবৃত্তি ব্যতীত কোন গ্রন্থ অবগত নয় এবং তারা শুধু কল্পনাসমূহ রচনা করে থাকে। ৭৮
85 ২. আল-বাকারা তাদের জন্য আক্ষেপ যারা স্বহস্তে পুস্তক রচনা করে, যারা বলে যে, এটা আল্লাহর নিকট হতে সমাগত! এর দ্বারা তারা সামান্য মূল্য অর্জন করছে, তাদের হস্ত যা লিপিবদ্ধ করেছে তজ্জন্য তাদের প্রতি আক্ষেপ! এবং তারা যা উপার্জন করছে তজ্জন্যও তাদের প্রতি আক্ষেপ! ৭৯
86 ২. আল-বাকারা এবং তারা বলেঃ নির্ধারিত দিনসমূহ ব্যতীত (জাহন্নামের) আগুন আমাদেরকে স্পর্শ করবেনা। তুমি বলঃ তোমরা কি আল্লাহর নিকট হতে অঙ্গীকার নিয়েছ যে, পরে আল্লাহ কখনই স্বীয় অঙ্গীকারের অন্যথা করবেননা? অথবা আল্লাহ সম্বন্ধে যা জানোনা তোমরা তা’ই বলছ? ৮০
87 ২. আল-বাকারা হ্যাঁ, যারা অনিষ্ট অর্জন করেছে এবং স্বীয় পাপের দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়েছে তারাই অগ্নিবাসী, সেখানে তারা সদা অবস্থান করবে। ৮১ জাহান্নাম
88 ২. আল-বাকারা এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎ কাজ করছে তারাই জান্নাতবাসী, তন্মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। ৮২ বেহেস্ত
89 ২. আল-বাকারা আর যখন আমি বানী ইসরাঈল হতে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে, তোমরা আল্লাহ ব্যতীত আর কারও ইবাদাত করবেনা এবং মাতাপিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে ও আত্মীয়দের, পিতৃহীনদের ও মিসকীনদের সঙ্গেও (সদ্ব্যবহার করবে), আর তোমরা লোকের সাথে উত্তমভাবে কথা বলবে এবং সালাত প্রতিষ্ঠিত করবে ও যাকাত প্রদান করবে; অতঃপর তোমাদের মধ্য হতে অল্প সংখ্যক ব্যতীত তোমরা সকলেই বিমুখ হয়েছিলে, যেহেতু তোমরা ছিলে অগ্রাহ্যকারী। ৮৩ নামাজ
90 ২. আল-বাকারা এবং আমি যখন তোমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম যে, পরস্পর শোণিতপাত করবেনা এবং স্বীয় বাসস্থান হতে আপন ব্যক্তিদেরকে বহিস্কার করবেনা; অতঃপর তোমরা স্বীকৃত হয়েছিলে এবং তোমরাই ওর সাক্ষী ছিলে। ৮৪
91 ২. আল-বাকারা অতঃপর সেই তোমরাই পরস্পর খুনাখুনি করছ এবং তোমরা তোমাদের মধ্য হতে এক দলকে তাদের গৃহ হতে বহিস্কার করে দিচ্ছ, তাদের বিরুদ্ধে (শত্রুতা বশতঃ) পাপ ও অন্যায় কাজে সাহায্য করছ এবং তারা বন্দী হয়ে তোমাদের নিকট আনীত হলে তোমরা তাদেরকে বিনিময় প্রদান কর, অথচ তাদেরকে বহিস্কার করা তোমাদের জন্য অবৈধ ছিল, তাহলে কি তোমরা গ্রন্থের কিছু অংশ বিশ্বাস কর এবং কিছু অংশ অবিশ্বাস কর? তোমাদের মধ্যে যারা এরূপ করে তাদের পার্থিব জীবনে দুর্গতি ব্যতীত কিছুই নেই এবং উত্থান দিনে তারা কঠোর শাস্তির দিকে নিক্ষিপ্ত হবে এবং তোমরা যা করছ, তদ্বিষয়ে আল্লাহ অমনোযোগী নন। ৮৫ কিয়ামত
92 ২. আল-বাকারা এরাই আখিরাতের বিনিময়ে পার্থিব জীবন ক্রয় করেছে, অতএব তাদের দন্ড লঘু করা হবেনা এবং তারা সাহায্য প্রাপ্তও হবেনা। ৮৬
93 ২. আল-বাকারা এবং অবশ্যই আমি মূসাকে কিতাব প্রদান করেছি ও তৎপরে ক্রমান্বয়ে রাসূলগণকে প্রেরণ করেছি, এবং আমি মারইয়াম নন্দন ঈসাকে নিদর্শনসমূহ প্রদান করেছিলাম এবং পবিত্র আত্মাযোগে তাকে শক্তি সম্পন্ন করেছিলাম; কিন্তু পরে যখন তোমাদের নিকট কোন রাসূল - তোমাদের প্রবৃত্তি যা ইচ্ছা করতনা তা নিয়ে উপস্থিত হল তখন তোমরা অহংকার করলে, অবশেষে এক দলকে মিথ্যাবাদী বললে এবং একদলকে হত্যা করলে। ৮৭ মোজেজা
94 ২. আল-বাকারা এবং তারা বলে, আমাদের হৃদয় আবৃত; এবং তাদের অবিশ্বাসের জন্য আল্লাহ তাদেরকে অভিসম্পাত করেছেন - যেহেতু তারা অতি অল্পই বিশ্বাস করে। ৮৮
95 ২. আল-বাকারা এবং যখন আল্লাহর সন্নিধান হতে তাদের নিকট যা আছে তার সত্যতা প্রতিপাদক গ্রন্থ উপস্থিত হল এবং যা পূর্ব হতেই তারা কাফিরদের উপর বিজয় প্রার্থনা করত; অতঃপর যখন তাদের নিকট সেই পরিচিত কিতাব এল তখন তারা তাকে অস্বীকার করল। সুতরাং এরূপ কাফিরদের উপর আল্লাহর লা’নত বর্ষিত হোক। ৮৯
96 ২. আল-বাকারা যার বিনিময়ে তারা নিজেদের বিক্রি করেছে তা খুবই মন্দ, যেহেতু তারা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা অস্বীকার করেছে - এই হঠকারিতার জন্য যে, আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ অবতারণ করেন। অতএব তারা ক্রোধের উপর ক্রোধ অর্জন করেছে। এবং কাফিরদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি রয়েছে। ৯০
97 ২. আল-বাকারা এবং যখন তাদেরকে বলা হয় - আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা বিশ্বাস কর তখন তারা বলেঃ যা আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে আমরা তা’ই বিশ্বাস করি এবং তা ছাড়া যা রয়েছে তা অবিশ্বাস করি; অথচ এ গ্রন্থটি সত্য, তাদের কাছে যা আছে এটা তারই সত্যতার প্রতিপাদক। তুমি বলঃ যদি তোমরা বিশ্বাসীই ছিলে তাহলে ইতোপূর্বে কেন আল্লাহর নাবীগণকে হত্যা করেছিলে? ৯১
98 ২. আল-বাকারা এবং নিশ্চয়ই মূসা উজ্জ্বল নিদর্শনাবলীসহ তোমাদের নিকট উপস্থিত হয়েছিল; অনন্তর তোমরা গো-বৎসকে উপাস্য রূপে গ্রহণ করেছিলে, যেহেতু তোমরা অত্যাচারী ছিলে। ৯২
99 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি তোমাদের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম এবং তোমাদের উপর তূর পর্বত সমুচ্চ করেছিলাম এবং বলেছিলাম যে, আমি যা প্রদান করলাম তা দৃঢ়রূপে ধারণ কর এবং শ্রবণ কর। তারা বলেছিল, আমরা শুনলাম ও অগ্রাহ্য করলাম, এবং তাদের অবিশ্বাসের নিমিত্ত তাদের অন্তরসমূহে গো-বৎস প্রিয়তা সিঞ্চিত হয়েছিল। তুমি বলঃ যদি তোমরা বিশ্বাসী হও তাহলে তোমাদের বিশ্বাস যা কিছু আদেশ করছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ৯৩
100 ২. আল-বাকারা তুমি বলঃ যদি অপর ব্যক্তিগণ অপেক্ষা তোমাদের জন্য আল্লাহর নিকট বিশেষ পারলৌকিক আলয় থাকে তাহলে তোমরা মৃত্যু কামনা কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। ৯৪
101 ২. আল-বাকারা এবং তাদের হস্তসমূহ পূর্বে যা প্রেরণ করেছে তজ্জন্য তারা কখনই তা কামনা করবেনা এবং আল্লাহ অত্যাচারীদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবগত আছেন। ৯৫
102 ২. আল-বাকারা এবং নিশ্চয়ই তুমি তাদেরকে অন্যান্য লোক এবং অংশীবাদীদের অপেক্ষাও অধিকতর আয়ু-আকাংক্ষী পাবে; তাদের মধ্যে প্রত্যেকে কামনা করে যেন তাকে হাজার বছর আয়ু দেয়া হয়, এবং ঐরূপ আয়ু প্রাপ্তিও তাদেরকে শাস্তি হতে মুক্ত করতে পারবেনা এবং তারা যা করছে আল্লাহ তার পরিদর্শক। ৯৬
103 ২. আল-বাকারা তুমি বলঃ যে ব্যক্তি জিবরাঈলের সাথে শত্রুতা রাখে এ জন্য যে, সে আল্লাহর হুকুমে এই কুরআনকে তোমার অন্তঃকরণ পর্যন্ত পৌঁছিয়েছে, যা পূর্ববতী কিতাবসমূহের সত্যতা প্রমাণ করছে এবং মু’মিনদের সুসংবাদ দিচ্ছে । ৯৭
104 ২. আল-বাকারা যে ব্যক্তি আল্লাহর, তাঁর মালাইকা/ফেরেশতাগণের, তাঁর রাসূলগণের, জিবরাঈলের এবং মিকাঈলের শত্রু, নিশ্চয়ই আল্লাহ এরূপ কাফিরদের শত্রু। ৯৮
105 ২. আল-বাকারা এবং নিশ্চয়ই আমি তোমার প্রতি স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ অবতরণ করেছি এবং দুস্কর্মকারী ব্যতীত কেহই তা অবিশ্বাস করবেনা। ৯৯
106 ২. আল-বাকারা কি আশ্চর্য! যখন তারা কোন অঙ্গীকারে আবদ্ধ হল তখনই তাদের একদল তা ভঙ্গ করল। বরং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাস করেনা। ১০০
107 ২. আল-বাকারা এবং যখন আল্লাহর নিকট হতে, তাদের নিকট যা আছে তার সত্য প্রত্যয়নকারী রাসূল তাদের নিকট আগমন করল, তখন যাদেরকে গ্রন্থ প্রদান করা হয়েছে তাদের একদল আল্লাহর গ্রন্থকে নিজেদের পশ্চাদভাগে নিক্ষেপ করল, যেন তারা কিছুই জানেনা। ১০১
108 ২. আল-বাকারা এবং সুলাইমানের রাজত্বকালে শাইতানরা যা আবৃত্তি করত, তারা ওরই অনুসরণ করছে, এবং সুলাইমান অবিশ্বাসী হয়নি - কিন্তু শাইতানরাই অবিশ্বাস করেছিল। তারা লোকদেরকে যাদু বিদ্যা এবং যা বাবেল শহরে হারূত-মারূত মালাক/ফেরেশতাদ্বয়ের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছিল তা শিক্ষা দিত, এবং তারা উভয়ে কেহকেও ওটা এ কথা না বলে শিক্ষা দিতনা যে, ‘আমরা পরীক্ষাধীন ছাড়া কিছুই নই, অতএব তোমরা কুফরী করনা’। অনন্তর তারা যাতে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ সংঘটিত হয় তা তাদের নিকট থেকে শিক্ষা গ্রহণ করত। কিন্তু তারা আল্লাহর আদেশ ব্যতীত তদ্বারা কারও অনিষ্ট করতে পারতনা, কিন্তু তারা ওটাই শিক্ষা করছে যাতে তাদের ক্ষতি হয় এবং তাদের কোন উপকার সাধিত না হয়; এবং নিশ্চয়ই তারা জ্ঞাত আছে - যে কেহ ওটা ক্রয় করেছে তার জন্য আখিরাতে সুখ লাভ নেই এবং তার বিনিময়ে তারা যে আত্মবিক্রয় করেছে তা নিকৃষ্ট - যদি তারা তা জানত! ১০২
109 ২. আল-বাকারা এবং যদি তারা সত্য সত্যই বিশ্বাস করত ও ধর্মভীরু হত তাহলে আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণ লাভ করত - যদি তারা এটা বুঝতো। ১০৩
110 ২. আল-বাকারা হে মু’মিনগণ! তোমরা ‘রা‘য়েনা’ বলনা, বরং ‘উনযুরনা’ বল এবং শুনে নাও - অবিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাময় শাস্তি। ১০৪
111 ২. আল-বাকারা আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা কাফির (অর্থাৎ ইয়াহুদী ও নাসারা) এবং মুশরিকরা মোটেই পছন্দ করেনা যে, তোমাদের রবের পক্ষ হতে তোমাদের উপর কোন কল্যাণ বর্ষিত হোক, আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন তাঁর করুণার জন্য নির্দিষ্ট করে নেন এবং আল্লাহ মহা করুণাময়। ১০৫
112 ২. আল-বাকারা আমি কোন আয়াতের হুকুম রহিত করলে কিংবা আয়াতটিকে বিস্মৃত করিয়ে দিলে তদপেক্ষা উত্তম অথবা তদনুরূপ আয়াত আনয়ন করি। তুমি কি জাননা যে, আল্লাহ সর্ব বিষয়ের উপরই ক্ষমতাবান? ১০৬
113 ২. আল-বাকারা তুমি কি জাননা যে, আকাশ ও পৃথিবীর আধিপত্য আল্লাহরই এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের কোন বন্ধুও নেই এবং কোন সাহায্যকারীও নেই? ১০৭
114 ২. আল-বাকারা তোমরা কি চাও যে, তোমাদের রাসূলের নিকট আবেদন করবে যেমন ইতোপূর্বে মূসার নিকট (হঠকারিতা বশতঃ এইরূপ বহু নিরর্থক) আবেদন করা হয়েছিল? আর যে ব্যক্তি ঈমানের পরিবর্তে কুফরী অবলম্বন করে, নিশ্চয়ই সে সঠিক পথ হতে দূরে সরে পড়ে। ১০৮
115 ২. আল-বাকারা কিতাবীদের অনেকে তাদের প্রতি সত্য প্রকাশিত হওয়ার পর তারা তাদের অন্তর্হিত বিদ্বেষ বশতঃ তোমাদেরকে বিশ্বাস স্থাপনের পরে অবিশ্বাসী করতে ইচ্ছা করে; কিন্তু যে পর্যন্ত আল্লাহ স্বয়ং আদেশ আনয়ন না করেন সে পর্যন্ত তোমরা ক্ষমা কর ও উপেক্ষা করতে থাক; নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান। ১০৯
116 ২. আল-বাকারা আর তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠিত কর ও যাকাত প্রদান কর; এবং তোমরা স্ব স্ব জীবনের জন্য যে সৎকাজ অগ্রে প্রেরণ করেছ তা আল্লাহর নিকট প্রাপ্ত হবে; তোমরা যা করছো নিশ্চয়ই আল্লাহ তার পরিদর্শক। ১১০ নামাজ
117 ২. আল-বাকারা এবং তারা বলেঃ ইয়াহুদী বা খৃষ্টান ছাড়া আর কেহই জান্নাতে প্রবেশ করবেনা; এটা তাদের মিথ্যা আশা। তুমি বলঃ যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর। ১১১ বেহেস্ত
118 ২. আল-বাকারা অবশ্য যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহর নিকট সর্মপন করেছে এবং সৎকাজ করেছে, ফলতঃ তার জন্য তার রবের নিকট প্রতিদান রয়েছে এবং তাদের জন্য কোন আশংকা নেই ও তারা চিন্তিত হবেনা। ১১২
119 ২. আল-বাকারা আর ইয়াহুদীরা বলেঃ খৃষ্টানরা কোন বিষয়ের উপর নেই; এবং খৃষ্টানরা বলে, ইয়াহুদীরাও কোন বিষয়ের উপর নেই - অথচ তারা গ্রন্থ পাঠ করে। এরূপ যারা জানেনা, তারাও ওদের কথার অনুরূপ কথা বলে থাকে; অতএব যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করেছিল, উত্থান দিনে আল্লাহ তাদের মধ্যে তদ্বিষয়ে ফায়সালা করে দিবেন। ১১৩ কিয়ামত
120 ২. আল-বাকারা এবং যে আল্লাহর মাসজিদসমূহের মধ্যে তাঁর নাম উচ্চারণ করতে নিষেধ করছে এবং তা উজাড় করতে চেষ্টা করছে সে অপেক্ষা কে অধিক অত্যাচারী? তাদের পক্ষে উপযুক্ত নয় যে, তারা শংকিত হওয়া ব্যতীত তন্মধ্যে প্রবেশ করে; তাদের জন্য ইহলোকে দুর্গতি এবং পরলোকে কঠোর শাস্তি রয়েছে। ১১৪
121 ২. আল-বাকারা আল্লাহরই জন্য পূর্ব ও পশ্চিম; অতএব তোমরা যে দিকেই মুখ ফিরাও সেই দিকেই আল্লাহর দিক; কেননা আল্লাহ (সর্বদিক) পরিবেষ্টনকারী, পূর্ণ জ্ঞানবান। ১১৫
122 ২. আল-বাকারা এবং তারা বলে, আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন। তিনি পরম পবিত্র! বরং যা কিছু আসমানে ও ভূমন্ডলে রয়েছে তা তাঁরই জন্য; সবই তাঁর আজ্ঞাধীন। ১১৬
123 ২. আল-বাকারা তিনি আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা এবং যখন তিনি কোন কাজ সম্পাদন করতে ইচ্ছা করেন তখন তার জন্য শুধুমাত্র ‘হও’ বলেন, আর তাতেই তা হয়ে যায়। ১১৭ মোজেজা
124 ২. আল-বাকারা এবং মূর্খেরা বলেঃ আল্লাহ আমাদের সাথে কেন কথা বলেননা, অথবা কেন আমাদের জন্য কোন নিদর্শন উপস্থিত হয়না? এদের পূর্বে যারা ছিল তারাও এদের অনুরূপ কথা বলত; তাদের সবারই অন্তর পরস্পর সাদৃশ্যপূর্ণ; নিশ্চয়ই আমি বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য উজ্জ্বল নিদর্শনাবলী বর্ণনা করি। ১১৮
125 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই আমি তোমাকে সত্যসহ সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শক রূপে প্রেরণ করেছি এবং তুমি জাহান্নামবাসীদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হবেনা। ১১৯ জাহান্নাম
126 ২. আল-বাকারা এবং ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা - তুমি তাদের ধর্ম অনুসরণ না করা পর্যন্ত তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হবেনা; তুমি বলঃ আল্লাহর প্রদর্শিত পথই সুপথ; এবং জ্ঞান প্রাপ্তির পর তুমি যদি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ কর তাহলে আল্লাহ হতে তোমার জন্য কোনই অভিভাবক ও সাহায্যকারী নেই। ১২০
127 ২. আল-বাকারা আমি যাদেরকে যে ধর্মগ্রন্থ দান করেছি তা যারা সঠিকভাবে সত্য বুঝে পাঠ করে তারাই এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপনকারী, এবং যে কেহ এটা অবিশ্বাস করে ফলতঃ তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ১২১
128 ২. আল-বাকারা হে বানী ইসরাঈল! আমি তোমাদেরকে যে সুখ সম্পদ দান করেছি এবং আমি পৃথিবীর উপর তোমাদেরকে যে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি - তোমরা তা স্মরণ কর। ১২২
129 ২. আল-বাকারা আর তোমরা ঐ দিনের ভয় কর যেদিন একজন অন্যজন হতে কিছুমাত্র উপকৃত হবেনা এবং কারও নিকট হতে বিনিময় গৃহীত হবেনা, কারও সুপারিশ ফলপ্রদ হবেনা এবং তারা সাহায্য প্রাপ্ত হবেনা। ১২৩ কিয়ামত
130 ২. আল-বাকারা এবং যখন তোমার রাব্ব ইবরাহীমকে কতিপয় বাক্য দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বলেছিলেনঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে মানবমন্ডলীর নেতা করব। সে বলেছিলঃ আমার বংশধরগণ হতেও। তিনি বলেছিলেনঃ আমার অঙ্গীকার অত্যাচারীদের প্রতি প্রযোজ্য হবেনা। ১২৪
131 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমি কা‘বা গৃহকে মানব জাতির জন্য সুরক্ষিত স্থান ও পুণ্যধাম করেছিলাম, এবং মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের জায়গা নির্ধারণ করেছিলাম; এবং আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলের নিকট অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী ও ই’তিকাফকারী এবং রুকু ও সাজদাহকারীদের জন্য পবিত্র রেখ। ১২৫ নামাজ
132 ২. আল-বাকারা যখন ইবরাহীম বললঃ হে আমার রাব্ব! এ স্থানকে আপনি নিরাপত্তাময় শহরে পরিণত করুন এবং এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছে তাদেরকে উপজীবিকার জন্য ফল-শষ্য প্রদান করুন। (আল্লাহ) বলেনঃ যারা কুফরী করে তাদেরকে আমি অল্প কিছু দিন জীবনোপভোগ করতে দিব, অতঃপর তাদেরকে অগ্নির শাস্তি ভোগ করতে বাধ্য করব, ঐ গন্তব্য স্থান নিকৃষ্টতম। ১২৬ জাহান্নাম
133 ২. আল-বাকারা যখন ইবরাহীম ও ইসমাঈল কা‘বার ভিত্তি স্থাপন করল (তখন বলল) হে আমাদের রাব্ব! আমাদের পক্ষ হতে এটি গ্রহণ করুন, নিশ্চয়ই আপনি শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। ১২৭
134 ২. আল-বাকারা হে আমাদের রাব্ব! আমাদের উভয়কে আপনার অনুগত করুন, এবং আমাদের বংশধরদের মধ্য হতেও আপনার অনুগত এক দল লোক সৃষ্টি করুন, আর আমাদেরকে হাজ্জের আহকাম বলে দিন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন, নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১২৮
135 ২. আল-বাকারা হে আমাদের রাব্ব! তাদেরই মধ্য হতে এমন একজন রাসূল প্রেরণ করুন যিনি তাদেরকে আপনার নিদর্শনাবলী পাঠ করে শুনাবেন এবং তাদেরকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান শিক্ষা দান করবেন ও তাদেরকে পবিত্র করবেন। নিশ্চয়ই আপনি পরাক্রান্ত, বিজ্ঞানময়। ১২৯
136 ২. আল-বাকারা এবং যে নিজকে নির্বোধ করে তুলেছে সে ব্যতীত কে ইবরাহীমের ধর্ম হতে বিমুখ হবে? এবং নিশ্চয়ই আমি তাকে এই পৃথিবীতে মনোনীত করেছিলাম, নিশ্চয়ই সে সৎ কর্মশীলগণের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৩০
137 ২. আল-বাকারা যখন তার রাব্ব তাকে বলেছিলেনঃ তুমি আনুগত্য স্বীকার কর; সে বলেছিল: আমি বিশ্বজগতের রবের নিকট আত্মসমর্পণ করলাম। ১৩১
138 ২. আল-বাকারা আর ইবরাহীম ও ইয়াকূব স্বীয় সন্তানদেরকে সদুপদেশ প্রদান করেছিলঃ হে আমার বংশধরগণ! নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের জন্য এই ধর্ম মনোনীত করেছেন, অতএব তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যু বরণ করনা। ১৩২
139 ২. আল-বাকারা যখন ইয়াকূবের মৃত্যু উপস্থিত হল তখন কি তোমরা উপস্থিত ছিলে, যখন সে নিজ পুত্রদেরকে বলেছিলঃ আমার পরে তোমরা কোন্ জিনিসের ইবাদাত করবে? তারা বলেছিলঃ আমরা তোমার উপাস্যের এবং তোমার পিতৃপুরুষ ইবরাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাকের উপাস্য - সেই অদ্বিতীয় উপাস্যের ইবাদাত করব এবং আমরা তাঁরই অনুগত থাকব। ১৩৩
140 ২. আল-বাকারা ওটি একটি দল ছিল, যা অতীত হয়ে গেছে; তারা যা অর্জন করেছিল তা তাদের জন্য এবং তোমরা যা অর্জন করেছ তা তোমাদের জন্য এবং তারা যা করে গেছে তজ্জন্য তোমরা জিজ্ঞাসিত হবেনা। ১৩৪
141 ২. আল-বাকারা এবং তারা বলে যে, তোমরা ইয়াহুদী অথবা খৃষ্টান হও, তাহলেই সুপথ প্রাপ্ত হবে; তুমি বলঃ বরং আমরা ইবরাহীমের সুদৃঢ় ধর্মে আছি এবং সে অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলনা। ১৩৫
142 ২. আল-বাকারা তোমরা বলঃ আমরা আল্লাহর প্রতি এবং যা আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে, আর যা ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তদীয় বংশধরগণের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছিল এবং যা মূসা ও ঈসাকে প্রদান করা হয়েছিল এবং অন্যান্য নাবীগণকে তাদের রাব্ব হতে যা প্রদত্ত হয়েছিল, তদসমুদয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করছি, তাদের মধ্যে কেহকেও আমরা প্রভেদ করিনা, এবং আমরা তাঁরই প্রতি আত্মসমর্পণকারী। ১৩৬
143 ২. আল-বাকারা অনন্তর তোমরা যেরূপ বিশ্বাস স্থাপন করেছ, তারাও যদি তদ্রুপ বিশ্বাস স্থাপন করে তাহলে নিশ্চয়ই তারা সুপথ প্রাপ্ত হবে; এবং যদি তারা ফিরে যায় তাহলে তারা শুধু বিরুদ্ধাচরণেই ফিরে যাবে; অতএব অচিরেই আল্লাহ তাদের প্রতিকূলে তোমাকেই যথেষ্ট করবেন এবং তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। ১৩৭
144 ২. আল-বাকারা আমরা আল্লাহরই রংয়ে রঞ্জিত, আল্লাহ অপেক্ষা কে শ্রেষ্ঠতম রঞ্জনকারী? এবং আমরা তাঁরই বান্দা। ১৩৮
145 ২. আল-বাকারা তুমি বলঃ তোমরা কি আল্লাহ সম্বন্ধে আমাদের সঙ্গে বিরোধ করছ? অথচ তিনিই আমাদের রাব্ব ও তোমাদের রাব্ব, এবং আমাদের জন্য আমাদের কার্যসমূহ এবং তোমাদের জন্য তোমাদের কার্যসমূহ এবং আমরা তাঁরই প্রতি বিশ্বস্ত। ১৩৯
146 ২. আল-বাকারা তোমরা কি বলছ - ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তদীয় বংশধরগণ ইয়াহুদী ও খৃষ্টান ছিল? তুমি বলঃ তোমরাই সঠিক জ্ঞানী না আল্লাহ এবং আল্লাহর নিকট হতে প্রাপ্ত সাক্ষ্য যে ব্যক্তি গোপন করছে সে অপেক্ষা কে বেশি অত্যাচারী? এবং তোমরা যা করছ তা হতে আল্লাহ অমনোযোগী নন ১৪০
147 ২. আল-বাকারা ওটা একটি জামা‘আত ছিল যা বিগত হয়েছে; তারা যা অর্জন করেছে তা তাদের জন্য এবং তোমরা যা অর্জন করেছ তা তোমাদের জন্য, এবং তারা যা করে গেছে তদ্বিষয়ে তোমরা জিজ্ঞাসিত হবেনা। ১৪১
148 ২. আল-বাকারা মানবমন্ডলীর মধ্যস্থিত নির্বোধেরা অচিরেই বলবে, কিসে তাদেরকে সেই কিবলা হতে প্রত্যাবৃত্ত করল যার দিকে তারা ছিল? তুমি বলে দাওঃ পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই জন্য, তিনি যাকে ইচ্ছা সরল পথ প্রদর্শন করেন। ১৪২
149 ২. আল-বাকারা এভাবে আমি তোমাদেরকে আদর্শ জাতি করেছি, যেন তোমরা মানবগণের জন্য সাক্ষী হও এবং রাসূলও তোমাদের জন্য সাক্ষী হয়; এবং তুমি যে কিবলার দিকে ছিলে তা আমি এ জন্য প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম যে, কে রাসূলের অনুসরণ করে, আর কে তা হতে স্বীয় পদদ্বয়ে পশ্চাতে ফিরে যায় আমি তা জেনে নিব এবং আল্লাহ যাদেরকে পথ প্রদর্শন করেছেন তারা ছাড়া অপরের জন্য এটি অবশ্যই কঠোরতর; এবং আল্লাহ এরূপ নন যে, তোমাদের বিশ্বাস বিনষ্ট করেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের প্রতি স্নেহশীল, করুণাময়। ১৪৩
150 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই আমি আকাশের দিকে তোমার মুখমন্ডল উত্তোলন অবলোকন করেছি। তাই আমি তোমাকে ঐ কিবলাহমুখীই করাচ্ছি যা তুমি কামনা করছো। অতএব তুমি মাসজিদুল হারামের দিকে তোমার মুখমন্ডল ফিরিয়ে দাও এবং তোমরা যেখানেই থাক তোমাদের আনন সে দিকেই প্রত্যাবর্তিত কর; এবং নিশ্চয়ই যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তারা অবশ্যই অবগত আছে যে, নিশ্চয়ই এটি তাদের রবের নিকট হতে প্রেরিত সত্য; এবং তারা যা করছে তদ্বিষয়ে আল্লাহ অমনোযোগী নন। ১৪৪
151 ২. আল-বাকারা এবং যাদেরকে গ্রন্থ প্রদত্ত হয়েছে তাদের নিকট যদি তুমি সমুদয় নিদর্শন আনয়ন কর তবুও তারা তোমার কিবলাহকে গ্রহণ করবেনা; এবং তুমিও তাদের কিবলাহ গ্রহণ করতে পারনা, আর তাদের কোন দলও অন্য দলের কিবলাহকে স্বীকার করেনি, এবং তোমার নিকট যে জ্ঞান এসেছে এর পরেও যদি তুমি তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ কর তাহলে নিশ্চয়ই তুমি অত্যাচারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। ১৪৫
152 ২. আল-বাকারা যাদেরকে আমি কিতাব প্রদান করেছি তারা তাকে এরূপভাবে চিনে, যেমন চিনে তারা আপন সন্তানদেরকে এবং নিশ্চয়ই তাদের এক দল জ্ঞাতসারে সত্যকে গোপন করছে। ১৪৬
153 ২. আল-বাকারা এই বাস্তব সত্য তোমার রবের পক্ষ হতে; সুতরাং তুমি সংশয়ীদের অন্তর্ভুক্ত হয়োনা। ১৪৭
154 ২. আল-বাকারা প্রত্যেকের জন্য এক একটি লক্ষ্যস্থল রয়েছে, ঐ দিকেই সে মুখমন্ডল প্রত্যাবর্তিত করে, অতএব তোমরা কল্যাণের দিকে ধাবিত হও; তোমরা যেখানেই থাকনা কেন, আল্লাহ তোমাদের সকলকেই একত্রিত করবেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে পূর্ণ ক্ষমতাবান। ১৪৮
155 ২. আল-বাকারা এবং তুমি যেখান হতেই বের হবে- তোমার মুখ পবিত্রতম মাসজিদের দিকে প্রত্যাবর্তিত কর এবং নিশ্চয়ই এটাই তোমার রবের নিকট হতে প্রেরিত সত্য এবং তোমরা যা করছ তদ্বিষয়ে আল্লাহ অমনোযোগী নন। ১৪৯
156 ২. আল-বাকারা আর তুমি যেখান হতেই নিস্ক্রান্ত হও - তোমার মুখ পবিত্রতম মাসজিদের দিকে ফিরাও এবং যে যেখানে আছ তোমাদের মুখমন্ডল তদ্দিকেই প্রত্যাবর্তিত কর যেন অত্যাচারীরা ব্যতীত অপরে তোমাদের সাথে বির্তক করতে না পারে। অতএব তোমরা তাদেরকে ভয় করনা, বরং আমাকেই ভয় কর যেন আমি তোমাদের উপর আমার অনুগ্রহ পূর্ণ করি, এবং যেন তোমরা সুপথ প্রাপ্ত হও। ১৫০
