অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: ইবলীস ও তার বাহিনীর বর্ণনা |
বর্ণনাকারী: সফীয়্যাহ (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৮১):
সাফিয়্যাহ বিনতু হুয়াই (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ই‘তিকাফ অবস্থায় ছিলেন। আমি রাতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসলাম। অতঃপর তাঁর সঙ্গে কিছু কথা বললাম। অতঃপর আমি ফিরে আসার জন্য দাঁড়ালাম। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও আমাকে পৌঁছে দেয়ার জন্য আমার সঙ্গে উঠে দাঁড়ালেন। আর তাঁর বাসস্থান ছিল উসামাহ ইবনু যায়দের বাড়িতে। এ সময় দু’জন আনসারী সে স্থান দিয়ে অতিক্রম করল। তারা যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখল তখন তারা শীঘ্র চলে যেতে লাগল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা একটু থাম। এ সাফিয়্যা বিন্তে হুয়াই। তারা বললেন, সুবহানাল্লাহ! হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, মানুষের রক্তধারায় শয়তান প্রবাহমান থাকে। আমি শংকাবোধ করছিলাম, সে তোমাদের মনে কোন খারাপ ধারণা অথবা বললেন অন্য কিছু সৃষ্টি করে না কি।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: ইবলীস ও তার বাহিনীর বর্ণনা |
বর্ণনাকারী: সুলাইমান ইবনু সুরাদ (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৮২):
সুলাইমান ইবনু সুরাদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন দু’জন লোক গালাগালি করছিল। তাদের এক জনের চেহারা লাল হয়ে গিয়েছিল এবং তার রগগুলো ফুলে গিয়েছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি এমন একটি দু’আ জানি, যদি এ লোকটি তা পড়ে তবে তার রাগ দূর হয়ে যাবে। সে যদি পড়ে আ‘ঊযুবিল্লাহি মিনাশ শায়তান’’-আমি শয়তান হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই। তবে তার রাগ চলে যাবে। তখন তাকে বলল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তুমি আল্লাহর নিকট শয়তান থেকে আশ্রয় চাও। সে বলল, আমি কি পাগল হয়েছি?
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: ইবলীস ও তার বাহিনীর বর্ণনা |
বর্ণনাকারী: আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৮৩):
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন তার স্ত্রীর নিকট গমন করে এবং বলে, ‘‘হে আল্লাহ! আমাকে শয়তান হতে রক্ষা কর আর আমাকে এর মাধ্যমে যে সন্তান দিবে তাকেও শয়তান থেকে হিফাজত কর। তাহলে যদি তাদের কোন সন্তান জন্মায়, তবে শয়তান তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না এবং তার উপর কোন প্রভাব ফেলতে পারবে না। আসমা (রহ.).....ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) নিকট হতে অনুরূপ রিওয়ায়ত বর্ণনা করেন।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: ইবলীস ও তার বাহিনীর বর্ণনা |
বর্ণনাকারী: আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৮৪):
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায় করলেন। অতঃপর বললেন, শয়তান আমার সামনে এসেছিল। সে আমার সালাত নষ্ট করার বহু চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আল্লাহ আমাকে তার উপর বিজয়ী করেন। অতঃপর পূর্ণাঙ্গ হাদীসটি উল্লেখ করেন।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: ইবলীস ও তার বাহিনীর বর্ণনা |
বর্ণনাকারী: আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৮৫):
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন সালাতের জন্যে আযান দেয়া হয় তখন শয়তান সশব্দে বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পালাতে থাকে। আযান শেষ হলে সামনে এগিয়ে আসে। আবার যখন ইকামাত দেয়া হয় তখন আবার পালাতে থাকে। ইকামাত শেষ হলে আবার সামনে আসে এবং মানুষের মনে খটকা সৃষ্টি করতে থাকে আর বলতে থাকে ওটা ওটা মনে কর। এমনকি সে ব্যক্তি আর মনে রাখতে পারে না যে, সে কি তিন রাক‘আত পড়ল না চার রাকআত পড়ল। এ রকম যদি কারো হয়ে যায়, সে মনে রাখতে পারে না তিন রাকা‘আত পড়েছে না কি চার রাকআত তখন সে যেন দু’টি সাহু সাজ্দাহ করে।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: ইবলীস ও তার বাহিনীর বর্ণনা |
বর্ণনাকারী: আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৮৬):
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেক আদম সন্তানের জন্মের সময় তার পার্শ্বদেশে শয়তান তার দুই আঙ্গুল দ্বারা খোঁচা মারে। ‘ঈসা ইবনু মরয়াম (আঃ)-এর ব্যতিক্রম। সে তাঁকে খোঁচা মারতে গিয়েছিল। তখন সে পর্দার ওপর খোঁচা মারে।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: ইবলীস ও তার বাহিনীর বর্ণনা |
বর্ণনাকারী: আলকামাহ (রহঃ)
হাদিস নং (৩২৮৭):
আলকামাহ (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সিরিয়ায় গেলাম, লোকেরা বলল, ইনি আবূ দারদা (রাঃ)। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমাদের মধ্যে কি সে ব্যক্তি আছে, যাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মৌখিক দু‘আয় আল্লাহ্ শয়তান হতে রক্ষা করেছেন?’ মুগীরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সেই ব্যক্তি যাঁকে আল্লাহ তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মৌখিক দু‘আয় শয়তান হতে রক্ষা করেছেন, তিনি হলেন, আম্মার (রাঃ)।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: ইবলীস ও তার বাহিনীর বর্ণনা |
বর্ণনাকারী: আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৮৮):
আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘ফেরেশতামন্ডলী মেঘের মাঝে এমন সব বিষয় আলোচনা করেন, যা পৃথিবীতে ঘটবে। তখন শয়তানেরা দু’ একটি কথা শুনে ফেলে এবং তা জ্যোতিষদের কানে এমনভাবে ঢেলে দেয় যেমন বোতলে পানি ঢালা হয়। তখন তারা এ সত্য কথার সঙ্গে শত রকমের মিথ্যা বাড়িয়ে বলে।’
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: ইবলীস ও তার বাহিনীর বর্ণনা |
বর্ণনাকারী: আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৮৯):
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হাই তোলা শয়তানের পক্ষ হতে হয়ে থাকে। কাজেই তোমাদের কারো যখন হাই আসবে তখন যথাসম্ভব তা রোধ করবে। কারণ তোমাদের কেউ হাই তোলার সময় যখন ‘হা’ বলে, তখন শয়তান হাসতে থাকে।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: ইবলীস ও তার বাহিনীর বর্ণনা |
বর্ণনাকারী: আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৯০):
আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উহুদের দিন যখন মুশরিকরা পরাজিত হলো, তখন ইব্লীস চীৎকার করে বলল, হে আল্লাহর বান্দারা! তোমরা তোমাদের পেছনের লোকদের থেকে সতর্ক হও। কাজেই সামনের লোকেরা পেছনের লোকদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। ফলে উভয় দলের মধ্যে নতুনভাবে লড়াই শুরু হল। হুযাইফাহ (রাঃ) হঠাৎ তাঁর পিতা ইয়ামানকে দেখতে পেলেন। তখন তিনি (হুযাইফাহ) বললেন, হে আল্লাহর বান্দারা! আমার পিতা! আমার পিতা! কিন্তু আল্লাহর কসম, তারা বিরত হয়নি। শেষ পর্যন্ত তারা তাঁকে হত্যা করে ফেলল। তখন হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন। ‘উরওয়াহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত হুযায়ফা (রাঃ) দু‘আ ও ইস্তিগফার করতে থাকেন।
|