অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: তোমাদের কেউ যখন আমীন বলে আর আকাশের ফেরেশতাগণও আমীন বলে। অতঃপর একের আমীন অন্যের আমীনের সঙ্গে মিলিতভাবে উচ্চারিত হয় তখন পূর্বের পাপরাশি মুছে দেয়া হয়। |
বর্ণনাকারী: আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৩১):
আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, একবার তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজেস করলেন, উহুদের দিনের চেয়ে কঠিন কোন দিন কি আপনার উপর এসেছিল? তিনি বললেন, আমি তোমার ক্বওম হতে যে বিপদের সম্মুখীন হয়েছি, তা তো হয়েছি। তাদের হতে অধিক কঠিন বিপদের সম্মুখীন হয়েছি, আকাবার দিন যখন আমি নিজেকে ইবনু ‘আবদে ইয়ালীল ইবনে ‘আবদে কলালের নিকট পেশ করেছিলাম। আমি যা চেয়েছিলাম, সে তার জবাব দেয়নি। তখন আমি এমনভাবে বিষণ্ণ চেহারা নিয়ে ফিরে এলাম যে, কারনুস সাআলিবে পৌঁছা পর্যন্ত আমার চিন্তা দূর হয়নি। তখন আমি মাথা উপরে উঠালাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম এক টুকরো মেঘ আমাকে ছায়া দিচ্ছে। আমি সে দিকে তাকালাম। তার মধ্যে ছিলেন জিব্রাঈল (আঃ)। তিনি আমাকে ডেকে বললেন, আপনার ক্বওম আপনাকে যা বলেছে এবং তারা উত্তরে যা বলেছে তা সবই আল্লাহ শুনেছেন। তিনি আপনার নিকট পাহাড়ের ফেরেশতাকে পাঠিয়েছেন। এদের সম্পর্কে আপনার যা ইচ্ছে আপনি তাঁকে হুকুম দিতে পারেন। তখন পাহাড়ের ফেরেশতা আমাকে ডাকলেন এবং আমাকে সালাম দিলেন। অতঃপর বললেন, হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! এসব ব্যাপার আপনার ইচ্ছাধীন। আপনি যদি চান, তাহলে আমি তাদের উপর আখশাবাইন১কে চাপিয়ে দিব। উত্তরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বরং আশা করি মহান আল্লাহ তাদের বংশ থেকে এমন সন্তান জন্ম দেবেন যারা এক আল্লাহর ‘ইবাদাত করবে আর তাঁর সঙ্গে কাউকে শরীক করবে না।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: তোমাদের কেউ যখন আমীন বলে আর আকাশের ফেরেশতাগণও আমীন বলে। অতঃপর একের আমীন অন্যের আমীনের সঙ্গে মিলিতভাবে উচ্চারিত হয় তখন পূর্বের পাপরাশি মুছে দেয়া হয়। |
বর্ণনাকারী: আবূ ইসহাক (রহঃ)
হাদিস নং (৩২৩২):
আবূ ইসহাক শায়বানী (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যির ইবনু হুবাইশ (রাঃ)-কে মহান আল্লাহর এ বাণীঃ ‘‘অবশেষে তাদের মধ্যে দুই ধনুকের দূরত্ব রইল অথবা আরও কম। তখন আল্লাহ স্বীয় বান্দার প্রতি যা ওয়াহী করার ছিল, তা ওয়াহী করলেন’’- (আন্-নাজম ৯-১০)। এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিব্রাঈল (আঃ)-কে দেখেছেন। তাঁর ছয়শ’টি ডানা ছিল।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: তোমাদের কেউ যখন আমীন বলে আর আকাশের ফেরেশতাগণও আমীন বলে। অতঃপর একের আমীন অন্যের আমীনের সঙ্গে মিলিতভাবে উচ্চারিত হয় তখন পূর্বের পাপরাশি মুছে দেয়া হয়। |
বর্ণনাকারী: আবদুল্লাহ ইব্ন মাসউদ (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৩৩):
আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি এ আয়াতঃ ‘‘তিনি তো স্বীয় রবের মহান নিদর্শনসমূহ দর্শন করেছেন।’’ (আন্-নাজম ১৮)-এর মর্মার্থে বলেন, তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সবুজ বর্ণের রফরফ* দেখেছেন, যা আকাশের দিগন্তকে আবৃত করে রেখেছিল।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: তোমাদের কেউ যখন আমীন বলে আর আকাশের ফেরেশতাগণও আমীন বলে। অতঃপর একের আমীন অন্যের আমীনের সঙ্গে মিলিতভাবে উচ্চারিত হয় তখন পূর্বের পাপরাশি মুছে দেয়া হয়। |
বর্ণনাকারী: আয়িশা বিনত আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৩৪):
আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি মনে করবে যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর রবকে দেখেছেন, সে ব্যক্তি মহা ভুল করবে। বরং তিনি জিব্রাঈল (আঃ)-কে তাঁর আসল আকার ও চেহারায় দেখেছেন। তিনি আকাশের দিকচক্রবাল জুড়ে অবস্থান করছিলেন।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: তোমাদের কেউ যখন আমীন বলে আর আকাশের ফেরেশতাগণও আমীন বলে। অতঃপর একের আমীন অন্যের আমীনের সঙ্গে মিলিতভাবে উচ্চারিত হয় তখন পূর্বের পাপরাশি মুছে দেয়া হয়। |
বর্ণনাকারী: মাসরূক (রহঃ)
হাদিস নং (৩২৩৫):
মাসরূক (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে আল্লাহর বাণীঃ ‘‘তারপর সে তার নিকটবর্তী হল এবং অতি নিকটবর্তী হল, অবশেষে তাদের মধ্যে দুই ধনুকের দূরত্ব রইল অথবা আরও কম’’ (আন্-নাজম ৮, ৯)-এর অর্থ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, তিনি জিব্রাঈল (আঃ) ছিলেন। তিনি সাধারণত মানুষের আকার নিয়ে তাঁর নিকট আসতেন। কিন্তু এবার তিনি নিকটে এসেছিলেন তাঁর আসল চেহারা নিয়ে। তখন তিনি আকাশের সম্পূর্ণ দিকচক্রবাল আবৃত করে ফেলেছিলেন।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: তোমাদের কেউ যখন আমীন বলে আর আকাশের ফেরেশতাগণও আমীন বলে। অতঃপর একের আমীন অন্যের আমীনের সঙ্গে মিলিতভাবে উচ্চারিত হয় তখন পূর্বের পাপরাশি মুছে দেয়া হয়। |
বর্ণনাকারী: সামুরাহ ইবনু জুনদুব (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৩৬):
সামূরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আজ রাতে আমি দেখেছি, দু’ব্যক্তি আমার নিকট এসেছে। তারা বলল, যে অগ্নি প্রজ্জ্বলিত করছিল সে হলো দোযখের তত্ত্বাবধায়ক মালিক আর আমি জিব্রাঈল এবং ইনি মীকাঈল।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: তোমাদের কেউ যখন আমীন বলে আর আকাশের ফেরেশতাগণও আমীন বলে। অতঃপর একের আমীন অন্যের আমীনের সঙ্গে মিলিতভাবে উচ্চারিত হয় তখন পূর্বের পাপরাশি মুছে দেয়া হয়। |
বর্ণনাকারী: আবূ হুরায়রা (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৩৭):
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন লোক যদি নিজ স্ত্রীকে নিজ বিছানায় আসতে ডাকে আর সে অস্বীকার করে এবং সে ব্যক্তি স্ত্রীর উপর দুঃখ নিয়ে রাত্রি যাপন করে, তাহলে ফেরেশ্তাগণ এমন স্ত্রীর উপর সকাল পর্যন্ত লা‘নত দিতে থাকে। শুবা, আবূ হামযাহ, ইবনু দাউদ ও আবূ মু‘আবিয়াহ (রহ.) আ‘মাশ (রহ.) হতে হাদীস বর্ণনায় আবূ আওয়ানাহ (রহ.)-এর অনুসরণ করেছেন।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: তোমাদের কেউ যখন আমীন বলে আর আকাশের ফেরেশতাগণও আমীন বলে। অতঃপর একের আমীন অন্যের আমীনের সঙ্গে মিলিতভাবে উচ্চারিত হয় তখন পূর্বের পাপরাশি মুছে দেয়া হয়। |