157 ২. আল-বাকারা আমি তোমাদের মধ্য হতে এরূপ রাসূল প্রেরণ করেছি যে তোমাদের নিকট আমার নিদর্শনাবলী পাঠ করে এবং তোমাদেরকে পবিত্র করে, তোমাদেরকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান শিক্ষা দেয় এবং তোমরা যা অবগত ছিলেনা তা শিক্ষা দান করে। ১৫১
158 ২. আল-বাকারা অতএব তোমরা আমাকেই স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকেই স্মরণ করব এবং তোমরা আমারই নিকট কৃতজ্ঞ হও এবং অবিশ্বাসী হয়োনা। ১৫২
159 ২. আল-বাকারা হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলগণের সাথে আছেন। ১৫৩ নামাজ
160 ২. আল-বাকারা আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে মৃত বলনা, বরং তারা জীবিত; কিন্তু তোমরা তা অবগত নও। ১৫৪
161 ২. আল-বাকারা এবং নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা, ধন, প্রাণ এবং ফল-ফসলের দ্বারা পরীক্ষা করব; এবং ঐ সব ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ প্রদান কর। ১৫৫
162 ২. আল-বাকারা যাদের উপর কোন বিপদ নিপতিত হলে তারা বলে, নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহরই জন্য এবং নিশ্চয়ই আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। ১৫৬
163 ২. আল-বাকারা এদের উপর তাদের রবের পক্ষ হতে শান্তি ও করুনা বর্ষিত হবে এবং এরাই সুপথগামী। ১৫৭
164 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই ‘সাফা’ ও ‘মারওয়া’ আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্গত। অতএব যে ব্যক্তি এই গৃহে ‘হাজ্জ’ অথবা ‘উমরাহ’ পালন’ করে তার জন্য এতদুভয়ের প্রদক্ষিণ করা দোষণীয় নয়, এবং কোন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সৎ কাজ করলে আল্লাহ গুণগ্রাহী, সর্বজ্ঞাত। ১৫৮
165 ২. আল-বাকারা আমি যে সব উজ্জ্বল নিদর্শন ও পথ-নির্দেশ অবতীর্ণ করেছি ঐগুলিকে সর্ব সাধারণের নিকট প্রকাশ করার পরও যারা ঐসব বিষয়কে গোপন করে, আল্লাহ তাদেরকে অভিসম্পাত করেন এবং অভিসম্পাতকারীরাও তাদেরকে অভিসম্পাত করে থাকে। ১৫৯
166 ২. আল-বাকারা কিন্তু যারা তাওবাহ করে ও সংশোধিত হয় এবং সত্য প্রকাশ করে, বস্ত্ততঃ আমি তাদের প্রতি ক্ষমা প্রদানকারী, করুণাময়। ১৬০
167 ২. আল-বাকারা যারা অবিশ্বাস করেছে ও অবিশ্বাসী অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে, নিশ্চয়ই তাদের উপর আল্লাহর মালাক/ফেরেশতা এবং মানবকূলের সবারই অভিসম্পাত। ১৬১
168 ২. আল-বাকারা তন্মধ্যে তারা সর্বদা অবস্থান করবে, তাদের শাস্তি প্রশমিত হবেনা এবং তাদেরকে অবকাশ দেয়া হবেনা। ১৬২ জাহান্নাম
169 ২. আল-বাকারা এবং তোমাদের ইলাহ একমাত্র আল্লাহ; সেই সর্বদাতা করুণাময় ব্যতীত অন্য কেহ উপাস্য নেই। ১৬৩
170 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টিতে, দিন ও রাতের পরিবর্তনে, নৌ-পথে জাহাজসমূহের চলাচলে - যাতে রয়েছে মানুষের জন্য কল্যাণ। মৃত পৃথিবীকে সঞ্জীবিত করণে, তাতে নানাবিধ জীবজন্তু সঞ্চারিত করার জন্য আল্লাহ আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। বায়ুরাশির গতি পরিবর্তনে এবং আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যস্থ সঞ্চিত মেঘের সঞ্চারণে সত্যি সত্যিই জ্ঞানবান সম্প্রদায়ের জন্য নিদর্শন রয়েছে। ১৬৪ মোজেজা
171 ২. আল-বাকারা এবং মানবমন্ডলীর মধ্যে এরূপ আছে - যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে সদৃশ স্থির করে, আল্লাহকে ভালবাসার ন্যায় তারা তাদেরকে ভালবাসে। এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে আল্লাহর প্রতি - তাদের প্রেম দৃঢ়তর এবং যারা অত্যাচার করেছে তারা যদি শাস্তি অবলোকন করত তাহলে দেখত, সমুদয় শক্তিই আল্লাহর এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর। ১৬৫
172 ২. আল-বাকারা যাদের অনুসরণ করা হয়েছে তারা যখন অনুসারীদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে তখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে এবং তাদের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ১৬৬
173 ২. আল-বাকারা অনুসরণকারীরা বলবেঃ যদি আমরা ফিরে যেতে পারতাম তাহলে তারা যেরূপ আমাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে আমরাও তদ্রুপ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করতাম। এভাবে আল্লাহ তাদের কৃতকর্মের পরিণাম দুঃখজনকভাবে প্রদর্শন করবেন এবং তারা অগ্নি হতে উদ্ধার পাবেনা। ১৬৭ জাহান্নাম
174 ২. আল-বাকারা হে মানবমন্ডলী! পৃথিবীর মধ্যে যা বৈধ ও পবিত্র, তা হতে আহার কর এবং শাইতানের পদাঙ্ক অনুসরণ করনা, নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। ১৬৮
175 ২. আল-বাকারা সে এতদ্ব্যতীত তোমাদেরকে আদেশ করে শাইতানী ও অশ্লীল কাজ করতে এবং আল্লাহ সম্বন্ধে তোমরা যা জাননা তা বলতে। ১৬৯
176 ২. আল-বাকারা এবং যখন তাদেরকে বলা হয় যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা অনুসরণ কর তখন তারা বলেঃ বরং আমরা ওরই অনুসরণ করব যা আমাদের পিতৃ-পুরুষগণ হতে প্রাপ্ত হয়েছি; যদিও তাদের পিতৃ-পুরুষদের কোনই জ্ঞান ছিলনা এবং তারা সুপথগামীও ছিলনা। ১৭০
177 ২. আল-বাকারা আর যারা অবিশ্বাস করেছে তাদের দৃষ্টান্ত ওদের ন্যায় - যেমন কেহ আহবান করলে শুধু চীৎকার ও ধ্বনি ব্যতীত আর কিছুই শোনেনা, তারা বধির, মুক, অন্ধ; কাজেই তারা বুঝতে পারেনা। ১৭১
178 ২. আল-বাকারা হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! আমি তোমাদেরকে যা উপজীবিকা স্বরূপ দান করেছি সেই পবিত্র বস্তুসমূহ আহার কর এবং আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর, যদি তোমরা তাঁরই ইবাদাত করে থাক। ১৭২
179 ২. আল-বাকারা তিনি শুধু তোমাদের জন্য মৃত জীব, রক্ত, শুকরের মাংস এবং যা আল্লাহ ব্যতীত অপরের উদ্দেশে নিবেদিত - তদ্ব্যতীত অবৈধ করেননি; বস্তুতঃ যে ব্যক্তি নিরূপায়, কিন্তু সীমা লংঘনকারী নয়, তার জন্য পাপ নেই; এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১৭৩
180 ২. আল-বাকারা আল্লাহ যা গ্রন্থে অবতীর্ণ করেছেন তা যারা গোপন করে ও তৎপরিবর্তে নগণ্য মূল্য গ্রহণ করে, নিশ্চয়ই তারা অগ্নি ছাড়া অন্য কিছু ভক্ষন করেনা; এবং উত্থান দিনে আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেননা, তাদেরকে পবিত্র করবেননা এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। ১৭৪ কিয়ামত
181 ২. আল-বাকারা ওরাই সুপথের বিনিময়ে কুপথ এবং ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি ক্রয় করেছে, অতঃপর জাহান্নামের আগুন কিরূপে সহ্য করবে? ১৭৫ জাহান্নাম
182 ২. আল-বাকারা এ জন্যই আল্লাহ সত্যসহ গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন এবং যারা গ্রন্থ সম্বন্ধে বিরোধ করে বাস্তবিকই তারা বিরুদ্ধাচরণে সুদূরগামী। ১৭৬
183 ২. আল-বাকারা তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল পূর্ব বা পশ্চিম দিকে প্রত্যাবর্তিত করলেই তাতে পুণ্য নেই, বরং পুণ্য তার যে ব্যক্তি আল্লাহ, আখিরাত, মালাইকা/ফেরেশতা, কিতাব ও নাবীগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাঁরই প্রেমে ধন-সম্পদের প্রতি আকর্ষণ থাকা সত্ত্বেও সে তা আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, দরিদ্র, পথিক ও ভিক্ষুকদেরকে এবং দাসত্ব মোচনের জন্য ব্যয় করে, আর সালাত প্রতিষ্ঠিত করে ও যাকাত প্রদান করে এবং অঙ্গীকার করলে তা পূরণ করে এবং যারা অভাবে ও ক্লেশে এবং যুদ্ধকালে ধৈর্যশীল তারাই সত্য পরায়ণ এবং তারাই ধর্মভীরু। ১৭৭ নামাজ
184 ২. আল-বাকারা হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! নিহতদের সম্বন্ধে তোমাদের জন্য প্রতিশোধ গ্রহণ বিধিবদ্ধ করা হল; স্বাধীনের পরিবর্তে স্বাধীন, দাসের পরিবর্তে দাস এবং নারীর পরিবর্তে নারী। কিন্তু যদি কেহ তার ভাই কর্তৃক কোন বিষয়ে ক্ষমা প্রাপ্ত হয় তাহলে যেন ন্যায় সঙ্গতভাবে পাওনা সাব্যস্ত করা হয় এবং সদ্ভাবে তা পরিশোধ করে। এটা তোমাদের রবের পক্ষ হতে লঘু বিধান ও করুণা; অতঃপর যে কেহ সীমা লংঘন করবে তার জন্য যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি রয়েছে। ১৭৮
185 ২. আল-বাকারা হে জ্ঞানবান লোকেরা! কিসাসের মধ্যে তোমাদের জন্য জীবন রয়েছে, যেন তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করতে পার। ১৭৯
186 ২. আল-বাকারা যখন তোমাদের কারও মৃত্যু নিকটবর্তী বলে মনে হয়, তখন সে যদি ধন সম্পত্তি রেখে যায় তাহলে মাতা-পিতা ও আত্মীয়-স্বজনের জন্য বৈধভাবে অসীয়াত করা তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ হল, ধর্ম-ভীরুদের এটা অবশ্য করণীয়। ১৮০
187 ২. আল-বাকারা অতঃপর যে ব্যক্তি শোনার পর তা পরিবর্তন করে, তাহলে এর পাপ তাদেরই হবে যারা একে পরিবর্তন করবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। ১৮১
188 ২. আল-বাকারা অনন্তর যদি কেহ অসীয়াতকারীর পক্ষে পক্ষপাতিত্ব অথবা পাপের আশঙ্কা করে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেয়, তাতে তার পাপ নেই; নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১৮২
189 ২. আল-বাকারা হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমাদের পূর্ববতী লোকদের ন্যায় তোমাদের উপরও সিয়ামকে অপরিহার্য কর্তব্য রূপে নির্ধারণ করা হল যেন তোমরা সংযমশীল হতে পারো। ১৮৩ রোজা
190 ২. আল-বাকারা ওটা নির্দিষ্ট কয়েক দিন। কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে কেহ পীড়িত কিংবা প্রবাসী হয় তার জন্য অপর কোন দিন হতে গণনা করবে, আর যারা ওতে অক্ষম তারা তৎপরিবর্তে একজন দরিদ্রকে আহার্য দান করবে। অতএব যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় সৎ কাজ করে তার জন্য কল্যাণ এবং তোমরা যদি বুঝে থাক তাহলে সিয়াম পালনই তোমাদের জন্য কল্যাণকর। ১৮৪ রোজা
191 ২. আল-বাকারা রামাযান মাস, যে মাসে বিশ্বমানবের জন্য পথ প্রদর্শন এবং সু-পথের উজ্জ্বল নিদর্শন এবং হক ও বাতিলের প্রভেদকারী কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। অতএব তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সেই মাসে (নিজ আবাসে) উপস্থিত থাকে সে যেন সিয়াম পালন করে এবং যে ব্যক্তি পীড়িত অথবা প্রবাসী, তার জন্য অপর কোন দিন হতে গণনা করবে; তোমাদের পক্ষে যা সহজসাধ্য আল্লাহ তা’ই ইচ্ছা করেন ও তোমাদের পক্ষে যা দুঃসাধ্য তা ইচ্ছা করেননা এবং যেন তোমরা নির্ধারিত সংখ্যা পূরণ করে নিতে পার এবং তোমাদেরকে যে সুপথ দেখিয়েছেন তজ্জন্য তোমরা আল্লাহকে মহিমান্বিত কর এবং যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। ১৮৫ রোজা
192 ২. আল-বাকারা এবং যখন আমার সেবকবৃন্দ (বান্দা) আমার সম্বন্ধে তোমাকে জিজ্ঞেস করে তখন তাদেরকে বলে দাওঃ নিশ্চয়ই আমি সন্নিকটবর্তী। কোন আহবানকারী যখনই আমাকে আহবান করে তখনই আমি তার আহবানে সাড়া দিই; সুতরাং তারাও যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমাকে বিশ্বাস করে - তাহলেই তারা সঠিক পথপ্রাপ্ত হতে পারবে। ১৮৬
193 ২. আল-বাকারা রামাযানের রাতে আপন স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করা তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে, তারা তোমাদের জন্য এবং তোমরা তাদের জন্য আবরণ, তোমরা যে নিজেদের ক্ষতি করছিলে আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেন, এ জন্য তিনি তোমাদের প্রতি প্রত্যাবৃত্ত হলেন এবং তোমাদের (ভার) লাঘব করে দিলেন; অতএব এক্ষণে তোমরা (রামাযানের রাতেও) তাদের সাথে মিলিত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিপিবদ্ধ করেছেন তা অনুসন্ধান কর এবং প্রত্যুষে কালো সূতা হতে সাদা সূতা প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত তোমরা আহার ও পান কর, অতঃপর রাত সমাগম পর্যন্ত তোমরা সিয়াম পূর্ণ কর; তোমরা মাসজিদে ই‘তিকাফ করার সময় (তোমাদের স্ত্রীদের সাথে) মিলিত হবেনা; এটিই আল্লাহর সীমা। অতএব তোমরা উহার নিকটেও যাবেনা; এভাবে আল্লাহ মানবমন্ডলীর জন্য তাঁর নিদর্শনসমূহ বিবৃত করেন, যেন তারা সংযত হয়। ১৮৭ রোজা
194 ২. আল-বাকারা এবং তোমরা নিজেদের মধ্যে পরস্পরের ধন সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করনা এবং তা বিচারকের নিকট টোপ হিসাবে উপস্থাপন করনা যাতে তোমরা জ্ঞাতসারে লোকের সম্পদের অংশ অন্যায়ভাবে উদরস্থ করতে পার। ১৮৮
195 ২. আল-বাকারা তারা তোমাকে নতুন চাঁদসমূহ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করছে। তুমি বলঃ এগুলি হচ্ছে সমগ্র মানব জাতির জন্য সময়সমূহ (মাসসমূহ) নির্ধারণ (গণনা বা হিসাব) করার মাধ্যম এবং হাজ্জের জন্য; আর (ঐ হাজ্জের চাঁদে) তোমরা যে পশ্চাৎ দিক দিয়ে গৃহে প্রবেশ কর এটি পুণ্যের কাজ নয়, বরং পুণ্যের কাজ হল যে ব্যক্তি সংযমশীলতা অবলম্বন করল। এবং তোমরা গৃহসমূহে ওগুলির দরযা দিয়ে প্রবেশ কর এবং আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সুফল প্রাপ্ত হও। ১৮৯
196 ২. আল-বাকারা এবং যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে, তোমরাও তাদের সাথে আল্লাহর পথে যুদ্ধ কর এবং সীমা অতিক্রম করনা; নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমা লংঘনকারীদেরকে ভালবাসেননা। ১৯০
197 ২. আল-বাকারা তাদেরকে যেখানেই পাও, হত্যা কর এবং তারা তোমাদেরকে যেখান হতে বহিস্কার করেছে তোমরাও তাদেরকে সেখান হতে বহিস্কার কর এবং হত্যা অপেক্ষা অশান্তি (ফিতনা) গুরুতর এবং তোমরা তাদের সাথে পবিত্রতম মাসজিদের নিকট যুদ্ধ করনা, যে পর্যন্ত না তারা তোমাদের সাথে তন্মধ্যে যুদ্ধ করে; কিন্তু যদি তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে তাহলে তোমরাও তাদেরকে হত্যা কর; অবিশ্বাসীদের জন্য এটাই প্রতিফল। ১৯১
198 ২. আল-বাকারা অতঃপর যদি নিবৃত্ত হয় তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১৯২
199 ২. আল-বাকারা ফিতনা দূর হয়ে আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ কর; অতঃপর যদি তারা নিবৃত্ত হয় তাহলে অত্যাচারীদের উপর ব্যতীত শত্রুতা নেই। ১৯৩
200 ২. আল-বাকারা নিষিদ্ধ মাসের পরিবর্তে নিষিদ্ধ মাস ও সমস্ত নিষিদ্ধ বিষয় পরস্পর সমান; অতঃপর যে কেহ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করে, তাহলে সে তোমাদের প্রতি যেরূপ অত্যাচার করবে তোমরাও তার প্রতি সেরূপ অত্যাচার কর এবং আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখ যে, আল্লাহ সংযমশীলদের সঙ্গী। ১৯৪
201 ২. আল-বাকারা এবং তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় কর এবং স্বীয় হস্ত ধ্বংসের দিকে প্রসারিত করনা এবং কল্যাণ সাধন করতে থাকো, নিশ্চয়ই আল্লাহ কল্যাণ সাধনকারীদের ভালবাসেন। ১৯৫
202 ২. আল-বাকারা তোমরা আল্লাহর উদ্দেশে হাজ্জ ও ‘ওমরাহ সম্পূর্ণ কর; কিন্তু তোমরা যদি বাধাপ্রাপ্ত হও তাহলে যা সহজ প্রাপ্র তাই উৎসর্গ কর এবং কুরবানীর জন্তুগুলি স্বস্থানে না পৌঁছা পর্যন্ত তোমাদের মস্তক মুন্ডন করনা। কিন্তু কেহ যদি তোমাদের মধ্যে পীড়িত হয়, অথবা তার মস্তিস্ক যন্ত্রনাগ্রস্ত হয় তাহলে সে সিয়াম কিংবা সাদাকাহ অথবা কুরবানী দ্বারা ওর বিনিময় করবে, অতঃপর যখন তোমরা শান্তিতে থাকো তখন যে ব্যক্তি ওমরাহ্ ও হাজ্জ একত্রে কামনা করে তাহলে যা সহজ প্রাপ্য তা’ই উৎসর্গ করবে। কিন্তু কেহ যদি তা প্রাপ্ত না হয় তাহলে হাজ্জের সময় তিন দিন এবং যখন তোমরা প্রত্যাবর্তিত হও তখন সাত দিন - এই পূর্ণ দশ দিন সিয়াম পালন করবে; এটা তারই জন্য - যার পরিজন পবিত্রতম মাসজিদে উপস্থিত না থাকে এবং আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখ যে, আল্লাহ কঠিন শাস্তি দাতা। ১৯৬ রোজা
203 ২. আল-বাকারা হাজ্জের মাসগুলি সুবিদিত। কেহ যদি ঐ মাসগুলির মধ্যে হাজ্জের সংকল্প করে তাহলে সে হাজ্জের সময়ে সহবাস, দুস্কার্য ও কলহ করতে পারবেনা এবং তোমরা যে কোন সৎ কাজ করনা কেন আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেন। আর তোমরা তোমাদের সাথে পাথেয় নিয়ে নাও। বস্ত্ততঃ উৎকৃষ্ট পাথেয় হচ্ছে তাকওয়া বা আত্মসংযম। সুতরাং হে জ্ঞানবানগণ! আমাকে ভয় কর। ১৯৭
204 ২. আল-বাকারা তোমরা স্বীয় রবের অনুগ্রহ লাভের চেষ্টা করলে তাতে তোমাদের পক্ষে কোন অপরাধ নেই; অতঃপর যখন তোমরা আরাফাত হতে প্রত্যাবর্তিত হও তখন পবিত্র স্মৃতি-স্থানের নিকট আল্লাহকে স্মরণ কর; এবং তিনি তোমাদেরকে যেরূপ নির্দেশ দিয়েছেন তদ্রুপ তাঁকে স্মরণ কর; এবং নিশ্চয়ই তোমরা এর পূর্বে বিভ্রান্তদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে। ১৯৮
205 ২. আল-বাকারা অতঃপর অন্যান্যরা যেখান হতে প্রত্যাবর্তন করে তোমরাও প্রত্যাবর্তন কর এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১৯৯
206 ২. আল-বাকারা অনন্তর যখন তোমরা তোমাদের (হাজ্জের) অনুষ্ঠানগুলি সম্পন্ন করে ফেল তখন যেরূপ তোমাদের পিতৃ-পুরুষদেরকে স্মরণ করতে তদ্রুপ আল্লাহকে স্মরণ কর, বরং তদপেক্ষা দৃঢ়তরভাবে স্মরণ কর; কিন্তু মানবমন্ডলীর মধ্যে কেহ কেহ এরূপ আছে যারা বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে ইহকালেই দান কর এবং তাদের জন্য আখিরাতে কোনই অংশ নেই। ২০০
207 ২. আল-বাকারা আর তাদের মধ্যে কেহ কেহ বলে - হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দান করুন ও আখিরাতে কল্যাণ দান করুন এবং জাহান্নামের শাস্তি হতে আমাদেরকে রক্ষা করুন। ২০১ জাহান্নাম
208 ২. আল-বাকারা তারা যা অর্জন করেছে, তাদের জন্য তারই অংশ রয়েছে এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ সত্ত্বর হিসাব গ্রহণকারী। ২০২
209 ২. আল-বাকারা এবং নির্ধারিত দিনসমূহে আল্লাহকে স্মরণ কর; অতঃপর কেহ যদি দু’ দিনের মধ্যে (মাক্কায় ফিরে যেতে) তাড়াহুড়া করে তাহলে তার জন্য কোন পাপ নেই। পক্ষান্তরে কেহ যদি দু‘ দিন বিলম্ব করে তাহলে তার জন্যও পাপ নেই এবং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখ যে, তোমাদের সকলকে তাঁরই সন্নিধানে সমবেত করা হবে। ২০৩
210 ২. আল-বাকারা এবং মানুষের মধ্যে এমনও আছে যার পার্থিব জীবন সংক্রান্ত কথা তোমাকে চমৎকৃত করে, আর সে নিজের (অন্তরস্থ সততা) সম্বন্ধে আল্লাহকে সাক্ষী করে থাকে, কিন্তু বস্তুতঃ সে হচ্ছে কঠোর কলহপরায়ণ ব্যক্তি। ২০৪
211 ২. আল-বাকারা যখন সে প্রত্যাবর্তন করে তখন তার উদ্দেশ্য থাকে দুনিয়ায় অশান্তি সৃষ্টি করা এবং শস্য-ক্ষেত্র ও জীব-জন্তু বিনাশ করা; এবং আল্লাহ অশান্তি ভালবাসেন না। ২০৫
212 ২. আল-বাকারা যখন তাকে বলা হয়, তুমি আল্লাহকে ভয় কর, তখন প্রতিপত্তির অহমিকা তাকে অধিকতর অনাচারে লিপ্ত করে। অতএব জাহান্নামই তার জন্য যথেষ্ট এবং নিশ্চয়ই ওটা নিকৃষ্ট আশ্রয় স্থল। ২০৬ জাহান্নাম
213 ২. আল-বাকারা পক্ষান্তরে কোন কোন লোক এরূপ আছে যে আল্লাহর সন্তুষ্টি সাধনের জন্য আত্মবির্সজন করে, এবং আল্লাহ হচ্ছেন সমস্ত বান্দার প্রতি স্নেহ-পরায়ণ। ২০৭
214 ২. আল-বাকারা হে মু’মিনগণ! তোমরা পূর্ণ রূপে ইসলামে প্রবিষ্ট হও এবং শাইতানের পদাংক অনুসরণ করনা, নিশ্চয়ই সে তোমাদের জন্য প্রকাশ্য শত্রু। ২০৮
215 ২. আল-বাকারা অতঃপর স্পষ্ট দলীল প্রমাণাদী তোমাদের নিকট সমাগত হওয়ার পরেও যদি তোমরা পদস্খলিত হয়ে যাও তাহলে জেনে রেখ, আল্লাহ হচ্ছেন মহাপরাক্রান্ত, বিজ্ঞানময়। ২০৯
216 ২. আল-বাকারা তারা শুধু এই অপেক্ষাই করছে যে, আল্লাহ শুভ্র মেঘমালার ছায়াতলে মালাইকা/ফেরেশতাদেরকে সঙ্গে নিয়ে তাদের নিকট সমাগত হবেন ও সমস্ত কাজের নিস্পত্তি করবেন। এবং আল্লাহরই নিকট সমস্ত কার্য প্রত্যাবর্তিত হয়ে থাকে। ২১০
217 ২. আল-বাকারা ইসরাঈল বংশীয়দেরকে জিজ্ঞেস কর, আমি কত স্পষ্ট প্রমাণ তাদেরকে প্রদান করেছি। এবং যে কেহ তার নিকট আল্লাহর অনুগ্রহ সম্পদ আসার পর তা পরিবর্তন করে তাহলে জেনে রেখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা। ২১১
218 ২. আল-বাকারা যারা অবিশ্বাস করেছে তাদের পার্থিব জীবন সুশোভিত করা হয়েছে এবং তারা বিশ্বাস স্থাপনকারীদেরকে উপহাস করে থাকে, এবং যারা ধর্মভীরু তাদেরকে উত্থান দিনে সমুন্নত করা হবে; এবং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন অপরিমিত জীবিকা দান করে থাকেন। ২১২
219 ২. আল-বাকারা মানব জাতি একই সম্প্রদায়ভুক্ত ছিল; অতঃপর আল্লাহ সুসংবাদ বাহক ও ভয় প্রদর্শক রূপে নাবীগণকে প্রেরণ করলেন এবং তিনি তাদের সাথে সত্যসহ গ্রন্থ অবতীর্ণ করলেন যেন (ঐ কিতাব) তাদের মতভেদের বিষয়গুলি সম্বন্ধে মীমাংসা করে দেয়, অথচ যারা কিতাব প্রাপ্ত হয়েছিল, স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ তাদের নিকট সমাগত হওয়ার পর, পরস্পরের প্রতি হিংসা বিদ্বেষ বশতঃ তারা সেই কিতাবকে নিয়ে মতভেদ ঘটিয়ে বসলো, বিশ্বাস স্থাপনকারীরা যে বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করত আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে সেই বিষয়ে তাদেরকে সত্য পথে পরিচালিত করেন। আল্লাহর যাকে ইচ্ছা সঠিক পথে পরিচালিত করেন। ২১৩
220 ২. আল-বাকারা তোমরা কি মনে করেছ যে, তোমরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ তোমরা এখনও তাদের অবস্থা প্রাপ্ত হওনি যারা তোমাদের পূর্বে বিগত হয়েছে; তাদেরকে বিপদ ও দুঃখ স্পর্শ করেছিল এবং তাদেরকে প্রকম্পিত করা হয়েছিল; এমন কি রাসূল ও তৎসহ বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ বলেছিলঃ কখন আল্লাহর সাহায্য আসবে? সতর্ক হও, নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী। ২১৪
221 ২. আল-বাকারা তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করছে, তারা কিরূপে ব্যয় করবে? তুমি বলঃ তোমরা ধন সম্পত্তি হতে যা ব্যয় করবে তা মাতা-পিতার, আত্মীয়-স্বজনের, পিতৃহীনদের, দরিদ্রদের ও পথিকবৃন্দের জন্য কর; এবং তোমরা যে সব সৎকাজ কর নিশ্চয়ই আল্লাহ তা সম্যক রূপে অবগত। ২১৫
222 ২. আল-বাকারা জিহাদকে তোমাদের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য রূপে অবধারিত করা হয়েছে এবং এটি তোমাদের নিকট অপ্রীতিকর; বস্ত্ততঃ তোমরা এমন বিষয়কে অপছন্দ করছ যা তোমাদের পক্ষে বাস্তবিকই মঙ্গলজনক, পক্ষান্তরে তোমরা এমন বিষয়কে পছন্দ করছ যা তোমাদের জন্য বাস্তবিকই অনিষ্টকর এবং আল্লাহই (তোমাদের ভাল-মন্দ) অবগত আছেন এবং তোমরা অবগত নও। ২১৬
223 ২. আল-বাকারা তারা তোমাকে নিষিদ্ধ মাসে যুদ্ধ করা সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করছে। তুমি বলঃ ওর মধ্যে যুদ্ধ করা অতীব অন্যায়। আর আল্লাহর পথে প্রতিরোধ করা এবং তাঁকে অবিশ্বাস করা ও পবিত্র মাসজিদ হতে তার অধিবাসীদেরকে বহিস্কার করা আল্লাহর নিকট তদপেক্ষা গুরুতর অপরাধ; এবং অশান্তি সৃষ্টি হত্যা অপেক্ষা গুরুতর এবং যদি তারা সক্ষম হয় তাহলে তারা তোমাদেরকে তোমাদের ধর্ম হতে ফিরাতে না পারা পর্যন্ত নিবৃত্ত হবেনা; আর তোমাদের মধ্যকার কেহ যদি স্বধর্ম হতে ফিরে যায় এবং ঐ কাফির অবস্থায়ই তার মৃত্যু ঘটে তাহলে তার ইহকাল ও পরকাল সংক্রান্ত সমস্ত সাধনাই ব্যর্থ হয়ে যাবে; তারাই অগ্নির অধিবাসী এবং তারই মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। ২১৭
224 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং আল্লাহর পথে দেশ ত্যাগ করেছে ও ধর্ম-যুদ্ধ করেছে, তারাই আল্লাহর অনুগ্রহ প্রত্যাশী এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ২১৮
225 ২. আল-বাকারা মাদক দ্রব্য ও জুয়া খেলা সম্বন্ধে তারা তোমাকে জিজ্ঞেস করছে। তুমি বলঃ এ দু’টোর মধ্যে গুরুতর পাপ রয়েছে এবং কোন কোন লোকের (কিছু) উপকার আছে, কিন্তু ও দু’টোর লাভ অপেক্ষা পাপই গুরুতর; তারা তোমাকে (আরও) জিজ্ঞেস করছে, তারা কি (পরিমান) ব্যয় করবে? তুমি বলঃ যা তোমাদের উদ্ধৃত্ত; এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য নিদর্শনাবলী ব্যক্ত করেন যেন তোমরা চিন্তা-ভাবনা কর। ২১৯
226 ২. আল-বাকারা পার্থিব ও পারলৌকিক বিষয়ে। তারা তোমাকে ইয়াতীমদের সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করছে; তুমি বলঃ তাদের হিত সাধন করাই উত্তম; এবং যদি তোমরা তাদেরকে সম্মিলিত করে নাও তাহলে তারা তোমাদের ভাই; আর কে অনিষ্টকারী, কে হিতাকাংখী আল্লাহ তা অবগত আছেন এবং যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন তাহলে তিনি তোমাদেরকে বিপদে ফেলতেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রান্ত, বিজ্ঞানময়। ২২০
227 ২. আল-বাকারা এবং মুশরিক নারীকে ঈমান না আনা পর্যন্ত তোমরা বিয়ে করনা এবং নিশ্চয়ই মু’মিন কৃতদাসী মুশরিক মহিলা অপেক্ষা উত্তম যদিও সে তোমাদেরকে মোহিত করে; এবং অংশীবাদীরা বিশ্বাস স্থাপন না করা পর্যন্ত তাদের সাথে (মুসলিম নারীদের) বিয়ে দিওনা এবং নিশ্চয়ই অংশীবাদী তোমাদের মনঃপুত হলেও বিশ্বাসী দাস তদপেক্ষা শ্রেয়তর; এরাই জাহান্নামের দিকে আহবান করে এবং আল্লাহ স্বীয় ইচ্ছায় জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহবান করেন ও মানবমন্ডলীর জন্য স্বীয় নিদর্শনাবলী বিবৃত করেন যেন তারা শিক্ষা গ্রহণ করে। ২২১ জাহান্নাম
228 ২. আল-বাকারা এবং তারা তোমাকে (স্ত্রীলোকদের) ঋতু সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করছে; তুমি বলঃ ওটা হচ্ছে অশুচি। অতএব ঋতুকালে স্ত্রীলোকদেরকে অন্তরাল কর এবং উত্তম রূপে শুদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটে যেওনা; অতঃপর যখন তারা পবিত্র হবে তখন আল্লাহর নির্দেশ মত তোমরা তাদের নিকট গমন কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাহকারীদেরকে ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরকেও ভালবাসেন। ২২২
229 ২. আল-বাকারা তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের জন্য ক্ষেত্র স্বরূপ; অতএব তোমরা যখন যেভাবে ইচ্ছা স্বীয় জীবনের জন্য ব্যবহার কর এবং নিজেদের আগামী দিনের জন্য ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখ, একদিন আল্লাহর সাথে সাক্ষাত হবে। আর বিশ্বাসীদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও। ২২৩
230 ২. আল-বাকারা এবং মানবমন্ডলীর মধ্যে হিত সাধন, পরহেযগারী ও মীমাংসা করে দেয়ার ক্ষেত্রে তোমরা স্বীয় শপথসমূহের জন্য আল্লাহর নামকে লক্ষ্যবস্তু বানিও না। বস্তুতঃ আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা। ২২৪
231 ২. আল-বাকারা তোমাদের নিরর্থক শপথসমূহের জন্য তোমাদেরকে আল্লাহ পাকড়াও করবেননা, কিন্তু তিনি তোমাদেরকে ঐ সব শপথ সম্বন্ধে ধরবেন যেগুলি তোমাদের মনের সংকল্প অনুসারে সাধিত হয়েছে; এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, ধৈর্যশীল। ২২৫
232 ২. আল-বাকারা যারা স্বীয় স্ত্রীগণ হতে পৃথক থাকার শপথ করে তারা চার মাস প্রতীক্ষা করবে, অতঃপর যদি তারা প্রত্যাবর্তিত হয় তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ২২৬
233 ২. আল-বাকারা পক্ষান্তরে যদি তারা তালাক দিতেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয় তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। ২২৭
234 ২. আল-বাকারা এবং তালাক প্রাপ্তাগণ তিন ঋতু পর্যন্ত অপেক্ষা করবে; এবং যদি তারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে তাহলে আল্লাহ তাদের গর্ভে যা সৃষ্টি করেছেন তা গোপন করা তাদের পক্ষে বৈধ হবেনা; এবং এর মধ্যে যদি তারা সন্ধি কামনা করে তাহলে তাদের স্বামীই তাদেরকে প্রতিগ্রহণ করতে সমধিক স্বত্ববান; আর নারীদের উপর তাদের স্বামীদের যেরূপ স্বত্ব আছে, স্ত্রীদেরও তাদের পুরুষদের (স্বামীর) উপর তদনুরূপ ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে; এবং তাদের উপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে; আল্লাহ হচ্ছেন মহা পরাক্রান্ত, বিজ্ঞানময়। ২২৮
235 ২. আল-বাকারা তালাক দুইবার; অতঃপর (স্ত্রীকে) হয় বিহিতভাবে রাখতে হবে অথবা সদ্ভাবে পরিত্যাগ করতে হবে; আর নিজেদের দেয় সম্পদ থেকে কিছু ফিরিয়ে নেয়া তোমাদের জন্য জায়েয নয় স্ত্রীদের কাছ থেকে, যদি উভয়ে আশংকা করে যে, তারা আল্লাহর সীমা স্থির রাখতে পারবেনা। অনন্তর তোমরা যদি আশংকা কর যে, আল্লাহর নির্দেশ ঠিক রাখতে পারবেনা, সেই অবস্থায় স্ত্রী নিজের মুক্তি লাভের জন্য কিছু বিনিময় দিলে তাতে উভয়ের কোন দোষ নেই; এগুলি হচ্ছে আল্লাহর সীমাসমূহ। অতএব তা অতিক্রম করনা এবং যারা আল্লাহর সীমা অতিক্রম করে বস্তুতঃ তারাই অত্যাচারী। ২২৯
236 ২. আল-বাকারা অতঃপর যদি সে তালাক প্রদান করে তাহলে এরপরে অন্য স্বামীর সাথে বিবাহিতা না হওয়া পর্যন্ত সে তার জন্য বৈধ হবেনা, অতঃপর সে তাকে তালাক প্রদান করলে যদি উভয়ে পরস্পর প্রত্যাবর্তিত হয় তাতে উভয়ের পক্ষে কোনই দোষ নেই, যদি আল্লাহর সীমারেখা বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। এবং এগুলিই আল্লাহর সীমাসমূহ, তিনি জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য এগুলি ব্যক্ত করে থাকেন। ২৩০
237 ২. আল-বাকারা এবং তোমরা যখন স্ত্রীদেরকে তালাক দাও, আর তারা তাদের নির্ধারিত সময়ে পৌঁছে যায়, তখন তাদেরকে নিয়মিতভাবে রাখতে পার অথবা নিয়মিতভাবে পরিত্যাগ করতে পার; এবং তাদেরকে যন্ত্রণা দেয়ার জন্য আবদ্ধ করে রেখনা, তাহলে সীমা লংঘন করবে; আর যে ব্যক্তি এরূপ করে সে নিশ্চয়ই নিজের প্রতি অবিচার করে থাকে। এবং আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে বিদ্রুপাচ্ছলে গ্রহণ করনা, তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ এবং তোমাদেরকে উপদেশ দানের জন্য গ্রন্থ ও বিজ্ঞান হতে যা অবতীর্ণ করেছেন তা স্মরণ কর, আর আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রেখ যে, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে মহাজ্ঞানী। ২৩১
238 ২. আল-বাকারা এবং যখন তোমরা স্ত্রীলোকদেরকে তালাক দাও, অতঃপর তারা তাদের নির্ধারিত সময়ে পৌছে যায়, তখন তারা উভয়েই যদি পরস্পরের প্রতি বিহিতভাবে সম্মত হয়ে থাকে, সেই অবস্থায় স্ত্রীরা নিজ স্বামীদেরকে বিয়ে করতে গেলে তোমরা তাদেরকে বাঁধা প্রদান করনা; তোমাদের মধ্যে যে আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে এর দ্বারা তাদেরকেই উপদেশ দেয়া হচ্ছে; তোমাদের জন্য এটি শুদ্ধতম ও পবিত্রতম (ব্যবস্থা) এবং আল্লাহ অবগত আছেন ও তোমরা অবগত নও। ২৩২
239 ২. আল-বাকারা এবং যদি কেহ স্তন্য পানের কাল পূর্ণ করতে ইচ্ছা করে তার জন্য জননীগণ পূর্ণ দুই বছর স্বীয় সন্তানদেরকে স্তন্য দান করবে; আর সন্তানের জনকগণ বিহিতভাবে প্রসূতিদের খোরাক ও তাদের পোশাক দিতে বাধ্য; কেহকেও তার সাধ্যের অতীত কষ্ট দেয়া যাবেনা, নিজ সন্তানের কারণে জননীকে ক্ষতিগ্রস্ত করা চলবেনা, এবং পিতার জন্যও একই বিধান, কিন্তু যদি তারা পরস্পর পরামর্শ ও সম্মতি অনুসারে স্তন্য ত্যাগ করাতে ইচ্ছা করে তাতে উভয়ের কোন দোষ নেই; আর তোমরা যদি নিজ সন্তানদেরকে স্তন্য পানের জন্য সমর্পণ করে বিহিতভাবে কিছু প্রদান কর তাহলেও তোমাদের কোন দোষ নেই; এবং আল্লাহকে ভয় কর ও জেনে রেখ যে, তোমরা যা করছ আল্লাহ তা প্রত্যক্ষকারী। ২৩৩
240 ২. আল-বাকারা এবং তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রীদেরকে রেখে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তারা (বিধবাগণ) চার মাস ও দশ দিন প্রতীক্ষা করবে; অতঃপর যখন তারা স্বীয় নির্ধারিত সময়ে উপনীত হয় তখন তারা নিজেদের সম্বন্ধে বিহিতভাবে যা করবে তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই; এবং তোমরা যা করছো তদ্বিষয়ে আল্লাহ সম্যক খবর রাখেন। ২৩৪
241 ২. আল-বাকারা এবং তোমরা স্ত্রীলোকদের প্রস্তাব সম্বন্ধে পরোক্ষভাবে যা ব্যক্ত কর অথবা নিজেদের মনে গোপনে যা পোষণ কর তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই; আল্লাহ অবগত আছেন যে, তোমরা তাদের বিষয় আলোচনা করবে, কিন্তু গোপনভাবে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দান করনা, বরং বিহিতভাবে তাদের সাথে কথা বল; এবং নির্ধারিত সময় পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সংকল্প করনা; এবং এটিও জেনে রেখ যে, তোমাদের অন্তরে যা আছে আল্লাহ তা অবগত। অতএব তোমরা তাঁকে ভয় কর এবং জেনে রেখ যে, আল্লাহ ক্ষমাশীল, সহিষ্ণু। ২৩৫
242 ২. আল-বাকারা যদি তোমরা স্ত্রীদেরকে স্পর্শ না করে অথবা তাদের প্রাপ্য নির্ধারণ করার পূর্বে তালাক প্রদান কর তাহলে তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই, এবং তোমরা তাদেরকে কিছু সংস্থান করে দিবে, অবস্থাপন্ন লোক নিজের অবস্থানুসারে এবং অভাবগ্রস্ত লোক তার সাধ্যানুসারে বিহিত সংস্থান (করে দিবে); সৎ কর্মশীল লোকদের উপর ইহাই কর্তব্য। ২৩৬
243 ২. আল-বাকারা আর তোমরা যদি তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বেই তালাক প্রদান কর এবং তাদের মোহর নির্ধারণ করে থাক তাহলে যা নির্ধারণ করেছিলে তার অর্ধেক দিয়ে দাও; কিন্তু যদি তারা ক্ষমা করে কিংবা যার হাতে বিবাহ বন্ধন সে ক্ষমা করে তাহলে তা স্বতন্ত্র কথা; অথবা তোমরা পুরুষরা যদি ক্ষমা কর তাহলে এটা পরহেজগারীর অতি নিকটবর্তী; এবং পরস্পরের উপকারকে যেন ভুলে যেওনা; তোমরা যা কর নিশ্চয়ই আল্লাহ তা প্রত্যক্ষকারী। ২৩৭
244 ২. আল-বাকারা তোমরা সালাতের প্রতি যত্নবান হবে বিশেষতঃ মধ্যবর্তী সালাতের এবং আল্লাহর উদ্দেশে তোমরা বিনীতভাবে দন্ডায়মান হও। ২৩৮ নামাজ
245 ২. আল-বাকারা তবে তোমরা যদি আশংকা কর, সেই অবস্থায় পদব্রজে বা যানবাহনের উপর সালাত সমাপন করে নিবে, পরে যখন নিরাপদ হও তখন তোমাদেরকে যেভাবে শিখিয়ে দেয়া হয়েছে সেইভাবে আল্লাহর প্রশংসা কর যা তোমরা ইতোপূর্বে জানতেনা। ২৩৯ নামাজ
246 ২. আল-বাকারা এবং তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুমুখে পতিত হয় ও স্ত্রীগণকে ছেড়ে যায় তারা যেন স্বীয় স্ত্রীগণকে বহিস্কৃত না করে এক বছর পর্যন্ত তাদেরকে ভরণ-পোষণ প্রদান করার জন্য অসীয়াত করে যায়, কিন্তু যদি তারা (স্বেচ্ছায়) বের হয়ে যায় তাহলে নিজেদের সম্বন্ধে বিহিতভাবে তারা যে ব্যবস্থা করে তজ্জন্য তোমাদের কোন দোষ নেই, এবং আল্লাহ মহাপরাক্রান্ত, বিজ্ঞানময়। ২৪০
247 ২. আল-বাকারা আর তালাক প্রাপ্তদের জন্য বিহিতভাবে ভরণ পোষণের ব্যবস্থা করা ধর্মভীরুগণের কর্তব্য। ২৪১
248 ২. আল-বাকারা এভাবে আল্লাহ স্বীয় নিদর্শনাবলী বিবৃত করেন, যেন তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর। ২৪২
249 ২. আল-বাকারা তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি, মৃত্যুর বিভীষিকাকে এড়ানোর জন্য যারা নিজেদের গৃহ হতে বহির্গত হয়েছিল? অথচ তারা ছিল বহু সহস্র; তখন আল্লাহ তাদেরকে বললেনঃ তোমরা মর; পুনরায় তিনি তাদেরকে জীবন দান করলেন; নিশ্চয়ই মানবগণের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহশীল, কিন্তু অধিকাংশ লোক কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেনা। ২৪৩
250 ২. আল-বাকারা তোমরা আল্লাহর পথে সংগ্রাম কর এবং জেনে রেখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ হচ্ছেন সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা। ২৪৪
251 ২. আল-বাকারা কে সে, যে আল্লাহকে উত্তম ঋণদান করে? অনন্তর তিনি তাকে দ্বিগুণ, বহুগুণ বর্ধিত করেন এবং আল্লাহই (মানুষের আর্থিক অবস্থাকে) কৃচ্ছ বা স্বচ্ছল করে থাকেন এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। ২৪৫
252 ২. আল-বাকারা তুমি কি মূসার পরে ইসরাঈল বংশীয় প্রধানদের প্রতি লক্ষ্য করনি? নিজেদের এক নাবীকে যখন তারা বলেছিলঃ আমাদের জন্য একজন রাজা নিযুক্ত করে দাও (যেন) আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে পারি। সে বলেছিলঃ এটা কি সম্ভবপর নয় যে, যখন তোমাদের উপর যুদ্ধ বিধিবদ্ধ হয়ে যাবে তখন তোমরা যুদ্ধ করবেনা? তারা বলেছিলঃ আমরা যুদ্ধ করবনা এটা কিরূপে (সম্ভব), অথচ নিজেদের আবাস হতে ও স্বজনদের নিকট হতে আমরা বহিস্কৃত হয়েছি? অনন্তর যখন তাদের উপর যুদ্ধ বিধিবদ্ধ হল তখন তাদের অল্প সংখ্যক ব্যতীত সবাই পশ্চাৎপদ হয়ে পড়ল এবং অত্যাচারীদেরকে আল্লাহ সম্যক রূপে অবগত আছেন। ২৪৬
253 ২. আল-বাকারা এবং তাদের নাবী তাদেরকে বলেছিলঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তালূতকে তোমাদের জন্য রাজা রূপে নির্বাচিত করেছেন; তারা বললঃ আমাদের উপর তালূতের রাজত্ব কি রূপে (সঙ্গত) হতে পারে? রাজত্বে তার অপেক্ষা আমাদেরই স্বত্ব অধিক, পক্ষান্তরে যথেষ্ট আর্থিক স্বচ্ছলতাও তার নেই; তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাকেই মনোনীত করেছেন এবং তাকে প্রচুর জ্ঞান ও দৈহিক শক্তি দান করেছেন, আল্লাহ তাঁর রাজত্ব যাকে ইচ্ছা প্রদান করেন এবং আল্লাহ হচ্ছেন দানশীল, সর্বজ্ঞাতা। ২৪৭
254 ২. আল-বাকারা এবং তাদের নাবী তাদের বলেছিলঃ তার রাজত্বের নিদর্শন এই যে, তোমাদের নিকট সিন্দুক সমাগত হবে, যাতে থাকবে তোমাদের রবের নিকট হতে শান্তি এবং মূসা ও হারুনের পরিবারের (পরিত্যক্ত) কিছু সামগ্রী, মালাইকা/ফেরেশতা ওটা বহন করে আনবে, তোমরা যদি বিশ্বাস স্থাপনকারী হও তাহলে ওর মধ্যে নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য নিদর্শন রয়েছে। ২৪৮
255 ২. আল-বাকারা অতঃপর যখন তালূত সৈন্যদলসহ বহির্গত হয়েছিল তখন সে বলেছিল, নিশ্চয়ই আল্লাহ একটি নদী দ্বারা তোমাদেরকে পরীক্ষা করবেন, ওটা হতে যে পান করবে সে আমার দলভুক্ত নয় এবং যে স্বীয় হস্ত দ্বারা অঞ্জলি পূর্ণ করে নিবে এবং তদ্ব্যতীত সে আর আস্বাদন করবেনা সে নিশ্চয়ই আমার লোক; কিন্তু তাদের মধ্যে অল্প সংখ্যক ব্যতীত অন্য সবাই সেই নদীর পানি পান করল, অতঃপর যখন সে ও তার সঙ্গী বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ নদী অতিক্রম করে গেল তখন তারা বললঃ জালুত ও তার সেনাবাহিনীর মুকাবিলা করার শক্তি আজ আমাদের নেই; পক্ষান্তরে যারা বিশ্বাস করত যে, তাদেরকে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করতে হবে তারা বললঃ আল্লাহর হুকুমে কত ক্ষুদ্র দল কত বৃহৎ দলকে পরাজিত করেছে; বস্তুতঃ ধৈর্যশীলদের সঙ্গী হচ্ছেন আল্লাহ! ২৪৯
256 ২. আল-বাকারা এবং যখন তারা জালুত ও তার সেনাবাহিনীর সম্মুখীন হল, বলতে লাগলঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে পূর্ণ সহিষ্ণুতা দান করুন, আর আমাদের চরণগুলি অটল রাখুন এবং কাফির জাতির উপর আমাদেরকে সাহায্য করুন! ২৫০
257 ২. আল-বাকারা তখন তারা আল্লাহর হুকুমে জালুতের সৈন্যদেরকে পরাজিত করল এবং দাঊদ জালুতকে হত্যা করল। এবং আল্লাহ দাউদকে রাজ্য ও প্রজ্ঞা দান করলেন এবং তাকে ইচ্ছানুযায়ী শিক্ষা দান করলেন; আর যদি আল্লাহ এক দলকে অপর দলের দ্বারা প্রদমিত না করতেন তাহলে নিশ্চয়ই পৃথিবী অশান্তিপূর্ণ হত, কিন্তু আল্লাহ বিশ্ব জগতের প্রতি অনুগ্রহকারী। ২৫১
258 ২. আল-বাকারা এগুলো আল্লাহর নিদর্শন - তোমার নিকট এগুলি সত্যরূপে উপস্থাপন করেছি এবং নিশ্চয়ই তুমি রাসূলগণের অন্তর্ভুক্ত। ২৫২
259 ২. আল-বাকারা এই সকল রাসূল, আমি যাদের কারও উপর কেহকে মর্যাদা প্রদান করেছি, তাদের মধ্যে কারও সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন এবং কেহকে পদমর্যাদায় সমুন্নত করেছেন, আর মারইয়াম নন্দন ঈসাকে প্রকাশ্য নিদর্শনাবলী দান করেছি এবং তাকে পবিত্র আত্মাযোগে সাহায্য করেছি, আর আল্লাহ ইচ্ছা করলে নাবীগণের পরবর্তী লোকেরা, তাদের নিকট স্পষ্ট প্রমাণপুঞ্জ সমাগত হওয়ার পর পরস্পরের সাথে যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত হতনা। কিন্তু তারা পরস্পর মতবিরোধ করেছিল; ফলে তাদের কতক হল মু’মিন, আর কতক হল কাফির। বস্ত্ততঃ আল্লাহ ইচ্ছা করলে তারা পরস্পর যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত হতনা, কিন্তু আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা’ই সম্পন্ন করে থাকেন। ২৫৩
260 ২. আল-বাকারা হে বিশ্বাসীগণ! আমি তোমাদেরকে যে জীবনোপকরণ দান করেছি তা হতে সেদিন সমাগত হওয়ার পূর্বে ব্যয় কর যেদিন ক্রয়-বিক্রয়, বন্ধুত্ব ও সুপারিশ নেই, আর অবিশ্বাসীরাই অত্যাচারী। ২৫৪
261 ২. আল-বাকারা আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সুপ্রতিষ্ঠিত ধারক। তাঁকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করে না। তাঁর জন্যই আসমানসমূহে যা রয়েছে তা এবং যমীনে যা আছে তা। কে সে, যে তাঁর নিকট সুপারিশ করবে তাঁর অনুমতি ছাড়া? তিনি জানেন যা আছে তাদের সামনে এবং যা আছে তাদের পেছনে। আর তারা তাঁর জ্ঞানের সামান্য পরিমাণও আয়ত্ব করতে পারে না, তবে তিনি যা চান তা ছাড়া। তাঁর কুরসী আসমানসমূহ ও যমীন পরিব্যাপ্ত করে আছে এবং এ দু’টোর সংরক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয় না। আর তিনি সুউচ্চ, মহান। ২৫৫ আয়াতুল কুরসী
262 ২. আল-বাকারা দীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি কিংবা বাধ্যবাধকতা নেই। নিশ্চয়ই ভ্রান্তি হতে সুপথ প্রকাশিত হয়েছে। অতএব যে তাগুতকে অবিশ্বাস করে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে সে দৃঢ়তর রজ্জুকে আঁকড়ে ধরলো যা কখনও ছিন্ন হবার নয় এবং আল্লাহ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। ২৫৬
263 ২. আল-বাকারা আল্লাহই হচ্ছেন মু’মিনদের অভিভাবক। তিনি তাদেরকে অন্ধকার হতে আলোর দিকে নিয়ে যান; আর যারা অবিশ্বাস করেছে তাগুত তাদের পৃষ্ঠপোষক, সে তাদেরকে আলো হতে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়, তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, ওখানে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। ২৫৭ জাহান্নাম
264 ২. আল-বাকারা তুমি কি তার প্রতি লক্ষ্য করনি যে ইবরাহীমের সাথে তার রাব্ব সম্বন্ধে বিতর্ক করেছিল, যেহেতু আল্লাহ তাকে রাজত্ব প্রদান করেছিলেন। ইবরাহীম বলেছিলঃ আমার রাব্ব তিনিই যিনি জীবিত করেন ও মৃত্যু দান করেন। সে বলেছিলঃ আমিই জীবন ও মৃত্যু দান করি। ইবরাহীম বলেছিলঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ সূর্যকে পূর্ব দিক হতে আনয়ন করেন, কিন্তু তুমি ওকে পশ্চিম দিক হতে আনয়ন কর; এতে সেই অবিশ্বাসকারী হতবুদ্ধি হয়েছিল; এবং আল্লাহ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেননা। ২৫৮
265 ২. আল-বাকারা অথবা ঐ ব্যক্তির অনুরূপ যে কোন এক জনপদ অতিক্রম করছিল এবং তা ছিল শূণ্য - নিজ ভিত্তির উপর পতিত। সে বললঃ এই নগরের মৃত্যুর পর আল্লাহ আবার তাকে জীবন দান করবেন কিরূপে? অনন্তর আল্লাহ তাকে একশ বছরের জন্য মৃত্যু দান করলেন, অতঃপর তাকে পুনর্জীবিত করলেন এবং বললেনঃ এ অবস্থায় তুমি কতক্ষণ অতিবাহিত করেছ? সে বললঃ একদিন অথবা একদিনের কিয়দংশ। তিনি বললেনঃ তা নয়, বরং তুমিতো এভাবে একশ বছর ছিলে। তোমার খাদ্য ও পানীয়ের প্রতি লক্ষ্য কর - ওটা বিকৃত হয়নি এবং তোমার গর্দভের প্রতি দৃষ্টিপাত কর; এবং যেহেতু আমি তোমাকে মানবের জন্য নিদর্শন বানাতে চাই; আরও লক্ষ্য কর অস্থিপুঞ্জের দিকে, ওকে কিরূপে আমি সংযুক্ত করি; অতঃপর ওকে মাংসাবৃত করি। অনন্তর যখন ওটা তার নিকট স্পষ্ট হয়ে গেল তখন সে বললঃ আমি জানি, আল্লাহ সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান। ২৫৯
266 ২. আল-বাকারা এবং যখন ইবরাহীম বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! আপনি কিরূপে মৃতকে জীবিত করেন তা আমাকে প্রদর্শন করুন। তিনি বললেনঃ তাহলে কি তুমি বিশ্বাস করনা? সে বললঃ হ্যাঁ অবশ্যই, কিন্তু তাতে আমার অন্তর পরিতৃপ্ত হবে। তিনি বললেনঃ তাহলে চারটি পাখী গ্রহণ কর, তারপর ওদেরকে টুকরা টুকরা করে মিশ্রিত কর, অনন্তর প্রত্যেক পাহাড়ের উপর ওদের এক এক খন্ড রেখে দাও, অতঃপর ওদেরকে আহবান কর, ওরা তোমার নিকট দৌড়ে আসবে; এবং জেনে রেখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রান্ত, বিজ্ঞানময়। ২৬০
267 ২. আল-বাকারা যারা আল্লাহর পথে স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে তাদের উপমা যেমন একটি শস্যবীজ, তা হতে উৎপন্ন হল সাতটি শীষ, প্রত্যেক শীষে (উৎপন্ন হল) এক শত শস্য, এবং আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা করেন বর্ধিত করে দেন; বস্তুতঃ আল্লাহ হচ্ছেন অতি দানশীল, সর্বজ্ঞ। ২৬১
268 ২. আল-বাকারা যারা আল্লাহর পথে নিজেদের ধন সম্পদ ব্যয় করে, এবং ব্যয় করার পর অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করেনা, কষ্টও দেয়না, তাদের জন্য তাদের রবের নিকট রয়েছে পুরস্কার; বস্তুতঃ তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্তও হবেনা। ২৬২
269 ২. আল-বাকারা যে দানের পশ্চাতে থাকে ক্লেশ, সেই দান অপেক্ষা উত্তম বাক্য ও ক্ষমাই উৎকৃষ্ট এবং আল্লাহ মহা সম্পদশালী, সহিষ্ণু। ২৬৩
270 ২. আল-বাকারা হে মু’মিনগণ! কৃপা প্রকাশ ও ক্লেশ দান করে নিজেদের দানগুলি ব্যর্থ করে ফেলনা সেই ব্যক্তির ন্যায় যে নিজের ধন ব্যয় করে লোক দেখানোর জন্য, অথচ আল্লাহ ও আখিরাতে সে বিশ্বাস করেনা। ফলতঃ তার উপমা, যেমন এক বৃহৎ মসৃন প্রস্তর খন্ড যার উপর কিছু মাটি (জমে) আছে, এ অবস্থায় তাতে বর্ষিত হল প্রবল বর্ষা, অতঃপর তা পরিষ্কার হয়ে গেল। তারা যা অর্জন করেছে তন্মধ্য হতে কোন বিষয়েই তারা সুফল পাবেনা এবং আল্লাহ অবিশ্বাসী সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেননা। ২৬৪
271 ২. আল-বাকারা এবং যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি সাধন ও স্বীয় জীবনের প্রতিষ্ঠার জন্য ধন সম্পদ ব্যয় করে তাদের উপমা - যেমন উর্বর ভূভাগে অবস্থিত একটি উদ্যান, তাতে প্রবল বৃষ্টিধারা পতিত হয়, ফলে সেই উদ্যান দ্বিগুণ খাদ্যশস্য দান করে; কিন্তু যদি তাতে বৃষ্টিপাত না হয় তাহলে শিশিরই যথেষ্ট এবং তোমরা যা করছ আল্লাহ তা প্রত্যক্ষকারী। ২৬৫
272 ২. আল-বাকারা তোমাদের কারও যদি এমন একটি খেজুর ও আঙ্গুর উদ্যান থাকে যার তলদেশ দিয়ে নদী-নালা প্রবাহিত, সেখানে সর্ব প্রকার ফলের সংস্থান তার রয়েছে, আর সে বার্ধক্যে উপনীত হল, অথচ তার কতকগুলি দুর্বল (অপ্রাপ্ত বয়স্ক) সন্তান-সন্ততি রয়েছে, এ অবস্থায় সেই বাগানে উপস্থিত হল অগ্নিসহ এক বাত্যাবর্ত, আর তা পুড়ে (ভস্মীভূত হয়ে) গেল; তোমরা কেহ এটা পছন্দ করবে কি? এ রূপে আল্লাহ তোমাদের জন্য নিদর্শনাবলী ব্যক্ত করেন, যেন তোমরা চিন্তা-ভাবনা কর। ২৬৬
273 ২. আল-বাকারা হে মু’মিনগণ! তোমরা যা উপার্জন করেছ এবং আমি যা তোমাদের জন্য ভূমি হতে উৎপন্ন করেছি, তা হতে উৎকৃষ্ট বস্ত্ত খরচ কর এবং তা হতে এরূপ নিকৃষ্ট বস্ত্ত ব্যয় করতে মনস্থ করনা যা তোমরা মুদিত চক্ষু ব্যতীত গ্রহণ করনা; এবং তোমরা জেনে রেখ, আল্লাহ মহা সম্পদশালী, প্রশংসিত। ২৬৭
274 ২. আল-বাকারা শাইতান তোমাদেরকে অভাবের ভীতি প্রদর্শন করে এবং তোমাদেরকে অশ্লীলতার আদেশ করে এবং আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর নিকট হতে ক্ষমা ও দয়ার অংগীকার করেন। আল্লাহ হচ্ছেন বিপুল দাতা, সর্বজ্ঞ। ২৬৮
275 ২. আল-বাকারা তিনি যাকে ইচ্ছা প্রজ্ঞা দান করেন এবং যাকে প্রজ্ঞা দান করা হয় সে নিশ্চয়ই প্রচুর কল্যাণ লাভ করে; বস্ত্ততঃ জ্ঞানবান ব্যক্তিগণ ব্যতীত কেহই উপলদ্ধি করতে পারেনা। ২৬৯
276 ২. আল-বাকারা এবং যে কোন বস্তু তোমরা ব্যয় করনা কেন, অথবা যে কোন প্রতিজ্ঞা (নযর) তোমরা গ্রহণ করনা কেন, আল্লাহ নিশ্চয়ই তা অবগত হন; আর অত্যাচারীদের কোনই সাহায্যকারী নেই। ২৭০
277 ২. আল-বাকারা যদি তোমরা প্রকাশ্যভাবে দান কর তাহলে তা উৎকৃষ্ট এবং যদি তোমরা তা গোপন কর ও দরিদ্রদেরকে প্রদান কর তাহলে ওটাও তোমাদের জন্য উত্তম, এবং এর দ্বারা তোমাদের কিছু পাপ (এর কালিমা) বিদূরিত হবে; বস্ত্ততঃ তোমাদের কার্যকলাপ সম্বন্ধে আল্লাহ বিশেষ রূপে খবর রাখেন। ২৭১