বর্ণনাকারী: জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৩৮):
জাবির ইবনু ‘আবদিল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি। আমার নিকট হতে কিছু দিনের জন্য ওয়াহী বন্ধ হয়ে গেল। আমি পথ চলতে ছিলাম। এরই মধ্যে আকাশ হতে একটি আওয়াজ শুনতে পেলাম। তখন আমি আকাশের দিকে দৃষ্টি তুললাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম, হেরা পাহাড়ের গুহায় আমার নিকট যে ফেরেশতা এসেছিলেন, তিনি আকাশ ও যমীনের মাঝখানে একটি কুরসীর উপর বসে আছেন। আমি তাতে ভীত হয়ে গেলাম, এমনকি মাটিতে পড়ে যাবার উপক্রম হলাম। অতঃপর আমি আমার পরিজনের নিকট এলাম এবং বললাম, আমাকে কম্বল দিয়ে আবৃত কর, আমাকে কম্বল দিয়ে আবৃত কর। তখন মহান আল্লাহ্ এ আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ قُمْ فَأَنْذِرْ হে বস্ত্রাবৃত। উঠ, সতর্ক বাণী প্রচার কর.....অপবিত্রতা হতে দূরে থাক। (আল-মুদ্দাসসিরঃ ১-৫) আবূ সালামাহ (রাঃ) বলেন, অত্র আয়াতে الرِّجْزُ হল প্রতিমা।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: তোমাদের কেউ যখন আমীন বলে আর আকাশের ফেরেশতাগণও আমীন বলে। অতঃপর একের আমীন অন্যের আমীনের সঙ্গে মিলিতভাবে উচ্চারিত হয় তখন পূর্বের পাপরাশি মুছে দেয়া হয়। |
বর্ণনাকারী: আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৩৯):
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চাচাত ভাই ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মিরাজের রাত্রে আমি মূসা (আঃ)-কে দেখেছি। তিনি গোধুম বর্ণের পুরুষ ছিলেন; দেহের গঠন ছিল লম্বা। মাথার চুল ছিল কোঁকড়ানো। যেন তিনি শানূআ গোত্রের জনৈক ব্যক্তি। আমি ‘ঈসা (আঃ)-কে দেখতে পাই। তিনি ছিলেন মধ্যম গঠনের লোক। তাঁর দেহবর্ণ ছিল সাদা লালে মিশ্রিত। তিনি ছিলেন মধ্যম দেহ বিশিষ্ট। মাথার চুল ছিল অকুঞ্চিত। জাহান্নামের তত্ত্বাবধায়ক মালিক এবং দজ্জালকেও আমি দেখেছি। আল্লাহ তা‘আলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বিশেষ করে যে সকল নিদর্শনসমূহ দেখিয়েছেন তার মধ্যে এগুলোও ছিল। সুতরাং তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে তুমি সন্দেহ পোষণ করবে না। আনাস এবং আবূ বকরাহ (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন, ফেরেশতামন্ডলী মদিনা্কে দাজ্জাল হতে পাহারা দিয়ে রাখবেন।
|
অধ্যায়: সৃষ্টির সূচনা |
উপ-অধ্যায়: জান্নাতের বর্ণনা সম্পর্কে যা বলা হয়েছে আর তা হল সৃষ্ট। |
বর্ণনাকারী: আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ)
হাদিস নং (৩২৪০):
আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কোন ব্যক্তি মারা যায় তখন সকাল-সন্ধ্যায় তার পরকালের আবাসস্থল তার নিকট পেশ করা হয়। সে যদি জান্নাতবাসী হয় তবে তাকে জান্নাতবাসীর আবাস স্থান আর যদি সে জাহান্নামবাসী হয় তবে তাকে জাহান্নামবাসীর আবাস স্থান দেখানো হয়।
|