278 ২. আল-বাকারা তাদেরকে সুপথে আনার দায়িত্ব তোমার নয়, বরং যাকে ইচ্ছা আল্লাহ তাকে সৎ পথে পরিচালিত করেন এবং তোমরা ধনসম্পদ হতে যা ব্যয় কর বস্তুতঃ তা তোমাদের নিজেদের জন্য, আর একমাত্র আল্লাহর সন্তোষ লাভের চেষ্টা ব্যতীত (অন্য কোন উদ্দেশে) অর্থ ব্যয় করনা; এবং তোমরা হালাল সম্পদ হতে যা ব্যয় করবে তা সম্পূর্ণভাবে পুনঃপ্রাপ্ত হবে, আর তোমাদের প্রতি অন্যায় করা হবেনা। ২৭২
279 ২. আল-বাকারা দান খয়রাত ঐ সব লোকদের জন্য যারা আল্লাহর কাছে আবদ্ধ হয়ে গেছে, জীবিকার সন্ধানে অন্যত্র ঘোরাফিরা করতে সক্ষম নয়। তাদের সাবলিল চলাচলের জন্য অজ্ঞ লোকেরা তাদেরকে অভাবহীন মনে করে, তুমি তাদেরকে তাদের লক্ষণ দ্বারা চিনবে। তারা মানুষের কাছে যাঞ্চা করেনা। এবং তোমরা বৈধ সম্পদ থেকে যা ব্যয় কর সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যকরূপে অবগত। ২৭৩
280 ২. আল-বাকারা যারা রাতে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে তাদের রবের নিকট তাদের পুরস্কার রয়েছে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবেনা। ২৭৪
281 ২. আল-বাকারা যারা সুদ ভক্ষণ করে তারা শাইতানের স্পর্শে মোহাভিভূত ব্যক্তির অনুরূপ কিয়ামাত দিবসে দন্ডায়মান হবে; এর কারণ এই যে, তারা বলে, ব্যবসা সুদের অনুরূপ বৈ তো নয়; অথচ আল্লাহ তা‘আলা ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন; অতঃপর যার নিকট তার রবের পক্ষ হতে উপদেশ সমাগত হয়, ফলে সে নিবৃত্ত হয়; সুতরাং যা অতীত হয়েছে তার কৃতকর্ম আল্লাহর উপর নির্ভর; এবং যারা পুনরায় সুদ গ্রহণ করবে তারাই হচ্ছে জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানেই চিরকাল অবস্থান করবে। ২৭৫ জাহান্নাম
282 ২. আল-বাকারা আল্লাহ সুদকে ক্ষয় করেন এবং দানকে বর্ধিত করেন, বস্তুতঃ আল্লাহ অতি কৃতঘ্ন পাপাচারীদেরকে ভালবাসেননা। ২৭৬
283 ২. আল-বাকারা নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে এবং সৎ কার্যাবলী সম্পাদন করে, সালাতকে প্রতিষ্ঠিত রাখে ও যাকাত প্রদান করে, তাদের জন্য তাদের রবের নিকট পুরষ্কার রয়েছে; এবং তাদের কোনো আশংকা নেই এবং তারা দুঃখিত হবেনা। ২৭৭ নামাজ ও যাকাত
284 ২. আল-বাকারা হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং যদি তোমরা মু’মিন হও তাহলে সুদের মধ্যে যা অবশিষ্ট রয়েছে তা বর্জন কর। ২৭৮
285 ২. আল-বাকারা কিন্তু যদি না কর তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্ত্তত হয়ে যাও। আর যদি তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা কর তাহলে তোমাদের মূলধন পেয়ে যাবে, তোমরা অত্যাচার করবেনা এবং তোমরাও অত্যাচারিত হবেনা। ২৭৯
286 ২. আল-বাকারা আর যদি সে অভাবগ্রস্ত হয় তাহলে স্বচ্ছলতার প্রতীক্ষা করবে এবং যদি তোমরা বুঝে থাক তাহলে তোমাদের জন্য দান করাই উত্তম। ২৮০
287 ২. আল-বাকারা আর তোমরা সেই দিনের ভয় কর যেদিন তোমরা আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে, তখন যে যা অর্জন করেছে তা সম্পূর্ণ রূপে প্রদত্ত হবে এবং তারা অত্যাচারিত হবেনা। ২৮১
288 ২. আল-বাকারা হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! যখন তোমরা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ঋণের আদান প্রদান করবে তখন তা লিখে নিবে; আর কোন একজন লেখক যেন ন্যায্যভাবে তোমাদের মধ্যে (ঐ আদান প্রদানের দলীল) লিখে দেয়, আর কোন লেখক যেন (দলীল) লিখে দিতে অস্বীকার না করে, আল্লাহ তাকে যেরূপ শিক্ষা দিয়েছেন, তার উচিত তা লিখে দেয়া, এবং ঋণ গ্রহিতা যেন লেখার বিষয় বলে দেয় এবং তার উচিত স্বীয় রাব্ব আল্লাহকে ভয় করা এবং ওর মধ্যে কিছুমাত্র ব্যতিক্রম না করা; অতঃপর ঋণ গ্রহীতা যদি নির্বোধ বা অযোগ্য অথবা লিখিয়ে নিতে অসমর্থ হয় তাহলে তার অভিভাবকরা ন্যায় সঙ্গতভাবে লিখিয়ে নিবে এবং তোমাদের মধ্যে দু’জন পুরুষ সাক্ষীকে সাক্ষী করবে; কিন্তু যদি দু’জন পুরুষ না পাওয়া যায় তাহলে সাক্ষীগণের মধ্যে তোমরা একজন পুরুষ ও দু’জন নারী মনোনীত করবে, যদি নারীদ্বয়ের একজন ভুলে যায় তাহলে একজন অপর জনকে স্মরণ করিয়ে দিবে; এবং যখন আহবান করা হয় তখন সাক্ষীগণের অস্বীকার না করা উচিত, এবং ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ বিষয়ের নির্দিষ্ট সময় লিখে দিতে তোমরা অবহেলা করনা, এটা আল্লাহর নিকট অতি সঙ্গত এবং সাক্ষ্যের জন্য এটাই দৃঢ়তর ও সন্দেহে পতিত না হওয়ার নিকটতর; কিন্তু যদি তোমরা কারবারে পরস্পর হাতে হা ২৮২
289 ২. আল-বাকারা এবং যদি তোমরা প্রবাসে থাক ও লেখক না পাও তাহলে বন্ধকী বস্তু নিজের দখলে রাখ। অতঃপর কেহ যদি কেহকে বিশ্বাস করে তাহলে যাকে বিশ্বাস করা হয়েছে তার পক্ষে গচ্ছিত দ্রব্য প্রত্যর্পণ করা উচিত এবং স্বীয় রাব্ব আল্লাহকে ভয় করা উচিৎ। সাক্ষ্য গোপন করনা; এবং যে কেহ তা গোপন করবে, নিশ্চয়ই তার মন পাপাচারী; বস্তুতঃ আল্লাহ তোমাদের কার্যকলাপ সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞাত। ২৮৩
290 ২. আল-বাকারা নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে সবই আল্লাহর এবং তোমাদের অন্তরে যা রয়েছে তা প্রকাশ কর অথবা গোপন রাখ, আল্লাহ তার হিসাব তোমাদের নিকট হতে গ্রহণ করবেন; অতঃপর তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন, যাকে ইচ্ছা শাস্তি দিবেন; এবং আল্লাহ সর্ব বিষয়োপরি শক্তিমান। ২৮৪
291 ২. আল-বাকারা রাসূল তার রাব্ব হতে তার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা বিশ্বাস করে এবং মু’মিনগণও (বিশ্বাস করে); তারা সবাই আল্লাহকে, তাঁর মালাইকাকে, তাঁর গ্রন্থসমূহকে এবং তাঁর রাসূলগণকে বিশ্বাস করে; (তারা বলে) আমরা তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কেহকেও পার্থক্য করিনা। এবং তারা বলে, আমরা শুনলাম এবং স্বীকার করলাম; হে আমাদের রাব্ব! আমরা আপনারই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আপনারই দিকে শেষ প্রত্যাবর্তন। ২৮৫
292 ২. আল-বাকারা কোন ব্যক্তিকেই আল্লাহ তার সাধ্যের অতিরিক্ত কর্তব্য পালনে বাধ্য করেননা; সে যা উপার্জন করেছে তা তারই জন্য এবং যা সে অর্জন করেছে তা তারই উপর বর্তাবে। হে আমাদের রাব্ব! আমরা যদি ভুলে যাই অথবা ভুল করি সেজন্য আমাদেরকে অপরাধী করবেননা। হে আমাদের রাব্ব! আমাদের পূর্ববর্তীগণের উপর যেরূপ গুরুভার অর্পণ করেছিলেন আমাদের উপর তদ্রুপ ভার অর্পণ করবেননা। হে আমাদের রাব্ব! যা আমাদের শক্তির বাইরে ঐরূপ ভার বহনে আমাদেরকে বাধ্য করবেননা, এবং আমাদের পাপ মোচন করুন ও আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আমাদেরকে দয়া করুন, আপনিই আমাদের আশ্রয়দাতা! অতএব কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে জয়যুক্ত করুন। ২৮৬ দোয়া
293 ৩. আলে-ইমরান আলিফ, লাম, মীম।
294 ৩. আলে-ইমরান আল্লাহ ছাড়া কোনই ইলাহ (উপাস্য) নেই, তিনি চিরঞ্জীব ও নিত্য বিরাজমান।
295 ৩. আলে-ইমরান তিনি সত্যসহ তোমার প্রতি গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন, যা পূর্ববর্তী বিষয়ের সত্যতা প্রতিপাদনকারী। এবং এর পূর্বে তাওরাত ও ইঞ্জীল অবতীর্ণ করেছিলেন।
296 ৩. আলে-ইমরান মানবমন্ডলীর জন্য সৎপথ প্রদর্শনের জন্য এবং তিনিই ফুরকান অবতীর্ণ করেছেন। যারা আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি অবিশ্বাস করে নিশ্চয়ই তাদের জন্য কঠোর শাস্তি রয়েছে এবং আল্লাহ পরাক্রান্ত, প্রতিশোধ গ্রহণকারী।
297 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট ভূমন্ডল ও নভোমন্ডলের কোন বিষয়ই লুকায়িত নেই।
298 ৩. আলে-ইমরান তিনিই স্বীয় ইচ্ছানুযায়ী জরায়ুর মধ্যে তোমাদের আকৃতি গঠন করেছেন। তিনি ব্যতীত অন্য কোনই উপাস্য নেই, তিনি পরাক্রান্তশালী, বিজ্ঞানময় ।
299 ৩. আলে-ইমরান তিনিই তোমার প্রতি গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন যাতে সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ রয়েছে - ওগুলি গ্রন্থের জননী স্বরূপ এবং অন্যান্য আয়াতসমূহ অস্পষ্ট; অতএব যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে, ফলতঃ তারাই অশান্তি সৃষ্টি ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের উদ্দেশে অস্পষ্টের অনুসরণ করে; এবং আল্লাহ ব্যতীত ওর অর্থ কেহই অবগত নয়, আর যারা জ্ঞানে সুপ্রতিষ্ঠিত তারা বলেঃ আমরা ওতে বিশ্বাস করি, সমস্তই আমাদের রবের নিকট হতে সমাগত এবং জ্ঞানবান ব্যতীত কেহই উপদেশ গ্রহণ করেনা।
300 ৩. আলে-ইমরান হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে পথ প্রদর্শনের পর আমাদের অন্তরসমূহ বক্র করবেন না এবং আমাদেরকে আপনার নিকট হতে করুণা প্রদান করুন, নিশ্চয়ই আপনি প্রভূত প্রদানকারী।
301 ৩. আলে-ইমরান হে আমাদের রাব্ব! নিশ্চয়ই আপনি সকল মানুষকে সমবেতকারী, ঐ দিনে মোটেই সন্দেহ নেই, নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গকারী নন।
302 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাস করেছে, তাদের ধন-সম্পদ ও তাদের সন্তান-সন্ততি আল্লাহর নিকট কোন বিষয়েই ফলপ্রদ হবেনা এবং তারাই জাহান্নামের ইন্ধন। ১০ জাহান্নাম
303 ৩. আলে-ইমরান ফির‘আউন সম্প্রদায় এবং তাদের পূর্ববর্তীদের প্রকৃতির ন্যায় তারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি অসত্যারোপ করেছে, এই হেতু আল্লাহ তাদের ধৃত করেছেন এবং আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা। ১১
304 ৩. আলে-ইমরান যারা অবিশ্বাস করেছে, তুমি তাদেরকে বলঃ অচিরেই তোমরা পরাভূত হবে এবং তোমরা জাহান্নামের দিকে একত্রিত হবে এবং ওটা নিকৃষ্টতর স্থান। ১২ জাহান্নাম
305 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য দু’টি দলের পরস্পর সম্মুখীন হওয়ার মধ্যে মহান নমুনা রয়েছে, তাদের একদল আল্লাহর পথে সংগ্রাম করছিল এবং অপর দল অবিশ্বাসী ছিল; তারা প্রত্যক্ষ দৃষ্টিতে মুসলিমদেরকে দ্বিগুণ দেখেছিল এবং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তদ্বীয় সাহায্য দানে শক্তিশালী করেন, নিশ্চয়ই এর মধ্যে চক্ষুস্মানদের জন্য উপদেশ রয়েছে। ১৩
306 ৩. আলে-ইমরান মানবমন্ডলীকে রমণী, সন্তান-সন্ততি, পুঞ্জীকৃত স্বর্ণ ও রৌপ্যভান্ডার, সুশিক্ষিত অশ্ব ও পালিত পশু এবং শস্য ক্ষেত্রের আকর্ষণীয় বস্ত্ত দ্বারা সুশোভিত করা হয়েছে, এটা পার্থিব জীবনের সম্পদ এবং আল্লাহর নিকট রয়েছে শ্রেষ্ঠতম অবস্থান। ১৪
307 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ আমি কি তোমাদেরকে এটা অপেক্ষাও উত্তম বিষয়ের সংবাদ দিব? যারা ধর্মভীরু তাদের জন্য তাদের রবের নিকট জান্নাত রয়েছে যার তলদেশে স্রোতস্বিনীসমূহ প্রবাহিতা, তন্মধ্যে তারা সদা অবস্থান করবে এবং সেখানে শুদ্ধা সহধর্মিনীগণ ও আল্লাহর প্রসন্নতা রয়েছে এবং আল্লাহ বান্দাদের প্রতি লক্ষ্যকারী। ১৫
308 ৩. আলে-ইমরান যারা বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! নিশ্চয়ই আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি, অতএব আমাদের অপরাধ ক্ষমা করুন এবং জাহান্নামের আগুনের শাস্তি হতে আমাদেরকে বাঁচান। ১৬ জাহান্নাম
309 ৩. আলে-ইমরান যারা সহিষ্ণু, সত্যপরায়ণ, সেবানুগত, দানশীল এবং ঊষাকালে ক্ষমাপ্রার্থী। ১৭
310 ৩. আলে-ইমরান আল্লাহ সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, নিশ্চয়ই তিনি ব্যতীত কেহ ইলাহ (উপাস্য) নেই এবং মালাইকা/ফেরেশতা, জ্ঞানবানগণ ও সুবিচারে আস্থা স্থাপনকারীগণও সাক্ষ্য দেয় যে, এই মহা পরাক্রান্ত বিজ্ঞানময় ব্যতীত আর কোনই উপাস্য নেই। ১৮
311 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই ইসলামই আল্লাহর নিকট একমাত্র ধর্ম। এবং যাদেরকে গ্রন্থ প্রদত্ত হয়েছে তাদের জ্ঞান আসার পরও তারা মতবিরোধে লিপ্ত রয়েছে শুধুমাত্র পরস্পর বিদ্বেষ বশতঃ; এবং যে আল্লাহর নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করে নিশ্চয়ই আল্লাহ সত্ত্বর হিসাব গ্রহণকারী। ১৯
312 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর যদি তারা তোমার সাথে কলহ করে তাহলে তুমি বলঃ আমি ও আমার অনুসারীগণ আল্লাহর উদ্দেশ্যে আত্মসমর্পণ করেছি এবং যাদেরকে গ্রন্থ প্রদত্ত হয়েছে ও যারা নিরক্ষর তাদেরকে বলঃ তোমরাও কি আত্মসমর্পণ করেছ? অতঃপর যদি তারা ‌আত্মসমর্পণ করে তাহলে নিশ্চয়ই তারা সুপথ পেয়ে যাবে, আর যদি ফিরে যায় তাহলে তোমার উপর দায়িত্ব হচ্ছে প্রচার করা মাত্র এবং আল্লাহ বান্দাদের প্রতি লক্ষ্যকারী। ২০
313 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহ অবিশ্বাস করে ও অন্যায়ভাবে নাবীদেরকে হত্যা করে এবং হত্যা করে তাদের যারা মানবমন্ডলীর মধ্যে ন্যায়ের আদেশকারী, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও। ২১
314 ৩. আলে-ইমরান এদের কৃতকর্মসমূহ ইহকাল ও আখিরাতে ব্যর্থ হবে এবং তাদের জন্য কেহ সাহায্যকারী নেই। ২২
315 ৩. আলে-ইমরান তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি যাদেরকে গ্রন্থের একাংশ প্রদত্ত হয়েছে? তাদেরকে গ্রন্থের দিকে আহবান করা হয়েছে যেন এটা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে, অতঃপর তাদের একদল প্রতিগমন করল এবং তারা প্রতিগমনকারী। ২৩
316 ৩. আলে-ইমরান এটা এ জন্য যে, তারা বলেঃ নির্দিষ্ট সংখ্যক দিন ব্যতীত জাহান্নামের আগুন আমাদেরকে স্পর্শ করবেনা; এবং তারা যা স্থির করেছে, তাদের ধর্ম বিষয়ে ওটা তাদেরকে প্রতারিত করেছে। ২৪ জাহান্নাম
317 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর যে দিন আমি তাদেরকে একত্রিত করব, যাতে কোন সন্দেহ নেই, তখন তাদের কি দশা হবে? এবং প্রত্যেক ব্যক্তি যা অর্জন করেছে তা সম্যক রূপে প্রদত্ত হবে এবং তারা অত্যাচারিত হবেনা। ২৫
318 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ হে রাজ্যাধিপতি আল্লাহ! আপনি যাকে ইচ্ছা রাজত্ব দান করেন এবং যার নিকট হতে ইচ্ছা রাজত্ব ছিনিয়ে নেন; যাকে ইচ্ছা সম্মান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন; আপনারই হাতে রয়েছে কল্যাণ। নিশ্চয়ই আপনিই সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান। ২৬
319 ৩. আলে-ইমরান আপনি রাতকে দিনে পরিবর্তিত করেন এবং দিনকে রাতে পরিণত করেন, এবং জীবিতকে মৃত হতে নির্গত করেন ও মৃতকে জীবিত হতে বহির্গত করেন এবং আপনি যাকে ইচ্ছা অপরিমিত জীবিকা দান করেন। ২৭
320 ৩. আলে-ইমরান মু’মিনগণ যেন মু’মিনগণকে ছেড়ে কাফিরদেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ না করে, এবং তাদের আশংকা হতে আত্মরক্ষা ব্যতীত যে এরূপ করে সে আল্লাহর নিকট সম্পর্কহীন; আর আল্লাহ তোমাদেরকে স্বীয় পবিত্র অস্তিত্বের ভয় প্রদর্শন করছেন এবং আল্লাহরই দিকে ফিরে যেতে হবে। ২৮
321 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ তোমাদের অন্তরসমূহে যা রয়েছে তা তোমরা গোপন কর অথবা প্রকাশ কর আল্লাহ তা অবগত আছেন এবং নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু রয়েছে আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেন; এবং আল্লাহ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান। ২৯
322 ৩. আলে-ইমরান সেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি সৎকাজ হতে যা করেছে ও দুস্কর্ম হতে যা করেছে তা দেখতে পাবে; তখন সে ইচ্ছা করবে - যদি তার মধ্যে এবং ঐ দুস্কর্মের মধ্যে সুদূর ব্যবধান হত! আল্লাহ তোমাদেরকে স্বীয় পবিত্র অস্তিত্বের ভয় প্রদর্শন করছেন এবং আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের প্রতি স্নেহশীল। ৩০
323 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস তাহলে আমার অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসেন ও তোমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করেন; এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ৩১
324 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের অনুসরণ কর; কিন্তু যদি তারা ফিরে যায় তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ অবিশ্বাসীদেরকে ভালবাসেন না। ৩২
325 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই আল্লাহ আদম ও নূহকে এবং ইবরাহীম ও ইমরানের সন্তানগণকে বিশ্ব জগতের উপর মনোনীত করেছেন। ৩৩
326 ৩. আলে-ইমরান তারা একে অপরের বংশধর এবং আল্লাহ শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। ৩৪
327 ৩. আলে-ইমরান যখন ইমরান-পত্নী নিবেদন করল, হে আমার রাব্ব! নিশ্চয়ই আমার গর্ভে যা রয়েছে তা আমি মুক্ত করে আপনার উদ্দেশে উৎসর্গ করলাম, সুতরাং আপনি আমা হতে তা গ্রহণ করুন, নিশ্চয়ই আপনি শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। ৩৫
328 ৩. আলে-ইমরান অনন্তর যখন সে তা প্রসব করল তখন বললঃ হে আমার রাব্ব! আমিতো কন্যা প্রসব করেছি; এবং সে যা প্রসব করেছে তা আল্লাহ সম্যক অবগত আছেন, এবং কোনো পুত্র এই কন্যার সমকক্ষ নয়! আর আমি কন্যার নাম রাখলাম ‘মারইয়াম’ এবং আমি তাকে ও তার সন্তানগণকে বিতাড়িত শাইতান হতে আপনার আশ্রয়ে সমর্পন করলাম। ৩৬
329 ৩. আলে-ইমরান অনন্তর তার রাব্ব তাকে উত্তম রূপে গ্রহণ করলেন এবং তাকে উত্তম প্রবৃদ্ধি দান করলেন এবং যাকারিয়াকে তার ভারার্পন করলেন; যখনই যাকারিয়া তার নিকট উক্ত প্রকোষ্ঠে প্রবেশ করত তখন তার নিকট খাদ্য সম্ভার দেখতে পেত; সে বলতঃ হে মারইয়াম! এটা কোথা হতে প্রাপ্ত হলে? সে বলতঃ এটা আল্লাহর নিকট হতে, নিশ্চয়ই আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অপরিমিত জীবিকা দান করেন। ৩৭
330 ৩. আলে-ইমরান তখন যাকারিয়া তার রবের নিকট প্রার্থনা করেছিল, সে বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! আমাকে আপনার নিকট হতে পবিত্র সন্তান প্রদান করুন, নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী। ৩৮
331 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর যখন সে মেহরাবের মধ্যে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করছিল তখন মালাইকা/ফেরেশতাগণ তাকে সম্বোধন করে বলেছিলঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে ইয়াহইয়া সম্বন্ধে সুসংবাদ দিচ্ছেন - তার অবস্থা এই হবে যে, সে আল্লাহর একটি বাক্যের সত্যতা প্রকাশকারী হবে, নেতা হবে, স্বীয় প্রবৃত্তিকে দমনকারী হবে এবং সৎ কর্মশীলগণের মধ্যে নাবী হবে। ৩৯
332 ৩. আলে-ইমরান সে বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! কিরূপে আমার পুত্র হবে? নিশ্চয়ই আমার বার্ধক্য উপস্থিত হয়েছে এবং আমার স্ত্রী বন্ধ্যা; তিনি বললেনঃ এইরূপে আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা’ই করে থাকেন। ৪০
333 ৩. আলে-ইমরান সে বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! আমার জন্য কোন নিদর্শন নির্দিষ্ট করুন; তিনি বললেনঃ তোমার নিদর্শন এই যে, তুমি তিন দিন ইঙ্গিত ব্যতীত লোকের সাথে কথা বলতে পারবেনা; এবং স্বীয় রাব্বকে বেশী বেশী স্মরণ কর এবং সন্ধ্যায় ও প্রভাতে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। ৪১
334 ৩. আলে-ইমরান এবং যখন মালাক/ফেরেশতা বলেছিলঃ ওহে মারইয়াম! নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে মনোনীত করেছেন ও তোমাকে পবিত্র করেছেন এবং বিশ্ব জগতের নারীগণের উপর তোমাকে মনোনীত করেছেন। ৪২
335 ৩. আলে-ইমরান হে মারইয়াম! তোমার রবের ইবাদাত কর এবং সাজদাহ কর ও রুকুকারীগণের সাথে রুকু কর। ৪৩
336 ৩. আলে-ইমরান এটা সেই অদৃশ্য বিষয়ক সংবাদ যা আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করছি; এবং যখন তারা স্বীয় লেখনীসমূহ নিক্ষেপ করছিল যে, তাদের মধ্যে কে মারইয়ামের প্রতিপালন করবে তখন তুমি তাদের নিকট ছিলেনা; এবং যখন তারা কলহ করছিল তখনও তুমি তাদের নিকট ছিলেনা। ৪৪
337 ৩. আলে-ইমরান যখন মালাইকা/ফেরেশতারা বলেছিলঃ হে মারইয়াম! নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর নিকট হতে একটি বাক্য দ্বারা তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছেন নন্দন ঈসা মসীহ - সে ইহলোক ও পরলোকে সম্মানিত এবং সান্নিধ্য প্রাপ্তগণের অন্তর্ভুক্ত। ৪৫
338 ৩. আলে-ইমরান আর সে দোলনা হতে ও পরিণত বয়সে লোকের সাথে কথা বলবে এবং সে পুণ্যবানগণের অন্তর্ভুক্ত হবে। ৪৬
339 ৩. আলে-ইমরান সে বলেছিলঃ হে আমার রাব্ব! কিরূপে আমার পুত্র হবে? কোন পুরুষ মানুষতো আমাকে স্পর্শ করেনি; তিনি বললেনঃ এরূপে আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন, সৃষ্টি করে থাকেন, যখন তিনি কোন কাজের মনস্থ করেন তখন তিনি ওকে ‘হও’ বলেন, ফলতঃ তাতেই হয়ে যায়। ৪৭
340 ৩. আলে-ইমরান তিনি তাকে গ্রন্থ, বিজ্ঞান এবং তাওরাত ও ইঞ্জীল শিক্ষা দিবেন। ৪৮
341 ৩. আলে-ইমরান আর তাকে ইসরাঈল বংশীয়গণের জন্য রাসূল করবেন। নিশ্চয়ই আমি (ঈসা) তোমাদের রবের নিকট হতে নিদর্শনসহ তোমাদের নিকট আগমন করেছি; নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য মাটি হতে পাখির আকার গঠন করব, অতঃপর ওর মধ্যে ফুৎকার দিব, অনন্তর আল্লাহর আদেশে ওটা পাখি হয়ে যাবে, এবং জন্মান্ধকে ও কুষ্ঠ রোগীকে নিরাময় করি এবং আল্লাহর আদেশে মৃতকে জীবিত করি এবং তোমরা যা আহার কর ও তোমরা যা স্বীয় গৃহের মধ্যে সংগ্রহ করে রাখ তদ্বিষয়ে সংবাদ দিচ্ছি - যদি তোমরা বিশ্বাসী হও তাহলে নিশ্চয়ই এতে তোমাদের জন্য নিদর্শন রয়েছে। ৪৯
342 ৩. আলে-ইমরান এবং আমি এসেছি আমার পূর্বে তাওরাতে যা ছিল তার সত্যতা প্রদান করতে এবং তোমাদের জন্য যা অবৈধ হয়েছে তার কতিপয় তোমাদের জন্য বৈধ করতে, আর তোমাদের রবের নিকট হতে তোমাদের জন্য নিদর্শন নিয়ে; অতএব আল্লাহকে ভয় কর ও আমার অনুগত হও। ৫০
343 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার রাব্ব এবং তোমাদের রাব্ব; অতএব তাঁর ইবাদাত কর - এটাই সরল পথ। ৫১
344 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর যখন ঈসা তাদের মধ্যে প্রত্যাখ্যান প্রত্যক্ষ করল তখন সে বললঃ আল্লাহর উদ্দেশে কে আমার সাহায্যকারী হবে? হাওয়ারিগণ বললঃ আমরাই আল্লাহর সাহায্যকারী, আমরা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি, এবং সাক্ষী থেকো যে, আমরা আত্মসমর্পণকারী। ৫২
345 ৩. আলে-ইমরান হে আমাদের রাব্ব! আপনি যা অবতীর্ণ করেছেন, আমরা তা বিশ্বাস করি এবং আমরা রাসূলের অনুসরণ করছি, অতএব সাক্ষীগণের সাথে আমাদেরকে লিপিবদ্ধ করুন। ৫৩
346 ৩. আলে-ইমরান আর তারা (কাফিরেরা) ষড়যন্ত্র করেছিল ও আল্লাহও কৌশল করলেন এবং আল্লাহ শ্রেষ্ঠতম কৌশলী। ৫৪
347 ৩. আলে-ইমরান যখন আল্লাহ বললেনঃ হে ঈসা! নিশ্চয়ই আমি তোমাকে আমার দিকে প্রতিগ্রহণ করব এবং তোমাকে উত্তোলন করব এবং অবিশ্বাসকারীদের হতে তোমাকে পবিত্র করব, আর যারা অবিশ্বাস করেছে তাদের উপর তোমার অনুসারীগণকে উত্থান দিন পর্যন্ত সমুন্নত করব; অনন্তর আমারই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন; অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে বিষয়ে মতভেদ ছিল তার মীমাংসা করব। ৫৫
348 ৩. আলে-ইমরান অনন্তর যারা কুফরী করেছে (অবিশ্বাসী হয়েছে), বস্তুতঃ তাদেরকে ইহকাল ও আখিরাতে কঠোর শাস্তি প্রদান করব এবং তাদের জন্য কেহ সাহায্যকারী নেই। ৫৬
349 ৩. আলে-ইমরান আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকাজ করেছে ফলতঃ তিনি তাদেরকে পূর্ণ প্রতিদান প্রদান করবেন এবং আল্লাহ অত্যাচারীদেরকে ভালবাসেননা। ৫৭
350 ৩. আলে-ইমরান আমি তোমার প্রতি বিজ্ঞানময় বর্ণনা ও নিদর্শনাবলী হতে এটা আবৃত্তি করছি। ৫৮
351 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের অনুরূপ; তিনি তাকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করলেন, অতঃপর বললেন হও, ফলতঃ তাতেই হয়ে গেল। ৫৯
352 ৩. আলে-ইমরান এই বাস্তব ঘটনা তোমার রবের পক্ষ হতে; সুতরাং তুমি সংশয়ীদের অন্তর্ভুক্ত হয়োনা। ৬০
353 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর তোমার নিকট যে জ্ঞান এসেছে, তারপরে তদ্বিষয়ে যে তোমার সাথে কলহ করে, তুমি বলঃ এসো, আমরা আমাদের সন্তানগণ ও তোমাদের সন্তানগণকে, আমাদের নারীগণ ও তোমাদের নারীগণকে এবং স্বয়ং আমাদের ও তোমাদেরকে আহবান করি। অতঃপর প্রার্থনা করি যে, অসত্যবাদীদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত বর্ষিত হোক। ৬১
354 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই এটাই সত্য বিবরণ এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ (উপাস্য) নেই, নিশ্চয়ই সেই আল্লাহ বিজ্ঞানময়, মহাপরাক্রান্ত। ৬২
355 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ দুস্কার্যকারীদের জ্ঞাত আছেন। ৬৩
356 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ হে আহলে কিতাব! আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে যে বাক্যে সুসাদৃশ্য রয়েছে তার দিকে এসো, যেন আমরা আল্লাহ ব্যতীত কারও ইবাদাত না করি এবং তাঁর সাথে কোন অংশী স্থির না করি এবং আল্লাহকে পরিত্যাগ করে আমরা পরস্পর কেহকে রাব্ব রূপে গ্রহণ না করি। অতঃপর যদি তারা ফিরে যায় তাহলে বলঃ সাক্ষী থেকো যে, আমরা মুসলিম (আল্লাহর নিকট আত্মসমপর্নকারী)। ৬৪
357 ৩. আলে-ইমরান হে আহলে কিতাব! তোমরা ইবরাহীম সম্বন্ধে কেন বির্তক করছ? অথচ তার পরে ব্যতীত তাওরাত ও ইঞ্জীল অবতীর্ণ হয়নি - তবুও কি তোমরা বুঝছনা? ৬৫
358 ৩. আলে-ইমরান হ্যাঁ, তোমরা এমন যে, যে বিষয়ে তোমাদের জ্ঞান ছিল তা নিয়েও তোমরা কলহ করেছিলে, কিন্তু যদ্বিষয়ে তোমাদের কোনই জ্ঞান নেই তা নিয়ে তোমরা কেন কলহ করছ এবং আল্লাহ জ্ঞাত আছেন ও তোমরা অবগত নও। ৬৬
359 ৩. আলে-ইমরান ইবরাহীম ইয়াহুদী ছিলনা এবং খৃষ্টানও ছিলনা, বরং সে সুদৃঢ় মুসলিম ছিল এবং সে মুশরিকদের (অংশীবাদী) অন্তর্ভুক্ত ছিলনা। ৬৭
360 ৩. আলে-ইমরান নিঃসন্দেহে ঐ সব লোক ইবরাহীমের নিকটতম যারা তার অনুসরণ করেছে এবং এই নাবী এবং (তাঁর সাথের) মু’মিনগণ; এবং আল্লাহ বিশ্বাসীগণের অভিভাবক। ৬৮
361 ৩. আলে-ইমরান এবং কিতাবীদের মধ্যে এক দলের বাসনা যে, তোমাদেরকে পথভ্রান্ত করে; কিন্তু তারা নিজেদের ব্যতীত অন্য কেহকে বিপথগামী করেনা এবং তারা তা বুঝছেনা। ৬৯
362 ৩. আলে-ইমরান হে আহলে কিতাব! তোমরা কেন আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি অবিশ্বাস করছো? অথচ তোমরাই ওর সাক্ষী। ৭০
363 ৩. আলে-ইমরান হে কিতাবীরা! তোমরা কেন সত্যের সঙ্গে মিথ্যাকে মিলিয়ে নিচ্ছ এবং সত্যকে গোপন করছ? অথচ তোমরাতো অবগত আছ। ৭১
364 ৩. আলে-ইমরান আর আহলে কিতাবের মধ্যে একদল এটাই বলে যে, বিশ্বাস স্থাপনকারীদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তৎপ্রতি পূর্বাহ্নে বিশ্বাস স্থাপন কর এবং অপরাহ্নে তা অস্বীকার কর, তাহলে তারা ফিরে যাবে। ৭২
365 ৩. আলে-ইমরান আর যারা তোমাদের ধর্মের অনুসরণ করে তারা ব্যতীত অন্যদের বিশ্বাস করনা। তুমি তাদেরকে বলঃ আল্লাহর পথই একমাত্র সুপথ। এই আহলে কিতাবীরা বিশ্বাস করেনা যে, তাদের পরিবর্তে অন্য কারও উপর অহী অবতীর্ণ হতে পারে। অথবা তারা তোমার রবের কাছে পৌঁছা পর্যন্ত তর্ক/বিতর্ক করতেই থাকবে। তুমি বলঃ অনুগ্রহ আল্লাহরই হাতে, তিনি যাকে ইচ্ছা ইহা দান করেন এবং আল্লাহই রক্ষাকারী, মহাজ্ঞানী। ৭৩
366 ৩. আলে-ইমরান তিনি যার প্রতি ইচ্ছা করেন স্বীয় করুনা নির্দিষ্ট করেন এবং আল্লাহ মহান, অনুগ্রহশীল। ৭৪
367 ৩. আলে-ইমরান কিতাবীদের মধ্যে এরূপ আছে যে, যদি তুমি তার নিকট পুঞ্জীভূত ধনরাশিও গচ্ছিত রেখে দাও তবুও সে তা তোমার নিকট প্রত্যর্পণ করবে এবং তাদের মধ্যে এরূপও আছে যে, যদি তুমি তার নিকট একটি দীনারও গচ্ছিত রাখ তাহলে সে তাও তোমাকে প্রত্যর্পণ করবেনা যে পর্যন্ত তুমি তার শিরোপরি দন্ডায়মান থাক। কারণ তারা বলে যে, আমাদের উপর ঐ অশিক্ষিতদের কোন দায় দায়িত্ব নেই এবং তারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, যা তারাও জানে। ৭৫
368 ৩. আলে-ইমরান হ্যাঁ, যারা স্বীয় অঙ্গীকার পূর্ণ করে ও সংযত হয়, তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ ধর্মভীরুগণকে ভালবাসেন। ৭৬
369 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর প্রতি অঙ্গীকার ও স্বীয় শপথ সামান্য মূল্যে বিক্রি করে, পরলোকে তাদের কোনই অংশ নেই এবং উত্থান দিনে আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেননা এবং তাদের প্রতি দৃষ্টিপাতও করবেননা এবং পরিশুদ্ধও করবেননা। তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। ৭৭
370 ৩. আলে-ইমরান আর তাদের মধ্যে নিশ্চয়ই এরূপ একদল আছে যারা কুঞ্চিত ভাষায় গ্রন্থ আবৃত্তি করে, যেন তোমরা ওটাকে গ্রন্থের অংশ মনে কর, অথচ ওটা গ্রন্থের অংশ নয়; এবং তারা বলে যে, এটা আল্লাহর নিকট হতে সমাগত, অথচ ওটা আল্লাহর নিকট হতে নয়, এবং তারা আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা বলে এবং তারাও তা অবগত আছে। ৭৮
371 ৩. আলে-ইমরান এটা কোন মানুষের পক্ষে উপযোগী নয় যে, আল্লাহ যাকে গ্রন্থ, বিজ্ঞান ও নবুওয়াত দান করেন, অতঃপর সে মানবমন্ডলীর মধ্যে বলে - তোমরা আল্লাহকে পরিত্যাগ করে আমার উপাসক হও; বরং বলবেঃ রবের ইবাদাতকারী হও - কারণ তোমরাই কুরআন শিক্ষা দান কর এবং ওটা পাঠ করে থাক। ৭৯
372 ৩. আলে-ইমরান আর তিনি আদেশ করেননা যে, তোমরা মালাক/ফেরেশতা ও নাবীগণকে রাব্ব রূপে গ্রহণ কর; তোমরা আত্মসমর্পণকারী হবার পর তিনি কি তোমাদেরকে পুনরায় কুফরীতে ফিরে যাবার আদেশ করবেন? ৮০
373 ৩. আলে-ইমরান এবং আল্লাহ যখন নাবীগণের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন, আমি তোমাদেরকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান হতে দান করার পর তোমাদের সঙ্গে যা আছে তার সত্যতা প্রত্যায়নকারী একজন রাসূল আগমন করবে, তখন তোমরা অবশ্যই তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং তার সাহায্যকারী হবে; তিনি আরও বলেছিলেনঃ তোমরা কি এতে স্বীকৃত হলে এবং প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করলে? তারা বলেছিল - আমরা স্বীকার করলাম। তিনি বললেনঃ তাহলে তোমরা সাক্ষী থেক এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষীগণের অন্তর্ভুক্ত রইলাম। ৮১
374 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর এর পরে যারা ফিরে যাবে তারাই দুস্কার্যকারী। ৮২
375 ৩. আলে-ইমরান তাহলে কি তারা আল্লাহর ধর্ম ব্যতীত অন্য কিছু কামনা করে? অথচ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, ইচ্ছা ও অনিচ্ছাক্রমে সবাই তাঁর উদ্দেশে আত্মসমর্পণ করেছে এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। ৮৩
376 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ আমরা আল্লাহর প্রতি এবং যা আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাদের বংশধরগণের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নাবীগণকে তাদের রাব্ব কর্তৃক প্রদত্ত হয়েছে তৎপ্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম, আমরা তাদের মধ্যে কেহকেও পার্থক্য জ্ঞান করিনা এবং আমরা তাঁরই প্রতি আত্মসমর্পণকারী। ৮৪
377 ৩. আলে-ইমরান আর যে কেহ ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্ম অন্বেষণ করে তা কখনই তার নিকট হতে গৃহীত হবেনা এবং পরলোকে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। ৮৫
378 ৩. আলে-ইমরান কিরূপে আল্লাহ সেই সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করবেন যারা বিশ্বাস স্থাপনের পর, রাসূলের সত্যতা বিষয়ে সাক্ষ্যদানের পর এবং তাদের নিকট প্রকাশ্য নিদর্শনসমূহ আসার পরও অবিশ্বাসী হয়েছে? আর আল্লাহ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেননা। ৮৬
379 ৩. আলে-ইমরান ওরাই - যাদের প্রতিফল এই যে, নিশ্চয়ই তাদের উপর আল্লাহর, তাঁর মালাইকা/ফেরেশতার এবং সমস্ত মানবের অভিসম্পাত। ৮৭
380 ৩. আলে-ইমরান তারা তন্মধ্যে সদা অবস্থান করবে - তাদের উপর হতে শাস্তি প্রশমিত হবেনা এবং তাদেরকে বিরাম দেয়া হবেনা। ৮৮
381 ৩. আলে-ইমরান কিন্তু যারা এরপর ক্ষমা প্রার্থনা করে ও সংশোধিত হয়, তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ৮৯
382 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস স্থাপনের পর অবিশ্বাসী হয়েছে, অতঃপর অবিশ্বাস পরিবর্ধিত করেছে - তাদের ক্ষমা প্রার্থনা কখনই গৃহীত হবেনা এবং তারাই পথভ্রান্ত। ৯০
383 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাস করেছে ও অবিশ্বাসী অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে তাদের মুক্তির বিনিময়ে যদি পৃথিবীপূর্ণ স্বর্ণ দেয়া হয় তবুও কক্ষনো তা গ্রহণ করা হবেনা। ওদেরই জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে এবং ওদের জন্য কোনই সাহায্যকারী নেই। ৯১
384 ৩. আলে-ইমরান তোমরা যা ভালবাস তা হতে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনই কল্যাণ লাভ করতে পারবেনা; এবং তোমরা যা কিছুই ব্যয় কর, আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেন। ৯২
385 ৩. আলে-ইমরান প্রত্যেক খাদ্যই বানী ইসরাঈলের জন্য হালাল ছিল। একমাত্র তাওরাত অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে বানী ইসরাঈল নিজের উপর যা হারাম করে নিয়েছিল তাই তাদের উপর হারাম করা হয়েছিল। তুমি বলঃ যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে তাওরাত আনয়ন কর, অতঃপর ওটা পাঠ কর। ৯৩
386 ৩. আলে-ইমরান সুতরাং যদি কেহ এরপর আল্লাহর প্রতি অসত্যারোপ করে তাহলে তারাই অত্যাচারী। ৯৪
387 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ আল্লাহ সত্য বলেছেন; অতএব তোমরা ইবরাহীমের সুদৃঢ় ধর্মের অনুসরণ কর এবং সে অংশীবাদীদের অন্তর্গত ছিলনা। ৯৫
388 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই সর্ব প্রথম গৃহ, যা মানবমন্ডলীর জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে তা ঐ ঘর যা বাক্কায় (মাক্কায়) অবিস্থত; ওটি সৌভাগ্যযুক্ত এবং সমস্ত বিশ্ববাসীর জন্য পথ প্রদর্শক। ৯৬
389 ৩. আলে-ইমরান ওর মধ্যে প্রকাশ্য নিদর্শনসমূহ বিদ্যমান রয়েছে, মাকামে ইবরাহীম উক্ত নিদর্শনসমূহের অন্যতম। আর যে ওর মধ্যে প্রবেশ করে সে নিরাপত্তা প্রাপ্ত হয় এবং আল্লাহর উদ্দেশে এই গৃহের হাজ্জ করা সেই সব মানুষের কর্তব্য যারা সফর করার আর্থিক সামর্থ্য রাখে এবং যদি কেহ অস্বীকার করে তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ সমগ্র বিশ্ববাসী হতে প্রত্যাশামুক্ত। ৯৭
390 ৩. আলে-ইমরান তুমি বলঃ হে কিতাবধারীরা! তোমরা কেন আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি অবিশ্বাস করছো? তোমরা যা করছো আল্লাহ তদ্বিষয়ে সাক্ষী। ৯৮
391 ৩. আলে-ইমরান হে গ্রন্থপ্রাপ্তরা! যে ব্যক্তি বিশ্বাস স্থাপন করেছে তার মধ্যে কুটিলতার কামনায় কেন তোমরা তাকে আল্লাহর পথে রোধ করছো, অথচ তোমরা এ পথের সত্যতা প্রত্যক্ষ করছ এবং তোমরাই সাক্ষী রয়েছ? আর তোমরা যা করছো তদ্বিষয়ে আল্লাহ অমনোযোগী নন। ৯৯
392 ৩. আলে-ইমরান হে মু’মিনগণ! যাদেরকে গ্রন্থ প্রদত্ত হয়েছে, যদি তোমরা তাদের এক দলের অনুসরণ কর তাহলে তারা তোমাদেরকে তোমাদের ঈমান আনয়নের পর কাফির বানিয়ে দিবে। ১০০
393 ৩. আলে-ইমরান আর কিরূপে তোমরা অবিশ্বাস করতে পার - যখন আল্লাহর নিদর্শনাবলী তোমাদের সামনে পঠিত হয় এবং তোমাদের মধ্যে তাঁর রাসূল বিদ্যমান রয়েছে? আর যে আল্লাহর পথ দৃঢ় রূপে ধারণ করে, অবশ্যই সে সরল পথ প্রদর্শিত হবে। ১০১
394 ৩. আলে-ইমরান হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর যেমনভাবে করা উচিৎ এবং তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যু বরণ করনা। ১০২
395 ৩. আলে-ইমরান আর তোমরা একযোগে আল্লাহর রজ্জু সুদৃঢ় রূপে ধারণ কর ও বিভক্ত হয়ে যেওনা, এবং তোমাদের প্রতি আল্লাহর যে দান রয়েছে তা স্মরণ কর। যখন তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে তখন তিনিই তোমাদের অন্তঃকরণে প্রীতি স্থাপন করেছিলেন, অতঃপর তোমরা তাঁর অনুগ্রহে ভ্রাতৃত্বে আবদ্ধ হলে এবং তোমরা অনল-কুন্ডের ধারে ছিলে, অনন্তর তিনিই তোমাদেরকে ওটা হতে উদ্ধার করেছেন; এরূপে আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় নিদর্শনাবলী ব্যক্ত করেন, যেন তোমরা সুপথ প্রাপ্ত হও। ১০৩
396 ৩. আলে-ইমরান এবং তোমাদের মধ্যে এরূপ এক সম্প্রদায় হওয়া উচিত যারা কল্যাণের দিকে আহবান করে এবং সৎ কাজে আদেশ করে ও অসৎ কাজে নিষেধ করে, আর তারাই সুফল প্রাপ্ত হবে। ১০৪
397 ৩. আলে-ইমরান এবং তাদের মতো হয়োনা যাদের নিকট স্পষ্ট প্রমাণ আসার পরও বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে ও পরস্পর মতভেদে লিপ্ত রয়েছে; তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। ১০৫
398 ৩. আলে-ইমরান সেদিন কতগুলি মুখমন্ডল হবে শ্বেতবর্ণ এবং কতক মুখমন্ডল হবে কৃষ্ণবর্ণ; অতঃপর যাদের মুখমন্ডল কৃষ্ণবর্ণ হবে, (তাদেরকে বলা হবে) তাহলে কি তোমরা বিশ্বাস স্থাপনের পর অবিশ্বাসী হয়েছ? অতএব তোমরা শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ কর, যেহেতু তোমরা অবিশ্বাস করেছিলে। ১০৬
399 ৩. আলে-ইমরান আর যাদের মুখমন্ডল শুভ্র হবে, তারা আল্লাহর করুণার অন্তর্ভুক্ত, তারা তন্মধ্যে সদা অবস্থান করবে। ১০৭
400 ৩. আলে-ইমরান এগুলি হচ্ছে আল্লাহর নিদর্শন - যা আমি তোমার প্রতি সত্যসহ আবৃত্তি করছি এবং আল্লাহ বিশ্ব জগতের প্রতি অত্যাচারের ইচ্ছা করেননা। ১০৮
401 ৩. আলে-ইমরান আর যা নভোমন্ডলের মধ্যে আছে ও যা ভূমন্ডলের মধ্যে রয়েছে তা আল্লাহর এবং আল্লাহর কাছেই সব কিছু প্রত্যাবর্তনশীল। ১০৯
402 ৩. আলে-ইমরান তোমরাই সর্বোত্তম উম্মাত, মানব জাতির কল্যাণের জন্য তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে, তোমরা সৎ কাজে আদেশ করবে ও অসৎ কাজে নিষেধ করবে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে; আর যদি গ্রন্থ প্রাপ্তরা বিশ্বাস স্থাপন করত তাহলে অবশ্যই তাদের জন্য মঙ্গল হত; তাদের মধ্যে কেহ কেহ মু’মিন এবং তাদের অধিকাংশই দুস্কার্যকারী। ১১০
403 ৩. আলে-ইমরান সামান্য দুঃখ প্রদান ব্যতীত তারা তোমাদের কোন অনিষ্ট করতে পারবেনা; আর যদি তারা তোমাদের সাথে লড়াই করে তাহলে তারা তোমাদেরকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে; অতঃপর তাদেরকে সাহায্য করা হবেনা। ১১১
404 ৩. আলে-ইমরান আল্লাহর নিকট আশ্রয় গ্রহণ এবং মনুষ্যগণের নিকট অত্মসমর্পণ ব্যতীত তারা যেখানেই অবস্থান করুক না কেন, লাঞ্ছনায় আক্রান্ত হয়েছে, আল্লাহর কোপে নিপতিত হয়েছে এবং গলগ্রহতা ওদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এটা এ কারণে যে, তারা আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি অবিশ্বাস করেছিল এবং নাবীগণকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছিল; যেহেতু তারা বিরুদ্ধাচরণ করেছিল ও সীমা অতিক্রম করেছিল। ১১২
405 ৩. আলে-ইমরান তারা সকলে সমান নয়; আহলে কিতাবের মধ্যে কিছু লোক রয়েছে যারা গভীর রাত পর্যন্ত আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করে এবং সাজদাহ করে। ১১৩
406 ৩. আলে-ইমরান তারা আল্লাহ ও আখিরাত বিশ্বাস করে এবং সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করে এবং সৎ কাজসমূহে তৎপর থাকে, আর তারাই সৎ কর্মশীলগণের অন্তর্ভুক্ত। ১১৪
407 ৩. আলে-ইমরান আর তারা যে সৎ কাজ করবে তা কখনও অবজ্ঞা করা হবেনা; এবং আল্লাহ ধর্মভীরুগণকে অবগত আছেন। ১১৫
408 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাস করেছে তাদের ধনরাশি ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহর নিকট কিছুমাত্র কাজে আসবেনা; এবং তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, তন্মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে। ১১৬ জাহান্নাম
409 ৩. আলে-ইমরান তারা পার্থিব জীবনে যা ব্যয় করে তার দৃষ্টান্ত শৈত্যপূর্ণ ঝঞ্ঝা-বায়ুর অনুরূপ - যারা স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করেছে - ওটা সেই সকল সম্প্রদায়ের শস্যক্ষেতে নিপতিত হয় এবং তা বিধ্বস্ত করে। এবং আল্লাহ তাদের প্রতি অত্যাচার করেননি, বরং তারাই স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করেছে। ১১৭
410 ৩. আলে-ইমরান হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমরা নিজেদের সম্প্রদায় ব্যতিরেকে অন্য কেহকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করনা, তারা তোমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে সংকুচিত হবেনা; এবং তোমরা যাতে বিপন্ন হও তারা তা’ই কামনা করে; বস্তুতঃ তাদের মুখ হতেই শত্রুতা প্রকাশিত হয়, এবং তাদের অন্তর যা গোপন করে তা আরও গুরুতর; নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য নিদর্শনাবলী ব্যক্ত করছি, যেন তোমরা বুঝতে পার। ১১৮
411 ৩. আলে-ইমরান সাবধান হও - তোমরাই তাদেরকে ভালবাস, অথচ তারা তোমাদেরকে ভালবাসেনা; এবং তোমরা সমস্ত গ্রন্থই বিশ্বাস কর; আর তারা যখন তোমাদের সাথে মিলিত হয় তখন বলেঃ আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি এবং যখন তোমাদের হতে পৃথক হয়ে যায় তখন তোমাদের প্রতি আক্রোশে আঙ্গুলের অগ্রভাগসমূহ দংশন করে। তুমি বলঃ তোমরা নিজেদের আক্রোশে মরে যাও! নিশ্চয়ই আল্লাহ অন্তরের কথা জ্ঞাত আছেন। ১১৯
412 ৩. আলে-ইমরান যদি তোমাদেরকে কল্যাণ স্পর্শ করে তাহলে তারা অসন্তষ্ট হয়; আর যদি অমঙ্গল উপস্থিত হয় তখন তারা আনন্দিত হয়ে থাকে, এবং যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর ও সংযমী হও তাহলে তাদের চক্রান্ত তোমাদের কোনই ক্ষতি করতে পারবেনা। তারা যা করে - নিশ্চয়ই আল্লাহ তার পরিবেষ্টনকারী। ১২০
413 ৩. আলে-ইমরান (স্মরণ কর) যখন তুমি বিশ্বাসীদেরকে যুদ্ধার্থে যথাস্থানে সংস্থাপিত করার জন্য প্রভাতে স্বীয় পরিজন হতে বের হয়েছিলে এবং আল্লাহ সব কিছু শ্রবণ করেন ও জানেন। ১২১
414 ৩. আলে-ইমরান যখন তোমাদের দুই দল ভীরুতা প্রকাশের সংকল্প করেছিল এবং আল্লাহ সেই দলদ্বয়ের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন; এবং মু’মিনগণই আল্লাহর উপর নির্ভর করে থাকে। ১২২
415 ৩. আলে-ইমরান আর নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে বদরে সাহায্য করেছিলেন এবং তোমরা দুর্বল ছিলে; অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যেন তোমরা কৃতজ্ঞ হও। ১২৩
416 ৩. আলে-ইমরান যখন মু’মিনদেরকে বলেছিলেনঃ এটা কি তোমাদের পক্ষে যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের রাব্ব তিন সহস্র মালাইকা/ফেরেশতা প্রেরণ করে তোমাদের সাহায্য করবেন? ১২৪
417 ৩. আলে-ইমরান বরং যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর ও সংযমী হও এবং তারা যদি স্বেচ্ছায় তোমাদের উপর নিপতিত হয় তাহলে তোমাদের রাব্ব পাঁচ সহস্র বিশিষ্ট মালাইকা দ্বারা তোমাদেরকে সাহায্য করবেন। ১২৫
418 ৩. আলে-ইমরান আর আল্লাহ এই সাহায্য শুধু এ জন্যই করেছেন যেন তোমাদের জন্য সুসংবাদ হয় এবং তোমাদের অন্তরে শান্তি আসে। আর সাহায্য শুধু আল্লাহর পক্ষ হতেই হয়ে থাকে, যিনি পরাক্রান্ত, বিজ্ঞানময়। ১২৬
419 ৩. আলে-ইমরান যারা অবিশ্বাসী হয়েছে - তিনি এরূপে তাদের একাংশকে কর্তিত করেন অথবা তাদেরকে দুর্বল করেন, যাতে তারা অকৃতকার্য সহকারে ফিরে যায়। ১২৭
420 ৩. আলে-ইমরান এ ব্যাপারে তোমার কোনই করণীয় নেই, তিনি তাদেরকে ক্ষমা করেন অথবা শাস্তি প্রদান করেন; নিশ্চয়ই তারা অত্যাচারী। ১২৮
421 ৩. আলে-ইমরান আর নভোমন্ডলে যা রয়েছে ও ভূমন্ডলে যা আছে তা আল্লাহরই; তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি প্রদান করেন এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়। ১২৯
422 ৩. আলে-ইমরান হে ঈমানদারগণ! তোমরা দ্বিগুণের উপর দ্বিগুণ সুদ ভক্ষণ করনা এবং আল্লাহকে ভয় কর যেন তোমরা সুফল প্রাপ্ত হও। ১৩০
423 ৩. আলে-ইমরান আর তোমরা সেই জাহান্নামের ভয় কর, যা অবিশ্বাসীদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১৩১ জাহান্নাম
424 ৩. আলে-ইমরান আর আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য স্বীকার কর যেন তোমরা করুণা প্রাপ্ত হও। ১৩২
425 ৩. আলে-ইমরান তোমরা স্বীয় রবের ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে ধাবিত হও, যার প্রসারতা নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সদৃশ, ওটা ধর্মভীরুদের জন্য নির্মিত হয়েছে। ১৩৩
426 ৩. আলে-ইমরান যারা স্বচ্ছলতা ও অভাবের মধ্যে ব্যয় করে এবং ক্রোধ সংবরণ করে ও মানবদেরকে ক্ষমা করে; এবং আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালবাসেন। ১৩৪
427 ৩. আলে-ইমরান এবং যখন কেহ অশ্লীল কাজ করে কিংবা স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করে অতঃপর আল্লাহকে স্মরণ করে এবং অপরাধসমূহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, এবং আল্লাহ ব্যতীত কে অপরাধসমূহ ক্ষমা করতে পারে? এবং তারা যা করছে সেই ব্যাপারে জেনে শুনে হঠকারিতা করেনা। ১৩৫
428 ৩. আলে-ইমরান তাদের পুরস্কার হবে তাদের রবের নিকট হতে মার্জনা এবং এমন উদ্যানসমূহ যেগুলির তলদেশ দিয়ে স্রোতস্বিনীসমূহ প্রবাহিত থাকবে, তন্মধ্যে তারা সদা অবস্থান করবে, এবং কর্মীদের জন্য কি সুন্দর প্রতিদান! ১৩৬ বেহেস্ত
429 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই তোমাদের পূর্বে বহু জীবনাচরণ অতিক্রান্ত হয়েছে, পৃথিবীতে বিচরণ কর, এবং লক্ষ্য কর যে, অবিশ্বাসীদের পরিণাম কিরূপ হয়েছে। ১৩৭
430 ৩. আলে-ইমরান এটা মানবমন্ডলীর জন্য বিবরণ এবং আল্লাহভীরুগণের জন্য পথ প্রদর্শন ও উপদেশ। ১৩৮
431 ৩. আলে-ইমরান আর তোমরা নিরাশ হয়োনা ও বিষন্ন হয়োনা এবং যদি তোমরা বিশ্বাসী হও তাহলে তোমরাই বিজয়ী হবে। ১৩৯
432 ৩. আলে-ইমরান যদি তোমাদের আঘাত লেগে থাকে তাহলে নিশ্চয়ই সেই সম্প্রদায়েরও তদ্রুপ আঘাত লেগেছে, এবং এই দিনসমূহকে আমি মানবগণের মধ্যে পরিক্রমণ করাই; এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে তাদেরকে আল্লাহ এই রূপে প্রকাশ করেন; এবং তোমাদের মধ্য হতে কতককে শহীদ রূপে গ্রহণ করবেন, আর আল্লাহ অত্যাচারীদেরকে ভালবাসেননা। ১৪০
433 ৩. আলে-ইমরান আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে তাদেরকে আল্লাহ এইরূপে পবিত্র করেন এবং অবিশ্বাসীদেরকে ধ্বংস করেন। ১৪১
434 ৩. আলে-ইমরান তোমরা কি ধারণা করছ যে, তোমরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ কারা জিহাদ করে ও কারা ধৈর্যশীল আল্লাহ তোমাদের মধ্য হতে তাদেরকে এখনও পরীক্ষা করেননি? ১৪২
435 ৩. আলে-ইমরান এবং নিশ্চয়ই তোমরা মৃত্যুর পূর্বেই ওর সাক্ষাৎ কামনা করছিলে, অনন্তর নিশ্চয়ই তোমরা এখন তা প্রত্যক্ষ করছ তোমাদের নিজেদের চোখে। ১৪৩
436 ৩. আলে-ইমরান এবং মুহাম্মাদ রাসূল ব্যতীত কিছুই নয়, নিশ্চয়ই তার পূর্বে রাসূলগণ বিগত হয়েছে, অনন্তর যদি তার মৃত্যু হয় অথবা সে নিহত হয় তাহলে কি তোমরা পশ্চাদপদে ফিরে যাবে? এবং যে কেহ পশ্চাদপদে ফিরে যায় তাতে সে আল্লাহর কোনই অনিষ্ট করবেনা এবং আল্লাহ কৃতজ্ঞগণকে পুরস্কার প্রদান করেন। ১৪৪
437 ৩. আলে-ইমরান আর আল্লাহর আদেশে লিপিবদ্ধ নির্দিষ্ট সময় ব্যতীত কেহই মৃত্যুমুখে পতিত হয়না; এবং যে কেহ ইহলোকের প্রতিদান কামনা করে, আমি তাকে তা দুনিয়ায় প্রদান করে থাকি; পক্ষান্তরে যে লোক আখিরাতে বিনিময় কামনা করে আমি তাকে তা প্রদান করব এবং আমি কৃতজ্ঞগণকে অচিরেই পুরস্কার প্রদান করব। ১৪৫
438 ৩. আলে-ইমরান আর এমন অনেক নাবী ছিল যারা সঙ্গীসহযোগে অনুবর্তী হয়ে যুদ্ধ করেছিল; পরন্ত আল্লাহর পথে যা সংঘটিত হয়েছিল তাতে তারা নিরুৎসাহ হয়নি ও শক্তিহীন হয়নি এবং বিচলিত হয়নি। এবং আল্লাহ ধৈর্যশীলগণকে ভালবাসেন। ১৪৬
439 ৩. আলে-ইমরান আর এতদ্ব্যতীত তাদের কথা ছিলনা যে, তারা বলতঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদের অপরাধ ও আমাদের কাজের বাড়াবাড়ি হেতু কৃত অন্যায়সমূহ ক্ষমা করুন, আমাদেরকে দৃঢ় রাখুন এবং অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন। ১৪৭
440 ৩. আলে-ইমরান অনন্তর আল্লাহ তাদেরকে পার্থিব পুরস্কার প্রদান করলেন এবং পরলোকের পুরস্কার শ্রেষ্ঠতর; এবং আল্লাহ সৎকর্মশীলগণকে ভালবাসেন। ১৪৮
441 ৩. আলে-ইমরান হে মু’মিনগণ! যারা অবিশ্বাস করেছে, যদি তোমরা তাদের আজ্ঞাবহ হও তাহলে তারা তোমাদেরকে পশ্চাদপদে ফিরিয়ে নিবে, তাতে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ১৪৯
442 ৩. আলে-ইমরান বরং আল্লাহ তোমাদের অভিভাবক এবং তিনিই শ্রেষ্ঠতর সাহায্যকারী। ১৫০
443 ৩. আলে-ইমরান যারা অবিশ্বাস করেছে, আমি সত্ত্বর তাদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করব, যেহেতু তারা আল্লাহর সাথে সেই বিষয়ে অংশী স্থাপন করেছে যদ্বিষয়ে তিনি কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি এবং জাহান্নাম তাদের অবস্থান স্থল এবং ওটা অত্যাচারীদের জন্য নিকৃষ্ট বাসস্থান! ১৫১ জাহান্নাম
444 ৩. আলে-ইমরান আর নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি দেয়া তাঁর অঙ্গীকার পূর্ণ করেছেন যখন তোমরা তাঁর অনুমতিক্রমে তোমাদের শত্রুদের বিনাশ করছিলে তোমরা সাহসহারা হয়ে যাওয়া পর্যন্ত এবং নির্দেশ সম্পর্কে বিবাদ করছিলে ও অবাধ্য হয়েছিলে। অতঃপর তোমরা যা পছন্দ কর (বিজয়) তা তোমাদের প্রত্যক্ষ করালেন। তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা পার্থিব বস্ত্ত কামনা করে এবং কিছু লোক পরকাল পছন্দ করে। অতঃপর তিনি তোমাদের পরীক্ষা করার জন্য শত্রুদের থেকে ফিরিয়ে দিলেন এবং নিশ্চয়ই তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করলেন। আল্লাহ বিশ্বাসীদের প্রতি অনুগ্রহশীল। ১৫২
445 ৩. আলে-ইমরান আর যখন তোমরা আরোহণ করে যাচ্ছিলে এবং কারও দিকে ফিরেও দেখছিলেনা এবং রাসূল তোমাদেরকে পশ্চাদ হতে আহবান করছিল; অনন্তর তিনি তোমাদেরকে দুঃখের উপর দুঃখ প্রদান করলেন। কিন্তু যা অতিক্রান্ত হয়েছে এবং তোমাদের উপর যা উপনীত হয়নি, তোমরা তজ্জন্য দুঃখ করনা; এবং তোমরা যা করছ আল্লাহ তদ্বিষয়ে অভিজ্ঞ। ১৫৩
446 ৩. আলে-ইমরান অনন্তর তিনি দুঃখের পরে তোমাদের উপর শান্তি অবতরণ করলেন, তা ছিল তন্দ্রা, যা তোমাদের এক দলকে তন্দ্রাচ্ছন্ন করেছিল, আর একদল নিজেদের জীবনের জন্য চিন্তা করছিল; তারা আল্লাহ সম্বন্ধে অজ্ঞতার অনুরূপ ধারণা পোষণ করছিল। তারা বলেছিলঃ এ বিষয়ে কি আমাদের কোন অধিকার নেই? তুমি বলঃ সকল বিষয়ে আল্লাহর অধিকার। তারা নিজেদের অন্তরে যা গোপন রাখে তা তোমার নিকট প্রকাশ করেনা; তারা বলেঃ যদি এ বিষয়ে আমাদের কোন অধিকার থাকতো তাহলে এখানে আমরা নিহত হতামনা। তুমি বলঃ যদি তোমরা তোমাদের গৃহের মধ্যেও থাকতে তবুও যাদের প্রতি মৃত্যু বিধিবদ্ধ হয়েছে তারা নিশ্চয়ই স্বীয় মৃত্যু স্থানে এসে উপস্থিত হত; তোমাদের অন্তরের মধ্যে যা আছে, আল্লাহ তা পরীক্ষা করে থাকেন; এবং আল্লাহ মনের অন্তর্নিহিত ভাব জ্ঞাত আছেন। ১৫৪
447 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে যারা দু’দলের সম্মুখীন হওয়ার দিন পশ্চাদবর্তীত হয়েছিল তার কারণ শাইতান তাদেরকে প্রতারিত করেছিল তাদেরই কোনো পাপের কারণে। কিন্তু আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করেছেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, সহিষ্ণু। ১৫৫
448 ৩. আলে-ইমরান হে মু’মিনগণ! যারা অবিশ্বাস করেছে তোমরা তাদের মত হয়োনা; এবং যখন তাদের ভ্রাতৃগণ পৃথিবীতে কোন অভিযানে বের হয় অথবা যুদ্ধে নিহত হয় তখন তারা বলেঃ যদি ওরা আমাদের নিকট থাকতো তাহলে মৃত্যুমুখে পতিত হতনা অথবা নিহত হতনা; আল্লাহ এরূপে তাদের অন্তরে দুঃখ ও অনুতাপ সঞ্চার করেন, আল্লাহই জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন এবং তোমরা যা করছ তৎপ্রতি আল্লাহ লক্ষ্যকারী। ১৫৬
449 ৩. আলে-ইমরান আর যদি তোমরা আল্লাহর পথে নিহত অথবা মৃত্যুমুখে পতিত হও তাহলে আল্লাহর নিকট হতেই ক্ষমা রয়েছে এবং তারা যা সঞ্চয় করেছে তদপেক্ষা তাঁর করুণা শ্রেষ্ঠতর। ১৫৭
450 ৩. আলে-ইমরান আর যদি তোমরা মৃত্যুবরণ কর কিংবা নিহত হও তাহলে তোমাদেরকে অবশ্যই আল্লাহর দিকে একত্রিত করা হবে। ১৫৮
451 ৩. আলে-ইমরান অতএব আল্লাহর অনুগ্রহ এই যে, তুমি তাদের প্রতি কোমল চিত্ত; এবং তুমি যদি কর্কশভাষী, কঠোর হৃদয় হতে তাহলে নিশ্চয়ই তারা তোমার সংসর্গ হতে অন্তর্হিত হত। অতএব তুমি তাদেরকে ক্ষমা কর ও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং কার্য সম্বন্ধে তাদের সাথে পরামর্শ কর; অতঃপর তুমি যখন সংকল্প কর তখন আল্লাহর প্রতি নির্ভর কর; এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর উপর ভরসাকারীগণকে ভালবাসেন। ১৫৯
452 ৩. আলে-ইমরান যদি আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করেন তাহলে কেহই তোমাদের উপর জয়যুক্ত হবেনা; এবং যদি তিনি তোমাদেরকে পরিত্যাগ করেন তাহলে তাঁর পরে আর কে আছে যে তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারে? এবং বিশ্বাসীগণ আল্লাহর উপরেই নির্ভর করে থাকে। ১৬০
453 ৩. আলে-ইমরান আর কোন নাবীর পক্ষে কোন বিষয় গোপন করা শোভনীয় নয়; এবং যে কেহ গোপন করবে তাহলে সে যা গোপন করেছে তা উত্থান দিনে আনয়ন করা হবে; অনন্তর প্রত্যেক ব্যক্তি যা অর্জন করেছে তা পূর্ণরূপে প্রদত্ত হবে এবং তারা নির্যাতিত হবেনা। ১৬১
454 ৩. আলে-ইমরান যে আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসরণ করেছে সে কি তার মত হতে পারে, যে আল্লাহর আক্রোশে পতিত হয়েছে? এবং তার বাসস্থান জাহান্নাম এবং ওটা নিকৃষ্ট গন্তব্য স্থান। ১৬২ জাহান্নাম
455 ৩. আলে-ইমরান আল্লাহর নিকট মানুষের বিভিন্ন পদমর্যাদা রয়েছে এবং তোমরা যা করছ তদ্বিষয়ে আল্লাহ লক্ষ্যকারী। ১৬৩
456 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন, তিনি তাদের নিজেদেরই মধ্য হতে রাসূল প্রেরণ করেছেন, যে তাদের নিকট তাঁর নিদর্শনাবলী পাঠ করে ও তাদেরকে পবিত্র করে এবং তাদেরকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান শিক্ষা দান করে এবং নিশ্চয়ই তারা এর পূর্বে প্রকাশ্য ভ্রান্তির মধ্যে ছিল। ১৬৪
457 ৩. আলে-ইমরান হ্যাঁ, যখন তোমাদের উপর বিপদ উপস্থিত হল, বস্তুতঃ তোমরাও তাদের প্রতি তদনুরূপ দু’বার বিপদ উপস্থিত করেছিলে, তোমরা বলেছিলেঃ এটা কোথা হতে হল? তুমি বলঃ ওটা তোমাদের নিজেদেরই নিকট হতে; নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়োপরি শক্তিমান। ১৬৫
458 ৩. আলে-ইমরান এই দুই দলের সম্মুখীন হওয়ার দিনে তোমাদের উপর যা আপতিত হয়েছিল তা আল্লাহরই ইচ্ছাক্রমে; এবং তদ্দারা আল্লাহ বিশ্বাসীদেরকে পরীক্ষা করেন। ১৬৬
459 ৩. আলে-ইমরান আর তদ্দারা তিনি মুনাফিকদেরকে পরিচিত করেন; এবং তাদেরকে বলা হয়েছিলঃ এসো, আল্লাহর পথে সংগ্রাম কর অথবা শত্রুদেরকে প্রতিহত কর; তারা বলেছিলঃ যদি আমরা জানতাম যে, লড়াই হবে তাহলে অবশ্যই আমরা তোমাদের অনুগমন করতাম। তারা সেদিন বিশ্বাস অপেক্ষা অবিশ্বাসের নিকটবর্তী ছিল; তাদের অন্তরে যা নেই তা’ই তারা মুখে বলে থাকে; তারা যে বিষয় গোপন করে আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেন। ১৬৭
460 ৩. আলে-ইমরান ওরা তারা, যারা গৃহে বসে স্বীয় নিহত ভাইদের সম্বন্ধে বলেঃ যদি তারা আমাদের কথা মান্য করত তাহলে নিহত হতনা; তুমি বলঃ যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে নিজেদেরকে মৃত্যু হতে রক্ষা কর। ১৬৮
461 ৩. আলে-ইমরান যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে কখনও মৃত মনে করনা; বরং তারা জীবিত, তারা তাদের রাব্ব হতে জীবিকা প্রাপ্ত। ১৬৯
462 ৩. আলে-ইমরান আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহ হতে যা দান করেছেন তাতেই তারা পরিতুষ্ট; এবং তাদের ভাইয়েরা যারা এখনো তাদের সাথে সম্মিলিত হয়নি তাদের এই অবস্থার প্রতিও তারা সন্তুষ্ট হয় যে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবেনা। ১৭০
463 ৩. আলে-ইমরান তারা আল্লাহর নিকট হতে অনুগ্রহ ও নি‘আমাত লাভ করার কারণে আনন্দিত হয়; আর এ জন্য যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বাসীগণের প্রতিদান বিনষ্ট করেননা। ১৭১
464 ৩. আলে-ইমরান যারা আঘাত পাওয়ার পরেও আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশকে মান্য করেছে তাদের মধ্যে যারা সৎ কাজ করেছে ও সংযত হয়েছে তাদের জন্য রয়েছে মহান প্রতিদান। ১৭২
465 ৩. আলে-ইমরান যাদেরকে লোকেরা বলেছিলঃ নিশ্চয়ই তোমাদের বিরুদ্ধে সেই সব লোক সমবেত হয়েছে; অতএব তোমরা তাদেরকে ভয় কর; কিন্তু এতে তাদের বিশ্বাস পরিবর্ধিত হয়েছিল এবং তারা বলেছিলঃ আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি মঙ্গলময়, কর্মবিধায়ক। ১৭৩
466 ৩. আলে-ইমরান অনন্তর তারা আল্লাহর অনুগ্রহ সম্পদসহ প্রত্যাবর্তীত হয়েছিল, তাদেরকে অমঙ্গল স্পর্শ করেনি এবং তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসরণ করেছিল; আর আল্লাহর অনুগ্রহ অতি ব্যাপক। ১৭৪
467 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই শাইতান শুধুমাত্র তার অলী হতে তোমাদেরকে ভয় প্রদর্শন করে; কিন্তু যদি তোমরা বিশ্বাসী হও তাহলে তাদেরকে ভয় করনা; এবং আমাকেই ভয় কর। ১৭৫
468 ৩. আলে-ইমরান আর যারা অবিশ্বাসে তৎপর, তুমি তাদের জন্য বিষন্ন হয়োনা; বস্তুতঃ তারা আল্লাহর কোন অনিষ্ট করতে পারবেনা; আল্লাহ তাদের জন্য আখিরাতে কোন কল্যাণ ইচ্ছা করেননা এবং তাদেরই জন্য কঠোর শাস্তি রয়েছে। ১৭৬
469 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাসের পরিবর্তে অবিশ্বাস ক্রয় করেছে তারা আল্লাহর কোনই অনিষ্ট করতে পারবেনা এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। ১৭৭
470 ৩. আলে-ইমরান অবিশ্বাসীরা যেন এ ধারণা না করে যে, আমি তাদেরকে যে অবকাশ দিয়েছি তা তাদের জীবনের জন্য কল্যাণকর; তারা স্বীয় পাপ বর্ধিত করবে এ জন্যই আমি তাদেরকে অবকাশ প্রদান করি; এবং তাদের জন্য অপমানকর শাস্তি রয়েছে। ১৭৮
471 ৩. আলে-ইমরান সৎকে অসৎ (মুনাফিক) হতে পৃথক না করা পর্যন্ত আল্লাহ মু’মিনদেরকে, তারা যে অবস্থায় আছে ঐ অবস্থায় রেখে দিতে পারেননা, আর গাইবের খবরও তাদেরকে অবহিত করবেননা, তবে তাঁর রাসূলদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা গ্রহণ করেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ও তাঁর রাসূলকে বিশ্বাস কর। এবং যদি বিশ্বাস কর ও ভাল ‘আমল কর তাহলে তোমাদের জন্য রয়েছে মহা পুরস্কার। ১৭৯
472 ৩. আলে-ইমরান আর আল্লাহ যাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে কিছু দান করেছেন তদ্বিষয়ে যারা কার্পণ্য করে তারা যেন এরূপ ধারণা না করে যে, ওটা তাদের জন্য কল্যাণকর; বরং ওটা তাদের জন্য ক্ষতিকর; তারা যে বিষয়ে কৃপণতা করেছে উত্থান দিনে ওটাই তাদের কন্ঠ-নিগড় হবে; এবং আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের স্বত্বাধিকারী এবং যা তোমরা করছ আল্লাহ তদ্বিষয়ে পূর্ণ খবর রাখেন। ১৮০
473 ৩. আলে-ইমরান অবশ্যই আল্লাহ তাদের কথা শ্রবণ করেছেন যারা বলে থাকে যে, আল্লাহ দরিদ্র ও তারা ধনবান; তারা যা বলছে এবং তাদের অন্যায়ভাবে নাবীগণকে হত্যা করা আমি লিপিবদ্ধ করব; এবং তাদেরকে বলবঃ তোমরা জ্বলন্ত আগুনের শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ কর। ১৮১
474 ৩. আলে-ইমরান এটা তা’ই যা তোমাদের হস্তসমূহ পূর্বে প্রেরণ করেছে এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ অত্যাচারী নন, যারা তাঁকে সেবা করে তাদের প্রতি। ১৮২
475 ৩. আলে-ইমরান যারা বলে থাকে, অবশ্যই আল্লাহ আমাদের থেকে অঙ্গীকার নিয়েছেন যে, অগ্নি যা গ্রাস করে, আমাদের জন্য এমন কুরবানী আনয়ন না করা পর্যন্ত আমরা যেন কোন নাবীর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করি; তুমি বলঃ নিশ্চয়ই আমার পূর্বে সমুজ্জ্বল নিদর্শনাবলী এবং তোমরা যা বল তৎসহ রাসূলগণ আগমন করেছিল; যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে কেন তোমরা তাদেরকে হত্যা করেছিলে? ১৮৩
476 ৩. আলে-ইমরান অতঃপর যদি তারা তোমার প্রতি অসত্যারোপ করে তাহলে তোমার পূর্বেও রাসূলগণকে অবিশ্বাস করা হয়েছিল, যারা প্রকাশ্য নিদর্শনাবলী ও ক্ষুদ্র পুস্তিকা এবং উজ্জ্বল গ্রন্থসহ আগমন করেছিল। ১৮৪
477 ৩. আলে-ইমরান সমস্ত জীবই মৃত্যুর আস্বাদ গ্রহণ করবে; এবং নিশ্চয়ই উত্থান দিনে তোমাদেরকে পূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে; অতএব যে কেহ জাহান্নাম হতে বিমুক্ত হয় এবং জান্নাতে প্রবিষ্ট হয় - ফলতঃ নিশ্চয়ই সে সফলকাম; আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত আর কিছুই নয়। ১৮৫ জাহান্নাম
478 ৩. আলে-ইমরান অবশ্যই তোমরা তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন সম্পর্কে পরীক্ষিত হবে। তোমাদের পূর্বে যাদেরকে গ্রন্থ প্রদত্ত হয়েছে ও যারা অংশী স্থাপন করেছে তাদের নিকট হতে তোমাদেরকে বহু দুঃখজনক বাক্য শুনতে হবে; এবং যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর ও সংযমী হও তাহলে অবশ্যই এটা সুদৃঢ় কার্যাবলীর অন্তর্গত। ১৮৬
479 ৩. আলে-ইমরান আর আল্লাহ যখন যাদেরকে গ্রন্থ প্রদান করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন যে, তারা নিশ্চয়ই এটি লোকদের মধ্যে ব্যক্ত করবে এবং তা গোপন করবেনা; কিন্তু তারা ওটা তাদের পশ্চাতে নিক্ষেপ করল এবং ওটা অল্প মূল্যে বিক্রি করল। অতএব তারা যা ক্রয় করেছিল তা নিকৃষ্টতর। ১৮৭
480 ৩. আলে-ইমরান যারা স্বীয় কৃতকর্মে সন্তষ্ট এবং তারা যা করেনি তজ্জন্য প্রশংসা প্রার্থী এরূপ লোকদের সম্বন্ধে ধারণা করনা যে, তারা শাস্তি হতে বিমুক্ত, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ১৮৮
481 ৩. আলে-ইমরান আল্লাহরই জন্য নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের আধিপত্য এবং আল্লাহ সর্ব বিষয়োপরি শক্তিমান। ১৮৯
482 ৩. আলে-ইমরান নিশ্চয়ই নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টিতে এবং দিন ও রাতের পরিবর্তনে জ্ঞানবানদের জন্য স্পষ্ট নিদর্শনাবলী রয়েছে। ১৯০
483 ৩. আলে-ইমরান যারা দন্ডায়মান, উপবেশন ও এলায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃষ্টি বিষয়ে চিন্তা-গবেষনা করে এবং বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! আপনি এসব বৃথা সৃষ্টি করেননি; আপনিই পবিত্রতম! অতএব আমাদেরকে জাহান্নাম হতে রক্ষা করুন! ১৯১ জাহান্নাম
484 ৩. আলে-ইমরান হে আমাদের রাব্ব! আপনি যাকে জাহান্নামে প্রবিষ্ট করান, ফলতঃ নিশ্চয়ই তাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে; এবং অত্যাচারীদের জন্য কেহই সাহায্যকারী নেই। ১৯২ জাহান্নাম
485 ৩. আলে-ইমরান হে আমাদের রাব্ব! নিশ্চয়ই আমরা এক আহবানকারীকে ঈমানের প্রতি আহবান করতে শুনেছিলাম যে, তোমরা স্বীয় রবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর; আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি; হে আমাদের রাব্ব! অতএব আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন ও আমাদের সকল দোষক্রটি দূর করুন এবং পুন্যবানদের সাথে আমাদের মৃত্যু দান করুন। ১৯৩
486 ৩. আলে-ইমরান হে আমাদের রাব্ব! আপনি স্বীয় রাসূলগণের মাধ্যমে আমাদের সাথে যে অঙ্গীকার করেছিলেন তা দান করুন এবং উত্থান দিবসে আমাদেরকে লাঞ্ছিত করবেননা। নিশ্চয়ই আপনি অঙ্গীকার ভঙ্গ করেননা। ১৯৪
487 ৩. আলে-ইমরান অনন্তর তাদের রাব্ব তাদের জন্য ওটা স্বীকার করলেন এবং বললেনঃ আমি তোমাদের পুরুষ অথবা নারীর মধ্য হতে কোন কর্মীর কৃতকর্ম ব্যর্থ করবনা, তোমরা পরস্পর এক, অতএব যারা দেশ ত্যাগ করেছে অথবা স্বীয় গৃহসমূহ হতে বিতাড়িত হয়েছে ও আমার পথে নির্যাতিত হয়েছে এবং সংগ্রাম করেছে ও নিহত হয়েছে - নিশ্চয়ই তাদের জন্য আমি তাদের অমঙ্গলসমূহ অপসারণ করাব এবং নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাব, যার নিম্নে স্রোতস্বিনী নদীসমূহ প্রবাহিত; এটা আল্লাহর নিকট হতে প্রতিদান এবং আল্লাহর নিকটই উত্তম প্রতিদান রয়েছে। ১৯৫
488 ৩. আলে-ইমরান যারা অবিশ্বাসী হয়েছে তাদের নগরসমূহে প্রত্যাগমন যেন তোমাদেরকে প্রতারিত না করে। ১৯৬
489 ৩. আলে-ইমরান এটা মাত্র কয়েকদিনের সম্ভোগ; অনন্তর তাদের অবস্থান জাহান্নাম এবং ওটা নিকৃষ্ট স্থান। ১৯৭ জাহান্নাম
490 ৩. আলে-ইমরান কিন্তু যারা স্বীয় রাব্বকে ভয় করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত-যার নিম্নে স্রোতস্বিনীসমূহ প্রবাহিত, তম্মধ্যে তারা সদা অবস্থান করবে, এটা আল্লাহর নিকট রয়েছে, তা সৎকর্মশীলদের জন্য বহুগুণে উত্তম। ১৯৮
491 ৩. আলে-ইমরান এবং নিশ্চয়ই আহলে কিতাবের মধ্যে এরূপ লোকও রয়েছে যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে এবং তোমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা তাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছিল তদ্বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং আল্লাহর সম্মুখে বিনয়াবনত থাকে। যারা অল্প মূল্যে আল্লাহর নিদর্শনাবলী বিক্রি করেনা তাদেরই জন্য তাদের রবের নিকট প্রতিদান রয়েছে; নিশ্চয়ই আল্লাহ সত্ত্বর হিসাব গ্রহণকারী। ১৯৯
492 ৩. আলে-ইমরান হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমরা ধৈর্য অবলম্বন কর এবং সহিষ্ণু ও সুপ্রতিষ্ঠিত হও; এবং আল্লাহকে ভয় কর যেন তোমরা সুফল প্রাপ্ত হও। ২০০
493 ৪. আন-নিসা হে মানবমন্ডলী! তোমরা তোমাদের রাব্বকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে একই ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন এবং তা হতে তদীয় সহধর্মিনী সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের উভয় হতে বহু নর ও নারী ছড়িয়ে দিয়েছেন এবং সেই আল্লাহকে ভয় কর যাঁর নামের দোহাই দিয়ে তোমরা একে অপরকে যাঞ্চা কর, এবং আত্মীয়-জ্ঞাতিদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর। নিশ্চয়ই আল্লাহই তত্ত্বাবধানকারী।
494 ৪. আন-নিসা আর ইয়াতীমদেরকে তাদের ধন সম্পত্তি বুঝিয়ে দাও এবং পবিত্রতার সাথে অপবিত্রতার বিনিময় করনা ও তোমাদের ধন সম্পত্তির সাথে তাদের ধন সম্পত্তি মিশ্রিত করে ভোগ করনা; নিশ্চয়ই এটা গুরুতর অপরাধ।
495 ৪. আন-নিসা আর যদি তোমরা আশংকা কর যে, ইয়াতীমদের প্রতি সুবিচার করতে পারবেনা তাহলে নারীদের মধ্য হতে তোমাদের পছন্দ মত দু’টি, তিনটি কিংবা চারটিকে বিয়ে করে নাও; কিন্তু যদি তোমরা আশংকা কর যে, তাদের সাথে ন্যায় সঙ্গত আচরণ করতে পারবেনা তাহলে মাত্র একটি অথবা তোমাদের ডান হাত যার অধিকারী (ক্রীতদাসী); এটা আরও উত্তম; এটা অবিচার না করার নিকটবর্তী।
496 ৪. আন-নিসা আর সন্তুষ্ট চিত্তে নারীদেরকে তাদের দেয় মোহর প্রদান কর, কিন্তু যদি তারা স্বেচ্ছায় কিয়দংশ প্রদান করে তাহলে সঠিক বিবেচনা মত তৃপ্তির সাথে ভোগ কর।
497 ৪. আন-নিসা আল্লাহ তোমাদের জন্য যে ধন-সম্পত্তি নির্ধারণ করেছেন তা অবোধদেরকে প্রদান করনা; বরং তা হতে তাদেরকে ভক্ষণ করাতে থাক, পরিধান করাতে থাক এবং তাদের সাথে সদ্ভাবে কথা বল।
498 ৪. আন-নিসা আর ইয়াতীমরা বিয়ের যোগ্য না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে পরীক্ষা করে নাও; অতঃপর যদি তাদের মধ্যে বিবেক-বুদ্ধি পরিদৃষ্ট হয় তাহলে তাদের ধন-সম্পত্তি তাদেরকে সমর্পণ কর; ইয়াতীমের ধন-সম্পদ অপব্যয় করনা অথবা তারা বয়ঃপ্রাপ্ত হবে বলে ওটা সত্ত্বরতা সহকারে আত্মসাৎ করনা; এবং দেখাশোনাকারী যদি অভাবমুক্ত হয় তাহলে ইয়াতীমের মাল খরচ করা হতে সে নিজকে সম্পূর্ণ বিরত রাখবে, আর যে ব্যক্তি অভাবগ্রস্ত সে সঙ্গত পরিমাণ ভোগ করবে, অনন্তর যখন তাদের সম্পত্তি তাদেরকে সমর্পণ করতে চাও তখন তাদের জন্য সাক্ষী রেখ এবং আল্লাহই হিসাব গ্রহণে যথেষ্ট।
499 ৪. আন-নিসা পুরুষদের জন্য মাতা-পিতা ও আত্মীয় স্বজনের পরিত্যক্ত বিষয়ে অংশ রয়েছে- অল্প বা অধিক, তা নির্দিষ্ট পরিমাণ।
500 ৪. আন-নিসা বন্টনের সময়ে যখন স্বজনগণ, ইয়াতীমগণ এবং দরিদ্রগণ উপস্থিত হয় তখন তা হতে তাদেরকেও জীবিকা দান কর এবং তাদের সাথে সদ্ভাবে কথা বল।
501 ৪. আন-নিসা তাদের মনে এই ভেবে শংকা থাকা উচিৎ যে, যদি তারা মৃত্যুকালে তাদের পশ্চাতে অসহায় পরিবার রেখে যায় তাহলে তাদেরও একই অবস্থা ঘটতে পারে। সুতরাং তারা যেন আল্লাহকে ভয় করে এবং সঙ্গত কথা বলে।
502 ৪. আন-নিসা যারা অন্যায়ভাবে পিতৃহীনদের ধন সম্পত্তি গ্রাস করে, নিশ্চয়ই তা স্বীয় উদরে অগ্নি ব্যতীত কিছুই ভক্ষণ করেনা এবং সত্ত্বরই তারা অগ্নি শিখায় প্রবেশ করবে। ১০
503 ৪. আন-নিসা আল্লাহ তোমাদের সন্তানদের সম্বন্ধে তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেনঃ এক পুত্রের জন্য দুই কন্যার অংশের তুল্য; আর যদি শুধু কন্যাগণ দুই জনের অধিক হয় তাহলে তারা মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে দুই তৃতীয়াংশ প্রাপ্ত হবে। আর যদি একটি মাত্র কন্যা হয় তাহলে সে অর্ধেকাংশ প্রাপ্ত হবে; এবং যদি মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান থাকে তাহলে মাতা-পিতার জন্য অর্থাৎ উভয়ের প্রত্যেকেরই জন্য তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে এক ষষ্ঠাংশ রয়েছে, আর যদি তার কোন সন্তান না থাকে এবং শুধু মাতা-পিতাই তার উত্তরাধিকারী হয় তাহলে তার মাতার জন্য রয়েছে এক তৃতীয়াংশ এবং যদি তার ভাই থাকে তাহলে সে যা নির্দেশ করে গেছে সেই নির্দেশ ও ঋণ অন্তে তার জননীর জন্য এক ষষ্ঠাংশ; তোমাদের পিতা ও তোমাদের পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের অধিকতর উপকারী তা তোমরা অবগত নও, এটাই আল্লাহর নির্দেশ। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও বিজ্ঞানময়। ১১
504 ৪. আন-নিসা আর তোমাদের পত্নীগণের যদি সন্তান-সন্ততি না থাকে তাহলে তারা যা পরিত্যাগ করে যায় তা থেকে তোমাদের জন্য উহার অর্ধাংশ; কিন্তু যদি তাদের সন্তান-সন্ততি থাকে তাহলে তারা যা অসীয়াত করেছে সেই অসীয়াত ও ঋণ পরিশোধের পর তাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে তোমাদের জন্য এক চতুর্থাংশ; এবং যদি তোমাদের স্ত্রীদের কোন সন্তান-সন্ততি না থাকে তাহলে তোমরা যা পরিত্যাগ করে যাবে, তাদের জন্য তার এক চতুর্থাংশ; কিন্তু যদি তোমাদের সন্তুান-সন্ততি থাকে তাহলে তোমরা যা অসীয়াত করবে সেই অসীয়াত ও ঋণ পরিশোধের পর তোমাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে তাদের জন্য এক অষ্টমাংশ; যদি কোন মূল ও শাখাবিহীন পুরুষ কিংবা স্ত্রী মারা যায় এবং তার এক ভাই অথবা এক ভগ্নী থাকে তাহলে এতদুভয়ের মধ্য হতে প্রত্যেকেই এক ষষ্ঠাংশ পাবে, আর যদি তারা তদপেক্ষা অধিক হয় তাহলে কৃত অসীয়াত পূরণ করার পর অথবা ঋণ শোধের পর, কারও অনিষ্ট না করে তারা উহার এক তৃতীয়াংশ প্রাপ্ত হবে; এটাই আল্লাহর নির্দেশ এবং আল্লাহ মহাজ্ঞানী, সহিষ্ণু। ১২
505 ৪. আন-নিসা এটাই আল্লাহর নির্দিষ্ট সীমাসমূহ; এবং যে কেহ আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের অনুগত হয় তিনি তাকে এরূপ জান্নাতে প্রবিষ্ট করাবেন যার নিম্নে স্রোতস্বিনীসমূহ প্রবাহিতা, তম্মধ্যে তারা সদা অবস্থান করবে; এবং এটাই বড় সফলতা। ১৩
506 ৪. আন-নিসা আর যে কেহ আল্লাহ ও তদীয় রাসূলকে অমান্য করে এবং তাঁর নির্দিষ্ট সীমাসমূহ অতিক্রম করে তিনি তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। তন্মধ্যে সে সদা অবস্থান করবে এবং তার জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি রয়েছে। ১৪ জাহান্নাম
507 ৪. আন-নিসা আর তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা নির্লজ্জ কাজ করে, তোমরা তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য হতে চার জন সাক্ষী উপস্থিত কর; অনন্তর যদি তারা সাক্ষ্য প্রদান করে তাহলে তাদেরকে তোমরা গৃহসমূহের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখ যে পর্যন্ত মৃত্যু তাদেরকে উঠিয়ে না নেয় কিংবা আল্লাহ তাদের জন্য কোন পথ নির্দেশ না করেন। ১৫
508 ৪. আন-নিসা আর তোমাদের মধ্য হতে যে কোন দুইজন এই নির্লজ্জতার কাজ করবে, তাদের উভয়কেই শাস্তি প্রদান কর; কিন্তু তারা যদি তাওবাহ করে এবং সদাচারী হয় তাহলে এতদুভয় হতে প্রত্যাবর্তিত হও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাহ গ্রহণকারী, করুণাময়। ১৬
509 ৪. আন-নিসা তাওবাহ কবূল করার দায়িত্ব যে আল্লাহর উপর রয়েছে তাতো শুধু তাদেরই জন্য যারা অজ্ঞতা বশতঃ পাপ করে থাকে, অতঃপর অবিলম্বে ক্ষমা প্রার্থনা করে; সুতরাং আল্লাহ তাদেরকেই ক্ষমা করবেন; আল্লাহ মহাজ্ঞানী, বিজ্ঞানময়। ১৭
510 ৪. আন-নিসা আর তাদের জন্য কোন ক্ষমা নেই যারা ঐ পর্যন্ত পাপ করতে থাকে যখন তাদের কারও নিকট মৃত্যু উপস্থিত হয় তখন বলে, নিশ্চয়ই আমি এখন ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাদের জন্যও ক্ষমা নয় যারা অবিশ্বাসী অবস্থায় মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে; তাদেরই জন্য আমি বেদনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। ১৮
511 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! এটা তোমাদের জন্য বৈধ নয় যে, তোমরা বলপূর্বক নারীদের উত্তরাধিকারী হও; এবং প্রকাশ্য অশ্লীলতা ব্যতীত তোমরা তাদেরকে যা প্রদান করেছ উহার কিয়দংশ গ্রহণের জন্য তাদেরকে বাধ্য করনা এবং তাদের সাথে সদ্ভাবে সম মর্যাদায় অবস্থান কর; কিন্তু যদি অপছন্দ কর তাহলে তোমরা যে বিষয় অপছন্দ কর আল্লাহ সেটাকে প্রচুর কল্যাণকর করতে পারেন। ১৯
512 ৪. আন-নিসা আর যদি তোমরা এক স্ত্রীর স্থলে অন্য স্ত্রী পরিবর্তন করতে ইচ্ছা কর এবং তাদের একজনকে প্রচুর ধন-সম্পদ প্রদান করে থাক তাহলে তোমরা তন্মধ্য হতে কিছুই প্রতিগ্রহণ করনা; তাহলে কি তোমরা অপবাদ প্রয়োগ এবং প্রকাশ্য পাপ করে সেটা গ্রহণ করবে? ২০
513 ৪. আন-নিসা এবং কিরূপে তোমরা তা গ্রহণ করবে? বস্তুতঃ তোমরা পরস্পর একে অন্যের নিকট গমন করেছিলে এবং তারা তোমাদের নিকট হতে সুদৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিল। ২১
514 ৪. আন-নিসা তোমাদের পিতৃগণ নারীকূলের মধ্যে যাদেরকে বিয়ে করেছে তোমরা তাদেরকে বিয়ে করনা, কিন্তু যা বিগত হয়েছে। নিশ্চয়ই এটি অশ্লীল, অরুচিকর এবং নিকৃষ্ট আচরণ। ২২
515 ৪. আন-নিসা তোমাদের জন্য অবৈধ করা হয়েছে - তোমাদের মাতৃগণ, কন্যাগণ, ভগ্নিগণ, ফুফুগণ, খালাগণ, ভ্রাতৃকন্যাগণ, ভগ্নির কন্যাগণ, তোমাদের সেই মাতৃগণ যারা তোমাদেরকে স্তন্য দান করেছে, তোমাদের দুগ্ধ ভগ্নিগণ, তোমাদের স্ত্রীদের মাতৃগণ, তোমরা যাদের অভ্যন্তরে উপনীত হয়েছ সেই স্ত্রীদের যে সকল কন্যা তোমাদের ক্রোড়ে অবস্থিত; কিন্তু যদি তোমরা তাদের মধ্যে উপনীত না হয়ে থাক তাহলে তোমাদের জন্য কোন অপরাধ নেই; এবং ঔরসজাত পুত্রদের পত্নীগণ; এবং যা অতীত হয়ে গেছে, তদ্ব্যতীত দুই ভগ্নিকে একত্রে বিয়ে করা; নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ২৩
516 ৪. আন-নিসা এবং নারীদের মধ্যে বিবাহিতগণ তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে; কিন্তু তোমাদের ডান হাত যাদের অধিকারী - আল্লাহ তোমাদের জন্য তাদেরকে বিধিবদ্ধ করেছেন, এতদ্ব্যতীত তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে অন্যান্য নারীদের; তোমরা স্বীয় ধনের দ্বারা ব্যভিচারের উদ্দেশ্য ব্যতীত বিবাহ করার জন্য তাদের অনুসন্ধান কর; অনন্তর তাদের দ্বারা যে ফল ভোগ করবে তজ্জন্য তাদেরকে তাদের নির্ধারিত দেয় প্রদান কর এবং কোন অপরাধ হবেনা যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পর সম্মত হও, নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী, বিজ্ঞানময়। ২৪
517 ৪. আন-নিসা আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বাধীনা ও মুসলিম নারীকে বিয়ে করার সামর্থ্য রাখেনা তাহলে তোমাদের ডান হাত অধিকারী সেই বিশ্বাসিনী দাসীকে বিয়ে করে। আল্লাহ তোমাদের বিশ্বাস বিষয়ে জ্ঞাত আছেন, তোমরা একে অপর হতে সমুদ্ভুত। অতএব তাদের মনিবদের অনুমতিক্রমে তাদেরকে বিয়ে কর এবং নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে তাদের প্রাপ্য (মোহরানা) প্রদান কর এমতাবস্থায় যে, তারা ব্যভিচারিণী কিংবা উপ-পতি গ্রহণকারিণী হবেনা। অতঃপর যখন তারা বিবাহবদ্ধ হয়, তৎপর যদি তারা ব্যভিচার করে তাহলে তাদের প্রতি স্বাধীনা নারীদের শাস্তির অর্ধেক, এটা তাদেরই জন্য তোমাদের মধ্যে যারা দুস্কার্যকে ভয় করে। এবং যদি বিরত থাক তাহলে এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ২৫
518 ৪. আন-নিসা আল্লাহ তোমাদের জন্য সবকিছু পরিস্কার বর্ণনা করতে এবং তোমাদেরকে তোমাদের পূর্ববর্তীগণের আদর্শসমূহ প্রদর্শন করতে ও তোমাদেরকে ক্ষমা করতে ইচ্ছা করেন এবং আল্লাহ মহাজ্ঞানী, বিজ্ঞানময়। ২৬
519 ৪. আন-নিসা আর আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করতে ইচ্ছা করেন এবং যারা প্রবৃত্তির পূজারী তারা ইচ্ছা করে যে, তোমরা ঘোর অধঃপতনে পতিত হও। ২৭
520 ৪. আন-নিসা আল্লাহ তোমাদের বোঝা লঘু করতে চান যেহেতু মানুষ দুর্বল (রূপে) সৃষ্ট হয়েছে। ২৮
521 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! তোমরা অন্যায়ভাবে পরস্পরের ধন-সম্পদ গ্রাস করনা; কেবলমাত্র পরস্পর সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা কর তা বৈধ এবং তোমরা নিজেদের হত্যা করনা; নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল। ২৯
522 ৪. আন-নিসা আর যে কেহ সীমা অতিক্রম করে অথবা যলমের বশবর্তী হয়ে এ কাজ করে, ফলতঃ নিশ্চয়ই আমি তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব এবং আল্লাহর পক্ষে এটা খুবই সহজসাধ্য। ৩০ জাহান্নাম
523 ৪. আন-নিসা তোমরা যদি সেই বড় বড় পাপসমূহ হতে বিরত হও যা তোমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে, তাহলেই আমি তোমাদের ক্রটি বিচ্যুতিগুলি ক্ষমা করে দিব এবং তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে প্রবিষ্ট করাব। ৩১
524 ৪. আন-নিসা এবং তোমরা ওর আকাংখা করনা যদ্বারা আল্লাহ একের উপর অপরকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন; পুরুষেরা যা উপার্জন করেছে তাতে তাদের অংশ রয়েছে এবং নারীরা যা উপার্জন করেছে তাতে তাদের অংশ রয়েছে এবং তোমরা আল্লাহরই নিকট অনুগ্রহ প্রার্থনা কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে মহাজ্ঞানী। ৩২
525 ৪. আন-নিসা আমি সবাইকেই উত্তরাধিকারী করেছি যা তাদের মাতা-পিতা ও আত্মীয়-স্বজন পরিত্যাগ করে যায় এবং দক্ষিণ হস্ত যাদের সাথে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ; অতএব তোমরা তাদেরকে তাদের অংশ প্রদান কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ সব বিষয়ে সাক্ষী। ৩৩
526 ৪. আন-নিসা পুরুষেরা নারীদের উপর তত্ত্বাবধানকারী ও ভরণপোষণকারী, যেহেতু আল্লাহ তাদের মধ্যে একের উপর অপরকে বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এই হেতু যে, তারা স্বীয় ধন সম্পদ হতে তাদের জন্য ব্যয় করে থাকে; সুতরাং যে সমস্ত নারী পুণ্যবতী তারা আনুগত্য করে, আল্লাহর সংরক্ষিত প্রচ্ছন্ন বিষয় সংরক্ষণ করে; যদি নারীদের অবাধ্যতার আশংকা হয় তাহলে তাদেরকে সদুপদেশ প্রদান কর, তাদেরকে শয্যা হতে পৃথক কর এবং তাদেরকে প্রহার কর; অনন্তর যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তাহলে তাদের জন্য অন্য পন্থা অবলম্বন করনা; নিশ্চয়ই আল্লাহ সমুন্নত, মহা মহীয়ান। ৩৪
527 ৪. আন-নিসা আর যদি তোমরা উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদের আশংকা কর তাহলে তোমাদের বংশ হতে একজন বিচারক এবং তোমাদের স্ত্রীদের বংশ হতে একজন বিচারক নির্দিষ্ট কর; যদি তারা মীমাংসার আকাংখা করে তাহলে আল্লাহ তাদের মধ্যে সম্প্রীতি সঞ্চার করবেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী, অভিজ্ঞ। ৩৫
528 ৪. আন-নিসা এবং তোমরা আল্লাহরই ইবাদাত কর এবং তাঁর সাথে কোন বিষয়ে অংশী স্থাপন করনা; এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার কর এবং আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, দরিদ্র, সম্পর্কবিহীন প্রতিবেশী, পার্শ্ববতী সহচর ও পথিক এবং তোমাদের দাস-দাসীদের সাথেও সদ্ব্যবহার কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ অহংকারী আত্মাভিমানীকে ভালবাসেননা। ৩৬
529 ৪. আন-নিসা যারা কৃপণতা করে ও লোকদের কার্পণ্য শিক্ষা দেয় এবং আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহে যা দান করেছেন তা গোপন করে, বস্তুতঃ আমি সেই অবিশ্বাসীদের জন্য অপমানজনক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। ৩৭
530 ৪. আন-নিসা এবং যারা লোকদের দেখানোর জন্য স্বীয় ধন সম্পদ ব্যয় করে এবং আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেনা, আর যাদের সহচর শাইতান - সে নিকৃষ্ট সঙ্গীই বটে। ৩৮
531 ৪. আন-নিসা আর এতে তাদের কি ক্ষতি হত - যদি তারা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করত এবং আল্লাহ তাদেরকে যা দান করেছেন তা হতে ব্যয় করত? এবং আল্লাহ তাদের বিষয়ে যথার্থই অবগত। ৩৯
532 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই আল্লাহ অণু পরিমাণও অত্যাচার করেননা এবং যদি কেহ কোন সৎ কাজ করে তাহলে তিনি ওটা দ্বিগুণ করে দেন এবং স্বীয় পক্ষ হতে ওর মহান প্রতিদান প্রদান করেন। ৪০
533 ৪. আন-নিসা অতঃপর তখন কি দশা হবে যখন আমি প্রত্যেক ধর্ম/সম্প্রদায় হতে সাক্ষী আনয়ন করব এবং তোমাকেই তাদের প্রতি সাক্ষী করব? ৪১
534 ৪. আন-নিসা যারা অবিশ্বাসী হয়েছে ও রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করেছে তারা সেদিন কামনা করবে - যেন ভূমন্ডলের সাথে তারা মিশে যায় এবং আল্লাহর নিকট তারা কোন কথাই গোপন করতে পারবেনা। ৪২
535 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সালাতের কাছেও যেওনা, যখন নিজের উচ্চারিত বাক্যের অর্থ নিজেই বুঝতে সক্ষম নও - এ অবস্থায় অথবা গোসল যরুরী হলে তা সমাপ্ত না করে সালাতের জন্য দান্ডায়মান হয়োনা। কিন্তু মুসাফির অবস্থার কথা স্বতন্ত্র। যদি তোমরা পীড়িত হও, কিংবা প্রবাসে অবস্থান কর অথবা তোমাদের মধ্যে কেহ পায়খানা হতে প্রত্যাগত হয় কিংবা রমণী স্পর্শ করে এবং পানি না পাওয়া যায় তাহলে বিশুদ্ধ মাটির অম্বেষণ কর, তদ্বারা তোমাদের মুখমন্ডল ও হস্তসমূহ মুছে ফেল; নিশ্চয়ই আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। ৪৩ নামাজ
536 ৪. আন-নিসা তোমরা কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি যাদেরকে গ্রন্থের এক অংশ প্রদত্ত হয়েছে? তারা পথভ্রষ্টতা ক্রয় করেছে এবং ইচ্ছা করে যে, তোমরাও সঠিক পথ হতে দূরে সরে যাও। ৪৪
537 ৪. আন-নিসা এবং আল্লাহ তোমাদের শত্রুদেরকে সম্যক অবগত আছেন; পৃষ্ঠপোষক এবং সাহায্যকারী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। ৪৫
538 ৪. আন-নিসা ইয়াহুদীদের মধ্যে কেহ কেহ যথাস্থান হতে বাক্যাবলী পরিবতির্ত করে এবং বলেঃ আমরা শ্রবণ করলাম ও আগ্রহ্য করলাম; এবং বলে, শোন - না শোনার মত; এবং তারা স্বীয় জিহবা বিকৃত করে ও ধর্মের প্রতি দোষারোপ করে বলে ‘রাইনা’; এবং যদি তারা বলত, ‘আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম; এবং আমাদেরকে বুঝার শক্তি দাও’ তাহলে এটা তাদের পক্ষে উত্তম ও সঠিক হত; কিন্তু আল্লাহ তাদের অবিশ্বাস হেতু তাদেরকে অভিসম্পাত করেছেন; অতএব অল্প সংখ্যক ব্যতীত তারা বিশ্বাস করেনা। ৪৬
539 ৪. আন-নিসা হে গ্রন্থ প্রাপ্তরা! তোমাদের সঙ্গে যা আছে তার সত্যতা প্রতিপাদনকারী যা অবতীর্ণ করেছি তৎপ্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর ঐ সময় আসার পূর্বে, যখন আমি অনেক মুখমন্ডল বিকৃত করে দিব। অতঃপর তাদেরকে পৃষ্ঠের দিকে উল্টিয়ে দিব অথবা আসহাবে সাবতের প্রতি যেরূপ অভিসম্পাত করেছিলাম তদ্রুপ তাদের প্রতিও অভিসম্পাত করি; এবং আল্লাহর আদেশ কার্যকরী হয়েই থাকে। ৪৭
540 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে অংশী স্থাপনকারীকে ক্ষমা করবেননা এবং তদ্ব্যতীত যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন এবং যে কেহ আল্লাহর অংশী স্থির করে সে মহাপাপে আবদ্ধ হল। ৪৮
541 ৪. আন-নিসা তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি যারা স্বীয় পবিত্রতা প্রকাশ করে? বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পবিত্র করেন এবং তারা এক সূতা পরিমাণও অত্যাচারিত হবেনা। ৪৯
542 ৪. আন-নিসা লক্ষ্য করঃ তারা কিরূপে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে! স্পষ্ট অপরাধী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট। ৫০
543 ৪. আন-নিসা তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি যাদেরকে গ্রন্থের একাংশ প্রদত্ত হয়েছে? তারা মূর্তি ও শাইতানের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং কাফিরদেরকে বলে, মুসলিমদের অপেক্ষা তারাই অধিকতর সুপথগামী। ৫১
544 ৪. আন-নিসা এদেরই প্রতি আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন; এবং আল্লাহ যাকে অভিসম্পাত করেন, তুমি তার জন্য কোনই সাহায্যকারী খুঁজে পাবেনা। ৫২
545 ৪. আন-নিসা তাহলে কি রাজত্বে তাদের কোন অংশ রয়েছে? বস্তুতঃ তখন তারা লোকদেরকে কণা পরিমাণও প্রদান করবেনা। ৫৩
546 ৪. আন-নিসা তাহলে কি তারা লোকদের প্রতি এ জন্য হিংসা করে যে, আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় সম্পদ হতে কিছু দান করেছেন? ফলতঃ নিশ্চয়ই আমি ইবরাহীম বংশীয়গণকে গ্রন্থ ও বিজ্ঞান দান করেছি এবং তাদেরকে বিশাল সাম্রাজ্য প্রদান করেছি। ৫৪
547 ৪. আন-নিসা অতঃপর তাদের মধ্যে অনেকে ওর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং অনেকেই ওটা হতে বিরত রয়েছে; এবং (তাদের জন্য) শিখা বিশিষ্ট জাহান্নামই যথেষ্ট। ৫৫ জাহান্নাম
548 ৪. আন-নিসা যারা আমার নিদর্শনসমূহের প্রতি অবিশ্বাসী হয়েছে তাদেরকে অবশ্যই আমি জাহান্নামের আগুনে প্রবেশ করাব। যখন তার চর্ম বিদগ্ধ হবে, আমি তৎপরিবর্তে তাদের চর্ম পরিবর্তন করে দিব, যেন তারা শাস্তির আস্বাদ গ্রহণ করে, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রান্ত, হিকমাতের অধিকারী। ৫৬ জাহান্নাম
549 ৪. আন-নিসা আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে সৎ কার্যাবলী সম্পাদন করেছে, নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাব, যার নিম্নে স্রোতস্বিনীসমূহ প্রবাহিতা, তন্মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে; সেখানে তাদের জন্য পবিত্রা সহধর্মিণীগণ রয়েছে এবং আমি তাদেরকে সুবিস্তৃত ছায়া শীতল স্থানে প্রবেশ করাব। ৫৭
550 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করছেন, গচ্ছিত বিষয় ওর অধিকারীকে অর্পণ কর; এবং যখন তোমরা লোকদের মধ্যে বিচার মীমাংসা কর তখন ন্যায় বিচার কর; অবশ্যই আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম উপদেশ দান করছেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণকারী, পরিদর্শক। ৫৮
551 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহর ও রাসূলের অনুগত হও এবং তোমাদের জন্য যারা বিচারক তাদের; অতঃপর যদি তোমাদের মধ্যে কোন বিষয়ে কোন মতবিরোধ হয় তাহলে আল্লাহ ও রাসূলের দিকে প্রত্যাবর্তিত হও, যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস করে থাক; এটাই কল্যাণকর ও শ্রেষ্ঠতর পরিসমাপ্তি। ৫৯
552 ৪. আন-নিসা তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি যারা দাবী করে যে, তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং তোমার পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছিল তৎপ্রতি তারা বিশ্বাস করে? অথচ তারা নিজেদের মুকাদ্দামা তাগুতের নিকট নিয়ে যেতে চায়, যদিও তাদেরকে আদেশ করা হয়েছিল যেন তাকে অবিশ্বাস করে; পক্ষান্তরে শাইতান তাদেরকে প্রতারিত করে পথভ্রষ্ট করতে চায়। ৬০
553 ৪. আন-নিসা আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন সেই দিকে এবং রাসূলের দিকে এসো তখন তুমি মুনাফিকদেরকে দেখবে, তারা তোমা হতে মুখ ফিরিয়ে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। ৬১
554 ৪. আন-নিসা অনন্তর তখন কিরূপ হবে, যখন তাদের হস্তসমূহ যা পূর্বে প্রেরণ করেছে, তজ্জন্য তাদের উপর বিপদ উপনীত হয়? তখন তারা আল্লাহর শপথ করতে করতে তোমার কাছে এসে বলবে - কল্যাণ ও সম্প্রীতি ব্যতীত আমরা কিছুই কামনা করিনি। ৬২
555 ৪. আন-নিসা তাদের অন্তরসমূহে যা আছে আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেন। অতএব তুমি তাদের দিক হতে নির্লিপ্ত হও এবং তাদেরকে সদুপদেশ প্রদান কর এবং তাদেরকে তাদের সম্বন্ধে হৃদয়স্পর্শী কথা বল। ৬৩
556 ৪. আন-নিসা আমি এতদ্ব্যতীত কোনই রাসূল প্রেরণ করিনি যে, আল্লাহর আদেশে তাঁর আনুগত্য স্বীকার করবে, এবং যদি তারা স্বীয় জীবনের উপর অত্যাচার করার পর তোমার নিকট আগমন করত, অতঃপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করত আর রাসূলও তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইত তাহলে নিশ্চয়ই তারা আল্লাহকে তাওবাহ কবূলকারী, করুণাময় দেখতে পেত। ৬৪
557 ৪. আন-নিসা অতএব তোমার রবের শপথ! তারা কখনই বিশ্বাস স্থাপনকারী হতে পারবেনা, যে পর্যন্ত তোমাকে তাদের সৃষ্ট বিরোধের বিচারক না করে, অতঃপর তুমি যে বিচার করবে তা দ্বিধাহীন অন্তরে গ্রহণ না করে এবং ওটা সন্তষ্ট চিত্তে কবূল না করে। ৬৫
558 ৪. আন-নিসা আর আমি যদি তাদের উপর বিধিবদ্ধ করতাম যে, তোমরা নিজেদেরকে হত্যা কর অথবা স্বীয় গৃহ প্রাচীর হতে নিস্ক্রান্ত হও তাহলে তাদের অল্প সংখ্যক ব্যতীত ওটা করতনা এবং যদ্বিষয়ে তাদেরকে উপদেশ দেয়া হয়েছিল তা যদি তারা করত তাহলে নিশ্চয়ই ওটা হত তাদের জন্য কল্যাণকর এবং ধর্মের উপর সুদৃঢ় থাকার জন্যও। ৬৬
559 ৪. আন-নিসা এবং তখন আমি তাদেরকে অবশ্যই স্বীয় সন্নিধান হতে বৃহত্তর প্রতিদান প্রদান করতাম। ৬৭
560 ৪. আন-নিসা এবং নিশ্চয়ই তাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন করতাম। ৬৮
561 ৪. আন-নিসা আর যে কেহ আল্লাহ ও রাসূলের অনুগত হয়, তারা ঐ ব্যক্তিদের সঙ্গী হবে যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন; অর্থাৎ নাবীগণ, সত্য সাধকগণ, শহীদগণ ও সৎ কর্মশীলগণ; এবং এরাই সর্বোত্তম সঙ্গী। ৬৯
562 ৪. আন-নিসা এটাই আল্লাহর অনুগ্রহ এবং আল্লাহর জ্ঞানই যথেষ্ট। ৭০
563 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! তোমরা স্বীয় আত্মরক্ষার সরঞ্জাম তুলে নাও, অতঃপর পৃথকভাবে বহির্গত হও অথবা সম্মিলিতভাবে অভিযান কর। ৭১
564 ৪. আন-নিসা আর তোমাদের মধ্যে এরূপ লোকও রয়েছে যে শৈথিল্য করে; অনন্তর যদি তোমাদের উপর বিপদ নিপতিত হয় তাহলে বলেঃ আমার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ছিল যে, আমি তখন তাদের সাথে উপস্থিত ছিলামনা। ৭২
565 ৪. আন-নিসা পক্ষান্তরে যদি আল্লাহর সন্নিধান হতে তোমাদের উপর অনুগ্রহ, সম্পদ অবতীর্ণ হয় তাহলে এরূপভাবে বলে যেন তোমাদের ও তাদের মধ্যে কোনই সম্বন্ধ ছিলনা - হায়! যদি আমিও তাদের সঙ্গী হতাম তাহলে মহান ফলপ্রদ সুফল লাভ করতাম! ৭৩
566 ৪. আন-নিসা অতএব যারা দুনিয়ার বিনিময়ে আখিরাত ক্রয় করে তারা যেন আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে; এবং যে আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে, অতঃপর নিহত অথবা বিজয়ী হয়, তাহলে আমি তাকে মহান প্রতিদান প্রদান করব। ৭৪
567 ৪. আন-নিসা তোমাদের কি হয়েছে যে, তোমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করছনা? অথচ নারী, পুরুষ এবং শিশুদের মধ্যে যারা দুর্বল তারা বলেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদেরকে অত্যাচারী এই নগর হতে নিস্কৃতি দিন এবং স্বীয় সন্নিধান হতে আমাদের পৃষ্ঠপোষক ও নিজের নিকট হতে আমাদের জন্য সাহায্যকারী প্রেরণ করুন। ৭৫
568 ৪. আন-নিসা যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে তারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে এবং যারা কাফির তারা শাইতানের পক্ষে যুদ্ধ করে; সুতরাং তোমরা শাইতানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর; নিশ্চয়ই শাইতানের কৌশল দুর্বল। ৭৬
569 ৪. আন-নিসা তুমি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করনি যাদেরকে বলা হয়েছিল যে, তোমাদের হস্তসমূহ সংযত রাখ এবং সালাত প্রতিষ্ঠিত কর ও যাকাত প্রদান কর। অনন্তর যখন তাদের প্রতি জিহাদ ফরয করে দেয়া হল তখন তাদের একদল আল্লাহকে যেরূপ ভয় করবে তদ্রুপ মানুষকে ভয় করতে লাগল, বরং তদপেক্ষাও অধিক; এবং তারা বললঃ হে আমাদের রাব্ব! আপনি কেন আমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করলেন? কেন আমাদেরকে আর কিছুকালের জন্য অবসর দিলেননা? তুমি বলঃ পার্থিব আনন্দ খুবই সীমিত এবং ধর্মভীরুগণের জন্য পরকালই কল্যাণকর; এবং তোমরা খেজুর বীজ পরিমাণও অত্যাচারিত হবেনা। ৭৭ নামাজ
570 ৪. আন-নিসা তোমরা যেখানেই থাক না কেন, মৃত্যু তোমাদেরকে পেয়ে যাবে, যদিও তোমরা সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান কর; এবং যদি তাদের উপর কোন কল্যাণ অবতীর্ণ হয় তাহলে তারা বলেঃ এটা আল্লাহর নিকট হতে এবং যদি তাদের প্রতি অমঙ্গল নিপতিত হয় তাহলে বলে যে, এটা তোমার নিকট হতে হয়েছে। তুমি বলঃ সমস্তই আল্লাহর নিকট হতে হয়; অতএব ঐ সম্প্রদায়ের কি হয়েছে যে, তারা কোন কথা বুঝতে চেষ্টা করেনা! ৭৮
571 ৪. আন-নিসা তোমার নিকট যে কল্যাণ উপস্থিত হয় তা আল্লাহর সন্নিধান হতে এবং তোমার উপর যে অকল্যাণ নিপতিত হয় তা তোমার নিজ হতে হয়ে থাকে, এবং আমি তোমাকে মানবমন্ডলীর জন্য রাসূল রূপে প্রেরণ করেছি; এবং আল্লাহর সাক্ষীই যথেষ্ট। ৭৯
572 ৪. আন-নিসা যে কেহ রাসূলের অনুগত হয় নিশ্চয়ই সে আল্লাহরই অনুগত হয়ে থাকে, এবং যে ফিরে যায় আমি তার জন্য তোমাকে রক্ষক রূপে প্রেরণ করিনি। ৮০
573 ৪. আন-নিসা আর তারা বলেঃ আমরা অনুগত। কিন্তু যখন তারা তোমার নিকট হতে বের হয়ে যায় তখন তাদের একদল, তুমি যা বল তার বিরুদ্ধে পরামর্শ করে; এবং তারা যা পরামর্শ করে আল্লাহ তা লিপিবদ্ধ করেন; অতএব তাদের প্রতি নিস্পৃহ হও এবং আল্লাহর উপর নির্ভর কর; এবং আল্লাহই কার্য সম্পাদনে যথেষ্ট। ৮১
574 ৪. আন-নিসা তারা কেন কুরআন সম্বন্ধে গবেষনা করেনা? আর যদি ওটা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও নিকট হতে হত তাহলে তারা ওতে বহু বৈপরিত্য দেখতে পেত। ৮২
575 ৪. আন-নিসা আর যখন তাদের নিকট কোন শাস্তি অথবা ভীতিজনক বিষয় উপস্থিত হয় তখন তারা ওটা রটনা করতে থাকে এবং যদি তারা ওটা রাসূলের কিংবা তাদের আদেশ দাতাদের প্রতি সমর্পন করত তাহলে তাদের মধ্যে সঠিক তথ্য পেয়ে যেত এবং যদি তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা না হত তাহলে অল্প সংখ্যক ব্যতীত তোমরা শাইতানের অনুসরণ করতে। ৮৩
576 ৪. আন-নিসা অতএব আল্লাহর পথে যুদ্ধ কর; তোমার নিজের ছাড়া তোমার উপর অন্য কারও ভার অর্পণ করা হয়নি এবং বিশ্বাসীদেরকে উদ্ধুদ্ধ কর; অচিরেই আল্লাহ অবিশ্বাসীদের সংগ্রাম প্রতিরোধ করবেন; এবং আল্লাহ সংগ্রামে সুদৃঢ় ও শাস্তি দানে কঠোর। ৮৪
577 ৪. আন-নিসা যে কেহ সৎ সুপারিশ করবে সে ওর অংশ পাবে এবং যে কেহ অসৎ সুপারিশ করবে সেও ওর অংশ প্রাপ্ত হবে; এবং আল্লাহ সর্বশক্তিমান। ৮৫
578 ৪. আন-নিসা আর যখন তোমরা শুভাশীষে সম্ভাষিত হও তখন তোমরাও তা হতে শ্রেষ্ঠতর শুভ সম্ভাষণ কর অথবা ওটাই প্রত্যর্পণ কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে হিসাব গ্রহণকারী। ৮৬
579 ৪. আন-নিসা আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কেহ উপাস্য নেই; নিশ্চয়ই এতে সন্দেহ নেই যে, তিনি তোমাদেরকে একত্রিত করবেন; এবং বাক্যে আল্লাহ অপেক্ষা কে বেশি সত্যপরায়ন? ৮৭
580 ৪. আন-নিসা অনন্তর তোমাদের কি হয়েছে যে, তোমরা মুনাফিকদের সম্বন্ধে দুই দল হলে? এবং তারা যা অর্জন করেছে তজ্জন্য আল্লাহ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছেন; আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তুমি কি তাকে পথ প্রদর্শন করতে চাও? এবং আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেছেন বস্তুতঃ তুমি তার জন্য কোনই পথ পাবেনা। ৮৮
581 ৪. আন-নিসা তারা ইচ্ছা করে যে, তারা যেরূপ কাফির তোমরাও যেন তদ্রুপ কাফির হয়ে যাও, যাতে তোমরাও তাদের সদৃশ হও। অতএব তাদের মধ্য হতে বন্ধু গ্রহণ করনা, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে দেশ ত্যাগ করে; অতঃপর যদি তারা প্রতিগমন করে তাহলে তাদেরকে ধর এবং যেখানে পাও তাদেরকে সংহার কর; এবং তাদের মধ্য হতে বন্ধু অথবা সাহায্যকারী গ্রহণ করনা। ৮৯
582 ৪. আন-নিসা কিন্তু তোমাদের মধ্যে ও তাদের মধ্যে সন্ধিবদ্ধ সম্প্রদায়ের সাথে যারা সম্মিলিত হয়, অথবা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে সংকুচিত চিত্ত হয়ে যারা তোমাদের নিকট উপস্থিত হয়। যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন তাহলে তোমাদের উপর তাদেরকে শক্তিশালী করতেন। তাহলে নিশ্চয়ই তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করত। অতঃপর যদি তারা তোমাদের দিক হতে সন্ধি প্রার্থনা করে তাহলে আল্লাহ তাদের প্রতিকূলে তোমাদের জন্য কোন পন্থা রাখেননি। ৯০
583 ৪. আন-নিসা অচিরেই তুমি এরূপও প্রাপ্ত হবে, যারা তোমাদের দিক হতে ও স্বীয় সম্প্রদায় হতে শান্তির সাথে থাকতে ইচ্ছা করে, যখন তাদের বিরোধের প্রতি প্রলুব্ধ করানো হয় তখন তাতেই নিপতিত হয়; অনন্তর যদি তোমাদের দিক হতে নিবৃত্ত না হয় ও সন্ধি প্রার্থনা না করে এবং তাদের হস্তসমূহ সংযত না করে তাহলে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও তাদেরকে সংহার কর; এদেরই জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে প্রকাশ্য যুক্তি প্রমাণ দান করেছেন। ৯১
584 ৪. আন-নিসা কোন মু’মিনের উচিত নয় যে, ভ্রম ব্যতীত কোন মু’মিনকে হত্যা করে; যে কেহ ভ্রম বশতঃ কোন মু’মিনকে হত্যা করে তাহলে সে জনৈক মু’মিন দাসকে মুক্ত করে দিবে এবং তার আত্মীয় স্বজনকে হত্যার বিনিময় সমর্পণ করবে; কিন্তু যদি তারা ক্ষমা করে দেয় এবং যদি সে তোমাদের শত্রু সম্প্রদায়ের অন্তর্গত ও মু’মিন হয় তাহলে জনৈক মু’মিন দাসকে মুক্তি দান করবে; এবং যদি সে তোমাদের মধ্যে ও তাদের মধ্যে সন্ধিবদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্তর্গত হয় তাহলে তার স্বজনদেরকে হত্যার বিনিময় অর্পণ করবে এবং জনৈক মু’মিন দাসকে মুক্ত করবে; কিন্তু যদি সে ওটায় অক্ষম হয় তাহলে আল্লাহর নিকট হতে ক্ষমা প্রাপ্তির জন্য একাদিক্রমে দুই মাস সিয়াম পালন করবে। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, বিজ্ঞানময়। ৯২ রোজা
585 ৪. আন-নিসা আর যে কেহ ইচ্ছা করে কোন মু’মিনকে হত্যা করে তাহলে তার শাস্তি জাহান্নাম, তন্মধ্যে সে সদা অবস্থান করবে এবং আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন ও তাকে অভিশপ্ত করেছেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। ৯৩ জাহান্নাম
586 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! যখন তোমরা আল্লাহর পথে বহির্গত হও তখন প্রত্যেক কাজ যাচাই করে নাও, এবং কেহ তোমাদেরকে ‘সালাম’ করলে তাকে বলনা যে, ‘তুমি মু’মিন নও’; তোমরা কি পার্থিব জীবনের সম্পদ অনুসন্ধান করছো? তাহলে আল্লাহর নিকট প্রচুর সম্পদ রয়েছে; প্রথমে তোমরা ঐরূপই ছিলে, অতঃপর আল্লাহ তোমাদের উপর অনুগ্রহ করেছেন। অতএব তোমরা স্থির করে নাও যে, তোমরা যা করছ নিশ্চয়ই আল্লাহ তদ্বিষয়ে অভিজ্ঞ। ৯৪
587 ৪. আন-নিসা মু’মিনদের মধ্যে যারা কোন দুঃখ পীড়া ব্যতীতই গৃহে বসে থাকে, আর যারা স্বীয় ধন ও প্রাণ দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে তারা সমান নয়; যারা ধন-প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে আল্লাহ তাদেরকে গৃহে অবস্থানকারীদের উপর উচ্চ মর্যাদা দিয়েছেন; এবং সকলকেই আল্লাহ কল্যাণপ্রদ প্রতিশ্রুতি দান করেছেন। এবং উপবিষ্টদের উপর ধর্মযোদ্ধাগণকে মহান প্রতিদানে গৌরবান্বিত করেছেন। ৯৫
588 ৪. আন-নিসা স্বীয় সন্নিধান হতে পদমর্যাদা, ক্ষমা ও করুনা (দ্বারা গৌরবান্বিত করেছেন) এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ৯৬
589 ৪. আন-নিসা যারা স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করেছিল, মালাক/ফেরেশতা তাদের প্রাণ হরণ করে বলে, তোমরা কি অবস্থায় ছিলে? তারা বলে, আমরা দুনিয়ায় অসহায় ছিলাম; তারা বলে, আল্লাহর পৃথিবী কি প্রশস্ত ছিলনা যে, তন্মধ্যে তোমরা হিজরাত করতে? অতএব ওদেরই বাসস্থান জাহান্নাম এবং কত নিকৃষ্ট ঐ জায়গা! ৯৭ জাহান্নাম
590 ৪. আন-নিসা কিন্তু পুরুষ, নারী এবং শিশুদের মধ্যে অসহায়তা বশতঃ যারা কোন উপায় করতে পারেনা অথবা কোন পথ প্রাপ্ত হয়না। ৯৮
591 ৪. আন-নিসা ফলতঃ তাদেরই আশা আছে যে, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন এবং আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। ৯৯
592 ৪. আন-নিসা আর যে কেহ আল্লাহর পথে দেশ ত্যাগ করে সে পৃথিবীতে বহু প্রশস্ত স্থান ও স্বচ্ছলতা প্রাপ্ত হবে। এবং যে কেহ গৃহ হতে বহির্গত হয়ে আল্লাহ ও রাসূলের উদ্দেশে দেশ ত্যাগ করে, অতঃপর সে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাহলে নিশ্চয়ই এর প্রতিদান আল্লাহর উপর ন্যস্ত রয়েছে; এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১০০
593 ৪. আন-নিসা আর যখন তোমরা ভূপৃষ্ঠে ভ্রমণ কর তখন সালাত সংক্ষেপ করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই, যদি তোমরা আশংকা কর যে, যারা অবিশ্বাসী তারা তোমাদেরকে বিব্রত করবে; নিশ্চয়ই কাফিরেরা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। ১০১ নামাজ
594 ৪. আন-নিসা এবং যখন তুমি তাদের (সৈন্যদের) মধ্যে থাক, অতঃপর সালাতে দন্ডায়মান হও তখন যেন তাদের একদল তোমার সাথে দন্ডায়মান হয় এবং স্ব স্ব অস্ত্র গ্রহণ করে; অতঃপর যখন সাজদাহ্ সম্পন্ন করে তখন যেন তারা তোমার পশ্চাদ্বর্তী হয়; এবং অন্য দল যারা সালাত আদায় করেনি তারা যেন অগ্রসর হয়ে তোমার সাথে সালাত আদায় করে এবং স্ব স্ব আত্মরক্ষিকা ও অস্ত্র গ্রহণ করে। অবিশ্বাসীরা ইচ্ছা করে যে, তোমরা স্বীয় অস্ত্রশস্ত্র ও দ্রব্য সম্ভার সম্বন্ধে অসতর্ক হলেই তারা একযোগে তোমাদের উপর নিপতিত হয়; এবং এতে তোমাদের অপরাধ নেই যদি তোমরা বৃষ্টিপাতে বিব্রত হয়ে অথবা পীড়িত অবস্থায় স্ব স্ব অস্ত্র পরিত্যাগ কর এবং স্বীয় আত্মরক্ষিকা সঙ্গে গ্রহণ কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ অবিশ্বাসীদের জন্য অবমাননাকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। ১০২ নামাজ
595 ৪. আন-নিসা অতঃপর যখন তোমরা সালাত সম্পন্ন কর তখন দন্ডায়মান, উপবিষ্ট এবং শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর; অতঃপর যখন তোমরা নিরাপদ হও তখন সালাত প্রতিষ্ঠিত কর; নিশ্চয়ই সালাত বিশ্বাসীগণের উপর নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্ধারিত। ১০৩ নামাজ
596 ৪. আন-নিসা এবং সেই সম্প্রদায়ের পশ্চাদ্ধাবনে শৈথিল্য করনা; যদি তোমরা কষ্ট পেয়ে থাক তাহলে তারাও তোমাদের অনুরূপ কষ্ট ভোগ করেছে; এবং তৎসহ আল্লাহ হতে তোমাদের যে ভরসা আছে তাদের সেই ভরসা নেই; এবং আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। ১০৪
597 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই আমি তোমার প্রতি সত্যসহ গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছি - যেন তুমি তদনুযায়ী মানবদেরকে আদেশ প্রদান কর, যা আল্লাহ তোমাকে শিক্ষা দান করেছেন এবং তুমি বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষে বিতর্ককারী হয়োনা। ১০৫
598 ৪. আন-নিসা এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১০৬
599 ৪. আন-নিসা এবং যারা স্বীয় জীবনের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করে, তুমি তাদের পক্ষে বির্তক করনা; নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্বাসঘাতক পাপীকে ভালবাসেননা। ১০৭
600 ৪. আন-নিসা তারা মানব হতে গোপন করতে চায়, কিন্তু আল্লাহ হতে গোপন করতে পারেনা; এবং তিনি তাদের সঙ্গে রয়েছেন যখন তারা রজনীতে এমন বিষয়ে পরামর্শ করে যাতে তিনি সম্মত নন; এবং তারা যা করছে আল্লাহ তার পরিবেষ্টনকারী। ১০৮
601 ৪. আন-নিসা সাবধান! তোমরাই ঐ লোক যারা ওদের পক্ষ হতে পার্থিব জীবন সম্বন্ধে বিতর্ক করছ; কিন্তু কিয়ামাত দিবসে তাদের পক্ষ হতে কে আল্লাহর সাথে বিতর্ক করবে এবং কে তাদের কার্য সম্পাদনকারী হবে? ১০৯
602 ৪. আন-নিসা এবং যে কেহ দুস্কার্য করে অথবা স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করে, অতঃপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থী হয়, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় দেখতে পাবে। ১১০
603 ৪. আন-নিসা এবং যে কেহ পাপ অর্জন করে, বস্তুতঃ সে স্বীয় আত্মার প্রতিই এর প্রতিক্রিয়া পৌঁছিয়ে থাকে এবং আল্লাহ মহাজ্ঞানী, বিজ্ঞানময়। ১১১
604 ৪. আন-নিসা আর যে কেহ অপরাধ অথবা পাপ অর্জন করে, অতঃপর ওটা নিরপরাধীর প্রতি আরোপ করে, তাহলে সে নিজেই সেই অপরাধ ও প্রকাশ্য পাপ বহন করবে। ১১২
605 ৪. আন-নিসা আর যদি তোমার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা না হত তাহলে তাদের একদল তোমাকে পথভ্রষ্ট করতে ইচ্ছুক হয়েছিল, এবং তারা নিজেদেরকে ছাড়া বিপদগামী করেনি ও তারা তোমাকে কোন বিষয়ে ক্লেশ দিতে পারবেনা; এবং আল্লাহ তোমার প্রতি গ্রন্থ ও প্রজ্ঞা অবতীর্ণ করেছেন এবং তুমি যা জানতেনা তিনি তা তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন; এবং তোমার প্রতি আল্লাহর অসীম করুণা রয়েছে। ১১৩
606 ৪. আন-নিসা সাধারণ লোকের অধিকাংশ গুপ্ত পরামর্শে কোন মঙ্গল নিহিত থাকেনা, তবে হ্যাঁ যে ব্যক্তি দান খয়রাত করে অথবা কোন সৎ কাজ করে কিংবা লোকের মধ্যে পরস্পর সন্ধি স্থাপন করে দেয়ার উদ্দেশে তা করে তাহলে তা স্বতন্ত্র এবং যে আল্লাহর প্রসন্নতা সন্ধানের জন্য ঐরূপ করে, আমি তাকে মহান বিনিময় প্রদান করব। ১১৪
607 ৪. আন-নিসা আর সুপথ প্রকাশিত হওয়ার পর যে রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং বিশ্বাসীগণের বিপরীত পথের অনুগামী হয়, তাহলে সে যাতে অভিনিবিষ্ট আমি তাকে তাতেই প্রত্যাবর্তিত করাব এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব; এবং ওটা নিকৃষ্টতর প্রত্যাবর্তন স্থল। ১১৫ জাহান্নাম
608 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে অংশী স্থাপনকারীকে ক্ষমা করেননা এবং এতদ্ব্যতীত তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে থাকেন; এবং যে আল্লাহর সাথে অংশী স্থাপন করে সে নিশ্চয়ই সুদূর বিপথে বিভ্রান্ত হয়েছে। ১১৬
609 ৪. আন-নিসা তারা তাঁকে পরিত্যাগ করে নারী মূর্তিদেরকেই আহবান করে এবং তারা বিদ্রোহী শাইতানকে ব্যতীত আহবান করেনা। ১১৭
610 ৪. আন-নিসা আল্লাহ তাকে অভিসম্পাত করেছেন; এবং শাইতান বলেছিল, আমি অবশ্যই তোমার সেবকবৃন্দ হতে এক নির্দিষ্ট অংশ গ্রহণ করব । ১১৮
611 ৪. আন-নিসা এবং নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে পথভ্রান্ত করব, তাদেরকে কু-মন্ত্রনা দিব এবং তাদেরকে আদেশ করব যেন তারা পশুর কর্ণ ছেদন করে এবং তাদেরকে আদেশ করব আল্লাহর সৃষ্ট আকৃতি পরিবর্তন করতে। যে আল্লাহকে পরিত্যাগ করে শাইতানকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করে, নিশ্চয়ই সে প্রকাশ্য ক্ষতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ১১৯
612 ৪. আন-নিসা শাইতান তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেয় ও আশ্বাস দান করে, কিন্তু শাইতান প্রতারণা ব্যতীত তাদেরকে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেনা। ১২০
613 ৪. আন-নিসা তাদেরই বাসস্থান জাহান্নাম এবং সেখান হতে তারা পালাবার কোন জায়গা পাবেনা। ১২১ জাহান্নাম
614 ৪. আন-নিসা এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎ কাজ করে, আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবিষ্ট করাব যার নিম্নে স্রোতস্বিনীসমূহ প্রবাহিতা, তন্মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে, আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য; এবং কে আল্লাহ অপেক্ষা বাক্যে অধিকতর সত্যপরায়ণ? ১২২
615 ৪. আন-নিসা না তোমাদের বৃথা আশায় কাজ হবে, আর না আহলে কিতাবের বৃথা আশায়; যে অসৎ কাজ করবে সে তার প্রতিফল পাবে এবং সে আল্লাহর পরিবর্তে কেহকে বন্ধু অথবা সাহায্যকারী প্রাপ্ত হবেনা। ১২৩
616 ৪. আন-নিসা পুরুষ অথবা নারীর মধ্যে যারা সৎ কাজ করে এবং সে বিশ্বাসীও হয়, তাহলে তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তারা খর্জুর দানার কণা পরিমাণও অত্যাচারিত হবেনা। ১২৪
617 ৪. আন-নিসা আর যে আল্লাহর উদ্দেশে স্বীয় আনন সমর্পণ করেছে ও সৎ কাজ করে এবং ইবরাহীমের সুদৃঢ় ধর্মের অনুসরণ করে, তার অপেক্ষা কার ধর্ম উৎকৃষ্ট? এবং আল্লাহ ইবরাহীমকে স্বীয় বন্ধু রূপে গ্রহণ করেছিলেন। ১২৫
618 ৪. আন-নিসা এবং নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে যা কিছু আছে সবই আল্লাহরই জন্য; আল্লাহ সর্ব বিষয়ে পরিবেষ্টনকারী। ১২৬
619 ৪. আন-নিসা এবং তারা তোমার নিকট নারীদের সম্বন্ধে ব্যবস্থা জিজ্ঞেস করছে; তুমি বল, আল্লাহ তোমাদেরকে তাদের সম্বন্ধে ব্যবস্থা দান করেছেন এবং পিতৃহীনা নারীদের সম্বন্ধে তোমাদের প্রতি গ্রন্থ হতে পাঠ করা হয়েছে যে, তাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ হয়েছে তা তোমরা প্রদান করছনা, অথচ তাদেরকে বিয়ে করতে বাসনা কর এবং শিশুদের মধ্যে দুর্বলদের ও পিতৃহীনদের প্রতি সুবিচার প্রতিষ্ঠা কর এবং তোমরা যে সৎ কাজ কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ তদ্বিষয়ে খুব ভাল জানেন । ১২৭
620 ৪. আন-নিসা কোন নারী যদি তার স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ অথবা উপেক্ষার আশংকা করে তাহলে তারা উভয়ে আপোষ মীমাংসা করে নিলে তাতে তাদের উভয়ের কোন অপরাধ নেই। বস্তুতঃ আপোষ মীমাংসাই উত্তম। এবং লোভের কারণে স্বভাবতঃই মানুষের হৃদয় কৃপণ; এবং যদি তোমরা সৎ ব্যবহার কর ও সংযমী হও তাহলে তোমরা যা করছো তদ্বিষয়ে আল্লাহ অভিজ্ঞ। ১২৮
621 ৪. আন-নিসা তোমরা কখনও স্ত্রীগণের মধ্যে সুবিচার করতে পারবেনা যদিও তোমরা তা কামনা কর, সুতরাং তোমরা কোন একজনের প্রতি সম্পূর্ণরূপে ঝুকে পড়োনা ও অপরজনকে ঝুলন্ত অবস্থায় রেখোনা এবং যদি তোমরা পরস্পর সমঝতায় আসো ও সংযমী হও তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১২৯
622 ৪. আন-নিসা এবং যদি তারা উভয়ে বিচ্ছিন্ন হয় তাহলে আল্লাহ স্বীয় প্রাচুর্য হতে তাদের প্রত্যেককে সম্পদশালী করবেন এবং আল্লাহ সুপ্রশস্ত মহাজ্ঞানী। ১৩০
623 ৪. আন-নিসা নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে যা কিছু রয়েছে তা আল্লাহরই জন্য; এবং নিশ্চয়ই তোমাদের পূর্বে যাদেরকে গ্রন্থ প্রদত্ত হয়েছিল - আমি তাদেরকে ও তোমাদেরকে আদেশ করেছিলাম যে, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, এবং যদি অবিশ্বাস কর তাহলে নিশ্চয়ই নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে যা কিছু আছে তা আল্লাহরই এবং আল্লাহ মহাসম্পদশালী, প্রশংসিত। ১৩১
624 ৪. আন-নিসা এবং আকাশসমূহে যা কিছু রয়েছে ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা আল্লাহরই; এবং কর্মবিধানে (ওয়াকিল) আল্লাহই যথেষ্ট। ১৩২
625 ৪. আন-নিসা হে লোক সকল! যদি তিনি ইচ্ছা করেন তাহলে তোমাদেরকে বিলুপ্ত করে অন্যদেরকে আনয়ন করতে পারেন এবং আল্লাহ এ ব্যাপারে শক্তিমান। ১৩৩
626 ৪. আন-নিসা যে ইহলোকের প্রতিদান আকাংখা করে, আল্লাহর নিকট ইহলোক ও পরলোকের প্রতিদান রয়েছে; এবং আল্লাহ শ্রবণকারী, পরিদর্শক। ১৩৪
627 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহর উদ্দেশে সাক্ষ্য দানকারী, সুবিচার প্রতিষ্ঠাতা হও এবং যদিও এটা তোমাদের নিজের অথবা মাতা-পিতা ও আত্মীয়-স্বজনের প্রতিকূল হয়, যদিও সে সম্পদশালী কিংবা দরিদ্র হয় তাহলে আল্লাহই তাদের জন্য যথেষ্ট; অতএব সুবিচারে স্বীয় প্রবৃত্তির অনুসরণ করনা, আর তোমরা যদি ঘুরিয়ে পেচিয়ে কথা বল কিংবা পাশ কাটিয়ে যাও তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের সমস্ত কর্মের পূর্ণ সংবাদ রাখেন। ১৩৫
628 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! তোমরা বিশ্বাস স্থাপন কর আল্লাহর প্রতি ও তাঁর রাসূলের প্রতি এবং এই কিতাবের প্রতি যা তিনি তাঁর রাসূলের উপর অবতীর্ণ করেছেন এবং ঐ কিতাবের প্রতি যা পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছিল, এবং যে কেহ আল্লাহ, তদ্বীয় ফেরেশ্তা, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ এবং পরকাল সম্বন্ধে অবিশ্বাস করে, নিশ্চয়ই সে সুদূর বিপথে বিভ্রান্ত হয়েছে। ১৩৬
629 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই যারা বিশ্বাস স্থাপন করে, অতঃপর অবিশ্বাসী হয়, পুনরায় বিশ্বাস স্থা্পন করে এবং আবার অবিশ্বাসী হয়, অনন্তর অবিশ্বাসে পরিবর্ধিত হয়, তাহলে আল্লাহ কখনই তাদেরকে ক্ষমা করবেননা এবং তাদেরকে পথ প্রদর্শন করবেননা। ১৩৭
630 ৪. আন-নিসা মুনাফিকদের সুসংবাদ দাও যে, তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। ১৩৮
631 ৪. আন-নিসা যারা মু’মিনদেরকে পরিত্যাগ করে কাফিরদের বন্ধু রূপে গ্রহণ করে, তারা কি তাদের নিকট সম্মান অনুসন্ধান করে? কিন্তু যাবতীয় সম্মানই আল্লাহর। ১৩৯
632 ৪. আন-নিসা এবং নিশ্চয়ই তিনি গ্রন্থের মাধ্যমে তোমাদের আদেশ করছেন যে, তোমরা যখন আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি অবিশ্বাস করা এবং তাঁর প্রতি উপহাস করা হচ্ছে শ্রবণ কর তখন তাদের সাথে (বৈঠকে) উপবেশন করনা, যে পর্যন্ত না তারা অন্য কথার আলোচনা করে; অন্যথায় তোমরাও তাদের সদৃশ হয়ে যাবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সেই সমস্ত মুনাফিক ও কাফিরদেরকে জাহান্নামে একত্রিত করবেন। ১৪০ জাহান্নাম
633 ৪. আন-নিসা ওরা এমন যারা তোমাদের সম্বন্ধে প্রতীক্ষা করছে; এবং যদি তোমরা আল্লাহর পক্ষ হতে জয়লাভ কর তাহলে তারা বলেঃ আমরা কি তোমাদের সঙ্গে ছিলামনা? এবং যদি ওটা অবিশ্বাসীদের ভাগ্যে ঘটে তাহলে বলে- আমরা কি তোমাদের নেতৃত্ব করিনি এবং বিশ্বাসীগণ হতে তোমাদেরকে রক্ষা করিনি? অতঃপর আল্লাহ উত্থান দিবসে তোমাদের মধ্যে বিচার করবেন; এবং আল্লাহ কখনও মু’মিনদের বিরুদ্ধে কাফিরদেরকে বিজয়ী করবেননা। ১৪১
634 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহর সাথে প্রতারণা করে এবং তিনিও তাদেরকে ঐ প্রতারণা প্রত্যার্পণ করছেন; এবং যখন তারা সালাতের জন্য দাঁড়ায় তখন লোকদেরকে দেখানোর জন্য আলস্যভরে দাঁড়ায় এবং আল্লাহকে খুব কমই স্মরণ করে। ১৪২ নামাজ
635 ৪. আন-নিসা এরা সন্দেহের দোলায় দোদুল্যমান রয়েছে। তারা এ দিকেও নয় ওদিকেও নয়; এবং আল্লাহ যাকে পথভ্রান্ত করেছেন, বস্তুতঃ তুমি তার জন্য কোনই পথ পাবেনা। ১৪৩
636 ৪. আন-নিসা হে মু’মিনগণ! তোমরা মু’মিনদেরকে ছেড়ে কাফিরদেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করনা, তোমরা কি আল্লাহর জন্য তোমাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট প্রমাণ দিতে চাও? ১৪৪
637 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে অবস্থান করবে এবং তুমি কখনও তাদের জন্য সাহায্যকারী পাবেনা। ১৪৫ জাহান্নাম
638 ৪. আন-নিসা কিন্তু যারা ক্ষমা প্রার্থনা করে ও সংশোধিত হয় এবং আল্লাহর পথকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে ও আল্লাহর ধর্মে বিশুদ্ধ হয়, ফলতঃ তারাই মু’মিনদের সঙ্গী এবং অচিরেই আল্লাহ মু’মিনদেরকে উত্তম প্রতিদান দিবেন। ১৪৬
639 ৪. আন-নিসা আল্লাহ কেনইবা তোমাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও ও বিশ্বাস স্থাপন কর? এবং আল্লাহতো অতিশয় গুণগ্রাহী, মহাজ্ঞানী। ১৪৭
640 ৪. আন-নিসা আল্লাহ কোন মন্দ কথার প্রচারণা ভালবাসেন না, তবে কেহ অত্যাচারিত হয়ে থাকলে তার কথা স্বতন্ত্র; এবং আল্লাহ শ্রবণকারী মহাজ্ঞানী। ১৪৮
641 ৪. আন-নিসা যদি তোমরা সৎ কাজ প্রকাশ্যে কর অথবা গোপনে কর অথবা যদি তোমরা অপরাধ ক্ষমা করে দাও তাহলে জেনে রেখ যে, আল্লাহ নিজেও ক্ষমাকারী, সর্বশক্তিমান। ১৪৯
642 ৪. আন-নিসা নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি অবিশ্বাস করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের মধ্যে পার্থক্য করতে ইচ্ছা করে এবং বলে, আমরা কতিপয়কে বিশ্বাস করি ও কতিপয়কে অবিশ্বাস করি এবং তারা এর মধ্যবর্তী পথ অবলম্বন করতে ইচ্ছা করে । ১৫০
643 ৪. আন-নিসা ওরাই প্রকৃত অবিশ্বাসী, এবং আমি অবিশ্বাসীদের জন্য অবমাননাকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। ১৫১
644 ৪. আন-নিসা এবং যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কোন পার্থক্য করেনা - আল্লাহ শীঘ্রই তাদের প্রতিদান প্রদান করবেন এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। ১৫২
645 ৪. আন-নিসা আহলে কিতাব তোমার নিকট আবেদন জানায় যে, তুমি তাদের প্রতি আকাশ হতে কোন গ্রন্থ নাযিল কর - পরন্ত তারা মূসার নিকট এটা অপেক্ষাও বৃহত্তর দাবী করেছিল। তারা বলেছিল, আল্লাহকে প্রকাশ্যভাবে প্রদর্শন কর; অতঃপর তাদের অবাধ্যতার জন্য বজ্রপাত তাদেরকে আক্রমণ করেছিল, অতঃপর তাদের নিকট নিদর্শনাবলী আসার পরেও তারা গো-বৎসকে উপাস্য হিসাবে গ্রহণ করেছিল। কিন্তু ওটাও আমি ক্ষমা করেছিলাম, এবং মূসাকে প্রকাশ্য প্রভাব প্রদান করেছিলাম। ১৫৩
646 ৪. আন-নিসা এবং আমি তাদের প্রতিশ্রুতির জন্য তাদের উপর তূর পর্বত সমুচ্চ করেছিলাম এবং তাদেরকে বলেছিলাম অবনত শিরে দ্বারে প্রবেশ কর। এবং তাদেরকে আরও বলেছিলাম, শনিবারের সীমা অতিক্রম করনা। এভাবে তাদের নিকট হতে কঠোর প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছিলাম। ১৫৪
647 ৪. আন-নিসা কিন্তু তারা লা‘নতগ্রস্ত হয়েছিল তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ এবং আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি তাদের অবিশ্বাস ও অন্যায়ভাবে তাদের নাবীদের হত্যা এবং ‘‘তাদের স্ব স্ব অন্তরসমূহ আচ্ছাদিত’’ এই উক্তি করার জন্য; হ্যাঁ - তাদের অবিশ্বাস হেতু আল্লাহ ওদের অন্তরে মোহর এঁটে দিয়েছেন, এ কারণে তারা অল্প সংখ্যক ব্যতীত বিশ্বাস করেনা । ১৫৫
648 ৪. আন-নিসা এবং তাদের কুফরী ও মারইয়ামের প্রতি তাদের ভয়ানক অপবাদের জন্য। ১৫৬
649 ৪. আন-নিসা এবং ‘‘আল্লাহর রাসূল ও মারইয়াম নন্দন ঈসাকে আমরা হত্যা করেছি’’ বলার জন্য। অথচ তারা না তাকে হত্যা করেছে আর না শুলে চড়িয়েছে; বরং তারা ধাঁধাঁয় পতিত হয়েছিল। তারা তদ্বিষয়ে সন্দেহাচ্ছন্ন ছিল, কল্পনার অনুসরণ ব্যতীত এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান ছিলনা। প্রকৃত পক্ষে তারা তাকে হত্যা করেনি। ১৫৭
650 ৪. আন-নিসা বরং আল্লাহ তাকে নিজের দিকে উঠিয়ে নিয়েছেন, এবং আল্লাহ পরাক্রান্ত মহাজ্ঞানী। ১৫৮
651 ৪. আন-নিসা এবং আহলে কিতাবের মধ্যে এমন কেহ নেই যে, তার মৃত্যুর পূর্বে ব্যতীত এটা বিশ্বাস করবে; এবং উত্থান দিনে সে (ঈসা) তাদের উপর সাক্ষ্য দান করবে। ১৫৯
652 ৪. আন-নিসা আমি ইয়াহুদীদের অবাধ্যতা হেতু তাদের জন্য যে সমস্ত বস্ত্ত বৈধ ছিল তা তাদের প্রতি অবৈধ করেছি; এবং যেহেতু তারা অনেককে আল্লাহর পথ হতে প্রতিরোধ করত। ১৬০